Main pages

Surah The Smoke [Ad-Dukhan] in Bengali

Surah The Smoke [Ad-Dukhan] Ayah 59 Location Maccah Number 44

حمٓ ﴿١﴾

হা-মীম।

জহুরুল হক

হা মীম!

وَٱلْكِتَٰبِ ٱلْمُبِينِ ﴿٢﴾

শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের।

জহুরুল হক

সুস্পষ্ট গ্রন্থের কথা ভেবে দেখো --

إِنَّآ أَنزَلْنَٰهُ فِى لَيْلَةٍۢ مُّبَٰرَكَةٍ ۚ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ ﴿٣﴾

আমি একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা এটি অবতারণ করেছি এক পবিত্র রাত্রিতে, নিঃসন্দেহ আমরা চির-সতর্ককারী।

فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ ﴿٤﴾

এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।

জহুরুল হক

এতে প্রত্যেক বিষয় সুস্পষ্ট করা হয় জ্ঞানভান্ডার দিয়ে,

أَمْرًۭا مِّنْ عِندِنَآ ۚ إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ ﴿٥﴾

আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী।

জহুরুল হক

আমাদের তরফ থেকে এক নির্দেশনামা। নিঃসন্দেহ আমরা সতত প্রেরণকারী, --

رَحْمَةًۭ مِّن رَّبِّكَ ۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ ﴿٦﴾

আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

জহুরুল হক

তোমার প্রভু কাছ থেকে এ এক অনুগ্রহ। নিঃসন্দেহ তিনি, তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা, --

رَبِّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَآ ۖ إِن كُنتُم مُّوقِنِينَ ﴿٧﴾

যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে দেখতে পাবে। তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যেবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা।

জহুরুল হক

মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এবং এ দুইয়ের মধ্যে যা আছে তার প্রভু, -- যদি তোমরা সুনিশ্চিত হও।

لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ يُحْىِۦ وَيُمِيتُ ۖ رَبُّكُمْ وَرَبُّ ءَابَآئِكُمُ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿٨﴾

তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃ-পুরুষদেরও পালনকর্তা।

জহুরুল হক

তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নেই, তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তোমাদের প্রভু এবং পূর্বকালীন তোমাদের পিতৃপুরষদেরও প্রভু।

بَلْ هُمْ فِى شَكٍّۢ يَلْعَبُونَ ﴿٩﴾

এতদসত্ত্বেও এরা সন্দেহে পতিত হয়ে ক্রীড়া-কৌতুক করছে।

জহুরুল হক

বস্তুতঃ তারা সন্দেহের মাঝে ছেলেখেলা খেলছে।

فَٱرْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِى ٱلسَّمَآءُ بِدُخَانٍۢ مُّبِينٍۢ ﴿١٠﴾

অতএব আপনি সেই দিনের অপেক্ষা করুন, যখন আকাশ ধূয়ায় ছেয়ে যাবে।

জহুরুল হক

সুতরাং তুমি অপেক্ষা কর সেই দিনের যখন আকাশ নেমে আসবে প্রকাশ্য ধোঁয়া নিয়ে, --

يَغْشَى ٱلنَّاسَ ۖ هَٰذَا عَذَابٌ أَلِيمٌۭ ﴿١١﴾

যা মানুষকে ঘিরে ফেলবে। এটা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

জহুরুল হক

মানুষকে জড়িয়ে ফেলে। এ এক মর্মন্তদ শাস্তি।

رَّبَّنَا ٱكْشِفْ عَنَّا ٱلْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُونَ ﴿١٢﴾

হে আমাদের পালনকর্তা আমাদের উপর থেকে শাস্তি প্রত্যাহার করুন, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি।

জহুরুল হক

''আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে শাস্তি সরিয়ে নাও, নিঃসন্দেহ আমরা বিশ্বাসী হচ্ছি।’’

أَنَّىٰ لَهُمُ ٱلذِّكْرَىٰ وَقَدْ جَآءَهُمْ رَسُولٌۭ مُّبِينٌۭ ﴿١٣﴾

তারা কি করে বুঝবে, অথচ তাদের কাছে এসেছিলেন স্পষ্ট বর্ণনাকারী রসূল।

জহুরুল হক

কেমন ক’রে তাদের জন্য উপদেশ-গ্রন্থ হবে, অথচ তাদের কাছে একজন প্রকাশ্য রসূল এসেই গেছেন?

ثُمَّ تَوَلَّوْا۟ عَنْهُ وَقَالُوا۟ مُعَلَّمٌۭ مَّجْنُونٌ ﴿١٤﴾

অতঃপর তারা তাকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে এবং বলে, সে তো উম্মাদ-শিখানো কথা বলে।

জহুরুল হক

কিন্ত তারা তখন তাঁর থেকে ফিরে গিয়েছিল আর বলেছিল -- ''শেখানো, পাগল।’’

إِنَّا كَاشِفُوا۟ ٱلْعَذَابِ قَلِيلًا ۚ إِنَّكُمْ عَآئِدُونَ ﴿١٥﴾

আমি তোমাদের উপর থেকে আযাব কিছুটা প্রত্যাহার করব, কিন্তু তোমরা পুনরায় পুনর্বস্থায় ফিরে যাবে।

জহুরুল হক

আমরা না হয় কিছুকালের জন্য শাস্তি স্থগিতই রাখব, কিন্ত তোমরা তো ফিরে যাবে।

يَوْمَ نَبْطِشُ ٱلْبَطْشَةَ ٱلْكُبْرَىٰٓ إِنَّا مُنتَقِمُونَ ﴿١٦﴾

যেদিন আমি প্রবলভাবে ধৃত করব, সেদিন পুরোপুরি প্রতিশোধ গ্রহণ করবই।

জহুরুল হক

যেদিন আমরা পাকড়াবো বিরাট ধড়পাকড়ে, সেদিন আমরা নিশ্চয়ই শেষ-পরিণতি দেখাব।

۞ وَلَقَدْ فَتَنَّا قَبْلَهُمْ قَوْمَ فِرْعَوْنَ وَجَآءَهُمْ رَسُولٌۭ كَرِيمٌ ﴿١٧﴾

তাদের পূর্বে আমি ফেরাউনের সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছি এবং তাদের কাছে আগমন করেছেন একজন সম্মানিত রসূল,

জহুরুল হক

আর তাদের আগে আমরা তো ফির'আউনের লোকদলকে পরীক্ষা করেইছিলাম, আর তাদের নিকট এক সম্মানিত রসূল এসেছিলেন,

أَنْ أَدُّوٓا۟ إِلَىَّ عِبَادَ ٱللَّهِ ۖ إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌۭ ﴿١٨﴾

এই মর্মে যে, আল্লাহর বান্দাদেরকে আমার কাছে অর্পণ কর। আমি তোমাদের জন্য প্রেরীত বিশ্বস্ত রসূল।

জহুরুল হক

এই বলে -- ''আল্লাহ্‌র বান্দাদের আমার নিকট ফেরত দাও, নিঃসন্দেহ আমি তোমাদের প্রতি একজন বিশ্বস্ত বাণীবাহক,

وَأَن لَّا تَعْلُوا۟ عَلَى ٱللَّهِ ۖ إِنِّىٓ ءَاتِيكُم بِسُلْطَٰنٍۢ مُّبِينٍۢ ﴿١٩﴾

আর তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করো না। আমি তোমাদের কাছে প্রকাশ্য প্রমাণ উপস্থিত করছি।

জহুরুল হক

''আর যেন তোমরা আল্লাহ্‌র উপরে উঠতে যেও না, নিঃসন্দেহ আমি তোমাদের কাছে নিয়ে এসেছি এক সুস্পষ্ট দলিল।

وَإِنِّى عُذْتُ بِرَبِّى وَرَبِّكُمْ أَن تَرْجُمُونِ ﴿٢٠﴾

তোমরা যাতে আমাকে প্রস্তরবর্ষণে হত্যা না কর, তজ্জন্যে আমি আমার পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তার শরনাপন্ন হয়েছি।

জহুরুল হক

''আর আমি আলবৎ আশ্রয় চাইছি আমার প্রভু ও তোমাদের প্রভুর কাছে, পাছে তোমরা আমাকে পাথর মে’রে মেরে ফেল।

وَإِن لَّمْ تُؤْمِنُوا۟ لِى فَٱعْتَزِلُونِ ﴿٢١﴾

তোমরা যদি আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না কর, তবে আমার কাছ থেকে দূরে থাক।

জহুরুল হক

''আর যদি তোমরা আমাতে বিশ্বাস না কর তাহলে আমাকে যেতে দাও।’’

فَدَعَا رَبَّهُۥٓ أَنَّ هَٰٓؤُلَآءِ قَوْمٌۭ مُّجْرِمُونَ ﴿٢٢﴾

অতঃপর সে তার পালনকর্তার কাছে দোয়া করল যে, এরা অপরাধী সম্প্রদায়।

জহুরুল হক

তারপর তিনি তাঁর প্রভুকে ডেকে বললেন -- ''এরা হচ্ছে এক অপরাধী জাতি।’’

فَأَسْرِ بِعِبَادِى لَيْلًا إِنَّكُم مُّتَّبَعُونَ ﴿٢٣﴾

তাহলে তুমি আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিবেলায় বের হয়ে পড়। নিশ্চয় তোমাদের পশ্চাদ্ধবন করা হবে।

জহুরুল হক

''তাহলে আমার বান্দাদের নিয়ে রাত্রিকালে রওয়ানা হও, তোমরা অবশ্যই পশ্চাদ্ধাবিত হবে,

وَٱتْرُكِ ٱلْبَحْرَ رَهْوًا ۖ إِنَّهُمْ جُندٌۭ مُّغْرَقُونَ ﴿٢٤﴾

এবং সমুদ্রকে অচল থাকতে দাও। নিশ্চয় ওরা নিমজ্জত বাহিনী।

জহুরুল হক

আর সমুদ্রকে পেছনে রেখে যাও শান্ত অবস্থায়। নিঃসন্দেহ তারা হচ্ছে এমন এক বাহিনী যারা নিমজ্জিত হবে।’’

كَمْ تَرَكُوا۟ مِن جَنَّٰتٍۢ وَعُيُونٍۢ ﴿٢٥﴾

তারা ছেড়ে গিয়েছিল কত উদ্যান ও প্রস্রবন,

জহুরুল হক

তারা পেছনে ফেলে এসেছে কত যে বাগান ও ঝরনা,

وَزُرُوعٍۢ وَمَقَامٍۢ كَرِيمٍۢ ﴿٢٦﴾

কত শস্যক্ষেত্র ও সূরম্য স্থান।

জহুরুল হক

আর খেত-খামার ও মনোরম বাসস্থান,

وَنَعْمَةٍۢ كَانُوا۟ فِيهَا فَٰكِهِينَ ﴿٢٧﴾

কত সুখের উপকরণ, যাতে তারা খোশগল্প করত।

জহুরুল হক

আর ভোগসামগ্রী যাতে তারা অবস্থান করত।

كَذَٰلِكَ ۖ وَأَوْرَثْنَٰهَا قَوْمًا ءَاخَرِينَ ﴿٢٨﴾

এমনিই হয়েছিল এবং আমি ওগুলোর মালিক করেছিলাম ভিন্ন সম্প্রদায়কে।

জহুরুল হক

এইভাবেই, আর এইসব আমরা অন্য এক জাতিকে উত্তরাধিকার করতে দিয়েছিলাম।

فَمَا بَكَتْ عَلَيْهِمُ ٱلسَّمَآءُ وَٱلْأَرْضُ وَمَا كَانُوا۟ مُنظَرِينَ ﴿٢٩﴾

তাদের জন্যে ক্রন্দন করেনি আকাশ ও পৃথিবী এবং তারা অবকাশও পায়নি।

জহুরুল হক

তারপর মহাকাশ ও পৃথিবী তাদের জন্য কাঁদে নি, আর তারা অবকাশপ্রাপ্তও হয়নি।

وَلَقَدْ نَجَّيْنَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ مِنَ ٱلْعَذَابِ ٱلْمُهِينِ ﴿٣٠﴾

আমি বনী-ইসরাঈলকে অপমানজনক শাস্তি থেকে উদ্ধার করছি।

জহুরুল হক

আর আমরা নিশ্চয়ই ইসরাইলের বংশধরদের উদ্ধার করে দিয়েছিলাম লাঞ্ছনা-দায়ক শাস্তি থেকে --

مِن فِرْعَوْنَ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَالِيًۭا مِّنَ ٱلْمُسْرِفِينَ ﴿٣١﴾

ফেরাউন সে ছিল সীমালংঘনকারীদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।

জহুরুল হক

ফির'আউনের থেকে। নিঃসন্দেহ সে ছিল মহাউদ্ধত, সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত।

وَلَقَدِ ٱخْتَرْنَٰهُمْ عَلَىٰ عِلْمٍ عَلَى ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿٣٢﴾

আমি জেনেশুনে তাদেরকে বিশ্ববাসীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম।

জহুরুল হক

আর আমরা অবশ্য জেনে-শুনেই তাদের নির্বাচন করেছিলাম লোকজনের উপরে,

وَءَاتَيْنَٰهُم مِّنَ ٱلْءَايَٰتِ مَا فِيهِ بَلَٰٓؤٌۭا۟ مُّبِينٌ ﴿٣٣﴾

এবং আমি তাদেরকে এমন নিদর্শনাবলী দিয়েছিলাম যাতে ছিল স্পষ্ট সাহায্য।

জহুরুল হক

আর তাদের দিয়েছিলাম কতক নিদর্শনাবলী যার মধ্যে ছিল এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা।

إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ لَيَقُولُونَ ﴿٣٤﴾

কাফেররা বলেই থাকে,

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এরা তো বলেই থাকে --

إِنْ هِىَ إِلَّا مَوْتَتُنَا ٱلْأُولَىٰ وَمَا نَحْنُ بِمُنشَرِينَ ﴿٣٥﴾

প্রথম মৃত্যুর মাধ্যমেই আমাদের সবকিছুর অবসান হবে এবং আমরা পুনরুত্থিত হব না।

জহুরুল হক

''এইটি আমাদের প্রথমবারের মৃত্যু বৈ তো নয়, কাজেই আমরা তো আর পুনরুত্থিত হবো না।

فَأْتُوا۟ بِـَٔابَآئِنَآ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ ﴿٣٦﴾

তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে নিয়ে এস।

জহুরুল হক

''তাহলে আমাদের পিতৃপুরুষদের নিয়ে এস, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’’

أَهُمْ خَيْرٌ أَمْ قَوْمُ تُبَّعٍۢ وَٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ أَهْلَكْنَٰهُمْ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ مُجْرِمِينَ ﴿٣٧﴾

ওরা শ্রেষ্ঠ, না তুব্বার সম্প্রদায় ও তাদের পূর্ববর্তীরা? আমি ওদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি। ওরা ছিল অপরাধী।

জহুরুল হক

এরাই কি ভাল, না তুব্বার লোকেরা, এবং যারা এদের পূর্ববর্তী ছিল? আমরা তাদের ধ্বংস করেছিলাম, কারণ তারা ছিল অপরাধী।

وَمَا خَلَقْنَا ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَٰعِبِينَ ﴿٣٨﴾

আমি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।

জহুরুল হক

আর আমরা মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী আর এ দুইয়ের মধ্যে যা-কিছু আছে তা ছেলে-খেলার জন্য সৃষ্টি করি নি।

مَا خَلَقْنَٰهُمَآ إِلَّا بِٱلْحَقِّ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ ﴿٣٩﴾

আমি এগুলো যথাযথ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছি; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বোঝে না।

জহুরুল হক

আমরা এদুটিকে সত্যের জন্য ভিন্ন সৃষ্টি করি নি, কিন্ত তাদের অধিকাংশই জানে না।

إِنَّ يَوْمَ ٱلْفَصْلِ مِيقَٰتُهُمْ أَجْمَعِينَ ﴿٤٠﴾

নিশ্চয় ফয়সালার দিন তাদের সবারই নির্ধারিত সময়।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ ফয়সালার দিন হচ্ছে তাদের সবার নির্ধারিত দিনকাল,

يَوْمَ لَا يُغْنِى مَوْلًى عَن مَّوْلًۭى شَيْـًۭٔا وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ ﴿٤١﴾

যেদিন কোন বন্ধুই কোন বন্ধুর উপকারে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।

জহুরুল হক

যেদিন এক বন্ধু আরেক বন্ধুর থেকে কোনো প্রকারে লাভবান হবে না, আর তাদের সাহায্যও করা হবে না, --

إِلَّا مَن رَّحِمَ ٱللَّهُ ۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ ﴿٤٢﴾

তবে আল্লাহ যার প্রতি দয়া করেন, তার কথা ভিন্ন। নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী দয়াময়।

জহুরুল হক

তারা ব্যতীত যাদের প্রতি আল্লাহ্ করুণা করেছেন। নিঃসন্দেহ তিনি, তিনিই তো মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা।

إِنَّ شَجَرَتَ ٱلزَّقُّومِ ﴿٤٣﴾

নিশ্চয় যাক্কুম বৃক্ষ

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ যিক্কুম বৃক্ষ,

طَعَامُ ٱلْأَثِيمِ ﴿٤٤﴾

পাপীর খাদ্য হবে;

জহুরুল হক

পাপীদের খাদ্য, --

كَٱلْمُهْلِ يَغْلِى فِى ٱلْبُطُونِ ﴿٤٥﴾

গলিত তাম্রের মত পেটে ফুটতে থাকবে।

জহুরুল হক

গলিত পিতলের মতো, -- পেটের ভেতরে,

كَغَلْىِ ٱلْحَمِيمِ ﴿٤٦﴾

যেমন ফুটে পানি।

জহুরুল হক

ফুটন্ত পানির টগবগ করার মতো।

خُذُوهُ فَٱعْتِلُوهُ إِلَىٰ سَوَآءِ ٱلْجَحِيمِ ﴿٤٧﴾

একে ধর এবং টেনে নিয়ে যাও জাহান্নামের মধ্যস্থলে,

জহুরুল হক

''তাকে পাকড়ো, তারপর তাকে টেনে নিয়ে যাও ভয়ংকর আগুনের মাঝখানে,

ثُمَّ صُبُّوا۟ فَوْقَ رَأْسِهِۦ مِنْ عَذَابِ ٱلْحَمِيمِ ﴿٤٨﴾

অতঃপর তার মাথার উপর ফুটন্ত পানির আযাব ঢেলে দাও,

জহুরুল হক

''তারপর তার মাথার উপরে ঢেলে দাও ফুটন্ত পানির শাস্তি,

ذُقْ إِنَّكَ أَنتَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْكَرِيمُ ﴿٤٩﴾

স্বাদ গ্রহণ কর, তুমি তো সম্মানিত, সম্ভ্রান্ত।

জহুরুল হক

''আস্বাদ কর, তুমি তো ছিলে মহাশক্তিশালী, পরম সম্মানিত!’

إِنَّ هَٰذَا مَا كُنتُم بِهِۦ تَمْتَرُونَ ﴿٥٠﴾

এ সম্পর্কে তোমরা সন্দেহে পতিত ছিলে।

জহুরুল হক

''আলবৎ এ হচ্ছে সেই যে-সন্বন্ধে তোমরা সন্দেহ করতে।’’

إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى مَقَامٍ أَمِينٍۢ ﴿٥١﴾

নিশ্চয় খোদাভীরুরা নিরাপদ স্থানে থাকবে-

জহুরুল হক

অবশ্য ধর্মভীরুরা থাকবে নিরাপদ স্থানে --

فِى جَنَّٰتٍۢ وَعُيُونٍۢ ﴿٥٢﴾

উদ্যানরাজি ও নির্ঝরিণীসমূহে।

জহুরুল হক

বাগানের ও ঝরনার মধ্যে,

يَلْبَسُونَ مِن سُندُسٍۢ وَإِسْتَبْرَقٍۢ مُّتَقَٰبِلِينَ ﴿٥٣﴾

তারা পরিধান করবে চিকন ও পুরু রেশমীবস্ত্র, মুখোমুখি হয়ে বসবে।

জহুরুল হক

তারা পরিধান করবে মিহি রেশম ও পুরু জরিদার পোশাক, পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে।

كَذَٰلِكَ وَزَوَّجْنَٰهُم بِحُورٍ عِينٍۢ ﴿٥٤﴾

এরূপই হবে এবং আমি তাদেরকে আনতলোচনা স্ত্রী দেব।

জহুরুল হক

এইভাবেই! আমরা তাদের জোড় মিলিয়ে দেব আয়তলোচন হূরদের সাথে।

يَدْعُونَ فِيهَا بِكُلِّ فَٰكِهَةٍ ءَامِنِينَ ﴿٥٥﴾

তারা সেখানে শান্ত মনে বিভিন্ন ফল-মূল আনতে বলবে।

জহুরুল হক

সেখানে তারা আনতে বলবে বিবিধ ফলফসল, নিরাপত্তার সাথে।

لَا يَذُوقُونَ فِيهَا ٱلْمَوْتَ إِلَّا ٱلْمَوْتَةَ ٱلْأُولَىٰ ۖ وَوَقَىٰهُمْ عَذَابَ ٱلْجَحِيمِ ﴿٥٦﴾

তারা সেখানে মৃত্যু আস্বাদন করবে না, প্রথম মৃত্যু ব্যতীত এবং আপনার পালনকর্তা তাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করবেন।

জহুরুল হক

তারা সেখানে মৃত্যু আস্বাদন করবে না প্রথমবারের মৃত্যু ব্যতীত; আর তিনি তাদের রক্ষা করবেন ভয়ংকর আগুনের শাস্তি থেকে --

فَضْلًۭا مِّن رَّبِّكَ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ ﴿٥٧﴾

আপনার পালনকর্তার কৃপায় এটাই মহা সাফল্য।

জহুরুল হক

তোমার প্রভুর কাছ থেকে এ এক করুণা। এটি খোদ এক বিরাট সাফল্য।

فَإِنَّمَا يَسَّرْنَٰهُ بِلِسَانِكَ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ ﴿٥٨﴾

আমি আপনার ভাষায় কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা স্মরণ রাখে।

জহুরুল হক

সুতরাং আমরা নিশ্চয় এটিকে তোমার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি যেন তারা মনোনিবেশ করতে পারে।

فَٱرْتَقِبْ إِنَّهُم مُّرْتَقِبُونَ ﴿٥٩﴾

অতএব, আপনি অপেক্ষা করুন, তারাও অপেক্ষা করছে।

জহুরুল হক

সুতরাং তুমি প্রতীক্ষা কর, নিঃসন্দেহ তারাও অপেক্ষমাণ রয়েছে।