Settings
طه ﴿1﴾
ত্বা, হা।
مَاۤ أَنزَلۡنَا عَلَیۡكَ ٱلۡقُرۡءَانَ لِتَشۡقَىٰۤ ﴿2﴾
আমরা তোমার কাছে কুরআন অবতারণ করি নি যে তুমি বিপন্ন বোধ করবে, --
إِلَّا تَذۡكِرَةࣰ لِّمَن یَخۡشَىٰ ﴿3﴾
যে ভয় করে তাকে স্মরণ করে দেবার জন্যে ছাড়া,
تَنزِیلࣰا مِّمَّنۡ خَلَقَ ٱلۡأَرۡضَ وَٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ ٱلۡعُلَى ﴿4﴾
এ একটি অবতারণ তাঁর কাছ থেকে যিনি সৃষ্টি করেছেন পৃথিবী ও সমুচ্চ মহাকাশমন্ডলী।
ٱلرَّحۡمَـٰنُ عَلَى ٱلۡعَرۡشِ ٱسۡتَوَىٰ ﴿5﴾
পরম করুণাময় আরশের উপরে সুপ্রতিষ্ঠিত রয়েছেন।
لَهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَا وَمَا تَحۡتَ ٱلثَّرَىٰ ﴿6﴾
যা কিছু আছে মহাকাশমন্ডলীতে ও যা কিছু এ দুইয়ের মধ্যে রয়েছে আর যা রয়েছে মাটির নিচে সে-সবই তাঁর।
وَإِن تَجۡهَرۡ بِٱلۡقَوۡلِ فَإِنَّهُۥ یَعۡلَمُ ٱلسِّرَّ وَأَخۡفَى ﴿7﴾
আর যদি তুমি বক্তব্য প্রকাশ কর তবে তো তিনি গোপন জানেন আর যা আরও লুকোনো।
ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۖ لَهُ ٱلۡأَسۡمَاۤءُ ٱلۡحُسۡنَىٰ ﴿8﴾
আল্লাহ্, তিনি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই। তাঁরই হচ্ছে সব সুন্দর সুন্দর নামাবলী।
وَهَلۡ أَتَىٰكَ حَدِیثُ مُوسَىٰۤ ﴿9﴾
আর মূসার কাহিনী কি তোমার কাছে এসে পৌঁছেছে?
إِذۡ رَءَا نَارࣰا فَقَالَ لِأَهۡلِهِ ٱمۡكُثُوۤا۟ إِنِّیۤ ءَانَسۡتُ نَارࣰا لَّعَلِّیۤ ءَاتِیكُم مِّنۡهَا بِقَبَسٍ أَوۡ أَجِدُ عَلَى ٱلنَّارِ هُدࣰى ﴿10﴾
স্মরণ করো! তিনি দেখতে পেলেন একটি আগুন, তাই তিনি তাঁর পরিবারবর্গকে বললেন -- ''দাঁড়াও, আমি নিঃসন্দেহ একটি আগুন দেখছি, সম্ভবতঃ তোমাদের জন্য সেখান থেকে আমি জ্বলন্ত আঙটা আনতে পারব অথবা আগুনের কাছ থেকে কোনো পথনির্দেশ পেয়ে যাব।’’
فَلَمَّاۤ أَتَىٰهَا نُودِیَ یَـٰمُوسَىٰۤ ﴿11﴾
তারপর যখন তিনি সেখানে এলেন তখন ডাকা হ’ল -- ''হে মূসা!
إِنِّیۤ أَنَا۠ رَبُّكَ فَٱخۡلَعۡ نَعۡلَیۡكَ إِنَّكَ بِٱلۡوَادِ ٱلۡمُقَدَّسِ طُوࣰى ﴿12﴾
''নিঃসন্দেহ আমি, আমিই তোমার প্রভু, অতএব তোমার জুতো খুলে ফেল, তুমি অবশ্য পবিত্র উপত্যকা 'তুওয়া’তে রয়েছ।
وَأَنَا ٱخۡتَرۡتُكَ فَٱسۡتَمِعۡ لِمَا یُوحَىٰۤ ﴿13﴾
''আর আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, তাই শোনো যা প্রত্যাদেশ করা হচ্ছে।
إِنَّنِیۤ أَنَا ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّاۤ أَنَا۠ فَٱعۡبُدۡنِی وَأَقِمِ ٱلصَّلَوٰةَ لِذِكۡرِیۤ ﴿14﴾
''নিঃসন্দেহ আমি, আমিই আল্লাহ্, আমি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, সেজন্য আমার উপাসনা করো, আর আমাকে মনে রাখার জন্যে নামায কায়েম করো।
إِنَّ ٱلسَّاعَةَ ءَاتِیَةٌ أَكَادُ أُخۡفِیهَا لِتُجۡزَىٰ كُلُّ نَفۡسِۭ بِمَا تَسۡعَىٰ ﴿15﴾
''নিঃসন্দেহ ঘড়িঘন্টা এসেই যাচ্ছে, আমি চাই এ গোপন রাখতে, যেন প্রত্যেক জীবকে পুরস্কৃত করা যেতে পারে তাই দিয়ে যার জন্য সে চেষ্টা করে।
فَلَا یَصُدَّنَّكَ عَنۡهَا مَن لَّا یُؤۡمِنُ بِهَا وَٱتَّبَعَ هَوَىٰهُ فَتَرۡدَىٰ ﴿16﴾
''সেজন্য তোমাকে এ থেকে সে যেন না ফেরায় যে এতে বিশ্বাস করে না আর যে তার কামনার অনুবর্তী হয়, পাছে তুমি ধ্বংস হয়ে যাও।’’
وَمَا تِلۡكَ بِیَمِینِكَ یَـٰمُوسَىٰ ﴿17﴾
''তোমার ডান হাতে ঐটি কি, হে মূসা?’’
قَالَ هِیَ عَصَایَ أَتَوَكَّؤُا۟ عَلَیۡهَا وَأَهُشُّ بِهَا عَلَىٰ غَنَمِی وَلِیَ فِیهَا مَـَٔارِبُ أُخۡرَىٰ ﴿18﴾
তিনি বললেন -- ''এটি আমার লাঠি, আমি এর উপরে ভর দিই, আর এ দিয়ে আমার মেষপালের জন্য আমি গাছের পাতা পেড়ে থাকি, আর আমার জন্য এতে অন্যান্য কাজও হয়।’’
قَالَ أَلۡقِهَا یَـٰمُوسَىٰ ﴿19﴾
তিনি বললেন -- ''এটি ছুঁড়ে মার, হে মূসা!’’
فَأَلۡقَىٰهَا فَإِذَا هِیَ حَیَّةࣱ تَسۡعَىٰ ﴿20﴾
সুতরাং তিনি এটি ছুঁড়ে মারলেন, তখন দেখো! এটি হয়ে গেল একটি সাপ -- ছুটতে লাগল।
قَالَ خُذۡهَا وَلَا تَخَفۡۖ سَنُعِیدُهَا سِیرَتَهَا ٱلۡأُولَىٰ ﴿21﴾
তিনি বললেন -- ''এটিকে ধর, আর ভয় করো না, এটিকে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফিরিয়ে নেব তার আগের অবস্থায়।
وَٱضۡمُمۡ یَدَكَ إِلَىٰ جَنَاحِكَ تَخۡرُجۡ بَیۡضَاۤءَ مِنۡ غَیۡرِ سُوۤءٍ ءَایَةً أُخۡرَىٰ ﴿22﴾
আর তোমার হাত তোমার বগলের মধ্যে চেপে ধর, তা সাদা হয়ে বেরিয়ে আসবে কোনো দোষত্রুটি ছাড়া, -- এ আরেকটি নিদর্শন।
لِنُرِیَكَ مِنۡ ءَایَـٰتِنَا ٱلۡكُبۡرَى ﴿23﴾
এই জন্য যে আমরা তোমাকে আমাদের আরো বড় নিদর্শন দেখাতে পারি।
ٱذۡهَبۡ إِلَىٰ فِرۡعَوۡنَ إِنَّهُۥ طَغَىٰ ﴿24﴾
ফিরআউনের কাছে যাও, নিঃসন্দেহ সে সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’’
قَالَ رَبِّ ٱشۡرَحۡ لِی صَدۡرِی ﴿25﴾
তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমার বুক আমার জন্য প্রসারিত করো,
وَیَسِّرۡ لِیۤ أَمۡرِی ﴿26﴾
''আর আমার কাজ আমার জন্য সহজ করে দাও,
وَٱحۡلُلۡ عُقۡدَةࣰ مِّن لِّسَانِی ﴿27﴾
''আর আমার জিহ্বা থেকে জড়তা তুমি খুলে দাও,
یَفۡقَهُوا۟ قَوۡلِی ﴿28﴾
''যেন তারা আমার বক্তব্য বুঝতে পারে।
وَٱجۡعَل لِّی وَزِیرࣰا مِّنۡ أَهۡلِی ﴿29﴾
''আর আমার স্বজনদের মধ্যে থেকে আমার জন্য একজন সাহায্যকারী নিয়োগ করে দাও --
هَـٰرُونَ أَخِی ﴿30﴾
''আমার ভাই হারূনকে,
ٱشۡدُدۡ بِهِۦۤ أَزۡرِی ﴿31﴾
''তাকে দিয়ে আমার কোমর মজবুত করে দাও,
وَأَشۡرِكۡهُ فِیۤ أَمۡرِی ﴿32﴾
''এবং তাকে জুড়ে দাও আমার কাজে,
كَیۡ نُسَبِّحَكَ كَثِیرࣰا ﴿33﴾
''যাতে আমরা তোমার মহিমা কীর্তন করতে পারি প্রচুরভাবে,
وَنَذۡكُرَكَ كَثِیرًا ﴿34﴾
''আর তোমার গুণগান করতে পারি বহুলভাবে।
إِنَّكَ كُنتَ بِنَا بَصِیرࣰا ﴿35﴾
''নিঃসন্দেহ তুমি -- তুমিই আমাদের সম্যক দ্রষ্টা।’’
قَالَ قَدۡ أُوتِیتَ سُؤۡلَكَ یَـٰمُوسَىٰ ﴿36﴾
তিনি বললেন -- ''তোমার আরজি অবশ্য তোমাকে মঞ্জুর করা হ’ল, হে মূসা!
وَلَقَدۡ مَنَنَّا عَلَیۡكَ مَرَّةً أُخۡرَىٰۤ ﴿37﴾
''আর আমরা তো তোমার প্রতি আরও একবার অনুগ্রহ করেছিলাম, --
قَالَ عِلۡمُهَا عِندَ رَبِّی فِی كِتَـٰبࣲۖ لَّا یَضِلُّ رَبِّی وَلَا یَنسَى ﴿52﴾
তিনি বললেন -- ''তার জ্ঞান আমার প্রভুর কাছে একটি গ্রন্থে রয়েছে, আমার প্রভু ভুল করেন না এবং ভুলেও যান না, --
ٱلَّذِی جَعَلَ لَكُمُ ٱلۡأَرۡضَ مَهۡدࣰا وَسَلَكَ لَكُمۡ فِیهَا سُبُلࣰا وَأَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ مَاۤءࣰ فَأَخۡرَجۡنَا بِهِۦۤ أَزۡوَ ٰجࣰا مِّن نَّبَاتࣲ شَتَّىٰ ﴿53﴾
''যিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীটাকে করেছেন একটি বিছানা, আর তোমাদের জন্য এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন পথসমূহ, আর তিনি আকাশ থেকে পাঠান পানি।’’ তারপর এর দ্বারা আমরা উৎপাদন করি জোড়ায় জোড়ায় বিভিন্ন ধরনের গাছপালা।
كُلُوا۟ وَٱرۡعَوۡا۟ أَنۡعَـٰمَكُمۡۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَـٰتࣲ لِّأُو۟لِی ٱلنُّهَىٰ ﴿54﴾
তোমরা খাও আর তোমাদের পশুদের চরাও। নিঃসন্দেহ এই গুলোতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে বিবেকবুদ্ধিসম্পন্নদের জন্য।
۞ مِنۡهَا خَلَقۡنَـٰكُمۡ وَفِیهَا نُعِیدُكُمۡ وَمِنۡهَا نُخۡرِجُكُمۡ تَارَةً أُخۡرَىٰ ﴿55﴾
''এ থেকে আমরা তোমাদের সৃষ্টি করেছি, আর এতেই তোমাদের ফিরিয়ে নেব, আর এ থেকেই আমরা তোমাদের বের করে আনব দ্বিতীয় দফায়।’’
وَلَقَدۡ أَرَیۡنَـٰهُ ءَایَـٰتِنَا كُلَّهَا فَكَذَّبَ وَأَبَىٰ ﴿56﴾
আর আমরা অবশ্যই তাকে দেখিয়েছিলাম আমাদের নিদর্শনাবলী -- তাদের সব ক’টি, কিন্তু সে প্রত্যাখ্যান করল ও অমান্য করল।
قَالَ أَجِئۡتَنَا لِتُخۡرِجَنَا مِنۡ أَرۡضِنَا بِسِحۡرِكَ یَـٰمُوسَىٰ ﴿57﴾
সে বললে -- ''হে মূসা! তুমি কি আমাদের কাছে এসেছ তোমার জাদুর দ্বারা আমাদের দেশ থেকে আমাদের বিতাড়িত করতে?
فَلَنَأۡتِیَنَّكَ بِسِحۡرࣲ مِّثۡلِهِۦ فَٱجۡعَلۡ بَیۡنَنَا وَبَیۡنَكَ مَوۡعِدࣰا لَّا نُخۡلِفُهُۥ نَحۡنُ وَلَاۤ أَنتَ مَكَانࣰا سُوࣰى ﴿58﴾
তাহলে আমরাও আলবৎ তোমার কাছে নিয়ে আসছি এরই মতো জাদু, সুতরাং আমাদের মধ্যে ও তোমার মধ্যে একটি স্থানকাল ধার্য হোক যা আমরা ভাঙব না, -- আমরাও না আর তুমিও না, -- এক মধ্যস্থ জায়গায়।’’
قَالَ مَوۡعِدُكُمۡ یَوۡمُ ٱلزِّینَةِ وَأَن یُحۡشَرَ ٱلنَّاسُ ضُحࣰى ﴿59﴾
তিনি বললেন -- ''তোমাদের নির্ধারিত দিনক্ষণ হোক উৎসবের দিন, আর লোকজন যেন জমায়েৎ হয় সকালের দিকে।’’
فَتَوَلَّىٰ فِرۡعَوۡنُ فَجَمَعَ كَیۡدَهُۥ ثُمَّ أَتَىٰ ﴿60﴾
তারপর ফিরআউন উঠে গেল এবং তার ফন্দি আটঁলো, তারপর সে ফিরে এল।
قَالَ لَهُم مُّوسَىٰ وَیۡلَكُمۡ لَا تَفۡتَرُوا۟ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبࣰا فَیُسۡحِتَكُم بِعَذَابࣲۖ وَقَدۡ خَابَ مَنِ ٱفۡتَرَىٰ ﴿61﴾
মূসা তাদের বললেন -- ''ধিক্ তোমাদের! আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা আরোপ করো না, পাছে তিনি তোমাদের শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করেন, আর যে মিথ্যা রচনা করে সে আলবৎ ব্যর্থ হয়।’’
فَتَنَـٰزَعُوۤا۟ أَمۡرَهُم بَیۡنَهُمۡ وَأَسَرُّوا۟ ٱلنَّجۡوَىٰ ﴿62﴾
তারপর তারা তাদের নিজেদের মধ্যে তাদের কর্তব্য সন্বন্ধে পর্যালোচনা করল, আর সেই আলোচনাটা গোপন রাখল।
قَالُوۤا۟ إِنۡ هَـٰذَ ٰنِ لَسَـٰحِرَ ٰنِ یُرِیدَانِ أَن یُخۡرِجَاكُم مِّنۡ أَرۡضِكُم بِسِحۡرِهِمَا وَیَذۡهَبَا بِطَرِیقَتِكُمُ ٱلۡمُثۡلَىٰ ﴿63﴾
তারা বলাবলি করলে -- ''এ দুজন নিশ্চয়ই তো দুই জাদুকর যারা চাইছে তাদের জাদু দিয়ে তোমাদের দেশ থেকে তোমাদের বিতাড়িত করতে, আর তোমাদের উৎকৃষ্ট আচার-অনুষ্ঠানকে বিনাশ করতে।
فَأَجۡمِعُوا۟ كَیۡدَكُمۡ ثُمَّ ٱئۡتُوا۟ صَفࣰّاۚ وَقَدۡ أَفۡلَحَ ٱلۡیَوۡمَ مَنِ ٱسۡتَعۡلَىٰ ﴿64﴾
''সুতরাং তোমাদের ফন্দি-ফিকির ঠিক করে নাও, তারপর চলে এস সারি বেঁধে, আর সেই আজ বিজয় লাভ করবে যে উপর- হাত হতে পারবে।’’
إِذۡ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰۤ أُمِّكَ مَا یُوحَىٰۤ ﴿38﴾
''চেয়ে দেখো! আমরা তোমার মাতাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলাম যা অনুপ্রাণিত করার ছিল।
أَنِ ٱقۡذِفِیهِ فِی ٱلتَّابُوتِ فَٱقۡذِفِیهِ فِی ٱلۡیَمِّ فَلۡیُلۡقِهِ ٱلۡیَمُّ بِٱلسَّاحِلِ یَأۡخُذۡهُ عَدُوࣱّ لِّی وَعَدُوࣱّ لَّهُۥۚ وَأَلۡقَیۡتُ عَلَیۡكَ مَحَبَّةࣰ مِّنِّی وَلِتُصۡنَعَ عَلَىٰ عَیۡنِیۤ ﴿39﴾
''এই বলেঃ 'তাকে একটি সিন্দুকের মধ্যে রাখ, তারপর এটিকে পানিতে ভাসিয়ে দাও, তারপর নদী তাকে তীরে ভেড়াবে, তাকে নিয়ে যাবে আমার এক শত্রু ও তারও শত্রু।’’ আর আমি তোমার উপরে আমার তরফ থেকে ভালবাসা অর্পণ করেছিলাম, আর যেন তুমি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হতে পার।
إِذۡ تَمۡشِیۤ أُخۡتُكَ فَتَقُولُ هَلۡ أَدُلُّكُمۡ عَلَىٰ مَن یَكۡفُلُهُۥۖ فَرَجَعۡنَـٰكَ إِلَىٰۤ أُمِّكَ كَیۡ تَقَرَّ عَیۡنُهَا وَلَا تَحۡزَنَۚ وَقَتَلۡتَ نَفۡسࣰا فَنَجَّیۡنَـٰكَ مِنَ ٱلۡغَمِّ وَفَتَنَّـٰكَ فُتُونࣰاۚ فَلَبِثۡتَ سِنِینَ فِیۤ أَهۡلِ مَدۡیَنَ ثُمَّ جِئۡتَ عَلَىٰ قَدَرࣲ یَـٰمُوسَىٰ ﴿40﴾
''চেয়ে দেখো! তোমার ভগিনী হেটে চলেছিল, তখন সে বললে -- 'আমি কি আপনাদের জন্য দেখিয়ে দেব তাকে যে এর ভার নিতে পারে?’’ ফলে তোমাকে আমরা ফিরিয়ে দিলাম তোমার মায়ের কাছে যেন তার চোখ জুড়ায় আর সে যেন পরিতাপ না করে। আর তুমি একটি লোককে মেরে ফেলেছিলে, তারপর আমরা তোমাকে মনঃপীড়া থেকে উদ্ধার করেছিলাম, আর আমরা তোমাকে পরীক্ষা করেছিলাম বহু পরীক্ষায়। এরপর তুমি বহু বৎসর অবস্থান করেছিলে মাদিয়ানবাসীদের সঙ্গে, তারপর, হে মূসা, তুমি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসে পৌঁছেছ।
وَٱصۡطَنَعۡتُكَ لِنَفۡسِی ﴿41﴾
''আর আমি তোমাকে নির্বাচন করেছি আমার নিজের জন্য।
ٱذۡهَبۡ أَنتَ وَأَخُوكَ بِـَٔایَـٰتِی وَلَا تَنِیَا فِی ذِكۡرِی ﴿42﴾
''তুমি ও তোমার ভাই আমার নির্দেশাবলী নিয়ে যাও, আর আমার নাম-কীর্তনে শিথিল হয়ো না।
ٱذۡهَبَاۤ إِلَىٰ فِرۡعَوۡنَ إِنَّهُۥ طَغَىٰ ﴿43﴾
''তোমার দুজনে ফিরআউনের কাছে যাও, নিঃসন্দেহ সে সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
فَقُولَا لَهُۥ قَوۡلࣰا لَّیِّنࣰا لَّعَلَّهُۥ یَتَذَكَّرُ أَوۡ یَخۡشَىٰ ﴿44﴾
''আর তার কাছে তোমরা বল সুরুচিসম্পন্ন কথা, হয়ত বা সে অনুধাবন করবে, অথবা সে ভয় করবে।’’
قَالَا رَبَّنَاۤ إِنَّنَا نَخَافُ أَن یَفۡرُطَ عَلَیۡنَاۤ أَوۡ أَن یَطۡغَىٰ ﴿45﴾
তাঁরা বললেন -- ''আমাদের প্রভু! আমরা অবশ্য আশংকা করছি পাছে সে আমাদের প্রতি আগবেড়ে আক্রমণ করে, অথবা সে সীমা ছাড়িয়ে যায়।’’
قَالَ لَا تَخَافَاۤۖ إِنَّنِی مَعَكُمَاۤ أَسۡمَعُ وَأَرَىٰ ﴿46﴾
তিনি বললেন -- ''তোমরা দুজনে ভয় করো না, আমি তো তোমাদের সঙ্গে রয়েছি, আমি শুনছি ও দেখছি।
فَأۡتِیَاهُ فَقُولَاۤ إِنَّا رَسُولَا رَبِّكَ فَأَرۡسِلۡ مَعَنَا بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ وَلَا تُعَذِّبۡهُمۡۖ قَدۡ جِئۡنَـٰكَ بِـَٔایَةࣲ مِّن رَّبِّكَۖ وَٱلسَّلَـٰمُ عَلَىٰ مَنِ ٱتَّبَعَ ٱلۡهُدَىٰۤ ﴿47﴾
''সুতরাং তোমরা উভয়ে তার কাছে যাও এবং বলো -- 'আমরা তোমার প্রভুর বার্তাবাহক, তাই আমাদের সঙ্গে ইসরাইলের বংশধরদের পাঠিয়ে দাও, আর তাদের অত্যাচার করো না। আমরা নিশ্চয়ই তোমার কাছে এসেছি তোমার প্রভুর কাছ থেকে নির্দেশ নিয়ে। আর শান্তি তার উপরে যে পথনির্দেশ অনুসরণ করে।
إِنَّا قَدۡ أُوحِیَ إِلَیۡنَاۤ أَنَّ ٱلۡعَذَابَ عَلَىٰ مَن كَذَّبَ وَتَوَلَّىٰ ﴿48﴾
''নিঃসন্দেহ আমাদের কাছে অবশ্য প্রত্যাদিষ্ট হয়েছে যে নিশ্চয় শাস্তি এসে পড়বে তার উপরে যে প্রত্যাখ্যান করে ও ফিরে যায়।’’
قَالَ فَمَن رَّبُّكُمَا یَـٰمُوسَىٰ ﴿49﴾
সে বললে -- ''তবে কে তোমাদের প্রভু, হে মূসা?’’
قَالَ رَبُّنَا ٱلَّذِیۤ أَعۡطَىٰ كُلَّ شَیۡءٍ خَلۡقَهُۥ ثُمَّ هَدَىٰ ﴿50﴾
তিনি বললেন -- ''আমাদের প্রভু তিনি যিনি সব-কিছুকে দিয়েছেন তার সৃষ্টি, তারপর চালিত করেছেন।’’
قَالَ فَمَا بَالُ ٱلۡقُرُونِ ٱلۡأُولَىٰ ﴿51﴾
সে বললে -- ''তাহলে পূর্ববর্তী লোকদের অবস্থা কি হবে?’’
قَالُوا۟ یَـٰمُوسَىٰۤ إِمَّاۤ أَن تُلۡقِیَ وَإِمَّاۤ أَن نَّكُونَ أَوَّلَ مَنۡ أَلۡقَىٰ ﴿65﴾
তারা বললে -- ''হে মূসা! তুমিই কি ছুড়ঁবে, না আমরাই হব প্রথমকার যে ছুড়ঁবে?’’
قَالَ بَلۡ أَلۡقُوا۟ۖ فَإِذَا حِبَالُهُمۡ وَعِصِیُّهُمۡ یُخَیَّلُ إِلَیۡهِ مِن سِحۡرِهِمۡ أَنَّهَا تَسۡعَىٰ ﴿66﴾
তিনি বললেন -- ''না, তোমরাই ছোঁড়ো।’’ তখন দেখো! তাদের দড়িদড়া ও তাদের লাঠি-লগুড় তাদের সম্মোহনের ফলে তাঁর কাছে মনে হচ্ছিল যে সেগুলো ঠিকঠিকই দৌড়চ্ছে।
فَأَوۡجَسَ فِی نَفۡسِهِۦ خِیفَةࣰ مُّوسَىٰ ﴿67﴾
ফলে মূসা তাঁর অন্তরে ভীতি অনুভব করলেন।
قُلۡنَا لَا تَخَفۡ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡأَعۡلَىٰ ﴿68﴾
আমরা বললাম -- ''ভয় করো না, তুমি নিজেই হবে উপরহাত।
وَأَلۡقِ مَا فِی یَمِینِكَ تَلۡقَفۡ مَا صَنَعُوۤا۟ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا۟ كَیۡدُ سَـٰحِرࣲۖ وَلَا یُفۡلِحُ ٱلسَّاحِرُ حَیۡثُ أَتَىٰ ﴿69﴾
''আর তোমার ডান হাতে যা আছে তা ছোঁড়ো, এটি খেয়ে ফেলবে তারা যা বানিয়েছে। নিঃসন্দেহ তারা বানিয়েছে জাদুকরের ভেলকিবাজি। আর জাদুকর কখনো সফল হবে না যেখান থেকেই সে আসুক।’’
فَأُلۡقِیَ ٱلسَّحَرَةُ سُجَّدࣰا قَالُوۤا۟ ءَامَنَّا بِرَبِّ هَـٰرُونَ وَمُوسَىٰ ﴿70﴾
তারপর জাদুকররা লুটিয়ে পড়ল সিজদাবনত হয়ে, তারা বললেন -- ''আমরা ঈমান আনলাম হারূন ও মূসার প্রভুর প্রতি।’’
قَالَ ءَامَنتُمۡ لَهُۥ قَبۡلَ أَنۡ ءَاذَنَ لَكُمۡۖ إِنَّهُۥ لَكَبِیرُكُمُ ٱلَّذِی عَلَّمَكُمُ ٱلسِّحۡرَۖ فَلَأُقَطِّعَنَّ أَیۡدِیَكُمۡ وَأَرۡجُلَكُم مِّنۡ خِلَـٰفࣲ وَلَأُصَلِّبَنَّكُمۡ فِی جُذُوعِ ٱلنَّخۡلِ وَلَتَعۡلَمُنَّ أَیُّنَاۤ أَشَدُّ عَذَابࣰا وَأَبۡقَىٰ ﴿71﴾
সে বললে -- ''তোমরা তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলে আমি তোমাদের অনুমতি দেবার আগেই? সে-ই দেখছি তবে তোমাদের জাদুবিদ্যা শিখিয়েছে। কাজেই আমি নিশ্চয় তোমাদের হাত ও তোমাদের পা আড়াআড়িভাবে কেটে ফেলবই, আর আমি অবশ্যই তোমাদের শূলে চড়াব খেজুর গাছের কান্ডে, আর তোমরা অবশ্যই জানতে পারবে আমাদের মধ্যে কার দেওয়া শাস্তি বেশী কঠোর ও দীর্ঘস্থায়ী।’’
قَالُوا۟ لَن نُّؤۡثِرَكَ عَلَىٰ مَا جَاۤءَنَا مِنَ ٱلۡبَیِّنَـٰتِ وَٱلَّذِی فَطَرَنَاۖ فَٱقۡضِ مَاۤ أَنتَ قَاضٍۖ إِنَّمَا تَقۡضِی هَـٰذِهِ ٱلۡحَیَوٰةَ ٱلدُّنۡیَاۤ ﴿72﴾
তারা বললে -- ''আমরা কখনই তোমাকে অধিকতর গুরুত্ব দেব না সুস্পষ্ট প্রমাণের যা আমাদের কাছে এসেছে ও যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন সে-সবের উপরে, কাজেই রায় দাও তুমি যা রায় দিতে চাও। তুমি তো রায় দিতে পার কেবল এই দুনিয়ার জীবন সন্বন্ধে।
إِنَّاۤ ءَامَنَّا بِرَبِّنَا لِیَغۡفِرَ لَنَا خَطَـٰیَـٰنَا وَمَاۤ أَكۡرَهۡتَنَا عَلَیۡهِ مِنَ ٱلسِّحۡرِۗ وَٱللَّهُ خَیۡرࣱ وَأَبۡقَىٰۤ ﴿73﴾
''নিঃসন্দেহ আমরা আমাদের প্রভুর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি, যাতে তিনি ক্ষমা করেন আমাদের অপরাধসমূহ আব যেসব জাদুর প্রতি তুমি আমাদের বাধ্য করেছিলে। আর আল্লাহ্ই সর্বশ্রেষ্ঠ ও চিরস্থায়ী।’’
إِنَّهُۥ مَن یَأۡتِ رَبَّهُۥ مُجۡرِمࣰا فَإِنَّ لَهُۥ جَهَنَّمَ لَا یَمُوتُ فِیهَا وَلَا یَحۡیَىٰ ﴿74﴾
নিঃসন্দেহ যে কেউ তার প্রভুর কাছে আসে অপরাধী হয়ে তার জন্য তবে তো রয়েছে জাহান্নাম। সে সেখানে মরবে না, আর সে বাঁচবেও না।
وَمَن یَأۡتِهِۦ مُؤۡمِنࣰا قَدۡ عَمِلَ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمُ ٱلدَّرَجَـٰتُ ٱلۡعُلَىٰ ﴿75﴾
আর যে কেউ তাঁর কাছে আসে বিশ্বাসী হয়ে সে সৎকাজও করেছে, তাহলে এরাই -- এদের জন্যেই রয়েছে অত্যুচ্চ মর্যাদা-
جَنَّـٰتُ عَدۡنࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ وَذَ ٰلِكَ جَزَاۤءُ مَن تَزَكَّىٰ ﴿76﴾
নন্দন কানন, তার নিচ দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। আর এটিই হচ্ছে পুরস্কার তার জন্য যে পবিত্র করেছে।
وَلَقَدۡ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰ مُوسَىٰۤ أَنۡ أَسۡرِ بِعِبَادِی فَٱضۡرِبۡ لَهُمۡ طَرِیقࣰا فِی ٱلۡبَحۡرِ یَبَسࣰا لَّا تَخَـٰفُ دَرَكࣰا وَلَا تَخۡشَىٰ ﴿77﴾
আর আমরা অবশ্যই মূসার প্রতি প্রত্যাদেশ দিয়েছিলাম এই বলে -- ''আমার বান্দাদের নিয়ে রাত্রিকালে চলে যাও, আর তাদের জন্য সাগরের মধ্য দিয়ে একটি শুকনো পথ ভেঙ্গে চল, ধরা পড়ার আশংকা করো না, আর ভয় করো না।’’
فَأَتۡبَعَهُمۡ فِرۡعَوۡنُ بِجُنُودِهِۦ فَغَشِیَهُم مِّنَ ٱلۡیَمِّ مَا غَشِیَهُمۡ ﴿78﴾
অতঃপব ফিরআউন তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে তাদের পশ্চাদ্বাবন করল, তখন সাগর থেকে তাদের ডুবিয়ে দিল যা তাদের ডুবিয়েছিল।
وَأَضَلَّ فِرۡعَوۡنُ قَوۡمَهُۥ وَمَا هَدَىٰ ﴿79﴾
আর ফিরআউন তার লোকজনকে পথভ্রান্ত করেছিল, আর সে সৎপথে চালায় নি।
یَـٰبَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ قَدۡ أَنجَیۡنَـٰكُم مِّنۡ عَدُوِّكُمۡ وَوَ ٰعَدۡنَـٰكُمۡ جَانِبَ ٱلطُّورِ ٱلۡأَیۡمَنَ وَنَزَّلۡنَا عَلَیۡكُمُ ٱلۡمَنَّ وَٱلسَّلۡوَىٰ ﴿80﴾
হে ইসরাইলের বংশধরগণ! আমরা নিশ্চয় তোমাদের উদ্ধার করেছিলাম তোমাদের শত্রুদের থেকে, আর আমরা তোমাদের সঙ্গে একটি ওয়াদা করেছিলাম পর্বতের ডান পার্শ্বে, আর তোমাদের নিকট আমরা পাঠিয়েছিলাম মান্না ও সালওয়া --
كُلُوا۟ مِن طَیِّبَـٰتِ مَا رَزَقۡنَـٰكُمۡ وَلَا تَطۡغَوۡا۟ فِیهِ فَیَحِلَّ عَلَیۡكُمۡ غَضَبِیۖ وَمَن یَحۡلِلۡ عَلَیۡهِ غَضَبِی فَقَدۡ هَوَىٰ ﴿81﴾
''আমরা তোমাদের যা রিযেক দান করেছি তা থেকে ভাল ভাল বস্তু খাওয়া-দাওয়া করো, আর এতে সীমা ছাড়িয়ে যেও না, পাছে আমার ক্রোধ তোমাদের উপরে অবধারিত হয়ে যায়, আর যার উপরে আমার ক্রোধ অবধারিত হয় সে তো তাহলে ধ্বংস হয়ে যায়।
وَإِنِّی لَغَفَّارࣱ لِّمَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحࣰا ثُمَّ ٱهۡتَدَىٰ ﴿82﴾
''আর নিঃসন্দেহ আমি তো পরম পরিত্রাণকারী তার জন্য যে ফেরে ও বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম কবে, তারপব সঠিক পথে চলে।’’
۞ وَمَاۤ أَعۡجَلَكَ عَن قَوۡمِكَ یَـٰمُوسَىٰ ﴿83﴾
''আর হে মূসা, কি তোমাকে তোমার লোকদের থেকে তাড়াতাড়ি নিয়ে এসেছে?’’
قَالَ هُمۡ أُو۟لَاۤءِ عَلَىٰۤ أَثَرِی وَعَجِلۡتُ إِلَیۡكَ رَبِّ لِتَرۡضَىٰ ﴿84﴾
তিনি বললেন -- ''ঐ তো তারা আমার অনুসরণে রয়েছে, আর হে প্রভু! আমি তাড়াতাড়ি তোমার কাছে এসেছি, যেন তুমি সন্তষ্ট হও।’’
قَالَ فَإِنَّا قَدۡ فَتَنَّا قَوۡمَكَ مِنۢ بَعۡدِكَ وَأَضَلَّهُمُ ٱلسَّامِرِیُّ ﴿85﴾
তিনি বললেন -- ''আমরা কিন্তু তোমার পরে তোমার লোকদের তো সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছি, কারণ সামিরী তাদের বিপথে নিয়েছে।’’
فَرَجَعَ مُوسَىٰۤ إِلَىٰ قَوۡمِهِۦ غَضۡبَـٰنَ أَسِفࣰاۚ قَالَ یَـٰقَوۡمِ أَلَمۡ یَعِدۡكُمۡ رَبُّكُمۡ وَعۡدًا حَسَنًاۚ أَفَطَالَ عَلَیۡكُمُ ٱلۡعَهۡدُ أَمۡ أَرَدتُّمۡ أَن یَحِلَّ عَلَیۡكُمۡ غَضَبࣱ مِّن رَّبِّكُمۡ فَأَخۡلَفۡتُم مَّوۡعِدِی ﴿86﴾
তখন মূসা তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে এলেন ত্রুদ্ধ ও ক্ষুদ্ধ হয়ে। তিনি বললেন -- ''হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের প্রভু কি তোমাদের সাথে ওয়াদা করেন নি এক উৎকৃষ্ট ওয়াদা? তবে কি প্রতিশ্রুত সময় তোমাদের জন্য দীর্ঘ মনে হয়েছিল, না তোমরা চেয়েছিলে যে তোমাদের প্রভুর শাস্তি তোমাদের উপরে অবধারিত হোক, যার জন্য তোমরা আমাকে দেওয়া ওয়াদার খেলাফ করেছ?’’
قَالُوا۟ مَاۤ أَخۡلَفۡنَا مَوۡعِدَكَ بِمَلۡكِنَا وَلَـٰكِنَّا حُمِّلۡنَاۤ أَوۡزَارࣰا مِّن زِینَةِ ٱلۡقَوۡمِ فَقَذَفۡنَـٰهَا فَكَذَ ٰلِكَ أَلۡقَى ٱلسَّامِرِیُّ ﴿87﴾
তারা বললে -- ''আমরা নিজেদের থেকে তোমাকে দেওয়া ওয়াদার খেলাফ করি নি, কিন্তু আমাদের উপরে লোকেদের অলংকারের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল আমরা সে-সব ফেলে দিই, আর এভাবেই সামিরী বাতলেছিল।’’
كَذَ ٰلِكَ نَقُصُّ عَلَیۡكَ مِنۡ أَنۢبَاۤءِ مَا قَدۡ سَبَقَۚ وَقَدۡ ءَاتَیۡنَـٰكَ مِن لَّدُنَّا ذِكۡرࣰا ﴿99﴾
এইভাবেই আমরা তোমার কাছে বিবৃত করি যা ইতিপূর্বে ঘটছে তার সংবাদ, আর আমরা নিশ্চয় তোমাকে দিয়েছি আমাদের কাছ থেকে এক স্মারক-গ্রন্থ।
مَّنۡ أَعۡرَضَ عَنۡهُ فَإِنَّهُۥ یَحۡمِلُ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ وِزۡرًا ﴿100﴾
যে কেউ এ থেকে বিমুখ হবে সে-ই তো তবে কিয়ামতের দিনে বহন করবে বোঝা,
خَـٰلِدِینَ فِیهِۖ وَسَاۤءَ لَهُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ حِمۡلࣰا ﴿101﴾
এর তলায় সে অবস্থান করে রইবে। আর কিয়ামতের দিনে তাদের জন্য এ বোঝা বড়ই মন্দ!
یَوۡمَ یُنفَخُ فِی ٱلصُّورِۚ وَنَحۡشُرُ ٱلۡمُجۡرِمِینَ یَوۡمَىِٕذࣲ زُرۡقࣰا ﴿102﴾
সেইদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, আর আমরা অপরাধীদের সেই দিনে সমবেত করব চোখ নীলাকার করে, --
یَتَخَـٰفَتُونَ بَیۡنَهُمۡ إِن لَّبِثۡتُمۡ إِلَّا عَشۡرࣰا ﴿103﴾
তারা তাদের নিজেদের মধ্যে চুপিচুপি বলাবলি করবে -- ''তোমরা তো অবস্থান করেছ মাত্র দশেক।’’
نَّحۡنُ أَعۡلَمُ بِمَا یَقُولُونَ إِذۡ یَقُولُ أَمۡثَلُهُمۡ طَرِیقَةً إِن لَّبِثۡتُمۡ إِلَّا یَوۡمࣰا ﴿104﴾
আমরা ভাল জানি কি তারা বলাবলি করে যখন তাদের মধ্যে চালচলনে দক্ষ ব্যক্তি বলবেন -- ''তোমরা তো একদিন মাত্র অবস্থান করেছিলে।’’
وَیَسۡـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡجِبَالِ فَقُلۡ یَنسِفُهَا رَبِّی نَسۡفࣰا ﴿105﴾
আর তারা তোমাকে পাহাড়গুলো সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে। কাজেই বলো -- ''আমার প্রভু তাদের ছড়িয়ে দেবেন ছিটিয়ে ছিটিয়ে।’’
فَیَذَرُهَا قَاعࣰا صَفۡصَفࣰا ﴿106﴾
তখন তকে পরিণত করবেন মসৃণ সমতল-ভূমিতে,
لَّا تَرَىٰ فِیهَا عِوَجࣰا وَلَاۤ أَمۡتࣰا ﴿107﴾
সেখানে তুমি দেখতে পাবে না কোনো আঁকানো-বাঁকানো আর না কোনো উঁচু-নিচু।
یَوۡمَىِٕذࣲ یَتَّبِعُونَ ٱلدَّاعِیَ لَا عِوَجَ لَهُۥۖ وَخَشَعَتِ ٱلۡأَصۡوَاتُ لِلرَّحۡمَـٰنِ فَلَا تَسۡمَعُ إِلَّا هَمۡسࣰا ﴿108﴾
সেইদিন তারা আহানকারীর অনুসরণ করবে, তাঁর মধ্যে কোনো আঁকানো-বাঁকানো নেই, আর গলার আওয়াজ হবে ক্ষীণ পরম করুণাময়ের সামনে, তারফলে তুমি মৃদু গুন ছাড়া আর কিছুই শুনবে না।
یَوۡمَىِٕذࣲ لَّا تَنفَعُ ٱلشَّفَـٰعَةُ إِلَّا مَنۡ أَذِنَ لَهُ ٱلرَّحۡمَـٰنُ وَرَضِیَ لَهُۥ قَوۡلࣰا ﴿109﴾
সেইদিন কোনো সুপারিশে কাজ হবে না তাঁর ব্যতীত যাঁকে পরম করুণাময় অনুমতি দিয়েছেন, আর যার কথায় তিনি সন্তষ্ট হবেন।
یَعۡلَمُ مَا بَیۡنَ أَیۡدِیهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡ وَلَا یُحِیطُونَ بِهِۦ عِلۡمࣰا ﴿110﴾
তিনি জানেন কি আছে তাদের সামনে আর কি রয়েছে তাদের পেছনে, আর তারা এটি জ্ঞানের দ্বারা ধারণা করতে পারে না।
۞ وَعَنَتِ ٱلۡوُجُوهُ لِلۡحَیِّ ٱلۡقَیُّومِۖ وَقَدۡ خَابَ مَنۡ حَمَلَ ظُلۡمࣰا ﴿111﴾
আর চেহারাগুলো বিনয়াবনত হবে তাঁর কাছে যিনি চিরীব, সদা-বিদ্যমান। আর সে তো নিশ্চয় ব্যর্থ হবে যে অন্যায়াচরণের বোঝা বহন করবে।
وَمَن یَعۡمَلۡ مِنَ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَهُوَ مُؤۡمِنࣱ فَلَا یَخَافُ ظُلۡمࣰا وَلَا هَضۡمࣰا ﴿112﴾
আর যে কেউ সৎকর্ম থেকে কাজ করে যায় আর সে মুমিন হয়, সে তবে আশঙ্কা করবে না কোনো অবিচারের, আর না কোনো ক্ষতি হবার।
وَكَذَ ٰلِكَ أَنزَلۡنَـٰهُ قُرۡءَانًا عَرَبِیࣰّا وَصَرَّفۡنَا فِیهِ مِنَ ٱلۡوَعِیدِ لَعَلَّهُمۡ یَتَّقُونَ أَوۡ یُحۡدِثُ لَهُمۡ ذِكۡرࣰا ﴿113﴾
আর এইভাবেই আমরা এটি অবতারণ করেছি -- একখানি আরবী কুরআন, আর তাতে বিশদভাবে বিবৃত করেছি সতর্কবাণী- গুলো থেকে যেন তারা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করে, অথবা এটি যেন গুণকীর্তনে তাদের উপদেশ দান করে।
فَأَخۡرَجَ لَهُمۡ عِجۡلࣰا جَسَدࣰا لَّهُۥ خُوَارࣱ فَقَالُوا۟ هَـٰذَاۤ إِلَـٰهُكُمۡ وَإِلَـٰهُ مُوسَىٰ فَنَسِیَ ﴿88﴾
তারপর সে তাদের জন্য এক গরুর বাছুর গঠন করল -- এক কায়া মাত্র, ফাঁকা আওয়াজ ছিল তার, আর তারা বলেছিল -- ''এটিই তোমাদের খোদা ও মূসারও খোদা, কিন্তু তিনি ভুলে গেছেন!’’
أَفَلَا یَرَوۡنَ أَلَّا یَرۡجِعُ إِلَیۡهِمۡ قَوۡلࣰا وَلَا یَمۡلِكُ لَهُمۡ ضَرࣰّا وَلَا نَفۡعࣰا ﴿89﴾
তারা কি তবে দেখে নি যে এটি তাদের প্রতি কথার জবাব দিত না, আর তার কোনো ক্ষমতা ছিল না তাদের ক্ষতি করবার, আর ছিল না উপকার করবাব?
وَلَقَدۡ قَالَ لَهُمۡ هَـٰرُونُ مِن قَبۡلُ یَـٰقَوۡمِ إِنَّمَا فُتِنتُم بِهِۦۖ وَإِنَّ رَبَّكُمُ ٱلرَّحۡمَـٰنُ فَٱتَّبِعُونِی وَأَطِیعُوۤا۟ أَمۡرِی ﴿90﴾
আর অবশ্য হারূন এর আগে তাদের বলেছিলেন -- ''হে আমার সম্প্রদায়! নিঃসন্দেহ তোমরা এর দ্বারা সংকটের মধ্যে পড়েছ, আর তোমাদের প্রভু তো পরম করুণাময়, সেজন্য আমার অনুসরণ করো এবং আমার নির্দেশ পালন করো।’’
قَالُوا۟ لَن نَّبۡرَحَ عَلَیۡهِ عَـٰكِفِینَ حَتَّىٰ یَرۡجِعَ إِلَیۡنَا مُوسَىٰ ﴿91﴾
তারা বললে -- ''আমরা কিছুতেই একে ঘিরে বসে থাকা ছেড়ে দেব না যে পর্যন্ত না মূসা আমাদের কাছে ফিরে আসেন।’’
قَالَ یَـٰهَـٰرُونُ مَا مَنَعَكَ إِذۡ رَأَیۡتَهُمۡ ضَلُّوۤا۟ ﴿92﴾
তিনি বললেন -- ''হে হারূন! কিসে তোমাকে নিষেধ করেছিল যখন তাদের দেখলে তারা বিপথে যাচ্ছে --
أَلَّا تَتَّبِعَنِۖ أَفَعَصَیۡتَ أَمۡرِی ﴿93﴾
''যে জন্যে তুমি আমার অনুসরণ করো না? তবে কি তুমি আমার আদেশ অমান্য করলে?’’
قَالَ یَبۡنَؤُمَّ لَا تَأۡخُذۡ بِلِحۡیَتِی وَلَا بِرَأۡسِیۤۖ إِنِّی خَشِیتُ أَن تَقُولَ فَرَّقۡتَ بَیۡنَ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ وَلَمۡ تَرۡقُبۡ قَوۡلِی ﴿94﴾
তিনি বললেন -- ''হে আমার সহোদর! আমার দাড়ি পাকড়ো না আর আমার মাথাও না, নিঃসন্দেহ আমি ভয় করেছিলাম পাছে তুমি বলো -- 'ইসরাইলের বংশধরদের মধ্যে তুমি বিভেদ ঘটিয়েছ এবং আমার কথার অপেক্ষা করো নি’।’’
قَالَ فَمَا خَطۡبُكَ یَـٰسَـٰمِرِیُّ ﴿95﴾
তিনি বললেন -- ''তবে তোমার কি বক্তব্য, হে সামিরী?’’
قَالَ بَصُرۡتُ بِمَا لَمۡ یَبۡصُرُوا۟ بِهِۦ فَقَبَضۡتُ قَبۡضَةࣰ مِّنۡ أَثَرِ ٱلرَّسُولِ فَنَبَذۡتُهَا وَكَذَ ٰلِكَ سَوَّلَتۡ لِی نَفۡسِی ﴿96﴾
সে বললে -- ''আমি দেখেছিলাম যা তারা দেখতে পায় নি, তাই আমি রসূলের পদচিহ্ন থেকে মুষ্টি-পরিমাণ মুঠোয় ধরেছিলাম, কিন্তু আমি তা বিসর্জন দিয়েছিলাম, আর আমার মন আমার জন্য এইভাবে করাটাই উপযুক্ত ঠাওরেছিল।’’
قَالَ فَٱذۡهَبۡ فَإِنَّ لَكَ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ أَن تَقُولَ لَا مِسَاسَۖ وَإِنَّ لَكَ مَوۡعِدࣰا لَّن تُخۡلَفَهُۥۖ وَٱنظُرۡ إِلَىٰۤ إِلَـٰهِكَ ٱلَّذِی ظَلۡتَ عَلَیۡهِ عَاكِفࣰاۖ لَّنُحَرِّقَنَّهُۥ ثُمَّ لَنَنسِفَنَّهُۥ فِی ٱلۡیَمِّ نَسۡفًا ﴿97﴾
তিনি বললেন, ''তবে দূর হও, নিঃসন্দেহ তোমার জীবদ্দশায় তবে এটিই রইল যে তুমি বলবে, 'ছুয়াঁছুঁয়ি নেই।’ আর নিঃসন্দেহ তোমার জন্য রয়েছে একটি ওয়াদা -- তোমাদের জন্য কখনো তার খেলাফ হবে না। আর তোমার উপাস্যের দিকে তাকাও যাকে ঘিরে বসে থেকে তুমি পূজো করতে। আমরা অবশ্যই এটি পুড়ে ফেলব, তারপর নিশ্চয়ই এটিকে ছিটিয়ে দেব সাগরে ছুঁড়ে ছুঁড়ে।’’
إِنَّمَاۤ إِلَـٰهُكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِی لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۚ وَسِعَ كُلَّ شَیۡءٍ عِلۡمࣰا ﴿98﴾
তোমাদের উপাস্য তো কেবল আল্লাহ্, তিনিই তো, তিনি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই। তিনি সবকিছু বেষ্টন করে আছেন জ্ঞানের দ্বারা।
فَتَعَـٰلَى ٱللَّهُ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡحَقُّۗ وَلَا تَعۡجَلۡ بِٱلۡقُرۡءَانِ مِن قَبۡلِ أَن یُقۡضَىٰۤ إِلَیۡكَ وَحۡیُهُۥۖ وَقُل رَّبِّ زِدۡنِی عِلۡمࣰا ﴿114﴾
কাজেই আল্লাহ্ অতি মহান, রাজাধিরাজ, চিরন্তন সত্য, আর কুরআন নিয়ে তুমি তাড়াতাড়ি করো না তোমার কাছে এর প্রত্যাদেশ সম্পূর্ণ হওয়ার আগে, বরং বলো -- ''আমার প্রভু! আমাকে জ্ঞান-বিজ্ঞান তুমি বাড়িয়ে দাও’’।
وَلَقَدۡ عَهِدۡنَاۤ إِلَىٰۤ ءَادَمَ مِن قَبۡلُ فَنَسِیَ وَلَمۡ نَجِدۡ لَهُۥ عَزۡمࣰا ﴿115﴾
আর আমরা অবশ্যই ইতিপূর্বে আদমের প্রতি অঙ্গীকার আরোপ করেছিলাম, কিন্তু সে ভুলে গিয়েছিল, আর আমরা তার মধ্যে কোনো উদ্দেশ্য পাই নি।
وَإِذۡ قُلۡنَا لِلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ ٱسۡجُدُوا۟ لِـَٔادَمَ فَسَجَدُوۤا۟ إِلَّاۤ إِبۡلِیسَ أَبَىٰ ﴿116﴾
আর আমরা যখন ফিরিশ্তাদের বললাম -- ''আদমকে সিজদা করো’’, তখন তারা সিজদা করল, কিন্তু ইবলিস করল না, সে অমান্য করল।
فَقُلۡنَا یَـٰۤـَٔادَمُ إِنَّ هَـٰذَا عَدُوࣱّ لَّكَ وَلِزَوۡجِكَ فَلَا یُخۡرِجَنَّكُمَا مِنَ ٱلۡجَنَّةِ فَتَشۡقَىٰۤ ﴿117﴾
সুতরাং আমরা বললাম -- ''হে আদম! নিঃসন্দেহ এ তোমার প্রতি ও তোমার সঙ্গিনীর প্রতি একজন শত্রু, সে যেন বাগান থেকে তোমাদের বের করে না দেয়, তেমন হলে তুমি দুঃখকষ্ট ভোগ করবে।
إِنَّ لَكَ أَلَّا تَجُوعَ فِیهَا وَلَا تَعۡرَىٰ ﴿118﴾
''নিঃসন্দেহ তোমার জন্য এটি যে তুমি সেখানে ক্ষুধা বোধ করবে না, আর তুমি নগ্নও হবে না।
وَأَنَّكَ لَا تَظۡمَؤُا۟ فِیهَا وَلَا تَضۡحَىٰ ﴿119﴾
''আর তুমি নিশ্চয়ই সেখানে পিপাসার্ত হবে না অথবা রোদেও পুড়বে না।’’
فَوَسۡوَسَ إِلَیۡهِ ٱلشَّیۡطَـٰنُ قَالَ یَـٰۤـَٔادَمُ هَلۡ أَدُلُّكَ عَلَىٰ شَجَرَةِ ٱلۡخُلۡدِ وَمُلۡكࣲ لَّا یَبۡلَىٰ ﴿120﴾
অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিল, সে বললে -- ''হে আদম! আমি কি তোমাকে চালিয়ে নিয়ে যাব অনন্ত-জীবনদায়ক গাছের দিকে ও এক রাজত্বের দিকে যার ক্ষয় নেই?’’
فَأَكَلَا مِنۡهَا فَبَدَتۡ لَهُمَا سَوۡءَ ٰ تُهُمَا وَطَفِقَا یَخۡصِفَانِ عَلَیۡهِمَا مِن وَرَقِ ٱلۡجَنَّةِۚ وَعَصَىٰۤ ءَادَمُ رَبَّهُۥ فَغَوَىٰ ﴿121﴾
কাজেই এ থেকে তারা খেল, সুতরাং তাদের লজ্জাস্থানগুলো তাদের কাছে প্রকাশ পেলো, তখন তারা নিজেদের ঢাকতে আরম্ভ করল সেই বাগানের পাতা দিয়ে। আর আদম তার প্রভুর অবাধ্য হয়েছিল, সেজন্য সে ভ্রান্তপথ ধরল।
ثُمَّ ٱجۡتَبَـٰهُ رَبُّهُۥ فَتَابَ عَلَیۡهِ وَهَدَىٰ ﴿122﴾
এরপর তার প্রভু তাকে নির্বাচিত করলেন আর তার প্রতি ফিরলেন এবং তাকে পথনির্দেশ দিলেন।
قَالَ ٱهۡبِطَا مِنۡهَا جَمِیعَۢاۖ بَعۡضُكُمۡ لِبَعۡضٍ عَدُوࣱّۖ فَإِمَّا یَأۡتِیَنَّكُم مِّنِّی هُدࣰى فَمَنِ ٱتَّبَعَ هُدَایَ فَلَا یَضِلُّ وَلَا یَشۡقَىٰ ﴿123﴾
তিনি বললেন -- ''তোমরা উভয়ে এখান থেকে চলে যাও -- সব ক’জন মিলে, তোমাদের কেউ কেউ অপরদের শত্রু। পরে তোমাদের কাছে আমার পক্ষ থেকে অবশ্যই পথনির্দেশ আসবে, তখন যে আমার পথনির্দেশ অনুসরণ করবে সে তবে বিপথে যাবে না ও দুঃখ-কষ্ট ভোগবে না।
وَمَنۡ أَعۡرَضَ عَن ذِكۡرِی فَإِنَّ لَهُۥ مَعِیشَةࣰ ضَنكࣰا وَنَحۡشُرُهُۥ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ أَعۡمَىٰ ﴿124﴾
''আর যেইজন আমার স্মরণ থেকে ফিরে যাবে তার জন্যে তবে নিশ্চয়ই রয়েছে সংকুচিত জীবিকানির্বাহের উপায়, আর কিয়ামতের দিনে আমরা তাকে তুলব অন্ধ অবস্থায়।’’
قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرۡتَنِیۤ أَعۡمَىٰ وَقَدۡ كُنتُ بَصِیرࣰا ﴿125﴾
সে বলবে -- ''আমার প্রভু! কেন তুমি আমাকে অন্ধ করে তুলেছ, অথচ আমি তো ছিলাম চক্ষুষ্মান?’’
قَالَ كَذَ ٰلِكَ أَتَتۡكَ ءَایَـٰتُنَا فَنَسِیتَهَاۖ وَكَذَ ٰلِكَ ٱلۡیَوۡمَ تُنسَىٰ ﴿126﴾
তিনি বলবেন -- ''এইভাবেই আমাদের নির্দেশাবলী তোমার কাছে এসেছিল, কিন্তু তুমি তা অবহেলা করেছিলে, সুতরাং সেইভাবেই আজকের দিনে তুমি অবহেলিত হলে।’’
وَكَذَ ٰلِكَ نَجۡزِی مَنۡ أَسۡرَفَ وَلَمۡ یُؤۡمِنۢ بِـَٔایَـٰتِ رَبِّهِۦۚ وَلَعَذَابُ ٱلۡـَٔاخِرَةِ أَشَدُّ وَأَبۡقَىٰۤ ﴿127﴾
আর এইভাবেই আমরা প্রতিদান দিই তাকে যে বাড়াবাড়ি করে ও তার প্রভুর নির্দেশাবলীতে বিশ্বাস স্থাপন করে না। আর পরকালের শাস্তি তো বড় কঠোর আর আরো স্থায়ী।
أَفَلَمۡ یَهۡدِ لَهُمۡ كَمۡ أَهۡلَكۡنَا قَبۡلَهُم مِّنَ ٱلۡقُرُونِ یَمۡشُونَ فِی مَسَـٰكِنِهِمۡۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَـٰتࣲ لِّأُو۟لِی ٱلنُّهَىٰ ﴿128﴾
এটি কি তাদের সৎপথ দেখায় না যে তাদের পূর্বে আমরা ধ্বংস করেছি কত জনপদকে যাদের বাসভূমিতে এরা বিচরণ করছে? নিঃসন্দেহ এতে তো নিদর্শন রয়েছে বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্নদের জন্য।
وَلَوۡلَا كَلِمَةࣱ سَبَقَتۡ مِن رَّبِّكَ لَكَانَ لِزَامࣰا وَأَجَلࣱ مُّسَمࣰّى ﴿129﴾
আর যদি ঘোষণাটি তোমার প্রভুর তরফ থেকে আগেই সাব্যস্ত না হতো তবে এটি অবশ্যাবী হতো, কিন্তু একটি নির্ধারিত কাল রয়েছে।
فَٱصۡبِرۡ عَلَىٰ مَا یَقُولُونَ وَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّكَ قَبۡلَ طُلُوعِ ٱلشَّمۡسِ وَقَبۡلَ غُرُوبِهَاۖ وَمِنۡ ءَانَاۤىِٕ ٱلَّیۡلِ فَسَبِّحۡ وَأَطۡرَافَ ٱلنَّهَارِ لَعَلَّكَ تَرۡضَىٰ ﴿130﴾
সেজন্য অধ্যবসায় অবলন্বন করো তারা যা বলে তাতে, আর তোমার প্রভুর প্রশংসার দ্বারা মহিমা জপে থাকো সূর্য উদয়ের আগে ও তার অস্ত যাবার আগে, আর রাত্রির কিছু সময়েও তবে জপতপ করো, আর দিনের বেলায়, যাতে তুমি সন্তষ্টি লাভ করতে পারো।
وَلَا تَمُدَّنَّ عَیۡنَیۡكَ إِلَىٰ مَا مَتَّعۡنَا بِهِۦۤ أَزۡوَ ٰجࣰا مِّنۡهُمۡ زَهۡرَةَ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا لِنَفۡتِنَهُمۡ فِیهِۚ وَرِزۡقُ رَبِّكَ خَیۡرࣱ وَأَبۡقَىٰ ﴿131﴾
আর তোমার চোখ টাটিয়ো না তার প্রতি যা দিয়ে তাদের মধ্যেকার কোনো কোনো দম্পতিকে আমরা আপ্যায়িত করেছি -- দুনিয়ার জীবনের আড়ন্বর, যেন তার দ্বারা আমরা তাদের পরীক্ষা করতে পারি। আর তোমার প্রভুপ্রদত্ত রিযেক অধিকতর ভালো ও বেশী স্থায়ী।
وَأۡمُرۡ أَهۡلَكَ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱصۡطَبِرۡ عَلَیۡهَاۖ لَا نَسۡـَٔلُكَ رِزۡقࣰاۖ نَّحۡنُ نَرۡزُقُكَۗ وَٱلۡعَـٰقِبَةُ لِلتَّقۡوَىٰ ﴿132﴾
আর তোমার পরিবারবর্গকে নামাযের নির্দেশ দাও আর তাতে লেগে থাকো। আমরা তোমার কাছ থেকে কোনো রিযেক চাই না, আমরাই তোমাকে রিযেক দান করি। আর শুভ পরিণাম তো ধর্মপরায়ণতার জন্য।
وَقَالُوا۟ لَوۡلَا یَأۡتِینَا بِـَٔایَةࣲ مِّن رَّبِّهِۦۤۚ أَوَلَمۡ تَأۡتِهِم بَیِّنَةُ مَا فِی ٱلصُّحُفِ ٱلۡأُولَىٰ ﴿133﴾
আর তারা বলে -- ''কেন সে তার প্রভুর কাছ থেকে আমাদের জন্য একটি নিদর্শন নিয়ে আসে না?’’ কী! তাদের কাছে কি পূর্ববর্তী গ্রন্থগুলোয় যা আছে সে সন্বন্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসে নি?
وَلَوۡ أَنَّاۤ أَهۡلَكۡنَـٰهُم بِعَذَابࣲ مِّن قَبۡلِهِۦ لَقَالُوا۟ رَبَّنَا لَوۡلَاۤ أَرۡسَلۡتَ إِلَیۡنَا رَسُولࣰا فَنَتَّبِعَ ءَایَـٰتِكَ مِن قَبۡلِ أَن نَّذِلَّ وَنَخۡزَىٰ ﴿134﴾
আর আমরা যদি এর আগে তাদের ধ্বংস করতাম শাস্তি দিয়ে তবে তারা বলতে পারত -- ''আমাদের প্রভু! তুমি কেন আমাদের কাছে একজন রসূল পাঠাও নি, তাহলে তো আমরা তোমার নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে পারতাম আমাদের লাঞ্ছনা ভোগ করবার ও আমাদের অপমান অনুভবের আগেভাগেই?’’
قُلۡ كُلࣱّ مُّتَرَبِّصࣱ فَتَرَبَّصُوا۟ۖ فَسَتَعۡلَمُونَ مَنۡ أَصۡحَـٰبُ ٱلصِّرَ ٰطِ ٱلسَّوِیِّ وَمَنِ ٱهۡتَدَىٰ ﴿135﴾
তুমি বলো -- '' প্রত্যেকেই প্রতীক্ষা করছে, সুতরাং তোমরাও প্রতীক্ষা কর, তাহলে অচিরেই তোমরা জানতে পারবে কারা সঠিক পথের লোক এবং কারা সৎপথে চলেছে।’’