Main pages

Surah Abraham [Ibrahim] in Bengali

Surah Abraham [Ibrahim] Ayah 52 Location Makkah Number 14

الۤرۚ كِتَـٰبٌ أَنزَلۡنَـٰهُ إِلَیۡكَ لِتُخۡرِجَ ٱلنَّاسَ مِنَ ٱلظُّلُمَـٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ بِإِذۡنِ رَبِّهِمۡ إِلَىٰ صِرَ ٰ⁠طِ ٱلۡعَزِیزِ ٱلۡحَمِیدِ ﴿1﴾

আলিফ, লাম, রা। একখানা গ্রন্থ, আমরা তোমার কাছে এ অবতারণ করেছি যেন তুমি মানবগোষ্ঠিকে তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে আলোকে বের করে আনতে পারো, -- মহাশক্তিশালী পরম প্রশংসার্হের পথে,

ٱللَّهِ ٱلَّذِی لَهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ وَوَیۡلࣱ لِّلۡكَـٰفِرِینَ مِنۡ عَذَابࣲ شَدِیدٍ ﴿2﴾

সেই আল্লাহ্‌, -- মহাকাশমন্ডলীতে যা-কিছু আছে আর যা-কিছু আছে পৃথিবীতে সে-সবটাই তাঁর। আর কি দুর্ভোগ অবিশ্বাসীদের জন্য কঠিন শাস্তির কারণে! --

ٱلَّذِینَ یَسۡتَحِبُّونَ ٱلۡحَیَوٰةَ ٱلدُّنۡیَا عَلَى ٱلۡـَٔاخِرَةِ وَیَصُدُّونَ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِ وَیَبۡغُونَهَا عِوَجًاۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ فِی ضَلَـٰلِۭ بَعِیدࣲ ﴿3﴾

যারা পরকালের উপরি এই দুনিয়ার জীবনটাকেই বেশী ভালোবাসে, আর আল্লাহ্‌র পথ থেকে নিবৃত্ত করে, আর একে করতে চায় কুটিল। এরাই রয়েছে সুদূর-প্রসারিত ভ্রান্তিতে।

وَمَاۤ أَرۡسَلۡنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوۡمِهِۦ لِیُبَیِّنَ لَهُمۡۖ فَیُضِلُّ ٱللَّهُ مَن یَشَاۤءُ وَیَهۡدِی مَن یَشَاۤءُۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿4﴾

আর আমরা এমন কোনো রসূলকে পাঠাইনি তাঁর স্বজাতির ভাষা ব্যতীত, যেন তাদের জন্য তিনি সুস্পষ্ট করতে পারেন। তারপর আল্লাহ্ পথভ্রষ্ট হতে দেন যাকে তিনি ইচ্ছে করেন, আর যাকে ইচ্ছে করেন সৎপথে চালান। আর তিনিই তো মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

وَلَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا مُوسَىٰ بِـَٔایَـٰتِنَاۤ أَنۡ أَخۡرِجۡ قَوۡمَكَ مِنَ ٱلظُّلُمَـٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ وَذَكِّرۡهُم بِأَیَّىٰمِ ٱللَّهِۚ إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَـٰتࣲ لِّكُلِّ صَبَّارࣲ شَكُورࣲ ﴿5﴾

আর আমরা নিশ্চয়ই মূসাকে আমাদের নির্দেশাবলী দিয়ে পাঠিয়েছিলাম এই ব’লে -- ''তোমার সম্প্রদায়কে অন্ধকার থেকে আলোকে বের করে আনো, আর তাদের স্মরণ করিয়ে দাও আল্লাহ্‌র দিনগুলোর কথা।’’ নিঃসন্দেহ এতে নিদর্শন রয়েছে প্রত্যেক অধ্যবসায়ী কৃতজ্ঞদের জন্য।

وَإِذۡ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوۡمِهِ ٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَةَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ إِذۡ أَنجَىٰكُم مِّنۡ ءَالِ فِرۡعَوۡنَ یَسُومُونَكُمۡ سُوۤءَ ٱلۡعَذَابِ وَیُذَبِّحُونَ أَبۡنَاۤءَكُمۡ وَیَسۡتَحۡیُونَ نِسَاۤءَكُمۡۚ وَفِی ذَ ٰ⁠لِكُم بَلَاۤءࣱ مِّن رَّبِّكُمۡ عَظِیمࣱ ﴿6﴾

আর স্মরণ করো! মূসা তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন -- ''তোমাদের প্রতি আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ স্মরণ করো -- যখন তিনি তোমাদের উদ্ধার করেছিলেন ফিরআউনের লোকদের কবল থেকে, যারা তোমাদের পীড়ন করতো কঠোর নিপীড়নে, আর হত্যা করতো তোমাদের পুত্রসন্তানদের ও বাঁচতে দিত তোমাদের নারীদের। আর তোমাদের জন্য এতে তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে ছিল এক কঠোর সংকট।

وَإِذۡ تَأَذَّنَ رَبُّكُمۡ لَىِٕن شَكَرۡتُمۡ لَأَزِیدَنَّكُمۡۖ وَلَىِٕن كَفَرۡتُمۡ إِنَّ عَذَابِی لَشَدِیدࣱ ﴿7﴾

আর স্মরণ করো! তোমাদের প্রভু ঘোষণা করলেন -- ''তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, কিন্তু তোমরা যদি অকৃতজ্ঞ হও তাহলে আমার শাস্তি নিশ্চয়ই সুকঠোর।

وَقَالَ مُوسَىٰۤ إِن تَكۡفُرُوۤا۟ أَنتُمۡ وَمَن فِی ٱلۡأَرۡضِ جَمِیعࣰا فَإِنَّ ٱللَّهَ لَغَنِیٌّ حَمِیدٌ ﴿8﴾

আর মূসা বলেছিলেন -- ''তোমরা যদি অকৃতজ্ঞ হও, তোমরা আর পৃথিবীতে যারা আছে সবাই, তাহলে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তো অতি ধনবান, পরম প্রশংসার্হ।’’

أَلَمۡ یَأۡتِكُمۡ نَبَؤُا۟ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُمۡ قَوۡمِ نُوحࣲ وَعَادࣲ وَثَمُودَ وَٱلَّذِینَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ لَا یَعۡلَمُهُمۡ إِلَّا ٱللَّهُۚ جَاۤءَتۡهُمۡ رُسُلُهُم بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ فَرَدُّوۤا۟ أَیۡدِیَهُمۡ فِیۤ أَفۡوَ ٰ⁠هِهِمۡ وَقَالُوۤا۟ إِنَّا كَفَرۡنَا بِمَاۤ أُرۡسِلۡتُم بِهِۦ وَإِنَّا لَفِی شَكࣲّ مِّمَّا تَدۡعُونَنَاۤ إِلَیۡهِ مُرِیبࣲ ﴿9﴾

তোমাদের নিকট কি পৌঁছেনি তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তাদের ইতিহাস -- নূহ্ ও 'আদ ও ছামূদের সম্প্রদায়ের আর যারা ওদের পরে ছিল? আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কেউ তাদের জানে না। তাদের রসূলগণ তাদের কাছে এসেছিলেন স্পষ্ট প্রমাণাবলী নিয়ে, কিন্তু তারা তাদের হাত দিয়েছিল তাদের মুখের ভেতরে, আর তারা বলেছিল, ''আমরা অবশ্যই অবিশ্বাস করি যা নিয়ে তোমরা প্রেরিত হয়েছ, আর আমরা তো নিশ্চয়ই সন্দেহের মধ্যে রয়েছি যার দিকে তোমরা আমাদের ডাকছ সে-সন্বন্ধে, কিংকর্তব্যবিমূঢ়।’’

۞ قَالَتۡ رُسُلُهُمۡ أَفِی ٱللَّهِ شَكࣱّ فَاطِرِ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِۖ یَدۡعُوكُمۡ لِیَغۡفِرَ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمۡ وَیُؤَخِّرَكُمۡ إِلَىٰۤ أَجَلࣲ مُّسَمࣰّىۚ قَالُوۤا۟ إِنۡ أَنتُمۡ إِلَّا بَشَرࣱ مِّثۡلُنَا تُرِیدُونَ أَن تَصُدُّونَا عَمَّا كَانَ یَعۡبُدُ ءَابَاۤؤُنَا فَأۡتُونَا بِسُلۡطَـٰنࣲ مُّبِینࣲ ﴿10﴾

তাদের রসূলগণ বলেছিলেন, ''আল্লাহ্ সন্বন্ধে কি কোনো সন্দেহ আছে, -- মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদি স্রষ্টা? তিনি তোমাদের আহ্বান করছেন তোমাদের দোষত্রুটি থেকে তোমাদের পরিত্রাণ করতে, আর এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত তোমাদের অব্যাহতি দিতে।’’ তারা বললে, ''তোমরা তো আমাদের ন্যায় মানুষ বই নও। তোমরা চাচ্ছ আমাদের বিরত রাখতে আমাদের পিতৃপুরুষরা যার উপাসনা করত তা থেকে! অতএব তোমরা আমাদের কাছে কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে এসো।’’

قَالَتۡ لَهُمۡ رُسُلُهُمۡ إِن نَّحۡنُ إِلَّا بَشَرࣱ مِّثۡلُكُمۡ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ یَمُنُّ عَلَىٰ مَن یَشَاۤءُ مِنۡ عِبَادِهِۦۖ وَمَا كَانَ لَنَاۤ أَن نَّأۡتِیَكُم بِسُلۡطَـٰنٍ إِلَّا بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿11﴾

তাদের রসূলগণ তাদের বলেছিলেন, ''সত্য বটে আমরা তোমাদের মতো মানুষ বই তো নই, কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্যে থেকে যাকে ইচ্ছে করেন তার প্রতি অনুগ্রহ বর্ষণ করেন। আর আমাদের জন্য এটি নয় যে আল্লাহ্‌র অনুমতি ব্যতীত তোমাদের কাছে কোনো প্রমাণ নিয়ে আসব। অতএব আল্লাহ্‌র উপরেই তবে মুমিনরা নির্ভর করুক।

وَمَا لَنَاۤ أَلَّا نَتَوَكَّلَ عَلَى ٱللَّهِ وَقَدۡ هَدَىٰنَا سُبُلَنَاۚ وَلَنَصۡبِرَنَّ عَلَىٰ مَاۤ ءَاذَیۡتُمُونَاۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُتَوَكِّلُونَ ﴿12﴾

''আর আমাদের কি কারণ থাকতে পারে যে আমরা আল্লাহ্‌র উপরে নির্ভর করব না, অথচ তিনিই তো আমাদের চালিত করেছেন আমাদের পথে? আর আমরা নিশ্চয়ই অধ্যবসায় অবলন্বন করব তোমরা আমাদের যা ক্লেশ দিচ্ছ তা সত্ত্বেও। আর আল্লাহ্‌র উপরেই তবে নির্ভর করুক নির্ভরকারীরা।’’

وَقَالَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لِرُسُلِهِمۡ لَنُخۡرِجَنَّكُم مِّنۡ أَرۡضِنَاۤ أَوۡ لَتَعُودُنَّ فِی مِلَّتِنَاۖ فَأَوۡحَىٰۤ إِلَیۡهِمۡ رَبُّهُمۡ لَنُهۡلِكَنَّ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿13﴾

আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা তাদের রসূলগণকে বলেছিল -- ''আমাদের দেশ থেকে আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের বের করে দেবো, অথবা আমাদের ধর্মমতে তোমাদের ফিরে আসতেই হবে।’’ তখন তাঁদের প্রভু তাঁদের কাছে প্রত্যাদেশ দিয়েছিলেন -- ''আমরা নিশ্চয়ই অন্যায়কারীদের বিধ্বস্ত করব,

وَلَنُسۡكِنَنَّكُمُ ٱلۡأَرۡضَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡۚ ذَ ٰ⁠لِكَ لِمَنۡ خَافَ مَقَامِی وَخَافَ وَعِیدِ ﴿14﴾

''আর তাদের পরে আমরা দেশে অবশ্যই তোমাদের প্রতিষ্ঠিত করব। এটি তার জন্য যে ভয় করে আমার সামনে দাঁড়াতে, এবং ভয় করে আমার শাস্তির।’’

وَٱسۡتَفۡتَحُوا۟ وَخَابَ كُلُّ جَبَّارٍ عَنِیدࣲ ﴿15﴾

আর তারা বিজয়কামনা করেছিল, আর প্রত্যেক দুরাচারী বিরুদ্ধাচারী ব্যর্থ মনোরথ হল।

مِّن وَرَاۤىِٕهِۦ جَهَنَّمُ وَیُسۡقَىٰ مِن مَّاۤءࣲ صَدِیدࣲ ﴿16﴾

তার সামনে রয়েছে জাহান্নাম, আর তাকে পান করানো হবে নোংরা-পচা জল।

یَتَجَرَّعُهُۥ وَلَا یَكَادُ یُسِیغُهُۥ وَیَأۡتِیهِ ٱلۡمَوۡتُ مِن كُلِّ مَكَانࣲ وَمَا هُوَ بِمَیِّتࣲۖ وَمِن وَرَاۤىِٕهِۦ عَذَابٌ غَلِیظࣱ ﴿17﴾

সে তা চুমুক দিয়ে পান করবে, আর সে তা সহজে গলাধঃকরণ করতে পারবে না, আর মরণ যন্ত্রণা তার কাছে আসবে সব দিক থেকে, কিন্তু সে মরবে না। আর তার সামনে রয়েছে কড়া শাস্তি।

مَّثَلُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ بِرَبِّهِمۡۖ أَعۡمَـٰلُهُمۡ كَرَمَادٍ ٱشۡتَدَّتۡ بِهِ ٱلرِّیحُ فِی یَوۡمٍ عَاصِفࣲۖ لَّا یَقۡدِرُونَ مِمَّا كَسَبُوا۟ عَلَىٰ شَیۡءࣲۚ ذَ ٰ⁠لِكَ هُوَ ٱلضَّلَـٰلُ ٱلۡبَعِیدُ ﴿18﴾

যারা তাদের প্রভুকে অস্বীকার করে তাদের উপমা হচ্ছে -- তাদের ক্রিয়াকর্ম ছাইয়ের মতো, যার উপর দিয়ে বয়ে চলে ঝড়- তুফানের দিনের ঝড়ো বাতাস। তারা যা অর্জন করেছে তার কিছুরই উপরে তারা কোনো ক্ষমতা রাখতে পারবে না। এইটি হচ্ছে সুদূর প্রসারিত বিভ্রান্তি।

أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضَ بِٱلۡحَقِّۚ إِن یَشَأۡ یُذۡهِبۡكُمۡ وَیَأۡتِ بِخَلۡقࣲ جَدِیدࣲ ﴿19﴾

তোমরা কি দেখ না যে আল্লাহ্ মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন সত্যের সাথে? তিনি যদি চান তাহলে তোমাদের সরিয়ে দিতে পারেন এবং এক নতুন সৃষ্টি আনয়ন করবেন,

وَمَا ذَ ٰ⁠لِكَ عَلَى ٱللَّهِ بِعَزِیزࣲ ﴿20﴾

আর এটি আল্লাহ্‌র জন্যে কঠিন নয়।

وَبَرَزُوا۟ لِلَّهِ جَمِیعࣰا فَقَالَ ٱلضُّعَفَـٰۤؤُا۟ لِلَّذِینَ ٱسۡتَكۡبَرُوۤا۟ إِنَّا كُنَّا لَكُمۡ تَبَعࣰا فَهَلۡ أَنتُم مُّغۡنُونَ عَنَّا مِنۡ عَذَابِ ٱللَّهِ مِن شَیۡءࣲۚ قَالُوا۟ لَوۡ هَدَىٰنَا ٱللَّهُ لَهَدَیۡنَـٰكُمۡۖ سَوَاۤءٌ عَلَیۡنَاۤ أَجَزِعۡنَاۤ أَمۡ صَبَرۡنَا مَا لَنَا مِن مَّحِیصࣲ ﴿21﴾

আর তারা সবাই আসবে আল্লাহ্‌র সামনে, তখন দুর্বলেরা বলবে যারা অহংকার করত তাদের -- ''আমরা তো নিশ্চয়ই তোমাদের অনুগামী ছিলাম, সুতরাং আল্লাহ্‌র শাস্তি থেকে কিছুটা আমাদের থেকে তোমরা সরিয়ে নিতে পার কি?’’ তারা বলবে -- ''আল্লাহ্ যদি আমাদের সৎপথে চালিত করতেন তবে আমরাও তোমাদের সৎপথে চালিত করতাম। আমরা অসহিষ্ণুতা দেখাই বা ধৈর্যধারণ করি আমাদের জন্য সবই সমান, আমাদের জন্য কোনো নিষ্কৃতি নেই।’’

وَقَالَ ٱلشَّیۡطَـٰنُ لَمَّا قُضِیَ ٱلۡأَمۡرُ إِنَّ ٱللَّهَ وَعَدَكُمۡ وَعۡدَ ٱلۡحَقِّ وَوَعَدتُّكُمۡ فَأَخۡلَفۡتُكُمۡۖ وَمَا كَانَ لِیَ عَلَیۡكُم مِّن سُلۡطَـٰنٍ إِلَّاۤ أَن دَعَوۡتُكُمۡ فَٱسۡتَجَبۡتُمۡ لِیۖ فَلَا تَلُومُونِی وَلُومُوۤا۟ أَنفُسَكُمۖ مَّاۤ أَنَا۠ بِمُصۡرِخِكُمۡ وَمَاۤ أَنتُم بِمُصۡرِخِیَّ إِنِّی كَفَرۡتُ بِمَاۤ أَشۡرَكۡتُمُونِ مِن قَبۡلُۗ إِنَّ ٱلظَّـٰلِمِینَ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿22﴾

আর যখন ব্যাপারটার মীমাংসা হয়ে যাবে তখন শয়তান বলবে -- ''নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তোমাদের ওয়াদা করেছিলেন সত্য ওয়াদা, আর আমিও তোমাদের কাছে অঙ্গীকার করেছিলাম, কিন্তু তোমাদের কাছে আমি খেলাফ করি। আর তোমাদের উপরে আমার কোনো আধিপত্য ছিল না, আমি শুধুমাত্র তোমাদের ডেকেছিলাম, তখন তোমরা আমার প্রতি সাড়া দিয়েছিলে। সুতরাং তোমরা আমাকে দোষ দিও না, বরং তোমাদের নিজেদেরকেই দোষারোপ কর। আমি তোমাদের উদ্ধারের পাত্র নই আর তোমরাও আমার উদ্ধারের পাত্র নও। আমি নিঃসন্দেহ অস্বীকার করি তোমরা যে ইতিপূর্বে আমাকে অংশী বানিয়েছিলে।’’ নিঃসন্দেহ অন্যায়কারীরা, -- তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।

وَأُدۡخِلَ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَا بِإِذۡنِ رَبِّهِمۡۖ تَحِیَّتُهُمۡ فِیهَا سَلَـٰمٌ ﴿23﴾

আর যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে তাদের প্রবেশ করানো হবে স্বর্গোদ্যানসমূহে যাদের নিচে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ঝরনারাজি, সেখানে তারা থাকবে স্থায়ীভাবে তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে। সেখানে তাদের অভিবাদন হবে ''সালাম’’!

أَلَمۡ تَرَ كَیۡفَ ضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلࣰا كَلِمَةࣰ طَیِّبَةࣰ كَشَجَرَةࣲ طَیِّبَةٍ أَصۡلُهَا ثَابِتࣱ وَفَرۡعُهَا فِی ٱلسَّمَاۤءِ ﴿24﴾

তোমরা কি ভেবে দেখ নি আল্লাহ্ কিভাবে উপমা দিয়ে থাকেন সাধু কথাকে উৎকৃষ্ট গাছের সঙ্গে, যার শিকড় হচ্ছে মজবুত ও যার ডালপালা আকাশে,

تُؤۡتِیۤ أُكُلَهَا كُلَّ حِینِۭ بِإِذۡنِ رَبِّهَاۗ وَیَضۡرِبُ ٱللَّهُ ٱلۡأَمۡثَالَ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ یَتَذَكَّرُونَ ﴿25﴾

তা তার ফল দিচ্ছে প্রত্যেক মৌসুমে তার প্রভুর অনুমতিক্রমে। আর আল্লাহ্ মানবসমাজের জন্য উপমাসমূহ প্রয়োগ করেন যেন তারা স্মরণ করতে পারে।

وَمَثَلُ كَلِمَةٍ خَبِیثَةࣲ كَشَجَرَةٍ خَبِیثَةٍ ٱجۡتُثَّتۡ مِن فَوۡقِ ٱلۡأَرۡضِ مَا لَهَا مِن قَرَارࣲ ﴿26﴾

আর খারাপ কথার উপমা হচ্ছে মন্দ গাছের মতো যা মাটির উপর থেকে উপড়ে ফেলা হয়েছে, এর কোনো স্থিতি নেই।

یُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ بِٱلۡقَوۡلِ ٱلثَّابِتِ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا وَفِی ٱلۡـَٔاخِرَةِۖ وَیُضِلُّ ٱللَّهُ ٱلظَّـٰلِمِینَۚ وَیَفۡعَلُ ٱللَّهُ مَا یَشَاۤءُ ﴿27﴾

যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ্ তাদের প্রতিষ্ঠিত করেন শাশ্বত বাণীর দ্বারা এই দুনিয়ার জীবনে ও পরকালে, আর আল্লাহ্ পথহারা করেন অন্যায়কারীদের, আর আল্লাহ্ যা ইচ্ছে করেন তাই করেন।

۞ أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ بَدَّلُوا۟ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ كُفۡرࣰا وَأَحَلُّوا۟ قَوۡمَهُمۡ دَارَ ٱلۡبَوَارِ ﴿28﴾

তুমি কি তাদের দেখো নি যারা আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ বদলে নেয় অবিশ্বাস দিয়ে, আর তাদের লোকজনকে নামিয়ে নিয়েছে ধ্বংসের আবাসে?

جَهَنَّمَ یَصۡلَوۡنَهَاۖ وَبِئۡسَ ٱلۡقَرَارُ ﴿29﴾

জাহান্নাম -- যাতে তারা প্রবেশ করবে, আর নিকৃষ্ট এই বাসস্থান!

وَجَعَلُوا۟ لِلَّهِ أَندَادࣰا لِّیُضِلُّوا۟ عَن سَبِیلِهِۦۗ قُلۡ تَمَتَّعُوا۟ فَإِنَّ مَصِیرَكُمۡ إِلَى ٱلنَّارِ ﴿30﴾

আর তারা আল্লাহ্‌র সমকক্ষ দাঁড় করায় যেন তারা তাঁর পথ থেকে বিপথে চালাতে পারে। তুমি বলো -- ''উপভোগ করো, তারপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন নিশ্চয়ই আগুনের দিকে।’’

قُل لِّعِبَادِیَ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ یُقِیمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَیُنفِقُوا۟ مِمَّا رَزَقۡنَـٰهُمۡ سِرࣰّا وَعَلَانِیَةࣰ مِّن قَبۡلِ أَن یَأۡتِیَ یَوۡمࣱ لَّا بَیۡعࣱ فِیهِ وَلَا خِلَـٰلٌ ﴿31﴾

আমার বান্দাদের যারা বিশ্বাস করে তাদের বলো -- তারা নামায কায়েম করুক, এবং আমরা তাদের যে জীবনোপক রণ দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করুক, গোপনে ও প্রকাশ্যভাবে, সেইদিন আসবার আগে যাতে চলবে না কোনো লেনদেন, না কোনো বন্ধু- সম্পর্ক।

ٱللَّهُ ٱلَّذِی خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضَ وَأَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ مَاۤءࣰ فَأَخۡرَجَ بِهِۦ مِنَ ٱلثَّمَرَ ٰ⁠تِ رِزۡقࣰا لَّكُمۡۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلۡفُلۡكَ لِتَجۡرِیَ فِی ٱلۡبَحۡرِ بِأَمۡرِهِۦۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلۡأَنۡهَـٰرَ ﴿32﴾

আল্লাহ্ তিনিই যিনি মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, আর আকাশ থেকে বর্ষণ করেন পানি, তারপর তার সাহায্যে তিনি উৎপাদন করেন তোমাদের জীবিকার জন্য ফলমূল, আর তোমাদের জন্য তিনি অধীন করেছেন জাহাজ যেন তাঁর বিধান অনুযায়ী তা সমুদ্রে চলাচল করে, আর তোমাদের জন্য তিনি বশীভূত করেছেন নদনদী।

وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَ دَاۤىِٕبَیۡنِۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ ٱلَّیۡلَ وَٱلنَّهَارَ ﴿33﴾

আর তিনি তোমাদের অনুগত করেছেন সূর্য ও চন্দ্রকে যারা নিয়মানুগতভাবে চলমান, আর তিনি তোমাদের অধীন করেছেন রাত ও দিনকে।

وَءَاتَىٰكُم مِّن كُلِّ مَا سَأَلۡتُمُوهُۚ وَإِن تَعُدُّوا۟ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ لَا تُحۡصُوهَاۤۗ إِنَّ ٱلۡإِنسَـٰنَ لَظَلُومࣱ كَفَّارࣱ ﴿34﴾

আর তিনি তোমাদের প্রদান করেন তোমরা তাঁর কাছে যা প্রার্থনা কর তার সব-কিছু থেকেই। আর তোমরা যদি আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ গণনা করতে যাও তোমরা তা গণতে পারবে না। মানুষ আলবৎ বড়ই অন্যায়কারী, অত্যন্ত অকৃতজ্ঞ।

وَإِذۡ قَالَ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمُ رَبِّ ٱجۡعَلۡ هَـٰذَا ٱلۡبَلَدَ ءَامِنࣰا وَٱجۡنُبۡنِی وَبَنِیَّ أَن نَّعۡبُدَ ٱلۡأَصۡنَامَ ﴿35﴾

আর স্মরণ কর! ইব্রাহীম বলেছিলেন -- ''আমার প্রভু! এই শহরটাকে নিরাপদ করো, আর আমাকে ও আমার সন্তান-সন্ততিকে পুতুল প্রতিমা পূজা-অর্চনা থেকে রক্ষা করো।

رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضۡلَلۡنَ كَثِیرࣰا مِّنَ ٱلنَّاسِۖ فَمَن تَبِعَنِی فَإِنَّهُۥ مِنِّیۖ وَمَنۡ عَصَانِی فَإِنَّكَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿36﴾

''আমার প্রভু! নিঃসন্দেহ তারা মানবসমাজের অনেককে বিপথে নিয়েছে, সুতরাং যে আমাকে অনুসরণ করে সেই তবে আমার মধ্যেকার, আর যে আমাকে অমান্য করে তুমিই তো পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

رَّبَّنَاۤ إِنِّیۤ أَسۡكَنتُ مِن ذُرِّیَّتِی بِوَادٍ غَیۡرِ ذِی زَرۡعٍ عِندَ بَیۡتِكَ ٱلۡمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِیُقِیمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱجۡعَلۡ أَفۡـِٔدَةࣰ مِّنَ ٱلنَّاسِ تَهۡوِیۤ إِلَیۡهِمۡ وَٱرۡزُقۡهُم مِّنَ ٱلثَّمَرَ ٰ⁠تِ لَعَلَّهُمۡ یَشۡكُرُونَ ﴿37﴾

''আমার প্রভু! আমি নিশ্চয়ই আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করালাম তোমার পবিত্র গৃহের নিকটে চাষ-বাসহীন উপত্যকায়, -- আমাদের প্রভু! যেন তারা নামায কায়েম করে, সেজন্যে কিছু লোকের মন তাদের প্রতি অনুরাগী বানিয়ে দাও, আর তাদের ফলফসল দিয়ে জীবিকা প্রদান করো, যেন তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।

رَبَّنَاۤ إِنَّكَ تَعۡلَمُ مَا نُخۡفِی وَمَا نُعۡلِنُۗ وَمَا یَخۡفَىٰ عَلَى ٱللَّهِ مِن شَیۡءࣲ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَلَا فِی ٱلسَّمَاۤءِ ﴿38﴾

''আমাদের প্রভু! তুমি নিশ্চয় জান যা আমরা গোপন করি ও যা আমরা প্রকাশ করি। আর আল্লাহ্‌র কাছে পৃথিবীতে কোনো কিছুই লুকোনো নেই আর মহাকাশেও নয়।

ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ ٱلَّذِی وَهَبَ لِی عَلَى ٱلۡكِبَرِ إِسۡمَـٰعِیلَ وَإِسۡحَـٰقَۚ إِنَّ رَبِّی لَسَمِیعُ ٱلدُّعَاۤءِ ﴿39﴾

''সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র যিনি আমাকে বৃদ্ধ বয়েসে ইসমাইল ও ইসহাককে দান করেছেন। নিঃসন্দেহ আমার প্রভু প্রার্থনা শ্রবণকারী।

رَبِّ ٱجۡعَلۡنِی مُقِیمَ ٱلصَّلَوٰةِ وَمِن ذُرِّیَّتِیۚ رَبَّنَا وَتَقَبَّلۡ دُعَاۤءِ ﴿40﴾

''আমার প্রভু! আমাকে নামাযে সুপ্রতিষ্ঠিত করে দাও, আর আমার বংশধরদের থেকেও, আমাদের প্রভু! আর আমার প্রার্থনা কবুল করো।

رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِی وَلِوَ ٰ⁠لِدَیَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِینَ یَوۡمَ یَقُومُ ٱلۡحِسَابُ ﴿41﴾

''আমাদের প্রভু! আমাকে পরিত্রাণ করো, আর আমার পিতামাতাকেও আর বিশ্বাসিগণকেও -- যেদিন হিসাবপত্র নেওয়া হবে তখন।’’

وَلَا تَحۡسَبَنَّ ٱللَّهَ غَـٰفِلًا عَمَّا یَعۡمَلُ ٱلظَّـٰلِمُونَۚ إِنَّمَا یُؤَخِّرُهُمۡ لِیَوۡمࣲ تَشۡخَصُ فِیهِ ٱلۡأَبۡصَـٰرُ ﴿42﴾

আর তোমরা ভেবো না যে অন্যায়কারীরা যা করে আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে বেখেয়াল। তিনি তাদের শুধু অবকাশ দিচ্ছেন সেইদিন পর্যন্ত যেদিন চোখগুলো হবে পলকহীন স্থির --

مُهۡطِعِینَ مُقۡنِعِی رُءُوسِهِمۡ لَا یَرۡتَدُّ إِلَیۡهِمۡ طَرۡفُهُمۡۖ وَأَفۡـِٔدَتُهُمۡ هَوَاۤءࣱ ﴿43﴾

ছুটে চলেছে তাদের মাথা খাড়া করে, তাদের দৃষ্টি তাদের নিজেদের দিকেও ফিরছে না, আর তাদের চিত্ত হয়েছে ফাঁকা।

وَأَنذِرِ ٱلنَّاسَ یَوۡمَ یَأۡتِیهِمُ ٱلۡعَذَابُ فَیَقُولُ ٱلَّذِینَ ظَلَمُوا۟ رَبَّنَاۤ أَخِّرۡنَاۤ إِلَىٰۤ أَجَلࣲ قَرِیبࣲ نُّجِبۡ دَعۡوَتَكَ وَنَتَّبِعِ ٱلرُّسُلَۗ أَوَلَمۡ تَكُونُوۤا۟ أَقۡسَمۡتُم مِّن قَبۡلُ مَا لَكُم مِّن زَوَالࣲ ﴿44﴾

আর লোকজনকে সতর্ক কর সেইদিন সন্বন্ধে যখন তাদের উপরে শাস্তি ঘনিয়ে আসবে, যারা অন্যায় করেছিল তারা তখন বলবে, ''আমাদের প্রভু! আমাদের অবকাশ দাও অল্প কিছুকাল পর্যন্ত যেন আমরা তোমার ডাকে সাড়া দিতে পারি এবং রসূলগণকে অনুসরণ করতে পারি।’’ ''কি! তোমরা কি ইতিপূর্বে শপথ করতে থাক নি যে তোমাদের জন্য কোনো পড়ন্ত অবস্থা নেই?

وَسَكَنتُمۡ فِی مَسَـٰكِنِ ٱلَّذِینَ ظَلَمُوۤا۟ أَنفُسَهُمۡ وَتَبَیَّنَ لَكُمۡ كَیۡفَ فَعَلۡنَا بِهِمۡ وَضَرَبۡنَا لَكُمُ ٱلۡأَمۡثَالَ ﴿45﴾

''আর তোমরা বাস করতে তাদের বাসভূমিতে যারা নিজেদের আ‌ত্মার প্রতি অন্যায়াচরণ করেছিল, অথচ তোমাদের কাছে এটি সুস্পষ্ট করা হয়েছিল কিভাবে আমরা তাদের প্রতি ব্যবহার করেছিলাম আর তোমাদের জন্য বানিয়েছিলাম দৃষ্টান্ত।’’

وَقَدۡ مَكَرُوا۟ مَكۡرَهُمۡ وَعِندَ ٱللَّهِ مَكۡرُهُمۡ وَإِن كَانَ مَكۡرُهُمۡ لِتَزُولَ مِنۡهُ ٱلۡجِبَالُ ﴿46﴾

আর তারা নিশ্চয়ই তাদের চক্রান্ত এঁটেছিল, কিন্তু তাদের চক্রান্ত আছে আল্লাহ্‌র কাছে, যদিও তাদের চক্রান্ত এমন যে তার দ্বারা পাহাড়গুলো টলে যায়।

فَلَا تَحۡسَبَنَّ ٱللَّهَ مُخۡلِفَ وَعۡدِهِۦ رُسُلَهُۥۤۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِیزࣱ ذُو ٱنتِقَامࣲ ﴿47﴾

সুতরাং তুমি কখনো ভেবো না যে আল্লাহ্ তাঁর রসূলগণের কাছে দেওয়া তাঁর প্রতি‌শ্রুতি খেলাফ করবেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, প্রতিফল প্রদানকারী।

یَوۡمَ تُبَدَّلُ ٱلۡأَرۡضُ غَیۡرَ ٱلۡأَرۡضِ وَٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تُۖ وَبَرَزُوا۟ لِلَّهِ ٱلۡوَ ٰ⁠حِدِ ٱلۡقَهَّارِ ﴿48﴾

সেইদিন এ পৃথিবী বদলে হবে অন্য পৃথিবী, আর মহাকাশমন্ডলীও, আর তারা হাজির হবে আল্লাহ্‌র সামনে, যিনি একক, সর্বশক্তিমান।

وَتَرَى ٱلۡمُجۡرِمِینَ یَوۡمَىِٕذࣲ مُّقَرَّنِینَ فِی ٱلۡأَصۡفَادِ ﴿49﴾

আর তুমি দেখতে পাবে -- অপরাধীরা সেইদিন শিকলের মধ্যে বাঁধা অবস্থায়, --

سَرَابِیلُهُم مِّن قَطِرَانࣲ وَتَغۡشَىٰ وُجُوهَهُمُ ٱلنَّارُ ﴿50﴾

তাদের জামা হবে পীচের, আর তাদের মুখমন্ডল আবৃত করে থাকবে আগুন, --

لِیَجۡزِیَ ٱللَّهُ كُلَّ نَفۡسࣲ مَّا كَسَبَتۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَرِیعُ ٱلۡحِسَابِ ﴿51﴾

যেন আল্লাহ্ প্রত্যেক সত্ত্বাকে প্রতিদান দিতে পারেন যা সে অর্জন করেছে, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হিসেব-নিকেশে তৎপর।

هَـٰذَا بَلَـٰغࣱ لِّلنَّاسِ وَلِیُنذَرُوا۟ بِهِۦ وَلِیَعۡلَمُوۤا۟ أَنَّمَا هُوَ إِلَـٰهࣱ وَ ٰ⁠حِدࣱ وَلِیَذَّكَّرَ أُو۟لُوا۟ ٱلۡأَلۡبَـٰبِ ﴿52﴾

এই হচ্ছে মানব সমাজের জন্য এক বার্তা যেন তারা জানতে পারে যে তিনিই নিঃসন্দেহ একক উপাস্য, আর বোধ শক্তিসম্পন্নেরা যেন উপদেশ গ্রহণ করতে পারে।