Setting
Surah Exile [Al-Hashr] in Bengali
سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ ﴿١﴾
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করে। তিনি পরাক্রমশালী মহাজ্ঞানী।
আল্লাহ্র মহিমা ঘোষণা করছে যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে ও যা-কিছু আছে পৃথিবীতে, আর তিনি মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَخْرَجَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِنْ أَهْلِ ٱلْكِتَٰبِ مِن دِيَٰرِهِمْ لِأَوَّلِ ٱلْحَشْرِ ۚ مَا ظَنَنتُمْ أَن يَخْرُجُوا۟ ۖ وَظَنُّوٓا۟ أَنَّهُم مَّانِعَتُهُمْ حُصُونُهُم مِّنَ ٱللَّهِ فَأَتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوا۟ ۖ وَقَذَفَ فِى قُلُوبِهِمُ ٱلرُّعْبَ ۚ يُخْرِبُونَ بُيُوتَهُم بِأَيْدِيهِمْ وَأَيْدِى ٱلْمُؤْمِنِينَ فَٱعْتَبِرُوا۟ يَٰٓأُو۟لِى ٱلْأَبْصَٰرِ ﴿٢﴾
তিনিই কিতাবধারীদের মধ্যে যারা কাফের, তাদেরকে প্রথমবার একত্রিত করে তাদের বাড়ী-ঘর থেকে বহিস্কার করেছেন। তোমরা ধারণাও করতে পারনি যে, তারা বের হবে এবং তারা মনে করেছিল যে, তাদের দূর্গগুলো তাদেরকে আল্লাহর কবল থেকে রক্ষা করবে। অতঃপর আল্লাহর শাস্তি তাদের উপর এমনদিক থেকে আসল, যার কল্পনাও তারা করেনি। আল্লাহ তাদের অন্তরে ত্রাস সঞ্চার করে দিলেন। তারা তাদের বাড়ী-ঘর নিজেদের হাতে এবং মুসলমানদের হাতে ধ্বংস করছিল। অতএব, হে চক্ষুষ্মান ব্যক্তিগণ, তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।
তিনিই সেইজন যিনি গ্রন্থধারীদের মধ্যের যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল তাদের বিতাড়িত করে দিয়েছিলেন তাদের বাড়িঘর থেকে প্রথমকার সমাবেশে। তোমরা ভাবো নি যে তারা বেরিয়ে যাবে, আর তারা ভেবেছিল যে তাদের দুর্গগুলি তাদের সংরক্ষণ করবে আল্লাহ্র বিরুদ্ধে, কিন্ত আল্লাহ্ তাদের কাছে এসে পৌঁছেছিলেন এমন এক দিক থেকে যা তারা ধারণা করে নি, আর তিনি তাদের অন্তরে ভয় সঞ্চার করেছিলেন, তারা তাদের বাড়িঘর বিনষ্ট করেছিল তাদের নিজেদের হাত দিয়ে, আর মুমিনদের হাত দিয়ে। অতএব তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো, হে চক্ষুষ্মান্ লোকেরা!
وَلَوْلَآ أَن كَتَبَ ٱللَّهُ عَلَيْهِمُ ٱلْجَلَآءَ لَعَذَّبَهُمْ فِى ٱلدُّنْيَا ۖ وَلَهُمْ فِى ٱلْءَاخِرَةِ عَذَابُ ٱلنَّارِ ﴿٣﴾
আল্লাহ যদি তাদের জন্যে নির্বাসন অবধারিত না করতেন, তবে তাদেরকে দুনিয়াতে শাস্তি দিতেন। আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আযাব।
আর যদি এ না হতো যে আল্লাহ্ তাদের জন্যে নির্বাসনের সিদ্ধান্ত করেছেন তাহলে তিনি অবশ্যই তাদের এই দুনিয়াতেই শাস্তি দিতেন। আর তাদের জন্য আখেরাতে রয়েছে আগুনের শাস্তি।
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ شَآقُّوا۟ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ ۖ وَمَن يُشَآقِّ ٱللَّهَ فَإِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ ﴿٤﴾
এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করেছে। যে আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করে, তার জানা উচিত যে, আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
এ এইজন্য যে তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করেছিল, আর যে কেউ আল্লাহ্র বিরুদ্ধাচরণ করে, আল্লাহ্ তবে নিশ্চয়ই প্রতিফল দানে কঠোর।
مَا قَطَعْتُم مِّن لِّينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَآئِمَةً عَلَىٰٓ أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ ٱللَّهِ وَلِيُخْزِىَ ٱلْفَٰسِقِينَ ﴿٥﴾
তোমরা যে কিছু কিছু খর্জুর বৃক্ষ কেটে দিয়েছ এবং কতক না কেটে ছেড়ে দিয়েছ, তা তো আল্লাহরই আদেশ এবং যাতে তিনি অবাধ্যদেরকে লাঞ্ছিত করেন।
তোমরা যে-কতক খেজুর গাছ কেটে ফেলেছ অথবা যেগুলোকে তাদের শিকড়ের উপরে খাড়া রেখে দিয়েছ, তা তো আল্লাহ্রই অনুমতিক্রমে, আর যেন তিনি সত্যত্যাগীদের লাঞ্ছিত করতে পারেন।
وَمَآ أَفَآءَ ٱللَّهُ عَلَىٰ رَسُولِهِۦ مِنْهُمْ فَمَآ أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍۢ وَلَا رِكَابٍۢ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يُسَلِّطُ رُسُلَهُۥ عَلَىٰ مَن يَشَآءُ ۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌۭ ﴿٦﴾
আল্লাহ বনু-বনুযায়রের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যে ধন-সম্পদ দিয়েছেন, তজ্জন্যে তোমরা ঘোড়ায় কিংবা উটে চড়ে যুদ্ধ করনি, কিন্তু আল্লাহ যার উপর ইচ্ছা, তাঁর রসূলগণকে প্রাধান্য দান করেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।
আর যা-কিছু তাদের থেকে আল্লাহ্ তাঁর রসূলকে ফাও দিয়েছেন, যার জন্য তোমরা ধাওয়া করাও নি কোনো ঘোড়া, আর না কোনো উট, কিন্ত আল্লাহ্ তাঁর রসূলগণকে দখল দিয়ে থাকেন যার উপরে তিনি ইচ্ছা করে থাকেন। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।
مَّآ أَفَآءَ ٱللَّهُ عَلَىٰ رَسُولِهِۦ مِنْ أَهْلِ ٱلْقُرَىٰ فَلِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِى ٱلْقُرْبَىٰ وَٱلْيَتَٰمَىٰ وَٱلْمَسَٰكِينِ وَٱبْنِ ٱلسَّبِيلِ كَىْ لَا يَكُونَ دُولَةًۢ بَيْنَ ٱلْأَغْنِيَآءِ مِنكُمْ ۚ وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمْ عَنْهُ فَٱنتَهُوا۟ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ ﴿٧﴾
আল্লাহ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যা দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, তাঁর আত্নীয়-স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের এবং মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধনৈশ্বর্য্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়। রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।
আল্লাহ্ তাঁর রসূলকে জনপদবাসীর নিকট থেকে যা-কিছু ফাও দিয়েছেন তা কিন্ত আল্লাহ্র জন্য, আর রসূলের জন্য, আর নিকট- আত্মীয়দের জন্য, আর এতীমদের ও নিঃস্বদের ও পথচারীদের জন্য, যাতে তা তোমাদের মধ্যেকার ধনীদের মধ্যেই ঘোরাঘুরির বস্তু না হয়। আর রসূল যা-কিছু তোমাদের দেন তা তবে গ্রহণ করো, আর যা-কিছু তিনি নিষেধ করেন তোমরা বিরত থাকো। আর আল্লাহ্কে ভয়ভক্তি করো, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ প্রতিফল দানে কঠোর।
لِلْفُقَرَآءِ ٱلْمُهَٰجِرِينَ ٱلَّذِينَ أُخْرِجُوا۟ مِن دِيَٰرِهِمْ وَأَمْوَٰلِهِمْ يَبْتَغُونَ فَضْلًۭا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضْوَٰنًۭا وَيَنصُرُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓ ۚ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلصَّٰدِقُونَ ﴿٨﴾
এই ধন-সম্পদ দেশত্যাগী নিঃস্বদের জন্যে, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টিলাভের অন্বেষণে এবং আল্লাহ তাঁর রসূলের সাহায্যার্থে নিজেদের বাস্তুভিটা ও ধন-সম্পদ থেকে বহিস্কৃত হয়েছে। তারাই সত্যবাদী।
সেইসব দরিদ্র মুহাজিরদের জন্য যাদের বের করে দেওয়া হয়েছিল তাদের বাড়িঘর ও তাদের বিষয়-সম্পত্তি থেকে, যারা কামনা করছিল আল্লাহ্র কাছ থেকে অনুগ্রহ-প্রাচুর্য ও সন্তষ্টি, এবং সাহায্য করছিল আল্লাহ্কে ও তাঁর রসূলকে। এরাই খোদ সত্যপরায়ণ।
وَٱلَّذِينَ تَبَوَّءُو ٱلدَّارَ وَٱلْإِيمَٰنَ مِن قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ وَلَا يَجِدُونَ فِى صُدُورِهِمْ حَاجَةًۭ مِّمَّآ أُوتُوا۟ وَيُؤْثِرُونَ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌۭ ۚ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِۦ فَأُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ ﴿٩﴾
যারা মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে মদীনায় বসবাস করেছিল এবং বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, তারা মুহাজিরদের ভালবাসে, মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে, তজ্জন্যে তারা অন্তরে ঈর্ষাপোষণ করে না এবং নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও তাদেরকে অগ্রাধিকার দান করে। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম।
আর যারা তাদের পূর্বেই বাড়িঘর ও ধর্মবিশ্বাস সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিল তারা ভালবাসে তাদের যারা তাদের কাছে হিজরত করে এসেছে, আর তারা তাদের অন্তরে কোনো প্রয়োজন বোধ করে না তাদের যা দেওয়া হয়েছে তার জন্য, আর তারা তাদের নিজেদের চেয়েও অগ্রাধিকার দেয় যদিও বা তারা স্বয়ং অভাবগ্রস্ত রয়েছে। আর যে কেউ তার অন্তরের কৃপণতা থেকে মুক্ত রেখেছে তারাই তাহলে খোদ সফলকাম।
وَٱلَّذِينَ جَآءُو مِنۢ بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا ٱغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَٰنِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلْإِيمَٰنِ وَلَا تَجْعَلْ فِى قُلُوبِنَا غِلًّۭا لِّلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٌۭ رَّحِيمٌ ﴿١٠﴾
আর এই সম্পদ তাদের জন্যে, যারা তাদের পরে আগমন করেছে। তারা বলেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে এবং ঈমানে আগ্রহী আমাদের ভ্রাতাগণকে ক্ষমা কর এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়।
আর যারা তাদের পরে এসেছিল তারা বলে -- ''আমাদের প্রভু! আমাদের পরিত্রাণ করো আর আমাদের ভাই-বন্ধুদের যারা ধর্মবিশ্বাসে আমাদের অগ্রবর্তী রয়েছেন, আর আমাদের অন্তরে কোনো হিংসা-বিদ্বেষ রেখো না তাদের প্রতি যারা ঈমান এনেছেন; আমাদের প্রভু! তুমিই নিশ্চয় পরম স্নেহময়, অফুরন্ত ফলদাতা।’’
۞ أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ نَافَقُوا۟ يَقُولُونَ لِإِخْوَٰنِهِمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِنْ أَهْلِ ٱلْكِتَٰبِ لَئِنْ أُخْرِجْتُمْ لَنَخْرُجَنَّ مَعَكُمْ وَلَا نُطِيعُ فِيكُمْ أَحَدًا أَبَدًۭا وَإِن قُوتِلْتُمْ لَنَنصُرَنَّكُمْ وَٱللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّهُمْ لَكَٰذِبُونَ ﴿١١﴾
আপনি কি মুনাফিকদেরকে দেখেন নি? তারা তাদের কিতাবধারী কাফের ভাইদেরকে বলেঃ তোমরা যদি বহিস্কৃত হও, তবে আমরা অবশ্যই তোমাদের সাথে দেশ থেকে বের হয়ে যাব এবং তোমাদের ব্যাপারে আমরা কখনও কারও কথা মানব না। আর যদি তোমরা আক্রান্ত হও, তবে আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে সাহায্য করব। আল্লাহ তা’আলা সাক্ষ্য দেন যে, ওরা নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।
তুমি কি তাদের দেখ নি যারা কপটাচরণ করছে, -- তারা গ্রন্থধারীদের মধ্যের যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের তেমন ভাই- বন্ধুদের বলে -- ''তোমাদের যদি বের করে দেওয়া হয় তাহলে আমরাও নিশ্চয়ই তোমাদের সঙ্গে বেরিয়ে যাব, আর তোমাদের ব্যাপারে আমরা কারোর তাবেদারি কখনো করব না, আর তোমাদের সঙ্গে যদি যুদ্ধ করা হয় তাহলে আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের সাহায্য করব’’? আর আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে তারা নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।
لَئِنْ أُخْرِجُوا۟ لَا يَخْرُجُونَ مَعَهُمْ وَلَئِن قُوتِلُوا۟ لَا يَنصُرُونَهُمْ وَلَئِن نَّصَرُوهُمْ لَيُوَلُّنَّ ٱلْأَدْبَٰرَ ثُمَّ لَا يُنصَرُونَ ﴿١٢﴾
যদি তারা বহিস্কৃত হয়, তবে মুনাফিকরা তাদের সাথে দেশত্যাগ করবে না আর যদি তারা আক্রান্ত হয়, তবে তারা তাদেরকে সাহায্য করবে না। যদি তাদেরকে সাহায্য করে, তবে অবশ্যই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পলায়ন করবে। এরপর কাফেররা কোন সাহায্য পাবে না।
যদি তাদের বহিস্কার করা হয়, তারা তাদের সঙ্গে বেরুবে না, আর যদি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করা হয় তাহলে তারা তাদের সাহায্য করবে না, আর যদিও তারা তাদের সাহায্য করতে আসে তাহলেও তারা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, শেষপর্যন্ত তাদের সাহায্য করা হবে না।
لَأَنتُمْ أَشَدُّ رَهْبَةًۭ فِى صُدُورِهِم مِّنَ ٱللَّهِ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌۭ لَّا يَفْقَهُونَ ﴿١٣﴾
নিশ্চয় তোমরা তাদের অন্তরে আল্লাহ তা’আলা অপেক্ষা অধিকতর ভয়াবহ। এটা এ কারণে যে, তারা এক নির্বোধ সম্প্রদায়।
তোমরাই বরং তাদের অন্তরে আল্লাহ্র চাইতেও অধিকতর ভয়াবহ। এ এইজন্য যে তারা হচ্ছে এমন এক লোকদল যারা বুদ্ধি- বিবেচনা রাখে না।
لَا يُقَٰتِلُونَكُمْ جَمِيعًا إِلَّا فِى قُرًۭى مُّحَصَّنَةٍ أَوْ مِن وَرَآءِ جُدُرٍۭ ۚ بَأْسُهُم بَيْنَهُمْ شَدِيدٌۭ ۚ تَحْسَبُهُمْ جَمِيعًۭا وَقُلُوبُهُمْ شَتَّىٰ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌۭ لَّا يَعْقِلُونَ ﴿١٤﴾
তারা সংঘবদ্ধভাবেও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারবে না। তারা যুদ্ধ করবে কেবল সুরক্ষিত জনপদে অথবা দুর্গ প্রাচীরের আড়াল থেকে। তাদের পারস্পরিক যুদ্ধই প্রচন্ড হয়ে থাকে। আপনি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে করবেন; কিন্তু তাদের অন্তর শতধাবিচ্ছিন্ন। এটা এ কারণে যে, তারা এক কান্ডজ্ঞানহীণ সম্প্রদায়।
তারা সংঘবদ্ধ হয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না সুরক্ষিত জন-বসতির ভেতরে অথবা দেওয়াল দুর্গের আড়াল থেকে ব্যতীত। তাদের নিজেদের মধ্যে তাদের সংঘর্ষ অতি প্রচন্ড। তুমি তাদের ভাবতে পার ঐক্যবদ্ধ, কিন্ত তাদের অন্তর হচ্ছে বিচ্ছিন্ন। এ এইজন্য যে তারা হচ্ছে এমন এক জাতি যারা বুদ্ধিশুদ্ধি রাখে না।
كَمَثَلِ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ قَرِيبًۭا ۖ ذَاقُوا۟ وَبَالَ أَمْرِهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ ﴿١٥﴾
তারা সেই লোকদের মত, যারা তাদের নিকট অতীতে নিজেদের কর্মের শাস্তিভোগ করেছে। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
এরা তাদের মতো যারা এদের অব্যবহিত পূর্বে অবস্থান করছিল, -- তারা তাদের কৃতকর্মের কুফল আস্বাদন করেছিল, আর তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
كَمَثَلِ ٱلشَّيْطَٰنِ إِذْ قَالَ لِلْإِنسَٰنِ ٱكْفُرْ فَلَمَّا كَفَرَ قَالَ إِنِّى بَرِىٓءٌۭ مِّنكَ إِنِّىٓ أَخَافُ ٱللَّهَ رَبَّ ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿١٦﴾
তারা শয়তানের মত, যে মানুষকে কাফের হতে বলে। অতঃপর যখন সে কাফের হয়, তখন শয়তান বলেঃ তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি বিশ্বপালনকর্তা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করি।
শয়তানের সমতুল্য, দেখো! সে মানুষকে বলে -- ''অবিশ্বাস করো’’, তারপর যখন সে অবিশ্বাস করে তখন সে বলে -- ''আমি নিশ্চয়ই তোমার থেকে সম্পর্কচ্যুত, আমি অবশ্যই বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহ্কে ভয় করি।’’
فَكَانَ عَٰقِبَتَهُمَآ أَنَّهُمَا فِى ٱلنَّارِ خَٰلِدَيْنِ فِيهَا ۚ وَذَٰلِكَ جَزَٰٓؤُا۟ ٱلظَّٰلِمِينَ ﴿١٧﴾
অতঃপর উভয়ের পরিণতি হবে এই যে, তারা জাহান্নামে যাবে এবং চিরকাল তথায় বসবাস করবে। এটাই জালেমদের শাস্তি।
সুতরাং তাদের উভয়ের পরিণাম এই যে উভয়েই থাকবে আগুনে, তারা সেখানে দীর্ঘকাল অবস্থান করবে। আর এই হচ্ছে অন্যায়াচারীদের প্রতিফল।
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌۭ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍۢ ۖ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرٌۢ بِمَا تَعْمَلُونَ ﴿١٨﴾
মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামী কালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা’আলা সে সম্পর্কে খবর রাখেন।
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্কে ভয়-ভক্তি করো, আর প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক কী সে আগবাড়াচ্ছে আগামীকালের জন্য, আর আল্লাহ্কে ভয়ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ তোমরা যা করছ আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে পূর্ণ-ওয়াকিফহাল।
وَلَا تَكُونُوا۟ كَٱلَّذِينَ نَسُوا۟ ٱللَّهَ فَأَنسَىٰهُمْ أَنفُسَهُمْ ۚ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْفَٰسِقُونَ ﴿١٩﴾
তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা আল্লাহ তা’আলাকে ভুলে গেছে। ফলে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে আত্ন বিস্মৃত করে দিয়েছেন। তারাই অবাধ্য।
আর তোমরা তাদের মতো হয়ো না যারা আল্লাহ্কে ভুলে যায়, ফলে তিনি তাদের ভুলিয়ে দিয়ে থাকেন তাদের নিজেদের সন্বন্ধে। তারাই স্বয়ং সত্যত্যাগী।
لَا يَسْتَوِىٓ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِ وَأَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِ ۚ أَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِ هُمُ ٱلْفَآئِزُونَ ﴿٢٠﴾
জাহান্নামের অধিবাসী এবং জান্নাতের অধিবাসী সমান হতে পারে না। যারা জান্নাতের অধিবাসী, তারাই সফলকাম।
আগুনের বাসিন্দারা ও জান্নাতের বাসিন্দারা একসমান নয়। জান্নাতের অধিবাসীরাই স্বয়ং সফলকাম।
لَوْ أَنزَلْنَا هَٰذَا ٱلْقُرْءَانَ عَلَىٰ جَبَلٍۢ لَّرَأَيْتَهُۥ خَٰشِعًۭا مُّتَصَدِّعًۭا مِّنْ خَشْيَةِ ٱللَّهِ ۚ وَتِلْكَ ٱلْأَمْثَٰلُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ ﴿٢١﴾
যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্যে বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।
আমরা যদি এই কুরআনকে কোনো পাহাড়ের উপরে অবতীর্ণ করতাম তাহলে তুমি দেখতে পেতে আল্লাহ্র ভয়ে তা নুইয়ে পড়েছে, ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। আর এই উপমা -- আমরা এটি লোকেদের জন্য বিবৃত করছি যেন তারা চিন্তা করে।
هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ وَٱلشَّهَٰدَةِ ۖ هُوَ ٱلرَّحْمَٰنُ ٱلرَّحِيمُ ﴿٢٢﴾
তিনিই আল্লাহ তা’আলা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা।
তিনিই সেই আল্লাহ্ যিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নেই, তিনি অদৃশ্যের ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়, অফুরন্ত ফলদাতা।
هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْمَلِكُ ٱلْقُدُّوسُ ٱلسَّلَٰمُ ٱلْمُؤْمِنُ ٱلْمُهَيْمِنُ ٱلْعَزِيزُ ٱلْجَبَّارُ ٱلْمُتَكَبِّرُ ۚ سُبْحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ ﴿٢٣﴾
তিনিই আল্লাহ তিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মাহাত্ন?486;ীল। তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা’ আলা তা থেকে পবিত্র।
তিনিই সেই আল্লাহ্ যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, -- রাজাধিরাজ, মহাপবিত্র, প্রশান্তিদাতা, নিরাপত্তা-বিধায়ক, সুরক্ষক, মহাশক্তিশালী, মহামহিম, পরম গেরবান্নিত। সকল মহিমা আল্লাহ্র, তারা যা আরোপ করে তার বহু উর্ধ্বে।
هُوَ ٱللَّهُ ٱلْخَٰلِقُ ٱلْبَارِئُ ٱلْمُصَوِّرُ ۖ لَهُ ٱلْأَسْمَآءُ ٱلْحُسْنَىٰ ۚ يُسَبِّحُ لَهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ ﴿٢٤﴾
তিনিই আল্লাহ তা’আলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।
তিনি আল্লাহ্, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদাতা, তাঁরই হচ্ছে সর্বাঙ্গসুন্দর নামাবলী। মহাকাশমন্ডলে ও পৃথিবীতে যারা আছে তারা তাঁরই জপতপ করে, আর তিনি মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।