Main pages

Surah The Iron [Al-Hadid] in Bengali

Surah The Iron [Al-Hadid] Ayah 29 Location Madanah Number 57

سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ ﴿١﴾

মহাকাশমন্ডলে ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে তা আল্লাহ্‌র জপতপ করে, আর তিনি মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

لَهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ يُحْىِۦ وَيُمِيتُ ۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌ ﴿٢﴾

তাঁরই হচ্ছে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান, আর তিনিই সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

هُوَ ٱلْأَوَّلُ وَٱلْءَاخِرُ وَٱلظَّٰهِرُ وَٱلْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌ ﴿٣﴾

তিনিই আদি ও অন্ত আর প্রকাশ্য ও গুপ্ত, কেননা তিনিই সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।

هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍۢ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِ ۚ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِى ٱلْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا ۖ وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ ۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌۭ ﴿٤﴾

তিনিই সেইজন যিনি মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, তারপর তিনি সমারোহণ করলেন আরশের উপরে। তিনি জানেন যা পৃথিবীর ভেতরে প্রবেশ করে এবং যা তা থেকে বেরিয়ে আসে, আর যা আকাশ থেকে নেমে আসে এবং যা তাতে উঠে যায়। আর তিনি তোমাদের সঙ্গে রয়েছেন যেখানেই তোমরা থাক না কেন। আর তোমরা যা কর সে-সন্বন্ধে আল্লাহ্ সম্যক দ্রষ্টা।

لَّهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرْجَعُ ٱلْأُمُورُ ﴿٥﴾

তাঁরই হচ্ছে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আর আল্লাহ্‌রই প্রতি ব্যাপার-স্যাপারগুলো ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

يُولِجُ ٱلَّيْلَ فِى ٱلنَّهَارِ وَيُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِى ٱلَّيْلِ ۚ وَهُوَ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿٦﴾

তিনি রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেন এবং দিনকে প্রবেশ করান রাতের মধ্যে। আর বুকের ভেতরে যা-কিছু আছে সে- সন্বন্ধে তিনি সর্বজ্ঞাতা।

ءَامِنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَأَنفِقُوا۟ مِمَّا جَعَلَكُم مُّسْتَخْلَفِينَ فِيهِ ۖ فَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مِنكُمْ وَأَنفَقُوا۟ لَهُمْ أَجْرٌۭ كَبِيرٌۭ ﴿٧﴾

আল্লাহ্‌র ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনো, এবং খরচ করো তা থেকে যা দিয়ে তিনি এতে তোমাদের উত্তরাধিকারী বানিয়েছেন। সুতরাং তোমাদের মধ্যের যারা ঈমান আনে ও খরচ করে, তাদের জন্য রয়েছে এক বিরাট প্রতিদান।

وَمَا لَكُمْ لَا تُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ ۙ وَٱلرَّسُولُ يَدْعُوكُمْ لِتُؤْمِنُوا۟ بِرَبِّكُمْ وَقَدْ أَخَذَ مِيثَٰقَكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ﴿٨﴾

আর তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা আল্লাহ্‌তে বিশ্বাস করছ না, অথচ রসূল তোমাদের আহ্বান করছেন যেন তোমরা তোমাদের প্রভুর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করো, এবং তিনিও ইতিপূর্বেই তোমাদের থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন, -- যদি তোমরা বিশ্বাসী হয়ে থাকো?

هُوَ ٱلَّذِى يُنَزِّلُ عَلَىٰ عَبْدِهِۦٓ ءَايَٰتٍۭ بَيِّنَٰتٍۢ لِّيُخْرِجَكُم مِّنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ ۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ بِكُمْ لَرَءُوفٌۭ رَّحِيمٌۭ ﴿٩﴾

তিনিই সেইজন যিনি তাঁর বান্দার কাছে সুস্পষ্ট নির্দেশাবলী অবতারণ করছেন যেন তিনি তোমাদের বের কবে আনতে পারেন অন্ধকার থেকে আলোকের মধ্যে। আর আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতি তো পরম স্নেহময়, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَمَا لَكُمْ أَلَّا تُنفِقُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَلِلَّهِ مِيرَٰثُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۚ لَا يَسْتَوِى مِنكُم مَّنْ أَنفَقَ مِن قَبْلِ ٱلْفَتْحِ وَقَٰتَلَ ۚ أُو۟لَٰٓئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةًۭ مِّنَ ٱلَّذِينَ أَنفَقُوا۟ مِنۢ بَعْدُ وَقَٰتَلُوا۟ ۚ وَكُلًّۭا وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلْحُسْنَىٰ ۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌۭ ﴿١٠﴾

আর তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা আল্লাহ্‌র পথে খরচ কর না, অথচ আল্লাহ্‌রই হচ্ছে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর উত্তরাধিকার? তোমাদের মধ্যে তারা সমতুল্য নয় যারা সেই বিজয়ের পূর্বে খরচ করেছিল ও যুদ্ধ করেছিল। এরা শ্রেণীবিভাগে উচ্চতর তাদের থেকে যারা পরবর্তীকালে খরচ করে ও যুদ্ধ করে, আর প্রত্যেককেই আল্লাহ্ ওয়াদা করেছেন কল্যাণের। কেননা তোমরা যা কর সে-সন্বন্ধে আল্লাহ্ পূর্ণ ওয়াকিফহাল।

مَّن ذَا ٱلَّذِى يُقْرِضُ ٱللَّهَ قَرْضًا حَسَنًۭا فَيُضَٰعِفَهُۥ لَهُۥ وَلَهُۥٓ أَجْرٌۭ كَرِيمٌۭ ﴿١١﴾

কে সেইজন যে আল্লাহ্‌কে কর্জ দেয় উত্তম কর্জ, ফলে তিনি এটিকে তারজন্য বহুগুণিত করে দেন, আর তার জন্য রয়েছে সম্মানিত পুরস্কার?

يَوْمَ تَرَى ٱلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتِ يَسْعَىٰ نُورُهُم بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَٰنِهِم بُشْرَىٰكُمُ ٱلْيَوْمَ جَنَّٰتٌۭ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَا ۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ ﴿١٢﴾

সেইদিন তুমি বিশ্বাসীদের ও বিশ্বাসিনীদের দেখতে পাবে -- তাদের আলোক ধাবিত হয়েছে তাদের সম্মুখে ও তাদের ডানদিক দিয়ে, -- ''তোমাদের জন্য আজ সুসংবাদ -- স্বর্গোউদ্যানসমূহে যাদের নীচে দিয়ে বয়ে চলেছে ঝরনারাজি, সেখানে অবস্থান করবে।’’ এটিই হচ্ছে বিরাট সাফল্য।

يَوْمَ يَقُولُ ٱلْمُنَٰفِقُونَ وَٱلْمُنَٰفِقَٰتُ لِلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱنظُرُونَا نَقْتَبِسْ مِن نُّورِكُمْ قِيلَ ٱرْجِعُوا۟ وَرَآءَكُمْ فَٱلْتَمِسُوا۟ نُورًۭا فَضُرِبَ بَيْنَهُم بِسُورٍۢ لَّهُۥ بَابٌۢ بَاطِنُهُۥ فِيهِ ٱلرَّحْمَةُ وَظَٰهِرُهُۥ مِن قِبَلِهِ ٱلْعَذَابُ ﴿١٣﴾

সেই দিন যখন কপটাচারী ও কপটাচারিণীরা বলবে তাদের যারা বিশ্বাস করেছে -- ''আমাদের দিকে দেখো তো, তোমাদের আলোক থেকে যেন আমরা নিতে পারি।’’ বলা হবে -- ''তোমরা তোমাদের পেছনে ফিরে যাও এবং আলোর খোঁজ কর।’’ তারপর তাদের মধ্যে একটি দেওয়াল দাঁড় করানো হবে যাতে থাকবে একটি দরজা। তার ভেতরের দিকে, সেখানে রয়েছে করুণা, আর তার বাইরের দিকে, তার সামনেই রয়েছে শাস্তি।

يُنَادُونَهُمْ أَلَمْ نَكُن مَّعَكُمْ ۖ قَالُوا۟ بَلَىٰ وَلَٰكِنَّكُمْ فَتَنتُمْ أَنفُسَكُمْ وَتَرَبَّصْتُمْ وَٱرْتَبْتُمْ وَغَرَّتْكُمُ ٱلْأَمَانِىُّ حَتَّىٰ جَآءَ أَمْرُ ٱللَّهِ وَغَرَّكُم بِٱللَّهِ ٱلْغَرُورُ ﴿١٤﴾

তারা তাদের ডেকে বলবে -- ''আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম না?’’ তারা বলবে -- ''হাঁ, কিন্ত তোমরা তোমাদের নিজেদের প্রলুব্ধ করেছিলে, আর প্রতীক্ষা করেছিলে, আর বৃথা কামনা তোমাদের প্রতারিত করেছিল যে পর্যন্ত না আল্লাহ্‌র বিধান এসেছিল, আর আল্লাহ্ সম্পর্কে মহাপ্রতারক তোমাদের প্রতারণা করেছিল।

فَٱلْيَوْمَ لَا يُؤْخَذُ مِنكُمْ فِدْيَةٌۭ وَلَا مِنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ ۚ مَأْوَىٰكُمُ ٱلنَّارُ ۖ هِىَ مَوْلَىٰكُمْ ۖ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ ﴿١٥﴾

''সেজন্য আজকের দিনে তোমাদের থেকে কোনো মুক্তিপণ গ্রহণ করা হবে না, আর যারা অবিশ্বাস করেছিল তাদের থেকেও নয়। তোমাদের আবাসস্থল হচ্ছে জাহান্নাম, এই-ই তোমাদের মুরব্বী, আর কত নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থল!’’

۞ أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَن تَخْشَعَ قُلُوبُهُمْ لِذِكْرِ ٱللَّهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ ٱلْحَقِّ وَلَا يَكُونُوا۟ كَٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَٰبَ مِن قَبْلُ فَطَالَ عَلَيْهِمُ ٱلْأَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ ۖ وَكَثِيرٌۭ مِّنْهُمْ فَٰسِقُونَ ﴿١٦﴾

এখনও কি সময় হয় নি তাদের জন্য যে যারা বিশ্বাস করে তাদের হৃদয় বিনত হবে আল্লাহ্‌র স্মরণে এবং সত্যের যা অবতীর্ণ হয়েছে? আর তারা ওদের মতো না হোক যাদের পূর্ববর্তীকালে গ্রন্থ দেওয়া হয়েছিল, কিন্ত সময় তাদের জন্য সুদীর্ঘ মনে হয়েছিল, ফলে তাদের হৃদয় কঠিন হয়ে পড়েছিল। আর তাদের মধ্যের অনেকেই হয়েছিল সত্যত্যাগী।

ٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ يُحْىِ ٱلْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا ۚ قَدْ بَيَّنَّا لَكُمُ ٱلْءَايَٰتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ ﴿١٧﴾

তোমরা জেনে রাখো যে আল্লাহ্ পৃথিবীটাকে তার মৃত্যুর পরে প্রাণ সঞ্চার করেন। আমরা তো তোমাদের জন্য নির্দেশাবলী সুস্পষ্ট করে দিয়েছি যেন তোমরা বুঝতে পার।

إِنَّ ٱلْمُصَّدِّقِينَ وَٱلْمُصَّدِّقَٰتِ وَأَقْرَضُوا۟ ٱللَّهَ قَرْضًا حَسَنًۭا يُضَٰعَفُ لَهُمْ وَلَهُمْ أَجْرٌۭ كَرِيمٌۭ ﴿١٨﴾

নিঃসন্দেহ দানশীল পুরুষ ও দানশীলা নারীরা আর যারা আল্লাহ্‌কে উত্তম ঋণ দান করে -- তাদের জন্য তা বহুগুণিত করা হবে, আর তাদের জন্য রয়েছে সম্মানিত পুরস্কার।

وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦٓ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلصِّدِّيقُونَ ۖ وَٱلشُّهَدَآءُ عِندَ رَبِّهِمْ لَهُمْ أَجْرُهُمْ وَنُورُهُمْ ۖ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَآ أُو۟لَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلْجَحِيمِ ﴿١٩﴾

আর যারা আল্লাহ্‌র প্রতি ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারাই খোদ সত্যপরায়ণ এবং তাদের প্রভুর সমক্ষে সাক্ষ্যদাতা। তাদের জন্য রয়েছে তাদের প্রতিদান ও তাদের আলোক। পক্ষান্তরে যারা অবিশ্বাস করে ও আমাদের নির্দেশাবলী প্রত্যাখ্যান করে, তারাই হচ্ছে ভয়ংকর আগুনের বাসিন্দা।

ٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّمَا ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا لَعِبٌۭ وَلَهْوٌۭ وَزِينَةٌۭ وَتَفَاخُرٌۢ بَيْنَكُمْ وَتَكَاثُرٌۭ فِى ٱلْأَمْوَٰلِ وَٱلْأَوْلَٰدِ ۖ كَمَثَلِ غَيْثٍ أَعْجَبَ ٱلْكُفَّارَ نَبَاتُهُۥ ثُمَّ يَهِيجُ فَتَرَىٰهُ مُصْفَرًّۭا ثُمَّ يَكُونُ حُطَٰمًۭا ۖ وَفِى ٱلْءَاخِرَةِ عَذَابٌۭ شَدِيدٌۭ وَمَغْفِرَةٌۭ مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضْوَٰنٌۭ ۚ وَمَا ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَآ إِلَّا مَتَٰعُ ٱلْغُرُورِ ﴿٢٠﴾

তোমরা জেনে রাখো যে পার্থিব জীবনটা তো খেলা-ধূলো ও আমোদ-প্রমোদ ও জাঁকজমক ও তোমাদের নিজেদের মধ্যে হামবড়াই এবং ধনদৌলত ও সন্তানসন্ততির প্রতিযোগিতা মাত্র। এটি বৃষ্টির উপমার মতো যার উৎপাদন চাষীদের চমৎকৃত করে, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তুমি তখন তা দেখতে পাও হলদে হয়ে গেছে, অবশেষে তা খড়কুটো হয়ে যায়! আর পরকালে রয়েছে কঠোর শাস্তি, পক্ষান্তরে রয়েছে আল্লাহ্‌র কাছ থেকে পরিত্রাণ ও সন্তষ্টি। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগবিলাস বৈ তো নয়।

سَابِقُوٓا۟ إِلَىٰ مَغْفِرَةٍۢ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا كَعَرْضِ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ أُعِدَّتْ لِلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ ٱللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَآءُ ۚ وَٱللَّهُ ذُو ٱلْفَضْلِ ٱلْعَظِيمِ ﴿٢١﴾

তোমরা প্রতিযোগিতা করো তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য এবং এমন এক জান্নাতের জন্য যার বিস্তার হচ্ছে মহাকাশ ও পৃথিবীর বিস্তৃতির মতো, -- এটি তৈরি করা হয়েছে তাদের জন্য যারা আল্লাহ্‌তে ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনে। এ হচ্ছে আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ প্রাচুর্য, তিনি তা প্রদান করেন যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। বস্তুত আল্লাহ্ বিরাট করুণাভান্ডারের অধিকারী।

مَآ أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍۢ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا فِىٓ أَنفُسِكُمْ إِلَّا فِى كِتَٰبٍۢ مِّن قَبْلِ أَن نَّبْرَأَهَآ ۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٌۭ ﴿٢٢﴾

এমন কোনো বিপর্যয় পৃথিবীতে পতিত হয় না আর তোমাদের নিজেদের উপরেও নয় যা আমরা ঘটাবার আগে একটি কিতাবে না রয়েছে। নিঃসন্দেহ এটি আল্লাহ্‌র জন্যে সহজ।

لِّكَيْلَا تَأْسَوْا۟ عَلَىٰ مَا فَاتَكُمْ وَلَا تَفْرَحُوا۟ بِمَآ ءَاتَىٰكُمْ ۗ وَٱللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍۢ فَخُورٍ ﴿٢٣﴾

এজন্য যে তোমরা যেন দুঃখ করো না যা তোমাদের থেকে হারিয়ে যায়, এবং তোমরা যেন উল্লাস না করো যা তিনি তোমাদের প্রদান করেন সেজন্য। আর আল্লাহ্ ভালবাসেন না সমূদয় অবিবেচক অহংকারীকে, --

ٱلَّذِينَ يَبْخَلُونَ وَيَأْمُرُونَ ٱلنَّاسَ بِٱلْبُخْلِ ۗ وَمَن يَتَوَلَّ فَإِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْغَنِىُّ ٱلْحَمِيدُ ﴿٢٤﴾

যারা কার্পণ্য করে, আর লোকেদেরও কার্পণ্যের নির্দেশ দেয়। আর যে কেউ ফিরে যায়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ, তিনিই ধনবান, প্রশংসার্হ।

لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِٱلْبَيِّنَٰتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْمِيزَانَ لِيَقُومَ ٱلنَّاسُ بِٱلْقِسْطِ ۖ وَأَنزَلْنَا ٱلْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌۭ شَدِيدٌۭ وَمَنَٰفِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ ٱللَّهُ مَن يَنصُرُهُۥ وَرُسُلَهُۥ بِٱلْغَيْبِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِىٌّ عَزِيزٌۭ ﴿٢٥﴾

আমরা তো আমাদের রসূলগণকে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম সুস্পষ্ট প্রমাণাদি দিয়ে, আর তাঁদের সঙ্গে আমরা অবতারণ করেছিলাম ধর্মগ্রন্থ ও মানদন্ড যাতে লোকেরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে, আর আমরা লোহা পাঠিয়েছি যাতে রয়েছে বিরাট শক্তিমত্তা ও মানুষের জন্য উপকারিতা, আর যেন আল্লাহ্ জানতে পারেন কে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে অগোচরেও সাহায্য করে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মহাবলীয়ান, মহাশক্তিশালী।

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًۭا وَإِبْرَٰهِيمَ وَجَعَلْنَا فِى ذُرِّيَّتِهِمَا ٱلنُّبُوَّةَ وَٱلْكِتَٰبَ ۖ فَمِنْهُم مُّهْتَدٍۢ ۖ وَكَثِيرٌۭ مِّنْهُمْ فَٰسِقُونَ ﴿٢٦﴾

আর আমরা ইতিপূর্বে নূহ্‌কে ও ইব্রাহীমকে পাঠিয়েছিলাম, আর তাঁদের বংশধরদের মধ্যে নবুওৎ ও গ্রন্থ সংস্থাপন করেছিলাম, কাজেই তাদের কেউ-কেউ ছিল সৎপথপ্রাপ্ত, কিন্ত তাদের অধিকাংশই ছিল সত্যত্যাগী।

ثُمَّ قَفَّيْنَا عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِم بِرُسُلِنَا وَقَفَّيْنَا بِعِيسَى ٱبْنِ مَرْيَمَ وَءَاتَيْنَٰهُ ٱلْإِنجِيلَ وَجَعَلْنَا فِى قُلُوبِ ٱلَّذِينَ ٱتَّبَعُوهُ رَأْفَةًۭ وَرَحْمَةًۭ وَرَهْبَانِيَّةً ٱبْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَٰهَا عَلَيْهِمْ إِلَّا ٱبْتِغَآءَ رِضْوَٰنِ ٱللَّهِ فَمَا رَعَوْهَا حَقَّ رِعَايَتِهَا ۖ فَـَٔاتَيْنَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مِنْهُمْ أَجْرَهُمْ ۖ وَكَثِيرٌۭ مِّنْهُمْ فَٰسِقُونَ ﴿٢٧﴾

তারপর আমাদের রসূলগণকে তাঁদের পদচিহ্নে চলতে দিয়েছিলাম, আর মরিয়ম-পুত্র ঈসাকে আমরা অনুসরণ করিয়েছিলাম ও তাঁকে আমরা ইনজীল দিয়েছিলাম, আর যারা তাঁর অনুসরণ করেছিল তাদের অন্তরে আমরা সদয়তা ও করুণা দিয়েছিলাম। কিন্ত সন্ন্যাসবাদ -- তারাই এটি আবিস্কার করেছিল, আমরা তাদের প্রতি এটি লিপিবদ্ধ করি নি, শুধু আল্লাহ্‌র সন্তষ্টির অনুসন্ধান করা, কিন্ত তারা এটি পালন করে নি যেমনটা এটি পালনের যোগ্য ছিল। ফলে তাদের মধ্যের যারা ঈমান এনেছিল তাদের আমরা দিয়েছিলাম তাদের প্রতিদান, কিন্ত তাদের অধিকাংশই ছিল সত্যত্যাগী।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَءَامِنُوا۟ بِرَسُولِهِۦ يُؤْتِكُمْ كِفْلَيْنِ مِن رَّحْمَتِهِۦ وَيَجْعَل لَّكُمْ نُورًۭا تَمْشُونَ بِهِۦ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ﴿٢٨﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্‌কে ভয়ভক্তি করো এবং তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাসস্থাপন করো, তিনি তাঁর করুণা থেকে দুটি অংশ তোমাদের প্রদান করবেন, আর তোমাদের জন্য তিনি একটি আলোক স্থাপন করবেন যার মধ্যে তোমরা পথ চলতে পারো, এবং তিনি তোমাদের পরিত্রাণ করতে পারেন। আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা --

لِّئَلَّا يَعْلَمَ أَهْلُ ٱلْكِتَٰبِ أَلَّا يَقْدِرُونَ عَلَىٰ شَىْءٍۢ مِّن فَضْلِ ٱللَّهِ ۙ وَأَنَّ ٱلْفَضْلَ بِيَدِ ٱللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَآءُ ۚ وَٱللَّهُ ذُو ٱلْفَضْلِ ٱلْعَظِيمِ ﴿٢٩﴾

গ্রন্থধারীরা হয়ত নাও জানতে পারে যে তারা আল্লাহ্‌র করুণাভান্ডারের মধ্যের কোনো কিছুতেই ক্ষমতা রাখে না, আর এই যে করুণাভান্ডার তো আল্লাহ্‌রই হাতে রয়েছে, তিনি এটি প্রদান করেন যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। বস্তুত আল্লাহ্ বিরাট করুণাভান্ডারের অধিকারী।