Settings
Surah The Story [Al-Qasas] in Bengali
طسۤمۤ ﴿1﴾
ত্বা, সীন, মীম।
تِلۡكَ ءَایَـٰتُ ٱلۡكِتَـٰبِ ٱلۡمُبِینِ ﴿2﴾
এসব হচ্ছে সুস্পষ্ট গ্রন্থের বাণীসমূহ।
نَتۡلُوا۟ عَلَیۡكَ مِن نَّبَإِ مُوسَىٰ وَفِرۡعَوۡنَ بِٱلۡحَقِّ لِقَوۡمࣲ یُؤۡمِنُونَ ﴿3﴾
আমরা তোমার কাছে মূসা ও ফিরআউনের কাহিনী থেকে যথাযথভাবে বিবৃত করছি সেই লোকদের জন্য যারা বিশ্বাস করে।
إِنَّ فِرۡعَوۡنَ عَلَا فِی ٱلۡأَرۡضِ وَجَعَلَ أَهۡلَهَا شِیَعࣰا یَسۡتَضۡعِفُ طَاۤىِٕفَةࣰ مِّنۡهُمۡ یُذَبِّحُ أَبۡنَاۤءَهُمۡ وَیَسۡتَحۡیِۦ نِسَاۤءَهُمۡۚ إِنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلۡمُفۡسِدِینَ ﴿4﴾
নিঃসন্দেহ ফিরআউন দেশে খুব উদ্ধত হয়েছিল, আর এর বাসিন্দাদের সে দলবিভক্ত করেছিল, সে তাদের একদলকে দুর্বল বানিয়েছিল, -- সে তাদের বেটাছেলেদের হত্যা করত ও বাঁচতে দিত তাদের মেয়েছেলেদের। নিঃসন্দেহ সে ছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অন্যতম।
وَنُرِیدُ أَن نَّمُنَّ عَلَى ٱلَّذِینَ ٱسۡتُضۡعِفُوا۟ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَنَجۡعَلَهُمۡ أَىِٕمَّةࣰ وَنَجۡعَلَهُمُ ٱلۡوَ ٰرِثِینَ ﴿5﴾
আর আমরা চেয়েছিলাম যাদের পৃথিবীতে দুর্বল বানানো হয়েছিল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে। আর তাদের নেতা করতে আর তাদের উত্তরাধিকারী করতে,
وَنُمَكِّنَ لَهُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَنُرِیَ فِرۡعَوۡنَ وَهَـٰمَـٰنَ وَجُنُودَهُمَا مِنۡهُم مَّا كَانُوا۟ یَحۡذَرُونَ ﴿6﴾
আর দেশে তাদের প্রতিষ্ঠা করতে, আর ফিরআউন ও হামান ও তাদের সেনাবাহিনীকে আমরা তা দেখাতে যা তারা তাদের থেকে আশংকা করত।
وَأَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰۤ أُمِّ مُوسَىٰۤ أَنۡ أَرۡضِعِیهِۖ فَإِذَا خِفۡتِ عَلَیۡهِ فَأَلۡقِیهِ فِی ٱلۡیَمِّ وَلَا تَخَافِی وَلَا تَحۡزَنِیۤۖ إِنَّا رَاۤدُّوهُ إِلَیۡكِ وَجَاعِلُوهُ مِنَ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿7﴾
আর আমরা মূসার মাতার কাছে অনুপ্রেরণা দিলাম এই বলে -- ''এটিকে স্তন্যদান করো, তারপর যখন তার সন্বন্ধে আশংকা কর তখন তাকে পানিতে ফেলে দাও, আর ভয় করো না ও দুঃখও করো না। নিঃসন্দেহ আমরা তাকে ফিরিয়ে দেব তোমার কাছে, আর তাকে বানিয়ে তুলব রসূলগণের একজন ক’রে।’’
فَٱلۡتَقَطَهُۥۤ ءَالُ فِرۡعَوۡنَ لِیَكُونَ لَهُمۡ عَدُوࣰّا وَحَزَنًاۗ إِنَّ فِرۡعَوۡنَ وَهَـٰمَـٰنَ وَجُنُودَهُمَا كَانُوا۟ خَـٰطِـِٔینَ ﴿8﴾
''তারপর তাঁকে তোলে নিল ফিরআউনের পরিজনবর্গ যেন তিনি তাদের জন্য হতে পারেন একজন শত্রু ও দুঃখ। নিঃসন্দেহ ফিরআউন ও হামান ও তাদের সৈন্যসামন্ত ছিল দোষী।
وَقَالَتِ ٱمۡرَأَتُ فِرۡعَوۡنَ قُرَّتُ عَیۡنࣲ لِّی وَلَكَۖ لَا تَقۡتُلُوهُ عَسَىٰۤ أَن یَنفَعَنَاۤ أَوۡ نَتَّخِذَهُۥ وَلَدࣰا وَهُمۡ لَا یَشۡعُرُونَ ﴿9﴾
''আর ফিরআউনের স্ত্রী বলল -- ''এ আমার জন্য ও তোমার জন্য এক চোখ-জোড়ানো আনন্দ! একে কাতল করো না, হতে পারে সে আমাদের উপকারে আসবে, অথবা তাকে আমরা পুত্ররূপে গ্রহণ করব।’’ আর তারা বুঝতে পারল না।’’
وَأَصۡبَحَ فُؤَادُ أُمِّ مُوسَىٰ فَـٰرِغًاۖ إِن كَادَتۡ لَتُبۡدِی بِهِۦ لَوۡلَاۤ أَن رَّبَطۡنَا عَلَىٰ قَلۡبِهَا لِتَكُونَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿10﴾
আর পরক্ষণেই মূসার মায়ের হৃদয় মুক্ত হ’ল। সে হয়ত এটি প্রকাশ করেই ফেলত যদি না আমরা তার হৃদয়ে বল দিতাম, যেন সে মুমিনদের মধ্যেকার হয়।
وَقَالَتۡ لِأُخۡتِهِۦ قُصِّیهِۖ فَبَصُرَتۡ بِهِۦ عَن جُنُبࣲ وَهُمۡ لَا یَشۡعُرُونَ ﴿11﴾
আর সে তাঁর বোনকে বলল -- ''এর পেছনে পেছনে যাও।’’ কাজেই সে তাঁর প্রতি লক্ষ্য রেখেছিল দূর থেকে, আর তারা বুঝতে পারে নি।
۞ وَحَرَّمۡنَا عَلَیۡهِ ٱلۡمَرَاضِعَ مِن قَبۡلُ فَقَالَتۡ هَلۡ أَدُلُّكُمۡ عَلَىٰۤ أَهۡلِ بَیۡتࣲ یَكۡفُلُونَهُۥ لَكُمۡ وَهُمۡ لَهُۥ نَـٰصِحُونَ ﴿12﴾
আর আমরা আগে থেকেই স্তন্যপান তাঁর জন্য নিষিদ্ধ করেছিলাম। তখন সে বললে, ''আমি কি আপনাদের এমন কোনো ঘরের লোকের বিষয়ে বলে দেব যারা আপনাদের জন্য তাকে লালন-পালন করতেও পারে, আর তারা এর শুভাকাঙ্খী হবে?’’
فَرَدَدۡنَـٰهُ إِلَىٰۤ أُمِّهِۦ كَیۡ تَقَرَّ عَیۡنُهَا وَلَا تَحۡزَنَ وَلِتَعۡلَمَ أَنَّ وَعۡدَ ٱللَّهِ حَقࣱّ وَلَـٰكِنَّ أَكۡثَرَهُمۡ لَا یَعۡلَمُونَ ﴿13﴾
তখন আমরা তাঁকে ফিরিয়ে দিলাম তাঁর মায়ের কাছে, যেন তার চোখ জুড়িয়ে যায় আর যেন সে দুঃখ না করে, আর যেন সে জানতে পারে যে আল্লাহ্র ওয়াদা ধ্রুবসত্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।
وَلَمَّا بَلَغَ أَشُدَّهُۥ وَٱسۡتَوَىٰۤ ءَاتَیۡنَـٰهُ حُكۡمࣰا وَعِلۡمࣰاۚ وَكَذَ ٰلِكَ نَجۡزِی ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿14﴾
আর যখন তিনি তাঁর যৌবনে পৌঁছলেন ও পূর্ণবয়স্ক হলেন, আমরা তখন তাঁকে জ্ঞান ও বিদ্যা দান করলাম। আর এইভাবেই আমরা সৎকর্মীদের প্রতিদান দিই।
وَدَخَلَ ٱلۡمَدِینَةَ عَلَىٰ حِینِ غَفۡلَةࣲ مِّنۡ أَهۡلِهَا فَوَجَدَ فِیهَا رَجُلَیۡنِ یَقۡتَتِلَانِ هَـٰذَا مِن شِیعَتِهِۦ وَهَـٰذَا مِنۡ عَدُوِّهِۦۖ فَٱسۡتَغَـٰثَهُ ٱلَّذِی مِن شِیعَتِهِۦ عَلَى ٱلَّذِی مِنۡ عَدُوِّهِۦ فَوَكَزَهُۥ مُوسَىٰ فَقَضَىٰ عَلَیۡهِۖ قَالَ هَـٰذَا مِنۡ عَمَلِ ٱلشَّیۡطَـٰنِۖ إِنَّهُۥ عَدُوࣱّ مُّضِلࣱّ مُّبِینࣱ ﴿15﴾
আর তিনি শহরে প্রবেশ করলেন যে সময়ে এর অধিবাসীরা অসতর্ক ছিল, তখন তিনি সেখানে দেখতে পেলেন দুজন লোক মারামারি করছে, -- একজন তাঁর দলের আর একজন তাঁর শত্রুপক্ষের, তখন যে ব্যক্তি তাঁর দলীয় সে তাঁর সাহায্যের জন্য চীৎকার করল তার বিরুদ্ধে যে তাঁর শত্রুপক্ষীয়, সুতরাং মূসা তাকে ঘুষি মারলেন, তখন তিনি তাকে খতম করে ফেললেন। তিনি বললেন -- ''এইটি শয়তানের কাজের ফলে। নিঃসন্দেহ সে এক শত্রু -- প্রকাশ্যভাবে বিভ্রান্তকারী।’’
قَالَ رَبِّ إِنِّی ظَلَمۡتُ نَفۡسِی فَٱغۡفِرۡ لِی فَغَفَرَ لَهُۥۤۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِیمُ ﴿16﴾
তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমি নিঃসন্দেহ আমার নিজের প্রতি অত্যাচার করে ফেলেছি, সেজন্য আমাকে পরিত্রাণ করো।’’ সুতরাং তিনি তাঁকে পরিত্রাণ করলেন। নিঃসন্দেহ তিনি -- তিনিই পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
قَالَ رَبِّ بِمَاۤ أَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ فَلَنۡ أَكُونَ ظَهِیرࣰا لِّلۡمُجۡرِمِینَ ﴿17﴾
তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! যেহেতু তুমি আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছ, তাই আমি কখনো অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষক হবো না।’’
فَأَصۡبَحَ فِی ٱلۡمَدِینَةِ خَاۤىِٕفࣰا یَتَرَقَّبُ فَإِذَا ٱلَّذِی ٱسۡتَنصَرَهُۥ بِٱلۡأَمۡسِ یَسۡتَصۡرِخُهُۥۚ قَالَ لَهُۥ مُوسَىٰۤ إِنَّكَ لَغَوِیࣱّ مُّبِینࣱ ﴿18﴾
তারপর তিনি সকালবেলায় ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় শহরটিতে বেরুলেন সতর্ক দৃষ্টি ফেলে, তখন হঠাৎ যে আগের দিনে তাঁর সাহায্য চেয়েছিল সে তাঁর প্রতি চীৎকার করল। মূসা তাকে বললেন -- ''তুমি তো স্পষ্টই একজন ঝগড়াটে।’’
فَلَمَّاۤ أَنۡ أَرَادَ أَن یَبۡطِشَ بِٱلَّذِی هُوَ عَدُوࣱّ لَّهُمَا قَالَ یَـٰمُوسَىٰۤ أَتُرِیدُ أَن تَقۡتُلَنِی كَمَا قَتَلۡتَ نَفۡسَۢا بِٱلۡأَمۡسِۖ إِن تُرِیدُ إِلَّاۤ أَن تَكُونَ جَبَّارࣰا فِی ٱلۡأَرۡضِ وَمَا تُرِیدُ أَن تَكُونَ مِنَ ٱلۡمُصۡلِحِینَ ﴿19﴾
তারপর যখন তিনি পাকড়াতে চাইলেন তাকে যে তাঁদের উভয়েরই শত্রু তখন সে বললে -- ''হে মূসা! তুমি কি আমাকে মেরে ফেলতে চাও যেমন তুমি একজনকে গতকাল মেরে ফেলেছ, তুমি তো চাইছ কেবল দেশে জবরদস্ত বনতে, আর তুমি চাও না শান্তিস্থাপনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে।’’
وَجَاۤءَ رَجُلࣱ مِّنۡ أَقۡصَا ٱلۡمَدِینَةِ یَسۡعَىٰ قَالَ یَـٰمُوسَىٰۤ إِنَّ ٱلۡمَلَأَ یَأۡتَمِرُونَ بِكَ لِیَقۡتُلُوكَ فَٱخۡرُجۡ إِنِّی لَكَ مِنَ ٱلنَّـٰصِحِینَ ﴿20﴾
আর একজন লোক শহরের দূরপ্রান্ত থেকে ছুটতে ছুটতে এল। সে বললে -- ''হে মূসা! নিঃসন্দেহ প্রধানরা তোমার সন্বন্ধে পরামর্শ করছে তোমাকে হত্যা করতে, কাজেই বেরিয়ে যাও, নিঃসন্দেহ আমি তোমার জন্য মঙ্গলাকাঙ্খীদের একজন ।’’
فَخَرَجَ مِنۡهَا خَاۤىِٕفࣰا یَتَرَقَّبُۖ قَالَ رَبِّ نَجِّنِی مِنَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿21﴾
সুতরাং তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে গেলেন ভীতসন্ত্রস্তভাবে সতর্ক দৃষ্টি মেলে। তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমাকে অত্যাচারীগোষ্ঠী থেকে উদ্ধার করো।’’
وَلَمَّا تَوَجَّهَ تِلۡقَاۤءَ مَدۡیَنَ قَالَ عَسَىٰ رَبِّیۤ أَن یَهۡدِیَنِی سَوَاۤءَ ٱلسَّبِیلِ ﴿22﴾
আর তিনি যখন মাদয়ান অভিমুখে যাত্রা করলেন তখন বললেন -- ''হতে পারে আমার প্রভু আমাকে ঠিক পথে চালিয়ে নেবেন।’’
وَلَمَّا وَرَدَ مَاۤءَ مَدۡیَنَ وَجَدَ عَلَیۡهِ أُمَّةࣰ مِّنَ ٱلنَّاسِ یَسۡقُونَ وَوَجَدَ مِن دُونِهِمُ ٱمۡرَأَتَیۡنِ تَذُودَانِۖ قَالَ مَا خَطۡبُكُمَاۖ قَالَتَا لَا نَسۡقِی حَتَّىٰ یُصۡدِرَ ٱلرِّعَاۤءُۖ وَأَبُونَا شَیۡخࣱ كَبِیرࣱ ﴿23﴾
আর যখন তিনি মাদয়ানের জলাশয়ের কাছে এলেন তখন তিনি তাতে দেখলেন একদল লোক পানি খাওয়াচ্ছে, আর তাদের পাশে তিনি দেখতে পেলেন দুজন মহিলা আগলে রেখেছে। তিনি বললেন -- ''তোমাদের দুজনের কি ব্যাপার?’’ তারা বললে -- ''আমরা পানি খাওয়াতে পারছি না যে পর্যন্ত না রাখালরা সরিয়ে নিয়ে যায়, আর আমাদের আব্বা খুব বুড়ো মানুষ।’’
فَسَقَىٰ لَهُمَا ثُمَّ تَوَلَّىٰۤ إِلَى ٱلظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ إِنِّی لِمَاۤ أَنزَلۡتَ إِلَیَّ مِنۡ خَیۡرࣲ فَقِیرࣱ ﴿24﴾
সুতরাং তিনি তাদের দুজনের জন্য পানি খাওয়ালেন, তারপর ছায়ার দিকে ফিরে গেলেন আর বললেন -- ''আমার প্রভু! তুমি আমার প্রতি যে কোনো অনুগ্রহ পাঠাবে আমি তারই জন্যে ভিখারী হয়ে আছি।’’
فَجَاۤءَتۡهُ إِحۡدَىٰهُمَا تَمۡشِی عَلَى ٱسۡتِحۡیَاۤءࣲ قَالَتۡ إِنَّ أَبِی یَدۡعُوكَ لِیَجۡزِیَكَ أَجۡرَ مَا سَقَیۡتَ لَنَاۚ فَلَمَّا جَاۤءَهُۥ وَقَصَّ عَلَیۡهِ ٱلۡقَصَصَ قَالَ لَا تَخَفۡۖ نَجَوۡتَ مِنَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿25﴾
তারপরে সেই দুইজন মহিলার একজন তাঁর নিকটে লাজুকভাবে হেঁটে এল। সে বললে -- ''আমার আব্বা আপনাকে আমন্ত্রণ করেছেন আপনি যে আমাদের জন্য পানি খাইয়েছেন সেজন্য আপনাকে পারিশ্রমিক প্রদান করতে।’’ তারপর যখন তিনি তার কাছে এলেন এবং তার কাছে বৃত্তান্ত বর্ণনা করলেন তখন সে বলল -- ''ভয় করো না, তুমি অত্যাচারী লোকদের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছ।’’
قَالَتۡ إِحۡدَىٰهُمَا یَـٰۤأَبَتِ ٱسۡتَـٔۡجِرۡهُۖ إِنَّ خَیۡرَ مَنِ ٱسۡتَـٔۡجَرۡتَ ٱلۡقَوِیُّ ٱلۡأَمِینُ ﴿26﴾
মেয়ে দুজনের একজন বলল -- ''হে আমার আব্বা! তুমি একে কর্মচারী ক’রে নাও, তুমি যাদের নিযুক্ত করতে পার তাদের মধ্যে সে-ই সব চাইতে ভাল যে বলবান, বিশ্বস্ত।’’
قَالَ إِنِّیۤ أُرِیدُ أَنۡ أُنكِحَكَ إِحۡدَى ٱبۡنَتَیَّ هَـٰتَیۡنِ عَلَىٰۤ أَن تَأۡجُرَنِی ثَمَـٰنِیَ حِجَجࣲۖ فَإِنۡ أَتۡمَمۡتَ عَشۡرࣰا فَمِنۡ عِندِكَۖ وَمَاۤ أُرِیدُ أَنۡ أَشُقَّ عَلَیۡكَۚ سَتَجِدُنِیۤ إِن شَاۤءَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿27﴾
সে বলল -- ''আমি তো চাইছি আমার এই দুই মেয়ের একটিকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে এই শর্তে যে তুমি আমার জন্য চাকরি করবে আট হজ, আর যদি তুমি দশ পূর্ণ কর তাহলে সে তোমার ইচ্ছা, আর আমি চাই না যে আমি তোমার উপরে কঠোর হব। তুমি শীঘ্রই, ইন-শা-আল্লাহ্, আমাকে দেখতে পাবে ন্যায়পরায়ণদের একজন।’’
قَالَ ذَ ٰلِكَ بَیۡنِی وَبَیۡنَكَۖ أَیَّمَا ٱلۡأَجَلَیۡنِ قَضَیۡتُ فَلَا عُدۡوَ ٰنَ عَلَیَّۖ وَٱللَّهُ عَلَىٰ مَا نَقُولُ وَكِیلࣱ ﴿28﴾
তিনি বললেন -- ''এই-ই আমার মধ্যে ও আপনার মধ্যে রইল। এ দুটি মিয়াদের যে কোনোটি আমি যদি পূর্ণ করি তাহলে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকবে না। আর আমরা যা কথা বলছি তার উপরে আল্লাহ্ কার্যনির্বাহক রইলেন।’’
۞ فَلَمَّا قَضَىٰ مُوسَى ٱلۡأَجَلَ وَسَارَ بِأَهۡلِهِۦۤ ءَانَسَ مِن جَانِبِ ٱلطُّورِ نَارࣰاۖ قَالَ لِأَهۡلِهِ ٱمۡكُثُوۤا۟ إِنِّیۤ ءَانَسۡتُ نَارࣰا لَّعَلِّیۤ ءَاتِیكُم مِّنۡهَا بِخَبَرٍ أَوۡ جَذۡوَةࣲ مِّنَ ٱلنَّارِ لَعَلَّكُمۡ تَصۡطَلُونَ ﴿29﴾
তারপর মূসা যখন মিয়াদ পূর্ণ করেলন এবং তাঁর পরিবারবর্গসহ যাত্রা করলেন, তখন তিনি পাহাড়ের কিনার থেকে আগুনের আভাস পেলেন। তিনি তাঁর পরিজনদের বললেন -- ''তোমরা অপেক্ষা কর, আমি আগুনের আভাস পাচ্ছি, সম্ভবতঃ আমি সেখান থেকে তোমাদের জন্য কোনো খবর নিয়ে আসতে পারব অথবা আগুনের একটি আঙটা যাতে তোমরা নিজেদের গরম করতে পার।’’
فَلَمَّاۤ أَتَىٰهَا نُودِیَ مِن شَـٰطِىِٕ ٱلۡوَادِ ٱلۡأَیۡمَنِ فِی ٱلۡبُقۡعَةِ ٱلۡمُبَـٰرَكَةِ مِنَ ٱلشَّجَرَةِ أَن یَـٰمُوسَىٰۤ إِنِّیۤ أَنَا ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿30﴾
তারপর যখন তিনি তার কাছে এলেন তখন একটি আওয়াজ উঠল উপত্যকার ডান দিকের ঝোপঝাড়ের পুণ্য স্থান থেকে এই বলে -- ''হে মূসা! নিঃসন্দেহ আমিই আল্লাহ্, বিশ্বজগতের প্রভু।’’
وَأَنۡ أَلۡقِ عَصَاكَۚ فَلَمَّا رَءَاهَا تَهۡتَزُّ كَأَنَّهَا جَاۤنࣱّ وَلَّىٰ مُدۡبِرࣰا وَلَمۡ یُعَقِّبۡۚ یَـٰمُوسَىٰۤ أَقۡبِلۡ وَلَا تَخَفۡۖ إِنَّكَ مِنَ ٱلۡـَٔامِنِینَ ﴿31﴾
আর এই বলে -- ''তোমার লাঠি ছুঁড়ে মার।’’ তারপর যখন তিনি এটিকে দেখলেন দৌড়ছে -- যেন এটি একটি সাপ, তখন তিনি পিছু হটলেন ছুটতে ছুটতে আর ঘুরে দেখলেন না। ''ওহ মূসা! সামনে এসো, আর ভয় করো না, নিঃসন্দেহ তুমি নিরাপদ লোকদের অন্তর্ভুক্ত।
ٱسۡلُكۡ یَدَكَ فِی جَیۡبِكَ تَخۡرُجۡ بَیۡضَاۤءَ مِنۡ غَیۡرِ سُوۤءࣲ وَٱضۡمُمۡ إِلَیۡكَ جَنَاحَكَ مِنَ ٱلرَّهۡبِۖ فَذَ ٰنِكَ بُرۡهَـٰنَانِ مِن رَّبِّكَ إِلَىٰ فِرۡعَوۡنَ وَمَلَإِی۟هِۦۤۚ إِنَّهُمۡ كَانُوا۟ قَوۡمࣰا فَـٰسِقِینَ ﴿32﴾
''তোমার হাত তোমার পকেটে ঢোকাও, এটি বেরিয়ে আসবে সাদা হয়ে কোনো দোষত্রুটি ছাড়া, আর তোমার পাখনা তোমার প্রতি চেপে ধর ভয়ের থেকে। সুতরাং এ দুটি হচ্ছে তোমার প্রভুর কাছ থেকে ফিরআউন ও তার প্রধানদের কাছে দুই প্রমাণ। নিঃসন্দেহ তারা হচ্ছে সীমালংঘনকারী জাতি।’’
قَالَ رَبِّ إِنِّی قَتَلۡتُ مِنۡهُمۡ نَفۡسࣰا فَأَخَافُ أَن یَقۡتُلُونِ ﴿33﴾
তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমি তো তাদের একজনকে হত্যা করে ফেলেছিলাম, কাজেই আমি ভয় করছি তারা আমাকে মেরে ফেলবে।
وَأَخِی هَـٰرُونُ هُوَ أَفۡصَحُ مِنِّی لِسَانࣰا فَأَرۡسِلۡهُ مَعِیَ رِدۡءࣰا یُصَدِّقُنِیۤۖ إِنِّیۤ أَخَافُ أَن یُكَذِّبُونِ ﴿34﴾
''আর আমার ভাই হারূন, সে আমার থেকে কথাবার্তায় বেশী বাক্পটু, সেজন্য তাকে আমার সঙ্গে অবলন্বনস্বরূপ পাঠিয়ে দাও যাতে সে আমার সত্যতা সমর্থন করে। আমি অবশ্য আশংকা করছি যে তারা আমাকে প্রত্যাখ্যান করবে।’’
قَالَ سَنَشُدُّ عَضُدَكَ بِأَخِیكَ وَنَجۡعَلُ لَكُمَا سُلۡطَـٰنࣰا فَلَا یَصِلُونَ إِلَیۡكُمَا بِـَٔایَـٰتِنَاۤۚ أَنتُمَا وَمَنِ ٱتَّبَعَكُمَا ٱلۡغَـٰلِبُونَ ﴿35﴾
তিনি বললেন -- ''আমরা শীঘ্রই তোমার বাহু শক্তিশালী করব তোমার ভাইকে দিয়ে, আর তোমাদের উভয়ের জন্য আমরা ক্ষমতা দেবো, কাজেই তারা তোমাদের নাগাল পাবে না, -- আমাদের নিদর্শনাবলী নিয়ে, -- তোমরা দুজন ও যারা তোমাদের অনুসরণ করে তারা বিজয়ী হবে।’’
فَلَمَّا جَاۤءَهُم مُّوسَىٰ بِـَٔایَـٰتِنَا بَیِّنَـٰتࣲ قَالُوا۟ مَا هَـٰذَاۤ إِلَّا سِحۡرࣱ مُّفۡتَرࣰى وَمَا سَمِعۡنَا بِهَـٰذَا فِیۤ ءَابَاۤىِٕنَا ٱلۡأَوَّلِینَ ﴿36﴾
তারপর মূসা যখন তাদের কাছে এলেন আমাদের সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো নিয়ে, তারা বলল -- ''এ তো বানানো ভেলকিবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়, আর একরম আমাদের পূর্ববর্তী বাপদাদার আমলেও আমরা শুনি নি।’’
وَقَالَ مُوسَىٰ رَبِّیۤ أَعۡلَمُ بِمَن جَاۤءَ بِٱلۡهُدَىٰ مِنۡ عِندِهِۦ وَمَن تَكُونُ لَهُۥ عَـٰقِبَةُ ٱلدَّارِۚ إِنَّهُۥ لَا یُفۡلِحُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿37﴾
আর মূসা বললেন -- ''আমার প্রভু ভাল জানেন কে তাঁর কাছ থেকে পথনির্দেশ নিয়ে এসেছে আর কার জন্য হবে চরমোৎকর্ষ আবাস। এটি নিশ্চিত যে অত্যাচারীদের সফলকাম করা হবে না।’’
وَقَالَ فِرۡعَوۡنُ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلۡمَلَأُ مَا عَلِمۡتُ لَكُم مِّنۡ إِلَـٰهٍ غَیۡرِی فَأَوۡقِدۡ لِی یَـٰهَـٰمَـٰنُ عَلَى ٱلطِّینِ فَٱجۡعَل لِّی صَرۡحࣰا لَّعَلِّیۤ أَطَّلِعُ إِلَىٰۤ إِلَـٰهِ مُوسَىٰ وَإِنِّی لَأَظُنُّهُۥ مِنَ ٱلۡكَـٰذِبِینَ ﴿38﴾
আর ফিরআউন বলল -- ''ওহে প্রধানগণ! তোমাদের জন্য আমি ছাড়া আর কোনো উপাস্য আছে বলে তো আমি জানি না! সুতরাং, হে হামান, তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও, তারপর আমার জন্য একটি উঁচু দালান তৈরী কর, হয়ত আমি মূসার উপাস্যের সন্নিকটে উঠতে পারব। তবে আমি অবশ্য তাকে মিথ্যাবাদীদের একজন বলেই জ্ঞান করি।’’
وَٱسۡتَكۡبَرَ هُوَ وَجُنُودُهُۥ فِی ٱلۡأَرۡضِ بِغَیۡرِ ٱلۡحَقِّ وَظَنُّوۤا۟ أَنَّهُمۡ إِلَیۡنَا لَا یُرۡجَعُونَ ﴿39﴾
আর সে ও তার সাঙ্গোপাঙ্গ অসঙ্গতভাবে দুনিয়াতে গর্ব করেছিল, আর তারা ভেবেছিল যে আমাদের কাছে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে না।
فَأَخَذۡنَـٰهُ وَجُنُودَهُۥ فَنَبَذۡنَـٰهُمۡ فِی ٱلۡیَمِّۖ فَٱنظُرۡ كَیۡفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿40﴾
সেজন্য আমরা তাকে ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের পাকড়াও করেছিলাম, আর তাদের নিক্ষেপ করেছিলাম সমুদ্রে। অতএব দেখ, কেমন হয়েছিল অত্যাচারীদের পরিণাম!
وَجَعَلۡنَـٰهُمۡ أَىِٕمَّةࣰ یَدۡعُونَ إِلَى ٱلنَّارِۖ وَیَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ لَا یُنصَرُونَ ﴿41﴾
আর আমরা তাদের বানিয়েছিলাম সর্দার, -- তারা আহ্বান করত আগুনের দিকে, আর কিয়ামতের দিনে তাদের সাহায্য করা হবে না।
وَأَتۡبَعۡنَـٰهُمۡ فِی هَـٰذِهِ ٱلدُّنۡیَا لَعۡنَةࣰۖ وَیَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ هُم مِّنَ ٱلۡمَقۡبُوحِینَ ﴿42﴾
আর এই দুনিয়াতে আমরা অসন্তষ্টিকে তাদের পিছু ধরিয়েছিলাম, আর কিয়ামতের দিনে তারা হবে ঘৃণিতদের মধ্যেকার।
وَلَقَدۡ ءَاتَیۡنَا مُوسَى ٱلۡكِتَـٰبَ مِنۢ بَعۡدِ مَاۤ أَهۡلَكۡنَا ٱلۡقُرُونَ ٱلۡأُولَىٰ بَصَاۤىِٕرَ لِلنَّاسِ وَهُدࣰى وَرَحۡمَةࣰ لَّعَلَّهُمۡ یَتَذَكَّرُونَ ﴿43﴾
আর আমরা আলবৎ মূসাকে ধর্মগ্রন্থ দিয়েছিলাম -- পূর্ববর্তী বংশদের আমরা ধ্বংস করে ফেলার পরে -- মানুষদের জন্য দৃষ্টি- উন্মোচক, আর পথপ্রদর্শক, আর একটি করুণা, -- যেন তারা মনোযোগ দিতে পারে।
وَمَا كُنتَ بِجَانِبِ ٱلۡغَرۡبِیِّ إِذۡ قَضَیۡنَاۤ إِلَىٰ مُوسَى ٱلۡأَمۡرَ وَمَا كُنتَ مِنَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ﴿44﴾
আর তুমি পশ্চিম প্রান্তে ছিলে না যখন আমরা মূসার কাছে বিধান দিয়েছিলাম, আর তুমি প্রতক্ষদর্শীদের মধ্যেও ছিলে না।
وَلَـٰكِنَّاۤ أَنشَأۡنَا قُرُونࣰا فَتَطَاوَلَ عَلَیۡهِمُ ٱلۡعُمُرُۚ وَمَا كُنتَ ثَاوِیࣰا فِیۤ أَهۡلِ مَدۡیَنَ تَتۡلُوا۟ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتِنَا وَلَـٰكِنَّا كُنَّا مُرۡسِلِینَ ﴿45﴾
বস্তুতঃ আমরা বহু মানববংশের উদ্ভব করেছিলাম, তারপর জীবনটা তাদের কাছে সুদীর্ঘ মনে হয়েছিল। আর তুমি মাদয়ানের অধিবাসীদের সঙ্গে বসবাসকারী ছিলে না তাদের কাছে আমাদের বাণীসমূহ আবৃত্তি করা অবস্থায়, কিন্তু আমরাই তো রসূল প্রেরণ করতে রয়েছিলাম।
وَمَا كُنتَ بِجَانِبِ ٱلطُّورِ إِذۡ نَادَیۡنَا وَلَـٰكِن رَّحۡمَةࣰ مِّن رَّبِّكَ لِتُنذِرَ قَوۡمࣰا مَّاۤ أَتَىٰهُم مِّن نَّذِیرࣲ مِّن قَبۡلِكَ لَعَلَّهُمۡ یَتَذَكَّرُونَ ﴿46﴾
আর তুমি পাহাড়ের নিকটে ছিলে না যখন আমরা আহ্বান করেছিলাম, কিন্তু এটি তোমার প্রভু থেকে এক করুণা, যাতে তুমি সতর্ক করতে পার এমন এক বংশকে যাদের কাছে তোমার আগে সতর্ককারীদের কেউ আসেন নি, যেন তারা মনোযোগ দিতে পারে।
وَلَوۡلَاۤ أَن تُصِیبَهُم مُّصِیبَةُۢ بِمَا قَدَّمَتۡ أَیۡدِیهِمۡ فَیَقُولُوا۟ رَبَّنَا لَوۡلَاۤ أَرۡسَلۡتَ إِلَیۡنَا رَسُولࣰا فَنَتَّبِعَ ءَایَـٰتِكَ وَنَكُونَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿47﴾
আর পক্ষান্তরে যদি কোনো বিপদ তাদের পাকড়াত তাদের হাত যা আগবাড়িয়েছে সেজন্য তাহলে তারা বলতে পারত -- ''আমাদের প্রভু! কেন তুমি আমাদের কাছে কোনো রসূল পাঠাও নি তাহলে তো আমরা তোমার নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে পারতাম এবং আমরা মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারতাম?’’
فَلَمَّا جَاۤءَهُمُ ٱلۡحَقُّ مِنۡ عِندِنَا قَالُوا۟ لَوۡلَاۤ أُوتِیَ مِثۡلَ مَاۤ أُوتِیَ مُوسَىٰۤۚ أَوَلَمۡ یَكۡفُرُوا۟ بِمَاۤ أُوتِیَ مُوسَىٰ مِن قَبۡلُۖ قَالُوا۟ سِحۡرَانِ تَظَـٰهَرَا وَقَالُوۤا۟ إِنَّا بِكُلࣲّ كَـٰفِرُونَ ﴿48﴾
কিন্তু যখন আমাদের তরফ থেকে তাদের কাছে সত্য এসেছে তারা বলছে -- ''মুসাকে যেমন দেওয়া হয়েছিল তাকে কেন তেমনটা দেওয়া হ’ল না?’’ কী! মূসাকে ইতিপূর্বে যা দেওয়া হয়েছিল তাতে কি তারা অবিশ্বাস করে নি? তারা বলে -- ''দুখানা জাদু -- একে অন্যের পৃষ্ঠপোষকতা করছে।’’ আর তারা বলে -- ''আমরা আলবৎ সবটাতেই অবিশ্বাসী।’’
قُلۡ فَأۡتُوا۟ بِكِتَـٰبࣲ مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِ هُوَ أَهۡدَىٰ مِنۡهُمَاۤ أَتَّبِعۡهُ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿49﴾
তুমি বলো -- ''তবে আল্লাহ্র কাছ থেকে একখানা ধর্মগ্রন্থ নিয়ে এস যা এই দুইখানার চাইতেও ভাল পথনির্দেশক, আমিও তা অনুসরণ করব, যদি তোমরা।’’
فَإِن لَّمۡ یَسۡتَجِیبُوا۟ لَكَ فَٱعۡلَمۡ أَنَّمَا یَتَّبِعُونَ أَهۡوَاۤءَهُمۡۚ وَمَنۡ أَضَلُّ مِمَّنِ ٱتَّبَعَ هَوَىٰهُ بِغَیۡرِ هُدࣰى مِّنَ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿50﴾
কিন্তু যদি তারা তোমার জবাব না দেয়, তাহলে জেনে রেখো, তারা অবশ্যই তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করছে। আর কে বেশী পথভ্রান্ত তার চাইতে যে তার খেয়াল-খুশির অনুসরণ করে আল্লাহ্র কাছ থেকে পথনির্দেশ ব্যতিরেকে? নিঃসন্দেহ অন্যায়কারী লোককে আল্লাহ্ পথ দেখান না।
۞ وَلَقَدۡ وَصَّلۡنَا لَهُمُ ٱلۡقَوۡلَ لَعَلَّهُمۡ یَتَذَكَّرُونَ ﴿51﴾
আর আমরা অবশ্যই তাদের কাছে বাণী পৌঁছিয়ে দিয়েছি যেন তারা মনোযোগ দিতে পারে।
ٱلَّذِینَ ءَاتَیۡنَـٰهُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ مِن قَبۡلِهِۦ هُم بِهِۦ یُؤۡمِنُونَ ﴿52﴾
যাদের কাছে আমরা এর আগে ধর্মগ্রন্থ দিয়েছিলাম তারা স্বয়ং এতে বিশ্বাস করে।
وَإِذَا یُتۡلَىٰ عَلَیۡهِمۡ قَالُوۤا۟ ءَامَنَّا بِهِۦۤ إِنَّهُ ٱلۡحَقُّ مِن رَّبِّنَاۤ إِنَّا كُنَّا مِن قَبۡلِهِۦ مُسۡلِمِینَ ﴿53﴾
আর যখন এটি তাদের কাছে পাঠ করা হয় তারা বলে -- ''আমরা এতে ঈমান আনলাম, নিঃসন্দেহ এটি আমাদের প্রভু র কাছ থেকে সত্য, নিঃসন্দেহ আমরা এর আগেও মুসলিম ছিলাম।’’
أُو۟لَـٰۤىِٕكَ یُؤۡتَوۡنَ أَجۡرَهُم مَّرَّتَیۡنِ بِمَا صَبَرُوا۟ وَیَدۡرَءُونَ بِٱلۡحَسَنَةِ ٱلسَّیِّئَةَ وَمِمَّا رَزَقۡنَـٰهُمۡ یُنفِقُونَ ﴿54﴾
এদের দুইবার তাদের প্রতিদান দেওয়া হবে যেহেতু তারা অধ্যবসায় করেছিল, এবং তারা ভালো দিয়ে মন্দকে প্রতিরোধ করে, আর আমরা তাদের যে রিযেক দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে থাকে।
وَإِذَا سَمِعُوا۟ ٱللَّغۡوَ أَعۡرَضُوا۟ عَنۡهُ وَقَالُوا۟ لَنَاۤ أَعۡمَـٰلُنَا وَلَكُمۡ أَعۡمَـٰلُكُمۡ سَلَـٰمٌ عَلَیۡكُمۡ لَا نَبۡتَغِی ٱلۡجَـٰهِلِینَ ﴿55﴾
আর যখন তারা বাজে কথা শোনে তখন তারা তা থেকে সরে যায় এবং বলে -- ''আমাদের জন্য আমাদের কাজ আর তোমাদের জন্য তোমাদের কাজ, তোমাদের প্রতি 'সালাম’। অজ্ঞদের আমরা কামনা করি না।’’
إِنَّكَ لَا تَهۡدِی مَنۡ أَحۡبَبۡتَ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ یَهۡدِی مَن یَشَاۤءُۚ وَهُوَ أَعۡلَمُ بِٱلۡمُهۡتَدِینَ ﴿56﴾
নিঃসন্দেহ তুমি যাকে ভালবাস তাকে তুমি ধর্মপথে আনতে পারো না, কিন্তু আল্লাহ্ই পথ দেখান যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। আর তিনিই ভাল জানেন সৎপথপ্রাপ্তদের।
وَقَالُوۤا۟ إِن نَّتَّبِعِ ٱلۡهُدَىٰ مَعَكَ نُتَخَطَّفۡ مِنۡ أَرۡضِنَاۤۚ أَوَلَمۡ نُمَكِّن لَّهُمۡ حَرَمًا ءَامِنࣰا یُجۡبَىٰۤ إِلَیۡهِ ثَمَرَ ٰتُ كُلِّ شَیۡءࣲ رِّزۡقࣰا مِّن لَّدُنَّا وَلَـٰكِنَّ أَكۡثَرَهُمۡ لَا یَعۡلَمُونَ ﴿57﴾
আর তারা বলে -- ''আমরা যদি তোমার সঙ্গে ধর্মপথ অনুসরণ করি তাহলে আমাদের দেশ থেকে আমাদের উৎখাত করা হবে।’’ আমরা কি তাদের জন্য এক নিরাপদ পুণ্যস্থান প্রতিষ্ঠিত করি নি যেখানে আনা হয় হরেক রকমের ফল-ফসল, আমাদের তরফ থেকে রিযেকস্বরূপে? কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।
وَكَمۡ أَهۡلَكۡنَا مِن قَرۡیَةِۭ بَطِرَتۡ مَعِیشَتَهَاۖ فَتِلۡكَ مَسَـٰكِنُهُمۡ لَمۡ تُسۡكَن مِّنۢ بَعۡدِهِمۡ إِلَّا قَلِیلࣰاۖ وَكُنَّا نَحۡنُ ٱلۡوَ ٰرِثِینَ ﴿58﴾
আর জনপদদের কতটাকে যে আমরা ধ্বংস করেছি যে গর্ব করেছিল তার প্রাচুর্যের জন্য! আর এইসব তাদের ঘরবাড়ি, -- তাদের পরে অল্প কতক ব্যতীত সেগুলোতে বসবাস করা হয় নি। আর আমরা, খোদ আমরা হচ্ছি উত্তরাধিকারী।
وَمَا كَانَ رَبُّكَ مُهۡلِكَ ٱلۡقُرَىٰ حَتَّىٰ یَبۡعَثَ فِیۤ أُمِّهَا رَسُولࣰا یَتۡلُوا۟ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتِنَاۚ وَمَا كُنَّا مُهۡلِكِی ٱلۡقُرَىٰۤ إِلَّا وَأَهۡلُهَا ظَـٰلِمُونَ ﴿59﴾
আর তোমার প্রভু কখনো জনপদগুলোর ধ্বংসকারক নন যে পর্যন্ত না তিনি তাদের মাতৃভূমিতে একজন রসূল উত্থাপন করেছেন তাদের কাছে আমাদের বাণীসমূহ বিবৃত করতে, আর আমরা কখনো জনপদসমূহের ধ্বংসকারী নই যদি না তাদের অধিবাসীরা সীমালংঘনকারী হয়।
وَمَاۤ أُوتِیتُم مِّن شَیۡءࣲ فَمَتَـٰعُ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا وَزِینَتُهَاۚ وَمَا عِندَ ٱللَّهِ خَیۡرࣱ وَأَبۡقَىٰۤۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ ﴿60﴾
আর বিষয়-আশয়ের যা কিছু তোমাদের দেওয়া হয়েছে তা তো এই দুনিয়ার জীবনের ভোগসম্ভার ও এরই শোভা- সৌন্দর্য, আর যা কিছু আল্লাহ্র কাছে রয়েছে সে-সব আরো ভাল ও আরো স্থায়ী। তোমরা কি তবু বুঝবে না?
أَفَمَن وَعَدۡنَـٰهُ وَعۡدًا حَسَنࣰا فَهُوَ لَـٰقِیهِ كَمَن مَّتَّعۡنَـٰهُ مَتَـٰعَ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا ثُمَّ هُوَ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ مِنَ ٱلۡمُحۡضَرِینَ ﴿61﴾
যাকে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি উত্তম প্রতিশ্রুতিতে যা সে পেতে যাচ্ছে, সে কি তবে তার মতো যাকে দেওয়া হয়েছে এই দুনিয়ার জীবনের ভোগসম্ভার, তারপর কিয়ামতের দিনে সে হবে অভিযুক্তদের মধ্যেকার?
وَیَوۡمَ یُنَادِیهِمۡ فَیَقُولُ أَیۡنَ شُرَكَاۤءِیَ ٱلَّذِینَ كُنتُمۡ تَزۡعُمُونَ ﴿62﴾
আর সেদিন তাদের তিনি ডাকবেন ও বলবেন -- ''কোথায় আমার শরীকরা যাদের তোমরা উদ্ভাবন করতে?’’
قَالَ ٱلَّذِینَ حَقَّ عَلَیۡهِمُ ٱلۡقَوۡلُ رَبَّنَا هَـٰۤؤُلَاۤءِ ٱلَّذِینَ أَغۡوَیۡنَاۤ أَغۡوَیۡنَـٰهُمۡ كَمَا غَوَیۡنَاۖ تَبَرَّأۡنَاۤ إِلَیۡكَۖ مَا كَانُوۤا۟ إِیَّانَا یَعۡبُدُونَ ﴿63﴾
যাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য সত্যপ্রতিপন্ন হয়েছে তারা বলল -- ''আমাদের প্রভু! এরাই তারা যাদের আমরা বিপথে নিয়েছিলাম, আমরা তাদের বিপথে নিয়েছিলাম যেমন আমরা নিজেরা বিপথে গিয়েছিলাম। আমরা তোমার কাছে আমাদের দোষ স্খালন করছি। এটি নয় যে তারা আমাদেরই পূজা করত।’’
وَقِیلَ ٱدۡعُوا۟ شُرَكَاۤءَكُمۡ فَدَعَوۡهُمۡ فَلَمۡ یَسۡتَجِیبُوا۟ لَهُمۡ وَرَأَوُا۟ ٱلۡعَذَابَۚ لَوۡ أَنَّهُمۡ كَانُوا۟ یَهۡتَدُونَ ﴿64﴾
আর বলা হবে -- ''তোমাদের শরীকান-দেবতাদের ডাকো।’’ সুতরাং তারা তাদের প্রতি সাড়া দেবে না, আর তারা শাস্তি দেখতে পাবে। আহা! যদি তারা সৎপথ অনুসরণ করত!
وَیَوۡمَ یُنَادِیهِمۡ فَیَقُولُ مَاذَاۤ أَجَبۡتُمُ ٱلۡمُرۡسَلِینَ ﴿65﴾
আর সেইদিন যখন তিনি তাদের ডাকবেন ও বলবেন -- ''তোমরা প্রেরিত-পুরুষদের কী জবাব দিয়েছিলে?’’
فَعَمِیَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلۡأَنۢبَاۤءُ یَوۡمَىِٕذࣲ فَهُمۡ لَا یَتَسَاۤءَلُونَ ﴿66﴾
তখন বক্তব্যগুলো সেইদিন তাদের কাছ ঝাপসা হয়ে যাবে, কাজেই তারা পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে না।
فَأَمَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحࣰا فَعَسَىٰۤ أَن یَكُونَ مِنَ ٱلۡمُفۡلِحِینَ ﴿67﴾
কিন্তু তার ক্ষেত্রে -- যে তওবা করে এবং ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাহলে হয়ত সে সফলতাপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
وَرَبُّكَ یَخۡلُقُ مَا یَشَاۤءُ وَیَخۡتَارُۗ مَا كَانَ لَهُمُ ٱلۡخِیَرَةُۚ سُبۡحَـٰنَ ٱللَّهِ وَتَعَـٰلَىٰ عَمَّا یُشۡرِكُونَ ﴿68﴾
আর তোমার প্রভু যা ইচ্ছা করেন তাই সৃষ্টি করেন আর মনোনয়ন করেন, তাদের কোনো এখতিয়ার নেই। আল্লাহ্রই সব মহিমা, আর তারা যা অংশী আরোপ করে তা থেকে তিনি বহু ঊর্ধ্বে।
وَرَبُّكَ یَعۡلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُورُهُمۡ وَمَا یُعۡلِنُونَ ﴿69﴾
আর তোমার প্রভু ভাল জানেন যা তাদের অন্তর লুকিয়ে রাখে আর যা তারা প্রকাশ করে।
وَهُوَ ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۖ لَهُ ٱلۡحَمۡدُ فِی ٱلۡأُولَىٰ وَٱلۡـَٔاخِرَةِۖ وَلَهُ ٱلۡحُكۡمُ وَإِلَیۡهِ تُرۡجَعُونَ ﴿70﴾
আর তিনিই আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নেই। তাঁরই সমস্ত স্তুতি আগে ও পরে, আর বিধান তাঁরই, আর তাঁরই কাছে তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে।
قُلۡ أَرَءَیۡتُمۡ إِن جَعَلَ ٱللَّهُ عَلَیۡكُمُ ٱلَّیۡلَ سَرۡمَدًا إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِ مَنۡ إِلَـٰهٌ غَیۡرُ ٱللَّهِ یَأۡتِیكُم بِضِیَاۤءٍۚ أَفَلَا تَسۡمَعُونَ ﴿71﴾
বল -- ''তোমরা কি ভেবে দেখেছ -- আল্লাহ্ যদি তোমাদের উপরে রাত্রি স্থায়ী করতেন কিয়ামতের দিন পর্যন্ত তাহলে আল্লাহ্ ছাড়া এমন কোন উপাস্য আছে যে তোমাদের জন্য প্রদীপ নিয়ে আসবে? তোমরা কি তবুও শুনবে না।’’
قُلۡ أَرَءَیۡتُمۡ إِن جَعَلَ ٱللَّهُ عَلَیۡكُمُ ٱلنَّهَارَ سَرۡمَدًا إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِ مَنۡ إِلَـٰهٌ غَیۡرُ ٱللَّهِ یَأۡتِیكُم بِلَیۡلࣲ تَسۡكُنُونَ فِیهِۚ أَفَلَا تُبۡصِرُونَ ﴿72﴾
বল -- ''তোমরা কি ভেবে দেখেছ -- আল্লাহ্ যদি তোমাদের জন্য দিনকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করতেন তাহলে আল্লাহ্ ব্যতীত এমন কোন উপাস্য আছে যে তোমাদের জন্য রাত্রিকে নিয়ে আসবে যার মধ্যে তোমরা বিশ্রাম করতে পার? তোমরা কি তবুও দেখবে না?’’
وَمِن رَّحۡمَتِهِۦ جَعَلَ لَكُمُ ٱلَّیۡلَ وَٱلنَّهَارَ لِتَسۡكُنُوا۟ فِیهِ وَلِتَبۡتَغُوا۟ مِن فَضۡلِهِۦ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿73﴾
বস্তুতঃ তাঁর দয়া থেকেই তিনি তোমাদের জন্য রাত ও দিন বানিয়েছেন যেন তাতে তোমরা বিশ্রাম করতে পার এবং তাঁর করুণাভান্ডারের সন্ধান করতে পার, আর যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার।
وَیَوۡمَ یُنَادِیهِمۡ فَیَقُولُ أَیۡنَ شُرَكَاۤءِیَ ٱلَّذِینَ كُنتُمۡ تَزۡعُمُونَ ﴿74﴾
আর সেইদিন তিনি ওদের ডাকবেন ও বলবেন -- ''কোথায় আমার অংশীদাররা যাদের তোমরা উদ্ভাবন করতে?’’
وَنَزَعۡنَا مِن كُلِّ أُمَّةࣲ شَهِیدࣰا فَقُلۡنَا هَاتُوا۟ بُرۡهَـٰنَكُمۡ فَعَلِمُوۤا۟ أَنَّ ٱلۡحَقَّ لِلَّهِ وَضَلَّ عَنۡهُم مَّا كَانُوا۟ یَفۡتَرُونَ ﴿75﴾
আর আমরা প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে বের করব একজন সাক্ষী, তখন আমরা বলব -- ''তোমাদের প্রমাণ নিয়ে এস।’’ তখন তারা জানতে পারবে যে সত্য আল্লাহ্রই, আর তারা যা কিছু উদ্ভাবন করত তা তাদের থেকে বিদায় নেবে।
۞ إِنَّ قَـٰرُونَ كَانَ مِن قَوۡمِ مُوسَىٰ فَبَغَىٰ عَلَیۡهِمۡۖ وَءَاتَیۡنَـٰهُ مِنَ ٱلۡكُنُوزِ مَاۤ إِنَّ مَفَاتِحَهُۥ لَتَنُوۤأُ بِٱلۡعُصۡبَةِ أُو۟لِی ٱلۡقُوَّةِ إِذۡ قَالَ لَهُۥ قَوۡمُهُۥ لَا تَفۡرَحۡۖ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ ٱلۡفَرِحِینَ ﴿76﴾
নিঃসন্দেহ ক্কারূন ছিল মূসার স্বজাতিদের মধ্যেকার, কিন্তু সে তাঁদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল। আর আমরা তাকে ধনভান্ডারের এতসব দিয়েছিলাম যে তার চাবিগুলো একদল বলবান লোকের বোঝা হয়ে যেত। দেখো! তার লোকেরা তাকে বললে -- ''গর্ব করো না, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ দাম্ভিকদের ভালবাসেন না।
وَٱبۡتَغِ فِیمَاۤ ءَاتَىٰكَ ٱللَّهُ ٱلدَّارَ ٱلۡـَٔاخِرَةَۖ وَلَا تَنسَ نَصِیبَكَ مِنَ ٱلدُّنۡیَاۖ وَأَحۡسِن كَمَاۤ أَحۡسَنَ ٱللَّهُ إِلَیۡكَۖ وَلَا تَبۡغِ ٱلۡفَسَادَ فِی ٱلۡأَرۡضِۖ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ ٱلۡمُفۡسِدِینَ ﴿77﴾
''আর আল্লাহ্ তোমাকে যা দিয়েছেন তা দিয়ে তুমি পরকালের আবাস অণ্বেষণ করো, আর ইহকালে তোমার ভাগ ভুলে যেয়ো না, আর ভাল কর যেমন আল্লাহ্ তোমার ভাল করেছেন, আর দুনিয়াতে ফেসাদ বাধাতে চেয়ো না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ফেসাদে লোকদের ভালবাসেন না।’’
قَالَ إِنَّمَاۤ أُوتِیتُهُۥ عَلَىٰ عِلۡمٍ عِندِیۤۚ أَوَلَمۡ یَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ قَدۡ أَهۡلَكَ مِن قَبۡلِهِۦ مِنَ ٱلۡقُرُونِ مَنۡ هُوَ أَشَدُّ مِنۡهُ قُوَّةࣰ وَأَكۡثَرُ جَمۡعࣰاۚ وَلَا یُسۡـَٔلُ عَن ذُنُوبِهِمُ ٱلۡمُجۡرِمُونَ ﴿78﴾
সে বলল -- ''আমাকে এ-সব দেওয়া হয়েছে আমার মধ্যে যে জ্ঞান রয়েছে সেজন্য।’’ সে কি জানত না যে তার আগে বহু মানবগোষ্ঠীকে আল্লাহ্ ধ্বংস করে ফেলেছেন যারা ছিল তার চেয়েও শক্তিতে অধিক প্রবল এবং একাট্টাকরণে আরো প্রাচুর্যময়? আর অপরাধীদের তাদের পাপ সন্বন্ধে প্রশ্ন করা হবে না।
فَخَرَجَ عَلَىٰ قَوۡمِهِۦ فِی زِینَتِهِۦۖ قَالَ ٱلَّذِینَ یُرِیدُونَ ٱلۡحَیَوٰةَ ٱلدُّنۡیَا یَـٰلَیۡتَ لَنَا مِثۡلَ مَاۤ أُوتِیَ قَـٰرُونُ إِنَّهُۥ لَذُو حَظٍّ عَظِیمࣲ ﴿79﴾
কাজেকাজেই সে তার স্বজাতির সামনে তার জাঁকজমকের সাথে বাহির হয়েছিল। যারা এই দুনিয়ার জীবন কামনা করেছিল তারা বলত -- ''হায়! ক্কারূনকে যা দেওয়া হয়েছে তার মতো যদি আমাদেরও থাকতো! নিঃসন্দেহ সে বিরাট সৌভাগ্যের অধিকারী!’’
وَقَالَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡعِلۡمَ وَیۡلَكُمۡ ثَوَابُ ٱللَّهِ خَیۡرࣱ لِّمَنۡ ءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحࣰاۚ وَلَا یُلَقَّىٰهَاۤ إِلَّا ٱلصَّـٰبِرُونَ ﴿80﴾
আর যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছিল তারা বলল -- ''ধিক্ তোমাদের! যে ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তার জন্য আল্লাহ্র পুরস্কার বেশি ভাল। আর ধৈর্যশীলদের ছাড়া অন্যে এর সাক্ষাৎ পাবে না।’’
فَخَسَفۡنَا بِهِۦ وَبِدَارِهِ ٱلۡأَرۡضَ فَمَا كَانَ لَهُۥ مِن فِئَةࣲ یَنصُرُونَهُۥ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَمَا كَانَ مِنَ ٱلۡمُنتَصِرِینَ ﴿81﴾
অতঃপর আমরা পৃথিবীকে দিয়ে তাকে ও তার প্রাসাদকে গ্রাস করিয়েছিলাম, তখন তার জন্য এমন কোনো দল ছিল না যারা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করতে পারত, আর সে আত্মপক্ষকে সাহায্যকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
وَأَصۡبَحَ ٱلَّذِینَ تَمَنَّوۡا۟ مَكَانَهُۥ بِٱلۡأَمۡسِ یَقُولُونَ وَیۡكَأَنَّ ٱللَّهَ یَبۡسُطُ ٱلرِّزۡقَ لِمَن یَشَاۤءُ مِنۡ عِبَادِهِۦ وَیَقۡدِرُۖ لَوۡلَاۤ أَن مَّنَّ ٱللَّهُ عَلَیۡنَا لَخَسَفَ بِنَاۖ وَیۡكَأَنَّهُۥ لَا یُفۡلِحُ ٱلۡكَـٰفِرُونَ ﴿82﴾
আর আগের দিন যারা তার অবস্থার জন্য কামনা করত তারা সাত-সকালে বলতে লাগল -- ''আহা দেখো! আল্লাহ্ তাঁরে বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা করেন তার প্রতি রিযেক প্রসারিত করেন এবং মেপেজোখে দেন। আল্লাহ্ যদি আমাদের উপরে সদয় না হতেন তবে আমাদেরও গ্রাস করাতেন। আহা দেখো! অবিশ্বাসীরা কখনো সফলকাম হয় না।’’
تِلۡكَ ٱلدَّارُ ٱلۡـَٔاخِرَةُ نَجۡعَلُهَا لِلَّذِینَ لَا یُرِیدُونَ عُلُوࣰّا فِی ٱلۡأَرۡضِ وَلَا فَسَادࣰاۚ وَٱلۡعَـٰقِبَةُ لِلۡمُتَّقِینَ ﴿83﴾
এই পরলোকের আবাস, -- আমরা এটি নির্ধারিত করেছি তাদের জন্য যারা পৃথিবীতে বাড়াবাড়ি করতে চায় না এবং ফেসাদও বাধায় না। আর শুভ-পরিণাম হচ্ছে ধর্মপরায়ণদের জন্য।
مَن جَاۤءَ بِٱلۡحَسَنَةِ فَلَهُۥ خَیۡرࣱ مِّنۡهَاۖ وَمَن جَاۤءَ بِٱلسَّیِّئَةِ فَلَا یُجۡزَى ٱلَّذِینَ عَمِلُوا۟ ٱلسَّیِّـَٔاتِ إِلَّا مَا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ ﴿84﴾
যে কেউ ভাল নিয়ে আসে তার জন্য তবে এর চেয়েও ভাল রয়েছে, আর যে মন্দ নিয়ে আসে -- তাহলে যারা মন্দ কাজ করে তাদের প্রতিদান দেওয়া হবে না তারা যা করত তা ব্যতীত।
إِنَّ ٱلَّذِی فَرَضَ عَلَیۡكَ ٱلۡقُرۡءَانَ لَرَاۤدُّكَ إِلَىٰ مَعَادࣲۚ قُل رَّبِّیۤ أَعۡلَمُ مَن جَاۤءَ بِٱلۡهُدَىٰ وَمَنۡ هُوَ فِی ضَلَـٰلࣲ مُّبِینࣲ ﴿85﴾
নিঃসন্দেহ যিনি তোমার উপরে কুরআন বিধান করেছেন তিনি আলবৎ তোমাকে ফিরিয়ে আনবেন প্রত্যাবর্তনস্থলে। বলো -- ''আমার প্রভু ভাল জানেন কে পথনির্দেশ নিয়ে এসেছে আর কে হচ্ছে স্বয়ং সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে।’’
وَمَا كُنتَ تَرۡجُوۤا۟ أَن یُلۡقَىٰۤ إِلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبُ إِلَّا رَحۡمَةࣰ مِّن رَّبِّكَۖ فَلَا تَكُونَنَّ ظَهِیرࣰا لِّلۡكَـٰفِرِینَ ﴿86﴾
আর তুমি তো আশা কর নি যে তোমার সঙ্গে গ্রন্থখানার পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে, কিন্তু এটি তোমার প্রভুর কাছ থেকে একটি করুণা, সুতরাং তুমি কখনো অবিশ্বাসীদের পৃষ্ঠপোষক হয়ো না।
وَلَا یَصُدُّنَّكَ عَنۡ ءَایَـٰتِ ٱللَّهِ بَعۡدَ إِذۡ أُنزِلَتۡ إِلَیۡكَۖ وَٱدۡعُ إِلَىٰ رَبِّكَۖ وَلَا تَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ﴿87﴾
আর তারা যেন আল্লাহ্র নির্দেশাবলী থেকে নিবৃত্ত না করে সে-সব তোমার কাছে অবতীর্ণ হবার পরে, বরঞ্চ তুমি ডাকো তোমার প্রভুর প্রতি, আর তুমি কখনো মুশরিকদের দলভুক্ত হয়ো না।
وَلَا تَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَـٰهًا ءَاخَرَۘ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۚ كُلُّ شَیۡءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجۡهَهُۥۚ لَهُ ٱلۡحُكۡمُ وَإِلَیۡهِ تُرۡجَعُونَ ﴿88﴾
আর আল্লাহ্র সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্যকে ডেকো না। তিনি ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নেই। তাঁর অবয়ব ব্যতীত আর সব কিছু ধ্বংসশীল। বিধান তাঁরই, আর তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে।