Main pages

كۤهیعۤصۤ ﴿1﴾

কাফ-হা-ইয়া-'আইন-স্বাদ।

ذِكۡرُ رَحۡمَتِ رَبِّكَ عَبۡدَهُۥ زَكَرِیَّاۤ ﴿2﴾

এ তাঁর বান্দা যাকারিয়ার প্রতি তোমার প্রভুর অনুগ্রহের বিবরণ।

إِذۡ نَادَىٰ رَبَّهُۥ نِدَاۤءً خَفِیࣰّا ﴿3﴾

স্মরণ করো, তিনি তাঁর প্রভুর প্রতি মৃদু স্বরে আহ্বান করলেন --

قَالَ رَبِّ إِنِّی وَهَنَ ٱلۡعَظۡمُ مِنِّی وَٱشۡتَعَلَ ٱلرَّأۡسُ شَیۡبࣰا وَلَمۡ أَكُنۢ بِدُعَاۤىِٕكَ رَبِّ شَقِیࣰّا ﴿4﴾

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমার ভেতরের হাড়-গোড় জিরজিরে হয়ে গেছে আর মাথাটি হয়ে গেছে জড়ভরত পাকাচুল বিশিষ্ট, আর আমার প্রভু! আমি তো তোমার কাছে আমার প্রার্থনায় কখনো নিরাশ হই নি।

وَإِنِّی خِفۡتُ ٱلۡمَوَ ٰ⁠لِیَ مِن وَرَاۤءِی وَكَانَتِ ٱمۡرَأَتِی عَاقِرࣰا فَهَبۡ لِی مِن لَّدُنكَ وَلِیࣰّا ﴿5﴾

''আর আমি অবশ্য আশংকা করছি আমার পরে আমার জ্ঞাতিগোষ্ঠীদের, আর আমার স্ত্রী বন্ধ্যা, সেজন্য তোমার কাছ থেকে আমাকে একজন উত্তরাধিকারী প্রদান করো, --

یَرِثُنِی وَیَرِثُ مِنۡ ءَالِ یَعۡقُوبَۖ وَٱجۡعَلۡهُ رَبِّ رَضِیࣰّا ﴿6﴾

''যে আমাকে উত্তরাধিকার করবে এবং ইয়াকুবের বংশধরদের উত্তরাধিকার করবে, আর আমার প্রভু, তাকে সন্তোষভাজন বানিয়ো।’’

یَـٰزَكَرِیَّاۤ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلَـٰمٍ ٱسۡمُهُۥ یَحۡیَىٰ لَمۡ نَجۡعَل لَّهُۥ مِن قَبۡلُ سَمِیࣰّا ﴿7﴾

''হে যাকারিয়া, নিঃসন্দেহ আমরা তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছি একটি বেটা-ছেলের, তার নাম হবে ইয়াহ্‌য়া, এর আগে কাউকেও আমরা তার নামধর বানাই নি।’’

قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ یَكُونُ لِی غُلَـٰمࣱ وَكَانَتِ ٱمۡرَأَتِی عَاقِرࣰا وَقَدۡ بَلَغۡتُ مِنَ ٱلۡكِبَرِ عِتِیࣰّا ﴿8﴾

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! কেমন ক’রে আমার ছেলে হবে যখন আমার স্ত্রী বন্ধ্যা আর আমিও বার্ধক্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছি!

قَالَ كَذَ ٰ⁠لِكَ قَالَ رَبُّكَ هُوَ عَلَیَّ هَیِّنࣱ وَقَدۡ خَلَقۡتُكَ مِن قَبۡلُ وَلَمۡ تَكُ شَیۡـࣰٔا ﴿9﴾

সে বললে -- ''এমনটাই হবে যেমন তুমি ভাব, তোমার প্রভু বলেছেন -- 'এটি আমার জন্য সহজসাধ্য, আর আমি তো তোমাকে এর আগে সৃষ্টি করেছি যখন তুমি কিছুই ছিলে না’।’’

قَالَ رَبِّ ٱجۡعَل لِّیۤ ءَایَةࣰۖ قَالَ ءَایَتُكَ أَلَّا تُكَلِّمَ ٱلنَّاسَ ثَلَـٰثَ لَیَالࣲ سَوِیࣰّا ﴿10﴾

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমার জন্য একটি নিদর্শন স্থাপন করো।’’ তিনি বললেন, ''তোমার নিদর্শন হচ্ছে -- তুমি লোকের সাথে কথা বলবে না তিন রাত্রি পর্যন্ত সুস্থাবস্থায় থেকে।’’

فَخَرَجَ عَلَىٰ قَوۡمِهِۦ مِنَ ٱلۡمِحۡرَابِ فَأَوۡحَىٰۤ إِلَیۡهِمۡ أَن سَبِّحُوا۟ بُكۡرَةࣰ وَعَشِیࣰّا ﴿11﴾

তারপর তিনি উপাসনার কামরা থেকে তাঁর লোকদের কাছে বেরুলেন এবং তাদের প্রতি ঘোষণা করলেন -- ''মহিমা কীর্তন করো সকালে ও সন্ধ্যায়।’’

یَـٰیَحۡیَىٰ خُذِ ٱلۡكِتَـٰبَ بِقُوَّةࣲۖ وَءَاتَیۡنَـٰهُ ٱلۡحُكۡمَ صَبِیࣰّا ﴿12﴾

''হে ইয়াহ্‌য়া, ধর্মগ্রন্থ শক্ত ক’রে ধারণ করো।’’ আর আমরা তাঁকে জ্ঞানদান করেছিলাম শৈশবেই,

وَحَنَانࣰا مِّن لَّدُنَّا وَزَكَوٰةࣰۖ وَكَانَ تَقِیࣰّا ﴿13﴾

আর আমাদের তরফ থেকে সহৃদয়তা ও পবিত্রতা। আর তিনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ,

وَبَرَّۢا بِوَ ٰ⁠لِدَیۡهِ وَلَمۡ یَكُن جَبَّارًا عَصِیࣰّا ﴿14﴾

আর তাঁর পিতামাতার প্রতি অনুগত, আর তিনি ছিলেন না উদ্ধত, অবাধ্য।

وَسَلَـٰمٌ عَلَیۡهِ یَوۡمَ وُلِدَ وَیَوۡمَ یَمُوتُ وَیَوۡمَ یُبۡعَثُ حَیࣰّا ﴿15﴾

আর শান্তি তাঁর উপরে যেদিন তাঁর জন্ম হয়েছিল ও যেদিন তিনি মারা গিয়েছিলেন আর যেদিন তাঁকে পুরুত্থিত করা হবে জীবিত অবস্থায়।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ مَرۡیَمَ إِذِ ٱنتَبَذَتۡ مِنۡ أَهۡلِهَا مَكَانࣰا شَرۡقِیࣰّا ﴿16﴾

আর গ্রন্থখানাতে মরিয়মের কথা স্মরণ করো -- যখন তিনি তাঁর পরিবারবর্গ থেকে সরে গিয়েছিলেন পুবদিকের এক জায়গায়,

فَٱتَّخَذَتۡ مِن دُونِهِمۡ حِجَابࣰا فَأَرۡسَلۡنَاۤ إِلَیۡهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرࣰا سَوِیࣰّا ﴿17﴾

তারপর তিনি তাদের থেকে পর্দা অবলন্বন করলেন, তখন আমরা তাঁর কাছে পাঠালাম আমাদের দূতকে, কাজেই তাঁর কাছে সে এক পুরোপুরি মানুষের অনুরূপে দেখা দিল।

قَالَتۡ إِنِّیۤ أَعُوذُ بِٱلرَّحۡمَـٰنِ مِنكَ إِن كُنتَ تَقِیࣰّا ﴿18﴾

তিনি বললেন -- ''নিঃসন্দেহ আমি তোমার থেকে আশ্রয় খুজঁছি পরম করুণাময়ের কাছে, যদি তুমি ধর্মভীরু হও।’’

قَالَ إِنَّمَاۤ أَنَا۠ رَسُولُ رَبِّكِ لِأَهَبَ لَكِ غُلَـٰمࣰا زَكِیࣰّا ﴿19﴾

সে বললে -- ''আমি তো শুধু তোমার প্রভুর বাণীবাহক -- 'যে আমি তোমাকে দান করব এক নিখুঁত ছেলে’।’’

قَالَتۡ أَنَّىٰ یَكُونُ لِی غُلَـٰمࣱ وَلَمۡ یَمۡسَسۡنِی بَشَرࣱ وَلَمۡ أَكُ بَغِیࣰّا ﴿20﴾

তিনি বললেন -- ''কেমন ক’রে আমার ছেলে হবে, যেহেতু আমাকে পুরুষ-মানুষ স্পর্শ করে নি এবং আমি অসতীও নই?’’

قَالَ كَذَ ٰ⁠لِكِ قَالَ رَبُّكِ هُوَ عَلَیَّ هَیِّنࣱۖ وَلِنَجۡعَلَهُۥۤ ءَایَةࣰ لِّلنَّاسِ وَرَحۡمَةࣰ مِّنَّاۚ وَكَانَ أَمۡرࣰا مَّقۡضِیࣰّا ﴿21﴾

সে বললে -- ''মনটা হবে! তোমার প্রভু বলেছেন -- 'এটি আমার জন্য সহজ-সাধ্য। আর যেন আমরা তাঁকে লোকদের জন্য একটি নিদর্শন বানাতে পারি, আর আমাদের থেকে এক করুণা, আর এ তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার’।’’

۞ فَحَمَلَتۡهُ فَٱنتَبَذَتۡ بِهِۦ مَكَانࣰا قَصِیࣰّا ﴿22﴾

তারপর তিনি তাঁকে গর্ভে ধারণ করলেন, এবং তৎসহ এক দূরবর্তী স্থানে সরে গেলেন।

فَأَجَاۤءَهَا ٱلۡمَخَاضُ إِلَىٰ جِذۡعِ ٱلنَّخۡلَةِ قَالَتۡ یَـٰلَیۡتَنِی مِتُّ قَبۡلَ هَـٰذَا وَكُنتُ نَسۡیࣰا مَّنسِیࣰّا ﴿23﴾

তখন প্রসব-বেদনা তাঁকে এক খেজুর গাছের গুড়িতে নিয়ে এল। তিনি বললেন -- ''হায় আমার দুর্ভোগ! এর আগে যদি আমি মরেই যেতাম এবং সম্পূর্ণ বিস্মৃতিতে বিস্মৃত হতাম!’’

فَنَادَىٰهَا مِن تَحۡتِهَاۤ أَلَّا تَحۡزَنِی قَدۡ جَعَلَ رَبُّكِ تَحۡتَكِ سَرِیࣰّا ﴿24﴾

তখন তাঁর নিচে থেকে তাঁকে ডেকে বললে -- ''দুঃখ করো না, তোমার প্রভু অবশ্য তোমার নিচে দিয়ে একটি জলধারা রেখেছেন।’’

وَهُزِّیۤ إِلَیۡكِ بِجِذۡعِ ٱلنَّخۡلَةِ تُسَـٰقِطۡ عَلَیۡكِ رُطَبࣰا جَنِیࣰّا ﴿25﴾

''আর খেজুর গাছের কান্ডটি তোমার দিকে টানতে থাক, এটি তোমার উপরে টাটকা-পাকা খেজুর ফেলবে।

فَكُلِی وَٱشۡرَبِی وَقَرِّی عَیۡنࣰاۖ فَإِمَّا تَرَیِنَّ مِنَ ٱلۡبَشَرِ أَحَدࣰا فَقُولِیۤ إِنِّی نَذَرۡتُ لِلرَّحۡمَـٰنِ صَوۡمࣰا فَلَنۡ أُكَلِّمَ ٱلۡیَوۡمَ إِنسِیࣰّا ﴿26﴾

''সুতরাং খাও ও পান করো এবং চোখ জুড়াও। আর লোকজনের কাউকে যদি দেখতে পাও তবে বলো -- 'আমি পরম করুণাময়ের জন্য রোযা রাখার মানত করেছি, কাজেই আমি আজ কোনো লোকের সঙ্গে কথাবার্তা বলব না’।’’

فَأَتَتۡ بِهِۦ قَوۡمَهَا تَحۡمِلُهُۥۖ قَالُوا۟ یَـٰمَرۡیَمُ لَقَدۡ جِئۡتِ شَیۡـࣰٔا فَرِیࣰّا ﴿27﴾

তারপর তিনি তাঁকে নিয়ে এলেন তাঁর লোকদের কাছে তাঁকে চড়িয়ে। তারা বললে -- ''হে মরিয়ম! তুমি আলবৎ এক অদ্ভুত ফেসাদ নিয়ে এসেছ।

یَـٰۤأُخۡتَ هَـٰرُونَ مَا كَانَ أَبُوكِ ٱمۡرَأَ سَوۡءࣲ وَمَا كَانَتۡ أُمُّكِ بَغِیࣰّا ﴿28﴾

''হে হারূনের ভগিনী! তোমার বাপ তো খারাপ লোক ছিল না এবং তোমার মা’ও পাপিষ্ঠা নয়!’’

فَأَشَارَتۡ إِلَیۡهِۖ قَالُوا۟ كَیۡفَ نُكَلِّمُ مَن كَانَ فِی ٱلۡمَهۡدِ صَبِیࣰّا ﴿29﴾

তখন তিনি তাঁর দিকে ইশারা করলেন। তারা বললে -- ''আমরা কেমন ক’রে কথা বলব তার সঙ্গে যে দোলনার শিশু?’’

قَالَ إِنِّی عَبۡدُ ٱللَّهِ ءَاتَىٰنِیَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَجَعَلَنِی نَبِیࣰّا ﴿30﴾

তিনি বললেন -- ''নিঃসন্দেহ আমি আল্লাহ্‌র একজন বান্দা, তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী বানিয়েছেন,

وَجَعَلَنِی مُبَارَكًا أَیۡنَ مَا كُنتُ وَأَوۡصَـٰنِی بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱلزَّكَوٰةِ مَا دُمۡتُ حَیࣰّا ﴿31﴾

''আর তিনি আমাকে মঙ্গলময় করেছেন যেখানেই আমি থাকি না কেন, আর তিনি আমার প্রতি বিধান দিয়েছেন নামায পড়তে ও যাকাত দিতে যতদিন আমি জীবিত অবস্থায় অবস্থান করি,

وَبَرَّۢا بِوَ ٰ⁠لِدَتِی وَلَمۡ یَجۡعَلۡنِی جَبَّارࣰا شَقِیࣰّا ﴿32﴾

''আর আমার মায়ের প্রতি অনুগত থাকতে, আর তিনি আমাকে বিদ্রোহীভাবাপন্ন হতভাগ্য করেন নি।

وَٱلسَّلَـٰمُ عَلَیَّ یَوۡمَ وُلِدتُّ وَیَوۡمَ أَمُوتُ وَیَوۡمَ أُبۡعَثُ حَیࣰّا ﴿33﴾

''আর শান্তি আমার উপরে যেদিন আমার জন্ম হয়েছিল, আর যেদিন আমি মারা যাব আর যেদিন আমাকে পুনরুত্থিত করা হবে জীবিত অবস্থায়।’’

ذَ ٰ⁠لِكَ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَۖ قَوۡلَ ٱلۡحَقِّ ٱلَّذِی فِیهِ یَمۡتَرُونَ ﴿34﴾

এই হচ্ছে মরিয়মপুত্র ঈসা, সত্য বিবৃতি যে-সন্বন্ধে তারা বিতর্ক করে।

مَا كَانَ لِلَّهِ أَن یَتَّخِذَ مِن وَلَدࣲۖ سُبۡحَـٰنَهُۥۤۚ إِذَا قَضَىٰۤ أَمۡرࣰا فَإِنَّمَا یَقُولُ لَهُۥ كُن فَیَكُونُ ﴿35﴾

এ আল্লাহ্‌র জন্য নয় যে তিনি এক সন্তান গ্রহণ করবেন। তাঁরই সব মহিমা! তিনি যখন কোনো-কিছু সিদ্ধান্ত করেন তখন সেজন্য তিনি শুধু বলেন -- 'হও’, আর তা হয়ে যায়।

وَإِنَّ ٱللَّهَ رَبِّی وَرَبُّكُمۡ فَٱعۡبُدُوهُۚ هَـٰذَا صِرَ ٰ⁠طࣱ مُّسۡتَقِیمࣱ ﴿36﴾

''আর নিশ্চয় আল্লাহ্ আমার প্রভু ও তোমাদেরও প্রভু, অতএব তাঁরই এবাদত করো। এটিই সহজ-সঠিক পথ।’’

فَٱخۡتَلَفَ ٱلۡأَحۡزَابُ مِنۢ بَیۡنِهِمۡۖ فَوَیۡلࣱ لِّلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِن مَّشۡهَدِ یَوۡمٍ عَظِیمٍ ﴿37﴾

কিন্তু গোত্রেরা তাদের পরস্পরের মধ্য মতানৈক্য সৃষ্টি করল, সুতরাং ধিক্ তাদের প্রতি যারা অবিশ্বাস পোষণ করে সেই ভয়ঙ্কর দিনে হাজিরাদানের কারণে।

أَسۡمِعۡ بِهِمۡ وَأَبۡصِرۡ یَوۡمَ یَأۡتُونَنَاۖ لَـٰكِنِ ٱلظَّـٰلِمُونَ ٱلۡیَوۡمَ فِی ضَلَـٰلࣲ مُّبِینࣲ ﴿38﴾

কত স্পষ্টভাবে তারা শুনবে ও দেখবে সেইদিন যেদিন তারা আমাদের কাছে আসবে! কিন্তু অন্যায়কারীরা আজ স্পষ্ট ভুলের মধ্যে রয়েছে।

وَأَنذِرۡهُمۡ یَوۡمَ ٱلۡحَسۡرَةِ إِذۡ قُضِیَ ٱلۡأَمۡرُ وَهُمۡ فِی غَفۡلَةࣲ وَهُمۡ لَا یُؤۡمِنُونَ ﴿39﴾

আর তাদের সতর্ক করে দাও সেই দারুণ পরিতাপের দিন সন্বন্ধে যখন ব্যাপারের সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। আর তারা তো গাফিলতিতে রয়েছে, আর তারা বিশ্বাসও করে না।

إِنَّا نَحۡنُ نَرِثُ ٱلۡأَرۡضَ وَمَنۡ عَلَیۡهَا وَإِلَیۡنَا یُرۡجَعُونَ ﴿40﴾

নিঃসন্দেহ আমরা নিজেরাই পৃথিবী ও তার উপরে যারা আছে সে-সমস্তের উত্তরাধিকারী, আর আমাদের কাছেই তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَۚ إِنَّهُۥ كَانَ صِدِّیقࣰا نَّبِیًّا ﴿41﴾

আর গ্রন্থখানার মধ্যে ইব্রাহীমের কথা স্মরণ করো। নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন সত্য-পরায়ণ, একজন নবী।

إِذۡ قَالَ لِأَبِیهِ یَـٰۤأَبَتِ لِمَ تَعۡبُدُ مَا لَا یَسۡمَعُ وَلَا یُبۡصِرُ وَلَا یُغۡنِی عَنكَ شَیۡـࣰٔا ﴿42﴾

দেখো! তিনি তাঁর পিতৃপুরুষকে বললেন -- ''হে আমার বাপা! তুমি কেন তার উপাসনা কর যে শোনে না ও দেখে না এবং তোমাকে কোনো কিছুতেই সমৃদ্ধ করে না?

یَـٰۤأَبَتِ إِنِّی قَدۡ جَاۤءَنِی مِنَ ٱلۡعِلۡمِ مَا لَمۡ یَأۡتِكَ فَٱتَّبِعۡنِیۤ أَهۡدِكَ صِرَ ٰ⁠طࣰا سَوِیࣰّا ﴿43﴾

''হে আমার আব্বু! নিঃসন্দেহ আমার কাছে অবশ্যই জ্ঞান এসেছে যা তোমার কাছে আসে নি, সুতরাং আমার অনুসরণ কর, আমি তোমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করব।

یَـٰۤأَبَتِ لَا تَعۡبُدِ ٱلشَّیۡطَـٰنَۖ إِنَّ ٱلشَّیۡطَـٰنَ كَانَ لِلرَّحۡمَـٰنِ عَصِیࣰّا ﴿44﴾

''হে আমার বাপা! শয়তানের উপাসনা করো না। নিশ্চয়ই শয়তান পরম করুণাময়ের অবাধ্য।

یَـٰۤأَبَتِ إِنِّیۤ أَخَافُ أَن یَمَسَّكَ عَذَابࣱ مِّنَ ٱلرَّحۡمَـٰنِ فَتَكُونَ لِلشَّیۡطَـٰنِ وَلِیࣰّا ﴿45﴾

''হে আমার বাপুজি! আমি আলবৎ আশঙ্কা করি যে পরম করুণাময়ের কাছ থেকে শাস্তি তোমাকে স্পর্শ করবে, ফলে তুমি হয়ে পড়বে শয়তানের সঙ্গিসাথী।’

قَالَ أَرَاغِبٌ أَنتَ عَنۡ ءَالِهَتِی یَـٰۤإِبۡرَ ٰ⁠هِیمُۖ لَىِٕن لَّمۡ تَنتَهِ لَأَرۡجُمَنَّكَۖ وَٱهۡجُرۡنِی مَلِیࣰّا ﴿46﴾

সে বললে -- ''হে ইব্রাহীম, তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে বীতশ্রদ্ধ? তুমি যদি না থামো তবে তোমাকে আমি নিশ্চিত পাথর ছুঁড়ে তাড়া করব, আর তুমি আমার থেকে এই মুহূর্তে দূর হয়ে যাও।’’

قَالَ سَلَـٰمٌ عَلَیۡكَۖ سَأَسۡتَغۡفِرُ لَكَ رَبِّیۤۖ إِنَّهُۥ كَانَ بِی حَفِیࣰّا ﴿47﴾

তিনি বললেন, ''তোমার উপরে শান্তি, আমি অবশ্য আমার প্রভুর কাছে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব। নিঃসন্দেহ তিনি আমার প্রতি পরম স্নেহময়।

وَأَعۡتَزِلُكُمۡ وَمَا تَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَأَدۡعُوا۟ رَبِّی عَسَىٰۤ أَلَّاۤ أَكُونَ بِدُعَاۤءِ رَبِّی شَقِیࣰّا ﴿48﴾

''আর আমি সরে যাচ্ছি তোমাদের থেকে ও আল্লাহকে ছেড়ে দিয়ে তোমরা যাদের ডাকো ওদের থেকে, আর আমি আমার প্রভুকেই ডাকব, হতে পারে যে আমার প্রভুকে ডেকে আমি করুণাবঞ্চিত হব না।’’

فَلَمَّا ٱعۡتَزَلَهُمۡ وَمَا یَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَهَبۡنَا لَهُۥۤ إِسۡحَـٰقَ وَیَعۡقُوبَۖ وَكُلࣰّا جَعَلۡنَا نَبِیࣰّا ﴿49﴾

তারপর যখন তিনি সরে গেলেন তাদের থেকে ও আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে তারা যাদের ডাকত ওদের থেকে, আমরা তাঁকে দিয়েছিলাম ইসহাককে ও ইয়াকুবকে। আর আমরা প্রত্যেককেই বানিয়েছিলাম নবী।

وَوَهَبۡنَا لَهُم مِّن رَّحۡمَتِنَا وَجَعَلۡنَا لَهُمۡ لِسَانَ صِدۡقٍ عَلِیࣰّا ﴿50﴾

আর তাঁদের আমরা দান করেছিলাম আমাদের করুণা থেকে, আর আমরা তাঁদের জন্য নির্ধারণ করেছিলাম সমুচ্চ সুখ্যাতি।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ مُوسَىٰۤۚ إِنَّهُۥ كَانَ مُخۡلَصࣰا وَكَانَ رَسُولࣰا نَّبِیࣰّا ﴿51﴾

আর গ্রন্থখানাতে মূসার কথা স্মরণ করো। নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন প্রিয়প্রাত্র, আর তিনি ছিলেন একজন নবী।

وَنَـٰدَیۡنَـٰهُ مِن جَانِبِ ٱلطُّورِ ٱلۡأَیۡمَنِ وَقَرَّبۡنَـٰهُ نَجِیࣰّا ﴿52﴾

আর আমরা তাঁকে ডেকেছিলাম পাহাড়ের ডান দিক থেকে, এবং আমরা তাঁকে নিকটে এনেছিলাম যোগাযোগে।

وَوَهَبۡنَا لَهُۥ مِن رَّحۡمَتِنَاۤ أَخَاهُ هَـٰرُونَ نَبِیࣰّا ﴿53﴾

আর আমাদের করুণা বশত আমরা তাঁকে দিয়েছিলাম তাঁর ভাই হারুনকে নবীরূপে।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ إِسۡمَـٰعِیلَۚ إِنَّهُۥ كَانَ صَادِقَ ٱلۡوَعۡدِ وَكَانَ رَسُولࣰا نَّبِیࣰّا ﴿54﴾

আর কিতাবখানাতে স্মরণ করো ইসমাইলের কথা। নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন ওয়াদাতে সত্যপরায়ণ, আর তিনি ছিলেন একজন রসূল, একজন নবী।

وَكَانَ یَأۡمُرُ أَهۡلَهُۥ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱلزَّكَوٰةِ وَكَانَ عِندَ رَبِّهِۦ مَرۡضِیࣰّا ﴿55﴾

আর তিনি তাঁর পরিজনবর্গকে নামাযের ও যাকাতের নির্দেশ দিয়েছিলেন, আর তাঁর প্রভুর কাছে তিনি ছিলেন সন্তোষভাজন।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ إِدۡرِیسَۚ إِنَّهُۥ كَانَ صِدِّیقࣰا نَّبِیࣰّا ﴿56﴾

আর কিতাবখানাতে ইদ্‌রীসের কথা স্মরণ করো। নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন সত্যপরায়ণ, একজন নবী।

وَرَفَعۡنَـٰهُ مَكَانًا عَلِیًّا ﴿57﴾

আর আমরা তাঁকে উন্নীত করেছিলাম অত্যুচ্চ পর্যায়ে।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِم مِّنَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ مِن ذُرِّیَّةِ ءَادَمَ وَمِمَّنۡ حَمَلۡنَا مَعَ نُوحࣲ وَمِن ذُرِّیَّةِ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ وَإِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ وَمِمَّنۡ هَدَیۡنَا وَٱجۡتَبَیۡنَاۤۚ إِذَا تُتۡلَىٰ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتُ ٱلرَّحۡمَـٰنِ خَرُّوا۟ سُجَّدࣰا وَبُكِیࣰّا ۩ ﴿58﴾

এরাই তাঁরা যাঁদের উপরে আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছিলেন, -- আদমসন্তানদের থেকে নবীদের মধ্যেকার, আর যাদের আমরা নূহের সাথে বহন করেছিলাম তাদের মধ্যেকার, আর ইব্রাহীম ও ইসমাইলের বংশধরদের মধ্যের এবং যাদের আমরা সৎপথে চালিয়েছিলাম ও মনোনীত করেছিলাম তাদের মধ্যেকার। যখনি পরম করুণাময়ের বাণী তাদের কাছে পাঠ করা হতো তারা লুটিয়ে পড়ত সিজদারত হয়ে ও অ‌শ্রুমোচন করতে করতে।

۞ فَخَلَفَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ خَلۡفٌ أَضَاعُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُوا۟ ٱلشَّهَوَ ٰ⁠تِۖ فَسَوۡفَ یَلۡقَوۡنَ غَیًّا ﴿59﴾

তারপর তাদের পরে এল পরবর্তিদল যারা নামায বাদ দিল ও কামনা-লালসার অনুসরণ করল, সেজন্য তারা অচিরেই দেখতে পাবে বঞ্চনা, --

إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحࣰا فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ یَدۡخُلُونَ ٱلۡجَنَّةَ وَلَا یُظۡلَمُونَ شَیۡـࣰٔا ﴿60﴾

তারা ছাড়া যে তওবা করে ও ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই তবে বেহেশতে প্রবেশ করবে, আর তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না, --

جَنَّـٰتِ عَدۡنٍ ٱلَّتِی وَعَدَ ٱلرَّحۡمَـٰنُ عِبَادَهُۥ بِٱلۡغَیۡبِۚ إِنَّهُۥ كَانَ وَعۡدُهُۥ مَأۡتِیࣰّا ﴿61﴾

নন্দন কানন যা পরম করুণাময় তাঁর বান্দাদের জন্য ওয়াদা করেছেন অদৃশ্য জগতে। নিঃসন্দেহ তাঁর প্রতি‌শ্রুতি সদাসর্বদা এসেই থাকে।

لَّا یَسۡمَعُونَ فِیهَا لَغۡوًا إِلَّا سَلَـٰمࣰاۖ وَلَهُمۡ رِزۡقُهُمۡ فِیهَا بُكۡرَةࣰ وَعَشِیࣰّا ﴿62﴾

তারা সেখানে শুনবে না কোনো খেলো কথা 'সালাম’ ব্যতীত। আর তাদের জন্য সেখানে রয়েছে তাদের রিযেক সকালে ও সন্ধ্যায়।

تِلۡكَ ٱلۡجَنَّةُ ٱلَّتِی نُورِثُ مِنۡ عِبَادِنَا مَن كَانَ تَقِیࣰّا ﴿63﴾

এই সেই বেহেশত যেটি আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে দিয়েছি আমাদের বান্দাদের মধ্যের তাদের যারা ধর্মপরায়ণ।

وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمۡرِ رَبِّكَۖ لَهُۥ مَا بَیۡنَ أَیۡدِینَا وَمَا خَلۡفَنَا وَمَا بَیۡنَ ذَ ٰ⁠لِكَۚ وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِیࣰّا ﴿64﴾

আর -- ''আমরা অবতরণ করি না তোমার প্রভুর নির্দেশ ব্যতীত, যা কিছু আমাদের সামনে রয়েছে ও যা কিছু আমাদের পেছনে আর যা কিছু রয়েছে এই দুইয়ের মধ্যে সে সমস্ত তাঁরই, আর তোমার প্রভু ভুলো নন।

رَّبُّ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَا فَٱعۡبُدۡهُ وَٱصۡطَبِرۡ لِعِبَـٰدَتِهِۦۚ هَلۡ تَعۡلَمُ لَهُۥ سَمِیࣰّا ﴿65﴾

''তিনি মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর এবং এ দুইয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তার প্রতিপালক প্রভু। সুতরাং তাঁকেই উপাসনা কর এবং তাঁর উপাসনায় অবিরাম সাধনা কর। তুমি কি কাউকে তাঁর সমকক্ষ জ্ঞান কর?’’

وَیَقُولُ ٱلۡإِنسَـٰنُ أَءِذَا مَا مِتُّ لَسَوۡفَ أُخۡرَجُ حَیًّا ﴿66﴾

আর লোকে বলে -- ''কি! আমি যখন মরে যাব তখন কি আমাকে বের করে আনা হবে জীবিত অবস্থায়?’’

أَوَلَا یَذۡكُرُ ٱلۡإِنسَـٰنُ أَنَّا خَلَقۡنَـٰهُ مِن قَبۡلُ وَلَمۡ یَكُ شَیۡـࣰٔا ﴿67﴾

কি? মানুষ কি স্মরণ করে না যে আমরা তাকে ইতিপূর্বে সৃষ্টি করেছিলাম যখন সে কিছুই ছিল না?

فَوَرَبِّكَ لَنَحۡشُرَنَّهُمۡ وَٱلشَّیَـٰطِینَ ثُمَّ لَنُحۡضِرَنَّهُمۡ حَوۡلَ جَهَنَّمَ جِثِیࣰّا ﴿68﴾

কাজেই তোমার প্রভুর কসম, আমরা অতি অবশ্য তাদের সমবেত করব, আর শয়তানদেরও, তারপর আমরা অবশ্যই তাদের হাজির করব জাহান্নামের চারিদিকে নতজানু অবস্থায়।

ثُمَّ لَنَنزِعَنَّ مِن كُلِّ شِیعَةٍ أَیُّهُمۡ أَشَدُّ عَلَى ٱلرَّحۡمَـٰنِ عِتِیࣰّا ﴿69﴾

তারপর আমরা নিশ্চয় বের করে আনব প্রত্যেক দল থেকে তাদের মধ্যের ওকে যে পরম করুণাময়ের প্রতি সর্বাধিক অবাধ্য।

ثُمَّ لَنَحۡنُ أَعۡلَمُ بِٱلَّذِینَ هُمۡ أَوۡلَىٰ بِهَا صِلِیࣰّا ﴿70﴾

আর আমরা নিশ্চয় ভাল জানি তাদের যারা নিজেরাই সেখানে দগ্ধ হবার জন্যে সব চাইতে যোগ্য।

وَإِن مِّنكُمۡ إِلَّا وَارِدُهَاۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ حَتۡمࣰا مَّقۡضِیࣰّا ﴿71﴾

আর তোমাদের মধ্যে এমন একজনও নেই যে সেখানে না আসবে, -- এটি তোমার প্রভুর জন্যে এক অনিবার্য সিদ্ধান্ত।

ثُمَّ نُنَجِّی ٱلَّذِینَ ٱتَّقَوا۟ وَّنَذَرُ ٱلظَّـٰلِمِینَ فِیهَا جِثِیࣰّا ﴿72﴾

আর আমরা উদ্ধার করব তাদের যারা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করে, আর অন্যায়কারীদের সেখানে রেখে দেব নতজানু অবস্থায়।

وَإِذَا تُتۡلَىٰ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتُنَا بَیِّنَـٰتࣲ قَالَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لِلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَیُّ ٱلۡفَرِیقَیۡنِ خَیۡرࣱ مَّقَامࣰا وَأَحۡسَنُ نَدِیࣰّا ﴿73﴾

আর যখন তাদের কাছে আমাদের সুস্পষ্ট বাণীসমূহ পড়া হয় তখন যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা বলে যারা বিশ্বাস করেছে তাদের -- ''দুই দলের মধ্যে কোনটি প্রতিষ্ঠার দিকে শ্রেষ্ঠতর ও জাঁকজমকে গুলজার?’’

وَكَمۡ أَهۡلَكۡنَا قَبۡلَهُم مِّن قَرۡنٍ هُمۡ أَحۡسَنُ أَثَـٰثࣰا وَرِءۡیࣰا ﴿74﴾

আর তাদের আগে কত মানবগোষ্ঠীকে আমরা ধ্বংস করেছি যারা ধনসম্পদে ও বাগাড়ন্বরে জমজমাট ছিল!

قُلۡ مَن كَانَ فِی ٱلضَّلَـٰلَةِ فَلۡیَمۡدُدۡ لَهُ ٱلرَّحۡمَـٰنُ مَدًّاۚ حَتَّىٰۤ إِذَا رَأَوۡا۟ مَا یُوعَدُونَ إِمَّا ٱلۡعَذَابَ وَإِمَّا ٱلسَّاعَةَ فَسَیَعۡلَمُونَ مَنۡ هُوَ شَرࣱّ مَّكَانࣰا وَأَضۡعَفُ جُندࣰا ﴿75﴾

বলো -- ''যে বিভ্রান্তিতে রয়েছে পরম করুণাময় তার জন্য ঢিলে দিয়ে লন্বা করে দেন যে পর্যন্ত না তারা দেখতে পায় যা তাদের ওয়াদা করা হয়েছিল -- হয় শাস্তি নয়তো ঘড়িঘন্টা, তখন তারা জানতে পারবে কে হচ্ছে অবস্থানে বেশী নিকৃষ্ট এবং শক্তিসামর্থের বেশী দুর্বল।’’

وَیَزِیدُ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ٱهۡتَدَوۡا۟ هُدࣰىۗ وَٱلۡبَـٰقِیَـٰتُ ٱلصَّـٰلِحَـٰتُ خَیۡرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابࣰا وَخَیۡرࣱ مَّرَدًّا ﴿76﴾

আর যারা সৎপথে চলে আল্লাহ্ তাদের সুগতি বাড়িয়ে দেন, আর স্থায়ী সৎকর্ম তোমার প্রভুর কাছে পুরস্কার প্রদানের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আর সুফল ফলনের জন্যেও সর্বশ্রেষ্ঠ।

أَفَرَءَیۡتَ ٱلَّذِی كَفَرَ بِـَٔایَـٰتِنَا وَقَالَ لَأُوتَیَنَّ مَالࣰا وَوَلَدًا ﴿77﴾

তুমি কি তাকে দেখেছ যে আমাদের বাণীসমূহ অবিশ্বাস করে ও বলে -- ''আমাকে আলবৎ ধনদৌলত ও সন্তানসন্ততি দেয়া হবে’’?

أَطَّلَعَ ٱلۡغَیۡبَ أَمِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحۡمَـٰنِ عَهۡدࣰا ﴿78﴾

সে কি অদৃশ্য সন্বন্ধে জেনে গেছে, না কি সে পরম করুণাময়ের কাছ থেকে কোনো চুক্তি আদায় করেছে?

كَلَّاۚ سَنَكۡتُبُ مَا یَقُولُ وَنَمُدُّ لَهُۥ مِنَ ٱلۡعَذَابِ مَدࣰّا ﴿79﴾

নিশ্চয়ই না! সে যা বলে তা সঙ্গে সঙ্গে আমরা লিখে রাখব, আর তার জন্য আমরা লম্বা করে দেব শাস্তির লম্বাই।

وَنَرِثُهُۥ مَا یَقُولُ وَیَأۡتِینَا فَرۡدࣰا ﴿80﴾

আর সে যা বলে সে ব্যাপারে আমরা তাকে উত্তরাধিকার করব, আর আমাদের কাছে সে আসবে নিঃসঙ্গ অবস্থায়।

وَٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِ ٱللَّهِ ءَالِهَةࣰ لِّیَكُونُوا۟ لَهُمۡ عِزࣰّا ﴿81﴾

আর তারা আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে অন্য উপাস্য গ্রহণ করেছে যেন তারা তাদের জন্য হতে পারে এক সহায় সন্বল।

كَلَّاۚ سَیَكۡفُرُونَ بِعِبَادَتِهِمۡ وَیَكُونُونَ عَلَیۡهِمۡ ضِدًّا ﴿82﴾

কখনোই না! তারা শীঘ্রই তাদের বন্দনা অস্বীকার করবে। আর তারা হবে এদের বিরোধিপক্ষ।

أَلَمۡ تَرَ أَنَّاۤ أَرۡسَلۡنَا ٱلشَّیَـٰطِینَ عَلَى ٱلۡكَـٰفِرِینَ تَؤُزُّهُمۡ أَزࣰّا ﴿83﴾

তুমি কি লক্ষ্য কর নি যে আমরা শয়তানদের পাঠিয়েছি অবিশ্বাসীদের নিকটে বিশেষ উসকানিতে উসকানি দিতে।

فَلَا تَعۡجَلۡ عَلَیۡهِمۡۖ إِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمۡ عَدࣰّا ﴿84﴾

সুতরাং তাদের জন্য ব্যস্ত হয়ো না। আমরা তো তাদের জন্য সংখ্যা গণনা করছি।

یَوۡمَ نَحۡشُرُ ٱلۡمُتَّقِینَ إِلَى ٱلرَّحۡمَـٰنِ وَفۡدࣰا ﴿85﴾

সেদিন ধর্মপরায়ণদের আমরা সমবেত করব পরম করুণাময়ের কাছে রাজদূতরূপে,

وَنَسُوقُ ٱلۡمُجۡرِمِینَ إِلَىٰ جَهَنَّمَ وِرۡدࣰا ﴿86﴾

আর অপরাধীদের আমরা তাড়িয়ে নেব জাহান্নামের দিকে তৃষ্ণাতুর অবস্থায়।

لَّا یَمۡلِكُونَ ٱلشَّفَـٰعَةَ إِلَّا مَنِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحۡمَـٰنِ عَهۡدࣰا ﴿87﴾

পরম করুণাময়ের নিকট থেকে যে কোনো কড়ার লাভ করেছে সে ব্যতীত কারোর সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবে না।

وَقَالُوا۟ ٱتَّخَذَ ٱلرَّحۡمَـٰنُ وَلَدࣰا ﴿88﴾

আর তারা বলে -- ''পরম করুণাময় একটি সন্তান গ্রহণ করেছেন।’’

لَّقَدۡ جِئۡتُمۡ شَیۡـًٔا إِدࣰّا ﴿89﴾

তোমরা অবশ্যই এক বিকট ব্যপার অবতারণা করেছ।

تَكَادُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تُ یَتَفَطَّرۡنَ مِنۡهُ وَتَنشَقُّ ٱلۡأَرۡضُ وَتَخِرُّ ٱلۡجِبَالُ هَدًّا ﴿90﴾

এর দ্বারা মহাকাশমন্ডল বিদীর্ণ হয়ে যাবার উপক্রম করছে আর পৃথিবী চূর্ণ-বিচূর্ণ হতে চলছে আর পাহাড়পর্বত খন্ডবিখন্ড হয়ে ভেঙ্গে পড়ছে --

أَن دَعَوۡا۟ لِلرَّحۡمَـٰنِ وَلَدࣰا ﴿91﴾

যেহেতু তারা পরম করুণাময়ের প্রতি সন্তান দাবি করছে।

وَمَا یَنۢبَغِی لِلرَّحۡمَـٰنِ أَن یَتَّخِذَ وَلَدًا ﴿92﴾

আর পরম করুণাময়ের পক্ষে এটি সমীচীন নয় যে তিনি সন্তান গ্রহণ করবেন।

إِن كُلُّ مَن فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ إِلَّاۤ ءَاتِی ٱلرَّحۡمَـٰنِ عَبۡدࣰا ﴿93﴾

মহাকাশমন্ডলে ও পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যে পরম করুণাময়ের কাছে আসবে বান্দারূপে ছাড়া।

لَّقَدۡ أَحۡصَىٰهُمۡ وَعَدَّهُمۡ عَدࣰّا ﴿94﴾

তিনি অবশ্যই তাদের হিসেব রেখেছেন, আর তিনি তাদের গণনা করছেন গুনতিতে।

وَكُلُّهُمۡ ءَاتِیهِ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ فَرۡدًا ﴿95﴾

আর তাদের সবকয়জনকেই কিয়ামতের দিনে তাঁর কাছে আসতে হবে নিঃসঙ্গ অবস্থায়।

إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ سَیَجۡعَلُ لَهُمُ ٱلرَّحۡمَـٰنُ وُدࣰّا ﴿96﴾

নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে তাদের জন্য পরম করুণাময় এখনি যোগান ধরবেন প্রেম।

فَإِنَّمَا یَسَّرۡنَـٰهُ بِلِسَانِكَ لِتُبَشِّرَ بِهِ ٱلۡمُتَّقِینَ وَتُنذِرَ بِهِۦ قَوۡمࣰا لُّدࣰّا ﴿97﴾

সুতরাং আমরা তো এটিকে তোমার মাতৃভাষায় সহজবোধ্য করে দিয়েছি যেন এর দ্বারা তুমি ধর্মপরায়ণদের সুসংবাদ দিতে পার আর এর দ্বারা সাবধান করে দিতে পার বিতর্কপ্রিয় সম্প্রদায়কে।

وَكَمۡ أَهۡلَكۡنَا قَبۡلَهُم مِّن قَرۡنٍ هَلۡ تُحِسُّ مِنۡهُم مِّنۡ أَحَدٍ أَوۡ تَسۡمَعُ لَهُمۡ رِكۡزَۢا ﴿98﴾

আর তাদের আগে আমরা কত মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি! তুমি কি তাদের মধ্যের একজনকেও দেখতে পাও অথবা তাদের থেকে গুনগুনানি শুনতে পাও?