Main pages

الۤمۤ ﴿1﴾

আলিফ, লাম, মীম।

ذَ ٰ⁠لِكَ ٱلۡكِتَـٰبُ لَا رَیۡبَۛ فِیهِۛ هُدࣰى لِّلۡمُتَّقِینَ ﴿2﴾

ঐ গ্রন্থ, এতে কোনো সন্দেহ নেই, মুত্তকীদের জন্য পথপ্রদর্শক --

ٱلَّذِینَ یُؤۡمِنُونَ بِٱلۡغَیۡبِ وَیُقِیمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَمِمَّا رَزَقۡنَـٰهُمۡ یُنفِقُونَ ﴿3﴾

যারা গায়েবে ঈমান আনে, আর নামায কায়েম করে, আর আমরা যে রিযেক তাদের দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে থাকে।

وَٱلَّذِینَ یُؤۡمِنُونَ بِمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ وَمَاۤ أُنزِلَ مِن قَبۡلِكَ وَبِٱلۡـَٔاخِرَةِ هُمۡ یُوقِنُونَ ﴿4﴾

আর তোমার কাছে যা-কিছু অবতীর্ণ হয়েছে তা’তে যারা ঈমান আনে, আর তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতেও, আর আখেরাত সন্বন্ধে যারা দৃঢ়বিশ্বাস রাখে।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ عَلَىٰ هُدࣰى مِّن رَّبِّهِمۡۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ﴿5﴾

এরাই আছে তাদের প্রভুর তরফ থেকে হেদায়তের উপরে, আর এরা নিজেরাই হচ্ছে সফলকাম।

إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ سَوَاۤءٌ عَلَیۡهِمۡ ءَأَنذَرۡتَهُمۡ أَمۡ لَمۡ تُنذِرۡهُمۡ لَا یُؤۡمِنُونَ ﴿6﴾

অবশ্যই যারা অবিশ্বাস পোষণ করে, তাদের তুমি সতর্ক কর বা তাদের সতর্ক নাই কর তাদের কাছে সবই সমান, ওরা ঈমান আনবে না।

خَتَمَ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمۡ وَعَلَىٰ سَمۡعِهِمۡۖ وَعَلَىٰۤ أَبۡصَـٰرِهِمۡ غِشَـٰوَةࣱۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ عَظِیمࣱ ﴿7﴾

আল্লাহ্ তাদের হৃদয়ে সীল মেরে দিয়েছেন, এবং তাদের কানেও, আর তাদের চোখের উপরে পর্দা। আর তাদের জন্য আছে কঠোর শাস্তি।

وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن یَقُولُ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَبِٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَمَا هُم بِمُؤۡمِنِینَ ﴿8﴾

আর মানুষের মাঝে কেউ-কেউ বলে থাকে -- “আমরা আল্লাহ্‌র প্রতি এবং আখেরাতের প্রতি ঈমান এনেছি”, অথচ তারা মুমিনদের মধ্যে নয়।

یُخَـٰدِعُونَ ٱللَّهَ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَمَا یَخۡدَعُونَ إِلَّاۤ أَنفُسَهُمۡ وَمَا یَشۡعُرُونَ ﴿9﴾

এরা চায় আল্লাহ্ ও যারা ঈমান এনেছে তারা যেন প্রতারিত হন। কিন্তু তারা প্রতারণা করছে নিজেদের ছাড়া আর কাউকে নয়, অথচ তারা বুঝতে পারছে না।

فِی قُلُوبِهِم مَّرَضࣱ فَزَادَهُمُ ٱللَّهُ مَرَضࣰاۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمُۢ بِمَا كَانُوا۟ یَكۡذِبُونَ ﴿10﴾

তাদের অন্তরে ব্যারাম, তাই আল্লাহ্ তাদের জন্য ব্যারাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, আর তাদের জন্য ব্যথাদায়ক শাস্তি, যেহেতু তারা মিথ্যা বলে চলেছে।

وَإِذَا قِیلَ لَهُمۡ لَا تُفۡسِدُوا۟ فِی ٱلۡأَرۡضِ قَالُوۤا۟ إِنَّمَا نَحۡنُ مُصۡلِحُونَ ﴿11﴾

আর যখন তাদের বলা হলো -- “দুনিয়াতে তোমরা গন্ডগোল সৃষ্টি কর না”, তারা বলে -- “না তো, আমরা শান্তিকামী।”

أَلَاۤ إِنَّهُمۡ هُمُ ٱلۡمُفۡسِدُونَ وَلَـٰكِن لَّا یَشۡعُرُونَ ﴿12﴾

তারা নিজেরাই কি নিশ্চয়ই গন্ডগোল সৃষ্টিকারী নয়? কিন্তু তারা বোঝে না।

وَإِذَا قِیلَ لَهُمۡ ءَامِنُوا۟ كَمَاۤ ءَامَنَ ٱلنَّاسُ قَالُوۤا۟ أَنُؤۡمِنُ كَمَاۤ ءَامَنَ ٱلسُّفَهَاۤءُۗ أَلَاۤ إِنَّهُمۡ هُمُ ٱلسُّفَهَاۤءُ وَلَـٰكِن لَّا یَعۡلَمُونَ ﴿13﴾

আর যখন তাদের বলা হলো -- “তোমরাও ঈমান আনো যেমন লোকেরা ঈমান এনেছে”, তারা বললে -- “আমরা কি বিশ্বাস করব যেমন মূর্খরা বিশ্বাস করছে?” তারা নিজেরাই কি নিঃসন্দেহে মূর্খ নয়? কিন্তু তারা জানে না।

وَإِذَا لَقُوا۟ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ قَالُوۤا۟ ءَامَنَّا وَإِذَا خَلَوۡا۟ إِلَىٰ شَیَـٰطِینِهِمۡ قَالُوۤا۟ إِنَّا مَعَكُمۡ إِنَّمَا نَحۡنُ مُسۡتَهۡزِءُونَ ﴿14﴾

আর যারা ঈমান এনেছে তাদের সাথে তারা যখন মিলিত হয় তখন বলে -- “আমরা ঈমান এনেছি” । আবার যখন তারা তাদের শয়তানদের সঙ্গে নিরিবিলি হয় তখন বলে -- “আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের সাথে, আমরা শুধু মস্করা করছিলাম।”

ٱللَّهُ یَسۡتَهۡزِئُ بِهِمۡ وَیَمُدُّهُمۡ فِی طُغۡیَـٰنِهِمۡ یَعۡمَهُونَ ﴿15﴾

আল্লাহ্ তাদের প্রতি মস্করা ঘুরিয়ে পাঠান, এবং তাদের অন্যায় ক্রিয়া-কলাপের মধ্যে ঘুরপাক খেতে তাদের ছেড়ে দেন।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ ٱشۡتَرَوُا۟ ٱلضَّلَـٰلَةَ بِٱلۡهُدَىٰ فَمَا رَبِحَت تِّجَـٰرَتُهُمۡ وَمَا كَانُوا۟ مُهۡتَدِینَ ﴿16﴾

এরাই তারা যারা পথনির্দেশের বদলে পথভ্রষ্টতার কেনাকাটা করে, তাই তাদের ব্যবসা মুনাফা আনে না, আর তারা সৎপথপ্রাপ্ত হয় না।

مَثَلُهُمۡ كَمَثَلِ ٱلَّذِی ٱسۡتَوۡقَدَ نَارࣰا فَلَمَّاۤ أَضَاۤءَتۡ مَا حَوۡلَهُۥ ذَهَبَ ٱللَّهُ بِنُورِهِمۡ وَتَرَكَهُمۡ فِی ظُلُمَـٰتࣲ لَّا یُبۡصِرُونَ ﴿17﴾

তাদের উপমা একজনের উদাহরণের মতো যিনি প্রদীপ জ্বালালেন, কিন্তু যখন এর চার পাশের সব-কিছু এ আলোকিত করল তখন আল্লাহ্ তাদের দীপ্তি নিয়ে নিলেন ও তাদের ফেলে রাখলেন ঘোর অন্ধকারে, তাই তারা পথঘাট দেখতে পায় না।

صُمُّۢ بُكۡمٌ عُمۡیࣱ فَهُمۡ لَا یَرۡجِعُونَ ﴿18﴾

কালা, বোবা, অন্ধত্ব, গতিকে তারা ফিরতে পারে না।

أَوۡ كَصَیِّبࣲ مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ فِیهِ ظُلُمَـٰتࣱ وَرَعۡدࣱ وَبَرۡقࣱ یَجۡعَلُونَ أَصَـٰبِعَهُمۡ فِیۤ ءَاذَانِهِم مِّنَ ٱلصَّوَ ٰ⁠عِقِ حَذَرَ ٱلۡمَوۡتِۚ وَٱللَّهُ مُحِیطُۢ بِٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿19﴾

অথবা আকাশ থেকে আসা ঝড় বৃষ্টির মতো -- তার মাঝে আছে গাঢ় অন্ধকার এবং বজ্রপাত ও বিদ্যুতের ঝলকানি। তারা তাদের গোটা আঙ্গুলগুলো চেপে ধরে তাদের কানের ভেতরে বজ্রের শব্দে মরার ভয়ে। কিন্তু আল্লাহ্ অবিশ্বাসীদের ঘিরে ফেলেন।

یَكَادُ ٱلۡبَرۡقُ یَخۡطَفُ أَبۡصَـٰرَهُمۡۖ كُلَّمَاۤ أَضَاۤءَ لَهُم مَّشَوۡا۟ فِیهِ وَإِذَاۤ أَظۡلَمَ عَلَیۡهِمۡ قَامُوا۟ۚ وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ لَذَهَبَ بِسَمۡعِهِمۡ وَأَبۡصَـٰرِهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿20﴾

বিদ্যুতের ঝলকানি তাদের দৃষ্টি প্রায় ছিনিয়ে নিচ্ছিল। যতবার এ তাদের জন্য ঝিলিক দেয়, তারা এর মধ্যে হেটে চলে, আর যখনি তাদের উপরে অন্ধকার নেমে আসে, তারা দাঁড়িয়ে পড়ে। অথচ আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তিনি নিশ্চয়ই তাদের শ্রবণশক্তি ও তাদের দৃষ্টিশক্তি নিয়ে নিতে পারতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সব-কিছুতে সর্বশক্তিমান।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ ٱعۡبُدُوا۟ رَبَّكُمُ ٱلَّذِی خَلَقَكُمۡ وَٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ﴿21﴾

ওহে মানবজাতি! তোমাদের প্রভুর উপাসনা করো, যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও, যাতে তোমরা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করো।

ٱلَّذِی جَعَلَ لَكُمُ ٱلۡأَرۡضَ فِرَ ٰ⁠شࣰا وَٱلسَّمَاۤءَ بِنَاۤءࣰ وَأَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ مَاۤءࣰ فَأَخۡرَجَ بِهِۦ مِنَ ٱلثَّمَرَ ٰ⁠تِ رِزۡقࣰا لَّكُمۡۖ فَلَا تَجۡعَلُوا۟ لِلَّهِ أَندَادࣰا وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿22﴾

যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে ফরাশ বানিয়েছেন, আর আকাশকে চাঁদোয়া, আর তিনি আকাশ থেকে পাঠান বৃষ্টি, তা’ দিয়ে তারপর ফলফসল উৎপাদন করেন তোমাদের জন্য রিযেক হিসেবে। অতএব আল্লাহ্‌র সাথে প্রতিদ্বন্ধী খাড়া করো না, অধিকন্তু তোমরা জানো।

وَإِن كُنتُمۡ فِی رَیۡبࣲ مِّمَّا نَزَّلۡنَا عَلَىٰ عَبۡدِنَا فَأۡتُوا۟ بِسُورَةࣲ مِّن مِّثۡلِهِۦ وَٱدۡعُوا۟ شُهَدَاۤءَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿23﴾

আর যদি তোমরা সন্দেহের মাঝে থাকো এর সন্বন্ধে যা আমাদের বান্দার কাছে অবতারণ করেছি তা হলে এর মতো একটিমাত্র সূরা নিয়ে এস এবং আল্লাহ্ ছাড়া তোমাদের সাহায্যকারীদের ডাকো, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।

فَإِن لَّمۡ تَفۡعَلُوا۟ وَلَن تَفۡعَلُوا۟ فَٱتَّقُوا۟ ٱلنَّارَ ٱلَّتِی وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُۖ أُعِدَّتۡ لِلۡكَـٰفِرِینَ ﴿24﴾

কিন্তু যদি তোমরা না করো -- আর তোমরা কখনো পারবে না -- তাহলে আগুনকে ভয় কর যার জ্বালানি হচ্ছে মানুষ এবং পাথরগুলো, -- তৈরি হয়েছে অবিশ্বাসীদের জন্য।

وَبَشِّرِ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ أَنَّ لَهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُۖ كُلَّمَا رُزِقُوا۟ مِنۡهَا مِن ثَمَرَةࣲ رِّزۡقࣰا قَالُوا۟ هَـٰذَا ٱلَّذِی رُزِقۡنَا مِن قَبۡلُۖ وَأُتُوا۟ بِهِۦ مُتَشَـٰبِهࣰاۖ وَلَهُمۡ فِیهَاۤ أَزۡوَ ٰ⁠جࣱ مُّطَهَّرَةࣱۖ وَهُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿25﴾

আর খুশখবর দাও তাদের যারা ঈমান এনেছে আর সৎকর্ম করে, তাদের জন্য আছে জান্নাত, যাদের নিচ দিয়ে বয়ে চলেছে ঝরনারাজি! যতবার এ থেকে ফলফসল তাদের খেতে দেয়া হয় তারা বলে -- “এ সেই যা এর আগে আমাদের খাওয়ানো হয়েছিল”, কারণ তাদের এ দেয়া হয় অনুকরণে। আর তাদের জন্য এর মধ্যে আছে পবিত্র সঙ্গিসাথী আর এতে তারা থাকবে চিরকাল।

۞ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَسۡتَحۡیِۦۤ أَن یَضۡرِبَ مَثَلࣰا مَّا بَعُوضَةࣰ فَمَا فَوۡقَهَاۚ فَأَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ فَیَعۡلَمُونَ أَنَّهُ ٱلۡحَقُّ مِن رَّبِّهِمۡۖ وَأَمَّا ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ فَیَقُولُونَ مَاذَاۤ أَرَادَ ٱللَّهُ بِهَـٰذَا مَثَلࣰاۘ یُضِلُّ بِهِۦ كَثِیرࣰا وَیَهۡدِی بِهِۦ كَثِیرࣰاۚ وَمَا یُضِلُّ بِهِۦۤ إِلَّا ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿26﴾

অবশ্যই আল্লাহ্ উপমা ছুড়ঁতে লজ্জিত হন না, যথা মশার অথবা তার চাইতে উপরের কিছুর। সুতরাং যারা ঈমান এনেছে তারা জানে যে এ নিশ্চয়ই তাদের প্রভুর কাছ থেকে সত্য। আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা বলে -- “আল্লাহ্ এমন একটি উপমাদ্বারা কী চান?” এর দ্বারা তিনি অনেককে বিপথে চলতে দেন এবং অনেককে এর সাহায্যে সৎপথগামী করেন। তিনি কিন্তু ভ্রষ্টাচারী ভিন্ন কাউকেও এর মাধ্যমে বিপথে চলতে দেন না।

ٱلَّذِینَ یَنقُضُونَ عَهۡدَ ٱللَّهِ مِنۢ بَعۡدِ مِیثَـٰقِهِۦ وَیَقۡطَعُونَ مَاۤ أَمَرَ ٱللَّهُ بِهِۦۤ أَن یُوصَلَ وَیُفۡسِدُونَ فِی ٱلۡأَرۡضِۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡخَـٰسِرُونَ ﴿27﴾

যারা আল্লাহ্‌র চুক্তি ভঙ্গ করে এর সুদৃঢ়ীকরণ হবার পরেও, আর কেটে দেয় যা এর দ্বারা বহাল রাখার জন্য আল্লাহ্ আদেশ করেছিলেন, আর পৃথিবীতে ফসাদ সৃষ্টি করে। তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

كَیۡفَ تَكۡفُرُونَ بِٱللَّهِ وَكُنتُمۡ أَمۡوَ ٰ⁠تࣰا فَأَحۡیَـٰكُمۡۖ ثُمَّ یُمِیتُكُمۡ ثُمَّ یُحۡیِیكُمۡ ثُمَّ إِلَیۡهِ تُرۡجَعُونَ ﴿28﴾

তোমরা কেমন করে আল্লাহ্‌র প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করো যেহেতু তোমরা নিস্প্রাণ ছিলে, তখন তোমাদের তিনি জীবন দান করেছেন? তারপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন ও আবার তোমাদের পুনর্জীবিত করবেন, তখন তাঁরই দরবারে তোমাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে।

هُوَ ٱلَّذِی خَلَقَ لَكُم مَّا فِی ٱلۡأَرۡضِ جَمِیعࣰا ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰۤ إِلَى ٱلسَّمَاۤءِ فَسَوَّىٰهُنَّ سَبۡعَ سَمَـٰوَ ٰ⁠تࣲۚ وَهُوَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمࣱ ﴿29﴾

তিনিই সেইজন যিনি ঘূর্ণায়মান-পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সবই তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন, তাছাড়া তিনি মহাকাশের প্রতি খেয়াল করলেন, তাই তাদের তিনি সাত আসমানে পরিপূর্ণ করলেন। আর তিনি সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।

وَإِذۡ قَالَ رَبُّكَ لِلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ إِنِّی جَاعِلࣱ فِی ٱلۡأَرۡضِ خَلِیفَةࣰۖ قَالُوۤا۟ أَتَجۡعَلُ فِیهَا مَن یُفۡسِدُ فِیهَا وَیَسۡفِكُ ٱلدِّمَاۤءَ وَنَحۡنُ نُسَبِّحُ بِحَمۡدِكَ وَنُقَدِّسُ لَكَۖ قَالَ إِنِّیۤ أَعۡلَمُ مَا لَا تَعۡلَمُونَ ﴿30﴾

আর স্মরণ কর, -- তোমার প্রভু ফিরিশ্‌তাদের বললেন, “আমি অবশ্যই পৃথিবীতে খলিফা বসাতে যাচ্ছি।” তারা বলল -- “তুমি কি উহাতে এমন কাউকে বসাচ্ছ যে তার মধ্যে ফসাদ সৃষ্টি করবে ও রক্তপাত করবে, অথচ আমরা তোমার স্তুতির গুণগান করছি ও তোমারই পবিত্রতার জয়গান গাইছি।” তিনি বললেন -- “আমি নিঃসন্দেহে তা জানি যা তোমরা জানো না।”

وَعَلَّمَ ءَادَمَ ٱلۡأَسۡمَاۤءَ كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمۡ عَلَى ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ فَقَالَ أَنۢبِـُٔونِی بِأَسۡمَاۤءِ هَـٰۤؤُلَاۤءِ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿31﴾

তখন তিনি আদমকে নামাবলী -- তাদের সব-কিছু শিখিয়ে দিলেন, তারপর তিনি ফিরিশ্‌তাদের কাছে তাদের স্থাপন করলেন ও বললেন, -- “আমাকে এই সমস্তের নামাবলী বর্ণনা কর, যদি তোমরা সঠিক হয়ে থাকো।”

قَالُوا۟ سُبۡحَـٰنَكَ لَا عِلۡمَ لَنَاۤ إِلَّا مَا عَلَّمۡتَنَاۤۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡعَلِیمُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿32﴾

তারা বলল -- “তোমারই সব মহিমা! আমাদের যা শিখিয়েছ তা ছাড়া আমাদের জ্ঞান নেই! নিঃসন্দেহ তুমি নিজেই সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।”

قَالَ یَـٰۤـَٔادَمُ أَنۢبِئۡهُم بِأَسۡمَاۤىِٕهِمۡۖ فَلَمَّاۤ أَنۢبَأَهُم بِأَسۡمَاۤىِٕهِمۡ قَالَ أَلَمۡ أَقُل لَّكُمۡ إِنِّیۤ أَعۡلَمُ غَیۡبَ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ وَأَعۡلَمُ مَا تُبۡدُونَ وَمَا كُنتُمۡ تَكۡتُمُونَ ﴿33﴾

তিনি বললেন -- “হে আদম! এ-সবের নামাবলী এদের কাছে বর্ণনা কর।” তাই সে যখন তাদের কাছে এ-সবের নামাবলী বর্ণনা করল, তিনি বললেন -- “আমি কি তোমাদের বলি নি যে আমি নিশ্চয়ই মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রহস্যসব জানি? আর আমি জানি যা তোমরা প্রকাশ করেছ, আর যা তোমরা লুকিয়ে রেখে চলেছ।”

وَإِذۡ قُلۡنَا لِلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ ٱسۡجُدُوا۟ لِـَٔادَمَ فَسَجَدُوۤا۟ إِلَّاۤ إِبۡلِیسَ أَبَىٰ وَٱسۡتَكۡبَرَ وَكَانَ مِنَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿34﴾

আর স্মরণ করো! আমরা ফিরিশ্‌তাদের বললাম -- “আদমের প্রতি সিজদা করো।” সুতরাং তারা সিজদা করল, কিন্তু ইবলিস করলনা, কারণ সে ছিল কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত।

وَقُلۡنَا یَـٰۤـَٔادَمُ ٱسۡكُنۡ أَنتَ وَزَوۡجُكَ ٱلۡجَنَّةَ وَكُلَا مِنۡهَا رَغَدًا حَیۡثُ شِئۡتُمَا وَلَا تَقۡرَبَا هَـٰذِهِ ٱلشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿35﴾

আর আমরা বললাম, -- “হে আদম! তুমি ও তোমার সঙ্গিনী এই বাগানে অবস্থান কর, আর সেখান থেকে যখন-যেখানে ইচ্ছা কর ভরপুরভাবে পানাহার কর, কিন্তু এই বৃক্ষের ধারেকাছেও যেও না, নতুবা তোমরা দুরাচারদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।”

فَأَزَلَّهُمَا ٱلشَّیۡطَـٰنُ عَنۡهَا فَأَخۡرَجَهُمَا مِمَّا كَانَا فِیهِۖ وَقُلۡنَا ٱهۡبِطُوا۟ بَعۡضُكُمۡ لِبَعۡضٍ عَدُوࣱّۖ وَلَكُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ مُسۡتَقَرࣱّ وَمَتَـٰعٌ إِلَىٰ حِینࣲ ﴿36﴾

কিন্তু শয়তান তাদের সেখান থেকে পদস্খলিত করল, আর যেখানে তারা থাকত সেখান থেকে তাদের বের করে দিল। তখন আমরা বললাম -- “তোমরা অধঃপাতে যাও, তোমাদের কেউ কেউ একে অন্যের শত্রু। আর তোমাদের জন্য পৃথিবীতে আছে জিরানোর স্থান ও কিছু সময়ের সংস্থান।”

فَتَلَقَّىٰۤ ءَادَمُ مِن رَّبِّهِۦ كَلِمَـٰتࣲ فَتَابَ عَلَیۡهِۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِیمُ ﴿37﴾

তখন আদম তার প্রভুর কাছ থেকে কিছু কথা শিখে নিলে, তাই তিনি তার দিকে ফিরলেন। নিঃসন্দেহ তিনি নিজেই সদা ফেরেন, অফুরন্ত ফলদাতা।

قُلۡنَا ٱهۡبِطُوا۟ مِنۡهَا جَمِیعࣰاۖ فَإِمَّا یَأۡتِیَنَّكُم مِّنِّی هُدࣰى فَمَن تَبِعَ هُدَایَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿38﴾

আমরা বললাম -- “তোমরা সব্বাই মিলে এখান থেকে নেমে পড়ো। কিন্তু যদি তোমাদের কাছে আমার তরফ থেকে হেদায়ত আসে, তবে যারা আমার পথনির্দেশ মেনে চলবে তাদের উপর কিন্তু কোনো ভয় নেই, আর তারা নিজেরা অনুতাপও করবে না।

وَٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔایَـٰتِنَاۤ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿39﴾

“কিন্তু যারা অবিশ্বাস পোষণ করে ও আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করে, তারাই হচ্ছে আগুনের বাসিন্দা, তারা তার মধ্যে থাকবে দীর্ঘকাল।”

یَـٰبَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ ٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَتِیَ ٱلَّتِیۤ أَنۡعَمۡتُ عَلَیۡكُمۡ وَأَوۡفُوا۟ بِعَهۡدِیۤ أُوفِ بِعَهۡدِكُمۡ وَإِیَّـٰیَ فَٱرۡهَبُونِ ﴿40﴾

হে ইসরাইলের বংশধরগণ! আমার নিয়ামত স্মরণ করো, যা আমি তোমাদের প্রদান করেছিলাম, আর আমার সাথের চুক্তি তোমরা বহাল রাখো, আমিও তোমাদের সাথের চুক্তি বহাল রাখব। আর আমাকে, শুধু আমাকে, তোমরা ভয় করবে।

وَءَامِنُوا۟ بِمَاۤ أَنزَلۡتُ مُصَدِّقࣰا لِّمَا مَعَكُمۡ وَلَا تَكُونُوۤا۟ أَوَّلَ كَافِرِۭ بِهِۦۖ وَلَا تَشۡتَرُوا۟ بِـَٔایَـٰتِی ثَمَنࣰا قَلِیلࣰا وَإِیَّـٰیَ فَٱتَّقُونِ ﴿41﴾

আর আমি যা অবতারণ করেছি তাতে তোমরা ঈমান আনো, -- তোমাদের কাছে যা রয়েছে তার সত্য-সমর্থনরূপে, এমতাবস্থায় তোমরা এতে অবিশ্বাসকারীদের পুরোভাগে থেকো না, আর আমার প্রত্যাদেশের বিনিময়ে তুচ্ছ বস্তু কামাতে যেও না, আর আমাকে, শুধু আমাকে, তোমরা ভয়-শ্রদ্ধা করবে।

وَلَا تَلۡبِسُوا۟ ٱلۡحَقَّ بِٱلۡبَـٰطِلِ وَتَكۡتُمُوا۟ ٱلۡحَقَّ وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿42﴾

আর সত্যকে তোমরা মিথ্যার পোশাক পরিয়ো না বা সত্যকে গোপন কর না, অথচ তোমরা জানো।

وَأَقِیمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱرۡكَعُوا۟ مَعَ ٱلرَّ ٰ⁠كِعِینَ ﴿43﴾

আর তোমরা নামায কায়েম করো ও যাকাত আদায় করো, আর রুকুকারীদের সাথে রুকু করো।

۞ أَتَأۡمُرُونَ ٱلنَّاسَ بِٱلۡبِرِّ وَتَنسَوۡنَ أَنفُسَكُمۡ وَأَنتُمۡ تَتۡلُونَ ٱلۡكِتَـٰبَۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ ﴿44﴾

তোমরা কি লোকজনকে ধার্মিকতা করতে আদেশ কর আর নিজের বেলায় স্রেফ ভুলে যাও, অথচ তোমরা ধর্মগ্রন্থ পড়ে থাক? তোমাদের কি কান্ডজ্ঞান নেই?

وَٱسۡتَعِینُوا۟ بِٱلصَّبۡرِ وَٱلصَّلَوٰةِۚ وَإِنَّهَا لَكَبِیرَةٌ إِلَّا عَلَى ٱلۡخَـٰشِعِینَ ﴿45﴾

আর তোমরা ধৈর্য ধরে ও নামায পড়ে সাহায্য কামনা করো। আর এটি নিশ্চয়ই বড় কঠিন, শুধু বিনয়ীদের ছাড়া, --

ٱلَّذِینَ یَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلَـٰقُوا۟ رَبِّهِمۡ وَأَنَّهُمۡ إِلَیۡهِ رَ ٰ⁠جِعُونَ ﴿46﴾

যারা স্মরণ রাখে যে তারা নিশ্চয়ই তাদের প্রভুর সাথে মোলাকাত করতে যাচ্ছে, আর তারা অবশ্যই তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তনকারী।

یَـٰبَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ ٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَتِیَ ٱلَّتِیۤ أَنۡعَمۡتُ عَلَیۡكُمۡ وَأَنِّی فَضَّلۡتُكُمۡ عَلَى ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿47﴾

হে ইসরাইলের বংশধরগণ! আমার নিয়ামত স্মরণ করো যা আমি তোমাদের প্রদান করেছিলাম ও কিভাবে মানবগোষ্ঠীর উপর তোমাদের মর্যাদা দিয়েছিলাম।

وَٱتَّقُوا۟ یَوۡمࣰا لَّا تَجۡزِی نَفۡسٌ عَن نَّفۡسࣲ شَیۡـࣰٔا وَلَا یُقۡبَلُ مِنۡهَا شَفَـٰعَةࣱ وَلَا یُؤۡخَذُ مِنۡهَا عَدۡلࣱ وَلَا هُمۡ یُنصَرُونَ ﴿48﴾

আর সতর্কতা অবলন্বন করো এমন এক দিনের একজন অন্যজনের কাছ থেকে কোনো প্রকার সাহায্য পাবে না, আর তার থেকে কোনো সুপারিশ কবুল করা হবে না বা তার থেকে কোনো খেসারতও নেওয়া হবে না, আর তাদের সাহায্য দেয়া হবে না।

وَإِذۡ نَجَّیۡنَـٰكُم مِّنۡ ءَالِ فِرۡعَوۡنَ یَسُومُونَكُمۡ سُوۤءَ ٱلۡعَذَابِ یُذَبِّحُونَ أَبۡنَاۤءَكُمۡ وَیَسۡتَحۡیُونَ نِسَاۤءَكُمۡۚ وَفِی ذَ ٰ⁠لِكُم بَلَاۤءࣱ مِّن رَّبِّكُمۡ عَظِیمࣱ ﴿49﴾

আর স্মরণ করো! তোমাদের আমরা ফিরআউনের লোকদের থেকে মুক্ত করেছিলাম, যারা তোমাদের নির্যাতন করেছিল কঠোর যন্ত্রণায়, তারা হত্যা করত তোমাদের পুত্র সন্তানদের ও বাঁচতে দিত তোমাদের নারীদের। আর এতে তোমাদের জন্যে তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে ছিল কঠোর পরীক্ষা।

وَإِذۡ فَرَقۡنَا بِكُمُ ٱلۡبَحۡرَ فَأَنجَیۡنَـٰكُمۡ وَأَغۡرَقۡنَاۤ ءَالَ فِرۡعَوۡنَ وَأَنتُمۡ تَنظُرُونَ ﴿50﴾

আর স্মরণ করো! আমরা তোমাদের জন্যে সাগরকে করেছিলাম বিভক্ত, তাতে উদ্ধার করেছিলাম তোমাদের, আর আমরা ডুবিয়েছিলাম ফিরআউনের লোকদের, আর তোমরা চেয়ে দেখেছিলে।

وَإِذۡ وَ ٰ⁠عَدۡنَا مُوسَىٰۤ أَرۡبَعِینَ لَیۡلَةࣰ ثُمَّ ٱتَّخَذۡتُمُ ٱلۡعِجۡلَ مِنۢ بَعۡدِهِۦ وَأَنتُمۡ ظَـٰلِمُونَ ﴿51﴾

আর স্মরণ করো! আমরা মূসার সঙ্গে চল্লিশ রাত্রি নির্ধারিত করেছিলাম, তখন তোমরা বাছুরকে তাঁর অনুপস্থিতিতে গ্রহণ করলে, আর তোমরা হলে অন্যায়কারী।

ثُمَّ عَفَوۡنَا عَنكُم مِّنۢ بَعۡدِ ذَ ٰ⁠لِكَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿52﴾

শেষে এর পরেও আমরা তোমাদের ক্ষমা করেছিলাম যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।

وَإِذۡ ءَاتَیۡنَا مُوسَى ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡفُرۡقَانَ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ﴿53﴾

আর স্মরণ করো! আমরা মূসাকে দিয়েছিলাম ধর্মগ্রন্থ তথা ফুরকান যাতে তোমরা সুপথগামী হতে পার।

وَإِذۡ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوۡمِهِۦ یَـٰقَوۡمِ إِنَّكُمۡ ظَلَمۡتُمۡ أَنفُسَكُم بِٱتِّخَاذِكُمُ ٱلۡعِجۡلَ فَتُوبُوۤا۟ إِلَىٰ بَارِىِٕكُمۡ فَٱقۡتُلُوۤا۟ أَنفُسَكُمۡ ذَ ٰ⁠لِكُمۡ خَیۡرࣱ لَّكُمۡ عِندَ بَارِىِٕكُمۡ فَتَابَ عَلَیۡكُمۡۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِیمُ ﴿54﴾

আর স্মরণ করো! মূসা তাঁর লোকদের বলেছিলেন, -- “হে আমার অনুচরবর্গ, তোমরা নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতি অন্যায় করেছ বাছুরকে গ্রহণ ক’রে, অতএব তোমাদের সৃষ্টিকর্তার দিকে ফেরো ও নিজেদের সংহার করো। ইহা তোমাদের সৃষ্টিকর্তার সমীপে তোমাদের জন্য মঙ্গলময়।” তাই তিনি তোমাদের দিকে ফিরলেন। নিঃসন্দেহ তিনি নিজেই সদা ফেরেন, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَإِذۡ قُلۡتُمۡ یَـٰمُوسَىٰ لَن نُّؤۡمِنَ لَكَ حَتَّىٰ نَرَى ٱللَّهَ جَهۡرَةࣰ فَأَخَذَتۡكُمُ ٱلصَّـٰعِقَةُ وَأَنتُمۡ تَنظُرُونَ ﴿55﴾

আর স্মরণ করো! তোমরা বললে -- “হে মূসা, আমরা তোমার প্রতি কখনো ঈমান আনব না যে পর্যন্ত না আমরা প্রকাশ্যভাবে আল্লাহ্‌কে দেখতে পাই।” তাই বজ্রাঘাত তোমাদের পাকড়ালো, আর তোমরা তাকিয়ে থাকলে।

ثُمَّ بَعَثۡنَـٰكُم مِّنۢ بَعۡدِ مَوۡتِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿56﴾

তারপর তোমাদের জাগিয়ে তুললাম তোমাদের মৃতবৎ হবার পরে, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে পার।

وَظَلَّلۡنَا عَلَیۡكُمُ ٱلۡغَمَامَ وَأَنزَلۡنَا عَلَیۡكُمُ ٱلۡمَنَّ وَٱلسَّلۡوَىٰۖ كُلُوا۟ مِن طَیِّبَـٰتِ مَا رَزَقۡنَـٰكُمۡۚ وَمَا ظَلَمُونَا وَلَـٰكِن كَانُوۤا۟ أَنفُسَهُمۡ یَظۡلِمُونَ ﴿57﴾

আর তোমাদের উপরে আমরা মেঘ দিয়ে আচ্ছাদন করেছিলাম, আর তোমাদের কাছে পাঠিয়েছিলাম 'মান্না’ ও 'সালওয়া’। “তোমাদের যে-সব ভাল ভাল রিযেক দিয়েছি তা খেয়ে যাও।” কিন্তু তারা আমাদের কোনো অনিষ্ট করে নি, বরং তারা নিজেদেরই প্রতি অনিষ্ট করছিল।

وَإِذۡ قُلۡنَا ٱدۡخُلُوا۟ هَـٰذِهِ ٱلۡقَرۡیَةَ فَكُلُوا۟ مِنۡهَا حَیۡثُ شِئۡتُمۡ رَغَدࣰا وَٱدۡخُلُوا۟ ٱلۡبَابَ سُجَّدࣰا وَقُولُوا۟ حِطَّةࣱ نَّغۡفِرۡ لَكُمۡ خَطَـٰیَـٰكُمۡۚ وَسَنَزِیدُ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿58﴾

আর স্মরণ করো! আমরা বললাম -- “এই শহরে প্রবেশ কর, আর সেখান থেকে যখন-যেখানে ইচ্ছা কর ভরপুরভাবে পানাহার করো, আর সদর-দরজা দিয়ে নতশিরে প্রবেশ করো ও বলো 'হিৎতাতুন’, যাতে তোমাদের দোষত্রুটিগুলো আমরা তোমাদের জন্য ক্ষমা করে দিতে পারি, আর বাড়িয়ে দিতে পারি শুভকর্মীদের জন্য।”

فَبَدَّلَ ٱلَّذِینَ ظَلَمُوا۟ قَوۡلًا غَیۡرَ ٱلَّذِی قِیلَ لَهُمۡ فَأَنزَلۡنَا عَلَى ٱلَّذِینَ ظَلَمُوا۟ رِجۡزࣰا مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ بِمَا كَانُوا۟ یَفۡسُقُونَ ﴿59﴾

কিন্তু যারা অন্যায় করে তারা যা বলা হয়েছিল তার বিপরীত কথায় তা বদলে দিল। তাই যারা অন্যায় করেছিল তাদের উপরে আকাশ থেকে আমরা মহামারী পাঠিয়েছিলাম, কারণ তারা পাপাচার করছিল।

۞ وَإِذِ ٱسۡتَسۡقَىٰ مُوسَىٰ لِقَوۡمِهِۦ فَقُلۡنَا ٱضۡرِب بِّعَصَاكَ ٱلۡحَجَرَۖ فَٱنفَجَرَتۡ مِنۡهُ ٱثۡنَتَا عَشۡرَةَ عَیۡنࣰاۖ قَدۡ عَلِمَ كُلُّ أُنَاسࣲ مَّشۡرَبَهُمۡۖ كُلُوا۟ وَٱشۡرَبُوا۟ مِن رِّزۡقِ ٱللَّهِ وَلَا تَعۡثَوۡا۟ فِی ٱلۡأَرۡضِ مُفۡسِدِینَ ﴿60﴾

আর স্মরণ করো! মূসা তাঁর লোকদের জন্য পানি চাইলেন, তাই আমরা বললাম, -- “তোমার লাঠি দিয়ে পাথরে আঘাত করো।” তখন তা থেকে বারোটি প্রস্রবন বেরিয়ে পড়লো। প্রত্যেক উপদল নিজ জলপান-স্থান চিনে নিলো। “আল্লাহ্‌র রিযেক থেকে খাও ও পান করো, আর ফসাদী হয়ে দুনিয়াতে অন্যায়াচরণ করো না।”

وَإِذۡ قُلۡتُمۡ یَـٰمُوسَىٰ لَن نَّصۡبِرَ عَلَىٰ طَعَامࣲ وَ ٰ⁠حِدࣲ فَٱدۡعُ لَنَا رَبَّكَ یُخۡرِجۡ لَنَا مِمَّا تُنۢبِتُ ٱلۡأَرۡضُ مِنۢ بَقۡلِهَا وَقِثَّاۤىِٕهَا وَفُومِهَا وَعَدَسِهَا وَبَصَلِهَاۖ قَالَ أَتَسۡتَبۡدِلُونَ ٱلَّذِی هُوَ أَدۡنَىٰ بِٱلَّذِی هُوَ خَیۡرٌۚ ٱهۡبِطُوا۟ مِصۡرࣰا فَإِنَّ لَكُم مَّا سَأَلۡتُمۡۗ وَضُرِبَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلذِّلَّةُ وَٱلۡمَسۡكَنَةُ وَبَاۤءُو بِغَضَبࣲ مِّنَ ٱللَّهِۗ ذَ ٰ⁠لِكَ بِأَنَّهُمۡ كَانُوا۟ یَكۡفُرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَیَقۡتُلُونَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ بِغَیۡرِ ٱلۡحَقِّۗ ذَ ٰ⁠لِكَ بِمَا عَصَوا۟ وَّكَانُوا۟ یَعۡتَدُونَ ﴿61﴾

আর স্মরণ করো! তোমরা বলেছিলে -- “হে মূসা! আমরা একই খাবারে সন্তষ্ট থাকতে পারছি না, তাই তোমার প্রভুর কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করো যাতে তিনি আমাদের জন্য উৎপন্ন করেন মাটি যা উৎপাদিত করে, যেমন তার সবজি ও তার শস্য ও তার মসূর ও তার পেয়াঁজ।” তিনি বললেন -- “তোমরা কি বদল করে নিতে চাও যা নিকৃষ্ট তার সঙ্গে যা উৎকৃষ্ট? নেমে যাও কোনো মিশরে, তাহলে তোমরা যা চাও তাই পাবে।” আর ওরা নিজেদের উপরে লাঞ্ছনা ও দুর্দশা ঘটালো, আর তারা আল্লাহ্‌র রোষ টেনে আনল তাই হলো, কারণ তারা আল্লাহ্‌র আয়াতসমূহে অবিশ্বাস করছিল, আর নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করতে যাচ্ছিল। তাই হলো, কেননা তারা অবাধ্য হয়েছিল ও সীমালঙ্ঘন করেছিল।

إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَٱلَّذِینَ هَادُوا۟ وَٱلنَّصَـٰرَىٰ وَٱلصَّـٰبِـِٔینَ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَعَمِلَ صَـٰلِحࣰا فَلَهُمۡ أَجۡرُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ وَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿62﴾

নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে, আর যারা ইহুদীয় মত পোষণ করে ও খ্রীস্টান ও সাবেঈন -- যারাই আল্লাহ্‌র প্রতি তাঁর একত্বে ও আনুগত্যে ঈমান এনেছে ও আখেরাতের দিনের প্রতি, আর সৎকর্ম করে, তাদের জন্য নিজ নিজ পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রভুর দরবারে, আর তাদের উপরে কোনো ভয় নেই, আর তারা নিজেরা অনুতাপও করবে না।

وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِیثَـٰقَكُمۡ وَرَفَعۡنَا فَوۡقَكُمُ ٱلطُّورَ خُذُوا۟ مَاۤ ءَاتَیۡنَـٰكُم بِقُوَّةࣲ وَٱذۡكُرُوا۟ مَا فِیهِ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ﴿63﴾

আর স্মরণ করো! আমরা তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম ও তোমাদের উপরে পর্বত উত্তোলন করেছিলাম। “তোমাদের আমরা যা দিয়েছি তা দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করো, আর এতে যা আছে তা স্মরণ রাখো, যাতে তোমরা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করতে পার।”

ثُمَّ تَوَلَّیۡتُم مِّنۢ بَعۡدِ ذَ ٰ⁠لِكَۖ فَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهُۥ لَكُنتُم مِّنَ ٱلۡخَـٰسِرِینَ ﴿64﴾

তারপর তোমরা এর পরেও ফিরে গেলে, কাজেই আল্লাহ্‌র প্রসন্নতা ও তাঁর করুণা যদি তোমাদের উপরে না থাকত তবে তোমরা অবশ্যই হতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।

وَلَقَدۡ عَلِمۡتُمُ ٱلَّذِینَ ٱعۡتَدَوۡا۟ مِنكُمۡ فِی ٱلسَّبۡتِ فَقُلۡنَا لَهُمۡ كُونُوا۟ قِرَدَةً خَـٰسِـِٔینَ ﴿65﴾

তদুপরি তোমাদের মধ্যে যারা সাব্বাথের নিয়ম লঙঘন করেছিল তাদের কথা নিশ্চয়ই জানা আছে, তাই আমরা তাদের বলেছিলাম -- “তোমরা ঘৃণ্য বানর হয়ে যাও।”

فَجَعَلۡنَـٰهَا نَكَـٰلࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهَا وَمَا خَلۡفَهَا وَمَوۡعِظَةࣰ لِّلۡمُتَّقِینَ ﴿66﴾

এইভাবে আমরা এটিকে একটি দৃষ্টান্ত বানিয়েছিলাম যারা ওদের সমসাময়িক ছিল তাদের জন্য ও যারা ওদের পরবর্তীকালে এসেছিল, আর ধর্মভীরুদের জন্য উপদেশ বিশেষ।

وَإِذۡ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوۡمِهِۦۤ إِنَّ ٱللَّهَ یَأۡمُرُكُمۡ أَن تَذۡبَحُوا۟ بَقَرَةࣰۖ قَالُوۤا۟ أَتَتَّخِذُنَا هُزُوࣰاۖ قَالَ أَعُوذُ بِٱللَّهِ أَنۡ أَكُونَ مِنَ ٱلۡجَـٰهِلِینَ ﴿67﴾

আর স্মরণ করো! মূসা তাঁর লোকদের বললেন -- “নিঃসন্দেহ, আল্লাহ্ তোমাদের হুকুম করেছেন তোমরা যেন একটি বক্‌না-বাছুর যবেহ্ করো।” তারা বললে -- “তুমি কি আমাদের নিয়ে ঠাট্টা করছ?” তিনি বললেন -- “আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় চাইছি যেন আমি জাহিলদের অন্তর্ভুক্ত না হই।”

قَالُوا۟ ٱدۡعُ لَنَا رَبَّكَ یُبَیِّن لَّنَا مَا هِیَۚ قَالَ إِنَّهُۥ یَقُولُ إِنَّهَا بَقَرَةࣱ لَّا فَارِضࣱ وَلَا بِكۡرٌ عَوَانُۢ بَیۡنَ ذَ ٰ⁠لِكَۖ فَٱفۡعَلُوا۟ مَا تُؤۡمَرُونَ ﴿68﴾

তারা বললো -- “তোমার প্রভুর কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করো যেন তিনি আমাদের পরিস্কার করে দেন সেটি কি রকমের।” তিনি বললেন -- “নিঃসন্দেহ তিনি বলেছেন, সেটি অবশ্যই একটি বক্‌না-বাছুর যেটি বুড়ো নয় ও বাচ্চাও নয়, এদের মাঝামাঝি মধ্য-বয়সী। অতএব তোমাদের যা আদেশ দেয়া হয়েছে তাই করো।”

قَالُوا۟ ٱدۡعُ لَنَا رَبَّكَ یُبَیِّن لَّنَا مَا لَوۡنُهَاۚ قَالَ إِنَّهُۥ یَقُولُ إِنَّهَا بَقَرَةࣱ صَفۡرَاۤءُ فَاقِعࣱ لَّوۡنُهَا تَسُرُّ ٱلنَّـٰظِرِینَ ﴿69﴾

তারা বললো -- “আমাদের জন্য তোমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো তিনি আমাদের খোলাখুলি বলে দিন তার রঙ কেমন।” তিনি বললেন -- “তিনি অবশ্যই বলেছেন, সেটি নিঃসন্দেহ হলুদ রঙের বাছুর, তার রঙ অতি উজ্জ্বল -- দর্শকদের কাছে মনোরম।”

قَالُوا۟ ٱدۡعُ لَنَا رَبَّكَ یُبَیِّن لَّنَا مَا هِیَ إِنَّ ٱلۡبَقَرَ تَشَـٰبَهَ عَلَیۡنَا وَإِنَّاۤ إِن شَاۤءَ ٱللَّهُ لَمُهۡتَدُونَ ﴿70﴾

তারা বললে -- “তোমার প্রভুর কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করো আমাদের তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিন সেটি কেমন, কারণ সব বাছুর আমাদের কাছে একাকার লাগে, আর আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করেন, আমরা নিশ্চয় ঠিক পথে চালিত হব।”

قَالَ إِنَّهُۥ یَقُولُ إِنَّهَا بَقَرَةࣱ لَّا ذَلُولࣱ تُثِیرُ ٱلۡأَرۡضَ وَلَا تَسۡقِی ٱلۡحَرۡثَ مُسَلَّمَةࣱ لَّا شِیَةَ فِیهَاۚ قَالُوا۟ ٱلۡـَٔـٰنَ جِئۡتَ بِٱلۡحَقِّۚ فَذَبَحُوهَا وَمَا كَادُوا۟ یَفۡعَلُونَ ﴿71﴾

তিনি বললেন, “নিঃসন্দেহ তিনি বলছেন, সেটি নিশ্চয়ই এমন বাছুর যাকে জোয়ালে জোতা হয় নি জমি চাষ করতে, বা ক্ষেতে পানিও দেয় না, সহি-সালামত, যার মধ্যে কোন খুতঁ নেই।” তারা বললে -- “এবার তুমি পুরোপুরি সত্য নিয়ে এসেছো।” সুতরাং তারা তাকে কুরবানি করল, আর দেখালো না যে তারা করল।

وَإِذۡ قَتَلۡتُمۡ نَفۡسࣰا فَٱدَّ ٰ⁠رَ ٰٔۡ ⁠تُمۡ فِیهَاۖ وَٱللَّهُ مُخۡرِجࣱ مَّا كُنتُمۡ تَكۡتُمُونَ ﴿72﴾

আর স্মরণ করো! তোমরা একজনকে কাতল করতে যাচ্ছিলে, তারপর তোমরা এ ব্যাপারে দোষাদোষি করছিলে। আর আল্লাহ্ প্রকাশ করছিলেন যা তোমরা লুকোতে চাইছিলে।

فَقُلۡنَا ٱضۡرِبُوهُ بِبَعۡضِهَاۚ كَذَ ٰ⁠لِكَ یُحۡیِ ٱللَّهُ ٱلۡمَوۡتَىٰ وَیُرِیكُمۡ ءَایَـٰتِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَعۡقِلُونَ ﴿73﴾

সুতরাং আমরা বললাম -- “তুলনা করো তাঁকে এর কিছু অংশের সাথে।” এইভাবে আল্লাহ্ মৃতবৎকে জীবন দান করেন। আর তিনি তোমাদের দেখাচ্ছেন তাঁর নিদর্শন সমূহ যাতে তোমরা বুঝতে পার।

ثُمَّ قَسَتۡ قُلُوبُكُم مِّنۢ بَعۡدِ ذَ ٰ⁠لِكَ فَهِیَ كَٱلۡحِجَارَةِ أَوۡ أَشَدُّ قَسۡوَةࣰۚ وَإِنَّ مِنَ ٱلۡحِجَارَةِ لَمَا یَتَفَجَّرُ مِنۡهُ ٱلۡأَنۡهَـٰرُۚ وَإِنَّ مِنۡهَا لَمَا یَشَّقَّقُ فَیَخۡرُجُ مِنۡهُ ٱلۡمَاۤءُۚ وَإِنَّ مِنۡهَا لَمَا یَهۡبِطُ مِنۡ خَشۡیَةِ ٱللَّهِۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَـٰفِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُونَ ﴿74﴾

তারপর তোমাদের হৃদয় এর পরেও কঠিন হলো, পাথরের মতো হয়ে গেল, বরং আরও কঠিন। আর অবশ্য পাথরের মধ্যে এমনও আছে যার মধ্য থেকে বেরিয়ে আসে ঝরনা। আবার তাদের কিছু যখন চৌচির হয় তখন তা থেকে পানি বেরোয়। আবার তাদের মধ্যে কতক আল্লাহ্‌র ভয়ে ভেঙ্গে পড়ে। আর তোমরা যা করছো আল্লাহ্ সে বিষয়ে অজ্ঞাত নন।

۞ أَفَتَطۡمَعُونَ أَن یُؤۡمِنُوا۟ لَكُمۡ وَقَدۡ كَانَ فَرِیقࣱ مِّنۡهُمۡ یَسۡمَعُونَ كَلَـٰمَ ٱللَّهِ ثُمَّ یُحَرِّفُونَهُۥ مِنۢ بَعۡدِ مَا عَقَلُوهُ وَهُمۡ یَعۡلَمُونَ ﴿75﴾

এরপর কি তোমরা আশা কর যে তারা তোমাদের প্রতি বিশ্বাস করবে? ইতিপূর্বে তাদের একটি দল আল্লাহ্‌র বাণী শুনত, তারপর তা পাল্টে দিত উহা বুঝবার পরেও, আর তারা জানে।

وَإِذَا لَقُوا۟ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ قَالُوۤا۟ ءَامَنَّا وَإِذَا خَلَا بَعۡضُهُمۡ إِلَىٰ بَعۡضࣲ قَالُوۤا۟ أَتُحَدِّثُونَهُم بِمَا فَتَحَ ٱللَّهُ عَلَیۡكُمۡ لِیُحَاۤجُّوكُم بِهِۦ عِندَ رَبِّكُمۡۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ ﴿76﴾

আর যারা ঈমান এনেছে তাদের সাথে যখন তারা মোলাকাত করে তখন বলে -- “আমরা ঈমান এনেছি।” আর যখন তাদের লোকেরা একে অন্যের সাথে নিরিবিলি হয় তখন বলে -- “আল্লাহ্ তোমাদের কাছে যা প্রকাশ করেছেন তা কি তোমরা ওদের জানিয়ে দিচ্ছ, যাতে ওরা এ-সবের সাহায্যে তোমাদের প্রভুর সামনে তোমাদের সাথে বিতর্ক করে? তোমরা কি তবে বুঝতে পারছ না?”

أَوَلَا یَعۡلَمُونَ أَنَّ ٱللَّهَ یَعۡلَمُ مَا یُسِرُّونَ وَمَا یُعۡلِنُونَ ﴿77﴾

আর তারা কি জানে না যে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ জানেন যা তারা লুকিয়ে রাখছে ও যা প্রকাশ করছে?

وَمِنۡهُمۡ أُمِّیُّونَ لَا یَعۡلَمُونَ ٱلۡكِتَـٰبَ إِلَّاۤ أَمَانِیَّ وَإِنۡ هُمۡ إِلَّا یَظُنُّونَ ﴿78﴾

আর তাদের মধ্যে হচ্ছে নিরক্ষর যারা ধর্মগ্রন্থ সন্বন্ধে উপকথার বেশী জানে না, আর তারা শুধু আন্দাজের উপর চলে!

فَوَیۡلࣱ لِّلَّذِینَ یَكۡتُبُونَ ٱلۡكِتَـٰبَ بِأَیۡدِیهِمۡ ثُمَّ یَقُولُونَ هَـٰذَا مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ لِیَشۡتَرُوا۟ بِهِۦ ثَمَنࣰا قَلِیلࣰاۖ فَوَیۡلࣱ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتۡ أَیۡدِیهِمۡ وَوَیۡلࣱ لَّهُم مِّمَّا یَكۡسِبُونَ ﴿79﴾

হায়, কি অভাগা তারা যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে, তারপর বলে -- “ইহা আল্লাহ্‌র দরবার থেকে” -- যাতে এর জন্য তারা স্বল্পমূল্য কামাতে পারে। অতএব ধিক্ তাদের প্রতি তাদের হাত যা লিখেছে সেজন্য, আর ধিক্ তাদের প্রতি যা তারা কামাই করে সেজন্য!

وَقَالُوا۟ لَن تَمَسَّنَا ٱلنَّارُ إِلَّاۤ أَیَّامࣰا مَّعۡدُودَةࣰۚ قُلۡ أَتَّخَذۡتُمۡ عِندَ ٱللَّهِ عَهۡدࣰا فَلَن یُخۡلِفَ ٱللَّهُ عَهۡدَهُۥۤۖ أَمۡ تَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعۡلَمُونَ ﴿80﴾

আর তারা বলে -- “আগুন আমাদের গুনতির কয়েকদিন ছাড়া কদাচ স্পর্শ করবে না।” তুমি বলো -- “তোমরা কি আল্লাহ্‌র কাছ থেকে কোনো প্রতি‌শ্রুতি নিয়েছ? তাহলে আল্লাহ্ তাঁর ওয়াদার কখনো খেলাফ করেন না, অথবা তোমরা কি আল্লাহ্ সন্বন্ধে যা জান না তাই বলছ?”

بَلَىٰۚ مَن كَسَبَ سَیِّئَةࣰ وَأَحَـٰطَتۡ بِهِۦ خَطِیۤـَٔتُهُۥ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿81﴾

হাঁ, যে কেউ মন্দ অর্জন করে, আর তার পাপ তাকে ঘেরাও করে ফেলে, এরাই হচ্ছে আগুনের বাসিন্দা, তাতে তারা থাকবে দীর্ঘকাল।

وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلۡجَنَّةِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿82﴾

আর যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে, তারাই হচ্ছে বেহেশতের বাসিন্দা, তাতে থাকবে তারা চিরকাল।

وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِیثَـٰقَ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ لَا تَعۡبُدُونَ إِلَّا ٱللَّهَ وَبِٱلۡوَ ٰ⁠لِدَیۡنِ إِحۡسَانࣰا وَذِی ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡیَتَـٰمَىٰ وَٱلۡمَسَـٰكِینِ وَقُولُوا۟ لِلنَّاسِ حُسۡنࣰا وَأَقِیمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَ ثُمَّ تَوَلَّیۡتُمۡ إِلَّا قَلِیلࣰا مِّنكُمۡ وَأَنتُم مُّعۡرِضُونَ ﴿83﴾

আর স্মরণ করো! আমরা ইসরাইলের বংশধরদের থেকে চুক্তি গ্রহণ করেছিলাম -- “তোমরা আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো উপাসনা করবে না, আর মাতাপিতার প্রতি ভালো ব্যবহার করবে, এবং আ‌ত্মীয়স্বজনদের প্রতি, আর এতিমদের প্রতি, আর মিসকিনদের প্রতি, আর লোকদের সাথে ভালোভাবে কথা বলবে, আর নামায কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে।” তারপর তোমরা তোমাদের অল্প কয়েকজন ছাড়া ফিরে গেলে, আর তোমরা ফিরে যাবার দলের।

وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِیثَـٰقَكُمۡ لَا تَسۡفِكُونَ دِمَاۤءَكُمۡ وَلَا تُخۡرِجُونَ أَنفُسَكُم مِّن دِیَـٰرِكُمۡ ثُمَّ أَقۡرَرۡتُمۡ وَأَنتُمۡ تَشۡهَدُونَ ﴿84﴾

আর স্মরণ করো! আমরা তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম -- “তোমরা তোমাদের রক্তপাত করবে না আর তোমাদের লোকদের তোমাদের বাড়িঘর থেকে বের করে দেবে না।” তখন তোমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলে, আর তোমারা সাক্ষ্য দিয়েছিলে।

ثُمَّ أَنتُمۡ هَـٰۤؤُلَاۤءِ تَقۡتُلُونَ أَنفُسَكُمۡ وَتُخۡرِجُونَ فَرِیقࣰا مِّنكُم مِّن دِیَـٰرِهِمۡ تَظَـٰهَرُونَ عَلَیۡهِم بِٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَ ٰ⁠نِ وَإِن یَأۡتُوكُمۡ أُسَـٰرَىٰ تُفَـٰدُوهُمۡ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَیۡكُمۡ إِخۡرَاجُهُمۡۚ أَفَتُؤۡمِنُونَ بِبَعۡضِ ٱلۡكِتَـٰبِ وَتَكۡفُرُونَ بِبَعۡضࣲۚ فَمَا جَزَاۤءُ مَن یَفۡعَلُ ذَ ٰ⁠لِكَ مِنكُمۡ إِلَّا خِزۡیࣱ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَاۖ وَیَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ یُرَدُّونَ إِلَىٰۤ أَشَدِّ ٱلۡعَذَابِۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَـٰفِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُونَ ﴿85﴾

তারপর তোমরাই সেই যারা তোমাদের নিজেদের মধ্যে খুন-খারাবি করো, আর তোমাদেরই এক দলকে তাদের বাড়িঘর থেকে তোমরা তাড়িয়ে দাও তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও নিষ্ঠুরতায় পৃষ্ঠপোষকতা ক’রে। অথচ যদি তারা তোমাদের কাছে বন্দীরূপে আসে তবে তাদের মুক্তিপণ দাও, যদিও তাদের তাড়িয়ে দেওয়াটা তোমাদের উপরে অবৈধ ছিল। তাহলে তোমরা কি ধর্মগ্রন্থের অংশবিশেষে বিশ্বাস কর ও অন্য অংশে অবিশ্বাস পোষণ কর? অতএব তোমাদের মধ্যের যারা এরকম করে তাদের ইহজীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া আর কী পুরস্কার আছে? আর কিয়ামতের দিনে তাদের ফেরত পাঠানো হবে কঠোরতম শাস্তিতে। আর তোমরা যা করছো আল্লাহ্ সে-বিষয়ে অজ্ঞাত নন।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ ٱشۡتَرَوُا۟ ٱلۡحَیَوٰةَ ٱلدُّنۡیَا بِٱلۡـَٔاخِرَةِۖ فَلَا یُخَفَّفُ عَنۡهُمُ ٱلۡعَذَابُ وَلَا هُمۡ یُنصَرُونَ ﴿86﴾

এরাই তারা যারা আখেরাতের বদলে ইহজীবন খরিদ করেছে। তাই তাদের উপর থেকে শাস্তি লাঘব করা হবে না, আর তাদের সাহায্যও দেয়া হবে না।

وَلَقَدۡ ءَاتَیۡنَا مُوسَى ٱلۡكِتَـٰبَ وَقَفَّیۡنَا مِنۢ بَعۡدِهِۦ بِٱلرُّسُلِۖ وَءَاتَیۡنَا عِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ ٱلۡبَیِّنَـٰتِ وَأَیَّدۡنَـٰهُ بِرُوحِ ٱلۡقُدُسِۗ أَفَكُلَّمَا جَاۤءَكُمۡ رَسُولُۢ بِمَا لَا تَهۡوَىٰۤ أَنفُسُكُمُ ٱسۡتَكۡبَرۡتُمۡ فَفَرِیقࣰا كَذَّبۡتُمۡ وَفَرِیقࣰا تَقۡتُلُونَ ﴿87﴾

আর অবশ্যই আমরা মূসাকে ধর্মগ্রন্থ দিয়েছিলাম, আর তাঁর পরে পর্যায়ক্রমে বহু রসূল পাঠিয়েছিলাম, আর আমরা মরিয়মের পুত্র ঈসাকে দিয়েছিলাম স্পষ্ট-প্রমাণাবলী, আর আমরা তাঁকে বলীয়ান করি রূহুল ক্কুদুস দিয়ে। তাহলে কি যখনই তোমাদের কাছে একজন রসূল আসেন এমন কিছু নিয়ে যা তোমাদের মন চায় না, তখনই তোমরা অহংকার দেখাও? গতিকে, কাউকে তোমরা মিথ্যারোপ করো ও কাউকে কাতল করতে যাও।

وَقَالُوا۟ قُلُوبُنَا غُلۡفُۢۚ بَل لَّعَنَهُمُ ٱللَّهُ بِكُفۡرِهِمۡ فَقَلِیلࣰا مَّا یُؤۡمِنُونَ ﴿88﴾

আর তারা বলে -- “আমাদের হৃদয় হলো গেলাফ!” না, আল্লাহ্ তাদের বঞ্চিত করেছেন তাদের অবিশ্বাসের জন্য। তাই যৎসামান্যই যা তারা বিশ্বাস করে।

وَلَمَّا جَاۤءَهُمۡ كِتَـٰبࣱ مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِ مُصَدِّقࣱ لِّمَا مَعَهُمۡ وَكَانُوا۟ مِن قَبۡلُ یَسۡتَفۡتِحُونَ عَلَى ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ فَلَمَّا جَاۤءَهُم مَّا عَرَفُوا۟ كَفَرُوا۟ بِهِۦۚ فَلَعۡنَةُ ٱللَّهِ عَلَى ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿89﴾

আর যখন তাদের কাছে আল্লাহ্‌র তরফ থেকে একখানা ধর্মগ্রন্থ এল যাতে সমর্থন রয়েছে যা তাদের কাছে আছে -- যদিও ইতিপূর্বে তারা প্রার্থনা করতো যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের উপরে বিজয়ী হবার জন্যে, -- কিন্তু যখন তাদের কাছে এলেন যাঁকে তারা চিনতে পারল তারা তাঁকে অবিশ্বাস করে বসলো। সুতরাং আল্লাহ্‌র নারাজি অবিশ্বাসীদের উপরে।

بِئۡسَمَا ٱشۡتَرَوۡا۟ بِهِۦۤ أَنفُسَهُمۡ أَن یَكۡفُرُوا۟ بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ بَغۡیًا أَن یُنَزِّلَ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ عَلَىٰ مَن یَشَاۤءُ مِنۡ عِبَادِهِۦۖ فَبَاۤءُو بِغَضَبٍ عَلَىٰ غَضَبࣲۚ وَلِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابࣱ مُّهِینࣱ ﴿90﴾

গর্হিত তা যা দিয়ে তারা নিজেদের আ‌ত্মা বিনিময় করেছে যে জন্য আল্লাহ্ যা অবতারণ করেছেন তা তারা অবিশ্বাস করে বিদ্বেষের বশে -- যে আল্লাহ্ তাঁর কৃপাবশতঃ উহা অবতীর্ণ করবেন তাঁর দাসদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা করেন তার কাছে! তাই তারা রোষের উপর রোষ টেনে আনলো। আর অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।

وَإِذَا قِیلَ لَهُمۡ ءَامِنُوا۟ بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ قَالُوا۟ نُؤۡمِنُ بِمَاۤ أُنزِلَ عَلَیۡنَا وَیَكۡفُرُونَ بِمَا وَرَاۤءَهُۥ وَهُوَ ٱلۡحَقُّ مُصَدِّقࣰا لِّمَا مَعَهُمۡۗ قُلۡ فَلِمَ تَقۡتُلُونَ أَنۢبِیَاۤءَ ٱللَّهِ مِن قَبۡلُ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿91﴾

আর যখন তাদের বলা হয় -- “ঈমান আনো আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তাতে,” তারা বলে -- “আমরা বিশ্বাস করি যা আমাদের কাছে নাযিল হয়েছিল।” অথচ তারা অবিশ্বাস করে যা তার পরে এসেছে, যদিও উহা হলো ধ্রুব সত্য, সমর্থন করছে যা তাদের কাছে রয়েছে তার। বলো -- “তাহলে তোমরা কেন আল্লাহ্‌র নবীদের এর আগে হত্যা করতে যাচ্ছিলে? যদি তোমরা বিশ্বাসী হয়ে থাকো।”

۞ وَلَقَدۡ جَاۤءَكُم مُّوسَىٰ بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ ثُمَّ ٱتَّخَذۡتُمُ ٱلۡعِجۡلَ مِنۢ بَعۡدِهِۦ وَأَنتُمۡ ظَـٰلِمُونَ ﴿92﴾

আর নিশ্চয়ই মূসা তোমাদের কাছে এসেছিলেন স্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে, কিন্তু তোমরা বাছুরকে গ্রহণ করলে তাঁর, আর তোমরা হলে অন্যায়কারী।

وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِیثَـٰقَكُمۡ وَرَفَعۡنَا فَوۡقَكُمُ ٱلطُّورَ خُذُوا۟ مَاۤ ءَاتَیۡنَـٰكُم بِقُوَّةࣲ وَٱسۡمَعُوا۟ۖ قَالُوا۟ سَمِعۡنَا وَعَصَیۡنَا وَأُشۡرِبُوا۟ فِی قُلُوبِهِمُ ٱلۡعِجۡلَ بِكُفۡرِهِمۡۚ قُلۡ بِئۡسَمَا یَأۡمُرُكُم بِهِۦۤ إِیمَـٰنُكُمۡ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿93﴾

আর স্মরণ করো! আমরা তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম ও তোমাদের উপরে পর্বত খাড়া করেছিলাম। -- “তোমাদের আমরা যা দিয়েছি তা শক্ত করে পাকড়ে ধরো, আর শুনো।” তারা বলল -- “আমরা শুনলাম আর অমান্য করলাম!” আর তাদের হৃদয়ের ভেতরে পান করানো হয়েছে বাছুর তাদের অস্বীকার করার দরুন। বলো -- “তোমাদের ধর্মবিশ্বাস তোমাদের যা নির্দেশ দিচ্ছে তা দূষণীয়, যদি তোমরা ঈমানদার হও।”

قُلۡ إِن كَانَتۡ لَكُمُ ٱلدَّارُ ٱلۡـَٔاخِرَةُ عِندَ ٱللَّهِ خَالِصَةࣰ مِّن دُونِ ٱلنَّاسِ فَتَمَنَّوُا۟ ٱلۡمَوۡتَ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿94﴾

বলো -- “যদি আল্লাহ্‌র আখেরাতের ঘর অপর লোককে বাদ দিয়ে খাস ক’রে তোমাদের জন্য হয়ে থাকে তবে মৃত্যু কামনা করো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।”

وَلَن یَتَمَنَّوۡهُ أَبَدَۢا بِمَا قَدَّمَتۡ أَیۡدِیهِمۡۚ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿95﴾

কিন্তু তারা কখনো তা চাইবে না তাদের দুই হাত যা পাঠিয়েছে। আর আল্লাহ্ অন্যায়কারীদের সম্পর্কে সর্বজ্ঞাতা।

وَلَتَجِدَنَّهُمۡ أَحۡرَصَ ٱلنَّاسِ عَلَىٰ حَیَوٰةࣲ وَمِنَ ٱلَّذِینَ أَشۡرَكُوا۟ۚ یَوَدُّ أَحَدُهُمۡ لَوۡ یُعَمَّرُ أَلۡفَ سَنَةࣲ وَمَا هُوَ بِمُزَحۡزِحِهِۦ مِنَ ٱلۡعَذَابِ أَن یُعَمَّرَۗ وَٱللَّهُ بَصِیرُۢ بِمَا یَعۡمَلُونَ ﴿96﴾

আর তুমি তাদের পাবে জীবন সন্বন্ধে সবচাইতে লোভী মানুষ, যারা শরিক করে তাদের চাইতেও। তাদের এক একজন কামনা করে তাকে যেন হাজার বছরের পরমায়ু দেয়া হয়। কিন্তু তাকে দীর্ঘজীবন দেয়া হলেও শাস্তি থেকে সে স্থানাস্তরিত হবে না। আর তারা যা করছে আল্লাহ্ তার দর্শক।

قُلۡ مَن كَانَ عَدُوࣰّا لِّجِبۡرِیلَ فَإِنَّهُۥ نَزَّلَهُۥ عَلَىٰ قَلۡبِكَ بِإِذۡنِ ٱللَّهِ مُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِ وَهُدࣰى وَبُشۡرَىٰ لِلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿97﴾

বলো -- “যে কেউ জিব্রীলের শত্রু” -- কারণ নিঃসন্দেহ সে-ই আল্লাহ্‌র আদেশে উহা তোমার হৃদয়ে অবতীর্ণ করেছে, এর আগে যা এসেছিল তার সত্য-সমর্থনরূপে, এবং মুমিনদের জন্য পথপ্রদর্শক ও সুসংবাদদাতারূপে, --

مَن كَانَ عَدُوࣰّا لِّلَّهِ وَمَلَـٰۤىِٕكَتِهِۦ وَرُسُلِهِۦ وَجِبۡرِیلَ وَمِیكَىٰلَ فَإِنَّ ٱللَّهَ عَدُوࣱّ لِّلۡكَـٰفِرِینَ ﴿98﴾

“যে কেউ আল্লাহ্‌র ও তাঁর ফিরিশ্‌তাদের ও তাঁর রসূলদের ও জিব্রীলের ও মিকালের শত্রু, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তখন অবিশ্বাসীদের শত্রু।”

وَلَقَدۡ أَنزَلۡنَاۤ إِلَیۡكَ ءَایَـٰتِۭ بَیِّنَـٰتࣲۖ وَمَا یَكۡفُرُ بِهَاۤ إِلَّا ٱلۡفَـٰسِقُونَ ﴿99﴾

আর নিশ্চয়ই আমরা তোমার কাছে নাযিল করেছি সুস্পষ্ট আয়াত -- সমূহ, আর কেউ এতে অবিশ্বাস করে না দুর্বৃত্তরা ছাড়া।

أَوَكُلَّمَا عَـٰهَدُوا۟ عَهۡدࣰا نَّبَذَهُۥ فَرِیقࣱ مِّنۡهُمۚ بَلۡ أَكۡثَرُهُمۡ لَا یُؤۡمِنُونَ ﴿100﴾

কি ব্যাপার! যখনই তারা কোনো ওয়াদাতে অঙ্গীকার করেছে, তাদের একদল তা প্রত্যাখ্যান করেছে? না, তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।

وَلَمَّا جَاۤءَهُمۡ رَسُولࣱ مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِ مُصَدِّقࣱ لِّمَا مَعَهُمۡ نَبَذَ فَرِیقࣱ مِّنَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ كِتَـٰبَ ٱللَّهِ وَرَاۤءَ ظُهُورِهِمۡ كَأَنَّهُمۡ لَا یَعۡلَمُونَ ﴿101﴾

আর যখনই তাদের কাছে আল্লাহ্‌র তরফ থেকে কোনো রসূল আসেন তাদের কাছে যা আছে তার সমর্থন ক’রে, যাদের গ্রন্থ দেয়া হয়েছিল তাদের একদল আল্লাহ্‌র গ্রন্থকে তাদের পশ্চাদ্দেশে ফেলে রাখে, যেন তারা জানে না।

وَٱتَّبَعُوا۟ مَا تَتۡلُوا۟ ٱلشَّیَـٰطِینُ عَلَىٰ مُلۡكِ سُلَیۡمَـٰنَۖ وَمَا كَفَرَ سُلَیۡمَـٰنُ وَلَـٰكِنَّ ٱلشَّیَـٰطِینَ كَفَرُوا۟ یُعَلِّمُونَ ٱلنَّاسَ ٱلسِّحۡرَ وَمَاۤ أُنزِلَ عَلَى ٱلۡمَلَكَیۡنِ بِبَابِلَ هَـٰرُوتَ وَمَـٰرُوتَۚ وَمَا یُعَلِّمَانِ مِنۡ أَحَدٍ حَتَّىٰ یَقُولَاۤ إِنَّمَا نَحۡنُ فِتۡنَةࣱ فَلَا تَكۡفُرۡۖ فَیَتَعَلَّمُونَ مِنۡهُمَا مَا یُفَرِّقُونَ بِهِۦ بَیۡنَ ٱلۡمَرۡءِ وَزَوۡجِهِۦۚ وَمَا هُم بِضَاۤرِّینَ بِهِۦ مِنۡ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ وَیَتَعَلَّمُونَ مَا یَضُرُّهُمۡ وَلَا یَنفَعُهُمۡۚ وَلَقَدۡ عَلِمُوا۟ لَمَنِ ٱشۡتَرَىٰهُ مَا لَهُۥ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ مِنۡ خَلَـٰقࣲۚ وَلَبِئۡسَ مَا شَرَوۡا۟ بِهِۦۤ أَنفُسَهُمۡۚ لَوۡ كَانُوا۟ یَعۡلَمُونَ ﴿102﴾

আর তারা তার অনুসরণ করে যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে চালু করেছিল, আর সুলাইমান অবিশ্বাস পোষণ করেন নি, বরং শয়তান অবিশ্বাস করেছিল, তারা লোকজনকে জাদুবিদ্যা শেখাতো, আর তা বাবেলে হারূত ও মারূত এই দুই ফিরিশ্‌তার কাছে নাযিল হয় নি, আর এই দুইজন কাউকে শেখায়ও নি যাতে তাদের বলতে হয় -- “আমরা এক পরীক্ষা মাত্র, অতএব অবিশ্বাস করো না।” সুতরাং এই দুইয়ের থেকে তারা শিখেছে যার দ্বারা স্বামী ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু তারা এর দ্বারা কারো ক্ষতি করতে পারে না আল্লাহ্‌র অনুমতি ব্যতীত। আর তারা তাই শেখে যা তাদের ক্ষতিসাধন করে, এবং তাদের উপকার করে না। আর অবশ্যই তারা জানে যে এটা যে কিনে নেয় তার জন্য পরকালে কোনো লাভের অংশ থাকবে না। আর আফসোস, এটা মন্দ যার বিনিময়ে তারা নিজেদের আ‌ত্মা বিক্রয় করেছে, -- যদি তারা জানতো!

وَلَوۡ أَنَّهُمۡ ءَامَنُوا۟ وَٱتَّقَوۡا۟ لَمَثُوبَةࣱ مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِ خَیۡرࣱۚ لَّوۡ كَانُوا۟ یَعۡلَمُونَ ﴿103﴾

আর যদি তারা ঈমান আনতো ও ধর্মভীরুতা অবলন্বন করতো তাহলে আল্লাহ্‌র কাছ থেকে পুরস্কার নিশ্চয়ই বহু ভালো হতো, -- যদি তারা জানতো!

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَقُولُوا۟ رَ ٰ⁠عِنَا وَقُولُوا۟ ٱنظُرۡنَا وَٱسۡمَعُوا۟ۗ وَلِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿104﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছো! তোমরা বলো না “রা-'ইনা-”, বরং বলো “উনযুরনা-”, আর শুনুন। আর অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে মর্মন্তদ শাস্তি।

مَّا یَوَدُّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ وَلَا ٱلۡمُشۡرِكِینَ أَن یُنَزَّلَ عَلَیۡكُم مِّنۡ خَیۡرࣲ مِّن رَّبِّكُمۡۚ وَٱللَّهُ یَخۡتَصُّ بِرَحۡمَتِهِۦ مَن یَشَاۤءُۚ وَٱللَّهُ ذُو ٱلۡفَضۡلِ ٱلۡعَظِیمِ ﴿105﴾

গ্রন্থপ্রাপ্তদের মধ্যে যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা এবং মুশরিকরা চায় না যে তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে কোনো কল্যাণ তোমাদের প্রতি নাযিল হোক। কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর করুণার জন্য যাকে ইচ্ছা করেন মনোনীত করেন। আর আল্লাহ্ অপার কল্যাণের অধিকারী।

۞ مَا نَنسَخۡ مِنۡ ءَایَةٍ أَوۡ نُنسِهَا نَأۡتِ بِخَیۡرࣲ مِّنۡهَاۤ أَوۡ مِثۡلِهَاۤۗ أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرٌ ﴿106﴾

যে-সব আয়াত আমরা মনসুখ করি অথবা উহা ভুলিয়ে দিই, আমরা তার চাইতে ভালো অথবা তার অনুরূপ নিয়ে আসি। তুমি কি জান না যে আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান?

أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِۗ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِیࣲّ وَلَا نَصِیرٍ ﴿107﴾

তুমি কি জানো না নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌, -- মহাকাশমন্ডলের ও পৃথিবীর রাজত্ব তাঁরই। আর তোমাদের জন্য আল্লাহ্ ছাড়া কোনো মুরব্বী অথবা সাহায্যকারী নেই।

أَمۡ تُرِیدُونَ أَن تَسۡـَٔلُوا۟ رَسُولَكُمۡ كَمَا سُىِٕلَ مُوسَىٰ مِن قَبۡلُۗ وَمَن یَتَبَدَّلِ ٱلۡكُفۡرَ بِٱلۡإِیمَـٰنِ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَاۤءَ ٱلسَّبِیلِ ﴿108﴾

তোমরা কি তোমাদের রসূলকে প্রশ্ন করতে চাও যেমন মূসাকে এর আগে প্রশ্ন করা হয়েছিল? আর যে বিশ্বাসের জায়গায় অবিশ্বাস বদলে নেয় সে-ই নিশ্চয়ই সরল পথের দিশা হারায়।

وَدَّ كَثِیرࣱ مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ لَوۡ یَرُدُّونَكُم مِّنۢ بَعۡدِ إِیمَـٰنِكُمۡ كُفَّارًا حَسَدࣰا مِّنۡ عِندِ أَنفُسِهِم مِّنۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمُ ٱلۡحَقُّۖ فَٱعۡفُوا۟ وَٱصۡفَحُوا۟ حَتَّىٰ یَأۡتِیَ ٱللَّهُ بِأَمۡرِهِۦۤۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿109﴾

গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকের অনেকে কামনা করে যে তোমাদের ঈমান আনার পরে তোমাদের অবিশ্বাসে ফিরিয়ে নিতে, তাদের তরফ থেকে বিদ্বেষের ফলে তাদের কাছে সত্য পরিস্কার হবার পরেও। তাই ক্ষমা করো ও উপেক্ষা করো যে পর্যন্ত না আল্লাহ্ তাঁর অনুশাসন নিয়ে আসেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সবকিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

وَأَقِیمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَۚ وَمَا تُقَدِّمُوا۟ لِأَنفُسِكُم مِّنۡ خَیۡرࣲ تَجِدُوهُ عِندَ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِیرࣱ ﴿110﴾

আর নামায কায়েম করো ও যাকাত আদায় করো। আর তোমাদের আ‌ত্মার জন্য যা কিছু কল্যাণ আগবাড়াও তা আল্লাহ্‌র দরবারে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা করছো আল্লাহ্ তার দর্শক।

وَقَالُوا۟ لَن یَدۡخُلَ ٱلۡجَنَّةَ إِلَّا مَن كَانَ هُودًا أَوۡ نَصَـٰرَىٰۗ تِلۡكَ أَمَانِیُّهُمۡۗ قُلۡ هَاتُوا۟ بُرۡهَـٰنَكُمۡ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿111﴾

আর তারা বলে -- “যে ইহুদী বা খ্রীষ্টান সে ছাড়া কেউ কখনও বেহেশতে দাখিল হতে পারবে না।” এসব তাদের বৃথা আকাঙ্খা। বলো -- “তোমাদের প্রমাণ নিয়ে এসো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।”

بَلَىٰۚ مَنۡ أَسۡلَمَ وَجۡهَهُۥ لِلَّهِ وَهُوَ مُحۡسِنࣱ فَلَهُۥۤ أَجۡرُهُۥ عِندَ رَبِّهِۦ وَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿112﴾

না, যে কেউ আল্লাহ্‌র তরফে নিজের মুখ পূর্ণ-সমর্পণ করেছে ও সে সৎকর্মী, তার জন্য তার পুরস্কার আছে তার প্রভুর দরবারে, আর তাদের উপরে কোনো ভয় নেই, আর তারা অনুতাপও করবে না।

وَقَالَتِ ٱلۡیَهُودُ لَیۡسَتِ ٱلنَّصَـٰرَىٰ عَلَىٰ شَیۡءࣲ وَقَالَتِ ٱلنَّصَـٰرَىٰ لَیۡسَتِ ٱلۡیَهُودُ عَلَىٰ شَیۡءࣲ وَهُمۡ یَتۡلُونَ ٱلۡكِتَـٰبَۗ كَذَ ٰ⁠لِكَ قَالَ ٱلَّذِینَ لَا یَعۡلَمُونَ مِثۡلَ قَوۡلِهِمۡۚ فَٱللَّهُ یَحۡكُمُ بَیۡنَهُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ فِیمَا كَانُوا۟ فِیهِ یَخۡتَلِفُونَ ﴿113﴾

আর ইহুদীরা বলে -- “খ্রীষ্টানরা কিছুরই উপর নয়”, আর খ্রীষ্টানরা বলে -- “ইহুদীরা কিছুরই উপর নয়।” অথচ তারা সবাই গ্রন্থ পড়ে। এমনিভাবে তাদের কথার মতো কথা বলে এরা যারা জানে না। তাই আল্লাহ্ কিয়ামতের দিনে তাদের মধ্যে রায় দেবেন যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করতো।

وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّن مَّنَعَ مَسَـٰجِدَ ٱللَّهِ أَن یُذۡكَرَ فِیهَا ٱسۡمُهُۥ وَسَعَىٰ فِی خَرَابِهَاۤۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ مَا كَانَ لَهُمۡ أَن یَدۡخُلُوهَاۤ إِلَّا خَاۤىِٕفِینَۚ لَهُمۡ فِی ٱلدُّنۡیَا خِزۡیࣱ وَلَهُمۡ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ عَذَابٌ عَظِیمࣱ ﴿114﴾

আর তার চাইতে কে বেশী অন্যায়কারী যে আল্লাহ্‌র মসজিদসমূহে বাধা দেয় এইজন্য যে সে-সবে তাঁর নাম স্মরণ করা হবে, আর চেষ্টা করে সে-সবের অনিষ্ট সাধনে? এদের ক্ষেত্রে, তাদের জন্য নয় যে তারা এ-সবে দাখিল হয় ভয়াতুর না হয়ে। তাদের জন্য এই দুনিয়াতে আছে অপমান, আর পরকালে তাদের জন্য কঠোর শাস্তি।

وَلِلَّهِ ٱلۡمَشۡرِقُ وَٱلۡمَغۡرِبُۚ فَأَیۡنَمَا تُوَلُّوا۟ فَثَمَّ وَجۡهُ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ وَ ٰ⁠سِعٌ عَلِیمࣱ ﴿115﴾

আর আল্লাহ্‌রই পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল। অতএব যেদিকে তোমরা ফেরো সে-দিকেই আল্লাহ্‌র মুখ। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সর্বব্যাপক, সর্বজ্ঞাতা।

وَقَالُوا۟ ٱتَّخَذَ ٱللَّهُ وَلَدࣰاۗ سُبۡحَـٰنَهُۥۖ بَل لَّهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِۖ كُلࣱّ لَّهُۥ قَـٰنِتُونَ ﴿116﴾

আর তারা বলে -- “আল্লাহ্ একটি ছেলে গ্রহণ করেছেন” । তাঁরই মহিমা হোক! বরং মহাকাশমন্ডলে ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সে-সব তাঁরই, সবাই তাঁর আজ্ঞা পালনকারী।

بَدِیعُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِۖ وَإِذَا قَضَىٰۤ أَمۡرࣰا فَإِنَّمَا یَقُولُ لَهُۥ كُن فَیَكُونُ ﴿117﴾

মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আদি-স্রষ্টা! আর যখনই তিনি কোনো বিষয় বির্ধারিত করেন তিনি সে-সন্বন্ধে তখন শুধু বলেন -- “হও”, আর তা হয়ে যায়।

وَقَالَ ٱلَّذِینَ لَا یَعۡلَمُونَ لَوۡلَا یُكَلِّمُنَا ٱللَّهُ أَوۡ تَأۡتِینَاۤ ءَایَةࣱۗ كَذَ ٰ⁠لِكَ قَالَ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِم مِّثۡلَ قَوۡلِهِمۡۘ تَشَـٰبَهَتۡ قُلُوبُهُمۡۗ قَدۡ بَیَّنَّا ٱلۡـَٔایَـٰتِ لِقَوۡمࣲ یُوقِنُونَ ﴿118﴾

আর যারা জানে না তারা বলে -- “আল্লাহ্ কেন আমাদের সাথে কথা বলেন না, অথবা একটি নিদর্শন আমাদের কাছে আসুক?” এমনভাবে এদের আগে যারা ছিল তারা এদের কথার অনুরূপ কথা বলেছিল। তাদের হৃদয় একই রকমের। আমরা আয়াতসমূহ সুস্পষ্ট করে রেখেছি সেই লোকদের কাছে যারা দৃঢ়প্রত্যয় রাখে।

إِنَّاۤ أَرۡسَلۡنَـٰكَ بِٱلۡحَقِّ بَشِیرࣰا وَنَذِیرࣰاۖ وَلَا تُسۡـَٔلُ عَنۡ أَصۡحَـٰبِ ٱلۡجَحِیمِ ﴿119﴾

নিঃসন্দেহ আমরা তোমাকে সত্য দিয়ে পাঠিয়েছি, সুসংবাদদাতারূপে ও সতর্ককারীরূপে, আর তোমাকে জবাব দিহি করতে হবে না ভয়ঙ্কর আগুনের বাসিন্দাদের সম্পর্কে।

وَلَن تَرۡضَىٰ عَنكَ ٱلۡیَهُودُ وَلَا ٱلنَّصَـٰرَىٰ حَتَّىٰ تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمۡۗ قُلۡ إِنَّ هُدَى ٱللَّهِ هُوَ ٱلۡهُدَىٰۗ وَلَىِٕنِ ٱتَّبَعۡتَ أَهۡوَاۤءَهُم بَعۡدَ ٱلَّذِی جَاۤءَكَ مِنَ ٱلۡعِلۡمِ مَا لَكَ مِنَ ٱللَّهِ مِن وَلِیࣲّ وَلَا نَصِیرٍ ﴿120﴾

আর ইহুদীরা কখনো তোমার উপরে সন্তষ্ট হবে না, খ্রীষ্টানরাও নয়, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্মমত অনুসরণ কর। তাদের বলো -- “নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌র যা হেদায়ত তাই-ই হেদায়ত। আর তুমি যদি তাদের ইচ্ছার অনুসরণ কর তোমার কাছে জ্ঞানের যা এসেছে তার পরে, তাহলে আল্লাহর কাছ থেকে তুমি পাবে না কোনো বন্ধু-বান্ধব, না কোনো সাহায্যকারী।

ٱلَّذِینَ ءَاتَیۡنَـٰهُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ یَتۡلُونَهُۥ حَقَّ تِلَاوَتِهِۦۤ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ یُؤۡمِنُونَ بِهِۦۗ وَمَن یَكۡفُرۡ بِهِۦ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡخَـٰسِرُونَ ﴿121﴾

যাদের আমরা গ্রন্থ দিয়েছি তারা উহার তিলাওতের ন্যায্যতা মোতাবেক উহা অধ্যয়ন করে। তারাই এতে ঈমান এনেছে। আর যারা এতে অবিশ্বাস পোষণ করে তারা নিজেরাই হয় ক্ষতিগ্রস্ত।

یَـٰبَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ ٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَتِیَ ٱلَّتِیۤ أَنۡعَمۡتُ عَلَیۡكُمۡ وَأَنِّی فَضَّلۡتُكُمۡ عَلَى ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿122﴾

হে ইসরাইলের বংশধরগণ! আমার নিয়ামত স্মরণ করো যা আমি তোমাদের প্রদান করেছিলাম ও কিভাবে মানবগোষ্ঠীর উপরে তোমাদের মর্যাদা দিয়েছিলাম।

وَٱتَّقُوا۟ یَوۡمࣰا لَّا تَجۡزِی نَفۡسٌ عَن نَّفۡسࣲ شَیۡـࣰٔا وَلَا یُقۡبَلُ مِنۡهَا عَدۡلࣱ وَلَا تَنفَعُهَا شَفَـٰعَةࣱ وَلَا هُمۡ یُنصَرُونَ ﴿123﴾

আর হুশিয়াঁর হও এমন এক দিনের যখন এক সত্তা অন্য আ‌ত্মা থেকে কোনো প্রকার সাহায্য পাবে না, আর তার কাছ থেকে কোনো খেসারত কবুল করা হবে না, আর সুপারিশেও তার কোনো ফায়দা হবে না, আর তাদের সাহায্য করা হবে না।

۞ وَإِذِ ٱبۡتَلَىٰۤ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمَ رَبُّهُۥ بِكَلِمَـٰتࣲ فَأَتَمَّهُنَّۖ قَالَ إِنِّی جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامࣰاۖ قَالَ وَمِن ذُرِّیَّتِیۖ قَالَ لَا یَنَالُ عَهۡدِی ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿124﴾

আর স্মরণ করো! ইব্রাহীমকে তাঁর প্রভু কয়েকটি নির্দেশ দ্বারা পরীক্ষা করলেন, আর তিনি সেগুলো সম্পাদন করলেন। তিনি বললেন -- “আমি নিশ্চয়ই তোমাকে মানবজাতির জন্য ইমাম করতে যাচ্ছি।” তিনি বললেন -- “আর আমার বংশধরগণ থেকে?” তিনি বললেন -- “আমার অঙ্গীকার অন্যায়কারীদের উপরে বর্তায় না।”

وَإِذۡ جَعَلۡنَا ٱلۡبَیۡتَ مَثَابَةࣰ لِّلنَّاسِ وَأَمۡنࣰا وَٱتَّخِذُوا۟ مِن مَّقَامِ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمَ مُصَلࣰّىۖ وَعَهِدۡنَاۤ إِلَىٰۤ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمَ وَإِسۡمَـٰعِیلَ أَن طَهِّرَا بَیۡتِیَ لِلطَّاۤىِٕفِینَ وَٱلۡعَـٰكِفِینَ وَٱلرُّكَّعِ ٱلسُّجُودِ ﴿125﴾

আর চেয়ে দেখো! আমরা গৃহকে মানুষের জন্য সম্মেলনস্থল ও নিরাপত্তা-স্থান বানিয়েছিলাম। আর “মক্কাম-ই-ইব্রাহীমকে উপাসনা-ভূমি করো।” আর আমরা ইব্রাহীম ও ইসমাইলের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলাম -- “আমার গৃহ পবিত্র করে রেখো তওয়াফকারীদের ও ই’তিকাফকারীদের ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য।”

وَإِذۡ قَالَ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمُ رَبِّ ٱجۡعَلۡ هَـٰذَا بَلَدًا ءَامِنࣰا وَٱرۡزُقۡ أَهۡلَهُۥ مِنَ ٱلثَّمَرَ ٰ⁠تِ مَنۡ ءَامَنَ مِنۡهُم بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِۚ قَالَ وَمَن كَفَرَ فَأُمَتِّعُهُۥ قَلِیلࣰا ثُمَّ أَضۡطَرُّهُۥۤ إِلَىٰ عَذَابِ ٱلنَّارِۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِیرُ ﴿126﴾

আর স্মরণ করো! ইব্রাহীম বললেন -- “আমার প্রভু! এটিকে তুমি নিরাপদ নগর বানাও, আর এর লোকদের ফলফসল দিয়ে জীবিকা দান করো -- তাদের যারা আল্লাহ্‌তে ও আখেরাতের দিনে ঈমান এনেছে।” তিনি বললেন -- “আর যে অবিশ্বাস পোষণ করবে তাকে আমি ক্ষণেকের জন্য ভোগ করতে দেব, তারপর তাড়িয়ে নেব আগুনের শাস্তির দিকে, আর নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থল।”

وَإِذۡ یَرۡفَعُ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمُ ٱلۡقَوَاعِدَ مِنَ ٱلۡبَیۡتِ وَإِسۡمَـٰعِیلُ رَبَّنَا تَقَبَّلۡ مِنَّاۤۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلسَّمِیعُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿127﴾

আর স্মরণ করো! ইব্রাহীম গৃহের ভিত্তি গেথেঁ তুললেন, আর ইসমাইল। “আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে তুমি গ্রহণ করো। নিঃসন্দেহ তুমি নিজেই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

رَبَّنَا وَٱجۡعَلۡنَا مُسۡلِمَیۡنِ لَكَ وَمِن ذُرِّیَّتِنَاۤ أُمَّةࣰ مُّسۡلِمَةࣰ لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبۡ عَلَیۡنَاۤۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِیمُ ﴿128﴾

“আমাদের প্রভু! আর তোমার প্রতি আমাদের মুসলিম করে রেখো, আর আমাদের সন্তানসন্ততিদের থেকে তোমার প্রতি মুসলিম উম্মৎ, আর আমাদের উপাসনা-প্রণালী আমাদের দেখিয়ে দাও, আর আমাদের তওবা কবুল করো, নিঃসন্দেহ তুমি নিজেই তওবা কবুলকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

رَبَّنَا وَٱبۡعَثۡ فِیهِمۡ رَسُولࣰا مِّنۡهُمۡ یَتۡلُوا۟ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتِكَ وَیُعَلِّمُهُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَیُزَكِّیهِمۡۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿129﴾

“আমাদের প্রভু! তাদের মাঝে তাদের থেকে রসূল উত্থাপন করো যিনি তোমার প্রত্যাদেশসমূহ তাদের কাছে পড়ে শোনাবেন, আর তাদের শেখাবেন ধর্মগ্রন্থ ও জ্ঞান-বিজ্ঞান, আর তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয়ই তুমি নিজেই মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।”

وَمَن یَرۡغَبُ عَن مِّلَّةِ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمَ إِلَّا مَن سَفِهَ نَفۡسَهُۥۚ وَلَقَدِ ٱصۡطَفَیۡنَـٰهُ فِی ٱلدُّنۡیَاۖ وَإِنَّهُۥ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ لَمِنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿130﴾

আর যে ইব্রাহীমের ধর্মমত থেকে অপসৃত হয় সে ছাড়া আর কে নিজেকে নির্বোধ বানায়? আর অবশ্যই আমরা তাঁকে এই দুনিয়াতে মনোনীত করেছিলাম, আর নিঃসন্দেহে তিনি আখেরাতে হবেন ধার্মিকদের অন্যতম।

إِذۡ قَالَ لَهُۥ رَبُّهُۥۤ أَسۡلِمۡۖ قَالَ أَسۡلَمۡتُ لِرَبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿131﴾

স্মরণ করো! তাঁর প্রভু তাঁকে বললেন -- “ইসলাম গ্রহণ করো!” তিনি বললেন -- “আমি সমস্ত সৃষ্টজগতের প্রভুর কাছে আ‌ত্মসমর্পণ করছি।”

وَوَصَّىٰ بِهَاۤ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمُ بَنِیهِ وَیَعۡقُوبُ یَـٰبَنِیَّ إِنَّ ٱللَّهَ ٱصۡطَفَىٰ لَكُمُ ٱلدِّینَ فَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ ﴿132﴾

আর ইব্রাহীম তাঁর সন্তানদের এইটির ভারার্পণ করেছিলেন, আর ইয়াকুব। “হে আমার সন্তানসন্ততি! নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের জন্য এই ধর্ম মনোনীত করেছেন, অতএব তোমরা প্রাণত্যাগ করো না তোমরা মুসলিম না হয়ে।”

أَمۡ كُنتُمۡ شُهَدَاۤءَ إِذۡ حَضَرَ یَعۡقُوبَ ٱلۡمَوۡتُ إِذۡ قَالَ لِبَنِیهِ مَا تَعۡبُدُونَ مِنۢ بَعۡدِیۖ قَالُوا۟ نَعۡبُدُ إِلَـٰهَكَ وَإِلَـٰهَ ءَابَاۤىِٕكَ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمَ وَإِسۡمَـٰعِیلَ وَإِسۡحَـٰقَ إِلَـٰهࣰا وَ ٰ⁠حِدࣰا وَنَحۡنُ لَهُۥ مُسۡلِمُونَ ﴿133﴾

অথবা তোমরা কি প্রত্যক্ষদর্শী ছিলে যখন ইয়াকুবের মৃত্যু এসেছিল, যখন তিনি তাঁর সন্তানদের বলেছিলেন -- “তোমরা আমার পরে কার এবাদত করবে?” ওরা বলেছিল -- “আমরা এবাদত করব তোমার উপাস্যের ও তোমার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম ও ইসমাইল ও ইসহাকের উপাস্যের -- একক উপাস্যের, আর তাঁর কাছে আমরা মুসলিম।”

تِلۡكَ أُمَّةࣱ قَدۡ خَلَتۡۖ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَلَكُم مَّا كَسَبۡتُمۡۖ وَلَا تُسۡـَٔلُونَ عَمَّا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ ﴿134﴾

এরা ঐসব লোক যারা গত হয়ে গেছে। তাদের জন্য আছে যা তারা অর্জন করেছিল আর তোমাদের জন্য যা তোমরা অর্জন করছ, আর তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে না ওরা যা করছিল সে সন্বন্ধে।

وَقَالُوا۟ كُونُوا۟ هُودًا أَوۡ نَصَـٰرَىٰ تَهۡتَدُوا۟ۗ قُلۡ بَلۡ مِلَّةَ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمَ حَنِیفࣰاۖ وَمَا كَانَ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ﴿135﴾

আর তারা বলে -- “ইহুদীয় বা খ্রীষ্টান হও, তোমরা হেদায়ত পাবে।” তুমি বলো -- “বরং অনন্যচিত্ত ইব্রাহীমের ধর্মমত। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না?”

قُولُوۤا۟ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡنَا وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَىٰۤ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمَ وَإِسۡمَـٰعِیلَ وَإِسۡحَـٰقَ وَیَعۡقُوبَ وَٱلۡأَسۡبَاطِ وَمَاۤ أُوتِیَ مُوسَىٰ وَعِیسَىٰ وَمَاۤ أُوتِیَ ٱلنَّبِیُّونَ مِن رَّبِّهِمۡ لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ أَحَدࣲ مِّنۡهُمۡ وَنَحۡنُ لَهُۥ مُسۡلِمُونَ ﴿136﴾

তোমরা বলো -- “আমরা আল্লাহ্‌তে ঈমান এনেছি, আর তা’তে যা আমাদের জন্য নাযিল হয়েছে, আর যা নাযিল হয়েছিল ইব্রাহীমের কাছে, আর ইসমাইল ও ইসহাক, আর ইয়াকুব এবং বিভিন্ন গোত্রের কাছে, আর যা দেয়া হয়েছিল মূসাকে এবং ঈসাকে, আর যা সকল নবীদের তাঁদের প্রভুর কাছ থেকে দেয়া হয়েছিল। আমরা তাঁদের কোনো একজনের মধ্যেও পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই কাছে মুসলিম হচ্ছি।”

فَإِنۡ ءَامَنُوا۟ بِمِثۡلِ مَاۤ ءَامَنتُم بِهِۦ فَقَدِ ٱهۡتَدَوا۟ۖ وَّإِن تَوَلَّوۡا۟ فَإِنَّمَا هُمۡ فِی شِقَاقࣲۖ فَسَیَكۡفِیكَهُمُ ٱللَّهُۚ وَهُوَ ٱلسَّمِیعُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿137﴾

এবার যদি তারা ঈমান আনত যেভাবে তোমরা তাঁর প্রতি ঈমান আনছো, তাহলে নিঃসন্দেহ তারা হেদায়ত পেতো, আর যদি তারা ফিরে যায় তাহলে অবশ্যই তারা বিরোধিতাতে নিমগ্ন। অতএব আল্লাহই তাদের বিরুদ্ধে তোমার জন্য যথেষ্ট, কারণ তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

صِبۡغَةَ ٱللَّهِ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ صِبۡغَةࣰۖ وَنَحۡنُ لَهُۥ عَـٰبِدُونَ ﴿138﴾

“আল্লাহ্‌র রঙ। আর রঙের ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র চাইতে কে বেশী সুন্দর? আর আমরা তাঁরই উপাসনাকারী।”

قُلۡ أَتُحَاۤجُّونَنَا فِی ٱللَّهِ وَهُوَ رَبُّنَا وَرَبُّكُمۡ وَلَنَاۤ أَعۡمَـٰلُنَا وَلَكُمۡ أَعۡمَـٰلُكُمۡ وَنَحۡنُ لَهُۥ مُخۡلِصُونَ ﴿139﴾

বলো -- “তোমরা কি আমাদের সঙ্গে আল্লাহ্‌র সন্বন্ধে হুজ্জত করছ অথচ তিনি আমাদের প্রভু, তোমাদেরও প্রভু? আর আমাদের কাজ আমাদের হবে, ও তোমাদের কাজ তোমাদের হবে। আর আমরা তাঁরই প্রতি একান্ত অনুরক্ত।”

أَمۡ تَقُولُونَ إِنَّ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمَ وَإِسۡمَـٰعِیلَ وَإِسۡحَـٰقَ وَیَعۡقُوبَ وَٱلۡأَسۡبَاطَ كَانُوا۟ هُودًا أَوۡ نَصَـٰرَىٰۗ قُلۡ ءَأَنتُمۡ أَعۡلَمُ أَمِ ٱللَّهُۗ وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّن كَتَمَ شَهَـٰدَةً عِندَهُۥ مِنَ ٱللَّهِۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَـٰفِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُونَ ﴿140﴾

অথবা তোমরা কি বলো যে ইব্রাহীম ও ইসমাইল ও ইসহাক ও ইয়াকুব এবং বিভিন্ন গোত্রেরা ইহুদী অথবা খ্রীষ্টান ছিলেন? বলো -- “তোমরা কি বেশি জানো, না আল্লাহ্‌? আর তাঁর চাইতে কে বেশি অন্যায় করছে যে গোপন করছে সেই সাক্ষ্য যা আল্লাহ্‌র কাছ থেকে সে পেয়েছে? আর তোমরা যা করছ সে সন্বন্ধে আল্লাহ্ বেখেয়াল নন।

تِلۡكَ أُمَّةࣱ قَدۡ خَلَتۡۖ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَلَكُم مَّا كَسَبۡتُمۡۖ وَلَا تُسۡـَٔلُونَ عَمَّا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ ﴿141﴾

এরা ঐসব লোক যারা গত হয়ে গেছে। তাদের জন্য আছে যা তারা অর্জন করেছিল, আর তোমাদের জন্য যা তোমরা অর্জন করছ, আর তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে না ওরা যা করছিল সে-সন্বন্ধে।

۞ سَیَقُولُ ٱلسُّفَهَاۤءُ مِنَ ٱلنَّاسِ مَا وَلَّىٰهُمۡ عَن قِبۡلَتِهِمُ ٱلَّتِی كَانُوا۟ عَلَیۡهَاۚ قُل لِّلَّهِ ٱلۡمَشۡرِقُ وَٱلۡمَغۡرِبُۚ یَهۡدِی مَن یَشَاۤءُ إِلَىٰ صِرَ ٰ⁠طࣲ مُّسۡتَقِیمࣲ ﴿142﴾

লোকদের মধ্যের নির্বোধরা শীঘ্রই বলবে -- “তাদের যে কিবলাহ্‌তে তারা তাদের বদলালো কিসে?” তুমি বলো -- “পূর্ব ও পশ্চিমের মালিক আল্লাহ্‌, তিনি যাকে ইচ্ছা করেন তাকে সহজ-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন।”

وَكَذَ ٰ⁠لِكَ جَعَلۡنَـٰكُمۡ أُمَّةࣰ وَسَطࣰا لِّتَكُونُوا۟ شُهَدَاۤءَ عَلَى ٱلنَّاسِ وَیَكُونَ ٱلرَّسُولُ عَلَیۡكُمۡ شَهِیدࣰاۗ وَمَا جَعَلۡنَا ٱلۡقِبۡلَةَ ٱلَّتِی كُنتَ عَلَیۡهَاۤ إِلَّا لِنَعۡلَمَ مَن یَتَّبِعُ ٱلرَّسُولَ مِمَّن یَنقَلِبُ عَلَىٰ عَقِبَیۡهِۚ وَإِن كَانَتۡ لَكَبِیرَةً إِلَّا عَلَى ٱلَّذِینَ هَدَى ٱللَّهُۗ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِیُضِیعَ إِیمَـٰنَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِٱلنَّاسِ لَرَءُوفࣱ رَّحِیمࣱ ﴿143﴾

আর এইভাবে তোমাদের আমরা বানিয়েছি একটি সুসামঞ্জস্যরক্ষাকারী সমাজ, যাতে তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষী হতে পারো, আর রসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হতে পারেন। আর আমরা তাকে কিবলাহ্ বানাতাম না যার উপরে তুমি ছিলে, যদি না আমরা যাচাই করতাম যে কে রসূলকে অনুসরণ করে আর কে তার মোড় ফিরিয়ে ঘুরে যায়। আর নিঃসন্দেহ এটি কঠিন ছিল তাদের ক্ষেত্রে ছাড়া যাদের আল্লাহ্ হেদায়ত করেছেন। আর আল্লাহ্ তোমাদের ঈমান কখনও নিষ্ফল হতে দেবেন না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মানুষের প্রতি পরম স্নেহময়, অফুরন্ত ফলদাতা।

قَدۡ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجۡهِكَ فِی ٱلسَّمَاۤءِۖ فَلَنُوَلِّیَنَّكَ قِبۡلَةࣰ تَرۡضَىٰهَاۚ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۚ وَحَیۡثُ مَا كُنتُمۡ فَوَلُّوا۟ وُجُوهَكُمۡ شَطۡرَهُۥۗ وَإِنَّ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ لَیَعۡلَمُونَ أَنَّهُ ٱلۡحَقُّ مِن رَّبِّهِمۡۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَـٰفِلٍ عَمَّا یَعۡمَلُونَ ﴿144﴾

আমরা নিশ্চয়ই দেখেছি আকাশের দিকে তুমি মুখ তোলে রয়েছ, তাই আমরা নিঃসন্দেহ তোমাকে কর্তৃত্ব দেবো কিবলাহ্‌র যা তুমি পছন্দ কর। কাজেই হারাম মসজিদের দিকে তোমার মুখ ফেরাও। আর যেখানেই তোমরা থাক তোমাদের মুখ এর দিকেই ফেরাবে। আর যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তারা অবশ্যই জানে যে নিঃসন্দেহ এটি তাদের প্রভুর কাছ থেকে আসা ধ্রুব-সত্য। আর তারা যা করছে আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে বেখেয়াল নন।

وَلَىِٕنۡ أَتَیۡتَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ بِكُلِّ ءَایَةࣲ مَّا تَبِعُوا۟ قِبۡلَتَكَۚ وَمَاۤ أَنتَ بِتَابِعࣲ قِبۡلَتَهُمۡۚ وَمَا بَعۡضُهُم بِتَابِعࣲ قِبۡلَةَ بَعۡضࣲۚ وَلَىِٕنِ ٱتَّبَعۡتَ أَهۡوَاۤءَهُم مِّنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَكَ مِنَ ٱلۡعِلۡمِ إِنَّكَ إِذࣰا لَّمِنَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿145﴾

আর যদিও তুমি যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের কাছে সবক’টি নিদর্শন নিয়ে আস তবুও তারা তোমার কিবলাহ্ মেনে চলবে না। আর তুমি তাদের কিবলাহ্‌র অনুবর্তী হতে পারো না, আবার তাদের কেউ-কেউ পরস্পরের কিবলাহ্‌র অনুবর্তী নয়। আর তুমি যদি তাদের হীন মনোবৃত্তির অনুসরণ কর তোমার কাছে জ্ঞানের যা এসেছে তার পরেও, তাহলে নিঃসন্দেহ তুমিও হবে অন্যায়কারীদের অন্যতম।

ٱلَّذِینَ ءَاتَیۡنَـٰهُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ یَعۡرِفُونَهُۥ كَمَا یَعۡرِفُونَ أَبۡنَاۤءَهُمۡۖ وَإِنَّ فَرِیقࣰا مِّنۡهُمۡ لَیَكۡتُمُونَ ٱلۡحَقَّ وَهُمۡ یَعۡلَمُونَ ﴿146﴾

যাদের আমরা কিতাব দিয়েছি তারা তাঁকে চিনতে পারছে যেমন তারা চিনতে পারে তাদের সন্তানদের। কিন্তু তাদের মধ্যের একদল নিশ্চয়ই সত্য কথা গোপন করছে, আর তারা জানে।

ٱلۡحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَلَا تَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡمُمۡتَرِینَ ﴿147﴾

এই সত্য এসেছে তোমার প্রভুর কাছ থেকে অতএব তোমারা সন্দেহপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

وَلِكُلࣲّ وِجۡهَةٌ هُوَ مُوَلِّیهَاۖ فَٱسۡتَبِقُوا۟ ٱلۡخَیۡرَ ٰ⁠تِۚ أَیۡنَ مَا تَكُونُوا۟ یَأۡتِ بِكُمُ ٱللَّهُ جَمِیعًاۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿148﴾

আর প্রত্যেকের জন্য একটি কেন্দ্রস্থল আছে যে-দিকে সে ফেরে, কাজেই সৎকর্মে একে অন্যের সাথে তোমরা প্রতিযোগিতা করো। যেখানেই তোমরা থাকো না কেন, আল্লাহ্ তোমাদের সবাইকে একত্রিত করবেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সব-কি ছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

وَمِنۡ حَیۡثُ خَرَجۡتَ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۖ وَإِنَّهُۥ لَلۡحَقُّ مِن رَّبِّكَۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَـٰفِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُونَ ﴿149﴾

আর যেখান থেকেই তুমি আস, তোমার মুখ পবিত্র মসজিদের দিকে ফেরাও। নিঃসন্দেহ এটি তোমার প্রভুর কাছ থেকে সত্য। আর অবশ্যই আল্লাহ্ বেখেয়াল নন তোমরা যা করো সে-সন্বন্ধে।

وَمِنۡ حَیۡثُ خَرَجۡتَ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۚ وَحَیۡثُ مَا كُنتُمۡ فَوَلُّوا۟ وُجُوهَكُمۡ شَطۡرَهُۥ لِئَلَّا یَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَیۡكُمۡ حُجَّةٌ إِلَّا ٱلَّذِینَ ظَلَمُوا۟ مِنۡهُمۡ فَلَا تَخۡشَوۡهُمۡ وَٱخۡشَوۡنِی وَلِأُتِمَّ نِعۡمَتِی عَلَیۡكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ﴿150﴾

আর যেখান থেকেই তুমি আস, তোমার মুখ পবিত্র মসজিদের দিকে ফেরাবে। আর যেখানেই তোমরা থাকো, তোমাদের মুখ সেই দিকেই ফেরাবে। যাতে তোমাদের বিরুদ্ধে লোকজনদের কোনো হুজ্জত না থাকে -- তাদের মাঝে যারা অন্যায় করে তারা ব্যতীত। অতএব তাদের ভয় করো না, বরং ভয় করো আমাকে। আর যাতে আমি তোমাদের উপরে আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করতে পারি, আর যাতে তোমরা সুপথগামী হতে পারো, --

كَمَاۤ أَرۡسَلۡنَا فِیكُمۡ رَسُولࣰا مِّنكُمۡ یَتۡلُوا۟ عَلَیۡكُمۡ ءَایَـٰتِنَا وَیُزَكِّیكُمۡ وَیُعَلِّمُكُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَیُعَلِّمُكُم مَّا لَمۡ تَكُونُوا۟ تَعۡلَمُونَ ﴿151﴾

যেমন, আমরা তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্যে থেকে একজন রসূল পাঠিয়েছি, যিনি আমাদের বাণী তোমাদের কাছে তিলাওত করছেন, আর তোমাদের পবিত্র করছেন, আর তোমাদের ধর্মগ্রন্থ ও জ্ঞানবিজ্ঞান শিক্ষা দিচ্ছেন, আর তোমাদের শেখাচ্ছেন যা তোমরা জানতে না।

فَٱذۡكُرُونِیۤ أَذۡكُرۡكُمۡ وَٱشۡكُرُوا۟ لِی وَلَا تَكۡفُرُونِ ﴿152﴾

অতএব আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করবো, আর আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও, আর আমাকে অস্বীকার করো না।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱسۡتَعِینُوا۟ بِٱلصَّبۡرِ وَٱلصَّلَوٰةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّـٰبِرِینَ ﴿153﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! সাহায্য কামনা করো ধৈর্য ধরে ও নামায পড়ে! নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সবুরকারীদের সাথে আছেন।

وَلَا تَقُولُوا۟ لِمَن یُقۡتَلُ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ أَمۡوَ ٰ⁠تُۢۚ بَلۡ أَحۡیَاۤءࣱ وَلَـٰكِن لَّا تَشۡعُرُونَ ﴿154﴾

আর যারা আল্লাহ্‌র পথে নিহত হয় তাদের বলো না -- “মৃত,” বরং জীবন্ত, যদিও তোমরা বুঝতে পারছ না।

وَلَنَبۡلُوَنَّكُم بِشَیۡءࣲ مِّنَ ٱلۡخَوۡفِ وَٱلۡجُوعِ وَنَقۡصࣲ مِّنَ ٱلۡأَمۡوَ ٰ⁠لِ وَٱلۡأَنفُسِ وَٱلثَّمَرَ ٰ⁠تِۗ وَبَشِّرِ ٱلصَّـٰبِرِینَ ﴿155﴾

আর আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের পরীক্ষা করবো কিছু ভয়, আর ক্ষুধা দিয়ে, আর মাল-আসবাবের, আর লোকজনের আর ফল- ফসলের লোকসান ক’রে। আর সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের --

ٱلَّذِینَ إِذَاۤ أَصَـٰبَتۡهُم مُّصِیبَةࣱ قَالُوۤا۟ إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّاۤ إِلَیۡهِ رَ ٰ⁠جِعُونَ ﴿156﴾

যারা তাদের উপরে কোনো আপদ-বিপদ ঘটলে বলে -- “নিঃসন্দেহ আমরা আল্লাহ্‌র জন্যে, আর অবশ্যই আমরা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তনকারী।”

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ عَلَیۡهِمۡ صَلَوَ ٰ⁠تࣱ مِّن رَّبِّهِمۡ وَرَحۡمَةࣱۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُهۡتَدُونَ ﴿157﴾

এইসব -- তাদের উপরে তাদের প্রভুর কাছ থেকে রয়েছে আশবাদ ও করুণা, আর এরা নিজেরাই সুপথগামী।

۞ إِنَّ ٱلصَّفَا وَٱلۡمَرۡوَةَ مِن شَعَاۤىِٕرِ ٱللَّهِۖ فَمَنۡ حَجَّ ٱلۡبَیۡتَ أَوِ ٱعۡتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِ أَن یَطَّوَّفَ بِهِمَاۚ وَمَن تَطَوَّعَ خَیۡرࣰا فَإِنَّ ٱللَّهَ شَاكِرٌ عَلِیمٌ ﴿158﴾

নিঃসন্দেহ সাফা ও মারওয়াহ্ আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের অন্যতম। তাই যে কেউ গৃহে হজ করে বা উমরাহ করে তার জন্য অপরাধ হবে না যদি সে এ দুইয়ের মাঝে তওয়াফ করে। আর যে কেউ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে সৎকর্ম করে, আল্লাহ্ নিশ্চয়ই অতি দানশীল, সর্বজ্ঞাতা।

إِنَّ ٱلَّذِینَ یَكۡتُمُونَ مَاۤ أَنزَلۡنَا مِنَ ٱلۡبَیِّنَـٰتِ وَٱلۡهُدَىٰ مِنۢ بَعۡدِ مَا بَیَّنَّـٰهُ لِلنَّاسِ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ یَلۡعَنُهُمُ ٱللَّهُ وَیَلۡعَنُهُمُ ٱللَّـٰعِنُونَ ﴿159﴾

নিঃসন্দেহ যারা গোপন করে রাখে পরিস্কার প্রমাণাবলী ও পথনির্দেশের যে-সব আমরা অবতারণ করেছিলাম এগুলো জণগণের জন্য ধর্মগন্থে সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করার পরেও, তারাই! -- যাদের আল্লাহ্ লানৎ দেন, আর তাদের বঞ্চিত করে লানৎকারীরা --

إِلَّا ٱلَّذِینَ تَابُوا۟ وَأَصۡلَحُوا۟ وَبَیَّنُوا۟ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَتُوبُ عَلَیۡهِمۡ وَأَنَا ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِیمُ ﴿160﴾

তারা ছাড়া যারা তওবা করে ও সংশোধন করে, আর প্রকাশ করে, তাহলে তারাই! -- তাদের প্রতি আমি ফিরি আর আমি বারবার ফিরি, অফুরন্ত ফলদাতা।

إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَمَاتُوا۟ وَهُمۡ كُفَّارٌ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ عَلَیۡهِمۡ لَعۡنَةُ ٱللَّهِ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ وَٱلنَّاسِ أَجۡمَعِینَ ﴿161﴾

অবশ্য যারা অবিশ্বাস পোষণ করে আর মারা যায় তারা অবিশ্বাসী থাকা অবস্থায়, তাদের ক্ষেত্রে -- তাদের উপরে ধিক্কার হোক আল্লাহ্‌র, ও ফিরিশ্‌তাদের ও জনগণের সম্মিলিতভাবে, --

خَـٰلِدِینَ فِیهَا لَا یُخَفَّفُ عَنۡهُمُ ٱلۡعَذَابُ وَلَا هُمۡ یُنظَرُونَ ﴿162﴾

এতে তারা অবস্থান করবে। তাদের উপর থেকে যাতনা লাঘব করা হবে না, আর তারা বিরামও পাবে না।

وَإِلَـٰهُكُمۡ إِلَـٰهࣱ وَ ٰ⁠حِدࣱۖ لَّاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلرَّحۡمَـٰنُ ٱلرَّحِیمُ ﴿163﴾

আর তোমাদের উপাস্য একক খোদা, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, রহমান, রহীম।

إِنَّ فِی خَلۡقِ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَـٰفِ ٱلَّیۡلِ وَٱلنَّهَارِ وَٱلۡفُلۡكِ ٱلَّتِی تَجۡرِی فِی ٱلۡبَحۡرِ بِمَا یَنفَعُ ٱلنَّاسَ وَمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ مِن مَّاۤءࣲ فَأَحۡیَا بِهِ ٱلۡأَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِهَا وَبَثَّ فِیهَا مِن كُلِّ دَاۤبَّةࣲ وَتَصۡرِیفِ ٱلرِّیَـٰحِ وَٱلسَّحَابِ ٱلۡمُسَخَّرِ بَیۡنَ ٱلسَّمَاۤءِ وَٱلۡأَرۡضِ لَـَٔایَـٰتࣲ لِّقَوۡمࣲ یَعۡقِلُونَ ﴿164﴾

নিঃসন্দেহ মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টির মধ্যে, আর রাত ও দিনের বিবর্তনে, আর জাহাজে -- যা সাগরের মাঝে চলাচল করে যার দ্বারা মানুষের মুনাফা হয় তার মধ্যে, আর আল্লাহ্ আকাশ থেকে বৃষ্টির যা-কিছু পাঠান তাতে, তারপর তার দ্বারা মাটিকে তার মরণের পরে প্রাণসঞ্চার করেন, আর তাতে ছড়িয়ে দেন হরেক রকমের জীবজন্ত, আর আকাশ ও পৃথিবীর মাঝে নিয়ন্ত্রিত বাতাস ও মেঘের গতিবেগে বিশেষ নিদর্শন রয়েছে বিচার-বুদ্ধি থাকা লোকের জন্য।

وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن یَتَّخِذُ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَندَادࣰا یُحِبُّونَهُمۡ كَحُبِّ ٱللَّهِۖ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَشَدُّ حُبࣰّا لِّلَّهِۗ وَلَوۡ یَرَى ٱلَّذِینَ ظَلَمُوۤا۟ إِذۡ یَرَوۡنَ ٱلۡعَذَابَ أَنَّ ٱلۡقُوَّةَ لِلَّهِ جَمِیعࣰا وَأَنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعَذَابِ ﴿165﴾

আর মানুষের মাঝে কেউ-কেউ আল্লাহ্‌কে ছেড়ে অন্যকে মুরব্বী বলে গ্রহণ করে, তারা তাদের ভালোবাসে আল্লাহ্‌কে ভালোবাসার ন্যায়। তবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ্‌র প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রবলতর। আফসোস! যারা অন্যায় করে তারা যদি দেখতো -- যখন শাস্তি তারা দেখতে পায়, তখন সমস্ত ক্ষমতা পুরোপুরিভাবে আল্লাহ্‌র, আর আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ শাস্তি দিতে কঠোর।

إِذۡ تَبَرَّأَ ٱلَّذِینَ ٱتُّبِعُوا۟ مِنَ ٱلَّذِینَ ٱتَّبَعُوا۟ وَرَأَوُا۟ ٱلۡعَذَابَ وَتَقَطَّعَتۡ بِهِمُ ٱلۡأَسۡبَابُ ﴿166﴾

চেয়ে দেখো! যাদের অনুসরণ করা হতো তারা যারা অনুসরণ করেছিল তাদের অস্বীকার করবে, আর তারা দেখতে পাবে শাস্তি, আর তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।

وَقَالَ ٱلَّذِینَ ٱتَّبَعُوا۟ لَوۡ أَنَّ لَنَا كَرَّةࣰ فَنَتَبَرَّأَ مِنۡهُمۡ كَمَا تَبَرَّءُوا۟ مِنَّاۗ كَذَ ٰ⁠لِكَ یُرِیهِمُ ٱللَّهُ أَعۡمَـٰلَهُمۡ حَسَرَ ٰ⁠تٍ عَلَیۡهِمۡۖ وَمَا هُم بِخَـٰرِجِینَ مِنَ ٱلنَّارِ ﴿167﴾

আর যারা অনুসরণ করেছিল তারা বলবে -- ''হায়, আমরা যদি ফেরত পালা পেতাম তাহলে আমরা তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করতাম, যেমন তারা আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।’’ এইভাবে আল্লাহ্ তাদের ক্রিয়াকলাপ তাদের দেখান তাদের জন্য তীব্র আক্ষেপরূপে। আর তারা আগুন থেকে বহিষ্কৃত হবে না।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ كُلُوا۟ مِمَّا فِی ٱلۡأَرۡضِ حَلَـٰلࣰا طَیِّبࣰا وَلَا تَتَّبِعُوا۟ خُطُوَ ٰ⁠تِ ٱلشَّیۡطَـٰنِۚ إِنَّهُۥ لَكُمۡ عَدُوࣱّ مُّبِینٌ ﴿168﴾

ওহে মানবজাতি! পৃথিবীতে যা-কিছু হালাল ও পবিত্র আছে তা থেকে পানাহার করো, আর শয়তানের পদচিহ্ন অনুসরণ করো না। নিঃসন্দেহ সে তোমাদের জন্য প্রকাশ্য শত্রু।

إِنَّمَا یَأۡمُرُكُم بِٱلسُّوۤءِ وَٱلۡفَحۡشَاۤءِ وَأَن تَقُولُوا۟ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعۡلَمُونَ ﴿169﴾

সে তোমাদের কেবল প্ররোচনা দেয় মন্দ ও অশালীনতার প্রতি, আর আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে তাই বলতে যা তোমরা জানো না।

وَإِذَا قِیلَ لَهُمُ ٱتَّبِعُوا۟ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ قَالُوا۟ بَلۡ نَتَّبِعُ مَاۤ أَلۡفَیۡنَا عَلَیۡهِ ءَابَاۤءَنَاۤۚ أَوَلَوۡ كَانَ ءَابَاۤؤُهُمۡ لَا یَعۡقِلُونَ شَیۡـࣰٔا وَلَا یَهۡتَدُونَ ﴿170﴾

আর যখন তাদের বলা হয় -- ''অনুসরণ করো যা প্রত্যাদেশ আল্লাহ্ অবতারণ করেছেন’’, তারা বলে -- ''না, আমরা অনুসরণ করি তার যার উপরে আমাদের পিতৃপুরুষদের দেখেছি।’’ কি! যদিও তাদের পিতৃপুরুষদের বুদ্ধিবিবেচনা কিছুই ছিল না, আর তারা পথনির্দেশ গ্রহণ করে নি?

وَمَثَلُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ كَمَثَلِ ٱلَّذِی یَنۡعِقُ بِمَا لَا یَسۡمَعُ إِلَّا دُعَاۤءࣰ وَنِدَاۤءࣰۚ صُمُّۢ بُكۡمٌ عُمۡیࣱ فَهُمۡ لَا یَعۡقِلُونَ ﴿171﴾

আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের উপমা হচ্ছে তার দৃষ্টান্তের মতো যে ডাক দেয় এমন কতককে যে আওয়াজ ও চেচাঁমেচি ছাড়া আর কিছু শোনে না। বধিরতা, বোবা, অন্ধত্ব, কাজেই তারা বুঝে না।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ كُلُوا۟ مِن طَیِّبَـٰتِ مَا رَزَقۡنَـٰكُمۡ وَٱشۡكُرُوا۟ لِلَّهِ إِن كُنتُمۡ إِیَّاهُ تَعۡبُدُونَ ﴿172﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! পবিত্র জিনিস থেকে পানাহার করো যা তোমাদের খেতে দিয়েছি, আর আল্লাহ্‌কে ধন্যবাদ দাও, যদি তোমরা তাঁরই এবাদত করো।

إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَیۡكُمُ ٱلۡمَیۡتَةَ وَٱلدَّمَ وَلَحۡمَ ٱلۡخِنزِیرِ وَمَاۤ أُهِلَّ بِهِۦ لِغَیۡرِ ٱللَّهِۖ فَمَنِ ٱضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغࣲ وَلَا عَادࣲ فَلَاۤ إِثۡمَ عَلَیۡهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمٌ ﴿173﴾

তিনি তোমাদের কারণে নিষেধ করেছেন কেবল যা নিজে মারা গেছে, আর রক্ত, আর শূকরের মাংস, আর যার উপরে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য নাম উচ্চারিত হয়েছে। কিন্তু যে চাপে পড়েছে, অবাধ্য হয় নি বা মাত্রা ছাড়ায় নি, তার উপরে কোনো পাপ হবে না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ত্রাণকর্তা, অফুরন্ত ফলদাতা!

إِنَّ ٱلَّذِینَ یَكۡتُمُونَ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَیَشۡتَرُونَ بِهِۦ ثَمَنࣰا قَلِیلًا أُو۟لَـٰۤىِٕكَ مَا یَأۡكُلُونَ فِی بُطُونِهِمۡ إِلَّا ٱلنَّارَ وَلَا یُكَلِّمُهُمُ ٱللَّهُ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ وَلَا یُزَكِّیهِمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمٌ ﴿174﴾

অবশ্যই যারা ধর্মগ্রন্থের মধ্যে থেকে আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তা লুকিয়ে রাখে আর এর দ্বারা তুচ্ছ বস্তু কিনে নেয়, -- এরাই তাদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছু গেলে না, আর কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাদের সাথে কথাবার্তা বলবেন না, বা তাদের শুদ্ধও করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে ব্যথাদায়ক শাস্তি।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ ٱشۡتَرَوُا۟ ٱلضَّلَـٰلَةَ بِٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡعَذَابَ بِٱلۡمَغۡفِرَةِۚ فَمَاۤ أَصۡبَرَهُمۡ عَلَى ٱلنَّارِ ﴿175﴾

এরাই তারা যারা কিনে নেয় হেদায়তের বিনিময়ে ভ্রান্তপথ ও পরিত্রাণের পরিবর্তে শাস্তি। কাজেই কতো তাদের ধৈর্য আগুনের প্রতি!

ذَ ٰ⁠لِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ نَزَّلَ ٱلۡكِتَـٰبَ بِٱلۡحَقِّۗ وَإِنَّ ٱلَّذِینَ ٱخۡتَلَفُوا۟ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ لَفِی شِقَاقِۭ بَعِیدࣲ ﴿176﴾

তা-ই! কারণ আল্লাহ্ গ্রন্থখানা নাযিল করেছেন সত্যের সাথে। আর যারা গ্রন্থখানার মতবিরোধ করে তারা নিঃসন্দেহ একগুঁয়েমিতে বহুদূর পৌঁছেছে

۞ لَّیۡسَ ٱلۡبِرَّ أَن تُوَلُّوا۟ وُجُوهَكُمۡ قِبَلَ ٱلۡمَشۡرِقِ وَٱلۡمَغۡرِبِ وَلَـٰكِنَّ ٱلۡبِرَّ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ وَٱلۡكِتَـٰبِ وَٱلنَّبِیِّـۧنَ وَءَاتَى ٱلۡمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِۦ ذَوِی ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡیَتَـٰمَىٰ وَٱلۡمَسَـٰكِینَ وَٱبۡنَ ٱلسَّبِیلِ وَٱلسَّاۤىِٕلِینَ وَفِی ٱلرِّقَابِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلۡمُوفُونَ بِعَهۡدِهِمۡ إِذَا عَـٰهَدُوا۟ۖ وَٱلصَّـٰبِرِینَ فِی ٱلۡبَأۡسَاۤءِ وَٱلضَّرَّاۤءِ وَحِینَ ٱلۡبَأۡسِۗ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ صَدَقُوا۟ۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُتَّقُونَ ﴿177﴾

ধার্মিকতা তাতে নয় যে তোমাদের মুখ পূব বা পশ্চিম দিকে ফেরাও, তবে ধর্মনিষ্ঠা হচ্ছে যে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, আর আখেরাতের দিনের প্রতি, আর ফিরিশ্‌তাদের প্রতি, আর গ্রন্থখানিতে, আর নবীদের প্রতি; আর যে তাঁর প্রতি মহব্বত বশতঃ ধন দান করে আ‌ত্মীয়-স্বজনদের, আর এতীমদের, আর মিসকিনদের, আর পথচারীদের, আর ভিখারীদের, আর দাসদের মুক্তিপণ বাবদ, আর যে নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করেচ আর যারা প্রতিজ্ঞা করার পরে তাদের ওয়াদা রক্ষা করে, আর অভাব-অনটনে ও আপৎকালে ও আতঙ্কের সময়ে ধৈর্যশীলদের। এরাই তারা যারা সত্যনিষ্ঠ, আর এরা নিজেরাই ধর্মপরায়ণ।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلۡقِصَاصُ فِی ٱلۡقَتۡلَىۖ ٱلۡحُرُّ بِٱلۡحُرِّ وَٱلۡعَبۡدُ بِٱلۡعَبۡدِ وَٱلۡأُنثَىٰ بِٱلۡأُنثَىٰۚ فَمَنۡ عُفِیَ لَهُۥ مِنۡ أَخِیهِ شَیۡءࣱ فَٱتِّبَاعُۢ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَأَدَاۤءٌ إِلَیۡهِ بِإِحۡسَـٰنࣲۗ ذَ ٰ⁠لِكَ تَخۡفِیفࣱ مِّن رَّبِّكُمۡ وَرَحۡمَةࣱۗ فَمَنِ ٱعۡتَدَىٰ بَعۡدَ ذَ ٰ⁠لِكَ فَلَهُۥ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿178﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের প্রতি হত্যার ক্ষেত্রে প্রতিশোধের বিধান দেয়া হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তির উপরে স্বাধীন ব্যক্তির ক্ষেত্রে, আর দাসের উপরে দাসের ক্ষেত্রে, আর নারীর উপরে নারীর ক্ষেত্রে। তবে যাকে কিছুটা রেহাই দেয়া হয় তার ভাইয়ের তরফ হতে, তাহলে বিচার হবে ন্যায্যভাবে, আর তার প্রতি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে উদারভাবে। -- এটি তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে লঘু-ব্যবস্থা ও করুণা। কাজেই এরপরে যে সীমালঙ্ঘন করবে তার জন্য রয়েছে ব্যথাদায়ক শাস্তি।

وَلَكُمۡ فِی ٱلۡقِصَاصِ حَیَوٰةࣱ یَـٰۤأُو۟لِی ٱلۡأَلۡبَـٰبِ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ﴿179﴾

আর তোমাদের জন্য প্রতিশোধের বিধানে রয়েছে জীবন, হে জ্ঞানবান ব্যক্তিগণ! যাতে তোমরা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করো।

كُتِبَ عَلَیۡكُمۡ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ ٱلۡمَوۡتُ إِن تَرَكَ خَیۡرًا ٱلۡوَصِیَّةُ لِلۡوَ ٰ⁠لِدَیۡنِ وَٱلۡأَقۡرَبِینَ بِٱلۡمَعۡرُوفِۖ حَقًّا عَلَى ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿180﴾

তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করা গেল যে যখন তোমাদের কারোর কাছে মৃত্যু হাজির হয় সে ধন ছেড়ে যাচ্ছে, তবে যেন ওসিয়ৎ করা হয় মাতাপিতা ও নিকটা‌ত্মীয়দের জন্য ন্যায়সঙ্গত-ভাবে; এটা মুত্তকীদের উপরে একটি কর্তব্য।

فَمَنۢ بَدَّلَهُۥ بَعۡدَ مَا سَمِعَهُۥ فَإِنَّمَاۤ إِثۡمُهُۥ عَلَى ٱلَّذِینَ یُبَدِّلُونَهُۥۤۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِیعٌ عَلِیمࣱ ﴿181﴾

আর যে কেউ এটি বদলে ফেলে তা শোনার পরেও, তা হলে তার পাপ বর্তাবে তাদের উপরে যারা এটি বদলাবে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

فَمَنۡ خَافَ مِن مُّوصࣲ جَنَفًا أَوۡ إِثۡمࣰا فَأَصۡلَحَ بَیۡنَهُمۡ فَلَاۤ إِثۡمَ عَلَیۡهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿182﴾

কিন্তু যদি কেউ আশংকা করে যে ওসিয়ৎকারীর তরফ থেকে ভুল বা অন্যায় হচ্ছে, কাজেই তাদের মধ্যে বোঝাপড়া করে, তাহলে তার উপরে কোনো দোষ হবে না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ত্রাণকর্তা, অফুরন্ত ফলদাতা।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلصِّیَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ﴿183﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের উপরে রোযা বিধিবদ্ধ করা গেল যেমন বিধান করা হয়েছিল যারা তোমাদের আগে এসেছে তাদের উপরে, যাতে তোমরা ধর্মভীরুতা অবলন্বন করো, --

أَیَّامࣰا مَّعۡدُودَ ٰ⁠تࣲۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِیضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرࣲ فَعِدَّةࣱ مِّنۡ أَیَّامٍ أُخَرَۚ وَعَلَى ٱلَّذِینَ یُطِیقُونَهُۥ فِدۡیَةࣱ طَعَامُ مِسۡكِینࣲۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَیۡرࣰا فَهُوَ خَیۡرࣱ لَّهُۥۚ وَأَن تَصُومُوا۟ خَیۡرࣱ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿184﴾

নির্দিষ্টসংখ্যক দিনের জন্য। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেউ অসুস্থ অথবা সফরে আছে সে সেই সংখ্যক অন্য দিন-গুলোতে। আর যারা এ অতি কষ্টসাধ্য বোধ করে -- প্রতিবিধান হল একজন মিসকিনকে খাওয়ানো। কিন্তু যে কেউ স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে ভালো কাজ করে, সেটি তার জন্য ভালো। আর যদি তোমরা রোযা রাখো তবে তোমাদের জন্য অতি উত্তম, -- যদি তোমরা জানতে।

شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِیۤ أُنزِلَ فِیهِ ٱلۡقُرۡءَانُ هُدࣰى لِّلنَّاسِ وَبَیِّنَـٰتࣲ مِّنَ ٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡفُرۡقَانِۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡیَصُمۡهُۖ وَمَن كَانَ مَرِیضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرࣲ فَعِدَّةࣱ مِّنۡ أَیَّامٍ أُخَرَۗ یُرِیدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡیُسۡرَ وَلَا یُرِیدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ وَلِتُكۡمِلُوا۟ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا۟ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿185﴾

রমযান মাস এইটি যাতে কুরাআন নাযিল হয়েছিল, -- মানবগোষ্ঠীর জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে, আর পথনির্দেশের স্পষ্টপ্রমানরূপে, আর ফুরকান। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে কেউ মাসটির দেখা পাবে সে যেন এতে রোযা রাখে। আর যে অসুস্থ বা সফরে আছে যে সেই সংখ্যক অন্য দিনগুলোতে। আল্লাহ্ তোমাদের জন্য সুবিধা চান, আর তিনি তোমাদের জন্য কষ্টকর অবস্থা চান না, আর তোমরা যেন এই সংখ্যা সম্পূর্ণ করো, আর যাতে আল্লাহ্‌র মহিমা কীর্তন করো তোমাদের যে পথনির্দেশ তিনি দিয়েছেন সেইজন্য, আর তোমরা যেন কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।

وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِی عَنِّی فَإِنِّی قَرِیبٌۖ أُجِیبُ دَعۡوَةَ ٱلدَّاعِ إِذَا دَعَانِۖ فَلۡیَسۡتَجِیبُوا۟ لِی وَلۡیُؤۡمِنُوا۟ بِی لَعَلَّهُمۡ یَرۡشُدُونَ ﴿186﴾

আর যখন আমার বান্দারা আমার সন্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন -- ''দেখো! আমি নিঃসন্দেহ অতি নিকটে।’’ আমি প্রার্থনাকারীর প্রার্থনার জবাব দিই যখনি সে আমাকে আহ্বান করে। কাজেই তারা আমার প্রতি সাড়া দিক আর আমাতে ঈমান আনুক, -- যাতে তারা সুপথে চলতে পারে।

أُحِلَّ لَكُمۡ لَیۡلَةَ ٱلصِّیَامِ ٱلرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَاۤىِٕكُمۡۚ هُنَّ لِبَاسࣱ لَّكُمۡ وَأَنتُمۡ لِبَاسࣱ لَّهُنَّۗ عَلِمَ ٱللَّهُ أَنَّكُمۡ كُنتُمۡ تَخۡتَانُونَ أَنفُسَكُمۡ فَتَابَ عَلَیۡكُمۡ وَعَفَا عَنكُمۡۖ فَٱلۡـَٔـٰنَ بَـٰشِرُوهُنَّ وَٱبۡتَغُوا۟ مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمۡۚ وَكُلُوا۟ وَٱشۡرَبُوا۟ حَتَّىٰ یَتَبَیَّنَ لَكُمُ ٱلۡخَیۡطُ ٱلۡأَبۡیَضُ مِنَ ٱلۡخَیۡطِ ٱلۡأَسۡوَدِ مِنَ ٱلۡفَجۡرِۖ ثُمَّ أَتِمُّوا۟ ٱلصِّیَامَ إِلَى ٱلَّیۡلِۚ وَلَا تُبَـٰشِرُوهُنَّ وَأَنتُمۡ عَـٰكِفُونَ فِی ٱلۡمَسَـٰجِدِۗ تِلۡكَ حُدُودُ ٱللَّهِ فَلَا تَقۡرَبُوهَاۗ كَذَ ٰ⁠لِكَ یُبَیِّنُ ٱللَّهُ ءَایَـٰتِهِۦ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ یَتَّقُونَ ﴿187﴾

রোযার রাত্রে তোমাদের স্ত্রীদের কাছে গমন তোমাদের জন্য বৈধ করা গেল। তারা তোমাদের জন্য পোশাক আর তোমরা তাদের জন্য পোশাক। আল্লাহ্ জানেন যে তোমরা তোমাদের নিজেদের প্রবঞ্চনা করছিলে, তাই তিনি তোমাদের উপরে ফিরেছেন ও তোমাদের ভুলকে উপেক্ষা করেছেন। সুতরাং এখন তাদের সাহচর্য ভোগ করো, আর আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা নির্ধারিত করেছেন তা অনুসরণ করে চল। আর আহার করো ও পান করো যতক্ষণ না তোমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ভোরবেলাতে সাদা কিরণ কালো ছায়া থেকে, তারপর রোযা সম্পূর্ণ করো রাত্রি সমাগম পর্যন্ত। আর তাদের স্পর্শ করো না যখন তোমরা মসজিদে ই'তিকাফ করো। এ হচ্ছে আল্লাহ্‌র সীমা, কাজেই সে-সবের নিকটে যেয়ো না। এইভাবে আল্লাহ্ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন যাতে তারা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করে।

وَلَا تَأۡكُلُوۤا۟ أَمۡوَ ٰ⁠لَكُم بَیۡنَكُم بِٱلۡبَـٰطِلِ وَتُدۡلُوا۟ بِهَاۤ إِلَى ٱلۡحُكَّامِ لِتَأۡكُلُوا۟ فَرِیقࣰا مِّنۡ أَمۡوَ ٰ⁠لِ ٱلنَّاسِ بِٱلۡإِثۡمِ وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿188﴾

আর তোমাদের সম্পত্তি পরস্পরের মধ্যে জালিয়াতি করে গ্রাস করো না, আর এগুলো বিচারকদের কাছে পেশ করো না যাতে লোকের সম্পত্তির কিছুটা অন্যায়ভাবে গিলে ফেলতে পারো, তাও তোমরা জেনেবুঝে।

۞ یَسۡـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡأَهِلَّةِۖ قُلۡ هِیَ مَوَ ٰ⁠قِیتُ لِلنَّاسِ وَٱلۡحَجِّۗ وَلَیۡسَ ٱلۡبِرُّ بِأَن تَأۡتُوا۟ ٱلۡبُیُوتَ مِن ظُهُورِهَا وَلَـٰكِنَّ ٱلۡبِرَّ مَنِ ٱتَّقَىٰۗ وَأۡتُوا۟ ٱلۡبُیُوتَ مِنۡ أَبۡوَ ٰ⁠بِهَاۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿189﴾

তারা তোমাকে নতুন চাঁদ সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছে। তুমি বলো -- ''এসব হচ্ছে নির্দিষ্ট সময় জনসাধারণের জন্য ও হজের জন্য।’’ আর ধার্মিকতা এ নয় যে তোমরা বাড়িতে প্রবেশ করবে তাদের পেছন দিক দিয়ে, বরং ধার্মিকতা হচ্ছে যে ধর্মভীরুতা অবলন্বন করে। তাই বাড়ীতে ঢোকো তাদের দরজা দিয়ে, আর আল্লাহ্‌তে ভয়-শ্রদ্ধা করো যেন তোমরা সফলকাম হতে পার।

وَقَـٰتِلُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِینَ یُقَـٰتِلُونَكُمۡ وَلَا تَعۡتَدُوۤا۟ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ ٱلۡمُعۡتَدِینَ ﴿190﴾

আর আল্লাহ্‌র পথে তোমরা যুদ্ধ করো তাদের বিরুদ্ধে যারা অন্যায়ভাবে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে, আর সীমালংঘন করো না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সীমালংঘনকারীদের ভালোবাসেন না।

وَٱقۡتُلُوهُمۡ حَیۡثُ ثَقِفۡتُمُوهُمۡ وَأَخۡرِجُوهُم مِّنۡ حَیۡثُ أَخۡرَجُوكُمۡۚ وَٱلۡفِتۡنَةُ أَشَدُّ مِنَ ٱلۡقَتۡلِۚ وَلَا تُقَـٰتِلُوهُمۡ عِندَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ حَتَّىٰ یُقَـٰتِلُوكُمۡ فِیهِۖ فَإِن قَـٰتَلُوكُمۡ فَٱقۡتُلُوهُمۡۗ كَذَ ٰ⁠لِكَ جَزَاۤءُ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿191﴾

আর তাদের হত্যা করো যেখানেই তোমারা তাদের দেখা পাও, আর তাদের তাড়িয়ে দাও যেখান থেকে তারা তোমাদের তাড়িয়ে দিয়েছিল, আর উৎপীড়ন যুদ্ধের চেয়ে নিকৃষ্টতর। কিন্তু তাদের হত্যা করো না পবিত্র-মসজিদের আশেপাশে যে পর্যন্ত না তারা সেখানে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে, কাজেই তারা যদি তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে তবে তোমরাও তাদের সাথে লড়বে। এই হচ্ছে অবিশ্বাসীদের প্রাপ্য।

فَإِنِ ٱنتَهَوۡا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿192﴾

কিন্তু তারা যদি ক্ষান্ত হয় তবে আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ ত্রাণকর্তা, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَقَـٰتِلُوهُمۡ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتۡنَةࣱ وَیَكُونَ ٱلدِّینُ لِلَّهِۖ فَإِنِ ٱنتَهَوۡا۟ فَلَا عُدۡوَ ٰ⁠نَ إِلَّا عَلَى ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿193﴾

আর তাদের সাথে লড়বে যে পর্যন্ত না উৎপীড়ন বন্ধ হয়, আর ধর্ম হচ্ছে আল্লাহ্‌র জন্য। সুতরাং তারা যদি ক্ষান্ত হয় তবে যুদ্ধ-বিগ্রহ চলবে না শুধু অত্যাচারীদের সাথে ছাড়া।

ٱلشَّهۡرُ ٱلۡحَرَامُ بِٱلشَّهۡرِ ٱلۡحَرَامِ وَٱلۡحُرُمَـٰتُ قِصَاصࣱۚ فَمَنِ ٱعۡتَدَىٰ عَلَیۡكُمۡ فَٱعۡتَدُوا۟ عَلَیۡهِ بِمِثۡلِ مَا ٱعۡتَدَىٰ عَلَیۡكُمۡۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿194﴾

পবিত্র মাস পবিত্র মাসের খাতিরে, আর সব নিষিদ্ধ ব্যাপারে প্রতিশোধ নিতে হবে। কাজেই যে কেউ তোমাদের উপরে আক্রমণ চালায়, তোমরাও তবে তাদের উপরে আঘাত হানবে সেইভাবে যেমনটা তারা তোমাদের উপরে আঘাত করেছিল। আর আল্লাহ্‌কে ভয়-শ্রদ্ধা করবে, আর জেনে রেখো নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ধর্মভীরুদের সাথে আছেন।

وَأَنفِقُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَلَا تُلۡقُوا۟ بِأَیۡدِیكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ وَأَحۡسِنُوۤا۟ۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿195﴾

আর আল্লাহ্‌র রাস্তায় খরচ করো, আর তোমাদের নিজহাতে তোমাদের ধ্বংসের মধ্যে ফেলো না, বরং ভালো করো, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মঙ্গলকারীদের ভালোবাসেন।

وَأَتِمُّوا۟ ٱلۡحَجَّ وَٱلۡعُمۡرَةَ لِلَّهِۚ فَإِنۡ أُحۡصِرۡتُمۡ فَمَا ٱسۡتَیۡسَرَ مِنَ ٱلۡهَدۡیِۖ وَلَا تَحۡلِقُوا۟ رُءُوسَكُمۡ حَتَّىٰ یَبۡلُغَ ٱلۡهَدۡیُ مَحِلَّهُۥۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِیضًا أَوۡ بِهِۦۤ أَذࣰى مِّن رَّأۡسِهِۦ فَفِدۡیَةࣱ مِّن صِیَامٍ أَوۡ صَدَقَةٍ أَوۡ نُسُكࣲۚ فَإِذَاۤ أَمِنتُمۡ فَمَن تَمَتَّعَ بِٱلۡعُمۡرَةِ إِلَى ٱلۡحَجِّ فَمَا ٱسۡتَیۡسَرَ مِنَ ٱلۡهَدۡیِۚ فَمَن لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلَـٰثَةِ أَیَّامࣲ فِی ٱلۡحَجِّ وَسَبۡعَةٍ إِذَا رَجَعۡتُمۡۗ تِلۡكَ عَشَرَةࣱ كَامِلَةࣱۗ ذَ ٰ⁠لِكَ لِمَن لَّمۡ یَكُنۡ أَهۡلُهُۥ حَاضِرِی ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿196﴾

আর আল্লাহ্‌র জন্য সম্পূর্ণ করো হজ এবং উমরাহ। কিন্তু যদি বাধা পাও, তবে কুরবানির যা-কিছু পাওয়া যায় তাই, আর তোমাদের মাথা কামাবে না যতক্ষণ না কুরবানি তার গন্তব্যস্থানে পৌঁছেছে কিন্তু তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থ হয় অথবা তার মাথায় রোগ থাকে, তবে প্রতিবিধান হচ্ছে রোযা রেখে বা সদকা দিয়ে বা কুরবানি ক’রে। কিন্তু যখন তোমরা নিরাপদ বোধ করবে তখন যে উমরাহ্‌কে হজের সঙ্গে সংযোজন ক’রে লাভবান হতে চায়, সে যেন কুরবানির যা-কিছু পায় তাই। কিন্তু যে পায় না, রোযা হচ্ছে হজের সময়ে তিনদিন আর তোমরা যখন ফিরে এস তখন সাত, -- এই হলো পুরো দশ। এটা তার জন্য যার পরিবার পবিত্র- মজজিদে হাজির থাকে না। আর আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করো, আর জেনে রেখো যে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ প্রতিফলদানে কঠোর।

ٱلۡحَجُّ أَشۡهُرࣱ مَّعۡلُومَـٰتࣱۚ فَمَن فَرَضَ فِیهِنَّ ٱلۡحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوقَ وَلَا جِدَالَ فِی ٱلۡحَجِّۗ وَمَا تَفۡعَلُوا۟ مِنۡ خَیۡرࣲ یَعۡلَمۡهُ ٱللَّهُۗ وَتَزَوَّدُوا۟ فَإِنَّ خَیۡرَ ٱلزَّادِ ٱلتَّقۡوَىٰۖ وَٱتَّقُونِ یَـٰۤأُو۟لِی ٱلۡأَلۡبَـٰبِ ﴿197﴾

হজ হয় কয়েকটি সুবিখ্যাত মাসে, কাজেই যে কেউ এই সময়ে হজ করার সংকল্প করে তার জন্য এ-সবের মধ্যে স্ত্রী-গমন বা দুষ্টামি থাকবে না, বা হজের মধ্যে তর্কাতর্কি চলবে না। আর ভালো যা-কিছু তোমরা কর, আল্লাহ্ তা জানেন। আর পাথেয় সংগ্রহ করো, নিঃসন্দেহ শ্রেষ্ঠ পাথেয় হচ্ছে ধর্মপরায়ণতা। অতএব আমাকে ভয়-শ্রদ্ধা করো, হে জ্ঞানের অধিকারীসব!

لَیۡسَ عَلَیۡكُمۡ جُنَاحٌ أَن تَبۡتَغُوا۟ فَضۡلࣰا مِّن رَّبِّكُمۡۚ فَإِذَاۤ أَفَضۡتُم مِّنۡ عَرَفَـٰتࣲ فَٱذۡكُرُوا۟ ٱللَّهَ عِندَ ٱلۡمَشۡعَرِ ٱلۡحَرَامِۖ وَٱذۡكُرُوهُ كَمَا هَدَىٰكُمۡ وَإِن كُنتُم مِّن قَبۡلِهِۦ لَمِنَ ٱلضَّاۤلِّینَ ﴿198﴾

তোমাদের উপরে কোনো অপরাধ হবে না যদি বা তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে দৌলত কামানোর চেষ্টা করো। তারপর তোমরা যখন আরাফাত থেকে জোট বেধে ফিঁরবে তখন মাশ'আরিল-হারাম এর নিকটে আল্লাহ্‌কে স্মরণ করো; আর তাঁকে স্মরণ করো যেমন তিনি তোমাদের পথনির্দেশ দিয়েছেন, যদিও এর আগে নিঃসন্দেহ তোমরা ছিলে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত।

ثُمَّ أَفِیضُوا۟ مِنۡ حَیۡثُ أَفَاضَ ٱلنَّاسُ وَٱسۡتَغۡفِرُوا۟ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿199﴾

তারপর তোমরা তাড়াতাড়ি চল যেখান থেকে জনতা এগিয়ে চলে, আর আল্লাহ্‌র কাছে পরিত্রাণ খোঁজো, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ত্রাণকর্তা, অফুরন্ত ফলদাতা।

فَإِذَا قَضَیۡتُم مَّنَـٰسِكَكُمۡ فَٱذۡكُرُوا۟ ٱللَّهَ كَذِكۡرِكُمۡ ءَابَاۤءَكُمۡ أَوۡ أَشَدَّ ذِكۡرࣰاۗ فَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن یَقُولُ رَبَّنَاۤ ءَاتِنَا فِی ٱلدُّنۡیَا وَمَا لَهُۥ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ مِنۡ خَلَـٰقࣲ ﴿200﴾

তারপর যখন তোমাদের পুণ্যানুষ্ঠান শেষ কর তখন আল্লাহ্‌র গুণগান করো, যেমন তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের জয়গান গাইতে, -- বরং তার চাইতেও বেশী গুণকীর্তন করো। কিন্তু মানুষের মাঝে এমনও লোক আছে যে বলে -- ''আমাদের প্রভু! এই দুনিয়াতে আমাদের দাও।’’ অতএব আখেরাতে তাদের জন্য কোনো ভাগ থাকবে না।

وَمِنۡهُم مَّن یَقُولُ رَبَّنَاۤ ءَاتِنَا فِی ٱلدُّنۡیَا حَسَنَةࣰ وَفِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ حَسَنَةࣰ وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ﴿201﴾

আর তাদের মধ্যে এমনও আছে যে বলে -- ''আমাদের প্রভু! এই দুনিয়াতে আমাদের ভালো জিনিস অর্পণ করো, এবং আখেরাতেও ভালো জিনিস, আর আমাদের রক্ষা করো আগুনের শাস্তি থেকে।’’

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ نَصِیبࣱ مِّمَّا كَسَبُوا۟ۚ وَٱللَّهُ سَرِیعُ ٱلۡحِسَابِ ﴿202﴾

এরাই -- তাদের জন্য আছে ভাগ যা তারা অর্জন করেছে তা থেকে। আর আল্লাহ্ হিসেব-নিকেশে তৎপর।

۞ وَٱذۡكُرُوا۟ ٱللَّهَ فِیۤ أَیَّامࣲ مَّعۡدُودَ ٰ⁠تࣲۚ فَمَن تَعَجَّلَ فِی یَوۡمَیۡنِ فَلَاۤ إِثۡمَ عَلَیۡهِ وَمَن تَأَخَّرَ فَلَاۤ إِثۡمَ عَلَیۡهِۖ لِمَنِ ٱتَّقَىٰۗ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّكُمۡ إِلَیۡهِ تُحۡشَرُونَ ﴿203﴾

আর আল্লাহ্‌কে স্মরণ করো নির্ধারিত দিনগুলোতে। কিন্তু যে দু’দিনে তাড়াতাড়ি করে, তাতে তার অপরাধ হবে না, আর যে দেরী করে তার উপরেও কোনো অপরাধ হবে না, -- যে ভয়-ভক্তি করে। আর তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করো, আর জেনে রেখো নিঃসন্দেহ তোমরা তাঁরই কাছে একত্রিত হবে।

وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن یُعۡجِبُكَ قَوۡلُهُۥ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا وَیُشۡهِدُ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا فِی قَلۡبِهِۦ وَهُوَ أَلَدُّ ٱلۡخِصَامِ ﴿204﴾

আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে যার দুনিয়াদারির কথাবার্তা তোমাকে তাজ্জব করে দেয়, আর সে আল্লাহ্‌কে সাক্ষী মানে তার অন্তরে যা আছে সে-সন্বন্ধে, অথচ সে-ই হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে সবচেয়ে মারা‌ত্মক।

وَإِذَا تَوَلَّىٰ سَعَىٰ فِی ٱلۡأَرۡضِ لِیُفۡسِدَ فِیهَا وَیُهۡلِكَ ٱلۡحَرۡثَ وَٱلنَّسۡلَۚ وَٱللَّهُ لَا یُحِبُّ ٱلۡفَسَادَ ﴿205﴾

আর সে যখন ফিরে যায় তখন সে দেশের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করে তাতে ফসাদ বাঁধাতে এবং ফসল ও পশুপাল বিনষ্ট করতে। আর আল্লাহ্ ফসাদ পছন্দ করেন না।

وَإِذَا قِیلَ لَهُ ٱتَّقِ ٱللَّهَ أَخَذَتۡهُ ٱلۡعِزَّةُ بِٱلۡإِثۡمِۚ فَحَسۡبُهُۥ جَهَنَّمُۖ وَلَبِئۡسَ ٱلۡمِهَادُ ﴿206﴾

আর যখন তাকে বলা হয় -- ''আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করো,’’ অহংকার তাকে নিয়ে চলে পাপের মধ্যে, কাজেই জাহান্নাম হচ্ছে তার হিসেব-নিকেশ, -- আর নিশ্চয়ই মন্দ সেই বিশ্রাম-স্থান।

وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن یَشۡرِی نَفۡسَهُ ٱبۡتِغَاۤءَ مَرۡضَاتِ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ رَءُوفُۢ بِٱلۡعِبَادِ ﴿207﴾

আর মানুষের মাঝে এমনও আছে যে নিজের সত্তাকে বিক্রি করে দিয়েছে আল্লাহ্‌র সন্তষ্টি কামনা ক’রে। আর আল্লাহ্ পরম স্নেহময় বান্দাদের প্রতি।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱدۡخُلُوا۟ فِی ٱلسِّلۡمِ كَاۤفَّةࣰ وَلَا تَتَّبِعُوا۟ خُطُوَ ٰ⁠تِ ٱلشَّیۡطَـٰنِۚ إِنَّهُۥ لَكُمۡ عَدُوࣱّ مُّبِینࣱ ﴿208﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! সম্পূর্ণরূপে আ‌ত্মসমর্পণে দাখিল হও, আর শয়তানের পদচিহ্ন অনুসরণ করো না। নিঃসন্দেহ সে তোমাদের জন্য প্রকাশ্য শত্রু।

فَإِن زَلَلۡتُم مِّنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَتۡكُمُ ٱلۡبَیِّنَـٰتُ فَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ عَزِیزٌ حَكِیمٌ ﴿209﴾

কিন্তু যদি তোমরা পিছলে পড় তোমাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণাবলী আসবার পরেও, তবে জেনে রেখো -- নিঃসন্দেহ আল্লাহ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

هَلۡ یَنظُرُونَ إِلَّاۤ أَن یَأۡتِیَهُمُ ٱللَّهُ فِی ظُلَلࣲ مِّنَ ٱلۡغَمَامِ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ وَقُضِیَ ٱلۡأَمۡرُۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ ﴿210﴾

তারা এছাড়া আর কিসের প্রতীক্ষা করে যে তাদের কাছে আল্লাহ্ আসবেন মেঘের ছায়ায়, আর ফিরিশ্‌তারাও, আর বিষয়টির নিস্পত্তি হয়ে গেছে? আর আল্লাহ্‌র কাছেই সব ব্যাপার ফিরে যায়।

سَلۡ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ كَمۡ ءَاتَیۡنَـٰهُم مِّنۡ ءَایَةِۭ بَیِّنَةࣲۗ وَمَن یُبَدِّلۡ نِعۡمَةَ ٱللَّهِ مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَتۡهُ فَإِنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿211﴾

ইসরাইলের বংশধরদের জিজ্ঞাসা করো -- স্পষ্ট নিদর্শন-গুলো থেকে কতো না আমরা তাদের দিয়েছিলাম! আর যে কেউ আল্লাহ্‌র নিয়ামত বদল করে তা তার কাছে আসার পরে, তা হলে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ প্রতিফল দিতে কঠোর!

زُیِّنَ لِلَّذِینَ كَفَرُوا۟ ٱلۡحَیَوٰةُ ٱلدُّنۡیَا وَیَسۡخَرُونَ مِنَ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ۘ وَٱلَّذِینَ ٱتَّقَوۡا۟ فَوۡقَهُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۗ وَٱللَّهُ یَرۡزُقُ مَن یَشَاۤءُ بِغَیۡرِ حِسَابࣲ ﴿212﴾

যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের কাছে এই দুনিয়ার জীবন মনোরম ঠেকে, আর তারা মস্করা করে যারা ঈমান এনেছে তাদের। আর যারা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করে তারা কিয়ামতের দিন ওদের উপরে থাকবে। আর আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে করেন বে-হিসাব রিযেক দান করেন।

كَانَ ٱلنَّاسُ أُمَّةࣰ وَ ٰ⁠حِدَةࣰ فَبَعَثَ ٱللَّهُ ٱلنَّبِیِّـۧنَ مُبَشِّرِینَ وَمُنذِرِینَ وَأَنزَلَ مَعَهُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ بِٱلۡحَقِّ لِیَحۡكُمَ بَیۡنَ ٱلنَّاسِ فِیمَا ٱخۡتَلَفُوا۟ فِیهِۚ وَمَا ٱخۡتَلَفَ فِیهِ إِلَّا ٱلَّذِینَ أُوتُوهُ مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَتۡهُمُ ٱلۡبَیِّنَـٰتُ بَغۡیَۢا بَیۡنَهُمۡۖ فَهَدَى ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لِمَا ٱخۡتَلَفُوا۟ فِیهِ مِنَ ٱلۡحَقِّ بِإِذۡنِهِۦۗ وَٱللَّهُ یَهۡدِی مَن یَشَاۤءُ إِلَىٰ صِرَ ٰ⁠طࣲ مُّسۡتَقِیمٍ ﴿213﴾

মানবগোষ্ঠী হচ্ছে একই জাতি। কাজেই আল্লাহ্ উত্থাপন করলেন নবীদের সুসংবাদদাতারূপে এবং সতর্ককারীরূপে, আর তাঁদের সঙ্গে তিনি অবতারণ করেছিলেন কিতাব সত্যতার সাথে যাতে তা মীমাংসা করতে পারে লোকদের মধ্যে যে-বিষয়ে তারা মতবিরোধ করত। আর কেউ এতে মতবিরোধ করে না তারা ছাড়া যাদের এ দেয়া হয়েছিল তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ আসার পরেও তাদের পরস্পরের মধ্যে বিদ্রোহাচরণ বশতঃ। তাই যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ্ তাদের হেদায়ত করলেন আপন এখতিয়ারে সেই সত্যতে যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছিল। আর আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে করেন তাকে সহজ-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন।

أَمۡ حَسِبۡتُمۡ أَن تَدۡخُلُوا۟ ٱلۡجَنَّةَ وَلَمَّا یَأۡتِكُم مَّثَلُ ٱلَّذِینَ خَلَوۡا۟ مِن قَبۡلِكُمۖ مَّسَّتۡهُمُ ٱلۡبَأۡسَاۤءُ وَٱلضَّرَّاۤءُ وَزُلۡزِلُوا۟ حَتَّىٰ یَقُولَ ٱلرَّسُولُ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مَعَهُۥ مَتَىٰ نَصۡرُ ٱللَّهِۗ أَلَاۤ إِنَّ نَصۡرَ ٱللَّهِ قَرِیبࣱ ﴿214﴾

অথবা তোমরা কি বিবেচনা করো যে তোমরা বেহেশতে দাখিল হতে পারবে যতক্ষণ না তোমাদের উপরেও তোমাদের আগে যারা গত হয়েছে তাদের ন্যায় না বর্তায়? তাদের আক্রমণ করেছিল দারুণ বিপর্যয় এবং চরম দুর্দশা, আর তারা কেঁপেছিল, শেষ পর্যন্ত রসূল ও তাঁর সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তারা বললে -- ''আল্লাহ্‌র সাহায্য কখন?’’ আল্লাহ্‌র সাহায্য অবশ্যই নিকটবর্তী নয় কি?

یَسۡـَٔلُونَكَ مَاذَا یُنفِقُونَۖ قُلۡ مَاۤ أَنفَقۡتُم مِّنۡ خَیۡرࣲ فَلِلۡوَ ٰ⁠لِدَیۡنِ وَٱلۡأَقۡرَبِینَ وَٱلۡیَتَـٰمَىٰ وَٱلۡمَسَـٰكِینِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِیلِۗ وَمَا تَفۡعَلُوا۟ مِنۡ خَیۡرࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِیمࣱ ﴿215﴾

তারা তোমায় জিজ্ঞেস করছে কি তারা খরচ করবে। বলো -- ''ভালো জিনিস যা-কিছু তোমরা খরচ করো তা মাতাপিতার জন্য ও নিকট-আ‌ত্মীয়দের ও এতিমদের ও মিসকিনদের ও পথচারীদের জন্য। আর ভালো কাজ যা-কিছু কর, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।

كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلۡقِتَالُ وَهُوَ كُرۡهࣱ لَّكُمۡۖ وَعَسَىٰۤ أَن تَكۡرَهُوا۟ شَیۡـࣰٔا وَهُوَ خَیۡرࣱ لَّكُمۡۖ وَعَسَىٰۤ أَن تُحِبُّوا۟ شَیۡـࣰٔا وَهُوَ شَرࣱّ لَّكُمۡۚ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ﴿216﴾

তোমাদের জন্য যুদ্ধ বিধিবদ্ধ করা হলো, অথচ তোমাদের জন্য তা অপ্রীতিকর। আর হতে পারে তোমরা কোনো-কিছু অপছন্দ করলে, অথচ তা তোমাদের জন্য মঙ্গলজনক, আবার হতে পারে তোমরা কোনো-কিছু ভালোবাসলে, অথচ তা তোমাদের জন্য মন্দ। আর আল্লাহ জানেন, যদিও তোমরা জানো না।

یَسۡـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلشَّهۡرِ ٱلۡحَرَامِ قِتَالࣲ فِیهِۖ قُلۡ قِتَالࣱ فِیهِ كَبِیرࣱۚ وَصَدٌّ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِ وَكُفۡرُۢ بِهِۦ وَٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ وَإِخۡرَاجُ أَهۡلِهِۦ مِنۡهُ أَكۡبَرُ عِندَ ٱللَّهِۚ وَٱلۡفِتۡنَةُ أَكۡبَرُ مِنَ ٱلۡقَتۡلِۗ وَلَا یَزَالُونَ یُقَـٰتِلُونَكُمۡ حَتَّىٰ یَرُدُّوكُمۡ عَن دِینِكُمۡ إِنِ ٱسۡتَطَـٰعُوا۟ۚ وَمَن یَرۡتَدِدۡ مِنكُمۡ عَن دِینِهِۦ فَیَمُتۡ وَهُوَ كَافِرࣱ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿217﴾

তারা তোমাকে পবিত্র মাস সম্পর্কে প্রশ্ন করছে -- তাতে যুদ্ধ করার ব্যাপারে। বলো -- ''এতে যুদ্ধ করা গুরুতর, কিন্তু আল্লাহ্‌র রাস্তা থেকে ফিরিয়ে রাখা, আর তাঁর প্রতি ও পবিত্র মসজিদের প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করা, এবং তার বাসিন্দাদের সেখান থেকে বের করে দেয়া আল্লাহ্‌র কাছে আরও গুরুতর! আর উৎপীড়ন হত্যার চেয়ে গুরুতর। আর তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করা থামাবে না যতক্ষণ না তারা তোমাদের ধর্ম থেকে তোমাদের ফিরিয়ে নিতে পারে, -- যদি তারা পারে। আর তোমাদের মধ্যে থেকে যে তার ধর্ম থেকে ফিরে যায় ও মারা যায় অবিশ্বাসী থাকা অবস্থায়, তা হলে এরাই -- এদের সব কাজ এই দুনিয়াতে ও আখেরাতে বৃথা যাবে। আর তারাই হচ্ছে আগুনের অধিবাসী, তারা এতে থাকবে দীর্ঘকাল।

إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَٱلَّذِینَ هَاجَرُوا۟ وَجَـٰهَدُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ یَرۡجُونَ رَحۡمَتَ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿218﴾

নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছিল ও যারা হিজরত করেছিল, এবং আল্লাহ্‌র রাস্তায় কঠোর সংগ্রাম করেছিল, -- এরাই আশা রাখে আল্লাহ্‌র করুণার। আর আল্লাহ্ ত্রাণকর্তা, অফুরন্ত ফলদাতা।

۞ یَسۡـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡخَمۡرِ وَٱلۡمَیۡسِرِۖ قُلۡ فِیهِمَاۤ إِثۡمࣱ كَبِیرࣱ وَمَنَـٰفِعُ لِلنَّاسِ وَإِثۡمُهُمَاۤ أَكۡبَرُ مِن نَّفۡعِهِمَاۗ وَیَسۡـَٔلُونَكَ مَاذَا یُنفِقُونَۖ قُلِ ٱلۡعَفۡوَۗ كَذَ ٰ⁠لِكَ یُبَیِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلۡـَٔایَـٰتِ لَعَلَّكُمۡ تَتَفَكَّرُونَ ﴿219﴾

তারা তোমাকে নেশা ও জুয়া সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছে। বলো -- ''এই দুয়েতেই আছে মহাপাপ ও মানুষের জন্য মুনাফা, কিন্তু তাদের পাপ তাদের মুনাফার চাইতে গুরুতর। আর তারা তোমায় সওয়াল করে কী তারা খরচ করবে। বলো -- ''যা বাড়তি থাকে।’’ এইভাবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য বাণীসমূহ স্পষ্ট করেন যাতে তোমরা ভেবে দেখতে পার, --

فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِۗ وَیَسۡـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡیَتَـٰمَىٰۖ قُلۡ إِصۡلَاحࣱ لَّهُمۡ خَیۡرࣱۖ وَإِن تُخَالِطُوهُمۡ فَإِخۡوَ ٰ⁠نُكُمۡۚ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ ٱلۡمُفۡسِدَ مِنَ ٱلۡمُصۡلِحِۚ وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ لَأَعۡنَتَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿220﴾

এই দুনিয়া ও আখেরাতের সন্বন্ধে। আর তারা তোমায় এতিমদের সম্পর্কে প্রশ্ন করছে। বলো -- ''তাদের জন্য সুব্যবস্থা করা উত্তম।’’ আর তোমরা যদি তাদের সঙ্গে অংশীদার হও তবে তারা তোমাদের ভাই। আর আল্লাহ্ হিতকারীদের থেকে ফেসাদকারীদের জানেন । আর আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তবে নিশ্চয়ই তোমাদের বিপন্ন করতে পারতেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

وَلَا تَنكِحُوا۟ ٱلۡمُشۡرِكَـٰتِ حَتَّىٰ یُؤۡمِنَّۚ وَلَأَمَةࣱ مُّؤۡمِنَةٌ خَیۡرࣱ مِّن مُّشۡرِكَةࣲ وَلَوۡ أَعۡجَبَتۡكُمۡۗ وَلَا تُنكِحُوا۟ ٱلۡمُشۡرِكِینَ حَتَّىٰ یُؤۡمِنُوا۟ۚ وَلَعَبۡدࣱ مُّؤۡمِنٌ خَیۡرࣱ مِّن مُّشۡرِكࣲ وَلَوۡ أَعۡجَبَكُمۡۗ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ یَدۡعُونَ إِلَى ٱلنَّارِۖ وَٱللَّهُ یَدۡعُوۤا۟ إِلَى ٱلۡجَنَّةِ وَٱلۡمَغۡفِرَةِ بِإِذۡنِهِۦۖ وَیُبَیِّنُ ءَایَـٰتِهِۦ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمۡ یَتَذَكَّرُونَ ﴿221﴾

আর মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না যে পর্যন্ত না তারা ঈমান আনে । আর নিঃসন্দেহ একজন মুমিন দাসীও একজন মুশরিক নারীর চেয়ে ভালো, যদিও বা সে তোমাদের মোহিত করে দেয়। আর বিয়ে দিয়ো না মুশরিকদের সাথে যে পর্যন্ত না তারা ঈমান আনে, কেননা নিঃসন্দেহ একজন মুমিন গোলামও একজন মুশরিকের চেয়ে উত্তম, যদিও সে তোমাদের তাজ্জব করে দেয়। এই সব আমন্ত্রণ করে আগুনের প্রতি, আর আল্লাহ্ আহ্বান করেন বেহেশতের দিকে এবং পরিত্রাণের দিকে তাঁর নিজ ইচ্ছায়, আর তিনি মানুষের জন্য তাঁর নির্দেশাবলী সুস্পষ্ট করে দেন যেন তারা মনোযোগ দেয়।

وَیَسۡـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡمَحِیضِۖ قُلۡ هُوَ أَذࣰى فَٱعۡتَزِلُوا۟ ٱلنِّسَاۤءَ فِی ٱلۡمَحِیضِ وَلَا تَقۡرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ یَطۡهُرۡنَۖ فَإِذَا تَطَهَّرۡنَ فَأۡتُوهُنَّ مِنۡ حَیۡثُ أَمَرَكُمُ ٱللَّهُۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلتَّوَّ ٰ⁠بِینَ وَیُحِبُّ ٱلۡمُتَطَهِّرِینَ ﴿222﴾

তারা তোমাকে ঋতুস্রাব সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছে। বলো -- ''ইহা অনিষ্টকর, কাজেই ঋতুকালে স্ত্রীদের থেকে আলাদা থাকবে, এবং তাদের নিকটবর্তী হয়ো না যে পর্যন্ত না তারা পরিস্কার হয়ে যায়। তারপর যখন তারা নিজেদের পরিস্কার করে নেয় তখন তাদের সঙ্গে মিলিত হও যেভাবে আল্লাহ্ তোমাদের আদেশ দিয়েছেন।’’ নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভালোবাসেন তাদের যারা তাঁর দিকে ফেরে, আর তিনি ভালবাসেন পরিচ্ছন্নতা রক্ষাকারীদের।

نِسَاۤؤُكُمۡ حَرۡثࣱ لَّكُمۡ فَأۡتُوا۟ حَرۡثَكُمۡ أَنَّىٰ شِئۡتُمۡۖ وَقَدِّمُوا۟ لِأَنفُسِكُمۡۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّكُم مُّلَـٰقُوهُۗ وَبَشِّرِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿223﴾

তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের জন্য এক ক্ষেতখামার। সুতরাং তোমরা যখন-যেমন ইচ্ছে কর তোমাদের ক্ষেতখামারে গমন করো। আর তোমাদের নিজেদের জন্যে অগ্রিম ব্যবস্থা অবলন্বন করো। আর আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করবে, আর জেনে রেখো -- নিশ্চয় তাঁর সঙ্গে তোমাদের মোলাকাত হবে। আর সুসংবাদ দাও মুমিনদের।

وَلَا تَجۡعَلُوا۟ ٱللَّهَ عُرۡضَةࣰ لِّأَیۡمَـٰنِكُمۡ أَن تَبَرُّوا۟ وَتَتَّقُوا۟ وَتُصۡلِحُوا۟ بَیۡنَ ٱلنَّاسِۚ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمࣱ ﴿224﴾

আর আল্লাহ্‌কে প্রতিবন্ধক বানিয়ো না তোমাদের শপথের দ্বারা তোমাদের ভালো কাজ করার বেলা ও ভয়ভক্তি দেখাতে, ও লোকদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

لَّا یُؤَاخِذُكُمُ ٱللَّهُ بِٱللَّغۡوِ فِیۤ أَیۡمَـٰنِكُمۡ وَلَـٰكِن یُؤَاخِذُكُم بِمَا كَسَبَتۡ قُلُوبُكُمۡۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌ حَلِیمࣱ ﴿225﴾

আল্লাহ্ তোমাদের পাকড়াবেন না তোমাদের শপথগুলোর মধ্যে যা খেলো, কিন্তু তিনি তোমাদের পাকড়াও করবেন যা তোমাদের হৃদয় অর্জন করেছে। আর আল্লাহ্ ত্রাণকর্তা, পরম সহিষ্ণু।

لِّلَّذِینَ یُؤۡلُونَ مِن نِّسَاۤىِٕهِمۡ تَرَبُّصُ أَرۡبَعَةِ أَشۡهُرࣲۖ فَإِن فَاۤءُو فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿226﴾

যারা তাদের স্ত্রীদের থেকে ''ইলা’’ করে, চার মাসকাল অপেক্ষা করতে হবে, কিন্তু তারা যদি ফিরে যায়, তা হলে আল্লাহ্ নিশ্চয় ত্রাণকর্তা, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَإِنۡ عَزَمُوا۟ ٱلطَّلَـٰقَ فَإِنَّ ٱللَّهَ سَمِیعٌ عَلِیمࣱ ﴿227﴾

আর যদি তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তালাকের, তবে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

وَٱلۡمُطَلَّقَـٰتُ یَتَرَبَّصۡنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلَـٰثَةَ قُرُوۤءࣲۚ وَلَا یَحِلُّ لَهُنَّ أَن یَكۡتُمۡنَ مَا خَلَقَ ٱللَّهُ فِیۤ أَرۡحَامِهِنَّ إِن كُنَّ یُؤۡمِنَّ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِۚ وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ إِنۡ أَرَادُوۤا۟ إِصۡلَـٰحࣰاۚ وَلَهُنَّ مِثۡلُ ٱلَّذِی عَلَیۡهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ وَلِلرِّجَالِ عَلَیۡهِنَّ دَرَجَةࣱۗ وَٱللَّهُ عَزِیزٌ حَكِیمٌ ﴿228﴾

আর তালাকপ্রাপ্তা নারীরা নিজেদের প্রতীক্ষায় রাখবে তিন ঋতুকাল। আর তাদের জন্য বৈধ হবে না লুকিয়ে রাখা যা আল্লাহ্ তাদের গর্ভে সৃষ্টি করেছেন, যদি তারা আল্লাহ্‌তে ও শেষ দিনে ঈমান আনে। আর তাদের স্বামীদের অধিকতর হক্ আছে তাদের ইতিমধ্যে ফিরিয়ে নেবার, যদি তারা মিটমাট করতে চায়। আর স্ত্রীদের তেমন অধিকার আছে যেমন আছে তাদের উপরে ন্যায়সঙ্গতভাবে। অবশ্য পুরুষদের অবস্থান তাদের কিছুটা উপরে। আর আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী!

ٱلطَّلَـٰقُ مَرَّتَانِۖ فَإِمۡسَاكُۢ بِمَعۡرُوفٍ أَوۡ تَسۡرِیحُۢ بِإِحۡسَـٰنࣲۗ وَلَا یَحِلُّ لَكُمۡ أَن تَأۡخُذُوا۟ مِمَّاۤ ءَاتَیۡتُمُوهُنَّ شَیۡـًٔا إِلَّاۤ أَن یَخَافَاۤ أَلَّا یُقِیمَا حُدُودَ ٱللَّهِۖ فَإِنۡ خِفۡتُمۡ أَلَّا یُقِیمَا حُدُودَ ٱللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِمَا فِیمَا ٱفۡتَدَتۡ بِهِۦۗ تِلۡكَ حُدُودُ ٱللَّهِ فَلَا تَعۡتَدُوهَاۚ وَمَن یَتَعَدَّ حُدُودَ ٱللَّهِ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿229﴾

তালাক দুইবার, তারপর পুরোদস্তুর রক্ষণ নয়ত সুন্দরভাবে বিদায় দান। আর তোমাদের জন্য বৈধ নয় তাদের যা দিয়েছ তা থেকে কিছু ফিরিয়ে নেয়া, যদি না দুজনেই আশঙ্কা করে যে আল্লাহ্‌র নির্দেশিত সীমা কায়েম রাখা তাদের পক্ষে সম্ভবপর নয়। কিন্তু তোমরা যদি আশঙ্কা কর যে তারা আল্লাহ্‌র গন্ডির ভেতরে কায়েম থাকতে পারবে না, তা হলে তাদের জন্যে অপরাধ হবে না যার বিনিময়ে সে মুক্ত হতে চায়। এইসব হচ্ছে আল্লাহ্‌র নির্দেশিত গন্ডি, অতএব এ-সব লঙ্ঘন করো না, আর যারা আল্লাহ্‌র গন্ডি লঙ্ঘন করে তারা নিজেরাই হচ্ছে অন্যায়কারী।

فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُۥ مِنۢ بَعۡدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوۡجًا غَیۡرَهُۥۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِمَاۤ أَن یَتَرَاجَعَاۤ إِن ظَنَّاۤ أَن یُقِیمَا حُدُودَ ٱللَّهِۗ وَتِلۡكَ حُدُودُ ٱللَّهِ یُبَیِّنُهَا لِقَوۡمࣲ یَعۡلَمُونَ ﴿230﴾

তারপর যদি সে তাকে তালাক দেয় তবে এরপর সে তার জন্য বৈধ হবে না যে পর্যন্ত না সে অন্য স্বামীকে বিবাহ করে। এখন যদি সেও তাকে তালাক দিয়ে দেয় তাহলে তাদের উভয়ের অপরাধ হবে না যদি তারা পরস্পরের কাছে ফিরে আসে, -- যদি তারা বিবেচনা করে যে তারা আল্লাহ্‌র গন্ডির মধ্যে থাকতে পারবে। আর এগুলো হচ্ছে আল্লাহ্‌র নির্দেশিত সীমা, -- তিনি তা সুস্পষ্ট করে দেন সেই লোকদের জন্য যারা জানে।

وَإِذَا طَلَّقۡتُمُ ٱلنِّسَاۤءَ فَبَلَغۡنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمۡسِكُوهُنَّ بِمَعۡرُوفٍ أَوۡ سَرِّحُوهُنَّ بِمَعۡرُوفࣲۚ وَلَا تُمۡسِكُوهُنَّ ضِرَارࣰا لِّتَعۡتَدُوا۟ۚ وَمَن یَفۡعَلۡ ذَ ٰ⁠لِكَ فَقَدۡ ظَلَمَ نَفۡسَهُۥۚ وَلَا تَتَّخِذُوۤا۟ ءَایَـٰتِ ٱللَّهِ هُزُوࣰاۚ وَٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ وَمَاۤ أَنزَلَ عَلَیۡكُم مِّنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَٱلۡحِكۡمَةِ یَعِظُكُم بِهِۦۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمࣱ ﴿231﴾

আর যখন স্ত্রীদের তালাক দাও, আর তারা তাদের ইদ্দত পূর্ণ করে, তারপর হয় তাদের রাখবে সদয়ভাবে, নয় তাদের মুক্তি দেবে সদয়ভাবে। আর তাদের আটকে রেখো না ক্ষতি করার জন্যে, -- যার ফলে তোমরা সীমা লঙ্ঘন করবে, আর যে তাই করে সে নিশ্চয় তার নিজের প্রতি অন্যায় করে। আর আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশকে তামাশার বস্তু করে নিয়ো না, আর স্মরণ করো তোমাদের উপরে আল্লাহ্‌র নিয়ামত ও তোমাদের কাছে যা তিনি অবতারণ করেছেন কিতাব ও হিক্‌মত, যার দ্বারা তিনি তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন। আর আল্লাহ্‌কে ভয়ভক্তি করবে, আর জেনে রেখো -- নিশ্চয় আল্লাহ্ সব-কিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞাতা।

وَإِذَا طَلَّقۡتُمُ ٱلنِّسَاۤءَ فَبَلَغۡنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا تَعۡضُلُوهُنَّ أَن یَنكِحۡنَ أَزۡوَ ٰ⁠جَهُنَّ إِذَا تَرَ ٰ⁠ضَوۡا۟ بَیۡنَهُم بِٱلۡمَعۡرُوفِۗ ذَ ٰ⁠لِكَ یُوعَظُ بِهِۦ مَن كَانَ مِنكُمۡ یُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِۗ ذَ ٰ⁠لِكُمۡ أَزۡكَىٰ لَكُمۡ وَأَطۡهَرُۚ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ﴿232﴾

আর যখন তোমরা স্ত্রীদের তালাক দাও, আর তারা তাদের ইদ্দত পূর্ণ করে, তখন তাদের বাধা দিয়ো না তাদের স্বামীদের বিয়ে করতে, যদি তারা নিজেদের মধ্যে রাজী হয় সঙ্গতভাবে। এইভাবে এরদ্বারা উপদেশ দেয়া হচ্ছে তোমাদের মধ্যে তাকে যে আল্লাহ্‌তে ও শেষ দিনে ঈমান আনে। এইটি তোমাদের জন্য অধিকতর পরিচ্ছন্ন ও পবিত্রতর। আর আল্লাহ্ জানেন অথচ তোমরা জানো না।

۞ وَٱلۡوَ ٰ⁠لِدَ ٰ⁠تُ یُرۡضِعۡنَ أَوۡلَـٰدَهُنَّ حَوۡلَیۡنِ كَامِلَیۡنِۖ لِمَنۡ أَرَادَ أَن یُتِمَّ ٱلرَّضَاعَةَۚ وَعَلَى ٱلۡمَوۡلُودِ لَهُۥ رِزۡقُهُنَّ وَكِسۡوَتُهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ لَا تُكَلَّفُ نَفۡسٌ إِلَّا وُسۡعَهَاۚ لَا تُضَاۤرَّ وَ ٰ⁠لِدَةُۢ بِوَلَدِهَا وَلَا مَوۡلُودࣱ لَّهُۥ بِوَلَدِهِۦۚ وَعَلَى ٱلۡوَارِثِ مِثۡلُ ذَ ٰ⁠لِكَۗ فَإِنۡ أَرَادَا فِصَالًا عَن تَرَاضࣲ مِّنۡهُمَا وَتَشَاوُرࣲ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِمَاۗ وَإِنۡ أَرَدتُّمۡ أَن تَسۡتَرۡضِعُوۤا۟ أَوۡلَـٰدَكُمۡ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ إِذَا سَلَّمۡتُم مَّاۤ ءَاتَیۡتُم بِٱلۡمَعۡرُوفِۗ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِیرࣱ ﴿233﴾

আর মায়েরা নিজ সন্তানদের পুরো দু’বছর স্তন্য খেতে দেবে, -- যে চায় স্তন্যদান পুরো করতে। তার পিতার উপরে দায়িত্ব তাদের খাওয়ানো ও পরানো ন্যায়সঙ্গতরূপে। কোনো লোকেরই উচিত নয় এমন দায়িত্ব আরোপ করা যা তার ক্ষমতার অতিরিক্ত। মাতাকেও যেন সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে না হয়, আর যার রসে সন্তান জন্মেছে তাকেও যেন নিজের সন্তানের দরুন, আর উত্তরাধিকারীর উপরে দায়িত্ব তার অনুরূপ করা। কিন্তু যদি দুজনেই ইচ্ছা করে মাই ছাড়াতে, উভয়ের মধ্যে সম্মতিক্রমে এবং পরামর্শক্রমে, তবে তাদের কোনো অপরাধ হবে না। আর যদি তোমরা চাও তোমাদের সন্তানদের জন্য ধাইমা নিযুক্ত করতে, তাতেও তোমাদের কোনো অপরাধ হবে না যে পর্যন্ত তোমরা রাজী থাকো যা তোমরা পুরোদস্তুর প্রদান করবে। আর আল্লাহ্‌কে ভয়ভক্তি করবে, আর জেনে রেখো -- নিঃসন্দেহ তোমরা যা করো আল্লাহ্ তার দর্শক।

وَٱلَّذِینَ یُتَوَفَّوۡنَ مِنكُمۡ وَیَذَرُونَ أَزۡوَ ٰ⁠جࣰا یَتَرَبَّصۡنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرۡبَعَةَ أَشۡهُرࣲ وَعَشۡرࣰاۖ فَإِذَا بَلَغۡنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ فِیمَا فَعَلۡنَ فِیۤ أَنفُسِهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣱ ﴿234﴾

আর তোমাদের মধ্যে যারা মারা যায় ও রেখে যায় স্ত্রীদের, তারা নিজেদের অপেক্ষায় রাখবে চার মাস ও দশ। তারপর তারা যখন তাদের সময়ের মোড়ে পৌঁছে যায় তখন তোমাদের কোনো অপরাধ হবে না যা তারা নিজেদের জন্য করে ন্যায়সঙ্গতভাবে। আর তোমরা যা কর সে-সন্বন্ধে আল্লাহ্ ওয়াকিবহাল।

وَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ فِیمَا عَرَّضۡتُم بِهِۦ مِنۡ خِطۡبَةِ ٱلنِّسَاۤءِ أَوۡ أَكۡنَنتُمۡ فِیۤ أَنفُسِكُمۡۚ عَلِمَ ٱللَّهُ أَنَّكُمۡ سَتَذۡكُرُونَهُنَّ وَلَـٰكِن لَّا تُوَاعِدُوهُنَّ سِرًّا إِلَّاۤ أَن تَقُولُوا۟ قَوۡلࣰا مَّعۡرُوفࣰاۚ وَلَا تَعۡزِمُوا۟ عُقۡدَةَ ٱلنِّكَاحِ حَتَّىٰ یَبۡلُغَ ٱلۡكِتَـٰبُ أَجَلَهُۥۚ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ یَعۡلَمُ مَا فِیۤ أَنفُسِكُمۡ فَٱحۡذَرُوهُۚ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ حَلِیمࣱ ﴿235﴾

আর তোমাদের উপরে অপরাধ হবে না তোমরা নারীদের বিবাহের প্রস্তাবে যা আভাসে ইঙ্গিতে প্রকাশ কর, অথবা গোপন রাখো তোমাদের অন্তরে। আল্লাহ্ জানেন যে তোমরা তাদের স্মরণ করবে, কিন্তু ভদ্রভাবে কথাবার্তা বলা ছাড়া গোপনে তাদের সাথে ওয়াদা করো না, আর বিবাহবন্ধন পাকাপাকি করো না যে পর্যন্ত না তাদের নির্ধারিত সময়সীমা পেছোঁয়! আর জেনে রেখো -- আল্লাহ্ নিশ্চয়ই জানেন যা তোমাদের অন্তরে আছে, অতএব তাঁর সম্পর্কে সতর্ক হও, আর জেনে রেখো যে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ত্রানকর্তা, পরম সহিষ্ণু।

لَّا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ إِن طَلَّقۡتُمُ ٱلنِّسَاۤءَ مَا لَمۡ تَمَسُّوهُنَّ أَوۡ تَفۡرِضُوا۟ لَهُنَّ فَرِیضَةࣰۚ وَمَتِّعُوهُنَّ عَلَى ٱلۡمُوسِعِ قَدَرُهُۥ وَعَلَى ٱلۡمُقۡتِرِ قَدَرُهُۥ مَتَـٰعَۢا بِٱلۡمَعۡرُوفِۖ حَقًّا عَلَى ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿236﴾

তোমাদের অপরাধ হবে না যদি তোমরা তালাক দাও স্ত্রীদের যাদের এখনও তোমরা স্পর্শ করো নি বা দেয় যাদের জন্য ধার্য করো নি। আর তাদের জন্য ব্যবস্থা করো, ধনবানের ক্ষেত্রে তার সামর্থ্য অনুসারে ও অভাবীর ক্ষেত্রে তার সামর্থ্য অনুসারে, ব্যবস্থা হবে পুরোদস্তুরভাবে। সৎকর্মীদের জন্য একটি কর্তব্য।

وَإِن طَلَّقۡتُمُوهُنَّ مِن قَبۡلِ أَن تَمَسُّوهُنَّ وَقَدۡ فَرَضۡتُمۡ لَهُنَّ فَرِیضَةࣰ فَنِصۡفُ مَا فَرَضۡتُمۡ إِلَّاۤ أَن یَعۡفُونَ أَوۡ یَعۡفُوَا۟ ٱلَّذِی بِیَدِهِۦ عُقۡدَةُ ٱلنِّكَاحِۚ وَأَن تَعۡفُوۤا۟ أَقۡرَبُ لِلتَّقۡوَىٰۚ وَلَا تَنسَوُا۟ ٱلۡفَضۡلَ بَیۡنَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِیرٌ ﴿237﴾

কিন্তু যদি তোমরা তাদের তালাক দাও তাদের স্পর্শ করার আগে এবং ইতিমধ্যে দেয় তাদের জন্য ধার্য করে ফেলেছ, যা ধার্য করেছ তার অর্ধেক, যদি না তারা মাফ করে দেয় অথবা তারা মাফ করে দেয় যাদের হাতে রয়েছে বিবাহ-গ্রন্থি। আর যদি তোমরা দাবি ছেড়ে দাও তবে তা ধর্মপরায়ণতার অধিকতর নিকটবর্তী। আর তোমাদের পরস্পরের মধ্যে সদয়তা ভুলে যেয়ো না। নিঃসন্দেহ তোমরা যা করো আল্লাহ্ তার দর্শক।

حَـٰفِظُوا۟ عَلَى ٱلصَّلَوَ ٰ⁠تِ وَٱلصَّلَوٰةِ ٱلۡوُسۡطَىٰ وَقُومُوا۟ لِلَّهِ قَـٰنِتِینَ ﴿238﴾

হেফাজত করো নামাযগুলোর, বিশেষ করে সর্বোৎকৃষ্ট নামায, আর তোমরা খাড়া থেকো আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে পরম বিনয়ে।

فَإِنۡ خِفۡتُمۡ فَرِجَالًا أَوۡ رُكۡبَانࣰاۖ فَإِذَاۤ أَمِنتُمۡ فَٱذۡكُرُوا۟ ٱللَّهَ كَمَا عَلَّمَكُم مَّا لَمۡ تَكُونُوا۟ تَعۡلَمُونَ ﴿239﴾

কিন্তু যদি তোমরা আশঙ্কা কর তবে পায়ে চলে বা ঘোড়ায় চড়ে, কিন্তু যখন তোমরা নিরাপত্তা বোধ কর তখন আল্লাহ্‌কে স্মরণ করো যে ভাবে তিনি তোমাদের শিখিয়েছেন -- যা তোমরা ইতিপূর্বে জানতে না।

وَٱلَّذِینَ یُتَوَفَّوۡنَ مِنكُمۡ وَیَذَرُونَ أَزۡوَ ٰ⁠جࣰا وَصِیَّةࣰ لِّأَزۡوَ ٰ⁠جِهِم مَّتَـٰعًا إِلَى ٱلۡحَوۡلِ غَیۡرَ إِخۡرَاجࣲۚ فَإِنۡ خَرَجۡنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ فِی مَا فَعَلۡنَ فِیۤ أَنفُسِهِنَّ مِن مَّعۡرُوفࣲۗ وَٱللَّهُ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿240﴾

আর তোমাদের মধ্যে যারা মারা যায় এবং রেখে যায় স্ত্রীদের, তাদের স্ত্রীদের জন্য এক বছরের ভরণ-পোষণের ওসিয়ৎ হওয়া চাই, তাদের বহিস্কার না ক’রে, কিন্তু তারা যদি চলে যায় তবে তোমাদের উপরে অপরাধ হবে না যা তারা নিজেদের ব্যাপারে সুসঙ্গতভাবে করে। আর আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

وَلِلۡمُطَلَّقَـٰتِ مَتَـٰعُۢ بِٱلۡمَعۡرُوفِۖ حَقًّا عَلَى ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿241﴾

আর তালাক দেয়া নারীদের জন্যে ব্যবস্থা চাই পুরোদস্তুর মতে, ধর্মপরায়ণদের জন্য একটি কর্তব্য।

كَذَ ٰ⁠لِكَ یُبَیِّنُ ٱللَّهُ لَكُمۡ ءَایَـٰتِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَعۡقِلُونَ ﴿242﴾

এইভাবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য তাঁর বাণীসমূহ সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন যেন তোমরা বুঝতে পার।

۞ أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ خَرَجُوا۟ مِن دِیَـٰرِهِمۡ وَهُمۡ أُلُوفٌ حَذَرَ ٱلۡمَوۡتِ فَقَالَ لَهُمُ ٱللَّهُ مُوتُوا۟ ثُمَّ أَحۡیَـٰهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَذُو فَضۡلٍ عَلَى ٱلنَّاسِ وَلَـٰكِنَّ أَكۡثَرَ ٱلنَّاسِ لَا یَشۡكُرُونَ ﴿243﴾

তুমি কি তাদের বিষয়ে ভাব নি যারা তাদের বাড়িঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল মৃত্যুর ভয়ে, আর তারা হাজারে হাজারে ছিল? তারপর আল্লাহ্ তাদের বললেন -- ''তোমরা মরো’’ এরপর তিনি তাদের জীবনদান করলেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ অবশ্যই মানুষের প্রতি অশেষ করুণাময়, কিন্তু অধিকাংশ লোকেই শুকুরানা আদায় করে না।

وَقَـٰتِلُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ سَمِیعٌ عَلِیمࣱ ﴿244﴾

আর আল্লাহ্‌র রাস্তায় সংগ্রাম করো, আর জেনে রেখো -- নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

مَّن ذَا ٱلَّذِی یُقۡرِضُ ٱللَّهَ قَرۡضًا حَسَنࣰا فَیُضَـٰعِفَهُۥ لَهُۥۤ أَضۡعَافࣰا كَثِیرَةࣰۚ وَٱللَّهُ یَقۡبِضُ وَیَبۡصُۜطُ وَإِلَیۡهِ تُرۡجَعُونَ ﴿245﴾

কে আছে যে আল্লাহ্‌কে কর্জ দেবে সর্বাঙ্গসুন্দর ঋণ? তিনি তখন তা বাড়িয়ে দেবেন তার জন্য বহুগুণিত করে। আর আল্লাহ্ গ্রহণ করেন ও তিনি সম্প্রসারণ করেন আর তাঁরই কাছে তোমাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে।

أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلۡمَلَإِ مِنۢ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ مِنۢ بَعۡدِ مُوسَىٰۤ إِذۡ قَالُوا۟ لِنَبِیࣲّ لَّهُمُ ٱبۡعَثۡ لَنَا مَلِكࣰا نُّقَـٰتِلۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۖ قَالَ هَلۡ عَسَیۡتُمۡ إِن كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلۡقِتَالُ أَلَّا تُقَـٰتِلُوا۟ۖ قَالُوا۟ وَمَا لَنَاۤ أَلَّا نُقَـٰتِلَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَقَدۡ أُخۡرِجۡنَا مِن دِیَـٰرِنَا وَأَبۡنَاۤىِٕنَاۖ فَلَمَّا كُتِبَ عَلَیۡهِمُ ٱلۡقِتَالُ تَوَلَّوۡا۟ إِلَّا قَلِیلࣰا مِّنۡهُمۡۚ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿246﴾

তুমি কি মূসার পরবর্তীকালে ইসরাইলের বংশধরদের প্রধানদের বিষয়ে ভেবে দেখ নি, যখন তারা তাদের নবীকে বলেছিল -- ''আমাদের জন্য একজন রাজা উত্থাপন করো যেন আমরা আল্লাহ্‌র পথে লড়তে পারি’’? তিনি বলেছিলেন -- ''এমনটা কি তোমাদের হবে যে তোমাদের জন্য যুদ্ধ বিধিবদ্ধ করা হলে তোমরা যুদ্ধ করবে না?’’ তারা বলেছিল -- ''আমাদের কী হয়েছে যে আমরা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করবো না যখন আমরা আমাদের বাড়িঘর ও সন্তান-সন্ততি থেকে বিতাড়িত হয়েছি?’’ কিন্তু যখন তাদের জন্য যুদ্ধ বিধিবদ্ধ করা হলো, তারা ফিরে দাঁড়াল তাদের মধ্যের অল্প কয়েকজন ছাড়া। আর আল্লাহ্ অন্যায়কারীদের সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।

وَقَالَ لَهُمۡ نَبِیُّهُمۡ إِنَّ ٱللَّهَ قَدۡ بَعَثَ لَكُمۡ طَالُوتَ مَلِكࣰاۚ قَالُوۤا۟ أَنَّىٰ یَكُونُ لَهُ ٱلۡمُلۡكُ عَلَیۡنَا وَنَحۡنُ أَحَقُّ بِٱلۡمُلۡكِ مِنۡهُ وَلَمۡ یُؤۡتَ سَعَةࣰ مِّنَ ٱلۡمَالِۚ قَالَ إِنَّ ٱللَّهَ ٱصۡطَفَىٰهُ عَلَیۡكُمۡ وَزَادَهُۥ بَسۡطَةࣰ فِی ٱلۡعِلۡمِ وَٱلۡجِسۡمِۖ وَٱللَّهُ یُؤۡتِی مُلۡكَهُۥ مَن یَشَاۤءُۚ وَٱللَّهُ وَ ٰ⁠سِعٌ عَلِیمࣱ ﴿247﴾

আর তাদের নবী তাদের বলেছিলেন -- ''নিশ্চয়ই আল্লাহ্ এখন তোমাদের জন্য তালুতকে রাজা করেছেন।’’ তারা বললে -- ''সে কেমন ক’রে আমাদের উপরে রাজত্ব পেতে পারে যখন রাজত্বে তার চাইতে আমাদেরই বেশী দাবী, আর তাকে ধনদৌলতের প্রাচুর্যও প্রদান করা হয় নি? তিনি বললেন -- ''নিশ্চয় আল্লাহ্ তাকে মনোনীত করেছেন তোমাদের উপরে, আর তিনি তাকে অগাধভাবে প্রাচুর্যও দিয়েছেন জ্ঞানে ও দেহে। আর আল্লাহ্ তাঁর রাজত্ব দেন যাকে ইচ্ছে করেন, কারণ আল্লাহ্ সর্বব্যাপ্ত, সর্বজ্ঞাতা।’’

وَقَالَ لَهُمۡ نَبِیُّهُمۡ إِنَّ ءَایَةَ مُلۡكِهِۦۤ أَن یَأۡتِیَكُمُ ٱلتَّابُوتُ فِیهِ سَكِینَةࣱ مِّن رَّبِّكُمۡ وَبَقِیَّةࣱ مِّمَّا تَرَكَ ءَالُ مُوسَىٰ وَءَالُ هَـٰرُونَ تَحۡمِلُهُ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُۚ إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰ لَّكُمۡ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿248﴾

আর তাদের নবী তাদের বলেছিলেন -- ''নিঃসন্দেহ তার রাজত্বের লক্ষণ এই যে তোমাদের কাছে আসবে 'তাবুত’ যাতে আছে তোমাদের প্রভুর তরফ থেকে প্রশান্তি, এবং মূসার বংশধরেরা ও হারূনের অনুগামীরা যা ছেড়ে গেছেন তার শ্রেষ্ঠাংশ, -- তা বহন করছে ফিরিশ্‌তারা। নিঃসন্দেহ এতে আছে তোমাদের জন্য নিদর্শন যদি তোমরা বিশ্বাসী হয়ে থাকো।

فَلَمَّا فَصَلَ طَالُوتُ بِٱلۡجُنُودِ قَالَ إِنَّ ٱللَّهَ مُبۡتَلِیكُم بِنَهَرࣲ فَمَن شَرِبَ مِنۡهُ فَلَیۡسَ مِنِّی وَمَن لَّمۡ یَطۡعَمۡهُ فَإِنَّهُۥ مِنِّیۤ إِلَّا مَنِ ٱغۡتَرَفَ غُرۡفَةَۢ بِیَدِهِۦۚ فَشَرِبُوا۟ مِنۡهُ إِلَّا قَلِیلࣰا مِّنۡهُمۡۚ فَلَمَّا جَاوَزَهُۥ هُوَ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مَعَهُۥ قَالُوا۟ لَا طَاقَةَ لَنَا ٱلۡیَوۡمَ بِجَالُوتَ وَجُنُودِهِۦۚ قَالَ ٱلَّذِینَ یَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلَـٰقُوا۟ ٱللَّهِ كَم مِّن فِئَةࣲ قَلِیلَةٍ غَلَبَتۡ فِئَةࣰ كَثِیرَةَۢ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ مَعَ ٱلصَّـٰبِرِینَ ﴿249﴾

তারপর তালুত যখন সৈন্যদল নিয়ে অভিযান করলেন তখন বললেন -- ''নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের পরীক্ষা করবেন একটি নদী দিয়ে; তাই যে কেউ তার থেকে পান করবে সে আমার নয়, আর যে এর স্বাদ গ্রহণ করবে না সে নিঃসন্দেহ আমার, শুধু সে ছাড়া যে তার হাতে কোষ-পরিমাণ পান করে।’’ কিন্তু তাদের অল্প কয়েকজন ছাড়া তারা তা থেকে পান করেছিল। তারপর তিনি যখন উহা পার হয়ে গেলেন, তিনি ও যারা তাঁর সাথে ঈমান এনেছে, তারা বললে -- ''আজ আমাদের শক্তি নেই জালুত এবং তার সৈন্যদলের বিরুদ্ধে।’’ যারা নিশ্চিত ছিল যে তারা অবশ্যই আল্লাহ্‌র সাথে মুলাকাত করতে যাচ্ছে, তারা বললে -- ''কতবার ছোট দল আল্লাহ্‌র হুকুমে বড় দলকে পরাজিত করেছে, আর আল্লাহ্ অধ্যবসায়ীদের সাথে আছেন’’।

وَلَمَّا بَرَزُوا۟ لِجَالُوتَ وَجُنُودِهِۦ قَالُوا۟ رَبَّنَاۤ أَفۡرِغۡ عَلَیۡنَا صَبۡرࣰا وَثَبِّتۡ أَقۡدَامَنَا وَٱنصُرۡنَا عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿250﴾

আর যখন তারা জালুতের ও তার সৈন্যদলের মুখোমুখি হলো, তারা বললে -- ''আমাদের প্রভু! আমাদের প্রতি অধ্যবসায় বর্ষণ করো, আর আমাদের পদক্ষেপ মজবুত করো, আর অবিশ্বাসী দলের বিরুদ্ধে সাহায্য করো।’’

فَهَزَمُوهُم بِإِذۡنِ ٱللَّهِ وَقَتَلَ دَاوُۥدُ جَالُوتَ وَءَاتَىٰهُ ٱللَّهُ ٱلۡمُلۡكَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَعَلَّمَهُۥ مِمَّا یَشَاۤءُۗ وَلَوۡلَا دَفۡعُ ٱللَّهِ ٱلنَّاسَ بَعۡضَهُم بِبَعۡضࣲ لَّفَسَدَتِ ٱلۡأَرۡضُ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ ذُو فَضۡلٍ عَلَى ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿251﴾

অতএব আল্লাহ্‌র হুকুমে তারা তাদের পরাজিত করল, আর দাউদ হত্যা করলেন জালুতকে, আর আল্লাহ্ তাঁকে রাজত্ব ও জ্ঞান দিলেন, আর তাঁকে শেখালেন যা তিনি ইচ্ছা করলেন। আব মানুষদের যদি আল্লাহ্‌র প্রতিহতকরণ না হতো -- তাদের এক দলকে অন্য দলের দ্বারা -- তবে পৃথিবী নিঃসন্দেহ অরাজকতাপূর্ণ হতো। কিন্তু আল্লাহ্ সমস্ত সৃষ্টজগতের প্রতি অশেষ কৃপাময়।

تِلۡكَ ءَایَـٰتُ ٱللَّهِ نَتۡلُوهَا عَلَیۡكَ بِٱلۡحَقِّۚ وَإِنَّكَ لَمِنَ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿252﴾

এইসব হচ্ছে আল্লাহ্‌র বাণী, আমরা তোমার কাছে তা পাঠ করছি যথাযথভাবে, আর নিঃসন্দেহ তুমি রসূলদের অন্যতম।

۞ تِلۡكَ ٱلرُّسُلُ فَضَّلۡنَا بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضࣲۘ مِّنۡهُم مَّن كَلَّمَ ٱللَّهُۖ وَرَفَعَ بَعۡضَهُمۡ دَرَجَـٰتࣲۚ وَءَاتَیۡنَا عِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ ٱلۡبَیِّنَـٰتِ وَأَیَّدۡنَـٰهُ بِرُوحِ ٱلۡقُدُسِۗ وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ مَا ٱقۡتَتَلَ ٱلَّذِینَ مِنۢ بَعۡدِهِم مِّنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَتۡهُمُ ٱلۡبَیِّنَـٰتُ وَلَـٰكِنِ ٱخۡتَلَفُوا۟ فَمِنۡهُم مَّنۡ ءَامَنَ وَمِنۡهُم مَّن كَفَرَۚ وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ مَا ٱقۡتَتَلُوا۟ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ یَفۡعَلُ مَا یُرِیدُ ﴿253﴾

এইসব রসূল -- তাঁদের কাউকে আমরা অপর কারোর উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাঁদের মধ্যে কারোর সাথে আল্লাহ্ কথা বলছেন এবং তাঁদের কাউকে তিনি বহুস্তর উন্নত করেছেন। আর আমরা মরিয়মের পুত্র ঈসাকে দিয়েছিলাম স্পষ্ট প্রমাণাবলী, আর আমরা তাঁকে বলীয়ান করি রূহুল ক্কুদুস্ দিয়ে। আর আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তাঁদের পরবর্তীরা পরস্পর বিবাদ করতো না তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণাবলী আসার পরেও, কিন্তু তারা মতবিরোধ করলো, কাজেই তাদের মধ্যে কেউ ঈমান আনলো ও তাদের কেউ অবিশ্বাস পোষণ করলো। কিন্তু আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তারা পরস্পর লড়াই করতো না, কিন্তু আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করেন তাই করে থাকেন।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَنفِقُوا۟ مِمَّا رَزَقۡنَـٰكُم مِّن قَبۡلِ أَن یَأۡتِیَ یَوۡمࣱ لَّا بَیۡعࣱ فِیهِ وَلَا خُلَّةࣱ وَلَا شَفَـٰعَةࣱۗ وَٱلۡكَـٰفِرُونَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿254﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! আমরা তোমাদের যা রিযেক দিয়েছি তা থেকে তোমরা খরচ করো সেই দিন আসবার আগে যে দিন দরদস্তুর করা চলবে না, বা বন্ধুত্ব থাকবে না বা সুপারিশ টিকবে না। আর অবিশ্বাসীরা -- তারাই অন্যায়কারী।

ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡحَیُّ ٱلۡقَیُّومُۚ لَا تَأۡخُذُهُۥ سِنَةࣱ وَلَا نَوۡمࣱۚ لَّهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ مَن ذَا ٱلَّذِی یَشۡفَعُ عِندَهُۥۤ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ یَعۡلَمُ مَا بَیۡنَ أَیۡدِیهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡۖ وَلَا یُحِیطُونَ بِشَیۡءࣲ مِّنۡ عِلۡمِهِۦۤ إِلَّا بِمَا شَاۤءَۚ وَسِعَ كُرۡسِیُّهُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضَۖ وَلَا یَـُٔودُهُۥ حِفۡظُهُمَاۚ وَهُوَ ٱلۡعَلِیُّ ٱلۡعَظِیمُ ﴿255﴾

আল্লাহ্ -- তিনি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই, -- চিরজীবন্ত, সদা-বিদ্যমান, তন্দ্রা তাঁকে অভিভূত করতে পারে না, নিদ্রাও নয়। তাঁরই হচ্ছে যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে এবং যা-কিছু পৃথিবীতে। কে আছে যে তাঁর দরবারে সুপারিশ করতে পারে তার অনুমতি ছাড়া? তিনি জানেন কি আছে তাদের সামনে এবং কি আছে তাদের পেছনে; আর তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা ধারণা করতে পারে না তিনি যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত। তাঁর মহাসিংহাসন মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে ব্যাপ্ত; এদের উভয়ের হেফাজত তাঁকে ক্লান্ত করে না, আর তিনি সর্বোচ্চে অধিষ্ঠিত, মহামহিম।

لَاۤ إِكۡرَاهَ فِی ٱلدِّینِۖ قَد تَّبَیَّنَ ٱلرُّشۡدُ مِنَ ٱلۡغَیِّۚ فَمَن یَكۡفُرۡ بِٱلطَّـٰغُوتِ وَیُؤۡمِنۢ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱسۡتَمۡسَكَ بِٱلۡعُرۡوَةِ ٱلۡوُثۡقَىٰ لَا ٱنفِصَامَ لَهَاۗ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمٌ ﴿256﴾

ধর্মে জবরদস্তি নেই, নিঃসন্দেহ সত্যপথ ভ্রান্তপথ থেকে সুস্পষ্ট করা হয়ে গেছে। অতএব যে তাগুতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহ্‌তে ঈমান আনে সেই তবে ধরেছে একটি শক্ত হাতল, -- তা কখনো ভাঙবার নয়। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

ٱللَّهُ وَلِیُّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ یُخۡرِجُهُم مِّنَ ٱلظُّلُمَـٰتِ إِلَى ٱلنُّورِۖ وَٱلَّذِینَ كَفَرُوۤا۟ أَوۡلِیَاۤؤُهُمُ ٱلطَّـٰغُوتُ یُخۡرِجُونَهُم مِّنَ ٱلنُّورِ إِلَى ٱلظُّلُمَـٰتِۗ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿257﴾

আল্লাহ্ তাদের পৃষ্ঠপোষক যারা ঈমান এনেছে, তিনি অন্ধকার থেকে তাদের আলোতে বের করে আনেন। আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে তাগুত, তারা আলোক থেকে তাদের বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। তারাই হচ্ছে আগুনের বাসিন্দা, তারা তাতে থাকবে দীর্ঘকাল।

أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِی حَاۤجَّ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمَ فِی رَبِّهِۦۤ أَنۡ ءَاتَىٰهُ ٱللَّهُ ٱلۡمُلۡكَ إِذۡ قَالَ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمُ رَبِّیَ ٱلَّذِی یُحۡیِۦ وَیُمِیتُ قَالَ أَنَا۠ أُحۡیِۦ وَأُمِیتُۖ قَالَ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمُ فَإِنَّ ٱللَّهَ یَأۡتِی بِٱلشَّمۡسِ مِنَ ٱلۡمَشۡرِقِ فَأۡتِ بِهَا مِنَ ٱلۡمَغۡرِبِ فَبُهِتَ ٱلَّذِی كَفَرَۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿258﴾

তুমি কি তার কথা ভেবে দেখো নি যে ইব্রাহীমের সাথে তাঁর প্রভুর সন্বন্ধে ঝগড়া করছিল যেহেতু আল্লাহ্ তাঁকে রাজত্ব দিয়েছিলেন? স্মরণ করো! ইব্রাহীম বলেছিলেন -- ''আমার প্রভু তিনি যিনি জীবনদান করেন এবং মৃত্যু ঘটান।’’ সে বলল -- ''আমি জীবন দিয়ে রাখতে পারি এবং মৃত্যু ঘটাতে পারি।’’ ইব্রাহীম বলেছিলেন -- ''আল্লাহ্ কিন্তু সূর্যকে পূর্বদিক থেকে নিয়ে আসেন তুমি তাহলে তাকে পশ্চিমদিক থেকে নিয়ে এস।’’ এইভাবে সে হেরে গেল যে অবিশ্বাস পোষণ করেছিল। আর আল্লাহ্ জুলুমকারী জাতিকে হেদায়ত করেন না।

أَوۡ كَٱلَّذِی مَرَّ عَلَىٰ قَرۡیَةࣲ وَهِیَ خَاوِیَةٌ عَلَىٰ عُرُوشِهَا قَالَ أَنَّىٰ یُحۡیِۦ هَـٰذِهِ ٱللَّهُ بَعۡدَ مَوۡتِهَاۖ فَأَمَاتَهُ ٱللَّهُ مِا۟ئَةَ عَامࣲ ثُمَّ بَعَثَهُۥۖ قَالَ كَمۡ لَبِثۡتَۖ قَالَ لَبِثۡتُ یَوۡمًا أَوۡ بَعۡضَ یَوۡمࣲۖ قَالَ بَل لَّبِثۡتَ مِا۟ئَةَ عَامࣲ فَٱنظُرۡ إِلَىٰ طَعَامِكَ وَشَرَابِكَ لَمۡ یَتَسَنَّهۡۖ وَٱنظُرۡ إِلَىٰ حِمَارِكَ وَلِنَجۡعَلَكَ ءَایَةࣰ لِّلنَّاسِۖ وَٱنظُرۡ إِلَى ٱلۡعِظَامِ كَیۡفَ نُنشِزُهَا ثُمَّ نَكۡسُوهَا لَحۡمࣰاۚ فَلَمَّا تَبَیَّنَ لَهُۥ قَالَ أَعۡلَمُ أَنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿259﴾

অথবা, তাঁর কথা যিনি যাচ্ছিলেন এক শহরের পাশ দিয়ে, আর তা ভেঙ্গে পড়েছিল তার ছাদ সহ? তিনি বলেছিলেন -- ''কেমন ক’রে আল্লাহ্ একে পুনরুজ্জীবিত করবেন তার মৃত্যুর পরে?’’ এরপর আল্লাহ্ তাঁকে শতবৎসরকাল মৃতবৎ করে রাখলেন, তারপর তিনি তাঁকে পুনরুত্থিত করলেন। তিনি বললেন -- ''কত সময় তুমি কাটিয়েছ?’’ তিনি বললেন -- ''আমি কাটিয়েছি একটি দিন, বা এক দিনের কিছু অংশ।’’ তিনি বললেন -- ''না, তুমি কাটিয়েছ একশত বছর, কাজেই তোমার খাদ্য ও তোমার পানীয়ের দিকে তাকাও, বয়স উহাকে বয়স্ক করে নি, আর তোমার গাধার দিকে তাকাও, আর যেন তোমাকে মানবগোষ্ঠীর জন্য নিদর্শন করতে পারি, আর এই হাড়গুলোর দিকে তাকাও, কেমন ক’রে আমরা সে-সব গুছিয়েছি ও সেগুলোকে মাংস দিয়ে ঢেকেছি।’’ আর যখন তাঁর কাছে পরিস্কার হলো তিনি বললেন -- ''আমি এখন জানি যে আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।’’

وَإِذۡ قَالَ إِبۡرَ ٰ⁠هِـۧمُ رَبِّ أَرِنِی كَیۡفَ تُحۡیِ ٱلۡمَوۡتَىٰۖ قَالَ أَوَلَمۡ تُؤۡمِنۖ قَالَ بَلَىٰ وَلَـٰكِن لِّیَطۡمَىِٕنَّ قَلۡبِیۖ قَالَ فَخُذۡ أَرۡبَعَةࣰ مِّنَ ٱلطَّیۡرِ فَصُرۡهُنَّ إِلَیۡكَ ثُمَّ ٱجۡعَلۡ عَلَىٰ كُلِّ جَبَلࣲ مِّنۡهُنَّ جُزۡءࣰا ثُمَّ ٱدۡعُهُنَّ یَأۡتِینَكَ سَعۡیࣰاۚ وَٱعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿260﴾

আর স্মরণ করো! ইব্রাহীন বললেন -- ''আমার প্রভু! আমাকে দেখাও কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করো।’’ তিনি বললেন -- ''তুমি কি বিশ্বাস করো না?’’ তিনি বললেন,''না, তবে যাতে আমার হৃদয় শান্ত হয়।’’ তিনি বললেন -- ''তা হলে পাখীদের চারটি তুমি নাও ও তাদের তোমার প্রতি অনুগত করো, তারপর প্রতিটি পাহাড়ে তাদের এক একটি অংশ স্থাপন করো, তারপর তাদের ডাক দাও, তারা ছুটে আসবে তোমার কাছে। আর জেনে রেখো, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।’’

مَّثَلُ ٱلَّذِینَ یُنفِقُونَ أَمۡوَ ٰ⁠لَهُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنۢبَتَتۡ سَبۡعَ سَنَابِلَ فِی كُلِّ سُنۢبُلَةࣲ مِّا۟ئَةُ حَبَّةࣲۗ وَٱللَّهُ یُضَـٰعِفُ لِمَن یَشَاۤءُۚ وَٱللَّهُ وَ ٰ⁠سِعٌ عَلِیمٌ ﴿261﴾

যারা তাদের ধনসম্পত্তি আল্লাহ্‌র পথে খরচ করে তাদের উপমা হচ্ছে একটি শস্যবীজের উপমার ন্যায়, তা উৎপাদন করে সাতটি শিষ, প্রতিটি শিষে থাকে একশত শস্য। আর আল্লাহ্ বহুগুণিত করেন যার জন্য ইচ্ছা করেন, কারণ আল্লাহ্‌, মহাদানশীল সর্বজ্ঞাতা।

ٱلَّذِینَ یُنفِقُونَ أَمۡوَ ٰ⁠لَهُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ ثُمَّ لَا یُتۡبِعُونَ مَاۤ أَنفَقُوا۟ مَنࣰّا وَلَاۤ أَذࣰى لَّهُمۡ أَجۡرُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ وَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿262﴾

যারা তাদের ধনসম্পত্তি আল্লাহ্‌র পথে খরচ ক’রে, তারপর যা তারা খরচ করেছে তারা তার পশ্চাদ্ধাবন করে না কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করতে বা আঘাত হানতে, তাদের জন্য পুরস্কার আছে তাদের প্রভুর দরবারে, কাজেই তাদের উপরে কোনো ভয় নেই, আর তারা নিজেরা অনুতাপও করবে না।

۞ قَوۡلࣱ مَّعۡرُوفࣱ وَمَغۡفِرَةٌ خَیۡرࣱ مِّن صَدَقَةࣲ یَتۡبَعُهَاۤ أَذࣰىۗ وَٱللَّهُ غَنِیٌّ حَلِیمࣱ ﴿263﴾

সদয় আলাপ এবং ক্ষমা করা বহু ভালো সেই দানের চেয়ে যাকে অনুসরণ করা হয় উৎপীড়ন দিয়ে। আর আল্লাহ্ স্বয়ং-সমৃদ্ধ, ধৈর্যশীল।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تُبۡطِلُوا۟ صَدَقَـٰتِكُم بِٱلۡمَنِّ وَٱلۡأَذَىٰ كَٱلَّذِی یُنفِقُ مَالَهُۥ رِئَاۤءَ ٱلنَّاسِ وَلَا یُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِۖ فَمَثَلُهُۥ كَمَثَلِ صَفۡوَانٍ عَلَیۡهِ تُرَابࣱ فَأَصَابَهُۥ وَابِلࣱ فَتَرَكَهُۥ صَلۡدࣰاۖ لَّا یَقۡدِرُونَ عَلَىٰ شَیۡءࣲ مِّمَّا كَسَبُوا۟ۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿264﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের দানখয়রাতকে ব্যর্থ করে দিয়ো না কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করে ও আঘাত হেনে, তার মতো যে তার ধনসম্পত্তি খরচ করে লোকদের দেখানোর জন্যে এবং যে ঈমান আনে না আল্লাহ্‌র প্রতি ও আখেরাতের দিনে। কাজেই তার উদাহরণ হচ্ছে মসৃণ পাথরের উপমার মতো, যার উপরে আছে ধুলোমাটি, তখন তার উপরে নামে ঝড়বৃষ্টি, গতিকে তাকে ফেলে রাখে খালি করে! তারা যা অর্জন করেছে তার কোনো-কিছুর উপরেও তাদের কর্তৃত্ব থকে না। আর আল্লাহ্ অবিশ্বাসী লোকদের হেদায়ত করেন না।

وَمَثَلُ ٱلَّذِینَ یُنفِقُونَ أَمۡوَ ٰ⁠لَهُمُ ٱبۡتِغَاۤءَ مَرۡضَاتِ ٱللَّهِ وَتَثۡبِیتࣰا مِّنۡ أَنفُسِهِمۡ كَمَثَلِ جَنَّةِۭ بِرَبۡوَةٍ أَصَابَهَا وَابِلࣱ فَـَٔاتَتۡ أُكُلَهَا ضِعۡفَیۡنِ فَإِن لَّمۡ یُصِبۡهَا وَابِلࣱ فَطَلࣱّۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِیرٌ ﴿265﴾

আর যারা তাদের ধনদৌলত খরচ করে আল্লাহ্‌র সন্তষ্টি কামনা ক’রে এবং তাদের আ‌ত্মার দৃঢ়প্রত্যয় জন্মাবার জন্যে, তাদের উদাহরণ হচ্ছে টিলার উপরের বাগানের উপমার মতো, যার উপরে নামে বৃষ্টিধারা, তাতে তার ফল দ্বিগুণ হয়ে আসে, আর যদি তাতে বৃষ্টিধারা নাও নামে তবে শিশিরপাত। আর তারা যা করে আল্লাহ্ তার দর্শক।

أَیَوَدُّ أَحَدُكُمۡ أَن تَكُونَ لَهُۥ جَنَّةࣱ مِّن نَّخِیلࣲ وَأَعۡنَابࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ لَهُۥ فِیهَا مِن كُلِّ ٱلثَّمَرَ ٰ⁠تِ وَأَصَابَهُ ٱلۡكِبَرُ وَلَهُۥ ذُرِّیَّةࣱ ضُعَفَاۤءُ فَأَصَابَهَاۤ إِعۡصَارࣱ فِیهِ نَارࣱ فَٱحۡتَرَقَتۡۗ كَذَ ٰ⁠لِكَ یُبَیِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلۡـَٔایَـٰتِ لَعَلَّكُمۡ تَتَفَكَّرُونَ ﴿266﴾

তোমাদের মধ্যে কি কেউ আশা করে যে তার খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান হোক, যার নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, অথচ তার সন্তানরা দুর্বল, এমতাবস্থায় তাকে পাকড়ালো ঘুর্ণিঝড়ে, যাতে রয়েছে আগুনের হলকা, ফলে তা পুড়ে গেল! এইভাবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য তাঁর বাণীসমূহ সুস্পষ্ট করে থাকেন যেন তোমরা চিন্তা করতে পার।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَنفِقُوا۟ مِن طَیِّبَـٰتِ مَا كَسَبۡتُمۡ وَمِمَّاۤ أَخۡرَجۡنَا لَكُم مِّنَ ٱلۡأَرۡضِۖ وَلَا تَیَمَّمُوا۟ ٱلۡخَبِیثَ مِنۡهُ تُنفِقُونَ وَلَسۡتُم بِـَٔاخِذِیهِ إِلَّاۤ أَن تُغۡمِضُوا۟ فِیهِۚ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ غَنِیٌّ حَمِیدٌ ﴿267﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! খরচ করো ভালো বিষয়বস্তু যা তোমরা উপার্জন কর, আর যা আমরা তোমাদের জন্য মাটি থেকে উৎপাদন করে থাকি তা থেকে, আর যা নিকৃষ্ট তা থেকে খরচ করতে সংকল্প করো না যখন তোমরা নিজেরা তার গ্রহণকারী হও না, এর প্রতি উপেক্ষা করা ছাড়া। আর জেনে রেখো, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ স্বয়ংসমৃদ্ধ, পরম প্রশংসিত।

ٱلشَّیۡطَـٰنُ یَعِدُكُمُ ٱلۡفَقۡرَ وَیَأۡمُرُكُم بِٱلۡفَحۡشَاۤءِۖ وَٱللَّهُ یَعِدُكُم مَّغۡفِرَةࣰ مِّنۡهُ وَفَضۡلࣰاۗ وَٱللَّهُ وَ ٰ⁠سِعٌ عَلِیمࣱ ﴿268﴾

শয়তান তোমাদের দরিদ্রতার ধমক দেয়, আর তোমাদের তাড়া করে গর্হিত কাজে, অথচ আল্লাহ্ তোমাদের প্রতি‌শ্রুতি দেন তাঁর কাছ থেকে পরিত্রাণের এবং প্রাচুর্যের। আর আল্লাহ্‌, মহাবদান্য, সর্বজ্ঞাতা।

یُؤۡتِی ٱلۡحِكۡمَةَ مَن یَشَاۤءُۚ وَمَن یُؤۡتَ ٱلۡحِكۡمَةَ فَقَدۡ أُوتِیَ خَیۡرࣰا كَثِیرࣰاۗ وَمَا یَذَّكَّرُ إِلَّاۤ أُو۟لُوا۟ ٱلۡأَلۡبَـٰبِ ﴿269﴾

তিনি জ্ঞানদান করেন যাকে ইছে করেন, আর যাকে জ্ঞান দেওয়া হয় তাকে অবশ্যই অপার কল্যাণ দেওয়া হয়েছে। আর বোধশক্তির অধিকারী ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারে না।

وَمَاۤ أَنفَقۡتُم مِّن نَّفَقَةٍ أَوۡ نَذَرۡتُم مِّن نَّذۡرࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ یَعۡلَمُهُۥۗ وَمَا لِلظَّـٰلِمِینَ مِنۡ أَنصَارٍ ﴿270﴾

আর দানের জন্য যা-কিছু তোমরা খরচ কর, অথবা ব্রতের মধ্যে যাই তোমরা সংকল্প কর, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তা জানেন। আর অন্যায়কারীদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।

إِن تُبۡدُوا۟ ٱلصَّدَقَـٰتِ فَنِعِمَّا هِیَۖ وَإِن تُخۡفُوهَا وَتُؤۡتُوهَا ٱلۡفُقَرَاۤءَ فَهُوَ خَیۡرࣱ لَّكُمۡۚ وَیُكَفِّرُ عَنكُم مِّن سَیِّـَٔاتِكُمۡۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣱ ﴿271﴾

তোমরা যদি দানখয়রাত প্রকাশ কর তবে তা কতো ভালো! আর যদি তা গোপন রেখে দরিদ্রদের দান কর তা হলে তোমাদের জন্য তা আরও মঙ্গলময়! আর তোমাদের গর্হিত ক্রিয়াকর্ম হতে তোমাদের এতে প্রায়শ্চিত হবে। আর তোমরা যা করছো আল্লাহ্ তার ওয়াকিফহাল।

۞ لَّیۡسَ عَلَیۡكَ هُدَىٰهُمۡ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ یَهۡدِی مَن یَشَاۤءُۗ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِنۡ خَیۡرࣲ فَلِأَنفُسِكُمۡۚ وَمَا تُنفِقُونَ إِلَّا ٱبۡتِغَاۤءَ وَجۡهِ ٱللَّهِۚ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِنۡ خَیۡرࣲ یُوَفَّ إِلَیۡكُمۡ وَأَنتُمۡ لَا تُظۡلَمُونَ ﴿272﴾

তাদের হেদায়ত করার দায়িত্ব তোমার উপরে নয়, কিন্তু আল্লাহ্ হেদায়ত করেন যাদের তিনি ইচ্ছা করেন। আর ভালো জিনিসের যা-কিছু তোমরা খরচ কর তা তোমাদের নিজেদের জন্য, আর তোমরা আল্লাহ্‌র সন্তষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ছাড়া খরচ করো না। আর ভালো যা-কিছু তোমরা খরচ কর তা তোমাদের পুরোপুরি প্রদান করা হবে, আর তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না।

لِلۡفُقَرَاۤءِ ٱلَّذِینَ أُحۡصِرُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ لَا یَسۡتَطِیعُونَ ضَرۡبࣰا فِی ٱلۡأَرۡضِ یَحۡسَبُهُمُ ٱلۡجَاهِلُ أَغۡنِیَاۤءَ مِنَ ٱلتَّعَفُّفِ تَعۡرِفُهُم بِسِیمَـٰهُمۡ لَا یَسۡـَٔلُونَ ٱلنَّاسَ إِلۡحَافࣰاۗ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِنۡ خَیۡرࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِیمٌ ﴿273﴾

দরিদ্রদের জন্য যারা আল্লাহ্‌র পথে আটকা পড়ে রয়েছে, -- তারা পৃথিবীতে চলাফেরা করতে অপারগ। অজানা লোকে তাদের ধনী বলে ভাবে তাদের বিরত থাকার দরুন। তুমি তাদের চিনতে পারবে তাদের চেহারাতে। তারা লোকের কাছে ধরনা দিয়ে ভিক্ষা করে না। আর ভালো জিনিসের যা-কিছু তোমরা খরচ করো সে-সন্বন্ধে আল্লাহ্ নিশ্চয় সর্বজ্ঞাতা।

ٱلَّذِینَ یُنفِقُونَ أَمۡوَ ٰ⁠لَهُم بِٱلَّیۡلِ وَٱلنَّهَارِ سِرࣰّا وَعَلَانِیَةࣰ فَلَهُمۡ أَجۡرُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ وَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿274﴾

যারা তাদের ধনদৌলত দিবারাত্রি গোপনে ও প্রকাশ্যভাবে খরচ করে থাকে, তাদের জন্যে নিজ নিজ পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রভুর দরবারে, আর তাদের উপরে কোনো ভয় নেই, আর তারা নিজেরা অনুতাপও করবে না।

ٱلَّذِینَ یَأۡكُلُونَ ٱلرِّبَوٰا۟ لَا یَقُومُونَ إِلَّا كَمَا یَقُومُ ٱلَّذِی یَتَخَبَّطُهُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ مِنَ ٱلۡمَسِّۚ ذَ ٰ⁠لِكَ بِأَنَّهُمۡ قَالُوۤا۟ إِنَّمَا ٱلۡبَیۡعُ مِثۡلُ ٱلرِّبَوٰا۟ۗ وَأَحَلَّ ٱللَّهُ ٱلۡبَیۡعَ وَحَرَّمَ ٱلرِّبَوٰا۟ۚ فَمَن جَاۤءَهُۥ مَوۡعِظَةࣱ مِّن رَّبِّهِۦ فَٱنتَهَىٰ فَلَهُۥ مَا سَلَفَ وَأَمۡرُهُۥۤ إِلَى ٱللَّهِۖ وَمَنۡ عَادَ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿275﴾

যারা সুদ খায় তারা দাঁড়াতে পারে না তার মতো দাঁড়ানো ছাড়া যাকে শয়তান তার স্পর্শের দ্বারা পাতিত করেছে। এমন হবে কেননা তারা বলে -- ''ব্যবসা-বাণিজ্য তো সুদী-কারবারের মতোই।’’ কিন্তু আল্লাহ্ বৈধ করেছেন ব্যবসা-বাণিজ্য, অথচ নিষিদ্ধ করেছেন সুদখুরি। অতএব যার কাছে তারা প্রভুর তরফ থেকে এই নির্দেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে তার জন্যে যা গত হয়ে গেছে, আর তার ব্যাপার রইল আল্লাহ্‌র কাছে। আর যে ফিরে যায় তারাই হচ্ছে আগুনের বাসিন্দা, এতে তারা থাকবে দীর্ঘকাল।

یَمۡحَقُ ٱللَّهُ ٱلرِّبَوٰا۟ وَیُرۡبِی ٱلصَّدَقَـٰتِۗ وَٱللَّهُ لَا یُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِیمٍ ﴿276﴾

আল্লাহ্ সুদখুরিকে নিষ্ফল করেছেন, এবং দান-খয়রাতকে অগ্রগামী করেছেন। আর আল্লাহ্ সকল অবিশ্বাসী পাপীকে ভালোবাসেন না।

إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُا۟ ٱلزَّكَوٰةَ لَهُمۡ أَجۡرُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ وَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿277﴾

নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করে, আর নামায কায়েম করে ও যাকাত দেয়, তাদের জন্যে নিজ নিজ পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রভুর দরবারে, আর তাদের উপরে কোনো ভয় নেই, এবং তারা নিজেরা অনুতাপও করবে না।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَذَرُوا۟ مَا بَقِیَ مِنَ ٱلرِّبَوٰۤا۟ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿278﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্‌কে ভয়-শ্রদ্ধা করো, আর সুদের বাবদ বকেয়া যা আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা ঈমানদার হও।

فَإِن لَّمۡ تَفۡعَلُوا۟ فَأۡذَنُوا۟ بِحَرۡبࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۖ وَإِن تُبۡتُمۡ فَلَكُمۡ رُءُوسُ أَمۡوَ ٰ⁠لِكُمۡ لَا تَظۡلِمُونَ وَلَا تُظۡلَمُونَ ﴿279﴾

কিন্তু যদি তোমরা না করো তবে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের তরফ থেকে সংগ্রামের ঘোষণা জেনে রেখো। আর যদি তোমরা ফেরো তবে তোমাদের জন্য রইল তোমাদের ধনসম্পত্তির আসলভাগ। অত্যাচার করো না এবং অত্যাচারিতও হয়ো না।

وَإِن كَانَ ذُو عُسۡرَةࣲ فَنَظِرَةٌ إِلَىٰ مَیۡسَرَةࣲۚ وَأَن تَصَدَّقُوا۟ خَیۡرࣱ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿280﴾

আর যদি সে অসচ্ছল অবস্থায় থাকে তবে মূলতবি রাখো যতক্ষণ না সচ্ছলতা আসে। আর যদি দান করে দাও তবে তা তোমাদের জন্য আরো উত্তম, -- যদি তোমরা জানতে।

وَٱتَّقُوا۟ یَوۡمࣰا تُرۡجَعُونَ فِیهِ إِلَى ٱللَّهِۖ ثُمَّ تُوَفَّىٰ كُلُّ نَفۡسࣲ مَّا كَسَبَتۡ وَهُمۡ لَا یُظۡلَمُونَ ﴿281﴾

আর হুশিয়াঁর হও সেই দিন সন্বন্ধে যেদিন তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে আল্লাহ্‌র তরফে, তখন প্রত্যেক লোককে পুরোপুরি প্রতিদান দেয়া হবে যা সে অর্জন করেছে, আর তাদের অন্যায় করা হবে না।

۞ وَإِن كُنتُمۡ عَلَىٰ سَفَرࣲ وَلَمۡ تَجِدُوا۟ كَاتِبࣰا فَرِهَـٰنࣱ مَّقۡبُوضَةࣱۖ فَإِنۡ أَمِنَ بَعۡضُكُم بَعۡضࣰا فَلۡیُؤَدِّ ٱلَّذِی ٱؤۡتُمِنَ أَمَـٰنَتَهُۥ وَلۡیَتَّقِ ٱللَّهَ رَبَّهُۥۗ وَلَا تَكۡتُمُوا۟ ٱلشَّهَـٰدَةَۚ وَمَن یَكۡتُمۡهَا فَإِنَّهُۥۤ ءَاثِمࣱ قَلۡبُهُۥۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ عَلِیمࣱ ﴿283﴾

আর যদি তোমরা সফরে থাক এবং লেখক না পাও তবে বন্ধক নিতে পার। কিন্তু তোমাদের কেউ যদি অন্যের কাছে বিশ্বাসস্থাপন করে তবে যাকে বিশ্বাস করা হল সে তার আমানত ফেরত দিক, আর তার প্রভু আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করুক। আর সাক্ষ্য গোপন করবে না, কারণ যে তা গোপন করে তার হৃদয় নিঃসন্দেহ পাপপূর্ণ। আর তোমরা যা করো আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে স র্বজ্ঞাতা।

لِّلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ وَإِن تُبۡدُوا۟ مَا فِیۤ أَنفُسِكُمۡ أَوۡ تُخۡفُوهُ یُحَاسِبۡكُم بِهِ ٱللَّهُۖ فَیَغۡفِرُ لِمَن یَشَاۤءُ وَیُعَذِّبُ مَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرٌ ﴿284﴾

আল্লাহ্‌রই যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে ও যা-কিছু আছে পৃথিবীতে। আর তোমাদের অন্তরে যা আছে তা প্রকাশ করো, বা তা লুকিয়ে রাখো, আল্লাহ্ তার জন্য তোমাদের হিসেব-নিকেশ নেবেন। কাজেই যাকে তিনি ইচ্ছা করবেন পরিত্রাণ করবেন এবং যাকে ইচ্ছা করবেন শাস্তিও দেবেন। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

ءَامَنَ ٱلرَّسُولُ بِمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡهِ مِن رَّبِّهِۦ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَۚ كُلٌّ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَمَلَـٰۤىِٕكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ أَحَدࣲ مِّن رُّسُلِهِۦۚ وَقَالُوا۟ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۖ غُفۡرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَیۡكَ ٱلۡمَصِیرُ ﴿285﴾

রসূল ঈমান এনেছেন যা তাঁর প্রভুর কাছ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে, আর বিশ্বাসীরাও। তারা সবাই ঈমান এনেছে আল্লাহ্‌তে, আর তাঁর ফিরিশ্‌তাগণে, আর তাঁর কিতাবসমূহে, আর তাঁর রসূলগণে, -- ''আমরা তাঁর রসূলদের কোনোজনের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না।’’ তারা আরও বলে -- ''আমরা শুনি আর আমরা পালন করি, হে আমাদের প্রভু! তোমার পরিত্রাণ, আর তোমারই কাছে গন্তব্যপথ।’’

لَا یُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفۡسًا إِلَّا وُسۡعَهَاۚ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَعَلَیۡهَا مَا ٱكۡتَسَبَتۡۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذۡنَاۤ إِن نَّسِینَاۤ أَوۡ أَخۡطَأۡنَاۚ رَبَّنَا وَلَا تَحۡمِلۡ عَلَیۡنَاۤ إِصۡرࣰا كَمَا حَمَلۡتَهُۥ عَلَى ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِنَاۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلۡنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِۦۖ وَٱعۡفُ عَنَّا وَٱغۡفِرۡ لَنَا وَٱرۡحَمۡنَاۤۚ أَنتَ مَوۡلَىٰنَا فَٱنصُرۡنَا عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿286﴾

আল্লাহ্ কোনো সত্তার উপরে তার ক্ষমতার অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না। তার অনুকূলে রয়েছে সে যা-কিছু অর্জন করেছে, আর তার প্রতিকূলে রয়েছে যা-কিছু সে কামিয়েছে। ''আমাদের প্রভু, আমাদের পাকড়াও করো না যদি আমরা ভুলে যাই অথবা ভুল করি, হে আমাদের প্রভু! আর আমাদের উপরে তেমন বোঝা চাপিও না যেমন তুমি তা চাপিয়েছিলে তাদের উপরে যারা ছিল আমাদের পূর্ববর্তী, আমাদের প্রভু! আর আমাদের উপরে তেমন ভার তুলে দিয়ো না যার সামর্থ্য আমাদের নেই। অতএব তুমি আমাদের ক্ষমা করে দাও, আর আমাদের তুমি রক্ষা করে রাখো, আর আমাদের প্রতি তুমি করুণা বর্ষণ করো। তুমিই আমাদের পৃষ্ঠপোষক, অতএব অবিশ্বাসিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদের তুমি সাহায্য করো।’’