Main pages

Surah The Coalition [Al-Ahzab] in Bengali

Surah The Coalition [Al-Ahzab] Ayah 73 Location Makkah Number 33

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ ٱتَّقِ ٱللَّهۚ وَلَا تُطِعِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ وَٱلۡمُنَـٰفِقِینَۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿1﴾

হে নবী! আল্লাহকে ভয় করুন এবং কাফের ও কপট বিশ্বাসীদের কথা মানবেন না। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

জহুরুল হক

হে প্রিয় নবী! আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করো আর অবিশ্বাসীদের ও মুনাফিকদের আজ্ঞাপালন করো না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

وَٱتَّبِعۡ مَا یُوحَىٰۤ إِلَیۡكَ مِن رَّبِّكَۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣰا ﴿2﴾

আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়, আপনি তার অনুসরণ করুন। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।

জহুরুল হক

আর তুমি অনুসরণ করো তোমার প্রভুর কাছ থেকে তোমার নিকট যা প্রত্যাদেশ করা হয়েছে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর সে-সন্বন্ধে আল্লাহ্ পূর্ণ ওয়াকিফহাল।

وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِیلࣰا ﴿3﴾

আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করুন। কার্যনির্বাহীরূপে আল্লাহই যথেষ্ট।

জহুরুল হক

আর আল্লাহ্‌র উপরে নির্ভর করো। বস্তুত কর্ণধাররূপে আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট।

مَّا جَعَلَ ٱللَّهُ لِرَجُلࣲ مِّن قَلۡبَیۡنِ فِی جَوۡفِهِۦۚ وَمَا جَعَلَ أَزۡوَ ٰ⁠جَكُمُ ٱلَّـٰۤـِٔی تُظَـٰهِرُونَ مِنۡهُنَّ أُمَّهَـٰتِكُمۡۚ وَمَا جَعَلَ أَدۡعِیَاۤءَكُمۡ أَبۡنَاۤءَكُمۡۚ ذَ ٰ⁠لِكُمۡ قَوۡلُكُم بِأَفۡوَ ٰ⁠هِكُمۡۖ وَٱللَّهُ یَقُولُ ٱلۡحَقَّ وَهُوَ یَهۡدِی ٱلسَّبِیلَ ﴿4﴾

আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর, তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন।

জহুরুল হক

আল্লাহ্ কোনো মানুষের জন্য তার ধড়ের মধ্যে দুটি হৃদয় বানান নি, আর তোমাদের স্ত্রীদেরও যাদের থেকে তোমরা 'যিহার’ ক’রে ফিরে গেছ তাদের তিনি তোমাদের মা বানান নি, আর তোমাদের পোষ্য-সন্তানদেরও তোমাদের সন্তান বানান নি। এ-সব হচ্ছে তোমাদের মুখ দিয়ে তোমাদের কথা। আর আল্লাহ্‌ই সত্যকথা বলেন, আর তিনিই পথে পরিচালিত করেন।

ٱدۡعُوهُمۡ لِـَٔابَاۤىِٕهِمۡ هُوَ أَقۡسَطُ عِندَ ٱللَّهِۚ فَإِن لَّمۡ تَعۡلَمُوۤا۟ ءَابَاۤءَهُمۡ فَإِخۡوَ ٰ⁠نُكُمۡ فِی ٱلدِّینِ وَمَوَ ٰ⁠لِیكُمۡۚ وَلَیۡسَ عَلَیۡكُمۡ جُنَاحࣱ فِیمَاۤ أَخۡطَأۡتُم بِهِۦ وَلَـٰكِن مَّا تَعَمَّدَتۡ قُلُوبُكُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمًا ﴿5﴾

তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত। যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

তোমরা তাদের সন্বোধন কর তাদের বাপেদের নামে, এটিই আল্লাহ্‌র কাছে বেশি ন্যায়সংগত। কিন্তু যদি তোমরা তাদের পিতাদের না জানো তাহলে তারা তোমাদের ধর্ম-ভাই ও তোমাদের বন্ধুবান্ধব। আর তোমাদের উপরে কোনো অপরাধ হবে না সে-সবে যাতে তোমরা ভুল কর, কিন্তু যা তোমাদের হৃদয় মতলব আঁটে। আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

ٱلنَّبِیُّ أَوۡلَىٰ بِٱلۡمُؤۡمِنِینَ مِنۡ أَنفُسِهِمۡۖ وَأَزۡوَ ٰ⁠جُهُۥۤ أُمَّهَـٰتُهُمۡۗ وَأُو۟لُوا۟ ٱلۡأَرۡحَامِ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلَىٰ بِبَعۡضࣲ فِی كِتَـٰبِ ٱللَّهِ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَٱلۡمُهَـٰجِرِینَ إِلَّاۤ أَن تَفۡعَلُوۤا۟ إِلَىٰۤ أَوۡلِیَاۤىِٕكُم مَّعۡرُوفࣰاۚ كَانَ ذَ ٰ⁠لِكَ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ مَسۡطُورࣰا ﴿6﴾

নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মুমিন ও মুহাজিরগণের মধ্যে যারা আত্নীয়, তারা পরস্পরে অধিক ঘনিষ্ঠ। তবে তোমরা যদি তোমাদের বন্ধুদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্য করতে চাও, করতে পার। এটা লওহে-মাহফুযে লিখিত আছে।

জহুরুল হক

এই নবী মুমিনদের কাছে তাদের নিজেদের চেয়েও অধিক অন্তরঙ্গ, আর তাঁর পত্নীগণ হচ্ছেন তাদের মাতা। আর গর্ভজাত সম্পর্কধারীরা -- তারা আল্লাহ্‌র বিধানে একে অন্যে অধিকতর নিকটবর্তী মুমিনদের ও মুহাজিরদের চাইতে, তবে তোমরা যেন তোমাদের বন্ধুবর্গের প্রতি সদাচার করো। এমনটাই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে।

وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِنَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ مِیثَـٰقَهُمۡ وَمِنكَ وَمِن نُّوحࣲ وَإِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ وَمُوسَىٰ وَعِیسَى ٱبۡنِ مَرۡیَمَۖ وَأَخَذۡنَا مِنۡهُم مِّیثَـٰقًا غَلِیظࣰا ﴿7﴾

যখন আমি পয়গম্বরগণের কাছ থেকে, আপনার কাছ থেকে এবং নূহ, ইব্রাহীম, মূসা ও মরিয়ম তনয় ঈসার কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম এবং অঙ্গীকার নিলাম তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার।

জহুরুল হক

আর স্মরণ কর! আমরা নবীদের থেকে তাঁদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম, আর তোমার কাছ থেকেও, আর নূহ ও ইব্রাহীম ও মূসা ও মরিয়ম-পুত্র ঈসার কাছ থেকে, আর তাঁদের কাছ থেকে আমরা গ্রহণ করেছিলাম এক জোরালো অংগীকার --

لِّیَسۡـَٔلَ ٱلصَّـٰدِقِینَ عَن صِدۡقِهِمۡۚ وَأَعَدَّ لِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابًا أَلِیمࣰا ﴿8﴾

সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য। তিনি কাফেরদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।

জহুরুল হক

যেন তিনি সত্যবাদীদের জিজ্ঞাসা করতে পারেন তাঁদের সত্যবাদিতা সন্বন্ধে, আর অবিশ্বাসীদের জন্য তিনি প্রস্তুত রেখেছেন মর্মন্তুদ শাস্তি।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَةَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ إِذۡ جَاۤءَتۡكُمۡ جُنُودࣱ فَأَرۡسَلۡنَا عَلَیۡهِمۡ رِیحࣰا وَجُنُودࣰا لَّمۡ تَرَوۡهَاۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِیرًا ﴿9﴾

হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যখন শত্রুবাহিনী তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছিল, অতঃপর আমি তাদের বিরুদ্ধে ঝঞ্চাবায়ু এবং এমন সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেছিলাম, যাদেরকে তোমরা দেখতে না। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের উপরে আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ স্মরণ কর, যখন তোমাদের উপরে সৈন্যদল এসে পড়েছিল, তখন আমরা তাদের বিরুদ্ধে পাঠালাম এক ঝড়-ঝঞ্চা, আর এক বাহিনী যা তোমরা দেখতে পাও নি। আর তোমরা যা করছিলে সে-সন্বন্ধে আল্লাহ্ সর্বদ্রষ্টা।

إِذۡ جَاۤءُوكُم مِّن فَوۡقِكُمۡ وَمِنۡ أَسۡفَلَ مِنكُمۡ وَإِذۡ زَاغَتِ ٱلۡأَبۡصَـٰرُ وَبَلَغَتِ ٱلۡقُلُوبُ ٱلۡحَنَاجِرَ وَتَظُنُّونَ بِٱللَّهِ ٱلظُّنُونَا۠ ﴿10﴾

যখন তারা তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছিল উচ্চ ভূমি ও নিম্নভূমি থেকে এবং যখন তোমাদের দৃষ্টিভ্রম হচ্ছিল, প্রাণ কন্ঠাগত হয়েছিল এবং তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানা বিরূপ ধারণা পোষণ করতে শুরু করছিলে।

জহুরুল হক

স্মরণ করো! তারা তোমাদের উপরে এসে পড়েছিল তোমাদের উপর থেকে এবং তোমাদের চেয়ে নিচে থেকে, আর যখন চোখগুলো বিারিত হয়েছিল আর হৃৎপিন্ডগুলো পৌঁছেগিয়েছিল গলদেশে, আর তোমরা আল্লাহ্‌র সন্বন্ধে নানান ভুল ধারণা ধারণ করেছিলে।

هُنَالِكَ ٱبۡتُلِیَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَزُلۡزِلُوا۟ زِلۡزَالࣰا شَدِیدࣰا ﴿11﴾

সে সময়ে মুমিনগণ পরীক্ষিত হয়েছিল এবং ভীষণভাবে প্রকম্পিত হচ্ছিল।

জহুরুল হক

সেখানে মুমিনদের পরীক্ষা করা হয়েছিল, আর তাদের ঝাঁকানো হয়েছিল কঠিন ঝাঁকানিতে।

وَإِذۡ یَقُولُ ٱلۡمُنَـٰفِقُونَ وَٱلَّذِینَ فِی قُلُوبِهِم مَّرَضࣱ مَّا وَعَدَنَا ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥۤ إِلَّا غُرُورࣰا ﴿12﴾

এবং যখন মুনাফিক ও যাদের অন্তরে রোগ ছিল তারা বলছিল, আমাদেরকে প্রদত্ত আল্লাহ ও রসূলের প্রতিশ্রুতি প্রতারণা বৈ নয়।

জহুরুল হক

আর স্মরণ করো! মুনাফিকরা ও যাদের হৃদয়ে ব্যাধি রয়েছে তারা বলছিল -- ''আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল আমাদের কাছে প্রতারণা করা ছাড়া অন্য ওয়াদা করেন নি।’’

وَإِذۡ قَالَت طَّاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡهُمۡ یَـٰۤأَهۡلَ یَثۡرِبَ لَا مُقَامَ لَكُمۡ فَٱرۡجِعُوا۟ۚ وَیَسۡتَـٔۡذِنُ فَرِیقࣱ مِّنۡهُمُ ٱلنَّبِیَّ یَقُولُونَ إِنَّ بُیُوتَنَا عَوۡرَةࣱ وَمَا هِیَ بِعَوۡرَةٍۖ إِن یُرِیدُونَ إِلَّا فِرَارࣰا ﴿13﴾

এবং যখন তাদের একদল বলেছিল, হে ইয়াসরেববাসী, এটা টিকবার মত জায়গা নয়, তোমরা ফিরে চল। তাদেরই একদল নবীর কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে বলেছিল, আমাদের বাড়ী-ঘর খালি, অথচ সেগুলো খালি ছিল না, পলায়ন করাই ছিল তাদের ইচ্ছা।

জহুরুল হক

আর স্মরণ করো! তাদের মধ্যের একদল বলেছিল -- ''হে ইয়াছরিব-এর বাসিন্দারা! তোমাদের জন্য দাঁড়াবার জায়গা নেই, সেজন্য ফিরে যাও।’’ আর তাদের মধ্যের কোনো দল নবীর কাছে অনুমতি চাইছিল এই বলে -- ''আমাদের বাড়িঘর নিশ্চয়ই অনাবৃত।’’ কিন্তু সেগুলো অনাবৃত ছিল না। তারা তো চাইছিল কেবল পালিয়ে যেতে।

وَلَوۡ دُخِلَتۡ عَلَیۡهِم مِّنۡ أَقۡطَارِهَا ثُمَّ سُىِٕلُوا۟ ٱلۡفِتۡنَةَ لَـَٔاتَوۡهَا وَمَا تَلَبَّثُوا۟ بِهَاۤ إِلَّا یَسِیرࣰا ﴿14﴾

যদি শত্রুপক্ষ চতুর্দিক থেকে নগরে প্রবেশ করে তাদের সাথে মিলিত হত, অতঃপর বিদ্রোহ করতে প্ররোচিত করত, তবে তারা অবশ্যই বিদ্রোহ করত এবং তারা মোটেই বিলম্ব করত না।

জহুরুল হক

আর যদি এর সীমানা থেকে তাদের উপরে অনুপ্রবেশ হত এবং তাদের বলা হত বিদ্রোহ করতে, তাহলে তারা অবশ্যই তাতে এসে পড়ত, আর তারা সেখানে অবস্থান করত না অল্পক্ষণ ছাড়া।

وَلَقَدۡ كَانُوا۟ عَـٰهَدُوا۟ ٱللَّهَ مِن قَبۡلُ لَا یُوَلُّونَ ٱلۡأَدۡبَـٰرَۚ وَكَانَ عَهۡدُ ٱللَّهِ مَسۡـُٔولࣰا ﴿15﴾

অথচ তারা পূর্বে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিল যে, তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে না। আল্লাহর অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।

জহুরুল হক

আর ইতিপূর্বে তো তারা আল্লাহ্‌র কাছে ওয়াদা করেছিল যে তারা পিঠ ফেরাবে না। আর আল্লাহ্‌র সঙ্গের অংগীকার সন্বন্ধে সওয়াল করা হবে।

قُل لَّن یَنفَعَكُمُ ٱلۡفِرَارُ إِن فَرَرۡتُم مِّنَ ٱلۡمَوۡتِ أَوِ ٱلۡقَتۡلِ وَإِذࣰا لَّا تُمَتَّعُونَ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿16﴾

বলুন! তোমরা যদি মৃত্যু অথবা হত্যা থেকে পলায়ন কর, তবে এ পলায়ন তোমাদের কাজে আসবে না। তখন তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করতে দেয়া হবে।

জহুরুল হক

বলো -- ''পালিয়ে যাওয়া কখনো তোমাদের লাভবান করবে না, যদিও তোমরা মৃত্যু অথবা কাতল হওয়া থেকে পলায়ন কর, আর সে-ক্ষেত্রে তোমরা উপভোগ করতে পারবে না অল্পক্ষণ ছাড়া।’’

قُلۡ مَن ذَا ٱلَّذِی یَعۡصِمُكُم مِّنَ ٱللَّهِ إِنۡ أَرَادَ بِكُمۡ سُوۤءًا أَوۡ أَرَادَ بِكُمۡ رَحۡمَةࣰۚ وَلَا یَجِدُونَ لَهُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَلِیࣰّا وَلَا نَصِیرࣰا ﴿17﴾

বলুন! কে তোমাদেরকে আল্লাহ থেকে রক্ষা করবে যদি তিনি তোমাদের অমঙ্গল ইচ্ছা করেন অথবা তোমাদের প্রতি অনুকম্পার ইচ্ছা? তারা আল্লাহ ব্যতীত নিজেদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যদাতা পাবে না।

জহুরুল হক

তুমি বলো -- ''কে আছে যে তোমাদের আল্লাহ্‌র থেকে বাধা দিতে পারে যদি তিনি তোমাদের জন্য অনিষ্ট ইচ্ছা করেন অথবা তোমাদের জন্য অনুগ্রহ চান?’’ আর তাদের জন্য আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে তারা পাবে না কোনো অভিভাবক, আর না কোনো সাহায্যকারী।

۞ قَدۡ یَعۡلَمُ ٱللَّهُ ٱلۡمُعَوِّقِینَ مِنكُمۡ وَٱلۡقَاۤىِٕلِینَ لِإِخۡوَ ٰ⁠نِهِمۡ هَلُمَّ إِلَیۡنَاۖ وَلَا یَأۡتُونَ ٱلۡبَأۡسَ إِلَّا قَلِیلًا ﴿18﴾

আল্লাহ খুব জানেন তোমাদের মধ্যে কারা তোমাদেরকে বাধা দেয় এবং কারা তাদের ভাইদেরকে বলে, আমাদের কাছে এস। তারা কমই যুদ্ধ করে।

জহুরুল হক

আল্লাহ্ আলবৎ জেনে গেছেন তোমাদের মধ্যের বাধাদান-কারীদের, আর যারা তাদের ভাই-বিরাদরের প্রতি বলে -- ''আমাদের সঙ্গে এখানে চলে এসো।’’ আর তারা যুদ্ধে আসে না অল্প কয়জন ছাড়া, --

أَشِحَّةً عَلَیۡكُمۡۖ فَإِذَا جَاۤءَ ٱلۡخَوۡفُ رَأَیۡتَهُمۡ یَنظُرُونَ إِلَیۡكَ تَدُورُ أَعۡیُنُهُمۡ كَٱلَّذِی یُغۡشَىٰ عَلَیۡهِ مِنَ ٱلۡمَوۡتِۖ فَإِذَا ذَهَبَ ٱلۡخَوۡفُ سَلَقُوكُم بِأَلۡسِنَةٍ حِدَادٍ أَشِحَّةً عَلَى ٱلۡخَیۡرِۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَمۡ یُؤۡمِنُوا۟ فَأَحۡبَطَ ٱللَّهُ أَعۡمَـٰلَهُمۡۚ وَكَانَ ذَ ٰ⁠لِكَ عَلَى ٱللَّهِ یَسِیرࣰا ﴿19﴾

তারা তোমাদের প্রতি কুন্ঠাবোধ করে। যখন বিপদ আসে, তখন আপনি দেখবেন মৃত্যুভয়ে অচেতন ব্যক্তির মত চোখ উল্টিয়ে তারা আপনার প্রতি তাকায়। অতঃপর যখন বিপদ টলে যায় তখন তারা ধন-সম্পদ লাভের আশায় তোমাদের সাথে বাকচাতুরীতে অবতীর্ণ হয়। তারা মুমিন নয়। তাই আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ নিস্ফল করে দিয়েছেন। এটা আল্লাহর জন্যে সহজ।

জহুরুল হক

তোমাদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে। কিন্তু যখন কোনো বিপদ আসে তখন তুমি তাদের দেখতে পাবে তারা তোমার দিকে চেয়ে আছে, -- তাদের চোখ ঘুরছে তার মতো যে মৃত্যুর কারণে মূর্চ্ছা গেছে। তারপর যখন বিপদ চলে যায় তখন তারা তোমাদের আঘাত করে তীক্ষ জিহবা দিয়ে সৌভাগ্যের জন্য ঈর্ষান্বিত হয়ে। এরা বিশ্বাস করে নি, সেজন্য আল্লাহ্ তাদের কীর্তিকলাপ বিফল করেছেন। আর এটি তো আল্লাহ্‌র জন্য সহজ।

یَحۡسَبُونَ ٱلۡأَحۡزَابَ لَمۡ یَذۡهَبُوا۟ۖ وَإِن یَأۡتِ ٱلۡأَحۡزَابُ یَوَدُّوا۟ لَوۡ أَنَّهُم بَادُونَ فِی ٱلۡأَعۡرَابِ یَسۡـَٔلُونَ عَنۡ أَنۢبَاۤىِٕكُمۡۖ وَلَوۡ كَانُوا۟ فِیكُم مَّا قَـٰتَلُوۤا۟ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿20﴾

তারা মনে করে শক্রবাহিনী চলে যায়নি। যদি শক্রবাহিনী আবার এসে পড়ে, তবে তারা কামনা করবে যে, যদি তারা গ্রামবাসীদের মধ্য থেকে তোমাদের সংবাদাদি জেনে নিত, তবেই ভাল হত। তারা তোমাদের মধ্যে অবস্থান করলেও যুদ্ধ সামান্যই করত।

জহুরুল হক

তারা ভেবেছিল যে জোট-বাঁধা ফৌজ চলে যাচ্ছে না, আর যদি জোট-বাধাঁ ফৌজ আসত তবে তারা কামনা করত -- যদি তারা আরবের বেদুইন হয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারত তোমাদের খোঁজখবর সন্বন্ধে। আর যদি তারা তোমাদের সঙ্গেও থাকে তবু তারা যুদ্ধ করত না অল্প একটু ছাড়া।

لَّقَدۡ كَانَ لَكُمۡ فِی رَسُولِ ٱللَّهِ أُسۡوَةٌ حَسَنَةࣱ لِّمَن كَانَ یَرۡجُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلۡیَوۡمَ ٱلۡـَٔاخِرَ وَذَكَرَ ٱللَّهَ كَثِیرࣰا ﴿21﴾

যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।

জহুরুল হক

তোমাদের জন্য নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌র রসূলের মধ্যে রয়েছে এক অত্যুৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত তার জন্য যে আল্লাহ্‌কে ও আখেরাতের দিনকে কামনা করে আর আল্লাহ্‌কে প্রচুর পরিমাণে স্মরণ করে!

وَلَمَّا رَءَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلۡأَحۡزَابَ قَالُوا۟ هَـٰذَا مَا وَعَدَنَا ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَصَدَقَ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥۚ وَمَا زَادَهُمۡ إِلَّاۤ إِیمَـٰنࣰا وَتَسۡلِیمࣰا ﴿22﴾

যখন মুমিনরা শক্রবাহিনীকে দেখল, তখন বলল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল এরই ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্য বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আত্নসমর্পণই বৃদ্ধি পেল।

জহুরুল হক

আর যখন মুমিনগণ জোট-বাঁধা ফৌজের দেখা পেল তারা বললে -- ''এটিই তো তাই যার কথা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল আমাদের কাছে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, আর আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল সত্যকথাই বলেছিলেন। আর এটি তাদের বিশ্বাস ও আনুগত্য ব্যতীত অন্য কিছু বাড়ায় নি।

مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ رِجَالࣱ صَدَقُوا۟ مَا عَـٰهَدُوا۟ ٱللَّهَ عَلَیۡهِۖ فَمِنۡهُم مَّن قَضَىٰ نَحۡبَهُۥ وَمِنۡهُم مَّن یَنتَظِرُۖ وَمَا بَدَّلُوا۟ تَبۡدِیلࣰا ﴿23﴾

মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।

জহুরুল হক

মুমিনদের মধ্যে এমন লোক রয়েছে যারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে তারা যা ওয়াদা করেছে সে-সন্বন্ধে সত্যপরায়ণতা অবলন্বন করে, সেজন্যে তাদের মধ্যে কেউ-কেউ তার ব্রত পূর্ণ করেছে, আর তাদের মধ্যে কেউ-কেউ প্রতীক্ষা করছে, আর তারা কোনো বদলানো বদলায় নি, --

لِّیَجۡزِیَ ٱللَّهُ ٱلصَّـٰدِقِینَ بِصِدۡقِهِمۡ وَیُعَذِّبَ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ إِن شَاۤءَ أَوۡ یَتُوبَ عَلَیۡهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿24﴾

এটা এজন্য যাতে আল্লাহ, সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতার কারণে প্রতিদান দেন এবং ইচ্ছা করলে মুনাফেকদেরকে শাস্তি দেন অথবা ক্ষমা করেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

যেন আল্লাহ্ পুরস্কৃত করতে পারেন সত্যপরায়ণদের তাদের সত্যনিষ্ঠার জন্যে, আর তিনি ইচ্ছা করলে মুনাফিকদের শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদের প্রতি ফিরতেও পারেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَرَدَّ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ بِغَیۡظِهِمۡ لَمۡ یَنَالُوا۟ خَیۡرࣰاۚ وَكَفَى ٱللَّهُ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ٱلۡقِتَالَۚ وَكَانَ ٱللَّهُ قَوِیًّا عَزِیزࣰا ﴿25﴾

আল্লাহ কাফেরদেরকে ক্রুদ্ধাবস্থায় ফিরিয়ে দিলেন। তারা কোন কল্যাণ পায়নি। যুদ্ধ করার জন্য আল্লাহ মুমিনদের জন্যে যথেষ্ট হয়ে গেছেন। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।

জহুরুল হক

আর আল্লাহ্ প্রতিহত করেছিলেন তাদের যারা তাদের আক্রোশবশত অবিশ্বাস পোষণ করেছিল, তারা ভাল কিছুই লাভ করতে পারে নি। আর যুদ্ধে মুমিনদের জন্য আল্লাহ্ যথেষ্ট ছিলেন। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন মহাবলীয়ান, মহাশক্তিশালী।

وَأَنزَلَ ٱلَّذِینَ ظَـٰهَرُوهُم مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ مِن صَیَاصِیهِمۡ وَقَذَفَ فِی قُلُوبِهِمُ ٱلرُّعۡبَ فَرِیقࣰا تَقۡتُلُونَ وَتَأۡسِرُونَ فَرِیقࣰا ﴿26﴾

কিতাবীদের মধ্যে যারা কাফেরদের পৃষ্টপোষকতা করেছিল, তাদেরকে তিনি তাদের দূর্গ থেকে নামিয়ে দিলেন এবং তাদের অন্তরে ভীতি নিক্ষেপ করলেন। ফলে তোমরা একদলকে হত্যা করছ এবং একদলকে বন্দী করছ।

জহুরুল হক

আর গ্রন্থধারীদের মধ্যের যারা তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল তাদের তিনি নামিয়ে এনেছিলেন তাদের দুর্গ থেকে, আর তাদের হৃদয়ে ভীতি সঞ্চার করেছিলেন, একদলকে তোমরা হত্যা করেছিলে ও বন্দী করেছিলে আরেক দলকে।

وَأَوۡرَثَكُمۡ أَرۡضَهُمۡ وَدِیَـٰرَهُمۡ وَأَمۡوَ ٰ⁠لَهُمۡ وَأَرۡضࣰا لَّمۡ تَطَـُٔوهَاۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣰا ﴿27﴾

তিনি তোমাদেরকে তাদের ভূমির, ঘর-বাড়ীর, ধন-সম্পদের এবং এমন এক ভূ-খন্ডের মালিক করে দিয়েছেন, যেখানে তোমরা অভিযান করনি। আল্লাহ সর্ববিষয়োপরি সর্বশক্তিমান।

জহুরুল হক

আর তিনি তোমাদের উত্তরাধিকার করতে দিলেন তাদের জমিজমা ও তাদের বাড়িঘর ও তাদের ধনসম্পত্তি এবং এক দেশ যেখানে তোমরা অভিযান চালাও নি। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরেই পরম ক্ষমতাবান।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ قُل لِّأَزۡوَ ٰ⁠جِكَ إِن كُنتُنَّ تُرِدۡنَ ٱلۡحَیَوٰةَ ٱلدُّنۡیَا وَزِینَتَهَا فَتَعَالَیۡنَ أُمَتِّعۡكُنَّ وَأُسَرِّحۡكُنَّ سَرَاحࣰا جَمِیلࣰا ﴿28﴾

হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।

জহুরুল হক

হে প্রিয় নবী! তোমার স্ত্রীগণকে বলো -- ''তোমরা যদি দুনিয়ার জীবনটা ও তার শোভা- সৌন্দর্য কামনা কর তাহলে এসো, আমি তোমাদের ভোগ্যবস্তুর ব্যবস্থা করে দেব এবং তোমাদের বিদায় দেব সৌজন্যময় বিদায়দানে।

وَإِن كُنتُنَّ تُرِدۡنَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَٱلدَّارَ ٱلۡـَٔاخِرَةَ فَإِنَّ ٱللَّهَ أَعَدَّ لِلۡمُحۡسِنَـٰتِ مِنكُنَّ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿29﴾

পক্ষান্তরে যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল ও পরকাল কামনা কর, তবে তোমাদের সৎকর্মপরায়ণদের জন্য আল্লাহ মহা পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন।

জহুরুল হক

আর যদি তোমরা আল্লাহ্‌কে ও তাঁর রসূলকে এবং আখেরাতে আবাস কামনা করে থাক তাহলে আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যের সৎকর্মশীলদের জন্য প্রস্তুত করেছেন এক বিরাট প্রতিদান।

یَـٰنِسَاۤءَ ٱلنَّبِیِّ مَن یَأۡتِ مِنكُنَّ بِفَـٰحِشَةࣲ مُّبَیِّنَةࣲ یُضَـٰعَفۡ لَهَا ٱلۡعَذَابُ ضِعۡفَیۡنِۚ وَكَانَ ذَ ٰ⁠لِكَ عَلَى ٱللَّهِ یَسِیرࣰا ﴿30﴾

হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ।

জহুরুল হক

হে নবীর পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যের কেউ যদি স্পষ্ট অশালীনতা নিয়ে আসে, তারজন্য শাস্তিকে দ্বিগুণে বর্ধিত করা হবে। আর এটি আল্লাহ্‌র জন্যে সহজ।

۞ وَمَن یَقۡنُتۡ مِنكُنَّ لِلَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتَعۡمَلۡ صَـٰلِحࣰا نُّؤۡتِهَاۤ أَجۡرَهَا مَرَّتَیۡنِ وَأَعۡتَدۡنَا لَهَا رِزۡقࣰا كَرِیمࣰا ﴿31﴾

তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি।

জহুরুল হক

আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ্‌র প্রতি ও তাঁর রসূলের প্রতি অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমরা তার প্রতিদান তাকে দেব দুই দফায়, আর আমরা তার জন্য প্রস্তুত রেখেছি এক সম্মানজনক জীবিকা।

یَـٰنِسَاۤءَ ٱلنَّبِیِّ لَسۡتُنَّ كَأَحَدࣲ مِّنَ ٱلنِّسَاۤءِ إِنِ ٱتَّقَیۡتُنَّۚ فَلَا تَخۡضَعۡنَ بِٱلۡقَوۡلِ فَیَطۡمَعَ ٱلَّذِی فِی قَلۡبِهِۦ مَرَضࣱ وَقُلۡنَ قَوۡلࣰا مَّعۡرُوفࣰا ﴿32﴾

হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে।

জহুরুল হক

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য কোন স্ত্রীলোকদের মতন নও, যদি তোমরা ধর্মভীরুতা অবলন্বন কর তবে কথাবার্তায় তোমরা কোমল হয়ো না, পাছে যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয়, আর তোমরা বলো উত্তম কথাবার্তা।

وَقَرۡنَ فِی بُیُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجۡنَ تَبَرُّجَ ٱلۡجَـٰهِلِیَّةِ ٱلۡأُولَىٰۖ وَأَقِمۡنَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتِینَ ٱلزَّكَوٰةَ وَأَطِعۡنَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۤۚ إِنَّمَا یُرِیدُ ٱللَّهُ لِیُذۡهِبَ عَنكُمُ ٱلرِّجۡسَ أَهۡلَ ٱلۡبَیۡتِ وَیُطَهِّرَكُمۡ تَطۡهِیرࣰا ﴿33﴾

তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।

জহুরুল হক

আর তোমাদের বাড়িতে তোমরা অবস্থান করবে, আর পূর্ববর্তী অজ্ঞানতার যুগের প্রদর্শনীর ন্যায় প্রদর্শন করো না, আর নামায কায়েম করো ও যাকাত আদায় করো, আর আল্লাহ্‌র ও তাঁর রসূলের আজ্ঞা পালন করো। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ চান, হে গৃহবাসিনীগণ! তোমাদের পবিত্র করতে পবিত্রতার দ্বারা।

وَٱذۡكُرۡنَ مَا یُتۡلَىٰ فِی بُیُوتِكُنَّ مِنۡ ءَایَـٰتِ ٱللَّهِ وَٱلۡحِكۡمَةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ لَطِیفًا خَبِیرًا ﴿34﴾

আল্লাহর আয়াত ও জ্ঞানগর্ভ কথা, যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয় তোমরা সেগুলো স্মরণ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ সূক্ষ্নদর্শী, সর্ববিষয়ে খবর রাখেন।

জহুরুল হক

আর স্মরণ রাখো তোমাদের ঘরে যা পাঠ করা হয় আল্লাহ্‌র নির্দেশাবলী ও জ্ঞানভান্ডার থেকে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন গুপ্ত বিষয়ে জ্ঞাতা, পূর্ণ ওয়াকিফহাল।

إِنَّ ٱلۡمُسۡلِمِینَ وَٱلۡمُسۡلِمَـٰتِ وَٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ وَٱلۡقَـٰنِتِینَ وَٱلۡقَـٰنِتَـٰتِ وَٱلصَّـٰدِقِینَ وَٱلصَّـٰدِقَـٰتِ وَٱلصَّـٰبِرِینَ وَٱلصَّـٰبِرَ ٰ⁠تِ وَٱلۡخَـٰشِعِینَ وَٱلۡخَـٰشِعَـٰتِ وَٱلۡمُتَصَدِّقِینَ وَٱلۡمُتَصَدِّقَـٰتِ وَٱلصَّـٰۤىِٕمِینَ وَٱلصَّـٰۤىِٕمَـٰتِ وَٱلۡحَـٰفِظِینَ فُرُوجَهُمۡ وَٱلۡحَـٰفِظَـٰتِ وَٱلذَّ ٰ⁠كِرِینَ ٱللَّهَ كَثِیرࣰا وَٱلذَّ ٰ⁠كِرَ ٰ⁠تِ أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُم مَّغۡفِرَةࣰ وَأَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿35﴾

নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ, সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ, ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ, বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ, দানশীল নারী, রোযা পালণকারী পুরুষ, রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ, , যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক যিকরকারী পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার।

জহুরুল হক

নিশ্চয়ই মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, এবং অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, আর সত্যনিষ্ট পুরুষ ও সত্যনিষ্ট নারী, আর অধ্যবসায়ী পুরুষ ও অধ্যবসায়ী নারী, আর বিনয়ী পুরুষ ও বিনয়ী নারী আর দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, আর রোযাদার পুরুষ ও রোযাদার নারী, আর নিজেদের আবরুরক্ষাকারী পুরুষ ও রক্ষাকারী নারী, আর আল্লাহ্‌কে বহুলভাবে স্মরণকারী পুরুষ ও স্মরণকারী নারী -- আল্লাহ্ এদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন পরিত্রাণ ও এক বিরাট প্রতিদান।

وَمَا كَانَ لِمُؤۡمِنࣲ وَلَا مُؤۡمِنَةٍ إِذَا قَضَى ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥۤ أَمۡرًا أَن یَكُونَ لَهُمُ ٱلۡخِیَرَةُ مِنۡ أَمۡرِهِمۡۗ وَمَن یَعۡصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلَـٰلࣰا مُّبِینࣰا ﴿36﴾

আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট তায় পতিত হয়।

জহুরুল হক

আর একজন মুমিনের পক্ষে উচিত নয় বা একজন মুমিন নারীরও নয় যে যখন আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তখন তাদের সে ব্যাপারে তাদের জন্য কোনো মতামত থাকে। আর যে কেউ আল্লাহ্‌কে ও তাঁর রসূলকে অমান্য করে সে তাহলে নিশ্চয়ই বিপথে গেছে স্পষ্ট বিপথ গমনে।

وَإِذۡ تَقُولُ لِلَّذِیۤ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِ وَأَنۡعَمۡتَ عَلَیۡهِ أَمۡسِكۡ عَلَیۡكَ زَوۡجَكَ وَٱتَّقِ ٱللَّهَ وَتُخۡفِی فِی نَفۡسِكَ مَا ٱللَّهُ مُبۡدِیهِ وَتَخۡشَى ٱلنَّاسَ وَٱللَّهُ أَحَقُّ أَن تَخۡشَىٰهُۖ فَلَمَّا قَضَىٰ زَیۡدࣱ مِّنۡهَا وَطَرࣰا زَوَّجۡنَـٰكَهَا لِكَیۡ لَا یَكُونَ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ حَرَجࣱ فِیۤ أَزۡوَ ٰ⁠جِ أَدۡعِیَاۤىِٕهِمۡ إِذَا قَضَوۡا۟ مِنۡهُنَّ وَطَرࣰاۚ وَكَانَ أَمۡرُ ٱللَّهِ مَفۡعُولࣰا ﴿37﴾

আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন; আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তাকে যখন আপনি বলেছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর। আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিত। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে।

জহুরুল হক

আর স্মরণ করো! তুমি তাকে বলেছিলে যার প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছেন ও যার প্রতি তুমি অনুগ্রহ করেছ -- ''তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই রাখো, আর আল্লাহ্‌কে ভয়ভক্তি করো, আর তুমি তোমার অন্তরে যা লুকিয়ে রেখেছিলে আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিচ্ছেন, আর তুমি মানুষকে ভয় করেছিলে, অথচ আল্লাহ্‌রই বেশী অধিকার যে তুমি তাঁকেই ভয় করবে।’’ কিন্তু যায়েদ যখন তার থেকে বিবাহবন্ধন সন্বন্ধে মীমাংসা করে ফেলল তখন আমরা তাকে তোমার সাথে বিবাহ দিলাম -- যাতে মুমিনদের উপরে কোন বাধা না থাকে তাদের পালকপুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে, যখন তারা তাদের থেকে বিবাহবন্ধন সন্বন্ধে মীমাংসা করে ফেলে। আর আল্লাহ্‌র নির্দেশ প্রতিপালিত হয়েই থাকে।

مَّا كَانَ عَلَى ٱلنَّبِیِّ مِنۡ حَرَجࣲ فِیمَا فَرَضَ ٱللَّهُ لَهُۥۖ سُنَّةَ ٱللَّهِ فِی ٱلَّذِینَ خَلَوۡا۟ مِن قَبۡلُۚ وَكَانَ أَمۡرُ ٱللَّهِ قَدَرࣰا مَّقۡدُورًا ﴿38﴾

আল্লাহ নবীর জন্যে যা নির্ধারণ করেন, তাতে তাঁর কোন বাধা নেই পূর্ববর্তী নবীগণের ক্ষেত্রে এটাই ছিল আল্লাহর চিরাচরিত বিধান। আল্লাহর আদেশ নির্ধারিত, অবধারিত।

জহুরুল হক

নবীর জন্য কোনো বাধা নেই তাতে যা তাঁর জন্য আল্লাহ্ বিধিবদ্ধ করেছেন। আল্লাহ্‌র নিয়মনীতি তাদের ক্ষেত্রে যারা এর আগে গত হয়ে গেছে। আর আল্লাহ্‌র বিধান হচ্ছে সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত, --

ٱلَّذِینَ یُبَلِّغُونَ رِسَـٰلَـٰتِ ٱللَّهِ وَیَخۡشَوۡنَهُۥ وَلَا یَخۡشَوۡنَ أَحَدًا إِلَّا ٱللَّهَۗ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ حَسِیبࣰا ﴿39﴾

সেই নবীগণ আল্লাহর পয়গাম প্রচার করতেন ও তাঁকে ভয় করতেন। তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যকাউকে ভয় করতেন না। হিসাব গ্রহণের জন্যে আল্লাহ যথেষ্ঠ।

জহুরুল হক

যারা আল্লাহ্‌র বাণী পৌঁছে দেয় এবং তাঁকে ভয় করে, আর আল্লাহ্ ছাড়া আর কাউকেও ভয় করে না। আর আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট হিসাব-রক্ষকরূপে।

مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَاۤ أَحَدࣲ مِّن رِّجَالِكُمۡ وَلَـٰكِن رَّسُولَ ٱللَّهِ وَخَاتَمَ ٱلنَّبِیِّـۧنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمࣰا ﴿40﴾

মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।

জহুরুল হক

মুহাম্মদ তোমাদের লোকেদের মধ্যের কোন একজনেরও পিতা নন, বরং তিনি হচ্ছেন আল্লাহ্‌র একজন রসূল, আর নবীগণের সীলমোহর। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সব-কিছুতেই সর্বজ্ঞাতা।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱذۡكُرُوا۟ ٱللَّهَ ذِكۡرࣰا كَثِیرࣰا ﴿41﴾

মুমিনগণ তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্‌কে স্মরণ করো প্রচুর স্মরণে,

وَسَبِّحُوهُ بُكۡرَةࣰ وَأَصِیلًا ﴿42﴾

এবং সকাল বিকাল আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা কর।

জহুরুল হক

আর তাঁর মহিমা কীর্তন করো সকালে ও সন্ধ্যায়।

هُوَ ٱلَّذِی یُصَلِّی عَلَیۡكُمۡ وَمَلَـٰۤىِٕكَتُهُۥ لِیُخۡرِجَكُم مِّنَ ٱلظُّلُمَـٰتِ إِلَى ٱلنُّورِۚ وَكَانَ بِٱلۡمُؤۡمِنِینَ رَحِیمࣰا ﴿43﴾

তিনিই তোমাদের প্রতি রহমত করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও রহমতের দোয়া করেন-অন্ধকার থেকে তোমাদেরকে আলোকে বের করার জন্য। তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

তিনিই সেইজন যিনি তোমাদে প্রতি আশীর্বাদ করেছেন আর তাঁর ফিরিশ্‌তাগণও, যেন তিনি তোমাদের বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোকের দিকে। আর তিনি মুমিনদের প্রতি অফুরন্ত ফলদাতা।

تَحِیَّتُهُمۡ یَوۡمَ یَلۡقَوۡنَهُۥ سَلَـٰمࣱۚ وَأَعَدَّ لَهُمۡ أَجۡرࣰا كَرِیمࣰا ﴿44﴾

যেদিন আল্লাহর সাথে মিলিত হবে; সেদিন তাদের অভিবাদন হবে সালাম। তিনি তাদের জন্যে সম্মানজনক পুরস্কার প্রস্তুত রেখেছেন।

জহুরুল হক

যেদিন তারা তাঁর সঙ্গে মোলাকাত করবে সেদিন তাদের সম্ভাষণ হবে ''সালাম’’! আর তাদের জন্য তিনি তৈরী রেখেছেন এক মহান প্রতিদান।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ إِنَّاۤ أَرۡسَلۡنَـٰكَ شَـٰهِدࣰا وَمُبَشِّرࣰا وَنَذِیرࣰا ﴿45﴾

হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি।

জহুরুল হক

হে প্রিয় নবী! আমরা নিশ্চয়ই তোমাকে পাঠিয়েছি একজন সাক্ষীরূপে, আর একজন সুসংবাদদাতারূপে, আর একজন সতর্ককারীরূপে,

وَدَاعِیًا إِلَى ٱللَّهِ بِإِذۡنِهِۦ وَسِرَاجࣰا مُّنِیرࣰا ﴿46﴾

এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহবায়করূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।

জহুরুল হক

আর আল্লাহর প্রতি তাঁর অনুমতিক্রমে একজন আহবায়করূপে, আর একটি উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।

وَبَشِّرِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ بِأَنَّ لَهُم مِّنَ ٱللَّهِ فَضۡلࣰا كَبِیرࣰا ﴿47﴾

আপনি মুমিনদেরকে সুসংবাদ দিন যে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিরাট অনুগ্রহ রয়েছে।

জহুরুল হক

আর মুমিনদের তুমি সুসংবাদ দাও যে তাদের জন্য আল্লাহ্‌র কাছ থেকে রয়েছে এক বিরাট করুণাভান্ডার।

وَلَا تُطِعِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ وَٱلۡمُنَـٰفِقِینَ وَدَعۡ أَذَىٰهُمۡ وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِیلࣰا ﴿48﴾

আপনি কাফের ও মুনাফিকদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের উৎপীড়ন উপেক্ষা করুন ও আল্লাহর উপর ভরসা করুন। আল্লাহ কার্যনিবার্হীরূপে যথেষ্ট।

জহুরুল হক

আর তুমি অবিশ্বাসীদের ও মুনাফিকদের আজ্ঞাপালন করো না, আর ওদের বিরক্তিকর ব্যবহার উপেক্ষা করো এবং আল্লাহর উপরে তুমি নির্ভর করো। আর আল্লাহই কর্ণধাররূপে যথেষ্ট।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِذَا نَكَحۡتُمُ ٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ ثُمَّ طَلَّقۡتُمُوهُنَّ مِن قَبۡلِ أَن تَمَسُّوهُنَّ فَمَا لَكُمۡ عَلَیۡهِنَّ مِنۡ عِدَّةࣲ تَعۡتَدُّونَهَاۖ فَمَتِّعُوهُنَّ وَسَرِّحُوهُنَّ سَرَاحࣰا جَمِیلࣰا ﴿49﴾

মুমিনগণ! তোমরা যখন মুমিন নারীদেরকে বিবাহ কর, অতঃপর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিয়ে দাও, তখন তাদেরকে ইদ্দত পালনে বাধ্য করার অধিকার তোমাদের নাই। অতঃপর তোমরা তাদেরকে কিছু দেবে এবং উত্তম পন্থায় বিদায় দেবে।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন মুমিন নারীদের বিবাহ করো এবং তাদের স্পর্শ করার আগেই যদি তাদের তোমরা তালাক দিয়ে দাও, তাহলে তোমাদের জন্য তাদের উপরে ইদ্দতের কোনো-কিছু নির্ধারণ করবার থাকবে না, কিন্তু তাদের জন্য সংস্থান করো এবং তাদের বিদায় দিয়ো সৌজন্যময় বিদায়দানে।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ إِنَّاۤ أَحۡلَلۡنَا لَكَ أَزۡوَ ٰ⁠جَكَ ٱلَّـٰتِیۤ ءَاتَیۡتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتۡ یَمِینُكَ مِمَّاۤ أَفَاۤءَ ٱللَّهُ عَلَیۡكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ عَمَّـٰتِكَ وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَـٰلَـٰتِكَ ٱلَّـٰتِی هَاجَرۡنَ مَعَكَ وَٱمۡرَأَةࣰ مُّؤۡمِنَةً إِن وَهَبَتۡ نَفۡسَهَا لِلنَّبِیِّ إِنۡ أَرَادَ ٱلنَّبِیُّ أَن یَسۡتَنكِحَهَا خَالِصَةࣰ لَّكَ مِن دُونِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۗ قَدۡ عَلِمۡنَا مَا فَرَضۡنَا عَلَیۡهِمۡ فِیۤ أَزۡوَ ٰ⁠جِهِمۡ وَمَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُهُمۡ لِكَیۡلَا یَكُونَ عَلَیۡكَ حَرَجࣱۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿50﴾

হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।

জহুরুল হক

হে প্রিয় নবী! আমরা তোমার জন্য তোমার স্ত্রীদের বৈধ করেছি যাদের তুমি তাদের দেনমোহর আদায় করেছ, আর যাদের তোমার ডান হাত ধরে রেখেছে, তাদের মধ্য থেকে যাদের আল্লাহ্ তোমাকে যুদ্ধের দানরূপে দিয়েছেন, আর তোমার চাচার মেয়েদের ও তোমার ফুফুর মেয়েদের এবং তোমার মামার মেয়েদের ও তোমার মাসীর মেয়েদের -- যারা তোমার সঙ্গে হিজরত করেছে, আর কোনো মুমিন নারী যদি সে নবীর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে, যদি নবীও তাকে বিবাহ করতে চান -- এটি বিশেষ করে তোমার জন্য, মুমিনগণকে বাদ দিয়ে। আমরা অবশ্যই জানি তাদের জন্য আমরা কী বিধান দিয়েছি তাদের স্ত্রীদের সন্বন্ধে আর তাদের ডান হাত যাদের ধরে রেখেছে তাদের সন্বন্ধে, যেন তোমার উপরে বাধা না থাকে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

۞ تُرۡجِی مَن تَشَاۤءُ مِنۡهُنَّ وَتُـٔۡوِیۤ إِلَیۡكَ مَن تَشَاۤءُۖ وَمَنِ ٱبۡتَغَیۡتَ مِمَّنۡ عَزَلۡتَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكَۚ ذَ ٰ⁠لِكَ أَدۡنَىٰۤ أَن تَقَرَّ أَعۡیُنُهُنَّ وَلَا یَحۡزَنَّ وَیَرۡضَیۡنَ بِمَاۤ ءَاتَیۡتَهُنَّ كُلُّهُنَّۚ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ مَا فِی قُلُوبِكُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَلِیمࣰا ﴿51﴾

আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা কাছে রাখতে পারেন। আপনি যাকে দূরে রেখেছেন, তাকে কামনা করলে তাতে আপনার কোন দোষ নেই। এতে অধিক সম্ভাবনা আছে যে, তাদের চক্ষু শীতল থাকবে; তারা দুঃখ পাবে না এবং আপনি যা দেন, তাতে তারা সকলেই সন্তুষ্ট থাকবে। তোমাদের অন্তরে যা আছে, আল্লাহ জানেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।

জহুরুল হক

তাদের মধ্য থেকে যাকে তুমি চাও মুলতুবী রাখতে পার এবং যাকে তুমি চাও তোমার কাছে গ্রহণ করতে পার, আর যাদের তুমি দূরে রেখেছিলে তাদের মধ্যের যাকে তুমি কামনা কর, তাতে তোমার কোনো দোষ হবে না। এটিই বেশী ভাল যেন তাদের চোখ হর্ষোৎফুল্ল হতে পারে ও তারা দুঃখ না করে, আর তারা সন্তষ্ট থাকে তুমি যা তাদের দিচ্ছ তাতে -- তাদের সব-ক’জনকে। আর আল্লাহ্ জানেন যা তোমাদের অন্তরে রয়েছে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞাতা, অতি অমায়িক।

لَّا یَحِلُّ لَكَ ٱلنِّسَاۤءُ مِنۢ بَعۡدُ وَلَاۤ أَن تَبَدَّلَ بِهِنَّ مِنۡ أَزۡوَ ٰ⁠جࣲ وَلَوۡ أَعۡجَبَكَ حُسۡنُهُنَّ إِلَّا مَا مَلَكَتۡ یَمِینُكَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ رَّقِیبࣰا ﴿52﴾

এরপর আপনার জন্যে কোন নারী হালাল নয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করাও হালাল নয় যদিও তাদের রূপলাবণ্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর সজাগ নজর রাখেন।

জহুরুল হক

এরপরে নারীরা তোমার জন্য বৈধ নয়, আর তাও নয় যে তাদের স্থলে অন্য স্ত্রীদের তুমি বদলে নিতে পারবে, যদিও বা তাদের সৌন্দর্য তোমাকে তাজ্জব বানিয়ে দেয় -- তোমার ডান হাতে যাদের ধরে রেখেছে তাদের ব্যতীত। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সব-কিছুর উপরে তীক্ষদৃষ্টিধারী।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَدۡخُلُوا۟ بُیُوتَ ٱلنَّبِیِّ إِلَّاۤ أَن یُؤۡذَنَ لَكُمۡ إِلَىٰ طَعَامٍ غَیۡرَ نَـٰظِرِینَ إِنَىٰهُ وَلَـٰكِنۡ إِذَا دُعِیتُمۡ فَٱدۡخُلُوا۟ فَإِذَا طَعِمۡتُمۡ فَٱنتَشِرُوا۟ وَلَا مُسۡتَـٔۡنِسِینَ لِحَدِیثٍۚ إِنَّ ذَ ٰ⁠لِكُمۡ كَانَ یُؤۡذِی ٱلنَّبِیَّ فَیَسۡتَحۡیِۦ مِنكُمۡۖ وَٱللَّهُ لَا یَسۡتَحۡیِۦ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ وَإِذَا سَأَلۡتُمُوهُنَّ مَتَـٰعࣰا فَسۡـَٔلُوهُنَّ مِن وَرَاۤءِ حِجَابࣲۚ ذَ ٰ⁠لِكُمۡ أَطۡهَرُ لِقُلُوبِكُمۡ وَقُلُوبِهِنَّۚ وَمَا كَانَ لَكُمۡ أَن تُؤۡذُوا۟ رَسُولَ ٱللَّهِ وَلَاۤ أَن تَنكِحُوۤا۟ أَزۡوَ ٰ⁠جَهُۥ مِنۢ بَعۡدِهِۦۤ أَبَدًاۚ إِنَّ ذَ ٰ⁠لِكُمۡ كَانَ عِندَ ٱللَّهِ عَظِیمًا ﴿53﴾

হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা নবীর ঘরগুলোয় প্রবেশ করো না তোমাদের খানাপিনার জন্য অনুমতি না দেওয়া হলে -- রান্নাবান্না শেষ হবার অপেক্ষা না করে, বরং যখন তোমাদের ডাকা হয় তখন তোমরা প্রবেশ করো, তারপর যখন তোমরা খেয়ে নিয়েছ তখন চলে যেও, এবং গড়িমসি করো না বাক্যালাপের জন্য। নিঃসন্দেহ এইসব নবীকে কষ্ট দিয়ে থাকে, অথচ তিনি সংকোচ বোধ করেন তোমাদের জন্য, কিন্তু আল্লাহ্ সত্য সন্বন্ধে সংকোচ করেন না। আর যখন তোমরা তাদের কাছে কোনো-কিছু চাও তখন পর্দার আড়াল থেকে তাদের কাছে চাইবে। এটিই অধিকতর পবিত্র তোমাদের হৃদয়ের জন্য এবং তাদের হৃদয়ের জন্যেও। এটি তোমাদের জন্য নয় যে তোমার নবীকে উত্ত্যক্ত করবে, আর এটিও নয় যে তার পরে তোমরা কখনো তাঁর পত্নীদের বিবাহ করবে। নিঃসন্দেহে এটি আল্লাহ্‌র কাছে গুরুতর ব্যাপার!

إِن تُبۡدُوا۟ شَیۡـًٔا أَوۡ تُخۡفُوهُ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمࣰا ﴿54﴾

তোমরা খোলাখুলি কিছু বল অথবা গোপন রাখ, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।

জহুরুল হক

তোমরা যদি কোনো-কিছু প্রকাশ কর অথবা তা গোপনই রাখ, আল্লাহ্ কিন্তু নিশ্চয়ই সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।

لَّا جُنَاحَ عَلَیۡهِنَّ فِیۤ ءَابَاۤىِٕهِنَّ وَلَاۤ أَبۡنَاۤىِٕهِنَّ وَلَاۤ إِخۡوَ ٰ⁠نِهِنَّ وَلَاۤ أَبۡنَاۤءِ إِخۡوَ ٰ⁠نِهِنَّ وَلَاۤ أَبۡنَاۤءِ أَخَوَ ٰ⁠تِهِنَّ وَلَا نِسَاۤىِٕهِنَّ وَلَا مَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُهُنَّۗ وَٱتَّقِینَ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ شَهِیدًا ﴿55﴾

নবী-পত্নীগণের জন্যে তাঁদের পিতা পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নি পুত্র, সহধর্মিনী নারী এবং অধিকার ভুক্ত দাসদাসীগণের সামনে যাওয়ার ব্যাপারে গোনাহ নেই। নবী-পত্নীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয় প্রত্যক্ষ করেন।

জহুরুল হক

তাদের জন্য কোনো অপরাধ নেই তাদের পিতাদের ক্ষেত্রে, আর তাদের পুত্রদের বেলায়ও নয়, আর তাদের ভাইদের ক্ষেত্রেও নয়, আর ভাইদের পুত্রদেরও নয়, আর তাদের বোনদের পুত্রদের সঙ্গেও নয়, আর তাদের মেয়েলোকদের ক্ষেত্রেও নয়, আর তাদের ডান হাত যাদের ধরে রেখেছ তাদেরও নয়, আর আল্লাহ্‌কে ভয়ভক্তি করো। নিশ্চয় আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরেই প্রত্যক্ষদর্শী।

إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَـٰۤىِٕكَتَهُۥ یُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِیِّۚ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ صَلُّوا۟ عَلَیۡهِ وَسَلِّمُوا۟ تَسۡلِیمًا ﴿56﴾

আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ও তাঁর ফিরিশ্‌তাগণ নবীর উপরে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরাও তাঁর প্রতি শুভেচ্ছা নিবেদন করো এবং সালাম জানাও সশ্রদ্ধভাবে।

إِنَّ ٱلَّذِینَ یُؤۡذُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ لَعَنَهُمُ ٱللَّهُ فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمۡ عَذَابࣰا مُّهِینࣰا ﴿57﴾

যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল-সন্বন্ধে মন্দ কথা বলে, আল্লাহ্ তাদের ধিক্কার দিয়েছেন ইহলোকে ও পরলোকে, আর তাদের জন্য তৈরি করেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।

وَٱلَّذِینَ یُؤۡذُونَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ بِغَیۡرِ مَا ٱكۡتَسَبُوا۟ فَقَدِ ٱحۡتَمَلُوا۟ بُهۡتَـٰنࣰا وَإِثۡمࣰا مُّبِینࣰا ﴿58﴾

যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে।

জহুরুল হক

আর যারা মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের গালমন্দ করে তারা তা অর্জন না করলেও, তারা তাহলে কুৎসা রটনার ও স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ قُل لِّأَزۡوَ ٰ⁠جِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاۤءِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ یُدۡنِینَ عَلَیۡهِنَّ مِن جَلَـٰبِیبِهِنَّۚ ذَ ٰ⁠لِكَ أَدۡنَىٰۤ أَن یُعۡرَفۡنَ فَلَا یُؤۡذَیۡنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿59﴾

হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

হে প্রিয় নবী! তোমার স্ত্রীগণকে ও কন্যাদের ও মুমিন-লোকের স্ত্রীলোকদের বলো যে তারা যেন তাদের বহির্বাস থেকে তাদের উপরে টেনে রাখে। এটিই বেশী ভাল হয় যেন তাদের চেনা যায়, তাহলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

۞ لَّىِٕن لَّمۡ یَنتَهِ ٱلۡمُنَـٰفِقُونَ وَٱلَّذِینَ فِی قُلُوبِهِم مَّرَضࣱ وَٱلۡمُرۡجِفُونَ فِی ٱلۡمَدِینَةِ لَنُغۡرِیَنَّكَ بِهِمۡ ثُمَّ لَا یُجَاوِرُونَكَ فِیهَاۤ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿60﴾

মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং মদীনায় গুজব রটনাকারীরা যদি বিরত না হয়, তবে আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আপনাকে উত্তেজিত করব। অতঃপর এই শহরে আপনার প্রতিবেশী অল্পই থাকবে।

জহুরুল হক

যদি মুনাফিকরা ও যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তারা, আর শহরে গুজব রটনাকারীরা না থামে তাহলে আমরা নিশ্চয়ই তোমাকে তাদের উপরে ক্ষমতা দেব, তখন তারা সেখানে তোমার প্রতিবেশী হয়ে থাকবে না অল্পকাল ছাড়া --

مَّلۡعُونِینَۖ أَیۡنَمَا ثُقِفُوۤا۟ أُخِذُوا۟ وَقُتِّلُوا۟ تَقۡتِیلࣰا ﴿61﴾

অভিশপ্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, ধরা হবে এবং প্রাণে বধ করা হবে।

জহুরুল হক

অভিশপ্ত অবস্থায়, যেখানেই তাদের পাওয়া যাবে তাদের পাকড়াও করা হবে এবং হত্যা করা হবে হত্যার মতো।

سُنَّةَ ٱللَّهِ فِی ٱلَّذِینَ خَلَوۡا۟ مِن قَبۡلُۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ ٱللَّهِ تَبۡدِیلࣰا ﴿62﴾

যারা পূর্বে অতীত হয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে এটাই ছিল আল্লাহর রীতি। আপনি আল্লাহর রীতিতে কখনও পরিবর্তন পাবেন না।

জহুরুল হক

আল্লাহ্‌র নিয়ম-নীতি এর আগে যারা গত হয়ে গেছে তাদের ক্ষেত্রে। আর তুমি কখনো আল্লাহ্‌র বিধানে পরিবর্তন পাবে না।

یَسۡـَٔلُكَ ٱلنَّاسُ عَنِ ٱلسَّاعَةِۖ قُلۡ إِنَّمَا عِلۡمُهَا عِندَ ٱللَّهِۚ وَمَا یُدۡرِیكَ لَعَلَّ ٱلسَّاعَةَ تَكُونُ قَرِیبًا ﴿63﴾

লোকেরা আপনাকে কেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহর কাছেই। আপনি কি করে জানবেন যে সম্ভবতঃ কেয়ামত নিকটেই।

জহুরুল হক

লোকে তোমাকে ঘড়িঘন্টা সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছে। তুমি বলো -- ''তার জ্ঞান তো কেবল আল্লাহ্‌রই কাছে।’’ আর কেমন করে তোমাকে বোঝানো যাবে -- হতে পারে সেই ঘড়িঘন্টা নিকটবর্তী হয়ে গেছে?

إِنَّ ٱللَّهَ لَعَنَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ وَأَعَدَّ لَهُمۡ سَعِیرًا ﴿64﴾

নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছেন।

জহুরুল হক

আল্লাহ্ নিশ্চয়ই অবিশ্বাসীদের ধিক্কার দিয়েছেন আর তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন এক জ্বলন্ত আগুন --

خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۖ لَّا یَجِدُونَ وَلِیࣰّا وَلَا نَصِیرࣰا ﴿65﴾

তথায় তারা অনন্তকাল থাকবে এবং কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।

জহুরুল হক

যাতে তারা থাকবে সুদীর্ঘকাল, তারা পাবে না কোনো অভিভাবক, আর না কোনো সহায়ক।

یَوۡمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمۡ فِی ٱلنَّارِ یَقُولُونَ یَـٰلَیۡتَنَاۤ أَطَعۡنَا ٱللَّهَ وَأَطَعۡنَا ٱلرَّسُولَا۠ ﴿66﴾

যেদিন অগ্নিতে তাদের মুখমন্ডল ওলট পালট করা হবে; সেদিন তারা বলবে, হায়। আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলের আনুগত্য করতাম।

জহুরুল হক

সেইদিন যখন তাদের মুখ আগুনের মধ্যে উল্টানো পাল্টানো হবে তারা বলবে -- ''হায় আমাদের দুর্ভোগ! আমরা যদি আল্লাহ্‌কে মেনে চলতাম ও রসূলের আজ্ঞাপালন করতাম!’’

وَقَالُوا۟ رَبَّنَاۤ إِنَّاۤ أَطَعۡنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاۤءَنَا فَأَضَلُّونَا ٱلسَّبِیلَا۠ ﴿67﴾

তারা আরও বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের কথা মেনেছিলাম, অতঃপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল।

জহুরুল হক

তারা আরো বলবে -- ''আমাদের প্রভু! আমরা তো আমাদের নেতাদের ও আমাদের বড়লোকদের আজ্ঞাপালন করেছিলাম, সুতরাং তারা আমাদের পথ থেকে বিপথে নিয়েছিল।

رَبَّنَاۤ ءَاتِهِمۡ ضِعۡفَیۡنِ مِنَ ٱلۡعَذَابِ وَٱلۡعَنۡهُمۡ لَعۡنࣰا كَبِیرࣰا ﴿68﴾

হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে মহা অভিসম্পাত করুন।

জহুরুল হক

''আমাদের প্রভু! দ্বিগুণ পরিমাণ শাস্তি তাদের প্রদান করো, আর তাদের ধিক্কার দাও বিরাট ধিক্কারে।’’

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَكُونُوا۟ كَٱلَّذِینَ ءَاذَوۡا۟ مُوسَىٰ فَبَرَّأَهُ ٱللَّهُ مِمَّا قَالُوا۟ۚ وَكَانَ عِندَ ٱللَّهِ وَجِیهࣰا ﴿69﴾

হে মুমিনগণ! মূসাকে যারা কষ্ট দিয়েছে, তোমরা তাদের মত হয়ো না। তারা যা বলেছিল, আল্লাহ তা থেকে তাঁকে নির্দোষ প্রমাণ করেছিলেন। তিনি আল্লাহর কাছে ছিলেন মর্যাদাবান।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তাদের মতো হয়ো না যারা মূসার নিন্দা করেছিল, কিন্তু আল্লাহ্ তাঁকে নির্দোষ ঠাওরে ছিলেন তারা যা বলেছিল তা থেকে। আর তিনি আল্লাহ্‌র সমক্ষে সম্মানিত ছিলেন।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَقُولُوا۟ قَوۡلࣰا سَدِیدࣰا ﴿70﴾

হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করো, আর সরল-সঠিক কথা বলো,

یُصۡلِحۡ لَكُمۡ أَعۡمَـٰلَكُمۡ وَیَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۗ وَمَن یُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدۡ فَازَ فَوۡزًا عَظِیمًا ﴿71﴾

তিনি তোমাদের আমল-আচরণ সংশোধন করবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই মহা সাফল্য অর্জন করবে।

জহুরুল হক

তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের ক্রিয়াকর্ম সুসম্পাদিত করতে পারেন আর তোমাদের দোষত্রুটি তোমাদের জন্য ক্ষমা করতে পারেন। আর যে কেউ আল্লাহ্‌কে ও তাঁর রসূলকে মেনে চলে সে তাহলে অবশ্যই অর্জন করেছে বিরাট মুনাফা।

إِنَّا عَرَضۡنَا ٱلۡأَمَانَةَ عَلَى ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱلۡجِبَالِ فَأَبَیۡنَ أَن یَحۡمِلۡنَهَا وَأَشۡفَقۡنَ مِنۡهَا وَحَمَلَهَا ٱلۡإِنسَـٰنُۖ إِنَّهُۥ كَانَ ظَلُومࣰا جَهُولࣰا ﴿72﴾

আমি আকাশ পৃথিবী ও পর্বতমালার সামনে এই আমানত পেশ করেছিলাম, অতঃপর তারা একে বহন করতে অস্বীকার করল এবং এতে ভীত হল; কিন্তু মানুষ তা বহণ করল। নিশ্চয় সে জালেম-অজ্ঞ।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা আমানত অর্পণ করেছিলাম মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ও পর্বতমালার উপরে, কাজেই তারা এটি অমান্য করতে অস্বীকার করেছিল এবং এতে ভয় করছিল, কিন্তু মানুষ এটিকে অস্বীকার করছে। নিঃসন্দেহে সে হচ্ছে অত্যন্ত অন্যায়াচারী, বড়ই অজ্ঞ, --

لِّیُعَذِّبَ ٱللَّهُ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ وَٱلۡمُنَـٰفِقَـٰتِ وَٱلۡمُشۡرِكِینَ وَٱلۡمُشۡرِكَـٰتِ وَیَتُوبَ ٱللَّهُ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمَۢا ﴿73﴾

যাতে আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী, মুশরিক পুরুষ, মুশরিক নারীদেরকে শাস্তি দেন এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে ক্ষমা করেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

জহুরুল হক

সেজন্য আল্লাহ্ শান্তি দেবেন মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারীদের, এবং বহুখোদাবাদী পুরুষ ও বহুখোদাবাদী নারীদের আর আল্লাহ্ ফিরবেন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের প্রতি। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।