Settings
Surah Spoils of war, booty [Al-Anfal] in Bengali
یَسۡـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡأَنفَالِۖ قُلِ ٱلۡأَنفَالُ لِلَّهِ وَٱلرَّسُولِۖ فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَصۡلِحُوا۟ ذَاتَ بَیۡنِكُمۡۖ وَأَطِیعُوا۟ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۤ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿1﴾
আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে, গনীমতের হুকুম। বলে দিন, গণীমতের মাল হল আল্লাহর এবং রসূলের। অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং নিজেদের অবস্থা সংশোধন করে নাও। আর আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য কর, যদি ঈমানদার হয়ে থাক।
তারা তোমাকে যুদ্ধে-লব্ধ ধনসম্পদ সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছে। বলো -- ''যুদ্ধে-লব্ধ ধনসম্পত্তি আল্লাহ্ ও রসূলের জন্য। সুতরাং আল্লাহ্কে তোমরা ভয়ভক্তি করো, আর তোমাদের নিজেদের মধ্যে সাব স্থাপন করো, আর আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলকে মেনে চলো যদি তোমরা মুমিন হও।’’
إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِینَ إِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَجِلَتۡ قُلُوبُهُمۡ وَإِذَا تُلِیَتۡ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتُهُۥ زَادَتۡهُمۡ إِیمَـٰنࣰا وَعَلَىٰ رَبِّهِمۡ یَتَوَكَّلُونَ ﴿2﴾
যারা ঈমানদার, তারা এমন যে, যখন আল্লাহর নাম নেয়া হয় তখন ভীত হয়ে পড়ে তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় পরওয়ার দেগারের প্রতি ভরসা পোষণ করে।
মুমিন তো কেবল তারাই যাদের হৃদয় ভয়ে কাঁপে যখন আল্লাহ্র কথা বলা হয়, আর যখন তাদের কাছে তাঁর বাণীসমূহ পাঠ করা হয় তা তাদের জন্য ধর্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়, আর তাদের প্রভুর উপরেই তারা নির্ভর করে, --
ٱلَّذِینَ یُقِیمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَمِمَّا رَزَقۡنَـٰهُمۡ یُنفِقُونَ ﴿3﴾
সে সমস্ত লোক যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে রুযী দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।
যারা নামায কায়েম করে আর আমরা তাদের যা রিযেক দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে থাকে।
أُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ حَقࣰّاۚ لَّهُمۡ دَرَجَـٰتٌ عِندَ رَبِّهِمۡ وَمَغۡفِرَةࣱ وَرِزۡقࣱ كَرِیمࣱ ﴿4﴾
তারাই হল সত্যিকার ঈমানদার! তাদের জন্য রয়েছে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট মর্যাদা, ক্ষমা এবং সম্মানজনক রুযী।
তারা নিজেরাই হচ্ছে সত্যিকারের মুমিন। তাদের জন্য রয়েছে তাদের প্রভুর কাছে মর্যাদার স্তরসমূহ, আর পরিত্রাণ ও সম্মানজনক জীবিকা।
كَمَاۤ أَخۡرَجَكَ رَبُّكَ مِنۢ بَیۡتِكَ بِٱلۡحَقِّ وَإِنَّ فَرِیقࣰا مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ لَكَـٰرِهُونَ ﴿5﴾
যেমন করে তোমাকে তোমার পরওয়ারদেগার ঘর থেকে বের করেছেন ন্যায় ও সৎকাজের জন্য, অথচ ঈমানদারদের একটি দল (তাতে) সম্মত ছিল না।
যেমন, -- তোমার প্রভু তোমাকে তোমার বাড়িঘর থেকে বের ক’রে আনলেন সত্যের সাথে, যদিও মুমিনদের মধ্যের একটি দল অবশ্যই ছিল বিরূপভাবাপন্ন।
یُجَـٰدِلُونَكَ فِی ٱلۡحَقِّ بَعۡدَ مَا تَبَیَّنَ كَأَنَّمَا یُسَاقُونَ إِلَى ٱلۡمَوۡتِ وَهُمۡ یَنظُرُونَ ﴿6﴾
তারা তোমার সাথে বিবাদ করছিল সত্য ও ন্যায় বিষয়ে, তা প্রকাশিত হবার পর; তারা যেন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে দেখতে দেখতে।
তারা তোমার সঙ্গে সত্য সন্বন্ধে বিতর্ক করছিল তা সুস্পষ্ট হবার পরেও, যেন তারা মৃত্যুর দিকে তাড়িত হচ্ছিল, আর তারা তাকিয়ে রয়েছিল।
وَإِذۡ یَعِدُكُمُ ٱللَّهُ إِحۡدَى ٱلطَّاۤىِٕفَتَیۡنِ أَنَّهَا لَكُمۡ وَتَوَدُّونَ أَنَّ غَیۡرَ ذَاتِ ٱلشَّوۡكَةِ تَكُونُ لَكُمۡ وَیُرِیدُ ٱللَّهُ أَن یُحِقَّ ٱلۡحَقَّ بِكَلِمَـٰتِهِۦ وَیَقۡطَعَ دَابِرَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿7﴾
আর যখন আল্লাহ দু’টি দলের একটির ব্যাপারে তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, সেটি তোমাদের হস্তগত হবে, আর তোমরা কামনা করছিলে যাতে কোন রকম কন্টক নেই, তাই তোমাদের ভাগে আসুক; অথচ আল্লাহ চাইতেন সত্যকে স্বীয় কালামের মাধ্যমে সত্যে পরিণত করতে এবং কাফেরদের মূল কর্তন করে দিতে,
আর স্মরণ করো! আল্লাহ্ তোমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দুই দলের একটি সন্বন্ধে যে তা তোমাদের হবে, আর তোমরা চেয়েছিলে যা অস্ত্রসজ্জিত নয় তাই তোমাদের হোক, অথচ আল্লাহ্ চেয়েছিলেন যেন সত্য সত্য প্রতিপন্ন হয় তাঁর বাণীর দ্বারা, আর যেন তিনি অবিশ্বাসীদের শিকড় কেটে দেন --
لِیُحِقَّ ٱلۡحَقَّ وَیُبۡطِلَ ٱلۡبَـٰطِلَ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡمُجۡرِمُونَ ﴿8﴾
যাতে করে সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে দেন, যদিও পাপীরা অসন্তুষ্ট হয়।
যেন তিনি সত্যকে সত্য প্রতিপন্ন করেন ও মিথ্যাকে বাতিল করে দেন, যদিও অপরাধীরা তা অপছন্দ করে।’’
إِذۡ تَسۡتَغِیثُونَ رَبَّكُمۡ فَٱسۡتَجَابَ لَكُمۡ أَنِّی مُمِدُّكُم بِأَلۡفࣲ مِّنَ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ مُرۡدِفِینَ ﴿9﴾
তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করেছিলে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট, তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরী দান করলেন যে, আমি তোমাদিগকে সাহায্য করব ধারাবহিকভাবে আগত হাজার ফেরেশতার মাধ্যমে।
স্মরণ করো! তোমরা তোমাদের প্রভুর সাহায্য প্রার্থনা করেছিলে, তাই তিনি তোমাদের প্রতি সাড়া দিয়েছিলেন -- ''আমি নিশ্চয়ই তোমাদের সাহায্য করবো অক্ষুন্ন পরম্পরায় আগত ফিরিশ্তাদের একহাজার জন দিয়ে।’’
وَمَا جَعَلَهُ ٱللَّهُ إِلَّا بُشۡرَىٰ وَلِتَطۡمَىِٕنَّ بِهِۦ قُلُوبُكُمۡۚ وَمَا ٱلنَّصۡرُ إِلَّا مِنۡ عِندِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِیزٌ حَكِیمٌ ﴿10﴾
আর আল্লাহ তো শুধু সুসংবাদ দান করলেন যাতে তোমাদের মন আশ্বস্ত হতে পারে। আর সাহায্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ছাড়া অন্য কারো পক্ষ থেকে হতে পারে না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশক্তির অধিকারী হেকমত ওয়ালা।
আর আল্লাহ্ এটি করেন নি সুসংবাদ দান ছাড়া আর যেন এর দ্বারা তোমাদের হৃদয় প্রশান্তি লাভ করে, আর সাহায্য তো আসে না আল্লাহ্র কাছ থেকে ছাড়া। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।
إِذۡ یُغَشِّیكُمُ ٱلنُّعَاسَ أَمَنَةࣰ مِّنۡهُ وَیُنَزِّلُ عَلَیۡكُم مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ مَاۤءࣰ لِّیُطَهِّرَكُم بِهِۦ وَیُذۡهِبَ عَنكُمۡ رِجۡزَ ٱلشَّیۡطَـٰنِ وَلِیَرۡبِطَ عَلَىٰ قُلُوبِكُمۡ وَیُثَبِّتَ بِهِ ٱلۡأَقۡدَامَ ﴿11﴾
যখন তিনি আরোপ করেন তোমাদের উপর তন্দ্রাচ্ছন্ন তা নিজের পক্ষ থেকে তোমাদের প্রশান্তির জন্য এবং তোমাদের উপর আকাশ থেকে পানি অবতরণ করেন, যাতে তোমাদিগকে পবিত্র করে দেন এবং যাতে তোমাদের থেকে অপসারিত করে দেন শয়তানের অপবিত্রতা। আর যাতে করে সুরক্ষিত করে দিতে পারেন তোমাদের অন্তরসমূহকে এবং তাতে যেন সুদৃঢ় করে দিতে পারেন তোমাদের পা গুলো।
স্মরণ করো! তিনি তোমাদের উপরে প্রশান্তি এনেছিলেন তাঁর তরফ থকে স্বস্তিরূপে, আর তিনি তোমাদের উপরে আকাশ থেকে বর্ষণ করলেন বৃষ্টি, যেন তিনি এর দ্বারা তোমাদের পরিস্কার করতে পারেন, আর যেন তোমাদের থেকে দূর করতে পারেন শয়তানের নোংরামি, আর যেন তিনি তোমাদের অন্তরে বলসঞ্চার করতে পারেন, আর যেন এর দ্বারা পদক্ষেপ দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
إِذۡ یُوحِی رَبُّكَ إِلَى ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ أَنِّی مَعَكُمۡ فَثَبِّتُوا۟ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ۚ سَأُلۡقِی فِی قُلُوبِ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ ٱلرُّعۡبَ فَٱضۡرِبُوا۟ فَوۡقَ ٱلۡأَعۡنَاقِ وَٱضۡرِبُوا۟ مِنۡهُمۡ كُلَّ بَنَانࣲ ﴿12﴾
যখন নির্দেশ দান করেন ফেরেশতাদিগকে তোমাদের পরওয়ারদেগার যে, আমি সাথে রয়েছি তোমাদের, সুতরাং তোমরা মুসলমানদের চিত্তসমূহকে ধীরস্থির করে রাখ। আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।
স্মরণ করো! তোমার প্রভু ফিরিশ্তাদের কাছে প্রেরণা দিলেন -- ''আমি নিশ্চয়ই তোমাদের সাথে আছি, কাজেই যারা ঈমান এনেছে তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত করো। আমি অচিরেই তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করবো যারা অবিশ্বাস পোষণ করে, অতএব ঘাড়ের উপরে আঘাত করো আর তাদের থেকে সমস্ত প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলো।’’
ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ شَاۤقُّوا۟ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۚ وَمَن یُشَاقِقِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَإِنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿13﴾
যেহেতু তারা অবাধ্য হয়েছে আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের, সেজন্য এই নির্দেশ। বস্তুতঃ যে লোক আল্লাহ ও রসূলের অবাধ্য হয়, নিঃসন্দেহে আল্লাহর শাস্তি অত্যন্ত কঠোর।
এটি এইজন্য যে তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের বিরোধিতা করে, আর যে কেউ আল্লাহ্ ও রসূলের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় -- আল্লাহ্ তবে নিশ্চয়ই শাস্তিদানে কঠোর।
ذَ ٰلِكُمۡ فَذُوقُوهُ وَأَنَّ لِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابَ ٱلنَّارِ ﴿14﴾
আপাততঃ বর্তমান এ শাস্তি তোমরা আস্বাদন করে নাও এবং জেনে রাখ যে, কাফেরদের জন্য রয়েছে দোযখের আযাব।
''এটিই তোমাদের জন্য! অতএব এর আস্বাদ গ্রহণ করো! আর অবিশ্বাসীদের জন্য নিশ্চয়ই রয়েছে আগুনের শাস্তি।’’
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِذَا لَقِیتُمُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ زَحۡفࣰا فَلَا تُوَلُّوهُمُ ٱلۡأَدۡبَارَ ﴿15﴾
হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কাফেরদের সাথে মুখোমুখী হবে, তখন পশ্চাদপসরণ করবে না।
ওহে যারা ঈমান এনেছ! যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের যখন তোমরা দেখা পাও যুদ্ধযাত্রা করছে তখন তাদের দিকে পিঠ ফেরাবে না।
وَمَن یُوَلِّهِمۡ یَوۡمَىِٕذࣲ دُبُرَهُۥۤ إِلَّا مُتَحَرِّفࣰا لِّقِتَالٍ أَوۡ مُتَحَیِّزًا إِلَىٰ فِئَةࣲ فَقَدۡ بَاۤءَ بِغَضَبࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَمَأۡوَىٰهُ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِیرُ ﴿16﴾
আর যে লোক সেদিন তাদের থেকে পশ্চাদপসরণ করবে, অবশ্য যে লড়াইয়ের কৌশল পরিবর্তনকল্পে কিংবা যে নিজ সৈন্যদের নিকট আশ্রয় নিতে আসে সে ব্যতীত অন্যরা আল্লাহর গযব সাথে নিয়ে প্রত্যাবর্তন করবে। আর তার ঠিকানা হল জাহান্নাম। বস্তুতঃ সেটা হল নিকৃষ্ট অবস্থান।
আর যে কেউ সেইদিন তার পিঠ ফেরাবে -- যুদ্ধের কেশল অবলন্বন ব্যতীত, অথবা দলে যোগ দেবার জন্যে, -- সে তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ্র ক্রোধ অর্জন করবে, আর তার আশ্রয় হবে জাহান্নাম, আর তা হচ্ছে নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থল!
فَلَمۡ تَقۡتُلُوهُمۡ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ قَتَلَهُمۡۚ وَمَا رَمَیۡتَ إِذۡ رَمَیۡتَ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ رَمَىٰ وَلِیُبۡلِیَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ مِنۡهُ بَلَاۤءً حَسَنًاۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِیعٌ عَلِیمࣱ ﴿17﴾
সুতরাং তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি, বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর তুমি মাটির মুষ্ঠি নিক্ষেপ করনি, যখন তা নিক্ষেপ করেছিলে, বরং তা নিক্ষেপ করেছিলেন আল্লাহ স্বয়ং যেন ঈমানদারদের প্রতি এহসান করতে পারেন যথার্থভাবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ শ্রবণকারী; পরিজ্ঞাত।
অতএব তোমরা তাদের বধ করো নি, বরং আল্লাহ্ই তাদের বধ করেছেন। আর তুমি ছুঁড়ে মারো নি যখন তুমি নিক্ষেপ করেছিলে বরং আল্লাহ্ই নিক্ষেপ করেছিলেন, আর যেন তিনি বিশ্বাসীদের প্রদান করেন তাঁর নিজের থেকে এক উত্তম পুরস্কার। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।
ذَ ٰلِكُمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ مُوهِنُ كَیۡدِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿18﴾
এটাতো গেল, আর জেনে রেখো, আল্লাহ নস্যাৎ করে দেবেন কাফেরদের সমস্ত কলা-কৌশল।
এটিই তোমাদের জন্য! আর আল্লাহ্ অবশ্যই অবিশ্বাসীদের চক্রান্ত দুর্বলকারী।
إِن تَسۡتَفۡتِحُوا۟ فَقَدۡ جَاۤءَكُمُ ٱلۡفَتۡحُۖ وَإِن تَنتَهُوا۟ فَهُوَ خَیۡرࣱ لَّكُمۡۖ وَإِن تَعُودُوا۟ نَعُدۡ وَلَن تُغۡنِیَ عَنكُمۡ فِئَتُكُمۡ شَیۡـࣰٔا وَلَوۡ كَثُرَتۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿19﴾
তোমরা যদি মীমাংসা কামনা কর, তাহলে তোমাদের নিকট মীমাংসা পৌছে গেছে। আর যদি তোমরা প্রত্যাবর্তন কর, তবে তা তোমাদের জন্য উত্তম এবং তোমরা যদি তাই কর, তবে আমি ও তেমনি করব। বস্তুতঃ তোমাদের কোনই কাজে আসবে না তোমাদের দল-বল, তা যত বেশীই হোক। জেনে রেখ আল্লাহ রয়েছেন ঈমানদারদের সাথে।
তোমরা যখন বিজয়-কামনা করেছিলে তখন তোমাদের কাছে আলবৎ চূড়ান্ত বিজয় এসেছে। আর যদি তোমরা বিরত হও তবে তা হবে তোমাদের জন্য ভালো, কিন্তু যদি তোমরা ফিরে আসো, আমরাও ফিরে আসবো, আর তোমাদের ফৌজ তোমাদের কোনো কাজে আসবে না, যদিও তা সংখ্যাগরিষ্ঠ হোক। আর আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ মুমিনদেরই সাথে রয়েছেন।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَطِیعُوا۟ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَا تَوَلَّوۡا۟ عَنۡهُ وَأَنتُمۡ تَسۡمَعُونَ ﴿20﴾
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ মান্য কর এবং শোনার পর তা থেকে বিমুখ হয়ো না।
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের আজ্ঞাপালন করো, আর তাঁর থেকে ফিরে যেও না যখন তোমরা শোনো।
وَلَا تَكُونُوا۟ كَٱلَّذِینَ قَالُوا۟ سَمِعۡنَا وَهُمۡ لَا یَسۡمَعُونَ ﴿21﴾
আর তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা বলে যে, আমরা শুনেছি, অথচ তারা শোনেনা।
আর তোমরা তাদের মতো হয়ো না যারা বলেছিল -- ''আমরা শুনলাম’’, কিন্তু তারা শোনে নি।
۞ إِنَّ شَرَّ ٱلدَّوَاۤبِّ عِندَ ٱللَّهِ ٱلصُّمُّ ٱلۡبُكۡمُ ٱلَّذِینَ لَا یَعۡقِلُونَ ﴿22﴾
নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলার নিকট সমস্ত প্রাণীর তুলনায় তারাই মূক ও বধির, যারা উপলদ্ধি করে না।
নিঃসন্দেহ আল্লাহ্র নিকট নিকৃষ্টতম জীব হচ্ছে -- বধির বোবা -- যারা বোঝে না।
وَلَوۡ عَلِمَ ٱللَّهُ فِیهِمۡ خَیۡرࣰا لَّأَسۡمَعَهُمۡۖ وَلَوۡ أَسۡمَعَهُمۡ لَتَوَلَّوا۟ وَّهُم مُّعۡرِضُونَ ﴿23﴾
বস্তুতঃ আল্লাহ যদি তাদের মধ্যে কিছুমাত্র শুভ চিন্তা জানতেন, তবে তাদেরকে শুনিয়ে দিতেন। আর এখনই যদি তাদের শুনিয়ে দেন, তবে তারা মুখ ঘুরিয়ে পালিয়ে যাবে।
আর আল্লাহ্ যদি তাদের মধ্যে ভালো কিছু জানতেন তবে তিনি আলবৎ তাদের শোনাতেন। কিন্তু যদিও তিনি তাদের শোনাতেন তবু তারা ফিরে যেতো, যেহেতু তারা বিমুখ।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱسۡتَجِیبُوا۟ لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمۡ لِمَا یُحۡیِیكُمۡۖ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ یَحُولُ بَیۡنَ ٱلۡمَرۡءِ وَقَلۡبِهِۦ وَأَنَّهُۥۤ إِلَیۡهِ تُحۡشَرُونَ ﴿24﴾
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ মান্য কর, যখন তোমাদের সে কাজের প্রতি আহবান করা হয়, যাতে রয়েছে তোমাদের জীবন। জেনে রেখো, আল্লাহ মানুষের এবং তার অন্তরের মাঝে অন্তরায় হয়ে যান। বস্তুতঃ তোমরা সবাই তাঁরই নিকট সমবেত হবে।
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্ ও রসূলের প্রতি সাড়া দাও যখন তিনি তোমাদের আহ্বান করেন তাতে যা তোমাদের জীবন দান করে। আর জানো যে আল্লাহ্ মানুষের ও তার অন্তঃকরণের মাঝখানে বিরাজ করছেন, আর নিঃসন্দেহ তিনি -- তাঁরই কাছে তোমাদের একত্রিত করা হবে।
وَٱتَّقُوا۟ فِتۡنَةࣰ لَّا تُصِیبَنَّ ٱلَّذِینَ ظَلَمُوا۟ مِنكُمۡ خَاۤصَّةࣰۖ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿25﴾
আর তোমরা এমন ফাসাদ থেকে বেঁচে থাক যা বিশেষতঃ শুধু তাদের উপর পতিত হবে না যারা তোমাদের মধ্যে জালেম এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহর আযাব অত্যন্ত কঠোর।
আর ধর্মভীরুতা অবলন্বন করো সেই বিপদ সন্বন্ধে যা তোমাদের মধ্যের যারা অত্যাচারী শুধুমাত্র তাদের উপরেই পড়ে না। আর জেনে রেখো যে আল্লাহ্ আলবৎ প্রতিফল দানে কঠোর।
وَٱذۡكُرُوۤا۟ إِذۡ أَنتُمۡ قَلِیلࣱ مُّسۡتَضۡعَفُونَ فِی ٱلۡأَرۡضِ تَخَافُونَ أَن یَتَخَطَّفَكُمُ ٱلنَّاسُ فَـَٔاوَىٰكُمۡ وَأَیَّدَكُم بِنَصۡرِهِۦ وَرَزَقَكُم مِّنَ ٱلطَّیِّبَـٰتِ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿26﴾
আর স্মরণ কর, যখন তোমরা ছিলে অল্প, পরাজিত অবস্থায় পড়েছিলে দেশে; ভীত-সস্ত্রস্ত্র ছিলে যে, তোমাদের না অন্যেরা ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। অতঃপর তিনি তোমাদিগকে আশ্রয়ের ঠিকানা দিয়েছেন, স্বীয় সাহায্যের দ্বারা তোমাদিগকে শক্তি দান করেছেন এবং পরিচ্ছন্ন জীবিকা দিয়েছেন যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় কর।
আর স্মরণ করো! যখন তোমরা ছিলে স্বল্পসংখ্যক, দুনিয়াতে তোমরা দুর্বলরূপে পরিগণিত হতে, তোমরা ভয় করতে যে লোকেরা তোমাদের আচমকা ধরে নিয়ে যাবে, তখন তিনি তোমাদের আশ্রয় দেন, আর তোমাদের বলবৃদ্ধি করেন তাঁর সাহায্যের দ্বারা, আর তোমাদের জীবিকা দান করলেন উত্তম বিষয়-বস্তু থেকে, যেন তোমরা ধন্যবাদ জানাতে পারো।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَخُونُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ وَتَخُونُوۤا۟ أَمَـٰنَـٰتِكُمۡ وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿27﴾
হে ঈমানদারগণ, খেয়ানত করোনা আল্লাহর সাথে ও রসূলের সাথে এবং খেয়ানত করো না নিজেদের পারস্পরিক আমানতে জেনে-শুনে।
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাসভঙ্গ করো না, আর না তোমাদের আমানত খিয়ানত করবে, -- তাও তোমরা জেনে-শুনে।
وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّمَاۤ أَمۡوَ ٰلُكُمۡ وَأَوۡلَـٰدُكُمۡ فِتۡنَةࣱ وَأَنَّ ٱللَّهَ عِندَهُۥۤ أَجۡرٌ عَظِیمࣱ ﴿28﴾
আর জেনে রাখ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি অকল্যাণের সম্মুখীনকারী। বস্তুতঃ আল্লাহর নিকট রয়েছে মহা সওয়াব।
আর জেনে রেখো যে নিঃসন্দেহ তোমাদের ধনদৌলত ও তোমাদের সন্তানসন্ততি তোমাদের জন্য এক পরীক্ষা, আর নিঃ সন্দেহ আল্লাহ্ -- তাঁরই কাছে রয়েছে বিরাট পুরস্কার।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِن تَتَّقُوا۟ ٱللَّهَ یَجۡعَل لَّكُمۡ فُرۡقَانࣰا وَیُكَفِّرۡ عَنكُمۡ سَیِّـَٔاتِكُمۡ وَیَغۡفِرۡ لَكُمۡۗ وَٱللَّهُ ذُو ٱلۡفَضۡلِ ٱلۡعَظِیمِ ﴿29﴾
হে ঈমানদারগণ তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় করতে থাক, তবে তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন এবং তোমাদের থেকে তোমাদের পাপকে সরিয়ে দেবেন এবং তোমাদের ক্ষমা করবেন। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ অত্যন্ত মহান।
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যদি আল্লাহ্কে ভয়ভক্তি করো তবে তিনি তোমাদের দেবেন ফুরকান, আর তোমাদের থেকে তোমাদের মন্দ ঘুচিয়ে দেবেন, আর তোমাদের পরিত্রাণ করবেন। আর আল্লাহ্ বিপুল কল্যাণের অধিকর্তা।
وَإِذۡ یَمۡكُرُ بِكَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لِیُثۡبِتُوكَ أَوۡ یَقۡتُلُوكَ أَوۡ یُخۡرِجُوكَۚ وَیَمۡكُرُونَ وَیَمۡكُرُ ٱللَّهُۖ وَٱللَّهُ خَیۡرُ ٱلۡمَـٰكِرِینَ ﴿30﴾
আর কাফেরেরা যখন প্রতারণা করত আপনাকে বন্দী অথবা হত্যা করার উদ্দেশ্যে কিংবা আপনাকে বের করে দেয়ার জন্য তখন তারা যেমন ছলনা করত তেমনি, আল্লাহও ছলনা করতেন। বস্তুতঃ আল্লাহর ছলনা সবচেয়ে উত্তম।
আর স্মরণ করো! যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল যে তারা তোমাকে আটক করবে, অথবা তারা তোমাকে হত্যা করবে, অথবা তারা তোমাকে নির্বাসিত করবে। আর তারা ষড়যন্ত্র করেছিল, আর আল্লাহ্ও পরিকল্পনা করেছিলেন। আর পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে আল্লাহ্ই শ্রেষ্ঠ।
وَإِذَا تُتۡلَىٰ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتُنَا قَالُوا۟ قَدۡ سَمِعۡنَا لَوۡ نَشَاۤءُ لَقُلۡنَا مِثۡلَ هَـٰذَاۤ إِنۡ هَـٰذَاۤ إِلَّاۤ أَسَـٰطِیرُ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿31﴾
আর কেউ যখন তাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে তবে বলে, আমরা শুনেছি, ইচ্ছা করলে আমরাও এমন বলতে পারি; এ তো পূর্ববর্তী ইতিকথা ছাড়া আর কিছুই নয়।
আর যখন তাদের কাছে আমাদের বাণী পড়ে শোনানো হয় তারা বলে -- ''আমরা ইতিমধ্যেই শুনেছি, আমরাও ইচ্ছা করলে এর ন্যায় অবশ্যই বলতে পারি, এ তো পুরাকালের উপকথা বৈ নয়’’।
وَإِذۡ قَالُوا۟ ٱللَّهُمَّ إِن كَانَ هَـٰذَا هُوَ ٱلۡحَقَّ مِنۡ عِندِكَ فَأَمۡطِرۡ عَلَیۡنَا حِجَارَةࣰ مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ أَوِ ٱئۡتِنَا بِعَذَابٍ أَلِیمࣲ ﴿32﴾
তাছাড়া তারা যখন বলতে আরম্ভ করে যে, ইয়া আল্লাহ, এই যদি তোমার পক্ষ থেকে (আগত) সত্য দ্বীন হয়ে থাকে, তবে আমাদের উপর আকাশ থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদের উপর বেদনাদায়ক আযাব নাযিল কর।
আরও স্মরণ করো! তারা বলেছিল -- ''হে আল্লাহ্, এই যদি তোমার কাছ থেকে আসা যথার্থ সত্য হয় তবে আমাদের উপরে আকাশ থেকে পাথর বর্ষণ করো কিংবা আমাদের কাছে মর্মন্তুদ শাস্তি নিয়ে এস!’’
وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِیُعَذِّبَهُمۡ وَأَنتَ فِیهِمۡۚ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ مُعَذِّبَهُمۡ وَهُمۡ یَسۡتَغۡفِرُونَ ﴿33﴾
অথচ আল্লাহ কখনই তাদের উপর আযাব নাযিল করবেন না যতক্ষণ আপনি তাদের মাঝে অবস্থান করবেন। তাছাড়া তারা যতক্ষণ ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে আল্লাহ কখনও তাদের উপর আযাব দেবেন না।
আর আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন না যতক্ষণ তুমি তাদের মধ্যে রয়েছে। আর আল্লাহ্ এরূপ নন যে তিনি তাদের শাস্তিদাতা হবেন যখন তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে।
وَمَا لَهُمۡ أَلَّا یُعَذِّبَهُمُ ٱللَّهُ وَهُمۡ یَصُدُّونَ عَنِ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ وَمَا كَانُوۤا۟ أَوۡلِیَاۤءَهُۥۤۚ إِنۡ أَوۡلِیَاۤؤُهُۥۤ إِلَّا ٱلۡمُتَّقُونَ وَلَـٰكِنَّ أَكۡثَرَهُمۡ لَا یَعۡلَمُونَ ﴿34﴾
আর তাদের মধ্যে এমন কি বিষয় রয়েছে, যার ফলে আল্লাহ তাদের উপর আযাব দান করবেন না। অথচ তারা মসজিদে-হারামে যেতে বাধাদান করে, অথচ তাদের সে অধিকার নেই। এর অধিকার তো তাদেরই রয়েছে যারা পরহেযগার। কিন্তু তাদের অধিকাংশই সে বিষয়ে অবহিত নয়।
আর কি তাদের থাকতে পারে যে আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন না যখন তারা পবিত্র মসজিদ থেকে বাধা দেয়, অথচ তারা এর তত্ত্বাবধায়ক হতে পারে না। এর তত্ত্বাবধায়ক হচ্ছে শুধু মুত্তকীরা, কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।
وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمۡ عِندَ ٱلۡبَیۡتِ إِلَّا مُكَاۤءࣰ وَتَصۡدِیَةࣰۚ فَذُوقُوا۟ ٱلۡعَذَابَ بِمَا كُنتُمۡ تَكۡفُرُونَ ﴿35﴾
আর কা’বার নিকট তাদের নামায বলতে শিস দেয়া আর তালি বাজানো ছাড়া অন্য কোন কিছুই ছিল না। অতএব, এবার নিজেদের কৃত কুফরীর আযাবের স্বাদ গ্রহণ কর।
আর গৃহের নিকটে তাদের নামায শুধু শিস দেওয়া ও হাততালি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং ''শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ করো যেহেতু তোমরা অবিশ্বাস পোষণ করছিলে।’’
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ یُنفِقُونَ أَمۡوَ ٰلَهُمۡ لِیَصُدُّوا۟ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِۚ فَسَیُنفِقُونَهَا ثُمَّ تَكُونُ عَلَیۡهِمۡ حَسۡرَةࣰ ثُمَّ یُغۡلَبُونَۗ وَٱلَّذِینَ كَفَرُوۤا۟ إِلَىٰ جَهَنَّمَ یُحۡشَرُونَ ﴿36﴾
নিঃসন্দেহে যেসব লোক কাফের, তারা ব্যয় করে নিজেদের ধন-সম্পদ, যাতে করে বাধাদান করতে পারে আল্লাহর পথে। বস্তুতঃ এখন তারা আরো ব্যয় করবে। তারপর তাই তাদের জন্য আক্ষেপের কারণ হয়ে এবং শেষ পর্যন্ত তারা হেরে যাবে। আর যারা কাফের তাদেরকে দোযখের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা তাদের ধনসম্পত্তি খরচ করে আল্লাহ্র পথ থেকে বাধা দেবার জন্যে। তারা এটা খরচ করবেই, তারপর এটি হবে তাদের জন্য মনস্তাপের কারণ, তারপর তাদের পরাজিত করা হবে। আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের জাহান্নামের দিকে একত্রিত করা হবে, --
لِیَمِیزَ ٱللَّهُ ٱلۡخَبِیثَ مِنَ ٱلطَّیِّبِ وَیَجۡعَلَ ٱلۡخَبِیثَ بَعۡضَهُۥ عَلَىٰ بَعۡضࣲ فَیَرۡكُمَهُۥ جَمِیعࣰا فَیَجۡعَلَهُۥ فِی جَهَنَّمَۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡخَـٰسِرُونَ ﴿37﴾
যাতে পৃথক করে দেন আল্লাহ অপবিত্র ও না-পাককে পবিত্র ও পাক থেকে। আর যাতে একটির পর একটিকে স্থাপন করে সমবেত স্তুপে পরিণত করেন এবং পরে দোযখে নিক্ষেপ করেন। এরাই হল ক্ষতিগ্রস্ত।
যেন আল্লাহ্ পৃথক করতে পারেন মন্দকে ভালো থেকে, আর মন্দকে তিনি স্থাপন করবেন তাদের একটিকে অন্যটির উপরে, তারপর সবটাকে তিনি একত্রে স্তূপীকৃত করবেন এবং তাকে ফেলবেন জাহান্নামে। তারা নিজেরাই হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত।
قُل لِّلَّذِینَ كَفَرُوۤا۟ إِن یَنتَهُوا۟ یُغۡفَرۡ لَهُم مَّا قَدۡ سَلَفَ وَإِن یَعُودُوا۟ فَقَدۡ مَضَتۡ سُنَّتُ ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿38﴾
তুমি বলে দাও, কাফেরদেরকে যে, তারা যদি বিরত হয়ে যায়, তবে যা কিছু ঘটে গেছে ক্ষমা হবে যাবে। পক্ষান্তরে আবারও যদি তাই করে, তবে পুর্ববর্তীদের পথ নির্ধারিত হয়ে গেছে।
যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের বলো -- যদি তারা নিবৃত্ত হয় তবে যা গত হয়ে গেছে তা তাদের ক্ষমা করা হবে, আর যদি তারা ফিরে যায় তবে পূর্ববর্তীদের ঘটনাবলী ইতিপূর্বে ঘটে গেছে।
وَقَـٰتِلُوهُمۡ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتۡنَةࣱ وَیَكُونَ ٱلدِّینُ كُلُّهُۥ لِلَّهِۚ فَإِنِ ٱنتَهَوۡا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِمَا یَعۡمَلُونَ بَصِیرࣱ ﴿39﴾
আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তবে আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন।
আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে থাকবে যতক্ষণ উৎপীড়ন আর না থাকে, আর ধর্ম তো সামগ্রিকভাবে আল্লাহ্র জন্যেই হবে। অতএব যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তার দর্শক।
وَإِن تَوَلَّوۡا۟ فَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ مَوۡلَىٰكُمۡۚ نِعۡمَ ٱلۡمَوۡلَىٰ وَنِعۡمَ ٱلنَّصِیرُ ﴿40﴾
আর তারা যদি না মানে, তবে জেনে রাখ, আল্লাহ তোমাদের সমর্থক; এবং কতই না চমৎকার সাহায্যকারী।
কিন্তু যদি তারা ফিরে যায় তবে জেনে রেখো যে আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ তোমাদের অভিভাবক, -- কতো উত্তম অভিভাবক ও উত্তম সাহায্যকারী!
۞ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّمَا غَنِمۡتُم مِّن شَیۡءࣲ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُۥ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِی ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡیَتَـٰمَىٰ وَٱلۡمَسَـٰكِینِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِیلِ إِن كُنتُمۡ ءَامَنتُم بِٱللَّهِ وَمَاۤ أَنزَلۡنَا عَلَىٰ عَبۡدِنَا یَوۡمَ ٱلۡفُرۡقَانِ یَوۡمَ ٱلۡتَقَى ٱلۡجَمۡعَانِۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرٌ ﴿41﴾
আর এ কথাও জেনে রাখ যে, কোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবে, তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্য, রসূলের জন্য, তাঁর নিকটাত্নীয়-স্বজনের জন্য এবং এতীম-অসহায় ও মুসাফিরদের জন্য; যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে আল্লাহর উপর এবং সে বিষয়ের উপর যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি ফয়সালার দিনে, যেদিন সম্মুখীন হয়ে যায় উভয় সেনাদল। আর আল্লাহ সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল।
আর জেনে রেখো যা কিছু তোমরা যুদ্ধক্ষেত্রে লাভ করো তার পঞ্চমাংশ তাহলে আল্লাহ্র, জন্য যথা রসূলের জন্য, আর নিকটাত্মীয়ের জন্য, আর এতীমদের, মিসকিনদের, ও পথচারীদের জন্য, যদি তোমরা বিশ্বাস করো আল্লাহ্তে আর তাতে যা আমরা আমাদের বান্দার কাছে অবতারণ করেছি সেই ফুরকানের দিনে, যেদিন দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।
إِذۡ أَنتُم بِٱلۡعُدۡوَةِ ٱلدُّنۡیَا وَهُم بِٱلۡعُدۡوَةِ ٱلۡقُصۡوَىٰ وَٱلرَّكۡبُ أَسۡفَلَ مِنكُمۡۚ وَلَوۡ تَوَاعَدتُّمۡ لَٱخۡتَلَفۡتُمۡ فِی ٱلۡمِیعَـٰدِ وَلَـٰكِن لِّیَقۡضِیَ ٱللَّهُ أَمۡرࣰا كَانَ مَفۡعُولࣰا لِّیَهۡلِكَ مَنۡ هَلَكَ عَنۢ بَیِّنَةࣲ وَیَحۡیَىٰ مَنۡ حَیَّ عَنۢ بَیِّنَةࣲۗ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَسَمِیعٌ عَلِیمٌ ﴿42﴾
আর যখন তোমরা ছিলে সমরাঙ্গনের এ প্রান্তে আর তারা ছিল সে প্রান্তে অথচ কাফেলা তোমাদের থেকে নীচে নেমে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় যদি তোমরা পারস্পরিক অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে, তবে তোমরা এক সঙ্গে সে ওয়াদা পালন করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা এমন এক কাজ করতে চেয়েছিলেন, যা নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল যাতে সে সব লোক নিহত হওয়ার ছিল, প্রমাণ প্রতিষ্ঠার পর এবং যাদের বাঁচার ছিল, তারা বেঁচে থাকে প্রমাণ প্রতিষ্ঠার পর। আর নিশ্চিতই আল্লাহ শ্রবণকারী, বিজ্ঞ।
স্মরণ করো! তোমরা ছিলে উপত্যকার নিকট প্রান্তে আর তারা উপত্যকার দূর প্রান্তে, আর কাফেলা ছিল তোমাদের চেয়ে নিন্ম ভূমিতে। আর যদি তোমরা পরস্পরের মধ্যে কোনো বন্দোবস্ত করে থাকতে তবে এ সিদ্ধান্তে তোমরা মতভেদ করতে, কিন্তু -- যেন আল্লাহ্ ব্যাপার একটা ঘটাতে পারেন যেটা ঘটেই গেছে, যেন যার ধ্বংস হবার সে ধ্বংস হতে পারে স্পষ্ট প্রমাণের ফলে, আর যার বাঁচবার সে বাঁচতে পারে স্পষ্ট প্রমাণের ফলে। আর নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ অবশ্যই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।
إِذۡ یُرِیكَهُمُ ٱللَّهُ فِی مَنَامِكَ قَلِیلࣰاۖ وَلَوۡ أَرَىٰكَهُمۡ كَثِیرࣰا لَّفَشِلۡتُمۡ وَلَتَنَـٰزَعۡتُمۡ فِی ٱلۡأَمۡرِ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ سَلَّمَۚ إِنَّهُۥ عَلِیمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿43﴾
আল্লাহ যখন তোমাকে স্বপ্নে সেসব কাফেরের পরিমাণ অল্প করে দেখালেন; বেশী করে দেখালে তোমরা কাপুরুষতা অবলম্বন করতে এবং কাজের বেলায় বিপদ সৃষ্টি করতে। কিন্তু আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছেন। তিনি অতি উত্তমভাবেই জানেন; যা কিছু অন্তরে রয়েছে।
স্মরণ করো! আল্লাহ্ তোমার কাছে তাদের দেখিয়েছিলেন তোমার স্বরে মধ্যে অল্পসংখ্যক। আর তিনি যদি তোমার কাছে তাদের দেখাতেন বহুসংখ্যক তবে তোমরা অবশ্যই দুর্বল-চিত্ত হয়ে পড়তে এবং ব্যাপারটি সন্বন্ধে তোমরা তর্কবিতর্ক করতে, কিন্তু আল্লাহ্ রক্ষা করেছেন। নিঃসন্দেহ তিনি বিশেষভাবে অবহিত আছেন বুকের ভেতরে যা রয়েছে সে-সন্বন্ধে।
وَإِذۡ یُرِیكُمُوهُمۡ إِذِ ٱلۡتَقَیۡتُمۡ فِیۤ أَعۡیُنِكُمۡ قَلِیلࣰا وَیُقَلِّلُكُمۡ فِیۤ أَعۡیُنِهِمۡ لِیَقۡضِیَ ٱللَّهُ أَمۡرࣰا كَانَ مَفۡعُولࣰاۗ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ ﴿44﴾
আর যখন তোমাদেরকে দেখালেন সে সৈন্যদল মোকাবেলার সময় তোমাদের চোখে অল্প এবং তোমাদেরকে দেখালেন তাদের চোখে বেশী, যাতে আল্লাহ সে কাজ করে নিতে পারেন যা ছিল নির্ধারিত। আর সব কাজই আল্লাহর নিকট গিয়ে পৌছায়।
আর স্মরণ করো! তিনি তোমাদের কাছে তাদের দেখিয়ে-ছিলেন, যখন তোমরা মুখোমুখি হয়েছিলে, তোমাদের চোখে অল্পসংখ্যক, আর তিনি তোমাদের করেছিলেন স্বল্পসংখ্যক তাদের চোখে, এইজন্য যেন আল্লাহ্ ব্যাপার একটা ঘটাতে পারেন যা ঘটেই গেছে। আর আল্লাহ্র কাছেই সব ব্যাপার ফিরিয়ে আনা হয়।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِذَا لَقِیتُمۡ فِئَةࣰ فَٱثۡبُتُوا۟ وَٱذۡكُرُوا۟ ٱللَّهَ كَثِیرࣰا لَّعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿45﴾
হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হও, তখন সুদৃঢ় থাক এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর যাতে তোমরা উদ্দেশ্যে কৃতকার্য হতে পার।
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন কোনো সৈন্যদলের সম্মুখীন হও তখন দৃঢ়সংকল্প হবে, আর আল্লাহ্কে বেশী ক’রে স্মরণ করবে যেন তোমরা সফলকাম হও।
وَأَطِیعُوا۟ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَا تَنَـٰزَعُوا۟ فَتَفۡشَلُوا۟ وَتَذۡهَبَ رِیحُكُمۡۖ وَٱصۡبِرُوۤا۟ۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّـٰبِرِینَ ﴿46﴾
আর আল্লাহ তা’আলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে।
আর আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলকে মেনে চলো, আর বিবাদ করো না পাছে তোমরা দুর্বলচিত্ত হও, ও তোমাদের বায়ুপ্রবাহ চলে যাক, আর অধ্যবসায় অবলন্বন করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ অধ্যবসায়ীদের সাথে রয়েছেন।
وَلَا تَكُونُوا۟ كَٱلَّذِینَ خَرَجُوا۟ مِن دِیَـٰرِهِم بَطَرࣰا وَرِئَاۤءَ ٱلنَّاسِ وَیَصُدُّونَ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ بِمَا یَعۡمَلُونَ مُحِیطࣱ ﴿47﴾
আর তাদের মত হয়ে যেয়ো না, যারা বেরিয়েছে নিজেদের অবস্থান থেকে গর্বিতভাবে এবং লোকদেরকে দেখাবার উদ্দেশে। আর আল্লাহর পথে তারা বাধা দান করত। বস্তুতঃ আল্লাহর আয়ত্বে রয়েছে সে সমস্ত বিষয় যা তারা করে।
আর তোমরা তাদের মতো হয়ো না যারা তাদের ঘর থেকে বেরিয়েছিল গর্বভরে ও লোক দেখানোর জন্যে, আর বাধা দেয় আল্লাহ্র পথ থেকে। আর তারা যা করে আল্লাহ্ তা ঘিরে রয়েছেন।
وَإِذۡ زَیَّنَ لَهُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ أَعۡمَـٰلَهُمۡ وَقَالَ لَا غَالِبَ لَكُمُ ٱلۡیَوۡمَ مِنَ ٱلنَّاسِ وَإِنِّی جَارࣱ لَّكُمۡۖ فَلَمَّا تَرَاۤءَتِ ٱلۡفِئَتَانِ نَكَصَ عَلَىٰ عَقِبَیۡهِ وَقَالَ إِنِّی بَرِیۤءࣱ مِّنكُمۡ إِنِّیۤ أَرَىٰ مَا لَا تَرَوۡنَ إِنِّیۤ أَخَافُ ٱللَّهَۚ وَٱللَّهُ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿48﴾
আর যখন সুদৃশ্য করে দিল শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যকলাপকে এবং বলল যে, আজকের দিনে কোন মানুষই তোমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না আর আমি হলাম তোমাদের সমর্থক, অতঃপর যখন সামনাসামনী হল উভয় বাহিনী তখন সে অতি দ্রুত পায়ে পেছনে দিকে পালিয়ে গেল এবং বলল, আমি তোমাদের সাথে না-আমি দেখছি, যা তোমরা দেখছ না; আমি ভয় করি আল্লাহকে। আর আল্লাহর আযাব অত্যন্ত কঠিন।
আর স্মরণ করো! শয়তানটি তাদের কার্যাবলী তাদের কাছে চিত্তাকর্ষক করেছিল ও বলেছিল -- ''আজকের দিনে লোকদের মধ্যে কেউই তোমাদের উপরে বিজয়ী হতে পারবে না, আর নিঃসন্দেহ আমি তো রয়েছি তোমাদের সাহায্যকারী।’’ কিন্তু তারপর যখন দুই সৈন্যদলে দেখাদেখি হলো, সে তার গোড়ালির উপরে মোড় ফেরালো আর বললে -- ''আমি আলবৎ তোমাদের থেকে বিদায়, আমি নিঃসন্দেহ দেখতে পাচ্ছি যা তোমরা দেখছো না, আমি অবশ্যই আল্লাহ্কে ভয় করি, আর আল্লাহ্ প্রতিফল দানে অতি কঠোর।’’
إِذۡ یَقُولُ ٱلۡمُنَـٰفِقُونَ وَٱلَّذِینَ فِی قُلُوبِهِم مَّرَضٌ غَرَّ هَـٰۤؤُلَاۤءِ دِینُهُمۡۗ وَمَن یَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿49﴾
যখন মোনাফেকরা বলতে লাগল এবং যাদের অন্তর ব্যাধিগ্রস্ত, এরা নিজেদের ধর্মের উপর গর্বিত। বস্তুতঃ যারা ভরসা করে আল্লাহর উপর, সে নিশ্চিন্ত, কেননা আল্লাহ অতি পরাক্রমশীল, সুবিজ্ঞ।
স্মরণ করো! কপটরা আর যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তারা বলে -- ''তাদের ধর্মই তাদের বিভ্রান্ত করেছে।’’ বস্তুত যে কেউ আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করে, তবে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।
وَلَوۡ تَرَىٰۤ إِذۡ یَتَوَفَّى ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ یَضۡرِبُونَ وُجُوهَهُمۡ وَأَدۡبَـٰرَهُمۡ وَذُوقُوا۟ عَذَابَ ٱلۡحَرِیقِ ﴿50﴾
আর যদি তুমি দেখ, যখন ফেরেশতারা কাফেরদের জান কবজ করে; প্রহার করে, তাদের মুখে এবং তাদের পশ্চাদদেশে আর বলে, জ্বলন্ত আযাবের স্বাদ গ্রহণ কর।
আর তুমি যদি দেখতে পেতে যখন যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের প্রাণ হরণ করছে, ফিরিশ্তারা আঘাত করছে তাদের মুখে ও তাদের পিঠে, আর -- ''পোড়ার যন্ত্রণা আস্বাদ করো!’’
ذَ ٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتۡ أَیۡدِیكُمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَیۡسَ بِظَلَّـٰمࣲ لِّلۡعَبِیدِ ﴿51﴾
এই হলো সে সবের বিনিময় যা তোমরা তোমাদের পূর্বে পাঠিয়েছ নিজের হাতে। বস্তুতঃ এটি এ জন্য যে, আল্লাহ বান্দার উপর যুলুম করেন না।
''এ এ-জন্য যা তোমাদের হাত আগবাড়িয়ে দিয়েছিল, আর আল্লাহ্ কখনো বান্দাদের প্রতি অত্যাচারী নন।’’
كَدَأۡبِ ءَالِ فِرۡعَوۡنَ وَٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡۚ كَفَرُوا۟ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ فَأَخَذَهُمُ ٱللَّهُ بِذُنُوبِهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِیࣱّ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿52﴾
যেমন, রীতি রয়েছে ফেরাউনের অনুসারীদের এবং তাদের পূর্বে যারা ছিল তাদের ব্যাপারে যে, এরা আল্লাহর নির্দেশের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং সেজন্য আল্লাহ তা’আলা তাদের পাকড়াও করেছেন তাদেরই পাপের দরুন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশক্তিশালী, কঠিন শাস্তিদাতা।
ফিরআউনের সাঙ্গপাঙ্গদের অবস্থায় ন্যায় আর যারা তাদের পূর্ববর্তী ছিল। তারা আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছিল, তাই আল্লাহ্ তাদের পাকড়াও করলেন তাদের পাপের দরুন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ অসীম ক্ষমতাশালী, প্রতিফল দানে অতি কঠোর।
ذَ ٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ لَمۡ یَكُ مُغَیِّرࣰا نِّعۡمَةً أَنۡعَمَهَا عَلَىٰ قَوۡمٍ حَتَّىٰ یُغَیِّرُوا۟ مَا بِأَنفُسِهِمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ سَمِیعٌ عَلِیمࣱ ﴿53﴾
তার কারণ এই যে, আল্লাহ কখনও পরিবর্তন করেন না, সে সব নেয়ামত, যা তিনি কোন জাতিকে দান করেছিলেন, যতক্ষণ না সে জাতি নিজেই পরিবর্তিত করে দেয় নিজের জন্য নির্ধারিত বিষয়। বস্তুতঃ আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।
এ এজন্য যে আল্লাহ্ অনুগ্রহ পরিবর্তনকারী হোন না যা কোনো জাতির প্রতি তিনি অর্পণ করেছেন, যতক্ষণ না তারা নিজেরা সে- সব বদলিয়ে ফেলে। আর আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।
كَدَأۡبِ ءَالِ فِرۡعَوۡنَ وَٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡۚ كَذَّبُوا۟ بِـَٔایَـٰتِ رَبِّهِمۡ فَأَهۡلَكۡنَـٰهُم بِذُنُوبِهِمۡ وَأَغۡرَقۡنَاۤ ءَالَ فِرۡعَوۡنَۚ وَكُلࣱّ كَانُوا۟ ظَـٰلِمِینَ ﴿54﴾
যেমন ছিল রীতি ফেরাউনের বংশধর এবং যারা তাদের পূর্বে ছিল, তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল স্বীয় পালনকর্তার নিদর্শনসমূহকে। অতঃপর আমি তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি তাদের পাপের দরুন এবং ডুবিয়ে মেরেছি ফেরাউনের বংশধরদেরকে। বস্তুতঃ এরা সবাই ছিল যালেম।
ফিরআউনের গোষ্ঠীর অবস্থার ন্যায় আর যারা তাদের পূর্ববর্তী ছিল। তারা তাদের প্রভুর বাণীসমূহে মিথ্যারোপ করেছিল, কাজেই তাদের পাপের দরুন আমরা তাদের ধ্বংস করেছিলাম আর ফিরআউনের সাঙ্গোপাঙ্গদের আমরা ডুবিয়ে দিয়েছিলাম, আর তারা সবাই ছিল অত্যাচারী।
إِنَّ شَرَّ ٱلدَّوَاۤبِّ عِندَ ٱللَّهِ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ فَهُمۡ لَا یُؤۡمِنُونَ ﴿55﴾
সমস্ত জীবের মাঝে আল্লাহর নিকট তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যারা অস্বীকারকারী হয়েছে অতঃপর আর ঈমান আনেনি।
নিঃসন্দেহ আল্লাহ্র কাছে নিকৃষ্টতম জীব হচ্ছে তারা যারা অবিশ্বাস পোষণ করে, কাজেই তারা ঈমান আনে না ।
ٱلَّذِینَ عَـٰهَدتَّ مِنۡهُمۡ ثُمَّ یَنقُضُونَ عَهۡدَهُمۡ فِی كُلِّ مَرَّةࣲ وَهُمۡ لَا یَتَّقُونَ ﴿56﴾
যাদের সাথে তুমি চুক্তি করেছ তাদের মধ্য থেকে অতঃপর প্রতিবার তারা নিজেদের কৃতচুক্তি লংঘন করে এবং ভয় করে না।
ওদের মধ্যে যাদের সঙ্গে তুমি চুক্তি সম্পাদন করো, -- তারপর তারা তাদের চুক্তি প্রত্যেক বারেই ভঙ্গ করে, আর তারা ভয়ভক্তি করে না।
فَإِمَّا تَثۡقَفَنَّهُمۡ فِی ٱلۡحَرۡبِ فَشَرِّدۡ بِهِم مَّنۡ خَلۡفَهُمۡ لَعَلَّهُمۡ یَذَّكَّرُونَ ﴿57﴾
সুতরাং যদি কখনো তুমি তাদেরকে যুদ্ধে পেয়ে যাও, তবে তাদের এমন শাস্তি দাও, যেন তাদের উত্তরসূরিরা তাই দেখে পালিয়ে যায়; তাদেরও যেন শিক্ষা হয়।
সুতরাং যুদ্ধের মধ্যে যদি তাদের করায়ত্ত করো তবে তাদের দ্বারা যারা তাদের পশ্চাদনুসরণ করে তাদের বিধবস্ত করো, যেন তারা সতর্কতা অবলন্বন করে।
وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِن قَوۡمٍ خِیَانَةࣰ فَٱنۢبِذۡ إِلَیۡهِمۡ عَلَىٰ سَوَاۤءٍۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ ٱلۡخَاۤىِٕنِینَ ﴿58﴾
তবে কোন সম্প্রদায়ের ধোঁকা দেয়ার ব্যাপারে যদি তোমাদের ভয় থাকে, তবে তাদের চুক্তি তাদের দিকেই ছুঁড়ে ফেলে দাও এমনভাবে যেন হয়ে যাও তোমরাও তারা সমান। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধোকাবাজ, প্রতারককে পছন্দ করেন না।
আর যদি তুমি কোনো দল থেকে বিশ্বাসঘাতকতার আশঙ্কা করো, তবে ছোঁড়ে দাও তাদের দিকে সমান-সমানভাবে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ বিশ্বাসঘাতকদের ভালোবাসেন না।
وَلَا یَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ سَبَقُوۤا۟ۚ إِنَّهُمۡ لَا یُعۡجِزُونَ ﴿59﴾
আর কাফেররা যেন একা যা মনে না করে যে, তারা বেঁচে গেছে; কখনও এরা আমাকে পরিশ্রান্ত করতে পারবে না।
আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা যেন না ভাবে যে তারা ডিঙিয়ে যেতে পারবে। নিঃসন্দেহ তারা পরিত্রাণ পাবে না।
وَأَعِدُّوا۟ لَهُم مَّا ٱسۡتَطَعۡتُم مِّن قُوَّةࣲ وَمِن رِّبَاطِ ٱلۡخَیۡلِ تُرۡهِبُونَ بِهِۦ عَدُوَّ ٱللَّهِ وَعَدُوَّكُمۡ وَءَاخَرِینَ مِن دُونِهِمۡ لَا تَعۡلَمُونَهُمُ ٱللَّهُ یَعۡلَمُهُمۡۚ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِن شَیۡءࣲ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ یُوَفَّ إِلَیۡكُمۡ وَأَنتُمۡ لَا تُظۡلَمُونَ ﴿60﴾
আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন প্রভাব পড়ে আল্লাহর শুত্রুদের উপর এবং তোমাদের শত্রুদের উপর আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপর ও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।
আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুত রাখবে যা-কিছুতে তোমরা সমর্থ হও -- শৌর্য-বীর্যে ও হৃস্পুষ্ট ঘোড়াগুলোয়, -- তার দ্বারা ভীত-সন্ত্রস্ত রাখবে আল্লাহ্র শত্রুদের তথা তোমাদের শত্রুদের, আর তাদের ছাড়া অন্যদেরও, তাদের তোমরা জানো না, আল্লাহ্ তাদের জানেন। আর যা-কিছু তোমরা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করবে তা তোমাদের পুরোপুরি প্রতিদান দেওয়া হবে, আর তোমরা অত্যাচারিত হবে না।
۞ وَإِن جَنَحُوا۟ لِلسَّلۡمِ فَٱجۡنَحۡ لَهَا وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِیعُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿61﴾
আর যদি তারা সন্ধি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে, তাহলে তুমিও সে দিকেই আগ্রহী হও এবং আল্লাহর উপর ভরসা কর। নিঃসন্দেহে তিনি শ্রবণকারী; পরিজ্ঞাত।
আর যদি তারা শান্তির দিকে ঝোঁকে তবে তুমিও এর দিকে ঝুকঁবে, আর আল্লাহ্র প্রতি নির্ভর করো। নিঃসন্দেহ তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।
وَإِن یُرِیدُوۤا۟ أَن یَخۡدَعُوكَ فَإِنَّ حَسۡبَكَ ٱللَّهُۚ هُوَ ٱلَّذِیۤ أَیَّدَكَ بِنَصۡرِهِۦ وَبِٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿62﴾
পক্ষান্তরে তারা যদি তোমাকে প্রতারণা করতে চায়, তবে তোমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনিই তোমাকে শক্তি যুগিয়েছেন স্বীয় সাহায্যে ও মুসলমানদের মাধ্যমে।
আর যদি তারা চায় যে তারা তোমাকে ফাঁকি দেবে, তবে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তোমার জন্য যথেষ্ট। তিনিই সেই জন যিনি তোমাকে বলীয়ান করেন তাঁর সহায়তার দ্বারা আর মুমিনদের দ্বারা।
وَأَلَّفَ بَیۡنَ قُلُوبِهِمۡۚ لَوۡ أَنفَقۡتَ مَا فِی ٱلۡأَرۡضِ جَمِیعࣰا مَّاۤ أَلَّفۡتَ بَیۡنَ قُلُوبِهِمۡ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ أَلَّفَ بَیۡنَهُمۡۚ إِنَّهُۥ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿63﴾
আর প্রীতি সঞ্চার করেছেন তাদের অন্তরে। যদি তুমি সেসব কিছু ব্যয় করে ফেলতে, যা কিছু যমীনের বুকে রয়েছে, তাদের মনে প্রীতি সঞ্চার করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মনে প্রীতি সঞ্চার করেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি পরাক্রমশালী, সুকৌশলী।
আর তাদের হৃদয়ের মধ্যে তিনি প্রীতি স্থাপন করেছেন। তুমি যদি পৃথিবীতে যা আছে তার সবটাই খরচ করতে তবু তুমি তাদের হৃদয়ের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপন করতে পারতে না, কিন্তু আল্লাহ্ তাদের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করেছেন। নিঃসন্দেহ তিনি মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ حَسۡبُكَ ٱللَّهُ وَمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿64﴾
হে নবী, আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট।
হে প্রিয় নবী! আল্লাহ্ই তোমার জন্য আর সেইসব মুমিনদের জন্য যথেষ্ট যারা তোমার অনুসরণ করে।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ حَرِّضِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ عَلَى ٱلۡقِتَالِۚ إِن یَكُن مِّنكُمۡ عِشۡرُونَ صَـٰبِرُونَ یَغۡلِبُوا۟ مِا۟ئَتَیۡنِۚ وَإِن یَكُن مِّنكُم مِّا۟ئَةࣱ یَغۡلِبُوۤا۟ أَلۡفࣰا مِّنَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمࣱ لَّا یَفۡقَهُونَ ﴿65﴾
হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোক, তবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন।
হে প্রিয় নবী! মুমিনদের যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করো। যদি তোমাদের মধ্যে কুড়িজন ধৈর্যশীল থাকে তবে তারা দু’শ জনকে পরাজিত করবে, আর যদি তোমাদের মধ্যে একশত জন থাকে তবে তারা পরাজিত করবে যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের একহাজার জনকে, যেহেতু তারা হচ্ছে একটি সম্প্রদায় যারা বোঝে না।
ٱلۡـَٔـٰنَ خَفَّفَ ٱللَّهُ عَنكُمۡ وَعَلِمَ أَنَّ فِیكُمۡ ضَعۡفࣰاۚ فَإِن یَكُن مِّنكُم مِّا۟ئَةࣱ صَابِرَةࣱ یَغۡلِبُوا۟ مِا۟ئَتَیۡنِۚ وَإِن یَكُن مِّنكُمۡ أَلۡفࣱ یَغۡلِبُوۤا۟ أَلۡفَیۡنِ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ مَعَ ٱلصَّـٰبِرِینَ ﴿66﴾
এখন বোঝা হালকা করে দিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর এবং তিনি জেনে নিয়েছেন যে, তোমাদের মধ্য দূর্বলতা রয়েছে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যদি দৃঢ়চিত্ত একশ লোক বিদ্যমান থাকে, তবে জয়ী হবে দু’শর উপর। আর যদি তোমরা এক হাজার হও তবে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী জয়ী হবে দু’হাজারের উপর আর আল্লাহ রয়েছেন দৃঢ়চিত্ত লোকদের সাথে।
এখনকার সময়ে আল্লাহ্ তোমাদের বোঝা হাল্কা করেছেন, কেননা তিনি জানেন যে তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। সেজন্য যদি তোমাদের মধ্যে একশত জন ধৈর্যশীল থাকে তবে তারা দু’শ জনকে পরাজিত করবে, আর যদি তোমাদের মধ্যে একহাজার জন থাকে তবে তারা আল্লাহ্র অনুমতিক্রমে দুইহাজারকে পরাজিত করবে। আর আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
مَا كَانَ لِنَبِیٍّ أَن یَكُونَ لَهُۥۤ أَسۡرَىٰ حَتَّىٰ یُثۡخِنَ فِی ٱلۡأَرۡضِۚ تُرِیدُونَ عَرَضَ ٱلدُّنۡیَا وَٱللَّهُ یُرِیدُ ٱلۡـَٔاخِرَةَۗ وَٱللَّهُ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿67﴾
নবীর পক্ষে উচিত নয় বন্দীদিগকে নিজের কাছে রাখা, যতক্ষণ না দেশময় প্রচুর রক্তপাত ঘটাবে। তোমরা পার্থিব সম্পদ কামনা কর, অথচ আল্লাহ চান আখেরাত। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা।
একজন নবীর জন্য সংগত নয় যে তাঁর জন্য বন্দীদের রাখা হোক যে পর্যন্ত না তিনি দেশে জয়লাভ করেছেন। তোমরা চাও পার্থিব সম্পদ, অথচ আল্লাহ্ চান পরলোক। আর আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।
لَّوۡلَا كِتَـٰبࣱ مِّنَ ٱللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمۡ فِیمَاۤ أَخَذۡتُمۡ عَذَابٌ عَظِیمࣱ ﴿68﴾
যদি একটি বিষয় না হত যা পূর্ব থেকেই আল্লাহ লিখে রেখেছেন, তাহলে তোমরা যা গ্রহণ করছ সেজন্য বিরাট আযাব এসে পৌছাত।
যদি আল্লাহ্র তরফ থেকে বিধান না থাকতো যা পূর্বেই উল্লেখ হয়েছে, তবে তোমরা যা গ্রহণ করতে যাচ্ছিলে সেজন্য তোমাদের উপরে পড়তো এক বিরাট শাস্তি।
فَكُلُوا۟ مِمَّا غَنِمۡتُمۡ حَلَـٰلࣰا طَیِّبࣰاۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿69﴾
সুতরাং তোমরা খাও গনীমত হিসাবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন ও হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান।
অতএব ভোগ করো যে-সব বৈধ ও পবিত্র দ্রব্য তোমরা যুদ্ধক্ষেত্রে সংগ্রহ করেছ, আর আল্লাহ্কে ভয়ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ قُل لِّمَن فِیۤ أَیۡدِیكُم مِّنَ ٱلۡأَسۡرَىٰۤ إِن یَعۡلَمِ ٱللَّهُ فِی قُلُوبِكُمۡ خَیۡرࣰا یُؤۡتِكُمۡ خَیۡرࣰا مِّمَّاۤ أُخِذَ مِنكُمۡ وَیَغۡفِرۡ لَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿70﴾
হে নবী, তাদেরকে বলে দাও, যারা তোমার হাতে বন্দী হয়ে আছে যে, আল্লাহ যদি তোমাদের অন্তরে কোন রকম মঙ্গলচিন্তা রয়েছে বলে জানেন, তবে তোমাদেরকে তার চেয়ে বহুগুণ বেশী দান করবেন যা তোমাদের কাছ থেকে বিনিময়ে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া তোমাদেরকে তিনি ক্ষমা করে দিবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
হে প্রিয় নবী! তোমাদের হাতে বন্দীদের যারা আছে তাদের বলো -- ''আল্লাহ্ যদি তোমাদের হৃদয়ে ভালো কিছু জানতে পারেন তবে তিনি তোমাদের দান করবেন আরো ভালো কিছু যা তোমাদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে তা থেকেও, আর তিনি তোমাদের পরিত্রাণ করবেন। আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।’’
وَإِن یُرِیدُوا۟ خِیَانَتَكَ فَقَدۡ خَانُوا۟ ٱللَّهَ مِن قَبۡلُ فَأَمۡكَنَ مِنۡهُمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمٌ ﴿71﴾
আর যদি তারা তোমার সাথে প্রতারণা করতে চায়-বস্তুতঃ তারা আল্লাহর সাথেও ইতিপূর্বে প্রতারণা করেছে, অতঃপর তিনি তাদেরকে ধরিয়ে দিয়েছেন। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে পরিজ্ঞাত, সুকৌশলী।
কিন্তু যদি তারা চায় তোমার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করতে, তবে এর আগেও তারা অবশ্যই আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসভঙ্গ করেছে, সুতরাং তিনি কর্তৃত্ব দিলেন তাদের অনেকের উপরে। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।
إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَهَاجَرُوا۟ وَجَـٰهَدُوا۟ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَٱلَّذِینَ ءَاوَوا۟ وَّنَصَرُوۤا۟ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِیَاۤءُ بَعۡضࣲۚ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَلَمۡ یُهَاجِرُوا۟ مَا لَكُم مِّن وَلَـٰیَتِهِم مِّن شَیۡءٍ حَتَّىٰ یُهَاجِرُوا۟ۚ وَإِنِ ٱسۡتَنصَرُوكُمۡ فِی ٱلدِّینِ فَعَلَیۡكُمُ ٱلنَّصۡرُ إِلَّا عَلَىٰ قَوۡمِۭ بَیۡنَكُمۡ وَبَیۡنَهُم مِّیثَـٰقࣱۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِیرࣱ ﴿72﴾
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, যারা ঈমান এনেছে, দেশ ত্যাগ করেছে, স্বীয় জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় ও সাহায্য সহায়তা দিয়েছে, তারা একে অপরের সহায়ক। আর যারা ঈমান এনেছে কিন্তু দেশ ত্যাগ করেনি তাদের বন্ধুত্বে তোমাদের প্রয়োজন নেই যতক্ষণ না তারা দেশত্যাগ করে। অবশ্য যদি তারা ধর্মীয় ব্যাপারে তোমাদের সহায়তা কামনা করে, তবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য। কিন্তু তোমাদের সাথে যাদের সহযোগী চুক্তি বিদ্যমান রয়েছে, তাদের মোকাবেলায় নয়। বস্তুতঃ তোমরা যা কিছু কর, আল্লাহ সেসবই দেখেন।
নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে, আর তাদের ধনদৌলত ও তাদের জান-প্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করেছে, আর যারা আশ্রয় দান করেছে ও সাহায্য করেছে, -- এরাই হচ্ছে পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর যারা ঈমান এনেছে, অথচ হিজরত করে নি, তাদের অভিভাবকত্ব কোনোভাবেই তোমাদের দায়িত্ব নয় যে পর্যন্ত না তারাও হিজরত করে। কিন্তু যদি তারা তোমাদের কাছে ধর্মের ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনা করে তবে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, অবশ্য সে-সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ছাড়া যাদের মধ্যে চুক্তি রয়েছে। আর তোমরা যা করো আল্লাহ্ তার সম্যক দ্রষ্টা।
وَٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِیَاۤءُ بَعۡضٍۚ إِلَّا تَفۡعَلُوهُ تَكُن فِتۡنَةࣱ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَفَسَادࣱ كَبِیرࣱ ﴿73﴾
আর যারা কাফের তারা পারস্পরিক সহযোগী, বন্ধু। তোমরা যদি এমন ব্যবস্থা না কর, তবে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বিস্তার লাভ করবে এবং দেশময় বড়ই অকল্যাণ হবে।
আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে -- তাদের কেউ কেউ অপরদের বন্ধু। যদি তোমরা এ না করো তবে দেশে অনাচার ও বিরাট- বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।
وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَهَاجَرُوا۟ وَجَـٰهَدُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَٱلَّذِینَ ءَاوَوا۟ وَّنَصَرُوۤا۟ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ حَقࣰّاۚ لَّهُم مَّغۡفِرَةࣱ وَرِزۡقࣱ كَرِیمࣱ ﴿74﴾
আর যারা ঈমান এনেছে, নিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে, সাহায্য-সহায়তা করেছে, তাঁরা হলো সত্যিকার মুসলমান। তাঁদের জন্যে রয়েছে, ক্ষমা ও সম্মানজনক রুযী।
আর যারা ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে ও আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে, আর যারা আশ্রয় দিয়েছে ও সাহায্য করেছে, -- এরা নিজেরাই হচ্ছে প্রকৃত মুমিন। এদের জন্যেই রয়েছে পরিত্রাণ ও মহৎ জীবিকা।
وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مِنۢ بَعۡدُ وَهَاجَرُوا۟ وَجَـٰهَدُوا۟ مَعَكُمۡ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ مِنكُمۡۚ وَأُو۟لُوا۟ ٱلۡأَرۡحَامِ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلَىٰ بِبَعۡضࣲ فِی كِتَـٰبِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمُۢ ﴿75﴾
আর যারা ঈমান এনেছে পরবর্তী পর্যায়ে এবং ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং তোমাদের সাথে সম্মিলিত হয়ে জেহাদ করেছে, তারাও তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত। বস্তুতঃ যারা আত্নীয়, আল্লাহর বিধান মতে তারা পরস্পর বেশী হকদার। নিশ্চয়ই আল্লাহ যাবতীয় বিষয়ে সক্ষম ও অবগত।
আর যারা পরে ঈমান এনেছে এবং গৃহত্যাগ করেছে ও তোমাদের সঙ্গে থেকে সংগ্রাম করেছে, তারাও তোমাদের মধ্যেকার। আর রক্তসম্পর্কের লোকেরা -- তারা আল্লাহ্র বিধানে পরস্পর পরস্পরের অধিকতর নিকটাত্মীয়। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞাতা।