Main pages

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُوا۟ رَبَّكُمُ ٱلَّذِی خَلَقَكُم مِّن نَّفۡسࣲ وَ ٰ⁠حِدَةࣲ وَخَلَقَ مِنۡهَا زَوۡجَهَا وَبَثَّ مِنۡهُمَا رِجَالࣰا كَثِیرࣰا وَنِسَاۤءࣰۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ٱلَّذِی تَسَاۤءَلُونَ بِهِۦ وَٱلۡأَرۡحَامَۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَیۡكُمۡ رَقِیبࣰا ﴿1﴾

ওহে মানবগোষ্ঠি! তোমাদের প্রভুকে ভয়ভক্তি করো যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একই নফস থেকে, আর তার জোড়াও সৃষ্টি করেছেন তার থেকে, আর এই উভয় থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু নর ও নারী। অতএব ভয়শ্রদ্ধা করো আল্লাহ্‌কে যাঁর দ্বারা তোমরা পরস্পরের ও মাতৃজঠরের সওয়াল-জবাব করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তোমাদের উপরে সদা প্রহরী।

وَءَاتُوا۟ ٱلۡیَتَـٰمَىٰۤ أَمۡوَ ٰ⁠لَهُمۡۖ وَلَا تَتَبَدَّلُوا۟ ٱلۡخَبِیثَ بِٱلطَّیِّبِۖ وَلَا تَأۡكُلُوۤا۟ أَمۡوَ ٰ⁠لَهُمۡ إِلَىٰۤ أَمۡوَ ٰ⁠لِكُمۡۚ إِنَّهُۥ كَانَ حُوبࣰا كَبِیرࣰا ﴿2﴾

আর তাদের ধন-সম্পত্তি এতীমদের দিয়ে দাও, আর উৎকৃষ্ট বস্তুর সঙ্গে নিকৃষ্ট বস্তু বদলে নিও না। আর তাদের সম্পত্তি তোমাদের সম্পত্তির সঙ্গে গ্রাস করো না। নিঃসন্দেহ এটি গুরুতর অপরাধ।

وَإِنۡ خِفۡتُمۡ أَلَّا تُقۡسِطُوا۟ فِی ٱلۡیَتَـٰمَىٰ فَٱنكِحُوا۟ مَا طَابَ لَكُم مِّنَ ٱلنِّسَاۤءِ مَثۡنَىٰ وَثُلَـٰثَ وَرُبَـٰعَۖ فَإِنۡ خِفۡتُمۡ أَلَّا تَعۡدِلُوا۟ فَوَ ٰ⁠حِدَةً أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُكُمۡۚ ذَ ٰ⁠لِكَ أَدۡنَىٰۤ أَلَّا تَعُولُوا۟ ﴿3﴾

আর যদি তোমরা আশঙ্কা করো যে তোমরা এতীমদের প্রতি ন্যায়পরায়ণ হতে পারছ না, তা হলে স্ত্রীলোকদের মধ্যের যাকে তোমাদের ভালো লাগে তাকে বিয়ে করতে পার -- দুই বা তিন বা চার। কিন্তু যদি তোমরা আশঙ্কা করো যে তোমরা সমব্যবহার করতে পারবে না, তা হলে একজনকেই, অথবা তোমাদের ডান হাত যাদের ধরে রেখেছে। এইটিই বেশী সঙ্গত যেন তোমরা সরে না যাও।

وَءَاتُوا۟ ٱلنِّسَاۤءَ صَدُقَـٰتِهِنَّ نِحۡلَةࣰۚ فَإِن طِبۡنَ لَكُمۡ عَن شَیۡءࣲ مِّنۡهُ نَفۡسࣰا فَكُلُوهُ هَنِیۤـࣰٔا مَّرِیۤـࣰٔا ﴿4﴾

আর স্ত্রীলোকদের তাদের মহরানা আদায় করবে নিঃস্বার্থভাবে। কিন্তু যদি তারা নিজেরা এর কোনো অংশ তোমাদের দিতে খুশি হয় তবে তা ভোগ করো সানন্দে ও তৃপ্তির সাথে।

وَلَا تُؤۡتُوا۟ ٱلسُّفَهَاۤءَ أَمۡوَ ٰ⁠لَكُمُ ٱلَّتِی جَعَلَ ٱللَّهُ لَكُمۡ قِیَـٰمࣰا وَٱرۡزُقُوهُمۡ فِیهَا وَٱكۡسُوهُمۡ وَقُولُوا۟ لَهُمۡ قَوۡلࣰا مَّعۡرُوفࣰا ﴿5﴾

আর অবোধদের দিয়ে দিও না তোমাদের সম্পত্তি যা আল্লাহ্ তোমাদের জন্য অবলন্বনস্বরূপ করেছেন। আর তা থেকে তাদের খাওয়াও ও তাদের পরাও, আর তাদের বলো ভালোভালো কথা।

وَٱبۡتَلُوا۟ ٱلۡیَتَـٰمَىٰ حَتَّىٰۤ إِذَا بَلَغُوا۟ ٱلنِّكَاحَ فَإِنۡ ءَانَسۡتُم مِّنۡهُمۡ رُشۡدࣰا فَٱدۡفَعُوۤا۟ إِلَیۡهِمۡ أَمۡوَ ٰ⁠لَهُمۡۖ وَلَا تَأۡكُلُوهَاۤ إِسۡرَافࣰا وَبِدَارًا أَن یَكۡبَرُوا۟ۚ وَمَن كَانَ غَنِیࣰّا فَلۡیَسۡتَعۡفِفۡۖ وَمَن كَانَ فَقِیرࣰا فَلۡیَأۡكُلۡ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ فَإِذَا دَفَعۡتُمۡ إِلَیۡهِمۡ أَمۡوَ ٰ⁠لَهُمۡ فَأَشۡهِدُوا۟ عَلَیۡهِمۡۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ حَسِیبࣰا ﴿6﴾

আর এতীমদের পরীক্ষা করে দেখবে যে পর্যন্ত না তারা বিবাহ-বয়সে উপনীত হয়, তারপর যদি তাদের মধ্যে বিচার-বুদ্ধি দেখতে পাও তবে তাদের ধনসম্পত্তি তাদের হস্তার্পণ করবে, আর তা মাত্রাতিরিক্তভাবে ও তাড়াহুড়ো করে খেয়ে ফেলো না পাছে তারা বড় হয়ে যাবে। আর যে অবস্থাপন্ন সে যেন নিবৃত্ত থাকে, আর যে গরীব সে ন্যায়সঙ্গতভাবে খাক। তারপর যখন তোমরা তাদের সম্পত্তি তাদের ফিরিয়ে দাও তখন তাদের সামনে সাক্ষী ডাকো। আর হিসাব-রক্ষকরূপে আল্লাহ্ যথেষ্ট।

لِّلرِّجَالِ نَصِیبࣱ مِّمَّا تَرَكَ ٱلۡوَ ٰ⁠لِدَانِ وَٱلۡأَقۡرَبُونَ وَلِلنِّسَاۤءِ نَصِیبࣱ مِّمَّا تَرَكَ ٱلۡوَ ٰ⁠لِدَانِ وَٱلۡأَقۡرَبُونَ مِمَّا قَلَّ مِنۡهُ أَوۡ كَثُرَۚ نَصِیبࣰا مَّفۡرُوضࣰا ﴿7﴾

পিতামাতা ও নিকট-আ‌ত্মীয়রা যা রেখে যায় তার একটি অংশ পুরুষদের জন্য, আর স্ত্রীলোকদের জন্যেও থাকবে একটি অংশ যা পিতামাতা ও নিকট-আ‌ত্মীয়রা রেখে যায় তার, -- তা কমই হোক বা বেশি, -- একটি নির্দিষ্ট অংশ।

وَإِذَا حَضَرَ ٱلۡقِسۡمَةَ أُو۟لُوا۟ ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡیَتَـٰمَىٰ وَٱلۡمَسَـٰكِینُ فَٱرۡزُقُوهُم مِّنۡهُ وَقُولُوا۟ لَهُمۡ قَوۡلࣰا مَّعۡرُوفࣰا ﴿8﴾

আর ভাগাভাগির সময়ে যখন উপস্থিত থাকে আ‌ত্মীয়-স্বজন ও এতীমরা ও গরীবরা, তখন তা থেকে তাদের দান করো, আর তাদের সঙ্গে ভালোভাবে কথাবার্তা বলো।

وَلۡیَخۡشَ ٱلَّذِینَ لَوۡ تَرَكُوا۟ مِنۡ خَلۡفِهِمۡ ذُرِّیَّةࣰ ضِعَـٰفًا خَافُوا۟ عَلَیۡهِمۡ فَلۡیَتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَلۡیَقُولُوا۟ قَوۡلࣰا سَدِیدًا ﴿9﴾

আর তারা তেমনি ভয় করুক যেমন তারা যদি তাদের পেছনে অসহায় ছেলেপিলে ফেলে রাখত তবে তাদের জন্য আশঙ্কা করতো। কাজেই তারা আল্লাহ্‌কে ভয়শ্রদ্ধা করুক এবং সততার সাথে কথাবার্তা বলুক।

إِنَّ ٱلَّذِینَ یَأۡكُلُونَ أَمۡوَ ٰ⁠لَ ٱلۡیَتَـٰمَىٰ ظُلۡمًا إِنَّمَا یَأۡكُلُونَ فِی بُطُونِهِمۡ نَارࣰاۖ وَسَیَصۡلَوۡنَ سَعِیرࣰا ﴿10﴾

নিঃসন্দেহ যারা এতীমদের ধনসম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করে তারা নিশ্চয়ই তাদের পেটে আগুন গিলে। আর তারা শীঘ্রই প্রবেশ করবে জ্বলন্ত আগুনে।

یُوصِیكُمُ ٱللَّهُ فِیۤ أَوۡلَـٰدِكُمۡۖ لِلذَّكَرِ مِثۡلُ حَظِّ ٱلۡأُنثَیَیۡنِۚ فَإِن كُنَّ نِسَاۤءࣰ فَوۡقَ ٱثۡنَتَیۡنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَۖ وَإِن كَانَتۡ وَ ٰ⁠حِدَةࣰ فَلَهَا ٱلنِّصۡفُۚ وَلِأَبَوَیۡهِ لِكُلِّ وَ ٰ⁠حِدࣲ مِّنۡهُمَا ٱلسُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُۥ وَلَدࣱۚ فَإِن لَّمۡ یَكُن لَّهُۥ وَلَدࣱ وَوَرِثَهُۥۤ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ ٱلثُّلُثُۚ فَإِن كَانَ لَهُۥۤ إِخۡوَةࣱ فَلِأُمِّهِ ٱلسُّدُسُۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِیَّةࣲ یُوصِی بِهَاۤ أَوۡ دَیۡنٍۗ ءَابَاۤؤُكُمۡ وَأَبۡنَاۤؤُكُمۡ لَا تَدۡرُونَ أَیُّهُمۡ أَقۡرَبُ لَكُمۡ نَفۡعࣰاۚ فَرِیضَةࣰ مِّنَ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿11﴾

আল্লাহ্ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন তোমাদের সন্তানসন্ততি সম্পর্কে, -- এক বেটাছেলের জন্য দুই মেয়েছেলের সমান অংশ। তবে যদি তারা সব মেয়ে হয়, দুই মেয়ের উর্ধ্বে, তবে তাদের জন্য সে যা রেখে গেছে তার দুই-তৃতীয়াংশ, আর যদি সে একমাত্র মেয়ে হয় তবে তার জন্য অর্ধেক । আর তার পিতামাতার জন্য -- তাদের দুজনের প্রত্যেকের জন্য সে যা রেখে গেছে তার ছয় ভাগের একভাগ, যদি তার সন্তান থাকে, কিন্তু তার যদি সন্তান না থাকে ও তার ওয়ারিশ হয় পিতামাতা, তবে তার মাতার জন্য এক-তৃতীয়াংশ, কিন্তু যদি তার ভাইরা থাকে তবে তার মায়ের জন্য ছয় ভাগের একভাগ, কোনো ওছিয়ৎনামাতে উইল করে থাকলে বা দেনা থাকলে তা আদায়ের পরে। তোমাদের পিতামাতা ও তোমাদের সন্তানসন্ততি -- তোমরা জানো না এদের কে তোমাদের কাছে ফায়দার দিক দিয়ে বেশি নিকটতর। এ আল্লাহ্‌র তরফ থেকে বিধান। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

۞ وَلَكُمۡ نِصۡفُ مَا تَرَكَ أَزۡوَ ٰ⁠جُكُمۡ إِن لَّمۡ یَكُن لَّهُنَّ وَلَدࣱۚ فَإِن كَانَ لَهُنَّ وَلَدࣱ فَلَكُمُ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَكۡنَۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِیَّةࣲ یُوصِینَ بِهَاۤ أَوۡ دَیۡنࣲۚ وَلَهُنَّ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَكۡتُمۡ إِن لَّمۡ یَكُن لَّكُمۡ وَلَدࣱۚ فَإِن كَانَ لَكُمۡ وَلَدࣱ فَلَهُنَّ ٱلثُّمُنُ مِمَّا تَرَكۡتُمۚ مِّنۢ بَعۡدِ وَصِیَّةࣲ تُوصُونَ بِهَاۤ أَوۡ دَیۡنࣲۗ وَإِن كَانَ رَجُلࣱ یُورَثُ كَلَـٰلَةً أَوِ ٱمۡرَأَةࣱ وَلَهُۥۤ أَخٌ أَوۡ أُخۡتࣱ فَلِكُلِّ وَ ٰ⁠حِدࣲ مِّنۡهُمَا ٱلسُّدُسُۚ فَإِن كَانُوۤا۟ أَكۡثَرَ مِن ذَ ٰ⁠لِكَ فَهُمۡ شُرَكَاۤءُ فِی ٱلثُّلُثِۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِیَّةࣲ یُوصَىٰ بِهَاۤ أَوۡ دَیۡنٍ غَیۡرَ مُضَاۤرࣲّۚ وَصِیَّةࣰ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَلِیمࣱ ﴿12﴾

আর তোমাদের স্ত্রীরা যা রেখে যায় তার অর্ধেক তোমাদের জন্য যদি তাদের কোনো ছেলেপিলে না থাকে, কিন্তু যদি তাদের সন্তান থাকে তবে তোমাদের জন্য তারা যা রেখে গেছে তার এক-চতুর্থাংশ, -- কোনো ওছিয়ৎনামায় তারা উইল করে থাকলে বা দেনা থাকলে তা আদায়ের পরে। আর তাদের জন্য যা তোমরা রেখে যাও তার এক-চতুর্থাংশ যদি তোমাদের কোনো সন্তান না থাকে, কিন্তু যদি তোমাদের ছেলেপিলে থাকে তবে তাদের জন্য যা তোমরা রেখে গেছ তার আট ভাগের একভাগ, -- কোনো ওছিয়ৎনামায় তোমরা উইল করে থাকলে বা দেনা থাকলে তা আদায়ের পরে। আর যদি কোনো পুরুষ বা স্ত্রীলোককে নিঃসন্তান-ভাবে উত্তরাধিকার করতে হয় ও তার এক ভাই বা এক বোন থাকে তবে তাদের উভয়ের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ, কিন্তু যদি তারা এর চেয়ে বেশী হয় তবে তারা হবে এক তৃতীয়াংশের অংশীদার, -- কোনো ওছিয়ৎনামায় তারা উইল করে থাকলে বা দেনা থাকলে তা আদায়ের পরে, -- কোনো ক্ষতি না করে, এ হচ্ছে আল্লাহ্‌র তরফ থেকে বিধান। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞাতা, অতি অমায়িক।

تِلۡكَ حُدُودُ ٱللَّهِۚ وَمَن یُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ یُدۡخِلۡهُ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ وَذَ ٰ⁠لِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿13﴾

এইসব হচ্ছে আল্লাহ্‌র সীমা। আর যে কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের অনুবর্তী হয় তাকে তিনি প্রবেশ করাবেন স্বর্গোউদ্যানসমূহে যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজী, সেখানে সে থাকবে স্থায়ীভাবে আর তাই হচ্ছে মহা সাফল্য।

وَمَن یَعۡصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَیَتَعَدَّ حُدُودَهُۥ یُدۡخِلۡهُ نَارًا خَـٰلِدࣰا فِیهَا وَلَهُۥ عَذَابࣱ مُّهِینࣱ ﴿14﴾

আর যে কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের অবাধ্য হয় আর তাঁর সীমা লঙ্ঘন করে, তাকে তিনি প্রবেশ করাবেন আগুনে, সেখানে থাকবার জন্য দীর্ঘকাল, আর তার জন্য রয়েছে লাঞ্ঝনাদায়ক শাস্তি।

وَٱلَّـٰتِی یَأۡتِینَ ٱلۡفَـٰحِشَةَ مِن نِّسَاۤىِٕكُمۡ فَٱسۡتَشۡهِدُوا۟ عَلَیۡهِنَّ أَرۡبَعَةࣰ مِّنكُمۡۖ فَإِن شَهِدُوا۟ فَأَمۡسِكُوهُنَّ فِی ٱلۡبُیُوتِ حَتَّىٰ یَتَوَفَّىٰهُنَّ ٱلۡمَوۡتُ أَوۡ یَجۡعَلَ ٱللَّهُ لَهُنَّ سَبِیلࣰا ﴿15﴾

আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা অশ্লীল আচরণ করে তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্যে থেকে চারজন সাক্ষী ডাকো, তারা যদি সাক্ষ্য দেয় তবে তাদের ঘরের ভেতরে আটক করে রাখো যে পর্যন্ত না মৃত্যু তাদের উপরে ঘনিয়ে আসে, অথবা আল্লাহ্ তাদের জন্য পথ করে দেন।

وَٱلَّذَانِ یَأۡتِیَـٰنِهَا مِنكُمۡ فَـَٔاذُوهُمَاۖ فَإِن تَابَا وَأَصۡلَحَا فَأَعۡرِضُوا۟ عَنۡهُمَاۤۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ تَوَّابࣰا رَّحِیمًا ﴿16﴾

আর তোমাদের মধ্যে দুজন যদি ঐ আচরণ করে তবে তাদের উভয়কেই অল্প শাস্তি দাও। তারপর যদি তারা তওবা করে ও শোধরায় তবে তাদের থেকে ফিরিয়ে নাও। নিঃসন্দেহ আল্লাহ বারবার ফেরেন, অফুরন্ত ফলদাতা।

إِنَّمَا ٱلتَّوۡبَةُ عَلَى ٱللَّهِ لِلَّذِینَ یَعۡمَلُونَ ٱلسُّوۤءَ بِجَهَـٰلَةࣲ ثُمَّ یَتُوبُونَ مِن قَرِیبࣲ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ یَتُوبُ ٱللَّهُ عَلَیۡهِمۡۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿17﴾

নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌র পক্ষে ফেরা সব তাদের প্রতি যারা কুকর্ম করে অজ্ঞানতা বশতঃ, তারপর অবিলন্বে তওবা ক রে, অতএব এরাই -- আল্লাহ্ এদের প্রতি ফেরেন, আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

وَلَیۡسَتِ ٱلتَّوۡبَةُ لِلَّذِینَ یَعۡمَلُونَ ٱلسَّیِّـَٔاتِ حَتَّىٰۤ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ ٱلۡمَوۡتُ قَالَ إِنِّی تُبۡتُ ٱلۡـَٔـٰنَ وَلَا ٱلَّذِینَ یَمُوتُونَ وَهُمۡ كُفَّارٌۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَعۡتَدۡنَا لَهُمۡ عَذَابًا أَلِیمࣰا ﴿18﴾

আর তওবা তাদের জন্য নয় যারা কুকর্ম করেই চলে, যে পর্যন্ত না মৃত্যু তাদের কোনো একের কাছে হাজির হলে সে বলে -- ''আমি অবশ্যই এখন তওবা করছি’’, তাদের জন্যও যারা মারা যায় অথচ তারা অবিশ্বাসী থাকে। তারাই -- তাদের জন্য আমরা তৈরি করেছি ব্যথাদায়ক শাস্তি।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا یَحِلُّ لَكُمۡ أَن تَرِثُوا۟ ٱلنِّسَاۤءَ كَرۡهࣰاۖ وَلَا تَعۡضُلُوهُنَّ لِتَذۡهَبُوا۟ بِبَعۡضِ مَاۤ ءَاتَیۡتُمُوهُنَّ إِلَّاۤ أَن یَأۡتِینَ بِفَـٰحِشَةࣲ مُّبَیِّنَةࣲۚ وَعَاشِرُوهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ فَإِن كَرِهۡتُمُوهُنَّ فَعَسَىٰۤ أَن تَكۡرَهُوا۟ شَیۡـࣰٔا وَیَجۡعَلَ ٱللَّهُ فِیهِ خَیۡرࣰا كَثِیرࣰا ﴿19﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের জন্য বৈধ নয় যে তোমরা স্ত্রীদের জবরদস্তি উত্তরাধিকার-সূত্রে গ্রহণ করবে। আর তাদের উপরে জোরজুলুম করো না তোমরা যা তাদের দিয়েছ তার অংশ বিশেষ ফিরে পাবার জন্য, যদি না তারা জাজ্জ্বল্যমান অশ্লীল আচরণে লিপ্ত হয়। আর তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করো। অবশ্য যদি তোমরা তাদের ঘৃণা করো তবে হতে পারে তোমরা এমন একটা কিছু অপছন্দ করলে অথচ আল্লাহ্ তার মধ্যে প্রচুর কল্যাণ নিহিত রেখেছেন।

وَإِنۡ أَرَدتُّمُ ٱسۡتِبۡدَالَ زَوۡجࣲ مَّكَانَ زَوۡجࣲ وَءَاتَیۡتُمۡ إِحۡدَىٰهُنَّ قِنطَارࣰا فَلَا تَأۡخُذُوا۟ مِنۡهُ شَیۡـًٔاۚ أَتَأۡخُذُونَهُۥ بُهۡتَـٰنࣰا وَإِثۡمࣰا مُّبِینࣰا ﴿20﴾

আর তোমরা যদি এক স্ত্রীর স্থলে আরেক স্ত্রী বদলে নিতে চাও, আর যদি এদের একজনকে একস্তূপ দিয়ে থাকো, তবে তা থেকে কিছুই নিও না। তোমরা কি তা নেবে কুৎসা রটিয়ে এবং ডাহা অন্যায় করে?

وَكَیۡفَ تَأۡخُذُونَهُۥ وَقَدۡ أَفۡضَىٰ بَعۡضُكُمۡ إِلَىٰ بَعۡضࣲ وَأَخَذۡنَ مِنكُم مِّیثَـٰقًا غَلِیظࣰا ﴿21﴾

আর কেমন করে তোমরা তা নিতে পারো যখন তোমাদের একে অন্যতে গমন করেছ আর তারা তোমাদের থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছে?

وَلَا تَنكِحُوا۟ مَا نَكَحَ ءَابَاۤؤُكُم مِّنَ ٱلنِّسَاۤءِ إِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَۚ إِنَّهُۥ كَانَ فَـٰحِشَةࣰ وَمَقۡتࣰا وَسَاۤءَ سَبِیلًا ﴿22﴾

আর তোমাদের পিতারা যাদের বিয়ে করেছিল সে-সব স্ত্রীলোকদের বিয়ে করো না, -- অবশ্য যা ইতিমধ্যে ঘটে গেছে তা ব্যতীত। নিঃসন্দেহ এটি হচ্ছে একটি অশ্লীল আচরণ ও ঘৃণ্য কর্ম, আর জঘন্য পন্থা!

حُرِّمَتۡ عَلَیۡكُمۡ أُمَّهَـٰتُكُمۡ وَبَنَاتُكُمۡ وَأَخَوَ ٰ⁠تُكُمۡ وَعَمَّـٰتُكُمۡ وَخَـٰلَـٰتُكُمۡ وَبَنَاتُ ٱلۡأَخِ وَبَنَاتُ ٱلۡأُخۡتِ وَأُمَّهَـٰتُكُمُ ٱلَّـٰتِیۤ أَرۡضَعۡنَكُمۡ وَأَخَوَ ٰ⁠تُكُم مِّنَ ٱلرَّضَـٰعَةِ وَأُمَّهَـٰتُ نِسَاۤىِٕكُمۡ وَرَبَـٰۤىِٕبُكُمُ ٱلَّـٰتِی فِی حُجُورِكُم مِّن نِّسَاۤىِٕكُمُ ٱلَّـٰتِی دَخَلۡتُم بِهِنَّ فَإِن لَّمۡ تَكُونُوا۟ دَخَلۡتُم بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ وَحَلَـٰۤىِٕلُ أَبۡنَاۤىِٕكُمُ ٱلَّذِینَ مِنۡ أَصۡلَـٰبِكُمۡ وَأَن تَجۡمَعُوا۟ بَیۡنَ ٱلۡأُخۡتَیۡنِ إِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿23﴾

তোমাদের জন্য অবৈধ হচ্ছে -- তোমাদের মায়েরা আর তোমাদের মেয়েরা আর তোমাদের বোনেরা আর তোমাদের ফুফুরা আর তোমাদের মাসীরা, আর ভাইয়ের মেয়েরা ও বোনের মেয়েরা, আর তোমাদের মায়েরা যারা তোমাদের স্তন্যদান করেছে, আর দুধ- মায়ের দিক থেকে তোমাদের বোনেরা, আর তোমাদের স্ত্রীদের মায়েরা, আর তোমাদের সৎ-মেয়েরা যারা তোমাদের অভিভাবকত্বে আছে -- তোমাদের তেমন স্ত্রীদের থেকে যাদের সাথে সহবাস করেছ, কিন্তু যদি তাদের সাথে সহবাস করে না থাক তবে তোমাদের অপরাধ হবে না, আর যারা তোমাদের ঔরস থেকে তোমাদের তেমন ছেলেদের স্ত্রীরা; আর যেন তোমরা দুই বোনের মধ্যে জমায়েৎ করো -- অবশ্য যা ইতিমধ্যে ঘটে গেছে তা ব্যতীত। অবশ্য আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

۞ وَٱلۡمُحۡصَنَـٰتُ مِنَ ٱلنِّسَاۤءِ إِلَّا مَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُكُمۡۖ كِتَـٰبَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡۚ وَأُحِلَّ لَكُم مَّا وَرَاۤءَ ذَ ٰ⁠لِكُمۡ أَن تَبۡتَغُوا۟ بِأَمۡوَ ٰ⁠لِكُم مُّحۡصِنِینَ غَیۡرَ مُسَـٰفِحِینَۚ فَمَا ٱسۡتَمۡتَعۡتُم بِهِۦ مِنۡهُنَّ فَـَٔاتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِیضَةࣰۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ فِیمَا تَرَ ٰ⁠ضَیۡتُم بِهِۦ مِنۢ بَعۡدِ ٱلۡفَرِیضَةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿24﴾

আর স্ত্রীলোকদের মধ্যের সধবা যারা, তবে তোমাদের ডান হাত যাদের ধরে রেখেছে তাদের ব্যতীত, তোমাদের প্রতি আল্লাহ্‌র বিধান। আর এদের বাইরে তোমাদের জন্য বৈধ করা গেল যদি তোমরা চাও তোমাদের ধনদৌলত দিয়ে বিবাহ -বন্ধনের মাধ্যম, ব্যভিচারের জন্য নয়। অতএব তাদের মধ্যের যাদের থেকে তোমরা সুফল পেতে চাও তাদের নির্ধারিত মহরানা তাদের প্রদান করো। আর তোমাদের জন্য দূষণীয় হবে না নির্ধারিত হবার পরে তোমরা যাতে পরস্পর সম্মত হও। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

وَمَن لَّمۡ یَسۡتَطِعۡ مِنكُمۡ طَوۡلًا أَن یَنكِحَ ٱلۡمُحۡصَنَـٰتِ ٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ فَمِن مَّا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُكُم مِّن فَتَیَـٰتِكُمُ ٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِۚ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِإِیمَـٰنِكُمۚ بَعۡضُكُم مِّنۢ بَعۡضࣲۚ فَٱنكِحُوهُنَّ بِإِذۡنِ أَهۡلِهِنَّ وَءَاتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِ مُحۡصَنَـٰتٍ غَیۡرَ مُسَـٰفِحَـٰتࣲ وَلَا مُتَّخِذَ ٰ⁠تِ أَخۡدَانࣲۚ فَإِذَاۤ أُحۡصِنَّ فَإِنۡ أَتَیۡنَ بِفَـٰحِشَةࣲ فَعَلَیۡهِنَّ نِصۡفُ مَا عَلَى ٱلۡمُحۡصَنَـٰتِ مِنَ ٱلۡعَذَابِۚ ذَ ٰ⁠لِكَ لِمَنۡ خَشِیَ ٱلۡعَنَتَ مِنكُمۡۚ وَأَن تَصۡبِرُوا۟ خَیۡرࣱ لَّكُمۡۗ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿25﴾

আর তোমাদের মধ্যে যার আর্থিক সংগতি নেই যে বিশ্বাসিনী স্বাধীন নারীকে বিয়ে করতে পারে, সে তবে তোমাদের ডান হাতে ধরে রাখা বিশ্বাসিনী কুমারীদের মধ্য থেকে। আর আল্লাহ্ ভালো জানেন তোমাদের ধর্মবিশ্বাস সন্বন্ধে, তোমরা একে অন্য থেকে কাজেই তাদের বিয়ে করো তাদের মনিবের অনুমতি নিয়ে, আর তাদের মহরানা তাদের দাও সুষ্ঠুভাবে, -- বিবাহ-বন্ধনের মাধ্যমে, ব্যভিচারের জন্যে নয় আর রক্ষিতারূপে গ্রহণ করেও নয়। অতএব যখন তাদের বিবাহ-বন্ধনে আনা হয়, তারপর যদি তারা অশ্লীল আচরণ করে তবে তাদের জন্য হচ্ছে স্বাধীন নারীদের জন্যে নির্ধারিত শাস্তির অর্ধেক। এ হচ্ছে তোমাদের মধ্যে তার জন্য যে পাপে পড়ার ভয় করে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধরো, তবে সেটি তোমাদের জন্য বেশী ভালো। আর আল্লাহ্ ত্রাণকর্তা, অফুরন্ত ফলদাতা।

یُرِیدُ ٱللَّهُ لِیُبَیِّنَ لَكُمۡ وَیَهۡدِیَكُمۡ سُنَنَ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَیَتُوبَ عَلَیۡكُمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿26﴾

আল্লাহ্ চান তোমাদের পূর্ববর্তী যারা ছিল তাদের দৃষ্টান্তেরদ্বারা তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট করতে ও তোমাদের হেদায়ত করতে, আর তোমাদের দিকে ফিরতে। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

وَٱللَّهُ یُرِیدُ أَن یَتُوبَ عَلَیۡكُمۡ وَیُرِیدُ ٱلَّذِینَ یَتَّبِعُونَ ٱلشَّهَوَ ٰ⁠تِ أَن تَمِیلُوا۟ مَیۡلًا عَظِیمࣰا ﴿27﴾

আর আল্লাহ্ চান যে তিনি তোমাদের দিকে সর্বদা ফেরেন, কিন্তু যারা কাম-লালসার অনুসরণ করে তারা চায় তোমরাও যেন গহীন বিপথে পথ হারাও।

یُرِیدُ ٱللَّهُ أَن یُخَفِّفَ عَنكُمۡۚ وَخُلِقَ ٱلۡإِنسَـٰنُ ضَعِیفࣰا ﴿28﴾

আল্লাহ্ চান যে তিনি তোমাদের বোঝা হাল্কা করেন, আর মানুষকে দুর্বল ক’রে সৃষ্টি করা হয়েছে ।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَأۡكُلُوۤا۟ أَمۡوَ ٰ⁠لَكُم بَیۡنَكُم بِٱلۡبَـٰطِلِ إِلَّاۤ أَن تَكُونَ تِجَـٰرَةً عَن تَرَاضࣲ مِّنكُمۡۚ وَلَا تَقۡتُلُوۤا۟ أَنفُسَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِیمࣰا ﴿29﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের সম্পত্তি জুচ্চুরি করে নিজেদের মধ্যে গ্রাস করো না, তবে যদি তোমাদের পরস্পর সম্মতিক্রমে ব্যবসা-বাণিজ্যের দ্বারা এ হয়ে থাকে, আর নিজেদের লোকদের হত্যা করো না, যেহেতু আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ তোমাদের প্রতি অফুরন্ত ফলদাতা।

وَمَن یَفۡعَلۡ ذَ ٰ⁠لِكَ عُدۡوَ ٰ⁠نࣰا وَظُلۡمࣰا فَسَوۡفَ نُصۡلِیهِ نَارࣰاۚ وَكَانَ ذَ ٰ⁠لِكَ عَلَى ٱللَّهِ یَسِیرًا ﴿30﴾

আর যে কেউ তা করে উল্লঙ্ঘন ক’রে ও অত্যাচার ক’রে, আমরা অচিরেই তাকে ফেলবো আগুনে। আর এ আল্লাহ্‌র জন্য সহজ ব্যাপার।

إِن تَجۡتَنِبُوا۟ كَبَاۤىِٕرَ مَا تُنۡهَوۡنَ عَنۡهُ نُكَفِّرۡ عَنكُمۡ سَیِّـَٔاتِكُمۡ وَنُدۡخِلۡكُم مُّدۡخَلࣰا كَرِیمࣰا ﴿31﴾

যদি তোমরা বিরত থাকো বড়গুলো থেকে যা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তবে তোমাদের থেকে আমরা তোমাদের দোষত্রুটি মূছে দেব, আর তোমাদের প্রবেশ করাবো এক গৌরবময় প্রবেশদ্বারে।

وَلَا تَتَمَنَّوۡا۟ مَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بِهِۦ بَعۡضَكُمۡ عَلَىٰ بَعۡضࣲۚ لِّلرِّجَالِ نَصِیبࣱ مِّمَّا ٱكۡتَسَبُوا۟ۖ وَلِلنِّسَاۤءِ نَصِیبࣱ مِّمَّا ٱكۡتَسَبۡنَۚ وَسۡـَٔلُوا۟ ٱللَّهَ مِن فَضۡلِهِۦۤۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمࣰا ﴿32﴾

আর ঈর্ষা করো না যে বিষয়দ্বারা আল্লাহ্ তোমাদের কাউকে অপরের উপরে শ্রেষ্ঠতা দিয়েছেন। পুরুষদের জন্য ভাগ রয়েছে যা তারা অর্জন করে, আর নারীদের জন্যেও ভাগ রয়েছে যা তারা অর্জন করে। কাজেই আল্লাহ্‌র কাছে চাও তাঁর করুণাভান্ডার থেকে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।

وَلِكُلࣲّ جَعَلۡنَا مَوَ ٰ⁠لِیَ مِمَّا تَرَكَ ٱلۡوَ ٰ⁠لِدَانِ وَٱلۡأَقۡرَبُونَۚ وَٱلَّذِینَ عَقَدَتۡ أَیۡمَـٰنُكُمۡ فَـَٔاتُوهُمۡ نَصِیبَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ شَهِیدًا ﴿33﴾

আর প্রত্যেকের জন্য আমরা উত্তরাধিকার নির্ধারিত করেছি যা পিতামাতা ও নিকট-আ‌ত্মীয়রা রেখে যায়। আর যাদের সঙ্গে তোমাদের ডান হাতের দ্বারা অঙ্গীকার করেছ তাদের ভাগ তা হলে প্রদান করো। আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ সব-কিছু তেই সাক্ষ্যদাতা।

ٱلرِّجَالُ قَوَّ ٰ⁠مُونَ عَلَى ٱلنِّسَاۤءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضࣲ وَبِمَاۤ أَنفَقُوا۟ مِنۡ أَمۡوَ ٰ⁠لِهِمۡۚ فَٱلصَّـٰلِحَـٰتُ قَـٰنِتَـٰتٌ حَـٰفِظَـٰتࣱ لِّلۡغَیۡبِ بِمَا حَفِظَ ٱللَّهُۚ وَٱلَّـٰتِی تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَٱهۡجُرُوهُنَّ فِی ٱلۡمَضَاجِعِ وَٱضۡرِبُوهُنَّۖ فَإِنۡ أَطَعۡنَكُمۡ فَلَا تَبۡغُوا۟ عَلَیۡهِنَّ سَبِیلًاۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِیࣰّا كَبِیرࣰا ﴿34﴾

পুরুষরা নারীদের অবলন্বন, যেহেতু আল্লাহ্ তাদের এক শ্রেণীকে অন্য শ্রেণীর উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন, এবং যেহেতু তারা তাদের সম্পত্তি থেকে খরচ করে। কাজেই সতীসাধবী নারীরা অনুগতা, গোপনীয়তার রক্ষয়িত্রী, যেমন আল্লাহ্ রক্ষা করেছেন। আর যে নারীদের ক্ষেত্রে তাদের অবাধ্যতা আশঙ্কা করো, তাদের উপদেশ দাও, আর শয্যায় তাদের একা ফেলে রাখো, আর তাদের প্রহার করো। তারপর যদি তারা তোমাদের অনুগতা হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে অন্য পথ খুজোঁ না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, মহামহিম।

وَإِنۡ خِفۡتُمۡ شِقَاقَ بَیۡنِهِمَا فَٱبۡعَثُوا۟ حَكَمࣰا مِّنۡ أَهۡلِهِۦ وَحَكَمࣰا مِّنۡ أَهۡلِهَاۤ إِن یُرِیدَاۤ إِصۡلَـٰحࣰا یُوَفِّقِ ٱللَّهُ بَیۡنَهُمَاۤۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِیمًا خَبِیرࣰا ﴿35﴾

আর যদি তোমরা দু’জনের মধ্যে বিচ্ছেদ আশঙ্কা করো, তবে তার লোকদের থেকে একজন মধ্যস্থ নিয়োগ করো এবং ওর লোকদের থেকেও একজন মধ্যস্থ, যদি তারা দু’জনই মিটমাট চায় তবে আল্লাহ্ তাদের মধ্যে মিলন ঘটাবেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, ওয়াকিফহাল।

۞ وَٱعۡبُدُوا۟ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُوا۟ بِهِۦ شَیۡـࣰٔاۖ وَبِٱلۡوَ ٰ⁠لِدَیۡنِ إِحۡسَـٰنࣰا وَبِذِی ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡیَتَـٰمَىٰ وَٱلۡمَسَـٰكِینِ وَٱلۡجَارِ ذِی ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡجَارِ ٱلۡجُنُبِ وَٱلصَّاحِبِ بِٱلۡجَنۢبِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِیلِ وَمَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ مَن كَانَ مُخۡتَالࣰا فَخُورًا ﴿36﴾

আর আল্লাহ্‌র এবাদত করো, আর তাঁর সাথে অন্য কিছু শরিক করো না, আর পিতামাতার প্রতি সদয় আচরণ করো, আর নিকটা‌ত্মীয়দের প্রতি, আর এতীমদের আর মিসকিনদের, আর নিকট সম্পর্কের প্রতিবেশীর, আর পরকীয় প্রতিবেশীর, আর পার্শ্ববর্তী সাথীর, আর পথচারীর, আর যাকে তোমাদের ডান হাত ধরে রেখেছে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভালোবাসেন না তাকে যে দাম্ভিক, গর্বিত, --

ٱلَّذِینَ یَبۡخَلُونَ وَیَأۡمُرُونَ ٱلنَّاسَ بِٱلۡبُخۡلِ وَیَكۡتُمُونَ مَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦۗ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابࣰا مُّهِینࣰا ﴿37﴾

যে কার্পণ্য করে আর লোকদের কৃপণতার নির্দেশ দেয়, আর লুকিয়ে রাখে আল্লাহ্ যা তাদের দিয়েছেন তাঁর করুনাভান্ডার থেকে। আর অবিশ্বাসীদের জন্যে আমরা তৈরি করেছি লাঞ্ঝনাদায়ক শাস্তি, --

وَٱلَّذِینَ یُنفِقُونَ أَمۡوَ ٰ⁠لَهُمۡ رِئَاۤءَ ٱلنَّاسِ وَلَا یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَلَا بِٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِۗ وَمَن یَكُنِ ٱلشَّیۡطَـٰنُ لَهُۥ قَرِینࣰا فَسَاۤءَ قَرِینࣰا ﴿38﴾

আর যারা তাদের ধনসম্পত্তি খরচ করে লোকদের দেখাবার জন্য, অথচ তারা বিশ্বাস করে না আল্লাহ্‌তে, আর আখেরাতের দিনেও না। আর যার জন্য সঙ্গী হয়েছে শয়তান, -- সে তবে মন্দ সাথী।

وَمَاذَا عَلَیۡهِمۡ لَوۡ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَأَنفَقُوا۟ مِمَّا رَزَقَهُمُ ٱللَّهُۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِهِمۡ عَلِیمًا ﴿39﴾

আর এতে তাদের কি বা হতো যদি তারা আল্লাহ্‌তে ও আখেরাতের দিনে ঈমান আনতো, আর খরচ করতো আল্লাহ্ তাদের যা রিযেক দিয়েছেন তা থেকে? আর আল্লাহ্ তাদের ব্যাপারে সর্বজ্ঞাতা।

إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَظۡلِمُ مِثۡقَالَ ذَرَّةࣲۖ وَإِن تَكُ حَسَنَةࣰ یُضَـٰعِفۡهَا وَیُؤۡتِ مِن لَّدُنۡهُ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿40﴾

নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ অনুপরিমাণেও অবিচার করেন না; আর যদি এটা শুভ কাজ হয় তিনি তা বহুগুণিত করেন, আর তাঁর নিজের তরফ থেকে দেন মহান পুরস্কার।

فَكَیۡفَ إِذَا جِئۡنَا مِن كُلِّ أُمَّةِۭ بِشَهِیدࣲ وَجِئۡنَا بِكَ عَلَىٰ هَـٰۤؤُلَاۤءِ شَهِیدࣰا ﴿41﴾

কাজেকাজেই তখন কেমন হবে যখন প্রত্যেক জাতি থেকে আমরা এক একজন সাক্ষী আনবো, আর তোমাকে আনবো তাদের সমক্ষে সাক্ষীরূপে?

یَوۡمَىِٕذࣲ یَوَدُّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَعَصَوُا۟ ٱلرَّسُولَ لَوۡ تُسَوَّىٰ بِهِمُ ٱلۡأَرۡضُ وَلَا یَكۡتُمُونَ ٱللَّهَ حَدِیثࣰا ﴿42﴾

সেইদিন তারা চাইবে যারা অবিশ্বাস করে ও রসূলকে অমান্য করে, -- তাদের নিয়ে পৃথিবীটা যদি সমতল হয়ে যেত। আর তারা আল্লাহ্ থেকে কোনো কথা লুকোতে পারবে না।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَقۡرَبُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنتُمۡ سُكَـٰرَىٰ حَتَّىٰ تَعۡلَمُوا۟ مَا تَقُولُونَ وَلَا جُنُبًا إِلَّا عَابِرِی سَبِیلٍ حَتَّىٰ تَغۡتَسِلُوا۟ۚ وَإِن كُنتُم مَّرۡضَىٰۤ أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوۡ جَاۤءَ أَحَدࣱ مِّنكُم مِّنَ ٱلۡغَاۤىِٕطِ أَوۡ لَـٰمَسۡتُمُ ٱلنِّسَاۤءَ فَلَمۡ تَجِدُوا۟ مَاۤءࣰ فَتَیَمَّمُوا۟ صَعِیدࣰا طَیِّبࣰا فَٱمۡسَحُوا۟ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَیۡدِیكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا ﴿43﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! নামাযের ধারে-কাছে যেয়ো না যখন তোমরা নেশায় চুর হয়ে থাকো, যে পর্যন্ত না তোমরা বুঝো কি তোমরা বলছো, অথবা যৌন-সম্ভোগ করার পরবর্তী অবস্থায়, -- তবে শুধু অতিক্রম করা ছাড়া -- যতক্ষণ না গোসল করেছ। আর যদি তোমরা অসুস্থ হও, অথবা সফরে থাকো, অথবা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে এসেছ, অথবা স্ত্রীদের স্পর্শ করেছ, আর যদি পানি না পাও তবে তৈয়ম্মুম করো বিশুদ্ধ মাটি নিয়ে, আর তোমাদের মুখমন্ডল ও তোমাদের হাত মুসেহ্ করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মার্জনাকারী, পরিত্রাণকারী।

أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ نَصِیبࣰا مِّنَ ٱلۡكِتَـٰبِ یَشۡتَرُونَ ٱلضَّلَـٰلَةَ وَیُرِیدُونَ أَن تَضِلُّوا۟ ٱلسَّبِیلَ ﴿44﴾

তুমি কি তাদের কথা ভেবে দেখো নি যাদের গ্রন্থের কিছু অংশ দেওয়া হয়েছিল, -- তারা ভুলভ্রান্তি কিনে নেয়, আর চায় যে তোমরাও পথ থেকে পথভ্রষ্ট হও?

وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِأَعۡدَاۤىِٕكُمۡۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَلِیࣰّا وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ نَصِیرࣰا ﴿45﴾

আর আল্লাহ্ ভালো জানেন তোমাদের শত্রুদের। আর আল্লাহ্‌ই মূরব্বীরূপে যথেষ্ট, আর আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট সহায়করূপে।

مِّنَ ٱلَّذِینَ هَادُوا۟ یُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِۦ وَیَقُولُونَ سَمِعۡنَا وَعَصَیۡنَا وَٱسۡمَعۡ غَیۡرَ مُسۡمَعࣲ وَرَ ٰ⁠عِنَا لَیَّۢا بِأَلۡسِنَتِهِمۡ وَطَعۡنࣰا فِی ٱلدِّینِۚ وَلَوۡ أَنَّهُمۡ قَالُوا۟ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَا وَٱسۡمَعۡ وَٱنظُرۡنَا لَكَانَ خَیۡرࣰا لَّهُمۡ وَأَقۡوَمَ وَلَـٰكِن لَّعَنَهُمُ ٱللَّهُ بِكُفۡرِهِمۡ فَلَا یُؤۡمِنُونَ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿46﴾

যারা ইহুদী মত পোষণ করে তাদের মাঝে কেউ কেউ কালামগুলো তাদের স্থান থেকে সরিয়ে দেয় আর বলে -- 'আমরা শুনেছি’, আর 'আমরা অমান্য করি’; আর 'শোনো’ -- 'তার মতো যে শোনে না’; আর ''রা'ইর্না\" -- তাদের জিহবারদ্বারা বিকৃত ক’রে; আর ধর্ম নিয়ে বিদ্রূপ করে। আর যদি তারা বলতো -- ''আমরা শুনেছি ও আমরা মান্য করি, আর শুনুন ও 'উনযুরনর্া’ তবে তা তাদের জন্য বেশী ভালো হতো ও বেশী ন্যায়সঙ্গত। কিন্তু আল্লাহ্ তাদের ধিক্কার দিয়েছেন তাদের অবিশ্বাসের জন্য, কাজেই তারা ঈমান আনে না অল্প ছাড়া।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ ءَامِنُوا۟ بِمَا نَزَّلۡنَا مُصَدِّقࣰا لِّمَا مَعَكُم مِّن قَبۡلِ أَن نَّطۡمِسَ وُجُوهࣰا فَنَرُدَّهَا عَلَىٰۤ أَدۡبَارِهَاۤ أَوۡ نَلۡعَنَهُمۡ كَمَا لَعَنَّاۤ أَصۡحَـٰبَ ٱلسَّبۡتِۚ وَكَانَ أَمۡرُ ٱللَّهِ مَفۡعُولًا ﴿47﴾

ওহে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে! তোমরা ঈমান আনো তাতে যা আমরা নাযিল করেছি তোমাদের কাছে যা আছে তার সত্য- সমর্থনরূপে, মূখপাত্রদের বিধবস্ত করবার ও তাদের পেছনের দিকে ফিরিয়ে দেবার, অথবা তাদের বঞ্চিত করবার পূর্বে যেমন আমরা ধিক্কার দিয়েছিলাম সাব্বাত অনুসরণকারীদের। আর আল্লাহ্‌র হুকুম অবশ্য কার্যকর হবে।

إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَغۡفِرُ أَن یُشۡرَكَ بِهِۦ وَیَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَ ٰ⁠لِكَ لِمَن یَشَاۤءُۚ وَمَن یُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱفۡتَرَىٰۤ إِثۡمًا عَظِیمًا ﴿48﴾

নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমা করবেন না যে, তাঁর সাথে কাউকে শরিক করা হোক, আর তা ছাড়া আর সব তিনি ক্ষমা করেন যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে কেউ আল্লাহ্‌র সাথে শরিক করে সে তাহলে উদ্ভাবন করেছে বিরাট পাপ।

أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ یُزَكُّونَ أَنفُسَهُمۚ بَلِ ٱللَّهُ یُزَكِّی مَن یَشَاۤءُ وَلَا یُظۡلَمُونَ فَتِیلًا ﴿49﴾

তুমি কি তাদের দিকে চেয়ে দেখো নি যারা নিজেদের প্রতি পবিত্রতা আরোপ করে? না, আল্লাহ্ পবিত্র করেন যাদের তিনি পছন্দ করেন। আর তাদের অন্যায় করা হবে না খেজুর-বিচির-পাতলা-আবরণ পরিমাণেও।

ٱنظُرۡ كَیۡفَ یَفۡتَرُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَۖ وَكَفَىٰ بِهِۦۤ إِثۡمࣰا مُّبِینًا ﴿50﴾

দেখো, কেমন ক’রে তারা আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে মিথ্যা রচনা ক’রে! আর স্পষ্ট পাপ হিসেবে এটিই যথেষ্ট।

أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ نَصِیبࣰا مِّنَ ٱلۡكِتَـٰبِ یُؤۡمِنُونَ بِٱلۡجِبۡتِ وَٱلطَّـٰغُوتِ وَیَقُولُونَ لِلَّذِینَ كَفَرُوا۟ هَـٰۤؤُلَاۤءِ أَهۡدَىٰ مِنَ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ سَبِیلًا ﴿51﴾

তুমি কি তাদের কথা ভেবে দেখো নি যাদের কিতাবের কিছু অংশ দেওয়া হয়েছিল, যারা বিশ্বাস করে তন্ত্রমন্ত্রে ও তাগুতে, আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের সন্বন্ধে যারা বলে -- ''যারা ঈমান এনেছে তাদের চাইতে এরাই পথে অধিকতর সুপথগামী?’’

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ لَعَنَهُمُ ٱللَّهُۖ وَمَن یَلۡعَنِ ٱللَّهُ فَلَن تَجِدَ لَهُۥ نَصِیرًا ﴿52﴾

এরাই সেইসব যাদের আল্লাহ্ ধিক্কার দিয়েছেন। আর যাকে আল্লাহ্ বঞ্চিত করেন তার জন্য তুমি কোনো সাহায্যকারী পাবে না।

أَمۡ لَهُمۡ نَصِیبࣱ مِّنَ ٱلۡمُلۡكِ فَإِذࣰا لَّا یُؤۡتُونَ ٱلنَّاسَ نَقِیرًا ﴿53﴾

অথবা, তাদের কি কোনো ভাগ আছে সাম্রাজ্যে? তবে কিন্তু তারা লোকজনকে দিত না খেজুর বিচির খোসাটুকুও।

أَمۡ یَحۡسُدُونَ ٱلنَّاسَ عَلَىٰ مَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦۖ فَقَدۡ ءَاتَیۡنَاۤ ءَالَ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَءَاتَیۡنَـٰهُم مُّلۡكًا عَظِیمࣰا ﴿54﴾

অথবা তারা কি লোকদের ঈর্ষা করে আল্লাহ্ তাঁর করুণাভান্ডার থেকে তাদের যা দিয়েছেন সেজন্য? তবে আমরা নিশ্চয়ই ইব্রাহীমের বংশধরদের দিয়েছি কিতাব ও জ্ঞানবিজ্ঞান, আর আমরা তাদের দিয়েছি এক বিশাল রাজত্ব।

فَمِنۡهُم مَّنۡ ءَامَنَ بِهِۦ وَمِنۡهُم مَّن صَدَّ عَنۡهُۚ وَكَفَىٰ بِجَهَنَّمَ سَعِیرًا ﴿55﴾

অতএব তাদের মধ্যে আছে সে যে তাঁর প্রতি ঈমান এনেছে, আবার তাদের মধ্যে সেও আছে যে তাঁর থেকে ফিরে যায়। আর জ্বলন্ত আগুনরূপে জাহান্নামই যথেষ্ট।

إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ بِـَٔایَـٰتِنَا سَوۡفَ نُصۡلِیهِمۡ نَارࣰا كُلَّمَا نَضِجَتۡ جُلُودُهُم بَدَّلۡنَـٰهُمۡ جُلُودًا غَیۡرَهَا لِیَذُوقُوا۟ ٱلۡعَذَابَۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَزِیزًا حَكِیمࣰا ﴿56﴾

যারা আমাদের নির্দেশাবলীতে অবিশ্বাস পোষণ করে, নিশ্চয়ই তাদের আমরা অচিরে আগুনে প্রবেশ করাবো। যতবার তাদের চামড়া পুরোপুরি পুড়ে যাবে ততবার আমরা সেগুলো বদলে দেবো তার পরিবর্তে অন্য চামড়া দিয়ে যাতে তারা শাস্তি আস্বাদন করে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ سَنُدۡخِلُهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۖ لَّهُمۡ فِیهَاۤ أَزۡوَ ٰ⁠جࣱ مُّطَهَّرَةࣱۖ وَنُدۡخِلُهُمۡ ظِلࣰّا ظَلِیلًا ﴿57﴾

আর যারা ঈমান আনে ও সৎকাজে করে তাদের আমরা শীঘ্রই প্রবেশ করাবো স্বর্গোউদ্যানসমূহে, যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, তাতে তারা থাকবে চিরকাল। তাদের জন্য এর মধ্যে থাকবে পবিত্র সঙ্গিসাথী, আর তাদের আমরা প্রবেশ করাবো গহন ছায়ায়।

۞ إِنَّ ٱللَّهَ یَأۡمُرُكُمۡ أَن تُؤَدُّوا۟ ٱلۡأَمَـٰنَـٰتِ إِلَىٰۤ أَهۡلِهَا وَإِذَا حَكَمۡتُم بَیۡنَ ٱلنَّاسِ أَن تَحۡكُمُوا۟ بِٱلۡعَدۡلِۚ إِنَّ ٱللَّهَ نِعِمَّا یَعِظُكُم بِهِۦۤۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ سَمِیعَۢا بَصِیرࣰا ﴿58﴾

আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তোমাদের আদেশ করছেন যেন তোমরা আমানত তাদের বাসিন্দাদের সমর্পণ করো, আর যখন তো মরা লোকদের মধ্যে বিচার-আচার করো তখন যেন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ কি উত্তম উপদেশ তোমাদের দিয়ে থাকেন! নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বদর্শী।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَطِیعُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُوا۟ ٱلرَّسُولَ وَأُو۟لِی ٱلۡأَمۡرِ مِنكُمۡۖ فَإِن تَنَـٰزَعۡتُمۡ فِی شَیۡءࣲ فَرُدُّوهُ إِلَى ٱللَّهِ وَٱلرَّسُولِ إِن كُنتُمۡ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِۚ ذَ ٰ⁠لِكَ خَیۡرࣱ وَأَحۡسَنُ تَأۡوِیلًا ﴿59﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্‌কে অনুসরণ করো, ও রসূলের অনুগমন করো, আর তোমাদের মধ্যে যাদের হুকুম দেবার ভার আছে। তারপর যদি কোনো বিষয়ে তোমরা মতভেদ করো তবে তা পেশ করো আল্লাহ্ ও রসূলের কাছে, যদি তোমরা আল্লাহ্‌তে ও আখেরাতের দিনে বিশ্বাস করে থাকো। এটিই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ও সর্বাঙ্গ সুন্দর সমাপ্তিকরণ।

أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ یَزۡعُمُونَ أَنَّهُمۡ ءَامَنُوا۟ بِمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ وَمَاۤ أُنزِلَ مِن قَبۡلِكَ یُرِیدُونَ أَن یَتَحَاكَمُوۤا۟ إِلَى ٱلطَّـٰغُوتِ وَقَدۡ أُمِرُوۤا۟ أَن یَكۡفُرُوا۟ بِهِۦۖ وَیُرِیدُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ أَن یُضِلَّهُمۡ ضَلَـٰلَۢا بَعِیدࣰا ﴿60﴾

তুমি কি তাদের দিকে চেয়ে দেখো নি যারা ভাণ করে যে তারা বিশ্বাস করে যা তোমার কাছে অবতীর্ণ হয়েছে ও যা তোমার পূর্ববর্তীদের কাছে অবতীর্ণ হয়েছে, তারা বিচার খুজঁতে চায় তাগুত থেকে, যদিও নিশ্চয়ই তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তাকে অস্বীকার করতে? আর শয়তান চায় তাদের সুদূর বিপথে পথহারা করতে।

وَإِذَا قِیلَ لَهُمۡ تَعَالَوۡا۟ إِلَىٰ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَإِلَى ٱلرَّسُولِ رَأَیۡتَ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ یَصُدُّونَ عَنكَ صُدُودࣰا ﴿61﴾

আর যখন তাদের বলা হয় -- ''আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে এবং রসূলের দিকে এসো’’, তুমি দেখতে পাবে মুনাফিকরা তোমার কাছ থেকে ফিরে যাচ্ছে বিতৃষ্ণার সাথে।

فَكَیۡفَ إِذَاۤ أَصَـٰبَتۡهُم مُّصِیبَةُۢ بِمَا قَدَّمَتۡ أَیۡدِیهِمۡ ثُمَّ جَاۤءُوكَ یَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ إِنۡ أَرَدۡنَاۤ إِلَّاۤ إِحۡسَـٰنࣰا وَتَوۡفِیقًا ﴿62﴾

কিন্তু কেমন হবে যখন তাদের উপরে কোনো মূছিবত এসে পড়বে যা তাদের হাত আগ-বাড়িয়েছে সে জন্য? তখন তারা তোমার কাছে আসবে আল্লাহ্‌র নামে হলফ করে -- ''আমরা কিন্তু চেয়েছি কল্যাণ ও সদ্ভাব ছাড়া অন্য কিছু নয়।’’

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ یَعۡلَمُ ٱللَّهُ مَا فِی قُلُوبِهِمۡ فَأَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَعِظۡهُمۡ وَقُل لَّهُمۡ فِیۤ أَنفُسِهِمۡ قَوۡلَۢا بَلِیغࣰا ﴿63﴾

এরাই তারা যাদের সন্বন্ধে আল্লাহ জানেন কি আছে তাদের অন্তরে। অতএব তাদের থেকে ঘুরে দাঁড়াও, তবে তাদের উপদেশ দাও, এবং তাদের নিজেদের সন্বন্ধে তাদের বলো মর্মস্পশী কথা।

وَمَاۤ أَرۡسَلۡنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا لِیُطَاعَ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ وَلَوۡ أَنَّهُمۡ إِذ ظَّلَمُوۤا۟ أَنفُسَهُمۡ جَاۤءُوكَ فَٱسۡتَغۡفَرُوا۟ ٱللَّهَ وَٱسۡتَغۡفَرَ لَهُمُ ٱلرَّسُولُ لَوَجَدُوا۟ ٱللَّهَ تَوَّابࣰا رَّحِیمࣰا ﴿64﴾

আর আমরা কোনো রসূল পাঠাই নি আল্লাহ্‌র হুকুমে তাঁদের অনুসরণ করার জন্যে ছাড়া। আর তারা যদি, যখন তারা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছিল, তখন তোমার কাছে আসতো ও আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতো, আর রসূলও যদি তাদের জন্যে ক্ষমা চাইতেন, তবে তারা আল্লাহ্‌কে পেতো বারবার প্রত্যাবর্তনকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

فَلَا وَرَبِّكَ لَا یُؤۡمِنُونَ حَتَّىٰ یُحَكِّمُوكَ فِیمَا شَجَرَ بَیۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا یَجِدُوا۟ فِیۤ أَنفُسِهِمۡ حَرَجࣰا مِّمَّا قَضَیۡتَ وَیُسَلِّمُوا۟ تَسۡلِیمࣰا ﴿65﴾

কিন্তু না, তোমার খোদার কসম! তারা ঈমান আনে না যে পর্যন্ত না তারা তোমাকে বিচারক মনোনীত করে সেই বিষয়ে যাতে তারা পরস্পরের মধ্যে মতবিরোধ করে, তারপর নিজেদের অন্তরে কোনো বিরূপতা পায় না তুমি যা মীমাংসা করো সে-সন্বন্ধে, আর তারা আ‌ত্মসমর্পণ করে পূর্ণ সমর্পণের সাথে।

وَلَوۡ أَنَّا كَتَبۡنَا عَلَیۡهِمۡ أَنِ ٱقۡتُلُوۤا۟ أَنفُسَكُمۡ أَوِ ٱخۡرُجُوا۟ مِن دِیَـٰرِكُم مَّا فَعَلُوهُ إِلَّا قَلِیلࣱ مِّنۡهُمۡۖ وَلَوۡ أَنَّهُمۡ فَعَلُوا۟ مَا یُوعَظُونَ بِهِۦ لَكَانَ خَیۡرࣰا لَّهُمۡ وَأَشَدَّ تَثۡبِیتࣰا ﴿66﴾

আর আমরা যদি তাদের জন্য বিধান করতাম, যথা -- ''তোমাদের প্রাণ বিসর্জন করো’’, অথবা ''তোমাদের বাড়িঘর থেকে বেরিয়ে পড়ো’’, তারা তা করতো না তাদের মধ্যের অল্প কয়েকজন ছাড়া। আর যদি তারা তাই করতো যে ব্যাপারে তাদের উপদেশ দেয়া হয়েছিল তবে তাদের জন্য তা হতো বহু ভালো ও আরো বেশী শক্তিদায়ক;

وَإِذࣰا لَّـَٔاتَیۡنَـٰهُم مِّن لَّدُنَّاۤ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿67﴾

আর তাহলে নিঃসন্দেহ আমাদের তরফ থেকে আমরা তাদের দিতাম বিরাট পুরস্কার;

وَلَهَدَیۡنَـٰهُمۡ صِرَ ٰ⁠طࣰا مُّسۡتَقِیمࣰا ﴿68﴾

আর আমরা নিশ্চয়ই তাদের পরিচালিত করতাম সহজ-সঠিক পথে। আর যে কেউ আল্লাহ্‌র ও রসূলের আজ্ঞাপালন করে, -- এরাই তবে রয়েছে তাঁদের সঙ্গে যাঁদের উপরে আল্লাহ্ নিয়ামত প্রদান করেছেন -- নবীগণের মধ্য থেকে, ও সত্যপরায়ণদের ও সাক্ষ্যদাতাদের এবং সৎকর্মীদের, -- আর এরঁা হচ্ছেন সর্বাঙ্গসুন্দর বন্ধুবর্গ।

وَمَن یُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ مَعَ ٱلَّذِینَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِم مِّنَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ وَٱلصِّدِّیقِینَ وَٱلشُّهَدَاۤءِ وَٱلصَّـٰلِحِینَۚ وَحَسُنَ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ رَفِیقࣰا ﴿69﴾

এই হচ্ছে আল্লাহ্ থেকে অপার করুণা। আর সর্বজ্ঞাতারূপে আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট।

ذَ ٰ⁠لِكَ ٱلۡفَضۡلُ مِنَ ٱللَّهِۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ عَلِیمࣰا ﴿70﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! নিজেদের সতর্কতামূলক সাজ-সরাম নাও, তারপর ভিন্ন ভিন্ন দল হয়ে বেরিয়ে পড়ো অথবা এগিয়ে চলো দলবদ্ধভাবে।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ خُذُوا۟ حِذۡرَكُمۡ فَٱنفِرُوا۟ ثُبَاتٍ أَوِ ٱنفِرُوا۟ جَمِیعࣰا ﴿71﴾

আর নিঃসন্দেহ তোমাদের মধ্যে এমন লোক আছে যে পেছনে পড়ে থাকে, তারপর তোমাদের উপরে যদি কোনো দু র্ঘটনা ঘটে যায় সে বলে -- ''আল্লাহ্ নিশ্চয়ই আমার উপরে অনুগ্রহ করেছেন যে আমি তাদের সঙ্গে চাক্ষুষকারী ছিলুম না।’’

وَإِنَّ مِنكُمۡ لَمَن لَّیُبَطِّئَنَّ فَإِنۡ أَصَـٰبَتۡكُم مُّصِیبَةࣱ قَالَ قَدۡ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَیَّ إِذۡ لَمۡ أَكُن مَّعَهُمۡ شَهِیدࣰا ﴿72﴾

আর যদি আল্লাহ্‌র তরফ থেকে তোমাদের কাছে করুণাভান্ডার এসে পড়ে তখন, যেন তোমাদের মধ্যে ও তার মধ্যে কোনো বন্ধুত্বই ছিল না এমনিভাবে সে বলে উঠে -- ''আফসোস! আমি যদি তাদের সঙ্গে থাকতাম তবে বিরাট সাফল্যে সফলকাম হতে পারতাম।’’

وَلَىِٕنۡ أَصَـٰبَكُمۡ فَضۡلࣱ مِّنَ ٱللَّهِ لَیَقُولَنَّ كَأَن لَّمۡ تَكُنۢ بَیۡنَكُمۡ وَبَیۡنَهُۥ مَوَدَّةࣱ یَـٰلَیۡتَنِی كُنتُ مَعَهُمۡ فَأَفُوزَ فَوۡزًا عَظِیمࣰا ﴿73﴾

কাজেই ওরাই আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করুক যারা এই দুনিয়ার জীবন পরকালের জন্য বিক্রয় করে দেয়। আর যে কেউ আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করে, সে নিহত হোক বা বিজয়ী হোক শীঘ্রই তাকে আমরা দেব মহাপুরস্কার।

۞ فَلۡیُقَـٰتِلۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِینَ یَشۡرُونَ ٱلۡحَیَوٰةَ ٱلدُّنۡیَا بِٱلۡـَٔاخِرَةِۚ وَمَن یُقَـٰتِلۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ فَیُقۡتَلۡ أَوۡ یَغۡلِبۡ فَسَوۡفَ نُؤۡتِیهِ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿74﴾

আর তোমাদের কী আছে যে তোমরা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করবে না, অথচ পুরুষদের মধ্যের দুর্বল লোকেরা আর স্ত্রীলোকেরা আর ছেলেমেয়েরা যারা বলছে -- ''আমাদের প্রভূ! আমাদের বাইরে নিয়ে যাও এই বসতি থেকে যার অধিবাসীরা অত্যাচারী, আর তোমার কাছ থেকে আমাদের জন্য একজন রক্ষাকারী-বন্ধু দাও, আর তোমার কাছ থেকে আমাদের দাও একজন সাহায্যকারী।’’

وَمَا لَكُمۡ لَا تُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَٱلۡمُسۡتَضۡعَفِینَ مِنَ ٱلرِّجَالِ وَٱلنِّسَاۤءِ وَٱلۡوِلۡدَ ٰ⁠نِ ٱلَّذِینَ یَقُولُونَ رَبَّنَاۤ أَخۡرِجۡنَا مِنۡ هَـٰذِهِ ٱلۡقَرۡیَةِ ٱلظَّالِمِ أَهۡلُهَا وَٱجۡعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِیࣰّا وَٱجۡعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِیرًا ﴿75﴾

যারা ঈমান এনেছে তারা যুদ্ধ করে আল্লাহ্‌র পথে, আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা তাগুতের পথে যুদ্ধ করে, অতএব শয়তানের সাঙ্গোপাঙ্গদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। নিঃসন্দেহ শয়তানের চক্রান্ত চির-দুর্বল।

ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ یُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۖ وَٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ یُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱلطَّـٰغُوتِ فَقَـٰتِلُوۤا۟ أَوۡلِیَاۤءَ ٱلشَّیۡطَـٰنِۖ إِنَّ كَیۡدَ ٱلشَّیۡطَـٰنِ كَانَ ضَعِیفًا ﴿76﴾

তুমি কি তাদের দিকে চেয়ে দেখো নি যাদের বলা হয়েছিল -- ''তোমাদের হাত গুটিয়ে রাখো, এবং নামায কায়েম করো, আর যাকাত আদায় করো।’’ কিন্তু যখন তাদের জন্য যুদ্ধের বিধান দেয়া হলো তখন, আশ্চর্য! তাদের একটি দল মানুষকে ভয় করতে লাগলো যেমন উচিত আল্লাহ্‌কে ভয় করা, -- অথবা তার চাইতেও বেশী ভয়, আর বললে -- ''আমাদের প্রভূ! কেন তুমি আমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান করলে? কেন তুমি আমাদের অল্পকালের জন্য বিরাম দিলে না?’’ তুমি বলো -- ''এই দুনিয়ার আয়োজন অল্পক্ষণের জন্য, আর পরকাল হচ্ছে যে ভয় করে তার জন্য উৎকৃষ্টতর। আর তোমাদের অন্যায় করা হবে না খেজুর-বিচির-পাতলা পরত পরিমাণেও!

أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِینَ قِیلَ لَهُمۡ كُفُّوۤا۟ أَیۡدِیَكُمۡ وَأَقِیمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَ فَلَمَّا كُتِبَ عَلَیۡهِمُ ٱلۡقِتَالُ إِذَا فَرِیقࣱ مِّنۡهُمۡ یَخۡشَوۡنَ ٱلنَّاسَ كَخَشۡیَةِ ٱللَّهِ أَوۡ أَشَدَّ خَشۡیَةࣰۚ وَقَالُوا۟ رَبَّنَا لِمَ كَتَبۡتَ عَلَیۡنَا ٱلۡقِتَالَ لَوۡلَاۤ أَخَّرۡتَنَاۤ إِلَىٰۤ أَجَلࣲ قَرِیبࣲۗ قُلۡ مَتَـٰعُ ٱلدُّنۡیَا قَلِیلࣱ وَٱلۡـَٔاخِرَةُ خَیۡرࣱ لِّمَنِ ٱتَّقَىٰ وَلَا تُظۡلَمُونَ فَتِیلًا ﴿77﴾

''যেখানেই তোমরা থাকো মৃত্যু তোমাদের ধরবেই, যদিও তোমরা উঁচু দুর্গে অবস্থান করো।’’ আর যদি ভালো কিছু তাদের জন্য ঘটে তারা বলে, ''এ আল্লাহ্‌র তরফ থেকে।’’ আর যদি খারাপ কিছু তাদের জন্য ঘটে তারা বলে, ''এ তোমার কাছ থেকে।’’ তুমি বলো, ''সবই আল্লাহ্‌র কাছ থেকে।’’ কিন্তু কি হয়েছে এই লোকদের, এরা একথা বুঝবার কোনো চেষ্টা করে না?

أَیۡنَمَا تَكُونُوا۟ یُدۡرِككُّمُ ٱلۡمَوۡتُ وَلَوۡ كُنتُمۡ فِی بُرُوجࣲ مُّشَیَّدَةࣲۗ وَإِن تُصِبۡهُمۡ حَسَنَةࣱ یَقُولُوا۟ هَـٰذِهِۦ مِنۡ عِندِ ٱللَّهِۖ وَإِن تُصِبۡهُمۡ سَیِّئَةࣱ یَقُولُوا۟ هَـٰذِهِۦ مِنۡ عِندِكَۚ قُلۡ كُلࣱّ مِّنۡ عِندِ ٱللَّهِۖ فَمَالِ هَـٰۤؤُلَاۤءِ ٱلۡقَوۡمِ لَا یَكَادُونَ یَفۡقَهُونَ حَدِیثࣰا ﴿78﴾

ভালো যা কিছু তোমার ঘটে তা কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে, আর মন্দ বিষয় থেকে যা কিছু তোমার ঘটে তা কিন্তু তোমার নিজের থেকে। আর আমরা তোমাকে মানবগোষ্ঠীর জন্য রসূলরূপে পাঠিয়েছি। আর সাক্ষীরূপে আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট।

مَّاۤ أَصَابَكَ مِنۡ حَسَنَةࣲ فَمِنَ ٱللَّهِۖ وَمَاۤ أَصَابَكَ مِن سَیِّئَةࣲ فَمِن نَّفۡسِكَۚ وَأَرۡسَلۡنَـٰكَ لِلنَّاسِ رَسُولࣰاۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِیدࣰا ﴿79﴾

যে কেউ রসূলের আজ্ঞাপালন করে সে অবশ্যই আল্লাহ্‌র আজ্ঞাপালন করে। আর যে কেউ ফিরে যায় -- আমরা তোমাকে তাদের উপরে রক্ষাকর্ত্তারূপে পাঠাই নি।

مَّن یُطِعِ ٱلرَّسُولَ فَقَدۡ أَطَاعَ ٱللَّهَۖ وَمَن تَوَلَّىٰ فَمَاۤ أَرۡسَلۡنَـٰكَ عَلَیۡهِمۡ حَفِیظࣰا ﴿80﴾

আর তারা বলে বেড়ায় -- \"আজ্ঞানুবর্তিতা\", কিন্তু যখন তারা তোমার সামনে থেকে চলে যায়, তাদের একদল রাত্রিযাপন করে তুমি যা বলেছ তার উল্টোভাবে। আর আল্লাহ্ রেকর্ড করে রাখেন যা তারা নিশাকালে নিশানা করে, অতএব তাদের থেকে ফিরে দাঁড়াও আর আল্লাহ্‌র উপরে ভরসা করো। আর রক্ষাকারীরূপে আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট।

وَیَقُولُونَ طَاعَةࣱ فَإِذَا بَرَزُوا۟ مِنۡ عِندِكَ بَیَّتَ طَاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡهُمۡ غَیۡرَ ٱلَّذِی تَقُولُۖ وَٱللَّهُ یَكۡتُبُ مَا یُبَیِّتُونَۖ فَأَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِیلًا ﴿81﴾

কি! তারা কি তবে কুরআন সন্বন্ধে ভাববে না? বস্তুত তা যদি আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে হতো তবে তাতে নিশ্চয়ই তারা পেতো প্রচুর গরমিল।

أَفَلَا یَتَدَبَّرُونَ ٱلۡقُرۡءَانَۚ وَلَوۡ كَانَ مِنۡ عِندِ غَیۡرِ ٱللَّهِ لَوَجَدُوا۟ فِیهِ ٱخۡتِلَـٰفࣰا كَثِیرࣰا ﴿82﴾

আর যখন তাদের কাছে নিরাপত্তার অথবা ভয়ের কোনো বিষয় আসে, তারা তা ছড়িয়ে দেয়। আর যদি তারা তা রসূলের ও তাদের মধ্যেকার কর্তৃপক্ষের গোচরে আনতো তবে তাঁদের মধ্যের যাঁদের এ তদন্ত করার কথা তাঁরা তা জানতে পারতেন। আর যদি আল্লাহ্‌র কল্যাণ ও তাঁর রহ্‌মত তোমাদের উপরে না থাকতো তাহলে তোমরা অবশ্যই শয়তানের তাবেদারি করতে -- অল্প ছাড়া।

وَإِذَا جَاۤءَهُمۡ أَمۡرࣱ مِّنَ ٱلۡأَمۡنِ أَوِ ٱلۡخَوۡفِ أَذَاعُوا۟ بِهِۦۖ وَلَوۡ رَدُّوهُ إِلَى ٱلرَّسُولِ وَإِلَىٰۤ أُو۟لِی ٱلۡأَمۡرِ مِنۡهُمۡ لَعَلِمَهُ ٱلَّذِینَ یَسۡتَنۢبِطُونَهُۥ مِنۡهُمۡۗ وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهُۥ لَٱتَّبَعۡتُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنَ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿83﴾

অতএব যুদ্ধ করো আল্লাহ্‌র পথে, তোমার উপরে তোমার নিজের ছাড়া চাপানো হয় নি, আর বিশ্বাসীদের উদ্বুদ্ধ করো। হতে পারে যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের হিংস্রতা আল্লাহ্ বন্ধ করবেন। আর আল্লাহ্ বিক্রমে কঠোরতর, আর লক্ষণীয় শাস্তিদানে আরো কঠোর।

فَقَـٰتِلۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفۡسَكَۚ وَحَرِّضِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۖ عَسَى ٱللَّهُ أَن یَكُفَّ بَأۡسَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ۚ وَٱللَّهُ أَشَدُّ بَأۡسࣰا وَأَشَدُّ تَنكِیلࣰا ﴿84﴾

যে কেউ সুপারিশ করে সুন্দর ওকালতিতে, তার জন্য ভাগ থাকবে তা থেকে, আর যে কেউ সুপারিশ করে মন্দ ওকালতিতে, তার জন্য বোঝা থাকবে তা থেকে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সব বিষয়ের নিয়ন্ত্রণকারী।

مَّن یَشۡفَعۡ شَفَـٰعَةً حَسَنَةࣰ یَكُن لَّهُۥ نَصِیبࣱ مِّنۡهَاۖ وَمَن یَشۡفَعۡ شَفَـٰعَةࣰ سَیِّئَةࣰ یَكُن لَّهُۥ كِفۡلࣱ مِّنۡهَاۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ مُّقِیتࣰا ﴿85﴾

আর যখন তোমাদের প্রীতি- সম্ভাষণ সম্ভাষিত করা হয় তখন তার চেয়েও ভালো সম্ভাষণ করো, অথবা তা ফিরিয়ে দাও। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন সব-কিছুর হিসাব রক্ষক।

وَإِذَا حُیِّیتُم بِتَحِیَّةࣲ فَحَیُّوا۟ بِأَحۡسَنَ مِنۡهَاۤ أَوۡ رُدُّوهَاۤۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءٍ حَسِیبًا ﴿86﴾

আল্লাহ্ -- তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি নিশ্চয়ই তোমাদের সমবেত করবেন কিয়ামতের দিনে -- কোনো সন্দেহ নেই তাতে। আর কথা রাখার বেলা আল্লাহ্‌র চাইতে কে বেশী সত্যনিষ্ঠ?

ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۚ لَیَجۡمَعَنَّكُمۡ إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِ لَا رَیۡبَ فِیهِۗ وَمَنۡ أَصۡدَقُ مِنَ ٱللَّهِ حَدِیثࣰا ﴿87﴾

তোমাদের তাহলে কি হয়েছে যে মূনাফিকদের সন্বন্ধে তোমরা দুই দল হয়েছ, অথচ আল্লাহ্ তাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন তারা যা অর্জন করেছে সেজন্য? তোমরা কি তাকে পথ দেখাতে চাও যাকে আল্লাহ্ পথভ্রষ্ট হতে দিয়েছেন? আর যাকে আল্লাহ্ পথভ্রষ্ট হতে দেন তার জন্য তুমি কিছুতেই পথ পাবে না।

۞ فَمَا لَكُمۡ فِی ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ فِئَتَیۡنِ وَٱللَّهُ أَرۡكَسَهُم بِمَا كَسَبُوۤا۟ۚ أَتُرِیدُونَ أَن تَهۡدُوا۟ مَنۡ أَضَلَّ ٱللَّهُۖ وَمَن یُضۡلِلِ ٱللَّهُ فَلَن تَجِدَ لَهُۥ سَبِیلࣰا ﴿88﴾

তারা চায় যে তোমরা যেন অবিশ্বাস পোষণ করো যেমন তারা অবিশ্বাস করে, যাতে তোমরা সবাই এক রকমের হতে পারো। কাজেই তাদের মধ্যে থেকে কাউকে বন্ধু হিসেবে নিও না যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহ্‌র পথে গৃহত্যাগ করে। কিন্তু তারা যদি ফিরে যায় তবে তাদের ধরো আর তাদের বধ করো যেখানেই তাদের পাও, আর তাদের থেকে কাউকেও বন্ধুরূপে নিও না এবং সাহায্যকারীরূপেও নয়, --

وَدُّوا۟ لَوۡ تَكۡفُرُونَ كَمَا كَفَرُوا۟ فَتَكُونُونَ سَوَاۤءࣰۖ فَلَا تَتَّخِذُوا۟ مِنۡهُمۡ أَوۡلِیَاۤءَ حَتَّىٰ یُهَاجِرُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۚ فَإِن تَوَلَّوۡا۟ فَخُذُوهُمۡ وَٱقۡتُلُوهُمۡ حَیۡثُ وَجَدتُّمُوهُمۡۖ وَلَا تَتَّخِذُوا۟ مِنۡهُمۡ وَلِیࣰّا وَلَا نَصِیرًا ﴿89﴾

তারা ব্যতীত যারা এমন লোকদের সাথে যোগ-সাজশ করে যাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে অঙ্গীকার রয়েছে, অথবা যারা তোমাদের কাছে আসে যাদের হৃদয় সংকুচিত হয়েছে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে অথবা তাদের লোকদের সঙ্গে লড়াই করতে। আর যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করতেন তবে তিনি তোমাদের উপরে তাদের বলীয়ান করতেন, তার ফলে তারা নিশ্চয়ই তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতো। কাজেই যদি তারা তোমাদের থেকে সরে যায় ও তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ না করে, বরঞ্চ তোমাদের প্রতি শান্তি চুক্তি পেশ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ ধরবার জন্য আল্লাহ্ তোমাদের নিযুক্ত করেন নি।

إِلَّا ٱلَّذِینَ یَصِلُونَ إِلَىٰ قَوۡمِۭ بَیۡنَكُمۡ وَبَیۡنَهُم مِّیثَـٰقٌ أَوۡ جَاۤءُوكُمۡ حَصِرَتۡ صُدُورُهُمۡ أَن یُقَـٰتِلُوكُمۡ أَوۡ یُقَـٰتِلُوا۟ قَوۡمَهُمۡۚ وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ لَسَلَّطَهُمۡ عَلَیۡكُمۡ فَلَقَـٰتَلُوكُمۡۚ فَإِنِ ٱعۡتَزَلُوكُمۡ فَلَمۡ یُقَـٰتِلُوكُمۡ وَأَلۡقَوۡا۟ إِلَیۡكُمُ ٱلسَّلَمَ فَمَا جَعَلَ ٱللَّهُ لَكُمۡ عَلَیۡهِمۡ سَبِیلࣰا ﴿90﴾

তোমরা অন্যদেরও পাবে যারা চায় তোমাদের থেকে নিরাপদে থাকতে ও তাদের লোকদের থেকেও নিরাপদে থাকতে। যতবার বিরুদ্ধাচরণ করতে তাদের ফেরত ডাকা হয় তারা তাতে মগ্ন হয়, কাজেই তারা যদি তোমাদের থেকে সরে না যায় বা তোমাদের প্রতি শান্তি-চুক্তি পেশ না করে, বা তাদের হাত গুটিয়ে না নেয়, তবে তাদের ধরো আর তাদের কাতল করো যেখানেই তাদের পাও। আর এরাই -- এদের বিরুদ্ধে তোমাদের আমরা স্পষ্ট কর্তৃত্ব দিয়েছি।

سَتَجِدُونَ ءَاخَرِینَ یُرِیدُونَ أَن یَأۡمَنُوكُمۡ وَیَأۡمَنُوا۟ قَوۡمَهُمۡ كُلَّ مَا رُدُّوۤا۟ إِلَى ٱلۡفِتۡنَةِ أُرۡكِسُوا۟ فِیهَاۚ فَإِن لَّمۡ یَعۡتَزِلُوكُمۡ وَیُلۡقُوۤا۟ إِلَیۡكُمُ ٱلسَّلَمَ وَیَكُفُّوۤا۟ أَیۡدِیَهُمۡ فَخُذُوهُمۡ وَٱقۡتُلُوهُمۡ حَیۡثُ ثَقِفۡتُمُوهُمۡۚ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكُمۡ جَعَلۡنَا لَكُمۡ عَلَیۡهِمۡ سُلۡطَـٰنࣰا مُّبِینࣰا ﴿91﴾

আর একজন মূমিনের জন্য সঙ্গত নয় যে ভ্রমক্রমে ভিন্ন অন্য একজন মূমিনকে সে হত্যা করবে, আর যে কেউ একজন মূমিনকে ভুল করে কাতল করবে, তাহলে একজন মূমিন দাসকে মুক্ত করতে হবে আর তার লোকদের হত্যার খেসারত আদায় করবে যদি না তারা দানরূপে মাফ করে দেয়। কিন্তু যদি সে তোমাদের শত্রুপক্ষীয় দল থেকে হয় আর সে মুমিন হয়, তবে একজন মুমিন দাসকে মূক্ত করতে হবে। আর যদি সে এমন দলের লোক হয় যে তোমাদের মধ্যে ও তাদের মধ্যে অঙ্গীকার রয়েছে তাহলে তার লোকদের হত্যার খেসারত আদায় করতে হবে এবং মুক্ত করতে হবে একজন মূমিন দাসকে, কিন্তু যে পায় না তবে পরপর দুই মাস রোযা, -- আল্লাহ্‌র কাছ থেকে প্রায়শ্চিত্ত। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

وَمَا كَانَ لِمُؤۡمِنٍ أَن یَقۡتُلَ مُؤۡمِنًا إِلَّا خَطَـࣰٔاۚ وَمَن قَتَلَ مُؤۡمِنًا خَطَـࣰٔا فَتَحۡرِیرُ رَقَبَةࣲ مُّؤۡمِنَةࣲ وَدِیَةࣱ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰۤ أَهۡلِهِۦۤ إِلَّاۤ أَن یَصَّدَّقُوا۟ۚ فَإِن كَانَ مِن قَوۡمٍ عَدُوࣲّ لَّكُمۡ وَهُوَ مُؤۡمِنࣱ فَتَحۡرِیرُ رَقَبَةࣲ مُّؤۡمِنَةࣲۖ وَإِن كَانَ مِن قَوۡمِۭ بَیۡنَكُمۡ وَبَیۡنَهُم مِّیثَـٰقࣱ فَدِیَةࣱ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰۤ أَهۡلِهِۦ وَتَحۡرِیرُ رَقَبَةࣲ مُّؤۡمِنَةࣲۖ فَمَن لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ شَهۡرَیۡنِ مُتَتَابِعَیۡنِ تَوۡبَةࣰ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿92﴾

আর যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে একজন মূমিনকে হত্যা করে, তার তবে পরিণতি হচ্ছে জাহান্নাম, তাতে সে থাকবে দীর্ঘকাল, আর তার উপরে আসবে আল্লাহ্‌র গযব ও তাঁর লানৎ।

وَمَن یَقۡتُلۡ مُؤۡمِنࣰا مُّتَعَمِّدࣰا فَجَزَاۤؤُهُۥ جَهَنَّمُ خَـٰلِدࣰا فِیهَا وَغَضِبَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِ وَلَعَنَهُۥ وَأَعَدَّ لَهُۥ عَذَابًا عَظِیمࣰا ﴿93﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন আল্লাহ্‌র পথে যাত্রা করো, তখন পরিষ্কার করে নাও; আর যে তোমাদের প্রতি 'সালাম’ জানায় তাকে বলো না -- ''তুমি মূমিন নও।’’ তোমরা বুঝি এই দুনিয়ার জীবনের সম্পদ চাচ্ছ? কিন্তু আল্লাহ্‌র কাছে রয়েছে প্রচুর ধনদৌলত। ইতিপূর্বে তোমরাও এমন ছিলে, কিন্তু আল্লাহ্ তোমাদের হিতসাধন করেছেন; কাজেই পরিষ্কার করে নাও। নিঃসন্দেহ তোমরা যা করো আল্লাহ্ তার খবরদার।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ فَتَبَیَّنُوا۟ وَلَا تَقُولُوا۟ لِمَنۡ أَلۡقَىٰۤ إِلَیۡكُمُ ٱلسَّلَـٰمَ لَسۡتَ مُؤۡمِنࣰا تَبۡتَغُونَ عَرَضَ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا فَعِندَ ٱللَّهِ مَغَانِمُ كَثِیرَةࣱۚ كَذَ ٰ⁠لِكَ كُنتُم مِّن قَبۡلُ فَمَنَّ ٱللَّهُ عَلَیۡكُمۡ فَتَبَیَّنُوۤا۟ۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣰا ﴿94﴾

সমতুল্য নয় মূমিনদের মধ্যেকার যারা বসে থাকা লোক -- কোনো চোটজখম না থাকাতেও, আর যারা আল্লাহ্‌র পথে তাদের ধনসম্পত্তি ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে জিহাদকারী। নিজ নিজ ধনসম্পত্তি ও আপন জানপ্রাণ দিয়ে জিহাদকারীদের আল্লাহ্ মাহা‌ত্ম্য দিয়েছেন বসে-থাকা-লোকদের উপরে পদমর্যাদায়। আর আল্লাহ্ সবাইকে কল্যাণদানের ওয়াদা করেছেন। আর মূজাহিদদের আল্লাহ্ মাহা‌ত্ম্য দিয়েছেন বসে-থাকা-লোকদের চাইতে বিরাট পুরস্কার দানে --

لَّا یَسۡتَوِی ٱلۡقَـٰعِدُونَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ غَیۡرُ أُو۟لِی ٱلضَّرَرِ وَٱلۡمُجَـٰهِدُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ بِأَمۡوَ ٰ⁠لِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡۚ فَضَّلَ ٱللَّهُ ٱلۡمُجَـٰهِدِینَ بِأَمۡوَ ٰ⁠لِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ عَلَى ٱلۡقَـٰعِدِینَ دَرَجَةࣰۚ وَكُلࣰّا وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلۡحُسۡنَىٰۚ وَفَضَّلَ ٱللَّهُ ٱلۡمُجَـٰهِدِینَ عَلَى ٱلۡقَـٰعِدِینَ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿95﴾

তাঁর কাছ থেকে বহু পদমর্যাদায় আর পরিত্রাণে এবং করুণাধারায়। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

دَرَجَـٰتࣲ مِّنۡهُ وَمَغۡفِرَةࣰ وَرَحۡمَةࣰۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمًا ﴿96﴾

নিঃসন্দেহ ফিরিশ্‌তারা যাদের মৃত্যু আনয়ন করে যারা ছিল নিজেদের প্রতি অন্যায়কারী, তারা বলবে -- ''তোমরা কি অবস্থায় পড়ে রয়েছিলে?’’ তারা বলবে -- ''আমরা দুনিয়াতে দুর্বল ছিলাম।’’ তারা বলবে -- ''আল্লাহ্‌র পৃথিবী কি প্রশস্ত ছিল না যার ফলে তাতে তোমরা হিজরত করতে পারতে?’’ কাজেই এরা -- এদের বাসস্থান জাহান্নাম, আর মন্দ সেই আশ্রয়স্থল

إِنَّ ٱلَّذِینَ تَوَفَّىٰهُمُ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ ظَالِمِیۤ أَنفُسِهِمۡ قَالُوا۟ فِیمَ كُنتُمۡۖ قَالُوا۟ كُنَّا مُسۡتَضۡعَفِینَ فِی ٱلۡأَرۡضِۚ قَالُوۤا۟ أَلَمۡ تَكُنۡ أَرۡضُ ٱللَّهِ وَ ٰ⁠سِعَةࣰ فَتُهَاجِرُوا۟ فِیهَاۚ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ مَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ وَسَاۤءَتۡ مَصِیرًا ﴿97﴾

তবে পুরুষদের ও স্ত্রীলোকদের ও ছেলেপিলেদের মধ্যে দুর্বল লোকেরা ব্যতীত, যাদের সামর্থ্য আয়ত্তের মধ্যে নেই ও যারা পথ খুঁজে পাচ্ছে না।

إِلَّا ٱلۡمُسۡتَضۡعَفِینَ مِنَ ٱلرِّجَالِ وَٱلنِّسَاۤءِ وَٱلۡوِلۡدَ ٰ⁠نِ لَا یَسۡتَطِیعُونَ حِیلَةࣰ وَلَا یَهۡتَدُونَ سَبِیلࣰا ﴿98﴾

অতএব এদের ক্ষেত্রে -- আশা হচ্ছে যে আল্লাহ্ তাদের ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন ক্ষমাশীল, পরিত্রাণকারী।

فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ عَسَى ٱللَّهُ أَن یَعۡفُوَ عَنۡهُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَفُوًّا غَفُورࣰا ﴿99﴾

আর যে আল্লাহ্‌র পথে হিজরত করবে সে পৃথিবীতে পাবে বহু আশ্রয়স্থল ও প্রাচুর্য! আর যে কেউ তার বাড়িঘর থেকে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের দিকে হিজরত ক’রে বের হয়ে আসে, তারপর মৃত্যু তাকে পাকড়াও করে, তাহলে তার প্রতিদান নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌র কাছে মওজুদ রয়েছে! আর আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

۞ وَمَن یُهَاجِرۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ یَجِدۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ مُرَ ٰ⁠غَمࣰا كَثِیرࣰا وَسَعَةࣰۚ وَمَن یَخۡرُجۡ مِنۢ بَیۡتِهِۦ مُهَاجِرًا إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ یُدۡرِكۡهُ ٱلۡمَوۡتُ فَقَدۡ وَقَعَ أَجۡرُهُۥ عَلَى ٱللَّهِۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿100﴾

আর যখন তোমরা পৃথিবীতে বেরোও তখন তোমাদের উপরে কোনো অপরাধ হবে না যদি তোমরা নামাযে 'কছর’ করো, যদি তোমরা আশঙ্কা করো যে যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা তোমাদের ঝামেলা করবে। নিঃসন্দেহ অবিশ্বাসীরা হচ্ছে তোমাদের প্রতি প্রকাশ্য শত্রু।

وَإِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَلَیۡسَ عَلَیۡكُمۡ جُنَاحٌ أَن تَقۡصُرُوا۟ مِنَ ٱلصَّلَوٰةِ إِنۡ خِفۡتُمۡ أَن یَفۡتِنَكُمُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوۤا۟ۚ إِنَّ ٱلۡكَـٰفِرِینَ كَانُوا۟ لَكُمۡ عَدُوࣰّا مُّبِینࣰا ﴿101﴾

আর যখন তুমি তাদের মধ্যে অবস্থান করো আর তাদের জন্য নামাযে খাড়া হও, তখন তাদের মধ্যের একদল তোমার সঙ্গে দাঁড়াক এবং তাদের অস্ত্রধারণ করুক, কিন্তু যখন তারা সিজদা দিয়েছে তখন তারা তোমাদের পেছন থেকে সরে যাক, আর অন্যদল যারা নামায পড়ে নি তারা এগিয়ে আসুক ও তোমার সঙ্গে নামায পড়ুক, আর তারা তাদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ও তাদের অস্ত্রগ্রহণ করুক, কেননা যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা চায় যে যদি তোমরা তোমাদের অস্ত্রশস্ত্র ও তোমাদের মাল-আসবাব সন্বন্ধে অসাবধান হও তবে তারা তোমাদের উপরে এক ঝাঁপে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। আর তোমাদের উপরে অপরাধ হবে না যদি তোমরা বৃষ্টিতে বিব্রত হও অথবা তোমরা অসুস্থ হও, ফলে তোমাদের অস্ত্র রেখে দাও, কিন্তু তোমাদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করো। নিঃসন্দেহ অবিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহ্ তৈরি করেছেন লাঞ্ঝনাদায়ক শাস্তি।

وَإِذَا كُنتَ فِیهِمۡ فَأَقَمۡتَ لَهُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَلۡتَقُمۡ طَاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡهُم مَّعَكَ وَلۡیَأۡخُذُوۤا۟ أَسۡلِحَتَهُمۡۖ فَإِذَا سَجَدُوا۟ فَلۡیَكُونُوا۟ مِن وَرَاۤىِٕكُمۡ وَلۡتَأۡتِ طَاۤىِٕفَةٌ أُخۡرَىٰ لَمۡ یُصَلُّوا۟ فَلۡیُصَلُّوا۟ مَعَكَ وَلۡیَأۡخُذُوا۟ حِذۡرَهُمۡ وَأَسۡلِحَتَهُمۡۗ وَدَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لَوۡ تَغۡفُلُونَ عَنۡ أَسۡلِحَتِكُمۡ وَأَمۡتِعَتِكُمۡ فَیَمِیلُونَ عَلَیۡكُم مَّیۡلَةࣰ وَ ٰ⁠حِدَةࣰۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَیۡكُمۡ إِن كَانَ بِكُمۡ أَذࣰى مِّن مَّطَرٍ أَوۡ كُنتُم مَّرۡضَىٰۤ أَن تَضَعُوۤا۟ أَسۡلِحَتَكُمۡۖ وَخُذُوا۟ حِذۡرَكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ أَعَدَّ لِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابࣰا مُّهِینࣰا ﴿102﴾

তবে যখন তোমরা নামায আদায় করো তখনো আল্লাহ্‌কে স্মরণ করবে দাঁড়ানো অবস্থায় ও বসে থেকে, ও তোমাদের পাশে কাত হয়ে। কিন্তু যখন তোমরা নিরাপত্তা বোধ করো তখন নামায কায়েম করো। নিঃসন্দেহ নামায হচ্ছে মূমিনদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে পালনীয় বিধান।

فَإِذَا قَضَیۡتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱذۡكُرُوا۟ ٱللَّهَ قِیَـٰمࣰا وَقُعُودࣰا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمۡۚ فَإِذَا ٱطۡمَأۡنَنتُمۡ فَأَقِیمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَۚ إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتۡ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ كِتَـٰبࣰا مَّوۡقُوتࣰا ﴿103﴾

আর লোকের অনুসন্ধানে শিথিল হয়ো না। যদি তোমরা ব্যথা পেয়ে থাকো তবে তারাও নিশ্চয়ই ব্যথা পেয়েছে যেমন তোমরা ব্যথা পেয়েছ, আর তোমরা আল্লাহ্‌র কাছ থেকে যা আশা করো তারা তা আশা করে না। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

وَلَا تَهِنُوا۟ فِی ٱبۡتِغَاۤءِ ٱلۡقَوۡمِۖ إِن تَكُونُوا۟ تَأۡلَمُونَ فَإِنَّهُمۡ یَأۡلَمُونَ كَمَا تَأۡلَمُونَۖ وَتَرۡجُونَ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا یَرۡجُونَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمًا ﴿104﴾

নিঃসন্দেহ আমরা তোমার কাছে এই কিতাব অবতারণ করেছি সত্যের সাথে, যেন তুমি লোকজনের মধ্যে বিচার করতে পারো আল্লাহ্ যা তোমাকে দেখিয়েছেন তার সাহায্যে। আর বিশ্বাসভঙ্গকারীদের পক্ষ-সমর্থনকারী হয়ো না।

إِنَّاۤ أَنزَلۡنَاۤ إِلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ بِٱلۡحَقِّ لِتَحۡكُمَ بَیۡنَ ٱلنَّاسِ بِمَاۤ أَرَىٰكَ ٱللَّهُۚ وَلَا تَكُن لِّلۡخَاۤىِٕنِینَ خَصِیمࣰا ﴿105﴾

আর আল্লাহ্‌র কাছে পরিত্রাণ খোঁজো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَٱسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿106﴾

আর যারা নিজেদের আ‌ত্মাকে ফাঁকি দেয় তাদের পক্ষে বিতর্ক করো না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভালোবাসেন না তাকে যে বিশ্বাসঘাতক, পাপাচারী।

وَلَا تُجَـٰدِلۡ عَنِ ٱلَّذِینَ یَخۡتَانُونَ أَنفُسَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ مَن كَانَ خَوَّانًا أَثِیمࣰا ﴿107﴾

তারা লুকোয় মানুষদের থেকে, কিন্তু তারা লুকোতে পারে না আল্লাহ্‌র থেকে, কারণ তিনি তাদের সঙ্গে থাকেন যখন তারা রাত্রে আলোচনা করে সেইসব কথা যা তাঁকে খুশী করে না। আর তারা যা করে আল্লাহ্ তার ঘেরাওকারী।

یَسۡتَخۡفُونَ مِنَ ٱلنَّاسِ وَلَا یَسۡتَخۡفُونَ مِنَ ٱللَّهِ وَهُوَ مَعَهُمۡ إِذۡ یُبَیِّتُونَ مَا لَا یَرۡضَىٰ مِنَ ٱلۡقَوۡلِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِمَا یَعۡمَلُونَ مُحِیطًا ﴿108﴾

আহা রে! তোমরাই তারা যারা তাদের পক্ষে এই দুনিয়ার জীবনে বিতর্ক করছ, কিন্তু কে আল্লাহ্‌র কাছে তাদের পক্ষে বিতর্ক করবে কিয়ামতের দিনে? অথবা কে হবে তাদের পক্ষে উকিল?

هَـٰۤأَنتُمۡ هَـٰۤؤُلَاۤءِ جَـٰدَلۡتُمۡ عَنۡهُمۡ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا فَمَن یُجَـٰدِلُ ٱللَّهَ عَنۡهُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ أَم مَّن یَكُونُ عَلَیۡهِمۡ وَكِیلࣰا ﴿109﴾

আর যে কেউ কুকর্ম করে অথবা নিজের আ‌ত্মার প্রতি জুলুম করে, তারপর আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহ্‌কে পাবে পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَمَن یَعۡمَلۡ سُوۤءًا أَوۡ یَظۡلِمۡ نَفۡسَهُۥ ثُمَّ یَسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَ یَجِدِ ٱللَّهَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿110﴾

আর যে কেউ পাপ অর্জন করে, সে তবে নিঃসন্দেহ তা অর্জন করে নিজের আ‌ত্মার বিরুদ্ধে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

وَمَن یَكۡسِبۡ إِثۡمࣰا فَإِنَّمَا یَكۡسِبُهُۥ عَلَىٰ نَفۡسِهِۦۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿111﴾

আর যে কেউ কোনো ত্রুটি বা পাপ অর্জন করে, তারপর এর দ্বারা দোষারোপ করে নির্দোষকে, সে তাহলে নিশ্চয়ই বহন করছে কলঙ্কারোপের ও স্পষ্ট পাপের বোঝা।

وَمَن یَكۡسِبۡ خَطِیۤـَٔةً أَوۡ إِثۡمࣰا ثُمَّ یَرۡمِ بِهِۦ بَرِیۤـࣰٔا فَقَدِ ٱحۡتَمَلَ بُهۡتَـٰنࣰا وَإِثۡمࣰا مُّبِینࣰا ﴿112﴾

আর যদি তোমার উপরে আল্লাহ্‌র কৃপা ও তাঁর করুণা না থাকতো তাহলে তাদের একদল নিশ্চয়ই সংকল্প করেছিল তোমাকে পথভ্রান্ত করতে। কিন্তু তারা নিজেদের ছাড়া কাউকে পথভ্রান্ত করে না, আর তারা তোমার কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ্ তোমার কাছে নাযিল করেছেন কিতাব ও জ্ঞানবিজ্ঞান, আর তোমাকে শিখিয়েছেন যা তুমি জানতে না। আর তোমার উপরে আল্লাহ্‌র কৃপা হচ্ছে অসীম।

وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَیۡكَ وَرَحۡمَتُهُۥ لَهَمَّت طَّاۤىِٕفَةࣱ مِّنۡهُمۡ أَن یُضِلُّوكَ وَمَا یُضِلُّونَ إِلَّاۤ أَنفُسَهُمۡۖ وَمَا یَضُرُّونَكَ مِن شَیۡءࣲۚ وَأَنزَلَ ٱللَّهُ عَلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمۡ تَكُن تَعۡلَمُۚ وَكَانَ فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَیۡكَ عَظِیمࣰا ﴿113﴾

তাদের বেশির ভাগ গোপন পরামর্শে ভালো কিছু নেই তার ক্ষেত্রে ছাড়া যে নির্দেশ দেয় দানখয়রাতের অথবা শুভকাজের অথবা মানুষের মাঝে শান্তি প্রতিষ্ঠার। আর যে কেউ এরকম করে আল্লাহ্‌র সন্তষ্টি কামনা ক’রে, তাহলে তাকে আমরা দেবো বিরাট পুরস্কার।

۞ لَّا خَیۡرَ فِی كَثِیرࣲ مِّن نَّجۡوَىٰهُمۡ إِلَّا مَنۡ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوۡ مَعۡرُوفٍ أَوۡ إِصۡلَـٰحِۭ بَیۡنَ ٱلنَّاسِۚ وَمَن یَفۡعَلۡ ذَ ٰ⁠لِكَ ٱبۡتِغَاۤءَ مَرۡضَاتِ ٱللَّهِ فَسَوۡفَ نُؤۡتِیهِ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿114﴾

আর যে কেউ রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে পথনির্দেশ তার কাছে সুস্পষ্ট হবার পরে, আর অনুসরণ করে মূমিনদের পথ থেকে ভিন্ন, আমরা তাকে ফেরাবো সেই দিকে যে দিকে সে ফিরেছে, আর তাকে প্রবেশ করাবো জাহান্নামে, আর মন্দ সেই গন্তব্যস্থান!

وَمَن یُشَاقِقِ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُ ٱلۡهُدَىٰ وَیَتَّبِعۡ غَیۡرَ سَبِیلِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ نُوَلِّهِۦ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصۡلِهِۦ جَهَنَّمَۖ وَسَاۤءَتۡ مَصِیرًا ﴿115﴾

নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ক্ষমা করেন না তাঁর সঙ্গে শরিক করা হোক, আর তা ছাড়া সব-কিছু তিনি ক্ষমা করেন যার জন্য তিনি ইচ্ছে করেন। আর যে কেউ আল্লাহ্‌র সঙ্গে অংশীদার করে সে নিশ্চয়ই বিপথগামী হয় সুদূর বিপথে।

إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَغۡفِرُ أَن یُشۡرَكَ بِهِۦ وَیَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَ ٰ⁠لِكَ لِمَن یَشَاۤءُۚ وَمَن یُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلَـٰلَۢا بَعِیدًا ﴿116﴾

তারা তো আহ্বান করে তাঁর পরিবর্তে শুধু নারী- মূর্তিদের, আর তারা তো আহ্বান করে শুধু বিদ্রোহী শয়তানকে, --

إِن یَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦۤ إِلَّاۤ إِنَـٰثࣰا وَإِن یَدۡعُونَ إِلَّا شَیۡطَـٰنࣰا مَّرِیدࣰا ﴿117﴾

তাকে আল্লাহ্ ধিক্কার দিয়েছেন। আর সে বলেছিল -- ''আমি নিশ্চয় তোমার বান্দাদের একটি নির্ধারিত অংশ গ্রহণ করবো” ।

لَّعَنَهُ ٱللَّهُۘ وَقَالَ لَأَتَّخِذَنَّ مِنۡ عِبَادِكَ نَصِیبࣰا مَّفۡرُوضࣰا ﴿118﴾

''আর আমি নিশ্চয়ই তাদের পথভ্রান্ত করবো, আর তাদের মধ্যে জাগাবো ব্যর্থ-কামনা, আর তাদের নির্দেশ দেবো -- ফলে তারা গবাদি-পশুর কর্ণচ্ছেদ করবে, আর আমি তাদের আদেশ করবো -- ফলে তারা আল্লাহ্‌র সৃষ্টি পাল্টে দেবে।’’ আর যে কেউ আল্লাহ্‌র পরিবর্তে শয়তানকে মূরব্বীরূপে গ্রহণ করে সে নিশ্চয়ই ডাহা লোকসানে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

وَلَأُضِلَّنَّهُمۡ وَلَأُمَنِّیَنَّهُمۡ وَلَـَٔامُرَنَّهُمۡ فَلَیُبَتِّكُنَّ ءَاذَانَ ٱلۡأَنۡعَـٰمِ وَلَـَٔامُرَنَّهُمۡ فَلَیُغَیِّرُنَّ خَلۡقَ ٱللَّهِۚ وَمَن یَتَّخِذِ ٱلشَّیۡطَـٰنَ وَلِیࣰّا مِّن دُونِ ٱللَّهِ فَقَدۡ خَسِرَ خُسۡرَانࣰا مُّبِینࣰا ﴿119﴾

সে তাদের প্রতি‌শ্রুতি দেয় আর তাদের মধ্যে জাগায় ব্যর্থ-কামনা। আর শয়তান কেবল প্রবঞ্চনা করা ছাড়া তাদের অন্য প্রতি‌শ্রুতি দেয় না।

یَعِدُهُمۡ وَیُمَنِّیهِمۡۖ وَمَا یَعِدُهُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ إِلَّا غُرُورًا ﴿120﴾

এরাই, -- এদের বাসস্থান জাহান্নাম, আর সেখান থেকে তারা কোনো নিষ্কৃতি পাবে না।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ مَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُ وَلَا یَجِدُونَ عَنۡهَا مَحِیصࣰا ﴿121﴾

আর যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করছে তাদের আমরা শীঘ্রই প্রবেশ করাবো স্বর্গোউদ্যানসমূহে, যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল; -- আল্লাহ্‌র এ ওয়াদা ধ্রুবসত্য। আর কে বেশী সত্যবাদী আল্লাহ্‌র চেয়ে কথা রাখার ক্ষেত্রে?

وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ سَنُدۡخِلُهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۖ وَعۡدَ ٱللَّهِ حَقࣰّاۚ وَمَنۡ أَصۡدَقُ مِنَ ٱللَّهِ قِیلࣰا ﴿122﴾

এ হবে না তোমাদের চাওয়া অনুসারে, আর গ্রন্থপ্রাপ্তদের চাওয়া অনুসারেও নয়। যে কেউ কুকর্ম করে তাই দিয়ে তাকে প্রতিফল দেয়া হবে, আর তার জন্য সে আল্লাহ্‌কে ছাড়া পাবে না কোনো বন্ধু, না কোনো সহায়।

لَّیۡسَ بِأَمَانِیِّكُمۡ وَلَاۤ أَمَانِیِّ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِۗ مَن یَعۡمَلۡ سُوۤءࣰا یُجۡزَ بِهِۦ وَلَا یَجِدۡ لَهُۥ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلِیࣰّا وَلَا نَصِیرࣰا ﴿123﴾

আর যে কেউ ভালো ভালো কাজ করে, পুরুষ হোক বা নারী, আর সে মূমিন হয়, -- এরাই তবে বেহেশতে প্রবেশ করবে, আর তাদের অন্যায় করা হবে না খেজুর-বিচির-খোসা-পরিমাণে।

وَمَن یَعۡمَلۡ مِنَ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ مِن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِنࣱ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ یَدۡخُلُونَ ٱلۡجَنَّةَ وَلَا یُظۡلَمُونَ نَقِیرࣰا ﴿124﴾

আর তাঁর চাইতে কে বেশী ধর্মপরায়ণ যে আল্লাহ্‌র দিকে আপন মূখমন্ডল সমর্পণ করেছে আর সে সৎকর্মী, আর যে সরল স্বভাব ইব্রাহীমের ধর্মমত অনুসরণ করে? আর আল্লাহ্ ইব্রাহীমকে গ্রহণ করেছিলেন বন্ধুরূপে।

وَمَنۡ أَحۡسَنُ دِینࣰا مِّمَّنۡ أَسۡلَمَ وَجۡهَهُۥ لِلَّهِ وَهُوَ مُحۡسِنࣱ وَٱتَّبَعَ مِلَّةَ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ حَنِیفࣰاۗ وَٱتَّخَذَ ٱللَّهُ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ خَلِیلࣰا ﴿125﴾

আর আল্লাহ্‌রই যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে ও যা-কিছু পৃথিবীতে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সব-কিছুরই বেষ্টনকারী।

وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِكُلِّ شَیۡءࣲ مُّحِیطࣰا ﴿126﴾

আর নারীদের সন্বন্ধে তারা তোমার কাছে সিদ্ধান্ত চায়। বলো -- ''আল্লাহ্ তাদের সন্বন্ধে তোমাদের কাছে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আর যা তোমাদের কাছে কিতাবখানিতে বর্ণনা করা হয়েছে নারীদের এতীম সন্তানদের সন্বন্ধে, যাদের তোমরা দিতে চাও না তাদের জন্য নির্ধারিত প্রাপ্য, অথচ তোমরা ইচ্ছা করো যে তাদের তোমরা বিয়ে করবে, আর সন্তানসন্ততিদের মধ্যের দুর্বলদের সন্বন্ধে, আর যেন এতীমদের প্রতি ন্যায়বিচার করা তোমরা কায়েম করো।’’ আর ভালো বিষয়ের যা-কিছু তোমরা করো, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সে- সন্বন্ধে হচ্ছেন সর্বজ্ঞাতা।

وَیَسۡتَفۡتُونَكَ فِی ٱلنِّسَاۤءِۖ قُلِ ٱللَّهُ یُفۡتِیكُمۡ فِیهِنَّ وَمَا یُتۡلَىٰ عَلَیۡكُمۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ فِی یَتَـٰمَى ٱلنِّسَاۤءِ ٱلَّـٰتِی لَا تُؤۡتُونَهُنَّ مَا كُتِبَ لَهُنَّ وَتَرۡغَبُونَ أَن تَنكِحُوهُنَّ وَٱلۡمُسۡتَضۡعَفِینَ مِنَ ٱلۡوِلۡدَ ٰ⁠نِ وَأَن تَقُومُوا۟ لِلۡیَتَـٰمَىٰ بِٱلۡقِسۡطِۚ وَمَا تَفۡعَلُوا۟ مِنۡ خَیۡرࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِهِۦ عَلِیمࣰا ﴿127﴾

আর যদি কোনো নারী তার স্বামীর কাছ থেকে আশঙ্কা করে দুর্ব্যবহার অথবা বর্জন, তবে তাদের উভয়ের দোষ হবে না যদি তারা উভয়ের মধ্যে বুঝাপড়া ক’রে পুনর্মিলন ঘটাতে পারে। আর আপোস-মীমাংসা কল্যাণকর। আর মনের মধ্যে বর্তমান থাকে লালসা। আর যদি তোমরা ভালো করো ও ভয়শ্রদ্ধা করো, তবে নিঃসন্দেহ তোমরা যা করো সে সন্বন্ধে আল্লাহ্ হচ্ছেন চির ওয়াকিফহাল।

وَإِنِ ٱمۡرَأَةٌ خَافَتۡ مِنۢ بَعۡلِهَا نُشُوزًا أَوۡ إِعۡرَاضࣰا فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِمَاۤ أَن یُصۡلِحَا بَیۡنَهُمَا صُلۡحࣰاۚ وَٱلصُّلۡحُ خَیۡرࣱۗ وَأُحۡضِرَتِ ٱلۡأَنفُسُ ٱلشُّحَّۚ وَإِن تُحۡسِنُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣰا ﴿128﴾

আর তোমাদের সাধ্য নেই যে তোমরা স্ত্রীদের মধ্যে সমব্যবহার করবে, যদিও তোমরা আকাঙক্ষা করো। কিন্তু বীতরাগ হয়ো না পুরোপুরি বিরাগভাজনে, যার ফলে তাকে ফেলে রাখো যেন ঝুলন্ত অবস্থায়। আর যদি তোমরা সমঝোথা করো এবং, তবে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَلَن تَسۡتَطِیعُوۤا۟ أَن تَعۡدِلُوا۟ بَیۡنَ ٱلنِّسَاۤءِ وَلَوۡ حَرَصۡتُمۡۖ فَلَا تَمِیلُوا۟ كُلَّ ٱلۡمَیۡلِ فَتَذَرُوهَا كَٱلۡمُعَلَّقَةِۚ وَإِن تُصۡلِحُوا۟ وَتَتَّقُوا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿129﴾

আর যদি তারা বিচ্ছিন্ন হয়, আল্লাহ তাদের উভয়কে সমৃদ্ধ করবেন তাঁর প্রাচুর্য থেকে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন অশেষ দাতা, পরমজ্ঞানী।

وَإِن یَتَفَرَّقَا یُغۡنِ ٱللَّهُ كُلࣰّا مِّن سَعَتِهِۦۚ وَكَانَ ٱللَّهُ وَ ٰ⁠سِعًا حَكِیمࣰا ﴿130﴾

আর যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে এবং যা-কিছু পৃথিবীতে সে-সবই আল্লাহ্‌র। আর আমরা নিশ্চয়ই নির্দেশ দিয়ছিলাম তোমাদের আগে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদের এবং তোমাদেরও যেন তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয়-শ্রদ্ধা করবে। কিন্তু যদি তোমরা অবিশ্বাস পোষণ করো তবে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌রই যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে ও যা-কিছু পৃথিবীতে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন মহাধনবান, পরম প্রশংসিত।

وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ وَلَقَدۡ وَصَّیۡنَا ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَإِیَّاكُمۡ أَنِ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَۚ وَإِن تَكۡفُرُوا۟ فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَنِیًّا حَمِیدࣰا ﴿131﴾

আর আল্লাহ্‌রই যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে ও যা-কিছু আছে পৃথিবীতে। আর রক্ষাকারীরূপে আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট।

وَلِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِیلًا ﴿132﴾

হে লোকগণ! যদি তিনি ইচ্ছা করেন তবে তিনি তোমাদের সরিয়ে দিতে পারেন, আর অন্যদের নিয়ে আসতে পারেন। আর আল্লাহ্ এই ব্যাপরে হচ্ছেন অসীম ক্ষমতাশালী।

إِن یَشَأۡ یُذۡهِبۡكُمۡ أَیُّهَا ٱلنَّاسُ وَیَأۡتِ بِـَٔاخَرِینَۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ ذَ ٰ⁠لِكَ قَدِیرࣰا ﴿133﴾

যে কেউ এই দুনিয়ার পুরস্কার কামনা করে আল্লাহ্‌র কাছে তবে রয়েছে ইহজগতের ও পরকালের পুরস্কার। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।

مَّن كَانَ یُرِیدُ ثَوَابَ ٱلدُّنۡیَا فَعِندَ ٱللَّهِ ثَوَابُ ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ سَمِیعَۢا بَصِیرࣰا ﴿134﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা ন্যায়বিচারের দৃঢ় প্রতিষ্ঠাতা হও, আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যদাতা হও, যদিও তা তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে যায় অথবা পিতা-মাতার ও নিকট-আ‌ত্মীয়ের, সে ধনী হোক অথবা গরীব, -- কেননা আল্লাহ্ তাদের উভয়ের বেশি নিকটবর্তী। কাজেই কামনার অনুবর্তী হয়ো না পাছে তোমরা ভ্রষ্ট হও। আর যদি তোমরা বিকৃত করো অথবা ফিরে যাও, তবে নিঃসন্দেহ তোমরা যা করো আল্লাহ্ হচ্ছেন তার পূর্ণ ওয়াকিফহাল।

۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ كُونُوا۟ قَوَّ ٰ⁠مِینَ بِٱلۡقِسۡطِ شُهَدَاۤءَ لِلَّهِ وَلَوۡ عَلَىٰۤ أَنفُسِكُمۡ أَوِ ٱلۡوَ ٰ⁠لِدَیۡنِ وَٱلۡأَقۡرَبِینَۚ إِن یَكُنۡ غَنِیًّا أَوۡ فَقِیرࣰا فَٱللَّهُ أَوۡلَىٰ بِهِمَاۖ فَلَا تَتَّبِعُوا۟ ٱلۡهَوَىٰۤ أَن تَعۡدِلُوا۟ۚ وَإِن تَلۡوُۥۤا۟ أَوۡ تُعۡرِضُوا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِیرࣰا ﴿135﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহ্‌তে ও তাঁর রসূলে, ও কিতাবে যা তিনি নাযিল করেছেন তাঁর রসূলের কাছে, আর যে গ্রন্থ তিনি অবতারণ করেছিলেন এর আগে। আর যে কেউ অবিশ্বাস করে আল্লাহ্‌তে ও তাঁর ফিরিশ্‌তাগণে, ও তাঁর কিতাবসমূহে, ও তাঁর রসূলগণে, ও আখেরাতের দিনে, -- সে তাহলে নিশ্চয়ই চলে গেছে সুদূর বিপথে।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ ءَامِنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَٱلۡكِتَـٰبِ ٱلَّذِی نَزَّلَ عَلَىٰ رَسُولِهِۦ وَٱلۡكِتَـٰبِ ٱلَّذِیۤ أَنزَلَ مِن قَبۡلُۚ وَمَن یَكۡفُرۡ بِٱللَّهِ وَمَلَـٰۤىِٕكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلَـٰلَۢا بَعِیدًا ﴿136﴾

নিঃসন্দেহ যারা ঈমান আনে তারপর অবিশ্বাস পোষণ করে, পুনরায় ঈমান আনে ও আবার অবিশ্বাস করে, তারপর অবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়ে যায়, -- তাদের পরিত্রাণ করার জন্য আল্লাহ্ নন, আর নন তাদের সুপথে পরিচালিত করার জন্যেও।

إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ثُمَّ كَفَرُوا۟ ثُمَّ ءَامَنُوا۟ ثُمَّ كَفَرُوا۟ ثُمَّ ٱزۡدَادُوا۟ كُفۡرࣰا لَّمۡ یَكُنِ ٱللَّهُ لِیَغۡفِرَ لَهُمۡ وَلَا لِیَهۡدِیَهُمۡ سَبِیلَۢا ﴿137﴾

মূনাফিকদের সুসংবাদ দাও যে তাদের জন্য নিশ্চয়ই রয়েছে ব্যথাদায়ক শাস্তি --

بَشِّرِ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ بِأَنَّ لَهُمۡ عَذَابًا أَلِیمًا ﴿138﴾

যারা অবিশ্বাসীদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করে বিশ্বাসীদের ছেড়ে দিয়ে। তারা কি তাদের কাছে মান-সম্মান খোঁজে? তবে নিঃসন্দেহ সম্মান-প্রতিপত্তি সমস্তই আল্লাহ্‌র।

ٱلَّذِینَ یَتَّخِذُونَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ أَوۡلِیَاۤءَ مِن دُونِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۚ أَیَبۡتَغُونَ عِندَهُمُ ٱلۡعِزَّةَ فَإِنَّ ٱلۡعِزَّةَ لِلَّهِ جَمِیعࣰا ﴿139﴾

আর নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে তিনি কিতাবে নাযিল করেছেন যে যখন তোমরা শোনো আল্লাহ্‌র আয়াতসমূহ অবিশ্বাস করা হচ্ছে ও সেগুলোকে বিদ্রূপ করা হচ্ছে তখন তাদের সঙ্গে বসে থেকো না যে পর্যন্ত না তারা অন্য কোনো প্রসঙ্গে প্রবেশ করে, নিঃসন্দেহ তাহলে তোমরাও তাদের মতো হবে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মূনাফিকদের ও অবিশ্বাসীদের সম্মিলিতভাবে একত্রিত করতে যাচ্ছেন জাহান্নামে, --

وَقَدۡ نَزَّلَ عَلَیۡكُمۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ أَنۡ إِذَا سَمِعۡتُمۡ ءَایَـٰتِ ٱللَّهِ یُكۡفَرُ بِهَا وَیُسۡتَهۡزَأُ بِهَا فَلَا تَقۡعُدُوا۟ مَعَهُمۡ حَتَّىٰ یَخُوضُوا۟ فِی حَدِیثٍ غَیۡرِهِۦۤ إِنَّكُمۡ إِذࣰا مِّثۡلُهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ جَامِعُ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ وَٱلۡكَـٰفِرِینَ فِی جَهَنَّمَ جَمِیعًا ﴿140﴾

যারা প্রতীক্ষায় থাকে তোমাদের জন্য, তারপর যদি আল্লাহ্‌র কাছ থেকে তোমাদের বিজয় লাভ হয় তবে তারা বলে -- ''আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম না?’’ আর যদি অবিশ্বাসীদের জন্য ভাগ পড়ে তবে তারা বলে -- ''আমরা কি তোমাদের উপরে আধিপত্য রাখি নি এবং মূমিনদের থেকে তোমাদের রক্ষা করি নি?’’ সেজন্য আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে বিচার করবেন। আর আল্লাহ্ কখনো অবিশ্বাসীদের মূমিনদের উপরে পথ করে দেবেন না।

ٱلَّذِینَ یَتَرَبَّصُونَ بِكُمۡ فَإِن كَانَ لَكُمۡ فَتۡحࣱ مِّنَ ٱللَّهِ قَالُوۤا۟ أَلَمۡ نَكُن مَّعَكُمۡ وَإِن كَانَ لِلۡكَـٰفِرِینَ نَصِیبࣱ قَالُوۤا۟ أَلَمۡ نَسۡتَحۡوِذۡ عَلَیۡكُمۡ وَنَمۡنَعۡكُم مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۚ فَٱللَّهُ یَحۡكُمُ بَیۡنَكُمۡ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۗ وَلَن یَجۡعَلَ ٱللَّهُ لِلۡكَـٰفِرِینَ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ سَبِیلًا ﴿141﴾

নিঃসন্দেহ মূনাফিকরা চায় আল্লাহ্‌কে ফাঁকি দিতে, কিন্তু তিনিই তাদের ফাঁকি প্রতিদানকারী। আর যখন তারা নামাযে দাঁড়ায়, তারা দাঁড়ায় অমনোযোগের সাথে, লোককে তারা দেখাতে যায়; আর তারা আল্লাহ্‌কে স্মরণ করে না অল্প পরিমাণে ছাড়া,

إِنَّ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ یُخَـٰدِعُونَ ٱللَّهَ وَهُوَ خَـٰدِعُهُمۡ وَإِذَا قَامُوۤا۟ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ قَامُوا۟ كُسَالَىٰ یُرَاۤءُونَ ٱلنَّاسَ وَلَا یَذۡكُرُونَ ٱللَّهَ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿142﴾

তারা দোল খাচ্ছে এর মাঝখানে -- এদিকেও তারা নয়, ওদিকেও তারা নয়। আর যাকে আল্লাহ্ বিপথে চলতে দেন, তুমি তার জন্যে কখনো পথ পাবে না।

مُّذَبۡذَبِینَ بَیۡنَ ذَ ٰ⁠لِكَ لَاۤ إِلَىٰ هَـٰۤؤُلَاۤءِ وَلَاۤ إِلَىٰ هَـٰۤؤُلَاۤءِۚ وَمَن یُضۡلِلِ ٱللَّهُ فَلَن تَجِدَ لَهُۥ سَبِیلࣰا ﴿143﴾

ওহে যারা ঈমান এনেছ! মুমিনদের বাদ দিয়ে অবিশ্বাসীদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, তোমরা কি চাও যে তোমরা আল্লাহ্‌র কাছে তোমাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট কর্তৃত্ব দেবে?

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَتَّخِذُوا۟ ٱلۡكَـٰفِرِینَ أَوۡلِیَاۤءَ مِن دُونِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۚ أَتُرِیدُونَ أَن تَجۡعَلُوا۟ لِلَّهِ عَلَیۡكُمۡ سُلۡطَـٰنࣰا مُّبِینًا ﴿144﴾

নিঃসন্দেহ মুনাফিকরা আগুনের নিন্মতম গহবরে থাকবে, আর তুমি তাদের জন্য কখনো পাবে না কোনো সহায় --

إِنَّ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ فِی ٱلدَّرۡكِ ٱلۡأَسۡفَلِ مِنَ ٱلنَّارِ وَلَن تَجِدَ لَهُمۡ نَصِیرًا ﴿145﴾

তারা ব্যতীত যারা তওবা করে ও শোধরায়, আর আল্লাহ্‌কে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে, আর তাদের ধর্মকে আল্লাহ্‌র জন্য বিশুদ্ধ করে, -- তারা তবে মুমিনদের সাথে, আর শীঘ্রই আল্লাহ্ মুমিনদের দিচ্ছেন এক বিরাট পুরস্কার।

إِلَّا ٱلَّذِینَ تَابُوا۟ وَأَصۡلَحُوا۟ وَٱعۡتَصَمُوا۟ بِٱللَّهِ وَأَخۡلَصُوا۟ دِینَهُمۡ لِلَّهِ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ مَعَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَۖ وَسَوۡفَ یُؤۡتِ ٱللَّهُ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ أَجۡرًا عَظِیمࣰا ﴿146﴾

তোমাদের শাস্তিতে আল্লাহ্ কি করবেন, যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও ও বিশ্বাস স্থাপন করো। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন বিপুল পুরস্কার দাতা, সর্বজ্ঞাতা।

مَّا یَفۡعَلُ ٱللَّهُ بِعَذَابِكُمۡ إِن شَكَرۡتُمۡ وَءَامَنتُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ شَاكِرًا عَلِیمࣰا ﴿147﴾

আল্লাহ্ ভালোবাসেন না প্রকাশ্যে মন্দ বাক্যালাপ, তবে যাকে জুলুম করা হয়েছে সে ছাড়া। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।

۞ لَّا یُحِبُّ ٱللَّهُ ٱلۡجَهۡرَ بِٱلسُّوۤءِ مِنَ ٱلۡقَوۡلِ إِلَّا مَن ظُلِمَۚ وَكَانَ ٱللَّهُ سَمِیعًا عَلِیمًا ﴿148﴾

যদি তোমরা ভলো কিছু প্রকাশ্যভাবে করো, অথবা তা গোপন রাখো, অথবা ক্ষমা করে দাও মন্দ কিছু, তাহলে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন সদা ক্ষমাশীল, পরম শক্তিমান।

إِن تُبۡدُوا۟ خَیۡرًا أَوۡ تُخۡفُوهُ أَوۡ تَعۡفُوا۟ عَن سُوۤءࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَفُوࣰّا قَدِیرًا ﴿149﴾

নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস পোষণ করে আল্লাহ্‌তে ও তাঁর রসূলগণে, আর যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলদের মধ্যে পার্থক্য করতে চায়, আর তারা বলে -- ''আমরা ঈমান আনি কয়েকজনের প্রতি আর অস্বীকার করি কয়েকজনকে”, আর যারা চায় ওর মধ্যে একটি পথ নিতে, --

إِنَّ ٱلَّذِینَ یَكۡفُرُونَ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَیُرِیدُونَ أَن یُفَرِّقُوا۟ بَیۡنَ ٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَیَقُولُونَ نُؤۡمِنُ بِبَعۡضࣲ وَنَكۡفُرُ بِبَعۡضࣲ وَیُرِیدُونَ أَن یَتَّخِذُوا۟ بَیۡنَ ذَ ٰ⁠لِكَ سَبِیلًا ﴿150﴾

এরা নিজেরাই হচ্ছে প্রকৃত অবিশ্বাসী, আর আমরা অবিশ্বাসীদের জন্য তৈরি করেছি লাঞ্ঝনাদায়ক শাস্তি।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡكَـٰفِرُونَ حَقࣰّاۚ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَـٰفِرِینَ عَذَابࣰا مُّهِینࣰا ﴿151﴾

আর যারা ঈমান আনে আল্লাহ্‌তে ও তাঁর রসূলগণে, আর তাঁদের কোনো একজনের মধ্যেও পার্থক্য করে না; এরাই -- এদের পুরস্কার শীঘ্রই এদের দেয়া হবে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।

وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَلَمۡ یُفَرِّقُوا۟ بَیۡنَ أَحَدࣲ مِّنۡهُمۡ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ سَوۡفَ یُؤۡتِیهِمۡ أُجُورَهُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورࣰا رَّحِیمࣰا ﴿152﴾

গ্রন্থপ্রাপ্তরা তোমাকে প্রশ্ন করে তুমি আকাশ থেকে তাদের কাছে কিতাব অবতারণ করো; এমনিভাবে তারা মূসার কাছে সওয়াল করেছিল এর চাইতেও বড় কিছু, যখন তারা বলেছিল -- ''আল্লাহ্‌কে আমাদের দেখাও প্রকাশ্যভাবে।’’ তাই বজ্রধবনি তাদের পাকড়ালো তাদের অন্যায়ের জন্য। তারপর তারা গোবৎসকে গ্রহণ করেছিল তাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনাবলী আসার পরেও; কিন্তু আমরা তাও মাফ করলাম। আর আমরা মূসাকে দিয়েছিলাম স্পষ্ট কর্তৃত্ব।

یَسۡـَٔلُكَ أَهۡلُ ٱلۡكِتَـٰبِ أَن تُنَزِّلَ عَلَیۡهِمۡ كِتَـٰبࣰا مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِۚ فَقَدۡ سَأَلُوا۟ مُوسَىٰۤ أَكۡبَرَ مِن ذَ ٰ⁠لِكَ فَقَالُوۤا۟ أَرِنَا ٱللَّهَ جَهۡرَةࣰ فَأَخَذَتۡهُمُ ٱلصَّـٰعِقَةُ بِظُلۡمِهِمۡۚ ثُمَّ ٱتَّخَذُوا۟ ٱلۡعِجۡلَ مِنۢ بَعۡدِ مَا جَاۤءَتۡهُمُ ٱلۡبَیِّنَـٰتُ فَعَفَوۡنَا عَن ذَ ٰ⁠لِكَۚ وَءَاتَیۡنَا مُوسَىٰ سُلۡطَـٰنࣰا مُّبِینࣰا ﴿153﴾

আর আমরা তাদের উপরে তুলেছিলাম পর্বত তাদের অঙ্গীকারের সময়ে, আর তাদের বলেছিলাম -- ''দরজা দিয়ে প্রবেশ করো নত মস্তকে।’’ আর তাদের বলেছিলাম -- ''সাব্বাথের নিয়ম লঙঘন করো না।’’ আর তাদের থেকে আমরা গ্রহণ করেছিলাম সুদৃঢ় অঙ্গীকার।

وَرَفَعۡنَا فَوۡقَهُمُ ٱلطُّورَ بِمِیثَـٰقِهِمۡ وَقُلۡنَا لَهُمُ ٱدۡخُلُوا۟ ٱلۡبَابَ سُجَّدࣰا وَقُلۡنَا لَهُمۡ لَا تَعۡدُوا۟ فِی ٱلسَّبۡتِ وَأَخَذۡنَا مِنۡهُم مِّیثَـٰقًا غَلِیظࣰا ﴿154﴾

কিন্তু তাদের অঙ্গীকার তাদের ভেঙ্গে দেবার ফলে, আর আল্লাহ্‌র নির্দেশের প্রতি তাদের অবিশ্বাসের জন্যে, আর নবীগণকে না- হক্‌ভাবে তাদের হত্যা করতে যাবার জন্যে, আর তাদের বলার জন্য -- ''আমাদের হৃদয় হ’ল গেলাফ।’’ না, আল্লাহ্ তাদের উপরে সীল মেরে দিয়েছেন তাদের অবিশ্বাসের জন্যেচ তাই তারা ঈমান আনে না অল্প ছাড়া, --

فَبِمَا نَقۡضِهِم مِّیثَـٰقَهُمۡ وَكُفۡرِهِم بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ وَقَتۡلِهِمُ ٱلۡأَنۢبِیَاۤءَ بِغَیۡرِ حَقࣲّ وَقَوۡلِهِمۡ قُلُوبُنَا غُلۡفُۢۚ بَلۡ طَبَعَ ٱللَّهُ عَلَیۡهَا بِكُفۡرِهِمۡ فَلَا یُؤۡمِنُونَ إِلَّا قَلِیلࣰا ﴿155﴾

আর তাদের অবিশ্বাসের জন্যে, আর মরিয়মের বিরুদ্ধে তাদের জঘন্য কুৎসা রটনার জন্যে;

وَبِكُفۡرِهِمۡ وَقَوۡلِهِمۡ عَلَىٰ مَرۡیَمَ بُهۡتَـٰنًا عَظِیمࣰا ﴿156﴾

আর তাদের বলার জন্য -- ''আমরা নিশ্চয়ই কাতল করেছি মসীহ্‌কে, -- মরিয়ম-পুত্র ঈসাকে” আল্লাহ্‌র রসূল, আর তারা তাঁকে কাতল করে নি, আর তারা তাঁকে ত্রুশে বধও করে নি, কিন্তু তাদের কাছে তাঁকে তেমন প্রতীয়মান করা হয়েছিল। আর নিঃসন্দেহ যারা এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করছিল, তারা অবশ্য তাঁর সন্বন্ধে সন্দেহের মধ্যে ছিল। এ বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞান নেই অনুমানের অনুসরণ ছাড়া। আর এ সুনিশ্চিত যে তারা তাঁকে হত্যা করে নি।

وَقَوۡلِهِمۡ إِنَّا قَتَلۡنَا ٱلۡمَسِیحَ عِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ رَسُولَ ٱللَّهِ وَمَا قَتَلُوهُ وَمَا صَلَبُوهُ وَلَـٰكِن شُبِّهَ لَهُمۡۚ وَإِنَّ ٱلَّذِینَ ٱخۡتَلَفُوا۟ فِیهِ لَفِی شَكࣲّ مِّنۡهُۚ مَا لَهُم بِهِۦ مِنۡ عِلۡمٍ إِلَّا ٱتِّبَاعَ ٱلظَّنِّۚ وَمَا قَتَلُوهُ یَقِینَۢا ﴿157﴾

পক্ষান্তরে আল্লাহ্ তাঁকে তাঁর দিকে উন্নীত করেছেন। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

بَل رَّفَعَهُ ٱللَّهُ إِلَیۡهِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِیزًا حَكِیمࣰا ﴿158﴾

আর গ্রন্থপ্রাপ্তদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে এতে বিশ্বাস করবে না তার মৃত্যুর পূর্বে। আর কিয়ামতের দিনে তিনি হবেন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যদাতা।

وَإِن مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَـٰبِ إِلَّا لَیُؤۡمِنَنَّ بِهِۦ قَبۡلَ مَوۡتِهِۦۖ وَیَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ یَكُونُ عَلَیۡهِمۡ شَهِیدࣰا ﴿159﴾

তারপর যারা ইহুদী মত পোষণ করে তাদের অন্যায় আচরণের ফলে আমরা তাদের জন্য হারাম করলাম কিছু পবিত্র বস্তু যা তাদের জন্য হালাল ছিল, আর তাদের প্রতিরোধ করার জন্যে বহু লোককে আল্লাহ্‌র পথ থেকে, --

فَبِظُلۡمࣲ مِّنَ ٱلَّذِینَ هَادُوا۟ حَرَّمۡنَا عَلَیۡهِمۡ طَیِّبَـٰتٍ أُحِلَّتۡ لَهُمۡ وَبِصَدِّهِمۡ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِ كَثِیرࣰا ﴿160﴾

আর তাদের সুদ নেবার জন্যে, যদিও তাদের তা নিষেধ করা হয়েছিল, আর লোকের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে তাদের গ্রাস করার জন্যে। আর তাদের মধ্যের অবিশ্বাসীদের জন্য আমরা তৈরি করেছি ব্যথাদায়ক শাস্তি।

وَأَخۡذِهِمُ ٱلرِّبَوٰا۟ وَقَدۡ نُهُوا۟ عَنۡهُ وَأَكۡلِهِمۡ أَمۡوَ ٰ⁠لَ ٱلنَّاسِ بِٱلۡبَـٰطِلِۚ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَـٰفِرِینَ مِنۡهُمۡ عَذَابًا أَلِیمࣰا ﴿161﴾

কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জ্ঞানে দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত আর মুমিনগণ, তারা বিশ্বাস করে তোমার কাছে যা নাযিল হয়েছে ও যা তোমার আগে নাযিল হয়েছিল তাতে, আর যারা নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে, আর যারা আল্লাহ্‌র প্রতি ও আখেরাতের দিনে বিশ্বাস স্থাপন করে, -- এরাই, এদের আমরা শীঘ্রই দেবো বিরাট পুরস্কার।

لَّـٰكِنِ ٱلرَّ ٰ⁠سِخُونَ فِی ٱلۡعِلۡمِ مِنۡهُمۡ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ یُؤۡمِنُونَ بِمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ وَمَاۤ أُنزِلَ مِن قَبۡلِكَۚ وَٱلۡمُقِیمِینَ ٱلصَّلَوٰةَۚ وَٱلۡمُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ سَنُؤۡتِیهِمۡ أَجۡرًا عَظِیمًا ﴿162﴾

নিঃসন্দেহ আমরা তোমার কাছে প্রত্যাদেশ পাঠিয়েছি যেমন আমরা প্রত্যাদেশ দিয়েছিলাম নূহকে ও তাঁর পরবর্তী নবীদের, আর আমরা প্রত্যাদেশ পাঠিয়েছি ইব্রাহীমকে, আর ইসমাইল ও ইসহাক ও ইয়াকুবকে, আর গোত্রদের, আর ঈসা ও আইয়ুব ও ইউনুসকে, আর হারূন ও সুলাইমানকে, আর আমরা দাউদকে দিয়েছিলাম যবূর --

۞ إِنَّاۤ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَیۡكَ كَمَاۤ أَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰ نُوحࣲ وَٱلنَّبِیِّـۧنَ مِنۢ بَعۡدِهِۦۚ وَأَوۡحَیۡنَاۤ إِلَىٰۤ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ وَإِسۡمَـٰعِیلَ وَإِسۡحَـٰقَ وَیَعۡقُوبَ وَٱلۡأَسۡبَاطِ وَعِیسَىٰ وَأَیُّوبَ وَیُونُسَ وَهَـٰرُونَ وَسُلَیۡمَـٰنَۚ وَءَاتَیۡنَا دَاوُۥدَ زَبُورࣰا ﴿163﴾

আর রসূলগণকে যাঁদের কথা ইতিপূর্বে তোমার কাছে বর্ণনা করেছি, আর রসূলগণকে যাঁদের বিষয়ে তোমার কাছে উল্লেখ করি নি; আর আল্লাহ্ মূসার সঙ্গে বলেছিলেন কথাবার্তা, --

وَرُسُلࣰا قَدۡ قَصَصۡنَـٰهُمۡ عَلَیۡكَ مِن قَبۡلُ وَرُسُلࣰا لَّمۡ نَقۡصُصۡهُمۡ عَلَیۡكَۚ وَكَلَّمَ ٱللَّهُ مُوسَىٰ تَكۡلِیمࣰا ﴿164﴾

রসূলগণকে সুসংবাদদাতারূপে, আর সাবধানকারীরূপে, যেন আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে লোকদের কোনো অজুহাত না থাকতে পারে রসূলগণের পরে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

رُّسُلࣰا مُّبَشِّرِینَ وَمُنذِرِینَ لِئَلَّا یَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَى ٱللَّهِ حُجَّةُۢ بَعۡدَ ٱلرُّسُلِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِیزًا حَكِیمࣰا ﴿165﴾

কিন্তু আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যা তোমার কাছে অবতীর্ণ করেছেন তার দ্বারা যে তিনি তা নাযিল করেছেন তাঁর জ্ঞানের সঙ্গে, আর ফিরিশ্‌তারাও সাক্ষ্য দিচ্ছে। আর সাক্ষীরূপে আল্লাহ্ যথেষ্ট।

لَّـٰكِنِ ٱللَّهُ یَشۡهَدُ بِمَاۤ أَنزَلَ إِلَیۡكَۖ أَنزَلَهُۥ بِعِلۡمِهِۦۖ وَٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ یَشۡهَدُونَۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِیدًا ﴿166﴾

নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস পোষণ করে এবং আল্লাহ্‌র পথ থেকে সরিয়ে রাখে, তারা নিশ্চয়ই পথ হারিয়ে গেছে সুদূর বিপথে।

إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَصَدُّوا۟ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِ قَدۡ ضَلُّوا۟ ضَلَـٰلَۢا بَعِیدًا ﴿167﴾

নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস পোষণ করে আর অন্যায় করে, তাদের পরিত্রাণের জন্য আল্লাহ্ দায় নিচ্ছেন না, আর তাদের কোনো গতিপথে পরিচালিত করার জন্যেও না, --

إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَظَلَمُوا۟ لَمۡ یَكُنِ ٱللَّهُ لِیَغۡفِرَ لَهُمۡ وَلَا لِیَهۡدِیَهُمۡ طَرِیقًا ﴿168﴾

শুধু জাহান্নামের পথে ছাড়া, তারা সেখানে থাকবে সুদীর্ঘকাল। আর আল্লাহ্‌র পক্ষে এটা হচ্ছে সহজ।

إِلَّا طَرِیقَ جَهَنَّمَ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۚ وَكَانَ ذَ ٰ⁠لِكَ عَلَى ٱللَّهِ یَسِیرࣰا ﴿169﴾

ওহে মানবগোষ্ঠি! নিশ্চয়ই রসূল তোমাদের কাছে এসেছেন তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে সত্যসহ, অতএব ঈমান আনো, তোমাদের জন্য তা মঙ্গলজনক। কিন্তু যদি তোমরা অবিশ্বাস পোষণ করো তবে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌রই যা-কিছু আছে মহাকাশ-মন্ডলে ও যা-কিছু পৃথিবীতে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ قَدۡ جَاۤءَكُمُ ٱلرَّسُولُ بِٱلۡحَقِّ مِن رَّبِّكُمۡ فَـَٔامِنُوا۟ خَیۡرࣰا لَّكُمۡۚ وَإِن تَكۡفُرُوا۟ فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِیمًا حَكِیمࣰا ﴿170﴾

হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা! তোমাদের ধর্মে বাড়াবাড়ি করো না, আর আল্লাহ্ সম্পর্কে সত্য ছাড়া অন্য কথা বলো না। নিঃসন্দেহ মসীহ্ -- মরিয়মের পুত্র ঈসা হচ্ছেন আল্লাহ্‌র একজন রসূল, আর তাঁর কলিমাহ্‌, যা তিনি মরিয়মের কাছে পাঠিয়েছিলেন, আর তাঁর কাছ থেকে আসা রূহ্‌, কাজেই ঈমান আনো আল্লাহ্‌র প্রতি ও তাঁর রসূলগণের প্রতি, আর বলো না -- ''তিনজন’’, থামো -- তোমাদের জন্য মঙ্গলময়। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন একক উপাস্য, সমস্ত মহিমা তাঁরই, যে তাঁর কোনো পুত্র থাকবে! যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে ও যা-কিছু আছে পৃথিবীতে সে-সব তাঁর। আর রক্ষাকারীরূপে আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট।

یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لَا تَغۡلُوا۟ فِی دِینِكُمۡ وَلَا تَقُولُوا۟ عَلَى ٱللَّهِ إِلَّا ٱلۡحَقَّۚ إِنَّمَا ٱلۡمَسِیحُ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَ رَسُولُ ٱللَّهِ وَكَلِمَتُهُۥۤ أَلۡقَىٰهَاۤ إِلَىٰ مَرۡیَمَ وَرُوحࣱ مِّنۡهُۖ فَـَٔامِنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦۖ وَلَا تَقُولُوا۟ ثَلَـٰثَةٌۚ ٱنتَهُوا۟ خَیۡرࣰا لَّكُمۡۚ إِنَّمَا ٱللَّهُ إِلَـٰهࣱ وَ ٰ⁠حِدࣱۖ سُبۡحَـٰنَهُۥۤ أَن یَكُونَ لَهُۥ وَلَدࣱۘ لَّهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِۗ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِیلࣰا ﴿171﴾

মসীহ্ কখনো কুণ্ঠাবোধ করেন না আল্লাহ্‌র বান্দা বনতে, আর সান্নিধ্যে থাকা ফিরিশ্‌তারাও করে না। আর যে কেউ তাঁর সেবায় কুণ্ঠাবোধ করে ও অহংকার করে, তিনি তাহলে তাঁর দিকে তাদের একত্রিত করবেন একজোটে।

لَّن یَسۡتَنكِفَ ٱلۡمَسِیحُ أَن یَكُونَ عَبۡدࣰا لِّلَّهِ وَلَا ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُ ٱلۡمُقَرَّبُونَۚ وَمَن یَسۡتَنكِفۡ عَنۡ عِبَادَتِهِۦ وَیَسۡتَكۡبِرۡ فَسَیَحۡشُرُهُمۡ إِلَیۡهِ جَمِیعࣰا ﴿172﴾

কজেই যারা ঈমান আনে ও ভালো কাজ করে তিনি তাহলে তাদের প্রাপ্য তাদের পুরোপুরি দেবেন এবং তাঁর করুণাভান্ডার থেকে তাদের বাড়িয়ে দেবেন। কিন্তু যারা কুণ্ঠাবোধ করে ও অহংকার করে, তিনি তাহলে তাদের শাস্তি দেবেন ব্যথাদায়ক শাস্তিতে, --

فَأَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَیُوَفِّیهِمۡ أُجُورَهُمۡ وَیَزِیدُهُم مِّن فَضۡلِهِۦۖ وَأَمَّا ٱلَّذِینَ ٱسۡتَنكَفُوا۟ وَٱسۡتَكۡبَرُوا۟ فَیُعَذِّبُهُمۡ عَذَابًا أَلِیمࣰا وَلَا یَجِدُونَ لَهُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَلِیࣰّا وَلَا نَصِیرࣰا ﴿173﴾

আর তারা আল্লাহ্ ছাড়া তাদের জন্য পাবে না কোনো মুরব্বী, না কোনো সহায়।

یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّاسُ قَدۡ جَاۤءَكُم بُرۡهَـٰنࣱ مِّن رَّبِّكُمۡ وَأَنزَلۡنَاۤ إِلَیۡكُمۡ نُورࣰا مُّبِینࣰا ﴿174﴾

ওহে জনগণ! তোমাদের কাছে নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে এসেছে স্পষ্ট প্রমাণ, আর তোমাদের কাছে আমরা পাঠিয়েছি এক উজ্জ্বল জ্যোতি।

فَأَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَٱعۡتَصَمُوا۟ بِهِۦ فَسَیُدۡخِلُهُمۡ فِی رَحۡمَةࣲ مِّنۡهُ وَفَضۡلࣲ وَیَهۡدِیهِمۡ إِلَیۡهِ صِرَ ٰ⁠طࣰا مُّسۡتَقِیمࣰا ﴿175﴾

অতএব যারা আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান এনেছে ও তাঁকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে, তিনি তবে তাদের শীঘ্রই প্রবেশ করাবেন তাঁর থেকে করুণাধারায় ও প্রাচুর্যে, আর তাদের পরিচালিত করবেন তাঁর দিকে সহজ-সঠিক পথে।

يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ ٱللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِى ٱلْكَلَٰلَةِ إِنِ ٱمْرُؤٌا۟ هَلَكَ لَيْسَ لَهُۥ وَلَدٌ وَلَهُۥٓ أُخْتٌ فَلَهَا نِصْفُ مَا تَرَكَ وَهُوَ يَرِثُهَآ إِن لَّمْ يَكُن لَّهَا وَلَدٌ فَإِن كَانَتَا ٱثْنَتَيْنِ فَلَهُمَا ٱلثُّلُثَانِ مِمَّا تَرَكَ وَإِن كَانُوٓا۟ إِخْوَةً رِّجَالًا وَنِسَآءً فَلِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ ٱلْأُنثَيَيْنِ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمْ أَن تَضِلُّوا۟ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۢ ﴿176﴾

তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করছে একটি বিধান সম্পর্কে। বলো -- ''আল্লাহ্ তোমাদের বিধান দিচ্ছেন মাতাপিতৃহীন তথা সন্তানসন্ততিহীনদের সন্বন্ধে।’’ যদি কোনো লোক মারা যায় -- তার কোনো সন্তান নাই কিন্তু এক বোন আছে -- তার জন্য তবে সে যা ছেড়ে যায় তার অর্ধেক, আর সে হচ্ছে তার ওয়ারিস যদি তার কোনো সন্তান না থাকে। আর যদি তারা দুজন হয় তবে তাদের দুজনের জন্য সে যা ছেড়ে যায় তার দুই-তৃতীয়াংশ। আর যদি তারা হয় ভ্রাতৃবর্গ -- পুরুষ ও স্ত্রীলোক তবে পুরুষের জন্য হচ্ছে দুইজন স্ত্রীলোকের সমান অংশ। আল্লাহ্ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করে দিচ্ছেন পাছে তোমরা পথভ্রষ্ট হও। আর আল্লাহ্ সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।