Main pages

الۤمۤ ﴿1﴾

আলিফ, লাম, মীম।

ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡحَیُّ ٱلۡقَیُّومُ ﴿2﴾

আল্লাহ্‌! তিনি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই, -- চিরজীবন্ত, সদা-বিদ্যমান।

نَزَّلَ عَلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِ وَأَنزَلَ ٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَ ﴿3﴾

তিনি তোমার কাছে এই কিতাব অবতারণ করেছেন সত্যের সাথে, -- এর আগে যা এসেছিল তার সত্যসমর্থনরূপে আর তিনি তওরাত ও ইনজীল অবতারণ করেছিলেন --

مِن قَبۡلُ هُدࣰى لِّلنَّاسِ وَأَنزَلَ ٱلۡفُرۡقَانَۗ إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ لَهُمۡ عَذَابࣱ شَدِیدࣱۗ وَٱللَّهُ عَزِیزࣱ ذُو ٱنتِقَامٍ ﴿4﴾

-- এর আগে, মানুষের জন্য এক একটি পথনির্দেশ হিসেবে, আর তিনি অবতারণ করেছেন এই ফুরকান। নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস করে আল্লাহ্‌র বাণীসমূহে, তাদের জন্য রয়েছে ভয়ঙ্কর শাস্তি। আর আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, প্রতিফল দান সুসমর্থ।

إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَخۡفَىٰ عَلَیۡهِ شَیۡءࣱ فِی ٱلۡأَرۡضِ وَلَا فِی ٱلسَّمَاۤءِ ﴿5﴾

নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সম্পর্কে, -- তাঁর কাছে কিছুই লুকানো নেই পৃথিবীতে, আর মহাকাশেও নেই।

هُوَ ٱلَّذِی یُصَوِّرُكُمۡ فِی ٱلۡأَرۡحَامِ كَیۡفَ یَشَاۤءُۚ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿6﴾

তিনিই সেইজন যিনি তোমাদের গড়ে তোলেন জঠরের ভেতরে যেমন তিনি চান। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, -- মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

هُوَ ٱلَّذِیۤ أَنزَلَ عَلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ مِنۡهُ ءَایَـٰتࣱ مُّحۡكَمَـٰتٌ هُنَّ أُمُّ ٱلۡكِتَـٰبِ وَأُخَرُ مُتَشَـٰبِهَـٰتࣱۖ فَأَمَّا ٱلَّذِینَ فِی قُلُوبِهِمۡ زَیۡغࣱ فَیَتَّبِعُونَ مَا تَشَـٰبَهَ مِنۡهُ ٱبۡتِغَاۤءَ ٱلۡفِتۡنَةِ وَٱبۡتِغَاۤءَ تَأۡوِیلِهِۦۖ وَمَا یَعۡلَمُ تَأۡوِیلَهُۥۤ إِلَّا ٱللَّهُۗ وَٱلرَّ ٰ⁠سِخُونَ فِی ٱلۡعِلۡمِ یَقُولُونَ ءَامَنَّا بِهِۦ كُلࣱّ مِّنۡ عِندِ رَبِّنَاۗ وَمَا یَذَّكَّرُ إِلَّاۤ أُو۟لُوا۟ ٱلۡأَلۡبَـٰبِ ﴿7﴾

তিনি সেইজন যিনি তোমার কাছে নাযিল করেছেন এই কিতাব, তার মধ্যে কতকগুলো আয়াত নির্দেশা‌ত্মক -- সেইসব হচ্ছে গ্রন্থের ভিত্তি, আর অপরগুলো রূপক। তবে তাদের বেলা যাদের অন্তরে আছে কুটিলতা তারা অনুসরণ করে এর মধ্যের যেগুলো রূপক, বিরোধ সৃষ্টির কামনায় এবং এর ব্যাখ্যা দেবার প্রচেষ্টায়। আর এর ব্যাখ্যা আর কেউ জানে না আল্লাহ্ ছাড়া। আর যারা জ্ঞানে দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত তারা বলে -- ''আমরা এতে বিশ্বাস করি, এ-সবই আমাদের প্রভুর কাছ থেকে।’’ আর কেউ মনোযোগ দেয় না কেবল জ্ঞানবান ছাড়া।

رَبَّنَا لَا تُزِغۡ قُلُوبَنَا بَعۡدَ إِذۡ هَدَیۡتَنَا وَهَبۡ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحۡمَةًۚ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡوَهَّابُ ﴿8﴾

''আমাদের প্রভু! আমাদের অন্তরকে বিপথগামী করো না আমাদের হেদায়ত করার পরে, আর তোমার নিকট থেকে আমাদের করুণা প্রদান করো। নিঃসন্দেহ তুমি নিজেই পরম বদান্য।

رَبَّنَاۤ إِنَّكَ جَامِعُ ٱلنَّاسِ لِیَوۡمࣲ لَّا رَیۡبَ فِیهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُخۡلِفُ ٱلۡمِیعَادَ ﴿9﴾

''আমাদের প্রভু! অবশ্যই তুমি লোকজনকে সমবেত করতে যাচ্ছো এমন এক দিনের প্রতি যার সন্বন্ধে কোনোও সন্দেহ নেই।’’ নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ধার্য স্থান-কালের কখনো খেলাফ করেন না।

إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لَن تُغۡنِیَ عَنۡهُمۡ أَمۡوَ ٰ⁠لُهُمۡ وَلَاۤ أَوۡلَـٰدُهُم مِّنَ ٱللَّهِ شَیۡـࣰٔاۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمۡ وَقُودُ ٱلنَّارِ ﴿10﴾

যারা অবিশ্বাস পোষণ করে, নিঃসন্দেহ আর তারা নিজেরাই হচ্ছে আগুনের ইন্ধন --

كَدَأۡبِ ءَالِ فِرۡعَوۡنَ وَٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡۚ كَذَّبُوا۟ بِـَٔایَـٰتِنَا فَأَخَذَهُمُ ٱللَّهُ بِذُنُوبِهِمۡۗ وَٱللَّهُ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿11﴾

ফিরআউনের দলের সংগ্রামের মতো, এবং যারা তাদের পূর্ববর্তীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা আমাদের প্রত্যাদেশসমূহে মিথ্যারোপ করেছিল, তাই আল্লাহ্ তাদের পাকড়াও করেছিলেন তাদের অপরাধের জন্য। আর আল্লাহ্ প্রতিফল দানে কঠোর।

قُل لِّلَّذِینَ كَفَرُوا۟ سَتُغۡلَبُونَ وَتُحۡشَرُونَ إِلَىٰ جَهَنَّمَۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمِهَادُ ﴿12﴾

যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের বলো -- ''তোমরা শীঘ্রই পরাভূত হবে, আর তোমাদের তাড়িয়ে নেয়া হবে জাহান্নামের দিকে, আর মন্দ সেই বিশ্রামস্থান।’’

قَدۡ كَانَ لَكُمۡ ءَایَةࣱ فِی فِئَتَیۡنِ ٱلۡتَقَتَاۖ فِئَةࣱ تُقَـٰتِلُ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَأُخۡرَىٰ كَافِرَةࣱ یَرَوۡنَهُم مِّثۡلَیۡهِمۡ رَأۡیَ ٱلۡعَیۡنِۚ وَٱللَّهُ یُؤَیِّدُ بِنَصۡرِهِۦ مَن یَشَاۤءُۚ إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَعِبۡرَةࣰ لِّأُو۟لِی ٱلۡأَبۡصَـٰرِ ﴿13﴾

ইতিপূর্বে তোমাদের জন্য একটি নিদর্শন এসেছিল দুই সৈন্যদলের মুখোমুখি হওয়ায় -- একদল যুদ্ধ করছিল আল্লাহ্‌র পথে, আর অন্য দল অবিশ্বাসী, এরা চোখের দেখায় তাদের দেখেছিল নিজেদের দ্বিগুণ। আর আল্লাহ্ তাঁর সাহায্য দিয়ে মদদ করেন যাকে তিনি ইচ্ছে করেন। নিঃসন্দেহ এতে শিক্ষণীয় বিষয় আছে দৃষ্টিবানদের জন্য।

زُیِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ ٱلشَّهَوَ ٰ⁠تِ مِنَ ٱلنِّسَاۤءِ وَٱلۡبَنِینَ وَٱلۡقَنَـٰطِیرِ ٱلۡمُقَنطَرَةِ مِنَ ٱلذَّهَبِ وَٱلۡفِضَّةِ وَٱلۡخَیۡلِ ٱلۡمُسَوَّمَةِ وَٱلۡأَنۡعَـٰمِ وَٱلۡحَرۡثِۗ ذَ ٰ⁠لِكَ مَتَـٰعُ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَاۖ وَٱللَّهُ عِندَهُۥ حُسۡنُ ٱلۡمَـَٔابِ ﴿14﴾

মানুষের পক্ষে মনোরম ঠেকে নারীদের সাহচর্যের প্রতি আকর্ষণ, ও সন্তানসন্ততির, ও সোনারূপার জমানো ভান্ডারের, ও সুশিক্ষিত ঘোড়া ও গবাদি-পশুর ও ক্ষেতখামারের। এসব এই দুনিয়ার জীবনের উপকরণ, অথচ আল্লাহ্‌, -- তাঁর কাছে রয়েছে উত্তম নিভৃতে বিশ্রাম।

۞ قُلۡ أَؤُنَبِّئُكُم بِخَیۡرࣲ مِّن ذَ ٰ⁠لِكُمۡۖ لِلَّذِینَ ٱتَّقَوۡا۟ عِندَ رَبِّهِمۡ جَنَّـٰتࣱ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَا وَأَزۡوَ ٰ⁠جࣱ مُّطَهَّرَةࣱ وَرِضۡوَ ٰ⁠نࣱ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ بَصِیرُۢ بِٱلۡعِبَادِ ﴿15﴾

বলো -- ''তোমাদের কি এ-সবের চাইতে ভালো জিনিসের খবর দেব? যারা সুপথে চলে তাদের জন্য তাদের প্রভুর কাছে রয়েছ বাগানসমূহ, যাদের নীচে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ঝরনারাজি, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল, আর পবিত্র সঙ্গিসাথী, আর আল্লাহ্‌র সন্তষ্টি। আর আল্লাহ্ বান্দাদের পর্যবেক্ষক --

ٱلَّذِینَ یَقُولُونَ رَبَّنَاۤ إِنَّنَاۤ ءَامَنَّا فَٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ﴿16﴾

''যারা বলে -- 'আমাদের প্রভু! আমরা নিশ্চয়ই ঈমান এনেছি, অতএব আমাদের অপরাধ থেকে তুমি আমাদের ত্রাণ করো, আর আগুনের যাতনা থেকে আমাদের রক্ষা করো’।

ٱلصَّـٰبِرِینَ وَٱلصَّـٰدِقِینَ وَٱلۡقَـٰنِتِینَ وَٱلۡمُنفِقِینَ وَٱلۡمُسۡتَغۡفِرِینَ بِٱلۡأَسۡحَارِ ﴿17﴾

''ধৈর্যশীল, আর সত্যপরায়ণ আর অনুগত, আর দানশীল, আর প্রাতে পরিত্রাণ প্রার্থী।’’

شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ وَأُو۟لُوا۟ ٱلۡعِلۡمِ قَاۤىِٕمَۢا بِٱلۡقِسۡطِۚ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿18﴾

আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, আর ফিরিশ্‌তারাও, আর জ্ঞানের অধিকারীরা ন্যায়ে অধিষ্ঠিত হয়ে। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

إِنَّ ٱلدِّینَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَـٰمُۗ وَمَا ٱخۡتَلَفَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَهُمُ ٱلۡعِلۡمُ بَغۡیَۢا بَیۡنَهُمۡۗ وَمَن یَكۡفُرۡ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ سَرِیعُ ٱلۡحِسَابِ ﴿19﴾

নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌র কাছে ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। আর যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল তারা মতভেদ করে নি, শুধু তারা ব্যতীত যাদের কাছে জ্ঞানের বিষয় আসার পরেও নিজেদের মধ্যে ঈর্ষাবিদ্বেষ করেছিল, আর যে কেউ আল্লাহ্‌র নির্দেশের প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করে -- নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হিসেব-নিকেশে তৎপর।

فَإِنۡ حَاۤجُّوكَ فَقُلۡ أَسۡلَمۡتُ وَجۡهِیَ لِلَّهِ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِۗ وَقُل لِّلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡأُمِّیِّـۧنَ ءَأَسۡلَمۡتُمۡۚ فَإِنۡ أَسۡلَمُوا۟ فَقَدِ ٱهۡتَدَوا۟ۖ وَّإِن تَوَلَّوۡا۟ فَإِنَّمَا عَلَیۡكَ ٱلۡبَلَـٰغُۗ وَٱللَّهُ بَصِیرُۢ بِٱلۡعِبَادِ ﴿20﴾

কিন্তু যদি তারা তোমার সাথে হুজ্জত করে, তবে বলো -- ''আমি সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্‌র দিকে আমার মুখ রুজু করেছি, আর যারা আমায় অনুসরণ করে।’’ আর তাদের বলো যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে আর নিরক্ষরদের, ''তোমরা কি আ‌ত্মসমর্পণ করেছ?’’ অতএব যদি তারা আ‌ত্মসমর্পণ করে তবে অবশ্যই তারা হেদায়তপ্রাপ্ত হবে, আর যদি তারা ফিরে যায় তবে নিঃসন্দেহ তোমার উপরে হচ্ছে পৌঁছে দেয়া। আর আল্লাহ্ বান্দাদের দর্শক।

إِنَّ ٱلَّذِینَ یَكۡفُرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَیَقۡتُلُونَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ بِغَیۡرِ حَقࣲّ وَیَقۡتُلُونَ ٱلَّذِینَ یَأۡمُرُونَ بِٱلۡقِسۡطِ مِنَ ٱلنَّاسِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِیمٍ ﴿21﴾

নিঃসন্দেহ যারা আল্লাহ্‌র নির্দেশাবলীতে অবিশ্বাস পোষণ করে, আর নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করতে যায়, আর মানুষদের মধ্যে যারা ন্যায় প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেয় তাদের হত্যা করতে যায়, -- তাদের তুমি সংবাদ দাও ব্যথাময় যাতনার।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِینَ ﴿22﴾

এরাই তারা যাদের সব কাজ বৃথা হবে এই দুনিয়াতে ও আখেরাতে, আর তাদের জন্য সাহায্যকারীদের কেউ থাকবে না।

أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ نَصِیبࣰا مِّنَ ٱلۡكِتَـٰبِ یُدۡعَوۡنَ إِلَىٰ كِتَـٰبِ ٱللَّهِ لِیَحۡكُمَ بَیۡنَهُمۡ ثُمَّ یَتَوَلَّىٰ فَرِیقࣱ مِّنۡهُمۡ وَهُم مُّعۡرِضُونَ ﴿23﴾

তুমি কি তাদের দিকে চেয়ে দেখো নি যাদের কিতাবের কিছু অংশ দেয়া হয়েছে? তাদের আহ্বান করা হচ্ছে আল্লাহ্‌র কিতাবের দিকে, যেন ইহা তাদের মধ্যে মীমাংসা করতে পারে। তারপর তাদের মধ্যের একটি দল ফিরে গেল, ফলে তারা হল অগ্রাহ্যকারী।

ذَ ٰ⁠لِكَ بِأَنَّهُمۡ قَالُوا۟ لَن تَمَسَّنَا ٱلنَّارُ إِلَّاۤ أَیَّامࣰا مَّعۡدُودَ ٰ⁠تࣲۖ وَغَرَّهُمۡ فِی دِینِهِم مَّا كَانُوا۟ یَفۡتَرُونَ ﴿24﴾

এমন ছিল, কারণ তারা বলে -- ''আগুন আমাদের কদাচ স্পর্শ করবে না গুনতির কয়েকটি দিন ছাড়া।’’ আর তাদের ধর্মমতে তারা নিজেদের প্রতারণা করছে তারা যা জালিয়াতি করে চলেছে তার দ্বারা।

فَكَیۡفَ إِذَا جَمَعۡنَـٰهُمۡ لِیَوۡمࣲ لَّا رَیۡبَ فِیهِ وَوُفِّیَتۡ كُلُّ نَفۡسࣲ مَّا كَسَبَتۡ وَهُمۡ لَا یُظۡلَمُونَ ﴿25﴾

কাজেই কেমন হবে, যখন আমরা তাদের জমা করবো এমন এক দিনে যার সন্বন্ধে নেই কোনো সন্দেহ, এবং প্রত্যেক সত্ত্বাকে পুরোপুরি প্রতিদান করা হবে যা সে অর্জন করেছে, আর তাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না?

قُلِ ٱللَّهُمَّ مَـٰلِكَ ٱلۡمُلۡكِ تُؤۡتِی ٱلۡمُلۡكَ مَن تَشَاۤءُ وَتَنزِعُ ٱلۡمُلۡكَ مِمَّن تَشَاۤءُ وَتُعِزُّ مَن تَشَاۤءُ وَتُذِلُّ مَن تَشَاۤءُۖ بِیَدِكَ ٱلۡخَیۡرُۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿26﴾

বলো -- ''হে আল্লাহ্‌! সাম্রাজ্যের মালিক! তুমি যাকে ইচ্ছা কর তাকে সাম্রাজ্য প্রদান করো, আবার যার কাছ থেকে ইচ্ছা কর রাজত্ব ছিনিয়ে নাও, আর যাকে খুশী সম্মানিত করো, আবার যাকে খুশী অপমানিত করো, -- তোমার হাতেই রয়েছে কল্যাণ। নিঃসন্দেহ তুমি সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

تُولِجُ ٱلَّیۡلَ فِی ٱلنَّهَارِ وَتُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِی ٱلَّیۡلِۖ وَتُخۡرِجُ ٱلۡحَیَّ مِنَ ٱلۡمَیِّتِ وَتُخۡرِجُ ٱلۡمَیِّتَ مِنَ ٱلۡحَیِّۖ وَتَرۡزُقُ مَن تَشَاۤءُ بِغَیۡرِ حِسَابࣲ ﴿27﴾

''তুমি রাতকে প্রবেশ করাও দিনে, আবার দিনকে প্রবেশ করাও রাতে, আর প্রাণবানদের উদগত করো মৃত থেকে, আবার মৃতকে উদগত করো জীবন্ত থেকে, আর যাকে ইচ্ছা কর বেহিসাব রিযেক দান করো।’’

لَّا یَتَّخِذِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ أَوۡلِیَاۤءَ مِن دُونِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۖ وَمَن یَفۡعَلۡ ذَ ٰ⁠لِكَ فَلَیۡسَ مِنَ ٱللَّهِ فِی شَیۡءٍ إِلَّاۤ أَن تَتَّقُوا۟ مِنۡهُمۡ تُقَىٰةࣰۗ وَیُحَذِّرُكُمُ ٱللَّهُ نَفۡسَهُۥۗ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلۡمَصِیرُ ﴿28﴾

বিশ্বাসীরা যেন বিশ্বাসীদের বাদ দিয়ে অবিশ্বাসীদের বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। আর যে এমন করবে আল্লাহ্‌র কাছ থেকে কোনো কিছুই থাকবে না, তবে যদি তোমরা তাদের থেকে সতর্কতা স্বরূপ হুশিয়াঁর হতে চাও। আর আল্লাহ্ তোমাদের তাঁর সন্বন্ধে সাবধান করেছেন, আর আল্লাহ্‌র দিকেই শেষ গতি।

قُلۡ إِن تُخۡفُوا۟ مَا فِی صُدُورِكُمۡ أَوۡ تُبۡدُوهُ یَعۡلَمۡهُ ٱللَّهُۗ وَیَعۡلَمُ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿29﴾

বলো -- ''তোমাদের অন্তরে যা আছে তা লুকিয়ে রাখো, অথবা তা প্রকাশ করো, আল্লাহ্ তা জানেন। আর তিনি জানেন যা-কিছু আছে মহাকাশে ও যা-কিছু পৃথিবীতে। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।’’

یَوۡمَ تَجِدُ كُلُّ نَفۡسࣲ مَّا عَمِلَتۡ مِنۡ خَیۡرࣲ مُّحۡضَرࣰا وَمَا عَمِلَتۡ مِن سُوۤءࣲ تَوَدُّ لَوۡ أَنَّ بَیۡنَهَا وَبَیۡنَهُۥۤ أَمَدَۢا بَعِیدࣰاۗ وَیُحَذِّرُكُمُ ٱللَّهُ نَفۡسَهُۥۗ وَٱللَّهُ رَءُوفُۢ بِٱلۡعِبَادِ ﴿30﴾

সেদিন প্রত্যেক সত্ত্বা দেখতে পাবে ভালো যা সে করেছে তা হাজির করা হয়েছে, আর মন্দ যা সে করেছে তাও, সে চাইবে -- তার মধ্যে আর ওর মধ্যে যদি সুদীর্ঘ ব্যবধান থাকতো! কিন্তু আল্লাহ্ তোমাদের সাবধান করছেন তাঁর সন্বন্ধে। আর আল্লাহ্ স্নেহময়।

قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِی یُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَیَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿31﴾

বলো -- ''তোমরা যদি আল্লাহ্‌কে ভালোবাস তবে তোমরা আমায় অনুসরণ করো, তা হলে আল্লাহ্ তোমাদের ভালবাসবেন, আর তোমাদের পরিত্রাণ করবেন তোমাদের অপরাধ থেকে। কেননা আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।’’

قُلۡ أَطِیعُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَۖ فَإِن تَوَلَّوۡا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿32﴾

বলো -- ''আল্লাহ্‌র আজ্ঞানুবর্তী হও আর রসূলেরও।’’ কিন্তু যদি তারা ফিরে যায়, তবে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ অবিশ্বাসকারীদের ভালোবাসেন না।

۞ إِنَّ ٱللَّهَ ٱصۡطَفَىٰۤ ءَادَمَ وَنُوحࣰا وَءَالَ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ وَءَالَ عِمۡرَ ٰ⁠نَ عَلَى ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿33﴾

আল্লাহ্ নিশ্চয়ই আদম ও নূহ্ ও ইব্রাহীমের বংশধর, আর ইমরানের পরিবারকে মানবগোষ্ঠীর মধ্যে উচ্চ মর্যাদা দিয়েছিলেন,

ذُرِّیَّةَۢ بَعۡضُهَا مِنۢ بَعۡضࣲۗ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمٌ ﴿34﴾

এক বংশ পরম্পরা -- একের থেকে তাদের অন্যরা। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

إِذۡ قَالَتِ ٱمۡرَأَتُ عِمۡرَ ٰ⁠نَ رَبِّ إِنِّی نَذَرۡتُ لَكَ مَا فِی بَطۡنِی مُحَرَّرࣰا فَتَقَبَّلۡ مِنِّیۤۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلسَّمِیعُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿35﴾

স্মরণ করো! ইমরান বংশের একজন স্ত্রীলোক বললে -- ''আমার প্রভু! আমার গর্ভে যে আছে তাকে আমি তোমার জন্য মানত করলাম একান্তভাবে, অতএব আমার থেকে কবুল করো, নিঃসন্দেহ তুমি নিজেই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।’’

فَلَمَّا وَضَعَتۡهَا قَالَتۡ رَبِّ إِنِّی وَضَعۡتُهَاۤ أُنثَىٰ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِمَا وَضَعَتۡ وَلَیۡسَ ٱلذَّكَرُ كَٱلۡأُنثَىٰۖ وَإِنِّی سَمَّیۡتُهَا مَرۡیَمَ وَإِنِّیۤ أُعِیذُهَا بِكَ وَذُرِّیَّتَهَا مِنَ ٱلشَّیۡطَـٰنِ ٱلرَّجِیمِ ﴿36﴾

তারপর যখন সে তাকে প্রসব করলো, সে বললে -- ''প্রভু! আমি কিন্তু তাকে প্রসব করলাম একটি কন্যা!’’ আর আল্লাহ্ ভালো জানেন কি সে প্রসব করলো। আর, বেটাছেলে মেয়েছেলের মতো নয়। ''আর আমি তার নাম রাখলাম মরিয়ম, আর আমি অবশ্যই তোমার আশ্রয়ে তাকে রাখছি, আর তার সন্তানসন্ততিকেও, ভ্রষ্ট শয়তানের থেকে।’’

فَتَقَبَّلَهَا رَبُّهَا بِقَبُولٍ حَسَنࣲ وَأَنۢبَتَهَا نَبَاتًا حَسَنࣰا وَكَفَّلَهَا زَكَرِیَّاۖ كُلَّمَا دَخَلَ عَلَیۡهَا زَكَرِیَّا ٱلۡمِحۡرَابَ وَجَدَ عِندَهَا رِزۡقࣰاۖ قَالَ یَـٰمَرۡیَمُ أَنَّىٰ لَكِ هَـٰذَاۖ قَالَتۡ هُوَ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِۖ إِنَّ ٱللَّهَ یَرۡزُقُ مَن یَشَاۤءُ بِغَیۡرِ حِسَابٍ ﴿37﴾

অতএব তার প্রভু তাকে কবুল করলেন সুন্দর স্বীকৃতির সাথে, ফলে তাকে বর্ধিত করলেন সুন্দর বর্ধনে, আর তাকে সমর্পণ করলেন যাকারিয়ার অভিভাকত্বে। যখন যাকারিয়া তাকে দেখতে উপাসনাস্থলে প্রবেশ করতেন তিনি তার কাছে দেখতে পেতেন রিযেক। তিনি বললেন -- ''হে মরিয়ম! এ তোমার কাছে কোথা থেকে?’’ সে বললে -- ''এ আল্লাহ্‌র দরবার থেকে।’’ নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে করেন তাকে বেহিসাব রিযেক দান করেন।

هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِیَّا رَبَّهُۥۖ قَالَ رَبِّ هَبۡ لِی مِن لَّدُنكَ ذُرِّیَّةࣰ طَیِّبَةًۖ إِنَّكَ سَمِیعُ ٱلدُّعَاۤءِ ﴿38﴾

সঙ্গে-সঙ্গে সেইখানেই যাকারিয়া তাঁর প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! তোমার নিকট থেকে আমাকে একটি উত্তম সন্তান দাও। নিঃসন্দেহ তুমি প্রার্থনার শ্রোতা।’’

فَنَادَتۡهُ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ وَهُوَ قَاۤىِٕمࣱ یُصَلِّی فِی ٱلۡمِحۡرَابِ أَنَّ ٱللَّهَ یُبَشِّرُكَ بِیَحۡیَىٰ مُصَدِّقَۢا بِكَلِمَةࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَسَیِّدࣰا وَحَصُورࣰا وَنَبِیࣰّا مِّنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿39﴾

ফিরিশ্‌তারা তাঁকে ডেকে বললে আর তিনি তখন উপাসনাস্থলে নামাযে দাঁড়িয়েছিলেন -- ''আল্লাহ্ নিশ্চয়ই আপনাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন ইয়াহ্‌য়ার, আল্লাহ্‌র বাণীর সত্যতা প্রতিপন্ন করতে, আর সম্মানিত ও চরিত্রবান, আর সাধুপুরুষদের মধ্য থেকে একজন নবী।’’

قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ یَكُونُ لِی غُلَـٰمࣱ وَقَدۡ بَلَغَنِیَ ٱلۡكِبَرُ وَٱمۡرَأَتِی عَاقِرࣱۖ قَالَ كَذَ ٰ⁠لِكَ ٱللَّهُ یَفۡعَلُ مَا یَشَاۤءُ ﴿40﴾

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! কোথা থেকে আমার ছেলে হতে পারে, যখন ইতিপূর্বেই আমার কাছে বার্ধক্য এসে হাজির হয়েছে, আর আমার স্ত্রী বন্ধ্যা?’’ তিনি বললেন -- ''এইভাবেই, -- আল্লাহ্ তাই করেন যা তিনি চান।’’

قَالَ رَبِّ ٱجۡعَل لِّیۤ ءَایَةࣰۖ قَالَ ءَایَتُكَ أَلَّا تُكَلِّمَ ٱلنَّاسَ ثَلَـٰثَةَ أَیَّامٍ إِلَّا رَمۡزࣰاۗ وَٱذۡكُر رَّبَّكَ كَثِیرࣰا وَسَبِّحۡ بِٱلۡعَشِیِّ وَٱلۡإِبۡكَـٰرِ ﴿41﴾

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমার জন্য একটি নিদর্শন নির্ধারিত করো।’’ তিনি বললেন -- ''তোমার নিদর্শন হচ্ছে এই যে তুমি লোকজনের সাথে তিনদিন কথা বলবে না শুধু ইশারাতে ছাড়া, আর তোমার প্রভুকে খুব করে স্মরণ করো নিশাসমাগমে ও ভোরবেলা।’’

وَإِذۡ قَالَتِ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ یَـٰمَرۡیَمُ إِنَّ ٱللَّهَ ٱصۡطَفَىٰكِ وَطَهَّرَكِ وَٱصۡطَفَىٰكِ عَلَىٰ نِسَاۤءِ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿42﴾

আর স্মরণ করো! ফিরিশ্‌তারা বললেন -- ''হে মরিয়ম! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাকে নির্বাচন করেছেন, আর তোমায় পবিত্র করেছেন, আর বিশ্বজগতের সব নারীর উপরে তোমায় নির্বাচন করেছেন।

یَـٰمَرۡیَمُ ٱقۡنُتِی لِرَبِّكِ وَٱسۡجُدِی وَٱرۡكَعِی مَعَ ٱلرَّ ٰ⁠كِعِینَ ﴿43﴾

''হে মরিয়ম! তোমার প্রভুর অনুগত হয়ে থেকো, আর সিজদা করো ও রুকু করো রুকুকারীদের সাথে।’’

ذَ ٰ⁠لِكَ مِنۡ أَنۢبَاۤءِ ٱلۡغَیۡبِ نُوحِیهِ إِلَیۡكَۚ وَمَا كُنتَ لَدَیۡهِمۡ إِذۡ یُلۡقُونَ أَقۡلَـٰمَهُمۡ أَیُّهُمۡ یَكۡفُلُ مَرۡیَمَ وَمَا كُنتَ لَدَیۡهِمۡ إِذۡ یَخۡتَصِمُونَ ﴿44﴾

এ হচ্ছে অদৃশ্য বার্তাসমূহের থেকে যে-সব তোমার কাছে আমরা প্রত্যাদিষ্ট করছি। আর তুমি তাদের কাছে ছিলে না যখন তারা তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল তাদের মধ্যে কে মরিয়মের ভার নেবে সে সম্পর্কে, আর তুমি তাদের নিকটে ছিলে না যখন তারা পরস্পর বচসা করছিল।

إِذۡ قَالَتِ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ یَـٰمَرۡیَمُ إِنَّ ٱللَّهَ یُبَشِّرُكِ بِكَلِمَةࣲ مِّنۡهُ ٱسۡمُهُ ٱلۡمَسِیحُ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَ وَجِیهࣰا فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِ وَمِنَ ٱلۡمُقَرَّبِینَ ﴿45﴾

স্মরণ করো! ফিরিশ্‌তারা বললে -- ''হে মরিয়ম, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন তাঁর তরফ থেকে একটি বাণী দ্বারা -- তাঁর নাম হচ্ছে মসীহ্‌, মরিয়ম-পুত্র ঈসা, ইহকালে ও পরকালে সম্মানের যোগ্য, আর নৈকট্যে আনীতদের অন্তর্গত।

وَیُكَلِّمُ ٱلنَّاسَ فِی ٱلۡمَهۡدِ وَكَهۡلࣰا وَمِنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿46﴾

''আর তিনি লোকদের সাথে কথা বলবেন দোলনায় এবং বার্ধক্যকালে, আর তিনি সুকর্মীদের অন্যতম।’’

قَالَتۡ رَبِّ أَنَّىٰ یَكُونُ لِی وَلَدࣱ وَلَمۡ یَمۡسَسۡنِی بَشَرࣱۖ قَالَ كَذَ ٰ⁠لِكِ ٱللَّهُ یَخۡلُقُ مَا یَشَاۤءُۚ إِذَا قَضَىٰۤ أَمۡرࣰا فَإِنَّمَا یَقُولُ لَهُۥ كُن فَیَكُونُ ﴿47﴾

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! কোথা থেকে আমার ছেলে হবে যখন পুরুষমানুষ আমায় স্পর্শ করে নি?’’ তিনি বললেন -- ''এইভাবেই, -- আল্লাহ্ তাই সৃষ্টি করেন যা তিনি চান। তিনি যখন কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত করেন, তিনি তখন সে সন্বন্ধে শুধু বলেন -- ''হও’’ আর তা হয়ে যায়।

وَیُعَلِّمُهُ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَ ﴿48﴾

''আর তিনি তাঁকে শেখাবেন কিতাব ও জ্ঞানভান্ডার, আর তওরাত ও ইনজীল।

وَرَسُولًا إِلَىٰ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ أَنِّی قَدۡ جِئۡتُكُم بِـَٔایَةࣲ مِّن رَّبِّكُمۡ أَنِّیۤ أَخۡلُقُ لَكُم مِّنَ ٱلطِّینِ كَهَیۡـَٔةِ ٱلطَّیۡرِ فَأَنفُخُ فِیهِ فَیَكُونُ طَیۡرَۢا بِإِذۡنِ ٱللَّهِۖ وَأُبۡرِئُ ٱلۡأَكۡمَهَ وَٱلۡأَبۡرَصَ وَأُحۡیِ ٱلۡمَوۡتَىٰ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۖ وَأُنَبِّئُكُم بِمَا تَأۡكُلُونَ وَمَا تَدَّخِرُونَ فِی بُیُوتِكُمۡۚ إِنَّ فِی ذَ ٰ⁠لِكَ لَـَٔایَةࣰ لَّكُمۡ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿49﴾

''আর ইসরাইল বংশীয়দের জন্য রসূল। 'নিঃসন্দেহ আমি তোমাদের কাছে আসছি তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে একটি নিদর্শন নিয়ে, আমি অবশ্যই তোমাদের জন্য মাটি থেকে তৈরি করি পাখির মতো মূর্তি, তারপর তাতে আমি ফুৎকার দিই, তখন সেটি পাখি হয়ে যায় আল্লাহ্‌র ইচ্ছায়। আর আমি আরোগ্য করি অন্ধকে ও কুষ্ঠ রুগীকে, আর আমি জীবন দিই মৃতকে আল্লাহ্‌র ইচ্ছায়। আর আমি তোমাদের খবর দিই যেসব তোমরা খাবে আর যা তোমরা নিজেদের বাড়িতে মজুত রাখো। নিঃসন্দেহ এতে বিশেষ নিদর্শন আছে তোমাদের জন্য যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।

وَمُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیَّ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَلِأُحِلَّ لَكُم بَعۡضَ ٱلَّذِی حُرِّمَ عَلَیۡكُمۡۚ وَجِئۡتُكُم بِـَٔایَةࣲ مِّن رَّبِّكُمۡ فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُونِ ﴿50﴾

''আর তওরাতের যা-কিছু আমার কাছে ছিল আমি তার প্রতিপাদক, আর আমি যাতে তোমাদের জন্য বৈধ করতে পারি কোনো কোনো বিষয় যা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিল, আর আমি তোমাদের কাছে এসেছি তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে একটি বাণী নিয়ে, অতএব আল্লাহ্‌কে ভয়-শ্রদ্ধা করো ও আমার অনুগত হও।

إِنَّ ٱللَّهَ رَبِّی وَرَبُّكُمۡ فَٱعۡبُدُوهُۚ هَـٰذَا صِرَ ٰ⁠طࣱ مُّسۡتَقِیمࣱ ﴿51﴾

''নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ আমার প্রভু ও তোমাদেরও প্রভু, অতএব তাঁরই উপাসনা করো, -- এই হচ্ছে সহজ-সঠিক পথ।’’

۞ فَلَمَّاۤ أَحَسَّ عِیسَىٰ مِنۡهُمُ ٱلۡكُفۡرَ قَالَ مَنۡ أَنصَارِیۤ إِلَى ٱللَّهِۖ قَالَ ٱلۡحَوَارِیُّونَ نَحۡنُ أَنصَارُ ٱللَّهِ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَٱشۡهَدۡ بِأَنَّا مُسۡلِمُونَ ﴿52﴾

কিন্তু যখন ঈসা তাদের মধ্যে অবিশ্বাস বোধ করলেন, তিনি বললেন -- ''কারা আল্লাহ্‌র পথে আমার সাহায্যকারী হবে?’’ হাওয়ারীরা বললে -- ''আমরা আল্লাহ্‌র সাহায্যকারী হব, আমরা আল্লাহ্‌তে বিশ্বাস করি, আর তুমি সাক্ষ্য দাও যে আমরা হচ্ছি আ‌ত্মসমর্পণকারী।

رَبَّنَاۤ ءَامَنَّا بِمَاۤ أَنزَلۡتَ وَٱتَّبَعۡنَا ٱلرَّسُولَ فَٱكۡتُبۡنَا مَعَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ﴿53﴾

''আমাদের প্রভু! আমরা ঈমান এনেছি তাতে যা তুমি অবতারণ করেছ, আর আমরা রসূলকে অনুসরণ করি, অতএব আমাদের লিখে রাখ সাক্ষ্যদাতাদের সাথে।’’

وَمَكَرُوا۟ وَمَكَرَ ٱللَّهُۖ وَٱللَّهُ خَیۡرُ ٱلۡمَـٰكِرِینَ ﴿54﴾

আর তারা চক্রান্ত করেছিল, আর আল্লাহ্‌ও পরিকল্পনা করেছিলেন। আর আল্লাহ্ পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে সর্বোত্তম।

إِذۡ قَالَ ٱللَّهُ یَـٰعِیسَىٰۤ إِنِّی مُتَوَفِّیكَ وَرَافِعُكَ إِلَیَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَجَاعِلُ ٱلَّذِینَ ٱتَّبَعُوكَ فَوۡقَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤا۟ إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِۖ ثُمَّ إِلَیَّ مَرۡجِعُكُمۡ فَأَحۡكُمُ بَیۡنَكُمۡ فِیمَا كُنتُمۡ فِیهِ تَخۡتَلِفُونَ ﴿55﴾

স্মরণ করো! আল্লাহ্ বললেন -- ''হে ঈসা, আমি নিশ্চয়ই তোমার মৃত্যু ঘটাব, এবং আমি তোমাকে আমার দিকে উন্নীত করবো, আর তোমাকে পরিশোধিত করবো যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের থেকে, আর যারা তোমায় অনুসরণ করবে তাদের আমি স্থান দেবো যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের উপরে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত, এরপর আমারই কাছে তোমাদের প্রত্যাবর্তন স্থান, আর আমি তোমাদের মধ্যে বিচার করবো যে-বিষয়ে তোমরা মতভেদ করছিলে সেই বিষয়ে।

فَأَمَّا ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ فَأُعَذِّبُهُمۡ عَذَابࣰا شَدِیدࣰا فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِینَ ﴿56﴾

অতএব যারা অবিশ্বাস পোষণ করে আমি তাদের শাস্তি দেবো কঠোর শাস্তিতে এই দুনিয়াতে ও পরলোকে, আর তাদের জন্য সাহায্যকারীদের কেউ থাকবে না।

وَأَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَیُوَفِّیهِمۡ أُجُورَهُمۡۗ وَٱللَّهُ لَا یُحِبُّ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿57﴾

আর যারা ঈমান এনেছে ও সুকর্ম করেছে, তিনি তাদের প্রাপ্য পুরোপরি তাদের দেবেন। আর অন্যায়কারীদের আল্লাহ্ ভালোবাসেন না।

ذَ ٰ⁠لِكَ نَتۡلُوهُ عَلَیۡكَ مِنَ ٱلۡـَٔایَـٰتِ وَٱلذِّكۡرِ ٱلۡحَكِیمِ ﴿58﴾

এটিই যা আমি তোমার কাছে বর্ণনা করছি নির্দেশবাণী ও জ্ঞানময় স্মারক থেকে।

إِنَّ مَثَلَ عِیسَىٰ عِندَ ٱللَّهِ كَمَثَلِ ءَادَمَۖ خَلَقَهُۥ مِن تُرَابࣲ ثُمَّ قَالَ لَهُۥ كُن فَیَكُونُ ﴿59﴾

নিঃসন্দেহ ঈসার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আল্লাহ্‌র কাছে আদমের দৃষ্টান্তের মতো। তিনি তাঁকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি থেকে; তারপর তাঁকে বলেছিলেন -- ''হও’’ আর তিনি হয়ে গেলেন।

ٱلۡحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَلَا تَكُن مِّنَ ٱلۡمُمۡتَرِینَ ﴿60﴾

তোমার প্রভুর কাছ থেকে আসা ধ্রুবসত্য, কাজেই সংশয়ীদের দলভুক্ত হয়ো না।

فَمَنۡ حَاۤجَّكَ فِیهِ مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَكَ مِنَ ٱلۡعِلۡمِ فَقُلۡ تَعَالَوۡا۟ نَدۡعُ أَبۡنَاۤءَنَا وَأَبۡنَاۤءَكُمۡ وَنِسَاۤءَنَا وَنِسَاۤءَكُمۡ وَأَنفُسَنَا وَأَنفُسَكُمۡ ثُمَّ نَبۡتَهِلۡ فَنَجۡعَل لَّعۡنَتَ ٱللَّهِ عَلَى ٱلۡكَـٰذِبِینَ ﴿61﴾

অতএব যারা তোমার সাথে এ-বিষয়ে তর্ক করে তোমার কাছে জ্ঞানের যা এসেছে তার পরেও, তাহলে বলো -- ''এসো, আমরা ডেকে আনি আমাদের সন্তানদের ও তোমাদের সন্তানদের, আর আমাদের স্ত্রীলোকদের ও তোমাদের স্ত্রীলোকদের, আর আমাদের লোকজনকে ও তোমাদের লোকজনকে, তারপর কাতর প্রার্থনা করি যেন আল্লাহ্‌র অভিশাপ পড়ে মিথ্যাবাদীদের উপরে।’’

إِنَّ هَـٰذَا لَهُوَ ٱلۡقَصَصُ ٱلۡحَقُّۚ وَمَا مِنۡ إِلَـٰهٍ إِلَّا ٱللَّهُۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿62﴾

নিঃসন্দেহ এই হচ্ছে যথার্থ সত্য বিবৃতি, আর আল্লাহ্ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আর নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌, অবশ্যই তিনি মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

فَإِن تَوَلَّوۡا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمُۢ بِٱلۡمُفۡسِدِینَ ﴿63﴾

কিন্তু তারা যদি ফিরে যায়, তাহলে আল্লাহ্ ফসাদকারীদের সম্যক জ্ঞাতা।

قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ تَعَالَوۡا۟ إِلَىٰ كَلِمَةࣲ سَوَاۤءِۭ بَیۡنَنَا وَبَیۡنَكُمۡ أَلَّا نَعۡبُدَ إِلَّا ٱللَّهَ وَلَا نُشۡرِكَ بِهِۦ شَیۡـࣰٔا وَلَا یَتَّخِذَ بَعۡضُنَا بَعۡضًا أَرۡبَابࣰا مِّن دُونِ ٱللَّهِۚ فَإِن تَوَلَّوۡا۟ فَقُولُوا۟ ٱشۡهَدُوا۟ بِأَنَّا مُسۡلِمُونَ ﴿64﴾

বলো -- ''হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা, আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে পরস্পর সমঝোথার মাঝে এসো, যেন আমরা আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো এবাদত করবো না, আর তাঁর সাথে অন্য কিছুকে শরীক করবো না, আর আমরা কেউ আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে মনিব বলে গ্রহণ করবো না।’’ কিন্তু তারা যদি ফিরে যায় তবে বলো -- ''সাক্ষী থাকো, আমরা কিন্তু মুসলিম।’’

یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تُحَاۤجُّونَ فِیۤ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ وَمَاۤ أُنزِلَتِ ٱلتَّوۡرَىٰةُ وَٱلۡإِنجِیلُ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِهِۦۤۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ ﴿65﴾

হে গ্রন্থধারিগণ! তোমরা কেন ইব্রাহীম সন্বন্ধে হুজ্জত করো, অথচ তওরাত ও ইনজীল তাঁর পরে ছাড়া অবতীর্ণ হয় নি? তোমরা কি তাহলে বুঝো না?

هَـٰۤأَنتُمۡ هَـٰۤؤُلَاۤءِ حَـٰجَجۡتُمۡ فِیمَا لَكُم بِهِۦ عِلۡمࣱ فَلِمَ تُحَاۤجُّونَ فِیمَا لَیۡسَ لَكُم بِهِۦ عِلۡمࣱۚ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ﴿66﴾

দেখো! তোমরাই তারা যারা তর্ক করেছ যে-বিষয়ে তোমাদের জ্ঞান ছিল, তবে কেন তোমরা হুজ্জত করছো যে বিষয়ে তোমাদের সম্যক জ্ঞান নেই? আর আল্লাহ্ জানেন, অথচ তোমরা জানো না।

مَا كَانَ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمُ یَهُودِیࣰّا وَلَا نَصۡرَانِیࣰّا وَلَـٰكِن كَانَ حَنِیفࣰا مُّسۡلِمࣰا وَمَا كَانَ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ﴿67﴾

ইব্রাহীম ইহুদী ছিলেন না, খ্রীষ্টানও নহেন, বরং তিনি ছিলেন ঋজু স্বভাব, মুসলিম, আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।

إِنَّ أَوۡلَى ٱلنَّاسِ بِإِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ لَلَّذِینَ ٱتَّبَعُوهُ وَهَـٰذَا ٱلنَّبِیُّ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ۗ وَٱللَّهُ وَلِیُّ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿68﴾

নিঃসন্দেহ ইব্রাহীমের নিকটতম লোক ছিলেন যাঁরা তাঁকে অনুসরণ করে চলতেন, আর এই নবী, আর যারা ঈমান এনেছে। আর আল্লাহ্ বিশ্বাসীদের রক্ষাকারী বন্ধু।

وَدَّت طَّاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ لَوۡ یُضِلُّونَكُمۡ وَمَا یُضِلُّونَ إِلَّاۤ أَنفُسَهُمۡ وَمَا یَشۡعُرُونَ ﴿69﴾

গ্রন্থপ্রাপ্তদের একদল চায় তোমাদের বিপথগামী করতে, আর তারা বিপথে নেয় না নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকে, আর তারা উপলব্ধি করতে পারছে না।

یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تَكۡفُرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَأَنتُمۡ تَشۡهَدُونَ ﴿70﴾

হে গ্রন্থধারিগণ! কেন তোমরা আল্লাহ্‌র নির্দেশে অবিশ্বাস পোষণ করো, যখন তোমরা প্রত্যক্ষদর্শী?

یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تَلۡبِسُونَ ٱلۡحَقَّ بِٱلۡبَـٰطِلِ وَتَكۡتُمُونَ ٱلۡحَقَّ وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿71﴾

হে গ্রন্থধারিগণ! কেন তোমরা সত্যকে মিথ্যার পোশাক পরিয়ে দিচ্ছ, আর তোমরা জেনেশুনে সত্যকে লুকোচ্ছ?

وَقَالَت طَّاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ ءَامِنُوا۟ بِٱلَّذِیۤ أُنزِلَ عَلَى ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَجۡهَ ٱلنَّهَارِ وَٱكۡفُرُوۤا۟ ءَاخِرَهُۥ لَعَلَّهُمۡ یَرۡجِعُونَ ﴿72﴾

আর গ্রন্থপ্রাপ্তদের একদল বলে -- ''যারা ঈমান এনেছে তাদের কাছে যা নাযিল হয়েছে তাতে তোমরাও বিশ্বাস করো দিনের আগবেলায়, আর তার অপরাহে প্রত্যাখ্যান করো, যাতে তারাও ফিরে যায়।

وَلَا تُؤۡمِنُوۤا۟ إِلَّا لِمَن تَبِعَ دِینَكُمۡ قُلۡ إِنَّ ٱلۡهُدَىٰ هُدَى ٱللَّهِ أَن یُؤۡتَىٰۤ أَحَدࣱ مِّثۡلَ مَاۤ أُوتِیتُمۡ أَوۡ یُحَاۤجُّوكُمۡ عِندَ رَبِّكُمۡۗ قُلۡ إِنَّ ٱلۡفَضۡلَ بِیَدِ ٱللَّهِ یُؤۡتِیهِ مَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ وَ ٰ⁠سِعٌ عَلِیمࣱ ﴿73﴾

''তা ছাড়া যে তোমাদের ধর্ম অনুসরণ করে তাকে ছাড়া ঈমান এনো না।’’ তুমি বলো -- ''নিঃসন্দেহ হেদায়ত হচ্ছে আল্লাহ্‌র হেদায়ত, কাজেই তোমাদের যা দেয়া হয়েছিল তার মতো অন্যকে দেয়া হয়েছে, অথবা তারা তোমাদের প্রভুর সামনে তোমাদের উপরে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।’’ বলো -- ''নিঃসন্দেহ মহত্ত্ব আল্লাহ্‌র হাতে ন্যস্ত, তিনি তা দান করেন যাকে পছন্দ ক রেন। আর আল্লাহ্ মহাবদান্য, সর্বজ্ঞাতা।’’

یَخۡتَصُّ بِرَحۡمَتِهِۦ مَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ ذُو ٱلۡفَضۡلِ ٱلۡعَظِیمِ ﴿74﴾

তিনি তাঁর করুণাবশতঃ নির্বাচিত করেন যাকে পছন্দ করেন, আর আল্লাহ্ বিপুল মহিমার অধিকারী।

۞ وَمِنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ مَنۡ إِن تَأۡمَنۡهُ بِقِنطَارࣲ یُؤَدِّهِۦۤ إِلَیۡكَ وَمِنۡهُم مَّنۡ إِن تَأۡمَنۡهُ بِدِینَارࣲ لَّا یُؤَدِّهِۦۤ إِلَیۡكَ إِلَّا مَا دُمۡتَ عَلَیۡهِ قَاۤىِٕمࣰاۗ ذَ ٰ⁠لِكَ بِأَنَّهُمۡ قَالُوا۟ لَیۡسَ عَلَیۡنَا فِی ٱلۡأُمِّیِّـۧنَ سَبِیلࣱ وَیَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَ وَهُمۡ یَعۡلَمُونَ ﴿75﴾

আর গ্রন্থপ্রাপ্তদের মধ্যে এমন লোক আছে যার কাছে তুমি যদি একগাদা আমানত রাখো সে তোমাকে তা ফিরিয়ে দেবে, আর তাদের মধ্যে এমনও আছে যার কাছে যদি তুমি একটি দিনার গচ্ছিত রাখো সে তোমাকে তা ফিরিয়ে দেবে না, যদি না তুমি তার কাছে দাঁড়িয়ে থাকো। এইরূপ কারণ তারা বলে -- ''অক্ষরজ্ঞানহীনদের ব্যাপারে আমাদের কোনো পথ ধরে চলার দায়িত্ব নেই।’’ আর তারা আল্লাহ্ সন্বন্ধে মিথ্যারোপ করে, যদিও তারা জানে।

بَلَىٰۚ مَنۡ أَوۡفَىٰ بِعَهۡدِهِۦ وَٱتَّقَىٰ فَإِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿76﴾

হাঁ, যে কেউ তার অঙ্গীকার পালন করে ও ভয়-ভক্তি বজায় রেখে চলে, নিঃসন্দেহ তখন আল্লাহ্ মুত্তাকীদের ভালোবাসেন।

إِنَّ ٱلَّذِینَ یَشۡتَرُونَ بِعَهۡدِ ٱللَّهِ وَأَیۡمَـٰنِهِمۡ ثَمَنࣰا قَلِیلًا أُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَا خَلَـٰقَ لَهُمۡ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ وَلَا یُكَلِّمُهُمُ ٱللَّهُ وَلَا یَنظُرُ إِلَیۡهِمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ وَلَا یُزَكِّیهِمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿77﴾

নিঃসন্দেহ যারা আল্লাহ্‌র অঙ্গীকার ও তাদের প্রতি‌শ্রুতি স্বল্পমূল্যে বিক্রী করে দেয়, তারা -- পরকালে তাদের জন্য কোনো ভাগ থাকবে না, আর আল্লাহ্ তাদের সঙ্গে কথাও বলবেন না বা তাদের দিকে তাকাবেন না কিয়ামতের দিনে, আর তিনি তাদের শুদ্ধও করবেন না, আর তাদের জন্য থাকছে কঠোর যাতনা।

وَإِنَّ مِنۡهُمۡ لَفَرِیقࣰا یَلۡوُۥنَ أَلۡسِنَتَهُم بِٱلۡكِتَـٰبِ لِتَحۡسَبُوهُ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَمَا هُوَ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَیَقُولُونَ هُوَ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ وَمَا هُوَ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ وَیَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَ وَهُمۡ یَعۡلَمُونَ ﴿78﴾

আর নিশ্চয়ই তাদের মধ্যের একদল গ্রন্থপাঠে তাদের জিহ্বাকে পাকিয়ে-বাঁকিয়ে তোলে যেন তোমরা ভাবতে পারো তা গ্রন্থ থেকেই, অথচ তা গ্রন্থ থেকে নয়। আর তারা বলে -- ''ইহা আল্লাহ্‌র কাছ থেকে’’ যদিও উহা আল্লাহ্ থেকে নয়। আর তারা আল্লাহ্ সন্বন্ধে মিথ্যাকথা বলে, যদিও তারা জানে।

مَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن یُؤۡتِیَهُ ٱللَّهُ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحُكۡمَ وَٱلنُّبُوَّةَ ثُمَّ یَقُولَ لِلنَّاسِ كُونُوا۟ عِبَادࣰا لِّی مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلَـٰكِن كُونُوا۟ رَبَّـٰنِیِّـۧنَ بِمَا كُنتُمۡ تُعَلِّمُونَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَبِمَا كُنتُمۡ تَدۡرُسُونَ ﴿79﴾

কোনো মানবের জন্য এটি উচিত নয় যে আল্লাহ্ তাকে কিতাব, নির্দেশনামা ও নবুওৎ দেবেন, তারপর সে লোকদের বলবে -- “তোমরা আল্লাহ্‌কে ছেড়ে আমার উপাসনাকারী হও”, বরং -- ''তোমরা রব্বানী হও, কেননা তোমরা কিতাব শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছিলে ও অনুশীলন করে চলছিলে।’’

وَلَا یَأۡمُرَكُمۡ أَن تَتَّخِذُوا۟ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةَ وَٱلنَّبِیِّـۧنَ أَرۡبَابًاۗ أَیَأۡمُرُكُم بِٱلۡكُفۡرِ بَعۡدَ إِذۡ أَنتُم مُّسۡلِمُونَ ﴿80﴾

আর সে তোমাদের আদেশ করবে না যে তোমরা ফিরিশ্‌তাদের ও নবীদের প্রভুরূপে গ্রহণ করবে। সে কি তোমাদের আদেশ করবে অবিশ্বাসের দিকে, তোমরা মুসলিম হবার পরে?

وَإِذۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِیثَـٰقَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ لَمَاۤ ءَاتَیۡتُكُم مِّن كِتَـٰبࣲ وَحِكۡمَةࣲ ثُمَّ جَاۤءَكُمۡ رَسُولࣱ مُّصَدِّقࣱ لِّمَا مَعَكُمۡ لَتُؤۡمِنُنَّ بِهِۦ وَلَتَنصُرُنَّهُۥۚ قَالَ ءَأَقۡرَرۡتُمۡ وَأَخَذۡتُمۡ عَلَىٰ ذَ ٰ⁠لِكُمۡ إِصۡرِیۖ قَالُوۤا۟ أَقۡرَرۡنَاۚ قَالَ فَٱشۡهَدُوا۟ وَأَنَا۠ مَعَكُم مِّنَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ﴿81﴾

আর স্মরণ করো! আল্লাহ্ নবীদের মাধ্যমে অঙ্গীকার করেছিলেন -- ''নিঃসন্দেহ আমি তোমাদের কিতাব ও জ্ঞান ভান্ডার থেকে প্রদান করেছি, তারপর তোমাদের কাছে একজন রসূল আসবেন তোমাদের কাছে যা আছে তা প্রতিপাদন করেচ তোমরা নিশ্চয়ই তাঁর প্রতি ঈমান আনবে আর নিশ্চয় তাঁকে সাহায্য করবে।’’ তিনি বলেছিলেন -- ''তোমরা কি স্বীকার করলে ও এই ব্যাপারে আমার শর্ত গ্রহণ করলে?’’ তারা বলেছিল -- ''আমরা স্বীকার করলাম।’’ তিনি বললেন -- ''তবে তোমরা সাক্ষী থেকো, আর আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষ্যদাতাদের অন্যতম।’’

فَمَن تَوَلَّىٰ بَعۡدَ ذَ ٰ⁠لِكَ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ﴿82﴾

অতএব যে কেউ এরপর ফিরে যায়, তা হলে তারা নিজেরাই হচ্ছে পাপাচারী।

أَفَغَیۡرَ دِینِ ٱللَّهِ یَبۡغُونَ وَلَهُۥۤ أَسۡلَمَ مَن فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡعࣰا وَكَرۡهࣰا وَإِلَیۡهِ یُرۡجَعُونَ ﴿83﴾

তারা কি তবে আল্লাহ্‌র ধর্ম ছাড়া আর কিছু খুজঁছে? আর তাঁর প্রতি আ‌ত্মসমর্পণ করছে যে কেউ আছে মহাকাশমন্ডলে ও পৃথিবীতে -- স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়; আর তাঁর কাছেই তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।

قُلۡ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَمَاۤ أُنزِلَ عَلَیۡنَا وَمَاۤ أُنزِلَ عَلَىٰۤ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ وَإِسۡمَـٰعِیلَ وَإِسۡحَـٰقَ وَیَعۡقُوبَ وَٱلۡأَسۡبَاطِ وَمَاۤ أُوتِیَ مُوسَىٰ وَعِیسَىٰ وَٱلنَّبِیُّونَ مِن رَّبِّهِمۡ لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ أَحَدࣲ مِّنۡهُمۡ وَنَحۡنُ لَهُۥ مُسۡلِمُونَ ﴿84﴾

তুমি বলো -- ''আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ্‌তে আর যা আমাদের কাছে অবতীর্ণ হয়েছে, আর যা নাযিল হয়েছিল ইব্রাহীম ও ইসমাইল ও ইসহাক ও ইয়াকুব ও গোত্রদের কাছে, আর যা দেওয়া হয়েছিল মূসাকে ও ঈসাকে ও নবীদের তাঁদের প্রভুর তরফ থেকে। আমরা তাঁদের কোনো একজনের মধ্যেও পার্থক্য করি না, আর তাঁরই কাছে আমরা আ‌ত্মসমর্পণকারী।’’

وَمَن یَبۡتَغِ غَیۡرَ ٱلۡإِسۡلَـٰمِ دِینࣰا فَلَن یُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَـٰسِرِینَ ﴿85﴾

আর যে কেউ ইসলাম পরিত্যাগ করে অন্য কোনো ধর্ম অনুসরণ করে তা হলে তার কাছ থেকে কখনো তা কবুল করা হবে না। আর আখেরে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।

كَیۡفَ یَهۡدِی ٱللَّهُ قَوۡمࣰا كَفَرُوا۟ بَعۡدَ إِیمَـٰنِهِمۡ وَشَهِدُوۤا۟ أَنَّ ٱلرَّسُولَ حَقࣱّ وَجَاۤءَهُمُ ٱلۡبَیِّنَـٰتُۚ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿86﴾

আল্লাহ কেমন করে হেদায়ত করবেন সেই লোকদের যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের বিশ্বাস স্থাপনের পরেও, আর এই সাক্ষ্য দেবার পরেও যে এই রসূল সত্য, আর স্পষ্ট প্রমাণাবলী তাদের কাছে আসবার পরেও? আর অন্যায়কারী দলকে আল্লাহ্ হেদায়ত করেন না।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ جَزَاۤؤُهُمۡ أَنَّ عَلَیۡهِمۡ لَعۡنَةَ ٱللَّهِ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ وَٱلنَّاسِ أَجۡمَعِینَ ﴿87﴾

এরাই -- এদের প্রাপ্য এই যে এদের উপরে লানৎ হোক আল্লাহ্‌র ও ফিরিশ্‌তাদের ও মানুষের সম্মিলিতভাবে।

خَـٰلِدِینَ فِیهَا لَا یُخَفَّفُ عَنۡهُمُ ٱلۡعَذَابُ وَلَا هُمۡ یُنظَرُونَ ﴿88﴾

এতে তারা অবস্থান করবে। তাদের উপর থেকে যাতনা লাঘব করা হবে না, আর তারা বিরামও পাবে না।

إِلَّا ٱلَّذِینَ تَابُوا۟ مِنۢ بَعۡدِ ذَ ٰ⁠لِكَ وَأَصۡلَحُوا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمٌ ﴿89﴾

তারা ছাড়া যারা এরপর তওবা করে ও সংশোধন করে, কাজেই আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ بَعۡدَ إِیمَـٰنِهِمۡ ثُمَّ ٱزۡدَادُوا۟ كُفۡرࣰا لَّن تُقۡبَلَ تَوۡبَتُهُمۡ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلضَّاۤلُّونَ ﴿90﴾

নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের বিশ্বাস স্থাপনের পরে, তারপর অবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়ে যায়, তাদের তওবা কখনো কবুল করা হবে না; আর এরা নিজেরাই হচ্ছে পথভ্রষ্ট।

إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَمَاتُوا۟ وَهُمۡ كُفَّارࣱ فَلَن یُقۡبَلَ مِنۡ أَحَدِهِم مِّلۡءُ ٱلۡأَرۡضِ ذَهَبࣰا وَلَوِ ٱفۡتَدَىٰ بِهِۦۤۗ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِینَ ﴿91﴾

নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস পোষণ করে আর মারা যায় তারা অবিশ্বাসী থাকা অবস্থায়, তা হলে তাদের কোনো একজনের কাছ থেকে পৃথিবী ভরা সোনাও গ্রহণ করা হবে না, যদি সে তাই দিয়ে মুক্তি পেতে চায়। এরাই -- এদের জন্য ব্যথাদায়ক শাস্তি, আর এদের থাকবে না কোনো সাহায্যকারী।

لَن تَنَالُوا۟ ٱلۡبِرَّ حَتَّىٰ تُنفِقُوا۟ مِمَّا تُحِبُّونَۚ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِن شَیۡءࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِیمࣱ ﴿92﴾

তোমরা কখনো ধর্মনিষ্ঠ হতে পারবে না যে পর্যন্ত না তোমরা ব্যয় করো যা তোমরা ভালোবাস তা থেকে। আর তোমরা যে বস্তুই খরচ করবে, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।

۞ كُلُّ ٱلطَّعَامِ كَانَ حِلࣰّا لِّبَنِیۤ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ إِلَّا مَا حَرَّمَ إِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلُ عَلَىٰ نَفۡسِهِۦ مِن قَبۡلِ أَن تُنَزَّلَ ٱلتَّوۡرَىٰةُۚ قُلۡ فَأۡتُوا۟ بِٱلتَّوۡرَىٰةِ فَٱتۡلُوهَاۤ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿93﴾

সব রকম খাদ্য বৈধ ছিল ইসরাইলের বংশধরদের জন্যেও, -- সে-সব ছাড়া যা তওরাত অবতীর্ণ হবার আগে ইসরাইল নিজের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল। বলো -- ''তা হলে তওরাত নিয়ে এস আর তা পড়ো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’’

فَمَنِ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَ مِنۢ بَعۡدِ ذَ ٰ⁠لِكَ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿94﴾

অতএব যে কেউ এরপর আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে মিথ্যারোপ করে, তাহলে তারা নিজেরাই হচ্ছে অন্যায়কারী।

قُلۡ صَدَقَ ٱللَّهُۗ فَٱتَّبِعُوا۟ مِلَّةَ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ حَنِیفࣰاۖ وَمَا كَانَ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ﴿95﴾

বলো -- ''আল্লাহ্ সত্যকথা বলেন, কাজেই ঋজুস্বভাব ইব্রাহীমের ধর্ম অনুসরণ করো, আর তিনি বহুখোদাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।’’

إِنَّ أَوَّلَ بَیۡتࣲ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِی بِبَكَّةَ مُبَارَكࣰا وَهُدࣰى لِّلۡعَـٰلَمِینَ ﴿96﴾

নিঃসন্দেহ মানবজাতির জন্য প্রথম যে ভোজনালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা হচ্ছে বাক্কাতে, -- অশেষ কল্যাণময়, আর সব মানবগোষ্ঠীর জন্য পথপ্রদর্শক।

فِیهِ ءَایَـٰتُۢ بَیِّنَـٰتࣱ مَّقَامُ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَۖ وَمَن دَخَلَهُۥ كَانَ ءَامِنࣰاۗ وَلِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلۡبَیۡتِ مَنِ ٱسۡتَطَاعَ إِلَیۡهِ سَبِیلࣰاۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِیٌّ عَنِ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿97﴾

এতে আছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী -- মক্কামে ইব্রাহীম; আর যে কেউ এখানে প্রবেশ করবে সে হচ্ছে নিরাপদ, আর আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে এই গৃহে হজ করা মানবগোষ্ঠীর জন্য আবশ্যিক -- যারই সেখানকার পাথেয় অর্জনের ক্ষমতা আছে। আর যে অবিশ্বাস পোষণ করে -- তাহলে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সমস্ত সৃষ্ট জগতের থেকে স্বয়ং-সম্পূর্ণ।

قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تَكۡفُرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَٱللَّهُ شَهِیدٌ عَلَىٰ مَا تَعۡمَلُونَ ﴿98﴾

বলো -- ''হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা! কেন তোমরা আল্লাহ্‌র নির্দেশাবলীতে অবিশ্বাস পোষণ করো, অথচ আল্লাহ্ সাক্ষী রয়েছেন তোমরা যা করো তার?’’

قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لِمَ تَصُدُّونَ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِ مَنۡ ءَامَنَ تَبۡغُونَهَا عِوَجࣰا وَأَنتُمۡ شُهَدَاۤءُۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَـٰفِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُونَ ﴿99﴾

বলো -- ''হে গ্রন্থধারিগণ! কেন তোমরা যারা ঈমান এনেছে তাদের আল্লাহ্‌র পথ থেকে প্রতিরোধ করো, তোমরা তার বক্রতা খোঁজো, অথচ তোমরা সাক্ষী রয়েছ?’’ আর আল্লাহ্ গাফিল নন তোমরা যা করো সে-সন্বন্ধে মুসলিমদের বিরুদ্ধাচরণ করার কারসাজি আল্লাহ্‌র অগোচর থাকছে না।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِن تُطِیعُوا۟ فَرِیقࣰا مِّنَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ یَرُدُّوكُم بَعۡدَ إِیمَـٰنِكُمۡ كَـٰفِرِینَ ﴿100﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের কোনো এক দলের অনুবর্তী যদি তোমরা হও, তারা তোমাদের ফিরিয়ে নেবে অবিশ্বাসীদের দলে তোমাদের ঈমান আনার পরেও।

وَكَیۡفَ تَكۡفُرُونَ وَأَنتُمۡ تُتۡلَىٰ عَلَیۡكُمۡ ءَایَـٰتُ ٱللَّهِ وَفِیكُمۡ رَسُولُهُۥۗ وَمَن یَعۡتَصِم بِٱللَّهِ فَقَدۡ هُدِیَ إِلَىٰ صِرَ ٰ⁠طࣲ مُّسۡتَقِیمࣲ ﴿101﴾

কিন্তু কেমন করে তোমরা অবিশ্বাস পোষণ করো যখন তোমাদেরই কাছে আল্লাহ্‌র বাণীসমূহ পাঠ করা হচ্ছে, আর তোমাদের কাছে আছেন তাঁর রসূল? আর যে আল্লাহ্‌কে দৃঢ়ভাবে ধরে থাকে, নিশ্চয় সে তাহলে চালিত হয়েছে সহজ-সঠিক পথে।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ ﴿102﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্‌কে ভয়-শ্রদ্ধা করো যেমন তাঁকে ভয়ভক্তি করা উচিত, আর তোমরা প্রাণত্যাগ করো না আ‌ত্মসমর্পিত না হয়ে।

وَٱعۡتَصِمُوا۟ بِحَبۡلِ ٱللَّهِ جَمِیعࣰا وَلَا تَفَرَّقُوا۟ۚ وَٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ إِذۡ كُنتُمۡ أَعۡدَاۤءࣰ فَأَلَّفَ بَیۡنَ قُلُوبِكُمۡ فَأَصۡبَحۡتُم بِنِعۡمَتِهِۦۤ إِخۡوَ ٰ⁠نࣰا وَكُنتُمۡ عَلَىٰ شَفَا حُفۡرَةࣲ مِّنَ ٱلنَّارِ فَأَنقَذَكُم مِّنۡهَاۗ كَذَ ٰ⁠لِكَ یُبَیِّنُ ٱللَّهُ لَكُمۡ ءَایَـٰتِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ﴿103﴾

আর তোমরা সবে মিলে আল্লাহ্‌র রশি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো, আর বিচ্ছিন্ন হয়ো না, আর স্মরণ করো তোমাদের উপরে আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ, -- যথা তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু, তারপর তিনি তোমাদের হৃদয়ে সম্প্রীতি ঘটালেন, কাজেই তাঁর অনুগ্রহে তোমরা হলে ভাই-ভাই। আর তোমরা ছিলে এক আগুনের গর্তের কিনারে, তারপর তিনি তোমাদের তা থেকে বাঁচালেন। এইভাবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য তাঁর নির্দেশাবলী সুস্পষ্ট করেন যেন তোমরা পথের দিশা পাও।

وَلۡتَكُن مِّنكُمۡ أُمَّةࣱ یَدۡعُونَ إِلَى ٱلۡخَیۡرِ وَیَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَیَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِۚ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ﴿104﴾

আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি লোকদল হওয়া চাই যারা আহ্বান করবে কল্যাণের প্রতি, আর নির্দেশ দেবে ন্যায়পথের, আর নিষেধ করবে অন্যায় থেকে। আর এরা নিজেরাই হচ্ছে সফলকাম।

وَلَا تَكُونُوا۟ كَٱلَّذِینَ تَفَرَّقُوا۟ وَٱخۡتَلَفُوا۟ مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَهُمُ ٱلۡبَیِّنَـٰتُۚ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ عَذَابٌ عَظِیمࣱ ﴿105﴾

আর তাদের মতো হয়ো না যারা বিচ্ছিন্ন হয়েছিল আর মতভেদ করেছিল তাদের কাছে সুস্পষ্ট নির্দেশাবলী আসার পরেও। আর এরা -- এদের জন্য আছে কঠোর যন্ত্রণা, --

یَوۡمَ تَبۡیَضُّ وُجُوهࣱ وَتَسۡوَدُّ وُجُوهࣱۚ فَأَمَّا ٱلَّذِینَ ٱسۡوَدَّتۡ وُجُوهُهُمۡ أَكَفَرۡتُم بَعۡدَ إِیمَـٰنِكُمۡ فَذُوقُوا۟ ٱلۡعَذَابَ بِمَا كُنتُمۡ تَكۡفُرُونَ ﴿106﴾

যেদিন কতকগুলো চেহারা হবে ঝক্‌ঝকে আর কতকগুলো চেহারা হবে মিসমিসে, তারপর যাদের চেহারা কালো হবে তাদের ক্ষেত্রে -- ''তোমরা কি অবিশ্বাস পোষণ করেছিলে তোমাদের ঈমান আনার পরে? অতএব যন্ত্রণার আস্বাদ গ্রহণ করো যেহেতু তোমরা অবিশ্বাস পোষণ করছিলে।’’

وَأَمَّا ٱلَّذِینَ ٱبۡیَضَّتۡ وُجُوهُهُمۡ فَفِی رَحۡمَةِ ٱللَّهِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿107﴾

আর যাদের চেহারা ঝক্‌মকে হবে তাদের ক্ষেত্রে -- তারা থাকবে আল্লাহ্‌র করুণাসিন্ধুতে, এতে তারা থাকবে চিরকাল।

تِلۡكَ ءَایَـٰتُ ٱللَّهِ نَتۡلُوهَا عَلَیۡكَ بِٱلۡحَقِّۗ وَمَا ٱللَّهُ یُرِیدُ ظُلۡمࣰا لِّلۡعَـٰلَمِینَ ﴿108﴾

এইসব হছে আল্লাহ্‌র নির্দেশাবলী যা আমরা তোমার কাছে পাঠ করছি সত্যের সাথে। আর আল্লাহ্ কোনো প্রাণীর প্রতি অবিচার চান না।

وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ ﴿109﴾

আর যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে ও যা-কিছু পৃথিবীতে সে-সবই আল্লাহ্‌র। আর আল্লাহ্‌র কাছেই সব ব্যাপার ফিরে যায়।

كُنتُمۡ خَیۡرَ أُمَّةٍ أُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَتَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِۗ وَلَوۡ ءَامَنَ أَهۡلُ ٱلۡكِتَـٰبِ لَكَانَ خَیۡرࣰا لَّهُمۚ مِّنۡهُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَأَكۡثَرُهُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ﴿110﴾

তোমরা মানবগোষ্ঠীর জন্য এক শ্রেষ্ঠ সমাজরূপে উত্থিত হয়েছ, -- তোমরা ন্যায়ের পথে নির্দেশ দাও ও অন্যায় থেকে নিষেধ করো, আর আল্লাহ্‌তে বিশ্বাস রাখো। আর গ্রন্থপ্রাপ্তরাও যদি ঈমান আনতো তবে তাদের জন্য ভালো হতো! তাদের মধ্যে কেউ কেউ বিশ্বাসী, কিন্তু তাদের বেশির ভাগ দুষ্টলোক।

لَن یَضُرُّوكُمۡ إِلَّاۤ أَذࣰىۖ وَإِن یُقَـٰتِلُوكُمۡ یُوَلُّوكُمُ ٱلۡأَدۡبَارَ ثُمَّ لَا یُنصَرُونَ ﴿111﴾

তারা কখনো তোমাদের ক্ষতি করতে পারবে না কিঞ্চিৎ জ্বালাতন ছাড়া, আর যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ বাধায় তবে তারা তোমাদের দিকে পিঠ ফেরাবে, তারপর তাদের আর সাহায্য করা হবে না।

ضُرِبَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلذِّلَّةُ أَیۡنَ مَا ثُقِفُوۤا۟ إِلَّا بِحَبۡلࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَحَبۡلࣲ مِّنَ ٱلنَّاسِ وَبَاۤءُو بِغَضَبࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَضُرِبَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلۡمَسۡكَنَةُۚ ذَ ٰ⁠لِكَ بِأَنَّهُمۡ كَانُوا۟ یَكۡفُرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَیَقۡتُلُونَ ٱلۡأَنۢبِیَاۤءَ بِغَیۡرِ حَقࣲّۚ ذَ ٰ⁠لِكَ بِمَا عَصَوا۟ وَّكَانُوا۟ یَعۡتَدُونَ ﴿112﴾

তাদের উপরে লাঞ্ছনা হানা দেবে যেখানেই তারা থাকুক না কেন, যদি না আল্লাহ্‌-থেকে-আসা রশি দ্বারা বা মানুষ-থেকে- পাওয়া রশি, আর তারা আল্লাহ্‌র রোষ অর্জন করেছে, আর তাদের উপরে দুর্দশা হানা দেবে। তাই হয়েছে -- কেননা তারা আল্লাহ্‌র নির্দেশাবলী অমান্য করে চলেছিল, আর নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করতে যাচ্ছিল। তাই হয়, কারণ তারা অবাধ্য হয়েছিল আর তারা সীমা-লঙ্ঘন করেছিল।

۞ لَیۡسُوا۟ سَوَاۤءࣰۗ مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ أُمَّةࣱ قَاۤىِٕمَةࣱ یَتۡلُونَ ءَایَـٰتِ ٱللَّهِ ءَانَاۤءَ ٱلَّیۡلِ وَهُمۡ یَسۡجُدُونَ ﴿113﴾

তারা সবাই এক রকমের নয়। গ্রন্থপ্রাপ্তদের মধ্যে একদল আছে নিষ্ঠাবান, তারা আল্লাহ্‌র নির্দেশাবলী রাত্রিকালে পাঠ করে, আর তারা সিজদা করে।

یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَیَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَیَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَیُسَـٰرِعُونَ فِی ٱلۡخَیۡرَ ٰ⁠تِۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ مِنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿114﴾

তারা আল্লাহ্‌র প্রতি ও আখেরাতের দিনের প্রতি বিশ্বাস করে, আর তারা ন্যায়ের পথে নির্দেশ দেয় ও অন্যায় থেকে নিষেধ করে, আর তারা শুভকাজে পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে, আর এরা সাধুপুরুষদের অন্তর্ভুক্ত।

وَمَا یَفۡعَلُوا۟ مِنۡ خَیۡرࣲ فَلَن یُكۡفَرُوهُۗ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِٱلۡمُتَّقِینَ ﴿115﴾

আর তারা ভালোকাজের যা-কিছু করে তার সন্বন্ধে তাদের কখনো অস্বীকার করা হবে না। আর আল্লাহ্ ধর্মপরায়ণদের সন্বন্ধে ওয়াকিফহাল।

إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لَن تُغۡنِیَ عَنۡهُمۡ أَمۡوَ ٰ⁠لُهُمۡ وَلَاۤ أَوۡلَـٰدُهُم مِّنَ ٱللَّهِ شَیۡـࣰٔاۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُونَ ﴿116﴾

নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস পোষণ করে, তাদের ধনসম্পত্তি ও তাদের সন্তানসন্ততি আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে কোনোভাবেই তাদের কখনো লাভবান করবে না। আর এরাই হচ্ছে আগুনের বাসিন্দা, তারা সেখানে থাকবে দীর্ঘকাল।

مَثَلُ مَا یُنفِقُونَ فِی هَـٰذِهِ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا كَمَثَلِ رِیحࣲ فِیهَا صِرٌّ أَصَابَتۡ حَرۡثَ قَوۡمࣲ ظَلَمُوۤا۟ أَنفُسَهُمۡ فَأَهۡلَكَتۡهُۚ وَمَا ظَلَمَهُمُ ٱللَّهُ وَلَـٰكِنۡ أَنفُسَهُمۡ یَظۡلِمُونَ ﴿117﴾

দুনিয়ার এই জীবনে তারা যা খরচ করে তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে বাতাসের দৃষ্টান্তের মতো যাতে রয়েছে কনকনে ঠান্ডা, এ ঝাপটা দিল সেই লোকদের ফসলে যারা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছে, কাজেই এ ধ্বংস করে দিল তা। আর আল্লাহ্ তাদের প্রতি অন্যায় করেন নি, বরং তারা তাদের নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছে।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَتَّخِذُوا۟ بِطَانَةࣰ مِّن دُونِكُمۡ لَا یَأۡلُونَكُمۡ خَبَالࣰا وَدُّوا۟ مَا عَنِتُّمۡ قَدۡ بَدَتِ ٱلۡبَغۡضَاۤءُ مِنۡ أَفۡوَ ٰ⁠هِهِمۡ وَمَا تُخۡفِی صُدُورُهُمۡ أَكۡبَرُۚ قَدۡ بَیَّنَّا لَكُمُ ٱلۡـَٔایَـٰتِۖ إِن كُنتُمۡ تَعۡقِلُونَ ﴿118﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের নিজেদের লোক ছাড়া অন্যদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না; তারা অনিষ্ট সাধন করতে তোমাদের থেকে পশ্চাৎপদ হয় না। তোমাদের যা ক্লেশ দেয় তারা তা ভালোবাসে, তাদের মুখ থেকে ঘোর বিদ্বেষ ইতিমধ্যে নির্গত হচ্ছে। আর তাদের অন্তরে যা লুকোনো আছে তা আরও গুরুতর। তোমাদের জন্য নির্দেশাবলী সুস্পষ্ট করলাম, যদি তোমরা বুঝতে পারো।

هَـٰۤأَنتُمۡ أُو۟لَاۤءِ تُحِبُّونَهُمۡ وَلَا یُحِبُّونَكُمۡ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱلۡكِتَـٰبِ كُلِّهِۦ وَإِذَا لَقُوكُمۡ قَالُوۤا۟ ءَامَنَّا وَإِذَا خَلَوۡا۟ عَضُّوا۟ عَلَیۡكُمُ ٱلۡأَنَامِلَ مِنَ ٱلۡغَیۡظِۚ قُلۡ مُوتُوا۟ بِغَیۡظِكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿119﴾

তোমরাই বটে! তোমরা ঐ ওদের ভালোবাস, অথচ তারা তোমাদের ভালোবাসে না, তোমরা কিন্তু ধর্মগ্রন্থে বিশ্বাস করো, তার সবটাতে। আর যখন তারা তোমাদের সাথে দেখা করে তারা বলে -- ''আমরা ঈমান এনেছি’’; আর যখন তারা নিরিবিলি হয়, তোমাদের প্রতি আক্রোশে তারা আঙ্গুল কামড়ায়। তুমি বলো -- ''তোমাদের আক্রোশে মরে যাও। নিঃসন্দেহ বুকের মধ্যে কি আছে সে-সন্বন্ধে আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা।

إِن تَمۡسَسۡكُمۡ حَسَنَةࣱ تَسُؤۡهُمۡ وَإِن تُصِبۡكُمۡ سَیِّئَةࣱ یَفۡرَحُوا۟ بِهَاۖ وَإِن تَصۡبِرُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ لَا یَضُرُّكُمۡ كَیۡدُهُمۡ شَیۡـًٔاۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِمَا یَعۡمَلُونَ مُحِیطࣱ ﴿120﴾

যদি শুভ কিছু তোমাদের জন্য ঘটে তবে সেটা তাদের দুঃখ দেয়, আর যদি মন্দ কিছু তোমাদের পাকড়াও তবে তাতে তারা হয় পরমানন্দিত। আর যদি তোমরা ধৈর্যশীল ও ধর্মপরায়ণ হও তবে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের এতটুকু ক্ষতি করবে না। নিঃসন্দেহ তারা যা করছে তা আল্লাহ্ ঘিরে রয়েছেন।

وَإِذۡ غَدَوۡتَ مِنۡ أَهۡلِكَ تُبَوِّئُ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ مَقَـٰعِدَ لِلۡقِتَالِۗ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمٌ ﴿121﴾

আর স্মরণ করো তুমি ভোরে তোমার পরিজনদের কাছ থেকে যাত্রা করলে যুদ্ধের জন্য বিশ্বাসীদের অবস্থান নির্দ্ধারণ করতে। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

إِذۡ هَمَّت طَّاۤىِٕفَتَانِ مِنكُمۡ أَن تَفۡشَلَا وَٱللَّهُ وَلِیُّهُمَاۗ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿122﴾

স্মরণ করো! তোমাদের মধ্যে থেকে দুইটি দল ভীরুতা দেখাবার মনস্থ করেছিল, আর আল্লাহ্ ছিলেন তাদের উভয়ের অভিভাবক, আর আল্লাহ্‌র উপরেই তাহলে বিশ্বাসীদের নির্ভর করা উচিত।

وَلَقَدۡ نَصَرَكُمُ ٱللَّهُ بِبَدۡرࣲ وَأَنتُمۡ أَذِلَّةࣱۖ فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿123﴾

আর আল্লাহ্ ইতিপূর্বে তোমাদের সাহায্য করেছিলেন বদরে যখন তোমরা ছিলে দুর্দশাগ্রস্ত; অতএব আল্লাহ্‌র প্রতি ভয়-শ্রদ্ধা করো যেন তোমরা ধন্যবাদ দিতে পারো।

إِذۡ تَقُولُ لِلۡمُؤۡمِنِینَ أَلَن یَكۡفِیَكُمۡ أَن یُمِدَّكُمۡ رَبُّكُم بِثَلَـٰثَةِ ءَالَـٰفࣲ مِّنَ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ مُنزَلِینَ ﴿124﴾

স্মরণ করো! তুমি বিশ্বাসীদের বলেছিলে -- ''এইটি কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে তোমাদের প্রভু তোমাদের সাহায্য করুন নেমে আসা ফিরিশ্‌তাদের তিন হাজার দিয়ে?

بَلَىٰۤۚ إِن تَصۡبِرُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ وَیَأۡتُوكُم مِّن فَوۡرِهِمۡ هَـٰذَا یُمۡدِدۡكُمۡ رَبُّكُم بِخَمۡسَةِ ءَالَـٰفࣲ مِّنَ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةِ مُسَوِّمِینَ ﴿125﴾

''যথার্থ! যদি তোমরা ধৈর্যশীল ও ধর্মপরায়ণ হও, আর তারা তোমাদের উপরে এসে পড়ে প্রবল বেগে, -- তোমাদের প্রভু তোমাদের সাহায্য করেছিলেন প্রচন্ড আঘাতকারী পাঁচ হাজার ফিরিশ্‌তাদের দিয়ে।’’

وَمَا جَعَلَهُ ٱللَّهُ إِلَّا بُشۡرَىٰ لَكُمۡ وَلِتَطۡمَىِٕنَّ قُلُوبُكُم بِهِۦۗ وَمَا ٱلنَّصۡرُ إِلَّا مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ ٱلۡعَزِیزِ ٱلۡحَكِیمِ ﴿126﴾

আর আল্লাহ্ এটি করেন নি তোমাদের জন্য সুসংবাদ ব্যতীত, আর যাতে তোমাদের হৃদয় ইহাদ্বারা সান্তনা পায়। আর সাহায্য আসেনা শুধু আল্লাহ্‌র দরবার থেকে ছাড়া, মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী --

لِیَقۡطَعَ طَرَفࣰا مِّنَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤا۟ أَوۡ یَكۡبِتَهُمۡ فَیَنقَلِبُوا۟ خَاۤىِٕبِینَ ﴿127﴾

যেন তিনি যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের এক দলকে সংহার করতে পারেন, অথবা তাদের পরাভূত করতে পারেন, যেন তারা বিফলমনোরথ হয়ে ফিরে যায়।

لَیۡسَ لَكَ مِنَ ٱلۡأَمۡرِ شَیۡءٌ أَوۡ یَتُوبَ عَلَیۡهِمۡ أَوۡ یُعَذِّبَهُمۡ فَإِنَّهُمۡ ظَـٰلِمُونَ ﴿128﴾

এই ব্যাপারে তোমার আদৌ কোনো সংস্রব নেই যে তিনি তাদের প্রতি ফিরবেন, অথবা তাদের শাস্তি দেবেন, যদিও তারা নিঃসন্দেহ অন্যায়কারী।

وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ یَغۡفِرُ لِمَن یَشَاۤءُ وَیُعَذِّبُ مَن یَشَاۤءُۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿129﴾

আর মহাকাশমন্ডলে যা-কিছু আছে ও যা-কিছু আছে পৃথিবীতে সে-সবই আল্লাহ্‌র। তিনি যাকে ইচ্ছা করবেন পরিত্রাণ করবেন এবং যাকে ইচ্ছা করবেন শাস্তিও দেবেন। আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَأۡكُلُوا۟ ٱلرِّبَوٰۤا۟ أَضۡعَـٰفࣰا مُّضَـٰعَفَةࣰۖ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿130﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! সুদ গলাধঃকরণ করো না তাকে দ্বিগুণ ও বহুগুণিত করে; আর আল্লাহ্‌কে ভয়-শ্রদ্ধা করো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।

وَٱتَّقُوا۟ ٱلنَّارَ ٱلَّتِیۤ أُعِدَّتۡ لِلۡكَـٰفِرِینَ ﴿131﴾

আর সতর্কতা অবলন্বন করো সেই আগুন সন্বন্ধে যা তৈরি করা হয়েছে অবিশ্বাসীদের জন্য।

وَأَطِیعُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ لَعَلَّكُمۡ تُرۡحَمُونَ ﴿132﴾

আর আল্লাহ্ ও রসূলের প্রতি অনুগত হও, যেন তোমাদের করুণা দেখানো হয়।

۞ وَسَارِعُوۤا۟ إِلَىٰ مَغۡفِرَةࣲ مِّن رَّبِّكُمۡ وَجَنَّةٍ عَرۡضُهَا ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تُ وَٱلۡأَرۡضُ أُعِدَّتۡ لِلۡمُتَّقِینَ ﴿133﴾

আর তৎপর হও তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য এবং স্বর্গোদ্যানের জন্য যার বিস্তার হচ্ছে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবী জুড়ে -- তৈরী হয়েছে ধর্মপরায়ণদের জন্য --

ٱلَّذِینَ یُنفِقُونَ فِی ٱلسَّرَّاۤءِ وَٱلضَّرَّاۤءِ وَٱلۡكَـٰظِمِینَ ٱلۡغَیۡظَ وَٱلۡعَافِینَ عَنِ ٱلنَّاسِۗ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿134﴾

যারা খরচ করে সচ্ছল অবস্থায় ও অসচ্ছল অবস্থায়, আর যারা ক্রোধ সংবরণকারী, আর যারা লোকজনের প্রতি ক্ষমাশীল। আর আল্লাহ্ সৎকর্মীদের ভালোবাসেন, --

وَٱلَّذِینَ إِذَا فَعَلُوا۟ فَـٰحِشَةً أَوۡ ظَلَمُوۤا۟ أَنفُسَهُمۡ ذَكَرُوا۟ ٱللَّهَ فَٱسۡتَغۡفَرُوا۟ لِذُنُوبِهِمۡ وَمَن یَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ إِلَّا ٱللَّهُ وَلَمۡ یُصِرُّوا۟ عَلَىٰ مَا فَعَلُوا۟ وَهُمۡ یَعۡلَمُونَ ﴿135﴾

আর যারা, যখন কোনো গর্হিত কাজ করে বা নিজেদের প্রতি অন্যায় করে, তখন আল্লাহ্‌কে স্মরণ করে ও তাদের অপরধের জন্য পরিত্রাণ চায়, -- বস্তুতঃ আল্লাহ্ ছাড়া আর কে অপরাধ ক্ষমা করে? আর তারা যা করেছিল তাতে জেনেশুনে আঁকড়ে ধরে থাকে না।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ جَزَاۤؤُهُم مَّغۡفِرَةࣱ مِّن رَّبِّهِمۡ وَجَنَّـٰتࣱ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ وَنِعۡمَ أَجۡرُ ٱلۡعَـٰمِلِینَ ﴿136﴾

এরা? -- এদের পুরস্কার হচ্ছে এদের প্রভুর কাছ থেকে পরিত্রাণ ও স্বর্গোদ্যানসমূহ যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, সেখানে তারা থাকবে স্থায়ীভাবে, আর কর্মীবৃন্দের পুরস্কার কী চমৎকার!

قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِكُمۡ سُنَنࣱ فَسِیرُوا۟ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَٱنظُرُوا۟ كَیۡفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلۡمُكَذِّبِینَ ﴿137﴾

নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্বে বহু জীবনধারা গত হয়ে গেছে। অতএব পৃথিবীতে ভ্রমণ করো ও দেখো কেমন হয়েছিল মিথ্যারোপকারীদের পরিণাম।

هَـٰذَا بَیَانࣱ لِّلنَّاسِ وَهُدࣰى وَمَوۡعِظَةࣱ لِّلۡمُتَّقِینَ ﴿138﴾

এই হচ্ছে মানব জাতির জন্য সুস্পষ্ট ঘোষণা ও পথনির্দেশ ও উপদেশ -- ধর্মপরায়ণদের জন্য।

وَلَا تَهِنُوا۟ وَلَا تَحۡزَنُوا۟ وَأَنتُمُ ٱلۡأَعۡلَوۡنَ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿139﴾

অতএব দুর্বলচিত্ত হয়ো না ও অনুশোচনা করো না, কারণ তোমরাই হবে উচ্চপদস্থ যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।

إِن یَمۡسَسۡكُمۡ قَرۡحࣱ فَقَدۡ مَسَّ ٱلۡقَوۡمَ قَرۡحࣱ مِّثۡلُهُۥۚ وَتِلۡكَ ٱلۡأَیَّامُ نُدَاوِلُهَا بَیۡنَ ٱلنَّاسِ وَلِیَعۡلَمَ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَیَتَّخِذَ مِنكُمۡ شُهَدَاۤءَۗ وَٱللَّهُ لَا یُحِبُّ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿140﴾

যদি কোনো আঘাত তোমাদের পীড়া দিয়ে থাকে তবে তার সমান আঘাত পীড়া দিয়েছে দলকে। আর এইসব দিনগুলো আমরা লোকদের কাছে পালাক্রমে এনে থাকি যাতে আল্লাহ্ অবধারণ করতে পারেন তাদের যারা ঈমান এনেছে, আর যাতে তোমাদের মধ্যে থেকে সাক্ষী মনোনীত করতে পারেন। আর আল্লাহ্ অন্যায়কারীদের ভালোবাসেন না, --

وَلِیُمَحِّصَ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَیَمۡحَقَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿141﴾

আর যেন আল্লাহ্ বিমুক্ত করতে পারেন যারা ঈমান এনেছে তাদের, আর নিষ্ফল করতে পারেন অবিশ্বাসীদের।

أَمۡ حَسِبۡتُمۡ أَن تَدۡخُلُوا۟ ٱلۡجَنَّةَ وَلَمَّا یَعۡلَمِ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ جَـٰهَدُوا۟ مِنكُمۡ وَیَعۡلَمَ ٱلصَّـٰبِرِینَ ﴿142﴾

তোমরা কি বিবেচনা করছো যে তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করবে, অথচ আল্লাহ্ এখনো অবধারণ করেন নি তোমাদের মধ্যে কারা সংগ্রাম করেছে, আর যাচাই করেন নি কারা ধৈর্যশীল?

وَلَقَدۡ كُنتُمۡ تَمَنَّوۡنَ ٱلۡمَوۡتَ مِن قَبۡلِ أَن تَلۡقَوۡهُ فَقَدۡ رَأَیۡتُمُوهُ وَأَنتُمۡ تَنظُرُونَ ﴿143﴾

আর নিঃসন্দেহ তোমরা চেয়েছিলে মৃত্যুবরণ করতে -- তার সঙ্গে দেখা হবার আগে, এখন কিন্তু তোমরা তা দেখেছ, আর তোমরা দেখতে থাকো!

وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولࣱ قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِهِ ٱلرُّسُلُۚ أَفَإِی۟ن مَّاتَ أَوۡ قُتِلَ ٱنقَلَبۡتُمۡ عَلَىٰۤ أَعۡقَـٰبِكُمۡۚ وَمَن یَنقَلِبۡ عَلَىٰ عَقِبَیۡهِ فَلَن یَضُرَّ ٱللَّهَ شَیۡـࣰٔاۗ وَسَیَجۡزِی ٱللَّهُ ٱلشَّـٰكِرِینَ ﴿144﴾

আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নন। নিঃসন্দেহ তাঁর পূর্বে রসূলগণ গত হয়ে গেছেন। অতএব তিনি যদি মারা যান অথবা তাঁকে কাতল করা হয় তাহলে কি তোমরা তোমাদের গোড়ালির উপরে মোড় ফেরাবে? আর যে কেউ তার গোড়ালির উপরে মোড় ফেরে সে কিন্তু, আর আল্লাহ্ অচিরেই পুরস্কার দেবেন কৃতজ্ঞদের।

وَمَا كَانَ لِنَفۡسٍ أَن تَمُوتَ إِلَّا بِإِذۡنِ ٱللَّهِ كِتَـٰبࣰا مُّؤَجَّلࣰاۗ وَمَن یُرِدۡ ثَوَابَ ٱلدُّنۡیَا نُؤۡتِهِۦ مِنۡهَا وَمَن یُرِدۡ ثَوَابَ ٱلۡـَٔاخِرَةِ نُؤۡتِهِۦ مِنۡهَاۚ وَسَنَجۡزِی ٱلشَّـٰكِرِینَ ﴿145﴾

আর কোনো লোকের পক্ষে তার মরে যাওয়া চলে না আল্লাহ্‌র অনুমতি ব্যতীত, লিপিবদ্ধ থাকা নির্ধারিত সময় অনুসারে। আর যে কেউ ইহজীবনের পুরস্কার কামনা করে আমরা তাকে তা’ থেকে আদায় করি, আর যে কেউ চায় পরলোকের পুরস্কার আমরা তাকেও তা থেকে প্রদান করি। আর আমরা অচিরেই পুরস্কৃত করবো কৃতজ্ঞদের।

وَكَأَیِّن مِّن نَّبِیࣲّ قَـٰتَلَ مَعَهُۥ رِبِّیُّونَ كَثِیرࣱ فَمَا وَهَنُوا۟ لِمَاۤ أَصَابَهُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَمَا ضَعُفُوا۟ وَمَا ٱسۡتَكَانُوا۟ۗ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلصَّـٰبِرِینَ ﴿146﴾

আর আরো কত নবী যুদ্ধ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে ছিল প্রভুর অনুগত বহু লোক, আর আল্লাহ্‌র পথে তাদের উপরে যা বর্তেছিল তার জন্য তারা অবসাদগ্রস্ত হয় নি, আর তারা দুর্বলও হয় নি, আর তারা নিজেদের হীনও করে নি। আর আল্লাহ্ ভালোবাসেন ধৈর্যশীলদের।

وَمَا كَانَ قَوۡلَهُمۡ إِلَّاۤ أَن قَالُوا۟ رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسۡرَافَنَا فِیۤ أَمۡرِنَا وَثَبِّتۡ أَقۡدَامَنَا وَٱنصُرۡنَا عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿147﴾

আর তাদের বক্তব্য এই বলা ছাড়া অন্য কিছু ছিল না -- ''আমাদের প্রভু! ক্ষমা করো আমাদের সব অপরাধ ও আমাদের কাজকর্মে আমাদের সমস্ত অমিতাচার, আর দৃঢ় করো আমাদের পদক্ষেপ, আর আমাদের সাহায্য করো অবিশ্বাসী দলের বিরুদ্ধে।’’

فَـَٔاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ ثَوَابَ ٱلدُّنۡیَا وَحُسۡنَ ثَوَابِ ٱلۡـَٔاخِرَةِۗ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿148﴾

কাজেই আল্লাহ্ তাদের দিয়েছিলেন ইহজীবনের পুরস্কার, আর পরলোকের পুরস্কার আরো চমৎকার! আর আল্লাহ্ ভালোবাসেন সৎকর্মীদের।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِن تُطِیعُوا۟ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ یَرُدُّوكُمۡ عَلَىٰۤ أَعۡقَـٰبِكُمۡ فَتَنقَلِبُوا۟ خَـٰسِرِینَ ﴿149﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তোমরা যদি তাদের অনুগত হও তবে তারা তোমাদের গোড়ালির উপরে তোমাদের মোড় ফিরিয়ে দেবে, ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফিরবে।

بَلِ ٱللَّهُ مَوۡلَىٰكُمۡۖ وَهُوَ خَیۡرُ ٱلنَّـٰصِرِینَ ﴿150﴾

না, আল্লাহ্ তোমাদের রক্ষাকারী বন্ধু, আর তিনি সাহায্যকারীদের মধ্যে সর্বোত্তম।

سَنُلۡقِی فِی قُلُوبِ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ ٱلرُّعۡبَ بِمَاۤ أَشۡرَكُوا۟ بِٱللَّهِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِهِۦ سُلۡطَـٰنࣰاۖ وَمَأۡوَىٰهُمُ ٱلنَّارُۖ وَبِئۡسَ مَثۡوَى ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿151﴾

যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের হৃদয়ে আমরা অচিরেই ভীতি নিক্ষেপ করবো, কেননা তারা আল্লাহ্‌র সাথে শরীক করেছিল যার জন্য তিনি কোনো বিধান অবতারণ করেন নি, ফলে তাদের বাসস্থান হচ্ছে আগুন, আর অন্যায়কারীদের বাসস্থান মন্দ বটে!

وَلَقَدۡ صَدَقَكُمُ ٱللَّهُ وَعۡدَهُۥۤ إِذۡ تَحُسُّونَهُم بِإِذۡنِهِۦۖ حَتَّىٰۤ إِذَا فَشِلۡتُمۡ وَتَنَـٰزَعۡتُمۡ فِی ٱلۡأَمۡرِ وَعَصَیۡتُم مِّنۢ بَعۡدِ مَاۤ أَرَىٰكُم مَّا تُحِبُّونَۚ مِنكُم مَّن یُرِیدُ ٱلدُّنۡیَا وَمِنكُم مَّن یُرِیدُ ٱلۡـَٔاخِرَةَۚ ثُمَّ صَرَفَكُمۡ عَنۡهُمۡ لِیَبۡتَلِیَكُمۡۖ وَلَقَدۡ عَفَا عَنكُمۡۗ وَٱللَّهُ ذُو فَضۡلٍ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿152﴾

আর নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ইতিপূর্বে তোমাদের কাছে তাঁর অঙ্গীকার পালন করেছিলেন যখন তোমরা তাঁর ইচ্ছায় তাদের টুকরো- টুকরো করছিলে, যতক্ষণ না তোমরা দুর্বলচিত্ত হয়ে পড়লে, আর তোমরা আদেশ সন্বন্ধে বিরোধ করলে ও অবাধ্য হলে যা তোমরা ভালোবাস তা তোমাদের দেখাবার পরে। তোমাদের মধ্যে কেউ ছিল যারা এই দুনিয়া চাচ্ছিল, আর তোমাদের মধ্যে কেউ ছিল যারা পরকাল চাচ্ছিল, তারপর তিনি তোমাদের তাদের থেকে পলায়নপর করলেন যেন তিনি তোমাদের শাসন করতে পারেন। আর তিনি নিঃসন্দেহ তোমাদের অপরাধ মার্জনা করলেন। আর আল্লাহ্ বিশ্বাসীদের প্রতি অশেষ কৃপাময়।

۞ إِذۡ تُصۡعِدُونَ وَلَا تَلۡوُۥنَ عَلَىٰۤ أَحَدࣲ وَٱلرَّسُولُ یَدۡعُوكُمۡ فِیۤ أُخۡرَىٰكُمۡ فَأَثَـٰبَكُمۡ غَمَّۢا بِغَمࣲّ لِّكَیۡلَا تَحۡزَنُوا۟ عَلَىٰ مَا فَاتَكُمۡ وَلَا مَاۤ أَصَـٰبَكُمۡۗ وَٱللَّهُ خَبِیرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ ﴿153﴾

স্মরণ করো! তোমরা পাহাড়ে উঠছিলে আর কারো দিকে ভ্রক্ষেপ করছিলে না, আর রসূল তোমাদের পিছন থেকে তোমাদের ডাকছিলেন, কাজেই তিনি তোমাদের এক বিষাদের উপরে আরেক বিষাদ উপহার দিলেন, যেন তোমরা অনুশোচনা না করো যা তোমাদের থেকে ফসকে গেছে, আর যা তোমাদের উপরে বর্তেছে তার জন্যেও না। আর তোমরা যা করো সে- সন্বন্ধে আল্লাহ্ চির-ওয়াকিফহাল।

ثُمَّ أَنزَلَ عَلَیۡكُم مِّنۢ بَعۡدِ ٱلۡغَمِّ أَمَنَةࣰ نُّعَاسࣰا یَغۡشَىٰ طَاۤىِٕفَةࣰ مِّنكُمۡۖ وَطَاۤىِٕفَةࣱ قَدۡ أَهَمَّتۡهُمۡ أَنفُسُهُمۡ یَظُنُّونَ بِٱللَّهِ غَیۡرَ ٱلۡحَقِّ ظَنَّ ٱلۡجَـٰهِلِیَّةِۖ یَقُولُونَ هَل لَّنَا مِنَ ٱلۡأَمۡرِ مِن شَیۡءࣲۗ قُلۡ إِنَّ ٱلۡأَمۡرَ كُلَّهُۥ لِلَّهِۗ یُخۡفُونَ فِیۤ أَنفُسِهِم مَّا لَا یُبۡدُونَ لَكَۖ یَقُولُونَ لَوۡ كَانَ لَنَا مِنَ ٱلۡأَمۡرِ شَیۡءࣱ مَّا قُتِلۡنَا هَـٰهُنَاۗ قُل لَّوۡ كُنتُمۡ فِی بُیُوتِكُمۡ لَبَرَزَ ٱلَّذِینَ كُتِبَ عَلَیۡهِمُ ٱلۡقَتۡلُ إِلَىٰ مَضَاجِعِهِمۡۖ وَلِیَبۡتَلِیَ ٱللَّهُ مَا فِی صُدُورِكُمۡ وَلِیُمَحِّصَ مَا فِی قُلُوبِكُمۡۚ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿154﴾

তারপর বিষাদের পরে তিনি তোমাদের উপরে বর্ষণ করলেন নিরাপত্তা, তোমাদের একদলের উপরে নেমে এল প্রশান্তি, আর অন্য এক দলের নিজেদের মন তাদের উৎকতি করেছিল, তারা আল্লাহ্ সন্বন্ধে অজ্ঞানতাকালীন সন্দেহপ্রবণতায় সন্দিহান হয়েছিল অসঙ্গতভাবে। তারা বলছিল -- ''এই ব্যাপারে আমাদের কি কোনো কিছু আছে?’’ বলো -- ''নিঃসন্দেহ ব্যাপারটি সর্বতোভাবে আল্লাহ্‌র।’’ তারা তাদের নিজেদের মধ্যে যা লুকিয়ে রেখেছে তা তোমার কাছে প্রকাশ করছে না, তারা বলছিল -- ''এই ব্যাপারে যদি আমাদের কিছু থাকতো তবে এখানে আমাদের কাতল করা হতো না।’’ তুমি বলো -- ''তোমরা যদি তোমাদের বাড়ির ভিতরেও থাকতে তথাপি যাদের জন্য প্রাণঘাত লিখিত হয়েছে তারা নিশ্চয়ই তাদের নির্ধারিত-স্থলে গিয়ে হাজির হতো।’’ আর আল্লাহ্ যেন যাচাই করতে পারেন কি আছে তোমাদের বুকের ভেতরে, আর যেন নিংড়ে বের করে দিতে পারেন যা আছে তোমাদের অন্তরে। আর বুকের ভেতরে যা আছে সে-সন্বন্ধে আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা।

إِنَّ ٱلَّذِینَ تَوَلَّوۡا۟ مِنكُمۡ یَوۡمَ ٱلۡتَقَى ٱلۡجَمۡعَانِ إِنَّمَا ٱسۡتَزَلَّهُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ بِبَعۡضِ مَا كَسَبُوا۟ۖ وَلَقَدۡ عَفَا ٱللَّهُ عَنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ حَلِیمࣱ ﴿155﴾

নিঃসন্দেহ যেদিন দুই সৈন্যদল পরস্পর সম্মুখীন হয়েছিল সেদিন তোমাদের মধ্যে যারা পলায়নপর হলে, তাদের পদস্খলন করেছিল শয়তান যেহেতু তারা কিছু কামিয়েছিল, আর অবশ্য আল্লাহ্ তাদের মার্জনা করলেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অতি অমায়িক।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَكُونُوا۟ كَٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَقَالُوا۟ لِإِخۡوَ ٰ⁠نِهِمۡ إِذَا ضَرَبُوا۟ فِی ٱلۡأَرۡضِ أَوۡ كَانُوا۟ غُزࣰّى لَّوۡ كَانُوا۟ عِندَنَا مَا مَاتُوا۟ وَمَا قُتِلُوا۟ لِیَجۡعَلَ ٱللَّهُ ذَ ٰ⁠لِكَ حَسۡرَةࣰ فِی قُلُوبِهِمۡۗ وَٱللَّهُ یُحۡیِۦ وَیُمِیتُۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِیرࣱ ﴿156﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তাদের মতো হয়ো না যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছে, আর যারা তাদের ভাইদের বলে যখন তারা দেশে পরিভ্রমণ করে অথবা অভিযানে লিপ্ত হয় -- ''তারা যদি আমাদের সাথে থাকতো তবে তারা মারা পড়তো না বা তাদের কাতল করা হতো না।’’ পরিণামে আল্লাহ্ এটি তাদের অন্তরে আক্ষেপের বিষয় করেছেন। আর আল্লাহ্ জীবনদান করেন ও মৃত্যু ঘটান। আর তোমরা যা করছো আল্লাহ্ তার দর্শক।

وَلَىِٕن قُتِلۡتُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ أَوۡ مُتُّمۡ لَمَغۡفِرَةࣱ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَحۡمَةٌ خَیۡرࣱ مِّمَّا یَجۡمَعُونَ ﴿157﴾

আর যদি আল্লাহ্‌র পথে তোমাদের হত্যা করা হয় অথবা তোমরা মারা যাও, -- নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌র কাছ থেকে পরিত্রাণলাভ ও করুণাপ্রাপ্তি তারা যা জমা করে তার চাইতে উৎকৃষ্টতর।

وَلَىِٕن مُّتُّمۡ أَوۡ قُتِلۡتُمۡ لَإِلَى ٱللَّهِ تُحۡشَرُونَ ﴿158﴾

আর যদি তোমরা মারাই যাও বা তোমাদের কাতল করা হয়, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌র কাছে তোমাদের একত্রিত করা হবে।

فَبِمَا رَحۡمَةࣲ مِّنَ ٱللَّهِ لِنتَ لَهُمۡۖ وَلَوۡ كُنتَ فَظًّا غَلِیظَ ٱلۡقَلۡبِ لَٱنفَضُّوا۟ مِنۡ حَوۡلِكَۖ فَٱعۡفُ عَنۡهُمۡ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ وَشَاوِرۡهُمۡ فِی ٱلۡأَمۡرِۖ فَإِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُتَوَكِّلِینَ ﴿159﴾

তারপর আল্লাহ্‌র করুণার ফলেই তুমি তাদের প্রতি কোমল হয়েছিলে। আর তুমি যদি রুক্ষ ও কঠোর-হৃদয় হতে তবে নিঃসন্দেহ তারা তোমার চারপাশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। অতএব তাদের অপরাধ মার্জনা করো, আর তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো, আর তাদের সঙ্গে কাজেকর্মে পরামর্শ করো। আর যখন সংকল্প গ্রহণ করেছ তখন আল্লাহ্‌র উপরে নির্ভর করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভালোবাসেন নির্ভরশীলদের।

إِن یَنصُرۡكُمُ ٱللَّهُ فَلَا غَالِبَ لَكُمۡۖ وَإِن یَخۡذُلۡكُمۡ فَمَن ذَا ٱلَّذِی یَنصُرُكُم مِّنۢ بَعۡدِهِۦۗ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿160﴾

যদি আল্লাহ্ তোমাদের সাহায্য করেন তবে কেউ তোমাদের পরাভূত করতে পারবে না, আর যদি তিনি তোমাদের পরিত্যাগ করেন তবে তাঁর পরে আর কে আছে যে তোমাদের সাহায্য করতে পারে? আর আল্লাহ্‌র উপরেই তাহলে বিশ্বাসীদের নির্ভর করা উচিত।

وَمَا كَانَ لِنَبِیٍّ أَن یَغُلَّۚ وَمَن یَغۡلُلۡ یَأۡتِ بِمَا غَلَّ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۚ ثُمَّ تُوَفَّىٰ كُلُّ نَفۡسࣲ مَّا كَسَبَتۡ وَهُمۡ لَا یُظۡلَمُونَ ﴿161﴾

আর কোনো নবীর পক্ষে এটি নয় যে তিনি প্রতারণা করবেন। আর যে কেউ প্রতারণা করে সে যা-কিছু প্রতারণা করেছে তা কিয়ামতের দিনে নিয়ে আসবে। তারপর প্রত্যেক সত্ত্বাকে পুরোপুরি দেয়া হবে যা সে অর্জন করেছে, আর তাদের অন্যায় করা হবে না।

أَفَمَنِ ٱتَّبَعَ رِضۡوَ ٰ⁠نَ ٱللَّهِ كَمَنۢ بَاۤءَ بِسَخَطࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَمَأۡوَىٰهُ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِیرُ ﴿162﴾

কি! যে আল্লাহ্‌র সন্তষ্টির অনুবর্তী সে কি তার মতো যে আল্লাহ্‌র কাছ থেকে অসন্তোষ আনয়ন করেছে ও যার ঠাঁই হচ্ছে জাহান্নাম? আর জঘন্য সেই গন্তব্যস্থল!

هُمۡ دَرَجَـٰتٌ عِندَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ بَصِیرُۢ بِمَا یَعۡمَلُونَ ﴿163﴾

আল্লাহ্‌র কাছে তাদের স্তরভেদ আছে। আর তারা যা করছে আল্লাহ্ তার দর্শক।

لَقَدۡ مَنَّ ٱللَّهُ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ إِذۡ بَعَثَ فِیهِمۡ رَسُولࣰا مِّنۡ أَنفُسِهِمۡ یَتۡلُوا۟ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتِهِۦ وَیُزَكِّیهِمۡ وَیُعَلِّمُهُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَإِن كَانُوا۟ مِن قَبۡلُ لَفِی ضَلَـٰلࣲ مُّبِینٍ ﴿164﴾

নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ বিশ্বাসীদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলেন যখন তিনি তাদের কাছে তাদের মধ্য থেকে দাঁড় করালেন একজন রসূল যিনি তাঁর নির্দেশাবলী তাদের কাছে পাঠ করেন ও তাদের পরিশোধিত করেন ও তাদের কিতাব ও জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা দেন; যদিও এর আগে নিঃসন্দেহ তারা ছিল স্পষ্ট ভুলের মধ্যে।

أَوَلَمَّاۤ أَصَـٰبَتۡكُم مُّصِیبَةࣱ قَدۡ أَصَبۡتُم مِّثۡلَیۡهَا قُلۡتُمۡ أَنَّىٰ هَـٰذَاۖ قُلۡ هُوَ مِنۡ عِندِ أَنفُسِكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿165﴾

কি! যখন কোনো দুর্যোগ তোমাদের উপরে ঘটলো, ইতিপূর্বে তোমরা আঘাত করেছিলে এর দ্বিগুণ পরিমাণ, তোমরা বলতে থাকলে -- ''এ কোথা থেকে?’’ বলো -- ''এসব তোমাদের নিজেদের থেকে।’’ নিশ্চয় আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

وَمَاۤ أَصَـٰبَكُمۡ یَوۡمَ ٱلۡتَقَى ٱلۡجَمۡعَانِ فَبِإِذۡنِ ٱللَّهِ وَلِیَعۡلَمَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿166﴾

আর যেদিন দুই সৈন্যদল মুখোমুখি হয়েছিল সেদিন যা তোমাদের উপরে ঘটেছিল তা আল্লাহ্‌র জ্ঞাতসারে, আব যেন তিনি বিশ্বাসীদের জানতে পারেন,

وَلِیَعۡلَمَ ٱلَّذِینَ نَافَقُوا۟ۚ وَقِیلَ لَهُمۡ تَعَالَوۡا۟ قَـٰتِلُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ أَوِ ٱدۡفَعُوا۟ۖ قَالُوا۟ لَوۡ نَعۡلَمُ قِتَالࣰا لَّٱتَّبَعۡنَـٰكُمۡۗ هُمۡ لِلۡكُفۡرِ یَوۡمَىِٕذٍ أَقۡرَبُ مِنۡهُمۡ لِلۡإِیمَـٰنِۚ یَقُولُونَ بِأَفۡوَ ٰ⁠هِهِم مَّا لَیۡسَ فِی قُلُوبِهِمۡۚ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِمَا یَكۡتُمُونَ ﴿167﴾

আর যেন তিনি জানতে পারেন তাদের যারা কপটতা করে, আর তাদের বলা হয়েছিল -- ''এসো, আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করো, অথবা আ‌ত্মরক্ষা করো।’’ তারা বলেছিল -- ''আমরা যদি যুদ্ধ করতে জানতাম তবে আমরা নিঃসন্দেহ তোমাদের অনুসরণ করতাম।’’ সেদিন তারা ঈমানের চাইতে অবিশ্বাসের নিকটতর হয়েছিল। তারা তাদের মুখ দিয়ে বলছিল যা তাদের অন্তরে ছিল না, আর আল্লাহ্ ভালো জানেন যা তারা লুকোচ্ছে।

ٱلَّذِینَ قَالُوا۟ لِإِخۡوَ ٰ⁠نِهِمۡ وَقَعَدُوا۟ لَوۡ أَطَاعُونَا مَا قُتِلُوا۟ۗ قُلۡ فَٱدۡرَءُوا۟ عَنۡ أَنفُسِكُمُ ٱلۡمَوۡتَ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿168﴾

তারা বাড়িতে বসে থেকে তাদের ভাইদের সন্বন্ধে বলেছিল -- ''তারা যদি আমাদের কথা শুনতো তবে তাদের কাতল করা হতো না।’’ বলো -- ''তাহলে নিজেদের থেকে তোমরা মৃত্যুকে ঠেকাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’’

وَلَا تَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِینَ قُتِلُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ أَمۡوَ ٰ⁠تَۢاۚ بَلۡ أَحۡیَاۤءٌ عِندَ رَبِّهِمۡ یُرۡزَقُونَ ﴿169﴾

আর যাদের আল্লাহ্‌র পথে হত্যা করা হয়েছে তাদের মৃত ভেবো না, বরং তাদের প্রভুর দরবারে জীবন্ত, তাদের রিযেক দেওয়া হবে,

فَرِحِینَ بِمَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ وَیَسۡتَبۡشِرُونَ بِٱلَّذِینَ لَمۡ یَلۡحَقُوا۟ بِهِم مِّنۡ خَلۡفِهِمۡ أَلَّا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿170﴾

আল্লাহ্ তাঁর করুণাভান্ডার থেকে তাদের যা দিয়েছেন সেজন্যে খুশিতে ডগমগ, আর তারা আনন্দ করবে তাদের জন্য যারা তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি তাদের পশ্চাদভাগ থেকে, কেননা তাদের উপরে কোনো ভয় নেই আর তারা অনুতাপও করবে না।

۞ یَسۡتَبۡشِرُونَ بِنِعۡمَةࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَضۡلࣲ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَا یُضِیعُ أَجۡرَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿171﴾

তারা আনন্দ করবে আল্লাহ্‌র কাছ থেকে অনুগ্রহের জন্য এবং করুণাভান্ডারের জন্য, আর নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ বিশ্বাসীদের প্রাপ্য বিফল করেন না।

ٱلَّذِینَ ٱسۡتَجَابُوا۟ لِلَّهِ وَٱلرَّسُولِ مِنۢ بَعۡدِ مَاۤ أَصَابَهُمُ ٱلۡقَرۡحُۚ لِلَّذِینَ أَحۡسَنُوا۟ مِنۡهُمۡ وَٱتَّقَوۡا۟ أَجۡرٌ عَظِیمٌ ﴿172﴾

যারা আল্লাহ্ ও রসূলের আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল তাদের উপরে দুর্যোগ ঘটার পরে, -- তাদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে ও ভয়শ্রদ্ধা করে তাদের জন্য আছে বিরাট পুরস্কার।

ٱلَّذِینَ قَالَ لَهُمُ ٱلنَّاسُ إِنَّ ٱلنَّاسَ قَدۡ جَمَعُوا۟ لَكُمۡ فَٱخۡشَوۡهُمۡ فَزَادَهُمۡ إِیمَـٰنࣰا وَقَالُوا۟ حَسۡبُنَا ٱللَّهُ وَنِعۡمَ ٱلۡوَكِیلُ ﴿173﴾

লোকেরা যাদের বলেছিল -- ''নিঃসন্দেহ তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েৎ হয়েছে, অতএব তাদের ভয় করো।’’ কিন্তু তাদের ঈমান বেড়ে গেল, আর তারা বললে -- ''আল্লাহ্ আমাদের জন্য যথেষ্ট ও তিনি অতি উত্তম রক্ষাকর্তা।’’

فَٱنقَلَبُوا۟ بِنِعۡمَةࣲ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَضۡلࣲ لَّمۡ یَمۡسَسۡهُمۡ سُوۤءࣱ وَٱتَّبَعُوا۟ رِضۡوَ ٰ⁠نَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ ذُو فَضۡلٍ عَظِیمٍ ﴿174﴾

সুতরাং তারা ফিরে এল আল্লাহ্‌র কাছ থেকে নিয়ামত ও করুণাভান্ডার নিয়ে, কোনো অনিষ্ট তাদের স্পর্শ করে নি, বস্তুতঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রসন্নতার অনুগমন করেছিল। আর আল্লাহ্ অফুরন্ত করুণাভান্ডারের মালিক।

إِنَّمَا ذَ ٰ⁠لِكُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ یُخَوِّفُ أَوۡلِیَاۤءَهُۥ فَلَا تَخَافُوهُمۡ وَخَافُونِ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿175﴾

নিঃসন্দেহ তোমাদের সেই শয়তানই ভয় দেখায় তার বন্ধুবান্ধবকে, কিন্তু তোমরা তাদের ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় করো, -- যদি তোমরা ঈমানদার হও।

وَلَا یَحۡزُنكَ ٱلَّذِینَ یُسَـٰرِعُونَ فِی ٱلۡكُفۡرِۚ إِنَّهُمۡ لَن یَضُرُّوا۟ ٱللَّهَ شَیۡـࣰٔاۗ یُرِیدُ ٱللَّهُ أَلَّا یَجۡعَلَ لَهُمۡ حَظࣰّا فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ عَظِیمٌ ﴿176﴾

আর যারা অবিশ্বাসের প্রতি ধাবিত হয় তারা যেন তোমাকে দুঃখিত না করে, নিঃসন্দেহ তারা আল্লাহ্‌র কোনো ক্ষতি করতে পারে না। আল্লাহ্ চান যে আখেরাতে তাদের জন্য লাভের কিছুই থাকুক না, আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।

إِنَّ ٱلَّذِینَ ٱشۡتَرَوُا۟ ٱلۡكُفۡرَ بِٱلۡإِیمَـٰنِ لَن یَضُرُّوا۟ ٱللَّهَ شَیۡـࣰٔاۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿177﴾

নিঃসন্দেহ যারা ঈমানের বিনিময়ে অবিশ্বাস কিনেছে তারা আল্লাহ্‌র কোনো ক্ষতি করতে পারবে না; আর তাদের জন্য রয়েছে ন্তন্ত শাস্তি।

وَلَا یَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤا۟ أَنَّمَا نُمۡلِی لَهُمۡ خَیۡرࣱ لِّأَنفُسِهِمۡۚ إِنَّمَا نُمۡلِی لَهُمۡ لِیَزۡدَادُوۤا۟ إِثۡمࣰاۖ وَلَهُمۡ عَذَابࣱ مُّهِینࣱ ﴿178﴾

আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা যেন না ভাবে যে আমরা তাদের যে বিরাম দিয়েছি তা তাদের নিজেদের ভালোর জন্য। নিঃসন্দেহ আমরা তাদের অবকাশ দিই যেন তারা পাপের মাত্রা বাড়িয়ে তুলে, আর তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।

مَّا كَانَ ٱللَّهُ لِیَذَرَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ عَلَىٰ مَاۤ أَنتُمۡ عَلَیۡهِ حَتَّىٰ یَمِیزَ ٱلۡخَبِیثَ مِنَ ٱلطَّیِّبِۗ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِیُطۡلِعَكُمۡ عَلَى ٱلۡغَیۡبِ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ یَجۡتَبِی مِن رُّسُلِهِۦ مَن یَشَاۤءُۖ فَـَٔامِنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦۚ وَإِن تُؤۡمِنُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ فَلَكُمۡ أَجۡرٌ عَظِیمࣱ ﴿179﴾

তোমরা যে অবস্থায় আছ সে অবস্থায় আল্লাহ্ কোনোক্রমেই বিশ্বাসীদের ফেলে রাখবেন না, যে পর্যন্ত না তিনি ভালোদের থেকে মন্দদের পৃথক করেন। আর আল্লাহ্ অদৃশ্য সন্বন্ধে তোমাদের কাছে গোচরীভূত করবেন না, তবে আল্লাহ্ তাঁর রসূলদের মধ্যে থেকে যাঁকে ইচ্ছা করেন নির্বাচিত করেন। অতএব আল্লাহ্‌তে ও তাঁর রসূলগণে ঈমান আনো। আর যদি তোমরা বিশ্বাস করো ও ভয়শ্রদ্ধা করো তবে তোমাদের জন্য রয়েছে বিরাট পুরস্কার।

وَلَا یَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِینَ یَبۡخَلُونَ بِمَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ هُوَ خَیۡرࣰا لَّهُمۖ بَلۡ هُوَ شَرࣱّ لَّهُمۡۖ سَیُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُوا۟ بِهِۦ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۗ وَلِلَّهِ مِیرَ ٰ⁠ثُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣱ ﴿180﴾

আর আল্লাহ্ তাঁর করুণাভান্ডার থেকে তাদের যা দান করেছেন সে-বিষয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন না ভাবে যে তা তাদের জন্য ভালো। না, তা তাদের জন্য মন্দ। যে বিষয়ে তারা কঞ্জুসি করে তা কিয়ামতের দিনে তাদের গলায় ঝুলানো থাকবে। আর মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর উত্তরাধিকার আল্লাহ্‌র। আর যা তোমরা করো আল্লাহ্ তার পূর্ণ ওয়াকিফহাল।

لَّقَدۡ سَمِعَ ٱللَّهُ قَوۡلَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤا۟ إِنَّ ٱللَّهَ فَقِیرࣱ وَنَحۡنُ أَغۡنِیَاۤءُۘ سَنَكۡتُبُ مَا قَالُوا۟ وَقَتۡلَهُمُ ٱلۡأَنۢبِیَاۤءَ بِغَیۡرِ حَقࣲّ وَنَقُولُ ذُوقُوا۟ عَذَابَ ٱلۡحَرِیقِ ﴿181﴾

আল্লাহ্ অবশ্যই শুনেছেন তাদের কথা যারা বলেছিল -- ''নিশ্চয় আল্লাহ্ গরিব, আর আমরা ধনী।’’ কাজেই আমরা লিখে রাখবো তারা যা বলে ও তাদের অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করতে যাওয়া; আর আমরা বলবো -- ''পোড়ার যন্ত্রণার স্বাদ গ্রহণ করো।

ذَ ٰ⁠لِكَ بِمَا قَدَّمَتۡ أَیۡدِیكُمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَیۡسَ بِظَلَّامࣲ لِّلۡعَبِیدِ ﴿182﴾

''এ তার জন্য যা তোমাদের নিজ হাত আগ বাড়িয়েছে, আর যেহেতু আল্লাহ্ বান্দাদের প্রতি জালিম নন।’’

ٱلَّذِینَ قَالُوۤا۟ إِنَّ ٱللَّهَ عَهِدَ إِلَیۡنَاۤ أَلَّا نُؤۡمِنَ لِرَسُولٍ حَتَّىٰ یَأۡتِیَنَا بِقُرۡبَانࣲ تَأۡكُلُهُ ٱلنَّارُۗ قُلۡ قَدۡ جَاۤءَكُمۡ رُسُلࣱ مِّن قَبۡلِی بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ وَبِٱلَّذِی قُلۡتُمۡ فَلِمَ قَتَلۡتُمُوهُمۡ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿183﴾

যারা বলেছিল -- ''নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ আমাদের কাছে অঙ্গীকার করেছেন যে আমরা কোনো রসূলের প্রতি ঈমান আনবো না যে পর্যন্ত না তিনি আমাদের কাছে এমন কুরবানি আনেন যাকে আগুন পুড়িয়ে থাকে।’’ তুমি বলো -- ''নিশ্চয়ই আমার আগে তোমাদের কাছে রসূলগণ এসেছিলেন স্পষ্ট প্রমাণাবলী নিয়ে আর তোমরা যার কথা বলছো তা নিয়ে, তবে কেন তোমরা তাঁদের হত্যা করতে যাচ্ছিলে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’’

فَإِن كَذَّبُوكَ فَقَدۡ كُذِّبَ رُسُلࣱ مِّن قَبۡلِكَ جَاۤءُو بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ وَٱلزُّبُرِ وَٱلۡكِتَـٰبِ ٱلۡمُنِیرِ ﴿184﴾

অতএব যদি তারা তোমাকে অস্বীকার করে তোমার আগের রসূলগণও এমনিভাবে অস্বীকৃত হয়েছিলেন, যাঁরা এসেছিলেন সঙ্গে নিয়ে স্পষ্ট প্রমাণাবলী ও যবূর ও উজ্জ্বল কিতাব।

كُلُّ نَفۡسࣲ ذَاۤىِٕقَةُ ٱلۡمَوۡتِۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ أُجُورَكُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۖ فَمَن زُحۡزِحَ عَنِ ٱلنَّارِ وَأُدۡخِلَ ٱلۡجَنَّةَ فَقَدۡ فَازَۗ وَمَا ٱلۡحَیَوٰةُ ٱلدُّنۡیَاۤ إِلَّا مَتَـٰعُ ٱلۡغُرُورِ ﴿185﴾

প্রত্যেক সত্ত্বাকে মৃত্যু আস্বাদন করতে হবে। আর নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিনে তোমাদের প্রাপ্য পুরোপুরি তোমাদের আদায় করা হবে। কাজেই যাকে আগুন থেকে বহুদূরে রাখা হবে ও স্বর্গোদ্যানে প্রবিষ্ট করা হবে, নিঃসন্দেহ সে হ’ল সফলকাম। আর এই দুনিয়ার জীবন ধোকার সন্বল ছাড়া কিছুই নয়।

۞ لَتُبۡلَوُنَّ فِیۤ أَمۡوَ ٰ⁠لِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡ وَلَتَسۡمَعُنَّ مِنَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَمِنَ ٱلَّذِینَ أَشۡرَكُوۤا۟ أَذࣰى كَثِیرࣰاۚ وَإِن تَصۡبِرُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ فَإِنَّ ذَ ٰ⁠لِكَ مِنۡ عَزۡمِ ٱلۡأُمُورِ ﴿186﴾

নিশ্চয়ই তোমাদের পরীক্ষা করা হবে তোমাদের ধনসম্পত্তি ও তোমাদের লোকজনের মাধ্যমে, আর নিঃসন্দেহ তোমরা শুনতে পাবে তোমাদের আগে যাদের গ্রন্থ দেয়া হয়েছে তাদের থেকে এবং যারা শরিক করে তাদের থেকে অনেক গালিগালাজ। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ করো ও ভয়ভক্তি করো তবে নিশ্চয় সেটি হবে সৎসাহসের কাজ।

وَإِذۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِیثَـٰقَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ لَتُبَیِّنُنَّهُۥ لِلنَّاسِ وَلَا تَكۡتُمُونَهُۥ فَنَبَذُوهُ وَرَاۤءَ ظُهُورِهِمۡ وَٱشۡتَرَوۡا۟ بِهِۦ ثَمَنࣰا قَلِیلࣰاۖ فَبِئۡسَ مَا یَشۡتَرُونَ ﴿187﴾

আর স্মরণ করো! যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদের থেকে আল্লাহ্ অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন -- ''তোমরা নিশ্চয় এর কথা লোকেদের কাছে প্রকাশ করবে, আর তা লুকিয়ে রাখবে না।’’ কিন্তু তারা এটি তাদের পিঠের পেছনে ফেলে রেখে দিয়েছিল, আর এর জন্য তারা বিনিময়ে স্বল্পমূল্য গ্রহণ করেছিল। অতএব মন্দ তারা যা কেনে।

لَا تَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِینَ یَفۡرَحُونَ بِمَاۤ أَتَوا۟ وَّیُحِبُّونَ أَن یُحۡمَدُوا۟ بِمَا لَمۡ یَفۡعَلُوا۟ فَلَا تَحۡسَبَنَّهُم بِمَفَازَةࣲ مِّنَ ٱلۡعَذَابِۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿188﴾

তুমি মনে করো না যারা উল্লসিত হয় যা তাদের দেয়া হয়েছে সেজন্য, আর প্রশংসা পেতে ভালোবাসে যা করে নি তার জন্যেও, -- কাজেই তুমি তাদের ভেবো না যে তারা শাস্তি থেকে নিরাপদ, আর তাদের জন্য রয়েছে ব্যথাদায়ক শাস্তি।

وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرٌ ﴿189﴾

আর আল্লাহ্‌রই মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবী রাজত্ব। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

إِنَّ فِی خَلۡقِ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَـٰفِ ٱلَّیۡلِ وَٱلنَّهَارِ لَـَٔایَـٰتࣲ لِّأُو۟لِی ٱلۡأَلۡبَـٰبِ ﴿190﴾

নিঃসন্দেহ মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে বিশেষ নিদর্শন রয়েছে জ্ঞানবান লোকদের জন্য --

ٱلَّذِینَ یَذۡكُرُونَ ٱللَّهَ قِیَـٰمࣰا وَقُعُودࣰا وَعَلَىٰ جُنُوبِهِمۡ وَیَتَفَكَّرُونَ فِی خَلۡقِ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ هَـٰذَا بَـٰطِلࣰا سُبۡحَـٰنَكَ فَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ﴿191﴾

যারা আল্লাহ্‌কে স্মরণ করে দাঁড়ানো ও বসা ও তাদের পার্শ্বের উপরে শায়িত অবস্থায় আর গভীর চিন্তা করে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টির বিষয়ে। ''আমাদের প্রভু! এসব তুমি বৃথা সৃষ্টি করো নি, তোমারই সব মহিমা। কাজেই আমাদের রক্ষা করো আগুনের শাস্তি থেকে।

رَبَّنَاۤ إِنَّكَ مَن تُدۡخِلِ ٱلنَّارَ فَقَدۡ أَخۡزَیۡتَهُۥۖ وَمَا لِلظَّـٰلِمِینَ مِنۡ أَنصَارࣲ ﴿192﴾

''আমাদের প্রভু! নিশ্চয়ই যাকে তুমি আগুনে প্রবিষ্ট করাও, তাকে তবে প্রকৃতই তুমি লাঞ্ছিত করেছ। আর অন্যায়কারীদের জন্য সাহায্যকারীদের কেউ থাকবে না।

رَّبَّنَاۤ إِنَّنَا سَمِعۡنَا مُنَادِیࣰا یُنَادِی لِلۡإِیمَـٰنِ أَنۡ ءَامِنُوا۟ بِرَبِّكُمۡ فَـَٔامَنَّاۚ رَبَّنَا فَٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرۡ عَنَّا سَیِّـَٔاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ ٱلۡأَبۡرَارِ ﴿193﴾

''আমাদের প্রভু! নিঃসন্দেহ আমরা শুনেছি একজন ঘোষণাকারীকে ঈমানের প্রতি আহ্বান করতে এই বলে -- 'তোমাদের প্রভুরপ্রতি ঈমান আনো’, কাজেই আমরা ঈমান এনেছি। আমাদের প্রভু! অতএব আমাদের অপরাধ থেকে আমাদের পরিত্রাণ করো, আর আমাদের দোষত্রুটি আমাদের থেকে মুছে দাও, আর আমাদের প্রাণত্যাগ করতে দাও সজ্জনদের সঙ্গে।

رَبَّنَا وَءَاتِنَا مَا وَعَدتَّنَا عَلَىٰ رُسُلِكَ وَلَا تُخۡزِنَا یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۖ إِنَّكَ لَا تُخۡلِفُ ٱلۡمِیعَادَ ﴿194﴾

''আমাদের প্রভু! আর আমাদের প্রদান করো যা তুমি আমাদের কাছে ওয়াদা করেছ তোমার রসূলদের মাধ্যমে, আর আমাদের লাঞ্ছিত করো না কিয়ামতের দিনে। নিঃসন্দেহ তুমি ওয়াদার খেলাফ করো না।’’

فَٱسۡتَجَابَ لَهُمۡ رَبُّهُمۡ أَنِّی لَاۤ أُضِیعُ عَمَلَ عَـٰمِلࣲ مِّنكُم مِّن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰۖ بَعۡضُكُم مِّنۢ بَعۡضࣲۖ فَٱلَّذِینَ هَاجَرُوا۟ وَأُخۡرِجُوا۟ مِن دِیَـٰرِهِمۡ وَأُوذُوا۟ فِی سَبِیلِی وَقَـٰتَلُوا۟ وَقُتِلُوا۟ لَأُكَفِّرَنَّ عَنۡهُمۡ سَیِّـَٔاتِهِمۡ وَلَأُدۡخِلَنَّهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ ثَوَابࣰا مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ عِندَهُۥ حُسۡنُ ٱلثَّوَابِ ﴿195﴾

তাদের প্রভু তখন তাদের আহ্বানে সাড়া দিলেন -- ''আমি নিশ্চয়ই বিফল করবো না তোমাদের মধ্যের কর্মীদের কোনো কাজ -- পুরুষ হও বা নারী -- তোমাদের একজন অন্যজন থেকে, সুতরাং যারা হিজরত করেছে ও তাদের ঘরবাড়ি থেকে যারা বহিষ্কৃত হয়েছে, ও আমার পথে যারা নির্যাতিত হয়েছে, আর যারা যুদ্ধ করেছে ও নিহত হয়েছে -- নিঃসন্দেহ তাদের দোষত্রুটি তাদের থেকে অবশ্যই মুছে দেব আর নিঃসন্দেহ তাদের অবশ্যই প্রবিষ্ট করাব স্বর্গোদ্যানসমূহে যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি -- একটি পুরস্কার আল্লাহ্‌র দরবার থেকে। আর আল্লাহ্ -- তাঁর কাছে রয়েছে আরো উত্তম পুরস্কার।’’

لَا یَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ فِی ٱلۡبِلَـٰدِ ﴿196﴾

যারা অবিশ্বাস পোষণ করে শহরে-নগরে তাদের চলাফেরা তোমাকে যেন ধোকা না দেয়।

مَتَـٰعࣱ قَلِیلࣱ ثُمَّ مَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمِهَادُ ﴿197﴾

তুচ্ছ ভোগ! তারপর তাদের বাসস্থান হচ্ছে জাহান্নাম, আর জঘন্য এই বিশ্রামস্থল।

لَـٰكِنِ ٱلَّذِینَ ٱتَّقَوۡا۟ رَبَّهُمۡ لَهُمۡ جَنَّـٰتࣱ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَا نُزُلࣰا مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِۗ وَمَا عِندَ ٱللَّهِ خَیۡرࣱ لِّلۡأَبۡرَارِ ﴿198﴾

কিন্তু যারা তাদের প্রভুকে ভয়-শ্রদ্ধা করে তাদের জন্য স্বর্গোদ্যানসমূহ, যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, তাতে তারা থাকবে চিরকাল -- আল্লাহ্‌র তরফ থেকে আপ্যায়ন। আর আল্লাহ্‌র কাছে যা রয়েছে তা পুণ্যা‌ত্মাদের জন্য আরো উত্তম।

وَإِنَّ مِنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ لَمَن یُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكُمۡ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡهِمۡ خَـٰشِعِینَ لِلَّهِ لَا یَشۡتَرُونَ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ ثَمَنࣰا قَلِیلًاۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمۡ أَجۡرُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ سَرِیعُ ٱلۡحِسَابِ ﴿199﴾

আর নিঃসন্দেহ গ্রন্থপ্রাপ্তদের মধ্যে যারা ঈমান আনে আল্লাহ্‌তে আর যা তোমাদের কাছে অবতীর্ণ হয়েছে আর যা তা দের কাছে নাযিল হয়েছিল তাতে, আল্লাহ্‌র কাছে বিনীত, তারা আল্লাহ্‌র বাণীসমূহের জন্য স্বল্পমূল্য কামাতে যায় না। এরাই, -- এদের জন্য এদের পুরস্কার রয়েছে এদের প্রভুর কাছে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হিসেব-নিকেশে তৎপর।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱصۡبِرُوا۟ وَصَابِرُوا۟ وَرَابِطُوا۟ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿200﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! ধৈর্যধারণ করো আর ধৈর্যধারণে অগ্রণী হও, আর অবিচল থেকো, আর আল্লাহ্‌কে ভয়শ্রদ্ধা করো, যেন তোমরা সফলকাম হতে পারো।