Setting
Surah The reality [Al-Haaqqa] in Bengali
وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا ٱلْحَآقَّةُ ﴿٣﴾
আপনি কি কিছু জানেন, সেই সুনিশ্চিত বিষয় কি?
আহা, কি দিয়ে তোমাকে বোঝানো যাবে নিশ্চিত-সত্যটা কি?
كَذَّبَتْ ثَمُودُ وَعَادٌۢ بِٱلْقَارِعَةِ ﴿٤﴾
আদ ও সামুদ গোত্র মহাপ্রলয়কে মিথ্যা বলেছিল।
ছামূদ ও 'আদগোষ্ঠী আঘাতকারী প্রলয়কে অস্বীকার করেছিল।
فَأَمَّا ثَمُودُ فَأُهْلِكُوا۟ بِٱلطَّاغِيَةِ ﴿٥﴾
অতঃপর সমুদ গোত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রলয়ংকর বিপর্যয় দ্বারা।
তারপর ছামূদগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে -- তাদের তখন ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রলয়ংকর বিপর্যয়ে।
وَأَمَّا عَادٌۭ فَأُهْلِكُوا۟ بِرِيحٍۢ صَرْصَرٍ عَاتِيَةٍۢ ﴿٦﴾
এবং আদ গোত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচন্ড ঝঞ্জাবায়ূ,
আর 'আদগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে -- তাদের তখন ধ্বংস করা হয়েছিল এক গর্জনকারী প্রচন্ড ঝড়ের দ্বারা --
سَخَّرَهَا عَلَيْهِمْ سَبْعَ لَيَالٍۢ وَثَمَٰنِيَةَ أَيَّامٍ حُسُومًۭا فَتَرَى ٱلْقَوْمَ فِيهَا صَرْعَىٰ كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ خَاوِيَةٍۢ ﴿٧﴾
যা তিনি প্রবাহিত করেছিলেন তাদের উপর সাত রাত্রি ও আট দিবস পর্যন্ত অবিরাম। আপনি তাদেরকে দেখতেন যে, তারা অসার খর্জুর কান্ডের ন্যায় ভূপাতিত হয়ে রয়েছে।
যাকে তিনি তাদের উপরে প্রবাহিত করেছিলেন সাত রাত ও আট দিনব্যাপী, অবিরতভাবে, ফলে তুমি সেই লোকদলকে দেখতে পেতে সেখানে লুটিয়ে পড়ে আছে, যেন তারা খেজুর গাছের ফাঁপা গুড়ি।
فَهَلْ تَرَىٰ لَهُم مِّنۢ بَاقِيَةٍۢ ﴿٨﴾
আপনি তাদের কোন অস্তিত্ব দেখতে পান কি?
তারপর তুমি তাদের অবশিষ্ট কিছু দেখতে পাও কি?
وَجَآءَ فِرْعَوْنُ وَمَن قَبْلَهُۥ وَٱلْمُؤْتَفِكَٰتُ بِٱلْخَاطِئَةِ ﴿٩﴾
ফেরাউন, তাঁর পূর্ববর্তীরা এবং উল্টে যাওয়া বস্তিবাসীরা গুরুতর পাপ করেছিল।
আর ফিরআউন আর যারা তার পূর্ববর্তী ছিল, আর বিধবস্ত শহরগুলো পাপাচার নিয়ে এসেছিল,
فَعَصَوْا۟ رَسُولَ رَبِّهِمْ فَأَخَذَهُمْ أَخْذَةًۭ رَّابِيَةً ﴿١٠﴾
তারা তাদের পালনকর্তার রসূলকে অমান্য করেছিল। ফলে তিনি তাদেরকে কঠোরহস্তে পাকড়াও করলেন।
যেহেতু তাদের প্রভুর রসূলকে তারা অমান্য করেছিল, সেজন্য তিনি তাদের পাকড়াও করেছিলেন এক সুকঠিন পাকড়ানোতে।
إِنَّا لَمَّا طَغَا ٱلْمَآءُ حَمَلْنَٰكُمْ فِى ٱلْجَارِيَةِ ﴿١١﴾
যখন জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল, তখন আমি তোমাদেরকে চলন্ত নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলাম।
নিঃসন্দেহ যখন পানি ফেঁপে উঠেছিল, তখন আমরা তোমাদের বহন করেলিাম জাহাজের মধ্যে,
لِنَجْعَلَهَا لَكُمْ تَذْكِرَةًۭ وَتَعِيَهَآ أُذُنٌۭ وَٰعِيَةٌۭ ﴿١٢﴾
যাতে এ ঘটনা তোমাদের জন্যে স্মৃতির বিষয় এবং কান এটাকে উপদেশ গ্রহণের উপযোগী রূপে গ্রহণ করে।
যেন আমরা এটিকে তোমাদের জন্য বানাতে পারি স্মরণীয় বিষয়, এবং শ্রুতিধর কান যেন এটি মনে রাখতে পারে।
فَإِذَا نُفِخَ فِى ٱلصُّورِ نَفْخَةٌۭ وَٰحِدَةٌۭ ﴿١٣﴾
যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে-একটি মাত্র ফুৎকার
সুতরাং যখন শিঙায় ফুৎকার দেওয়া হবে -- একটি মাত্র ফুৎকার, --
وَحُمِلَتِ ٱلْأَرْضُ وَٱلْجِبَالُ فَدُكَّتَا دَكَّةًۭ وَٰحِدَةًۭ ﴿١٤﴾
এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়া হবে,
এবং পৃথিবী ও পাহাড়-পর্বত উত্তোলন করা হবে, আর একটিমাত্র ধাক্কায় তাদের চূর্ণবিচূর্ণ করা হবে।
فَيَوْمَئِذٍۢ وَقَعَتِ ٱلْوَاقِعَةُ ﴿١٥﴾
সেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে।
অতএব সেইদিন মহাঘটনা সংঘটিত হবে,
وَٱنشَقَّتِ ٱلسَّمَآءُ فَهِىَ يَوْمَئِذٍۢ وَاهِيَةٌۭ ﴿١٦﴾
সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে।
আর আকাশ বিদীর্ণ হবে, ফলে সেইদিন তা হবে ভঙ্গুর;
وَٱلْمَلَكُ عَلَىٰٓ أَرْجَآئِهَا ۚ وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍۢ ثَمَٰنِيَةٌۭ ﴿١٧﴾
এবং ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ও আট জন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের উর্ধ্বে বহন করবে।
আর ফিরিশ্তারা এর প্রান্তগুলোয় রইবে। আর তাদের উপরে সেইদিন তোমার প্রভুর আরশ বহন করবে আটজন।
يَوْمَئِذٍۢ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَىٰ مِنكُمْ خَافِيَةٌۭ ﴿١٨﴾
সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না।
সেইদিন তোমাদের অনাবৃত করা হবে, -- কোনো গোপন বিষয় তোমাদের থেকে গোপন থাকবে না।
فَأَمَّا مَنْ أُوتِىَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ فَيَقُولُ هَآؤُمُ ٱقْرَءُوا۟ كِتَٰبِيَهْ ﴿١٩﴾
অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে, সে বলবেঃ নাও, তোমরাও আমলনামা পড়ে দেখ।
তারপর যাকে তার বই তার ডান হাতে দেয়া হবে সে তখন বলবে -- ''নাও, আমার এই বই পড়ে দেখো!
إِنِّى ظَنَنتُ أَنِّى مُلَٰقٍ حِسَابِيَهْ ﴿٢٠﴾
আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে।
''আমি নিশ্চয়ই জানতাম যে আমি আলবৎ আমার এই হিসাবের সম্মুখীন হতে যাচ্ছি।’’
فَهُوَ فِى عِيشَةٍۢ رَّاضِيَةٍۢ ﴿٢١﴾
অতঃপর সে সুখী জীবন-যাপন করবে,
সুতরাং সে থাকবে এক পূর্ণ-সন্তোষজনক জীবনযাপনে --
كُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ هَنِيٓـًٔۢا بِمَآ أَسْلَفْتُمْ فِى ٱلْأَيَّامِ ٱلْخَالِيَةِ ﴿٢٤﴾
বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে, তার প্রতিদানে তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে।
''খাও আর পান করো তৃপ্তির সঙ্গে সেইজন্য যা তোমরা আগেকার দিনগুলোয় সম্পাদন করেছিলে।’’
وَأَمَّا مَنْ أُوتِىَ كِتَٰبَهُۥ بِشِمَالِهِۦ فَيَقُولُ يَٰلَيْتَنِى لَمْ أُوتَ كِتَٰبِيَهْ ﴿٢٥﴾
যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবেঃ হায় আমায় যদি আমার আমল নামা না দেয়া হতো।
আর তার ক্ষেত্রে যাকে তার বই তার বাম হাতে দেওয়া হবে সে তখন বলবে -- ''হায় আমার আফসোস! আমার এই বই যদি আমায় কখনো দেখানো না হতো, --
وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيَهْ ﴿٢٦﴾
আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব!
''আর আমি যদি কখনো জানতাম না আমার এই হিসাবটি কী।
يَٰلَيْتَهَا كَانَتِ ٱلْقَاضِيَةَ ﴿٢٧﴾
হায়, আমার মৃত্যুই যদি শেষ হত।
''হায় আফসোস! এইটাই যদি আমার শেষ হতো!
مَآ أَغْنَىٰ عَنِّى مَالِيَهْ ۜ ﴿٢٨﴾
আমার ধন-সম্পদ আমার কোন উপকারে আসল না।
''আমার ধনসম্পদ আমার কোনো কাজে এল না;
هَلَكَ عَنِّى سُلْطَٰنِيَهْ ﴿٢٩﴾
আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল।
''আমার কর্তৃত্ব আমার থেকে বিনাশ হয়ে গেছে।’’
خُذُوهُ فَغُلُّوهُ ﴿٣٠﴾
ফেরেশতাদেরকে বলা হবেঃ ধর একে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও,
''তাকে ধরো এবং তাকে বাঁধো,
ثُمَّ ٱلْجَحِيمَ صَلُّوهُ ﴿٣١﴾
অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে।
''তারপর জ্বলন্ত আগুনে তাকে নিক্ষেপ করো,
ثُمَّ فِى سِلْسِلَةٍۢ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًۭا فَٱسْلُكُوهُ ﴿٣٢﴾
অতঃপর তাকে শৃঙ্খলিত কর সত্তর গজ দীর্ঘ এক শিকলে।
''তারপর তাকে এক শিকলে আবদ্ধ করো যার দৈঘ্য হচ্ছে সত্তর হাত।
إِنَّهُۥ كَانَ لَا يُؤْمِنُ بِٱللَّهِ ٱلْعَظِيمِ ﴿٣٣﴾
নিশ্চয় সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না।
''নিশ্চয় সে বিশ্বাস করত না মহান আল্লাহ্তে,
وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ ٱلْمِسْكِينِ ﴿٣٤﴾
এবং মিসকীনকে আহার্য দিতে উৎসাহিত করত না।
''আর সে উৎসাহ দেখাত না গরীবদের খাবার দিতে,
فَلَيْسَ لَهُ ٱلْيَوْمَ هَٰهُنَا حَمِيمٌۭ ﴿٣٥﴾
অতএব, আজকের দিন এখানে তার কোন সুহূদ নাই।
''সেজন্য আজ তার জন্যে এখানে কোনো অন্তরঙ্গ বন্ধু থাকবে না,
وَلَا طَعَامٌ إِلَّا مِنْ غِسْلِينٍۢ ﴿٣٦﴾
এবং কোন খাদ্য নাই, ক্ষত-নিঃসৃত পুঁজ ব্যতীত।
''আর কোনো খাদ্য থাকবে না ক্ষতনিঃসৃত পুজঁ ব্যতীত --
لَّا يَأْكُلُهُۥٓ إِلَّا ٱلْخَٰطِـُٔونَ ﴿٣٧﴾
গোনাহগার ব্যতীত কেউ এটা খাবে না।
''যা পাপীরা ব্যতীত আর কেউ খায় না।’’
فَلَآ أُقْسِمُ بِمَا تُبْصِرُونَ ﴿٣٨﴾
তোমরা যা দেখ, আমি তার শপথ করছি।
কিন্ত না, আমি কসম খাচ্ছি যা তোমরা দেখছ তার,
إِنَّهُۥ لَقَوْلُ رَسُولٍۢ كَرِيمٍۢ ﴿٤٠﴾
নিশ্চয়ই এই কোরআন একজন সম্মানিত রসূলের আনীত।
যে এটি এক সম্মানিত রসূলের বাণী,
وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَاعِرٍۢ ۚ قَلِيلًۭا مَّا تُؤْمِنُونَ ﴿٤١﴾
এবং এটা কোন কবির কালাম নয়; তোমরা কমই বিশ্বাস কর।
আর এ কোনো কবির আলাপন নয়; সামান্যই তো যা তোমরা বিশ্বাস কর।
وَلَا بِقَوْلِ كَاهِنٍۢ ۚ قَلِيلًۭا مَّا تَذَكَّرُونَ ﴿٤٢﴾
এবং এটা কোন অতীন্দ্রিয়বাদীর কথা নয়; তোমরা কমই অনুধাবন কর।
আর কোনো গনৎকারের বাক্চাতুরীও নয়, যৎসামান্য যা তোমরা চিন্তা কর!
تَنزِيلٌۭ مِّن رَّبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿٤٣﴾
এটা বিশ্বপালনকর্তার কাছ থেকে অবতীর্ণ।
এ হচ্ছে এক অবতারণ বিশ্বজগতের প্রভুর কাছ থেকে।
وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ ٱلْأَقَاوِيلِ ﴿٤٤﴾
সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত,
আর তিনি যদি আমাদের নামে কোনো বাণী রচনা করতে চাইতেন, --
لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِٱلْيَمِينِ ﴿٤٥﴾
তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম,
তাহলে আমরা নিশ্চয়ই তাকে ডানহাতে পাকড়াও করতাম,
ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ ٱلْوَتِينَ ﴿٤٦﴾
অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা।
তারপর নিশ্চয়ই তার কন্ঠশিরা কেটে ফেলতাম,
فَمَا مِنكُم مِّنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَٰجِزِينَ ﴿٤٧﴾
তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।
তখন তোমাদের মধ্যের কেউই ওর থেকে নিবৃত্ত করতে পারতে না।
وَإِنَّهُۥ لَتَذْكِرَةٌۭ لِّلْمُتَّقِينَ ﴿٤٨﴾
এটা খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ।
আর নিশ্চয়ই এইটি ধর্মভীরুদের জন্য এক স্মারক-গ্রন্থ।
وَإِنَّا لَنَعْلَمُ أَنَّ مِنكُم مُّكَذِّبِينَ ﴿٤٩﴾
আমি জানি যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মিথ্যারোপ করবে।
আর নিশ্চয়ই আমরা তো জানি যে তোমাদের মধ্যে সত্যপ্রত্যাখ্যানকারী রয়েছে।
وَإِنَّهُۥ لَحَسْرَةٌ عَلَى ٱلْكَٰفِرِينَ ﴿٥٠﴾
নিশ্চয় এটা কাফেরদের জন্যে অনুতাপের কারণ।
আর নিঃসন্দেহ এটি অবিশ্বাসীদের জন্য বড় অনুতাপের বিষয়।
وَإِنَّهُۥ لَحَقُّ ٱلْيَقِينِ ﴿٥١﴾
নিশ্চয় এটা নিশ্চিত সত্য।
আর নিঃসন্দেহ এটি তো সুনিশ্চিত সত্য।
فَسَبِّحْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلْعَظِيمِ ﴿٥٢﴾
অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ননা করুন।
অতএব তোমার মহামহিমান্নিত প্রভুর নামের জপতপ করো।