Settings
Surah Stoneland, Rock city, Al-Hijr valley [Al-Hijr] in Bengali
الٓر ۚ تِلْكَ ءَايَٰتُ ٱلْكِتَٰبِ وَقُرْءَانٍۢ مُّبِينٍۢ ﴿١﴾
আলিফ, লাম, রা। এগুলো হচ্ছে ধর্মগ্রন্থের আয়াতসমূহ, আর একটি সুস্পষ্ট পাঠ্য।
رُّبَمَا يَوَدُّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لَوْ كَانُوا۟ مُسْلِمِينَ ﴿٢﴾
সময়কালে যারা অবিশ্বাস করেছিল তারা চাইবে যে যদি তারা মুসলিম হতো!
ذَرْهُمْ يَأْكُلُوا۟ وَيَتَمَتَّعُوا۟ وَيُلْهِهِمُ ٱلْأَمَلُ ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ ﴿٣﴾
ছেড়ে দাও তাদের খানাপিনা করতে ও আমোদ-আাদ করতে, আর আশা-আকাঙ্খা তাদের ভুলিয়ে রাখুক, যেহেতু শীগগিরই তারা বুঝতে পারবে!
وَمَآ أَهْلَكْنَا مِن قَرْيَةٍ إِلَّا وَلَهَا كِتَابٌۭ مَّعْلُومٌۭ ﴿٤﴾
আর আমরা কোনো জনপদকে ধ্বংস করি নি যে পর্যন্ত না তার জন্য বিধান মালুম করানো হয়েছে।
مَّا تَسْبِقُ مِنْ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا يَسْتَـْٔخِرُونَ ﴿٥﴾
কোনো জাতি তার নির্ধারিত কাল ত্বরান্বিত করতে পারবে না, আর তারা বিলন্বিত করতে পারবে না।
وَقَالُوا۟ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِى نُزِّلَ عَلَيْهِ ٱلذِّكْرُ إِنَّكَ لَمَجْنُونٌۭ ﴿٦﴾
আর তারা বলে -- ''ওহে যার কাছে স্মারকগ্রন্থ অবতীর্ণ হয়েছে! তুমি তো আলবৎ মাথা-পাগলা।
لَّوْ مَا تَأْتِينَا بِٱلْمَلَٰٓئِكَةِ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ ﴿٧﴾
''তুমি কেন আমাদের কাছে ফিরিশ্তাদের নিয়ে এস না, যদি তুমি সত্যবাদীদের মধ্যেকার হও।
مَا نُنَزِّلُ ٱلْمَلَٰٓئِكَةَ إِلَّا بِٱلْحَقِّ وَمَا كَانُوٓا۟ إِذًۭا مُّنظَرِينَ ﴿٨﴾
আমরা ফিরিশ্তাদের পাঠাই না সত্যের সাথে ছাড়া, আর তখন তারা অবকাশ প্রাপ্ত হবে না।
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا ٱلذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ ﴿٩﴾
নিঃসন্দেহ আমরা নিজেই স্মারকগ্রন্থ অবতারণ করেছি, আর আমরাই তো এর সংরক্ষণকারী।
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ فِى شِيَعِ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿١٠﴾
আর তোমার আগে আমরা নিশ্চয়ই পাঠিয়েছিলাম প্রাচীনকালের সম্প্রদায়ের মধ্যে।
وَمَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا كَانُوا۟ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ ﴿١١﴾
কিন্তু তাদের কাছে এমন কোনো রসূল আসেন নি যাঁকে নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত না।
كَذَٰلِكَ نَسْلُكُهُۥ فِى قُلُوبِ ٱلْمُجْرِمِينَ ﴿١٢﴾
এইভাবে আমরা একে অপরাধীদের অন্তরে প্রবেশ করাই।
لَا يُؤْمِنُونَ بِهِۦ ۖ وَقَدْ خَلَتْ سُنَّةُ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿١٣﴾
তারা এতে বিশ্বাস করে না, অথচ পূর্ববর্তীদের নজীর অবশ্যই গত হয়েছে।
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًۭا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ فَظَلُّوا۟ فِيهِ يَعْرُجُونَ ﴿١٤﴾
আর যদি আমরা তাদের জন্য মহাকাশের দরজা খুলে দিই আর তাতে তারা আরোহণ করতে থাকে --
لَقَالُوٓا۟ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَٰرُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌۭ مَّسْحُورُونَ ﴿١٥﴾
তারা তবুও বলবে -- ''আমাদের চোখে ধাঁধা লেগেছে, আমরা বরং মোহাচ্ছন্ন দল হয়েছি।’’
وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِى ٱلسَّمَآءِ بُرُوجًۭا وَزَيَّنَّٰهَا لِلنَّٰظِرِينَ ﴿١٦﴾
আর বাস্তবিকই আমরা আকাশে দুর্গ তৈরি করেছি, আর তা সুশোভিত করেছি দর্শকদের জন্য।
وَحَفِظْنَٰهَا مِن كُلِّ شَيْطَٰنٍۢ رَّجِيمٍ ﴿١٧﴾
আর আমরা তাকে রক্ষা করি প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তানের থেকে, --
إِلَّا مَنِ ٱسْتَرَقَ ٱلسَّمْعَ فَأَتْبَعَهُۥ شِهَابٌۭ مُّبِينٌۭ ﴿١٨﴾
সে ব্যতীত যে লুকিয়ে শোনে, ফলে তার পশ্চাদ্ধাবন করে প্রখর অগ্নিশিখা।
وَٱلْأَرْضَ مَدَدْنَٰهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَٰسِىَ وَأَنۢبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ شَىْءٍۢ مَّوْزُونٍۢ ﴿١٩﴾
আর পৃথিবী -- আমরা তাকে প্রসারিত করেছি, আর তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা, আর তাতে উৎপন্ন করেছি হরেক রকমের জিনিস সুপরিমিতভাবে।
وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَٰيِشَ وَمَن لَّسْتُمْ لَهُۥ بِرَٰزِقِينَ ﴿٢٠﴾
আর তোমাদের জন্য তাতে সৃষ্টি করেছি খাদ্যবস্তু, আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও তাদের জন্যেও।
وَإِن مِّن شَىْءٍ إِلَّا عِندَنَا خَزَآئِنُهُۥ وَمَا نُنَزِّلُهُۥٓ إِلَّا بِقَدَرٍۢ مَّعْلُومٍۢ ﴿٢١﴾
আর এমন কোনো-কিছু নেই যার ভান্ডার আমাদের কাছে নয়, আর আমরা তা পাঠাই না নির্ধারিত পরিমাপে ছাড়া।
وَأَرْسَلْنَا ٱلرِّيَٰحَ لَوَٰقِحَ فَأَنزَلْنَا مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءًۭ فَأَسْقَيْنَٰكُمُوهُ وَمَآ أَنتُمْ لَهُۥ بِخَٰزِنِينَ ﴿٢٢﴾
আর আমরা উর্বরতা-সঞ্চারক বায়ু পাঠাই, তারপর আকাশ থেকে আমরা পানি পাঠাই, তখন তোমাদের তা পান করতে দিই, আর তোমরা তার কোষাধ্যক্ষ নও!
وَإِنَّا لَنَحْنُ نُحْىِۦ وَنُمِيتُ وَنَحْنُ ٱلْوَٰرِثُونَ ﴿٢٣﴾
আর নিঃসন্দেহ আমরা নিজেই জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই, আর আমরাই হচ্ছি উত্তরাধিকারী।
وَلَقَدْ عَلِمْنَا ٱلْمُسْتَقْدِمِينَ مِنكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا ٱلْمُسْتَـْٔخِرِينَ ﴿٢٤﴾
আর আমরা নিশ্চয়ই জানি তোমাদের মধ্যের অগ্রগামীদের, আর আমরা অবশ্য জানি পশ্চাতে-পড়ে-থাকাদের।
وَإِنَّ رَبَّكَ هُوَ يَحْشُرُهُمْ ۚ إِنَّهُۥ حَكِيمٌ عَلِيمٌۭ ﴿٢٥﴾
আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু -- তিনি তাদেরকে একত্রে সমবেত করবেন। তিনি নিশ্চয়ই পরমজ্ঞানী, সর্বজ্ঞাতা।
وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلْإِنسَٰنَ مِن صَلْصَٰلٍۢ مِّنْ حَمَإٍۢ مَّسْنُونٍۢ ﴿٢٦﴾
আর আমরা নিশ্চয়ই মানুষ সৃষ্টি করেছি আওয়াজদায়ক মাটি থেকে, কালো কাদা থেকে রূপ দিয়ে।
وَٱلْجَآنَّ خَلَقْنَٰهُ مِن قَبْلُ مِن نَّارِ ٱلسَّمُومِ ﴿٢٧﴾
আর আমরা এর আগে জিন সৃষ্টি করেছি প্রখর আগুন দিয়ে।
وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَٰٓئِكَةِ إِنِّى خَٰلِقٌۢ بَشَرًۭا مِّن صَلْصَٰلٍۢ مِّنْ حَمَإٍۢ مَّسْنُونٍۢ ﴿٢٨﴾
আর স্মরণ কর! তোমার প্রভু ফিরিশ্তাদের বললেন -- ''নিঃসন্দেহ আমি মানুষ সৃষ্টি করতে যাচ্ছি আওয়াজদায়ক মাটি থেকে, -- কালো কাদা থেকে রূপ দিয়ে।
فَإِذَا سَوَّيْتُهُۥ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِى فَقَعُوا۟ لَهُۥ سَٰجِدِينَ ﴿٢٩﴾
সুতরাং যখন আমি তাকে সুঠাম করব আর তাতে আমার রূহ্ ফুকঁবো তখন তার প্রতি তোমরা পড় সিজদাবনত হয়ে।’’
فَسَجَدَ ٱلْمَلَٰٓئِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ ﴿٣٠﴾
তখন ফিরিশ্তারা সিজদা করলে, তাদের সবাই সববেত-ভাবে, --
إِلَّآ إِبْلِيسَ أَبَىٰٓ أَن يَكُونَ مَعَ ٱلسَّٰجِدِينَ ﴿٣١﴾
ইবলিস ব্যতীত, সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকার করল।
قَالَ يَٰٓإِبْلِيسُ مَا لَكَ أَلَّا تَكُونَ مَعَ ٱلسَّٰجِدِينَ ﴿٣٢﴾
তিনি বললেন -- ''হে ইবলিস! তোমার কি হয়েছে যে তুমি সিজদাকারীদের সঙ্গী হলে না?’’
قَالَ لَمْ أَكُن لِّأَسْجُدَ لِبَشَرٍ خَلَقْتَهُۥ مِن صَلْصَٰلٍۢ مِّنْ حَمَإٍۢ مَّسْنُونٍۢ ﴿٣٣﴾
সে বললে -- ''আমি তেমন নই যে আমি সিজদা করব একজন মানুষকে যাকে তুমি সৃষ্টি করেছ আওয়াজদায়ক মাটি থেকে -- কালো কাদা থেকে রূপ দিয়ে।’’
قَالَ فَٱخْرُجْ مِنْهَا فَإِنَّكَ رَجِيمٌۭ ﴿٣٤﴾
তিনি বললেন -- ''তাহলে বেরিয়ে যাও এখান থেকে, কেননা নিঃসন্দেহ তুমি বিতাড়িত,
وَإِنَّ عَلَيْكَ ٱللَّعْنَةَ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلدِّينِ ﴿٣٥﴾
''আর নিশ্চয় তোমার উপরে থাকবে অসন্তষ্টি শেষবিচারের দিন পর্যন্ত।’’
قَالَ رَبِّ فَأَنظِرْنِىٓ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ ﴿٣٦﴾
সে বললে -- ''আমার প্রভু! তবে আমাকে অবকাশ দাও সেই দিন পর্যন্ত যখন তাদের পুনরুত্থিত করা হবে!’’
قَالَ فَإِنَّكَ مِنَ ٱلْمُنظَرِينَ ﴿٣٧﴾
তিনি বললেন -- ''তবে তুমি নিশ্চয়ই অবকাশপ্রাপ্তদের মধ্যেকার --
إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْوَقْتِ ٱلْمَعْلُومِ ﴿٣٨﴾
নির্ধারিত সময়ের দিন পর্যন্ত।’’
قَالَ رَبِّ بِمَآ أَغْوَيْتَنِى لَأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ ﴿٣٩﴾
সে বললে -- ''আমার প্রভু! তুমি যেমনি আমাকে বিপথে যেতে দিয়েছ, আমিও তেমনি নিশ্চয়ই তাদের নিকট চিত্তাকর্ষক করব এই পৃথিবীতে, আর অবশ্যই তাদের একসাথে বিপথগামী করব --
إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ ٱلْمُخْلَصِينَ ﴿٤٠﴾
তাদের মধ্যে তোমার খাস বান্দাদের ব্যতীত।’’
قَالَ هَٰذَا صِرَٰطٌ عَلَىَّ مُسْتَقِيمٌ ﴿٤١﴾
তিনি বললেন -- ''এটিই হচ্ছে আমার দিকে সহজ-সঠিক পথ।
إِنَّ عِبَادِى لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَٰنٌ إِلَّا مَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلْغَاوِينَ ﴿٤٢﴾
''নিঃসন্দেহ আমার দাসদের সন্বন্ধে -- তাদের উপরে তোমার কোনো আধিপত্য নেই, বিপথগামীদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করে তাদের ব্যতীত।
وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمَوْعِدُهُمْ أَجْمَعِينَ ﴿٤٣﴾
''আর নিঃসন্দেহ জাহান্নাম হচ্ছে তাদের সকলের জন্য প্রতিশ্রুত স্থান --
لَهَا سَبْعَةُ أَبْوَٰبٍۢ لِّكُلِّ بَابٍۢ مِّنْهُمْ جُزْءٌۭ مَّقْسُومٌ ﴿٤٤﴾
''তার সাতটি দরজা আছে। প্রত্যেক প্রবেশপথের জন্য রয়েছে তাদের মধ্যের পৃথক পৃথক দল।’’
إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّٰتٍۢ وَعُيُونٍ ﴿٤٥﴾
নিঃসন্দেহ ধর্মপরায়ণরা থাকবে স্বর্গোদ্যানে ও ঝরনারাজির মধ্যে।
ٱدْخُلُوهَا بِسَلَٰمٍ ءَامِنِينَ ﴿٤٦﴾
''তোমরা এতে প্রবেশ কর শান্তিতে ও নিরাপত্তায়।’’
وَنَزَعْنَا مَا فِى صُدُورِهِم مِّنْ غِلٍّ إِخْوَٰنًا عَلَىٰ سُرُرٍۢ مُّتَقَٰبِلِينَ ﴿٤٧﴾
আর আমরা বের করে দেব তাদের অন্তরে যা-কিছু হিংসা-বিদ্বেষ রয়েছিল, ফলে তারা ভাইদের মতো থাকবে আসনের উপরে মুখোমুখি হয়ে।
لَا يَمَسُّهُمْ فِيهَا نَصَبٌۭ وَمَا هُم مِّنْهَا بِمُخْرَجِينَ ﴿٤٨﴾
সেখানে তাদের স্পর্শ করবে না কোনো অবসাদ, আর তারা সেখান থেকে বহিষ্কৃত হবে না।
۞ نَبِّئْ عِبَادِىٓ أَنِّىٓ أَنَا ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ ﴿٤٩﴾
আমার বান্দাদের খবর দাও যে আমিই তো নিশ্চয়ই পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা,
وَأَنَّ عَذَابِى هُوَ ٱلْعَذَابُ ٱلْأَلِيمُ ﴿٥٠﴾
আর আমার শাস্তি, -- তা অতি মর্মন্তুদ শাস্তি।
وَنَبِّئْهُمْ عَن ضَيْفِ إِبْرَٰهِيمَ ﴿٥١﴾
আর তাদের খবর দাও ইব্রাহীমের অতিথিদের সন্বন্ধে।’’
إِذْ دَخَلُوا۟ عَلَيْهِ فَقَالُوا۟ سَلَٰمًۭا قَالَ إِنَّا مِنكُمْ وَجِلُونَ ﴿٥٢﴾
যখন তারা তাঁর কাছে হাজির হল তখন তারা বললে -- ''সালাম’’। তিনি বললেন -- ''আমরা অবশ্য তোমাদের সন্বন্ধে ভয় করছি।’’
قَالُوا۟ لَا تَوْجَلْ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلَٰمٍ عَلِيمٍۢ ﴿٥٣﴾
তারা বললেন -- ''ভয় করো না, নিঃসন্দেহ আমরা তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছি এক জ্ঞানবান ছেলের সন্বন্ধে।’’
قَالَ أَبَشَّرْتُمُونِى عَلَىٰٓ أَن مَّسَّنِىَ ٱلْكِبَرُ فَبِمَ تُبَشِّرُونَ ﴿٥٤﴾
তিনি বললেন -- ''তোমরা কি আমাকে সুসংবাদ দিচ্ছ যখন বার্ধক্য আমাকে স্পর্শ করেছে? তবে কিসের তোমরা সুসংবাদ দিচ্ছ?
قَالُوا۟ بَشَّرْنَٰكَ بِٱلْحَقِّ فَلَا تَكُن مِّنَ ٱلْقَٰنِطِينَ ﴿٥٥﴾
তারা বললে -- ''আমরা তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছি সত্যের সাথে, সুতরাং তুমি হতাশদের মধ্যেকার হয়ো না।’’
قَالَ وَمَن يَقْنَطُ مِن رَّحْمَةِ رَبِّهِۦٓ إِلَّا ٱلضَّآلُّونَ ﴿٥٦﴾
তিনি বললেন -- ''আর কে হতাশ হয় তার প্রভুর করুণা থেকে পথভ্রষ্টরা ব্যতীত?’’
قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا ٱلْمُرْسَلُونَ ﴿٥٧﴾
তিনি বললেন -- ''তবে কি তোমাদের কাজ রয়েছে, হে প্রেরিতগণ?’’
قَالُوٓا۟ إِنَّآ أُرْسِلْنَآ إِلَىٰ قَوْمٍۢ مُّجْرِمِينَ ﴿٥٨﴾
তারা বললে -- ''আমরা নিশ্চয়ই প্রেরিত হয়েছি একটি অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি,
إِلَّآ ءَالَ لُوطٍ إِنَّا لَمُنَجُّوهُمْ أَجْمَعِينَ ﴿٥٩﴾
''লুতের অনুবর্তীরা ব্যতীত। নিঃসন্দেহ তাঁদের সবাইকে আমরা অবশ্যই উদ্ধার করব --
إِلَّا ٱمْرَأَتَهُۥ قَدَّرْنَآ ۙ إِنَّهَا لَمِنَ ٱلْغَٰبِرِينَ ﴿٦٠﴾
তাঁর স্ত্রী ব্যতীত। আমরা সঠিক জেনেছি যে সে তো নিশ্চয়ই পেছনে-পড়েথাকাদের মধ্যেকার।’’
فَلَمَّا جَآءَ ءَالَ لُوطٍ ٱلْمُرْسَلُونَ ﴿٦١﴾
তারপর যখন বাণীবাহকরা লূত-এর পরিজনের কাছে এল,
قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌۭ مُّنكَرُونَ ﴿٦٢﴾
তিনি বললেন -- ''তোমরা তো অপরিচিত লোক।’’
قَالُوا۟ بَلْ جِئْنَٰكَ بِمَا كَانُوا۟ فِيهِ يَمْتَرُونَ ﴿٦٣﴾
তারা বললে -- ''আমরা নিশ্চয়ই তোমার কাছে এসেছি তাই নিয়ে যে-সন্বন্ধে তারা তর্ক-বিতর্ক করত।
وَأَتَيْنَٰكَ بِٱلْحَقِّ وَإِنَّا لَصَٰدِقُونَ ﴿٦٤﴾
''আর আমরা তোমার কাছে নিয়ে এসেছি সত্যবার্তা, আর আমরা নিঃসন্দেহ সত্যবাদী।
فَأَسْرِ بِأَهْلِكَ بِقِطْعٍۢ مِّنَ ٱلَّيْلِ وَٱتَّبِعْ أَدْبَٰرَهُمْ وَلَا يَلْتَفِتْ مِنكُمْ أَحَدٌۭ وَٱمْضُوا۟ حَيْثُ تُؤْمَرُونَ ﴿٦٥﴾
''সুতরাং তোমার পরিবার-পরিজনকে নিয়ে বেরিয়ে পড় রাতের এক অংশে, আর তুমি তাদের পেছন থেকে অনুসরণ কর, আর তোমাদের মধ্যের কেউ যেন পিছন দিকে না দেখে, আর চলে যাও যেখানে তোমাদের আদেশ করা হয়েছে।’’
وَقَضَيْنَآ إِلَيْهِ ذَٰلِكَ ٱلْأَمْرَ أَنَّ دَابِرَ هَٰٓؤُلَآءِ مَقْطُوعٌۭ مُّصْبِحِينَ ﴿٦٦﴾
আর তাঁর কাছে আমরা জানিয়ে দিলাম এই নির্দেশ যে এদের শেষটুকুও কেটে দেওয়া হবে ভোরে জেগে ওঠার বেলায়।
وَجَآءَ أَهْلُ ٱلْمَدِينَةِ يَسْتَبْشِرُونَ ﴿٦٧﴾
আর শহরের লোকেরা এল উৎফুল্ল হয়ে।
قَالَ إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ ضَيْفِى فَلَا تَفْضَحُونِ ﴿٦٨﴾
তিনি বললেন -- ''এরা নিশ্চয়ই আমার অতিথি, সুতরাং আমাকে বেইজ্জত করো না।
وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَلَا تُخْزُونِ ﴿٦٩﴾
''আর আল্লাহ্কে ভয়শ্রদ্ধা কর, আর আমাকে লজ্জা দিয়ো না!’’
قَالُوٓا۟ أَوَلَمْ نَنْهَكَ عَنِ ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿٧٠﴾
তারা বললে -- ''আমরা কি তোমাকে নিষেধ করি নি জগদ্বাসীদের সম্পর্কে?’’
قَالَ هَٰٓؤُلَآءِ بَنَاتِىٓ إِن كُنتُمْ فَٰعِلِينَ ﴿٧١﴾
তিনি বললেন -- ''এরা আমার কন্যা, যদি তোমরা করতে চাও!’’
لَعَمْرُكَ إِنَّهُمْ لَفِى سَكْرَتِهِمْ يَعْمَهُونَ ﴿٧٢﴾
তোমার জীবনের কসম! তারা নিঃসন্দেহ তাদের মত্ততায় অন্ধভাবে ঘুরছিল।
فَأَخَذَتْهُمُ ٱلصَّيْحَةُ مُشْرِقِينَ ﴿٧٣﴾
কাজেই এক মহাধ্বনি তাদের পাকড়াও করল সূর্যোদয়কালে।
فَجَعَلْنَا عَٰلِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ حِجَارَةًۭ مِّن سِجِّيلٍ ﴿٧٤﴾
কাজেকাজেই এর উপরভাগ আমরা বানিয়ে দিলাম এর নিচের ভাগ, আর তাদের উপরে বর্ষণ করলাম পোড়া-মাটির পাথর।
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَٰتٍۢ لِّلْمُتَوَسِّمِينَ ﴿٧٥﴾
নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদের্শনাবলী রয়েছে।
وَإِنَّهَا لَبِسَبِيلٍۢ مُّقِيمٍ ﴿٧٦﴾
আর নিঃসন্দেহ এটি একটি সড়কের উপরে অবস্থিত।
إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَءَايَةًۭ لِّلْمُؤْمِنِينَ ﴿٧٧﴾
নিঃসন্দেহ এতে তো নিদর্শন রয়েছে মুমিনদের জন্য।
وَإِن كَانَ أَصْحَٰبُ ٱلْأَيْكَةِ لَظَٰلِمِينَ ﴿٧٨﴾
আর আসহাবুল আইকাহ্ অবশ্যই ছিল অন্যায়াচারী।
فَٱنتَقَمْنَا مِنْهُمْ وَإِنَّهُمَا لَبِإِمَامٍۢ مُّبِينٍۢ ﴿٧٩﴾
সেজন্য তাদের থেকে আমরা প্রতিফল আদায় করেছিলাম। তারা উভয়েই তো রয়েছে প্রকাশ্য রাজপথে।
وَلَقَدْ كَذَّبَ أَصْحَٰبُ ٱلْحِجْرِ ٱلْمُرْسَلِينَ ﴿٨٠﴾
আর নিশ্চয় পাথুরে-পাহাড়ের বাসিন্দারাও রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।
وَءَاتَيْنَٰهُمْ ءَايَٰتِنَا فَكَانُوا۟ عَنْهَا مُعْرِضِينَ ﴿٨١﴾
আর তাদের আমরা আমাদের নির্দেশাবলী দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা সে-সব থেকে ফিরে গিয়েছিল।
وَكَانُوا۟ يَنْحِتُونَ مِنَ ٱلْجِبَالِ بُيُوتًا ءَامِنِينَ ﴿٨٢﴾
আর তারা পাহাড় কেটে নিশ্চিন্ত হয়ে বাড়িঘর তৈরি করত।
فَأَخَذَتْهُمُ ٱلصَّيْحَةُ مُصْبِحِينَ ﴿٨٣﴾
কিন্তু প্রচন্ড আওয়াজ তাদের পাকড়াও করল সকালবেলায়।
فَمَآ أَغْنَىٰ عَنْهُم مَّا كَانُوا۟ يَكْسِبُونَ ﴿٨٤﴾
কাজেই তারা যা অর্জন করত তা তাদের কোনো কাজে আসে নি।
وَمَا خَلَقْنَا ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَآ إِلَّا بِٱلْحَقِّ ۗ وَإِنَّ ٱلسَّاعَةَ لَءَاتِيَةٌۭ ۖ فَٱصْفَحِ ٱلصَّفْحَ ٱلْجَمِيلَ ﴿٨٥﴾
আর আমরা মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দুইয়ের মধ্যে যা-কিছু আছে তা সৃষ্টি করি নি সত্যের সঙ্গে ব্যতীত। আর নিঃসন্দেহ ঘড়ি-ঘন্টা তো এসে পড়ল; সুতরাং উপেক্ষা করো মহৎ উপেক্ষাভরে।
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ ٱلْخَلَّٰقُ ٱلْعَلِيمُ ﴿٨٦﴾
নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু, -- তিনি সর্বস্রষ্টা, সর্বজ্ঞাতা।
وَلَقَدْ ءَاتَيْنَٰكَ سَبْعًۭا مِّنَ ٱلْمَثَانِى وَٱلْقُرْءَانَ ٱلْعَظِيمَ ﴿٨٧﴾
আর নিশ্চয়ই তোমাকে আমরা দিয়েছি বারবার-পঠিত সাতটি, আর এক সুমহান কুরআন।
لَا تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَىٰ مَا مَتَّعْنَا بِهِۦٓ أَزْوَٰجًۭا مِّنْهُمْ وَلَا تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَٱخْفِضْ جَنَاحَكَ لِلْمُؤْمِنِينَ ﴿٨٨﴾
তাদের মধ্যের কতক পরিবারকে যা ভোগবিলাসের বস্তু দিয়েছি তার প্রতি তোমার চোখ দিয়ো না, আর তাদের প্রতি তুমি ক্ষোভ করো না, বরং তোমার ডানা নামাও মুমিনদের জন্য।
وَقُلْ إِنِّىٓ أَنَا ٱلنَّذِيرُ ٱلْمُبِينُ ﴿٨٩﴾
আর বলো -- ''নিঃসন্দেহ আমি, আমি হচ্ছি একজন প্রকাশ্য সতর্ককারী।’’
كَمَآ أَنزَلْنَا عَلَى ٱلْمُقْتَسِمِينَ ﴿٩٠﴾
যেমন আমরা পাঠিয়েছিলাম বিভক্তদের প্রতি, --
ٱلَّذِينَ جَعَلُوا۟ ٱلْقُرْءَانَ عِضِينَ ﴿٩١﴾
যারা কুরআনকে করে ছিন্নভিন্ন।
فَوَرَبِّكَ لَنَسْـَٔلَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ ﴿٩٢﴾
সুতরাং, তোমার প্রভুর কসম! আমরা নিশ্চয়ই তাদের সবাইকে প্রশ্ন করব --
عَمَّا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ ﴿٩٣﴾
তারা যা করে চলেছিল সে-সন্বন্ধে।
فَٱصْدَعْ بِمَا تُؤْمَرُ وَأَعْرِضْ عَنِ ٱلْمُشْرِكِينَ ﴿٩٤﴾
কাজেই প্রকাশ্যে ঘোষণা করো যা তোমাকে আদেশ করা হয়েছে, আর বহুখোদাবাদীদের থেকে ফিরে থেকো।
إِنَّا كَفَيْنَٰكَ ٱلْمُسْتَهْزِءِينَ ﴿٩٥﴾
আমরাই তো তোমার জন্য যথেষ্ট বিদ্রূপকারীদের বিরুদ্ধে --
ٱلَّذِينَ يَجْعَلُونَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ ۚ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ ﴿٩٦﴾
যারা আল্লাহ্র সাথে দাঁড় করায় অন্য উপাস্য, কাজেই শীঘ্রই তারা জানতে পারবে।
وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّكَ يَضِيقُ صَدْرُكَ بِمَا يَقُولُونَ ﴿٩٧﴾
আর আমরা অবশ্য জানি যে তারা যা বলে তাতে তোমার বক্ষ আলবৎ পীড়িত হয়,
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ ٱلسَّٰجِدِينَ ﴿٩٨﴾
সুতরাং তোমার প্রভুর প্রশংসা দ্বারা মহিমা কীর্তন করো, আর সিজদাকারীদের মধ্যেকার হও,
وَٱعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّىٰ يَأْتِيَكَ ٱلْيَقِينُ ﴿٩٩﴾
আর তোমার প্রভুর উপাসনা কর যে পর্যন্ত না তোমার কাছে আসে যা সুনিশ্চিত।