Setting
Surah The cloaked one [Al-Muddathir] in Bengali
وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ ﴿٣﴾
আপন পালনকর্তার মাহাত্ম্য ঘোষনা করুন,
আর তোমার প্রভু -- মাহাত্ম্য ঘোষণা করো,
وَلَا تَمْنُن تَسْتَكْثِرُ ﴿٦﴾
অধিক প্রতিদানের আশায় অন্যকে কিছু দিবেন না।
আর অনুগ্রহ করো না বেশি পাবার প্রত্যাশায়,
وَلِرَبِّكَ فَٱصْبِرْ ﴿٧﴾
এবং আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে সবর করুন।
আর তোমার প্রভুর জন্য তবে অধ্যবসায় চালিয়ে যাও।
فَإِذَا نُقِرَ فِى ٱلنَّاقُورِ ﴿٨﴾
যেদিন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে;
তারপর যখন শিঙায় আওয়াজ দেওয়া হবে,
فَذَٰلِكَ يَوْمَئِذٍۢ يَوْمٌ عَسِيرٌ ﴿٩﴾
সেদিন হবে কঠিন দিন,
সেটি তবে হবে, সেই দিনটি, এক মহাসংকটের দিন --
عَلَى ٱلْكَٰفِرِينَ غَيْرُ يَسِيرٍۢ ﴿١٠﴾
কাফেরদের জন্যে এটা সহজ নয়।
অবিশ্বাসীদের উপরে; আরামদায়ক নয়।
ذَرْنِى وَمَنْ خَلَقْتُ وَحِيدًۭا ﴿١١﴾
যাকে আমি অনন্য করে সৃষ্টি করেছি, তাকে আমার হাতে ছেড়ে দিন।
ছেড়ে দাও আমাকে ও তাকে যাকে আমি সৃষ্টি করেছি এককভাবে,
وَجَعَلْتُ لَهُۥ مَالًۭا مَّمْدُودًۭا ﴿١٢﴾
আমি তাকে বিপুল ধন-সম্পদ দিয়েছি।
আর তার জন্য আমি বিপুল ধনসম্পদ দিয়েছিলাম,
وَبَنِينَ شُهُودًۭا ﴿١٣﴾
এবং সদা সংগী পুত্রবর্গ দিয়েছি,
আর সন্তানসন্ততি প্রত্যক্ষ অবস্থানকারী,
وَمَهَّدتُّ لَهُۥ تَمْهِيدًۭا ﴿١٤﴾
এবং তাকে খুব সচ্ছলতা দিয়েছি।
আর তার জন্য আমি সহজ করে দিয়েছিলাম স্বচ্ছন্দভাবে,
ثُمَّ يَطْمَعُ أَنْ أَزِيدَ ﴿١٥﴾
এরপরও সে আশা করে যে, আমি তাকে আরও বেশী দেই।
তারপরেও সে চায় যে আমি যেন আরো বাড়িয়ে দিই!
كَلَّآ ۖ إِنَّهُۥ كَانَ لِءَايَٰتِنَا عَنِيدًۭا ﴿١٦﴾
কখনই নয়! সে আমার নিদর্শনসমূহের বিরুদ্ধাচরণকারী।
কখনো নয়! কেননা সে আমাদের নির্দেশাবলী সন্বন্ধে ঘোর বিরুদ্ধাচারী।
سَأُرْهِقُهُۥ صَعُودًا ﴿١٧﴾
আমি সত্ত্বরই তাকে শাস্তির পাহাড়ে আরোহণ করাব।
আমি তার উপরে আনব এক ক্রমবর্ধমান আঘাত।
إِنَّهُۥ فَكَّرَ وَقَدَّرَ ﴿١٨﴾
সে চিন্তা করেছে এবং মনঃস্থির করেছে,
কেননা নিশ্চয় সে ভাবনাচিন্তা করল এবং মেপেজোখে দেখল।
فَقُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ ﴿١٩﴾
ধ্বংস হোক সে, কিরূপে সে মনঃস্থির করেছে!
সুতরাং সে নিপাত যাক! কেমনতর সে যাচাই করেছিল!
ثُمَّ قُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ ﴿٢٠﴾
আবার ধ্বংস হোক সে, কিরূপে সে মনঃস্থির করেছে!
পুনশ্চ সে নিপাত যাক! কেমন করে সে যাচাই করছিল!
ثُمَّ عَبَسَ وَبَسَرَ ﴿٢٢﴾
অতঃপর সে ভ্রূকুঞ্চিত করেছে ও মুখ বিকৃত করেছে,
তারপর সে ভ্রকুঞ্চিত করল ও মুখ বিকৃত করল,
ثُمَّ أَدْبَرَ وَٱسْتَكْبَرَ ﴿٢٣﴾
অতঃপর পৃষ্ঠপ্রদশন করেছে ও অহংকার করেছে।
তারপর সে পিছিয়ে গেল ও বুক ফুলিয়ে এগিয়ে এল,
فَقَالَ إِنْ هَٰذَآ إِلَّا سِحْرٌۭ يُؤْثَرُ ﴿٢٤﴾
এরপর বলেছেঃ এতো লোক পরস্পরায় প্রাপ্ত জাদু বৈ নয়,
তারপর বললে -- ''এ বরাবর চলে আসা জাদু বৈ তো নয়!
إِنْ هَٰذَآ إِلَّا قَوْلُ ٱلْبَشَرِ ﴿٢٥﴾
এতো মানুষের উক্তি বৈ নয়।
''এ একজন মানুষের কথা বৈ তো নয়।’’
وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا سَقَرُ ﴿٢٧﴾
আপনি কি বুঝলেন অগ্নি কি?
আর কী তোমাকে বোঝাবে জ্বালাময় আগুনটা কি?
لَا تُبْقِى وَلَا تَذَرُ ﴿٢٨﴾
এটা অক্ষত রাখবে না এবং ছাড়বেও না।
তা কিছুই বাকী রাখে না, আর কিছুই ছেড়ে দেয় না,
عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ ﴿٣٠﴾
এর উপর নিয়োজিত আছে উনিশ (ফেরেশতা)।
তার উপরে রয়েছে ''উনিশ’’।
وَمَا جَعَلْنَآ أَصْحَٰبَ ٱلنَّارِ إِلَّا مَلَٰٓئِكَةًۭ ۙ وَمَا جَعَلْنَا عِدَّتَهُمْ إِلَّا فِتْنَةًۭ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لِيَسْتَيْقِنَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَٰبَ وَيَزْدَادَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِيمَٰنًۭا ۙ وَلَا يَرْتَابَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْمُؤْمِنُونَ ۙ وَلِيَقُولَ ٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌۭ وَٱلْكَٰفِرُونَ مَاذَآ أَرَادَ ٱللَّهُ بِهَٰذَا مَثَلًۭا ۚ كَذَٰلِكَ يُضِلُّ ٱللَّهُ مَن يَشَآءُ وَيَهْدِى مَن يَشَآءُ ۚ وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلَّا هُوَ ۚ وَمَا هِىَ إِلَّا ذِكْرَىٰ لِلْبَشَرِ ﴿٣١﴾
আমি জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতাই রেখেছি। আমি কাফেরদেরকে পরীক্ষা করার জন্যেই তার এই সংখ্যা করেছি-যাতে কিতাবীরা দৃঢ়বিশ্বাসী হয়, মুমিনদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং কিতাবীরা ও মুমিনগণ সন্দেহ পোষণ না করে এবং যাতে যাদের অন্তরে রোগ আছে, তারা এবং কাফেররা বলে যে, আল্লাহ এর দ্বারা কি বোঝাতে চেয়েছেন। এমনিভাবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথে চালান। আপনার পালনকর্তার বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন এটা তো মানুষের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।
আর আমরা ফিরিশ্তাদের ছাড়া আগুনের প্রহরী করি নি, আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছে তাদের পরীক্ষারূপে ছাড়া আমরা এদের সংখ্যা নির্ধারণ করি নি, যেন যাদের গ্রন্থ দেয়া হয়েছিল তাদের দৃঢ়প্রত্যয় জন্মে, আর যারা বিশ্বাস করেছে তাদের ঈমান যেন বর্ধিত হয়, আর যাদের গ্রন্থ দেওয়া হয়েছে ও যারা বিশ্বাসী তারা যেন সন্দেহ না করে, আর যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে ও যারা অবিশ্বাসী তারা যেন বলতে পারে -- ''এই রূপকের দ্বারা আল্লাহ্ কী বোঝাতে চাইছেন?’’ এইভাবে আল্লাহ্ বিভ্রান্ত করেন যাকে তিনি ইচ্ছা করেন, এবং পথনির্দেশ দেন যাকে তিনি চান। আর তিনি ছাড়া আর কেউ তোমার প্রভুর বাহিনীকে সম্যক জানে না। বস্তুত এটি মানবকুলের জন্য এক সতর্কীকরণ বৈ তো নয়।
وَٱلَّيْلِ إِذْ أَدْبَرَ ﴿٣٣﴾
শপথ রাত্রির যখন তার অবসান হয়,
আর রাতের কথা যখন তার অবসান ঘটে।
وَٱلصُّبْحِ إِذَآ أَسْفَرَ ﴿٣٤﴾
শপথ প্রভাতকালের যখন তা আলোকোদ্ভাসিত হয়,
আর প্রভাতকালের কথা যখন তা হয় আলোকোজ্জ্বল।
إِنَّهَا لَإِحْدَى ٱلْكُبَرِ ﴿٣٥﴾
নিশ্চয় জাহান্নাম গুরুতর বিপদসমূহের অন্যতম,
নিঃসন্দেহ এটি অতি বিরাট এক ব্যাপার --
لِمَن شَآءَ مِنكُمْ أَن يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ ﴿٣٧﴾
তোমাদের মধ্যে যে সামনে অগ্রসর হয় অথবা পশ্চাতে থাকে।
তোমাদের মধ্যের তার জন্য যে আগবাড়তে চায়, অথবা পেছনে থাকতে চায়।
كُلُّ نَفْسٍۭ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ ﴿٣٨﴾
প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী;
প্রত্যেক সত্ত্বাই জামিন থাকবে যা সে অর্জন করে তার জন্য, --
فِى جَنَّٰتٍۢ يَتَسَآءَلُونَ ﴿٤٠﴾
তারা থাকবে জান্নাতে এবং পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
জান্নাতে, তারা পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে --
مَا سَلَكَكُمْ فِى سَقَرَ ﴿٤٢﴾
বলবেঃ তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত করেছে?
''কিসে তোমাদের নিয়ে এসেছে জ্বালাময় আগুনে?’’
قَالُوا۟ لَمْ نَكُ مِنَ ٱلْمُصَلِّينَ ﴿٤٣﴾
তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম না,
তারা বলবে -- ''আমরা নামাযীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না,
وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ ٱلْمِسْكِينَ ﴿٤٤﴾
অভাবগ্রস্তকে আহার্য্য দিতাম না,
''আর আমরা অভাবগ্রস্তদের খাবার দিতে চাইতাম না;
وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ ٱلْخَآئِضِينَ ﴿٤٥﴾
আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম।
''বরং আমরা বৃথা তর্ক করতাম বৃথা তর্ককারীদের সঙ্গে,
وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ ٱلدِّينِ ﴿٤٦﴾
এবং আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম।
''আর আমরা বিচারের দিনকে মিথ্যা বলতাম, --
حَتَّىٰٓ أَتَىٰنَا ٱلْيَقِينُ ﴿٤٧﴾
আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত।
''যতক্ষণ না অবশ্যাম্ভাবী আমাদের কাছে এসেছিল।’’
فَمَا تَنفَعُهُمْ شَفَٰعَةُ ٱلشَّٰفِعِينَ ﴿٤٨﴾
অতএব, সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোন উপকারে আসবে না।
ফলে সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোনো কাজে আসবে না।
فَمَا لَهُمْ عَنِ ٱلتَّذْكِرَةِ مُعْرِضِينَ ﴿٤٩﴾
তাদের কি হল যে, তারা উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়?
তাদের তবে কি হয়েছে যে তারা অনুশাসন থেকে ফিরে চলে যায়,
كَأَنَّهُمْ حُمُرٌۭ مُّسْتَنفِرَةٌۭ ﴿٥٠﴾
যেন তারা ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত গর্দভ।
যেন তারা ভীত-ত্রস্ত গাধার দল,
بَلْ يُرِيدُ كُلُّ ٱمْرِئٍۢ مِّنْهُمْ أَن يُؤْتَىٰ صُحُفًۭا مُّنَشَّرَةًۭ ﴿٥٢﴾
বরং তাদের প্রত্যেকেই চায় তাদের প্রত্যেককে একটি উম্মুক্ত গ্রন্থ দেয়া হোক।
বস্তুত তাদের মধ্যের প্রত্যেকটি লোকই চায় যে তাকে যেন দেওয়া হয় খোলামেলা কাগজের তাড়া।
كَلَّا ۖ بَل لَّا يَخَافُونَ ٱلْءَاخِرَةَ ﴿٥٣﴾
কখনও না, বরং তারা পরকালকে ভয় করে না।
কখনো না। তারা কিন্ত পরকালের ভয় করে না।
كَلَّآ إِنَّهُۥ تَذْكِرَةٌۭ ﴿٥٤﴾
কখনও না, এটা তো উপদেশ মাত্র।
কক্ষনো না! এটি নিশ্চয়ই এক অনুশাসন।
فَمَن شَآءَ ذَكَرَهُۥ ﴿٥٥﴾
অতএব, যার ইচ্ছা, সে একে স্মরণ করুক।
সুতরাং যে কেউ চায় সে এটি স্মরণ করুক।
وَمَا يَذْكُرُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ ۚ هُوَ أَهْلُ ٱلتَّقْوَىٰ وَأَهْلُ ٱلْمَغْفِرَةِ ﴿٥٦﴾
তারা স্মরণ করবে না, কিন্তু যদি আল্লাহ চান। তিনিই ভয়ের যোগ্য এবং ক্ষমার অধিকারী।
আর তারা মনোনিবেশ করবে না যদি না আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন। তিনিই ভয়ভক্তি করার যোগ্য পাত্র এবং তিনিই পরিত্রাণের যথার্থ অধিকারী।