Settings
Surah Council, Consultation [Ash-Shura] in Bengali
كَذَ ٰلِكَ یُوحِیۤ إِلَیۡكَ وَإِلَى ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكَ ٱللَّهُ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿3﴾
এমনিভাবে পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ আপনার প্রতি ও আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেন।
এইভাবেই তোমার কাছে ও তোমার পূর্বে যাঁরা ছিলেন তাঁদের কাছে প্রত্যাদেশ দিয়েছিলেন -- মহাশক্তিশালী পরমজ্ঞানী আল্লাহ্।
لَهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۖ وَهُوَ ٱلۡعَلِیُّ ٱلۡعَظِیمُ ﴿4﴾
নভোমন্ডলে যা কিছু আছে এবং ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সমস্তই তাঁর। তিনি সমুন্নত, মহান।
যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলীতে ও যা-কিছু আছে পৃথিবীতে সে-সবই তাঁর। আর তিনি মহোচ্চ, মহিমান্বিত।
تَكَادُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتُ یَتَفَطَّرۡنَ مِن فَوۡقِهِنَّۚ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ یُسَبِّحُونَ بِحَمۡدِ رَبِّهِمۡ وَیَسۡتَغۡفِرُونَ لِمَن فِی ٱلۡأَرۡضِۗ أَلَاۤ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِیمُ ﴿5﴾
আকাশ উপর থেকে ফেটে পড়ার উপক্রম হয় আর তখন ফেরেশতাগণ তাদের পালনকর্তার প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করে এবং পৃথিবীবাসীদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে। শুনে রাখ, আল্লাহই ক্ষমাশীল, পরম করুনাময়।
মহাকাশমন্ডলী তাদের উপর থেকে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে, কিন্ত ফিরিশ্তারা তাদের প্রভুর প্রশংসায় জপতপ করে এবং পৃথিবীতে যারা আছে তাদের জন্য পরিত্রাণ খোঁজে। এটি কি নয় যে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্, তিনি পরম ক্ষমাশীল, অফুরন্ত ফলদাতা?
وَٱلَّذِینَ ٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِهِۦۤ أَوۡلِیَاۤءَ ٱللَّهُ حَفِیظٌ عَلَیۡهِمۡ وَمَاۤ أَنتَ عَلَیۡهِم بِوَكِیلࣲ ﴿6﴾
যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে অভিভাবক হিসাবে গ্রহণ করে, আল্লাহ তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখেন। আপনার উপর নয় তাদের দায়-দায়িত্ব।
আর যারা তাঁকে বাদ দিয়ে অন্যদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে, -- আল্লাহ্ তাদের উপরে পর্যবেক্ষক, আর তুমি তাদের উপরে কর্ণধার নও।
وَكَذَ ٰلِكَ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَیۡكَ قُرۡءَانًا عَرَبِیࣰّا لِّتُنذِرَ أُمَّ ٱلۡقُرَىٰ وَمَنۡ حَوۡلَهَا وَتُنذِرَ یَوۡمَ ٱلۡجَمۡعِ لَا رَیۡبَ فِیهِۚ فَرِیقࣱ فِی ٱلۡجَنَّةِ وَفَرِیقࣱ فِی ٱلسَّعِیرِ ﴿7﴾
এমনি ভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
আর এইভাবে আমরা তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ দিয়েছি এই ভাষণ আরবীতে যেন তুমি নগর-জননী ও তার আশেপাশে যারা রয়েছে তাদের সতর্ক করতে পার, আর যেন তুমি সতর্ক করতে পার জমায়েৎ হওয়ার দিন সম্পর্কে -- যাতে কোনো সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে ও আরেক দল জ্বলন্ত আগুনে।
وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ لَجَعَلَهُمۡ أُمَّةࣰ وَ ٰحِدَةࣰ وَلَـٰكِن یُدۡخِلُ مَن یَشَاۤءُ فِی رَحۡمَتِهِۦۚ وَٱلظَّـٰلِمُونَ مَا لَهُم مِّن وَلِیࣲّ وَلَا نَصِیرٍ ﴿8﴾
আল্লাহ ইচ্ছা করলে সমস্ত লোককে এক দলে পরিণত করতে পারেন। কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা স্বীয় রহমতে দাখিল করেন। আর যালেমদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই।
আর আল্লাহ্ যদি চাইতেন তাহলে তিনি তাদের একই সম্প্রদায় করতে পারতেন, কিন্ত তিনি তাঁর করুণার মধ্যে প্রবেশ করান যাকে তিনি ইচ্ছে করেন। আর অনাচারীরা -- তাদের জন্যে কোনো অভিভাবক নেই আর কোনো সাহায্যকারীও নেই।
أَمِ ٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِهِۦۤ أَوۡلِیَاۤءَۖ فَٱللَّهُ هُوَ ٱلۡوَلِیُّ وَهُوَ یُحۡیِ ٱلۡمَوۡتَىٰ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿9﴾
তারা কি আল্লাহ ব্যতীত অপরকে অভিভাবক স্থির করেছে? পরন্তু আল্লাহই তো একমাত্র অভিভাবক। তিনি মৃতদেরকে জীবিত করেন। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান।
অথবা তারা কি তাঁকে বাদ দিয়ে অন্যদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছে? কিন্ত আল্লাহ্ -- তিনিই তো মনিব, আর তিনি মৃতকে জীবন দান করেন, আর তিনি সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।
وَمَا ٱخۡتَلَفۡتُمۡ فِیهِ مِن شَیۡءࣲ فَحُكۡمُهُۥۤ إِلَى ٱللَّهِۚ ذَ ٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبِّی عَلَیۡهِ تَوَكَّلۡتُ وَإِلَیۡهِ أُنِیبُ ﴿10﴾
তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ কর, তার ফয়সালা আল্লাহর কাছে সোপর্দ। ইনিই আল্লাহ আমার পালনকর্তা আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তাঁরই অভিমুখী হই।
আর তোমরা যে কোনো বিষয়েই মতভেদ কর না কেন তার রায় তো আল্লাহ্রই নিকট। ''ইনিই আল্লাহ্, আমার প্রভু, তাঁরই উপরে আমি নির্ভর করি, আর তাঁরই দিকে আমি ফিরি।
فَاطِرُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ جَعَلَ لَكُم مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ أَزۡوَ ٰجࣰا وَمِنَ ٱلۡأَنۡعَـٰمِ أَزۡوَ ٰجࣰا یَذۡرَؤُكُمۡ فِیهِۚ لَیۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَیۡءࣱۖ وَهُوَ ٱلسَّمِیعُ ٱلۡبَصِیرُ ﴿11﴾
তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং চতুস্পদ জন্তুদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন। কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।
''তিনি মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদিস্রষ্টা। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই মধ্যে থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন, আর গবাদি- পশুর মধ্যেও জোড়া, এর মধ্যে থেকেই তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন। কিছুই তাঁর সদৃশ নয়। আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
لَهُۥ مَقَالِیدُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ یَبۡسُطُ ٱلرِّزۡقَ لِمَن یَشَاۤءُ وَیَقۡدِرُۚ إِنَّهُۥ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمࣱ ﴿12﴾
আকাশ ও পৃথিবীর চাবি তাঁর কাছে। তিনি যার জন্যে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করেন এবং পরিমিত করেন। তিনি সর্ব বিষয়ে জ্ঞানী।
''মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর চাবিকাঠি তাঁরই কাছে, তিনি যাকে ইচ্ছা করেন তার প্রতি রিযেক সম্প্রসারিত করেন আর মেপেজোখেও দেন। নিঃসন্দেহ তিনি সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞাতা।’’
۞ شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّینِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحࣰا وَٱلَّذِیۤ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَیۡكَ وَمَا وَصَّیۡنَا بِهِۦۤ إِبۡرَ ٰهِیمَ وَمُوسَىٰ وَعِیسَىٰۤۖ أَنۡ أَقِیمُوا۟ ٱلدِّینَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا۟ فِیهِۚ كَبُرَ عَلَى ٱلۡمُشۡرِكِینَ مَا تَدۡعُوهُمۡ إِلَیۡهِۚ ٱللَّهُ یَجۡتَبِیۤ إِلَیۡهِ مَن یَشَاۤءُ وَیَهۡدِیۤ إِلَیۡهِ مَن یُنِیبُ ﴿13﴾
তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নিধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহকে, যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না। আপনি মূশরেকদেরকে যে বিষয়ের প্রতি আমন্ত্রণ জানান, তা তাদের কাছে দুঃসাধ্য বলে মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী হয়, তাকে পথ প্রদর্শন করেন।
তিনি তোমাদের জন্য সেই ধর্ম থেকে বিধান দিচ্ছেন যার দ্বারা তিনি নূহকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আর যা আমরা তোমার কাছে প্রত্যাদেশ করছি, আর যার দ্বারা আমরা ইব্রাহীমকে ও মূসাকে ও ঈসাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম এই বলে -- ''ধর্মকে কায়েম করো, আর এতে একে-অন্যে বিচ্ছিন্ন হয়ো না।’’ মুশরিকদের জন্য এ বড় কঠিন ব্যাপার যার প্রতি তুমি তাদের আহ্বান করছ! আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে তাঁর কারণে নির্বাচিত করেন, আর তাঁর দিকে পরিচালিত করেন তাকে যে ফেরে।
وَمَا تَفَرَّقُوۤا۟ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَهُمُ ٱلۡعِلۡمُ بَغۡیَۢا بَیۡنَهُمۡۚ وَلَوۡلَا كَلِمَةࣱ سَبَقَتۡ مِن رَّبِّكَ إِلَىٰۤ أَجَلࣲ مُّسَمࣰّى لَّقُضِیَ بَیۡنَهُمۡۚ وَإِنَّ ٱلَّذِینَ أُورِثُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ لَفِی شَكࣲّ مِّنۡهُ مُرِیبࣲ ﴿14﴾
তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরই তারা পারস্পরিক বিভেদের কারণে মতভেদ করেছে। যদি আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকত, তবে তাদের ফয়সালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছে, তারা অস্বস্তিকর সন্দেহে পতিত রয়েছে।
আর তারা নিজেদের কাছে জ্ঞান আসার পরেও বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত না যদি-না নিজেদের মধ্যে ঈর্ষা-বিদ্বেষ থাকত। আর যদি তোমার প্রভুর কাছ থেকে একটি নির্ধারিত কাল পর্যন্ত একটি বাণী ইতিপূর্বে ধার্য হয়ে না থাকত তাহলে নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে হেস্তনেস্ত হয়ে যেত। আর তাঁদের পরে যারা ধর্মগ্রন্থ উত্তরাধিকার করেছিল তারা তো এটি সন্বন্ধে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে।
فَلِذَ ٰلِكَ فَٱدۡعُۖ وَٱسۡتَقِمۡ كَمَاۤ أُمِرۡتَۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَاۤءَهُمۡۖ وَقُلۡ ءَامَنتُ بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِن كِتَـٰبࣲۖ وَأُمِرۡتُ لِأَعۡدِلَ بَیۡنَكُمُۖ ٱللَّهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمۡۖ لَنَاۤ أَعۡمَـٰلُنَا وَلَكُمۡ أَعۡمَـٰلُكُمۡۖ لَا حُجَّةَ بَیۡنَنَا وَبَیۡنَكُمُۖ ٱللَّهُ یَجۡمَعُ بَیۡنَنَاۖ وَإِلَیۡهِ ٱلۡمَصِیرُ ﴿15﴾
সুতরাং আপনি এর প্রতিই দাওয়াত দিন এবং হুকুম অনুযায়ী অবিচল থাকুন; আপনি তাদের খেয়ালখুশীর অনুসরণ করবেন না। বলুন, আল্লাহ যে কিতাব নাযিল করেছেন, আমি তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ আমাদের পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। আমাদের জন্যে আমাদের কর্ম এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম। আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে বিবাদ নেই। আল্লাহ আমাদেরকে সমবেত করবেন এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তণ হবে।
কাজেই এর প্রতি তুমি তবে আহ্বান করতে থাকো, আর তোমাকে যেমন আদেশ করা হয়েছে তেমনিভাবে তুমি অটল থাকো, আর তাদের খেয়ালখুশির অনুগমন করো না, বরং বলো -- ''আমি বিশ্বাস করি তাতে যা আল্লাহ্ অবতারণ করেছেন এ গ্রন্থ থেকে, আর আমাকে আদেশ করা হয়েছে তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে। আল্লাহ্ আমাদের প্রভু এবং তোমাদেরও প্রভু। আমাদের কাজ হবে আমাদের জন্য এবং তোমাদের কাজ হবে তোমাদের জন্য। আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসংবাদ নেই। আল্লাহ্ আমাদের একত্রিত করবেন। আর তাঁর কাছেই তো প্রত্যাবর্তন।’’
وَٱلَّذِینَ یُحَاۤجُّونَ فِی ٱللَّهِ مِنۢ بَعۡدِ مَا ٱسۡتُجِیبَ لَهُۥ حُجَّتُهُمۡ دَاحِضَةٌ عِندَ رَبِّهِمۡ وَعَلَیۡهِمۡ غَضَبࣱ وَلَهُمۡ عَذَابࣱ شَدِیدٌ ﴿16﴾
আল্লাহর দ্বীন মেনে নেয়ার পর যারা সে সম্পর্কে বিতর্কে প্রবৃত্ত হয়, তাদের বিতর্ক তাদের পালনকর্তার কাছে বাতিল, তাদের প্রতি আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব।
আর যারা আল্লাহ্ সন্বন্ধে তর্ক করে তাঁর কথায় সাড়া দেবার পরেও, তাদের তর্কবিতর্ক তাদের প্রভুর কাছে অসার, আর তাদের উপরে ক্রোধ, আর তাদের জন্য রয়েছে ভীষণ শাস্তি।
ٱللَّهُ ٱلَّذِیۤ أَنزَلَ ٱلۡكِتَـٰبَ بِٱلۡحَقِّ وَٱلۡمِیزَانَۗ وَمَا یُدۡرِیكَ لَعَلَّ ٱلسَّاعَةَ قَرِیبࣱ ﴿17﴾
আল্লাহই সত্যসহ কিতাব ও ইনসাফের মানদন্ড নাযিল করেছেন। আপনি কি জানেন, সম্ভবতঃ কেয়ামত নিকটবর্তী।
আল্লাহ্ই তিনি যিনি সত্যসহ এই গ্রন্থ অবতারণ করেছেন আর দাঁড়িপাল্লা। আর কী তোমাকে জানাতে পারে -- সম্ভবতঃ ঘড়িঘন্টা আসন্ন।
یَسۡتَعۡجِلُ بِهَا ٱلَّذِینَ لَا یُؤۡمِنُونَ بِهَاۖ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مُشۡفِقُونَ مِنۡهَا وَیَعۡلَمُونَ أَنَّهَا ٱلۡحَقُّۗ أَلَاۤ إِنَّ ٱلَّذِینَ یُمَارُونَ فِی ٱلسَّاعَةِ لَفِی ضَلَـٰلِۭ بَعِیدٍ ﴿18﴾
যারা তাতে বিশ্বাস করে না তারা তাকে তড়িৎ কামনা করে। আর যারা বিশ্বাস করে, তারা তাকে ভয় করে এবং জানে যে, তা সত্য। জেনে রাখ, যারা কেয়ামত সম্পর্কে বিতর্ক করে, তারা দূরবর্তী পথ ভ্রষ্টতায় লিপ্ত রয়েছে।
যারা এতে বিশ্বাস করে না তারাই এটি ত্বরান্বিত করতে চায়, কিন্ত যারা বিশ্বাস করে তারা এ সন্বন্ধে ভীত-সন্ত্রস্ত, এবং তারা জানে যে এটি নিঃসন্দেহ সত্য। এটি কি নয় যে যারা ঘড়িঘন্টা সন্বন্ধে বাক্-বিতন্ডা করে তারাই তো সুদূর প্রসারী ভ্রান্তি তে রয়েছে?
ٱللَّهُ لَطِیفُۢ بِعِبَادِهِۦ یَرۡزُقُ مَن یَشَاۤءُۖ وَهُوَ ٱلۡقَوِیُّ ٱلۡعَزِیزُ ﴿19﴾
আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছা, রিযিক দান করেন। তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী।
আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের প্রতি পরম দয়ালু, তিনি যাকে ইচ্ছা করেন রিযেক দান করেন, আর তিনি মহাবলীয়ান, মহাশক্তিশালী।
مَن كَانَ یُرِیدُ حَرۡثَ ٱلۡـَٔاخِرَةِ نَزِدۡ لَهُۥ فِی حَرۡثِهِۦۖ وَمَن كَانَ یُرِیدُ حَرۡثَ ٱلدُّنۡیَا نُؤۡتِهِۦ مِنۡهَا وَمَا لَهُۥ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ مِن نَّصِیبٍ ﴿20﴾
যে কেউ পরকালের ফসল কামনা করে, আমি তার জন্যে সেই ফসল বাড়িয়ে দেই। আর যে ইহকালের ফসল কামনা করে, আমি তাকে তার কিছু দিয়ে দেই এবং পরকালে তার কোন অংশ থাকবে না।
যে কেউ পরলোকের শস্যক্ষেত্র চায়, আমরা তার জন্য তার চাষ-আবাদ বাড়িয়ে দিই, আর যে কেউ এই দুনিয়ার চাষ-আবাদ চায় তাকে আমরা তা থেকেই দিয়ে থাকি, আর তার জন্য পরলোকে কোনো ভাগ থাকবে না।
أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَـٰۤؤُا۟ شَرَعُوا۟ لَهُم مِّنَ ٱلدِّینِ مَا لَمۡ یَأۡذَنۢ بِهِ ٱللَّهُۚ وَلَوۡلَا كَلِمَةُ ٱلۡفَصۡلِ لَقُضِیَ بَیۡنَهُمۡۗ وَإِنَّ ٱلظَّـٰلِمِینَ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿21﴾
তাদের কি এমন শরীক দেবতা আছে, যারা তাদের জন্যে সে ধর্ম সিদ্ধ করেছে, যার অনুমতি আল্লাহ দেননি ? যদি চুড়ান্ত সিন্ধান্ত না থাকত, তবে তাদের ব্যাপারে ফয়সালা হয়ে যেত। নিশ্চয় যালেমদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
অথবা তাদের কারণে কি অংশীদাররা রয়েছে যারা তাদের এমন এক ধর্মের বিধান দেয় যার জন্য আল্লাহ্ কোনো অনুমতি দেন নি? আর যদি একটি সিদ্ধান্তপূর্ণ বাণী না থাকত তাহলে নিশ্চয় তাদের মধ্যে মীমাংসা হয়েই যেত। আর অবশ্য অনাচারীরা -- তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
تَرَى ٱلظَّـٰلِمِینَ مُشۡفِقِینَ مِمَّا كَسَبُوا۟ وَهُوَ وَاقِعُۢ بِهِمۡۗ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فِی رَوۡضَاتِ ٱلۡجَنَّاتِۖ لَهُم مَّا یَشَاۤءُونَ عِندَ رَبِّهِمۡۚ ذَ ٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَضۡلُ ٱلۡكَبِیرُ ﴿22﴾
আপনি কাফেরদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্যে ভীতসন্ত্রস্ত দেখবেন। তাদের কর্মের শাস্তি অবশ্যই তাদের উপর পতিত হবে। আর যারা মুমিন ও সৎকর্মী, তারা জান্নাতের উদ্যানে থাকবে। তারা যা চাইবে, তাই তাদের জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে। এটাই বড় পুরস্কার।
তুমি দেখতে পাবে অন্যায়কারীরা ভীত-সন্ত্রস্ত রয়েছে তারা যা অর্জন করেছে সে জন্য, আর তা তাদের উপরে পড়তেই যাচ্ছে। পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে জান্নাতের ফুলময় ময়দানে, -- তাদের জন্য তাদের প্রভুর কাছে রয়েছে তারা যা চায় তাই। এইটি -- এইই তো হচ্ছে বিরাট করুণাভান্ডার।
ذَ ٰلِكَ ٱلَّذِی یُبَشِّرُ ٱللَّهُ عِبَادَهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِۗ قُل لَّاۤ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَیۡهِ أَجۡرًا إِلَّا ٱلۡمَوَدَّةَ فِی ٱلۡقُرۡبَىٰۗ وَمَن یَقۡتَرِفۡ حَسَنَةࣰ نَّزِدۡ لَهُۥ فِیهَا حُسۡنًاۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ شَكُورٌ ﴿23﴾
এরই সুসংবাদ দেন আল্লাহ তার সেসব বান্দাকে, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে। বলুন, আমি আমার দাওয়াতের জন্যে তোমাদের কাছে কেবল আত্নীয়তাজনিত সৌহার্দ চাই। যে কেউ উত্তম কাজ করে, আমি তার জন্যে তাতে পুণ্য বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকারী, গুণগ্রাহী।
এইটি যার সুসংবাদ আল্লাহ্ দিচ্ছেন তাঁর বান্দাদের -- যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করছে। তুমি বলো -- ''আমি তোমাদের থেকে এর জন্যে নিকটাত্মীয়দের মধ্যে ভালবাসা ব্যতীত অন্য কোনো প্রতিদান চাইছি না।’’ আর যে কেউ ভাল কাজ অর্জন করে আমরা তার জন্য এতে আরো ভাল যোগ দিই। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, গুণগ্রাহী।
أَمۡ یَقُولُونَ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبࣰاۖ فَإِن یَشَإِ ٱللَّهُ یَخۡتِمۡ عَلَىٰ قَلۡبِكَۗ وَیَمۡحُ ٱللَّهُ ٱلۡبَـٰطِلَ وَیُحِقُّ ٱلۡحَقَّ بِكَلِمَـٰتِهِۦۤۚ إِنَّهُۥ عَلِیمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿24﴾
নাকি তারা একথা বলে যে, তিনি আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করেছেন? আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনার অন্তরে মোহর এঁটে দিতেন। বস্তুতঃ তিনি মিথ্যাকে মিটিয়ে দেন এবং নিজ বাক্য দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নিশ্চয় তিনি অন্তর্নিহিত বিষয় সম্পর্কে সর্বিশেষ জ্ঞাত।
অথবা তারা কি বলে -- ''সে আল্লাহ্ সম্পর্কে এক মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে?’’ কিন্ত আল্লাহ্ যদি চাইতেন তাহলে তোমার হৃদয়ে তিনি মোহর মেরে দিতেন। বস্তুত আল্লাহ্ মিথ্যাকে মুছে ফেলেন এবং সত্যকে সত্য প্রতিপন্ন করবেন তাঁর বাণীর দ্বারা। নিঃসন্দেহ তাদের অন্তরে যা রয়েছে সে-সন্বন্ধে তিনি সম্যক জ্ঞাতা।
وَهُوَ ٱلَّذِی یَقۡبَلُ ٱلتَّوۡبَةَ عَنۡ عِبَادِهِۦ وَیَعۡفُوا۟ عَنِ ٱلسَّیِّـَٔاتِ وَیَعۡلَمُ مَا تَفۡعَلُونَ ﴿25﴾
তিনি তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন পাপসমূহ মার্জনা করেন এবং তোমাদের কৃত বিষয় সম্পর্কে অবগত রয়েছেন।
আর তিনিই সেইজন যিনি তাঁর বান্দাদের থেকে তওবা কবুল করেন, আর মন্দ ক্রিয়াকলাপ থেকে ক্ষমা করেন, আর তোমরা যা কর তিনি তা জানেন।
وَیَسۡتَجِیبُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَیَزِیدُهُم مِّن فَضۡلِهِۦۚ وَٱلۡكَـٰفِرُونَ لَهُمۡ عَذَابࣱ شَدِیدࣱ ﴿26﴾
তিনি মুমিন ও সৎকর্মীদের দোয়া শোনেন এবং তাদের প্রতি স্বীয় অনুগ্রহ বাড়িয়ে দেন। আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।
আর তিনি সাড়া দেন তাদের প্রতি যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আর তাদের তিনি বাড়িয়ে দেন তাঁর করুণাভান্ডার থেকে। আর অবিশ্বাসীরা -- তাদের জন্য রয়েছে ভীষণ শাস্তি।
۞ وَلَوۡ بَسَطَ ٱللَّهُ ٱلرِّزۡقَ لِعِبَادِهِۦ لَبَغَوۡا۟ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَلَـٰكِن یُنَزِّلُ بِقَدَرࣲ مَّا یَشَاۤءُۚ إِنَّهُۥ بِعِبَادِهِۦ خَبِیرُۢ بَصِیرࣱ ﴿27﴾
যদি আল্লাহ তাঁর সকল বান্দাকে প্রচুর রিযিক দিতেন, তবে তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করত। কিন্তু তিনি যে পরিমাণ ইচ্ছা সে পরিমাণ নাযিল করেন। নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দাদের খবর রাখেন ও সবকিছু দেখেন।
আর যদি আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের প্রতি রিযেক বাড়িয়ে দিতেন তাহলে তারা অবশ্যই দুনিয়াতে বিদ্রোহ করত, কিন্ত তিনি পাঠান যেমন তিনি চান তেমন পরিমাপ মতো। নিঃসন্দেহ তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি পূর্ণ ওয়াকিফহাল, সর্বদ্রষ্টা।
وَهُوَ ٱلَّذِی یُنَزِّلُ ٱلۡغَیۡثَ مِنۢ بَعۡدِ مَا قَنَطُوا۟ وَیَنشُرُ رَحۡمَتَهُۥۚ وَهُوَ ٱلۡوَلِیُّ ٱلۡحَمِیدُ ﴿28﴾
মানুষ নিরাশ হয়ে যাওয়ার পরে তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং স্বীয় রহমত ছড়িয়ে দেন। তিনিই কার্যনির্বাহী, প্রশংসিত।
আর তিনিই সেইজন যিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন তারা হতাশ হয়ে পড়ার পরে, আর প্রসারিত করেন তাঁর করুণা। আর তিনিই মুরব্বী, পরম প্রশংসিত।
وَمِنۡ ءَایَـٰتِهِۦ خَلۡقُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَثَّ فِیهِمَا مِن دَاۤبَّةࣲۚ وَهُوَ عَلَىٰ جَمۡعِهِمۡ إِذَا یَشَاۤءُ قَدِیرࣱ ﴿29﴾
তাঁর এক নিদর্শন নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যেসব জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি যখন ইচ্ছা এগুলোকে একত্রিত করতে সক্ষম।
আর তাঁর নিদর্শনগুলোর মধ্যে হচ্ছে মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি, আর এ দুইয়ের মধ্যে জীবজন্তুর যে-সব তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলি। আর যখন তিনি চান তখনই তাদের জমায়েৎ করণে তিনি পরম ক্ষমতাবান।
وَمَاۤ أَصَـٰبَكُم مِّن مُّصِیبَةࣲ فَبِمَا كَسَبَتۡ أَیۡدِیكُمۡ وَیَعۡفُوا۟ عَن كَثِیرࣲ ﴿30﴾
তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন।
আর বিপদ-আপদের যা তোমাদের আঘাত করে তা তো তোমার হাত যা অর্জন করেছে সে-জন্য, আর তিনি অনেকটা ক্ষমা করে দেন।
وَمَاۤ أَنتُم بِمُعۡجِزِینَ فِی ٱلۡأَرۡضِۖ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِیࣲّ وَلَا نَصِیرࣲ ﴿31﴾
তোমরা পৃথিবীতে পলায়ন করে আল্লাহকে অক্ষম করতে পার না এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন কার্যনির্বাহী নেই, সাহায্যকারীও নেই।
আর তোমরা পৃথিবীতে এড়িয়ে যেতে পারবে না। আর আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে তোমাদের জন্য কোনো অভিভাবক নেই আর সাহায্যকারীও নেই।
وَمِنۡ ءَایَـٰتِهِ ٱلۡجَوَارِ فِی ٱلۡبَحۡرِ كَٱلۡأَعۡلَـٰمِ ﴿32﴾
সমুদ্রে ভাসমান পর্বতসম জাহাজসমূহ তাঁর অন্যতম নিদর্শন।
আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে হচ্ছে সমুদ্রে পাহাড়ের মতো জাহাজগুলো --
إِن یَشَأۡ یُسۡكِنِ ٱلرِّیحَ فَیَظۡلَلۡنَ رَوَاكِدَ عَلَىٰ ظَهۡرِهِۦۤۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَـٰتࣲ لِّكُلِّ صَبَّارࣲ شَكُورٍ ﴿33﴾
তিনি ইচ্ছা করলে বাতাসকে থামিয়ে দেন। তখন জাহাজসমূহ সমুদ্রপৃষ্ঠে নিশ্চল হয়ে পড়ে যেন পাহাড়। নিশ্চয় এতে প্রত্যেক সবরকারী, কৃতজ্ঞের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
তিনি যদি ইচ্ছা করেন তবে তিনি বাতাসকে নিশ্চল করে দিতে পারেন, ফলে তারা তার পিঠে নিশ্চল হয়ে পড়ে। এতে তো অবশ্যই নিদর্শনাবলী রয়েছে প্রত্যেক অধ্যবসায়ী কৃতজ্ঞের জন্য।
أَوۡ یُوبِقۡهُنَّ بِمَا كَسَبُوا۟ وَیَعۡفُ عَن كَثِیرࣲ ﴿34﴾
অথবা তাদের কৃতকর্মের জন্যে সেগুলোকে ধ্বংস করে দেন এবং অনেককে ক্ষমাও করে দেন।
অথবা তারা যা অর্জন করেছে সে-জন্য তিনি সেগুলো ভেঙেচুরে ফেলেন, আর তিনি অনেকের থেকে মাফও করে দেন, --
وَیَعۡلَمَ ٱلَّذِینَ یُجَـٰدِلُونَ فِیۤ ءَایَـٰتِنَا مَا لَهُم مِّن مَّحِیصࣲ ﴿35﴾
এবং যারা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে বিতর্ক করে, তারা যেন জানে যে, তাদের কোন পলায়নের জায়গা নেই।
আর যেন যারা আমাদের নিদর্শনগুলো সন্বন্ধে তর্কবিতর্ক করে তারা জানতে পারে। তাদের জন্য কোনো আশ্রয়স্থল নেই।
فَمَاۤ أُوتِیتُم مِّن شَیۡءࣲ فَمَتَـٰعُ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَاۚ وَمَا عِندَ ٱللَّهِ خَیۡرࣱ وَأَبۡقَىٰ لِلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَلَىٰ رَبِّهِمۡ یَتَوَكَّلُونَ ﴿36﴾
অতএব, তোমাদেরকে যা দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের ভোগ মাত্র। আর আল্লাহর কাছে যা রয়েছে, তা উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী তাদের জন্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করে।
বস্তুতঃ তোমাদের যা-কিছু দেওয়া হয়েছে তা তো এই দুনিয়ার জীবনের ভোগবিলাস, আর যা আল্লাহ্র কাছে রয়েছে তা বেশী ভাল ও দীর্ঘস্থায়ী তাদের জন্য যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের প্রভুর উপরে নির্ভর করে থাকে, --
وَٱلَّذِینَ یَجۡتَنِبُونَ كَبَـٰۤىِٕرَ ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡفَوَ ٰحِشَ وَإِذَا مَا غَضِبُوا۟ هُمۡ یَغۡفِرُونَ ﴿37﴾
যারা বড় গোনাহ ও অশ্লীল কার্য থেকে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধাম্বিত হয়েও ক্ষমা করে,
আর যারা এড়িয়ে চলে পাপাচারের বড়গুলো এবং অশ্লীল আচরণ, আর যারা যখন রেগে যায় তখন তারা ক্ষমা করে দেয়,
وَٱلَّذِینَ ٱسۡتَجَابُوا۟ لِرَبِّهِمۡ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَمۡرُهُمۡ شُورَىٰ بَیۡنَهُمۡ وَمِمَّا رَزَقۡنَـٰهُمۡ یُنفِقُونَ ﴿38﴾
যারা তাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য করে, নামায কায়েম করে; পারস্পরিক পরামর্শক্রমে কাজ করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে,
আর যারা তাদের প্রভুর প্রতি সাড়া দেয়, এবং নামায কায়েম করে, আর তাদের কাজকর্ম হয় নিজেদের মধ্যে পরামর্শক্রমে, আর আমরা তাদের যা রিযেক দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে থাকে,
وَٱلَّذِینَ إِذَاۤ أَصَابَهُمُ ٱلۡبَغۡیُ هُمۡ یَنتَصِرُونَ ﴿39﴾
যারা আক্রান্ত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে।
আর যারা তাদের প্রতি যখন বিদ্রোহ আঘাত হানে তারা তখন আত্মরক্ষা করে।
وَجَزَ ٰۤؤُا۟ سَیِّئَةࣲ سَیِّئَةࣱ مِّثۡلُهَاۖ فَمَنۡ عَفَا وَأَصۡلَحَ فَأَجۡرُهُۥ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّهُۥ لَا یُحِبُّ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿40﴾
আর মন্দের প্রতিফল তো অনুরূপ মন্দই। যে ক্ষমা করে ও আপোষ করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে; নিশ্চয় তিনি অত্যাচারীদেরকে পছন্দ করেন নাই।
আর মন্দের প্রতিফল তার অনুরূপ মন্দ, কিন্ত যে কেউ ক্ষমা করে আর সদ্ভাব সৃষ্টি করে, তাহলে তার পুরস্কার রয়েছে আল্লাহ্র নিকটে। নিঃসন্দেহ অন্যায়কারীদের তিনি ভালবাসেন না।
وَلَمَنِ ٱنتَصَرَ بَعۡدَ ظُلۡمِهِۦ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ مَا عَلَیۡهِم مِّن سَبِیلٍ ﴿41﴾
নিশ্চয় যে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধেও কোন অভিযোগ নেই।
তবে যে কেউ আত্মরক্ষা করে তার প্রতি অত্যাচার হবার পরে -- তবে তারাই, তাদের বিরুদ্ধে কোনো রাস্তা নেই।
إِنَّمَا ٱلسَّبِیلُ عَلَى ٱلَّذِینَ یَظۡلِمُونَ ٱلنَّاسَ وَیَبۡغُونَ فِی ٱلۡأَرۡضِ بِغَیۡرِ ٱلۡحَقِّۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿42﴾
অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
পথ কেবল তাদেরই বিরুদ্ধে যারা লোকজনের উপরে অত্যাচার করে এবং দুনিয়াতে বিদ্রোহ করে ন্যায়সঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে। এরাই -- এদেরই জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
وَلَمَن صَبَرَ وَغَفَرَ إِنَّ ذَ ٰلِكَ لَمِنۡ عَزۡمِ ٱلۡأُمُورِ ﴿43﴾
অবশ্যই যে সবর করে ও ক্ষমা করে নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ।
আর যে কেউ অধ্যবসায় অবলন্বন করে ও ক্ষমা করে দেয়, তাহলে তাই তো হচ্ছে বীরত্বজনক কাজের মধ্যের অন্যতম।
وَمَن یُضۡلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِن وَلِیࣲّ مِّنۢ بَعۡدِهِۦۗ وَتَرَى ٱلظَّـٰلِمِینَ لَمَّا رَأَوُا۟ ٱلۡعَذَابَ یَقُولُونَ هَلۡ إِلَىٰ مَرَدࣲّ مِّن سَبِیلࣲ ﴿44﴾
আল্লাহ যাকে পথ ভ্রষ্ট করেন, তার জন্যে তিনি ব্যতীত কোন কার্যনির্বাহী নেই। পাপাচারীরা যখন আযাব প্রত্যক্ষ করবে, তখন আপনি তাদেরকে দেখবেন যে, তারা বলছে আমাদের ফিরে যাওয়ার কোন উপায় আছে কি?
আর আল্লাহ্ যাকে ভ্রান্তপথে যেতে দেন তার জন্যে তবে তাঁর বাহিরে কোনো অভিভাবক নেই। আর তুমি অন্যায়াচারীদের দেখতে পাবে -- যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে -- তারা বলতে থাকবে -- ''ফিরে যাবার মতো কোনো পথ আছে কি?’’
وَتَرَىٰهُمۡ یُعۡرَضُونَ عَلَیۡهَا خَـٰشِعِینَ مِنَ ٱلذُّلِّ یَنظُرُونَ مِن طَرۡفٍ خَفِیࣲّۗ وَقَالَ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِنَّ ٱلۡخَـٰسِرِینَ ٱلَّذِینَ خَسِرُوۤا۟ أَنفُسَهُمۡ وَأَهۡلِیهِمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۗ أَلَاۤ إِنَّ ٱلظَّـٰلِمِینَ فِی عَذَابࣲ مُّقِیمࣲ ﴿45﴾
জাহান্নামের সামনে উপস্থিত করার সময় আপনি তাদেরকে দেখবেন, অপমানে অবনত এবং অর্ধ নিমীলিত দৃষ্টিতে তাকায়। মুমিনরা বলবে, কেয়ামতের দিন ক্ষতিগ্রস্ত তারাই, যারা নিজেদের ও তাদের পরিবার-পরিজনের ক্ষতি সাধন করেছে। শুনে রাখ, পাপাচারীরা স্থায়ী আযাবে থাকবে।
আর তুমি তাদের দেখতে পাবে এর সামনে আনা হয়েছে লাঞ্ছনার ফলে বিনত অবস্থায়, তাকিয়ে রয়েছে ভীত-সন্ত্রস্ত চোখে। আর যারা ঈমান এনেছে তারা বলবে -- ''নিঃসন্দেহ ক্ষতিগ্রস্ত তো তারা যারা কিয়ামতের দিনে তাদের নিজেদের ও তাদের পরিবারবর্গের ক্ষতি সাধন করেছে। এটি কি নয় যে অন্যাযাচারীরা দীর্ঘস্থায়ী শাস্তিতে রয়েছে?’’
وَمَا كَانَ لَهُم مِّنۡ أَوۡلِیَاۤءَ یَنصُرُونَهُم مِّن دُونِ ٱللَّهِۗ وَمَن یُضۡلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِن سَبِیلٍ ﴿46﴾
আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না, যে তাদেরকে সাহায্য করবে। আল্লাহ তা’আলা যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার কোন গতি নেই।
আর তাদের সাহায্য করার কারণে আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে তাদের জন্য অভিভাবকদের কেউ থাকবে না। আর যাকে আল্লাহ্ ভুলপথে চলতে দেন তার জন্য তবে কোনো গতি থাকবে না।
ٱسۡتَجِیبُوا۟ لِرَبِّكُم مِّن قَبۡلِ أَن یَأۡتِیَ یَوۡمࣱ لَّا مَرَدَّ لَهُۥ مِنَ ٱللَّهِۚ مَا لَكُم مِّن مَّلۡجَإࣲ یَوۡمَىِٕذࣲ وَمَا لَكُم مِّن نَّكِیرࣲ ﴿47﴾
আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে অবশ্যম্ভাবী দিবস আসার পূর্বে তোমরা তোমাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য কর। সেদিন তোমাদের কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তা নিরোধকারী কেউ থাকবে না।
তোমাদের প্রভুর প্রতি সাড়া দাও সেইদিন আসার আগে যাকে আল্লাহ্র কাছ থেকে ফেরানো যাবে না। তোমাদের জন্য সেইদিন কোনো আশ্রয়স্থল থাকবে না, আর তোমাদের জন্য রইবে না কোনো ধরনের অস্বীকারকরণ।
فَإِنۡ أَعۡرَضُوا۟ فَمَاۤ أَرۡسَلۡنَـٰكَ عَلَیۡهِمۡ حَفِیظًاۖ إِنۡ عَلَیۡكَ إِلَّا ٱلۡبَلَـٰغُۗ وَإِنَّاۤ إِذَاۤ أَذَقۡنَا ٱلۡإِنسَـٰنَ مِنَّا رَحۡمَةࣰ فَرِحَ بِهَاۖ وَإِن تُصِبۡهُمۡ سَیِّئَةُۢ بِمَا قَدَّمَتۡ أَیۡدِیهِمۡ فَإِنَّ ٱلۡإِنسَـٰنَ كَفُورࣱ ﴿48﴾
যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আপনাকে আমি তাদের রক্ষক করে পাঠাইনি। আপনার কর্তব্য কেবল প্রচার করা। আমি তাদের রক্ষক করে পাঠাইনি। আপনার কর্তব্য কেবল প্রচার করা। আমি যখন মানুষকে আমার রহমত আস্বাদন করাই, তখন সে উল্লসিত, আর যখন তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদের কোন অনিষ্ট ঘটে, তখন মানুষ খুব অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়।
কিন্ত তারা যদি বিমুখ হয় তবে আমরা তোমাকে তো তাদের উপরে একজন রক্ষাকারীরূপে পাঠাই নি। তোমার উপরে তো শুধু বাণী পৌঁছে দেওয়া। আর অবশ্য আমরা যখন মানুষকে আমাদের কাছ একে করুণা আস্বাদন করাই তখন সে এতে আনন্দ করে, কিন্ত তাদের হাত যা আগবাড়িয়েছে সেজন্য যদি কোনো মন্দ তাদের আঘাত করে, তবে মানুষ নিশ্চয়ই হয়ে যায় অকৃতজ্ঞ।
لِّلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ یَخۡلُقُ مَا یَشَاۤءُۚ یَهَبُ لِمَن یَشَاۤءُ إِنَـٰثࣰا وَیَهَبُ لِمَن یَشَاۤءُ ٱلذُّكُورَ ﴿49﴾
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।
আল্লাহরই হচ্ছে মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব। তিনি যা চান তাই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে চান কন্যাসন্তান দান করেন, আর যাকে ইচ্ছা করেন পুত্রসন্তান দেন,
أَوۡ یُزَوِّجُهُمۡ ذُكۡرَانࣰا وَإِنَـٰثࣰاۖ وَیَجۡعَلُ مَن یَشَاۤءُ عَقِیمًاۚ إِنَّهُۥ عَلِیمࣱ قَدِیرࣱ ﴿50﴾
অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।
অথবা তিনি তাদের জোড়ে দেন পুত্রসন্তান ও কন্যা-সন্তান, আবার যাকে চান তাকে তিনি বন্ধ্যা বানিয়ে দেন। নিঃসন্দেহ তিনি সর্বজ্ঞাতা, সর্বশক্তিমান।
۞ وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن یُكَلِّمَهُ ٱللَّهُ إِلَّا وَحۡیًا أَوۡ مِن وَرَاۤىِٕ حِجَابٍ أَوۡ یُرۡسِلَ رَسُولࣰا فَیُوحِیَ بِإِذۡنِهِۦ مَا یَشَاۤءُۚ إِنَّهُۥ عَلِیٌّ حَكِیمࣱ ﴿51﴾
কোন মানুষের জন্য এমন হওয়ার নয় যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে অথবা তিনি কোন দূত প্রেরণ করবেন, অতঃপর আল্লাহ যা চান, সে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বোচ্চ প্রজ্ঞাময়।
আর কোনো মানবের জন্যে এটি নয় যে আল্লাহ্ তার সাথে কথা বলবেন ওহী ব্যতীত, অথবা পর্দার আড়ালে থেকে, অথবা তিনি কোনো বাণীবাহককে পাঠান ফলে সে তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী যা তিনি চান তা প্রত্যাদেশ করে। নিঃসন্দেহ তিনি সর্বোন্নত, পরমজ্ঞানী।
وَكَذَ ٰلِكَ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَیۡكَ رُوحࣰا مِّنۡ أَمۡرِنَاۚ مَا كُنتَ تَدۡرِی مَا ٱلۡكِتَـٰبُ وَلَا ٱلۡإِیمَـٰنُ وَلَـٰكِن جَعَلۡنَـٰهُ نُورࣰا نَّهۡدِی بِهِۦ مَن نَّشَاۤءُ مِنۡ عِبَادِنَاۚ وَإِنَّكَ لَتَهۡدِیۤ إِلَىٰ صِرَ ٰطࣲ مُّسۡتَقِیمࣲ ﴿52﴾
এমনিভাবে আমি আপনার কাছে এক ফেরেশতা প্রেরণ করেছি আমার আদেশক্রমে। আপনি জানতেন না, কিতাব কি এবং ঈমান কি? কিন্তু আমি একে করেছি নূর, যাদ্দ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করি। নিশ্চয় আপনি সরল পথ প্রদর্শন করেন-
আর এইভাবে আমরা তোমার কাছে আমাদের নির্দেশক্রমে প্রত্যাদেশ করেছি অনুপ্রাণিত গ্রন্থ। তুমি তো জানতে না গ্রন্থখানা কেমনতর, আর ধর্মবিশ্বাসও নয়, কিন্ত আমরা এটিকে বানিয়েছি এক আলোক, -- এর দ্বারা আমরা পথ দেখাচ্ছি আমাদের বান্দাদের যাদের আমরা ইচ্ছা করছি। আর তুমি তো নিশ্চয়ই পথ দেখাচ্ছ সঠিক পথের দিকে --
صِرَ ٰطِ ٱللَّهِ ٱلَّذِی لَهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ أَلَاۤ إِلَى ٱللَّهِ تَصِیرُ ٱلۡأُمُورُ ﴿53﴾
আল্লাহর পথ। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল যা কিছু আছে, সব তাঁরই। শুনে রাখ, আল্লাহ তা’আলার কাছেই সব বিষয়ে পৌঁছে।
আল্লাহ্র পথ, যিনি তাঁর দখলে রেখেছেন মহাকাশমন্ডলীতে যা-কিছু আছে এবং যা-কিছু আছে পৃথিবীতে। এটি কি নয় যে সব ব্যাপারই আল্লাহ্র কাছে পেছে যাঁয়?