Main pages

قَدۡ أَفۡلَحَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿1﴾

মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে,

জহুরুল হক

মুমিনরা অবশ্য সাফল্যলাভ করেই চলছে, --

ٱلَّذِینَ هُمۡ فِی صَلَاتِهِمۡ خَـٰشِعُونَ ﴿2﴾

যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র;

জহুরুল হক

যারা স্বয়ং তাদের নামাযে বিনয়-নম্র হয়,

وَٱلَّذِینَ هُمۡ عَنِ ٱللَّغۡوِ مُعۡرِضُونَ ﴿3﴾

যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত,

জহুরুল হক

আর যারা অসার ক্রিয়াকলাপ থেকে নিজেরাই সরে থাকে,

وَٱلَّذِینَ هُمۡ لِلزَّكَوٰةِ فَـٰعِلُونَ ﴿4﴾

যারা যাকাত দান করে থাকে

জহুরুল হক

আর যারা স্বয়ং যাকাতদানে করিতকর্মা,

وَٱلَّذِینَ هُمۡ لِفُرُوجِهِمۡ حَـٰفِظُونَ ﴿5﴾

এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে।

জহুরুল হক

আর যারা নিজেরাই তাদের আঙ্গিক কর্তব্যাবলী সম্পর্কে যত্নবান, --

إِلَّا عَلَىٰۤ أَزۡوَ ٰ⁠جِهِمۡ أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُهُمۡ فَإِنَّهُمۡ غَیۡرُ مَلُومِینَ ﴿6﴾

তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।

জহুরুল হক

তবে নিজেদের দম্পতি অথবা তাদের ডানহাতে যাদের ধরে রেখেছে তাদের ছাড়া, কেননা সেক্ষেত্রে তারা নিন্দনীয় নহে,

فَمَنِ ٱبۡتَغَىٰ وَرَاۤءَ ذَ ٰ⁠لِكَ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡعَادُونَ ﴿7﴾

অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমালংঘনকারী হবে।

জহুরুল হক

কিন্ত যে এর বাইরে যাওয়া কামনা করে তাহলে তারা নিজেরাই হবে সীমালংঘনকারী।

وَٱلَّذِینَ هُمۡ لِأَمَـٰنَـٰتِهِمۡ وَعَهۡدِهِمۡ رَ ٰ⁠عُونَ ﴿8﴾

এবং যারা আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুশিয়ার থাকে।

জহুরুল হক

আর যারা স্বয়ং তাদের আমানত সন্বন্ধে ও তাদের অংগীকার সন্বন্ধে সজাগ থাকে,

وَٱلَّذِینَ هُمۡ عَلَىٰ صَلَوَ ٰ⁠تِهِمۡ یُحَافِظُونَ ﴿9﴾

এবং যারা তাদের নামাযসমূহের খবর রাখে।

জহুরুল হক

আর যারা নিজেরা তাদের নামায সন্বন্ধে সদা-যত্নবান।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡوَ ٰ⁠رِثُونَ ﴿10﴾

তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে।

জহুরুল হক

তারা নিজেরাই হবে পরম সেভাগ্যের অধিকারী, --

ٱلَّذِینَ یَرِثُونَ ٱلۡفِرۡدَوۡسَ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿11﴾

তারা শীতল ছায়াময় উদ্যানের উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা তাতে চিরকাল থাকবে।

জহুরুল হক

যারা উত্তরাধিকার করবে বেহেশত, তাতে তারা থাকবে স্থায়ীভাবে।

وَلَقَدۡ خَلَقۡنَا ٱلۡإِنسَـٰنَ مِن سُلَـٰلَةࣲ مِّن طِینࣲ ﴿12﴾

আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।

জহুরুল হক

আর আমরা নিশ্চয়ই মানুষকে সৃষ্টি করেছি কাদার নির্যাস থেকে,

ثُمَّ جَعَلۡنَـٰهُ نُطۡفَةࣰ فِی قَرَارࣲ مَّكِینࣲ ﴿13﴾

অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি।

জহুরুল হক

তারপর আমরা তাকে বানাই শুক্রকীট এক নিরাপদ অবস্থান স্থলে,

ثُمَّ خَلَقۡنَا ٱلنُّطۡفَةَ عَلَقَةࣰ فَخَلَقۡنَا ٱلۡعَلَقَةَ مُضۡغَةࣰ فَخَلَقۡنَا ٱلۡمُضۡغَةَ عِظَـٰمࣰا فَكَسَوۡنَا ٱلۡعِظَـٰمَ لَحۡمࣰا ثُمَّ أَنشَأۡنَـٰهُ خَلۡقًا ءَاخَرَۚ فَتَبَارَكَ ٱللَّهُ أَحۡسَنُ ٱلۡخَـٰلِقِینَ ﴿14﴾

এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিন্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি। নিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়।

জহুরুল হক

তারপর আমরা শুক্রকীটটিকে বানাই একটি রক্তপিন্ড, তারপর রক্তপিন্ডকে আমরা বানাই একটি মাংসের তাল, তারপর মাংসের তালে আমরা সৃষ্টি করি হাড়গোড়, তারপর হাড়গোড়কে আমরা ঢেকে দিই মাংসপেশী দিয়ে, তারপরে আমরা তাকে পরিণত করি অন্য এক সৃষ্টিতে। সেইজন্য আল্লাহ্‌রই অপার মহিমা, কত শ্রেষ্ঠ এই স্রষ্টা!

ثُمَّ إِنَّكُم بَعۡدَ ذَ ٰ⁠لِكَ لَمَیِّتُونَ ﴿15﴾

এরপর তোমরা মৃত্যুবরণ করবে

জহুরুল হক

তারপর নিঃসন্দেহ তোমরা এর পরে তো মৃত্যু বরণ করবে।

ثُمَّ إِنَّكُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ تُبۡعَثُونَ ﴿16﴾

অতঃপর কেয়ামতের দিন তোমরা পুনরুত্থিত হবে।

জহুরুল হক

তারপর তোমাদের অবশ্যই কিয়ামতের দিনে পুনরুত্থিত করা হবে।

وَلَقَدۡ خَلَقۡنَا فَوۡقَكُمۡ سَبۡعَ طَرَاۤىِٕقَ وَمَا كُنَّا عَنِ ٱلۡخَلۡقِ غَـٰفِلِینَ ﴿17﴾

আমি তোমাদের উপর সুপ্তপথ সৃষ্টি করেছি এবং আমি সৃষ্টি সম্বন্ধে অনবধান নই।

জহুরুল হক

আর আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের উপরে সৃষ্টি করেছি সাতটি পথ, আর সৃষ্টি সন্বন্ধে আমরা কখনও উদাসীন নই।

وَأَنزَلۡنَا مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ مَاۤءَۢ بِقَدَرࣲ فَأَسۡكَنَّـٰهُ فِی ٱلۡأَرۡضِۖ وَإِنَّا عَلَىٰ ذَهَابِۭ بِهِۦ لَقَـٰدِرُونَ ﴿18﴾

আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মত অতঃপর আমি জমিনে সংরক্ষণ করি এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম।

জহুরুল হক

আর আমরা আকাশ থেকে বর্ষণ করি পানি একটি পরিমাপ মতো, তারপর আমরা তাকে মাটিতে সংরক্ষিত করি, আর নিঃসন্দেহ আমরা তা সরিয়ে নিতেও সক্ষম।

فَأَنشَأۡنَا لَكُم بِهِۦ جَنَّـٰتࣲ مِّن نَّخِیلࣲ وَأَعۡنَـٰبࣲ لَّكُمۡ فِیهَا فَوَ ٰ⁠كِهُ كَثِیرَةࣱ وَمِنۡهَا تَأۡكُلُونَ ﴿19﴾

অতঃপর আমি তা দ্বারা তোমাদের জন্যে খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান সৃষ্টি করেছি। তোমাদের জন্যে এতে প্রচুর ফল আছে এবং তোমরা তা থেকে আহার করে থাক।

জহুরুল হক

তারপর তার দ্বারা আমরা তোমাদের জন্য সৃষ্টি করি খেজুরের ও আঙুরের বাগানসমূহ। তোমাদের জন্য তাতে রয়েছে প্রচুর ফলফসল, আর তা থেকে তোমরা খাওয়া-দাওয়া করো।

وَشَجَرَةࣰ تَخۡرُجُ مِن طُورِ سَیۡنَاۤءَ تَنۢبُتُ بِٱلدُّهۡنِ وَصِبۡغࣲ لِّلۡـَٔاكِلِینَ ﴿20﴾

এবং ঐ বৃক্ষ সৃষ্টি করেছি, যা সিনাই পর্বতে জন্মায় এবং আহারকারীদের জন্যে তৈল ও ব্যঞ্জন উৎপন্ন করে।

জহুরুল হক

আর গাছ যা জন্মে সিনাই পাহাড়ে, তা উৎপাদন করে তেল ও জেলি আহারকারীদের জন্য।

وَإِنَّ لَكُمۡ فِی ٱلۡأَنۡعَـٰمِ لَعِبۡرَةࣰۖ نُّسۡقِیكُم مِّمَّا فِی بُطُونِهَا وَلَكُمۡ فِیهَا مَنَـٰفِعُ كَثِیرَةࣱ وَمِنۡهَا تَأۡكُلُونَ ﴿21﴾

এবং তোমাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তু সমূহের মধ্যে চিন্তা করার বিষয় রয়েছে। আমি তোমাদেরকে তাদের উদরস্থিত বস্তু থেকে পান করাই এবং তোমাদের জন্যে তাদের মধ্যে প্রচুর উপকারিতা আছে। তোমরা তাদের কতককে ভক্ষণ কর।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ গবাদি-পশুতে তোমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় বিষয়। আমরা তোমাদের পান করতে দিই তাদের পেটের মধ্যে যা আছে তা থেকে, আর তাদের মধ্যে তোমাদের জন্য আছে প্রচুর উপকারিতা, আর তাদের থেকে তোমরা খাও,

وَعَلَیۡهَا وَعَلَى ٱلۡفُلۡكِ تُحۡمَلُونَ ﴿22﴾

তাদের পিঠে ও জলযানে তোমরা আরোহণ করে চলাফেরা করে থাক।

জহুরুল হক

আর তাদের উপরে এবং জাহাজে তোমাদের বহন করা হয়।

وَلَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوۡمِهِۦ فَقَالَ یَـٰقَوۡمِ ٱعۡبُدُوا۟ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنۡ إِلَـٰهٍ غَیۡرُهُۥۤۚ أَفَلَا تَتَّقُونَ ﴿23﴾

আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। সে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন মাবুদ নেই। তোমরা কি ভয় কর না।

জহুরুল হক

আর আমরা অবশ্যই নূহকে তাঁর স্বজাতিক কাছে পাঠিয়েছিলাম, তখন তিনি বলেছিলেন, ''হে আমার স্বজাতি! তোমরা আল্লাহ্‌র উপাসনা করো, তিনি ছাড়া তোমাদের জন্য অন্য কোন উপাস্য নেই। তোমরা কি তবুও ভক্তি-শ্রদ্ধা করবে না?’’

فَقَالَ ٱلۡمَلَؤُا۟ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِن قَوۡمِهِۦ مَا هَـٰذَاۤ إِلَّا بَشَرࣱ مِّثۡلُكُمۡ یُرِیدُ أَن یَتَفَضَّلَ عَلَیۡكُمۡ وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ لَأَنزَلَ مَلَـٰۤىِٕكَةࣰ مَّا سَمِعۡنَا بِهَـٰذَا فِیۤ ءَابَاۤىِٕنَا ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿24﴾

তখন তার সম্প্রদায়ের কাফের-প্রধানরা বলেছিলঃ এ তো তোমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নয়। সে তোমাদের উপর নেতৃত্ব করতে চায়। আল্লাহ ইচ্ছা করলে ফেরেশতাই নাযিল করতেন। আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে এরূপ কথা শুনিনি।

জহুরুল হক

তখন তাঁর স্বজাতির মধ্যে যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল তাদের প্রধানরা বললে -- ''সে তো তোমাদের মতো একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু নয়, সে তোমাদের উপরে প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। বস্তুতঃ আল্লাহ্ যদি চাইতেন তবে তিনি নিশ্চয়ই ফিরিশ্‌তাদের পাঠাতে পারতেন। আমরা তো পূর্ববর্তীকালের আমাদের পিতৃপুরুষদের মধ্যে এমনটা শুনি নি।

إِنۡ هُوَ إِلَّا رَجُلُۢ بِهِۦ جِنَّةࣱ فَتَرَبَّصُوا۟ بِهِۦ حَتَّىٰ حِینࣲ ﴿25﴾

সে তো এক উম্মাদ ব্যক্তি বৈ নয়। সুতরাং কিছুকাল তার ব্যাপারে অপেক্ষা কর।

জহুরুল হক

''সে তো একজন মানুষ মাত্র যাকে ভূতে ধরেছে, কাজেই কিছুকাল তাকে সহ্য ক’রে চল।’’

قَالَ رَبِّ ٱنصُرۡنِی بِمَا كَذَّبُونِ ﴿26﴾

নূহ বলেছিলঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে সাহায্য কর; কেননা, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমাকে সাহায্য করো তারা আমার প্রতি যা মিথ্যারোপ করছে সেজন্য।’’

فَأَوۡحَیۡنَاۤ إِلَیۡهِ أَنِ ٱصۡنَعِ ٱلۡفُلۡكَ بِأَعۡیُنِنَا وَوَحۡیِنَا فَإِذَا جَاۤءَ أَمۡرُنَا وَفَارَ ٱلتَّنُّورُ فَٱسۡلُكۡ فِیهَا مِن كُلࣲّ زَوۡجَیۡنِ ٱثۡنَیۡنِ وَأَهۡلَكَ إِلَّا مَن سَبَقَ عَلَیۡهِ ٱلۡقَوۡلُ مِنۡهُمۡۖ وَلَا تُخَـٰطِبۡنِی فِی ٱلَّذِینَ ظَلَمُوۤا۟ إِنَّهُم مُّغۡرَقُونَ ﴿27﴾

অতঃপর আমি তার কাছে আদেশ প্রেরণ করলাম যে, তুমি আমার দৃষ্টির সামনে এবং আমার নির্দেশে নৌকা তৈরী কর। এরপর যখন আমার আদেশ আসে এবং চুল্লী প্লাবিত হয়, তখন নৌকায় তুলে নাও, প্রত্যেক জীবের এক এক জোড়া এবং তোমার পরিবারবর্গকে, তাদের মধ্যে যাদের বিপক্ষে পূর্বে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাদের ছাড়া। এবং তুমি জালেমদের সম্পর্কে আমাকে কিছু বলো না। নিশ্চয় তারা নিমজ্জত হবে।

জহুরুল হক

কাজেকাজেই আমরা তাঁর কাছে প্রত্যাদেশ পাঠালাম এই বলে -- ''আমাদের চোখের সামনে এবং আমাদের প্রত্যাদেশ মোতাবেক জাহাজটি তৈরি কর, তারপর আমাদের নির্দেশ যখন আসবে ও পানি উথলে উঠবে তখন তাতে উঠিয়ে নাও হরেক রকমের জোড়ায়- জোড়ায়, দুটি ক’রে, আর তোমার পরিবার পরিজনকে, -- তাদের মধ্যের যার বিরুদ্ধে বক্তব্য ঘোষিত হয়েছে তাকে ব্যতীত আর যারা অন্যায়াচরণ করেছে তাদের সন্বন্ধে তুমি আমার কাছে বলাবলি করো না। তারা তো নিমজ্জিত হবেই।

فَإِذَا ٱسۡتَوَیۡتَ أَنتَ وَمَن مَّعَكَ عَلَى ٱلۡفُلۡكِ فَقُلِ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ ٱلَّذِی نَجَّىٰنَا مِنَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿28﴾

যখন তুমি ও তোমার সঙ্গীরা নৌকায় আরোহণ করবে, তখন বলঃ আল্লাহর শোকর, যিনি আমাদেরকে জালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে উদ্ধার করেছেন।

জহুরুল হক

''আর যখন তুমি জাহাজে আরোহণ করবে, তুমি ও যারা তোমার সাথে রয়েছে তারা তখন বলো -- 'সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র যিনি আমাদের উদ্ধার করেছেন অত্যাচারী জাতির থেকে।’

وَقُل رَّبِّ أَنزِلۡنِی مُنزَلࣰا مُّبَارَكࣰا وَأَنتَ خَیۡرُ ٱلۡمُنزِلِینَ ﴿29﴾

আরও বলঃ পালনকর্তা, আমাকে কল্যাণকর ভাবে নামিয়ে দাও, তুমি শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী।

জহুরুল হক

''আর বলো -- 'আমার প্রভু! আমাকে পুণ্যময় অবতরণ করতে দাও, কেননা অবতরণকারকদের মধ্যে তুমিই সর্বশ্রেষ্ঠ’।’’

إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَـٰتࣲ وَإِن كُنَّا لَمُبۡتَلِینَ ﴿30﴾

এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে এবং আমি পরীক্ষাকারী।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এতে তো নিদর্শন রয়েছে, আর আমরা তো শৃঙ্খলাবদ্ধ করছিলাম।

ثُمَّ أَنشَأۡنَا مِنۢ بَعۡدِهِمۡ قَرۡنًا ءَاخَرِینَ ﴿31﴾

অতঃপর অন্য এক সম্প্রদায় আমি তার স্থলাভিষিক্ত করেছিলাম।

জহুরুল হক

তারপর আমরা তাদের পরে পত্তন করেছিলাম অন্য এক বংশকে।

فَأَرۡسَلۡنَا فِیهِمۡ رَسُولࣰا مِّنۡهُمۡ أَنِ ٱعۡبُدُوا۟ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنۡ إِلَـٰهٍ غَیۡرُهُۥۤۚ أَفَلَا تَتَّقُونَ ﴿32﴾

এবং তাদেরই একজনকে তাদের মধ্যে রসূলরূপে প্রেরণ করেছিলাম এই বলে যে, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন মাবুদ নেই। তবুও কি তোমরা ভয় করবে না?

জহুরুল হক

তখন আমরা তাদের মধ্যে পাঠিয়েছিলাম তাদেরই মধ্যে থেকে একজন রসূল এই বলে -- ''আল্লাহ্‌র উপাসনা করো, তিনি ব্যতীত তোমাদের জন্য অন্য উপাস্য নেই। তোমরা কি তবে ভক্তি-শ্রদ্ধা করবে না?’’

وَقَالَ ٱلۡمَلَأُ مِن قَوۡمِهِ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَكَذَّبُوا۟ بِلِقَاۤءِ ٱلۡـَٔاخِرَةِ وَأَتۡرَفۡنَـٰهُمۡ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا مَا هَـٰذَاۤ إِلَّا بَشَرࣱ مِّثۡلُكُمۡ یَأۡكُلُ مِمَّا تَأۡكُلُونَ مِنۡهُ وَیَشۡرَبُ مِمَّا تَشۡرَبُونَ ﴿33﴾

তাঁর সম্প্রদায়ের প্রধানরা যারা কাফের ছিল, পরকালের সাক্ষাতকে মিথ্যা বলত এবং যাদেরকে আমি পার্থিব জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দিয়েছিলাম, তারা বললঃ এতো আমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নয়। তোমরা যা খাও, সেও তাই খায় এবং তোমরা যা পান কর, সেও তাই পান করে।

জহুরুল হক

আর তাঁর স্বজাতির মধ্যের প্রধানরা যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল ও পরকালের মুলাকাতকে অস্বীকার করেছিল এবং এই দুনিয়ার জীবনে আমরা যাদের ভোগ-সার দিয়েছিলাম তারা বললে -- ''এ তো তোমাদের মতো একজন মানুষ ছাড়া আর কিছুই নয়, তোমরা যা থেকে খাও সেও তা থেকেই খায় এবং তোমরা যা পান কর সেও তা থেকেই পান করে।

وَلَىِٕنۡ أَطَعۡتُم بَشَرࣰا مِّثۡلَكُمۡ إِنَّكُمۡ إِذࣰا لَّخَـٰسِرُونَ ﴿34﴾

যদি তোমরা তোমাদের মতই একজন মানুষের আনুগত্য কর, তবে তোমরা নিশ্চিতরূপেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

জহুরুল হক

''আর তোমরা যদি তোমাদের ন্যায় একজন মানুষেরই আজ্ঞা-পালন কর তাহলে তো তোমরা সেই মুহূর্তেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

أَیَعِدُكُمۡ أَنَّكُمۡ إِذَا مِتُّمۡ وَكُنتُمۡ تُرَابࣰا وَعِظَـٰمًا أَنَّكُم مُّخۡرَجُونَ ﴿35﴾

সে কি তোমাদেরকে এই ওয়াদা দেয় যে, তোমরা মারা গেলে এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হলে তোমাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে?

জহুরুল হক

''সে কি তোমাদের প্রতি‌শ্রুতি দেয় যে যখন তোমরা মারা যাবে এবং তোমরা ধুলোমাটি ও হাড়পাঁজরাতে পরিণত হবে তখন তোমরা বহির্গত হবে?

۞ هَیۡهَاتَ هَیۡهَاتَ لِمَا تُوعَدُونَ ﴿36﴾

তোমাদেরকে যে ওয়াদা দেয়া হচ্ছে, তা কোথায় হতে পারে?

জহুরুল হক

''বহুদূর! তোমাদের যা ওয়াদা করা হচ্ছে তা বহুদূর।

إِنۡ هِیَ إِلَّا حَیَاتُنَا ٱلدُّنۡیَا نَمُوتُ وَنَحۡیَا وَمَا نَحۡنُ بِمَبۡعُوثِینَ ﴿37﴾

আমাদের পার্থিবজীবনই একমাত্র জীবন। আমরা মরি ও বাঁচি এখানেই এবং আমারা পুনরুত্থিত হবো না।

জহুরুল হক

''আমাদের এই দুনিয়ার জীবন ছাড়া কিছুই তো নেই, আমরা মরব আর আমরা বেঁচে আছি, আর আমরা তো পুনরুত্থিত হব না।

إِنۡ هُوَ إِلَّا رَجُلٌ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبࣰا وَمَا نَحۡنُ لَهُۥ بِمُؤۡمِنِینَ ﴿38﴾

সে তো এমন ব্যক্তি বৈ নয়, যে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে এবং আমরা তাকে বিশ্বাস করি না।

জহুরুল হক

''সে একজন মানুষ বৈ তো নয় যে আল্লাহ্ সন্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে, আর আমরা তো তার প্রতি আস্থাবান হতে পারছি না।’’

قَالَ رَبِّ ٱنصُرۡنِی بِمَا كَذَّبُونِ ﴿39﴾

তিনি বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে সাহায্য কর, কারণ তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমাকে তুমি সাহায্য করো যেহেতু তারা আমার প্রতি মিথ্যারোপ করছে।’’

قَالَ عَمَّا قَلِیلࣲ لَّیُصۡبِحُنَّ نَـٰدِمِینَ ﴿40﴾

আল্লাহ বললেনঃ কিছু দিনের মধ্যে তারা সকাল বেলা অনুতপ্ত হবে।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''অল্পক্ষণের মধ্যেই তারা আলবৎ অনুতাপ করতে থাকবে।’’

فَأَخَذَتۡهُمُ ٱلصَّیۡحَةُ بِٱلۡحَقِّ فَجَعَلۡنَـٰهُمۡ غُثَاۤءࣰۚ فَبُعۡدࣰا لِّلۡقَوۡمِ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿41﴾

অতঃপর সত্য সত্যই এক ভয়ংকর শব্দ তাদেরকে হতচকিত করল এবং আমি তাদেরকে বাত্যা-তাড়িত আবর্জনা সদৃশ করে দিলাম। অতঃপর ধ্বংস হোক পাপী সম্প্রদায়।

জহুরুল হক

কাজেই এক মহাগর্জন তাদের পাকড়াও করল সঙ্গতভাবেই, আর আমরা তাদের বানিয়ে দিলাম আবর্জনা, তাই দূর হ’ল অত্যাচারী জাতি!

ثُمَّ أَنشَأۡنَا مِنۢ بَعۡدِهِمۡ قُرُونًا ءَاخَرِینَ ﴿42﴾

এরপর তাদের পরে আমি বহু সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছি।

জহুরুল হক

তারপর আমরা তাদের পরে পত্তন করলাম অন্যান্য বংশদের।

مَا تَسۡبِقُ مِنۡ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا یَسۡتَـٔۡخِرُونَ ﴿43﴾

কোন সম্প্রদায় তার নির্দিষ্ট কালের অগ্রে যেতে পারে না। এবং পশ্চাতেও থকাতে পারে না।

জহুরুল হক

কোনো সম্প্রদায়ই তার নির্ধারিত কাল ত্বরান্বিত করতে পারবে না, আর তা বিলন্বিত করতেও পারবে না।

ثُمَّ أَرۡسَلۡنَا رُسُلَنَا تَتۡرَاۖ كُلَّ مَا جَاۤءَ أُمَّةࣰ رَّسُولُهَا كَذَّبُوهُۖ فَأَتۡبَعۡنَا بَعۡضَهُم بَعۡضࣰا وَجَعَلۡنَـٰهُمۡ أَحَادِیثَۚ فَبُعۡدࣰا لِّقَوۡمࣲ لَّا یُؤۡمِنُونَ ﴿44﴾

এরপর আমি একাদিক্রমে আমার রসূল প্রেরণ করেছি। যখনই কোন উম্মতের কাছে তাঁর রসূল আগমন করেছেন, তখনই তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলেছে। অতঃপর আমি তাদের একের পর এক ধ্বংস করেছি এবং তাদেরকে কাহিনীর বিষয়ে পরিণত করেছি। সুতরাং ধ্বংস হোক অবিশ্বাসীরা।

জহুরুল হক

তারপর আমরা একের পর এক আমাদের রসূলগণকে পাঠিয়েছিলাম। যখনই কোনো সম্প্রদায়ের কাছে তার রসূল এসেছিলেন, তাঁকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল, তাই আমরা তাদের একদলকে অন্য দলের পশ্চাদ্ধাবন করিয়েছিলাম, আর তাদের বানিয়েছিলাম কাহিনী। সুতরাং দূর হ’ তেমন জাতি যারা ঈমান আনে না!

ثُمَّ أَرۡسَلۡنَا مُوسَىٰ وَأَخَاهُ هَـٰرُونَ بِـَٔایَـٰتِنَا وَسُلۡطَـٰنࣲ مُّبِینٍ ﴿45﴾

অতঃপর আমি মূসা ও হারুণকে প্রেরণ করেছিলাম আমার নিদর্শনাবলী ও সুস্পষ্ট সনদসহ,

জহুরুল হক

তারপর আমরা পাঠালাম মূসা ও তাঁর ভাই হারূনকে আমাদের নিদর্শনাবলী ও সুস্পষ্ট বিধান দিয়ে, --

إِلَىٰ فِرۡعَوۡنَ وَمَلَإِی۟هِۦ فَٱسۡتَكۡبَرُوا۟ وَكَانُوا۟ قَوۡمًا عَالِینَ ﴿46﴾

ফেরআউন ও তার অমাত্যদের কাছে। অতঃপর তারা অহংকার করল এবং তারা উদ্ধত সম্প্রদায় ছিল।

জহুরুল হক

ফিরআউন ও তার পরিষদবর্গের কাছে, কিন্ত তারা অহংকার দেখিয়েছিল এবং তারা ছিল এক উদ্ধত জাতি।

فَقَالُوۤا۟ أَنُؤۡمِنُ لِبَشَرَیۡنِ مِثۡلِنَا وَقَوۡمُهُمَا لَنَا عَـٰبِدُونَ ﴿47﴾

তারা বললঃ আমরা কি আমাদের মতই এ দুই ব্যক্তিতে বিশ্বাস স্থাপন করব; অথচ তাদের সম্প্রদায় আমাদের দাস?

জহুরুল হক

কাজেই তারা বললে -- ''আমরা কি বিশ্বাস করব আমাদের ন্যায় দুজন মানুষকে, অথচ তাদের স্বজাতি আমাদেরই সেবারত?’’

فَكَذَّبُوهُمَا فَكَانُوا۟ مِنَ ٱلۡمُهۡلَكِینَ ﴿48﴾

অতঃপর তারা উভয়কে মিথ্যাবাদী বলল। ফলে তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হল।

জহুরুল হক

সেজন্য তারা এদের দুজনকে প্রত্যাখ্যান করল, তার ফলে তারা ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হ’ল।

وَلَقَدۡ ءَاتَیۡنَا مُوسَى ٱلۡكِتَـٰبَ لَعَلَّهُمۡ یَهۡتَدُونَ ﴿49﴾

আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম যাতে তারা সৎপথ পায়।

জহুরুল হক

আর আমরা অবশ্যই মূসাকে গ্রন্থ দিয়েছিলাম যেন তারা সৎপথ অবলন্বন করতে পারে।

وَجَعَلۡنَا ٱبۡنَ مَرۡیَمَ وَأُمَّهُۥۤ ءَایَةࣰ وَءَاوَیۡنَـٰهُمَاۤ إِلَىٰ رَبۡوَةࣲ ذَاتِ قَرَارࣲ وَمَعِینࣲ ﴿50﴾

এবং আমি মরিয়ম তনয় ও তাঁর মাতাকে এক নিদর্শন দান করেছিলাম। এবং তাদেরকে এক অবস্থানযোগ্য স্বচ্ছ পানি বিশিষ্ট টিলায় আশ্রয় দিয়েছিলাম।

জহুরুল হক

আর আমরা মরিয়ম-পুত্র ও তাঁর মাতাকে করেছিলাম এক নিদর্শন, এবং তাঁদের উভয়কে আমরা আশ্রয় দিয়েছিলাম তৃণাচ্ছাদিত ও ঝরনা-রাজিতে ভরা এক পার্বত্য-উপত্যকায়।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلرُّسُلُ كُلُوا۟ مِنَ ٱلطَّیِّبَـٰتِ وَٱعۡمَلُوا۟ صَـٰلِحًاۖ إِنِّی بِمَا تَعۡمَلُونَ عَلِیمࣱ ﴿51﴾

হে রসূলগণ, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎকাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত।

জহুরুল হক

হে প্রিয় রসূলগণ! পবিত্র বস্তু থেকে তোমরা খাওয়া-দাওয়া করো আর ভাল কাজ করো। তোমরা যা করছ সে সন্বন্ধে আমি নিশ্চয়ই সর্বজ্ঞাতা।

وَإِنَّ هَـٰذِهِۦۤ أُمَّتُكُمۡ أُمَّةࣰ وَ ٰ⁠حِدَةࣰ وَأَنَا۠ رَبُّكُمۡ فَٱتَّقُونِ ﴿52﴾

আপনাদের এই উম্মত সব তো একই ধর্মের অনুসারী এবং আমি আপনাদের পালনকর্তা; অতএব আমাকে ভয় করুন।

জহুরুল হক

আর -- ''নিঃসন্দেহ তোমাদের এই সম্প্রদায় একই সম্প্রদায়, আর আমিই তোমাদের প্রভু, অতএব আমাকেই তোম রা ভক্তিশ্রদ্ধা করো।’’

فَتَقَطَّعُوۤا۟ أَمۡرَهُم بَیۡنَهُمۡ زُبُرࣰاۖ كُلُّ حِزۡبِۭ بِمَا لَدَیۡهِمۡ فَرِحُونَ ﴿53﴾

অতঃপর মানুষ তাদের বিষয়কে বহুধা বিভক্ত করে দিয়েছে। প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে আনন্দিত হচ্ছে।

জহুরুল হক

কিন্ত তারা নিজেদের মধ্যে তাদের অনুশাসন টুকরো-টুকরো ক’রে কেটে ফেলল। প্রত্যেক দলই তাদের কাছে যেসব রয়েছে তাতেই সন্তষ্ট।

فَذَرۡهُمۡ فِی غَمۡرَتِهِمۡ حَتَّىٰ حِینٍ ﴿54﴾

অতএব তাদের কিছু কালের জন্যে তাদের অজ্ঞানতায় নিমজ্জত থাকতে দিন।

জহুরুল হক

সেজন্য তাদের থাকতে দাও তাদের বিভ্রান্তিতে কিছুকালের জন্য।

أَیَحۡسَبُونَ أَنَّمَا نُمِدُّهُم بِهِۦ مِن مَّالࣲ وَبَنِینَ ﴿55﴾

তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে যাচ্ছি।

জহুরুল হক

তারা কি ভাবে যে যেহেতু আমরা তাদের মাল-আসবাব ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে যাচ্ছি, --

نُسَارِعُ لَهُمۡ فِی ٱلۡخَیۡرَ ٰ⁠تِۚ بَل لَّا یَشۡعُرُونَ ﴿56﴾

তাতে করে তাদেরকে দ্রুত মঙ্গলের দিকে নিয়ে যাচ্ছি? বরং তারা বোঝে না।

জহুরুল হক

আমরা তাদের জন্য মঙ্গলময় বস্তু ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝতে পারছে না।

إِنَّ ٱلَّذِینَ هُم مِّنۡ خَشۡیَةِ رَبِّهِم مُّشۡفِقُونَ ﴿57﴾

নিশ্চয় যারা তাদের পালনকর্তার ভয়ে সন্ত্রস্ত,

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ যারা খোদ তাদের প্রভুর ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত,

وَٱلَّذِینَ هُم بِـَٔایَـٰتِ رَبِّهِمۡ یُؤۡمِنُونَ ﴿58﴾

যারা তাদের পালনকর্তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে,

জহুরুল হক

আর যারা স্বয়ং তাদের প্রভুর নির্দেশাবলীতে বিশ্বাস স্থাপন করে,

وَٱلَّذِینَ هُم بِرَبِّهِمۡ لَا یُشۡرِكُونَ ﴿59﴾

যারা তাদের পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করে না

জহুরুল হক

আর যারা তাদের প্রভুর সঙ্গে শরিক করে না,

وَٱلَّذِینَ یُؤۡتُونَ مَاۤ ءَاتَوا۟ وَّقُلُوبُهُمۡ وَجِلَةٌ أَنَّهُمۡ إِلَىٰ رَبِّهِمۡ رَ ٰ⁠جِعُونَ ﴿60﴾

এবং যারা যা দান করবার, তা ভীত, কম্পিত হৃদয়ে এ কারণে দান করে যে, তারা তাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করবে,

জহুরুল হক

আর যারা প্রদান করে যা দেবার আছে, আর তাদের হৃদয় ভীত-কম্পিত যেহেতু তারা তাদের প্রভুর কাছে প্রত্যাবর্তনকারী, --

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ یُسَـٰرِعُونَ فِی ٱلۡخَیۡرَ ٰ⁠تِ وَهُمۡ لَهَا سَـٰبِقُونَ ﴿61﴾

তারাই কল্যাণ দ্রুত অর্জন করে এবং তারা তাতে অগ্রগামী।

জহুরুল হক

এরাই মঙ্গল সাধনে প্রতিযোগিতা করে, আর এরাই তো এতে অগ্রগামী হয়।

وَلَا نُكَلِّفُ نَفۡسًا إِلَّا وُسۡعَهَاۚ وَلَدَیۡنَا كِتَـٰبࣱ یَنطِقُ بِٱلۡحَقِّ وَهُمۡ لَا یُظۡلَمُونَ ﴿62﴾

আমি কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পন করি না। আমার এক কিতাব আছে, যা সত্য ব্যক্ত করে এবং তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।

জহুরুল হক

আর আমরা কোনো সত্ত্বাকে তার ক্ষমতার অতিরিক্ত কষ্ট দিই না, আর আমাদের কাছে আছে একটি গ্রন্থ যা হক কথা বলে দেয়, আর তাদের অন্যায় করা হয় না।

بَلۡ قُلُوبُهُمۡ فِی غَمۡرَةࣲ مِّنۡ هَـٰذَا وَلَهُمۡ أَعۡمَـٰلࣱ مِّن دُونِ ذَ ٰ⁠لِكَ هُمۡ لَهَا عَـٰمِلُونَ ﴿63﴾

না, তাদের অন্তর এ বিষয়ে অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন, এ ছাড়া তাদের আরও কাজ রয়েছে, যা তারা করছে।

জহুরুল হক

কিন্ত তাদের হৃদয় এ ব্যাপারে তালগোল পাকানো অবস্থায় রয়েছে, আর এ ছাড়াও তাদের জন্য রয়েছে অন্যান্য কীর্তিকলাপ যে- সবে তারা করিতকর্মা।

حَتَّىٰۤ إِذَاۤ أَخَذۡنَا مُتۡرَفِیهِم بِٱلۡعَذَابِ إِذَا هُمۡ یَجۡـَٔرُونَ ﴿64﴾

এমনকি, যখন আমি তাদের ঐশ্বর্যশালী লোকদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করব, তখনই তারা চীৎকার জুড়ে দেবে।

জহুরুল হক

যে পর্যন্ত না আমরা তাদের মধ্যের সমৃদ্ধিশালী লোকদের শাস্তি দিয়ে পাকড়াও করি তখনই তারা আর্তনাদ ক’রে ওঠে।

لَا تَجۡـَٔرُوا۟ ٱلۡیَوۡمَۖ إِنَّكُم مِّنَّا لَا تُنصَرُونَ ﴿65﴾

অদ্য চীৎকার করো না। তোমরা আমার কাছ থেকে নিস্কৃতি পাবে না।

জহুরুল হক

''আজ আর্তনাদ করো না, নিঃসন্দেহ তোমাদের ক্ষেত্রে -- আমাদের থেকে তোমাদের সাহায্য করা হবে না।

قَدۡ كَانَتۡ ءَایَـٰتِی تُتۡلَىٰ عَلَیۡكُمۡ فَكُنتُمۡ عَلَىٰۤ أَعۡقَـٰبِكُمۡ تَنكِصُونَ ﴿66﴾

তোমাদেরকে আমার আয়াতসমূহ শোনানো হত, তখন তোমরা উল্টো পায়ে সরে পড়তে।

জহুরুল হক

তোমাদের কাছে আমার বাণীসমূহ অবশ্যই পাঠ করা হত, কিন্ত তোমরা তোমাদের গোড়ালির উপরে মোড় ফিরে চলে যেতে --

مُسۡتَكۡبِرِینَ بِهِۦ سَـٰمِرࣰا تَهۡجُرُونَ ﴿67﴾

অহংকার করে এ বিষয়ে অর্থহীন গল্প-গুজব করে যেতে।

জহুরুল হক

''অহংকারের সাথে, এ ব্যাপারে সারারাত আবোল-তাবোল গল্পগুজব করতে করতে।’’

أَفَلَمۡ یَدَّبَّرُوا۟ ٱلۡقَوۡلَ أَمۡ جَاۤءَهُم مَّا لَمۡ یَأۡتِ ءَابَاۤءَهُمُ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿68﴾

অতএব তারা কি এই কালাম সম্পꦣ2503;ক চিন্তা-ভাবনা করে না? না তাদের কাছে এমন কিছু এসেছে, যা তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে আসেনি?

জহুরুল হক

তবে কি তারা চিন্তা করে না এ বাণী সন্বন্ধে? অথবা তাদের কাছে কি এমন কিছু এসেছে যা তাদের পূর্ববর্তী বাপদাদাদের কাছে আসে নি?

أَمۡ لَمۡ یَعۡرِفُوا۟ رَسُولَهُمۡ فَهُمۡ لَهُۥ مُنكِرُونَ ﴿69﴾

না তারা তাদের রসূলকে চেনে না, ফলে তারা তাঁকে অস্বীকার করে?

জহুরুল হক

অথবা তারা কি তাদের রসূলকে চিনতে পারছে না যেজন্য তারা তাঁর প্রতি বিমুখ রয়েছে?

أَمۡ یَقُولُونَ بِهِۦ جِنَّةُۢۚ بَلۡ جَاۤءَهُم بِٱلۡحَقِّ وَأَكۡثَرُهُمۡ لِلۡحَقِّ كَـٰرِهُونَ ﴿70﴾

না তারা বলে যে, তিনি পাগল ? বরং তিনি তাদের কাছে সত্য নিয়ে আগমন করেছেন এবং তাদের অধিকাংশ সত্যকে অপছন্দ করে।

জহুরুল হক

অথবা তারা কি বলে যে তাঁকে জিন-ভূতে ধরেছে? বস্তুতঃ তিনি তাদের কাছে সত্য নিয়ে এসেছেন, কিন্ত তাদের অধিকাংশই সত্য-সন্বন্ধে উদাসীন।

وَلَوِ ٱتَّبَعَ ٱلۡحَقُّ أَهۡوَاۤءَهُمۡ لَفَسَدَتِ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تُ وَٱلۡأَرۡضُ وَمَن فِیهِنَّۚ بَلۡ أَتَیۡنَـٰهُم بِذِكۡرِهِمۡ فَهُمۡ عَن ذِكۡرِهِم مُّعۡرِضُونَ ﴿71﴾

সত্য যদি তাদের কাছে কামনা-বাসনার অনুসারী হত, তবে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং এগুলোর মধ্যবর্তꦣ2496; সবকিছুই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত। বরং আমি তাদেরকে দান করেছি উপদেশ, কিন্তু তারা তাদের উপদেশ অনুধাবন করে না।

জহুরুল হক

আর যদি সত্য তাদের কামনার অনুসরণ করত তবে মহাকাশ-মন্ডলী ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা আছে সবই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত। পক্ষান্তরে আমরা তাদের কাছে তাদের স্মরণীয় বার্তা নিয়ে এসেছি, কিন্ত তারা তাদের স্মারক-গ্রন্থ থেকে বিমুখ থাকে।

أَمۡ تَسۡـَٔلُهُمۡ خَرۡجࣰا فَخَرَاجُ رَبِّكَ خَیۡرࣱۖ وَهُوَ خَیۡرُ ٱلرَّ ٰ⁠زِقِینَ ﴿72﴾

না আপনি তাদের কাছে কোন প্রতিদান চান? আপনার পালনকর্তার প্রতিদান উত্তম এবং তিনিই রিযিকদাতা।

জহুরুল হক

অথবা তুমি কি তাদের কাছ থেকে কোনো প্রতিদান চাইছ। বস্তুতঃ তোমার প্রভুর প্রতিদানই সর্বোত্তম, আর রিযেক-দাতাদের মধ্যে তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ।

وَإِنَّكَ لَتَدۡعُوهُمۡ إِلَىٰ صِرَ ٰ⁠طࣲ مُّسۡتَقِیمࣲ ﴿73﴾

আপনি তো তাদেরকে সোজা পথে দাওয়াত দিচ্ছেন;

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তুমি তো তাদের আহ্বান করছ সহজ-সঠিক পথের দিকে।

وَإِنَّ ٱلَّذِینَ لَا یُؤۡمِنُونَ بِٱلۡـَٔاخِرَةِ عَنِ ٱلصِّرَ ٰ⁠طِ لَنَـٰكِبُونَ ﴿74﴾

আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তারা সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে।

জহুরুল হক

আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে না তারা নিঃসন্দেহ পথ থেকে তো বিপথগামী।

۞ وَلَوۡ رَحِمۡنَـٰهُمۡ وَكَشَفۡنَا مَا بِهِم مِّن ضُرࣲّ لَّلَجُّوا۟ فِی طُغۡیَـٰنِهِمۡ یَعۡمَهُونَ ﴿75﴾

যদি আমি তাদের প্রতি দয়া করি এবং তাদের কষ্ট দূর করে দেই, তবুও তারা তাদের অবাধ্যতায় দিশেহারা হয়ে লেগে থাকবে।

জহুরুল হক

আর আমরা যদি তাদের প্রতি দয়া করি ও দুঃখ-দৈন্যের যা কিছু তাদের রয়েছে তা দূর করে দিই তথাপি তারা তাদের বিভ্রান্তিতে লেগে থাকবে অন্ধ-চক্কর দিতে দিতে।

وَلَقَدۡ أَخَذۡنَـٰهُم بِٱلۡعَذَابِ فَمَا ٱسۡتَكَانُوا۟ لِرَبِّهِمۡ وَمَا یَتَضَرَّعُونَ ﴿76﴾

আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম, কিন্তু তারা তাদের পালনকর্তার সামনে নত হল না এবং কাকুতি-মিনুতিও করল না।

জহুরুল হক

আর আমরা ইতিপূর্বেই তাদের শাস্তিদ্বারা পাকড়াও করেছি, তথাপি তারা তাদের প্রভুর কাছে বিনত হ’ল না, আর তারা কাকুতি- মিনতিও করল না।

حَتَّىٰۤ إِذَا فَتَحۡنَا عَلَیۡهِم بَابࣰا ذَا عَذَابࣲ شَدِیدٍ إِذَا هُمۡ فِیهِ مُبۡلِسُونَ ﴿77﴾

অবশেষে যখন আমি তাদের জন্য কঠিন শাস্তির দ্বার খুলে দেব, তখন তাতে তাদের আশা ভঙ্গ হবে।

জহুরুল হক

শেষ পর্যন্ত যখন আমরা তাদের উপরে খুলে দিই কঠিন কঠিন শাস্তি থাকা দরজা তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ে।

وَهُوَ ٱلَّذِیۤ أَنشَأَ لَكُمُ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡأَبۡصَـٰرَ وَٱلۡأَفۡـِٔدَةَۚ قَلِیلࣰا مَّا تَشۡكُرُونَ ﴿78﴾

তিনি তোমাদের কান, চোখ ও অন্তঃকরণ সৃষ্টি করেছেন; তোমরা খুবই অল্প কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে থাক।

জহুরুল হক

আর তিনিই সেইজন যিনি তোমাদের জন্য কান ও চোখ ও অন্তঃকরণ বানিয়ে দিয়েছেন। কিন্ত তোমরা তো অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।

وَهُوَ ٱلَّذِی ذَرَأَكُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَإِلَیۡهِ تُحۡشَرُونَ ﴿79﴾

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে রেখেছেন এবং তারই দিকে তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।

জহুরুল হক

আর তিনিই সেইজন যিনি পৃথিবীতে তোমাদের বহুগুণিত করেছেন, আর তাঁরই কাছে তোমাদের একত্রিত করা হবে।

وَهُوَ ٱلَّذِی یُحۡیِۦ وَیُمِیتُ وَلَهُ ٱخۡتِلَـٰفُ ٱلَّیۡلِ وَٱلنَّهَارِۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ ﴿80﴾

তিনিই প্রাণ দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান এবং দিবা-রাত্রির বিবর্তন তাঁরই কাজ, তবু ও কি তোমরা বুঝবে না?

জহুরুল হক

আর তিনিই সেইজন যিনি জীবনদান করেন ও মৃত্যু ঘটান, আর রাত ও দিনের বিবর্তন তাঁরই অধীনে রয়েছে। তবুও কি তোমরা বুঝবে না?

بَلۡ قَالُوا۟ مِثۡلَ مَا قَالَ ٱلۡأَوَّلُونَ ﴿81﴾

বরং তারা বলে যেমন তাদের পূর্ববর্তীরা বলত।

জহুরুল হক

এতদসত্ত্বে পূর্ববর্তীরা যেমন বলত তেমনি এরাও বলাবলি করে।

قَالُوۤا۟ أَءِذَا مِتۡنَا وَكُنَّا تُرَابࣰا وَعِظَـٰمًا أَءِنَّا لَمَبۡعُوثُونَ ﴿82﴾

তারা বলেঃ যখন আমরা মরে যাব এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হব, তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব ?

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''কি! আমরা যখন মরে যাই এবং ধুলো-মাটি ও হাড়-পাঁজরাতে পরিণত হই, তখন কি আমরা ঠিকঠিকই পুনরুত্থিত হব?

لَقَدۡ وُعِدۡنَا نَحۡنُ وَءَابَاۤؤُنَا هَـٰذَا مِن قَبۡلُ إِنۡ هَـٰذَاۤ إِلَّاۤ أَسَـٰطِیرُ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿83﴾

অতীতে আমাদেরকে এবং আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এই ওয়াদাই দেয়া হয়েছে। এটা তো পূর্ববতীদের কল্প-কথা বৈ কিছুই নয়।

জহুরুল হক

''অবশ্যই এর আগে এটি আমাদের ওয়াদা করা হয়েছিল -- আমাদের কাছে ও আমাদের বাপদাদাদের কাছে। নিঃসন্দেহ এটি সেকালের উপকথা বৈ তো নয়।’’

قُل لِّمَنِ ٱلۡأَرۡضُ وَمَن فِیهَاۤ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿84﴾

বলুন পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যারা আছে, তারা কার? যদি তোমরা জান, তবে বল।

জহুরুল হক

তুমি বলো -- ''এই পৃথিবী ও এতে যারা আছে তারা কার, -- যদি তোমরা জানো?’’

سَیَقُولُونَ لِلَّهِۚ قُلۡ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ﴿85﴾

এখন তারা বলবেঃ সবই আল্লাহর। বলুন, তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?

জহুরুল হক

তারা তখন বলবে -- ''আল্লাহ্‌র!’’ তুমি বল -- ''কেন তবে তোমরা মনোনিবেশ করো না?’’

قُلۡ مَن رَّبُّ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ ٱلسَّبۡعِ وَرَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡعَظِیمِ ﴿86﴾

বলুনঃ সপ্তাকাশ ও মহা-আরশের মালিক কে?

জহুরুল হক

বল -- ''কে সাত আসমানের প্রভু ও কে আরশের অধিপতি?’’

سَیَقُولُونَ لِلَّهِۚ قُلۡ أَفَلَا تَتَّقُونَ ﴿87﴾

এখন তারা বলবেঃ আল্লাহ। বলুন, তবুও কি তোমরা ভয় করবে না?

জহুরুল হক

তারা সঙ্গে সঙ্গে বলবে -- ''আল্লাহ্‌র।’’ তুমি বল -- ''তবে কেন তোমরা ভক্তিশ্রদ্ধা কর না?’’

قُلۡ مَنۢ بِیَدِهِۦ مَلَكُوتُ كُلِّ شَیۡءࣲ وَهُوَ یُجِیرُ وَلَا یُجَارُ عَلَیۡهِ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿88﴾

বলুনঃ তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুর কতৃর্ꦣ2468;্ব, যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না ?

জহুরুল হক

বল -- ''কে তিনি যাঁর হাতে সব-কিছুর কর্তৃত্ব রয়েছে, আর কে নিরাপত্তা প্রদান করেন অথচ তাঁকে নিরাপত্তা প্রদান করতে হয় না, যদি তোমরা জানো?’’

سَیَقُولُونَ لِلَّهِۚ قُلۡ فَأَنَّىٰ تُسۡحَرُونَ ﴿89﴾

এখন তারা বলবেঃ আল্লাহর। বলুনঃ তাহলে কোথা থেকে তোমাদেরকে জাদু করা হচ্ছে?

জহুরুল হক

তারা সঙ্গে সঙ্গে বলবে -- ''আল্লাহ্‌র।’’ তুমি বল -- ''তবে কেমন ক’রে তোমাদের সম্মোহন করা হচ্ছে?’’

بَلۡ أَتَیۡنَـٰهُم بِٱلۡحَقِّ وَإِنَّهُمۡ لَكَـٰذِبُونَ ﴿90﴾

কিছুই নয়, আমি তাদের কাছে সত্য পৌঁছিয়েছি, আর তারা তো মিথ্যাবাদী।

জহুরুল হক

বস্তুতঃ আমরা তাদের কাছে সত্য নিয়ে এসেছি, কিন্ত তারা তো নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।

مَا ٱتَّخَذَ ٱللَّهُ مِن وَلَدࣲ وَمَا كَانَ مَعَهُۥ مِنۡ إِلَـٰهٍۚ إِذࣰا لَّذَهَبَ كُلُّ إِلَـٰهِۭ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعۡضُهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضࣲۚ سُبۡحَـٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا یَصِفُونَ ﴿91﴾

আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে কোন মাবুদ নেই। থাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে চলে যেত এবং একজন অন্যজনের উপর প্রবল হয়ে যেত। তারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র।

জহুরুল হক

আল্লাহ্ কোনো সন্তান গ্রহণ করেন নি, আর তাঁর সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্যও নেই, যদি থাকত তবে প্রত্যেক উপাস্য আলবৎ নিয়ে যেত যা-কিছু সে সৃষ্টি করেছে, আর তাদের কেউ-কেউ অন্যদের উপরে প্রাধান্য বিস্তার করত। সকল মহিমা আল্লাহ্‌র, তারা যা আরোপ করে তা থেকে তিনি উর্ধ্বে, --

عَـٰلِمِ ٱلۡغَیۡبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِ فَتَعَـٰلَىٰ عَمَّا یُشۡرِكُونَ ﴿92﴾

তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী। তারা শরীক করে, তিনি তা থেকে উর্ধ্বে।

জহুরুল হক

তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্য সন্বন্ধে পরিজ্ঞাত, কাজেই তারা যা শরিক করে তিনি সে-সবের বহু উর্ধ্বে?

قُل رَّبِّ إِمَّا تُرِیَنِّی مَا یُوعَدُونَ ﴿93﴾

বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা যদি আমাকে দেখান,

জহুরুল হক

বলো -- ''আমার প্রভু! যদি তুমি আমাকে দেখতে দাও যা তাদের ওয়াদা করা হয়েছে, --

رَبِّ فَلَا تَجۡعَلۡنِی فِی ٱلۡقَوۡمِ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿94﴾

হে আমার পালনকর্তা! তবে আপনি আমাকে গোনাহগার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত করবেন না।

জহুরুল হক

''আমার প্রভু! তাহলে আমাকে তুমি অত্যাচারী জাতির সঙ্গে স্থাপন করো না।’’

وَإِنَّا عَلَىٰۤ أَن نُّرِیَكَ مَا نَعِدُهُمۡ لَقَـٰدِرُونَ ﴿95﴾

আমি তাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দিয়েছি, তা আপনাকে দেখাতে অবশ্যই সক্ষম।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তাদের আমরা যা ওয়াদা করেছি তা তোমাকে দেখাতে আমরা অবশ্যই সক্ষম।

ٱدۡفَعۡ بِٱلَّتِی هِیَ أَحۡسَنُ ٱلسَّیِّئَةَۚ نَحۡنُ أَعۡلَمُ بِمَا یَصِفُونَ ﴿96﴾

মন্দের জওয়াবে তাই বলুন, যা উত্তম। তারা যা বলে, আমি সে বিষয়ে সবিশেষ অবগত।

জহুরুল হক

যা শ্রেষ্ঠ তাই দিয়ে মন্দ বিষয় প্রতিরোধ করো। আমরা ভাল জানি যা তারা আরোপ করে।

وَقُل رَّبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنۡ هَمَزَ ٰ⁠تِ ٱلشَّیَـٰطِینِ ﴿97﴾

বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি,

জহুরুল হক

আর বল -- ''আমার প্রভু! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাইছি শয়তানদের কুমন্ত্রণা থেকে,

وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَن یَحۡضُرُونِ ﴿98﴾

এবং হে আমার পালনকর্তা! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি।

জহুরুল হক

''আর আমার প্রভু! তোমারই কাছে আমি আশ্রয় নিচ্ছি পাছে তারা আমার কাছে হাজির হয়।’’

حَتَّىٰۤ إِذَا جَاۤءَ أَحَدَهُمُ ٱلۡمَوۡتُ قَالَ رَبِّ ٱرۡجِعُونِ ﴿99﴾

যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন।

জহুরুল হক

যে পর্যন্ত না তাদের কারোর কাছে মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন সে বলে -- ''আমার প্রভু! আমাকে ফেরত পাঠাও --

لَعَلِّیۤ أَعۡمَلُ صَـٰلِحࣰا فِیمَا تَرَكۡتُۚ كَلَّاۤۚ إِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَاۤىِٕلُهَاۖ وَمِن وَرَاۤىِٕهِم بَرۡزَخٌ إِلَىٰ یَوۡمِ یُبۡعَثُونَ ﴿100﴾

যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।

জহুরুল হক

''যেন আমি সৎকর্ম করতে পারি সেইখানে যা আমি ছেড়ে এসেছি।’’ কখনোই না! এ তো শুধু একটি মুখের কথা যা সে বলছে। আর তার সামনে রয়েছে 'বরযখ’ সেইদিন পর্যন্ত যখন তাদের পুনরুত্থান করা হবে।

فَإِذَا نُفِخَ فِی ٱلصُّورِ فَلَاۤ أَنسَابَ بَیۡنَهُمۡ یَوۡمَىِٕذࣲ وَلَا یَتَسَاۤءَلُونَ ﴿101﴾

অতঃপর যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন তাদের পারস্পরিক আত্নীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না।

জহুরুল হক

তারপর যখন শিঙায় ফুকে দেঁওয়া হবে, তখন তাদের মধ্যে সেইদিন কোনো আ‌ত্মীয়তার বন্ধন থাকবে না, আর তারা খোঁজ- খবরও নেবে না।

فَمَن ثَقُلَتۡ مَوَ ٰ⁠زِینُهُۥ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ﴿102﴾

যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম,

জহুরুল হক

কাজেই যাদের পাল্লা ভারী হবে তারা নিজেরাই তবে হচ্ছে সফলকাম।

وَمَنۡ خَفَّتۡ مَوَ ٰ⁠زِینُهُۥ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ خَسِرُوۤا۟ أَنفُسَهُمۡ فِی جَهَنَّمَ خَـٰلِدُونَ ﴿103﴾

এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে।

জহুরুল হক

আর যাদের পাল্লা হাল্কা হবে এরাই তবে তারা যারা নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা জাহান্নামে থাকবে দীর্ঘকাল।

تَلۡفَحُ وُجُوهَهُمُ ٱلنَّارُ وَهُمۡ فِیهَا كَـٰلِحُونَ ﴿104﴾

আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে।

জহুরুল হক

আগুন তাদের মুখ পুড়িয়ে দেবে। আর তারা সেখানে হবে বিকৃত-বীভৎস।

أَلَمۡ تَكُنۡ ءَایَـٰتِی تُتۡلَىٰ عَلَیۡكُمۡ فَكُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ ﴿105﴾

তোমাদের সামনে কি আমার আয়াত সমূহ পঠিত হত না? তোমরা তো সেগুলোকে মিথ্যা বলতে।

জহুরুল হক

''তোমরা কি এমন যে আমার বাণীসমূহ তোমাদের কাছে পাঠ করা হয় নি, যে-জন্যে তোমরা সে-সব প্রত্যাখ্যান করতে?’’

قَالُوا۟ رَبَّنَا غَلَبَتۡ عَلَیۡنَا شِقۡوَتُنَا وَكُنَّا قَوۡمࣰا ضَاۤلِّینَ ﴿106﴾

তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা দূর্ভাগ্যের হাতে পরাভূত ছিলাম এবং আমরা ছিলাম বিভ্রান্ত জাতি।

জহুরুল হক

তারা বলবে -- ''আমাদের প্রভু! আমাদের দুর্দশা আমাদের উপরে প্রভাব বিস্তার করেছিল, এবং আমরা পথভ্রষ্ট জাতি হয়ে গিয়েছিলাম।

رَبَّنَاۤ أَخۡرِجۡنَا مِنۡهَا فَإِنۡ عُدۡنَا فَإِنَّا ظَـٰلِمُونَ ﴿107﴾

হে আমাদের পালনকর্তা! এ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর; আমরা যদি পুনরায় তা করি, তবে আমরা গোনাহগার হব।

জহুরুল হক

''আমাদের প্রভু! এখান থেকে আমাদের বের করে দাও, তখন যদি আমরা ফিরি তাহলে আমরা নিশ্চয়ই অন্যায়কারী হব।’’

قَالَ ٱخۡسَـُٔوا۟ فِیهَا وَلَا تُكَلِّمُونِ ﴿108﴾

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই পড়ে থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলো না।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''এর মধ্যেই তোমরা ঢোকে থাক। আর আমার সঙ্গে কথা বল না।

إِنَّهُۥ كَانَ فَرِیقࣱ مِّنۡ عِبَادِی یَقُولُونَ رَبَّنَاۤ ءَامَنَّا فَٱغۡفِرۡ لَنَا وَٱرۡحَمۡنَا وَأَنتَ خَیۡرُ ٱلرَّ ٰ⁠حِمِینَ ﴿109﴾

আমার বান্দাদের একদলে বলতঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।

জহুরুল হক

''নিঃসন্দেহ আমার বান্দাদের মধ্যের একটি দল ছিল যারা বলত, 'আমার প্রভু! আমরা ঈমান এনেছি, কাজেই আমাদের পরিত্রাণ করো, যেহেতু তুমিই তো করুণাময়দের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ!’

فَٱتَّخَذۡتُمُوهُمۡ سِخۡرِیًّا حَتَّىٰۤ أَنسَوۡكُمۡ ذِكۡرِی وَكُنتُم مِّنۡهُمۡ تَضۡحَكُونَ ﴿110﴾

অতঃপর তোমরা তাদেরকে ঠাট্টার পাত্ররূপে গ্রহণ করতে। এমনকি, তা তোমাদেরকে আমার স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছিল এবং তোমরা তাদেরকে দেখে পরিহাস করতে।

জহুরুল হক

''কিন্ত তোমরা তাদের হাসি-ঠাট্টার পাত্ররূপে গ্রহণ করেছিলে যে পর্যন্ত না এ-সব তোমাদের ভুলিয়ে দিয়েছিল আমাকে স্মরণ করা, আর তোমরা তাদের নিয়ে উপহাস করে চলেছ।

إِنِّی جَزَیۡتُهُمُ ٱلۡیَوۡمَ بِمَا صَبَرُوۤا۟ أَنَّهُمۡ هُمُ ٱلۡفَاۤىِٕزُونَ ﴿111﴾

আজ আমি তাদেরকে তাদের সবরের কারণে এমন প্রতিদান দিয়েছি যে, তারাই সফলকাম।

জহুরুল হক

''নিঃসন্দেহ তারা যা অধ্যবসায় করত সেজন্য আজকের দিনে আমি তাদের পুরস্কার দান করছি, আর তারা তো নিজেরাই হচ্ছে সফলকাম।’’

قَـٰلَ كَمۡ لَبِثۡتُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ عَدَدَ سِنِینَ ﴿112﴾

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করলে বছরের গণনায়?

জহুরুল হক

তিনি বলবেন -- ''তোমরা পৃথিবীতে বছর গুনতিতে কতকাল অবস্থান করেছিলে?’’

قَالُوا۟ لَبِثۡنَا یَوۡمًا أَوۡ بَعۡضَ یَوۡمࣲ فَسۡـَٔلِ ٱلۡعَاۤدِّینَ ﴿113﴾

তারা বলবে, আমরা একদিন অথবা দিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছি। অতএব আপনি গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস করুন।

জহুরুল হক

তারা বলবে -- ''আমরা অবস্থান করেছিলাম একটি দিন বা দিনের কিছু অংশ, আপনি না হয় জিজ্ঞাসা করুন গণনাকারীদের।’’

قَـٰلَ إِن لَّبِثۡتُمۡ إِلَّا قَلِیلࣰاۖ لَّوۡ أَنَّكُمۡ كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿114﴾

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা তাতে অল্পদিনই অবস্থান করেছ, যদি তোমরা জানতে?

জহুরুল হক

তিনি বলবেন -- ''তোমরা মাত্র অল্পকালই অবস্থান করেছিলে -- যদি তোমরা জানতে পারতে!’’

أَفَحَسِبۡتُمۡ أَنَّمَا خَلَقۡنَـٰكُمۡ عَبَثࣰا وَأَنَّكُمۡ إِلَیۡنَا لَا تُرۡجَعُونَ ﴿115﴾

তোমরা কি ধারণা কর যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না?

জহুরুল হক

''তোমরা কি তবে মনে করেছিলে যে আমরা তোমাদের অনর্থক সৃষ্টি করেছি, এবং আমাদের কাছে তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে না?’’

فَتَعَـٰلَى ٱللَّهُ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡحَقُّۖ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡكَرِیمِ ﴿116﴾

অতএব শীর্ষ মহিমায় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের মালিক।

জহুরুল হক

বস্তুতঃ আল্লাহ্ মহিমান্নিত, মহারাজাধিরাজ, চিরন্তন সত্য, তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নেই, সম্মানিত আরশের অধিপতি তিনি।

وَمَن یَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَـٰهًا ءَاخَرَ لَا بُرۡهَـٰنَ لَهُۥ بِهِۦ فَإِنَّمَا حِسَابُهُۥ عِندَ رَبِّهِۦۤۚ إِنَّهُۥ لَا یُفۡلِحُ ٱلۡكَـٰفِرُونَ ﴿117﴾

যে কেউ আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকে, তার কাছে যার সনদ নেই, তার হিসাব তার পালণকর্তার কাছে আছে। নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না।

জহুরুল হক

আর যে কেউ আল্লাহ্‌র সঙ্গে অন্য উপাস্যকে ডাকে, -- যার জন্য তার কাছে কোনো সনদ নেই, -- তার হিসাবপত্র তবে নিশ্চয়ই তার প্রভুর কাছে রয়েছে। নিঃসন্দেহ অবিশ্বাসীদের সফলকাম করা হয় না।

وَقُل رَّبِّ ٱغۡفِرۡ وَٱرۡحَمۡ وَأَنتَ خَیۡرُ ٱلرَّ ٰ⁠حِمِینَ ﴿118﴾

বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী।

জহুরুল হক

বলো -- ''আমার প্রভু! পরিত্রাণ করো, আর দয়া করো, কেননা তুমিই তো করুণাময়দের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।’’