Main pages

Surah The private apartments [Al-Hujraat] in Bengali

Surah The private apartments [Al-Hujraat] Ayah 18 Location Madanah Number 49

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تُقَدِّمُوا۟ بَيْنَ يَدَىِ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۖ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌۭ ﴿١﴾

মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও রসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের সামনে তোমরা আগবাড়বে না, আর আল্লাহ্‌কে ভয়ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تَرْفَعُوٓا۟ أَصْوَٰتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ ٱلنَّبِىِّ وَلَا تَجْهَرُوا۟ لَهُۥ بِٱلْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَطَ أَعْمَٰلُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ ﴿٢﴾

মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের গলার আওয়াজ নবীর আওয়াজের উপরে চড়িয়ো না, আর তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চিৎকার করো না যেমন তোমাদের কেউ-কেউ অপরের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি করে, পাছে তোমাদের কাজ-কর্ম বৃথা হয়ে যায়, অথচ তোমরা বুঝতেও পার না।

إِنَّ ٱلَّذِينَ يَغُضُّونَ أَصْوَٰتَهُمْ عِندَ رَسُولِ ٱللَّهِ أُو۟لَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ ٱمْتَحَنَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُمْ لِلتَّقْوَىٰ ۚ لَهُم مَّغْفِرَةٌۭ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ ﴿٣﴾

যারা আল্লাহর রসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে শিষ্টাচারের জন্যে শোধিত করেছেন। তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ যারা আল্লাহ্‌র রসূলের সামনে তাদের আওয়াজ নিচু করে, এরাই হচ্ছে তারা যাদের হৃদয় ধর্ম পরায়ণতার জন্য আল্লাহ্ পরীক্ষা করেছেন। তাদেরই জন্য রয়েছে পরিত্রাণ ও এক মহান প্রতিদান।

إِنَّ ٱلَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِن وَرَآءِ ٱلْحُجُرَٰتِ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ ﴿٤﴾

যারা প্রাচীরের আড়াল থেকে আপনাকে উচুস্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই অবুঝ।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ যারা বাসগৃহগুলোর পেছন থেকে তোমাকে ডাকে তাদের অধিকাংশই বুদ্ধিসুদ্ধি রাখো না।

وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُوا۟ حَتَّىٰ تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًۭا لَّهُمْ ۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ﴿٥﴾

যদি তারা আপনার বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত সবর করত, তবে তা-ই তাদের জন্যে মঙ্গলজনক হত। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

আর যদি তারা ধৈর্য ধরত যতক্ষণ না তুমি তাদের কাছে বেরিয়ে আস তাহলে তাদের জন্য তা বেশি ভাল হতো । আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِن جَآءَكُمْ فَاسِقٌۢ بِنَبَإٍۢ فَتَبَيَّنُوٓا۟ أَن تُصِيبُوا۟ قَوْمًۢا بِجَهَٰلَةٍۢ فَتُصْبِحُوا۟ عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَٰدِمِينَ ﴿٦﴾

মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! যদি কোনো সত্যত্যাগী কোনো খবর নিয়ে তোমাদের কাছে আসে তখন তোমরা যাচাই করে দেখবে, পাছে অজানতে তোমরা কোনো লোকদলকে আঘাত করে বস, আর পরক্ষণেই দুঃখ কর তোমরা যা করেছ সেজন্য।

وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ فِيكُمْ رَسُولَ ٱللَّهِ ۚ لَوْ يُطِيعُكُمْ فِى كَثِيرٍۢ مِّنَ ٱلْأَمْرِ لَعَنِتُّمْ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ حَبَّبَ إِلَيْكُمُ ٱلْإِيمَٰنَ وَزَيَّنَهُۥ فِى قُلُوبِكُمْ وَكَرَّهَ إِلَيْكُمُ ٱلْكُفْرَ وَٱلْفُسُوقَ وَٱلْعِصْيَانَ ۚ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلرَّٰشِدُونَ ﴿٧﴾

তোমরা জেনে রাখ তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রসূল রয়েছেন। তিনি যদি অনেক বিষয়ে তোমাদের আবদার মেনে নেন, তবে তোমরাই কষ্ট পাবে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ঈমানের মহব্বত সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তা হৃদয়গ্রাহী করে দিয়েছেন। পক্ষান্তরে কুফর, পাপাচার ও নাফরমানীর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তারাই সৎপথ অবলম্বনকারী।

জহুরুল হক

আর জেনে রেখো যে তোমাদের মধ্যে আল্লাহ্‌র রসূল রয়েছেন। তাঁকে যদি অধিকাংশ বিষয়ে তোমাদের মেনে চলতে হয়, তাহলে তোমরা নির্ঘাত বিপাকে পড়বে, কিন্তু আল্লাহ্ ধর্মবিশ্বাসকে তোমাদের কাছে প্রিয় করেছেন এবং তোমাদের হৃদয়ে এইটিকে চিত্তাকর্ষক করেছেন, আর তোমাদের কাছে অপ্রিয় করেছেন অবিশ্বাস ও সত্যত্যাগ ও অবাধ্যতা। এরা নিজেরাই সত্যানুগামী --

فَضْلًۭا مِّنَ ٱللَّهِ وَنِعْمَةًۭ ۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌۭ ﴿٨﴾

এটা আল্লাহর কৃপা ও নিয়ামতঃ আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।

জহুরুল হক

আল্লাহ্‌র তরফ থেকে বদান্যতা ও অনুগ্রহ! আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

وَإِن طَآئِفَتَانِ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ ٱقْتَتَلُوا۟ فَأَصْلِحُوا۟ بَيْنَهُمَا ۖ فَإِنۢ بَغَتْ إِحْدَىٰهُمَا عَلَى ٱلْأُخْرَىٰ فَقَٰتِلُوا۟ ٱلَّتِى تَبْغِى حَتَّىٰ تَفِىٓءَ إِلَىٰٓ أَمْرِ ٱللَّهِ ۚ فَإِن فَآءَتْ فَأَصْلِحُوا۟ بَيْنَهُمَا بِٱلْعَدْلِ وَأَقْسِطُوٓا۟ ۖ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلْمُقْسِطِينَ ﴿٩﴾

যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।

জহুরুল হক

আর যদি মুমিনদের দুই দল লড়াই করে তাহলে তাদের উভয়ের মধ্যে শান্তি স্থাপন করো। কিন্তু তাদের একদল যদি অন্যদের বিরুদ্ধে বিবাদ করে তবে তোমরা লড়াই করবে তার সঙ্গে যে বিবাদ করছে, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহ্‌র নির্দেশের প্রতি ফিরে আসে। তারপর যখন তারা ফেরে তখন তাদের উভয়ের মধ্যে শান্তিস্থাপন করো ন্যায়বিচারের সাথে, আর নিরপেক্ষতা অবলন্বন করবে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ নিরপেক্ষতা-অবলন্বনকারীদের ভালবাসেন।

إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌۭ فَأَصْلِحُوا۟ بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ ﴿١٠﴾

মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ মুমিনরা ভাই-ভাই, সুতরাং তোমাদের ভাইদের মধ্যে তোমরা শান্তিস্থাপন করবে, আর তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করবে যেন তোমাদের অনুগ্রহ করা হয়।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا يَسْخَرْ قَوْمٌۭ مِّن قَوْمٍ عَسَىٰٓ أَن يَكُونُوا۟ خَيْرًۭا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَآءٌۭ مِّن نِّسَآءٍ عَسَىٰٓ أَن يَكُنَّ خَيْرًۭا مِّنْهُنَّ ۖ وَلَا تَلْمِزُوٓا۟ أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا۟ بِٱلْأَلْقَٰبِ ۖ بِئْسَ ٱلِٱسْمُ ٱلْفُسُوقُ بَعْدَ ٱلْإِيمَٰنِ ۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ ﴿١١﴾

মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! কোনো লোকদল অন্য লোকদলকে উপহাস করবে না, হয়তো তারা এদের চাইতে বেশি ভাল, আর কোনো নারীরাও অন্য নারীদের করবে না, হয়তো তারা এদের চাইতে বেশী ভাল, আর তোমরা তোমাদের নিজের লোকদের নিন্দা করো না, আর তোমরা পরস্পরকে উপনামে ডেকো না। ঈমান আনার পরে অধার্মিকতার নাম কামানো বড়ই মন্দ। আর যে কেউ না ফেরে, তবে তারাই খোদ অত্যাচারী।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱجْتَنِبُوا۟ كَثِيرًۭا مِّنَ ٱلظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ ٱلظَّنِّ إِثْمٌۭ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا۟ وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًۭا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ تَوَّابٌۭ رَّحِيمٌۭ ﴿١٢﴾

মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! অধিকাংশ ক্ষেত্রে সন্দেহ এড়িয়ে চল, কেননা কোনো কোনো সন্দেহ নিশ্চয়ই পাপজনক। আর তোমরা গুপ্তচরবৃত্তি করো না, আর তোমাদের কেউ-কেউ অন্যদের আড়ালে নিন্দা করো না। তোমাদের কেউ কি চায় যে সে তার মৃত ভাইয়ের মাংস খাবে? নিশ্চিত তোমরা এটি ঘৃণা কর। আর আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ বারবার প্রত্যাবর্তনকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَٰكُم مِّن ذَكَرٍۢ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَٰكُمْ شُعُوبًۭا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓا۟ ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ ٱللَّهِ أَتْقَىٰكُمْ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌۭ ﴿١٣﴾

হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন।

জহুরুল হক

ওহে মানবজাতি! নিঃসন্দেহ আমরা তোমাদের সৃষ্টি করেছি পুরুষ ও নারী থেকে, আর আমরা তোমাদের বানিয়েছি নানান জাতি ও গোত্র যেন তোমরা চিনতে পার। নিশ্চয় আল্লাহ্‌র কাছে তোমাদের মধ্যে সব-চাইতে সম্মানিত সেইজন যে তোমাদের মধ্যে সব- চাইতে বেশি ধর্মভীরু। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পূর্ণ-ওয়াকিফহাল।

۞ قَالَتِ ٱلْأَعْرَابُ ءَامَنَّا ۖ قُل لَّمْ تُؤْمِنُوا۟ وَلَٰكِن قُولُوٓا۟ أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ ٱلْإِيمَٰنُ فِى قُلُوبِكُمْ ۖ وَإِن تُطِيعُوا۟ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ لَا يَلِتْكُم مِّنْ أَعْمَٰلِكُمْ شَيْـًٔا ۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌ ﴿١٤﴾

মরুবাসীরা বলেঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। বলুনঃ তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করনি; বরং বল, আমরা বশ্যতা স্বীকার করেছি। এখনও তোমাদের অন্তরে বিশ্বাস জন্মেনি। যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর, তবে তোমাদের কর্ম বিন্দুমাত্রও নিস্ফল করা হবে না। নিশ্চয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান।

জহুরুল হক

বেদুইনরা বলে -- ''আমরা ঈমান এনেছি।’’ তুমি বলো -- ''তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করো নি, বরং তোমাদের বলা উচিত -- 'আমরা ইসলাম কবুল করেছি’, কেননা তোমাদের অন্তরে ঈমান এখনও প্রবেশ করে নি। আর যদি তোমরা আল্লাহ্‌র ও তাঁর রসূলের আজ্ঞাপালন কর তাহলে তিনি তোমাদের ক্রিয়াকর্ম থেকে কিছুই তোমাদের জন্য কমাবেন না।’’ নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا۟ وَجَٰهَدُوا۟ بِأَمْوَٰلِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ۚ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلصَّٰدِقُونَ ﴿١٥﴾

তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং আল্লাহর পথে প্রাণ ও ধন-সম্পদ দ্বারা জেহাদ করে। তারাই সত্যনিষ্ঠ।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ মুমিন তারাই যারা আল্লাহ্‌তে ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারপরে তারা সন্দেহ পোষণ করেনা, আর তাদের ধনসম্পদ ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করে। এরাই খোদ সত্যনিষ্ঠ।

قُلْ أَتُعَلِّمُونَ ٱللَّهَ بِدِينِكُمْ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۚ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۭ ﴿١٦﴾

বলুনঃ তোমরা কি তোমাদের ধর্ম পরায়ণতা সম্পর্কে আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে ভূমন্ডলে এবং যা কিছু আছে নভোমন্ডলে। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।

জহুরুল হক

তুমি বলো -- ''কী! তোমরা কি আল্লাহ্‌কে জানাতে চাও তোমাদের ধর্ম সম্পর্কে, অথচ আল্লাহ্ সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।’’

يَمُنُّونَ عَلَيْكَ أَنْ أَسْلَمُوا۟ ۖ قُل لَّا تَمُنُّوا۟ عَلَىَّ إِسْلَٰمَكُم ۖ بَلِ ٱللَّهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ أَنْ هَدَىٰكُمْ لِلْإِيمَٰنِ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ ﴿١٧﴾

তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না। বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাক।

জহুরুল হক

তারা তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছে যেহেতু তারা মুসলিম হয়েছে। তুমি বল -- ''তোমাদের ইসলাম আমার প্রতি কোনো অনুগ্রহ বলে ভেবো না, বরং আল্লাহ্‌ই তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন যেহেতু তিনি ধর্মবিশ্বাসের প্রতি তোমাদের পরিচালিত করেছেন, যদি তোমরা সত্যপরায়ণ হও।’’

إِنَّ ٱللَّهَ يَعْلَمُ غَيْبَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۚ وَٱللَّهُ بَصِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ ﴿١٨﴾

আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের অদৃশ্য বিষয় জানেন, তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আল্লাহ মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়গুলো জানেন। আর তোমরা যা করছ সে-সবের তো তিনি সর্বদ্রষ্টা।