Settings
Surah Ornaments of Gold [Az-Zukhruf] in Bengali
وَٱلۡكِتَـٰبِ ٱلۡمُبِینِ ﴿2﴾
শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের,
সুস্পষ্ট গ্রন্থখানা সন্বন্ধে ভেবে দেখো --
إِنَّا جَعَلۡنَـٰهُ قُرۡءَ ٰ نًا عَرَبِیࣰّا لَّعَلَّكُمۡ تَعۡقِلُونَ ﴿3﴾
আমি একে করেছি কোরআন, আরবী ভাষায়, যাতে তোমরা বুঝ।
নিঃসন্দেহ আমরা এটিকে এক আরবী ভাষণ করেছি যেন তোমরা বুঝতে পারো।
وَإِنَّهُۥ فِیۤ أُمِّ ٱلۡكِتَـٰبِ لَدَیۡنَا لَعَلِیٌّ حَكِیمٌ ﴿4﴾
নিশ্চয় এ কোরআন আমার কাছে সমুন্নত অটল রয়েছে লওহে মাহফুযে।
আর নিঃসন্দেহ এটি রয়েছে আমাদের কাছে আদিগ্রন্থে, মহোচ্চ, জ্ঞানসমৃদ্ধ।
أَفَنَضۡرِبُ عَنكُمُ ٱلذِّكۡرَ صَفۡحًا أَن كُنتُمۡ قَوۡمࣰا مُّسۡرِفِینَ ﴿5﴾
তোমরা সীমাতিক্রমকারী সম্প্রদায়-এ কারণে কি আমি তোমাদের কাছ থেকে কোরআন প্রত্যাহার করে নেব?
কী! আমরা কি তোমাদের থেকে স্মারক গ্রন্থখানা সর্বতোভাবে সরিয়ে নেব যেহেতু তোমরা হচ্ছ এক সীমালংঘনকারী জাতি?
وَكَمۡ أَرۡسَلۡنَا مِن نَّبِیࣲّ فِی ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿6﴾
পূর্ববর্তী লোকদের কাছে আমি অনেক রসূলই প্রেরণ করেছি।
আর নবীদের কতজনকে যে আমরা পূর্ববর্তীদের কাছে পাঠিয়েছিলাম?
وَمَا یَأۡتِیهِم مِّن نَّبِیٍّ إِلَّا كَانُوا۟ بِهِۦ یَسۡتَهۡزِءُونَ ﴿7﴾
যখনই তাদের কাছে কোন রসূল আগমন করেছেন, তখনই তারা তাঁর সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে।
আর নবীদের এমন কেউ তাদের কাছে আসেন নি যাঁকে তারা বিদ্রূপ না করত।
فَأَهۡلَكۡنَاۤ أَشَدَّ مِنۡهُم بَطۡشࣰا وَمَضَىٰ مَثَلُ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿8﴾
সুতরাং আমি তাদের চেয়ে অধিক শক্তি সম্পন্নদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি। পূর্ববর্তীদের এ ঘটনা অতীত হয়ে গেছে।
তারপর এদের চাইতে বলবীর্যে বেশী শক্তিশালীদেরও আমরা ধ্বংস করেছিলাম, আর পূর্ববর্তীদের দৃষ্টান্ত অতীতে রয়েছে।
وَلَىِٕن سَأَلۡتَهُم مَّنۡ خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ لَیَقُولُنَّ خَلَقَهُنَّ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿9﴾
আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে, এগুলো সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহ।
আর তুমি যদি তাদের জিজ্ঞাসা কর -- ''কে মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন?’’ -- তারা নিশ্চয়ই বলবে -- ''এগুলো সৃষ্টি করেছেন মহাশক্তিশালী সর্বজ্ঞাতা --
ٱلَّذِی جَعَلَ لَكُمُ ٱلۡأَرۡضَ مَهۡدࣰا وَجَعَلَ لَكُمۡ فِیهَا سُبُلࣰا لَّعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ﴿10﴾
যিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে করেছেন বিছানা এবং তাতে তোমাদের জন্যে করেছেন পথ, যাতে তোমরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পার।
যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন এক খাটিয়া, আর এতে তৈরী করেছেন তোমাদের কারণে পথসমূহ, যাতে তোমরা পথের দিশা পেতে পার,
وَٱلَّذِی نَزَّلَ مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ مَاۤءَۢ بِقَدَرࣲ فَأَنشَرۡنَا بِهِۦ بَلۡدَةࣰ مَّیۡتࣰاۚ كَذَ ٰلِكَ تُخۡرَجُونَ ﴿11﴾
এবং যিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন পরিমিত। আতঃপর তদ্দ্বারা আমি মৃত ভূ-ভাগকে পুনরুজ্জীবিত করেছি। তোমরা এমনিভাবে উত্থিত হবে।
আর যিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন পরিমাপ মতো, তারপর তা দিয়ে আমরা প্রাণবন্ত করি মৃত দেশকে, এইভাবেই তোমাদের পুনরুত্থিত করা হবে।
وَٱلَّذِی خَلَقَ ٱلۡأَزۡوَ ٰجَ كُلَّهَا وَجَعَلَ لَكُم مِّنَ ٱلۡفُلۡكِ وَٱلۡأَنۡعَـٰمِ مَا تَرۡكَبُونَ ﴿12﴾
এবং যিনি সবকিছুর যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং নৌকা ও চতুস্পদ জন্তুকে তোমাদের জন্যে যানবাহনে পরিণত করেছেন,
আর যিনি সমস্ত-কিছু জোড়ায়-জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন, আর তোমাদের জন্য নৌকা-জাহাজ ও গবাদি-পশুর মধ্যে বানিয়েছেন সেগুলো যা তোমরা চড়ো, --
لِتَسۡتَوُۥا۟ عَلَىٰ ظُهُورِهِۦ ثُمَّ تَذۡكُرُوا۟ نِعۡمَةَ رَبِّكُمۡ إِذَا ٱسۡتَوَیۡتُمۡ عَلَیۡهِ وَتَقُولُوا۟ سُبۡحَـٰنَ ٱلَّذِی سَخَّرَ لَنَا هَـٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُۥ مُقۡرِنِینَ ﴿13﴾
যাতে তোমরা তাদের পিঠের উপর আরোহণ কর। অতঃপর তোমাদের পালনকর্তার নেয়ামত স্মরণ কর এবং বল পবিত্র তিনি, যিনি এদেরকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন এবং আমরা এদেরকে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না।
যেন তোমরা তাদের পিঠের উপরে মজবুত হয়ে বসতে পার, তারপর তোমাদের প্রভুর অনুগ্রহ স্মরণ করো যখন তোমরা তাদের উপরে বস, আর বলো -- ''সকল মহিমা তাঁর যিনি এদের আমাদের বশ করেছেন, অথচ আমরা এতে সমর্থ ছিলাম না,
وَإِنَّاۤ إِلَىٰ رَبِّنَا لَمُنقَلِبُونَ ﴿14﴾
আমরা অবশ্যই আমাদের পালনকর্তার দিকে ফিরে যাব।
''আর অবশ্য আমরা আমাদের প্রভুর দিকেই তো ফিরে যাব।’’
وَجَعَلُوا۟ لَهُۥ مِنۡ عِبَادِهِۦ جُزۡءًاۚ إِنَّ ٱلۡإِنسَـٰنَ لَكَفُورࣱ مُّبِینٌ ﴿15﴾
তারা আল্লাহর বান্দাদের মধ্য থেকে আল্লাহর অংশ স্থির করেছে। বাস্তবিক মানুষ স্পষ্ট অকৃতজ্ঞ।
তথাপি তারা তাঁর বান্দাদের মধ্যে থেকে তাঁর সঙ্গে অংশীদার বানিয়েছে। নিঃসন্দেহ মানুষ তো স্পষ্টই অকৃতজ্ঞ।
أَمِ ٱتَّخَذَ مِمَّا یَخۡلُقُ بَنَاتࣲ وَأَصۡفَىٰكُم بِٱلۡبَنِینَ ﴿16﴾
তিনি কি তাঁর সৃষ্টি থেকে কন্যা সন্তান গ্রহণ করেছেন এবং তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন পুত্র সন্তান?
তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার মধ্যে থেকে কি তিনি কন্যাদের গ্রহণ করেছেন আর তোমাদের জন্য নির্ধারিত করেছেন পুত্রদের?
وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُم بِمَا ضَرَبَ لِلرَّحۡمَـٰنِ مَثَلࣰا ظَلَّ وَجۡهُهُۥ مُسۡوَدࣰّا وَهُوَ كَظِیمٌ ﴿17﴾
তারা রহমান আল্লাহর জন্যে যে, কন্যা-সন্তান বর্ণনা করে, যখন তাদের কাউকে তার সংবাদ দেয়া হয়, তখন তার মুখমন্ডল কালো হয়ে যায় এবং ভীষণ মনস্তাপ ভোগ করে।
আর যখন তাদের কাউকে সুসংবাদ দেওয়া হয় তাই দিয়ে যার দৃষ্টান্ত সে স্থাপন করে পরম করুণাময়ের প্রতি, তার চেহারা তখন কালো হয়ে যায় আর সে অতিমাত্রায় ক্ষুদ্ধ্ব হয়।
أَوَمَن یُنَشَّؤُا۟ فِی ٱلۡحِلۡیَةِ وَهُوَ فِی ٱلۡخِصَامِ غَیۡرُ مُبِینࣲ ﴿18﴾
তারা কি এমন ব্যক্তিকে আল্লাহর জন্যে বর্ণনা করে, যে অলংকারে লালিত-পালিত হয় এবং বিতর্কে কথা বলতে অক্ষম।
তবে কি যে গহনাগাটিতে রক্ষিত আর যে বিতর্ককালে স্পষ্টবাদিতা বিহীন?
وَجَعَلُوا۟ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةَ ٱلَّذِینَ هُمۡ عِبَـٰدُ ٱلرَّحۡمَـٰنِ إِنَـٰثًاۚ أَشَهِدُوا۟ خَلۡقَهُمۡۚ سَتُكۡتَبُ شَهَـٰدَتُهُمۡ وَیُسۡـَٔلُونَ ﴿19﴾
তারা নারী স্থির করে ফেরেশতাগণকে, যারা আল্লাহর বান্দা। তারা কি তাদের সৃষ্টি প্রত্যক্ষ করেছে? এখন তাদের দাবী লিপিবদ্ধ করা হবে এবং তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে।
আর তারা ফিরিশতাদের, যারা খোদ পরম করুণাময়ের দাস, কন্যা বানায়। কী! এদের সৃষ্টি কি তারা দেখেছিল? তাদের সাক্ষ্য শীঘ্রই লিপিবদ্ধ করা হবে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
وَقَالُوا۟ لَوۡ شَاۤءَ ٱلرَّحۡمَـٰنُ مَا عَبَدۡنَـٰهُمۗ مَّا لَهُم بِذَ ٰلِكَ مِنۡ عِلۡمٍۖ إِنۡ هُمۡ إِلَّا یَخۡرُصُونَ ﴿20﴾
তারা বলে, রহমান আল্লাহ ইচছা না করলে আমরা ওদের পূজা করতাম না। এ বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। তারা কেবল অনুমানে কথা বলে।
আর তারা বলে -- ''পরম করুণাময় যদি চাইতেন তবে আমরা এ-সবের উপাসনা করতাম না।’’ তাদের এ ব্যাপারে কোনো জ্ঞান নেই, তারা তো শুধু ঝুটা আন্দাজই করছে।
أَمۡ ءَاتَیۡنَـٰهُمۡ كِتَـٰبࣰا مِّن قَبۡلِهِۦ فَهُم بِهِۦ مُسۡتَمۡسِكُونَ ﴿21﴾
আমি কি তাদেরকে কোরআনের পূর্বে কোন কিতাব দিয়েছি, অতঃপর তারা তাকে আঁকড়ে রেখেছে?
অথবা তাদের কি এর আগে আমরা কোনো গ্রন্থ দিয়েছি, ফলে তারা তাতে আকঁড়ে রয়েছে?
بَلۡ قَالُوۤا۟ إِنَّا وَجَدۡنَاۤ ءَابَاۤءَنَا عَلَىٰۤ أُمَّةࣲ وَإِنَّا عَلَىٰۤ ءَاثَـٰرِهِم مُّهۡتَدُونَ ﴿22﴾
বরং তারা বলে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক পথের পথিক এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে পথপ্রাপ্ত।
না, তারা বলে -- ''আমরা তো আমাদের পিতৃপুরুষদের একটি সম্প্রদায়ভুক্ত পেয়েছি, আর আমরা নিঃসন্দেহে তাদেরই পদচিহ্নের উপরে পরিচালিত হয়েছি।’’
وَكَذَ ٰلِكَ مَاۤ أَرۡسَلۡنَا مِن قَبۡلِكَ فِی قَرۡیَةࣲ مِّن نَّذِیرٍ إِلَّا قَالَ مُتۡرَفُوهَاۤ إِنَّا وَجَدۡنَاۤ ءَابَاۤءَنَا عَلَىٰۤ أُمَّةࣲ وَإِنَّا عَلَىٰۤ ءَاثَـٰرِهِم مُّقۡتَدُونَ ﴿23﴾
এমনিভাবে আপনার পূর্বে আমি যখন কোন জনপদে কোন সতর্ককারী প্রেরণ করেছি, তখনই তাদের বিত্তশালীরা বলেছে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক পথের পথিক এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে চলছি।
আর এইভাবেই তোমার আগে কোনো জনপদে আমরা সতর্ককারীদের কাউকেও পাঠাই নি, যার বড়লোকেরা না বলেছে -- ''আমরা নিশ্চয়ই আমাদের পিতৃপুরুষদের একটি সম্প্রদায়ভুক্ত পেয়েছি, আর আমরা আলবৎ তাদেরই পদাংকের অনুসারী।’’
۞ قَـٰلَ أَوَلَوۡ جِئۡتُكُم بِأَهۡدَىٰ مِمَّا وَجَدتُّمۡ عَلَیۡهِ ءَابَاۤءَكُمۡۖ قَالُوۤا۟ إِنَّا بِمَاۤ أُرۡسِلۡتُم بِهِۦ كَـٰفِرُونَ ﴿24﴾
সে বলত, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে বিষয়ের উপর পেয়েছ, আমি যদি তদপেক্ষা উত্তম বিষয় নিয়ে তোমাদের কাছে এসে থাকি, তবুও কি তোমরা তাই বলবে? তারা বলত তোমরা যে বিষয়সহ প্রেরিত হয়েছ, তা আমরা মানব না।
তিনি বলেছিলেন -- ''কী! যদিও আমি তোমাদের কাছে তার চাইতেও ভালো পথনির্দেশ নিয়ে এসেছি যার উপরে তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষদের পেয়েছিলে?’’ তারা বললে, ''তোমাদের যা দিয়ে পাঠানো হয়েছে আমরা তাতে নিশ্চয়ই অবিশ্বাসী।
فَٱنتَقَمۡنَا مِنۡهُمۡۖ فَٱنظُرۡ كَیۡفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلۡمُكَذِّبِینَ ﴿25﴾
অতঃপর আমি তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি। অতএব দেখুন, মিথ্যারোপকারীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছে।
সুতরাং আমরা তাদের পরিণতি দিয়েছিলাম, অতএব চেয়ে দেখো -- কেমন হয়েছিল মিথ্যাচারীদের পরিণাম!
وَإِذۡ قَالَ إِبۡرَ ٰهِیمُ لِأَبِیهِ وَقَوۡمِهِۦۤ إِنَّنِی بَرَاۤءࣱ مِّمَّا تَعۡبُدُونَ ﴿26﴾
যখন ইব্রাহীম তার পিতা ও সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা যাদের পূজা কর, তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।
আর স্মরণ করো! ইব্রাহীম তাঁর পিতৃকে ও তাঁর স্বজাতিকে বললেন, ''তোমরা যার পূজা কর তা থেকে আমি অবশ্যই মুক্ত,
إِلَّا ٱلَّذِی فَطَرَنِی فَإِنَّهُۥ سَیَهۡدِینِ ﴿27﴾
তবে আমার সম্পর্ক তাঁর সাথে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। অতএব, তিনিই আমাকে সৎপথ প্রদর্শন করবেন।
''তাঁকে ব্যতীত যিনি আমাকে আদিতে সৃষ্টি করেছেন, কাজেই নিশ্চয় তিনি শীঘ্রই আমাকে পথ দেখাবেন।’’
وَجَعَلَهَا كَلِمَةَۢ بَاقِیَةࣰ فِی عَقِبِهِۦ لَعَلَّهُمۡ یَرۡجِعُونَ ﴿28﴾
এ কথাটিকে সে অক্ষয় বাণীরূপে তার সন্তানদের মধ্যে রেখে গেছে, যাতে তারা আল্লাহর দিকেই আকৃষ্ট থাকে।
আর তিনি এটিকে তাঁর বংশধরদের মধ্যে একটি চিরন্তন বাণী বানিয়েছিলেন, যেন তারা ফিরতে পারে।
بَلۡ مَتَّعۡتُ هَـٰۤؤُلَاۤءِ وَءَابَاۤءَهُمۡ حَتَّىٰ جَاۤءَهُمُ ٱلۡحَقُّ وَرَسُولࣱ مُّبِینࣱ ﴿29﴾
পরন্ত আমিই এদেরকে ও এদের পূর্বপুরুষদেরকে জীবনোপভোগ করতে দিয়েছি, অবশেষে তাদের কাছে সত্য ও স্পষ্ট বর্ণনাকারী রসূল আগমন করেছে।
বস্তুতঃ আমি এদের ও এদের পূর্বপুরুষদের উপভোগ করতে দিয়েছিলাম, যে পর্যন্ত না তাদের কাছে এসেছিল মহাসত্য ও একজন স্পষ্ট প্রতীয়মান রসূল।
وَلَمَّا جَاۤءَهُمُ ٱلۡحَقُّ قَالُوا۟ هَـٰذَا سِحۡرࣱ وَإِنَّا بِهِۦ كَـٰفِرُونَ ﴿30﴾
যখন সত্য তাদের কাছে আগমন করল, তখন তারা বলল, এটা যাদু, আমরা একে মানি না।
আর এখন যেহেতু তাদের কাছে মহাসত্য এসেই গেছে, তারা বলছে, ''এ এক জাদু, আর আমরা অবশ্যই এতে অবিশ্বাসী।’’
وَقَالُوا۟ لَوۡلَا نُزِّلَ هَـٰذَا ٱلۡقُرۡءَانُ عَلَىٰ رَجُلࣲ مِّنَ ٱلۡقَرۡیَتَیۡنِ عَظِیمٍ ﴿31﴾
তারা বলে, কোরআন কেন দুই জনপদের কোন প্রধান ব্যক্তির উপর অবতীর্ণ হল না?
আর তারা বলে, ''এই কুরআনখানা দুটো জনপদের মধ্যের কোনো এক প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে কেন অবতীর্ণ হল না?’’
أَهُمۡ یَقۡسِمُونَ رَحۡمَتَ رَبِّكَۚ نَحۡنُ قَسَمۡنَا بَیۡنَهُم مَّعِیشَتَهُمۡ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَاۚ وَرَفَعۡنَا بَعۡضَهُمۡ فَوۡقَ بَعۡضࣲ دَرَجَـٰتࣲ لِّیَتَّخِذَ بَعۡضُهُم بَعۡضࣰا سُخۡرِیࣰّاۗ وَرَحۡمَتُ رَبِّكَ خَیۡرࣱ مِّمَّا یَجۡمَعُونَ ﴿32﴾
তারা কি আপনার পালনকর্তার রহমত বন্টন করে? আমি তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বন্টন করেছি পার্থিব জীবনে এবং একের মর্যাদাকে অপরের উপর উন্নীত করেছি, যাতে একে অপরকে সেবক রূপে গ্রহণ করে। তারা যা সঞ্চয় করে, আপনার পালনকর্তার রহমত তদপেক্ষা উত্তম।
তারাই কি তোমার প্রভুর করুণা ভাগ-বাঁটা করে? আমরাই এই দুনিয়ার জীবনে তাদের জীবিকা তাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে দিই, এবং তাদের কাউকে অপরের উপরে মর্যাদায় উন্নত করি, যেন তাদের কেউ-কেউ অপরকে সেবারত করে নিতে পারে। আর তোমার প্রভুর করুণা বেশি ভাল তার চাইতে যা তারা জমা করে।
وَلَوۡلَاۤ أَن یَكُونَ ٱلنَّاسُ أُمَّةࣰ وَ ٰحِدَةࣰ لَّجَعَلۡنَا لِمَن یَكۡفُرُ بِٱلرَّحۡمَـٰنِ لِبُیُوتِهِمۡ سُقُفࣰا مِّن فِضَّةࣲ وَمَعَارِجَ عَلَیۡهَا یَظۡهَرُونَ ﴿33﴾
যদি সব মানুষের এক মতাবলম্বী হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকত, তবে যারা দয়াময় আল্লাহকে অস্বীকার করে আমি তাদেরকে দিতাম তাদের গৃহের জন্যে রৌপ্য নির্মিত ছাদ ও সিঁড়ি, যার উপর তারা চড়ত।
আর মানুষ যদি একই সম্প্রদায়ের হয়ে না যেতো তাহলে যারা পরম করুণাময়কে অস্বীকার করে তাদের জন্য আমরা নিশ্চয় বানাতাম -- তাদের ঘরগুলোর জন্য রূপোর ছাদ ও সিড়ি যাঁ দিয়ে তারা ওঠে,
وَلِبُیُوتِهِمۡ أَبۡوَ ٰبࣰا وَسُرُرًا عَلَیۡهَا یَتَّكِـُٔونَ ﴿34﴾
এবং তাদের গৃহের জন্যে দরজা দিতাম এবং পালংক দিতাম যাতে তারা হেলান দিয়ে বসত।
আর তাদের ঘরবাড়ির জন্য দরজাগুলো ও পালংক যার উপরে তারা শয়ন করে,
وَزُخۡرُفࣰاۚ وَإِن كُلُّ ذَ ٰلِكَ لَمَّا مَتَـٰعُ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَاۚ وَٱلۡـَٔاخِرَةُ عِندَ رَبِّكَ لِلۡمُتَّقِینَ ﴿35﴾
এবং স্বর্ণনির্মিতও দিতাম। এগুলো সবই তো পার্থিব জীবনের ভোগ সামগ্রী মাত্র। আর পরকাল আপনার পালনকর্তার কাছে তাঁদের জন্যেই যারা ভয় করে।
আর সোনাদানা। আর এ সমস্তই এই দুনিয়ার জীবনের ভোগসম্ভার বৈ তো নয়। আর পরকাল তোমার প্রভুর কাছে ধর্মভীরুদের জন্যেই।
وَمَن یَعۡشُ عَن ذِكۡرِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ نُقَیِّضۡ لَهُۥ شَیۡطَـٰنࣰا فَهُوَ لَهُۥ قَرِینࣱ ﴿36﴾
যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী।
আর যে পরম করুণাময়ের স্মরণ থেকে বেখেয়াল হয় তার জন্য আমরা ধার্য করি একজন শয়তান, ফলে সে হয় তার জন্য একটি সহচর।
وَإِنَّهُمۡ لَیَصُدُّونَهُمۡ عَنِ ٱلسَّبِیلِ وَیَحۡسَبُونَ أَنَّهُم مُّهۡتَدُونَ ﴿37﴾
শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।
আর নিঃসন্দেহ তারা তাদের পথ থেকে অবশ্যই ফিরিয়ে রাখে, অথচ তারা মনে করে যে তারা সৎপথে চালিত হচ্ছে, --
حَتَّىٰۤ إِذَا جَاۤءَنَا قَالَ یَـٰلَیۡتَ بَیۡنِی وَبَیۡنَكَ بُعۡدَ ٱلۡمَشۡرِقَیۡنِ فَبِئۡسَ ٱلۡقَرِینُ ﴿38﴾
অবশেষে যখন সে আমার কাছে আসবে, তখন সে শয়তানকে বলবে, হায়, আমার ও তোমার মধ্যে যদি পূর্ব-পশ্চিমের দূরত্ব থাকত। কত হীন সঙ্গী সে।
যে পর্যন্ত না সে আমাদের কাছে আসে তখন সে বলবে -- ''হায় আফসোস! আমার মধ্যে ও তোমার মধ্যে যদি দূরত্ব হতো দুটি পূর্বাঞ্চলের! সুতরাং কত নিকৃষ্ট সহচর!’’
وَلَن یَنفَعَكُمُ ٱلۡیَوۡمَ إِذ ظَّلَمۡتُمۡ أَنَّكُمۡ فِی ٱلۡعَذَابِ مُشۡتَرِكُونَ ﴿39﴾
তোমরা যখন কুফর করছিলে, তখন তোমাদের আজকের আযাবে শরীক হওয়া কোন কাজে আসবে না।
আর -- ''যেহেতু তোমরা অন্যায়াচরণ করেছিলে তাই শাস্তিভোগের মধ্যে তোমরা অংশীদার হওয়া সত্ত্বেওে আজকের দিনে তোমাদের কোনো ফায়দা হবে না।’’
أَفَأَنتَ تُسۡمِعُ ٱلصُّمَّ أَوۡ تَهۡدِی ٱلۡعُمۡیَ وَمَن كَانَ فِی ضَلَـٰلࣲ مُّبِینࣲ ﴿40﴾
আপনি কি বধিরকে শোনাতে পারবেন? অথবা যে অন্ধ ও যে স্পষ্ট পথ ভ্রষ্টতায় লিপ্ত, তাকে পথ প্রদর্শণ করতে পারবেন?
কি! তুমি কি তবে বধিরকে শোনাতে পারবে, অথবা অন্ধকে এবং যে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে তাকে পথ দেখাতে পারবে?
فَإِمَّا نَذۡهَبَنَّ بِكَ فَإِنَّا مِنۡهُم مُّنتَقِمُونَ ﴿41﴾
অতঃপর আমি যদি আপনাকে নিয়ে যাই, তবু আমি তাদের কাছে থেকে প্রতিশোধ নেব।
কিন্ত আমরা যদি তোমাকে নিয়ে নিই, আমরা তবুও তাদের থেকে শেষ-পরিণতি আদায় করব,
أَوۡ نُرِیَنَّكَ ٱلَّذِی وَعَدۡنَـٰهُمۡ فَإِنَّا عَلَیۡهِم مُّقۡتَدِرُونَ ﴿42﴾
অথবা যদি আমি তাদেরকে যে আযাবের ওয়াদা দিয়েছি, তা আপনাকে দেখিয়ে দেই, তবু তাদের উপর আমার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে।
অথবা আমরা নিশ্চয় তোমাকে দেখিয়ে দেব যা আমরা তাদের ওয়াদা করেছিলাম, কেননা আমরা আলবৎ তাদের উপরে ক্ষমতাবান।
فَٱسۡتَمۡسِكۡ بِٱلَّذِیۤ أُوحِیَ إِلَیۡكَۖ إِنَّكَ عَلَىٰ صِرَ ٰطࣲ مُّسۡتَقِیمࣲ ﴿43﴾
অতএব, আপনার প্রতি যে ওহী নাযিল করা হয়, তা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করুন। নিঃসন্দেহে আপনি সরল পথে রয়েছেন।
সেজন্য তোমার কাছে যা প্রত্যাদেশ দেওয়া হচ্ছে তাতে আঁকড়ে ধরো। নিঃসন্দেহ তুমি সরল-সঠিক পথের উপরে রয়েছো।
وَإِنَّهُۥ لَذِكۡرࣱ لَّكَ وَلِقَوۡمِكَۖ وَسَوۡفَ تُسۡـَٔلُونَ ﴿44﴾
এটা আপনার ও আপনার সম্প্রদায়ের জন্যে উল্লেখিত থাকবে এবং শীঘ্রই আপনারা জিজ্ঞাসিত হবেন।
আর এইটি নিশ্চয়ই তো একটি স্মরণীয় গ্রন্থ তোমার জন্য ও তোমার লোকদের জন্য, আর শীঘ্রই তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে।
وَسۡـَٔلۡ مَنۡ أَرۡسَلۡنَا مِن قَبۡلِكَ مِن رُّسُلِنَاۤ أَجَعَلۡنَا مِن دُونِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ءَالِهَةࣰ یُعۡبَدُونَ ﴿45﴾
আপনার পূর্বে আমি যেসব রসূল প্রেরণ করেছি, তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত আমি কি কোন উপাস্য স্থির করেছিলাম এবাদতের জন্যে?
আর তোমার আগে আমাদের রসূলদের মধ্যের যাঁদের আমরা পাঠিয়েছিলাম তাঁদের জিজ্ঞেস করো -- আমরা কি পরম করুণাময়কে বাদ দিয়ে উপাসনার জন্য উপাস্যদের দাঁড় করিয়েছিলাম?
وَلَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا مُوسَىٰ بِـَٔایَـٰتِنَاۤ إِلَىٰ فِرۡعَوۡنَ وَمَلَإِی۟هِۦ فَقَالَ إِنِّی رَسُولُ رَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿46﴾
আমি মূসাকে আমার নিদর্শনাবলী দিয়ে ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গের কাছে প্রেরণ করেছিলাম, অতঃপর সে বলেছিল, আমি বিশ্ব পালনকর্তার রসূল।
আর আমরা নিশ্চয় মূসাকে আমাদের নির্দেশাবলী দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম ফির'আউন ও তার প্রধানদের কাছে, কাজেই তিনি বলেছিলেন -- ''আমি নিশ্চয় বিশ্বজগতের প্রভুর বাণীবাহক।’’
فَلَمَّا جَاۤءَهُم بِـَٔایَـٰتِنَاۤ إِذَا هُم مِّنۡهَا یَضۡحَكُونَ ﴿47﴾
অতঃপর সে যখন তাদের কাছে আমার নিদর্শনাবলী উপস্থাপন করল, তখন তারা হাস্যবিদ্রুপ করতে লাগল।
কিন্ত যখন তিনি আমাদের নির্দেশাবলী নিয়ে তাদের কাছে এলেন তখন দেখো, তারা এসব নিয়ে হাসিঠাট্টা করতে লাগল।
وَمَا نُرِیهِم مِّنۡ ءَایَةٍ إِلَّا هِیَ أَكۡبَرُ مِنۡ أُخۡتِهَاۖ وَأَخَذۡنَـٰهُم بِٱلۡعَذَابِ لَعَلَّهُمۡ یَرۡجِعُونَ ﴿48﴾
আমি তাদেরকে যে নিদর্শনই দেখাতাম, তাই হত পূর্ববর্তী নিদর্শন অপেক্ষা বৃহৎ এবং আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করলাম, যাতে তারা ফিরে আসে।
আর আমরা তাদের এমন কোনো নিদর্শন দেখাই নি যা ছিল না তার ভগিনী থেকে আরো বড়, আর আমরা তাদের পাকড়াও করেছিলাম শাস্তি দিয়ে যেন তারা ফিরে আসে।
وَقَالُوا۟ یَـٰۤأَیُّهَ ٱلسَّاحِرُ ٱدۡعُ لَنَا رَبَّكَ بِمَا عَهِدَ عِندَكَ إِنَّنَا لَمُهۡتَدُونَ ﴿49﴾
তারা বলল, হে যাদুকর, তুমি আমাদের জন্যে তোমার পালনকর্তার কাছে সে বিষয় প্রার্থনা কর, যার ওয়াদা তিনি তোমাকে দিয়েছেন; আমরা অবশ্যই সৎপথ অবলম্বন করব।
আর তারা বলেছিল -- ''ওহে জাদুকর! তোমার প্রভুকে আমাদের জন্য ডাকো যেমন তিনি তোমার কাছে অংগীকার করেছিলেন, আমরা অবশ্যই তখন সৎপথাবলন্বী হব।’’
فَلَمَّا كَشَفۡنَا عَنۡهُمُ ٱلۡعَذَابَ إِذَا هُمۡ یَنكُثُونَ ﴿50﴾
অতঃপর যখন আমি তাদের থেকে আযাব প্রত্যাহার করে নিলাম, তখনই তারা অঙ্গীকার ভঙ্গ করতে লাগলো।
তারপর আমরা যখন তাদের থেকে শাস্তিটা সরিয়ে নিলাম তখন দেখো! তারা অংগীকার ভঙ্গ করে বসল।
وَنَادَىٰ فِرۡعَوۡنُ فِی قَوۡمِهِۦ قَالَ یَـٰقَوۡمِ أَلَیۡسَ لِی مُلۡكُ مِصۡرَ وَهَـٰذِهِ ٱلۡأَنۡهَـٰرُ تَجۡرِی مِن تَحۡتِیۤۚ أَفَلَا تُبۡصِرُونَ ﴿51﴾
ফেরাউন তার সম্প্রদায়কে ডেকে বলল, হে আমার কওম, আমি কি মিসরের অধিপতি নই? এই নদী গুলো আমার নিম্নদেশে প্রবাহিত হয়, তোমরা কি দেখ না?
আর ফির'আউন তার লোকদলের মধ্যে ঘোষণা করে বললে -- ''হে আমার স্বজাতি! মিশরের রাজ্য কি আমার নয়, আর এইসব নদনদী যা আমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে? তোমরা কি তবে দেখতে পাচ্ছ না?
أَمۡ أَنَا۠ خَیۡرࣱ مِّنۡ هَـٰذَا ٱلَّذِی هُوَ مَهِینࣱ وَلَا یَكَادُ یُبِینُ ﴿52﴾
আমি যে শ্রেষ্ট এ ব্যক্তি থেকে, যে নীচ এবং কথা বলতেও সক্ষম নয়।
''বস্তুতঃ আমি বেশি ভাল এর চেয়ে যে স্বয়ং হীন-ঘৃণ্য, ও স্পষ্টবাদিতার যার ক্ষমতা নেই।
فَلَوۡلَاۤ أُلۡقِیَ عَلَیۡهِ أَسۡوِرَةࣱ مِّن ذَهَبٍ أَوۡ جَاۤءَ مَعَهُ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ مُقۡتَرِنِینَ ﴿53﴾
তাকে কেন স্বর্ণবলয় পরিধান করানো হল না, অথবা কেন আসল না তার সঙ্গে ফেরেশতাগণ দল বেঁধে?
''তবে কেন সোনার কঙ্কন তার প্রতি ছোড়া হল না, অথবা তার সঙ্গে কেন ফিরিশতারা এল না সারিবদ্ধভাবে।’’
فَٱسۡتَخَفَّ قَوۡمَهُۥ فَأَطَاعُوهُۚ إِنَّهُمۡ كَانُوا۟ قَوۡمࣰا فَـٰسِقِینَ ﴿54﴾
অতঃপর সে তার সম্প্রদায়কে বোকা বানিয়ে দিল, ফলে তারা তার কথা মেনে নিল। নিশ্চয় তারা ছিল পাপাচারী সম্প্রদায়।
এইভাবে সে তার স্বজাতিকে ধাপ্পা দিয়েছিল, ফলে তারা তাকে মেনে চলল। নিঃসন্দেহ তারা ছিল সীমালংঘনকারী জাতি।
فَلَمَّاۤ ءَاسَفُونَا ٱنتَقَمۡنَا مِنۡهُمۡ فَأَغۡرَقۡنَـٰهُمۡ أَجۡمَعِینَ ﴿55﴾
অতঃপর যখন আমাকে রাগাম্বিত করল তখন আমি তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিলাম এবং নিমজ্জত করলাম। তাদের সবাইকে।
অতএব তারা যখন আমাদের রাগিয়ে তুললো তখন আমরা তাদের থেকে শেষ-পরিণতি গ্রহণ করলাম, ফলে তাদের একসঙ্গে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।
فَجَعَلۡنَـٰهُمۡ سَلَفࣰا وَمَثَلࣰا لِّلۡـَٔاخِرِینَ ﴿56﴾
অতঃপর আমি তাদেরকে করে দিলাম অতীত লোক ও দৃষ্টান্ত পরবর্তীদের জন্যে।
সুতরাং আমরা তাদের বানিয়ে দিয়েছিলাম এক অতীত ইতিহাস এবং পরবর্তীদের জন্য এক দৃষ্টান্ত।
۞ وَلَمَّا ضُرِبَ ٱبۡنُ مَرۡیَمَ مَثَلًا إِذَا قَوۡمُكَ مِنۡهُ یَصِدُّونَ ﴿57﴾
যখনই মরিয়ম তনয়ের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করা হল, তখনই আপনার সম্প্রদায় হঞ্জগোল শুরু করে দিল
আর যখন মরিয়মের পুত্রের দৃষ্টান্ত ছোঁড়া হয় তখন দেখো, তোমার স্বজাতি তাতে শোরগোল তোলে।
وَقَالُوۤا۟ ءَأَ ٰلِهَتُنَا خَیۡرٌ أَمۡ هُوَۚ مَا ضَرَبُوهُ لَكَ إِلَّا جَدَلَۢاۚ بَلۡ هُمۡ قَوۡمٌ خَصِمُونَ ﴿58﴾
এবং বলল, আমাদের উপাস্যরা শ্রেষ্ঠ, না সে? তারা আপনার সামনে যে উদাহরণ উপস্থাপন করে তা কেবল বিতর্কের জন্যেই করে। বস্তুতঃ তারা হল এক বিতর্ককারী সম্প্রদায়।
আর তারা বলে -- ''আমাদের দেবদেবীরা অধিকতর ভাল, না সে? তারা তোমার কাছে এ কথা তোলে না তর্কবিতর্ক করার জন্যে ব্যতীত? বস্তুত তারা হচ্ছে বিবাদপ্রিয় জাতি।
إِنۡ هُوَ إِلَّا عَبۡدٌ أَنۡعَمۡنَا عَلَیۡهِ وَجَعَلۡنَـٰهُ مَثَلࣰا لِّبَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ ﴿59﴾
সে তো এক বান্দাই বটে আমি তার প্রতি অনুগ্রহ করেছি এবং তাকে করেছি বণী-ইসরাঈলের জন্যে আদর্শ।
তিনি একজন বান্দা বৈ তো নন যাঁর প্রতি আমরা অনুগ্রহ করেছি, এবং তাঁকে আমরা ইসরাঈলের বংশধরদের জন্য আদর্শস্বরূপ বানিয়েছিলাম।
وَلَوۡ نَشَاۤءُ لَجَعَلۡنَا مِنكُم مَّلَـٰۤىِٕكَةࣰ فِی ٱلۡأَرۡضِ یَخۡلُفُونَ ﴿60﴾
আমি ইচ্ছা করলে তোমাদের থেকে ফেরেশতা সৃষ্টি করতাম, যারা পৃথিবীতে একের পর এক বসবাস করত।
আর আমরা যদি চাইতাম তবে নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের মধ্যে ফিরিশ্তাদের নিয়োগ করতাম পৃথিবীতে প্রতিনিধি হবার জন্য!
وَإِنَّهُۥ لَعِلۡمࣱ لِّلسَّاعَةِ فَلَا تَمۡتَرُنَّ بِهَا وَٱتَّبِعُونِۚ هَـٰذَا صِرَ ٰطࣱ مُّسۡتَقِیمࣱ ﴿61﴾
সুতরাং তা হল কেয়ামতের নিদর্শন। কাজেই তোমরা কেয়ামতে সন্দেহ করো না এবং আমার কথা মান। এটা এক সরল পথ।
আর নিঃসন্দেহ এ-ই হচ্ছে ঘড়িধন্টা সন্বন্ধে নিশ্চিত জ্ঞান; সুতরাং এ-সন্বন্ধে তোমরা সন্দেহ করো না, আর আমাকে অনুসরণ করো। এটিই হচ্ছে সহজ-সঠিক পথ।
وَلَا یَصُدَّنَّكُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنُۖ إِنَّهُۥ لَكُمۡ عَدُوࣱّ مُّبِینࣱ ﴿62﴾
শয়তান যেন তোমাদেরকে নিবৃত্ত না করে। সে তোমাদের প্রকাশ্য শুত্রু।
আর শয়তান যেন তোমাদের কিছুতেই ফিরিয়ে না দেয়, নিঃসন্দেহ সে হচ্ছে তোমাদের জন্য প্রকাশ্য শত্রু।
وَلَمَّا جَاۤءَ عِیسَىٰ بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ قَالَ قَدۡ جِئۡتُكُم بِٱلۡحِكۡمَةِ وَلِأُبَیِّنَ لَكُم بَعۡضَ ٱلَّذِی تَخۡتَلِفُونَ فِیهِۖ فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿63﴾
ঈসা যখন স্পষ্ট নিদর্শনসহ আগমন করল, তখন বলল, আমি তোমাদের কাছে প্রজ্ঞা নিয়ে এসেছি এবং তোমরা যে, কোন কোন বিষয়ে মতভেদ করছ তা ব্যক্ত করার জন্যে এসেছি, অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার কথা মান।
আর যখন ঈসা স্পষ্ট প্রমাণাবলী নিয়ে এলেন তখন তিনি বললেন -- ''আমি তোমাদের কাছে জ্ঞান নিয়ে এসেছি, আর তোমরা যে-সব বিষয়ে মতভেদ করছ তার কোনো কোনোটি তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করে দিতে, সুতরাং তোমরা আল্লাহ্কে ভয়-ভক্তি করো ও আমাকে মেনে চল।
إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ رَبِّی وَرَبُّكُمۡ فَٱعۡبُدُوهُۚ هَـٰذَا صِرَ ٰطࣱ مُّسۡتَقِیمࣱ ﴿64﴾
নিশ্চয় আল্লাহই আমার পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তাঁর এবাদত কর। এটা হল সরল পথ।
''নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ -- তিনি আমার প্রভু ও তোমাদেরও প্রভু, সেজন্য তাঁরই উপাসনা কর। এটিই সহজ-সঠিক পথ।’’
فَٱخۡتَلَفَ ٱلۡأَحۡزَابُ مِنۢ بَیۡنِهِمۡۖ فَوَیۡلࣱ لِّلَّذِینَ ظَلَمُوا۟ مِنۡ عَذَابِ یَوۡمٍ أَلِیمٍ ﴿65﴾
অতঃপর তাদের মধ্যে থেকে বিভিন্ন দল মতভেদ সৃষ্টি করল। সুতরাং যালেমদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক দিবসের আযাবের দুর্ভোগ।
কিন্ত বিভিন্ন দল নিজেদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি করল, কাজেই ধিক্ তাদের প্রতি যারা অন্যায়াচরণ করেছিল -- এক মর্মন্তুদ দিনের শাস্তির কারণে!
هَلۡ یَنظُرُونَ إِلَّا ٱلسَّاعَةَ أَن تَأۡتِیَهُم بَغۡتَةࣰ وَهُمۡ لَا یَشۡعُرُونَ ﴿66﴾
তারা কেবল কেয়ামতেরই অপেক্ষা করছে যে, আকস্মিকভাবে তাদের কাছে এসে যাবে এবং তারা খবর ও রাখবে না।
তারা কি চেয়ে রয়েছে শুধু ঘড়িঘান্টার জন্য যেন তাদের উপরে এটি এসে পড়ে আকস্মিকভাবে যখন তারা টেরও না পায়।
ٱلۡأَخِلَّاۤءُ یَوۡمَىِٕذِۭ بَعۡضُهُمۡ لِبَعۡضٍ عَدُوٌّ إِلَّا ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿67﴾
বন্ধুবর্গ সেদিন একে অপরের শত্রু হবে, তবে খোদাভীরুরা নয়।
সেইদিন বন্ধুরা -- তাদের কেউ-কেউ অপরের শত্রু হয়ে পড়বে, তবে ধর্মপরায়ণরা ব্যতীত।
یَـٰعِبَادِ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡكُمُ ٱلۡیَوۡمَ وَلَاۤ أَنتُمۡ تَحۡزَنُونَ ﴿68﴾
হে আমার বান্দাগণ, তোমাদের আজ কোন ভয় নেই এবং তোমরা দুঃখিতও হবে না।
''হে আমার বান্দারা! আজকের দিনে তোমাদের জন্য কোনো ভয় নেই আর তোমরা দুঃখও করবে না, --
ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ بِـَٔایَـٰتِنَا وَكَانُوا۟ مُسۡلِمِینَ ﴿69﴾
তোমরা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করেছিলে এবং তোমরা আজ্ঞাবহ ছিলে।
''যারা আমাদের নির্দেশাবলীতে বিশ্বাস করেছিলে এবং মুসলিম হয়েছিলে, --
ٱدۡخُلُوا۟ ٱلۡجَنَّةَ أَنتُمۡ وَأَزۡوَ ٰجُكُمۡ تُحۡبَرُونَ ﴿70﴾
জান্নাতের প্রবেশ কর তোমরা এবং তোমাদের বিবিগণ সানন্দে।
''তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করো -- তোমরা ও তোমাদের সঙ্গিনীরা তোমাদের আনন্দিত করা হবে।’’
یُطَافُ عَلَیۡهِم بِصِحَافࣲ مِّن ذَهَبࣲ وَأَكۡوَابࣲۖ وَفِیهَا مَا تَشۡتَهِیهِ ٱلۡأَنفُسُ وَتَلَذُّ ٱلۡأَعۡیُنُۖ وَأَنتُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿71﴾
তাদের কাছে পরিবেশন করা হবে স্বর্ণের থালা ও পানপাত্র এবং তথায় রয়েছে মনে যা চায় এবং নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়। তোমরা তথায় চিরকাল অবস্থান করবে।
তাদের সামনে পরিবেশন করা হবে সোনার খাঞ্চা ও পানপাত্র, আর তাতে থাকবে যা অন্তর কামনা করে ও চোখ তৃপ্ত হয়, আর তোমরা তাতে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে।
وَتِلۡكَ ٱلۡجَنَّةُ ٱلَّتِیۤ أُورِثۡتُمُوهَا بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ﴿72﴾
এই যে, জান্নাতের উত্তরাধিকারী তোমরা হয়েছ, এটা তোমাদের কর্মের ফল।
আর এইটিই সেই জান্নাত, তোমাদের এটি উত্তরাধিকার করতে দেওয়া হয়েছে তোমরা যা করতে তার জন্যে।
لَكُمۡ فِیهَا فَـٰكِهَةࣱ كَثِیرَةࣱ مِّنۡهَا تَأۡكُلُونَ ﴿73﴾
তথায় তোমাদের জন্যে আছে প্রচুর ফল-মূল, তা থেকে তোমরা আহার করবে।
তোমাদের জন্য সেখানে রয়েছে প্রচুর ফলমূল, তা থেকে তোমরা আহার করবে।
إِنَّ ٱلۡمُجۡرِمِینَ فِی عَذَابِ جَهَنَّمَ خَـٰلِدُونَ ﴿74﴾
নিশ্চয় অপরাধীরা জাহান্নামের আযাবে চিরকাল থাকবে।
অপরাধীরা নিশ্চয় জাহান্নামের শাস্তির মধ্যে অবস্থান করবে,
لَا یُفَتَّرُ عَنۡهُمۡ وَهُمۡ فِیهِ مُبۡلِسُونَ ﴿75﴾
তাদের থেকে আযাব লাঘব করা হবে না এবং তারা তাতেই থাকবে হতাশ হয়ে।
তাদের থেকে তা লাঘব করা হবে না, আর তাতে তারা হতাশ হয়ে পড়বে।
وَمَا ظَلَمۡنَـٰهُمۡ وَلَـٰكِن كَانُوا۟ هُمُ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿76﴾
আমি তাদের প্রতি জুলুম করিনি; কিন্তু তারাই ছিল জালেম।
আর আমরা তাদের প্রতি অন্যায় করি নি, বরঞ্চ তারা নিজেরাই অন্যায় করেছিল।
وَنَادَوۡا۟ یَـٰمَـٰلِكُ لِیَقۡضِ عَلَیۡنَا رَبُّكَۖ قَالَ إِنَّكُم مَّـٰكِثُونَ ﴿77﴾
তারা ডেকে বলবে, হে মালেক, পালনকর্তা আমাদের কিসসাই শেষ করে দিন। সে বলবে, নিশ্চয় তোমরা চিরকাল থাকবে।
আর তারা ডেকে বলবে -- ''হে মালিক! তোমার প্রভু আমাদের নিঃশেষ করে ফেলুন।’’ সে বলবে -- ''তোমরা নিশ্চয় অপেক্ষা করবে।’’
لَقَدۡ جِئۡنَـٰكُم بِٱلۡحَقِّ وَلَـٰكِنَّ أَكۡثَرَكُمۡ لِلۡحَقِّ كَـٰرِهُونَ ﴿78﴾
আমি তোমাদের কাছে সত্যধর্ম পৌঁছিয়েছি; কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই সত্যধর্মে নিস্পৃহ!
''আমরা তো তোমাদের কাছে সত্য নিয়েই এসেছিলাম, কিন্ত তোমাদের অধিকাংশই সত্যের প্রতি বিমুখ ছিলে।’’
أَمۡ أَبۡرَمُوۤا۟ أَمۡرࣰا فَإِنَّا مُبۡرِمُونَ ﴿79﴾
তারা কি কোন ব্যবস্থা চুড়ান্ত করেছে? তাহলে আমিও এক ব্যবস্থা চুড়ান্ত করেছি।
অথবা তারা কি কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত করে ফেলেছে? কিন্ত বাস্তবে আমরাই সিদ্ধান্তকারী।
أَمۡ یَحۡسَبُونَ أَنَّا لَا نَسۡمَعُ سِرَّهُمۡ وَنَجۡوَىٰهُمۚ بَلَىٰ وَرُسُلُنَا لَدَیۡهِمۡ یَكۡتُبُونَ ﴿80﴾
তারা কি মনে করে যে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও গোপন পরামর্শ শুনি না? হঁ্যা, শুনি। আমার ফেরেশতাগণ তাদের নিকটে থেকে লিপিবদ্ধ করে।
অথবা তারা কি মনে করে যে আমরা তাদের লুকোনো বিষয় ও তাদের গোপন আলোচনা শুনি না? অবশ্যই, আর আমাদের দূতরা তাদের সঙ্গে থেকে লিখে চলেছে।
قُلۡ إِن كَانَ لِلرَّحۡمَـٰنِ وَلَدࣱ فَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡعَـٰبِدِینَ ﴿81﴾
বলুন, দয়াময় আল্লাহর কোন সন্তান থাকলে আমি সর্ব প্রথম তার এবাদত করব।
তুমি বলো -- ''যদি পরম করুণাময়ের কোনো সন্তান থাকত তবে আমিই হচ্ছি উপাসনাকারীদের মধ্যে অগ্রণী।’’
سُبۡحَـٰنَ رَبِّ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ رَبِّ ٱلۡعَرۡشِ عَمَّا یَصِفُونَ ﴿82﴾
তারা যা বর্ণনা করে, তা থেকে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের পালনকর্তা, আরশের পালনকর্তা পবিত্র।
সকল মহিমা হোক মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর প্রভুর! তিনি আরশের প্রভু, তারা যা আরোপ করে তা থেকে তিনি বহু ঊর্ধ্বে।
فَذَرۡهُمۡ یَخُوضُوا۟ وَیَلۡعَبُوا۟ حَتَّىٰ یُلَـٰقُوا۟ یَوۡمَهُمُ ٱلَّذِی یُوعَدُونَ ﴿83﴾
অতএব, তাদেরকে বাকচাতুরী ও ক্রীড়া-কৌতুক করতে দিন সেই দিবসের সাক্ষাত পর্যন্ত, যার ওয়াদা তাদেরকে দেয়া হয়।
সুতরাং তাদের ছেড়ে দাও আঁকুপাঁকু করতে ও ছেলেখেলা খেলতে যে পর্যন্ত না তারা তাদের দিনের মুখোমুখি হয় যেটি সন্বন্ধে তাদের ওয়াদা করা হয়েছিল।
وَهُوَ ٱلَّذِی فِی ٱلسَّمَاۤءِ إِلَـٰهࣱ وَفِی ٱلۡأَرۡضِ إِلَـٰهࣱۚ وَهُوَ ٱلۡحَكِیمُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿84﴾
তিনিই উপাস্য নভোমন্ডলে এবং তিনিই উপাস্য ভুমন্ডলে। তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ,
আর তিনিই সেইজন যিনি মহাকাশে উপাস্য আর দুনিয়াতেও উপাস্য। আর তিনিই পরমজ্ঞানী, সর্বজ্ঞাতা।
وَتَبَارَكَ ٱلَّذِی لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَا وَعِندَهُۥ عِلۡمُ ٱلسَّاعَةِ وَإِلَیۡهِ تُرۡجَعُونَ ﴿85﴾
বরকতময় তিনিই, নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু যার। তাঁরই কাছে আছে কেয়ামতের জ্ঞান এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
আর পুণ্যময় তিনি যাঁর অধিকারে রয়েছে মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আর যা-কিছু রয়েছে এ দুইয়ের মধ্যে, আর তাঁরই কাছে রয়েছে ঘড়িঘান্টার জ্ঞান, আর তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
وَلَا یَمۡلِكُ ٱلَّذِینَ یَدۡعُونَ مِن دُونِهِ ٱلشَّفَـٰعَةَ إِلَّا مَن شَهِدَ بِٱلۡحَقِّ وَهُمۡ یَعۡلَمُونَ ﴿86﴾
তিনি ব্যতীত তারা যাদের পুজা করে, তারা সুপারিশের অধিকারী হবে না, তবে যারা সত্য স্বীকার করত ও বিশ্বাস করত।
আর তাঁকে বাদ দিয়ে তারা যাদের ডাকে তাদের কোনো ক্ষমতা নেই সুপারিশ করার, তিনি ব্যতীত যিনি সত্যের সাথে সাক্ষ্য দেন, আর তারা জানে।
وَلَىِٕن سَأَلۡتَهُم مَّنۡ خَلَقَهُمۡ لَیَقُولُنَّ ٱللَّهُۖ فَأَنَّىٰ یُؤۡفَكُونَ ﴿87﴾
যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তারা বলবে, আল্লাহ, অতঃপর তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে ?
আর তুমি যদি তাদের জিজ্ঞাসা কর -- কে তাদের সৃষ্টি করেছেন, তারা নিশ্চয়ই বলবে -- ''আল্লাহ্’’। তাহলে কোথায়-কেমনে তারা ফিরে যাচ্ছে!
وَقِیلِهِۦ یَـٰرَبِّ إِنَّ هَـٰۤؤُلَاۤءِ قَوۡمࣱ لَّا یُؤۡمِنُونَ ﴿88﴾
রসূলের এই উক্তির কসম, হে আমার পালনকর্তা, এ সম্প্রদায় তো বিশ্বাস স্থাপন করে না।
আর তাঁর উক্তি -- ''হে আমার প্রভু! তারা তো এক জাতি যারা ঈমান আনছে না।’’
فَٱصۡفَحۡ عَنۡهُمۡ وَقُلۡ سَلَـٰمࣱۚ فَسَوۡفَ یَعۡلَمُونَ ﴿89﴾
অতএব, আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন এবং বলুন, ‘সালাম’। তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।
''সুতরাং তুমি তাদের থেকে ফিরে যাও এবং বলো -- 'সালাম!’ তারপর শীঘ্রই তারা জানতে পারবে।’’