Main pages

Surah Those who set the ranks [As-Saaffat] in Bengali

Surah Those who set the ranks [As-Saaffat] Ayah 182 Location Maccah Number 37

وَٱلصَّٰٓفَّٰتِ صَفًّۭا ﴿١﴾

শপথ তাদের যারা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো,

জহুরুল হক

ভেবে দেখো তাদের যারা কাতারে কাতারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে,

فَٱلزَّٰجِرَٰتِ زَجْرًۭا ﴿٢﴾

অতঃপর ধমকিয়ে ভীতি প্রদর্শনকারীদের,

জহুরুল হক

আর যারা বিতাড়িত করে প্রবল বিতাড়নে,

فَٱلتَّٰلِيَٰتِ ذِكْرًا ﴿٣﴾

অতঃপর মুখস্থ আবৃত্তিকারীদের-

জহুরুল হক

আর যারা স্মারকগ্রন্থ পাঠ করে!

إِنَّ إِلَٰهَكُمْ لَوَٰحِدٌۭ ﴿٤﴾

নিশ্চয় তোমাদের মাবুদ এক।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন,

رَّبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ ٱلْمَشَٰرِقِ ﴿٥﴾

তিনি আসমান সমূহ, যমীনও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা এবং পালনকর্তা উদয়াচলসমূহের।

জহুরুল হক

যিনি মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এবং এদের উভয়ের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রভু, আর যিনি উদয়স্থল সমূহেরও প্রভু,

إِنَّا زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِزِينَةٍ ٱلْكَوَاكِبِ ﴿٦﴾

নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির শোভা দিয়ে সুশোভিত করেছি, --

وَحِفْظًۭا مِّن كُلِّ شَيْطَٰنٍۢ مَّارِدٍۢ ﴿٧﴾

এবং তাকে সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে।

জহুরুল হক

আর প্রতিরক্ষা প্রত্যেক বিদ্রোহাচারী শয়তান থেকে।

لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى ٱلْمَلَإِ ٱلْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍۢ ﴿٨﴾

ওরা উর্ধ্ব জগতের কোন কিছু শ্রবণ করতে পারে না এবং চার দিক থেকে তাদের প্রতি উল্কা নিক্ষেপ করা হয়।

জহুরুল হক

তারা কান পাততে পারে না ঊর্ধ্ব এলাকার দিকে, আর তাদের প্রতি নিক্ষেপ করা হয় সব দিক থেকে, --

دُحُورًۭا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌۭ وَاصِبٌ ﴿٩﴾

ওদেরকে বিতাড়নের উদ্দেশে। ওদের জন্যে রয়েছে বিরামহীন শাস্তি।

জহুরুল হক

বিতাড়িত, আর তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন শাস্তি, --

إِلَّا مَنْ خَطِفَ ٱلْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُۥ شِهَابٌۭ ثَاقِبٌۭ ﴿١٠﴾

তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে।

জহুরুল হক

সে ব্যতীত যে ছিনিয়ে নেয় একটুকুন ছিনতাই, কিন্তু তাকে অনুসরণ করে একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা।

فَٱسْتَفْتِهِمْ أَهُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَم مَّنْ خَلَقْنَآ ۚ إِنَّا خَلَقْنَٰهُم مِّن طِينٍۢ لَّازِبٍۭ ﴿١١﴾

আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, তাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিনতর, না আমি অন্য যা সৃষ্টি করেছি? আমিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছি এঁটেল মাটি থেকে।

জহুরুল হক

সুতরাং তাদের জিজ্ঞাসা করো, -- গঠনে তারা কি বেশী বলিষ্ঠ না যাদের আমরা সৃষ্টি করেছি? নিঃসন্দেহ তাদের আমরা সৃষ্টি করেছি আঠালো কাদা থেকে।

بَلْ عَجِبْتَ وَيَسْخَرُونَ ﴿١٢﴾

বরং আপনি বিস্ময় বোধ করেন আর তারা বিদ্রুপ করে।

জহুরুল হক

বস্তুতঃ তুমি তো তাজ্জব হচ্ছো, আর তারা করছে মস্করা।

وَإِذَا ذُكِّرُوا۟ لَا يَذْكُرُونَ ﴿١٣﴾

যখন তাদেরকে বোঝানো হয়, তখন তারা বোঝে না।

জহুরুল হক

আর যখন তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় তারা মনোযোগ দেয় না,

وَإِذَا رَأَوْا۟ ءَايَةًۭ يَسْتَسْخِرُونَ ﴿١٤﴾

তারা যখন কোন নিদর্শন দেখে তখন বিদ্রূপ করে।

জহুরুল হক

আর যখন তারা কোনো নিদর্শন দেখতে পায় তারা ঠাট্টাবিদ্রূপ করে,

وَقَالُوٓا۟ إِنْ هَٰذَآ إِلَّا سِحْرٌۭ مُّبِينٌ ﴿١٥﴾

এবং বলে, কিছুই নয়, এযে স্পষ্ট যাদু।

জহুরুল হক

আর বলে -- ''এটি স্পষ্ট জাদু বৈ তো নয়’’,

أَءِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًۭا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَبْعُوثُونَ ﴿١٦﴾

আমরা যখন মরে যাব, এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব?

জহুরুল হক

''কী! যখন আমরা মারা যাব এবং ধূলোমাটি ও হাড়গোড় হয়ে যাব তখন কি আমরা ঠিকঠিকই পুনরুত্থিত হব?’’

أَوَءَابَآؤُنَا ٱلْأَوَّلُونَ ﴿١٧﴾

আমাদের পিতৃপুরুষগণও কি?

জহুরুল হক

''আর কি পুরাকালের আমাদের পিতৃপুরুষরাও?’’

قُلْ نَعَمْ وَأَنتُمْ دَٰخِرُونَ ﴿١٨﴾

বলুন, হ্যাঁ এবং তোমরা হবে লাঞ্ছিত।

জহুরুল হক

তুমি বলো -- ''হাঁ, আর তোমরা লাঞ্ছিত হবে।’’

فَإِنَّمَا هِىَ زَجْرَةٌۭ وَٰحِدَةٌۭ فَإِذَا هُمْ يَنظُرُونَ ﴿١٩﴾

বস্তুতঃ সে উত্থান হবে একটি বিকট শব্দ মাত্র-যখন তারা প্রত্যক্ষ করতে থাকবে।

জহুরুল হক

তখন সেটি কিন্তু একটিমাত্র মহাগর্জন হবে, তখন দেখো! তারা চেয়ে থাকবে।

وَقَالُوا۟ يَٰوَيْلَنَا هَٰذَا يَوْمُ ٱلدِّينِ ﴿٢٠﴾

এবং বলবে, দুর্ভাগ্য আমাদের! এটাই তো প্রতিফল দিবস।

জহুরুল হক

আর তারা বলবে -- ''হায় ধিক্‌, আমাদের! এটিই তো বিচারের দিন!’’

هَٰذَا يَوْمُ ٱلْفَصْلِ ٱلَّذِى كُنتُم بِهِۦ تُكَذِّبُونَ ﴿٢١﴾

বলা হবে, এটাই ফয়সালার দিন, যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে।

জহুরুল হক

''এইটিই ফয়সালা করার দিন যেটি সন্বন্ধে তোমরা মিথ্যা আখ্যা দিতে।’’

۞ ٱحْشُرُوا۟ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ وَأَزْوَٰجَهُمْ وَمَا كَانُوا۟ يَعْبُدُونَ ﴿٢٢﴾

একত্রিত কর গোনাহগারদেরকে, তাদের দোসরদেরকে এবং যাদের এবাদত তারা করত।

জহুরুল হক

''যারা অনাচার করেছিল তাদের একত্র করো, আর তাদের সহচরদের, আর তাদেরও যাদের তারা উপাসনা করত --

مِن دُونِ ٱللَّهِ فَٱهْدُوهُمْ إِلَىٰ صِرَٰطِ ٱلْجَحِيمِ ﴿٢٣﴾

আল্লাহ ব্যতীত। অতঃপর তাদেরকে পরিচালিত কর জাহান্নামের পথে,

জহুরুল হক

''আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে, তারপর তাদের পরিচালিত করো দুযখের পথে।

وَقِفُوهُمْ ۖ إِنَّهُم مَّسْـُٔولُونَ ﴿٢٤﴾

এবং তাদেরকে থামাও, তারা জিজ্ঞাসিত হবে;

জহুরুল হক

''আর তাদের থামাও, তারা অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে,

مَا لَكُمْ لَا تَنَاصَرُونَ ﴿٢٥﴾

তোমাদের কি হল যে, তোমরা একে অপরের সাহায্য করছ না?

জহুরুল হক

''তোমাদের কি হল, তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করছ না?’’

بَلْ هُمُ ٱلْيَوْمَ مُسْتَسْلِمُونَ ﴿٢٦﴾

বরং তারা আজকের দিনে আত্নসমর্পণকারী।

জহুরুল হক

বস্তুতঃ সেদিন তারা আ‌ত্মসমর্পিত হবে।

وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍۢ يَتَسَآءَلُونَ ﴿٢٧﴾

তারা একে অপরের দিকে মুখ করে পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

জহুরুল হক

আর তাদের কেউ কেউ অন্যদের দিকে এগিয়ে যাবে পরস্পরকে প্রশ্ন করে --

قَالُوٓا۟ إِنَّكُمْ كُنتُمْ تَأْتُونَنَا عَنِ ٱلْيَمِينِ ﴿٢٨﴾

বলবে, তোমরা তো আমাদের কাছে ডান দিক থেকে আসতে।

জহুরুল হক

তারা বলবে -- ''তোমরাই তো নিশ্চয়ই আমাদের কাছে আসতে ডান দিকে থেকে।’’

قَالُوا۟ بَل لَّمْ تَكُونُوا۟ مُؤْمِنِينَ ﴿٢٩﴾

তারা বলবে, বরং তোমরা তো বিশ্বাসীই ছিলে না।

জহুরুল হক

তারা বলবে -- ''না, তোমরা তো বিশ্বাসীই ছিলে না,

وَمَا كَانَ لَنَا عَلَيْكُم مِّن سُلْطَٰنٍۭ ۖ بَلْ كُنتُمْ قَوْمًۭا طَٰغِينَ ﴿٣٠﴾

এবং তোমাদের উপর আমাদের কোন কতৃত্ব ছিল না, বরং তোমরাই ছিলে সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।

জহুরুল হক

''আর তোমাদের উপরে আমাদের কোনো আধিপত্য ছিল না, বরং তোমরাই ছিলে উচ্ছৃঙ্খল লোক।

فَحَقَّ عَلَيْنَا قَوْلُ رَبِّنَآ ۖ إِنَّا لَذَآئِقُونَ ﴿٣١﴾

আমাদের বিপক্ষে আমাদের পালনকর্তার উক্তিই সত্য হয়েছে। আমাদেরকে অবশই স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।

জহুরুল হক

''সেজন্যে আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রভুর বাণী সত্য প্রতিপন্ন হয়েছে, আমরা নিশ্চয়ই আস্বাদন করতে যাচ্ছি।

فَأَغْوَيْنَٰكُمْ إِنَّا كُنَّا غَٰوِينَ ﴿٣٢﴾

আমরা তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিলাম। কারণ আমরা নিজেরাই পথভ্রষ্ট ছিলাম।

জহুরুল হক

''বস্তুত আমরা তোমাদের বিপথে নিয়েছিলাম, কেননা আমরা নিজেরাই বিপথগামী ছিলাম।’’

فَإِنَّهُمْ يَوْمَئِذٍۢ فِى ٱلْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ ﴿٣٣﴾

তারা সবাই সেদিন শান্তিতে শরীক হবে।

জহুরুল হক

সুতরাং সেইদিন তারা নিশ্চয়ই শাস্তিতে একে অন্যের শরিক হবে।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَفْعَلُ بِٱلْمُجْرِمِينَ ﴿٣٤﴾

অপরাধীদের সাথে আমি এমনি ব্যবহার করে থাকি।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এইরূপই আমরা অপরাধীদের প্রতি করে থাকি।

إِنَّهُمْ كَانُوٓا۟ إِذَا قِيلَ لَهُمْ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ ﴿٣٥﴾

তাদের যখন বলা হত, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য েনই, তখন তারা ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করত।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ যখন তাদের বলা হতো -- 'আল্লাহ্ ছাড়া অন্য উপাস্য নেই’, তখন তারা হামবড়াই করত,

وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُوٓا۟ ءَالِهَتِنَا لِشَاعِرٍۢ مَّجْنُونٍۭ ﴿٣٦﴾

এবং বলত, আমরা কি এক উম্মাদ কবির কথায় আমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব।

জহুরুল হক

আর তারা বলত -- ''কী! আমরা কি আমাদের উপাস্যদের সত্যিই ত্যাগ করব একজন পাগলা কবির কারণে?’’

بَلْ جَآءَ بِٱلْحَقِّ وَصَدَّقَ ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿٣٧﴾

না, তিনি সত্যসহ আগমন করেছেন এবং রসূলগণের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

জহুরুল হক

বস্তুত তিনি সত্য নিয়ে এসেছেন, আর রসূলগণকে তিনি সত্য প্রতিপন্ন করেছেন।

إِنَّكُمْ لَذَآئِقُوا۟ ٱلْعَذَابِ ٱلْأَلِيمِ ﴿٣٨﴾

তোমরা অবশ্যই বেদনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করবে।

জহুরুল হক

তোমরা নিশ্চয়ই মর্মন্তুদ শাস্তি আস্বাদন করতেই যাচ্ছ,

وَمَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ ﴿٣٩﴾

তোমরা যা করতে, তারই প্রতিফল পাবে।

জহুরুল হক

আর তোমাদের প্রতিদান দেওয়া হবে না তোমরা যা করতে তা ব্যতীত, --

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿٤٠﴾

তবে তারা নয়, যারা আল্লাহর বাছাই করা বান্দা।

জহুরুল হক

আল্লাহ্‌র নিষ্ঠাবান বান্দারা ব্যতীত।

أُو۟لَٰٓئِكَ لَهُمْ رِزْقٌۭ مَّعْلُومٌۭ ﴿٤١﴾

তাদের জন্যে রয়েছে নির্ধারিত রুযি।

জহুরুল হক

এরাই -- এদের জন্য রয়েছে সুপরিচিত রিযেক,

فَوَٰكِهُ ۖ وَهُم مُّكْرَمُونَ ﴿٤٢﴾

ফল-মূল এবং তারা সম্মানিত।

জহুরুল হক

ফলমূল, আর তারা হবে সম্মানিত --

فِى جَنَّٰتِ ٱلنَّعِيمِ ﴿٤٣﴾

নেয়ামতের উদ্যানসমূহ।

জহুরুল হক

আনন্দময় উদ্যানে,

عَلَىٰ سُرُرٍۢ مُّتَقَٰبِلِينَ ﴿٤٤﴾

মুখোমুখি হয়ে আসনে আসীন।

জহুরুল হক

তখতের উপরে মুখোমুখি হয়ে রইবে।

يُطَافُ عَلَيْهِم بِكَأْسٍۢ مِّن مَّعِينٍۭ ﴿٤٥﴾

তাদেরকে ঘুরে ফিরে পরিবেশন করা হবে স্বচ্ছ পানপাত্র।

জহুরুল হক

তাদের কাছে ঘুরে ফিরে পরিবেশন করা হবে নির্মল ফোয়ারা থেকে এক শরবতের পাত্র, --

بَيْضَآءَ لَذَّةٍۢ لِّلشَّٰرِبِينَ ﴿٤٦﴾

সুশুভ্র, যা পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু।

জহুরুল হক

সাদা সুস্বাদু পানকারীদের জন্য।

لَا فِيهَا غَوْلٌۭ وَلَا هُمْ عَنْهَا يُنزَفُونَ ﴿٤٧﴾

তাতে মাথা ব্যথার উপাদান নেই এবং তারা তা পান করে মাতালও হবে না।

জহুরুল হক

এতে মাথাব্যথা নেই, আর তারা এ থেকে মাতালও হবে না।

وَعِندَهُمْ قَٰصِرَٰتُ ٱلطَّرْفِ عِينٌۭ ﴿٤٨﴾

তাদের কাছে থাকবে নত, আয়তলোচনা তরুণীগণ।

জহুরুল হক

আর তাদের কাছে থাকবে সলাজ-নম্র আয়তলোচন, --

كَأَنَّهُنَّ بَيْضٌۭ مَّكْنُونٌۭ ﴿٤٩﴾

যেন তারা সুরক্ষিত ডিম।

জহুরুল হক

যেন তারা সুরক্ষিত ডিম।

فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍۢ يَتَسَآءَلُونَ ﴿٥٠﴾

অতঃপর তারা একে অপরের দিকে মুখ করে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

জহুরুল হক

তখন তাদের কেউ কেউ অন্যদের দিকে এগিয়ে যাবে পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

قَالَ قَآئِلٌۭ مِّنْهُمْ إِنِّى كَانَ لِى قَرِينٌۭ ﴿٥١﴾

তাদের একজন বলবে, আমার এক সঙ্গী ছিল।

জহুরুল হক

তাদের মধ্যে কোনো এক বক্তা বলবে -- ''আমার অবশ্য এক বন্ধু ছিল,

يَقُولُ أَءِنَّكَ لَمِنَ ٱلْمُصَدِّقِينَ ﴿٥٢﴾

সে বলত, তুমি কি বিশ্বাস কর যে,

জহুরুল হক

''সে বলত, 'তুমি কি নিশ্চয়ই সমর্থনকারীদের মধ্যেকার?

أَءِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًۭا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَدِينُونَ ﴿٥٣﴾

আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব, তখনও কি আমরা প্রতিফল প্রাপ্ত হব?

জহুরুল হক

''কী! যখন আমরা মরে যাব এবং ধূলোমাটি ও হাড়গোড় হয়ে যাব, তখন কি আমরা ঠিকঠিকই প্রতিফল ভোগ করব’?’’

قَالَ هَلْ أَنتُم مُّطَّلِعُونَ ﴿٥٤﴾

আল্লাহ বলবেন, তোমরা কি তাকে উকি দিয়ে দেখতে চাও?

জহুরুল হক

সে বলবে -- ''তোমরা কি উঁকি দিয়ে দেখবে?’’

فَٱطَّلَعَ فَرَءَاهُ فِى سَوَآءِ ٱلْجَحِيمِ ﴿٥٥﴾

অপর সে উকি দিয়ে দেখবে এবং তাকে জাহান্নামের মাঝখানে দেখতে পাবে।

জহুরুল হক

তখন সে উঁকি দেবে আর ওকে দুযখের কেন্দ্রস্থলে দেখতে পাবে।

قَالَ تَٱللَّهِ إِن كِدتَّ لَتُرْدِينِ ﴿٥٦﴾

সে বলবে, আল্লাহর কসম, তুমি তো আমাকে প্রায় ধ্বংসই করে দিয়েছিলে।

জহুরুল হক

সে বলবে -- ''আল্লাহ্‌র কসম! তুমি তো আমাকে প্রায় ধ্বংস করেছিলে,

وَلَوْلَا نِعْمَةُ رَبِّى لَكُنتُ مِنَ ٱلْمُحْضَرِينَ ﴿٥٧﴾

আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ না হলে আমিও যে গ্রেফতারকৃতদের সাথেই উপস্থিত হতাম।

জহুরুল হক

''আর আমার প্রভুর অনুগ্রহ যদি না থাকত তবে আমিও নিশ্চয় উপস্থিতদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’’

أَفَمَا نَحْنُ بِمَيِّتِينَ ﴿٥٨﴾

এখন আমাদের আর মৃত্যু হবে না।

জহুরুল হক

''তবে কি আমরা মরতে যাচ্ছি না, --

إِلَّا مَوْتَتَنَا ٱلْأُولَىٰ وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ ﴿٥٩﴾

আমাদের প্রথম মৃত্যু ছাড়া এবং আমরা শাস্তি প্রাপ্তও হব না।

জহুরুল হক

''আমাদের প্রথমবারের মৃত্যু ব্যতীত, আর আমরা শাস্তি পেতে যাচ্ছি না।

إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ ﴿٦٠﴾

নিশ্চয় এই মহা সাফল্য।

জহুরুল হক

''নিশ্চয়ই এই -- এটিই তো মহাসাফল্য!’’

لِمِثْلِ هَٰذَا فَلْيَعْمَلِ ٱلْعَٰمِلُونَ ﴿٦١﴾

এমন সাফল্যের জন্যে পরিশ্রমীদের পরিশ্রম করা উচিত।

জহুরুল হক

এর অনুরূপ অবস্থার জন্য তবে কর্মীরা কাজ করে যাক।

أَذَٰلِكَ خَيْرٌۭ نُّزُلًا أَمْ شَجَرَةُ ٱلزَّقُّومِ ﴿٦٢﴾

এই কি উত্তম আপ্যায়ন, না যাক্কুম বৃক্ষ?

জহুরুল হক

এইটিই অধিক ভাল আপ্যায়ন, না যাক্কুম গাছ?

إِنَّا جَعَلْنَٰهَا فِتْنَةًۭ لِّلظَّٰلِمِينَ ﴿٦٣﴾

আমি যালেমদের জন্যে একে বিপদ করেছি।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা এটিকে সৃষ্টি করেছি দুরাচারীদের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ।

إِنَّهَا شَجَرَةٌۭ تَخْرُجُ فِىٓ أَصْلِ ٱلْجَحِيمِ ﴿٦٤﴾

এটি একটি বৃক্ষ, যা উদগত হয় জাহান্নামের মূলে।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এটি এমন এক গাছ যা দুযখের তলায় --

طَلْعُهَا كَأَنَّهُۥ رُءُوسُ ٱلشَّيَٰطِينِ ﴿٦٥﴾

এর গুচ্ছ শয়তানের মস্তকের মত।

জহুরুল হক

এর ফলফসল যেন শয়তানদের মুন্ডু।

فَإِنَّهُمْ لَءَاكِلُونَ مِنْهَا فَمَالِـُٔونَ مِنْهَا ٱلْبُطُونَ ﴿٦٦﴾

কাফেররা একে ভক্ষণ করবে এবং এর দ্বারা উদর পূর্ণ করবে।

জহুরুল হক

তারা তখন নিশ্চয় এ থেকে আহার করবে আর এর দ্বারা পেট ভর্তি করবে।

ثُمَّ إِنَّ لَهُمْ عَلَيْهَا لَشَوْبًۭا مِّنْ حَمِيمٍۢ ﴿٦٧﴾

তদুপরি তাদেরকে দেয়া হবে। ফুটন্ত পানির মিশ্রণ,

জহুরুল হক

তারপর অবশ্য তাদের জন্য এর উপরে থাকবে ফুটন্ত জলের পানীয়।

ثُمَّ إِنَّ مَرْجِعَهُمْ لَإِلَى ٱلْجَحِيمِ ﴿٦٨﴾

অতঃপর তাদের প্রত্যাবর্তন হবে জাহান্নামের দিকে।

জহুরুল হক

তারপর নিশ্চয়ই তাদের প্রত্যাবর্তনস্থল হবে ভয়ঙ্কর আগুনের প্রতি।

إِنَّهُمْ أَلْفَوْا۟ ءَابَآءَهُمْ ضَآلِّينَ ﴿٦٩﴾

তারা তাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছিল বিপথগামী।

জহুরুল হক

তারা আলবৎ তাদের পিতৃপুরুষদের পথভ্রষ্টরূপেই পেয়েছিল,

فَهُمْ عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِمْ يُهْرَعُونَ ﴿٧٠﴾

অতঃপর তারা তদের পদাংক অনুসরণে তৎপর ছিল।

জহুরুল হক

তাই তারা তাদের পদচিহ্নের অন্ধ অনুসরণ করেছিল,

وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿٧١﴾

তাদের পূর্বেও অগ্রবর্তীদের অধিকাংশ বিপথগামী হয়েছিল।

জহুরুল হক

আর তাদের আগে অধিকাংশ পূর্ববর্তীরা বিপথে গিয়েছিল,

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا فِيهِم مُّنذِرِينَ ﴿٧٢﴾

আমি তাদের মধ্যে ভীতি প্রদর্শনকারী প্রেরণ করেছিলাম।

জহুরুল হক

অথচ আমরা তাদের মধ্যে ইতিপূর্বে সতর্ককারীদের পাঠিয়েছিলাম,

فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُنذَرِينَ ﴿٧٣﴾

অতএব লক্ষ্য করুন, যাদেরকে ভীতিপ্রদর্শণ করা হয়েছিল, তাদের পরিণতি কি হয়েছে।

জহুরুল হক

সুতরাং চেয়ে দেখো কেমন হয়েছিল সতর্কীকৃতদের পরিণাম,

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿٧٤﴾

তবে আল্লাহর বাছাই করা বান্দাদের কথা ভিন্ন।

জহুরুল হক

শুধু আল্লাহ্‌র খাস বান্দাদের ব্যতীত।

وَلَقَدْ نَادَىٰنَا نُوحٌۭ فَلَنِعْمَ ٱلْمُجِيبُونَ ﴿٧٥﴾

আর নূহ আমাকে ডেকেছিল। আর কি চমৎকারভাবে আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম।

জহুরুল হক

আর ইতিপূর্বে অবশ্য নূহ আমাদের আহ্বান করেছিলেন, আর আমরা কত উত্তম উত্তরদাতা।

وَنَجَّيْنَٰهُ وَأَهْلَهُۥ مِنَ ٱلْكَرْبِ ٱلْعَظِيمِ ﴿٧٦﴾

আমি তাকে ও তার পরিবারবর্গকে এক মহাসংকট থেকে রক্ষা করেছিলাম।

জহুরুল হক

আর আমরা তাঁকে ও তাঁর পরিজনকে ভীষণ সংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম,

وَجَعَلْنَا ذُرِّيَّتَهُۥ هُمُ ٱلْبَاقِينَ ﴿٧٧﴾

এবং তার বংশধরদেরকেই আমি অবশিষ্ট রেখেছিলাম।

জহুরুল হক

আর তাঁর সন্তান-সন্ততিকে আমরা বানিয়েছিলাম প্রকৃত টিকে থাকা দল,

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْءَاخِرِينَ ﴿٧٨﴾

আমি তার জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয় রেখে দিয়েছি যে,

জহুরুল হক

আর তাঁর জন্য পরবর্তীদের মধ্যে আমরা রেখেছিলাম --

سَلَٰمٌ عَلَىٰ نُوحٍۢ فِى ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿٧٩﴾

বিশ্ববাসীর মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।

জহুরুল হক

সমগ্র বিশ্বজগতের মধ্যে নূহের প্রতি সালাম!

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿٨٠﴾

আমি এভাবেই সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এইভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।

إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ ﴿٨١﴾

সে ছিল আমার ঈমানদার বান্দাদের অন্যতম।

জহুরুল হক

তিনি অবশ্যই আমাদের বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

ثُمَّ أَغْرَقْنَا ٱلْءَاخَرِينَ ﴿٨٢﴾

অতঃপর আমি অপরাপর সবাইকে নিমজ্জত করেছিলাম।

জহুরুল হক

আর আমরা অন্যান্যদের ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।

۞ وَإِنَّ مِن شِيعَتِهِۦ لَإِبْرَٰهِيمَ ﴿٨٣﴾

আর নূহ পন্থীদেরই একজন ছিল ইব্রাহীম।

জহুরুল হক

আর নিশ্চয়ই তাঁর পশ্চাদবর্তীদের মধ্যে ছিলেন ইব্রাহীম।

إِذْ جَآءَ رَبَّهُۥ بِقَلْبٍۢ سَلِيمٍ ﴿٨٤﴾

যখন সে তার পালনকর্তার নিকট সুষ্ঠু চিত্তে উপস্থিত হয়েছিল,

জহুরুল হক

স্মরণ কর! তিনি তাঁর প্রভুর কাছে এসেছিলেন বিশুদ্ধ চিত্ত নিয়ে, --

إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِۦ مَاذَا تَعْبُدُونَ ﴿٨٥﴾

যখন সে তার পিতা ও সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা কিসের উপাসনা করছ?

জহুরুল হক

যখন তাঁর পিতৃপুরুষকে ও তাঁর স্বজাতিকে তিনি বলেছিলেন -- ''তোমরা কিসের উপাসনা করছ?

أَئِفْكًا ءَالِهَةًۭ دُونَ ٱللَّهِ تُرِيدُونَ ﴿٨٦﴾

তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত মিথ্যা উপাস্য কামনা করছ?

জহুরুল হক

''তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে কি এক মিথ্যা উপাস্যকেই কামনা কর?

فَمَا ظَنُّكُم بِرَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿٨٧﴾

বিশ্বজগতের পালনকর্তা সম্পর্কে তোমাদের ধারণা কি?

জহুরুল হক

''তাহলে বিশ্বজগতের প্রভু সন্বন্ধে কী তোমাদের ধারণা?’’

فَنَظَرَ نَظْرَةًۭ فِى ٱلنُّجُومِ ﴿٨٨﴾

অতঃপর সে একবার তারকাদের প্রতি লক্ষ্য করল।

জহুরুল হক

তারপর তারকারাজির দিকে তিনি একনজর তাকালেন,

فَقَالَ إِنِّى سَقِيمٌۭ ﴿٨٩﴾

এবং বললঃ আমি পীড়িত।

জহুরুল হক

তখন তিনি বললেন -- ''আমি যারপর নাই বিরক্ত!’’

فَتَوَلَّوْا۟ عَنْهُ مُدْبِرِينَ ﴿٩٠﴾

অতঃপর তারা তার প্রতি পিঠ ফিরিয়ে চলে গেল।

জহুরুল হক

সুতরাং তারা তাঁর কাছ থেকে বিমুখ হয়ে ফিরে গেল।

فَرَاغَ إِلَىٰٓ ءَالِهَتِهِمْ فَقَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ ﴿٩١﴾

অতঃপর সে তাদের দেবালয়ে, গিয়ে ঢুকল এবং বললঃ তোমরা খাচ্ছ না কেন?

জহুরুল হক

তারপর তিনি তাদের উপাস্যদের কাছে ফিরে গেলেন এবং বললেন -- ''তোমরা খাও না কেন?

مَا لَكُمْ لَا تَنطِقُونَ ﴿٩٢﴾

তোমাদের কি হল যে, কথা বলছ না?

জহুরুল হক

''তোমাদের কী হয়েছে যে তোমরা কথা বলছ না?’’

فَرَاغَ عَلَيْهِمْ ضَرْبًۢا بِٱلْيَمِينِ ﴿٩٣﴾

অতঃপর সে প্রবল আঘাতে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।

জহুরুল হক

কাজেই তিনি তাদের উপরে লাফিয়ে পড়লেন ডানহাতে আঘাত করে।

فَأَقْبَلُوٓا۟ إِلَيْهِ يَزِفُّونَ ﴿٩٤﴾

তখন লোকজন তার দিকে ছুটে এলো ভীত-সন্ত্রস্ত পদে।

জহুরুল হক

তখন তারা তাঁর দিকে ছুটে এল হতবুদ্ধি হয়ে।

قَالَ أَتَعْبُدُونَ مَا تَنْحِتُونَ ﴿٩٥﴾

সে বললঃ তোমরা স্বহস্ত নির্মিত পাথরের পূজা কর কেন?

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''তোমরা কি তার উপাসনা কর যা তোমরা কেটে বানাও,

وَٱللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ ﴿٩٦﴾

অথচ আল্লাহ তোমাদেরকে এবং তোমরা যা নির্মাণ করছ সবাইকে সৃষ্টি করেছেন।

জহুরুল হক

''অথচ আল্লাহ্ তোমাদের সৃষ্টি করেছেন আর তোমরা যা তৈরি কর তাও?’’

قَالُوا۟ ٱبْنُوا۟ لَهُۥ بُنْيَٰنًۭا فَأَلْقُوهُ فِى ٱلْجَحِيمِ ﴿٩٧﴾

তারা বললঃ এর জন্যে একটি ভিত নির্মাণ কর এবং অতঃপর তাকে আগুনের স্তুপে নিক্ষেপ কর।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''এর জন্য এক কাঠামো তৈরি কর, তারপর তাকে নিক্ষেপ কর সেই ভয়ঙ্কর আগুনে।’’

فَأَرَادُوا۟ بِهِۦ كَيْدًۭا فَجَعَلْنَٰهُمُ ٱلْأَسْفَلِينَ ﴿٩٨﴾

তারপর তারা তার বিরুদ্ধে মহা ষড়যন্ত্র আঁটতে চাইল, কিন্তু আমি তাদেরকেই পরাভূত করে দিলাম।

জহুরুল হক

কাজেই তারা তাঁর বিরুদ্ধে এক চক্রান্ত ফাঁদলো, কিন্তু আমরা তাদের হীন বানিয়ে দিলাম।

وَقَالَ إِنِّى ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّى سَيَهْدِينِ ﴿٩٩﴾

সে বললঃ আমি আমার পালনকর্তার দিকে চললাম, তিনি আমাকে পথপ্রদর্শন করবেন।

জহুরুল হক

আর তিনি বললেন -- ''আমি নিশ্চয়ই আমার প্রভুর দিকে যাত্রাকারী, তিনি আমাকে অচিরেই পরিচালিত করবেন।’’

رَبِّ هَبْ لِى مِنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ﴿١٠٠﴾

হে আমার পরওয়ারদেগার! আমাকে এক সৎপুত্র দান কর।

জহুরুল হক

''আমার প্রভু! আমার জন্য সৎকর্মীদের থেকে দান করো।’’

فَبَشَّرْنَٰهُ بِغُلَٰمٍ حَلِيمٍۢ ﴿١٠١﴾

সুতরাং আমি তাকে এক সহনশীল পুত্রের সুসংবাদ দান করলাম।

জহুরুল হক

সেজন্য আমরা তাঁকে সুসংবাদ দিলাম এক অমায়িক পুত্রসন্তানের।

فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ ٱلسَّعْىَ قَالَ يَٰبُنَىَّ إِنِّىٓ أَرَىٰ فِى ٱلْمَنَامِ أَنِّىٓ أَذْبَحُكَ فَٱنظُرْ مَاذَا تَرَىٰ ۚ قَالَ يَٰٓأَبَتِ ٱفْعَلْ مَا تُؤْمَرُ ۖ سَتَجِدُنِىٓ إِن شَآءَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلصَّٰبِرِينَ ﴿١٠٢﴾

অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখিযে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ। সে বললঃ পিতাঃ! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন।

জহুরুল হক

তারপর যখন সে তাঁর সঙ্গে কাজ করার যোগ্যতায় উপনীত হল তখন তিনি বললেন -- ''হে আমার পুত্রধন! নিঃসন্দেহ আমি স্বপ্নে দেখলাম যে আমি তোমাকে কুরবানি করছি, অতএব ভেবে দেখো -- কী তুমি দেখছো ।’’ তিনি বললেন -- ''হে আমার আব্বা! আপনি তাই করুন যা আপনাকে আদেশ করা হয়েছে। ইন-শা-আল্লাহ্ আপনি এখনি আমাকে পাবেন অধ্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত।

فَلَمَّآ أَسْلَمَا وَتَلَّهُۥ لِلْجَبِينِ ﴿١٠٣﴾

যখন পিতা-পুত্র উভয়েই আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহীম তাকে যবেহ করার জন্যে শায়িত করল।

জহুরুল হক

সুতরাং তাঁরা উভয়ে যখন আ‌ত্মসমর্পণ করলেন এবং তিনি তাঁকে ভূপাতিত করলেন কপালের জন্য,

وَنَٰدَيْنَٰهُ أَن يَٰٓإِبْرَٰهِيمُ ﴿١٠٤﴾

তখন আমি তাকে ডেকে বললামঃ হে ইব্রাহীম,

জহুরুল হক

তখনই আমরা তাঁকে ডেকে বললাম -- ''হে ইব্রাহীম!

قَدْ صَدَّقْتَ ٱلرُّءْيَآ ۚ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿١٠٥﴾

তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে! আমি এভাবেই সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

জহুরুল হক

''তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে। নিঃসন্দেহ এইভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।

إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ ٱلْبَلَٰٓؤُا۟ ٱلْمُبِينُ ﴿١٠٦﴾

নিশ্চয় এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা।

জহুরুল হক

''নিশ্চয়ই এটি -- এইটিই তো ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা।’’

وَفَدَيْنَٰهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍۢ ﴿١٠٧﴾

আমি তার পরিবর্তে দিলাম যবেহ করার জন্যে এক মহান জন্তু।

জহুরুল হক

আর আমরা তাঁকে বদলা দিয়েছিলাম এক মহান কুরবানি।

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْءَاخِرِينَ ﴿١٠٨﴾

আমি তার জন্যে এ বিষয়টি পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিয়েছি যে,

জহুরুল হক

আর আমরা তাঁর জন্য পরবর্তীদের মধ্যে রেখেছিলাম --

سَلَٰمٌ عَلَىٰٓ إِبْرَٰهِيمَ ﴿١٠٩﴾

ইব্রাহীমের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক।

জহুরুল হক

ইব্রাহীমের প্রতি ''সালাম’’।

كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿١١٠﴾

এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

জহুরুল হক

এইভাবেই আমরা প্রতিদান দিই সৎকর্মশীলদের।

إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ ﴿١١١﴾

সে ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের একজন।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের মধ্যেকার।

وَبَشَّرْنَٰهُ بِإِسْحَٰقَ نَبِيًّۭا مِّنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ﴿١١٢﴾

আমি তাকে সুসংবাদ দিয়েছি ইসহাকের, সে সৎকর্মীদের মধ্য থেকে একজন নবী।

জহুরুল হক

আর আমরা তাঁকে সুসংবাদ দিয়েছিলাম ইসহাকের -- একজন নবী সৎপথাবলন্বীদের মধ্যেকার।

وَبَٰرَكْنَا عَلَيْهِ وَعَلَىٰٓ إِسْحَٰقَ ۚ وَمِن ذُرِّيَّتِهِمَا مُحْسِنٌۭ وَظَالِمٌۭ لِّنَفْسِهِۦ مُبِينٌۭ ﴿١١٣﴾

তাকে এবং ইসহাককে আমি বরকত দান করেছি। তাদের বংশধরদের মধ্যে কতক সৎকর্মী এবং কতক নিজেদের উপর স্পষ্ট জুলুমকারী।

জহুরুল হক

আর আমরা আশীর্বাদ বর্ষণ করেছিলাম তাঁর উপরে ও ইসহাকের উপরে। আর তাঁদের দুজনের বংশধরদের মধ্যে থেকে কেউ হচ্ছেন সৎকর্মশীল, আর কেউ হচ্ছে তাদের নিজেদের প্রতি স্পষ্টভাবে অন্যায়াচারী।

وَلَقَدْ مَنَنَّا عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَٰرُونَ ﴿١١٤﴾

আমি অনুগ্রহ করেছিলাম মূসা ও হারুনের প্রতি।

জহুরুল হক

আর নিশ্চয় আমরা মূসা ও হারূনের প্রতি অনুগ্রহ করেই ছিলাম,

وَنَجَّيْنَٰهُمَا وَقَوْمَهُمَا مِنَ ٱلْكَرْبِ ٱلْعَظِيمِ ﴿١١٥﴾

তাদেরকে ও তাদের সম্প্রদায়কে উদ্ধার করেছি মহা সংকট থেকে।

জহুরুল হক

আর তাঁদের দুজনকে ও তাঁদের লোকদলকে আমরা ভীষণ সংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম।

وَنَصَرْنَٰهُمْ فَكَانُوا۟ هُمُ ٱلْغَٰلِبِينَ ﴿١١٦﴾

আমি তাদেরকে সাহায্য করেছিলাম, ফলে তারাই ছিল বিজয়ী।

জহুরুল হক

আর আমরা তাঁদের সাহায্য করেছিলাম, সেজন্য তাঁরা খোদ বিজয়ী হয়েছিলেন।

وَءَاتَيْنَٰهُمَا ٱلْكِتَٰبَ ٱلْمُسْتَبِينَ ﴿١١٧﴾

আমি উভয়কে দিয়েছিলাম সুস্পষ্ট কিতাব।

জহুরুল হক

আর তাঁদের উভয়কে আমরা দিয়েছিলাম এক স্পষ্ট গ্রন্থ,

وَهَدَيْنَٰهُمَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلْمُسْتَقِيمَ ﴿١١٨﴾

এবং তাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করেছিলাম।

জহুরুল হক

আর তাঁদের উভয়কে আমরা পরিচালিত করেছিলাম সরল-সঠিক পথে,

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِمَا فِى ٱلْءَاخِرِينَ ﴿١١٩﴾

আমি তাদের জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয় রেখে দিয়েছি যে,

জহুরুল হক

আর তাদের জন্য আমরা পরবর্তীদের মধ্যে রেখেছিলাম --

سَلَٰمٌ عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَٰرُونَ ﴿١٢٠﴾

মূসা ও হারুনের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক।

জহুরুল হক

মূসা ও হারূনের প্রতি ''সালাম’’।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿١٢١﴾

এভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

জহুরুল হক

এইভাবেই আমরা অবশ্য প্রতিদান দিই সৎকর্মশীলদের।

إِنَّهُمَا مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ ﴿١٢٢﴾

তারা উভয়েই ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের অন্যতম।

জহুরুল হক

নিশ্চয় তাঁরা ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের মধ্যেকার।

وَإِنَّ إِلْيَاسَ لَمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٢٣﴾

নিশ্চয়ই ইলিয়াস ছিল রসূল।

জহুরুল হক

আর নিশ্চয়ই ইল্‌য়াস রসূলগণের মধ্যেকার ছিলেন।

إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِۦٓ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿١٢٤﴾

যখন সে তার সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি ভয় কর না ?

জহুরুল হক

স্মরণ করো, তিনি তাঁর স্বজাতিকে বলেছিলেন -- ''তোমরা কি ধর্মভীরুতা অবলন্বন করবে না?

أَتَدْعُونَ بَعْلًۭا وَتَذَرُونَ أَحْسَنَ ٱلْخَٰلِقِينَ ﴿١٢٥﴾

তোমরা কি বা’আল দেবতার এবাদত করবে এবং সর্বোত্তম স্রষ্টাকে পরিত্যাগ করবে।

জহুরুল হক

''তোমরা কি বা’লকে ডাকবে, আর পরিত্যাগ করবে সৃষ্টিকর্তাদের সর্বশ্রেষ্ঠজনকে,

ٱللَّهَ رَبَّكُمْ وَرَبَّ ءَابَآئِكُمُ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿١٢٦﴾

যিনি আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের পালনকর্তা?

জহুরুল হক

আল্লাহ্‌কে -- তোমাদের প্রভু এবং পূর্বকালীন তোমাদের পিতৃপুরুষদেরও প্রভু?’’

فَكَذَّبُوهُ فَإِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ ﴿١٢٧﴾

অতঃপর তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। অতএব তারা অবশ্যই গ্রেফতার হয়ে আসবে।

জহুরুল হক

কিন্তু তারা তাঁর প্রতি মিথ্যারোপ করল, সেজন্য তাদের নিশ্চয়ই হাজির করা হবে,

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿١٢٨﴾

কিন্তু আল্লাহ তা’আলার খাঁটি বান্দাগণ নয়।

জহুরুল হক

শুধু আল্লাহ্‌র একনিষ্ঠ বান্দাদের ব্যতীত।

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْءَاخِرِينَ ﴿١٢٩﴾

আমি তার জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয়ে রেখে দিয়েছি যে,

জহুরুল হক

আর তাঁর জন্য আমরা পরবর্তীদের মধ্যে রেখেছিলাম --

سَلَٰمٌ عَلَىٰٓ إِلْ يَاسِينَ ﴿١٣٠﴾

ইলিয়াসের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক!

জহুরুল হক

ইল্‌য়াসীনের উপরে ''সালাম’’।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ ﴿١٣١﴾

এভাবেই আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এইভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।

إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ ﴿١٣٢﴾

সে ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত।

জহুরুল হক

তিনি নিশ্চয়ই ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের অন্যতম।

وَإِنَّ لُوطًۭا لَّمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٣٣﴾

নিশ্চয় লূত ছিলেন রসূলগণের একজন।

জহুরুল হক

আর অবশ্যই লূত ছিলেন রসূলগণের মধ্যেকার।

إِذْ نَجَّيْنَٰهُ وَأَهْلَهُۥٓ أَجْمَعِينَ ﴿١٣٤﴾

যখন আমি তাকেও তার পরিবারের সবাইকে উদ্ধার করেছিলাম;

জহুরুল হক

স্মরণ কর! তাঁকে ও তাঁর পরিজনকে উদ্ধার করেছিলাম, সব ক’জনকেই --

إِلَّا عَجُوزًۭا فِى ٱلْغَٰبِرِينَ ﴿١٣٥﴾

কিন্তু এক বৃদ্ধাকে ছাড়া; সে অন্যান্যদের সঙ্গে থেকে গিয়েছিল।

জহুরুল হক

এক বৃদ্ধাকে ব্যতীত, যে ছিল পেছনে রয়ে যাওয়া দলের।

ثُمَّ دَمَّرْنَا ٱلْءَاخَرِينَ ﴿١٣٦﴾

অতঃপর অবশিষ্টদেরকে আমি সমূলে উৎপাটিত করেছিলাম।

জহুরুল হক

তারপর আমরা অবশিষ্টদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম।

وَإِنَّكُمْ لَتَمُرُّونَ عَلَيْهِم مُّصْبِحِينَ ﴿١٣٧﴾

তোমরা তোমাদের ধ্বংস স্তুপের উপর দিয়ে গমন কর ভোর বেলায়

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমরা তো তাদের অতিক্রম করে থাক সকালবেলায়,

وَبِٱلَّيْلِ ۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ ﴿١٣٨﴾

এবং সন্ধ্যায়, তার পরেও কি তোমরা বোঝ না?

জহুরুল হক

এবং রাত্রিকালে। তবুও কি তোমরা বুঝবে না।

وَإِنَّ يُونُسَ لَمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٣٩﴾

আর ইউনুসও ছিলেন পয়গম্বরগণের একজন।

জহুরুল হক

আর নিশ্চয়ই ইউনুস ছিলেন রসূলগণের অন্যতম।

إِذْ أَبَقَ إِلَى ٱلْفُلْكِ ٱلْمَشْحُونِ ﴿١٤٠﴾

যখন পালিয়ে তিনি বোঝাই নৌকায় গিয়ে পৌঁছেছিলেন।

জহুরুল হক

স্মরণ করো! তিনি বোঝাই করা জাহাজে গিয়ে উঠেছিলেন।

فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ ٱلْمُدْحَضِينَ ﴿١٤١﴾

অতঃপর লটারী (সুরতি) করালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলেন।

জহুরুল হক

তাই তিনি লটারী খেলেছিলেন, কিন্তু তিনিই হয়ে গেলেন নিক্ষিপ্তদের একজন।

فَٱلْتَقَمَهُ ٱلْحُوتُ وَهُوَ مُلِيمٌۭ ﴿١٤٢﴾

অতঃপর একটি মাছ তাঁকে গিলে ফেলল, তখন তিনি অপরাধী গণ্য হয়েছিলেন।

জহুরুল হক

তখন একটি মাছ তাঁকে মুখে তুলে নিল, যদিও তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।

فَلَوْلَآ أَنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلْمُسَبِّحِينَ ﴿١٤٣﴾

যদি তিনি আল্লাহর তসবীহ পাঠ না করতেন,

জহুরুল হক

আর তিনি যদি মহিমা জপতপে রত না থাকতেন --

لَلَبِثَ فِى بَطْنِهِۦٓ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ ﴿١٤٤﴾

তবে তাঁকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত মাছের পেটেই থাকতে হত।

জহুরুল হক

তাহলে তিনি তার পেটে রয়ে যেতেন পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত।

۞ فَنَبَذْنَٰهُ بِٱلْعَرَآءِ وَهُوَ سَقِيمٌۭ ﴿١٤٥﴾

অতঃপর আমি তাঁকে এক বিস্তীর্ণ-বিজন প্রান্তরে নিক্ষেপ করলাম, তখন তিনি ছিলেন রুগ্ন।

জহুরুল হক

তারপর আমরা তাঁকে এক বৃক্ষলতা শূন্য উপকূলে ফেলে দিলাম, আর তিনি ছিলেন অসুস্থ।

وَأَنۢبَتْنَا عَلَيْهِ شَجَرَةًۭ مِّن يَقْطِينٍۢ ﴿١٤٦﴾

আমি তাঁর উপর এক লতাবিশিষ্ট বৃক্ষ উদগত করলাম।

জহুরুল হক

তখন তাঁর উপরে আমরা জন্মিয়েছিলাম লাউজাতীয় গাছ,

وَأَرْسَلْنَٰهُ إِلَىٰ مِا۟ئَةِ أَلْفٍ أَوْ يَزِيدُونَ ﴿١٤٧﴾

এবং তাঁকে, লক্ষ বা ততোধিক লোকের প্রতি প্রেরণ করলাম।

জহুরুল হক

আর আমরা তাঁকে পাঠিয়েছিলাম এক লাখ বা আরো বেশী লোকের কাছে,

فَـَٔامَنُوا۟ فَمَتَّعْنَٰهُمْ إِلَىٰ حِينٍۢ ﴿١٤٨﴾

তারা বিশ্বাস স্থাপন করল অতঃপর আমি তাদেরকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত জীবনোপভোগ করতে দিলাম।

জহুরুল হক

তখন তারা বিশ্বাস করেছিল, সেজন্য আমরা তাদের উপভোগ করতে দিয়েছিলাম কিছুকালের জন্য।

فَٱسْتَفْتِهِمْ أَلِرَبِّكَ ٱلْبَنَاتُ وَلَهُمُ ٱلْبَنُونَ ﴿١٤٩﴾

এবার তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, তোমার পালনকর্তার জন্যে কি কন্যা সন্তান রয়েছে এবং তাদের জন্যে কি পুত্র-সন্তান।

জহুরুল হক

সুতরাং তাদের জিজ্ঞাসা করো -- তোমার প্রভুর জন্য কি কন্যাসন্তান রয়েছে, আর তাদের জন্য পুত্রসন্তান?

أَمْ خَلَقْنَا ٱلْمَلَٰٓئِكَةَ إِنَٰثًۭا وَهُمْ شَٰهِدُونَ ﴿١٥٠﴾

না কি আমি তাদের উপস্থিতিতে ফেরেশতাগণকে নারীরূপে সৃষ্টি করেছি?

জহুরুল হক

অথবা, আমরা কি ফিরিশ্‌তাদের নারীরূপে সৃষ্টি করেছিলাম, আর তারা সাক্ষী ছিল?

أَلَآ إِنَّهُم مِّنْ إِفْكِهِمْ لَيَقُولُونَ ﴿١٥١﴾

জেনো, তারা মনগড়া উক্তি করে যে,

জহুরুল হক

এটি কি নয় যে তারা আলবৎ তাদের মিথ্যা থেকেই তো কথা বলছে, --

وَلَدَ ٱللَّهُ وَإِنَّهُمْ لَكَٰذِبُونَ ﴿١٥٢﴾

আল্লাহ সন্তান জন্ম দিয়েছেন। নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী।

জহুরুল হক

আল্লাহ্ জন্ম দিয়েছিলেন? আর তারা তো নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।

أَصْطَفَى ٱلْبَنَاتِ عَلَى ٱلْبَنِينَ ﴿١٥٣﴾

তিনি কি পুত্র-সন্তানের স্থলে কন্যা-সন্তান পছন্দ করেছেন?

জহুরুল হক

তিনি কি কন্যাদের পছন্দ করেছেন পুত্রদের পরিবর্তে?

مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ ﴿١٥٤﴾

তোমাদের কি হল? তোমাদের এ কেমন সিন্ধান্ত?

জহুরুল হক

তোমাদের কি হয়েছে? কিভাবে তোমরা বিচার করো?

أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ﴿١٥٥﴾

তোমরা কি অনুধাবন কর না?

জহুরুল হক

তোমরা কি তবে মনোযোগ দেবে না?

أَمْ لَكُمْ سُلْطَٰنٌۭ مُّبِينٌۭ ﴿١٥٦﴾

না কি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট কোন দলীল রয়েছে?

জহুরুল হক

নাকি তোমাদের কাছে কোনো স্পষ্ট দলিল-প্রমাণ রয়েছে?

فَأْتُوا۟ بِكِتَٰبِكُمْ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ ﴿١٥٧﴾

তোমরা সত্যবাদী হলে তোমাদের কিতাব আন।

জহুরুল হক

তেমন হলে তোমাদের গ্রন্থ নিয়ে এস, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।

وَجَعَلُوا۟ بَيْنَهُۥ وَبَيْنَ ٱلْجِنَّةِ نَسَبًۭا ۚ وَلَقَدْ عَلِمَتِ ٱلْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ ﴿١٥٨﴾

তারা আল্লাহ ও জ্বিনদের মধ্যে সম্পর্ক সাব্যস্ত করেছে, অথচ জ্বিনেরা জানে যে, তারা গ্রেফতার হয়ে আসবে।

জহুরুল হক

আর তারা তাঁর মধ্যে ও জিনদের মধ্যে একটা সম্পর্ক দাঁড় করিয়েছে। আর জিনরা তো জেনেই ফেলেছে যে তাদের অবশ্যই উপস্থাপিত করা হবে।

سُبْحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ ﴿١٥٩﴾

তারা যা বলে তা থেকে আল্লাহ পবিত্র।

জহুরুল হক

আল্লাহ্‌রই সব মহিমা! তারা যা আরোপ করে তা থেকে বহু ঊর্ধ্বে, --

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿١٦٠﴾

তবে যারা আল্লাহর নিষ্ঠাবান বান্দা, তারা গ্রেফতার হয়ে আসবে না।

জহুরুল হক

আল্লাহ্‌র নিষ্ঠাবান বান্দারা ব্যতীত।

فَإِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ ﴿١٦١﴾

অতএব তোমরা এবং তোমরা যাদের উপাসনা কর,

জহুরুল হক

অতএব নিশ্চয়ই তোমরা ও যাদের তোমরা উপাসনা কর তারা --

مَآ أَنتُمْ عَلَيْهِ بِفَٰتِنِينَ ﴿١٦٢﴾

তাদের কাউকেই তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।

জহুরুল হক

তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তকারী হতে পারবে না, --

إِلَّا مَنْ هُوَ صَالِ ٱلْجَحِيمِ ﴿١٦٣﴾

শুধুমাত্র তাদের ছাড়া যারা জাহান্নামে পৌছাবে।

জহুরুল হক

তাকে ব্যতীত যে জ্বলন্ত আগুনে পুড়তে চায়।

وَمَا مِنَّآ إِلَّا لَهُۥ مَقَامٌۭ مَّعْلُومٌۭ ﴿١٦٤﴾

আমাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট স্থান।

জহুরুল হক

আর ''আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার জন্যে নির্ধারিত আবাস নেই,

وَإِنَّا لَنَحْنُ ٱلصَّآفُّونَ ﴿١٦٥﴾

এবং আমরাই সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান থাকি।

জহুরুল হক

''আর নিশ্চয়ই আমরা, আমরাই তো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াব,

وَإِنَّا لَنَحْنُ ٱلْمُسَبِّحُونَ ﴿١٦٦﴾

এবং আমরাই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করি।

জহুরুল হক

''আর অবশ্য আমরা, আলবৎ আমরা জপ করতে থাকব।’’

وَإِن كَانُوا۟ لَيَقُولُونَ ﴿١٦٧﴾

তারা তো বলতঃ

জহুরুল হক

আর নিশ্চয়ই তারা বলতে থাকতো --

لَوْ أَنَّ عِندَنَا ذِكْرًۭا مِّنَ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿١٦٨﴾

যদি আমাদের কাছে পূর্ববর্তীদের কোন উপদেশ থাকত,

জহুরুল হক

''যদি আমাদের কাছে পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে কোনো স্মরণীয় গ্রন্থ থাকতো,

لَكُنَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿١٦٩﴾

তবে আমরা অবশ্যই আল্লাহর মনোনীত বান্দা হতাম।

জহুরুল হক

''তাহলে আমরা আল্লাহ্‌র নিষ্ঠাবান বান্দা হতে পারতাম।’’

فَكَفَرُوا۟ بِهِۦ ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ ﴿١٧٠﴾

বস্তুতঃ তারা এই কোরআনকে অস্বীকার করেছে। এখন শীঘ্রই তারা জেনে নিতে পারবে,

জহুরুল হক

কিন্তু তারা এতে অবিশ্বাস পোষণ করে, কাজেই শীঘ্রই তারা জানতে পারবে।

وَلَقَدْ سَبَقَتْ كَلِمَتُنَا لِعِبَادِنَا ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٧١﴾

আমার রাসূল ও বান্দাগণের ব্যাপারে আমার এই বাক্য সত্য হয়েছে যে,

জহুরুল হক

আর অবশ্যই আমাদের বক্তব্য আমাদের বান্দাদের -- প্রেরিত পুরুষদের, জন্য সাব্যস্ত হয়েই গেছে, --

إِنَّهُمْ لَهُمُ ٱلْمَنصُورُونَ ﴿١٧٢﴾

অবশ্যই তারা সাহায্য প্রাপ্ত হয়।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ তাঁরা -- তাঁরাই তো হবে সাহায্যপ্রাপ্ত,

وَإِنَّ جُندَنَا لَهُمُ ٱلْغَٰلِبُونَ ﴿١٧٣﴾

আর আমার বাহিনীই হয় বিজয়ী।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ আমাদের সেনাদল -- তারাই তো হবে বিজয়ী।

فَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍۢ ﴿١٧٤﴾

অতএব আপনি কিছুকালের জন্যে তাদেরকে উপেক্ষা করুন।

জহুরুল হক

অতএব তাদের থেকে ফিরে থেকো কিছুকালের জন্য,

وَأَبْصِرْهُمْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ ﴿١٧٥﴾

এবং তাদেরকে দেখতে থাকুন। শীঘ্রই তারাও এর পরিণাম দেখে নেবে।

জহুরুল হক

আর তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখো, কেননা তারাও শীঘ্রই দেখতে পাবে।

أَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُونَ ﴿١٧٦﴾

আমার আযাব কি তারা দ্রুত কামনা করে?

জহুরুল হক

তারা কি তবে আমাদের শাস্তি ত্বরান্বিত করতে চায়?

فَإِذَا نَزَلَ بِسَاحَتِهِمْ فَسَآءَ صَبَاحُ ٱلْمُنذَرِينَ ﴿١٧٧﴾

অতঃপর যখন তাদের আঙ্গিনায় আযাব নাযিল হবে, তখন যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল, তাদের সকাল বেলাটি হবে খুবই মন্দ।

জহুরুল হক

কিন্তু যখন তা তাদের আঙিনায় অবতরণ করবে তখন সতর্কীকৃতদের প্রভাত হবে কত মন্দ!

وَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍۢ ﴿١٧٨﴾

আপনি কিছুকালের জন্যে তাদেরকে উপেক্ষা করুন।

জহুরুল হক

আর তুমি তাদের থেকে ফিরে থেকো কিছুকালের জন্য,

وَأَبْصِرْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ ﴿١٧٩﴾

এবং দেখতে থাকুন, শীঘ্রই তারাও এর পরিণাম দেখে নেবে।

জহুরুল হক

আর লক্ষ্য রাখো, কেননা তারাও শীঘ্রই দেখতে পাবে।

سُبْحَٰنَ رَبِّكَ رَبِّ ٱلْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ ﴿١٨٠﴾

পবিত্র আপনার পরওয়ারদেগারের সত্তা, তিনি সম্মানিত ও পবিত্র যা তারা বর্ণনা করে তা থেকে।

জহুরুল হক

মহিমা কীর্তিত হোক তোমার প্রভুর -- পরম মর্যাদা সম্পন্ন প্রভুর, তারা যা-কিছু আরোপ করে তা থেকে বহু ঊর্ধ্বে।

وَسَلَٰمٌ عَلَى ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿١٨١﴾

পয়গম্বরগণের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক।

জহুরুল হক

আর 'সালাম’ প্রেরিতপুরুষদের উপরে।

وَٱلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿١٨٢﴾

সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর নিমিত্ত।

জহুরুল হক

আর সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌রই জন্য -- বিশ্বজগতের প্রভু!