Main pages

Surah The moon [Al-Qamar] in Bengali

Surah The moon [Al-Qamar] Ayah 55 Location Maccah Number 54

ٱقْتَرَبَتِ ٱلسَّاعَةُ وَٱنشَقَّ ٱلْقَمَرُ ﴿١﴾

কেয়ামত আসন্ন, চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে।

জহুরুল হক

ঘড়িঘন্টা সমাগত, আর চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হয়েছে।

وَإِن يَرَوْا۟ ءَايَةًۭ يُعْرِضُوا۟ وَيَقُولُوا۟ سِحْرٌۭ مُّسْتَمِرٌّۭ ﴿٢﴾

তারা যদি কোন নিদর্শন দেখে তবে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এটা তো চিরাগত জাদু।

জহুরুল হক

আর যদি তারা কোনো নিদর্শন দেখে, তারা ফিরে যায় ও বলে -- ''এক জবরদস্ত জাদু।’’

وَكَذَّبُوا۟ وَٱتَّبَعُوٓا۟ أَهْوَآءَهُمْ ۚ وَكُلُّ أَمْرٍۢ مُّسْتَقِرٌّۭ ﴿٣﴾

তারা মিথ্যারোপ করছে এবং নিজেদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করছে। প্রত্যেক কাজ যথাসময়ে স্থিরীকৃত হয়।

জহুরুল হক

আর তারা প্রত্যাখ্যান করে এবং তারা তাদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করে, অথচ প্রত্যেক বিষয়েরই নিস্পত্তি হয়েই গেছে।

وَلَقَدْ جَآءَهُم مِّنَ ٱلْأَنۢبَآءِ مَا فِيهِ مُزْدَجَرٌ ﴿٤﴾

তাদের কাছে এমন সংবাদ এসে গেছে, যাতে সাবধানবাণী রয়েছে।

জহুরুল হক

আর তাদের কাছে অবশ্য কিছুটা সংবাদ এসেই গেছে যাতে রয়েছে প্রতিষেধক --

حِكْمَةٌۢ بَٰلِغَةٌۭ ۖ فَمَا تُغْنِ ٱلنُّذُرُ ﴿٥﴾

এটা পরিপূর্ণ জ্ঞান, তবে সতর্ককারীগণ তাদের কোন উপকারে আসে না।

জহুরুল হক

এক সুপরিণত জ্ঞান, কিন্তু এ সতর্কীকরণ কোনো কাজে আসে না।

فَتَوَلَّ عَنْهُمْ ۘ يَوْمَ يَدْعُ ٱلدَّاعِ إِلَىٰ شَىْءٍۢ نُّكُرٍ ﴿٦﴾

অতএব, আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। যেদিন আহবানকারী আহবান করবে এক অপ্রিয় পরিণামের দিকে,

জহুরুল হক

কাজেই তাদের থেকে ফিরে এস। একদিন আহ্বানকারী আহ্বান করবেন এক অপ্রীতিকর ব্যাপারের প্রতি --

خُشَّعًا أَبْصَٰرُهُمْ يَخْرُجُونَ مِنَ ٱلْأَجْدَاثِ كَأَنَّهُمْ جَرَادٌۭ مُّنتَشِرٌۭ ﴿٧﴾

তারা তখন অবনমিত নেত্রে কবর থেকে বের হবে বিক্ষিপ্ত পংগপাল সদৃশ।

জহুরুল হক

তাদের চোখ অবনত অবস্থায়, তারা বেরিয়ে আসতে থাকবে কবর থেকে যেন তারা ছড়িয়ে পড়া পঙ্গপাল --

مُّهْطِعِينَ إِلَى ٱلدَّاعِ ۖ يَقُولُ ٱلْكَٰفِرُونَ هَٰذَا يَوْمٌ عَسِرٌۭ ﴿٨﴾

তারা আহবানকারীর দিকে দৌড়াতে থাকবে। কাফেরা বলবেঃ এটা কঠিন দিন।

জহুরুল হক

ওরা আহবায়কের প্রতি ছুটে আসবে। অবিশ্বাসীরা বলবে -- ''এইটি বড় কঠিন দিন!’’

۞ كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍۢ فَكَذَّبُوا۟ عَبْدَنَا وَقَالُوا۟ مَجْنُونٌۭ وَٱزْدُجِرَ ﴿٩﴾

তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়ও মিথ্যারোপ করেছিল। তারা মিথ্যারোপ করেছিল আমার বান্দা নূহের প্রতি এবং বলেছিলঃ এ তো উম্মাদ। তাঁরা তাকে হুমকি প্রদর্শন করেছিল।

জহুরুল হক

এদের আগে নূহ-এর লোকদল সত্যপ্রত্যাখ্যান করেছিল, ফলে তারা আমাদের বান্দাকে প্রত্যাখ্যান করল ও বললে -- ''এক টি পাগল’’! আর তাঁকে অবজ্ঞা করা হয়েছিল।

فَدَعَا رَبَّهُۥٓ أَنِّى مَغْلُوبٌۭ فَٱنتَصِرْ ﴿١٠﴾

অতঃপর সে তার পালনকর্তাকে ডেকে বললঃ আমি অক্ষম, অতএব, তুমি প্রতিবিধান কর।

জহুরুল হক

সেজন্য তিনি তাঁর প্রভুকে ডেকে বললেন -- ''আমি তো পরাভূত হয়ে পড়েছি, অতএব তুমি সাহায্য করো।’’

فَفَتَحْنَآ أَبْوَٰبَ ٱلسَّمَآءِ بِمَآءٍۢ مُّنْهَمِرٍۢ ﴿١١﴾

তখন আমি খুলে দিলাম আকাশের দ্বার প্রবল বারিবর্ষণের মাধ্যমে।

জহুরুল হক

তখন আমরা আসমানের দরজাগুলো খুলে দিলাম বর্ষণশীল পানির দ্বারা,

وَفَجَّرْنَا ٱلْأَرْضَ عُيُونًۭا فَٱلْتَقَى ٱلْمَآءُ عَلَىٰٓ أَمْرٍۢ قَدْ قُدِرَ ﴿١٢﴾

এবং ভুমি থেকে প্রবাহিত করলাম প্রস্রবণ। অতঃপর সব পানি মিলিত হল এক পরিকম্পিত কাজে।

জহুরুল হক

আর জমিনকে উৎক্ষেপ করতে দিলাম ঝরনাধারায়, ফলে পানি মিলিত হয়ে গেল এক পূর্বনির্ধারিত ব্যাপারে,

وَحَمَلْنَٰهُ عَلَىٰ ذَاتِ أَلْوَٰحٍۢ وَدُسُرٍۢ ﴿١٣﴾

আমি নূহকে আরোহণ করালাম এক কাষ্ঠ ও পেরেক নির্মিত জলযানে।

জহুরুল হক

আর আমরা তাঁকে বহন করলাম তাতে যা ছিল তক্তা ও পেরেক সন্বলিত, --

تَجْرِى بِأَعْيُنِنَا جَزَآءًۭ لِّمَن كَانَ كُفِرَ ﴿١٤﴾

যা চলত আমার দৃষ্টি সামনে। এটা তার পক্ষ থেকে প্রতিশোধ ছিল, যাকে প্রত্যখ্যান করা হয়েছিল।

জহুরুল হক

তা ভেসে চলেছিল আমাদের চোখের সামনে, -- এক প্রতিদান তাঁর জন্য যাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।

وَلَقَد تَّرَكْنَٰهَآ ءَايَةًۭ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍۢ ﴿١٥﴾

আমি একে এক নিদর্শনরূপে রেখে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

জহুরুল হক

আর আমরা অবশ্য এটিকে রেখে দিয়েছি এক নিদর্শনরূপে। কিন্তু কেউ কি রয়েছে উপদেশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত?

فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِى وَنُذُرِ ﴿١٦﴾

কেমন কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

জহুরুল হক

সুতরাং কেমন হয়েছিল আমার শাস্তি ও আমার সতর্কীকরণ!

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍۢ ﴿١٧﴾

আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

জহুরুল হক

আর আমরা তো অবশ্যই কুরআনকে উপদেশগ্রহণের জন্য সহজবোধ্য করে দিয়েছি, কিন্তু কেউ কি আছে যে উপদেশপ্রাপ্তদের মধ্যেকার?

كَذَّبَتْ عَادٌۭ فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِى وَنُذُرِ ﴿١٨﴾

আদ সম্প্রদায় মিথ্যারোপ করেছিল, অতঃপর কেমন কঠোর হয়েছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

জহুরুল হক

আর 'আদ-জাতি সত্যপ্রত্যাখ্যান করেছিল, কাজেই কেমন হয়েছিল আমার শাস্তি ও আমার সতর্কীকরণ!

إِنَّآ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيحًۭا صَرْصَرًۭا فِى يَوْمِ نَحْسٍۢ مُّسْتَمِرٍّۢ ﴿١٩﴾

আমি তাদের উপর প্রেরণ করেছিলাম ঝঞ্জাবায়ু এক চিরাচরিত অশুভ দিনে।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা তাদের উপরে এক চরম দুর্ভাগ্যের দিনে পাঠিয়েছিলাম এক প্রচন্ড ঝড়-তোফান,

تَنزِعُ ٱلنَّاسَ كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍۢ مُّنقَعِرٍۢ ﴿٢٠﴾

তা মানুষকে উৎখাত করছিল, যেন তারা উৎপাটিত খর্জুর বৃক্ষের কান্ড।

জহুরুল হক

যা মানুষকে উড়িয়ে নিয়েছিল, যেন তারা ছিল উৎপাটিত খেজুরগাছের গুঁড়ি।

فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِى وَنُذُرِ ﴿٢١﴾

অতঃপর কেমন কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

জহুরুল হক

সুতরাং কেমন হয়েছিল আমার শাস্তি ও আমার সতর্কীকরণ?

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍۢ ﴿٢٢﴾

আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

জহুরুল হক

কাজেই আমরা আলবৎ কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজবোধ্য করে দিয়েছি, কিন্তু কেউ কি হবে উপদেশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত?

كَذَّبَتْ ثَمُودُ بِٱلنُّذُرِ ﴿٢٣﴾

সামুদ সম্প্রদায় সতর্ককারীদের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল।

জহুরুল হক

ছামুদ-জাতিও সতর্কীকরণ প্রত্যাখ্যান করেছিল।

فَقَالُوٓا۟ أَبَشَرًۭا مِّنَّا وَٰحِدًۭا نَّتَّبِعُهُۥٓ إِنَّآ إِذًۭا لَّفِى ضَلَٰلٍۢ وَسُعُرٍ ﴿٢٤﴾

তারা বলেছিলঃ আমরা কি আমাদেরই একজনের অনুসরণ করব? তবে তো আমরা বিপথগামী ও বিকার গ্রস্থরূপে গণ্য হব।

জহুরুল হক

কাজেই তারা বলেছিল -- ''কী! আমাদের মধ্যেকার মানুষই একজন, তাকেই কি আমরা অনুসরণ করব? সেক্ষেত্রে আমরা তো নিশ্চয়ই বিপথগামী হব ও পাগলামিতে পড়ব।

أَءُلْقِىَ ٱلذِّكْرُ عَلَيْهِ مِنۢ بَيْنِنَا بَلْ هُوَ كَذَّابٌ أَشِرٌۭ ﴿٢٥﴾

আমাদের মধ্যে কি তারই প্রতি উপদেশ নাযিল করা হয়েছে? বরং সে একজন মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।

জহুরুল হক

''আমাদের মধ্যে থেকে স্মারক কি তার উপরেই পতিত হল? বস্তুত সে একজন ডাহা মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।’’

سَيَعْلَمُونَ غَدًۭا مَّنِ ٱلْكَذَّابُ ٱلْأَشِرُ ﴿٢٦﴾

এখন আগামীকল্যই তারা জানতে পারবে কে মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক।

জহুরুল হক

কালকেই তারা ত্বরায় জানতে পারবে কে মিথ্যুক, কে দাম্ভিক।

إِنَّا مُرْسِلُوا۟ ٱلنَّاقَةِ فِتْنَةًۭ لَّهُمْ فَٱرْتَقِبْهُمْ وَٱصْطَبِرْ ﴿٢٧﴾

আমি তাদের পরীক্ষার জন্য এক উষ্ট্রী প্রেরণ করব, অতএব, তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখ এবং সবর কর।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা একটি উষ্ট্রিকে পাঠাতে যাচ্ছি তাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ, সেজন্য তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখো এবং ধৈর্যধারণ করো।

وَنَبِّئْهُمْ أَنَّ ٱلْمَآءَ قِسْمَةٌۢ بَيْنَهُمْ ۖ كُلُّ شِرْبٍۢ مُّحْتَضَرٌۭ ﴿٢٨﴾

এবং তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, তাদের মধ্যে পানির পালা নির্ধারিত হয়েছে এবং পালাক্রমে উপস্থিত হতে হবে।

জহুরুল হক

আর তাদের জানিয়ে দাও যে পানির ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে ভাগাভাগি রয়েছে, প্রত্যেক জলপানে হাজিরা থাকবে।

فَنَادَوْا۟ صَاحِبَهُمْ فَتَعَاطَىٰ فَعَقَرَ ﴿٢٩﴾

অতঃপর তারা তাদের সঙ্গীকে ডাকল। সে তাকে ধরল এবং বধ করল।

জহুরুল হক

কিন্তু তারা তাদের সেঙাৎকে ডাক দিল, তখন সে ধরল ও কেটে ফেলল।

فَكَيْفَ كَانَ عَذَابِى وَنُذُرِ ﴿٣٠﴾

অতঃপর কেমন কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

জহুরুল হক

পরিণামে কেমন হয়েছিল আমার শাস্তি ও আমার সতর্কীকরণ!

إِنَّآ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ صَيْحَةًۭ وَٰحِدَةًۭ فَكَانُوا۟ كَهَشِيمِ ٱلْمُحْتَظِرِ ﴿٣١﴾

আমি তাদের প্রতি একটিমাত্র নিনাদ প্রেরণ করেছিলাম। এতেই তারা হয়ে গেল শুষ্ক শাখাপল্লব নির্মিত দলিত খোয়াড়ের ন্যায়।

জহুরুল হক

আমরা অবশ্যই তাদের উপরে পাঠিয়েছিলাম একটিমাত্র মহাগর্জন, ফলে তারা হয়ে গেল খোঁয়াড়-প্রস্তুতকারীর শুকনো-ভাঙ্গা ডালপালার ন্যায়।

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍۢ ﴿٣٢﴾

আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

জহুরুল হক

আর আমরা নিশ্চয়ই কুরআনকে উপদেশ-গ্রহণের জন্য সহজবোধ্য করে দিয়েছি, কিন্তু কেউ কি রয়েছে উপদেশপ্রাপ্তদের অন্যতম?

كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوطٍۭ بِٱلنُّذُرِ ﴿٣٣﴾

লূত-সম্প্রদায় সতর্ককারীদের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল।

জহুরুল হক

লুত-এর লোকদলও সতর্কীকরণ প্রত্যাখ্যান করেছিল।

إِنَّآ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ حَاصِبًا إِلَّآ ءَالَ لُوطٍۢ ۖ نَّجَّيْنَٰهُم بِسَحَرٍۢ ﴿٣٤﴾

আমি তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম প্রস্তর বর্ষণকারী প্রচন্ড ঘূর্ণিবায়ু; কিন্তু লূত পরিবারের উপর নয়। আমি তাদেরকে রাতের শেষপ্রহরে উদ্ধার করেছিলাম।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা তাদের উপরে পাঠিয়েছিলাম এক পাথর বর্ষণকারী ঝড়, -- লুত-এর পরিজনদের ব্যতীত, আমরা তাদের উদ্ধার করেছিলাম শেষরাতে --

نِّعْمَةًۭ مِّنْ عِندِنَا ۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِى مَن شَكَرَ ﴿٣٥﴾

আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ স্বরূপ। যারা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে, আমি তাদেরকে এভাবে পুরস্কৃত করে থকি।

জহুরুল হক

আমাদের তরফ থেকে এক অনুগ্রহ। এইভাবেই আমরা পুরস্কার দিই যে কৃতজ্ঞতা দেখায় তাকে।

وَلَقَدْ أَنذَرَهُم بَطْشَتَنَا فَتَمَارَوْا۟ بِٱلنُّذُرِ ﴿٣٦﴾

লূত (আঃ) তাদেরকে আমার প্রচন্ড পাকড়াও সম্পর্কে সতর্ক করেছিল। অতঃপর তারা সতর্কবাণী সম্পর্কে বাকবিতন্ডা করেছিল।

জহুরুল হক

আর তিনি তো ইতিপূর্বেই তাদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন আমাদের ভীষণভাবে পাকড়ানো সম্পর্কে, কিন্তু তারা আমার সতর্কীকরণ সন্বন্ধে কথা-কাটাকাটি করছিল।

وَلَقَدْ رَٰوَدُوهُ عَن ضَيْفِهِۦ فَطَمَسْنَآ أَعْيُنَهُمْ فَذُوقُوا۟ عَذَابِى وَنُذُرِ ﴿٣٧﴾

তারা লূতের (আঃ) কাছে তার মেহমানদেরকে দাবী করেছিল। তখন আমি তাদের চক্ষু লোপ করে দিলাম। অতএব, আস্বাদন কর আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।

জহুরুল হক

আর তারা অবশ্য তাঁর কাছ থেকে তাঁর অতিথিদের চেয়েছিল, তখন আমরা তাদের চোখগুলোকে শেষ করে দিয়েছিলাম, ''অতএব আমার শাস্তি আস্বাদন কর আমার সতর্কীকরণের পরে।’’

وَلَقَدْ صَبَّحَهُم بُكْرَةً عَذَابٌۭ مُّسْتَقِرٌّۭ ﴿٣٨﴾

তাদেরকে প্রত্যুষে নির্ধারিত শাস্তি আঘাত হেনেছিল।

জহুরুল হক

আর অবশ্য নির্ধারিত শাস্তি ভোরবেলাতে তাদের উপরে পড়েছিল।

فَذُوقُوا۟ عَذَابِى وَنُذُرِ ﴿٣٩﴾

অতএব, আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী আস্বাদন কর।

জহুরুল হক

''আমার শাস্তি এখন আস্বাদন কর আমার সতর্কীকরণের পরে?’’

وَلَقَدْ يَسَّرْنَا ٱلْقُرْءَانَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍۢ ﴿٤٠﴾

আমি কোরআনকে বোঝবার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

জহুরুল হক

আর আমরা তো নিশ্চয়ই কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজবোধ্য করে দিয়েইছি, কিন্তু কে আছে যে উপদেশপ্রাপ্তদের মধ্যেকার?

وَلَقَدْ جَآءَ ءَالَ فِرْعَوْنَ ٱلنُّذُرُ ﴿٤١﴾

ফেরাউন সম্প্রদায়ের কাছেও সতর্ককারীগণ আগমন করেছিল।

জহুরুল হক

আর অবশ্য ফিরআউনের লোকদের কাছে সতর্কীকরণ এসেছিল।

كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا كُلِّهَا فَأَخَذْنَٰهُمْ أَخْذَ عَزِيزٍۢ مُّقْتَدِرٍ ﴿٤٢﴾

তারা আমার সকল নিদর্শনের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল। অতঃপর আমি পরাভূতকারী, পরাক্রমশালীর ন্যায় তাদেরকে পাকড়াও করলাম।

জহুরুল হক

তারা আমাদের নিদর্শনসমূহ -- তাদের সবক’টি, প্রত্যাখ্যান করেছিল, সেজন্য আমরা তাদের পাকড়াও করেছিলাম মহাশক্তিশালী পরমক্ষমতাবানের পাকড়ানোর দ্বারা।

أَكُفَّارُكُمْ خَيْرٌۭ مِّنْ أُو۟لَٰٓئِكُمْ أَمْ لَكُم بَرَآءَةٌۭ فِى ٱلزُّبُرِ ﴿٤٣﴾

তোমাদের মধ্যকার কাফেররা কি তাদের চাইতে শ্রেষ্ঠ ? না তোমাদের মুক্তির সনদপত্র রয়েছে কিতাবসমূহে?

জহুরুল হক

তোমাদের অবিশ্বাসীরা কি এদের চাইতে ভাল, না তোমাদের জন্য অব্যাহতি রয়েছে ধর্মগ্রন্থের মধ্যে?

أَمْ يَقُولُونَ نَحْنُ جَمِيعٌۭ مُّنتَصِرٌۭ ﴿٤٤﴾

না তারা বলে যে, আমারা এক অপরাজেয় দল?

জহুরুল হক

অথবা তারা কি বলে -- ''আমরা পরস্পরের সাহায্যকারী আস্ত একটা দল’’?

سَيُهْزَمُ ٱلْجَمْعُ وَيُوَلُّونَ ٱلدُّبُرَ ﴿٤٥﴾

এ দল তো সত্ত্বরই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে।

জহুরুল হক

শীঘ্রই এ লোকদল বিধবস্ত হবে এবং পৃস্প্রদর্শন করে ফিরে যাবে।

بَلِ ٱلسَّاعَةُ مَوْعِدُهُمْ وَٱلسَّاعَةُ أَدْهَىٰ وَأَمَرُّ ﴿٤٦﴾

বরং কেয়ামত তাদের প্রতিশ্রুত সময় এবং কেয়ামত ঘোরতর বিপদ ও তিক্ততর।

জহুরুল হক

বস্তুত ঘড়িঘন্টাই তাদের নির্ধারিত স্থানকাল, আর সেই ঘড়িঘন্টা হবে অতি কঠোর ও বড় তিক্ত।

إِنَّ ٱلْمُجْرِمِينَ فِى ضَلَٰلٍۢ وَسُعُرٍۢ ﴿٤٧﴾

নিশ্চয় অপরাধীরা পথভ্রষ্ট ও বিকারগ্রস্ত।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ অপরাধীরা বিভ্রান্ত ও বিকারগ্রস্ত হবে।

يَوْمَ يُسْحَبُونَ فِى ٱلنَّارِ عَلَىٰ وُجُوهِهِمْ ذُوقُوا۟ مَسَّ سَقَرَ ﴿٤٨﴾

যেদিন তাদেরকে মুখ হিঁচড়ে টেনে নেয়া হবে জাহান্নামে, বলা হবেঃ অগ্নির খাদ্য আস্বাদন কর।

জহুরুল হক

সেই দিন তাদের মুখ হেচঁড়ে তাদের টেনে নিয়ে যাওয়া হবে আগুনের মধ্যে -- ''জ্বালাময় আগুনের স্পর্শ আস্বাদন করো!’’

إِنَّا كُلَّ شَىْءٍ خَلَقْنَٰهُ بِقَدَرٍۢ ﴿٤٩﴾

আমি প্রত্যেক বস্তুকে পরিমিতরূপে সৃষ্টি করেছি।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ প্রত্যেকটি জিনিস -- আমরা এটি সৃষ্টি করেছি পরিমাপ অনুসারে।

وَمَآ أَمْرُنَآ إِلَّا وَٰحِدَةٌۭ كَلَمْحٍۭ بِٱلْبَصَرِ ﴿٥٠﴾

আমার কাজ তো এক মুহূর্তে চোখের পলকের মত।

জহুরুল হক

আর আমাদের আদেশ একবার বৈ তো নয়, চোখের পলকের ন্যায়।

وَلَقَدْ أَهْلَكْنَآ أَشْيَاعَكُمْ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍۢ ﴿٥١﴾

আমি তোমাদের সমমনা লোকদেরকে ধ্বংস করেছি, অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?

জহুরুল হক

আর আমরা তো তোমাদের সেঙাৎদের ধ্বংস করে দিয়েছিলাম, কিন্তু কেউ কি রয়েছে উপদেশপ্রাপ্তদের মধ্যেকার?

وَكُلُّ شَىْءٍۢ فَعَلُوهُ فِى ٱلزُّبُرِ ﴿٥٢﴾

তারা যা কিছু করেছে, সবই আমলনামায় লিপিবদ্ধ আছে।

জহুরুল হক

আর তারা যা করেছে তার সব-কিছুই নথিপত্রে রয়েছে।

وَكُلُّ صَغِيرٍۢ وَكَبِيرٍۢ مُّسْتَطَرٌ ﴿٥٣﴾

ছোট ও বড় সবই লিপিবদ্ধ।

জহুরুল হক

আর ছোট ও বড় প্রত্যেকটি বিষয় লিপিবদ্ধ আছে।

إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّٰتٍۢ وَنَهَرٍۢ ﴿٥٤﴾

খোদাভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও নির্ঝরিণীতে।

জহুরুল হক

ধর্মভীরুরা অবশ্যই থাকবে ঝরনাবেষ্টিত জান্নাতে --

فِى مَقْعَدِ صِدْقٍ عِندَ مَلِيكٍۢ مُّقْتَدِرٍۭ ﴿٥٥﴾

যোগ্য আসনে, সর্বাধিপতি সম্রাটের সান্নিধ্যে।

জহুরুল হক

সত্যের আসনে সর্বশক্তিমান রাজাধিরাজের সমক্ষে!