Settings
Surah The Thunder [Ar-Rad] in Bengali
الۤمۤرۚ تِلۡكَ ءَایَـٰتُ ٱلۡكِتَـٰبِۗ وَٱلَّذِیۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ مِن رَّبِّكَ ٱلۡحَقُّ وَلَـٰكِنَّ أَكۡثَرَ ٱلنَّاسِ لَا یُؤۡمِنُونَ ﴿1﴾
আলিফ-লাম-মীম-রা; এগুলো কিতাবের আয়াত। যা কিছু আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তা সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এতে বিশ্বাস করে না।
আলিফ, লাম, মীম, রা। এসব হচ্ছে গ্রন্থখানার আয়াতসমূহ। আর যা তোমার প্রভুর কাছ থেকে তোমার নিকট অবতীর্ণ হয়েছে তা পরমসত্য, কিন্তু অধিকাংশ লোক বিশ্বাস করে না।
ٱللَّهُ ٱلَّذِی رَفَعَ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ بِغَیۡرِ عَمَدࣲ تَرَوۡنَهَاۖ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ وَسَخَّرَ ٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَۖ كُلࣱّ یَجۡرِی لِأَجَلࣲ مُّسَمࣰّىۚ یُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَ یُفَصِّلُ ٱلۡـَٔایَـٰتِ لَعَلَّكُم بِلِقَاۤءِ رَبِّكُمۡ تُوقِنُونَ ﴿2﴾
আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কর্মে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে। তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন, নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাত সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।
আল্লাহ্ই তিনি যিনি মহাকাশমন্ডলকে ঊর্ধ্বে স্থাপন করেছেন কোনো স্তম্ভ ছাড়া -- তোমরা তো এ দেখছ, আর তিনি আরশে সমাসীন হলেন, আর তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে অনুগত করলেন। প্রত্যেকে আবর্তন করছে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে। তিনিই ব্যাপার নিয়ন্ত্রণ করেন, বিশদভাবে বর্ণনা করেন নির্দেশাবলী, যেন তোমরা তোমাদের প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎকার সন্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাস করতে পার।
وَهُوَ ٱلَّذِی مَدَّ ٱلۡأَرۡضَ وَجَعَلَ فِیهَا رَوَ ٰسِیَ وَأَنۡهَـٰرࣰاۖ وَمِن كُلِّ ٱلثَّمَرَ ٰتِ جَعَلَ فِیهَا زَوۡجَیۡنِ ٱثۡنَیۡنِۖ یُغۡشِی ٱلَّیۡلَ ٱلنَّهَارَۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَـٰتࣲ لِّقَوۡمࣲ یَتَفَكَّرُونَ ﴿3﴾
তিনিই ভুমন্ডলকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে পাহাড় পর্বত ও নদ-নদী স্থাপন করেছেন এবং প্রত্যেক ফলের মধ্যে দু’দু প্রকার সৃষ্টি করে রেখেছেন। তিনি দিনকে রাত্রি দ্বারা আবৃত করেন। এতে তাদের জন্যে নিদর্শণ রয়েছে, যারা চিন্তা করে।
আর তিনিই সেইজন যিনি পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন, আর তাতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা ও নদনদী। আর প্রত্যেক ফলের ক্ষেত্রে -- তার মধ্যে তিনি সৃষ্টি করেছেন জোড়ায়-জোড়ায় দুটি-দুটি। তিনি রাত্রিকে দিয়ে দিনকে আবৃত করেন। নিঃসন্দেহ এতে সাক্ষাৎ নিদর্শন রয়েছে সেই লোকদের জন্য যারা চিন্তা করে।
وَفِی ٱلۡأَرۡضِ قِطَعࣱ مُّتَجَـٰوِرَ ٰتࣱ وَجَنَّـٰتࣱ مِّنۡ أَعۡنَـٰبࣲ وَزَرۡعࣱ وَنَخِیلࣱ صِنۡوَانࣱ وَغَیۡرُ صِنۡوَانࣲ یُسۡقَىٰ بِمَاۤءࣲ وَ ٰحِدࣲ وَنُفَضِّلُ بَعۡضَهَا عَلَىٰ بَعۡضࣲ فِی ٱلۡأُكُلِۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَـٰتࣲ لِّقَوۡمࣲ یَعۡقِلُونَ ﴿4﴾
এবং যমিনে বিভিন্ন শস্য ক্ষেত্র রয়েছে-একটি অপরটির সাথে সংলগ্ন এবং আঙ্গুরের বাগান আছে আর শস্য ও খজ্জꦣ2497;র রয়েছে-একটির মূল অপরটির সাথে মিলিত এবং কতক মিলিত নয়। এগুলো কে একই পানি দ্বারা সেচ করা হয়। আর আমি স্বাদে একটিকে অপরটির চাইতে উৎকৃষ্টতর করে দেই। এগুলোর মধ্যে নিদর্শণ রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা ভাবনা করে।
আর পৃথিবীতে আছে পাশাপাশি মাঠ, আর আঙুরের বাগান ও শস্যক্ষেত্র ও খেজুরের গাছ -- ভিড় ক’রে ও ভিড় না ক’রে -- ওদের পানি দেওয়া হয় একই পানি। আর তাদের কতকটাকে কতকটার উপরে প্রাধান্য দিয়েছি আস্বাদনের ক্ষেত্রে। নিঃসন্দেহ এতে বিশিষ্ট নিদর্শন রয়েছে সেইসব লোকের জন্য যারা বুদ্ধি-বিবেচনা প্রয়োগ করে।
۞ وَإِن تَعۡجَبۡ فَعَجَبࣱ قَوۡلُهُمۡ أَءِذَا كُنَّا تُرَ ٰبًا أَءِنَّا لَفِی خَلۡقࣲ جَدِیدٍۗ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ بِرَبِّهِمۡۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلۡأَغۡلَـٰلُ فِیۤ أَعۡنَاقِهِمۡۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿5﴾
যদি আপনি বিস্ময়ের বিষয় চান, তবে তাদের একথা বিস্ময়কর যে, আমরা যখন মাটি হয়ে যাব, তখনও কি নতুন ভাবে সৃজিত হব? এরাই স্বীয় পালনকর্তার সত্তায় অবিশ্বাসী হয়ে গেছে, এদের গর্দানেই লৌহ-শৃংখল পড়বে এবং এরাই দোযখী এরা তাতে চিরকাল থাকবে।
আর যদি তুমি তাজ্জব হও তবে আজব ব্যাপার হচ্ছে তাদের কথা -- ''কী, আমরা যখন ধুলো হয়ে যাব তখন কি আমরা বাস্তবিকই নতুন জীবন লাভ করব?’’ এরাই তারা যারা তাদের প্রভুর প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করে, আর এরাই -- এদের গলায় থাকবে শিকল, আর এরাই হবে আগুনের বাসিন্দা, তাতে তারা করবে অবস্থান।
وَیَسۡتَعۡجِلُونَكَ بِٱلسَّیِّئَةِ قَبۡلَ ٱلۡحَسَنَةِ وَقَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِهِمُ ٱلۡمَثُلَـٰتُۗ وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغۡفِرَةࣲ لِّلنَّاسِ عَلَىٰ ظُلۡمِهِمۡۖ وَإِنَّ رَبَّكَ لَشَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿6﴾
এরা আপনার কাছে মঙ্গলের পরিবর্তে দ্রুত অমঙ্গল কামনা করে। তাদের পূর্বে অনুরূপ অনেক শাস্তিপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী অতিক্রান্ত হয়েছে। আপনার পালনকর্তা মানুষকে তাদের অন্যায় সত্বেও ক্ষমা করেন এবং আপনার পালনকর্তা কঠিন শাস্তিদাতা ও বটে।
আর ওরা তোমাকে ভালর আগেই মন্দকে ত্বরান্বিত করতে বলে, যদিও ওদের পূর্বে বহু লক্ষণীয় শাস্তি গত হয়েছে। আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু লোকদের জন্য তাদের অন্যায়াচরণ সত্ত্বেও ক্ষমার অধিকারী, আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু প্রতিফল দানে অতি কঠোর।
وَیَقُولُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لَوۡلَاۤ أُنزِلَ عَلَیۡهِ ءَایَةࣱ مِّن رَّبِّهِۦۤۗ إِنَّمَاۤ أَنتَ مُنذِرࣱۖ وَلِكُلِّ قَوۡمٍ هَادٍ ﴿7﴾
কাফেররা বলেঃ তাঁর প্রতি তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হল না কেন? আপনার কাজ তো ভয় প্রদর্শন করাই এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যে পথপ্রদর্শক হয়েছে।
আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা বলে -- ''কেন তাঁর কাছে তাঁর প্রভুর কাছ থকে কোনো নিদর্শন প্রেরিত হয় না?’’ তুমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র, এবং সকল জাতির জন্যে একজন পথপ্রদর্শক।
ٱللَّهُ یَعۡلَمُ مَا تَحۡمِلُ كُلُّ أُنثَىٰ وَمَا تَغِیضُ ٱلۡأَرۡحَامُ وَمَا تَزۡدَادُۚ وَكُلُّ شَیۡءٍ عِندَهُۥ بِمِقۡدَارٍ ﴿8﴾
আল্লাহ জানেন প্রত্যেক নারী যা গর্ভধারণ করে এবং গর্ভাশয়ে যা সঙ্কুচিত ও বর্ধিত হয়। এবং তাঁর কাছে প্রত্যেক বস্তুরই একটা পরিমাণ রয়েছে।
আল্লাহ্ জানেন প্রত্যেক স্ত্রীলোক যা গর্ভে ধারণ করে, আর যা জরায়ূ শুষে নেয়, আর যা তারা বর্ধিত করে। আর তাঁর কাছে প্রত্যেক বস্তুরই এক নির্দিষ্ট পরিমাপ রয়েছে।
عَـٰلِمُ ٱلۡغَیۡبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِ ٱلۡكَبِیرُ ٱلۡمُتَعَالِ ﴿9﴾
তিনি সকল গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় অবগত, মহোত্তম, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান।
তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্য বিষয়ে জ্ঞাতা -- মহামহিম, চিরউন্নত।
سَوَاۤءࣱ مِّنكُم مَّنۡ أَسَرَّ ٱلۡقَوۡلَ وَمَن جَهَرَ بِهِۦ وَمَنۡ هُوَ مُسۡتَخۡفِۭ بِٱلَّیۡلِ وَسَارِبُۢ بِٱلنَّهَارِ ﴿10﴾
তোমাদের মধ্যে কেউ গোপনে কথা বলুক বা তা সশব্দে প্রকাশ করুক, রাতের অন্ধকারে সে আত্নগোপন করুক বা প্রকাশ্য দিবালোকে বিচরণ করুক, সবাই তাঁর নিকট সমান।
একসমান তোমাদের মধ্যে যে কথা লুকোয় ও যে তা খুলে বলে, আর যে রাত্রিবেলায় আত্মগোপন করে আর দিনের বেলায় বিচরণ করে।
لَهُۥ مُعَقِّبَـٰتࣱ مِّنۢ بَیۡنِ یَدَیۡهِ وَمِنۡ خَلۡفِهِۦ یَحۡفَظُونَهُۥ مِنۡ أَمۡرِ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُغَیِّرُ مَا بِقَوۡمٍ حَتَّىٰ یُغَیِّرُوا۟ مَا بِأَنفُسِهِمۡۗ وَإِذَاۤ أَرَادَ ٱللَّهُ بِقَوۡمࣲ سُوۤءࣰا فَلَا مَرَدَّ لَهُۥۚ وَمَا لَهُم مِّن دُونِهِۦ مِن وَالٍ ﴿11﴾
তাঁর পক্ষ থেকে অনুসরণকারী রয়েছে তাদের অগ্রে এবং পশ্চাতে, আল্লাহর নির্দেশে তারা ওদের হেফাযত করে। আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।
তাঁর জন্য প্রহরী রয়েছে তাঁর সম্মুখভাগে ও তাঁর পশ্চাদভাগে, ওরা তাঁকে রক্ষণাবেক্ষণ করে আল্লাহ্র আদেশক্রমে। আল্লাহ্ অবশ্যই কোনো জাতির অবস্থায় পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজেরাই তা পরিবর্তন করে। আর যখন আল্লাহ্ কোনো জাতির জন্য অকল্যাণ চান তখন তা রদ করার উপায় নেই, আর তাদের জন্য তিনি ছাড়া কোনো অভিভাবক নেই।
هُوَ ٱلَّذِی یُرِیكُمُ ٱلۡبَرۡقَ خَوۡفࣰا وَطَمَعࣰا وَیُنشِئُ ٱلسَّحَابَ ٱلثِّقَالَ ﴿12﴾
তিনিই তোমাদেরকে বিদ্যুৎ দেখান ভয়ের জন্যে এবং আশার জন্যে এবং উক্ষিত করেন ঘন মেঘমালা।
তিনিই সেইজন যিনি তোমাদের দেখান বিদ্যুৎ ভয়উদ্দীপক এবং আশাসঞ্চারক, আর তিনি নিয়ে আসেন ভারী মেঘ।
وَیُسَبِّحُ ٱلرَّعۡدُ بِحَمۡدِهِۦ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ مِنۡ خِیفَتِهِۦ وَیُرۡسِلُ ٱلصَّوَ ٰعِقَ فَیُصِیبُ بِهَا مَن یَشَاۤءُ وَهُمۡ یُجَـٰدِلُونَ فِی ٱللَّهِ وَهُوَ شَدِیدُ ٱلۡمِحَالِ ﴿13﴾
তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে। তিনি বজ্রপাত করেন, অতঃপর যাকে ইচছা, তাকে তা দ্বারা আঘাত করেন; তথাপি তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতন্ডা করে, অথচ তিনি মহাশক্তিশালী।
আর বজ্র-নিনাদ মহিমা ঘোষণা করে তাঁর প্রশংসার সাথে, আর ফিরিশ্তারাও তাঁর ভয়ে, আর তিনি বজ্রপাত প্রেরণ করেন, আর তা দিয়ে আঘাত করেন যাকে তিনি ইচ্ছা করেন, তবু তারা আল্লাহ্র সন্বন্ধে তর্কাতর্কি করে, যদিও তিনি ক্ষমতায় কঠোর।
لَهُۥ دَعۡوَةُ ٱلۡحَقِّۚ وَٱلَّذِینَ یَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ لَا یَسۡتَجِیبُونَ لَهُم بِشَیۡءٍ إِلَّا كَبَـٰسِطِ كَفَّیۡهِ إِلَى ٱلۡمَاۤءِ لِیَبۡلُغَ فَاهُ وَمَا هُوَ بِبَـٰلِغِهِۦۚ وَمَا دُعَاۤءُ ٱلۡكَـٰفِرِینَ إِلَّا فِی ضَلَـٰلࣲ ﴿14﴾
সত্যের আহবান একমাত্র তাঁরই এবং তাকে ছাড়া যাদেরকে ডাকে, তারা তাদের কোন কাজে আসে না; ওদের দৃষ্টান্ত সেরূপ, যেমন কেউ দু’ হাত পানির দিকে প্রসারিত করে যাতে পানি তার মুখে পৌঁছে যায়। অথচ পানি কোন সময় পৌঁছাবে না। কাফেরদের যত আহবান তার সবই পথভ্রষ্টতা।
সত্যিকারের প্রার্থনা তাঁরই জন্য। আর তাঁকে ছেড়ে দিয়ে তারা যাদের কাছে প্রার্থনা জানায় তারা তাদের প্রতি কোনো প্রকারের সাড়া দেয় না, তবে যেন সে তার দুই হাত পানির দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে যাতে তা তার মুখে পৌঁছুতে পারে, কিন্তু তা তাতে পৌঁছুবে না। বস্তুতঃ অবিশ্বাসীদের প্রার্থনা ভ্রান্তিতে ভিন্ন নয়।
وَلِلَّهِ یَسۡجُدُ مَن فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡعࣰا وَكَرۡهࣰا وَظِلَـٰلُهُم بِٱلۡغُدُوِّ وَٱلۡـَٔاصَالِ ۩ ﴿15﴾
আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে আছে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের প্রতিচ্ছায়াও সকাল-সন্ধ্যায়।
আর আল্লাহ্কেই সিজদা করে যারাই আছে মহাকাশ-মন্ডলে ও পৃথিবীতে -- স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়, আর তাদের ছায়াও সকালে ও সন্ধ্যায়।
قُلۡ مَن رَّبُّ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ قُلِ ٱللَّهُۚ قُلۡ أَفَٱتَّخَذۡتُم مِّن دُونِهِۦۤ أَوۡلِیَاۤءَ لَا یَمۡلِكُونَ لِأَنفُسِهِمۡ نَفۡعࣰا وَلَا ضَرࣰّاۚ قُلۡ هَلۡ یَسۡتَوِی ٱلۡأَعۡمَىٰ وَٱلۡبَصِیرُ أَمۡ هَلۡ تَسۡتَوِی ٱلظُّلُمَـٰتُ وَٱلنُّورُۗ أَمۡ جَعَلُوا۟ لِلَّهِ شُرَكَاۤءَ خَلَقُوا۟ كَخَلۡقِهِۦ فَتَشَـٰبَهَ ٱلۡخَلۡقُ عَلَیۡهِمۡۚ قُلِ ٱللَّهُ خَـٰلِقُ كُلِّ شَیۡءࣲ وَهُوَ ٱلۡوَ ٰحِدُ ٱلۡقَهَّـٰرُ ﴿16﴾
জিজ্ঞেস করুন নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের পালনকর্তা কে? বলে দিনঃ আল্লাহ! বলুনঃ তবে কি তোমরা আল্লাহ ব্যতীত এমন অভিভাবক স্থির করেছ, যারা নিজেদের ভাল-মন্দের ও মালিক নয়? বলুনঃ অন্ধ চক্ষুষ্মান কি সমান হয়? অথবা কোথাও কি অন্ধকার ও আলো সমান হয়। তবে কি তারা আল্লাহর জন্য এমন অংশীদার স্থির করেছে যে, তারা কিছু সৃষ্টি করেছে, যেমন সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ? অতঃপর তাদের সৃষ্টি এরূপ বিভ্রান্তি ঘটিয়েছে? বলুনঃ আল্লাহই প্রত্যেক বস্তুর স্রষ্টা এবং তিনি একক, পরাক্রমশালী।
বলো -- ''কে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর প্রভু?’’ বল -- ''আল্লাহ্।’’ বল, ''তবে কি তোমরা তাঁকে ছেড়ে দিয়ে অভিভাবক-রূপে গ্রহণ কর তাদের যারা তাদের নিজেদের জন্যে কোনো লাভ কামাতে সক্ষম নয় আর ক্ষতিসাধনেও নয়?’’ বলো -- ''অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি এক-সমান অথবা অন্ধকার আর আলোক কি সমান-সমান? অথবা তারা কি আল্লাহ্র এমন অংশী দাঁড় করিয়েছে যারা তাঁর সৃষ্টির মত সৃষ্টি করেছে, যার ফলে সৃষ্টি তাদের কাছে সন্দেহ ঘটিয়েছে?’’ বল -- ''আল্লাহ্ই সব-কিছুর সৃষ্টিকর্তা, আর তিনি একক, সর্বাধিনায়ক।’’
أَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ مَاۤءࣰ فَسَالَتۡ أَوۡدِیَةُۢ بِقَدَرِهَا فَٱحۡتَمَلَ ٱلسَّیۡلُ زَبَدࣰا رَّابِیࣰاۖ وَمِمَّا یُوقِدُونَ عَلَیۡهِ فِی ٱلنَّارِ ٱبۡتِغَاۤءَ حِلۡیَةٍ أَوۡ مَتَـٰعࣲ زَبَدࣱ مِّثۡلُهُۥۚ كَذَ ٰلِكَ یَضۡرِبُ ٱللَّهُ ٱلۡحَقَّ وَٱلۡبَـٰطِلَۚ فَأَمَّا ٱلزَّبَدُ فَیَذۡهَبُ جُفَاۤءࣰۖ وَأَمَّا مَا یَنفَعُ ٱلنَّاسَ فَیَمۡكُثُ فِی ٱلۡأَرۡضِۚ كَذَ ٰلِكَ یَضۡرِبُ ٱللَّهُ ٱلۡأَمۡثَالَ ﴿17﴾
তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর স্রোতধারা প্রবাহিত হতে থাকে নিজ নিজ পরিমাণ অনুযায়ী। অতঃপর স্রোতধারা স্ফীত ফেনারাশি উপরে নিয়ে আসে। এবং অলঙ্কার অথবা তৈজসপত্রের জন্যে যে বস্তুকে আগুনে উত্তপ্ত করে, তাতেও তেমনি ফেনারাশি থাকে। এমনি ভাবে আল্লাহ সত্য ও অসত্যের দৃষ্টান্ত প্রদান করেন। অতএব, ফেনা তো শুকিয়ে খতম হয়ে যায় এবং যা মানুষের উপকারে আসে, তা জমিতে অবশিষ্ট থাকে। আল্লাহ এমনিভাবে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন।
তিনি আকাশ থেকে পানি অবতারণ করেন, তারপর জলধারা প্রবাহিত হয় তাদের পরিমাপ অনুসারে, আর খরস্রোত বয়ে নিয়ে যায় ফেঁপে ওঠা ফেনার রাশি। আর যা তারা আগুনে গলায় গহনাগাটি বা যন্ত্রপাতি নির্মাণের উদ্দেশ্যে তা থেকেও ওঠে ওর মতো ফেনায়িত গাদ। এইভাবে আল্লাহ্ সত্য ও মিথ্যার দৃষ্টান্ত দিয়ে থাকেন। কাজেই যা কিছু গাদ -- তা চলে যায় জালরূপে, আর যা মানুষের উপকারে আসে তা কিন্তু থেকে যায় পৃথিবীতে। এইভাবে আল্লাহ্ উপমা দিয়ে থাকেন।
لِلَّذِینَ ٱسۡتَجَابُوا۟ لِرَبِّهِمُ ٱلۡحُسۡنَىٰۚ وَٱلَّذِینَ لَمۡ یَسۡتَجِیبُوا۟ لَهُۥ لَوۡ أَنَّ لَهُم مَّا فِی ٱلۡأَرۡضِ جَمِیعࣰا وَمِثۡلَهُۥ مَعَهُۥ لَٱفۡتَدَوۡا۟ بِهِۦۤۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ سُوۤءُ ٱلۡحِسَابِ وَمَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمِهَادُ ﴿18﴾
যারা পালনকর্তার আদেশ পালন করে, তাদের জন্য উত্তম প্রতিদান রয়েছে এবং যারা আদেশ পালন করে না, যদি তাদের কাছে জগতের সবকিছু থাকে এবং তার সাথে তার সমপরিমাণ আরও থাকে, তবে সবই নিজেদের মুক্তিপণ স্বরূপ দিয়ে দেবে। তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর হিসাব। তাদের আবাস হবে জাহান্নাম। সেটা কতইনা নিকৃষ্ট অবস্থান।
যারা তাদের প্রভুর প্রতি সাড়া দেয় তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ, আর যারা তাঁর প্রতি সাড়া দেয় না -- তাদের যদি থাকত পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সবটাই ও সেই সঙ্গে তার সমপরিমাণ, তবে তারা নিশ্চয়ই তা মুক্তিপণরূপে অর্পণ করতো। এরাই -- এদের জন্য হবে মন্দ হিসাব, আর তাদের আবাস হবে জাহান্নাম, আর তা বড় নিকৃষ্ট বাসস্থান।
۞ أَفَمَن یَعۡلَمُ أَنَّمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ مِن رَّبِّكَ ٱلۡحَقُّ كَمَنۡ هُوَ أَعۡمَىٰۤۚ إِنَّمَا یَتَذَكَّرُ أُو۟لُوا۟ ٱلۡأَلۡبَـٰبِ ﴿19﴾
যে ব্যক্তি জানে যে, যা কিছু পালনকর্তার পক্ষ থেকে আপনার প্রতি অবর্তীর্ণ হয়েছে তা সত্য সে কি ঐ ব্যক্তির সমান, যে অন্ধ? তারাই বোঝে, যারা বোধশক্তি সম্পন্ন।
যেজন জানে যে তোমার প্রভুর কাছ থেকে তোমার নিকট যা অবতীর্ণ হয়েছে তা সত্য সে কি তার মতো যে অন্ধ? নিঃসন্দেহ বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরাই কেবল স্মরণ করবে, --
ٱلَّذِینَ یُوفُونَ بِعَهۡدِ ٱللَّهِ وَلَا یَنقُضُونَ ٱلۡمِیثَـٰقَ ﴿20﴾
এরা এমন লোক, যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে এবং অঙ্গীকার ভঙ্গ করে না।
যারা আল্লাহ্র অংগীকার রক্ষা করে ও প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে না,
وَٱلَّذِینَ یَصِلُونَ مَاۤ أَمَرَ ٱللَّهُ بِهِۦۤ أَن یُوصَلَ وَیَخۡشَوۡنَ رَبَّهُمۡ وَیَخَافُونَ سُوۤءَ ٱلۡحِسَابِ ﴿21﴾
এবং যারা বজায় রাখে ঐ সম্পর্ক, যা বজায় রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন এবং স্বীয় পালনকর্তাকে ভয় করে এবং কঠোর হিসাবের আশঙ্কা রাখে।
আর যারা সংযুক্ত রাখে যা অক্ষুন্ন রাখতে আল্লাহ্ আদেশ করেছেন, আর যারা তাদের প্রভুকে ভয় করে, আর যারা ভয় করে মন্দ হিসাব সন্বন্ধে।
وَٱلَّذِینَ صَبَرُوا۟ ٱبۡتِغَاۤءَ وَجۡهِ رَبِّهِمۡ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنفَقُوا۟ مِمَّا رَزَقۡنَـٰهُمۡ سِرࣰّا وَعَلَانِیَةࣰ وَیَدۡرَءُونَ بِٱلۡحَسَنَةِ ٱلسَّیِّئَةَ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ عُقۡبَى ٱلدَّارِ ﴿22﴾
এবং যারা স্বীয় পালনকর্তার সন্তুষ্টির জন্যে সবর করে, নামায প্রতিষ্টা করে আর আমি তাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্য ব্যয় করে এবং যারা মন্দের বিপরীতে ভাল করে, তাদের জন্যে রয়েছে পরকালের গৃহ।
আর যারা তাদের প্রভুর সন্তষ্টিলাভের অন্বেষণে অধ্যবসায় অবলন্বন করে, আর নামায কায়েম রাখে, আর আমরা তাদের যা জীবনোপকরণ দিয়েছি তা থেকে যারা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, আর ভাল দিয়ে মন্দকে দূর করে, -- এরাই তারা যাদের জন্য রয়েছে চরমোৎকর্ষ আবাস, --
جَنَّـٰتُ عَدۡنࣲ یَدۡخُلُونَهَا وَمَن صَلَحَ مِنۡ ءَابَاۤىِٕهِمۡ وَأَزۡوَ ٰجِهِمۡ وَذُرِّیَّـٰتِهِمۡۖ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ یَدۡخُلُونَ عَلَیۡهِم مِّن كُلِّ بَابࣲ ﴿23﴾
তা হচ্ছে বসবাসের বাগান। তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের সৎকর্মশীল বাপ-দাদা, স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানেরা। ফেরেশতারা তাদের কাছে আসবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে।
নন্দন কানন যাতে তারা প্রবেশ করবে, আর তাদের পিতামাতাদের ও তাদের পতিপত্নীদের ও তাদের সন্তানসন্ততি দের মধ্যে যারা সৎকর্ম করেছে, আর ফিরিশ্তাগণ তাদের সামনে প্রবেশ করবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে, --
سَلَـٰمٌ عَلَیۡكُم بِمَا صَبَرۡتُمۡۚ فَنِعۡمَ عُقۡبَى ٱلدَّارِ ﴿24﴾
বলবেঃ তোমাদের সবরের কারণে তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আর তোমাদের এ পরিণাম-গৃহ কতই না চমৎকার।
''শান্তি বর্ষিত হোক তোমাদের উপরে যেহেতু তোমরা অধ্যবসায় অবলন্বন করেছিলে, কাজেই কত ভাল এই চরমোৎকর্ষ আবাস!’’
وَٱلَّذِینَ یَنقُضُونَ عَهۡدَ ٱللَّهِ مِنۢ بَعۡدِ مِیثَـٰقِهِۦ وَیَقۡطَعُونَ مَاۤ أَمَرَ ٱللَّهُ بِهِۦۤ أَن یُوصَلَ وَیُفۡسِدُونَ فِی ٱلۡأَرۡضِ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمُ ٱللَّعۡنَةُ وَلَهُمۡ سُوۤءُ ٱلدَّارِ ﴿25﴾
এবং যারা আল্লাহর অঙ্গীকারকে দৃঢ় ও পাকা-পোক্ত করার পর তা ভঙ্গ করে, আল্লাহ যে, সম্পর্ক বজায় রাখতে আদেশ করেছেন, তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে, ওরা ঐ সমস্ত লোক যাদের জন্যে রয়েছে অভিসম্পাত এবং ওদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব।
আর যারা আল্লাহ্র সাথের অংগীকার ভঙ্গ করে সেটির সুদৃঢ়ীকরণের পরে, আর ছিন্ন করে যা অক্ষুন্ন রাখতে আল্লাহ্ আদেশ করেছেন, আর পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে, এরাই -- এদের জন্যেই রয়েছে ধিক্কার, আর এদেরই জন্যে আছে নিকৃষ্ট আবাস।
ٱللَّهُ یَبۡسُطُ ٱلرِّزۡقَ لِمَن یَشَاۤءُ وَیَقۡدِرُۚ وَفَرِحُوا۟ بِٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا وَمَا ٱلۡحَیَوٰةُ ٱلدُّنۡیَا فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ إِلَّا مَتَـٰعࣱ ﴿26﴾
আল্লাহ যার জন্যে ইচ্ছা রুযী প্রশস্ত করেন এবং সংকুচিত করেন। তারা পার্থিব জীবনের প্রতি মুগ্ধ। পার্থিবজীবন পরকালের সামনে অতি সামান্য সম্পদ বৈ নয়।
আল্লাহ্ জীবিকা বাড়িয়ে দেন যাকে তিনি ইচ্ছে করেন, আর তিনি মাপজোখ করেন। আর তারা পার্থিব জীবনে উল্লসিত। অথচ ইহকালের জীবনটা তো পরকালের তুলনায় যৎসামান্য সুখ-ভোগ বৈ নয়।
وَیَقُولُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لَوۡلَاۤ أُنزِلَ عَلَیۡهِ ءَایَةࣱ مِّن رَّبِّهِۦۚ قُلۡ إِنَّ ٱللَّهَ یُضِلُّ مَن یَشَاۤءُ وَیَهۡدِیۤ إِلَیۡهِ مَنۡ أَنَابَ ﴿27﴾
কাফেররা বলেঃ তাঁর প্রতি তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন কেন অবতীর্ণ হলো না? বলে দিন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যে, মনোনিবেশ করে, তাকে নিজের দিকে পথপ্রদর্শন করেন।
আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা বলে -- ''কেন তাঁর কাছে তাঁর প্রভুর কাছ থেকে একটি নিদর্শন অবতীর্ণ হয় না?’’ বলো -- ''নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভ্রান্তপথে যেতে দেন যাকে তিনি ইচ্ছে করেন, আর তাঁর দিকে পরিচালিত করেন যে ফেরে;
ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَتَطۡمَىِٕنُّ قُلُوبُهُم بِذِكۡرِ ٱللَّهِۗ أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَىِٕنُّ ٱلۡقُلُوبُ ﴿28﴾
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।
''যারা আস্থা স্থাপন করেছে আর আল্লাহ্র গুণকীর্তনে যাদের হৃদয় প্রশান্ত হয়।’’ এটি কি নয় যে আল্লাহ্র গুণগানেই হৃদয় প্রশান্তি লাভ করে?
ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ طُوبَىٰ لَهُمۡ وَحُسۡنُ مَـَٔابࣲ ﴿29﴾
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের জন্যে রয়েছে সুসংবাদ এবং মনোরম প্রত্যাবর্তণস্থল।
যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে তাদেরই জন্য পরম সুখ ও শুভ পরিণাম।
كَذَ ٰلِكَ أَرۡسَلۡنَـٰكَ فِیۤ أُمَّةࣲ قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِهَاۤ أُمَمࣱ لِّتَتۡلُوَا۟ عَلَیۡهِمُ ٱلَّذِیۤ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَیۡكَ وَهُمۡ یَكۡفُرُونَ بِٱلرَّحۡمَـٰنِۚ قُلۡ هُوَ رَبِّی لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَیۡهِ تَوَكَّلۡتُ وَإِلَیۡهِ مَتَابِ ﴿30﴾
এমনিভাবে আমি আপনাকে একটি উম্মতের মধ্যে প্রেরণ করেছি। তাদের পূর্বে অনেক উম্মত অতিক্রান্ত হয়েছে। যাতে আপনি তাদেরকে ঐ নির্দেশ শুনিয়ে দেন, যা আমি আপনার কাছে প্রেরণ করেছি। তথাপি তারা দয়াময়কে অস্বীকার করে। বলুনঃ তিনিই আমার পালনকর্তা। তিনি ব্যতীত কারও উপাসনা নাই। আমি তাঁর উপরই ভরসা করেছি এবং তাঁর দিকেই আমার প্রত্যাবর্তণ।
এইভাবে তোমাকে আমরা পাঠিয়েছি একটি জাতির মধ্যে যার পূর্বে বহু জাতি গত হয়ে গেছে, যেন তুমি তাদের কাছে পাঠ করতে পার যা আমরা তোমার কাছে প্রত্যাদেশ করছি, তথাপি তারা অবিশ্বাস করে পরম করুণাময়ের প্রতি! বল -- ''তিনিই আমার প্রভু, তিনি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই, তাঁরই উপরে আমি নির্ভর করি আর তাঁর কাছেই আমার প্রত্যাবর্তন।’’
وَلَوۡ أَنَّ قُرۡءَانࣰا سُیِّرَتۡ بِهِ ٱلۡجِبَالُ أَوۡ قُطِّعَتۡ بِهِ ٱلۡأَرۡضُ أَوۡ كُلِّمَ بِهِ ٱلۡمَوۡتَىٰۗ بَل لِّلَّهِ ٱلۡأَمۡرُ جَمِیعًاۗ أَفَلَمۡ یَا۟یۡـَٔسِ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَن لَّوۡ یَشَاۤءُ ٱللَّهُ لَهَدَى ٱلنَّاسَ جَمِیعࣰاۗ وَلَا یَزَالُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ تُصِیبُهُم بِمَا صَنَعُوا۟ قَارِعَةٌ أَوۡ تَحُلُّ قَرِیبࣰا مِّن دَارِهِمۡ حَتَّىٰ یَأۡتِیَ وَعۡدُ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُخۡلِفُ ٱلۡمِیعَادَ ﴿31﴾
যদি কোন কোরআন এমন হত, যার সাহায্যে পাহাড় চলমান হয় অথবা যমীন খন্ডিত হয় অথবা মৃতরা কথা বলে, তবে কি হত? বরং সব কাজ তো আল্লাহর হাতে। ঈমানদাররা কি এ ব্যাপারে নিশ্চিত নয় যে, যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে সব মানুষকে সৎপথে পরিচালিত করতেন? কাফেররা তাদের কৃতকর্মের কারণে সব সময় আঘাত পেতে থাকবে অথবা তাদের গৃহের নিকটবর্তী স্থানে আঘাত নেমে আসবে, যে, পর্যন্ত আল্লাহর ওয়াদা না আসে। নিশ্চয় আল্লাহ ওয়াদার খেলাফ করেন না।
আর যদি এমন একখানা কুরআন থাকত যার দ্বারা পাহাড়গুলো হটিয়ে দেয়া যেতো, অথবা তার দ্বারা পৃথিবীকে ছিন্নভিন্ন করা যেতো, অথবা মৃতকে তার দ্বারা কথা বলানো যেতো। বস্তুতঃ হুকুম পুরোপুরি আল্লাহ্র। যারা বিশ্বাস করেছে তারা কি জানে না যে, যদি আল্লাহ্ তেমন ইচ্ছে করতেন তবে সব মানুষকে একই সাথে সৎপথে চালিত করতেন? আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা যা করে সেজন্য তাদের উপরে বিপর্যয় আঘাত হানতে ক্ষান্ত হবে না, অথবা এটি তাদের বাড়িঘরের নিকটেই আপতিত হতে থাকবে, যে পর্যন্ত না আল্লাহ্র ওয়াদা সমাগত হয়। আল্লাহ্ আলবৎ ওয়াদা খেলাপ করেন না।
وَلَقَدِ ٱسۡتُهۡزِئَ بِرُسُلࣲ مِّن قَبۡلِكَ فَأَمۡلَیۡتُ لِلَّذِینَ كَفَرُوا۟ ثُمَّ أَخَذۡتُهُمۡۖ فَكَیۡفَ كَانَ عِقَابِ ﴿32﴾
আপনার পূর্বে কত রাসূলের সাথে ঠাট্টা করা হয়েছে। অতঃপর আমি কাফেরদেরকে কিছু অবকাশ দিয়েছি। , এর পর তাদেরকে পাকড়াও করেছি। অতএব কেমন ছিল আমার শাস্তি।
আর নিশ্চয়ই তোমার পূর্বে রসূলগণকে ঠাট্টাবিদ্রূপ করা হয়েছিল, সুতরাং যারা অবিশ্বাস করেছিল তাদের আমি অবকাশ দিয়েছিলাম, তারপর আমি তাদের পাকড়াও করেছিলাম, কাজেই কেমন ছিল আমার প্রতিফলদান!
أَفَمَنۡ هُوَ قَاۤىِٕمٌ عَلَىٰ كُلِّ نَفۡسِۭ بِمَا كَسَبَتۡۗ وَجَعَلُوا۟ لِلَّهِ شُرَكَاۤءَ قُلۡ سَمُّوهُمۡۚ أَمۡ تُنَبِّـُٔونَهُۥ بِمَا لَا یَعۡلَمُ فِی ٱلۡأَرۡضِ أَم بِظَـٰهِرࣲ مِّنَ ٱلۡقَوۡلِۗ بَلۡ زُیِّنَ لِلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مَكۡرُهُمۡ وَصُدُّوا۟ عَنِ ٱلسَّبِیلِۗ وَمَن یُضۡلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِنۡ هَادࣲ ﴿33﴾
ওরা প্রত্যেকেই কি মাথার উপর স্ব স্ব কৃতকর্ম নিয়ে দন্ডায়মান নয়? এবং তারা আল্লাহর জন্য অংশীদার সাব্যস্ত করে। বলুন; নাম বল অথবা খবর দাও পৃথিবীর এমন কিছু জিনিস সম্পর্কে যা তিনি জানেন না? অথবা অসার কথাবার্তা বলছ? বরং সুশোভিত করা হয়েছে কাফেরদের জন্যে তাদের প্রতারণাকে এবং তাদেরকে সৎপথ থেকে বাধা দান করা হয়েছে। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার কোন পথ প্রদর্শক নেই।
তবে কি প্রত্যেক সত্ত্বা কি অর্জন করছে তাতে যিনি অধিষ্ঠিত রয়েছেন? তথাপি তারা আল্লাহ্র সাথে অংশী দাঁড় করায়! তুমি বল -- ''ওদের নাম দাও।’’ তবে কি তোমরা তাঁকে জানাতে চাও পৃথিবীতে এমন কিছু বিষয় যা তিনি জানেন না? না এটি বাহ্যতঃ একটি কথা মাত্র? না, ওদের ছলা-কলা চিত্তাকর্ষক মনে হয় তাদের কাছে যারা অবিশ্বাস পোষণ করে, আর তাদের ফিরিয়ে আনা হয় সৎপথ থেকে। আর যাকে আল্লাহ্ পথভ্রষ্ট হতে দেন তার জন্য তবে কোনো পথপ্রদর্শক নেই।
لَّهُمۡ عَذَابࣱ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَاۖ وَلَعَذَابُ ٱلۡـَٔاخِرَةِ أَشَقُّۖ وَمَا لَهُم مِّنَ ٱللَّهِ مِن وَاقࣲ ﴿34﴾
দুনিয়ার জীবনেই এদের জন্য রয়েছে আযাব এবং অতি অবশ্য আখেরাতের জীবন কঠোরতম। আল্লাহর কবল থেকে তাদের কোন রক্ষাকারী নেই।
তাদের জন্য শাস্তি রয়েছে এই দুনিয়ার জীবনেই, আর পরকালের শাস্তি তো আরো কঠোর, আর তাদের জন্য আল্লাহ্র বিরুদ্ধে কোনো রক্ষাকারী নেই।
۞ مَّثَلُ ٱلۡجَنَّةِ ٱلَّتِی وُعِدَ ٱلۡمُتَّقُونَۖ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُۖ أُكُلُهَا دَاۤىِٕمࣱ وَظِلُّهَاۚ تِلۡكَ عُقۡبَى ٱلَّذِینَ ٱتَّقَوا۟ۚ وَّعُقۡبَى ٱلۡكَـٰفِرِینَ ٱلنَّارُ ﴿35﴾
পরহেযগারদের জন্যে প্রতিশ্রুত জান্নাতের অবস্থা এই যে, তার নিম্নে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। তার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং ছায়াও। এটা তাদের প্রতিদান, যারা সাবধান হয়েছে এবং কাফেরদের প্রতিফল অগ্নি।
ধর্মভীরুদের কাছে যেটি প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেই স্বর্গোদ্যানের উপমা হচ্ছে -- তার নিচে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ঝরনারাজি, তার ফলফসল চিরস্থায়ী আর তার ছায়াও। এই তাদের প্রতিফল যারা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করে, আর অবিশ্বাসীদের পরিণাম হচ্ছে আগুন।
وَٱلَّذِینَ ءَاتَیۡنَـٰهُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ یَفۡرَحُونَ بِمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَۖ وَمِنَ ٱلۡأَحۡزَابِ مَن یُنكِرُ بَعۡضَهُۥۚ قُلۡ إِنَّمَاۤ أُمِرۡتُ أَنۡ أَعۡبُدَ ٱللَّهَ وَلَاۤ أُشۡرِكَ بِهِۦۤۚ إِلَیۡهِ أَدۡعُوا۟ وَإِلَیۡهِ مَـَٔابِ ﴿36﴾
এবং যাদেরকে আমি গ্রন্থ দিয়েছি, তারা আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তজ্জন্যে আনন্দিত হয় এবং কোন কোন দল এর কোন কোন বিষয় অস্বীকার করে। বলুন, আমাকে এরূপ আদেশই দেয়া হয়েছে যে, আমি আল্লাহর এবাদত করি। এবং তাঁর সাথে অংশীদার না করি। আমি তাঁর দিকেই দাওয়াত দেই এবং তাঁর কাছেই আমার প্রত্যাবর্তন।
আর যাদের আমরা ধর্মগ্রন্থ দিয়েছি তারা আনন্দ বোধ করে যা তোমার কাছে অবতীর্ণ হয়েছে তাতে, আর গোত্রদের মধ্যে এমনও আছে যে এর কিছুটা অস্বীকার করে। তুমি বলো -- ''নিঃসন্দেহ আমি আদিষ্ট হয়েছি যে আমি আল্লাহ্রই উপাসনা করবো এবং তাঁর সাথে কোন অংশী দাঁড় করাবো না। তাঁরই প্রতি আমি আহ্বান করি এবং তাঁরই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন।’’
وَكَذَ ٰلِكَ أَنزَلۡنَـٰهُ حُكۡمًا عَرَبِیࣰّاۚ وَلَىِٕنِ ٱتَّبَعۡتَ أَهۡوَاۤءَهُم بَعۡدَ مَا جَاۤءَكَ مِنَ ٱلۡعِلۡمِ مَا لَكَ مِنَ ٱللَّهِ مِن وَلِیࣲّ وَلَا وَاقࣲ ﴿37﴾
এমনিভাবেই আমি এ কোরআনকে আরবী ভাষায় নির্দেশরূপে অবতীর্ণ করেছি। যদি আপনি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেন আপনার কাছে জ্ঞান পৌঁছার পর, তবে আল্লাহর কবল থেকে আপনার না কোন সাহায্যকারী আছে এবং না কোন রক্ষাকারী।
আর এইভাবে আমরা এটি অবতারণ করেছি -- একটি হুকুম আরবীতে। আর তুমি যদি তাদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করো তোমার কাছে জ্ঞানের যা এসেছে তার পরে তবে আল্লাহ্র বিরুদ্ধে তুমি পাবে না কোনো বন্ধুবান্ধব, আর না কোনো রক্ষক।
وَلَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا رُسُلࣰا مِّن قَبۡلِكَ وَجَعَلۡنَا لَهُمۡ أَزۡوَ ٰجࣰا وَذُرِّیَّةࣰۚ وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَن یَأۡتِیَ بِـَٔایَةٍ إِلَّا بِإِذۡنِ ٱللَّهِۗ لِكُلِّ أَجَلࣲ كِتَابࣱ ﴿38﴾
আপনার পূর্বে আমি অনেক রসূল প্রেরণ করেছি এবং তাঁদেরকে পত্নী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছি। কোন রসূলের এমন সাধ্য ছিল না যে আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কোন নিদর্শন উপস্থিত করে। প্রত্যেকটি ওয়াদা লিখিত আছে।
আর অবশ্যই তোমার পূর্বে আমরা বহু রসূল পাঠিয়েছি, আর তাঁদের জন্য আমরা দিয়েছিলাম স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি, আর কোনো রসূলের পক্ষে এটি নয় যে তিনি কোনো নিদর্শন উপস্থাপিত করবেন আল্লাহ্র অনুমতি ব্যতীত। প্রত্যেক নির্ধারিত কালের জন্য বিধান রয়েছে।
یَمۡحُوا۟ ٱللَّهُ مَا یَشَاۤءُ وَیُثۡبِتُۖ وَعِندَهُۥۤ أُمُّ ٱلۡكِتَـٰبِ ﴿39﴾
আল্লাহ যা ইচ্ছা মিটিয়ে দেন এবং বহাল রাখেন এবং মূলগ্রন্থ তাঁর কাছেই রয়েছে।
আল্লাহ্ বিলুপ্ত করেন যা তিনি ইচ্ছে করেন, আর প্রতিষ্ঠিত করেন, আর তাঁরই কাছে রয়েছে ধর্মগ্রন্থের ভিত্তি।
وَإِن مَّا نُرِیَنَّكَ بَعۡضَ ٱلَّذِی نَعِدُهُمۡ أَوۡ نَتَوَفَّیَنَّكَ فَإِنَّمَا عَلَیۡكَ ٱلۡبَلَـٰغُ وَعَلَیۡنَا ٱلۡحِسَابُ ﴿40﴾
আমি তাদের সাথে যে ওয়াদা করেছি, তার কোন একটি যদি আপনাকে দেখিয়ে দেই কিংবা আপনাকে উঠিয়ে নেই, তাতে কি আপনার দায়িত্ব তো পৌছে দেয়া এবং আমার দায়িত্ব হিসাব নেয়া।
আর তোমাকে যদি আমরা দেখাই ওদের যা ওয়াদা করেছি তা থেকে কিছুটা, অথবা তোমার মৃত্যু ঘটিয়ে দিই, -- সর্বাবস্থায়ই তোমার উপরে হচ্ছে পৌঁছে দেওয়া, আর আমাদের উপরে হচ্ছে হিসাব গ্রহণ।
أَوَلَمۡ یَرَوۡا۟ أَنَّا نَأۡتِی ٱلۡأَرۡضَ نَنقُصُهَا مِنۡ أَطۡرَافِهَاۚ وَٱللَّهُ یَحۡكُمُ لَا مُعَقِّبَ لِحُكۡمِهِۦۚ وَهُوَ سَرِیعُ ٱلۡحِسَابِ ﴿41﴾
তারা কি দেখে না যে, আমি তাদের দেশকে চতুর্দিক থেকে সমানে সঙ্কুচিত করে আসছি? আল্লাহ নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশকে পশ্চাতে নিক্ষেপকারী কেউ নেই। তিনি দ্রুত হিসাব গ্রহণ করেন।
ওরা কি দেখে না যে আমরা এই দেশটাকে নিয়ে চলেছি, একে সংকুচিত করছি তার চৌহদ্দি থেকে? আল্লাহ্ রায় দান করেন, তাঁর হুকুম প্রতিহত হবার নয়। আর তিনি হিসেব-নিকেশে তৎপর।
وَقَدۡ مَكَرَ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡ فَلِلَّهِ ٱلۡمَكۡرُ جَمِیعࣰاۖ یَعۡلَمُ مَا تَكۡسِبُ كُلُّ نَفۡسࣲۗ وَسَیَعۡلَمُ ٱلۡكُفَّـٰرُ لِمَنۡ عُقۡبَى ٱلدَّارِ ﴿42﴾
তাদের পূর্বে যারা ছিল, তারা চক্রান্ত করেছে। আর সকল চক্রান্ত তো আল্লাহর হাতেই আছে। তিনি জানেন প্রত্যেক ব্যক্তি যা কিছু করে। কাফেররা জেনে নেবে যে, পর জীবনের আবাসস্থল কাদের জন্য রয়েছে।
আর তাদের পূর্ববর্তীকালে যারা ছিল তারাও নিশ্চয়ইচক্রান্ত করেছিল, কিন্তু সমস্ত চক্রান্তই আল্লাহ্র। তিনি জানেন প্রত্যেক সত্ত্বা কী অর্জন করে। আর অবিশ্বাসীরা অচিরেই জানতে পারবে কার জন্য রয়েছে চরমোৎকর্ষ আবাস।
وَیَقُولُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لَسۡتَ مُرۡسَلࣰاۚ قُلۡ كَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِیدَۢا بَیۡنِی وَبَیۡنَكُمۡ وَمَنۡ عِندَهُۥ عِلۡمُ ٱلۡكِتَـٰبِ ﴿43﴾
কাফেররা বলেঃ আপনি প্রেরিত ব্যক্তি নন। বলে দিন, আমার ও তোমাদের মধ্যে প্রকৃষ্ট সাক্ষী হচ্ছেন আল্লাহ এবং ঐ ব্যক্তি, যার কাছে গ্রন্থের জ্ঞান আছে।
আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা বলে -- ''তুমি আল্লাহ্র রসূল নও।’’ বলো -- ''আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষীরূপে আল্লাহ্ই যথেষ্ট, আর সে যার কাছে রয়েছে ধর্মগ্রন্থের জ্ঞান।’’