Main pages

Surah Those who set the ranks [As-Saaffat] in Bengali

Surah Those who set the ranks [As-Saaffat] Ayah 182 Location Maccah Number 37

وَٱلصَّٰٓفَّٰتِ صَفًّۭا ﴿١﴾

ভেবে দেখো তাদের যারা কাতারে কাতারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে,

فَٱلزَّٰجِرَٰتِ زَجْرًۭا ﴿٢﴾

আর যারা বিতাড়িত করে প্রবল বিতাড়নে,

فَٱلتَّٰلِيَٰتِ ذِكْرًا ﴿٣﴾

আর যারা স্মারকগ্রন্থ পাঠ করে!

إِنَّ إِلَٰهَكُمْ لَوَٰحِدٌۭ ﴿٤﴾

নিঃসন্দেহ তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন,

رَّبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ ٱلْمَشَٰرِقِ ﴿٥﴾

যিনি মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এবং এদের উভয়ের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রভু, আর যিনি উদয়স্থল সমূহেরও প্রভু,

إِنَّا زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِزِينَةٍ ٱلْكَوَاكِبِ ﴿٦﴾

নিঃসন্দেহ আমরা নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির শোভা দিয়ে সুশোভিত করেছি, --

وَحِفْظًۭا مِّن كُلِّ شَيْطَٰنٍۢ مَّارِدٍۢ ﴿٧﴾

আর প্রতিরক্ষা প্রত্যেক বিদ্রোহাচারী শয়তান থেকে।

لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى ٱلْمَلَإِ ٱلْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍۢ ﴿٨﴾

তারা কান পাততে পারে না ঊর্ধ্ব এলাকার দিকে, আর তাদের প্রতি নিক্ষেপ করা হয় সব দিক থেকে, --

دُحُورًۭا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌۭ وَاصِبٌ ﴿٩﴾

বিতাড়িত, আর তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন শাস্তি, --

إِلَّا مَنْ خَطِفَ ٱلْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُۥ شِهَابٌۭ ثَاقِبٌۭ ﴿١٠﴾

সে ব্যতীত যে ছিনিয়ে নেয় একটুকুন ছিনতাই, কিন্তু তাকে অনুসরণ করে একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা।

فَٱسْتَفْتِهِمْ أَهُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَم مَّنْ خَلَقْنَآ ۚ إِنَّا خَلَقْنَٰهُم مِّن طِينٍۢ لَّازِبٍۭ ﴿١١﴾

সুতরাং তাদের জিজ্ঞাসা করো, -- গঠনে তারা কি বেশী বলিষ্ঠ না যাদের আমরা সৃষ্টি করেছি? নিঃসন্দেহ তাদের আমরা সৃষ্টি করেছি আঠালো কাদা থেকে।

بَلْ عَجِبْتَ وَيَسْخَرُونَ ﴿١٢﴾

বস্তুতঃ তুমি তো তাজ্জব হচ্ছো, আর তারা করছে মস্করা।

وَإِذَا ذُكِّرُوا۟ لَا يَذْكُرُونَ ﴿١٣﴾

আর যখন তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় তারা মনোযোগ দেয় না,

وَإِذَا رَأَوْا۟ ءَايَةًۭ يَسْتَسْخِرُونَ ﴿١٤﴾

আর যখন তারা কোনো নিদর্শন দেখতে পায় তারা ঠাট্টাবিদ্রূপ করে,

وَقَالُوٓا۟ إِنْ هَٰذَآ إِلَّا سِحْرٌۭ مُّبِينٌ ﴿١٥﴾

আর বলে -- ''এটি স্পষ্ট জাদু বৈ তো নয়’’,

أَءِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًۭا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَبْعُوثُونَ ﴿١٦﴾

''কী! যখন আমরা মারা যাব এবং ধূলোমাটি ও হাড়গোড় হয়ে যাব তখন কি আমরা ঠিকঠিকই পুনরুত্থিত হব?’’

أَوَءَابَآؤُنَا ٱلْأَوَّلُونَ ﴿١٧﴾

''আর কি পুরাকালের আমাদের পিতৃপুরুষরাও?’’

قُلْ نَعَمْ وَأَنتُمْ دَٰخِرُونَ ﴿١٨﴾

তুমি বলো -- ''হাঁ, আর তোমরা লাঞ্ছিত হবে।’’

فَإِنَّمَا هِىَ زَجْرَةٌۭ وَٰحِدَةٌۭ فَإِذَا هُمْ يَنظُرُونَ ﴿١٩﴾

তখন সেটি কিন্তু একটিমাত্র মহাগর্জন হবে, তখন দেখো! তারা চেয়ে থাকবে।

وَقَالُوا۟ يَٰوَيْلَنَا هَٰذَا يَوْمُ ٱلدِّينِ ﴿٢٠﴾

আর তারা বলবে -- ''হায় ধিক্‌, আমাদের! এটিই তো বিচারের দিন!’’

هَٰذَا يَوْمُ ٱلْفَصْلِ ٱلَّذِى كُنتُم بِهِۦ تُكَذِّبُونَ ﴿٢١﴾

''এইটিই ফয়সালা করার দিন যেটি সন্বন্ধে তোমরা মিথ্যা আখ্যা দিতে।’’

۞ ٱحْشُرُوا۟ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ وَأَزْوَٰجَهُمْ وَمَا كَانُوا۟ يَعْبُدُونَ ﴿٢٢﴾

''যারা অনাচার করেছিল তাদের একত্র করো, আর তাদের সহচরদের, আর তাদেরও যাদের তারা উপাসনা করত --

مِن دُونِ ٱللَّهِ فَٱهْدُوهُمْ إِلَىٰ صِرَٰطِ ٱلْجَحِيمِ ﴿٢٣﴾

''আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে, তারপর তাদের পরিচালিত করো দুযখের পথে।

وَقِفُوهُمْ ۖ إِنَّهُم مَّسْـُٔولُونَ ﴿٢٤﴾

''আর তাদের থামাও, তারা অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে,

مَا لَكُمْ لَا تَنَاصَرُونَ ﴿٢٥﴾

''তোমাদের কি হল, তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করছ না?’’

بَلْ هُمُ ٱلْيَوْمَ مُسْتَسْلِمُونَ ﴿٢٦﴾

বস্তুতঃ সেদিন তারা আ‌ত্মসমর্পিত হবে।

وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍۢ يَتَسَآءَلُونَ ﴿٢٧﴾

আর তাদের কেউ কেউ অন্যদের দিকে এগিয়ে যাবে পরস্পরকে প্রশ্ন করে --

قَالُوٓا۟ إِنَّكُمْ كُنتُمْ تَأْتُونَنَا عَنِ ٱلْيَمِينِ ﴿٢٨﴾

তারা বলবে -- ''তোমরাই তো নিশ্চয়ই আমাদের কাছে আসতে ডান দিকে থেকে।’’

قَالُوا۟ بَل لَّمْ تَكُونُوا۟ مُؤْمِنِينَ ﴿٢٩﴾

তারা বলবে -- ''না, তোমরা তো বিশ্বাসীই ছিলে না,

وَمَا كَانَ لَنَا عَلَيْكُم مِّن سُلْطَٰنٍۭ ۖ بَلْ كُنتُمْ قَوْمًۭا طَٰغِينَ ﴿٣٠﴾

''আর তোমাদের উপরে আমাদের কোনো আধিপত্য ছিল না, বরং তোমরাই ছিলে উচ্ছৃঙ্খল লোক।

فَحَقَّ عَلَيْنَا قَوْلُ رَبِّنَآ ۖ إِنَّا لَذَآئِقُونَ ﴿٣١﴾

''সেজন্যে আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রভুর বাণী সত্য প্রতিপন্ন হয়েছে, আমরা নিশ্চয়ই আস্বাদন করতে যাচ্ছি।

فَأَغْوَيْنَٰكُمْ إِنَّا كُنَّا غَٰوِينَ ﴿٣٢﴾

''বস্তুত আমরা তোমাদের বিপথে নিয়েছিলাম, কেননা আমরা নিজেরাই বিপথগামী ছিলাম।’’

فَإِنَّهُمْ يَوْمَئِذٍۢ فِى ٱلْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ ﴿٣٣﴾

সুতরাং সেইদিন তারা নিশ্চয়ই শাস্তিতে একে অন্যের শরিক হবে।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَفْعَلُ بِٱلْمُجْرِمِينَ ﴿٣٤﴾

নিঃসন্দেহ এইরূপই আমরা অপরাধীদের প্রতি করে থাকি।

إِنَّهُمْ كَانُوٓا۟ إِذَا قِيلَ لَهُمْ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ ﴿٣٥﴾

নিঃসন্দেহ যখন তাদের বলা হতো -- 'আল্লাহ্ ছাড়া অন্য উপাস্য নেই’, তখন তারা হামবড়াই করত,

وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُوٓا۟ ءَالِهَتِنَا لِشَاعِرٍۢ مَّجْنُونٍۭ ﴿٣٦﴾

আর তারা বলত -- ''কী! আমরা কি আমাদের উপাস্যদের সত্যিই ত্যাগ করব একজন পাগলা কবির কারণে?’’

بَلْ جَآءَ بِٱلْحَقِّ وَصَدَّقَ ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿٣٧﴾

বস্তুত তিনি সত্য নিয়ে এসেছেন, আর রসূলগণকে তিনি সত্য প্রতিপন্ন করেছেন।

إِنَّكُمْ لَذَآئِقُوا۟ ٱلْعَذَابِ ٱلْأَلِيمِ ﴿٣٨﴾

তোমরা নিশ্চয়ই মর্মন্তুদ শাস্তি আস্বাদন করতেই যাচ্ছ,

وَمَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ ﴿٣٩﴾

আর তোমাদের প্রতিদান দেওয়া হবে না তোমরা যা করতে তা ব্যতীত, --

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿٤٠﴾

আল্লাহ্‌র নিষ্ঠাবান বান্দারা ব্যতীত।

أُو۟لَٰٓئِكَ لَهُمْ رِزْقٌۭ مَّعْلُومٌۭ ﴿٤١﴾

এরাই -- এদের জন্য রয়েছে সুপরিচিত রিযেক,

فَوَٰكِهُ ۖ وَهُم مُّكْرَمُونَ ﴿٤٢﴾

ফলমূল, আর তারা হবে সম্মানিত --

فِى جَنَّٰتِ ٱلنَّعِيمِ ﴿٤٣﴾

আনন্দময় উদ্যানে,

عَلَىٰ سُرُرٍۢ مُّتَقَٰبِلِينَ ﴿٤٤﴾

তখতের উপরে মুখোমুখি হয়ে রইবে।

يُطَافُ عَلَيْهِم بِكَأْسٍۢ مِّن مَّعِينٍۭ ﴿٤٥﴾

তাদের কাছে ঘুরে ফিরে পরিবেশন করা হবে নির্মল ফোয়ারা থেকে এক শরবতের পাত্র, --

بَيْضَآءَ لَذَّةٍۢ لِّلشَّٰرِبِينَ ﴿٤٦﴾

সাদা সুস্বাদু পানকারীদের জন্য।

لَا فِيهَا غَوْلٌۭ وَلَا هُمْ عَنْهَا يُنزَفُونَ ﴿٤٧﴾

এতে মাথাব্যথা নেই, আর তারা এ থেকে মাতালও হবে না।

وَعِندَهُمْ قَٰصِرَٰتُ ٱلطَّرْفِ عِينٌۭ ﴿٤٨﴾

আর তাদের কাছে থাকবে সলাজ-নম্র আয়তলোচন, --

كَأَنَّهُنَّ بَيْضٌۭ مَّكْنُونٌۭ ﴿٤٩﴾

যেন তারা সুরক্ষিত ডিম।

فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍۢ يَتَسَآءَلُونَ ﴿٥٠﴾

তখন তাদের কেউ কেউ অন্যদের দিকে এগিয়ে যাবে পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

قَالَ قَآئِلٌۭ مِّنْهُمْ إِنِّى كَانَ لِى قَرِينٌۭ ﴿٥١﴾

তাদের মধ্যে কোনো এক বক্তা বলবে -- ''আমার অবশ্য এক বন্ধু ছিল,

يَقُولُ أَءِنَّكَ لَمِنَ ٱلْمُصَدِّقِينَ ﴿٥٢﴾

''সে বলত, 'তুমি কি নিশ্চয়ই সমর্থনকারীদের মধ্যেকার?

أَءِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًۭا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَدِينُونَ ﴿٥٣﴾

''কী! যখন আমরা মরে যাব এবং ধূলোমাটি ও হাড়গোড় হয়ে যাব, তখন কি আমরা ঠিকঠিকই প্রতিফল ভোগ করব’?’’

قَالَ هَلْ أَنتُم مُّطَّلِعُونَ ﴿٥٤﴾

সে বলবে -- ''তোমরা কি উঁকি দিয়ে দেখবে?’’

فَٱطَّلَعَ فَرَءَاهُ فِى سَوَآءِ ٱلْجَحِيمِ ﴿٥٥﴾

তখন সে উঁকি দেবে আর ওকে দুযখের কেন্দ্রস্থলে দেখতে পাবে।

قَالَ تَٱللَّهِ إِن كِدتَّ لَتُرْدِينِ ﴿٥٦﴾

সে বলবে -- ''আল্লাহ্‌র কসম! তুমি তো আমাকে প্রায় ধ্বংস করেছিলে,

وَلَوْلَا نِعْمَةُ رَبِّى لَكُنتُ مِنَ ٱلْمُحْضَرِينَ ﴿٥٧﴾

''আর আমার প্রভুর অনুগ্রহ যদি না থাকত তবে আমিও নিশ্চয় উপস্থিতদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’’

أَفَمَا نَحْنُ بِمَيِّتِينَ ﴿٥٨﴾

''তবে কি আমরা মরতে যাচ্ছি না, --

إِلَّا مَوْتَتَنَا ٱلْأُولَىٰ وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ ﴿٥٩﴾

''আমাদের প্রথমবারের মৃত্যু ব্যতীত, আর আমরা শাস্তি পেতে যাচ্ছি না।

إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ ﴿٦٠﴾

''নিশ্চয়ই এই -- এটিই তো মহাসাফল্য!’’

لِمِثْلِ هَٰذَا فَلْيَعْمَلِ ٱلْعَٰمِلُونَ ﴿٦١﴾

এর অনুরূপ অবস্থার জন্য তবে কর্মীরা কাজ করে যাক।

أَذَٰلِكَ خَيْرٌۭ نُّزُلًا أَمْ شَجَرَةُ ٱلزَّقُّومِ ﴿٦٢﴾

এইটিই অধিক ভাল আপ্যায়ন, না যাক্কুম গাছ?

إِنَّا جَعَلْنَٰهَا فِتْنَةًۭ لِّلظَّٰلِمِينَ ﴿٦٣﴾

নিঃসন্দেহ আমরা এটিকে সৃষ্টি করেছি দুরাচারীদের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ।

إِنَّهَا شَجَرَةٌۭ تَخْرُجُ فِىٓ أَصْلِ ٱلْجَحِيمِ ﴿٦٤﴾

নিঃসন্দেহ এটি এমন এক গাছ যা দুযখের তলায় --

طَلْعُهَا كَأَنَّهُۥ رُءُوسُ ٱلشَّيَٰطِينِ ﴿٦٥﴾

এর ফলফসল যেন শয়তানদের মুন্ডু।

فَإِنَّهُمْ لَءَاكِلُونَ مِنْهَا فَمَالِـُٔونَ مِنْهَا ٱلْبُطُونَ ﴿٦٦﴾

তারা তখন নিশ্চয় এ থেকে আহার করবে আর এর দ্বারা পেট ভর্তি করবে।

ثُمَّ إِنَّ لَهُمْ عَلَيْهَا لَشَوْبًۭا مِّنْ حَمِيمٍۢ ﴿٦٧﴾

তারপর অবশ্য তাদের জন্য এর উপরে থাকবে ফুটন্ত জলের পানীয়।

ثُمَّ إِنَّ مَرْجِعَهُمْ لَإِلَى ٱلْجَحِيمِ ﴿٦٨﴾

তারপর নিশ্চয়ই তাদের প্রত্যাবর্তনস্থল হবে ভয়ঙ্কর আগুনের প্রতি।

إِنَّهُمْ أَلْفَوْا۟ ءَابَآءَهُمْ ضَآلِّينَ ﴿٦٩﴾

তারা আলবৎ তাদের পিতৃপুরুষদের পথভ্রষ্টরূপেই পেয়েছিল,

فَهُمْ عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِمْ يُهْرَعُونَ ﴿٧٠﴾

তাই তারা তাদের পদচিহ্নের অন্ধ অনুসরণ করেছিল,

وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿٧١﴾

আর তাদের আগে অধিকাংশ পূর্ববর্তীরা বিপথে গিয়েছিল,

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا فِيهِم مُّنذِرِينَ ﴿٧٢﴾

অথচ আমরা তাদের মধ্যে ইতিপূর্বে সতর্ককারীদের পাঠিয়েছিলাম,

فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُنذَرِينَ ﴿٧٣﴾

সুতরাং চেয়ে দেখো কেমন হয়েছিল সতর্কীকৃতদের পরিণাম,

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿٧٤﴾

শুধু আল্লাহ্‌র খাস বান্দাদের ব্যতীত।

وَلَقَدْ نَادَىٰنَا نُوحٌۭ فَلَنِعْمَ ٱلْمُجِيبُونَ ﴿٧٥﴾

আর ইতিপূর্বে অবশ্য নূহ আমাদের আহ্বান করেছিলেন, আর আমরা কত উত্তম উত্তরদাতা।

وَنَجَّيْنَٰهُ وَأَهْلَهُۥ مِنَ ٱلْكَرْبِ ٱلْعَظِيمِ ﴿٧٦﴾

আর আমরা তাঁকে ও তাঁর পরিজনকে ভীষণ সংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম,

وَجَعَلْنَا ذُرِّيَّتَهُۥ هُمُ ٱلْبَاقِينَ ﴿٧٧﴾

আর তাঁর সন্তান-সন্ততিকে আমরা বানিয়েছিলাম প্রকৃত টিকে থাকা দল,

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْءَاخِرِينَ ﴿٧٨﴾

আর তাঁর জন্য পরবর্তীদের মধ্যে আমরা রেখেছিলাম --

سَلَٰمٌ عَلَىٰ نُوحٍۢ فِى ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿٧٩﴾

সমগ্র বিশ্বজগতের মধ্যে নূহের প্রতি সালাম!

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿٨٠﴾

নিঃসন্দেহ এইভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।

إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ ﴿٨١﴾

তিনি অবশ্যই আমাদের বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

ثُمَّ أَغْرَقْنَا ٱلْءَاخَرِينَ ﴿٨٢﴾

আর আমরা অন্যান্যদের ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।

۞ وَإِنَّ مِن شِيعَتِهِۦ لَإِبْرَٰهِيمَ ﴿٨٣﴾

আর নিশ্চয়ই তাঁর পশ্চাদবর্তীদের মধ্যে ছিলেন ইব্রাহীম।

إِذْ جَآءَ رَبَّهُۥ بِقَلْبٍۢ سَلِيمٍ ﴿٨٤﴾

স্মরণ কর! তিনি তাঁর প্রভুর কাছে এসেছিলেন বিশুদ্ধ চিত্ত নিয়ে, --

إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِۦ مَاذَا تَعْبُدُونَ ﴿٨٥﴾

যখন তাঁর পিতৃপুরুষকে ও তাঁর স্বজাতিকে তিনি বলেছিলেন -- ''তোমরা কিসের উপাসনা করছ?

أَئِفْكًا ءَالِهَةًۭ دُونَ ٱللَّهِ تُرِيدُونَ ﴿٨٦﴾

''তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে কি এক মিথ্যা উপাস্যকেই কামনা কর?

فَمَا ظَنُّكُم بِرَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿٨٧﴾

''তাহলে বিশ্বজগতের প্রভু সন্বন্ধে কী তোমাদের ধারণা?’’

فَنَظَرَ نَظْرَةًۭ فِى ٱلنُّجُومِ ﴿٨٨﴾

তারপর তারকারাজির দিকে তিনি একনজর তাকালেন,

فَقَالَ إِنِّى سَقِيمٌۭ ﴿٨٩﴾

তখন তিনি বললেন -- ''আমি যারপর নাই বিরক্ত!’’

فَتَوَلَّوْا۟ عَنْهُ مُدْبِرِينَ ﴿٩٠﴾

সুতরাং তারা তাঁর কাছ থেকে বিমুখ হয়ে ফিরে গেল।

فَرَاغَ إِلَىٰٓ ءَالِهَتِهِمْ فَقَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ ﴿٩١﴾

তারপর তিনি তাদের উপাস্যদের কাছে ফিরে গেলেন এবং বললেন -- ''তোমরা খাও না কেন?

مَا لَكُمْ لَا تَنطِقُونَ ﴿٩٢﴾

''তোমাদের কী হয়েছে যে তোমরা কথা বলছ না?’’

فَرَاغَ عَلَيْهِمْ ضَرْبًۢا بِٱلْيَمِينِ ﴿٩٣﴾

কাজেই তিনি তাদের উপরে লাফিয়ে পড়লেন ডানহাতে আঘাত করে।

فَأَقْبَلُوٓا۟ إِلَيْهِ يَزِفُّونَ ﴿٩٤﴾

তখন তারা তাঁর দিকে ছুটে এল হতবুদ্ধি হয়ে।

قَالَ أَتَعْبُدُونَ مَا تَنْحِتُونَ ﴿٩٥﴾

তিনি বললেন -- ''তোমরা কি তার উপাসনা কর যা তোমরা কেটে বানাও,

وَٱللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ ﴿٩٦﴾

''অথচ আল্লাহ্ তোমাদের সৃষ্টি করেছেন আর তোমরা যা তৈরি কর তাও?’’

قَالُوا۟ ٱبْنُوا۟ لَهُۥ بُنْيَٰنًۭا فَأَلْقُوهُ فِى ٱلْجَحِيمِ ﴿٩٧﴾

তারা বললে -- ''এর জন্য এক কাঠামো তৈরি কর, তারপর তাকে নিক্ষেপ কর সেই ভয়ঙ্কর আগুনে।’’

فَأَرَادُوا۟ بِهِۦ كَيْدًۭا فَجَعَلْنَٰهُمُ ٱلْأَسْفَلِينَ ﴿٩٨﴾

কাজেই তারা তাঁর বিরুদ্ধে এক চক্রান্ত ফাঁদলো, কিন্তু আমরা তাদের হীন বানিয়ে দিলাম।

وَقَالَ إِنِّى ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّى سَيَهْدِينِ ﴿٩٩﴾

আর তিনি বললেন -- ''আমি নিশ্চয়ই আমার প্রভুর দিকে যাত্রাকারী, তিনি আমাকে অচিরেই পরিচালিত করবেন।’’

رَبِّ هَبْ لِى مِنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ﴿١٠٠﴾

''আমার প্রভু! আমার জন্য সৎকর্মীদের থেকে দান করো।’’

فَبَشَّرْنَٰهُ بِغُلَٰمٍ حَلِيمٍۢ ﴿١٠١﴾

সেজন্য আমরা তাঁকে সুসংবাদ দিলাম এক অমায়িক পুত্রসন্তানের।

فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ ٱلسَّعْىَ قَالَ يَٰبُنَىَّ إِنِّىٓ أَرَىٰ فِى ٱلْمَنَامِ أَنِّىٓ أَذْبَحُكَ فَٱنظُرْ مَاذَا تَرَىٰ ۚ قَالَ يَٰٓأَبَتِ ٱفْعَلْ مَا تُؤْمَرُ ۖ سَتَجِدُنِىٓ إِن شَآءَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلصَّٰبِرِينَ ﴿١٠٢﴾

তারপর যখন সে তাঁর সঙ্গে কাজ করার যোগ্যতায় উপনীত হল তখন তিনি বললেন -- ''হে আমার পুত্রধন! নিঃসন্দেহ আমি স্বপ্নে দেখলাম যে আমি তোমাকে কুরবানি করছি, অতএব ভেবে দেখো -- কী তুমি দেখছো ।’’ তিনি বললেন -- ''হে আমার আব্বা! আপনি তাই করুন যা আপনাকে আদেশ করা হয়েছে। ইন-শা-আল্লাহ্ আপনি এখনি আমাকে পাবেন অধ্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত।

فَلَمَّآ أَسْلَمَا وَتَلَّهُۥ لِلْجَبِينِ ﴿١٠٣﴾

সুতরাং তাঁরা উভয়ে যখন আ‌ত্মসমর্পণ করলেন এবং তিনি তাঁকে ভূপাতিত করলেন কপালের জন্য,

وَنَٰدَيْنَٰهُ أَن يَٰٓإِبْرَٰهِيمُ ﴿١٠٤﴾

তখনই আমরা তাঁকে ডেকে বললাম -- ''হে ইব্রাহীম!

قَدْ صَدَّقْتَ ٱلرُّءْيَآ ۚ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿١٠٥﴾

''তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে। নিঃসন্দেহ এইভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।

إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ ٱلْبَلَٰٓؤُا۟ ٱلْمُبِينُ ﴿١٠٦﴾

''নিশ্চয়ই এটি -- এইটিই তো ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা।’’

وَفَدَيْنَٰهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍۢ ﴿١٠٧﴾

আর আমরা তাঁকে বদলা দিয়েছিলাম এক মহান কুরবানি।

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْءَاخِرِينَ ﴿١٠٨﴾

আর আমরা তাঁর জন্য পরবর্তীদের মধ্যে রেখেছিলাম --

سَلَٰمٌ عَلَىٰٓ إِبْرَٰهِيمَ ﴿١٠٩﴾

ইব্রাহীমের প্রতি ''সালাম’’।

كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿١١٠﴾

এইভাবেই আমরা প্রতিদান দিই সৎকর্মশীলদের।

إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ ﴿١١١﴾

নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের মধ্যেকার।

وَبَشَّرْنَٰهُ بِإِسْحَٰقَ نَبِيًّۭا مِّنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ﴿١١٢﴾

আর আমরা তাঁকে সুসংবাদ দিয়েছিলাম ইসহাকের -- একজন নবী সৎপথাবলন্বীদের মধ্যেকার।

وَبَٰرَكْنَا عَلَيْهِ وَعَلَىٰٓ إِسْحَٰقَ ۚ وَمِن ذُرِّيَّتِهِمَا مُحْسِنٌۭ وَظَالِمٌۭ لِّنَفْسِهِۦ مُبِينٌۭ ﴿١١٣﴾

আর আমরা আশীর্বাদ বর্ষণ করেছিলাম তাঁর উপরে ও ইসহাকের উপরে। আর তাঁদের দুজনের বংশধরদের মধ্যে থেকে কেউ হচ্ছেন সৎকর্মশীল, আর কেউ হচ্ছে তাদের নিজেদের প্রতি স্পষ্টভাবে অন্যায়াচারী।

وَلَقَدْ مَنَنَّا عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَٰرُونَ ﴿١١٤﴾

আর নিশ্চয় আমরা মূসা ও হারূনের প্রতি অনুগ্রহ করেই ছিলাম,

وَنَجَّيْنَٰهُمَا وَقَوْمَهُمَا مِنَ ٱلْكَرْبِ ٱلْعَظِيمِ ﴿١١٥﴾

আর তাঁদের দুজনকে ও তাঁদের লোকদলকে আমরা ভীষণ সংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম।

وَنَصَرْنَٰهُمْ فَكَانُوا۟ هُمُ ٱلْغَٰلِبِينَ ﴿١١٦﴾

আর আমরা তাঁদের সাহায্য করেছিলাম, সেজন্য তাঁরা খোদ বিজয়ী হয়েছিলেন।

وَءَاتَيْنَٰهُمَا ٱلْكِتَٰبَ ٱلْمُسْتَبِينَ ﴿١١٧﴾

আর তাঁদের উভয়কে আমরা দিয়েছিলাম এক স্পষ্ট গ্রন্থ,

وَهَدَيْنَٰهُمَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلْمُسْتَقِيمَ ﴿١١٨﴾

আর তাঁদের উভয়কে আমরা পরিচালিত করেছিলাম সরল-সঠিক পথে,

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِمَا فِى ٱلْءَاخِرِينَ ﴿١١٩﴾

আর তাদের জন্য আমরা পরবর্তীদের মধ্যে রেখেছিলাম --

سَلَٰمٌ عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَٰرُونَ ﴿١٢٠﴾

মূসা ও হারূনের প্রতি ''সালাম’’।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿١٢١﴾

এইভাবেই আমরা অবশ্য প্রতিদান দিই সৎকর্মশীলদের।

إِنَّهُمَا مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ ﴿١٢٢﴾

নিশ্চয় তাঁরা ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের মধ্যেকার।

وَإِنَّ إِلْيَاسَ لَمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٢٣﴾

আর নিশ্চয়ই ইল্‌য়াস রসূলগণের মধ্যেকার ছিলেন।

إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِۦٓ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿١٢٤﴾

স্মরণ করো, তিনি তাঁর স্বজাতিকে বলেছিলেন -- ''তোমরা কি ধর্মভীরুতা অবলন্বন করবে না?

أَتَدْعُونَ بَعْلًۭا وَتَذَرُونَ أَحْسَنَ ٱلْخَٰلِقِينَ ﴿١٢٥﴾

''তোমরা কি বা’লকে ডাকবে, আর পরিত্যাগ করবে সৃষ্টিকর্তাদের সর্বশ্রেষ্ঠজনকে,

ٱللَّهَ رَبَّكُمْ وَرَبَّ ءَابَآئِكُمُ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿١٢٦﴾

আল্লাহ্‌কে -- তোমাদের প্রভু এবং পূর্বকালীন তোমাদের পিতৃপুরুষদেরও প্রভু?’’

فَكَذَّبُوهُ فَإِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ ﴿١٢٧﴾

কিন্তু তারা তাঁর প্রতি মিথ্যারোপ করল, সেজন্য তাদের নিশ্চয়ই হাজির করা হবে,

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿١٢٨﴾

শুধু আল্লাহ্‌র একনিষ্ঠ বান্দাদের ব্যতীত।

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْءَاخِرِينَ ﴿١٢٩﴾

আর তাঁর জন্য আমরা পরবর্তীদের মধ্যে রেখেছিলাম --

سَلَٰمٌ عَلَىٰٓ إِلْ يَاسِينَ ﴿١٣٠﴾

ইল্‌য়াসীনের উপরে ''সালাম’’।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿١٣١﴾

নিঃসন্দেহ এইভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।

إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ ﴿١٣٢﴾

তিনি নিশ্চয়ই ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের অন্যতম।

وَإِنَّ لُوطًۭا لَّمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٣٣﴾

আর অবশ্যই লূত ছিলেন রসূলগণের মধ্যেকার।

إِذْ نَجَّيْنَٰهُ وَأَهْلَهُۥٓ أَجْمَعِينَ ﴿١٣٤﴾

স্মরণ কর! তাঁকে ও তাঁর পরিজনকে উদ্ধার করেছিলাম, সব ক’জনকেই --

إِلَّا عَجُوزًۭا فِى ٱلْغَٰبِرِينَ ﴿١٣٥﴾

এক বৃদ্ধাকে ব্যতীত, যে ছিল পেছনে রয়ে যাওয়া দলের।

ثُمَّ دَمَّرْنَا ٱلْءَاخَرِينَ ﴿١٣٦﴾

তারপর আমরা অবশিষ্টদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম।

وَإِنَّكُمْ لَتَمُرُّونَ عَلَيْهِم مُّصْبِحِينَ ﴿١٣٧﴾

আর নিঃসন্দেহ তোমরা তো তাদের অতিক্রম করে থাক সকালবেলায়,

وَبِٱلَّيْلِ ۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ ﴿١٣٨﴾

এবং রাত্রিকালে। তবুও কি তোমরা বুঝবে না।

وَإِنَّ يُونُسَ لَمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٣٩﴾

আর নিশ্চয়ই ইউনুস ছিলেন রসূলগণের অন্যতম।

إِذْ أَبَقَ إِلَى ٱلْفُلْكِ ٱلْمَشْحُونِ ﴿١٤٠﴾

স্মরণ করো! তিনি বোঝাই করা জাহাজে গিয়ে উঠেছিলেন।

فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ ٱلْمُدْحَضِينَ ﴿١٤١﴾

তাই তিনি লটারী খেলেছিলেন, কিন্তু তিনিই হয়ে গেলেন নিক্ষিপ্তদের একজন।

فَٱلْتَقَمَهُ ٱلْحُوتُ وَهُوَ مُلِيمٌۭ ﴿١٤٢﴾

তখন একটি মাছ তাঁকে মুখে তুলে নিল, যদিও তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।

فَلَوْلَآ أَنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلْمُسَبِّحِينَ ﴿١٤٣﴾

আর তিনি যদি মহিমা জপতপে রত না থাকতেন --

لَلَبِثَ فِى بَطْنِهِۦٓ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ ﴿١٤٤﴾

তাহলে তিনি তার পেটে রয়ে যেতেন পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত।

۞ فَنَبَذْنَٰهُ بِٱلْعَرَآءِ وَهُوَ سَقِيمٌۭ ﴿١٤٥﴾

তারপর আমরা তাঁকে এক বৃক্ষলতা শূন্য উপকূলে ফেলে দিলাম, আর তিনি ছিলেন অসুস্থ।

وَأَنۢبَتْنَا عَلَيْهِ شَجَرَةًۭ مِّن يَقْطِينٍۢ ﴿١٤٦﴾

তখন তাঁর উপরে আমরা জন্মিয়েছিলাম লাউজাতীয় গাছ,

وَأَرْسَلْنَٰهُ إِلَىٰ مِا۟ئَةِ أَلْفٍ أَوْ يَزِيدُونَ ﴿١٤٧﴾

আর আমরা তাঁকে পাঠিয়েছিলাম এক লাখ বা আরো বেশী লোকের কাছে,

فَـَٔامَنُوا۟ فَمَتَّعْنَٰهُمْ إِلَىٰ حِينٍۢ ﴿١٤٨﴾

তখন তারা বিশ্বাস করেছিল, সেজন্য আমরা তাদের উপভোগ করতে দিয়েছিলাম কিছুকালের জন্য।

فَٱسْتَفْتِهِمْ أَلِرَبِّكَ ٱلْبَنَاتُ وَلَهُمُ ٱلْبَنُونَ ﴿١٤٩﴾

সুতরাং তাদের জিজ্ঞাসা করো -- তোমার প্রভুর জন্য কি কন্যাসন্তান রয়েছে, আর তাদের জন্য পুত্রসন্তান?

أَمْ خَلَقْنَا ٱلْمَلَٰٓئِكَةَ إِنَٰثًۭا وَهُمْ شَٰهِدُونَ ﴿١٥٠﴾

অথবা, আমরা কি ফিরিশ্‌তাদের নারীরূপে সৃষ্টি করেছিলাম, আর তারা সাক্ষী ছিল?

أَلَآ إِنَّهُم مِّنْ إِفْكِهِمْ لَيَقُولُونَ ﴿١٥١﴾

এটি কি নয় যে তারা আলবৎ তাদের মিথ্যা থেকেই তো কথা বলছে, --

وَلَدَ ٱللَّهُ وَإِنَّهُمْ لَكَٰذِبُونَ ﴿١٥٢﴾

আল্লাহ্ জন্ম দিয়েছিলেন? আর তারা তো নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।

أَصْطَفَى ٱلْبَنَاتِ عَلَى ٱلْبَنِينَ ﴿١٥٣﴾

তিনি কি কন্যাদের পছন্দ করেছেন পুত্রদের পরিবর্তে?

مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ ﴿١٥٤﴾

তোমাদের কি হয়েছে? কিভাবে তোমরা বিচার করো?

أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ﴿١٥٥﴾

তোমরা কি তবে মনোযোগ দেবে না?

أَمْ لَكُمْ سُلْطَٰنٌۭ مُّبِينٌۭ ﴿١٥٦﴾

নাকি তোমাদের কাছে কোনো স্পষ্ট দলিল-প্রমাণ রয়েছে?

فَأْتُوا۟ بِكِتَٰبِكُمْ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ ﴿١٥٧﴾

তেমন হলে তোমাদের গ্রন্থ নিয়ে এস, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।

وَجَعَلُوا۟ بَيْنَهُۥ وَبَيْنَ ٱلْجِنَّةِ نَسَبًۭا ۚ وَلَقَدْ عَلِمَتِ ٱلْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ ﴿١٥٨﴾

আর তারা তাঁর মধ্যে ও জিনদের মধ্যে একটা সম্পর্ক দাঁড় করিয়েছে। আর জিনরা তো জেনেই ফেলেছে যে তাদের অবশ্যই উপস্থাপিত করা হবে।

سُبْحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ ﴿١٥٩﴾

আল্লাহ্‌রই সব মহিমা! তারা যা আরোপ করে তা থেকে বহু ঊর্ধ্বে, --

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿١٦٠﴾

আল্লাহ্‌র নিষ্ঠাবান বান্দারা ব্যতীত।

فَإِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ ﴿١٦١﴾

অতএব নিশ্চয়ই তোমরা ও যাদের তোমরা উপাসনা কর তারা --

مَآ أَنتُمْ عَلَيْهِ بِفَٰتِنِينَ ﴿١٦٢﴾

তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তকারী হতে পারবে না, --

إِلَّا مَنْ هُوَ صَالِ ٱلْجَحِيمِ ﴿١٦٣﴾

তাকে ব্যতীত যে জ্বলন্ত আগুনে পুড়তে চায়।

وَمَا مِنَّآ إِلَّا لَهُۥ مَقَامٌۭ مَّعْلُومٌۭ ﴿١٦٤﴾

আর ''আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার জন্যে নির্ধারিত আবাস নেই,

وَإِنَّا لَنَحْنُ ٱلصَّآفُّونَ ﴿١٦٥﴾

''আর নিশ্চয়ই আমরা, আমরাই তো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াব,

وَإِنَّا لَنَحْنُ ٱلْمُسَبِّحُونَ ﴿١٦٦﴾

''আর অবশ্য আমরা, আলবৎ আমরা জপ করতে থাকব।’’

وَإِن كَانُوا۟ لَيَقُولُونَ ﴿١٦٧﴾

আর নিশ্চয়ই তারা বলতে থাকতো --

لَوْ أَنَّ عِندَنَا ذِكْرًۭا مِّنَ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿١٦٨﴾

''যদি আমাদের কাছে পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে কোনো স্মরণীয় গ্রন্থ থাকতো,

لَكُنَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿١٦٩﴾

''তাহলে আমরা আল্লাহ্‌র নিষ্ঠাবান বান্দা হতে পারতাম।’’

فَكَفَرُوا۟ بِهِۦ ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ ﴿١٧٠﴾

কিন্তু তারা এতে অবিশ্বাস পোষণ করে, কাজেই শীঘ্রই তারা জানতে পারবে।

وَلَقَدْ سَبَقَتْ كَلِمَتُنَا لِعِبَادِنَا ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٧١﴾

আর অবশ্যই আমাদের বক্তব্য আমাদের বান্দাদের -- প্রেরিত পুরুষদের, জন্য সাব্যস্ত হয়েই গেছে, --

إِنَّهُمْ لَهُمُ ٱلْمَنصُورُونَ ﴿١٧٢﴾

নিঃসন্দেহ তাঁরা -- তাঁরাই তো হবে সাহায্যপ্রাপ্ত,

وَإِنَّ جُندَنَا لَهُمُ ٱلْغَٰلِبُونَ ﴿١٧٣﴾

আর নিঃসন্দেহ আমাদের সেনাদল -- তারাই তো হবে বিজয়ী।

فَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍۢ ﴿١٧٤﴾

অতএব তাদের থেকে ফিরে থেকো কিছুকালের জন্য,

وَأَبْصِرْهُمْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ ﴿١٧٥﴾

আর তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখো, কেননা তারাও শীঘ্রই দেখতে পাবে।

أَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُونَ ﴿١٧٦﴾

তারা কি তবে আমাদের শাস্তি ত্বরান্বিত করতে চায়?

فَإِذَا نَزَلَ بِسَاحَتِهِمْ فَسَآءَ صَبَاحُ ٱلْمُنذَرِينَ ﴿١٧٧﴾

কিন্তু যখন তা তাদের আঙিনায় অবতরণ করবে তখন সতর্কীকৃতদের প্রভাত হবে কত মন্দ!

وَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍۢ ﴿١٧٨﴾

আর তুমি তাদের থেকে ফিরে থেকো কিছুকালের জন্য,

وَأَبْصِرْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ ﴿١٧٩﴾

আর লক্ষ্য রাখো, কেননা তারাও শীঘ্রই দেখতে পাবে।

سُبْحَٰنَ رَبِّكَ رَبِّ ٱلْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ ﴿١٨٠﴾

মহিমা কীর্তিত হোক তোমার প্রভুর -- পরম মর্যাদা সম্পন্ন প্রভুর, তারা যা-কিছু আরোপ করে তা থেকে বহু ঊর্ধ্বে।

وَسَلَٰمٌ عَلَى ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٨١﴾

আর 'সালাম’ প্রেরিতপুরুষদের উপরে।

وَٱلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿١٨٢﴾

আর সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌রই জন্য -- বিশ্বজগতের প্রভু!