Main pages

Surah The Ranks [As-Saff] in Bengali

Surah The Ranks [As-Saff] Ayah 14 Location Madinah Number 61

سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۖ وَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿1﴾

নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাবান।

জহুরুল হক

আল্লাহ্‌র মহিমা ঘোষণা করছে যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে ও যা-কিছু আছে পৃথিবীতে, আর তিনি মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفۡعَلُونَ ﴿2﴾

মুমিনগণ! তোমরা যা কর না, তা কেন বল?

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! কেন তোমরা তা বল যা তোমরা কর না?

كَبُرَ مَقۡتًا عِندَ ٱللَّهِ أَن تَقُولُوا۟ مَا لَا تَفۡعَلُونَ ﴿3﴾

তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক।

জহুরুল হক

আল্লাহ্‌র কাছে অত্যন্ত ঘৃণিত যে তোমরা এমন সব বল যা তোমরা কর না।

إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلَّذِینَ یُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِهِۦ صَفࣰّا كَأَنَّهُم بُنۡیَـٰنࣱ مَّرۡصُوصࣱ ﴿4﴾

আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভালবাসেন তাদের যারা তাঁর পথে যুদ্ধ করে সারিবদ্ধভাবে, যেন তারা একটি জমাট গাঁথুনি।

وَإِذۡ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوۡمِهِۦ یَـٰقَوۡمِ لِمَ تُؤۡذُونَنِی وَقَد تَّعۡلَمُونَ أَنِّی رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَیۡكُمۡۖ فَلَمَّا زَاغُوۤا۟ أَزَاغَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُمۡۚ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿5﴾

স্মরণ কর, যখন মূসা (আঃ) তাঁর সম্প্রদায়কে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা কেন আমাকে কষ্ট দাও, অথচ তোমরা জান যে, আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর রসূল। অতঃপর তারা যখন বক্রতা অবলম্বন করল, তখন আল্লাহ তাদের অন্তরকে বক্র করে দিলেন। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।

জহুরুল হক

আর স্মরণ করো! মূসা তাঁর স্বজাতিকে বলেছিলেন, ''হে আমার লোকদল! কেন তোমরা আমাকে কষ্ট দিচ্ছ যখন তোমরা জেনে গিয়েছ যে আমি নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আল্লাহ্‌র প্রেরিত-পুরুষ?’’ তারপর তারা যখন বিমুখ হয়ে গিয়েছিল তখন আল্লাহ্ তাদের হৃদয়কে বিমুখ করে দিলেন। আর আল্লাহ্ সত্যত্যাগী জাতিকে সৎপথে চালান না।

وَإِذۡ قَالَ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَ یَـٰبَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ إِنِّی رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَیۡكُم مُّصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیَّ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَمُبَشِّرَۢا بِرَسُولࣲ یَأۡتِی مِنۢ بَعۡدِی ٱسۡمُهُۥۤ أَحۡمَدُۖ فَلَمَّا جَاۤءَهُم بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ قَالُوا۟ هَـٰذَا سِحۡرࣱ مُّبِینࣱ ﴿6﴾

স্মরণ কর, যখন মরিয়ম-তনয় ঈসা (আঃ) বললঃ হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রসূল, আমার পূর্ববর্তী তওরাতের আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমদ। অতঃপর যখন সে স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বললঃ এ তো এক প্রকাশ্য যাদু।

জহুরুল হক

আর স্মরণ করো! মরিময়পুত্র ঈসা বলেছিলেন -- ''হে ইসরাইলের বংশধরগণ! আমি নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আল্লাহ্‌র রসূল, আমার সমক্ষে তওরাতে যা রয়েছে আমি তার সমর্থনকারী, আর সুসংবাদদাতা এমন এক রসূল সন্বন্ধে যিনি আমার পরে আসবেন, তাঁর নাম 'আহ্‌মদ’।’’ তারপর যখন তিনি তাদের কাছে এলেন স্পষ্ট প্রমাণাবলীসহ, তারা বললে -- ''এ তো এক স্পষ্ট জাদু!’’

وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّنِ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَ وَهُوَ یُدۡعَىٰۤ إِلَى ٱلۡإِسۡلَـٰمِۚ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿7﴾

যে ব্যক্তি ইসলামের দিকে আহুত হয়েও আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে; তার চাইতে অধিক যালেম আর কে? আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।

জহুরুল হক

আর তার চাইতে কে বেশী অন্যায়কারী যে আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে মিথ্যা রচনা করে, অথচ তাকে আহ্বান করা হচ্ছে ইসলামের দিকে? আর আল্লাহ্ অন্যায়াচারী জাতিকে সৎপথে চালান না।

یُرِیدُونَ لِیُطۡفِـُٔوا۟ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفۡوَ ٰ⁠هِهِمۡ وَٱللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡكَـٰفِرُونَ ﴿8﴾

তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।

জহুরুল হক

ওরা চায় আল্লাহ্‌র আলোককে তাদের মুখ দিয়ে নিভিয়ে দিতে। কিন্ত আল্লাহ্ তাঁর আলোককে পূর্ণাঙ্গ করতেই যাচ্ছেন, যদিও অবিশ্বাসীরা অপছন্দ করে।

هُوَ ٱلَّذِیۤ أَرۡسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلۡهُدَىٰ وَدِینِ ٱلۡحَقِّ لِیُظۡهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّینِ كُلِّهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡمُشۡرِكُونَ ﴿9﴾

তিনি তাঁর রসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্যধর্ম নিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে একে সবধর্মের উপর প্রবল করে দেন যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।

জহুরুল হক

তিনিই সেইজন যিনি তাঁর রসূলকে পাঠিয়েছেন পথনির্দেশ ও সত্য ধর্ম দিয়ে যেন তিনি একে প্রাধান্য দিতে পারেন ধর্মের -- তাদের সবক’টির উপরে, যদিও বহুখোদাবাদীরা অপছন্দ করে।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ هَلۡ أَدُلُّكُمۡ عَلَىٰ تِجَـٰرَةࣲ تُنجِیكُم مِّنۡ عَذَابٍ أَلِیمࣲ ﴿10﴾

মুমিনগণ, আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে?

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! আমি কি তোমাদের সন্ধান দেব এমন এক পণ্যদ্রব্যের যা তোমাদের উদ্ধার করবে মর্মন্তুদ শাস্তি থেকে?

تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتُجَـٰهِدُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ بِأَمۡوَ ٰ⁠لِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡۚ ذَ ٰ⁠لِكُمۡ خَیۡرࣱ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿11﴾

তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জেহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম; যদি তোমরা বোঝ।

জহুরুল হক

তোমরা আল্লাহ্‌তে ও তাঁর রসূলে বিশ্বাস করবে, আর আল্লাহ্‌র পথে সংগ্রাম করবে তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের জীবন দিয়ে। এইটিই হচ্ছে তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে!

یَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡ وَیُدۡخِلۡكُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ وَمَسَـٰكِنَ طَیِّبَةࣰ فِی جَنَّـٰتِ عَدۡنࣲۚ ذَ ٰ⁠لِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿12﴾

তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং এমন জান্নাতে দাখিল করবেন, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং বসবাসের জান্নাতে উত্তম বাসগৃহে। এটা মহাসাফল্য।

জহুরুল হক

তিনি তোমাদের পরিত্রাণ করবেন তোমাদের দোষত্রুটি থেকে, আর তোমাদের প্রবেশ করাবেন জান্নাতে যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলেছে ঝরনারাজি, আর নন্দন কাননের উৎকৃষ্ট গৃহসমূহে। এটিই মহাসাফল্য!

وَأُخۡرَىٰ تُحِبُّونَهَاۖ نَصۡرࣱ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَتۡحࣱ قَرِیبࣱۗ وَبَشِّرِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿13﴾

এবং আরও একটি অনুগ্রহ দিবেন, যা তোমরা পছন্দ কর। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়। মুমিনদেরকে এর সুসংবাদ দান করুন।

জহুরুল হক

আর অন্য একটি যা তোমরা ভালবাস -- আল্লাহ্‌র কাছ থেকে সাহায্য ও আসন্ন বিজয়। আর সুসংবাদ দাও মুমিনদের।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ كُونُوۤا۟ أَنصَارَ ٱللَّهِ كَمَا قَالَ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَ لِلۡحَوَارِیِّـۧنَ مَنۡ أَنصَارِیۤ إِلَى ٱللَّهِۖ قَالَ ٱلۡحَوَارِیُّونَ نَحۡنُ أَنصَارُ ٱللَّهِۖ فَـَٔامَنَت طَّاۤىِٕفَةࣱ مِّنۢ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ وَكَفَرَت طَّاۤىِٕفَةࣱۖ فَأَیَّدۡنَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ عَلَىٰ عَدُوِّهِمۡ فَأَصۡبَحُوا۟ ظَـٰهِرِینَ ﴿14﴾

মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও, যেমন ঈসা ইবনে-মরিয়ম তার শিষ্যবর্গকে বলেছিল, আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে? শিষ্যবর্গ বলেছিলঃ আমরা আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। অতঃপর বনী-ইসরাঈলের একদল বিশ্বাস স্থাপন করল এবং একদল কাফের হয়ে গেল। যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, আমি তাদেরকে তাদের শত্রুদের মোকাবেলায় শক্তি যোগালাম, ফলে তারা বিজয়ী হল।

জহুরুল হক

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আল্লাহ্‌র সাহায্যকারী হও, যেমন মরিয়ম-পুত্র ঈসা শিষ্যদের বলেছিলেন -- ''কারা আল্লাহ্‌র তরফে আমার সাহায্যকারী হবে?’’ শিষ্যেরা বলেছিল, ''আমরাই আল্লাহ্‌র সাহায্যকারী।’’ সুতরাং ইসরাইলের বংশধরদের মধ্যের একদল বিশ্বাস করেছিল এবং একদল অবিশ্বাস করেছিল। সেজন্য যারা ঈমান এনেছিল তাদের আমরা সাহায্য করেছিলাম তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে, ফলে পরক্ষণেই তারা উপরহাত হয়েছিল।