Settings
Surah The Prostration [As-Sajda] in Bengali
الۤمۤ ﴿1﴾
আলিফ, লাম, মীম।
تَنزِیلُ ٱلۡكِتَـٰبِ لَا رَیۡبَ فِیهِ مِن رَّبِّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿2﴾
গ্রন্থখানার অবতারণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই, বিশ্বজগতের প্রভুর কাছ থেকে।
أَمۡ یَقُولُونَ ٱفۡتَرَىٰهُۚ بَلۡ هُوَ ٱلۡحَقُّ مِن رَّبِّكَ لِتُنذِرَ قَوۡمࣰا مَّاۤ أَتَىٰهُم مِّن نَّذِیرࣲ مِّن قَبۡلِكَ لَعَلَّهُمۡ یَهۡتَدُونَ ﴿3﴾
না কি তারা বলে যে তিনি এটি রচনা করেছেন? না, এটি মহাসত্য তোমার প্রভুর কাছ থেকে যেন তুমি সতর্ক করতে পার এমন এক জাতিকে যাদের কাছে তোমরা আগে কোনো সতর্ককারী আসেন নি, যাতে তারা সৎপথে চলতে পারে।
ٱللَّهُ ٱلَّذِی خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَیۡنَهُمَا فِی سِتَّةِ أَیَّامࣲ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ مَا لَكُم مِّن دُونِهِۦ مِن وَلِیࣲّ وَلَا شَفِیعٍۚ أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ ﴿4﴾
আল্লাহ্ই তিনি যিনি মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দুইয়ের মধ্যবর্তী সব-কিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, তারপর তিনি অধিষ্ঠিত হলেন আরশের উপরে। তাঁকে বাদ দিয়ে তোমাদের জন্য অভিভাবক কেউ নেই আর সুপারিশকারীও নেই। তবুও কি তোমরা মনোযোগ দেবে না?
یُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَ مِنَ ٱلسَّمَاۤءِ إِلَى ٱلۡأَرۡضِ ثُمَّ یَعۡرُجُ إِلَیۡهِ فِی یَوۡمࣲ كَانَ مِقۡدَارُهُۥۤ أَلۡفَ سَنَةࣲ مِّمَّا تَعُدُّونَ ﴿5﴾
মহাকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত বিষয়-কর্ম তিনি পরিচালনা করেন, তারপর এটি তাঁর দিকে উঠে আসবে একদিন যার পরিমাপ হচ্ছে তোমরা যা গণনা কর তার এক হাজার বছর।
ذَ ٰلِكَ عَـٰلِمُ ٱلۡغَیۡبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِ ٱلۡعَزِیزُ ٱلرَّحِیمُ ﴿6﴾
এজনই হচ্ছেন অদৃশ্যের ও প্রকাশ্যের পরিজ্ঞাতা, মহাশক্তিশালী, অফুরন্ত ফলদাতা, --
ٱلَّذِیۤ أَحۡسَنَ كُلَّ شَیۡءٍ خَلَقَهُۥۖ وَبَدَأَ خَلۡقَ ٱلۡإِنسَـٰنِ مِن طِینࣲ ﴿7﴾
যিনি সুন্দর করেছেন প্রত্যেকটি জিনিস যা তিনি সৃষ্টি করেছেন, আর তিনি মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেছেন কাদা থেকে।
ثُمَّ جَعَلَ نَسۡلَهُۥ مِن سُلَـٰلَةࣲ مِّن مَّاۤءࣲ مَّهِینࣲ ﴿8﴾
তারপর তার বংশধর সৃষ্টি করলেন এক তুচ্ছ তরল পদার্থের নির্যাস থেকে।
ثُمَّ سَوَّىٰهُ وَنَفَخَ فِیهِ مِن رُّوحِهِۦۖ وَجَعَلَ لَكُمُ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡأَبۡصَـٰرَ وَٱلۡأَفۡـِٔدَةَۚ قَلِیلࣰا مَّا تَشۡكُرُونَ ﴿9﴾
তারপর তিনি তাকে সুঠাম করলেন, এবং তাতে ফুঁকে দিলেন তাঁর আত্মা থেকে, আর তোমাদের জন্য তৈরি করলেন শ্রবণশক্তি ও দর্শনশক্তি ও অন্তঃকরণ। অল্পমাত্রায়ই তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।
وَقَالُوۤا۟ أَءِذَا ضَلَلۡنَا فِی ٱلۡأَرۡضِ أَءِنَّا لَفِی خَلۡقࣲ جَدِیدِۭۚ بَلۡ هُم بِلِقَاۤءِ رَبِّهِمۡ كَـٰفِرُونَ ﴿10﴾
আর তারা বলে -- ''কি, যখন আমরা মাটিতে মিলিয়ে যাই, তখন কি আমরা নতুন সৃষ্টিতে পৌঁছব?’’ বস্তুত তারা তাদের প্রভুর সাথে মুলাকাত হওয়া সন্বন্ধে অবিশ্বাসী।
۞ قُلۡ یَتَوَفَّىٰكُم مَّلَكُ ٱلۡمَوۡتِ ٱلَّذِی وُكِّلَ بِكُمۡ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّكُمۡ تُرۡجَعُونَ ﴿11﴾
তুমি বলো -- ''মালাকুল মউত যার উপরে তোমাদের কার্যভার দেওয়া হয়েছে সে-ই তোমাদের মৃত্যু ঘটাবে, তারপর তোমাদের প্রভুর কাছেই তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে।’’
وَلَوۡ تَرَىٰۤ إِذِ ٱلۡمُجۡرِمُونَ نَاكِسُوا۟ رُءُوسِهِمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ رَبَّنَاۤ أَبۡصَرۡنَا وَسَمِعۡنَا فَٱرۡجِعۡنَا نَعۡمَلۡ صَـٰلِحًا إِنَّا مُوقِنُونَ ﴿12﴾
আর তুমি যদি দেখতে পেতে যখন অপরাধীরা তাদের মাথা হেঁট করবে তাদের প্রভুর সামনে -- ''আমাদের প্রভু! আমরা দেখতে পাচ্ছি ও শুনতে পাচ্ছি, সুতরাং আমাদের ফেরত পাঠিয়ে দাও, আমরা সৎকর্ম করব, নিঃসন্দেহ আমরা সুনিশ্চিত।’’
وَلَوۡ شِئۡنَا لَـَٔاتَیۡنَا كُلَّ نَفۡسٍ هُدَىٰهَا وَلَـٰكِنۡ حَقَّ ٱلۡقَوۡلُ مِنِّی لَأَمۡلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنَ ٱلۡجِنَّةِ وَٱلنَّاسِ أَجۡمَعِینَ ﴿13﴾
আর আমরা যদি চাইতাম তবে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তিকে দিতাম তার পথনির্দেশ, কিন্তু আমার থেকে বক্তব্য ন্যায়সংগত হয়েছে -- 'আমি আলবৎ জাহান্নামকে ভর্তি করবো একই সঙ্গে জিনদের ও মানুষদের থেকে।’
فَذُوقُوا۟ بِمَا نَسِیتُمۡ لِقَاۤءَ یَوۡمِكُمۡ هَـٰذَاۤ إِنَّا نَسِینَـٰكُمۡۖ وَذُوقُوا۟ عَذَابَ ٱلۡخُلۡدِ بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ﴿14﴾
সেজন্য -- ''আস্বাদন করো, যেহেতু তোমাদের এই দিনটির সাক্ষাৎ পাওয়াকে তোমারা ভুলে গিয়েছিলে। আমরাও তাইতো তোমাদের ভুলে গেছি, কাজেই তোমরা দীর্ঘস্থায়ী শাস্তি আস্বাদন করো যা তোমরা করে চলেছিলে সেজন্য।
إِنَّمَا یُؤۡمِنُ بِـَٔایَـٰتِنَا ٱلَّذِینَ إِذَا ذُكِّرُوا۟ بِهَا خَرُّوا۟ سُجَّدࣰا وَسَبَّحُوا۟ بِحَمۡدِ رَبِّهِمۡ وَهُمۡ لَا یَسۡتَكۡبِرُونَ ۩ ﴿15﴾
কেবল তারাই আমাদের নির্দেশাবলীতে বিশ্বাস করে যারা, যখন তাদের এসব স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, সিজদারত হয়ে লুটিয়ে পড়ে, আর তাদের প্রভুর প্রশংসার সাথে জপতপ করে, আর তারা গর্ববোধ করে না।
تَتَجَافَىٰ جُنُوبُهُمۡ عَنِ ٱلۡمَضَاجِعِ یَدۡعُونَ رَبَّهُمۡ خَوۡفࣰا وَطَمَعࣰا وَمِمَّا رَزَقۡنَـٰهُمۡ یُنفِقُونَ ﴿16﴾
তারা বিছানা থেকে তাদের পার্শ্ব ত্যাগ করে তাদের প্রভুকে ডাকতে ডাকতে ভয়ে ও আশায়, আর আমরা তাদের যা রিযেক দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে।
فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسࣱ مَّاۤ أُخۡفِیَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡیُنࣲ جَزَاۤءَۢ بِمَا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ ﴿17﴾
সুতরাং কোনো সত্ত্বা জানে না চোখজুড়ানো কী তাদের জন্য লুকোনো রয়েছে, -- একটি পুরস্কার যা তারা করে যাচ্ছিল তার জন্য।
أَفَمَن كَانَ مُؤۡمِنࣰا كَمَن كَانَ فَاسِقࣰاۚ لَّا یَسۡتَوُۥنَ ﴿18﴾
তাহলে কি যে মুমিন সে তার মতো যে সত্যত্যাগী? তারা সমতুল্য নয়।
أَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَلَهُمۡ جَنَّـٰتُ ٱلۡمَأۡوَىٰ نُزُلَۢا بِمَا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ ﴿19﴾
যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকর্ম করছে তাদের জন্য তবে রয়েছে চির-উপভোগ্য উদ্যান -- একটি প্রীতি-সংবর্ধনা যা তারা করে যাচ্ছিল তার জন্য।
وَأَمَّا ٱلَّذِینَ فَسَقُوا۟ فَمَأۡوَىٰهُمُ ٱلنَّارُۖ كُلَّمَاۤ أَرَادُوۤا۟ أَن یَخۡرُجُوا۟ مِنۡهَاۤ أُعِیدُوا۟ فِیهَا وَقِیلَ لَهُمۡ ذُوقُوا۟ عَذَابَ ٱلنَّارِ ٱلَّذِی كُنتُم بِهِۦ تُكَذِّبُونَ ﴿20﴾
কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে যারা সীমালংঘন করেছে তাদের আবাস হচ্ছে আগুন। যতবার তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে তাদের তাতে ফিরিয়ে আনা হবে, আর তাদের বলা হবে -- ''আগুনের শাস্তি আস্বাদন করো যেটিকে তোমরা মিথ্যা বলতে।’’
وَلَنُذِیقَنَّهُم مِّنَ ٱلۡعَذَابِ ٱلۡأَدۡنَىٰ دُونَ ٱلۡعَذَابِ ٱلۡأَكۡبَرِ لَعَلَّهُمۡ یَرۡجِعُونَ ﴿21﴾
আর আমরা অবশ্যই লঘু শাস্তি থেকে তাদের আস্বাদন করাব বৃহত্তর শাস্তির উপরি, যেন তারা ফিরে আসে।
وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بِـَٔایَـٰتِ رَبِّهِۦ ثُمَّ أَعۡرَضَ عَنۡهَاۤۚ إِنَّا مِنَ ٱلۡمُجۡرِمِینَ مُنتَقِمُونَ ﴿22﴾
আর কে তার চাইতে বেশী অন্যায়কারী যাকে তার প্রভুর নির্দেশাবলী দ্বারা উপদেশ দেওয়া হয়েছে, তথাপি সে তা থেকে ফিরে যায়? নিঃসন্দেহ অপরাধীদের থেকে আমরা পরিণতি আদায় করেই থাকি।
وَلَقَدۡ ءَاتَیۡنَا مُوسَى ٱلۡكِتَـٰبَ فَلَا تَكُن فِی مِرۡیَةࣲ مِّن لِّقَاۤىِٕهِۦۖ وَجَعَلۡنَـٰهُ هُدࣰى لِّبَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ ﴿23﴾
আর আমরা নিশ্চয়ই মূসাকে ধর্মগ্রন্থ দিয়েছিলাম, কাজেই তাঁর প্রাপ্তি সন্বন্ধে তুমি সন্দেহের মধ্যে থেকো না, আর আমরা এটিকে বানিয়েছিলাম ইসরাইলের বংশধরদের জন্য এক পথনির্দেশ।
وَجَعَلۡنَا مِنۡهُمۡ أَىِٕمَّةࣰ یَهۡدُونَ بِأَمۡرِنَا لَمَّا صَبَرُوا۟ۖ وَكَانُوا۟ بِـَٔایَـٰتِنَا یُوقِنُونَ ﴿24﴾
আর আমরা তাদের মধ্যে থেকে নেতা দাঁড় করিয়েছিলাম যাঁরা আমাদের নির্দেশের দ্বারা পথনির্দেশ দিতেন যতদিন তারা অধ্যবসায় করত, আর তারা আমাদের নির্দেশাবলী সন্বন্ধে দৃঢ়বিশ্বাস রাখত।
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ یَفۡصِلُ بَیۡنَهُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ فِیمَا كَانُوا۟ فِیهِ یَخۡتَلِفُونَ ﴿25﴾
নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু -- তিনি কিয়ামতের দিনে তাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন সেই বিষয়ে যাতে তারা মতবিরোধ করত।
أَوَلَمۡ یَهۡدِ لَهُمۡ كَمۡ أَهۡلَكۡنَا مِن قَبۡلِهِم مِّنَ ٱلۡقُرُونِ یَمۡشُونَ فِی مَسَـٰكِنِهِمۡۚ إِنَّ فِی ذَ ٰلِكَ لَـَٔایَـٰتٍۚ أَفَلَا یَسۡمَعُونَ ﴿26﴾
এটি কি তাদের জন্য পথনির্দেশ করে না -- তাদের পূর্বে মানবগোষ্ঠীর মধ্যে কত যে আমরা ধ্বংস করেছি যাদের বাড়িঘরের মধ্যে তারা চলাফেরা করেছে? নিঃসন্দেহ এতে তো নিদর্শনাবলী রয়েছে। তবুও কি তারা শুনবে না?
أَوَلَمۡ یَرَوۡا۟ أَنَّا نَسُوقُ ٱلۡمَاۤءَ إِلَى ٱلۡأَرۡضِ ٱلۡجُرُزِ فَنُخۡرِجُ بِهِۦ زَرۡعࣰا تَأۡكُلُ مِنۡهُ أَنۡعَـٰمُهُمۡ وَأَنفُسُهُمۡۚ أَفَلَا یُبۡصِرُونَ ﴿27﴾
তারা কি তথাপি দেখে না যে আমরা পানি প্রবাহিত করে নিই অনুর্বর মাটিতে, তখন তার সাহায্যে আমরা উদগত করি ফসল যা থেকে আহার করে তাদের গবাদি-পশু ও তারা নিজেরা? তবুও কি তারা দেখবে না?
وَیَقُولُونَ مَتَىٰ هَـٰذَا ٱلۡفَتۡحُ إِن كُنتُمۡ صَـٰدِقِینَ ﴿28﴾
আর তারা বলে -- ''কখন এই বিজয় ঘটবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’’
قُلۡ یَوۡمَ ٱلۡفَتۡحِ لَا یَنفَعُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤا۟ إِیمَـٰنُهُمۡ وَلَا هُمۡ یُنظَرُونَ ﴿29﴾
বলো -- ''বিজয়ের দিনে যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের বিশ্বাসে কোনো উপকার হবে না, আর তাদের প্রতীক্ষা করতে হবে না।’’
فَأَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَٱنتَظِرۡ إِنَّهُم مُّنتَظِرُونَ ﴿30﴾
অতএব তাদের থেকে তুমি ফিরে এস এবং ইন্তাজার কর, নিঃসন্দেহ তারাও প্রতীক্ষারত রয়েছে।