Main pages

تَبَارَكَ ٱلَّذِی نَزَّلَ ٱلۡفُرۡقَانَ عَلَىٰ عَبۡدِهِۦ لِیَكُونَ لِلۡعَـٰلَمِینَ نَذِیرًا ﴿1﴾

পরম কল্যাণময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার গ্রন্থ অবর্তীণ করেছেন, যাতে সে বিশ্বজগতের জন্যে সতর্ককারী হয়,।

জহুরুল হক

মহামহিম তিনি যিনি তাঁর দাসের কাছে অবতারণ করেছেন এই ফুরক্কান যেন তিনি বিশ্বমানবের জন্য একজন সতর্ককারী হতে পারেন।

ٱلَّذِی لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ وَلَمۡ یَتَّخِذۡ وَلَدࣰا وَلَمۡ یَكُن لَّهُۥ شَرِیكࣱ فِی ٱلۡمُلۡكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَیۡءࣲ فَقَدَّرَهُۥ تَقۡدِیرࣰا ﴿2﴾

তিনি হলেন যাঁর রয়েছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব। তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি। রাজত্বে তাঁর কোন অংশীদার নেই। তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে শোধিত করেছেন পরিমিতভাবে।

জহুরুল হক

তিনিই -- মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব তাঁরই, আর তিনি কোনো সন্তান গ্রহণ করেন নি, আর সেই সাম্রাজ্যে তাঁর কোনো শরিকও নেই, আর তিনিই সব-কিছু সৃষ্টি করেছেন, তারপর তাকে বিশেষ পরিমাপে পরিমিত রূপ দিয়েছেন।

وَٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِهِۦۤ ءَالِهَةࣰ لَّا یَخۡلُقُونَ شَیۡـࣰٔا وَهُمۡ یُخۡلَقُونَ وَلَا یَمۡلِكُونَ لِأَنفُسِهِمۡ ضَرࣰّا وَلَا نَفۡعࣰا وَلَا یَمۡلِكُونَ مَوۡتࣰا وَلَا حَیَوٰةࣰ وَلَا نُشُورࣰا ﴿3﴾

তারা তাঁর পরিবর্তে কত উপাস্য গ্রহণ করেছে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না এবং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং নিজেদের ভালও করতে পারে না, মন্দও করতে পারে না এবং জীবন, মরণ ও পুনরুজ্জীবনের ও তারা মালিক নয়।

জহুরুল হক

তবুও তারা তাঁকে ছেড়ে দিয়ে অন্য উপাস্যদের গ্রহণ করেছে যারা কিছুই সৃষ্টি করে না, বরং তাদের নিজেদেরকেই সৃষ্টি করা হয়েছে, আর তারা নিজেদের জন্য অনিষ্ট করতে সামর্থ্য রাখে না, আর উপকার করতেও নয়, আর তারা মৃত্যু ঘটাতে ক্ষমতা রাখে না, আর জীবন দিতেও নয়, কিংবা পুনরুত্থানের ক্ষেত্রেও নয়।

وَقَالَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤا۟ إِنۡ هَـٰذَاۤ إِلَّاۤ إِفۡكٌ ٱفۡتَرَىٰهُ وَأَعَانَهُۥ عَلَیۡهِ قَوۡمٌ ءَاخَرُونَۖ فَقَدۡ جَاۤءُو ظُلۡمࣰا وَزُورࣰا ﴿4﴾

কাফেররা বলে, এটা মিথ্যা বৈ নয়, যা তিনি উদ্ভাবন করেছেন এবং অন্য লোকেরা তাঁকে সাহায্য করেছে। অবশ্যই তারা অবিচার ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।

জহুরুল হক

আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা বলে -- ''এইটি তো মিথ্যা বৈ নয় যা সে তৈরি করেছে এবং অন্যান্য লোকজন এ তে তাকে সাহায্য করেছে।’’ সুতরাং তারা অনাচার ও মিথ্যাচার নিয়ে এসেছে।

وَقَالُوۤا۟ أَسَـٰطِیرُ ٱلۡأَوَّلِینَ ٱكۡتَتَبَهَا فَهِیَ تُمۡلَىٰ عَلَیۡهِ بُكۡرَةࣰ وَأَصِیلࣰا ﴿5﴾

তারা বলে, এগুলো তো পুরাকালের রূপকথা, যা তিনি লিখে রেখেছেন। এগুলো সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর কাছে শেখানো হয়।

জহুরুল হক

আর তারা বললে -- ''সেকালের উপকথা -- এ-সব সে লিখিয়ে নিয়েছে, আর এগুলো তার কাছে আবৃত্তি করা হয় সকালে ও সন্ধ্যায়।’’

قُلۡ أَنزَلَهُ ٱلَّذِی یَعۡلَمُ ٱلسِّرَّ فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّهُۥ كَانَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿6﴾

বলুন, একে তিনিই অবতীর্ণ করেছেন, যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য অবগত আছেন। তিনি ক্ষমাশীল, মেহেরবান।

জহুরুল হক

তুমি বলো -- ''এটি অবতারণ করেছেন তিনি যিনি মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রহস্য সব জানেন। তিনি অশ্যই পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَقَالُوا۟ مَالِ هَـٰذَا ٱلرَّسُولِ یَأۡكُلُ ٱلطَّعَامَ وَیَمۡشِی فِی ٱلۡأَسۡوَاقِ لَوۡلَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡهِ مَلَكࣱ فَیَكُونَ مَعَهُۥ نَذِیرًا ﴿7﴾

তারা বলে, এ কেমন রসূল যে, খাদ্য আহার করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে? তাঁর কাছে কেন কোন ফেরেশতা নাযিল করা হল না যে, তাঁর সাথে সতর্ককারী হয়ে থাকত?

জহুরুল হক

আর তারা বলে -- ''এ কেমন ধরনের রসূল, সে খাবার খায় ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করে? তার কাছে কেন একজন ফিরিশতা পাঠানো হ’ল না, যাতে সে তার সঙ্গে সতর্ককারী হতে পারতো?

أَوۡ یُلۡقَىٰۤ إِلَیۡهِ كَنزٌ أَوۡ تَكُونُ لَهُۥ جَنَّةࣱ یَأۡكُلُ مِنۡهَاۚ وَقَالَ ٱلظَّـٰلِمُونَ إِن تَتَّبِعُونَ إِلَّا رَجُلࣰا مَّسۡحُورًا ﴿8﴾

অথবা তিনি ধন-ভান্ডার প্রাপ্ত হলেন না কেন, অথবা তাঁর একটি বাগান হল না কেন, যা থেকে তিনি আহার করতেন? জালেমরা বলে, তোমরা তো একজন জাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ।

জহুরুল হক

''অথবা তার কাছে ধনভান্ডার পাঠিয়ে দেওয়া হতো, অথবা তার জন্য একটি বাগান থাকত যা থেকে সে খেতো?’’ আর অন্যায়াচারীরা বলে -- ''তোমরা তো একজন জাদুগ্রস্ত লোককেই অনুসরণ করছ!’’

ٱنظُرۡ كَیۡفَ ضَرَبُوا۟ لَكَ ٱلۡأَمۡثَـٰلَ فَضَلُّوا۟ فَلَا یَسۡتَطِیعُونَ سَبِیلࣰا ﴿9﴾

দেখুন, তারা আপনার কেমন দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে! অতএব তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে, এখন তারা পথ পেতে পারে না।

জহুরুল হক

দেখ, তারা কেমনভাবে তোমার প্রতি উপমা প্রয়োগ করে! সুতরাং তারা বিপথে গেছে, কাজেই তারা পথের দিশা পাচ্ছে না।

تَبَارَكَ ٱلَّذِیۤ إِن شَاۤءَ جَعَلَ لَكَ خَیۡرࣰا مِّن ذَ ٰ⁠لِكَ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ وَیَجۡعَل لَّكَ قُصُورَۢا ﴿10﴾

কল্যানময় তিনি, যিনি ইচ্ছা করলে আপনাকে তদপেক্ষা উত্তম বস্তু দিতে পারেন-বাগ-বাগিচা, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত হয় এবং দিতে পারেন আপনাকে প্রাসাদসমূহ।

জহুরুল হক

মহামহিম তিনি যিনি ইচ্ছা করলে তোমার জন্য এর চেয়েও শ্রেষ্ঠ বস্তু তৈরি করতে পারেন -- বাগানসমূহ যাদের নিচ দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, আর তোমার জন্য তৈরি করতে পারেন প্রাসাদ-সমূহ।

بَلۡ كَذَّبُوا۟ بِٱلسَّاعَةِۖ وَأَعۡتَدۡنَا لِمَن كَذَّبَ بِٱلسَّاعَةِ سَعِیرًا ﴿11﴾

বরং তারা কেয়ামতকে অস্বীকার করে এবং যে কেয়ামতকে অস্বীকার করে, আমি তার জন্যে অগ্নি প্রস্তুত করেছি।

জহুরুল হক

তথাপি তারা ঘড়িঘন্টাকে অস্বীকার করে, আর যে কেউ ঘড়িঘন্টাকে মিথ্যা বলে তার জন্য আমরা তৈরি রেখেছি এক জ্বলন্ত আগুন।

إِذَا رَأَتۡهُم مِّن مَّكَانِۭ بَعِیدࣲ سَمِعُوا۟ لَهَا تَغَیُّظࣰا وَزَفِیرࣰا ﴿12﴾

অগ্নি যখন দূর থেকে তাদেরকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পাবে তার গর্জন ও হুঙ্কার।

জহুরুল হক

যখন এটি দূর জায়গা থেকে তাদের দেখতে পাবে তখন থেকেই তারা এর ত্রুদ্ধ গর্জন ও হুংকার শুনতে পাবে।

وَإِذَاۤ أُلۡقُوا۟ مِنۡهَا مَكَانࣰا ضَیِّقࣰا مُّقَرَّنِینَ دَعَوۡا۟ هُنَالِكَ ثُبُورࣰا ﴿13﴾

যখন এক শিকলে কয়েকজন বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামের কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে।

জহুরুল হক

আর যখন তাদের শৃঙ্খলিত অবস্থায় এর মধ্যের এক সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে তখন তারা সেইখানেই ধ্বংস হওয়া আহ্বান করবে।

لَّا تَدۡعُوا۟ ٱلۡیَوۡمَ ثُبُورࣰا وَ ٰ⁠حِدࣰا وَٱدۡعُوا۟ ثُبُورࣰا كَثِیرࣰا ﴿14﴾

বলা হবে, আজ তোমরা এক মৃত্যুকে ডেকো না অনেক মৃত্যুকে ডাক।

জহুরুল হক

''আজকের দিনে তোমরা একবারের ধ্বংসের জন্য কামনা করো না, বরং বহুবার ধ্বংস হওয়ার দোয়া করতে থাক!’’

قُلۡ أَذَ ٰ⁠لِكَ خَیۡرٌ أَمۡ جَنَّةُ ٱلۡخُلۡدِ ٱلَّتِی وُعِدَ ٱلۡمُتَّقُونَۚ كَانَتۡ لَهُمۡ جَزَاۤءࣰ وَمَصِیرࣰا ﴿15﴾

বলুন এটা উত্তম, না চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে? সেটা হবে তাদের প্রতিদান ও প্রত্যাবর্তন স্থান।

জহুরুল হক

তুমি বলো -- ''এইটি কি ভাল, না চিরস্থায়ীস্বর্গোদ্যান যা ওয়াদা করা হয়েছে ধর্মনিষ্ঠদের জন্য?’’ তা হচ্ছে তাদের জন্য পুরস্কার ও গন্তব্যস্থল।

لَّهُمۡ فِیهَا مَا یَشَاۤءُونَ خَـٰلِدِینَۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ وَعۡدࣰا مَّسۡـُٔولࣰا ﴿16﴾

তারা চিরকাল বসবাসরত অবস্থায় সেখানে যা চাইবে, তাই পাবে। এই প্রার্থিত ওয়াদা পূরণ আপনার পালনকর্তার দায়িত্ব।

জহুরুল হক

সেখানে তাদের জন্য রয়েছে যা তারা কামনা করে, তারা স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। এইটি তোমার প্রভুর উপরে ন্যস্ত ওয়াদা যা প্রার্থিত হবার যোগ্য।

وَیَوۡمَ یَحۡشُرُهُمۡ وَمَا یَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ فَیَقُولُ ءَأَنتُمۡ أَضۡلَلۡتُمۡ عِبَادِی هَـٰۤؤُلَاۤءِ أَمۡ هُمۡ ضَلُّوا۟ ٱلسَّبِیلَ ﴿17﴾

সেদিন আল্লাহ একত্রিত করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করত তাদেরকে, সেদিন তিনি উপাস্যদেরকে বলবেন, তোমরাই কি আমার এই বান্দাদেরকে পথভ্রান্ত করেছিলে, না তারা নিজেরাই পথভ্রান্ত হয়েছিল?

জহুরুল হক

আর সেইদিন তাদের তিনি একত্রিত করবেন আর আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে যাদের তারা উপাসনা করত তাদেরও, তখন তিনি বললেন -- ''এ কি তোমরা! তোমরাই কি আমার এইসব বান্দাদের বিভ্রান্ত করেছিলে, না কি তারা স্বয়ং পথ ছেড়ে বিপথে গিয়েছিল?’’

قَالُوا۟ سُبۡحَـٰنَكَ مَا كَانَ یَنۢبَغِی لَنَاۤ أَن نَّتَّخِذَ مِن دُونِكَ مِنۡ أَوۡلِیَاۤءَ وَلَـٰكِن مَّتَّعۡتَهُمۡ وَءَابَاۤءَهُمۡ حَتَّىٰ نَسُوا۟ ٱلذِّكۡرَ وَكَانُوا۟ قَوۡمَۢا بُورࣰا ﴿18﴾

তারা বলবে-আপনি পবিত্র, আমরা আপনার পরিবর্তে অন্যকে মুরুব্বীরূপে গ্রহণ করতে পারতাম না; কিন্তু আপনিই তো তাদেরকে এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরকে ভোগসম্ভার দিয়েছিলেন, ফলে তারা আপনার স্মৃতি বিস্মৃত হয়েছিল এবং তারা ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি।

জহুরুল হক

তারা বলবে -- ''তোমারই সব মহিমা! এটি আমাদের জন্য সমীচীন নয় যে তোমাকে বাদ দিয়ে আমরা অন্যান্য অভিভাবকদের গ্রহণ করব। কিন্তু তুমি তাদের ও তাদের পিতৃপুরুষদের ভোগসম্ভার দিয়েছিলে, পরিণামে তারা ভুলে গিয়েছিল সাবধান-বাণী, ফলে তারা হয়েছিল একটি বিনষ্ট জাতি।’’

فَقَدۡ كَذَّبُوكُم بِمَا تَقُولُونَ فَمَا تَسۡتَطِیعُونَ صَرۡفࣰا وَلَا نَصۡرࣰاۚ وَمَن یَظۡلِم مِّنكُمۡ نُذِقۡهُ عَذَابࣰا كَبِیرࣰا ﴿19﴾

আল্লাহ মুশরিকদেরকে বলবেন, তোমাদের কথা তো তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করল, এখন তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং সাহায্যও করতে পারবে না। তোমাদের মধ্যে যে গোনাহগার আমি তাকে গুরুতর শাস্তি আস্বাদন করাব।

জহুরুল হক

''সুতরাং তোমরা যা বলছ সে-সন্বন্ধে তারা তো তোমাদের মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে, কাজেই তোমরা প্রতিরোধ করতে পারবে না, আর সাহায্যও পাবে না। আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ অন্যায় করেছে তাকে আমরা বিরাট শাস্তি আস্বাদন করাব।’’

وَمَاۤ أَرۡسَلۡنَا قَبۡلَكَ مِنَ ٱلۡمُرۡسَلِینَ إِلَّاۤ إِنَّهُمۡ لَیَأۡكُلُونَ ٱلطَّعَامَ وَیَمۡشُونَ فِی ٱلۡأَسۡوَاقِۗ وَجَعَلۡنَا بَعۡضَكُمۡ لِبَعۡضࣲ فِتۡنَةً أَتَصۡبِرُونَۗ وَكَانَ رَبُّكَ بَصِیرࣰا ﴿20﴾

আপনার পূর্বে যত রসূল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই খাদ্য গ্রহণ করত এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করত। আমি তোমাদের এককে অপরের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। দেখি, তোমরা সবর কর কিনা। আপনার পালনকর্তা সব কিছু দেখেন।

জহুরুল হক

আর তোমার আগে আমরা এমন কোনো রসূল পাঠাই নি যাঁরা নিঃসন্দেহ খাবার না খেয়েছেন ও হাটে-বাজারে চলাফেরা না করেছেন। আর আমরা তোমাদের কাউকে অপরদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ দাঁড় করিয়েছি। তোমরা কি অধ্যবসায় চালিয়ে যাবে? আর তোমার প্রভু সর্বদ্রষ্টা।

۞ وَقَالَ ٱلَّذِینَ لَا یَرۡجُونَ لِقَاۤءَنَا لَوۡلَاۤ أُنزِلَ عَلَیۡنَا ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ أَوۡ نَرَىٰ رَبَّنَاۗ لَقَدِ ٱسۡتَكۡبَرُوا۟ فِیۤ أَنفُسِهِمۡ وَعَتَوۡ عُتُوࣰّا كَبِیرࣰا ﴿21﴾

যারা আমার সাক্ষাৎ আশা করে না, তারা বলে, আমাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ করা হল না কেন? অথবা আমরা আমাদের পালনকর্তাকে দেখি না কেন? তারা নিজেদের অন্তরে অহংকার পোষণ করে এবং গুরুতর অবাধ্যতায় মেতে উঠেছে।

জহুরুল হক

আর যারা আমাদের সাথে মোলাকাতের কামনা করে না তারা বলে -- ''কেন আমাদের কাছে ফিরিশ্‌তাদের পাঠানো হয় না, অথবা আমাদের প্রভুকেই বা কেন আমরা দেখতে পাই না?’’ তারা তাদের নিজেদের সন্বন্ধে নিশ্চয়ই বড়াই করছে, আর বড় বাড় বেড়েছে।

یَوۡمَ یَرَوۡنَ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةَ لَا بُشۡرَىٰ یَوۡمَىِٕذࣲ لِّلۡمُجۡرِمِینَ وَیَقُولُونَ حِجۡرࣰا مَّحۡجُورࣰا ﴿22﴾

যেদিন তারা ফেরেশতাদেরকে দেখবে, সেদিন অপরাধীদের জন্যে কোন সুসংবাদ থাকবে না এবং তারা বলবে, কোন বাধা যদি তা আটকে রাখত।

জহুরুল হক

যেদিন তারা ফিরিশ্‌তাদের দেখতে পাবে সেইদিন অপরাধীদের জন্য কোনো খোশখবর থাকবে না, আর তারা বলবে -- ''অলঙ্ঘনীয় ব্যবধান হোক।’’

وَقَدِمۡنَاۤ إِلَىٰ مَا عَمِلُوا۟ مِنۡ عَمَلࣲ فَجَعَلۡنَـٰهُ هَبَاۤءࣰ مَّنثُورًا ﴿23﴾

আমি তাদের কৃতকর্মের প্রতি মনোনিবেশ করব, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধুলিকণারূপে করে দেব।

জহুরুল হক

আর তারা কাজকর্মের যা করেছে তা আমরা বিবেচনা করব, তারপর তাকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণা বানিয়ে দেব।

أَصۡحَـٰبُ ٱلۡجَنَّةِ یَوۡمَىِٕذٍ خَیۡرࣱ مُّسۡتَقَرࣰّا وَأَحۡسَنُ مَقِیلࣰا ﴿24﴾

সেদিন জান্নাতীদের বাসস্থান হবে উত্তম এবং বিশ্রামস্থল হবে মনোরম।

জহুরুল হক

স্বর্গোদ্যানের বাসিন্দারা সেদিন পাবে উৎকৃষ্ট বাসস্থান ও সুন্দরতর বিশ্রামস্থল।

وَیَوۡمَ تَشَقَّقُ ٱلسَّمَاۤءُ بِٱلۡغَمَـٰمِ وَنُزِّلَ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ تَنزِیلًا ﴿25﴾

সেদিন আকাশ মেঘমালাসহ বিদীর্ণ হবে এবং সেদিন ফেরেশতাদের নামিয়ে দেয়া হবে,

জহুরুল হক

আর সেই দিন আকাশ বিদীর্ণ হবে মেঘমালার সঙ্গে, আর ফিরিশতাদের পাঠানো হবে পাঠানোর মতো।

ٱلۡمُلۡكُ یَوۡمَىِٕذٍ ٱلۡحَقُّ لِلرَّحۡمَـٰنِۚ وَكَانَ یَوۡمًا عَلَى ٱلۡكَـٰفِرِینَ عَسِیرࣰا ﴿26﴾

সেদিন সত্যিকার রাজত্ব হবে দয়াময় আল্লাহর এবং কাফেরদের পক্ষে দিনটি হবে কঠিন।

জহুরুল হক

সার্বভৌমত্ব সেইদিন সত্যি-সত্যি পরম করুণাময়ের। আর অবিশ্বাসীদের জন্য সেই দিনটি হবে বড় কঠিন!

وَیَوۡمَ یَعَضُّ ٱلظَّالِمُ عَلَىٰ یَدَیۡهِ یَقُولُ یَـٰلَیۡتَنِی ٱتَّخَذۡتُ مَعَ ٱلرَّسُولِ سَبِیلࣰا ﴿27﴾

জালেম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম।

জহুরুল হক

আর সেইদিন অন্যায়কারী তার হাত কামড়াবে এই বলে -- ''হায় আমার দুর্ভোগ! আমি যদি রসূলের সঙ্গে পথ অবলন্বন করতাম!

یَـٰوَیۡلَتَىٰ لَیۡتَنِی لَمۡ أَتَّخِذۡ فُلَانًا خَلِیلࣰا ﴿28﴾

হায় আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম।

জহুরুল হক

''হায়! কি আফসোস! আমি যদি এমন একজনকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম!

لَّقَدۡ أَضَلَّنِی عَنِ ٱلذِّكۡرِ بَعۡدَ إِذۡ جَاۤءَنِیۗ وَكَانَ ٱلشَّیۡطَـٰنُ لِلۡإِنسَـٰنِ خَذُولࣰا ﴿29﴾

আমার কাছে উপদেশ আসার পর সে আমাকে তা থেকে বিভ্রান্ত করেছিল। শয়তান মানুষকে বিপদকালে ধোঁকা দেয়।

জহুরুল হক

''আমাকে তো সে বিভ্রান্তিতে নিয়েই গেছে স্মারকগ্রন্থ থেকে তা আমার কাছে আসার পরে! আর শয়তান মানুষের জন্য সদা হতাশকারী।’’

وَقَالَ ٱلرَّسُولُ یَـٰرَبِّ إِنَّ قَوۡمِی ٱتَّخَذُوا۟ هَـٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ مَهۡجُورࣰا ﴿30﴾

রসূল বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় এই কোরআনকে প্রলাপ সাব্যস্ত করেছে।

জহুরুল হক

আর রসূল বলছেন -- ''হে আমার প্রভু! নিঃসন্দেহ আমার স্বজাতি এই কুরআনকে পরিত্যজ্য বলে ধরে নিয়েছিল। ’’

وَكَذَ ٰ⁠لِكَ جَعَلۡنَا لِكُلِّ نَبِیٍّ عَدُوࣰّا مِّنَ ٱلۡمُجۡرِمِینَۗ وَكَفَىٰ بِرَبِّكَ هَادِیࣰا وَنَصِیرࣰا ﴿31﴾

এমনিভাবে প্রত্যেক নবীর জন্যে আমি অপরাধীদের মধ্য থেকে শত্রু করেছি। আপনার জন্যে আপনার পালনকর্তা পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারীরূপে যথেষ্ট।

জহুরুল হক

আর এইভাবেই আমরা প্রত্যেক নবীর জন্য শত্রু সৃষ্টি করেছি অপরাধীদের মধ্যে থেকে। আর তোমার প্রভুই পথপ্রদর্শক ও সহায়করূপে যথেষ্ট।

وَقَالَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لَوۡلَا نُزِّلَ عَلَیۡهِ ٱلۡقُرۡءَانُ جُمۡلَةࣰ وَ ٰ⁠حِدَةࣰۚ كَذَ ٰ⁠لِكَ لِنُثَبِّتَ بِهِۦ فُؤَادَكَۖ وَرَتَّلۡنَـٰهُ تَرۡتِیلࣰا ﴿32﴾

সত্য প্রত্যাখানকারীরা বলে, তাঁর প্রতি সমগ্র কোরআন একদফায় অবতীর্ণ হল না কেন? আমি এমনিভাবে অবতীর্ণ করেছি এবং ক্রমে ক্রমে আবৃত্তি করেছি আপনার অন্তকরণকে মজবুত করার জন্যে।

জহুরুল হক

আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা বলে -- ''তাঁর কাছে কুরআনখানা সমগ্রভাবে একেবারে অবতীর্ণ হ’ল না কেন?’’ এইভাবেই -- যেন এর দ্বারা তোমার হৃদয়কে আমরা সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারি, আর আমরা একে সাজিয়েছি সাজানোর মতো।

وَلَا یَأۡتُونَكَ بِمَثَلٍ إِلَّا جِئۡنَـٰكَ بِٱلۡحَقِّ وَأَحۡسَنَ تَفۡسِیرًا ﴿33﴾

তারা আপনার কাছে কোন সমস্যা উপস্থাপিত করলেই আমি আপনাকে তার সঠিক জওয়াব ও সুন্দর ব্যাখ্যা দান করি।

জহুরুল হক

আর তারা তোমার কাছে নিয়ে আসতে পারবে না কোনো সমস্যা, আমরা কিন্তু তোমার নিকট নিয়ে আসব প্রকৃত-সত্য ও শ্রেষ্ঠ- সুন্দর ব্যাখ্যা।

ٱلَّذِینَ یُحۡشَرُونَ عَلَىٰ وُجُوهِهِمۡ إِلَىٰ جَهَنَّمَ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ شَرࣱّ مَّكَانࣰا وَأَضَلُّ سَبِیلࣰا ﴿34﴾

যাদেরকে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা অবস্থায় জাহান্নামের দিকে একত্রিত করা হবে, তাদেরই স্থান হবে নিকৃষ্ট এবং তারাই পথভ্রষ্ট।

জহুরুল হক

তাদের মুখ-থুবড়ে-পড়া অবস্থায় যাদের জাহান্নামের দিকে একত্রিত করা হবে তারাই হবে অবস্থার দিক দিয়ে অতি নিকৃষ্ট আর পথের দিক দিয়ে বড়ই পথভ্রষ্ট।

وَلَقَدۡ ءَاتَیۡنَا مُوسَى ٱلۡكِتَـٰبَ وَجَعَلۡنَا مَعَهُۥۤ أَخَاهُ هَـٰرُونَ وَزِیرࣰا ﴿35﴾

আমি তো মূসাকে কিতাব দিয়েছি এবং তাঁর সাথে তাঁর ভ্রাতা হারুনকে সাহায্যকারী করেছি।

জহুরুল হক

আর ইতিপূর্বে আমরা মূসাকে ধর্মগ্রন্থ দিয়েছিলাম, আর তাঁর সঙ্গে তাঁর ভাই হারূনকে সহায়ক বানিয়েছিলাম।

فَقُلۡنَا ٱذۡهَبَاۤ إِلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلَّذِینَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔایَـٰتِنَا فَدَمَّرۡنَـٰهُمۡ تَدۡمِیرࣰا ﴿36﴾

অতঃপর আমি বলেছি, তোমরা সেই সম্প্রদায়ের কাছে যাও, যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা অভিহিত করেছে। অতঃপর আমি তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছি।

জহুরুল হক

কাজেই আমরা বলেছিলাম -- ''তোমরা দুজনে চলে যাও সেই লোকদের কাছে যারা আমাদের নির্দেশাবলী প্রত্যাখ্যান করেছে।’’ পরিণামে আমরা তাদের ধ্বংস করেছিলাম পূর্ণ বিধ্বংসে।

وَقَوۡمَ نُوحࣲ لَّمَّا كَذَّبُوا۟ ٱلرُّسُلَ أَغۡرَقۡنَـٰهُمۡ وَجَعَلۡنَـٰهُمۡ لِلنَّاسِ ءَایَةࣰۖ وَأَعۡتَدۡنَا لِلظَّـٰلِمِینَ عَذَابًا أَلِیمࣰا ﴿37﴾

নূহের সম্প্রদায় যখন রসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করল, তখন আমি তাদেরকে নিমজ্জত করলাম এবং তাদেরকে মানবমন্ডলীর জন্যে নিদর্শন করে দিলাম। জালেমদের জন্যে আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।

জহুরুল হক

আর নূহের স্বজাতি -- যখন তারা রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল তখন আমরা তাদের ডুবিয়ে দিয়েছিলাম, আর লোকদের জন্য তাদের এক নিদর্শন বানিয়েছিলাম। আর অন্যায়াচারীদের জন্য আমরা এক মর্মন্তুদ শাস্তি তৈরি করে রেখেছি।

وَعَادࣰا وَثَمُودَا۟ وَأَصۡحَـٰبَ ٱلرَّسِّ وَقُرُونَۢا بَیۡنَ ذَ ٰ⁠لِكَ كَثِیرࣰا ﴿38﴾

আমি ধ্বংস করেছি আদ, সামুদ, কপবাসী এবং তাদের মধ্যবর্তী অনেক সম্প্রদায়কে।

জহুরুল হক

আর 'আদ ও ছামূদ ও রস-এর অধিবাসীদের, আর তাদের মধ্যেকার বহুসংখ্যক বংশকেও।

وَكُلࣰّا ضَرَبۡنَا لَهُ ٱلۡأَمۡثَـٰلَۖ وَكُلࣰّا تَبَّرۡنَا تَتۡبِیرࣰا ﴿39﴾

আমি প্রত্যেকের জন্যেই দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছি এবং প্রত্যেককেই সম্পুর্ণরূপে ধ্বংস করেছি।

জহুরুল হক

আর প্রত্যেকেরই বেলায় -- আমরা তার জন্য দৃষ্টান্তগুলো প্রদান করেছিলাম। আর সকলকেই আমরা বিধবস্ত করেছিলাম পূর্ণবিধ্বংসে।

وَلَقَدۡ أَتَوۡا۟ عَلَى ٱلۡقَرۡیَةِ ٱلَّتِیۤ أُمۡطِرَتۡ مَطَرَ ٱلسَّوۡءِۚ أَفَلَمۡ یَكُونُوا۟ یَرَوۡنَهَاۚ بَلۡ كَانُوا۟ لَا یَرۡجُونَ نُشُورࣰا ﴿40﴾

তারা তো সেই জনপদের উপর দিয়েই যাতায়াত করে, যার ওপর বর্ষিত হয়েছে মন্দ বৃষ্টি। তবে কি তারা তা প্রত্যক্ষ করে না? বরং তারা পুনরুজ্জীবনের আশঙ্কা করে না।

জহুরুল হক

আর তারা তো সে জনপদের পাশ দিয়েই যাতায়াত করে যার উপরে আমরা বর্ষণ করেছিলাম এক অশুভ বৃষ্টি। তারা কি তবে এটি দেখতে পায় নি? না, তারা পুনরুত্থানের প্রত্যাশা করে না।

وَإِذَا رَأَوۡكَ إِن یَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَـٰذَا ٱلَّذِی بَعَثَ ٱللَّهُ رَسُولًا ﴿41﴾

তারা যখন আপনাকে দেখে, তখন আপনাকে কেবল বিদ্রুপের পাত্ররূপে গ্রহণ করে, বলে, এ-ই কি সে যাকে আল্লাহ ‘রসূল’ করে প্রেরণ করেছেন?

জহুরুল হক

আর তারা যখন তোমাকে দেখে তখন তারা তোমাকে ঠাট্টা-বিদ্রপের পাত্র ছাড়া অন্যভাবে গ্রহণ করে না। ''এ-ই কি সে যাকে আল্লাহ্ রসূল বানিয়েছেন?

إِن كَادَ لَیُضِلُّنَا عَنۡ ءَالِهَتِنَا لَوۡلَاۤ أَن صَبَرۡنَا عَلَیۡهَاۚ وَسَوۡفَ یَعۡلَمُونَ حِینَ یَرَوۡنَ ٱلۡعَذَابَ مَنۡ أَضَلُّ سَبِیلًا ﴿42﴾

সে তো আমাদেরকে আমাদের উপাস্যগণের কাছ থেকে সরিয়েই দিত, যদি আমরা তাদেরকে আঁকড়ে ধরে না থাকতাম। তারা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন জানতে পারবে কে অধিক পথভ্রষ্ট।

জহুরুল হক

''সে তো আমাদের দেব-দেবীদের থেকে আমাদের প্রায় সরিয়েই নিয়েছিল যদি না আমরা তাদের প্রতি অনুরাগ পোষণ করতাম!’’ আর শীঘ্রই তারা জানতে পারবে যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে -- কে পথ থেকে অধিক পথভ্রষ্ট।

أَرَءَیۡتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَـٰهَهُۥ هَوَىٰهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَیۡهِ وَكِیلًا ﴿43﴾

আপনি কি তাকে দেখেন না, যে তারা প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন?

জহুরুল হক

তুমি কি তাকে দেখেছ যে তার কামনাকে তার উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছে? তুমি কি তবে তার জন্য একজন কর্ণধার হবে?

أَمۡ تَحۡسَبُ أَنَّ أَكۡثَرَهُمۡ یَسۡمَعُونَ أَوۡ یَعۡقِلُونَۚ إِنۡ هُمۡ إِلَّا كَٱلۡأَنۡعَـٰمِ بَلۡ هُمۡ أَضَلُّ سَبِیلًا ﴿44﴾

আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত

জহুরুল হক

অথবা তুমি কি মনে কর যে তাদের অধিকাংশই শোনে অথবা বোঝে? তারা তো গরু-ছাগলের মতো ছাড়া আর কিছু নয়, বরং তারা পথ থেকে অধিক পথভ্রষ্ট।

أَلَمۡ تَرَ إِلَىٰ رَبِّكَ كَیۡفَ مَدَّ ٱلظِّلَّ وَلَوۡ شَاۤءَ لَجَعَلَهُۥ سَاكِنࣰا ثُمَّ جَعَلۡنَا ٱلشَّمۡسَ عَلَیۡهِ دَلِیلࣰا ﴿45﴾

তুমি কি তোমার পালনকর্তাকে দেখ না, তিনি কিভাবে ছায়াকে বিলম্বিত করেন? তিনি ইচ্ছা করলে একে স্থির রাখতে পারতেন। এরপর আমি সূর্যকে করেছি এর নির্দেশক।

জহুরুল হক

তুমি কি প্রত্যক্ষ কর নি তোমার প্রভুর প্রতি -- কিভাবে তিনি ছায়া বিস্তার করেন? আর তিনি যদি চাইতেন তবে একে অনড় করে দিতেন। আমরা বরং সূর্যকে এর উপরে নির্দেশক বানিয়েছি।

ثُمَّ قَبَضۡنَـٰهُ إِلَیۡنَا قَبۡضࣰا یَسِیرࣰا ﴿46﴾

অতঃপর আমি একে নিজের দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনি।

জহুরুল হক

তারপর আমরা এটিকে আমাদের কাছে টেনে নিই আস্তে আস্তে টানতে টানতে।

وَهُوَ ٱلَّذِی جَعَلَ لَكُمُ ٱلَّیۡلَ لِبَاسࣰا وَٱلنَّوۡمَ سُبَاتࣰا وَجَعَلَ ٱلنَّهَارَ نُشُورࣰا ﴿47﴾

তিনিই তো তোমাদের জন্যে রাত্রিকে করেছেন আবরণ, নিদ্রাকে বিশ্রাম এবং দিনকে করেছেন বাইরে গমনের জন্যে।

জহুরুল হক

আর তিনিই সেইজন যিনি তোমাদের জন্য রাত্রিকে করেছেন আবরণী, আর ঘুমকে বিশ্রামস্বরূপ, আর দিনকে করেছেন জেগে ওঠার জন্য।

وَهُوَ ٱلَّذِیۤ أَرۡسَلَ ٱلرِّیَـٰحَ بُشۡرَۢا بَیۡنَ یَدَیۡ رَحۡمَتِهِۦۚ وَأَنزَلۡنَا مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ مَاۤءࣰ طَهُورࣰا ﴿48﴾

তিনিই স্বীয় রহমতের প্রাক্কালে বাতাসকে সুসংবাদবাহীরূপে প্রেরণ করেন। এবং আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে পানি বর্ষণ করি।

জহুরুল হক

আর তিনিই সেইজন যিনি বাতাসকে পাঠান সুসংবাদদাতা-রূপে তাঁর করুণার প্রাক্কালে, আর আমরা আকাশ থেকে বর্ষণ করি বিশুদ্ধ পানি, --

لِّنُحۡـِۧیَ بِهِۦ بَلۡدَةࣰ مَّیۡتࣰا وَنُسۡقِیَهُۥ مِمَّا خَلَقۡنَاۤ أَنۡعَـٰمࣰا وَأَنَاسِیَّ كَثِیرࣰا ﴿49﴾

তদ্দ্বারা মৃত ভূভাগকে সঞ্জীবিত করার জন্যে এবং আমার সৃষ্ট জীবজন্তু ও অনেক মানুষের তৃষ্ণা নিবারণের জন্যে।

জহুরুল হক

যেন আমরা তার দ্বারা মৃত ভূখন্ডকে জীবন দান করতে পারি, এবং তা পান করতে দিই বহুসংখ্যক গবাদি-পশুকে ও মানুষকে যাদের আমরা সৃষ্টি করেছি।

وَلَقَدۡ صَرَّفۡنَـٰهُ بَیۡنَهُمۡ لِیَذَّكَّرُوا۟ فَأَبَىٰۤ أَكۡثَرُ ٱلنَّاسِ إِلَّا كُفُورࣰا ﴿50﴾

এবং আমি তা তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিতরণ করি, যাতে তারা স্মরণ করে। কিন্তু অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই করে না।

জহুরুল হক

আর আমরা নিশ্চয়ই এটিকে বিতরণ করি তাদের মধ্যে যেন তারা স্মরণ করতে পারে, কিন্ত অধিকাংশ লোকেই প্রত্যাখ্যান করা ছাড়া আর কিছুতে একমত হয় না।

وَلَوۡ شِئۡنَا لَبَعَثۡنَا فِی كُلِّ قَرۡیَةࣲ نَّذِیرࣰا ﴿51﴾

আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেক জনপদে একজন ভয় প্রদর্শনকারী প্রেরণ করতে পারতাম।

জহুরুল হক

আর যদি আমরা চাইতাম তাহলে প্রত্যেকটি জনপদে এক-একজন সতর্ককারী দাঁড় করাতাম।

فَلَا تُطِعِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ وَجَـٰهِدۡهُم بِهِۦ جِهَادࣰا كَبِیرࣰا ﴿52﴾

অতএব আপনি কাফেরদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের সাথে এর সাহায্যে কঠোর সংগ্রাম করুন।

জহুরুল হক

অতএব অবিশ্বাসীদের আজ্ঞানুসরণ করো না, বরং তুমি এর সাহায্যে তাদের সঙ্গে জিহাদ করো কঠোর জিহাদে।

۞ وَهُوَ ٱلَّذِی مَرَجَ ٱلۡبَحۡرَیۡنِ هَـٰذَا عَذۡبࣱ فُرَاتࣱ وَهَـٰذَا مِلۡحٌ أُجَاجࣱ وَجَعَلَ بَیۡنَهُمَا بَرۡزَخࣰا وَحِجۡرࣰا مَّحۡجُورࣰا ﴿53﴾

তিনিই সমান্তরালে দুই সমুদ্র প্রবাহিত করেছেন, এটি মিষ্ট, তৃষ্ণা নিবারক ও এটি লোনা, বিস্বাদ; উভয়ের মাঝখানে রেখেছেন একটি অন্তরায়, একটি দুর্ভেদ্য আড়াল।

জহুরুল হক

আর তিনিই সেইজন যিনি দুটি সাগরকে প্রবাহিত করছেন, -- একটি মিষ্ট, পিপাসা দমনকারক, আর একটি লবণাক্ত, তেতো স্বাদবিশিষ্ট, আর এ দুইয়ের মধ্যে তিনি সৃষ্টি করেছেন এক 'বরযখ’ ও এক অনতিক্রম্য ব্যবধান।

وَهُوَ ٱلَّذِی خَلَقَ مِنَ ٱلۡمَاۤءِ بَشَرࣰا فَجَعَلَهُۥ نَسَبࣰا وَصِهۡرࣰاۗ وَكَانَ رَبُّكَ قَدِیرࣰا ﴿54﴾

তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানবকে, অতঃপর তাকে রক্তগত, বংশ ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন। তোমার পালনকর্তা সবকিছু করতে সক্ষম।

জহুরুল হক

আর তিনিই সেইজন যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পানি থেকে, তারপর তার জন্য স্থাপন করেছেন রক্ত-সম্পর্ক ও বৈবাহিক সম্পর্ক। আর তোমার প্রভু অত্যন্ত ক্ষমতাশালী।

وَیَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا یَنفَعُهُمۡ وَلَا یَضُرُّهُمۡۗ وَكَانَ ٱلۡكَافِرُ عَلَىٰ رَبِّهِۦ ظَهِیرࣰا ﴿55﴾

তারা এবাদত করে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর, যা তাদের উপকার করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না। কাফের তো তার পালনকর্তার প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শনকারী।

জহুরুল হক

আর তারা আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে তার উপাসনা করে যে তাদের কোনো উপকার করতে পারে না, আর তাদের অপকারও করতে পারে না। আর অবিশ্বাসী রয়েছে তার প্রভুর বিরুদ্ধে পৃষ্ঠপোষক।

وَمَاۤ أَرۡسَلۡنَـٰكَ إِلَّا مُبَشِّرࣰا وَنَذِیرࣰا ﴿56﴾

আমি আপনাকে সুসংবাদ ও সতর্ককারীরূপেই প্রেরণ করেছি।

জহুরুল হক

আর আমরা তোমাকে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে ভিন্ন অন্যভাবে পাঠাই নি।

قُلۡ مَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍ إِلَّا مَن شَاۤءَ أَن یَتَّخِذَ إِلَىٰ رَبِّهِۦ سَبِیلࣰا ﴿57﴾

বলুন, আমি তোমাদের কাছে এর কোন বিনিময় চাই না, কিন্তু যে ইচ্ছা করে, সে তার পালনকর্তার পথ অবলম্বন করুক।

জহুরুল হক

তুমি বল -- ''আমি তোমাদের কাছ থেকে এর জন্য কোনো মজুরি চাই না, শুধু এ-ই যে যে-কেউ ইচ্ছা করে সে যেন তার প্রভুর অভিমুখে পথ ধরে।’’

وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱلۡحَیِّ ٱلَّذِی لَا یَمُوتُ وَسَبِّحۡ بِحَمۡدِهِۦۚ وَكَفَىٰ بِهِۦ بِذُنُوبِ عِبَادِهِۦ خَبِیرًا ﴿58﴾

আপনি সেই চিরঞ্জীবের উপর ভরসা করুন, যার মৃত্যু নেই এবং তাঁর প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করুন। তিনি বান্দার গোনাহ সম্পর্কে যথেষ্ট খবরদার।

জহুরুল হক

আর তুমি নির্ভর কর চিরীবের উপরে যিনি মৃত্যু বরণ করেন না, আর তাঁর প্রশংসার সাথে জপতপ করো। আর তাঁর বান্দাদের পাপাচার সন্বন্ধে ওয়াকিফহালরূপে তিনিই যথেষ্ট, --

ٱلَّذِی خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَیۡنَهُمَا فِی سِتَّةِ أَیَّامࣲ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ ٱلرَّحۡمَـٰنُ فَسۡـَٔلۡ بِهِۦ خَبِیرࣰا ﴿59﴾

তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃস্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি পরম দয়াময়। তাঁর সম্পর্কে যিনি অবগত, তাকে জিজ্ঞেস কর।

জহুরুল হক

যিনি সৃষ্টি করেছেন মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দুইয়ের মধ্যের সবকিছুকে ছয় দিনে, তারপর তিনি অধিষ্ঠিত হলেন আরশের উপরে, -- তিনি পরম করুণাময়, অতএব তাঁর সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা কর কোনো ওয়াকিফহালকে।

وَإِذَا قِیلَ لَهُمُ ٱسۡجُدُوا۟ لِلرَّحۡمَـٰنِ قَالُوا۟ وَمَا ٱلرَّحۡمَـٰنُ أَنَسۡجُدُ لِمَا تَأۡمُرُنَا وَزَادَهُمۡ نُفُورࣰا ۩ ﴿60﴾

তাদেরকে যখন বলা হয়, দয়াময়কে সেজদা কর, তখন তারা বলে, দয়াময় আবার কে? তুমি কাউকে সেজদা করার আদেশ করলেই কি আমরা সেজদা করব? এতে তাদের পলায়নপরতাই বৃদ্ধি পায়।

জহুরুল হক

আর যখন তাদের বলা হয়, 'পরম করুণাময়কে সিজদা কর’, তারা বলে -- ''করুণাময় আবার কে? আমরা কি তাকেই সিজদা করব যার সন্বন্ধে তুমি আমাদের আদেশ কর?’’ আর এটি তাদের জন্য বাড়িয়ে দেয় বিতৃষ্ণা।

تَبَارَكَ ٱلَّذِی جَعَلَ فِی ٱلسَّمَاۤءِ بُرُوجࣰا وَجَعَلَ فِیهَا سِرَ ٰ⁠جࣰا وَقَمَرࣰا مُّنِیرࣰا ﴿61﴾

কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও দীপ্তিময় চন্দ্র।

জহুরুল হক

মহামহিম তিনি যিনি মহাকাশে তারকারাজি সৃষ্টি করেছেন, আর তাতে বানিয়েছেন এক প্রদীপ ও এক চন্দ্র -- দীপ্তিদায়ক।

وَهُوَ ٱلَّذِی جَعَلَ ٱلَّیۡلَ وَٱلنَّهَارَ خِلۡفَةࣰ لِّمَنۡ أَرَادَ أَن یَذَّكَّرَ أَوۡ أَرَادَ شُكُورࣰا ﴿62﴾

যারা অনুসন্ধানপ্রিয় অথবা যারা কৃতজ্ঞতাপ্রিয় তাদের জন্যে তিনি রাত্রি ও দিবস সৃষ্টি করেছেন পরিবর্তনশীলরূপে।

জহুরুল হক

আর তিনিই সেইজন যিনি রাত ও দিনকে বানিয়েছেন বিবর্তনক্রম তার জন্য যে চায় স্মরণ করতে, অথবা যে চায় কৃতজ্ঞতা জানাতে।

وَعِبَادُ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلَّذِینَ یَمۡشُونَ عَلَى ٱلۡأَرۡضِ هَوۡنࣰا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ ٱلۡجَـٰهِلُونَ قَالُوا۟ سَلَـٰمࣰا ﴿63﴾

রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মুর্খরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, সালাম।

জহুরুল হক

আর পরম করুণাময়ের বান্দারা হচ্ছে তারা যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে, আর যখন অজ্ঞ লোকেরা তাদের সন্বোধন করে তখন বলে -- ''সালাম’’।

وَٱلَّذِینَ یَبِیتُونَ لِرَبِّهِمۡ سُجَّدࣰا وَقِیَـٰمࣰا ﴿64﴾

এবং যারা রাত্রি যাপন করে পালনকর্তার উদ্দেশ্যে সেজদাবনত হয়ে ও দন্ডায়মান হয়ে;

জহুরুল হক

আর যারা রাত কাটিয়ে দেয় তাদের প্রভুর জন্য সিজদাবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে থেকে।

وَٱلَّذِینَ یَقُولُونَ رَبَّنَا ٱصۡرِفۡ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَۖ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا ﴿65﴾

এবং যারা বলে, হে আমার পালনকর্তা, আমাদের কাছথেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে দাও। নিশ্চয় এর শাস্তি নিশ্চিত বিনাশ;

জহুরুল হক

আর যারা বলে -- ''আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তি ফিরিয়ে রাখ, এর শাস্তি তো আলবৎ অপ্রতিহত --

إِنَّهَا سَاۤءَتۡ مُسۡتَقَرࣰّا وَمُقَامࣰا ﴿66﴾

বসবাস ও অবস্থানস্থল হিসেবে তা কত নিকৃষ্ট জায়গা।

জহুরুল হক

''নিঃসন্দেহ এটি বিশ্রামস্থল ও বাসস্থান বিসাবে কত নিকৃষ্ট!’’

وَٱلَّذِینَ إِذَاۤ أَنفَقُوا۟ لَمۡ یُسۡرِفُوا۟ وَلَمۡ یَقۡتُرُوا۟ وَكَانَ بَیۡنَ ذَ ٰ⁠لِكَ قَوَامࣰا ﴿67﴾

এবং তারা যখন ব্যয় করে, তখন অযথা ব্যয় করে না কৃপণতাও করে না এবং তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী।

জহুরুল হক

আর যারা যখন খরচপত্র করে তখন অমিতব্যয় করে না, আর কার্পণ্যও করে না, বরং তারা এ দুয়ের মধ্যস্থলে কায়েম রয়েছে।

وَٱلَّذِینَ لَا یَدۡعُونَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَـٰهًا ءَاخَرَ وَلَا یَقۡتُلُونَ ٱلنَّفۡسَ ٱلَّتِی حَرَّمَ ٱللَّهُ إِلَّا بِٱلۡحَقِّ وَلَا یَزۡنُونَۚ وَمَن یَفۡعَلۡ ذَ ٰ⁠لِكَ یَلۡقَ أَثَامࣰا ﴿68﴾

এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।

জহুরুল হক

আর যারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে অন্য উপাস্যকে ডাকে না, আর ন্যায়ের প্রয়োজনে ব্যতীত যারা এমন কোনো লোককে হত্যা করে না যাকে আল্লাহ্ নিষেধ করেছেন, আর যারা ব্যভিচার করে না। আর যে এই করে সে পাপের শাস্তির সাক্ষাৎ পাবেই, --

یُضَـٰعَفۡ لَهُ ٱلۡعَذَابُ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ وَیَخۡلُدۡ فِیهِۦ مُهَانًا ﴿69﴾

কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।

জহুরুল হক

আর কিয়ামতের দিনে তার জন্য শাস্তি বাড়িয়ে দেওয়া হবে, আর সেখানে সে হীন অবস্থায় স্থায়ী হয়ে রইবে, --

إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ عَمَلࣰا صَـٰلِحࣰا فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ یُبَدِّلُ ٱللَّهُ سَیِّـَٔاتِهِمۡ حَسَنَـٰتࣲۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿70﴾

কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

সে ব্যতীত যে তওবা করে এবং ঈমান আনে ও পুণ্য-পবিত্র ক্রিয়াকর্ম করে। সুতরাং তারাই, -- আল্লাহ্ তাদের মন্দকাজকে সৎকাজ দিয়ে বদলে দেবেন। আর আল্লাহ্ সতত পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَـٰلِحࣰا فَإِنَّهُۥ یَتُوبُ إِلَى ٱللَّهِ مَتَابࣰا ﴿71﴾

যে তওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।

জহুরুল হক

আর যে কেউ তওবা করে এবং সৎকর্ম করে সে-ই তো তবে আল্লাহ্‌র প্রতি ফেরার মতো ফেরে।

وَٱلَّذِینَ لَا یَشۡهَدُونَ ٱلزُّورَ وَإِذَا مَرُّوا۟ بِٱللَّغۡوِ مَرُّوا۟ كِرَامࣰا ﴿72﴾

এবং যারা মিথ্যা কাজে যোগদান করে না এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন মান রক্ষার্থে ভদ্রভাবে চলে যায়।

জহুরুল হক

আর যারা মিথ্যা ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয় না, আব যখন তারা খেলো পরিবেশের পাশ দিয়ে যায় তখন তারা মর্যাদার সাথে পাশ কেটে যায়।

وَٱلَّذِینَ إِذَا ذُكِّرُوا۟ بِـَٔایَـٰتِ رَبِّهِمۡ لَمۡ یَخِرُّوا۟ عَلَیۡهَا صُمࣰّا وَعُمۡیَانࣰا ﴿73﴾

এবং যাদেরকে তাদের পালনকর্তার আয়াতসমূহ বোঝানো হলে তাতে অন্ধ ও বধির সদৃশ আচরণ করে না।

জহুরুল হক

আর যারা যখন তাদের প্রভুর নির্দেশসমূহ তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় তখন তারা তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে না বধির ও অন্ধ হয়ে।

وَٱلَّذِینَ یَقُولُونَ رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ أَزۡوَ ٰ⁠جِنَا وَذُرِّیَّـٰتِنَا قُرَّةَ أَعۡیُنࣲ وَٱجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِینَ إِمَامًا ﴿74﴾

এবং যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।

জহুরুল হক

আর যারা বলে -- ''আমাদের প্রভু! আমাদের স্ত্রীদের থেকে ও আমাদের সন্তান-সন্ততি থেকে চোখ-জোড়ানো আনন্দ আমাদের প্রদান করো, আর আমাদের তুমি বানিয়ে দাও ধর্মপরায়ণদের নেতৃস্থানীয়।’’

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ یُجۡزَوۡنَ ٱلۡغُرۡفَةَ بِمَا صَبَرُوا۟ وَیُلَقَّوۡنَ فِیهَا تَحِیَّةࣰ وَسَلَـٰمًا ﴿75﴾

তাদেরকে তাদের সবরের প্রতিদানে জান্নাতে কক্ষ দেয়া হবে এবং তাদেরকে তথায় দোয়া ও সালাম সহকারে অভ্যর্থনা করা হবে।

জহুরুল হক

এইসব লোকেদের প্রতিদান দেওয়া হবে উচুঁ পদমর্যাদা দিয়ে যেহেতু তারা অধ্যবসায় করেছিল, আর সেখানে তাদের অভ্যর্থনা করা হবে অভিবাদন ও সালাম জানিয়ে, --

خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ حَسُنَتۡ مُسۡتَقَرࣰّا وَمُقَامࣰا ﴿76﴾

তথায় তারা চিরকাল বসবাস করবে। অবস্থানস্থল ও বাসস্থান হিসেবে তা কত উত্তম।

জহুরুল হক

সেখানে তারা স্থায়ীভাবে থাকবে, -- বিশ্রামস্থল ও বাসস্থান হিসাবে কত সুন্দর!

قُلۡ مَا یَعۡبَؤُا۟ بِكُمۡ رَبِّی لَوۡلَا دُعَاۤؤُكُمۡۖ فَقَدۡ كَذَّبۡتُمۡ فَسَوۡفَ یَكُونُ لِزَامَۢا ﴿77﴾

বলুন, আমার পালনকর্তা পরওয়া করেন না যদি তোমরা তাঁকে না ডাক। তোমরা মিথ্যা বলেছ। অতএব সত্বর নেমে আসবে অনিবার্য শাস্তি।

জহুরুল হক

বলো -- ''তোমাদের দোয়া না থাকলেও আমার প্রভুর কিছু যায় আসে না, কিন্তু তোমরা তো প্রত্যাখ্যানই করেছ, সেজন্য শীঘ্রই অনিবার্য শাস্তি আসছে।’’