Main pages

طسۤمۤ ﴿1﴾

ত্বা, সীন, মীম।

জহুরুল হক

ত্বা, সীন, মীম।

تِلۡكَ ءَایَـٰتُ ٱلۡكِتَـٰبِ ٱلۡمُبِینِ ﴿2﴾

এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।

জহুরুল হক

এসব হচ্ছে সুস্পষ্ট গ্রন্থের বাণীসমূহ।

لَعَلَّكَ بَـٰخِعࣱ نَّفۡسَكَ أَلَّا یَكُونُوا۟ مُؤۡمِنِینَ ﴿3﴾

তারা বিশ্বাস করে না বলে আপনি হয়তো মর্মব্যথায় আত্নঘাতী হবেন।

জহুরুল হক

তুমি হয়ত তোমার নিজেকে মেরেই ফেলবে যেহেতু তারা মুমিন হচ্ছে না।

إِن نَّشَأۡ نُنَزِّلۡ عَلَیۡهِم مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ ءَایَةࣰ فَظَلَّتۡ أَعۡنَـٰقُهُمۡ لَهَا خَـٰضِعِینَ ﴿4﴾

আমি যদি ইচ্ছা করি, তবে আকাশ থেকে তাদের কাছে কোন নিদর্শন নাযিল করতে পারি। অতঃপর তারা এর সামনে নত হয়ে যাবে।

জহুরুল হক

যদি আমরা ইচ্ছা করতাম তাহলে আমরা তাদের উপরে আকাশ থেকে একটি নিদর্শন পাঠাতে পারতাম, তখন এর কারণে তাদের ঘাড় নুইয়ে হেটঁ করে দেয়া হত।

وَمَا یَأۡتِیهِم مِّن ذِكۡرࣲ مِّنَ ٱلرَّحۡمَـٰنِ مُحۡدَثٍ إِلَّا كَانُوا۟ عَنۡهُ مُعۡرِضِینَ ﴿5﴾

যখনই তাদের কাছে রহমান এর কোন নতুন উপদেশ আসে, তখনই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

জহুরুল হক

আর তাদের নিকট পরম করুণাময়ের কাছ থেকে কোনো নতুন স্মরণীয়-বার্তা আসতে না আসতেই তারা তা থেকে বিমুখ হয়ে যায়।

فَقَدۡ كَذَّبُوا۟ فَسَیَأۡتِیهِمۡ أَنۢبَـٰۤؤُا۟ مَا كَانُوا۟ بِهِۦ یَسۡتَهۡزِءُونَ ﴿6﴾

অতএব তারা তো মিথ্যারোপ করেছেই; সুতরাং যে বিষয় নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত, তার যথার্থ স্বরূপ শীঘ্রই তাদের কাছে পৌছবে।

জহুরুল হক

তাহলে তারা প্রত্যাখ্যান করেই ফেলেছে, সুতরাং যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রপ করত তার সংবাদ তাদের কাছে শীঘ্রই আসছে।

أَوَلَمۡ یَرَوۡا۟ إِلَى ٱلۡأَرۡضِ كَمۡ أَنۢبَتۡنَا فِیهَا مِن كُلِّ زَوۡجࣲ كَرِیمٍ ﴿7﴾

তারা কি ভুপৃষ্ঠের প্রতি দৃষ্টিপাত করে না? আমি তাতে সর্বপ্রকার বিশেষ-বস্তু কত উদগত করেছি।

জহুরুল হক

তারা কি পৃথিবীর দিকে চেয়ে দেখে না -- এতে আমরা প্রত্যেক উৎকৃষ্ট কল্পতরু কত যে জন্নিয়েছি?

إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿8﴾

নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে, কিন্ত তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়!

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿9﴾

আপনার পালনকর্তা তো পরাক্রমশালী পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু -- তিনিই তো মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَإِذۡ نَادَىٰ رَبُّكَ مُوسَىٰۤ أَنِ ٱئۡتِ ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿10﴾

যখন আপনার পালনকর্তা মূসাকে ডেকে বললেনঃ তুমি পাপিষ্ঠ সম্প্রদায়ের নিকট যাও;

জহুরুল হক

আর স্মরণ করো! তোমার প্রভু মূসাকে ডেকে বললেন -- ''তুমি অত্যাচারী লোকদের কাছে যাও, --

قَوۡمَ فِرۡعَوۡنَۚ أَلَا یَتَّقُونَ ﴿11﴾

ফেরাউনের সম্প্রদায়ের নিকট; তারা কি ভয় করে না?

জহুরুল হক

ফিরআউনের লোকদের কাছে। তারা কি ধর্মভীরুতা অবলন্বন করবে না?’’

قَالَ رَبِّ إِنِّیۤ أَخَافُ أَن یُكَذِّبُونِ ﴿12﴾

সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমার আশংকা হচ্ছে যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলে দেবে।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমি অবশ্যই আশংকা করি যে তারা আমাকে প্রত্যাখ্যান করবে।

وَیَضِیقُ صَدۡرِی وَلَا یَنطَلِقُ لِسَانِی فَأَرۡسِلۡ إِلَىٰ هَـٰرُونَ ﴿13﴾

এবং আমার মন হতবল হয়ে পড়ে এবং আমার জিহবা অচল হয়ে যায়। সুতরাং হারুনের কাছে বার্তা প্রেরণ করুন।

জহুরুল হক

''আমার বুক সংকুচিত হয়ে পড়েছে, আর আমার জিহ্বা বাক্‌পটু নয়, সেজন্য হারূনের প্রতিও ডাক পাঠাও।

وَلَهُمۡ عَلَیَّ ذَنۢبࣱ فَأَخَافُ أَن یَقۡتُلُونِ ﴿14﴾

আমার বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ আছে। অতএব আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে।

জহুরুল হক

''আর আমার বিরুদ্ধে এক অপরাধ তাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে, সেজন্য আমি ভয় করি যে তারা আমাকে কাতল করবে।’’

قَالَ كَلَّاۖ فَٱذۡهَبَا بِـَٔایَـٰتِنَاۤۖ إِنَّا مَعَكُم مُّسۡتَمِعُونَ ﴿15﴾

আল্লাহ বলেন, কখনই নয় তোমরা উভয়ে যাও আমার নিদর্শনাবলী নিয়ে। আমি তোমাদের সাথে থেকে শোনব।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''কখনো না! অতএব তোমরা দুজনেই আমাদের নিদর্শন সমূহ নিয়ে যাও, নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সঙ্গে রয়েছি শুনতে থাকা অবস্থায়।

فَأۡتِیَا فِرۡعَوۡنَ فَقُولَاۤ إِنَّا رَسُولُ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿16﴾

অতএব তোমরা ফেরআউনের কাছে যাও এবং বল, আমরা বিশ্বজগতের পালনকর্তার রসূল।

জহুরুল হক

''সুতরাং তোমরা ফিরআউনের নিকট যাও আর বলো -- 'আমরা আলবৎ বিশ্বজগতের প্রভুর রসূল --

أَنۡ أَرۡسِلۡ مَعَنَا بَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ ﴿17﴾

যাতে তুমি বনী-ইসরাঈলকে আমাদের সাথে যেতে দাও।

জহুরুল হক

''যে ইসরাইলের বংশধরদের আমাদের সঙ্গে পাঠিয়ে দাও’।’’

قَالَ أَلَمۡ نُرَبِّكَ فِینَا وَلِیدࣰا وَلَبِثۡتَ فِینَا مِنۡ عُمُرِكَ سِنِینَ ﴿18﴾

ফেরাউন বলল, আমরা কি তোমাকে শিশু অবস্থায় আমাদের মধ্যে লালন-পালন করিনি? এবং তুমি আমাদের মধ্যে জীবনের বহু বছর কাটিয়েছ।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''তোমাকে কি ছেলেবেলায় আমাদের কাছেই লালনপালন করি নি, এবং তুমি কি আমাদেরই মধ্যে তোমার জীবনের বহু বৎসর কাটাও নি?

وَفَعَلۡتَ فَعۡلَتَكَ ٱلَّتِی فَعَلۡتَ وَأَنتَ مِنَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿19﴾

তুমি সেই-তোমরা অপরাধ যা করবার করেছ। তুমি হলে কৃতঘ্ন।

জহুরুল হক

''আর তোমার কাজ যা তুমি করেছ তা তো করেইছ, তথাপি তুমি অকৃতজ্ঞদের মধ্যেকার!’’

قَالَ فَعَلۡتُهَاۤ إِذࣰا وَأَنَا۠ مِنَ ٱلضَّاۤلِّینَ ﴿20﴾

মূসা বলল, আমি সে অপরাধ তখন করেছি, যখন আমি ভ্রান্ত ছিলাম।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমি এটি করেছিলাম যখন আমি পথভ্রষ্টদের মধ্যে ছিলাম।

فَفَرَرۡتُ مِنكُمۡ لَمَّا خِفۡتُكُمۡ فَوَهَبَ لِی رَبِّی حُكۡمࣰا وَجَعَلَنِی مِنَ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿21﴾

অতঃপর আমি ভীত হয়ে তোমাদের কাছ থেকে পলায়ন করলাম। এরপর আমার পালনকর্তা আমাকে প্রজ্ঞা দান করেছেন এবং আমাকে পয়গম্বর করেছেন।

জহুরুল হক

''এরপর যখন আমি তোমাদের ভয় করেছিলাম তখন আমি তোমাদের থেকে ফেরার হলাম, তারপর আমার প্রভু আমাকে জ্ঞান দান করেছেন, আর তিনি আমাকে বানিয়েছেন রসূলদের অন্যতম।

وَتِلۡكَ نِعۡمَةࣱ تَمُنُّهَا عَلَیَّ أَنۡ عَبَّدتَّ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ ﴿22﴾

আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা বলছ, তা এই যে, তুমি বনী-ইসলাঈলকে গোলাম বানিয়ে রেখেছ।

জহুরুল হক

''আর এই তো হচ্ছে সেই অনুগ্রহ যা তুমি আমার কাছে উল্লেখ করছ যার জন্যে তুমি ইসরাইলের বংশধরদের দাস বানিয়েছ!’’

قَالَ فِرۡعَوۡنُ وَمَا رَبُّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿23﴾

ফেরাউন বলল, বিশ্বজগতের পালনকর্তা আবার কি?

জহুরুল হক

ফিরআউন বললে -- ''বিশ্বজগতের প্রভু আবার কি হয়?’’

قَالَ رَبُّ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَاۤۖ إِن كُنتُم مُّوقِنِینَ ﴿24﴾

মূসা বলল, তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এবং তাদের মধ্যে যা-কিছু আছে তার প্রভু, -- যদি তোমরা দৃঢ়প্রত্যয়িত হও।’’

قَالَ لِمَنۡ حَوۡلَهُۥۤ أَلَا تَسۡتَمِعُونَ ﴿25﴾

ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, তোমরা কি শুনছ না?

জহুরুল হক

সে তার আশপাশে যারা আছে তাদের বললে -- ''তোমরা কি শুনছ না?’’

قَالَ رَبُّكُمۡ وَرَبُّ ءَابَاۤىِٕكُمُ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿26﴾

মূসা বলল, তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও পালনকর্তা।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''তোমাদের প্রভু এবং পূর্বকালের তোমাদের পিতৃপুরুষদেরও প্রভু।’’

قَالَ إِنَّ رَسُولَكُمُ ٱلَّذِیۤ أُرۡسِلَ إِلَیۡكُمۡ لَمَجۡنُونࣱ ﴿27﴾

ফেরাউন বলল, তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রসূলটি নিশ্চয়ই বদ্ধ পাগল।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''তোমাদের রসূলটি যাকে তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে সে তো বদ্ধ পাগল।’’

قَالَ رَبُّ ٱلۡمَشۡرِقِ وَٱلۡمَغۡرِبِ وَمَا بَیۡنَهُمَاۤۖ إِن كُنتُمۡ تَعۡقِلُونَ ﴿28﴾

মূসা বলল, তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, যদি তোমরা বোঝ।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের এবং এ দুইয়ের মধ্যে যা আছে তারও প্রভু, যদি তোমরা বুঝতে পারতে।’’

قَالَ لَىِٕنِ ٱتَّخَذۡتَ إِلَـٰهًا غَیۡرِی لَأَجۡعَلَنَّكَ مِنَ ٱلۡمَسۡجُونِینَ ﴿29﴾

ফেরাউন বলল, তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে উপাস্যরূপে গ্রহণ কর তবে আমি অবশ্যই তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করব।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''তুমি যদি আমাকে ছাড়া অন্য উপাস্য গ্রহণ কর তবে আমি আলবৎ তোমাকে কয়েদীদের অন্তর্ভুক্ত করব।’’

قَالَ أَوَلَوۡ جِئۡتُكَ بِشَیۡءࣲ مُّبِینࣲ ﴿30﴾

মূসা বলল, আমি তোমার কাছে কোন স্পষ্ট বিষয় নিয়ে আগমন করলেও কি?

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''কী! আমি তোমার কাছে সুস্পষ্ট কিছু আনলেও?’’

قَالَ فَأۡتِ بِهِۦۤ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِینَ ﴿31﴾

ফেরাউন বলল, তুমি সত্যবাদী হলে তা উপস্থিত কর।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''তবে তা নিয়ে এস যদি তুমি সত্যবাদীদের একজন হও।’’

فَأَلۡقَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِیَ ثُعۡبَانࣱ مُّبِینࣱ ﴿32﴾

অতঃপর তিনি লাঠি নিক্ষেপ করলে মুহূর্তের মধ্যে তা সুস্পষ্ট অজগর হয়ে গেল।

জহুরুল হক

সুতরাং তিনি তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করলেন, তখন আশ্চর্য! এটি এক স্পষ্ট সাপ হয়ে গেল।

وَنَزَعَ یَدَهُۥ فَإِذَا هِیَ بَیۡضَاۤءُ لِلنَّـٰظِرِینَ ﴿33﴾

আর তিনি তার হাত বের করলেন, তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের কাছে সুশুভ্র প্রতিভাত হলো।

জহুরুল হক

আর তিনি তাঁর হাত বের করেলন, তখন দেখো! দর্শকদের কাছে তা সাদা হয়ে গেল।

قَالَ لِلۡمَلَإِ حَوۡلَهُۥۤ إِنَّ هَـٰذَا لَسَـٰحِرٌ عَلِیمࣱ ﴿34﴾

ফেরাউন তার পরিষদবর্গকে বলল, নিশ্চয় এ একজন সুদক্ষ জাদুকর।

জহুরুল হক

সে তার আশপাশের প্রধানদের বললে -- ''এ তো নিশ্চয়ই এক ওস্তাদ জাদুকর, --

یُرِیدُ أَن یُخۡرِجَكُم مِّنۡ أَرۡضِكُم بِسِحۡرِهِۦ فَمَاذَا تَأۡمُرُونَ ﴿35﴾

সে তার জাদু বলে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিস্কার করতে চায়। অতএব তোমাদের মত কি?

জহুরুল হক

''সে চাইছে তার জাদুর দ্বারা তোমাদের দেশ থেকে তোমাদের বের করে দিতে, কাজেই কী তোমরা উপদেশ দাও?’’

قَالُوۤا۟ أَرۡجِهۡ وَأَخَاهُ وَٱبۡعَثۡ فِی ٱلۡمَدَاۤىِٕنِ حَـٰشِرِینَ ﴿36﴾

তারা বলল, তাকে ও তার ভাইকে কিছু অবকাশ দিন এবং শহরে শহরে ঘোষক প্রেরণ করুন।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''তাকে ও তার ভাইকে অবকাশ দাও, আর শহরে শহরে সংগ্রাহকদের পাঠাও, --

یَأۡتُوكَ بِكُلِّ سَحَّارٍ عَلِیمࣲ ﴿37﴾

তারা যেন আপনার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ জাদুকর কে উপস্থিত করে।

জহুরুল হক

''যেন তারা প্রত্যেক জ্ঞানী জাদুকরদের তোমার কাছে নিয়ে আছে।’’

فَجُمِعَ ٱلسَّحَرَةُ لِمِیقَـٰتِ یَوۡمࣲ مَّعۡلُومࣲ ﴿38﴾

অতঃপর এক নির্দিষ্ট দিনে জাদুকরদেরকে একত্রিত করা হল।

জহুরুল হক

সুতরাং জাদুকরদের একত্র করা হ’ল নির্দিষ্ট স্থানে বিজ্ঞাপিত দিনে,

وَقِیلَ لِلنَّاسِ هَلۡ أَنتُم مُّجۡتَمِعُونَ ﴿39﴾

এবং জনগণের মধ্যে ঘোষণা করা হল, তোমরাও সমবেত হও।

জহুরুল হক

আর লোকদের বলা হ’ল -- ''তোমরা কি জমায়েৎ হচ্ছ, --

لَعَلَّنَا نَتَّبِعُ ٱلسَّحَرَةَ إِن كَانُوا۟ هُمُ ٱلۡغَـٰلِبِینَ ﴿40﴾

যাতে আমরা জাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি-যদি তারাই বিজয়ী হয়।

জহুরুল হক

''যেন আমরা জাদুকরদের অনুগমন করতে পারি যদি তারা নিজেরা বিজয়ী হয়?’’

فَلَمَّا جَاۤءَ ٱلسَّحَرَةُ قَالُوا۟ لِفِرۡعَوۡنَ أَىِٕنَّ لَنَا لَأَجۡرًا إِن كُنَّا نَحۡنُ ٱلۡغَـٰلِبِینَ ﴿41﴾

যখন যাদুকররা আগমণ করল, তখন ফেরআউনকে বলল, যদি আমরা বিজয়ী হই, তবে আমরা পুরস্কার পাব তো?

জহুরুল হক

তারপর যখন জদুকররা এল তারা ফিরআউনকে বললে -- ''আমাদের জন্য কি বিশেষ পুরস্কার থাকবে যদি আমরা খোদ বিজয়ী হই?’’

قَالَ نَعَمۡ وَإِنَّكُمۡ إِذࣰا لَّمِنَ ٱلۡمُقَرَّبِینَ ﴿42﴾

ফেরাউন বলল, হঁ্যা এবং তখন তোমরা আমার নৈকট্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''হাঁ, আর সেক্ষেত্রে তোমরা নিশ্চয়ই অন্তরঙ্গ হবে।’’

قَالَ لَهُم مُّوسَىٰۤ أَلۡقُوا۟ مَاۤ أَنتُم مُّلۡقُونَ ﴿43﴾

মূসা (আঃ) তাদেরকে বললেন, নিক্ষেপ কর তোমরা যা নিক্ষেপ করবে।

জহুরুল হক

মূসা তাদের বললেন -- ''ছোড়ো যা তোমরা ছুড়ঁতে যাচ্ছ।’’

فَأَلۡقَوۡا۟ حِبَالَهُمۡ وَعِصِیَّهُمۡ وَقَالُوا۟ بِعِزَّةِ فِرۡعَوۡنَ إِنَّا لَنَحۡنُ ٱلۡغَـٰلِبُونَ ﴿44﴾

অতঃপর তারা তাদের রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং বলল, ফেরাউনের ইযযতের কসম, আমরাই বিজয়ী হব।

জহুরুল হক

সুতরাং তাদের দড়িদড়া ও তাদের লাঠি-লগুড় তারা ছুড়ঁলো এবং বললে -- ''ফিরআউনের প্রভাবে আমরা তো নিজেরাই বিজয়ী হব।’’

فَأَلۡقَىٰ مُوسَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِیَ تَلۡقَفُ مَا یَأۡفِكُونَ ﴿45﴾

অতঃপর মূসা তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করল, হঠাৎ তা তাদের অলীক কীর্তিগুলোকে গ্রাস করতে লাগল।

জহুরুল হক

তারপর মূসা তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করলেন, তখন দেখো! এটি গিলে ফেলল যা তারা বুনেছিল।

فَأُلۡقِیَ ٱلسَّحَرَةُ سَـٰجِدِینَ ﴿46﴾

তখন জাদুকররা সেজদায় নত হয়ে গেল।

জহুরুল হক

তখন জাদুকররা লুটিয়ে পড়ল সিজদাবনত হয়ে,

قَالُوۤا۟ ءَامَنَّا بِرَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿47﴾

তারা বলল, আমরা রাব্বুল আলামীনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।

জহুরুল হক

তারা বললে, ''আমরা ঈমান আনলাম বিশ্বজগতের প্রভুর প্রতি, --

رَبِّ مُوسَىٰ وَهَـٰرُونَ ﴿48﴾

যিনি মূসা ও হারুনের রব।

জহুরুল হক

''যিনি মূসা ও হারুনেরও প্রভু।’’

قَالَ ءَامَنتُمۡ لَهُۥ قَبۡلَ أَنۡ ءَاذَنَ لَكُمۡۖ إِنَّهُۥ لَكَبِیرُكُمُ ٱلَّذِی عَلَّمَكُمُ ٱلسِّحۡرَ فَلَسَوۡفَ تَعۡلَمُونَۚ لَأُقَطِّعَنَّ أَیۡدِیَكُمۡ وَأَرۡجُلَكُم مِّنۡ خِلَـٰفࣲ وَلَأُصَلِّبَنَّكُمۡ أَجۡمَعِینَ ﴿49﴾

ফেরাউন বলল, আমার অনুমতি দানের পূর্বেই তোমরা কি তাকে মেনে নিলে? নিশ্চয় সে তোমাদের প্রধান, যে তোমাদেরকে জাদু শিক্ষা দিয়েছে। শীঘ্রই তোমরা পরিণাম জানতে পারবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কর্তন করব। এবং তোমাদের সবাইকে শূলে চড়াব।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''তোমরা তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলে আমি তোমাদের অনুমতি দেবার আগেই? সে-ই নিশ্চয় তোমাদের গুরু যে তোমাদের জাদুবিদ্যা শিখিয়েছে। সুতরাং শীঘ্রই তোমরা টের পাবে। আমি নিশ্চয় তোমাদের হাত ও তোমাদের পা আড়াআড়ি- ভাবে কেটে ফেলবই, আর তোমাদের সবাইকে শূলে চড়াব।’’

قَالُوا۟ لَا ضَیۡرَۖ إِنَّاۤ إِلَىٰ رَبِّنَا مُنقَلِبُونَ ﴿50﴾

তারা বলল, কোন ক্ষতি নেই। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করব।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''কোনো ক্ষতি নেই, নিঃসন্দেহ আমরা আমাদের প্রভুর কাছে প্রত্যাবর্তনশীল।

إِنَّا نَطۡمَعُ أَن یَغۡفِرَ لَنَا رَبُّنَا خَطَـٰیَـٰنَاۤ أَن كُنَّاۤ أَوَّلَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿51﴾

আমরা আশা করি, আমাদের পালনকর্তা আমাদের ক্রটি-বিচ্যুতি মার্জনা করবেন। কারণ, আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারীদের মধ্যে অগ্রণী।

জহুরুল হক

''আমরা নিশ্চয়ই আশা করি যে আমাদের প্রভু আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দেবেন, যেহেতু আমরা মুমিনদের মধ্যে অগ্রণী।’’

۞ وَأَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰ مُوسَىٰۤ أَنۡ أَسۡرِ بِعِبَادِیۤ إِنَّكُم مُّتَّبَعُونَ ﴿52﴾

আমি মূসাকে আদেশ করলাম যে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিযোগে বের হয়ে যাও, নিশ্চয় তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।

জহুরুল হক

আর আমরা মূসাকে প্রত্যাদেশ দিয়েছিলাম এই বলে -- ''আমার বান্দাদের নিয়ে রাতের মধ্যে রওয়ানা হয়ে যাও, তোমাদের অবশ্য পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।’’

فَأَرۡسَلَ فِرۡعَوۡنُ فِی ٱلۡمَدَاۤىِٕنِ حَـٰشِرِینَ ﴿53﴾

অতঃপর ফেরাউন শহরে শহরে সংগ্রাহকদেরকে প্রেরণ করল,

জহুরুল হক

তখন ফিরআউন শহরে-নগরে সংগ্রাহকদের পাঠাল --

إِنَّ هَـٰۤؤُلَاۤءِ لَشِرۡذِمَةࣱ قَلِیلُونَ ﴿54﴾

নিশ্চয় এরা (বনী-ইসরাঈলরা) ক্ষুদ্র একটি দল।

জহুরুল হক

''নিঃসন্দেহ তারা একটি ছোটখাট দল,

وَإِنَّهُمۡ لَنَا لَغَاۤىِٕظُونَ ﴿55﴾

এবং তারা আমাদের ক্রোধের উদ্রেক করেছে।

জহুরুল হক

''আর নিঃসন্দেহ আমাদের জন্য তারা তো ক্রোধ উদ্রেককারী,

وَإِنَّا لَجَمِیعٌ حَـٰذِرُونَ ﴿56﴾

এবং আমরা সবাই সদা শংকিত।

জহুরুল হক

''আর আমরা তো নিশ্চয় সজাগ-সশস্ত্র জনতা।’’

فَأَخۡرَجۡنَـٰهُم مِّن جَنَّـٰتࣲ وَعُیُونࣲ ﴿57﴾

অতঃপর আমি ফেরআউনের দলকে তাদের বাগ-বাগিচা ও ঝর্ণাসমূহ থেকে বহিষ্কার করলাম।

জহুরুল হক

কাজেই আমরা তাদের বের ক’রে আনলাম বাগানসমূহ ও ঝরনারাজি থেকে,

وَكُنُوزࣲ وَمَقَامࣲ كَرِیمࣲ ﴿58﴾

এবং ধন-ভান্ডার ও মনোরম স্থানসমূহ থেকে।

জহুরুল হক

আর ধনভান্ডার ও জমকালো বাড়িঘর থেকে, --

كَذَ ٰ⁠لِكَۖ وَأَوۡرَثۡنَـٰهَا بَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ ﴿59﴾

এরূপই হয়েছিল এবং বনী-ইসলাঈলকে করে দিলাম এসবের মালিক।

জহুরুল হক

এইভাবেই। আর এইগুলো আমরা ইসরাইলের বংশধরদের উত্তরাধিকার করতে দিয়েছিলাম।

فَأَتۡبَعُوهُم مُّشۡرِقِینَ ﴿60﴾

অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তারা তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল।

জহুরুল হক

তারপর তারা এদের পশ্চাদ্ধাবন করেছিল সূর্যোদয়কালে।

فَلَمَّا تَرَ ٰ⁠ۤءَا ٱلۡجَمۡعَانِ قَالَ أَصۡحَـٰبُ مُوسَىٰۤ إِنَّا لَمُدۡرَكُونَ ﴿61﴾

যখন উভয় দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, আমরা যে ধরা পড়ে গেলাম।

জহুরুল হক

অতঃপর যখন দুই দল পরস্পরকে দেখল তখন মূসার সঙ্গীরা বললে -- ''আমরা তো নিঃসন্দেহ ধরা পড়ে গেলাম।’’

قَالَ كَلَّاۤۖ إِنَّ مَعِیَ رَبِّی سَیَهۡدِینِ ﴿62﴾

মূসা বলল, কখনই নয়, আমার সাথে আছেন আমার পালনকর্তা। তিনি আমাকে পথ বলে দেবেন।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''নিশ্চয়ই না, আমার সঙ্গে আলবৎ আমার প্রভু রয়েছেন, তিনি আমাকে অচিরেই পথ দেখাবেন।’’

فَأَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰ مُوسَىٰۤ أَنِ ٱضۡرِب بِّعَصَاكَ ٱلۡبَحۡرَۖ فَٱنفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرۡقࣲ كَٱلطَّوۡدِ ٱلۡعَظِیمِ ﴿63﴾

অতঃপর আমি মূসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমূদ্রকে আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল।

জহুরুল হক

তখন আমরা মূসার নিকট প্রত্যাদেশ দিলাম এই বলে -- ''তোমার লাঠি দিয়ে সমুদ্রে আঘাত কর।’’ ফলে এটি বিভক্ত হয়ে গেল, সুতরাং প্রত্যেক দল এক-একটি বিরাট পাহাড়ের মতো হয়েছিল।

وَأَزۡلَفۡنَا ثَمَّ ٱلۡـَٔاخَرِینَ ﴿64﴾

আমি সেথায় অপর দলকে পৌঁছিয়ে দিলাম।

জহুরুল হক

আর অন্যদেরকেও আমরা নিয়ে এলাম সেই অঞ্চলে।

وَأَنجَیۡنَا مُوسَىٰ وَمَن مَّعَهُۥۤ أَجۡمَعِینَ ﴿65﴾

এবং মূসা ও তাঁর সংগীদের সবাইকে বাঁচিয়ে দিলাম।

জহুরুল হক

আর মূসাকে ও তাঁর সঙ্গে যারা ছিল সে-সবাইকে আমরা উদ্ধার করেছিলাম।

ثُمَّ أَغۡرَقۡنَا ٱلۡـَٔاخَرِینَ ﴿66﴾

অতঃপর অপর দলটিকে নিমজ্জত কললাম।

জহুরুল হক

তারপর অন্যদেরকে আমরা ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।

إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿67﴾

নিশ্চয় এতে একটি নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী ছিল না।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এতে তো একটি নিদর্শন রয়েছে, কিন্ত তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿68﴾

আপনার পালনকর্তা অবশ্যই পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু -- তিনিই তো মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَٱتۡلُ عَلَیۡهِمۡ نَبَأَ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ ﴿69﴾

আর তাদেরকে ইব্রাহীমের বৃত্তান্ত শুনিয়ে দিন।

জহুরুল হক

আর তুমি তাদের কাছে ইব্রাহীমের কাহিনী বর্ণনা করো।

إِذۡ قَالَ لِأَبِیهِ وَقَوۡمِهِۦ مَا تَعۡبُدُونَ ﴿70﴾

যখন তাঁর পিতাকে এবং তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা কিসের এবাদত কর?

জহুরুল হক

স্মরণ করো! তিনি তাঁর পিতৃপুরুষকে ও তাঁর স্বজাতিকে বললেন -- ''তোমরা কিসের উপাসনা কর?’’

قَالُوا۟ نَعۡبُدُ أَصۡنَامࣰا فَنَظَلُّ لَهَا عَـٰكِفِینَ ﴿71﴾

তারা বলল, আমরা প্রতিমার পূজা করি এবং সারাদিন এদেরকেই নিষ্ঠার সাথে আঁকড়ে থাকি।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''আমরা প্রতিমাদের পূজা করি, আর আমরা তাদের আরাধনায় নিষ্ঠাবান থাকব।’’

قَالَ هَلۡ یَسۡمَعُونَكُمۡ إِذۡ تَدۡعُونَ ﴿72﴾

ইব্রাহীম (আঃ) বললেন, তোমরা যখন আহবান কর, তখন তারা শোনে কি?

জহুরুল হক

তিনি বললেন, ''তারা কি তোমাদের শোনে যখন তোমরা ডাকো?

أَوۡ یَنفَعُونَكُمۡ أَوۡ یَضُرُّونَ ﴿73﴾

অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারে?

জহুরুল হক

''অথবা তারা কি তোমাদের উপকার করতে পারে কিংবা অপকার করতে পারে?’’

قَالُوا۟ بَلۡ وَجَدۡنَاۤ ءَابَاۤءَنَا كَذَ ٰ⁠لِكَ یَفۡعَلُونَ ﴿74﴾

তারা বললঃ না, তবে আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি, তারা এরূপই করত।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''না, আমাদের পিতৃপুরুষদের আমরা দেখতে পেয়েছি এইভাবে তারা করছে ।’’

قَالَ أَفَرَءَیۡتُم مَّا كُنتُمۡ تَعۡبُدُونَ ﴿75﴾

ইব্রাহীম বললেন, তোমরা কি তাদের সম্পর্কে ভেবে দেখেছ, যাদের পূজা করে আসছ।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''তোমরা কি তবে ভেবে দেখেছ তোমরা কিসের উপাসনা করছ, --

أَنتُمۡ وَءَابَاۤؤُكُمُ ٱلۡأَقۡدَمُونَ ﴿76﴾

তোমরা এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষেরা ?

জহুরুল হক

''তোমরা ও তোমাদের পূর্বগামী পিতৃপুরুষরা?

فَإِنَّهُمۡ عَدُوࣱّ لِّیۤ إِلَّا رَبَّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿77﴾

বিশ্বপালনকর্তা ব্যতীত তারা সবাই আমার শত্রু।

জহুরুল হক

''অতএব তারা আলবৎ আমার শত্রু, কিন্ত ভূ-বিশ্বের প্রভু নন,

ٱلَّذِی خَلَقَنِی فَهُوَ یَهۡدِینِ ﴿78﴾

যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন,

জহুরুল হক

''যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনি আমাকে পথ দেখিয়েছেন,

وَٱلَّذِی هُوَ یُطۡعِمُنِی وَیَسۡقِینِ ﴿79﴾

যিনি আমাকে আহার এবং পানীয় দান করেন,

জহুরুল হক

''আর যিনি আমাকে আহার করান এবং পান করতে দেন,

وَإِذَا مَرِضۡتُ فَهُوَ یَشۡفِینِ ﴿80﴾

যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।

জহুরুল হক

''আর যখন আমি রোগে ভোগি তখন তিনিই আমাকে আরোগ্য করেন,

وَٱلَّذِی یُمِیتُنِی ثُمَّ یُحۡیِینِ ﴿81﴾

যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর পুনর্জীবন দান করবেন।

জহুরুল হক

''আর যিনি, আমার মৃত্যু ঘটাবেন তারপরে আমাকে পুনর্জীবন দেবেন,

وَٱلَّذِیۤ أَطۡمَعُ أَن یَغۡفِرَ لِی خَطِیۤـَٔتِی یَوۡمَ ٱلدِّینِ ﴿82﴾

আমি আশা করি তিনিই বিচারের দিনে আমার ক্রটি-বিচ্যুতি মাফ করবেন।

জহুরুল হক

''আর যিনি, আমি আশা করি, বিচারের দিনে আমার ভুলভ্রান্তিগুলো আমার জন্য ক্ষমা করে দেবেন।

رَبِّ هَبۡ لِی حُكۡمࣰا وَأَلۡحِقۡنِی بِٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿83﴾

হে আমার পালনকর্তা, আমাকে প্রজ্ঞা দান কর এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর

জহুরুল হক

''আমার প্রভু! আমাকে জ্ঞান দান করো, আর আমাকে সৎকর্মীদের সঙ্গে যুক্ত করো।

وَٱجۡعَل لِّی لِسَانَ صِدۡقࣲ فِی ٱلۡـَٔاخِرِینَ ﴿84﴾

এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী কর।

জহুরুল হক

''আর আমার জন্য পরবর্তীদের মধ্যে সদালাপন সৃষ্টি করো।

وَٱجۡعَلۡنِی مِن وَرَثَةِ جَنَّةِ ٱلنَّعِیمِ ﴿85﴾

এবং আমাকে নেয়ামত উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত কর।

জহুরুল হক

''আর আমাকে আনন্দময় উদ্যানের ওয়ারিশানের অন্তর্ভুক্ত করো।

وَٱغۡفِرۡ لِأَبِیۤ إِنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلضَّاۤلِّینَ ﴿86﴾

এবং আমার পিতাকে ক্ষমা কর। সে তো পথভ্রষ্টদের অন্যতম।

জহুরুল হক

''আর আমার পিতৃপুরুষকে পরিত্রাণ করো, কেননা সে তো পথভ্রান্তদের মধ্যেকার হয়ে গেছে।

وَلَا تُخۡزِنِی یَوۡمَ یُبۡعَثُونَ ﴿87﴾

এবং পূনরুত্থান দিবসে আমাকে লাঞ্ছিত করো না,

জহুরুল হক

''আর আমাকে লাঞ্ছিত করো না তখন যেইদিন তাদের পুরুত্থিত করা হবে, --

یَوۡمَ لَا یَنفَعُ مَالࣱ وَلَا بَنُونَ ﴿88﴾

যে দিবসে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততি কোন উপকারে আসবে না;

জহুরুল হক

''যেদিন ধনসম্পদে কোনো কাজ দেবে না, সন্তানাদিতেও নয়,

إِلَّا مَنۡ أَتَى ٱللَّهَ بِقَلۡبࣲ سَلِیمࣲ ﴿89﴾

কিন্তু যে সুস্থ অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে আসবে।

জহুরুল হক

''শুধু সে ব্যতীত যে নির্মল-নিস্পাপ অন্তর নিয়ে আল্লাহ্‌র কাছে আসবে।’’

وَأُزۡلِفَتِ ٱلۡجَنَّةُ لِلۡمُتَّقِینَ ﴿90﴾

জান্নাত আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা হবে।

জহুরুল হক

আর স্বর্গোদ্যানকে ধর্মভীরুদের জন্য সন্নিকটে আনা হবে,

وَبُرِّزَتِ ٱلۡجَحِیمُ لِلۡغَاوِینَ ﴿91﴾

এবং বিপথগামীদের সামনে উম্মোচিত করা হবে জাহান্নাম।

জহুরুল হক

আর দুযখকে খোলে দেওয়া হবে পথভ্রষ্টদের জন্য।

وَقِیلَ لَهُمۡ أَیۡنَ مَا كُنتُمۡ تَعۡبُدُونَ ﴿92﴾

তাদেরকে বলা হবেঃ তারা কোথায়, তোমরা যাদের পূজা করতে।

জহুরুল হক

আর তাদের বলা হবে -- ''কোথায় তারা যাদের তোমরা উপাসনা করতে --

مِن دُونِ ٱللَّهِ هَلۡ یَنصُرُونَكُمۡ أَوۡ یَنتَصِرُونَ ﴿93﴾

আল্লাহর পরিবর্তে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে, অথবা তারা প্রতিশোধ নিতে পারে?

জহুরুল হক

''আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করছে, না তারা নিজেদেরই সাহায্য করতে পারছে?’’

فَكُبۡكِبُوا۟ فِیهَا هُمۡ وَٱلۡغَاوُۥنَ ﴿94﴾

অতঃপর তাদেরকে এবং পথভ্রষ্টদেরকে আধোমুখি করে নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামে।

জহুরুল হক

সুতরাং তাদের এর মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে -- তাদের এবং পথভ্রান্তদের,

وَجُنُودُ إِبۡلِیسَ أَجۡمَعُونَ ﴿95﴾

এবং ইবলীস বাহিনীর সকলকে।

জহুরুল হক

আর ইবলীসের দলবল সকলকেও।

قَالُوا۟ وَهُمۡ فِیهَا یَخۡتَصِمُونَ ﴿96﴾

তারা তথায় কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়ে বলবেঃ

জহুরুল হক

তারা সেখানে তর্ক-বিতর্ক করতে করতে বলবে --

تَٱللَّهِ إِن كُنَّا لَفِی ضَلَـٰلࣲ مُّبِینٍ ﴿97﴾

আল্লাহর কসম, আমরা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে লিপ্ত ছিলাম।

জহুরুল হক

''আল্লাহ্‌র দিব্য, আমরা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিলাম, --

إِذۡ نُسَوِّیكُم بِرَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿98﴾

যখন আমরা তোমাদেরকে বিশ্ব-পালনকর্তার সমতুল্য গন্য করতাম।

জহুরুল হক

''যখন আমরা বিশ্বজগতের প্রভুর সঙ্গে তোমাদের এক-সমান গণ্য করেছিলাম।

وَمَاۤ أَضَلَّنَاۤ إِلَّا ٱلۡمُجۡرِمُونَ ﴿99﴾

আমাদেরকে দুষ্টকর্মীরাই গোমরাহ করেছিল।

জহুরুল হক

''আর অপরাধীরা ছাড়া অন্য কেউ আমাদের বিপথে নেয় নি।

فَمَا لَنَا مِن شَـٰفِعِینَ ﴿100﴾

অতএব আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।

জহুরুল হক

''সেজন্যে আমাদের জন্য সুপারিশকারীদের কেউ নেই,

وَلَا صَدِیقٍ حَمِیمࣲ ﴿101﴾

এবং কোন সহৃদয় বন্ধু ও নেই।

জহুরুল হক

''আর কোনো অন্তরঙ্গ বন্ধুও নেই।

فَلَوۡ أَنَّ لَنَا كَرَّةࣰ فَنَكُونَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿102﴾

হায়, যদি কোনরুপে আমরা পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ পেতাম, তবে আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারী হয়ে যেতাম।

জহুরুল হক

''হায়! আমাদের জন্য যদি আকেরবার উপায় থাকত তাহলে আমরা মুমিনদের মধ্যেকার হতাম।’’

إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿103﴾

নিশ্চয়, এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে, কিন্ত তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿104﴾

আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু, -- তিনিই তো মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা।

كَذَّبَتۡ قَوۡمُ نُوحٍ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿105﴾

নূহের সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যারোপ করেছে।

জহুরুল হক

নূহের স্বজাতি রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

إِذۡ قَالَ لَهُمۡ أَخُوهُمۡ نُوحٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿106﴾

যখন তাদের ভ্রাতা নূহ তাদেরকে বললেন, তোমাদের কি ভয় নেই?

জহুরুল হক

দেখো! তাদের ভাই নূহ তাদের বলেছিলেন -- ''তোমরা কি ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করবে না?

إِنِّی لَكُمۡ رَسُولٌ أَمِینࣱ ﴿107﴾

আমি তোমাদের জন্য বিশ্বস্ত বার্তাবাহক।

জহুরুল হক

''আমি নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল,

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿108﴾

অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।

জহুরুল হক

''অতএব তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি কর ও আমাকে মেনে চল।

وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿109﴾

আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।

জহুরুল হক

''আর আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাই না, আমার মজুরি তো বিশ্বজগতের প্রভুর কাছে ছাড়া অন্যত্র নয়।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿110﴾

অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।

জহুরুল হক

''অতএব তোমরা আল্লাহ্‌কে ভক্তি-শ্রদ্ধা কর ও আমার আজ্ঞাপালন কর।’’

۞ قَالُوۤا۟ أَنُؤۡمِنُ لَكَ وَٱتَّبَعَكَ ٱلۡأَرۡذَلُونَ ﴿111﴾

তারা বলল, আমরা কি তোমাকে মেনে নেব যখন তোমার অনুসরণ করছে ইতরজনেরা?

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''আমরা কি তোমার প্রতি ঈমান আনব যখন তোমাকে অনুসরণ করছে ইতরগোষ্ঠী?’’

قَالَ وَمَا عِلۡمِی بِمَا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ ﴿112﴾

নূহ বললেন, তারা কি কাজ করছে, তা জানা আমার কি দরকার?

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''তারা কী করত সে সন্বন্ধে আর আমার জ্ঞান থাকবার নয়।

إِنۡ حِسَابُهُمۡ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّیۖ لَوۡ تَشۡعُرُونَ ﴿113﴾

তাদের হিসাব নেয়া আমার পালনকর্তারই কাজ; যদি তোমরা বুঝতে!

জহুরুল হক

''তাদের হিসাবপত্র আমার প্রভুর কাছে ছাড়া অন্যত্র নয়, যদি তোমরা বুঝতে!

وَمَاۤ أَنَا۠ بِطَارِدِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿114﴾

আমি মুমিনগণকে তাড়িয়ে দেয়ার লোক নই।

জহুরুল হক

''আর আমি তো মুমিনদের তাড়িয়ে দেবার পাত্র নই।

إِنۡ أَنَا۠ إِلَّا نَذِیرࣱ مُّبِینࣱ ﴿115﴾

আমি তো শুধু একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।

জহুরুল হক

''আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী ভিন্ন নই।’’

قَالُوا۟ لَىِٕن لَّمۡ تَنتَهِ یَـٰنُوحُ لَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡمَرۡجُومِینَ ﴿116﴾

তারা বলল, হে নূহ যদি তুমি বিরত না হও, তবে তুমি নিশ্চিতই প্রস্তরাঘাতে নিহত হবে।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''হে নূহ! তুমি যদি না থামো তাহলে তোমাকে অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে-নিহতদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’’

قَالَ رَبِّ إِنَّ قَوۡمِی كَذَّبُونِ ﴿117﴾

নূহ বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় তো আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমার স্বজাতি আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

فَٱفۡتَحۡ بَیۡنِی وَبَیۡنَهُمۡ فَتۡحࣰا وَنَجِّنِی وَمَن مَّعِیَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿118﴾

অতএব, আমার ও তাদের মধ্যে কোন ফয়সালা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সংগী মুমিনগণকে রক্ষা করুন।

জহুরুল হক

''অতএব আমার মধ্যে ও তাদের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত এনে মীমাংসা করে দাও, আর আমাকে ও আমার সাথে মুমিনদের যারা রয়েছে তাদের উদ্ধার করে দাও।’’

فَأَنجَیۡنَـٰهُ وَمَن مَّعَهُۥ فِی ٱلۡفُلۡكِ ٱلۡمَشۡحُونِ ﴿119﴾

অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর সঙ্গিগণকে বোঝাই করা নৌকায় রক্ষা করলাম।

জহুরুল হক

সুতরাং আমরা তাঁকে ও তাঁর সাথে যারা ছিল তাদের উদ্ধার করলাম বোঝাই করা জাহাজে।

ثُمَّ أَغۡرَقۡنَا بَعۡدُ ٱلۡبَاقِینَ ﴿120﴾

এরপর অবশিষ্ট সবাইকে নিমজ্জত করলাম।

জহুরুল হক

তারপর আমরা ডুবিয়ে দিলাম পরবর্তী অবশিষ্টদের।

إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿121﴾

নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে, কিন্ত তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿122﴾

নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু, -- তিনিই তো মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা।

كَذَّبَتۡ عَادٌ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿123﴾

আদ সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।

জহুরুল হক

আর 'আদ জাতি রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

إِذۡ قَالَ لَهُمۡ أَخُوهُمۡ هُودٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿124﴾

তখন তাদের ভাই হুদ তাদেরকে বললেনঃ তোমাদের কি ভয় নেই?

জহুরুল হক

দেখো, তাদের ভাই হূদ তাদের বলেছিলেন -- ''তোমরা কি ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করবে না?

إِنِّی لَكُمۡ رَسُولٌ أَمِینࣱ ﴿125﴾

আমি তোমাদের বিশ্বস্ত রসূল।

জহুরুল হক

''আমি নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল,

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿126﴾

অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।

জহুরুল হক

''অতএব তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয় কর ও আমাকে মেনে চল।

وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿127﴾

আমি তোমাদের কাছে এর জন্যে প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো পালনকর্তা দেবেন।

জহুরুল হক

''আর আমি এ-জন্য তোমাদের কাছে কোনো মজুরি চাই না, আমার নজুরি তো ভূ-বিশ্বের প্রভুর কাছে ছাড়া অন্যত্র নয়।

أَتَبۡنُونَ بِكُلِّ رِیعٍ ءَایَةࣰ تَعۡبَثُونَ ﴿128﴾

তোমরা কি প্রতিটি উচ্চস্থানে অযথা নিদর্শন নির্মান করছ?

জহুরুল হক

''তোমরা কি প্রত্যেক পাহাড়ে অযথা স্তম্ভ নির্মাণ করছ,

وَتَتَّخِذُونَ مَصَانِعَ لَعَلَّكُمۡ تَخۡلُدُونَ ﴿129﴾

এবং বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণ করছ, যেন তোমরা চিরকাল থাকবে?

জহুরুল হক

''আর দুর্গ তৈরি করছ যেন তোমরা চিরস্থায়ী হবে?’’

وَإِذَا بَطَشۡتُم بَطَشۡتُمۡ جَبَّارِینَ ﴿130﴾

যখন তোমরা আঘাত হান, তখন জালেম ও নিষ্ঠুরের মত আঘাত হান।

জহুরুল হক

''আর যখন তোমরা পাকড়াও কর তখন জবরদস্তভাবে পাকড়াও করে থাক।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿131﴾

অতএব, আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুগত্য কর।

জহুরুল হক

''সুতরাং তোমরা আল্লাহ্‌কে ভক্তিশ্রদ্ধা কর ও আমার আজ্ঞাপালন কর।

وَٱتَّقُوا۟ ٱلَّذِیۤ أَمَدَّكُم بِمَا تَعۡلَمُونَ ﴿132﴾

ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে সেসব বস্তু দিয়েছেন, যা তোমরা জান।

জহুরুল হক

''আর ভয়-ভক্তি কর তাঁকে যিনি তোমাদের মদদ করেছেন যা তোমরা শিখেছ তা দিয়ে, --

أَمَدَّكُم بِأَنۡعَـٰمࣲ وَبَنِینَ ﴿133﴾

তোমাদেরকে দিয়েছেন চতুষ্পদ জন্তু ও পুত্র-সন্তান,

জহুরুল হক

''আর তিনি তোমাদের সাহায্য করেছেন গবাদি-পশু ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে,

وَجَنَّـٰتࣲ وَعُیُونٍ ﴿134﴾

এবং উদ্যান ও ঝরণা।

জহুরুল হক

''আর বাগানসমূহ ও ফোয়ারাগুলো দিয়ে।

إِنِّیۤ أَخَافُ عَلَیۡكُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیمࣲ ﴿135﴾

আমি তোমাদের জন্যে মহাদিবসের শাস্তি আশংকা করি।

জহুরুল হক

''নিঃসন্দেহ আমি আশংকা করছি তোমাদের উপরে এক মহাদিনের শাস্তির।’’

قَالُوا۟ سَوَاۤءٌ عَلَیۡنَاۤ أَوَعَظۡتَ أَمۡ لَمۡ تَكُن مِّنَ ٱلۡوَ ٰ⁠عِظِینَ ﴿136﴾

তারা বলল, তুমি উপদেশ দাও অথবা উপদেশ নাই দাও, উভয়ই আমাদের জন্যে সমান।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''তুমি উপদেশ দাও অথবা উপদেশদাতাদের মধ্যে তুমি নাই-বা হও আমাদের কাছে সবই সমান।

إِنۡ هَـٰذَاۤ إِلَّا خُلُقُ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿137﴾

এসব কথাবার্তা পূর্ববর্তী লোকদের অভ্যাস বৈ নয়।

জহুরুল হক

''এ তো সেকেলে আচরণ ছাড়া কিছুই নয়,

وَمَا نَحۡنُ بِمُعَذَّبِینَ ﴿138﴾

আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হব না।

জহুরুল হক

''আর আমরা শাস্তি পাবার নই।’’

فَكَذَّبُوهُ فَأَهۡلَكۡنَـٰهُمۡۚ إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿139﴾

অতএব, তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলতে লাগল এবং আমি তাদেরকে নিপাত করে দিলাম। এতে অবশ্যই নিদর্শন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

জহুরুল হক

কাজেই তারা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করল, সুতরাং আমরা তাদের ধ্বংস করেছিলাম। নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে, কিন্ত তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿140﴾

এবং আপনার পালনকর্তা, তিনি তো প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু, -- তিনিই তো মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা।

كَذَّبَتۡ ثَمُودُ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿141﴾

সামুদ সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।

জহুরুল হক

আর ছামূদ জাতি রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

إِذۡ قَالَ لَهُمۡ أَخُوهُمۡ صَـٰلِحٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿142﴾

যখন তাদের ভাই সালেহ, তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না?

জহুরুল হক

দেখো, তাদের ভাই সালিহ্ তাদের বলেছিলেন -- ''তোমরা কি ধর্মভীরুতা অবলন্বন করবে না?

إِنِّی لَكُمۡ رَسُولٌ أَمِینࣱ ﴿143﴾

আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।

জহুরুল হক

''আমি নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল,

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿144﴾

অতএব, আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।

জহুরুল হক

''অতএব তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি কর ও আমাকে মেনে চল!

وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿145﴾

আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।

জহুরুল হক

''আর আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোনো মজুরি চাই না, আমার মজুরি তো বিশ্বজগতের প্রভুর কাছে ছাড়া অন্যত্র নয়।

أَتُتۡرَكُونَ فِی مَا هَـٰهُنَاۤ ءَامِنِینَ ﴿146﴾

তোমাদেরকে কি এ জগতের ভোগ-বিলাসের মধ্যে নিরাপদে রেখে দেয়া হবে?

জহুরুল হক

''এখানে যা আছে তাতে কি তোমাদের নিরাপদে রেখে দেওয়া হবে, --

فِی جَنَّـٰتࣲ وَعُیُونࣲ ﴿147﴾

উদ্যানসমূহের মধ্যে এবং ঝরণাসমূহের মধ্যে ?

জহুরুল হক

''বাগানসমূহে ও ফোয়ারাগুলোয়,

وَزُرُوعࣲ وَنَخۡلࣲ طَلۡعُهَا هَضِیمࣱ ﴿148﴾

শস্যক্ষেত্রের মধ্যে এবং মঞ্জুরিত খেজুর বাগানের মধ্যে ?

জহুরুল হক

''আর শস্যক্ষেত্রে ও খেজুর-বাগানে যার ছড়িগুলো ভারী?

وَتَنۡحِتُونَ مِنَ ٱلۡجِبَالِ بُیُوتࣰا فَـٰرِهِینَ ﴿149﴾

তোমরা পাহাড় কেটে জাঁক জমকের গৃহ নির্মাণ করছ।

জহুরুল হক

''তোমরা তো পাহাড় খুদে বাড়িঘর তৈরি কর নিপুণভাবে।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿150﴾

সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুগত্য কর।

জহুরুল হক

''সুতরাং তোমরা আল্লাহ্‌কে ভক্তি-শ্রদ্ধা কর ও আমার আজ্ঞাপালন কর।

وَلَا تُطِیعُوۤا۟ أَمۡرَ ٱلۡمُسۡرِفِینَ ﴿151﴾

এবং সীমালংঘনকারীদের আদেশ মান্য কর না;

জহুরুল হক

''আর সীমালংঘনকারীদের নির্দেশ মেনে চল না, --

ٱلَّذِینَ یُفۡسِدُونَ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَلَا یُصۡلِحُونَ ﴿152﴾

যারা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে এবং শান্তি স্থাপন করে না;

জহুরুল হক

''যারা দেশে অশান্তি সৃষ্টি করে আর শান্তিস্থাপন করে না।’’

قَالُوۤا۟ إِنَّمَاۤ أَنتَ مِنَ ٱلۡمُسَحَّرِینَ ﴿153﴾

তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্থুরেদ একজন।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''তুমি তো নিঃসন্দেহ জাদুগ্রস্তদেরই একজন।

مَاۤ أَنتَ إِلَّا بَشَرࣱ مِّثۡلُنَا فَأۡتِ بِـَٔایَةٍ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِینَ ﴿154﴾

তুমি তো আমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নও। সুতরাং যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে কোন নিদর্শন উপস্থিত কর।

জহুরুল হক

''তুমি আমাদের মতো মানুষ ছাড়া আর কিছু নও, অতএব কোনো এক নিদর্শন নিয়ে এস যদি তুমি সত্যবাদীদের মধ্যেকার হও।’’

قَالَ هَـٰذِهِۦ نَاقَةࣱ لَّهَا شِرۡبࣱ وَلَكُمۡ شِرۡبُ یَوۡمࣲ مَّعۡلُومࣲ ﴿155﴾

সালেহ বললেন এই উষ্ট্রী, এর জন্যে আছে পানি পানের পালা এবং তোমাদের জন্যে আছে পানি পানের পালা নির্দিষ্ট এক-এক দিনের।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''এই একটি উষ্টী, তার জন্য পানীয় থাকবে আর তোমাদের জন্যও পানীয় থাকবে নির্ধারিত সময়ে।

وَلَا تَمَسُّوهَا بِسُوۤءࣲ فَیَأۡخُذَكُمۡ عَذَابُ یَوۡمٍ عَظِیمࣲ ﴿156﴾

তোমরা একে কোন কষ্ট দিও না। তাহলে তোমাদেরকে মহাদিবসের আযাব পাকড়াও করবে।

জহুরুল হক

''আর তোমরা অনিষ্ট দিয়ে ওকে স্পর্শ করো না, পাছে এক ভয়ংকর দিনের শাস্তি তোমাদের পাকড়াও করে।’’

فَعَقَرُوهَا فَأَصۡبَحُوا۟ نَـٰدِمِینَ ﴿157﴾

তারা তাকে বধ করল ফলে, তারা অনুতপ্ত হয়ে গেল।

জহুরুল হক

কিন্ত তারা এটিকে হত্যা করলে, পরিণামে সকাল-সকালই তারা পরিতাপকারী হল।

فَأَخَذَهُمُ ٱلۡعَذَابُۚ إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿158﴾

এরপর আযাব তাদেরকে পাকড়াও করল। নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

জহুরুল হক

সেজন্য শাস্তি তাদের পাকড়াও করল। নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে, কিন্ত তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয় ।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿159﴾

আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু -- তিনিই তো মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা।

كَذَّبَتۡ قَوۡمُ لُوطٍ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿160﴾

লূতের সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।

জহুরুল হক

আর লূতের লোকদল রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

إِذۡ قَالَ لَهُمۡ أَخُوهُمۡ لُوطٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿161﴾

যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না ?

জহুরুল হক

দেখো! তাদের ভাই লূত তাদের বলেছিলেন -- ''তোমরা কি ধর্মভীরুতা অবলন্বন করবে না?

إِنِّی لَكُمۡ رَسُولٌ أَمِینࣱ ﴿162﴾

আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।

জহুরুল হক

''আমি নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল,

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿163﴾

অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।

জহুরুল হক

''অতএব তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয়ভক্তি কর ও আমাকে মেনে চল।

وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿164﴾

আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তা দেবেন।

জহুরুল হক

''আর আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোনো মজুরি চাই না, আমার মজুরি তো বিশ্বজগতের প্রভুর কাছে ছাড়া অন্যত্র নয়।

أَتَأۡتُونَ ٱلذُّكۡرَانَ مِنَ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿165﴾

সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরূষদের সাথে কুকর্ম কর?

জহুরুল হক

''তোমরা কি মানুষজাতীর মধ্যে পুরুষদের কাছেই এসে থাক,

وَتَذَرُونَ مَا خَلَقَ لَكُمۡ رَبُّكُم مِّنۡ أَزۡوَ ٰ⁠جِكُمۚ بَلۡ أَنتُمۡ قَوۡمٌ عَادُونَ ﴿166﴾

এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যে স্ত্রীগনকে সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে বর্জন কর? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।

জহুরুল হক

''আর পরিত্যাগ করছ তোমাদের স্ত্রীদের যাদের তোমাদের প্রভু তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন? না, তোমরা তো সীমালংঘনকারী জাতি।’’

قَالُوا۟ لَىِٕن لَّمۡ تَنتَهِ یَـٰلُوطُ لَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡمُخۡرَجِینَ ﴿167﴾

তারা বলল, হে লূত, তুমি যদি বিরত না হও, তবে অবশ্যই তোমাকে বহিস্কৃত করা হবে।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''হে লূত! তুমি যদি বিরত না হও তাহলে তুমি নিশ্চয়ই নির্বাসিতদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’

قَالَ إِنِّی لِعَمَلِكُم مِّنَ ٱلۡقَالِینَ ﴿168﴾

লূত বললেন, আমি তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমি অবশ্যই তোমাদের আচরণকে ঘৃণাকারীদেরই একজন।

رَبِّ نَجِّنِی وَأَهۡلِی مِمَّا یَعۡمَلُونَ ﴿169﴾

হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এবং আমার পরিবারবর্গকে তারা যা করে, তা থেকে রক্ষা কর।

জহুরুল হক

''আমার প্রভু! তারা যা করে তা থেকে আমাকে ও আমার পরিবার পরিজনকে উদ্ধার করো।’’

فَنَجَّیۡنَـٰهُ وَأَهۡلَهُۥۤ أَجۡمَعِینَ ﴿170﴾

অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে রক্ষা করলাম।

জহুরুল হক

সুতরাং আমরা তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে একই সঙ্গে উদ্ধার করলাম, --

إِلَّا عَجُوزࣰا فِی ٱلۡغَـٰبِرِینَ ﴿171﴾

এক বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।

জহুরুল হক

এক বুড়ীকে ছাড়া, যে পেছনে-পড়ে-থাকাদের মধ্যে রয়েছিল।

ثُمَّ دَمَّرۡنَا ٱلۡـَٔاخَرِینَ ﴿172﴾

এরপর অন্যদেরকে নিপাত করলাম।

জহুরুল হক

তারপর আমরা অন্যান্যদের বিধ্বংস করেছিলাম।

وَأَمۡطَرۡنَا عَلَیۡهِم مَّطَرࣰاۖ فَسَاۤءَ مَطَرُ ٱلۡمُنذَرِینَ ﴿173﴾

তাদের উপর এক বিশেষ বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। ভীতি-প্রদর্শিত দের জন্যে এই বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট।

জহুরুল হক

আর তাদের উপরে আমরা বর্ষণ করেছিলাম এক বৃষ্টি, -- সুতরাং কত মন্দ এই বৃষ্টি সতককৃতদের জন্য।

إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿174﴾

নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে, কিন্ত তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿175﴾

নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু, -- তিনিই তো মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা।

كَذَّبَ أَصۡحَـٰبُ لۡـَٔیۡكَةِ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿176﴾

বনের অধিবাসীরা পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।

জহুরুল হক

আইকার অধিবাসীরা রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

إِذۡ قَالَ لَهُمۡ شُعَیۡبٌ أَلَا تَتَّقُونَ ﴿177﴾

যখন শো’আয়ব তাদের কে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না?

জহুরুল হক

দেখো, শোআইব তাদের বলেছিলেন -- ''তোমরা কি ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করবে না?

إِنِّی لَكُمۡ رَسُولٌ أَمِینࣱ ﴿178﴾

আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।

জহুরুল হক

''আমি নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল,

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿179﴾

অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।

জহুরুল হক

''অতএব তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয়ভক্তি কর ও আমাকে মেনে চল।

وَمَاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ مِنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِیَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿180﴾

আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তাই দেবেন।

জহুরুল হক

''আর আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাই না, আমার পারিশ্রমিক তো বিশ্বজগতের প্রভুর কাছে ছাড়া অন্যত্র নয়।

۞ أَوۡفُوا۟ ٱلۡكَیۡلَ وَلَا تَكُونُوا۟ مِنَ ٱلۡمُخۡسِرِینَ ﴿181﴾

মাপ পূর্ণ কর এবং যারা পরিমাপে কম দেয়, তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

জহুরুল হক

''মাপে পুরোমাত্রায় দেবে, আর তোমরা মাপে-কম-করা লোকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

وَزِنُوا۟ بِٱلۡقِسۡطَاسِ ٱلۡمُسۡتَقِیمِ ﴿182﴾

সোজা দাঁড়ি-পাল্লায় ওজন কর।

জহুরুল হক

''সঠিক পাল্লায় ওজন করো।

وَلَا تَبۡخَسُوا۟ ٱلنَّاسَ أَشۡیَاۤءَهُمۡ وَلَا تَعۡثَوۡا۟ فِی ٱلۡأَرۡضِ مُفۡسِدِینَ ﴿183﴾

মানুষকে তাদের বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে ফিরো না।

জহুরুল হক

''আর লোকজনের ক্ষতিসাধন করো না তাদের বিষয়বস্তু সন্বন্ধে, আর দুনিয়াতে বিপর্যয় ঘটিয়ো না অনিষ্টাচরণ ক’রে।

وَٱتَّقُوا۟ ٱلَّذِی خَلَقَكُمۡ وَٱلۡجِبِلَّةَ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿184﴾

ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তী লোক-সম্প্রদায়কে সৃষ্টি করেছেন।

জহুরুল হক

''আর ভয়-ভক্তি করো তাঁকে যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং পূর্ববর্তী লোকদেরও।’’

قَالُوۤا۟ إِنَّمَاۤ أَنتَ مِنَ ٱلۡمُسَحَّرِینَ ﴿185﴾

তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্তদের অন্যতম।

জহুরুল হক

তারা বললে -- ''তুমি তো আলবৎ জাদুগ্রস্তদের মধ্যেকার,’’

وَمَاۤ أَنتَ إِلَّا بَشَرࣱ مِّثۡلُنَا وَإِن نَّظُنُّكَ لَمِنَ ٱلۡكَـٰذِبِینَ ﴿186﴾

তুমি আমাদের মত মানুষ বৈ তো নও। আমাদের ধারণা-তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।

জহুরুল হক

''আর তুমি আমাদের ন্যায় একজন মানুষ ছাড়া আর কিছুই নও, আর আমরা তোমাকে মিথ্যাবাদীদের একজন বলেই তো গণনা করি।

فَأَسۡقِطۡ عَلَیۡنَا كِسَفࣰا مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِینَ ﴿187﴾

অতএব, যদি সত্যবাদী হও, তবে আকাশের কোন টুকরো আমাদের উপর ফেলে দাও।

জহুরুল হক

''অতএব আকাশের একটি টুকরো আমাদের উপরে ফেলে দাও, যদি তুমি সত্যবাদীদের মধ্যেকার হও।’’

قَالَ رَبِّیۤ أَعۡلَمُ بِمَا تَعۡمَلُونَ ﴿188﴾

শো’আয়ব বললেন, তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে আমার পালনকর্তা ভালরূপে অবহিত।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু ভাল জানেন কী তোমরা কর।’’

فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمۡ عَذَابُ یَوۡمِ ٱلظُّلَّةِۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیمٍ ﴿189﴾

অতঃপর তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলে দিল। ফলে তাদেরকে মেঘাচ্ছন্ন দিবসের আযাব পাকড়াও করল। নিশ্চয় সেটা ছিল এক মহাদিবসের আযাব।

জহুরুল হক

কিন্ত তারা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করল, সেজন্যে এক অন্ধকার দিনের শাস্তি তাদের পাকড়াও করল। নিঃসন্দেহ এটি ছিল এক ভীষণ দিনে শাস্তি।

إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰۖ وَمَا كَانَ أَكۡثَرُهُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿190﴾

নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে, কিন্ত তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿191﴾

নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু, -- তিনিই তো মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَإِنَّهُۥ لَتَنزِیلُ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿192﴾

এই কোরআন তো বিশ্ব-জাহানের পালনকর্তার নিকট থেকে অবতীর্ণ।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ এটি নিশ্চয়ই বিশ্বজগতের প্রভুর তরফ থেকে এক অবতারণ।

نَزَلَ بِهِ ٱلرُّوحُ ٱلۡأَمِینُ ﴿193﴾

বিশ্বস্ত ফেরেশতা একে নিয়ে অবতরণ করেছে।

জহুরুল হক

রুহুল আমীন এটি নিয়ে অবতরণ করেছেন --

عَلَىٰ قَلۡبِكَ لِتَكُونَ مِنَ ٱلۡمُنذِرِینَ ﴿194﴾

আপনার অন্তরে, যাতে আপনি ভীতি প্রদর্শণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হন,

জহুরুল হক

তোমার হৃদয়ের উপরে, যেন তুমি সতর্ককারীদের অন্যতম হতে পার, --

بِلِسَانٍ عَرَبِیࣲّ مُّبِینࣲ ﴿195﴾

সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়।

জহুরুল হক

সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়।

وَإِنَّهُۥ لَفِی زُبُرِ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿196﴾

নিশ্চয় এর উল্লেখ আছে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ এটি পূর্ববর্তীদের ধর্মগ্রন্থে রয়েছে ।

أَوَلَمۡ یَكُن لَّهُمۡ ءَایَةً أَن یَعۡلَمَهُۥ عُلَمَـٰۤؤُا۟ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ ﴿197﴾

তাদের জন্যে এটা কি নিদর্শন নয় যে, বনী-ইসরাঈলের আলেমগণ এটা অবগত আছে?

জহুরুল হক

একি তাদের জন্য একটি নিদর্শন নয় যে ইসরাইলের বংশধরদের পন্ডিতগণ এটি জানে?

وَلَوۡ نَزَّلۡنَـٰهُ عَلَىٰ بَعۡضِ ٱلۡأَعۡجَمِینَ ﴿198﴾

যদি আমি একে কোন ভিন্নভাষীর প্রতি অবতীর্ণ করতাম,

জহুরুল হক

আর আমরা যদি এটি অবতারণ করতাম কোনো ভিন্ন দেশীয়ের কাছে,

فَقَرَأَهُۥ عَلَیۡهِم مَّا كَانُوا۟ بِهِۦ مُؤۡمِنِینَ ﴿199﴾

অতঃপর তিনি তা তাদের কাছে পাঠ করতেন, তবে তারা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করত না।

জহুরুল হক

আর সে এটি তাদের কাছে পাঠ করত, তাহলে তারা তাতে বিশ্বাসভাজন হতো না।

كَذَ ٰ⁠لِكَ سَلَكۡنَـٰهُ فِی قُلُوبِ ٱلۡمُجۡرِمِینَ ﴿200﴾

এমনিভাবে আমি গোনাহগারদের অন্তরে অবিশ্বাস সঞ্চার করেছি।

জহুরুল হক

এইভাবেই আমরা এটিকে প্রবেশ করিয়েছি অপরাধীদের অন্তরে।

لَا یُؤۡمِنُونَ بِهِۦ حَتَّىٰ یَرَوُا۟ ٱلۡعَذَابَ ٱلۡأَلِیمَ ﴿201﴾

তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে না, যে পর্যন্ত প্রত্যক্ষ না করে মর্মন্তুদ আযাব।

জহুরুল হক

তারা এতে বিশ্বাস করবে না যে পর্যন্ত না তারা মর্মন্তুদ শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।

فَیَأۡتِیَهُم بَغۡتَةࣰ وَهُمۡ لَا یَشۡعُرُونَ ﴿202﴾

অতঃপর তা আকস্মিকভাবে তাদের কাছে এসে পড়বে, তারা তা বুঝতে ও পারবে না।

জহুরুল হক

সুতরাং এ তাদের কাছে আসবে আকস্মিকভাবে, আর তারা টের পাবে না।

فَیَقُولُوا۟ هَلۡ نَحۡنُ مُنظَرُونَ ﴿203﴾

তখন তারা বলবে, আমরা কি অবকাশ পাব না?

জহুরুল হক

তখন তারা বলবে -- ''আমরা কি অবকাশ প্রাপ্ত হব?’’

أَفَبِعَذَابِنَا یَسۡتَعۡجِلُونَ ﴿204﴾

তারা কি আমার শাস্তি দ্রুত কামনা করে?

জহুরুল হক

কী, তারা কি এখনও আমাদের শাস্তি সন্বন্ধে তাড়াতাড়ি করতে চায়?

أَفَرَءَیۡتَ إِن مَّتَّعۡنَـٰهُمۡ سِنِینَ ﴿205﴾

আপনি ভেবে দেখুন তো, যদি আমি তাদেরকে বছরের পর বছর ভোগ-বিলাস করতে দেই,

জহুরুল হক

তুমি কি তবে লক্ষ্য করেছ -- যদি আমরা তাদের বহু বছর ভোগ-বিলাস করতে দিই।

ثُمَّ جَاۤءَهُم مَّا كَانُوا۟ یُوعَدُونَ ﴿206﴾

অতঃপর যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হত, তা তাদের কাছে এসে পড়ে।

জহুরুল হক

তারপর তাদের কাছে এসে পড়ে যা তাদের ওয়াদা করা হয়েছিল --

مَاۤ أَغۡنَىٰ عَنۡهُم مَّا كَانُوا۟ یُمَتَّعُونَ ﴿207﴾

তখন তাদের ভোগ বিলাস তা তাদের কি কোন উপকারে আসবে?

জহুরুল হক

তবু যা তাদের উপভোগ করতে দেওয়া হয়েছিল তা তাদের কোনো কাজে আসবে না?

وَمَاۤ أَهۡلَكۡنَا مِن قَرۡیَةٍ إِلَّا لَهَا مُنذِرُونَ ﴿208﴾

আমি কোন জনপদ ধ্বংস করিনি; কিন্তু এমতাবস্থায় যে, তারা সতর্ককারী ছিল।

জহুরুল হক

আর আমরা কোনো জনপদ ধ্বংস করি নি যার সতর্ককারী ছিল না।

ذِكۡرَىٰ وَمَا كُنَّا ظَـٰلِمِینَ ﴿209﴾

স্মরণ করানোর জন্যে, এবং আমার কাজ অন্যায়াচরণ নয়।

জহুরুল হক

স্মারকগ্রন্থ, আর আমরা কখনও অন্যায়কারী নই।

وَمَا تَنَزَّلَتۡ بِهِ ٱلشَّیَـٰطِینُ ﴿210﴾

এই কোরআন শয়তানরা অবতীর্ণ করেনি।

জহুরুল হক

আর শয়তানরা এ নিয়ে অবতরণ করে নি,

وَمَا یَنۢبَغِی لَهُمۡ وَمَا یَسۡتَطِیعُونَ ﴿211﴾

তারা এ কাজের উপযুক্ত নয় এবং তারা এর সামর্থ?451; রাখে না।

জহুরুল হক

আর তাদের পক্ষে এ সমীচীন নয়, আর তারা সামর্থ্যও রাখে না।

إِنَّهُمۡ عَنِ ٱلسَّمۡعِ لَمَعۡزُولُونَ ﴿212﴾

তাদেরকে তো শ্রবণের জায়গা থেকে দূরে রাখা রয়েছে।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ শুনবার ক্ষেত্রে তারা তো অপারগ।

فَلَا تَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَـٰهًا ءَاخَرَ فَتَكُونَ مِنَ ٱلۡمُعَذَّبِینَ ﴿213﴾

অতএব, আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহবান করবেন না। করলে শাস্তিতে পতিত হবেন।

জহুরুল হক

সুতরাং তুমি আল্লাহ্‌র সাথে অন্য উপাস্যকে ডেকো না, পাছে তুমি শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যেকার হয়ে যাও।

وَأَنذِرۡ عَشِیرَتَكَ ٱلۡأَقۡرَبِینَ ﴿214﴾

আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।

জহুরুল হক

আর তোমার নিকটতম আ‌ত্মীয়দের সাবধান করে দাও,

وَٱخۡفِضۡ جَنَاحَكَ لِمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿215﴾

এবং আপনার অনুসারী মুমিনদের প্রতি সদয় হোন।

জহুরুল হক

আর তোমার ডানা আনত করো মুমিনদের যারা তোমাকে অনুসরণ করে তাদের প্রতি।

فَإِنۡ عَصَوۡكَ فَقُلۡ إِنِّی بَرِیۤءࣱ مِّمَّا تَعۡمَلُونَ ﴿216﴾

যদি তারা আপনার অবাধ্য করে, তবে বলে দিন, তোমরা যা কর, তা থেকে আমি মুক্ত।

জহুরুল হক

কিন্ত তারা যদি তোমার অবাধ্যতা করে তবে বলো -- ''আমি আলবৎ দায়মুক্ত তোমরা যা কর সে সন্বন্ধে।’’

وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱلۡعَزِیزِ ٱلرَّحِیمِ ﴿217﴾

আপনি ভরসা করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালুর উপর,

জহুরুল হক

আর তুমি নির্ভর কর মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতার উপরে, --

ٱلَّذِی یَرَىٰكَ حِینَ تَقُومُ ﴿218﴾

যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি নামাযে দন্ডায়মান হন,

জহুরুল হক

যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দাঁড়াও,

وَتَقَلُّبَكَ فِی ٱلسَّـٰجِدِینَ ﴿219﴾

এবং নামাযীদের সাথে উঠাবসা করেন।

জহুরুল হক

এবং সিজদাকারীদের সঙ্গে তোমার উঠা-বসা করতে।

إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِیعُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿220﴾

নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ তিনি -- তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

هَلۡ أُنَبِّئُكُمۡ عَلَىٰ مَن تَنَزَّلُ ٱلشَّیَـٰطِینُ ﴿221﴾

আমি আপনাকে বলব কি কার নিকট শয়তানরা অবতরণ করে?

জহুরুল হক

আমি কি তোমাদের জানাব কাদের উপরে শয়তানরা অবতরণ করে?

تَنَزَّلُ عَلَىٰ كُلِّ أَفَّاكٍ أَثِیمࣲ ﴿222﴾

তারা অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক মিথ্যাবাদী, গোনাহগারের উপর।

জহুরুল হক

তারা অবতরণ করে প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপাচারীর উপরে,

یُلۡقُونَ ٱلسَّمۡعَ وَأَكۡثَرُهُمۡ كَـٰذِبُونَ ﴿223﴾

তারা শ্রুত কথা এনে দেয় এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।

জহুরুল হক

তারা কান পাতে, আর তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।

وَٱلشُّعَرَاۤءُ یَتَّبِعُهُمُ ٱلۡغَاوُۥنَ ﴿224﴾

বিভ্রান্ত লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে।

জহুরুল হক

আর কবিগণ, -- তাদের অনুসরণ করে ভ্রান্তপথগামীরা।

أَلَمۡ تَرَ أَنَّهُمۡ فِی كُلِّ وَادࣲ یَهِیمُونَ ﴿225﴾

তুমি কি দেখ না যে, তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে?

জহুরুল হক

তুমি কি দেখ না যে তারা নিঃসন্দেহ প্রত্যেক উপত্যকায় লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ায়,

وَأَنَّهُمۡ یَقُولُونَ مَا لَا یَفۡعَلُونَ ﴿226﴾

এবং এমন কথা বলে, যা তারা করে না।

জহুরুল হক

আর তারা নিশ্চয়ই তাই বলে যা তারা করে না? --

إِلَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَذَكَرُوا۟ ٱللَّهَ كَثِیرࣰا وَٱنتَصَرُوا۟ مِنۢ بَعۡدِ مَا ظُلِمُوا۟ۗ وَسَیَعۡلَمُ ٱلَّذِینَ ظَلَمُوۤا۟ أَیَّ مُنقَلَبࣲ یَنقَلِبُونَ ﴿227﴾

তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ।

জহুরুল হক

তবে তারা ব্যতীত যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, এবং আল্লাহ্‌কে খুব ক’রে স্মরণ করে, আর অত্যাচারিত হবার পরে প্রতিরক্ষা করে। আর যারা অন্যায় করে তারা অচিরেই জানতে পারবে কোন বিপর্যয়ের মধ্যে তারা প্রত্যাবর্তন করছে।