Setting
Surah The tidings [An-Naba] in Bengali
عَمَّ يَتَسَآءَلُونَ ﴿١﴾
তারা পরস্পরে কি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে?
কি সন্বন্ধে তারা পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে?
ٱلَّذِى هُمْ فِيهِ مُخْتَلِفُونَ ﴿٣﴾
যে সম্পর্কে তারা মতানৈক্য করে।
যে বিষয়ে তারা মতানৈক্যের মধ্যে রয়েছে।
ثُمَّ كَلَّا سَيَعْلَمُونَ ﴿٥﴾
অতঃপর না, সত্বর তারা জানতে পারবে।
পুনশ্চ, না, তারা অতিশীঘ্রই জানতে পারবে।
أَلَمْ نَجْعَلِ ٱلْأَرْضَ مِهَٰدًۭا ﴿٦﴾
আমি কি করিনি ভূমিকে বিছানা
আমরা কি পৃথিবীটাকে পাতানো-বিছানারূপে বানাই নি,
وَخَلَقْنَٰكُمْ أَزْوَٰجًۭا ﴿٨﴾
আমি তোমাদেরকে জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছি,
আর আমরা তোমাদের সৃষ্টি করেছি জোড়ায়-জোড়ায়;
وَجَعَلْنَا نَوْمَكُمْ سُبَاتًۭا ﴿٩﴾
তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী,
আর তোমাদের ঘুমকে করেছি বিশ্রাম,
وَجَعَلْنَا ٱلنَّهَارَ مَعَاشًۭا ﴿١١﴾
দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়,
আর দিনকে করেছি জীবিকার সংস্থান।
وَبَنَيْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعًۭا شِدَادًۭا ﴿١٢﴾
নির্মান করেছি তোমাদের মাথার উপর মজবুত সপ্ত-আকাশ।
আর তোমাদের উপরে আমরা বানিয়েছি সাত মজবুত জিনিস,
وَجَعَلْنَا سِرَاجًۭا وَهَّاجًۭا ﴿١٣﴾
এবং একটি উজ্জ্বল প্রদীপ সৃষ্টি করেছি।
আর তৈরি করেছি একটি অত্যুজ্জ্বল প্রদীপ,
وَأَنزَلْنَا مِنَ ٱلْمُعْصِرَٰتِ مَآءًۭ ثَجَّاجًۭا ﴿١٤﴾
আমি জলধর মেঘমালা থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত করি,
আর ঝরন্ত-মেঘ থেকে আমরা বর্ষণ করি প্রচুর বৃষ্টি,
لِّنُخْرِجَ بِهِۦ حَبًّۭا وَنَبَاتًۭا ﴿١٥﴾
যাতে তদ্দ্বারা উৎপন্ন করি শস্য, উদ্ভিদ।
যেন তার দ্বারা গজাতে পারি শস্য ও গাছপালা,
إِنَّ يَوْمَ ٱلْفَصْلِ كَانَ مِيقَٰتًۭا ﴿١٧﴾
নিশ্চয় বিচার দিবস নির্ধারিত রয়েছে।
নিশ্চয় ফয়সালা করার দিনের এক নির্ধারিত সময়কাল আছে --
يَوْمَ يُنفَخُ فِى ٱلصُّورِ فَتَأْتُونَ أَفْوَاجًۭا ﴿١٨﴾
যেদিন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন তোমরা দলে দলে সমাগত হবে।
সেইদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেওয়া হবে, তখন তোমরা আসবে দলে-দলে,
وَفُتِحَتِ ٱلسَّمَآءُ فَكَانَتْ أَبْوَٰبًۭا ﴿١٩﴾
আকাশ বিদীর্ণ হয়ে; তাতে বহু দরজা সৃষ্টি হবে।
আর আকাশকে বিদীর্ণ করা হবে, সুতরাং তা হবে বহু-দরজা-বিশিষ্ট।
وَسُيِّرَتِ ٱلْجِبَالُ فَكَانَتْ سَرَابًا ﴿٢٠﴾
এবং পর্বতমালা চালিত হয়ে মরীচিকা হয়ে যাবে।
আর পাহাড়গুলো ধসে পড়বে, ফলে তা হবে বালুময়-মরীচিকা।
إِنَّ جَهَنَّمَ كَانَتْ مِرْصَادًۭا ﴿٢١﴾
নিশ্চয় জাহান্নাম প্রতীক্ষায় থাকবে,
নিঃসন্দেহ জাহান্নাম -- তা প্রতীক্ষায় রয়েছে --
لِّلطَّٰغِينَ مَـَٔابًۭا ﴿٢٢﴾
সীমালংঘনকারীদের আশ্রয়স্থলরূপে।
সীমালংঘনকারীদের জন্য প্রত্যাবর্তনস্থল; --
لَّٰبِثِينَ فِيهَآ أَحْقَابًۭا ﴿٢٣﴾
তারা তথায় শতাব্দীর পর শতাব্দী অবস্থান করবে।
সেখানে তারা অবস্থান করবে যুগ যুগ ধরে।
لَّا يَذُوقُونَ فِيهَا بَرْدًۭا وَلَا شَرَابًا ﴿٢٤﴾
তথায় তারা কোন শীতল এবং পানীয় আস্বাদন করবে না;
তারা সেখানে স্বাদ গ্রহণ করবে না শীতলতার, না কোনো পানীয়ের --
إِلَّا حَمِيمًۭا وَغَسَّاقًۭا ﴿٢٥﴾
কিন্তু ফুটন্ত পানি ও পূঁজ পাবে।
শুধু ফুটন্ত জল ও হিমশীতল পানীয় ব্যতীত, --
إِنَّهُمْ كَانُوا۟ لَا يَرْجُونَ حِسَابًۭا ﴿٢٧﴾
নিশ্চয় তারা হিসাব-নিকাশ আশা করত না।
নিঃসন্দেহ তারা হিসাবের কথা ভাবে নি,
وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا كِذَّابًۭا ﴿٢٨﴾
এবং আমার আয়াতসমূহে পুরোপুরি মিথ্যারোপ করত।
আর আমাদের বাণীসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছিল জোর প্রত্যাখ্যানে।
وَكُلَّ شَىْءٍ أَحْصَيْنَٰهُ كِتَٰبًۭا ﴿٢٩﴾
আমি সবকিছুই লিপিবদ্ধ করে সংরক্ষিত করেছি।
আর সব-কিছুই -- আমরা তা লিখিতভাবে সংরক্ষণ করছি,
فَذُوقُوا۟ فَلَن نَّزِيدَكُمْ إِلَّا عَذَابًا ﴿٣٠﴾
অতএব, তোমরা আস্বাদন কর, আমি কেবল তোমাদের শাস্তিই বৃদ্ধি করব।
সুতরাং স্বাদ গ্রহণ করো, আমরা তোমাদের বাড়িয়ে দেবো না শাস্তি ব্যতীত।
إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ مَفَازًا ﴿٣١﴾
পরহেযগারদের জন্যে রয়েছে সাফল্য।
ধর্মভীরুদের জন্য নিশ্চয়ই রয়েছে মহাসাফল্য --
لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًۭا وَلَا كِذَّٰبًۭا ﴿٣٥﴾
তারা তথায় অসার ও মিথ্যা বাক্য শুনবে না।
তারা সেখানে খেলো কথা শুনবে না, আর মিথ্যাকথাও নয়।
جَزَآءًۭ مِّن رَّبِّكَ عَطَآءً حِسَابًۭا ﴿٣٦﴾
এটা আপনার পালনকর্তার তরফ থেকে যথোচিত দান,
তোমার প্রভুর কাছ থেকে প্রতিফল, -- হিসাবমতো পুরস্কার, --
رَّبِّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ٱلرَّحْمَٰنِ ۖ لَا يَمْلِكُونَ مِنْهُ خِطَابًۭا ﴿٣٧﴾
যিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা, দয়াময়, কেউ তাঁর সাথে কথার অধিকারী হবে না।
মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর এবং তাদের মধ্যে যা-কিছু আছে তার প্রভু, পরম করুণাময়, তাঁর কাছে বক্তব্য রাখার কোনো ক্ষমতা তারা রাখে না।
يَوْمَ يَقُومُ ٱلرُّوحُ وَٱلْمَلَٰٓئِكَةُ صَفًّۭا ۖ لَّا يَتَكَلَّمُونَ إِلَّا مَنْ أَذِنَ لَهُ ٱلرَّحْمَٰنُ وَقَالَ صَوَابًۭا ﴿٣٨﴾
যেদিন রূহ ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে। দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দিবেন, সে ব্যতিত কেউ কথা বলতে পারবে না এবং সে সত্যকথা বলবে।
সেইদিন আর-রূহ ও ফিরিশ্তাগণ সারবেঁধে দাঁড়াবে, পরম করুণাময় যাকে অনুমতি দেবেন সে ব্যতীত তাদের কেউ কথা বলতে পারবে না, আর সে সঠিক কথা বলবে।
ذَٰلِكَ ٱلْيَوْمُ ٱلْحَقُّ ۖ فَمَن شَآءَ ٱتَّخَذَ إِلَىٰ رَبِّهِۦ مَـَٔابًا ﴿٣٩﴾
এই দিবস সত্য। অতঃপর যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার কাছে ঠিকানা তৈরী করুক।
এইটাই মহাসত্যের দিন। অতএব যে কেউ চায় সে তার প্রভুর কাছে আশ্রয়স্থল খুঁজুক।
إِنَّآ أَنذَرْنَٰكُمْ عَذَابًۭا قَرِيبًۭا يَوْمَ يَنظُرُ ٱلْمَرْءُ مَا قَدَّمَتْ يَدَاهُ وَيَقُولُ ٱلْكَافِرُ يَٰلَيْتَنِى كُنتُ تُرَٰبًۢا ﴿٤٠﴾
আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম, যেদিন মানুষ প্রত্যেক্ষ করবে যা সে সামনে প্রেরণ করেছে এবং কাফের বলবেঃ হায়, আফসোস-আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।
নিশ্চয় আমরা তোমাদের সতর্ক করছি এক নিকটবর্তী শাস্তি সন্বন্ধে, -- যেদিন মানুষ দেখতে পাবে তার হাত দুখানা কী আগবাড়িয়েছে, আর অবিশ্বাসী ব্যক্তি বলবে -- ''হায় আমার আফসোস! আমি যদি ধুলো হয়ে যেতাম!’’