Settings
Surah The Table Spread [Al-Maeda] in Bengali
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَوۡفُوا۟ بِٱلۡعُقُودِۚ أُحِلَّتۡ لَكُم بَهِیمَةُ ٱلۡأَنۡعَـٰمِ إِلَّا مَا یُتۡلَىٰ عَلَیۡكُمۡ غَیۡرَ مُحِلِّی ٱلصَّیۡدِ وَأَنتُمۡ حُرُمٌۗ إِنَّ ٱللَّهَ یَحۡكُمُ مَا یُرِیدُ ﴿1﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের অঙ্গীকারসমূহ প্রতিপালন করো। তোমাদের জন্য বৈধ করা গেল গবাদি পশু -- তোমাদের কাছে যা বর্ণনা করা হয়েছে তা ব্যতীত, শিকার বিধিসংগত নয় যখন তোমরা হারামে থাকো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হুকুম করেন যা তিনি মনস্থ করেন।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تُحِلُّوا۟ شَعَـٰۤىِٕرَ ٱللَّهِ وَلَا ٱلشَّهۡرَ ٱلۡحَرَامَ وَلَا ٱلۡهَدۡیَ وَلَا ٱلۡقَلَـٰۤىِٕدَ وَلَاۤ ءَاۤمِّینَ ٱلۡبَیۡتَ ٱلۡحَرَامَ یَبۡتَغُونَ فَضۡلࣰا مِّن رَّبِّهِمۡ وَرِضۡوَ ٰنࣰاۚ وَإِذَا حَلَلۡتُمۡ فَٱصۡطَادُوا۟ۚ وَلَا یَجۡرِمَنَّكُمۡ شَنَـَٔانُ قَوۡمٍ أَن صَدُّوكُمۡ عَنِ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ أَن تَعۡتَدُوا۟ۘ وَتَعَاوَنُوا۟ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ وَلَا تَعَاوَنُوا۟ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَ ٰنِۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ ﴿2﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহ লঙ্ঘন করো না, আর পবিত্র মাসেরও না, আর উৎসর্গকৃত পশুদেরও না, আর মালা পরানো উটদেরও না, আর পবিত্র গৃহে আশ্রয় গ্রহণকারীদেরও না যারা তাদের প্রভুর কাছ থেকে কৃপা ও সন্তোষ কামনা করছে। কিন্তু যখন তোমরা মুক্ত হয়ে যাও তখন শিকার করো। আর কোনো লোকের প্রতি বিদ্বেষ, যেহেতু তারা হারাম-মসজিদে তোমাদের যেতে বাধা দিয়েছিল, তোমাদের যেন সীমালঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে। আর পরস্পরকে সাহায্য করো সৎকাজে ও ভয়-ভক্তিতে, আর পাপাচারে ও উল্লঙ্ঘনে সহায়তা করো না, আর আল্লাহ্কে ভয়-ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ প্রতিফলদানে কঠোর।
حُرِّمَتۡ عَلَیۡكُمُ ٱلۡمَیۡتَةُ وَٱلدَّمُ وَلَحۡمُ ٱلۡخِنزِیرِ وَمَاۤ أُهِلَّ لِغَیۡرِ ٱللَّهِ بِهِۦ وَٱلۡمُنۡخَنِقَةُ وَٱلۡمَوۡقُوذَةُ وَٱلۡمُتَرَدِّیَةُ وَٱلنَّطِیحَةُ وَمَاۤ أَكَلَ ٱلسَّبُعُ إِلَّا مَا ذَكَّیۡتُمۡ وَمَا ذُبِحَ عَلَى ٱلنُّصُبِ وَأَن تَسۡتَقۡسِمُوا۟ بِٱلۡأَزۡلَـٰمِۚ ذَ ٰلِكُمۡ فِسۡقٌۗ ٱلۡیَوۡمَ یَىِٕسَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِن دِینِكُمۡ فَلَا تَخۡشَوۡهُمۡ وَٱخۡشَوۡنِۚ ٱلۡیَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِینَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَیۡكُمۡ نِعۡمَتِی وَرَضِیتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَـٰمَ دِینࣰاۚ فَمَنِ ٱضۡطُرَّ فِی مَخۡمَصَةٍ غَیۡرَ مُتَجَانِفࣲ لِّإِثۡمࣲ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿3﴾
তোমাদের জন্য অবৈধ হচ্ছে -- যা নিজে মারা গেছে, আর রক্ত, আর শূকরের মাংস, আর যা যবেহ্ করা হয়েছে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য নাম নিয়ে, আর যা গলাটিপে মারা হয়েছে, আর যা ধাঁধা লাগিয়ে মারা হয়েছে, আর পড়ে গিয়ে যে মরেছে, আর যা শিঙের আঘাতে মরেছে -- তোমরা যা বৈধ করেছ তা ব্যতীত, আর যা প্রস্তরবেদীতে বলি দেয়া হয়েছে, আর যা তোমরা ভাগাভাগি করেছ তীরের লটারি খেলেচ এ সমস্তই পাপাচার। যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা আজকের দিনে তোমাদের ধর্ম সন্বন্ধে হতাশ্বাস হয়েছে, কাজেই তাদের ভয় করো না, বরং ভয় করো আমাকে। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গ করলাম, আর তোমাদের উপরে আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম, আর তোমাদের জন্য ধর্মরূপে মনোনীত করলাম ইসলাম। অতএব যে কেউ ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হয়, -- পাপের দিকে ঝোঁকে পড়ে নয়, -- তবে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
یَسۡـَٔلُونَكَ مَاذَاۤ أُحِلَّ لَهُمۡۖ قُلۡ أُحِلَّ لَكُمُ ٱلطَّیِّبَـٰتُ وَمَا عَلَّمۡتُم مِّنَ ٱلۡجَوَارِحِ مُكَلِّبِینَ تُعَلِّمُونَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَكُمُ ٱللَّهُۖ فَكُلُوا۟ مِمَّاۤ أَمۡسَكۡنَ عَلَیۡكُمۡ وَٱذۡكُرُوا۟ ٱسۡمَ ٱللَّهِ عَلَیۡهِۖ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَرِیعُ ٱلۡحِسَابِ ﴿4﴾
তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করছে কি তাদের জন্য হালাল হয়েছে। বলো -- ''ভালো বস্তু তোমাদের জন্য বৈধ হয়েছে । আর শিকারী পশুপক্ষীদের শিকার করতে যা শিখিয়েছ -- তাদের তোমরা শিখিয়েছ যা আল্লাহ্ তোমাদের শিখিয়েছেন, কাজেই তারা তোমাদের কাছে যা ধরে আনে তা থেকে তোমরা খাও, তবে তার উপরে আল্লাহ্র নাম উল্লেখ করো। আর আল্লাহ্কে ভয়-ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হিসেব-নিকেশে তৎপর।
ٱلۡیَوۡمَ أُحِلَّ لَكُمُ ٱلطَّیِّبَـٰتُۖ وَطَعَامُ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ حِلࣱّ لَّكُمۡ وَطَعَامُكُمۡ حِلࣱّ لَّهُمۡۖ وَٱلۡمُحۡصَنَـٰتُ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ وَٱلۡمُحۡصَنَـٰتُ مِنَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ إِذَاۤ ءَاتَیۡتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ مُحۡصِنِینَ غَیۡرَ مُسَـٰفِحِینَ وَلَا مُتَّخِذِیۤ أَخۡدَانࣲۗ وَمَن یَكۡفُرۡ بِٱلۡإِیمَـٰنِ فَقَدۡ حَبِطَ عَمَلُهُۥ وَهُوَ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَـٰسِرِینَ ﴿5﴾
আজ ভালো বস্তু তোমাদের জন্য হালাল করা হলো। আর যাদের গ্রন্থ দেয়া হয়েছে তাদের খাদ্য তোমাদের জন্য হালাল, এবং তোমাদের খাদ্যও তাদের জন্য বৈধ। আর মুমিনদের মধ্যের সতী-সাধ্বী নারী, আর তোমাদের আগে যাদের গ্রন্থ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যের সতী-সাধ্বী নারীও, যখন তোমরা তাদের মহরানা আদায় করেছ, সচ্চরিত্রভাবে, ব্যভিচারের জন্য নয় ও রক্ষিতারূপে গ্রহণ করেও নয়। আর যে কেউ ঈমান অস্বীকার করে সে তাহলে তার আচরণ ব্যর্থ করেছে, আর সে পরকালে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যেকার।
وَٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔایَـٰتِنَاۤ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلۡجَحِیمِ ﴿10﴾
আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে আর আমাদের নিদর্শনসমূহে মিথ্যারোপ করে, -- এরা হচ্ছে জ্বলন্ত আগুনের বাসিন্দা।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ إِذۡ هَمَّ قَوۡمٌ أَن یَبۡسُطُوۤا۟ إِلَیۡكُمۡ أَیۡدِیَهُمۡ فَكَفَّ أَیۡدِیَهُمۡ عَنكُمۡۖ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿11﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের উপরে আল্লাহ্র নিয়ামত স্মরণ করো -- যখন একটি দল দৃঢ়সঙ্কল্প করেছিল তোমাদের দিকে তাদের হাত বাড়াতে, কিন্তু তিনি তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের হাত ঠেকিয়ে রেখেছিলেন, কাজেই আল্লাহ্কে ভয়-শ্রদ্ধা করো। আর আল্লাহ্র উপরেই তবে নির্ভর করুক মুমিন সব।
۞ وَلَقَدۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِیثَـٰقَ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ وَبَعَثۡنَا مِنۡهُمُ ٱثۡنَیۡ عَشَرَ نَقِیبࣰاۖ وَقَالَ ٱللَّهُ إِنِّی مَعَكُمۡۖ لَىِٕنۡ أَقَمۡتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَیۡتُمُ ٱلزَّكَوٰةَ وَءَامَنتُم بِرُسُلِی وَعَزَّرۡتُمُوهُمۡ وَأَقۡرَضۡتُمُ ٱللَّهَ قَرۡضًا حَسَنࣰا لَّأُكَفِّرَنَّ عَنكُمۡ سَیِّـَٔاتِكُمۡ وَلَأُدۡخِلَنَّكُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُۚ فَمَن كَفَرَ بَعۡدَ ذَ ٰلِكَ مِنكُمۡ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَاۤءَ ٱلسَّبِیلِ ﴿12﴾
আর আল্লাহ্ অবশ্যই ইসরাইলের বংশধর থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন, আর আমরা তাদের মধ্যে থেকে বারো জন দলপতি দাঁড় করিয়েছিলাম। আর আল্লাহ্ বলেছিলেন -- ''নিঃসন্দেহ আমি তোমাদের সঙ্গে রয়েছি। যদি তোমরা নামায কায়েম করো ও যাকাত আদায় করো, আর আমার রসূলদের প্রতি ঈমান আনো ও তাঁদের সমর্থন করো, আর আল্লাহ্কে ধার দাও পর্যাপ্ত-সুন্দর ঋণ, তবে আমি নিশ্চয়ই তোমাদের থেকে তোমাদের সব পাপ মোছে দেব ও তোমাদের প্রবেশ করাবো উদ্যানসমূহে যাদের নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে ঝরনারাজি। কিন্তু এর পরে তোমাদের মধ্যের যে কেউ অবিশ্বাস পোষণ করবে সে-ই তবে নিশ্চয়ই সরল পথের দিশা হারিয়েছে।’’
فَبِمَا نَقۡضِهِم مِّیثَـٰقَهُمۡ لَعَنَّـٰهُمۡ وَجَعَلۡنَا قُلُوبَهُمۡ قَـٰسِیَةࣰۖ یُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِۦ وَنَسُوا۟ حَظࣰّا مِّمَّا ذُكِّرُوا۟ بِهِۦۚ وَلَا تَزَالُ تَطَّلِعُ عَلَىٰ خَاۤىِٕنَةࣲ مِّنۡهُمۡ إِلَّا قَلِیلࣰا مِّنۡهُمۡۖ فَٱعۡفُ عَنۡهُمۡ وَٱصۡفَحۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿13﴾
তারপর নিজেদের অঙ্গীকার তাদের ভঙ্গ করার দরুন আমরা তাদের বঞ্চিত করলাম আর তাদের অন্তরকে কঠিন হতে দিলাম। তারা কালামগুলো তাদের স্থান থেকে সরিয়ে দেয়, আর তাদের যে-সব নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তার অংশবিশেষ ভুলে যায়, আর তাদের লোকদের মধ্যে বিশ্বাসঘাতকতা আবিস্কার করার অবসান তোমার থাকবে না তাদের অল্প ছাড়া, সেজন্য তাদের ক্ষমা করো ও উপেক্ষা করো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভালোবাসেন সৎকর্মীদের।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِذَا قُمۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ فَٱغۡسِلُوا۟ وُجُوهَكُمۡ وَأَیۡدِیَكُمۡ إِلَى ٱلۡمَرَافِقِ وَٱمۡسَحُوا۟ بِرُءُوسِكُمۡ وَأَرۡجُلَكُمۡ إِلَى ٱلۡكَعۡبَیۡنِۚ وَإِن كُنتُمۡ جُنُبࣰا فَٱطَّهَّرُوا۟ۚ وَإِن كُنتُم مَّرۡضَىٰۤ أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوۡ جَاۤءَ أَحَدࣱ مِّنكُم مِّنَ ٱلۡغَاۤىِٕطِ أَوۡ لَـٰمَسۡتُمُ ٱلنِّسَاۤءَ فَلَمۡ تَجِدُوا۟ مَاۤءࣰ فَتَیَمَّمُوا۟ صَعِیدࣰا طَیِّبࣰا فَٱمۡسَحُوا۟ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَیۡدِیكُم مِّنۡهُۚ مَا یُرِیدُ ٱللَّهُ لِیَجۡعَلَ عَلَیۡكُم مِّنۡ حَرَجࣲ وَلَـٰكِن یُرِیدُ لِیُطَهِّرَكُمۡ وَلِیُتِمَّ نِعۡمَتَهُۥ عَلَیۡكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿6﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! যখন তোমরা নামাযে খাড়া হও তখন তোমাদের মুখমন্ডল ও কনুই পর্যন্ত তোমাদের হাত ধোও, আর তোমাদের মাথা ও গোড়ালি পর্যন্ত তোমাদের পা মূসেহ্ করো। আর যদি তোমরা যৌন সম্ভোগের পরবর্তী অবস্থায় থাকো তবে ধৌত করো। আর যদি তোমরা অসুস্থ হও, অথবা সফরে থাকো, অথবা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে এসেছ, অথবা স্ত্রীদের স্পর্শ করেছ, আর যদি পানি না পাও তবে তৈয়ম্মুম করো বিশুদ্ধ মাটি নিয়ে, আর তা দিয়ে তোমাদের মুখমন্ডল ও তোমাদের হাত মূসেহ্ করো। আল্লাহ্ চান না তোমাদের উপরে কষ্টের কিছু আরোপ করতে, কিন্তু তিনি চান তোমাদের পবিত্র করতে, আর যাতে তাঁর নিয়ামত তোমাদের উপরে পরিপূর্ণ করেন, যেন তোমরা ধন্যবাদ দিতে পারো।
وَٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَةَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ وَمِیثَـٰقَهُ ٱلَّذِی وَاثَقَكُم بِهِۦۤ إِذۡ قُلۡتُمۡ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۖ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ﴿7﴾
আর স্মরণ করো তোমাদের উপরে আল্লাহ্র নিয়ামত আর তাঁর অঙ্গীকার যার দ্বারা তিনি তোমাদের অঙ্গীকারবদ্ধ করেছিলেন, যখন তোমরা বলেছিলে -- ''আমরা শুনেছি আর আমরা আজ্ঞাপালন করছি।’’ আর আল্লাহ্কে ভয়-ভক্তি করো। নিঃসন্দেহ বুকের ভিতরে যা আছে আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ كُونُوا۟ قَوَّ ٰمِینَ لِلَّهِ شُهَدَاۤءَ بِٱلۡقِسۡطِۖ وَلَا یَجۡرِمَنَّكُمۡ شَنَـَٔانُ قَوۡمٍ عَلَىٰۤ أَلَّا تَعۡدِلُوا۟ۚ ٱعۡدِلُوا۟ هُوَ أَقۡرَبُ لِلتَّقۡوَىٰۖ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِیرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ ﴿8﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্র জন্য দৃঢ়-প্রতিষ্ঠাতা হও, ন্যায়-বিচারে সাক্ষ্যদাতা হও, আর কোনো লোকদলের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদের যেন ন্যায়াচরণ না করতে তোমাদের প্ররোচিত না করে। ন্যায়াচরণ করো, এটিই হচ্ছে ধর্মভীরুতার নিকটতর। আর আল্লাহ্কে ভয়-শ্রদ্ধা করো। নিঃসন্দেহ তোমরা যা করছো আল্লাহ্ তার পূর্ণ-ওয়াকিফহাল।
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَهُم مَّغۡفِرَةࣱ وَأَجۡرٌ عَظِیمࣱ ﴿9﴾
আল্লাহ্ ওয়াদা করছেন -- যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে পরিত্রাণ আর বিরাট পুরস্কার।
وَمِنَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤا۟ إِنَّا نَصَـٰرَىٰۤ أَخَذۡنَا مِیثَـٰقَهُمۡ فَنَسُوا۟ حَظࣰّا مِّمَّا ذُكِّرُوا۟ بِهِۦ فَأَغۡرَیۡنَا بَیۡنَهُمُ ٱلۡعَدَاوَةَ وَٱلۡبَغۡضَاۤءَ إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِۚ وَسَوۡفَ یُنَبِّئُهُمُ ٱللَّهُ بِمَا كَانُوا۟ یَصۡنَعُونَ ﴿14﴾
আর যারা বলে -- 'নিঃসন্দেহ আমরা খ্রীষ্টান’, তাদের থেকে আমরা তাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম, তারাও ভু লে গেল তাদের যে-সব নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তার অংশবিশেষ, কাজেই আমরা তাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ জাগিয়ে রাখলাম কিয়ামতের দিন পর্যন্ত। আর অচিরেই আল্লাহ্ তাদের জানিয়ে দেবেন তারা কি করে যাচ্ছিল।
یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ قَدۡ جَاۤءَكُمۡ رَسُولُنَا یُبَیِّنُ لَكُمۡ كَثِیرࣰا مِّمَّا كُنتُمۡ تُخۡفُونَ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَیَعۡفُوا۟ عَن كَثِیرࣲۚ قَدۡ جَاۤءَكُم مِّنَ ٱللَّهِ نُورࣱ وَكِتَـٰبࣱ مُّبِینࣱ ﴿15﴾
হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা! আমাদের রসূল তোমাদের কাছে ইতিমধ্যে এসে গেছেন, ধর্মগ্রন্থের যা তোমরা লুকোচ্ছিলে তার বহুলাংশ তিনি তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করেছেন, এবং অনেকটা তিনি উপেক্ষা করেছেন। আল্লাহ্র কাছ থেকে তোমাদের কাছে নিশ্চয়ই এসেছে এক জ্যোতি আর উজ্জ্বল কিতাব, --
یَهۡدِی بِهِ ٱللَّهُ مَنِ ٱتَّبَعَ رِضۡوَ ٰنَهُۥ سُبُلَ ٱلسَّلَـٰمِ وَیُخۡرِجُهُم مِّنَ ٱلظُّلُمَـٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ بِإِذۡنِهِۦ وَیَهۡدِیهِمۡ إِلَىٰ صِرَ ٰطࣲ مُّسۡتَقِیمࣲ ﴿16﴾
এর দ্বারা আল্লাহ্ তাকে হেদায়ত করেন যে তাঁর সন্তষ্টি অনুসরণ করে শান্তির পথে, আর তাদের বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে তাঁর ইচ্ছায়, আর তাদের পরিচালিত করেন সহজ-সঠিক পথের দিকে।
لَّقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤا۟ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡمَسِیحُ ٱبۡنُ مَرۡیَمَۚ قُلۡ فَمَن یَمۡلِكُ مِنَ ٱللَّهِ شَیۡـًٔا إِنۡ أَرَادَ أَن یُهۡلِكَ ٱلۡمَسِیحَ ٱبۡنَ مَرۡیَمَ وَأُمَّهُۥ وَمَن فِی ٱلۡأَرۡضِ جَمِیعࣰاۗ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَاۚ یَخۡلُقُ مَا یَشَاۤءُۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿17﴾
তারা নিশ্চয়ই অবিশ্বাস পোষণ করে যারা বলে -- ''নিঃসন্দেহ আল্লাহ্, তিনিই মসীহ্, মরিয়মের পুত্র।’’ তুমি বলো -- ''কার তাহলে বিন্দুমাত্র ক্ষমতা আছে আল্লাহ্র বিরুদ্ধে যখন তিনি চেয়েছিলেন মরিয়ম-পুত্র মসীহ্কে বিনাশ করতে, আর তাঁব মাতাকে, আর পৃথিবীতে যারা ছিল তাদের সবাইকে?’’ বস্তুতঃ আল্লাহ্রই মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর রাজত্ব আর এই দুইয়ের মধ্যে যা আছে। তিনি সৃষ্টি করেন যা তিনি ইচ্ছে করেন। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।
وَقَالَتِ ٱلۡیَهُودُ وَٱلنَّصَـٰرَىٰ نَحۡنُ أَبۡنَـٰۤؤُا۟ ٱللَّهِ وَأَحِبَّـٰۤؤُهُۥۚ قُلۡ فَلِمَ یُعَذِّبُكُم بِذُنُوبِكُمۖ بَلۡ أَنتُم بَشَرࣱ مِّمَّنۡ خَلَقَۚ یَغۡفِرُ لِمَن یَشَاۤءُ وَیُعَذِّبُ مَن یَشَاۤءُۚ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَاۖ وَإِلَیۡهِ ٱلۡمَصِیرُ ﴿18﴾
আর ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা বলে -- ''আমরা আল্লাহ্র সন্তান ও তাঁর প্রিয়পাত্র।’’ তুমি বলো -- ''তবে কেন তোমাদের অপরাধের জন্য তিনি তোমাদের শাস্তি দেন? না, যাদের তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমরা তাদের মধ্যেকার মানুষ। তিনি যাকে ইচ্ছে করেন পরিত্রাণ করেন এবং যাকে ইচ্ছে করেন শাস্তি দেন।’’ আর আল্লাহ্রই মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সাম্রাজ্য এবং এই দুইয়ের মধ্যে যা আছে, আর তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন।
یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ قَدۡ جَاۤءَكُمۡ رَسُولُنَا یُبَیِّنُ لَكُمۡ عَلَىٰ فَتۡرَةࣲ مِّنَ ٱلرُّسُلِ أَن تَقُولُوا۟ مَا جَاۤءَنَا مِنۢ بَشِیرࣲ وَلَا نَذِیرࣲۖ فَقَدۡ جَاۤءَكُم بَشِیرࣱ وَنَذِیرࣱۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿19﴾
হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা! তোমাদের কাছে নিশ্চয়ই আমাদের রসূল এসেছেন তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট করতে, রসূলদের এক বিরতির পরে, পাছে তোমরা বলো -- 'আমাদের কাছে সুসংবাদদাতাদের কেউ আসেন নি এবং সতর্ককারীও না।’ এখন তোমাদের কাছে নিশ্চয়ই এসেছেন একজন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।
وَإِذۡ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوۡمِهِۦ یَـٰقَوۡمِ ٱذۡكُرُوا۟ نِعۡمَةَ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ إِذۡ جَعَلَ فِیكُمۡ أَنۢبِیَاۤءَ وَجَعَلَكُم مُّلُوكࣰا وَءَاتَىٰكُم مَّا لَمۡ یُؤۡتِ أَحَدࣰا مِّنَ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿20﴾
আর স্মরণ করো! মূসা তাঁর লোকদের বলেছিলেন -- ''হে আমার লোকদল! তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র নিয়ামত স্মরণ করো যখন তিনি তোমাদের মধ্যে নবীদের নিযুক্ত করেছিলেন এবং তোমাদের বানিয়েছিলেন রাজা-রাজড়া, আর তোমাদের দিয়েছিলেন যা তিনি মানবগোষ্ঠীর মধ্যে অপর কাউকেও দেন নি।
یَـٰقَوۡمِ ٱدۡخُلُوا۟ ٱلۡأَرۡضَ ٱلۡمُقَدَّسَةَ ٱلَّتِی كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمۡ وَلَا تَرۡتَدُّوا۟ عَلَىٰۤ أَدۡبَارِكُمۡ فَتَنقَلِبُوا۟ خَـٰسِرِینَ ﴿21﴾
''হে আমার লোকদল! সেই পুণ্য ভূমিতে প্রবেশ করো যা আল্লাহ্ তোমাদের জন্য বিধান করেছেন, আর তোমাদের পেছন দিকে ফিরে যাবে না, কেননা তোমরা তাহলে মোড় ফেরাবে ক্ষতিগ্রস্তভাবে।’’
قَالُوا۟ یَـٰمُوسَىٰۤ إِنَّ فِیهَا قَوۡمࣰا جَبَّارِینَ وَإِنَّا لَن نَّدۡخُلَهَا حَتَّىٰ یَخۡرُجُوا۟ مِنۡهَا فَإِن یَخۡرُجُوا۟ مِنۡهَا فَإِنَّا دَ ٰخِلُونَ ﴿22﴾
তারা বললে -- ''হে মূসা! নিঃসন্দেহ ওতে রয়েছে বিশালকায় লোকেরা, আর আমরা কখনো ওতে প্রবেশ করবো না যে পর্যন্ত না তারা ওখান থেকে বেরিয়ে যায়। কাজেই তারা যদি ওখান থেকে বেরিয়ে যায় তবে আমরা অবশ্যই প্রবেশ করবো।’’
قَالَ رَجُلَانِ مِنَ ٱلَّذِینَ یَخَافُونَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِمَا ٱدۡخُلُوا۟ عَلَیۡهِمُ ٱلۡبَابَ فَإِذَا دَخَلۡتُمُوهُ فَإِنَّكُمۡ غَـٰلِبُونَۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَتَوَكَّلُوۤا۟ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿23﴾
যারা ভয় করতো তাদের মধ্যের দুজন লোক -- যাদের উপরে আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছিলেন, তারা বললে -- ''তাদের উপরে ঢুকে পড়ো দরজা দিয়ে, কাজেই যখন তোমরা তাতে প্রবেশ করবে তোমরা তখন নিশ্চয়ই বিজয়ী হবে, আর আল্লাহ্র উপরে তবে তোমরা নির্ভর করো, যদি তোমরা মুমিন হও।’’
قَالُوا۟ یَـٰمُوسَىٰۤ إِنَّا لَن نَّدۡخُلَهَاۤ أَبَدࣰا مَّا دَامُوا۟ فِیهَا فَٱذۡهَبۡ أَنتَ وَرَبُّكَ فَقَـٰتِلَاۤ إِنَّا هَـٰهُنَا قَـٰعِدُونَ ﴿24﴾
তারা বললে -- ''হে মূসা! আমরা নিশ্চয়ই কখনো এতে ঢুকবো না যতক্ষণ তারা ওর মধ্যে অবস্থান করছে। কাজেই তুমি ও তোমার প্রভু এগিয়ে যাও এবং তোমরা দুজনে যুদ্ধ করো, আমরা নিশ্চয়ই এখানে বসে পড়লাম।’’
قَالَ رَبِّ إِنِّی لَاۤ أَمۡلِكُ إِلَّا نَفۡسِی وَأَخِیۖ فَٱفۡرُقۡ بَیۡنَنَا وَبَیۡنَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿25﴾
তিনি বললেন, ''আমার প্রভু! নিশ্চয়ই আমি আমার নিজের ও আমার ভাইয়ের উপরে ছাড়া কর্তৃত্ব রাখি না, অতএব আমাদের ও দুষ্কৃতিপরায়ণ লোকদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি ঘটিয়ে দাও।’’
قَالَ فَإِنَّهَا مُحَرَّمَةٌ عَلَیۡهِمۡۛ أَرۡبَعِینَ سَنَةࣰۛ یَتِیهُونَ فِی ٱلۡأَرۡضِۚ فَلَا تَأۡسَ عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿26﴾
তিনি বললেন -- ''তবে নিঃসন্দেহ এটি তাদের জন্য হারাম থাকবে চল্লিশ বৎসর কাল, তারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবে। অতএব দুঃখ করো না এই দুষ্কৃতিপরায়ণ জাতির জন্য।
۞ وَٱتۡلُ عَلَیۡهِمۡ نَبَأَ ٱبۡنَیۡ ءَادَمَ بِٱلۡحَقِّ إِذۡ قَرَّبَا قُرۡبَانࣰا فَتُقُبِّلَ مِنۡ أَحَدِهِمَا وَلَمۡ یُتَقَبَّلۡ مِنَ ٱلۡـَٔاخَرِ قَالَ لَأَقۡتُلَنَّكَۖ قَالَ إِنَّمَا یَتَقَبَّلُ ٱللَّهُ مِنَ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿27﴾
আর তাদের কাছে সঠিকভাবে বর্ণনা করো দুই আদম-সন্তানের কাহিনী, কেমন ক’রে তারা উভয়ে কুরবানি করেছিল, কিন্তু তা কবুল হল তাদের একজনের কাছ থেকে আর অপরজনের কাছ থেকে তা গৃহীত হল না। সে বললে -- ''নিশ্চয় আমি তোমাকে খুন করবো।’’ সে বললে -- ''আল্লাহ্ কবুল করেন শুধু ধর্মভীরুদের থেকে।
لَىِٕنۢ بَسَطتَ إِلَیَّ یَدَكَ لِتَقۡتُلَنِی مَاۤ أَنَا۠ بِبَاسِطࣲ یَدِیَ إِلَیۡكَ لِأَقۡتُلَكَۖ إِنِّیۤ أَخَافُ ٱللَّهَ رَبَّ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿28﴾
''তুমি যদি আমার দিকে তোমার হাত বাড়াও আমাকে হত্যা করতে, আমি কিন্তু তোমার দিকে আমার হাত প্রসারণকারী হবো না তোমাকে হত্যা করতে। নিঃসন্দেহ আমি ভয় করি আল্লাহ্কে -- সমগ্র বিশ্বজগতের প্রভু।
إِنِّیۤ أُرِیدُ أَن تَبُوۤأَ بِإِثۡمِی وَإِثۡمِكَ فَتَكُونَ مِنۡ أَصۡحَـٰبِ ٱلنَّارِۚ وَذَ ٰلِكَ جَزَ ٰۤؤُا۟ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿29﴾
''নিঃসন্দেহ আমি চাই যে তুমি আমার বিরুদ্ধে পাপ ও তোমার পাপ বহন করো, ফলে আগুনের বাসিন্দাদের দলভুক্ত হও, আর এই-ই অন্যায়কারীদের প্রতিফল।’’
فَطَوَّعَتۡ لَهُۥ نَفۡسُهُۥ قَتۡلَ أَخِیهِ فَقَتَلَهُۥ فَأَصۡبَحَ مِنَ ٱلۡخَـٰسِرِینَ ﴿30﴾
কিন্তু তার মন তাকে প্রবুদ্ধ করলো তার ভাইকে হত্যা করতে, তাই সে তাকে খুন করলো, কাজেই পরমূহূর্তে সে হলো ক্ষতিগ্রস্তদের দলের।
فَبَعَثَ ٱللَّهُ غُرَابࣰا یَبۡحَثُ فِی ٱلۡأَرۡضِ لِیُرِیَهُۥ كَیۡفَ یُوَ ٰرِی سَوۡءَةَ أَخِیهِۚ قَالَ یَـٰوَیۡلَتَىٰۤ أَعَجَزۡتُ أَنۡ أَكُونَ مِثۡلَ هَـٰذَا ٱلۡغُرَابِ فَأُوَ ٰرِیَ سَوۡءَةَ أَخِیۖ فَأَصۡبَحَ مِنَ ٱلنَّـٰدِمِینَ ﴿31﴾
তারপর আল্লাহ্ একটি কাককে নিযুক্ত করলেন মাটি আচঁড়াতে যেন তাকে দেখানো যায় কেমন ক’রে সে তার ভাইয়ের মৃতদেহ ঢাকবে। সে বললে -- ''হায় দুর্ভাগ্য! আমি কি এই কাকের মতো হবার জন্য এতই দুর্বল হয়ে গেছি, কাজেই আমি যেন আমার ভাইয়ের শব ঢাকতে পারি?’’ সেজন্য পরমুহূর্তে সে হলো অনুতপ্তদের দলের
مِنۡ أَجۡلِ ذَ ٰلِكَ كَتَبۡنَا عَلَىٰ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ أَنَّهُۥ مَن قَتَلَ نَفۡسَۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ أَوۡ فَسَادࣲ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ ٱلنَّاسَ جَمِیعࣰا وَمَنۡ أَحۡیَاهَا فَكَأَنَّمَاۤ أَحۡیَا ٱلنَّاسَ جَمِیعࣰاۚ وَلَقَدۡ جَاۤءَتۡهُمۡ رُسُلُنَا بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ ثُمَّ إِنَّ كَثِیرࣰا مِّنۡهُم بَعۡدَ ذَ ٰلِكَ فِی ٱلۡأَرۡضِ لَمُسۡرِفُونَ ﴿32﴾
এই কারণ বশতঃ আমরা বিধিবদ্ধ করেছিলাম ইসরাইল-বংশীয়দের জন্যে -- যে, যে কেউ হত্যা করে একজন মানুষকে আরেকজনকে ব্যতীত, অথবা দেশে ফসাদ সৃষ্টি, তাহলে সে যেন লোকজনকে সর্বসাকল্যে হত্যা করলে। আবার যে কেউ তাকে বাঁচিয়ে রাখে, সে যেন তাহলে সমস্ত লোকজনকে বাঁচালে। আর নিশ্চয়ই তাদের কাছে আমাদের রসূলগণ এসেছিলেন স্পষ্ট প্রমাণাবলী নিয়ে, কিন্তু তাদের মধ্যের অনেকেই এর পরেও পৃথিবীতে সীমা ছাড়িয়ে চলে।
إِنَّمَا جَزَ ٰۤؤُا۟ ٱلَّذِینَ یُحَارِبُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَیَسۡعَوۡنَ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَسَادًا أَن یُقَتَّلُوۤا۟ أَوۡ یُصَلَّبُوۤا۟ أَوۡ تُقَطَّعَ أَیۡدِیهِمۡ وَأَرۡجُلُهُم مِّنۡ خِلَـٰفٍ أَوۡ یُنفَوۡا۟ مِنَ ٱلۡأَرۡضِۚ ذَ ٰلِكَ لَهُمۡ خِزۡیࣱ فِی ٱلدُّنۡیَاۖ وَلَهُمۡ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ عَذَابٌ عَظِیمٌ ﴿33﴾
যারা আল্লাহ্র ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আর দেশে গন্ডগোল বাঁধাতে তৎপর হয় তাদের একমাত্র প্রাপ্য হচ্ছে -- তাদের কাতল করো, অথবা শূলে চড়াও, অথবা তাদের হাত ও তাদের পা বিপরীত দিকে কেটে ফেলো, অথবা তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করো। এটি হচ্ছে তাদের জন্য ইহলোকে লাঞ্ছনা, আর তাদের জন্য পরকালে রয়েছে কঠোর শাস্তি, --
إِلَّا ٱلَّذِینَ تَابُوا۟ مِن قَبۡلِ أَن تَقۡدِرُوا۟ عَلَیۡهِمۡۖ فَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿34﴾
তারা ব্যতীত যারা তওবা করে তোমরা তাদের উপরে ক্ষমতাসীন হবার পূর্বে, তাহলে জেনে রেখো যে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱبۡتَغُوۤا۟ إِلَیۡهِ ٱلۡوَسِیلَةَ وَجَـٰهِدُوا۟ فِی سَبِیلِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿35﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্কে ভয়-শ্রদ্ধা করো, আর তাঁর দিকে অছিলা অন্বেষণ করো, আর তাঁর পথে জিহাদ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।
إِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لَوۡ أَنَّ لَهُم مَّا فِی ٱلۡأَرۡضِ جَمِیعࣰا وَمِثۡلَهُۥ مَعَهُۥ لِیَفۡتَدُوا۟ بِهِۦ مِنۡ عَذَابِ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنۡهُمۡۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿36﴾
নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস পোষণ করে -- পৃথিবীতে যা আছে সে-সমস্তই যদি তাদের হতো এবং তার সাথে সেই পরিমাণে, যার বিনিময়ে তারা মুক্তি কামনা করতো কিয়ামতের দিনের শাস্তি থেকে, তাদের কাছ থেকে তা কবুল হতো না, আর তাদের জন্য রয়েছে ব্যথাদায়ক শাস্তি।
یُرِیدُونَ أَن یَخۡرُجُوا۟ مِنَ ٱلنَّارِ وَمَا هُم بِخَـٰرِجِینَ مِنۡهَاۖ وَلَهُمۡ عَذَابࣱ مُّقِیمࣱ ﴿37﴾
তারা চাইবে যেন সেই আগুন থেকে তারা বেরিয়ে যেতে পারে, কিন্তু তা থেকে তারা বেরিয়ে যাবার নয়, আর তাদের জন্যে রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী শাস্তি।
وَٱلسَّارِقُ وَٱلسَّارِقَةُ فَٱقۡطَعُوۤا۟ أَیۡدِیَهُمَا جَزَاۤءَۢ بِمَا كَسَبَا نَكَـٰلࣰا مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿38﴾
আর চোরা পুরুষ ও চোরা স্ত্রীলোক -- দুইয়েরই তবে হাত কেটে ফেলো, -- তারা যা করেছে তার প্রতিফলস্বরূপ, -- এটি আল্লাহ্র তরফ থেকে একটি দৃষ্টান্ত-স্থাপনকারী শাস্তি। আর আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।
فَمَن تَابَ مِنۢ بَعۡدِ ظُلۡمِهِۦ وَأَصۡلَحَ فَإِنَّ ٱللَّهَ یَتُوبُ عَلَیۡهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمٌ ﴿39﴾
কিন্তু যে কেউ তওবা করে তার অন্যায়াচরণের পরে আর সংশোধন কবে, তাহলে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তার দিকে ফিরবেন। নিঃসেন্দহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ یُعَذِّبُ مَن یَشَاۤءُ وَیَغۡفِرُ لِمَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرࣱ ﴿40﴾
তুমি কি জানো না যে আল্লাহ -- মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর রাজত্ব তাঁরই? তিনি শাস্তি দেন যাকে ইচ্ছে করেন আর ক্ষমাও করেন যাকে ইচ্ছে করেন। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلرَّسُولُ لَا یَحۡزُنكَ ٱلَّذِینَ یُسَـٰرِعُونَ فِی ٱلۡكُفۡرِ مِنَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤا۟ ءَامَنَّا بِأَفۡوَ ٰهِهِمۡ وَلَمۡ تُؤۡمِن قُلُوبُهُمۡۛ وَمِنَ ٱلَّذِینَ هَادُوا۟ۛ سَمَّـٰعُونَ لِلۡكَذِبِ سَمَّـٰعُونَ لِقَوۡمٍ ءَاخَرِینَ لَمۡ یَأۡتُوكَۖ یُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ مِنۢ بَعۡدِ مَوَاضِعِهِۦۖ یَقُولُونَ إِنۡ أُوتِیتُمۡ هَـٰذَا فَخُذُوهُ وَإِن لَّمۡ تُؤۡتَوۡهُ فَٱحۡذَرُوا۟ۚ وَمَن یُرِدِ ٱللَّهُ فِتۡنَتَهُۥ فَلَن تَمۡلِكَ لَهُۥ مِنَ ٱللَّهِ شَیۡـًٔاۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ لَمۡ یُرِدِ ٱللَّهُ أَن یُطَهِّرَ قُلُوبَهُمۡۚ لَهُمۡ فِی ٱلدُّنۡیَا خِزۡیࣱۖ وَلَهُمۡ فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ عَذَابٌ عَظِیمࣱ ﴿41﴾
হে প্রিয় রসূল! যারা অবিশ্বাসের অভিমুখে ধাওয়া করেছে তারা যেন তোমাকে দুঃখিত না করে, যারা তাদের মুখে বলে -- 'আমরা ঈমান এনেছি’, কিন্তু তাদের হৃদয় ঈমান আনে নি, আর যারা ইহুদীয় মত পোষণ করে, -- মিথ্যার জন্যে শ্রবণকারী, শ্রবণকারী অন্য লোকদের জন্যে যারা তোমার কাছে আসে না। তারা কথাগুলো সরিয়ে দেয় সেগুলোকে যথাস্থানে স্থাপনের পরে, তারা বলে -- ''তোমাদের যদি এই দেওয়া হয় তবে তা গ্রহণ করো, আর যদি তোমাদের এই দেয়া না হয় তবে সাবধান হও।’’ আর যাকে তার প্রলোভনের মধ্যে আল্লাহ্ চান, তার জন্য আল্লাহ্র কাছ থেকে কিছু করার ক্ষমতা তোমার নেই। এরাই তারা যাদের সন্বন্ধে আল্লাহ্ চান না যে তাদের হৃদয় বিশুদ্ধ হোক। এদের জন্য এই দুনিয়াতে রয়েছে দুর্গতি, আর পরকালে এদের জন্য কঠোর শাস্তি।
سَمَّـٰعُونَ لِلۡكَذِبِ أَكَّـٰلُونَ لِلسُّحۡتِۚ فَإِن جَاۤءُوكَ فَٱحۡكُم بَیۡنَهُمۡ أَوۡ أَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡۖ وَإِن تُعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ فَلَن یَضُرُّوكَ شَیۡـࣰٔاۖ وَإِنۡ حَكَمۡتَ فَٱحۡكُم بَیۡنَهُم بِٱلۡقِسۡطِۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِینَ ﴿42﴾
তারা মিথ্যার জন্যে শ্রবণকারী, নিষিদ্ধের ভক্ষণকারী। অতএব তারা যদি তোমার কাছে আসে তবে তাদের মধ্যে বিচার করো, অথবা তাদের থেকে গুটিয়ে নাও, আর যদি তুমি তাদের থেকে গুটিয়ে নাও তবে তারা কখনো তোমার মোটেই ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তুমি বিচার করো তবে তাদের মধ্যে বিচার করো ন্যায়পরায়ণতার সাথে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভালোবাসেন ভারসাম্যরক্ষাকারীদের।
وَكَیۡفَ یُحَكِّمُونَكَ وَعِندَهُمُ ٱلتَّوۡرَىٰةُ فِیهَا حُكۡمُ ٱللَّهِ ثُمَّ یَتَوَلَّوۡنَ مِنۢ بَعۡدِ ذَ ٰلِكَۚ وَمَاۤ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ بِٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿43﴾
আর কেমন ক’রে তারা তোমাকে বিচারক করে, আর তাদের কাছে রয়েছে তওরাত যাতে আছে আল্লাহ্র বিধান? তবুও তারা ফিরে যায় এ-সবের পরেও! আর এমন লোকেরা মুমিন নয়।
إِنَّاۤ أَنزَلۡنَا ٱلتَّوۡرَىٰةَ فِیهَا هُدࣰى وَنُورࣱۚ یَحۡكُمُ بِهَا ٱلنَّبِیُّونَ ٱلَّذِینَ أَسۡلَمُوا۟ لِلَّذِینَ هَادُوا۟ وَٱلرَّبَّـٰنِیُّونَ وَٱلۡأَحۡبَارُ بِمَا ٱسۡتُحۡفِظُوا۟ مِن كِتَـٰبِ ٱللَّهِ وَكَانُوا۟ عَلَیۡهِ شُهَدَاۤءَۚ فَلَا تَخۡشَوُا۟ ٱلنَّاسَ وَٱخۡشَوۡنِ وَلَا تَشۡتَرُوا۟ بِـَٔایَـٰتِی ثَمَنࣰا قَلِیلࣰاۚ وَمَن لَّمۡ یَحۡكُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡكَـٰفِرُونَ ﴿44﴾
নিঃসন্দেহ আমরা অবতীর্ণ করেছি তওরাত, যাতে রয়েছে হেদায়ত ও দীপ্তি। তার দ্বারা নবীগণ, যাঁরা ইসলামী ধর্মমত পোষণ করেন, বিধান দিয়েছিলেন তাদের যারা ইহুদীয় মত পোষণ করে, আর রব্বিসব ও পুরোহিতরা আল্লাহ্র কিতাবের যা তারা সংরক্ষণ করতো তারদ্বারা, আর তারা সে-সবের সাক্ষী ছিল। সেজন্য তোমরা লোকজনকে ভয় করো না, বরং ভয় করো আমাকে, আর আমার বাণীসমূহের জন্য স্বল্পমূল্য কামাতে যেয়ো না। আর যারা বিচার করে না আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তার দ্বারা, তারা তবে নিজেরাই অবিশ্বাসী।
وَكَتَبۡنَا عَلَیۡهِمۡ فِیهَاۤ أَنَّ ٱلنَّفۡسَ بِٱلنَّفۡسِ وَٱلۡعَیۡنَ بِٱلۡعَیۡنِ وَٱلۡأَنفَ بِٱلۡأَنفِ وَٱلۡأُذُنَ بِٱلۡأُذُنِ وَٱلسِّنَّ بِٱلسِّنِّ وَٱلۡجُرُوحَ قِصَاصࣱۚ فَمَن تَصَدَّقَ بِهِۦ فَهُوَ كَفَّارَةࣱ لَّهُۥۚ وَمَن لَّمۡ یَحۡكُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿45﴾
আর আমরা তাদের জন্য তাতে বিধান করেছিলাম -- প্রাণের বদলে প্রাণ, আর চোখের বদলে চোখ, আর নাকের বদলে নাক, আর কানের বদলে কান, আর দাঁতের বদলে দাঁত, আর জখমেরও বদলাই। আর যে কেউ এটি দিয়ে দান করে দেয়, সেটি তা হলে তার জন্য হবে প্রায়শ্চিত্ত। আর যে বিচার করে না আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দ্বারা, তাহলে তারা নিজেরাই হচ্ছে অন্যায়কারী।
وَقَفَّیۡنَا عَلَىٰۤ ءَاثَـٰرِهِم بِعِیسَى ٱبۡنِ مَرۡیَمَ مُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِۖ وَءَاتَیۡنَـٰهُ ٱلۡإِنجِیلَ فِیهِ هُدࣰى وَنُورࣱ وَمُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَهُدࣰى وَمَوۡعِظَةࣰ لِّلۡمُتَّقِینَ ﴿46﴾
আর তাদের পশ্চাতে আমরা পাঠিয়েছিলাম মরিয়ম-পুত্র ঈসাকে, তাঁর পূর্বে তওরাতে যা ছিল তার প্রতিপাদকরূপে, আর তাঁকে আমরা দিয়েছিলাম ইনজীল যাতে রয়েছে পথপ্রদর্শন ও দীপ্তি, এর পূর্বে তওরাতে যা ছিল তার সত্য-সমর্থনরূপে, আর পথপ্রদর্শন ও উপদেশ ধর্মপরায়ণদের জন্য।
وَلۡیَحۡكُمۡ أَهۡلُ ٱلۡإِنجِیلِ بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فِیهِۚ وَمَن لَّمۡ یَحۡكُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ﴿47﴾
আর ইনজীলের অনুবর্তীদের উচিত তারা যেন বিচার করে আল্লাহ্ তাতে যা অবতারণ করেছেন তার দ্বারা। আর যে বিচার করে না আল্লাহ্ যা অবতারণ করেছেন তার দ্বারা, তারা তবে নিজেরাই হচ্ছে দুষ্কৃতিপরায়ণ।
وَأَنزَلۡنَاۤ إِلَیۡكَ ٱلۡكِتَـٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقࣰا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَـٰبِ وَمُهَیۡمِنًا عَلَیۡهِۖ فَٱحۡكُم بَیۡنَهُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَاۤءَهُمۡ عَمَّا جَاۤءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ لِكُلࣲّ جَعَلۡنَا مِنكُمۡ شِرۡعَةࣰ وَمِنۡهَاجࣰاۚ وَلَوۡ شَاۤءَ ٱللَّهُ لَجَعَلَكُمۡ أُمَّةࣰ وَ ٰحِدَةࣰ وَلَـٰكِن لِّیَبۡلُوَكُمۡ فِی مَاۤ ءَاتَىٰكُمۡۖ فَٱسۡتَبِقُوا۟ ٱلۡخَیۡرَ ٰتِۚ إِلَى ٱللَّهِ مَرۡجِعُكُمۡ جَمِیعࣰا فَیُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ فِیهِ تَخۡتَلِفُونَ ﴿48﴾
আর তোমার কাছে আমরা অবতারণ করেছি এই কিতাব সত্যের সাথে, এবং পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থে যা আছে তার সত্য-সমর্থনরূপে, আর তার উপরে প্রহরীরূপে, সেজন্য তাদের মধ্যে বিচার করো যা আল্লাহ্ নাযিল করেছেন তার দ্বারা, আর তাদের হীন-বাসনার অনুসরণ করো না তোমার প্রতি সত্যের যা এসেছে তার প্রতি বিমুখ হয়ে। তোমাদের মধ্যের প্রত্যেকের জন্য আমরা নির্ধারণ করেছিলাম এক-একটি শরিয়ৎ ও এক-একটি পথ। আর যদি আল্লাহ্ ইচ্ছে করতেন তবে তিনি তোমাদের বানাতেন একই জাতি, কিন্তু তিনি যেন তোমাদের যাচাই করতে পারেন তোমাদের যা তিনি দিয়েছেন তার দ্বারা, কাজেই ভালোকাজে পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করো। আল্লাহ্র কাছে তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন, তখন তিনি তোমাদের অবহিত করবেন সেইসব বিষয়ে যাতে তোমরা মতভেদ করছিলে।
وَأَنِ ٱحۡكُم بَیۡنَهُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَاۤءَهُمۡ وَٱحۡذَرۡهُمۡ أَن یَفۡتِنُوكَ عَنۢ بَعۡضِ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ إِلَیۡكَۖ فَإِن تَوَلَّوۡا۟ فَٱعۡلَمۡ أَنَّمَا یُرِیدُ ٱللَّهُ أَن یُصِیبَهُم بِبَعۡضِ ذُنُوبِهِمۡۗ وَإِنَّ كَثِیرࣰا مِّنَ ٱلنَّاسِ لَفَـٰسِقُونَ ﴿49﴾
আর তুমি যেন তাদের মধ্যে বিচার করো আল্লাহ্ যা অবতারণ করেছেন তার দ্বারা আর তাদের হীন-বাসনার অনুসরণ করো না, আর তাদের সম্পর্কে সাবধান হও পাছে তারা তোমাকে ভ্রান্তিতে ফেলে দেয় আল্লাহ্ তোমার কাছে যা অবতারণ করেছেন তার কোনো অংশ থেকে। তারা যদি তবে ফিরে যায় তাহলে জেনে রেখো যে আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তাদের পাকড়াও করতে চান তাদের কতকগুলো অপরাধের জন্য। আর নিঃসন্দেহ লোকদের অধিকাংশই দুষ্কৃতিপরায়ণ।
أَفَحُكۡمَ ٱلۡجَـٰهِلِیَّةِ یَبۡغُونَۚ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمࣰا لِّقَوۡمࣲ یُوقِنُونَ ﴿50﴾
তবে কি তারা অজ্ঞতার যুগের বিচার ব্যবস্থা চায়? আর আল্লাহ্র চাইতে কে বেশি ভালো বিচার ব্যবস্থায় সেই সম্প্রদায়ের জন্যে যারা সুনিশ্চিত?
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَتَّخِذُوا۟ ٱلۡیَهُودَ وَٱلنَّصَـٰرَىٰۤ أَوۡلِیَاۤءَۘ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِیَاۤءُ بَعۡضࣲۚ وَمَن یَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَإِنَّهُۥ مِنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿51﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, তাদের একদল অন্যদের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যের যে তাদের মুরব্বী বানায় সে তবে নিশ্চয় তাদেরই মধ্যেকার। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পথ দেখান না অন্যায়কারী সম্প্রদায়কে।
فَتَرَى ٱلَّذِینَ فِی قُلُوبِهِم مَّرَضࣱ یُسَـٰرِعُونَ فِیهِمۡ یَقُولُونَ نَخۡشَىٰۤ أَن تُصِیبَنَا دَاۤىِٕرَةࣱۚ فَعَسَى ٱللَّهُ أَن یَأۡتِیَ بِٱلۡفَتۡحِ أَوۡ أَمۡرࣲ مِّنۡ عِندِهِۦ فَیُصۡبِحُوا۟ عَلَىٰ مَاۤ أَسَرُّوا۟ فِیۤ أَنفُسِهِمۡ نَـٰدِمِینَ ﴿52﴾
কাজেই যাদের অন্তরে ব্যারাম রয়েছে তাদের তুমি দেখতে পাবে তাদের দিকে ছুটে যেতে এই বলে -- ''আমরা আশঙ্কা করছি কোনো দুর্যোগ আমাদের উপরে ঘটে যায়।’’ কিন্তু হতে পারে যে আল্লাহ্ এনে দেবেন বিজয় অথবা তাঁর কাছ থেকে চুড়ান্ত নিস্পত্তি, তাই তাদের অন্তরে তারা যা পোষণ করছিল তার জন্য পরমুহূর্তেই তারা হলো অনুতাপী।
وَیَقُولُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَهَـٰۤؤُلَاۤءِ ٱلَّذِینَ أَقۡسَمُوا۟ بِٱللَّهِ جَهۡدَ أَیۡمَـٰنِهِمۡ إِنَّهُمۡ لَمَعَكُمۡۚ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ فَأَصۡبَحُوا۟ خَـٰسِرِینَ ﴿53﴾
আর যারা ঈমান এনেছে তারা বলবে -- ''এরাই কি তারা যারা আল্লাহ্র নামে তাদের জোরালো আস্থার সাথে শপথ গ্রহণ করেছিল যে তারা সুনিশ্চিত তোমাদের সঙ্গে?’’ তাদের ক্রিয়াকলাপ বৃথা গেল, কাজেই পরমুহূর্তে তারা হলো ক্ষতিগ্রস্ত।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مَن یَرۡتَدَّ مِنكُمۡ عَن دِینِهِۦ فَسَوۡفَ یَأۡتِی ٱللَّهُ بِقَوۡمࣲ یُحِبُّهُمۡ وَیُحِبُّونَهُۥۤ أَذِلَّةٍ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ أَعِزَّةٍ عَلَى ٱلۡكَـٰفِرِینَ یُجَـٰهِدُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَلَا یَخَافُونَ لَوۡمَةَ لَاۤىِٕمࣲۚ ذَ ٰلِكَ فَضۡلُ ٱللَّهِ یُؤۡتِیهِ مَن یَشَاۤءُۚ وَٱللَّهُ وَ ٰسِعٌ عَلِیمٌ ﴿54﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের মধ্যে থেকে যে কেউ তার ধর্ম থেকে ফিরে যায়, আল্লাহ্ তবে শীঘ্রই নিয়ে আসবেন একটি সম্প্রদায় -- তাদের তিনি ভালোবাসবেন ও তারা তাঁকে ভালোবাসবে, মুমিনদের প্রতি বিনীত, অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর, তারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করবে, আর ভয় করবে না কোনো নিন্দুকের নিন্দা। এই হচ্ছে আল্লাহ্র এক আশিস -- তিনি তা প্রদান করেন যাকে তিনি ইচ্ছে করেন। আর আল্লাহ্ পরম বদান্য, সর্বজ্ঞাতা।
إِنَّمَا وَلِیُّكُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱلَّذِینَ یُقِیمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَیُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُمۡ رَ ٰكِعُونَ ﴿55﴾
নিঃসন্দেহ তোমাদের ওলী হচ্ছেন কেবলমাত্র আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূল, আর যারা ঈমান এনেছে, আর যারা নামায কায়েম করে, আর যাকাত আদায় করে, আর তারা রুকুকারী।
وَمَن یَتَوَلَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ فَإِنَّ حِزۡبَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلۡغَـٰلِبُونَ ﴿56﴾
আর যে কেউ বন্ধুরূপে গ্রহণ করে আল্লাহ্কে, ও তাঁর রসূলকে, আর যারা ঈমান এনেছে তাদের, তাহলে আল্লাহ্র দল, তারাই হবে বিজয়ী।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَتَّخِذُوا۟ ٱلَّذِینَ ٱتَّخَذُوا۟ دِینَكُمۡ هُزُوࣰا وَلَعِبࣰا مِّنَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَٱلۡكُفَّارَ أَوۡلِیَاۤءَۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿57﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাসের ও খেলার সামগ্রীরূপে গ্রহণ করেছে -- তোমাদের পূর্বে যাদের গ্রন্থ দেয়া হয়েছে ও অবিশ্বাসকারীরা, -- তাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। আর আল্লাহ্কে ভয়-শ্রদ্ধা করো যদি তোমরা মুমিন হও।
وَإِذَا نَادَیۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ ٱتَّخَذُوهَا هُزُوࣰا وَلَعِبࣰاۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمࣱ لَّا یَعۡقِلُونَ ﴿58﴾
আর যখন তোমরা নামাযের জন্য আহ্বান করো, তারা তাকে বিদ্রূপের ও খেলার জিনিসরূপে গ্রহণ করে। সেটি এই জন্য যে তারা এমন একটি দল যারা বুঝে না।
قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ هَلۡ تَنقِمُونَ مِنَّاۤ إِلَّاۤ أَنۡ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡنَا وَمَاۤ أُنزِلَ مِن قَبۡلُ وَأَنَّ أَكۡثَرَكُمۡ فَـٰسِقُونَ ﴿59﴾
তুমি বলো -- ''হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা! তোমরা কি আমাদের কোনো দোষ ধরো এ ব্যতীত যে আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ্তে, আর যা আমাদের কাছে নাযিল হয়েছে, আর যা পূর্বে নাযিল হয়েছিল? আর নিশ্চয় তোমাদের অধিকাংশই দুষ্কৃতিপরায়ণ।’’
قُلۡ هَلۡ أُنَبِّئُكُم بِشَرࣲّ مِّن ذَ ٰلِكَ مَثُوبَةً عِندَ ٱللَّهِۚ مَن لَّعَنَهُ ٱللَّهُ وَغَضِبَ عَلَیۡهِ وَجَعَلَ مِنۡهُمُ ٱلۡقِرَدَةَ وَٱلۡخَنَازِیرَ وَعَبَدَ ٱلطَّـٰغُوتَۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ شَرࣱّ مَّكَانࣰا وَأَضَلُّ عَن سَوَاۤءِ ٱلسَّبِیلِ ﴿60﴾
বলো -- ''তোমাদের কি জানাবো এর চেয়েও খারাপদের কথা, আল্লাহ্র কাছে প্রতিফল পাওয়া সন্বন্ধে? যাকে আল্লাহ্ ধিক্কার দিয়েছেন, আর যার উপরে তিনি ক্রোধ বর্ষণ করেছেন, আর তাদের মধ্যের কাউকে তিনি বানালেন বানর, আর শূকর, আর যে উপাসনা করত তাগুতকে। এরা আছে অতি মন্দ অবস্থায়, আর সরল পথ থেকে সুদূর পথভ্রষ্ট।
وَإِذَا جَاۤءُوكُمۡ قَالُوۤا۟ ءَامَنَّا وَقَد دَّخَلُوا۟ بِٱلۡكُفۡرِ وَهُمۡ قَدۡ خَرَجُوا۟ بِهِۦۚ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِمَا كَانُوا۟ یَكۡتُمُونَ ﴿61﴾
আর যখন তারা তোমাদের কাছে আসে তারা বলে -- 'আমরা ঈমান এনেছি’, কিন্তু আসলে তারা ভরতি হয়েছিল অবিশ্বাস নিয়ে আর এখন বেরিয়েও গেছে তাতেই। আর আল্লাহ্ ভালো জানেন কি তারা লুকোচ্ছে।
وَتَرَىٰ كَثِیرࣰا مِّنۡهُمۡ یُسَـٰرِعُونَ فِی ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَ ٰنِ وَأَكۡلِهِمُ ٱلسُّحۡتَۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ ﴿62﴾
আর তুমি দেখতে পাবে তাদের অনেকেই ছুটে চলেছে পাপের দিকে ও উল্লঙ্ঘনে, আর তাদের গলাধঃকরণে অবৈধভাবে লব্ধ বস্তু। নিশ্চয়ই গর্হিত যা তারা করে চলেছে।
لَوۡلَا یَنۡهَىٰهُمُ ٱلرَّبَّـٰنِیُّونَ وَٱلۡأَحۡبَارُ عَن قَوۡلِهِمُ ٱلۡإِثۡمَ وَأَكۡلِهِمُ ٱلسُّحۡتَۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُوا۟ یَصۡنَعُونَ ﴿63﴾
রব্বিগণ ও পুরোহিতরা কেন তাদের নিষেধ করে না তাদের পাপপূর্ণ কথাবার্তা বলাতে আর তাদের গ্রাস-করণে অবৈধভাবে লব্ধ বস্তু। অবশ্যই গর্হিত যা তারা করে যাচ্ছে।
وَقَالَتِ ٱلۡیَهُودُ یَدُ ٱللَّهِ مَغۡلُولَةٌۚ غُلَّتۡ أَیۡدِیهِمۡ وَلُعِنُوا۟ بِمَا قَالُوا۟ۘ بَلۡ یَدَاهُ مَبۡسُوطَتَانِ یُنفِقُ كَیۡفَ یَشَاۤءُۚ وَلَیَزِیدَنَّ كَثِیرࣰا مِّنۡهُم مَّاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ مِن رَّبِّكَ طُغۡیَـٰنࣰا وَكُفۡرࣰاۚ وَأَلۡقَیۡنَا بَیۡنَهُمُ ٱلۡعَدَ ٰوَةَ وَٱلۡبَغۡضَاۤءَ إِلَىٰ یَوۡمِ ٱلۡقِیَـٰمَةِۚ كُلَّمَاۤ أَوۡقَدُوا۟ نَارࣰا لِّلۡحَرۡبِ أَطۡفَأَهَا ٱللَّهُۚ وَیَسۡعَوۡنَ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَسَادࣰاۚ وَٱللَّهُ لَا یُحِبُّ ٱلۡمُفۡسِدِینَ ﴿64﴾
আর ইহুদীরা বলে -- ''আল্লাহ্র হাত বাঁধা রয়েছে।’’ তাদের হাত রয়েছে বাঁধা, আর তারা ধিক্কারপ্রাপ্ত যা তারা বলে সেজন্য। না, তাঁর দুই হাতই পূর্ণ-প্রসারিত, -- তিনি বিতরণ করেন যেমন তিনি চান। আর তোমার প্রভুর কাছ থেকে তোমার কাছে যা নাযিল হয়েছে তা নিশ্চয়ই বাড়িয়ে দেয় তাদের মধ্যের অনেকের অবাধ্যতা ও অবিশ্বাস। আর আমরা তাদের মধ্যে ছুঁড়ে দিয়েছি শত্রুতা ও বিদ্বেষ কিয়ামতের দিন পর্যন্ত। যতবার তারা যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে তুলে, আল্লাহ্ তা নিভিয়ে দেন, কিন্তু তারা দেশে গন্ডগোল করার চেষ্টা চালাতেই থাকে। আর আল্লাহ্ ভালোবাসেন না গন্ডগোল সৃষ্টিকারীদের।
وَلَوۡ أَنَّ أَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ ءَامَنُوا۟ وَٱتَّقَوۡا۟ لَكَفَّرۡنَا عَنۡهُمۡ سَیِّـَٔاتِهِمۡ وَلَأَدۡخَلۡنَـٰهُمۡ جَنَّـٰتِ ٱلنَّعِیمِ ﴿65﴾
আর যদি গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা ঈমান আনতো এবং ভয়-শ্রদ্ধা করতো, তবে নিশ্চয়ই আমরা তাদের দোষ-ত্রুটি তাদের থেকে মুছে দিতাম, আর তাদের অবশ্যই প্রবেশ করাতাম আনন্দময় স্বর্গোদ্যানে।
وَلَوۡ أَنَّهُمۡ أَقَامُوا۟ ٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡهِم مِّن رَّبِّهِمۡ لَأَكَلُوا۟ مِن فَوۡقِهِمۡ وَمِن تَحۡتِ أَرۡجُلِهِمۚ مِّنۡهُمۡ أُمَّةࣱ مُّقۡتَصِدَةࣱۖ وَكَثِیرࣱ مِّنۡهُمۡ سَاۤءَ مَا یَعۡمَلُونَ ﴿66﴾
আর যদি তারা প্রতিষ্ঠিত রাখতো তওরাত ও ইনজীল, আর তাদের কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছিল তাদের প্রভুর কাছ থেকে তবে তারা নিশ্চয়ই আহার করতো তাদের উপর থেকে আর তাদের পায়ের নিচে থেকে। তাদের মধ্যেও একটি নরমপন্থী দল রয়েছে, কিন্তু তাদের অনেকের ক্ষেত্রেই -- তারা যা করে তা হচ্ছে গর্হিত।
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلرَّسُولُ بَلِّغۡ مَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ مِن رَّبِّكَۖ وَإِن لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَهُۥۚ وَٱللَّهُ یَعۡصِمُكَ مِنَ ٱلنَّاسِۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿67﴾
হে প্রিয় রসূল! তোমার প্রভুর কাছ থেকে যা তোমার কাছে অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার করো। আর যদি তুমি তা না করো তবে তাঁর বাণী তুমি প্রচার করলে না। আর আল্লাহ্ লোকদের থেকে তোমাকে রক্ষা করবেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ অবিশ্বাসী লোকদের পথপ্রদর্শন করেন না।
قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لَسۡتُمۡ عَلَىٰ شَیۡءٍ حَتَّىٰ تُقِیمُوا۟ ٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكُم مِّن رَّبِّكُمۡۗ وَلَیَزِیدَنَّ كَثِیرࣰا مِّنۡهُم مَّاۤ أُنزِلَ إِلَیۡكَ مِن رَّبِّكَ طُغۡیَـٰنࣰا وَكُفۡرࣰاۖ فَلَا تَأۡسَ عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿68﴾
বলো -- ''হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা! তোমরা কোনো কিছুর উপরে নও যে পর্যন্ত না তোমরা প্রতিষ্ঠিত রাখো তওরাত ও ইনজীল আর যা তোমাদের কাছে অবতীর্ণ হয়েছে তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে।’’ আর তোমার কাছে তোমার প্রভুর কাছ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা নিশ্চয়ই বাড়িয়ে দেয় তাদের মধ্যের অনেকের অবাধ্যতা ও অবিশ্বাস। সেজন্য দুঃখ করো না অবিশ্বাসী লোকদের জন্য।
إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَٱلَّذِینَ هَادُوا۟ وَٱلصَّـٰبِـُٔونَ وَٱلنَّصَـٰرَىٰ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَعَمِلَ صَـٰلِحࣰا فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَلَا هُمۡ یَحۡزَنُونَ ﴿69﴾
নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে ও যারা ইহুদী মত পোষণ করে, আর সাবেঈন ও খ্রীষ্টান, -- যারাই আল্লাহ্র প্রতি ঈমান এনেছে ও আখেরাতের দিনের প্রতি, আর সৎকর্ম করে, তাদের উপরে তা হলে কোনো ভয় নেই, আর তারা নিজেরা অনুতাপও করবে না।
لَقَدۡ أَخَذۡنَا مِیثَـٰقَ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ وَأَرۡسَلۡنَاۤ إِلَیۡهِمۡ رُسُلࣰاۖ كُلَّمَا جَاۤءَهُمۡ رَسُولُۢ بِمَا لَا تَهۡوَىٰۤ أَنفُسُهُمۡ فَرِیقࣰا كَذَّبُوا۟ وَفَرِیقࣰا یَقۡتُلُونَ ﴿70﴾
আমরা নিশ্চয়ই ইসরাইলের বংশধরদের থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম আর তাদের কাছে পাঠিয়েছিলাম রসূলগণ। যখনই তাদের কাছে কোনো রসূল এসেছেন তা নিয়ে যা তাদের মন চায় না, কিছুসংখ্যককে তারা মিথ্যারোপ করেছে আর কাউকে করতে গেছে হত্যা।
وَحَسِبُوۤا۟ أَلَّا تَكُونَ فِتۡنَةࣱ فَعَمُوا۟ وَصَمُّوا۟ ثُمَّ تَابَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِمۡ ثُمَّ عَمُوا۟ وَصَمُّوا۟ كَثِیرࣱ مِّنۡهُمۡۚ وَٱللَّهُ بَصِیرُۢ بِمَا یَعۡمَلُونَ ﴿71﴾
আর তারা ভেবেছিল যে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে না, সেজন্য তারা হলো অন্ধ আর বধির, এরপর আল্লাহ্ তাদের দিকে ফিরলেন। তারপরেও তাদের অনেকে অন্ধ ও বধির হলো। আর তারা যা করে আল্লাহ্ তার দর্শক।
لَقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤا۟ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡمَسِیحُ ٱبۡنُ مَرۡیَمَۖ وَقَالَ ٱلۡمَسِیحُ یَـٰبَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ ٱعۡبُدُوا۟ ٱللَّهَ رَبِّی وَرَبَّكُمۡۖ إِنَّهُۥ مَن یُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّـٰلِمِینَ مِنۡ أَنصَارࣲ ﴿72﴾
নিশ্চয়ই তারা অবিশ্বাস পোষণ করে থাকে যারা বলে -- ''নিঃসন্দেহ আল্লাহ্, তিনিই মসীহ্, মরিয়মের পুত্র।’’ অথচ মসীহ্ বলেছেন -- ''হে ইসরাইলের বংশধরগণ! আল্লাহ্র এবাদত করো যিনি আমার প্রভু ও তোমাদেরও প্রভু।’’ নিঃসন্দেহ যে আল্লাহ্র সঙ্গে অংশীদার নিরূপণ করে, আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তার জন্য নিষিদ্ধ করেছেন স্বর্গোদ্যান, আর তার আবাসস্থল হচ্ছে আগুন। আর অন্যায়কারীদের জন্য থাকবে না কোনো সাহায্যকারী।
لَّقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِینَ قَالُوۤا۟ إِنَّ ٱللَّهَ ثَالِثُ ثَلَـٰثَةࣲۘ وَمَا مِنۡ إِلَـٰهٍ إِلَّاۤ إِلَـٰهࣱ وَ ٰحِدࣱۚ وَإِن لَّمۡ یَنتَهُوا۟ عَمَّا یَقُولُونَ لَیَمَسَّنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِنۡهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمٌ ﴿73﴾
তারা নিশ্চয়ই অবিশ্বাস পোষণ করে যারা বলে -- ''নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন তিনজনের তৃতীয়জন।’’ বস্তুতঃ একক খোদা ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই। আর যা তারা বলছে তা থেকে যদি তারা না থামে, তবে তাদের মধ্যের যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের পাকড়াবে ব্যথাদায়ক শাস্তি।
أَفَلَا یَتُوبُونَ إِلَى ٱللَّهِ وَیَسۡتَغۡفِرُونَهُۥۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿74﴾
তবে কি তারা আল্লাহ্র দিকে ফিরবে না, আর তারা তাঁর ক্ষমা-প্রার্থনা করবে কি? আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
مَّا ٱلۡمَسِیحُ ٱبۡنُ مَرۡیَمَ إِلَّا رَسُولࣱ قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِهِ ٱلرُّسُلُ وَأُمُّهُۥ صِدِّیقَةࣱۖ كَانَا یَأۡكُلَانِ ٱلطَّعَامَۗ ٱنظُرۡ كَیۡفَ نُبَیِّنُ لَهُمُ ٱلۡـَٔایَـٰتِ ثُمَّ ٱنظُرۡ أَنَّىٰ یُؤۡفَكُونَ ﴿75﴾
মরিয়ম-পুত্র মসীহ্ রসূল বৈ নন। তাঁর পূর্বে রসূলগণ নিশ্চয়ই গত হয়ে গেছেন। আর তাঁর মাতা ছিলেন একজন সত্যপরায়ণা নারী। তাঁরা উভয়ে খাদ্য খেতেন। দেখো, কিভাবে আমরা তাদের জন্য আমার বাণী সুস্পষ্ট করি, তারপর দেখো, কেমন করে তারা ঘুরে যায়।
قُلۡ أَتَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا یَمۡلِكُ لَكُمۡ ضَرࣰّا وَلَا نَفۡعࣰاۚ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلسَّمِیعُ ٱلۡعَلِیمُ ﴿76﴾
বলো -- ''তোমরা আল্লাহ্কে ছেড়ে দিয়ে কি তার এবাদত করো যার কোনো ক্ষমতা নেই তোমাদের জন্য অপকারের, না কোনো উপকারের? আর আল্লাহ্, -- তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।’’
قُلۡ یَـٰۤأَهۡلَ ٱلۡكِتَـٰبِ لَا تَغۡلُوا۟ فِی دِینِكُمۡ غَیۡرَ ٱلۡحَقِّ وَلَا تَتَّبِعُوۤا۟ أَهۡوَاۤءَ قَوۡمࣲ قَدۡ ضَلُّوا۟ مِن قَبۡلُ وَأَضَلُّوا۟ كَثِیرࣰا وَضَلُّوا۟ عَن سَوَاۤءِ ٱلسَّبِیلِ ﴿77﴾
বলো -- ''হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা! তোমাদের ধর্মমতে বাড়াবাড়ি করো না সত্য কারণ ছাড়া, আর লোকদের হীন-কামনার অনুবর্তী হয়ো না, -- যারা ইতিপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছিল আর বহুজনকে করেছিল পথহারা, আর বিপথে গিয়েছিল সরল পথ থেকে।
لُعِنَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِنۢ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ عَلَىٰ لِسَانِ دَاوُۥدَ وَعِیسَى ٱبۡنِ مَرۡیَمَۚ ذَ ٰلِكَ بِمَا عَصَوا۟ وَّكَانُوا۟ یَعۡتَدُونَ ﴿78﴾
ইসরাইলের বংশধরদের মধ্যে যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল তারা অভিশপ্ত হয়েছিল দাউদ ও মরিয়ম-পুত্র ঈসার জিহবার দ্বারা। এটি হয়েছিল, কেননা তারা অবাধ্য হয়েছিল আর করতো সীমালঙ্ঘন।
كَانُوا۟ لَا یَتَنَاهَوۡنَ عَن مُّنكَرࣲ فَعَلُوهُۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُوا۟ یَفۡعَلُونَ ﴿79﴾
তারা পরস্পরকে নিষেধ করতো না কুকর্ম সন্বন্ধে যা তারা করতো। নিশ্চয়ই মন্দ যা তারা করে চলতো।
تَرَىٰ كَثِیرࣰا مِّنۡهُمۡ یَتَوَلَّوۡنَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ۚ لَبِئۡسَ مَا قَدَّمَتۡ لَهُمۡ أَنفُسُهُمۡ أَن سَخِطَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِمۡ وَفِی ٱلۡعَذَابِ هُمۡ خَـٰلِدُونَ ﴿80﴾
তুমি দেখতে পাবে তাদের মধ্যের অনেকে বন্ধু বানিয়েছে যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের। নিশ্চয়ই মন্দ যা তাদের জন্য তাদের আত্মা আগবাড়িয়েছে যার দরুন আল্লাহ্ তাদের উপরে হয়েছেন অসন্তষ্ট, আর শাস্তির মধ্যেই তারা কাটাবে দীর্ঘকাল।
وَلَوۡ كَانُوا۟ یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلنَّبِیِّ وَمَاۤ أُنزِلَ إِلَیۡهِ مَا ٱتَّخَذُوهُمۡ أَوۡلِیَاۤءَ وَلَـٰكِنَّ كَثِیرࣰا مِّنۡهُمۡ فَـٰسِقُونَ ﴿81﴾
আর যদি তারা ঈমান এনে থাকতো আল্লাহ্তে ও নবীর প্রতি, আর যা তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তবে তারা ওদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করতো না। কিন্তু তাদের মধ্যের অনেকেই দুষ্কৃতিপরায়ণ।
۞ لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ ٱلنَّاسِ عَدَ ٰوَةࣰ لِّلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱلۡیَهُودَ وَٱلَّذِینَ أَشۡرَكُوا۟ۖ وَلَتَجِدَنَّ أَقۡرَبَهُم مَّوَدَّةࣰ لِّلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱلَّذِینَ قَالُوۤا۟ إِنَّا نَصَـٰرَىٰۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّ مِنۡهُمۡ قِسِّیسِینَ وَرُهۡبَانࣰا وَأَنَّهُمۡ لَا یَسۡتَكۡبِرُونَ ﴿82﴾
তুমি নিশ্চয়ই দেখতে পাবে যে যারা ঈমান এনেছে তাদের সাথে শত্রুতায় সব চাইতে কঠোর লোক হচ্ছে ইহুদীরা ও যারা শরীক করে, আর নিশ্চয়ই তুমি আবিস্কার করবে যে যারা ঈমান এনেছে তাদের সাথে বন্ধুত্বে সব চাইতে তাদের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ওরা যারা বলে -- ''নিঃসন্দেহ আমরা খ্রীষ্টান।’’ এটি এই জন্য যে তাদের মধ্যে রয়েছে পাদরীরা ও সাধুসন্ন্যাসীরা, আর যেহেতু তারা অহঙ্কার করে না।
وَإِذَا سَمِعُوا۟ مَاۤ أُنزِلَ إِلَى ٱلرَّسُولِ تَرَىٰۤ أَعۡیُنَهُمۡ تَفِیضُ مِنَ ٱلدَّمۡعِ مِمَّا عَرَفُوا۟ مِنَ ٱلۡحَقِّۖ یَقُولُونَ رَبَّنَاۤ ءَامَنَّا فَٱكۡتُبۡنَا مَعَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ﴿83﴾
আর যখন তারা শোনে যা রসূলের কাছে নাযিল হয়েছে, তুমি দেখবে তাদের চোখ অশ্রুপ্লাবিত হয়েছে সত্যতা তারা উপলব্ধি করেছিল বলে। তারা বলে -- ''আমাদের প্রভু! আমরা ঈমান এনেছি, তাই আমাদের লিখে রাখো সাক্ষ্যদাতাদের সঙ্গে।
وَمَا لَنَا لَا نُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَمَا جَاۤءَنَا مِنَ ٱلۡحَقِّ وَنَطۡمَعُ أَن یُدۡخِلَنَا رَبُّنَا مَعَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿84﴾
''আর কি কারণ আমাদের থাকতে পারে যার জন্য আমরা বিশ্বাস করবো না আল্লাহ্তে আর যে সত্য আমাদের কাছে এসেছে তাতে, যখন আমরা আকুল আকাঙ্খা করি যে আমাদের প্রভু যেন সৎকর্মশীল লোকদের সঙ্গে আমাদের অন্তর্ভুক্ত করেন?’’
فَأَثَـٰبَهُمُ ٱللَّهُ بِمَا قَالُوا۟ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ وَذَ ٰلِكَ جَزَاۤءُ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿85﴾
কাজেই আল্লাহ্ তাদের পুরস্কার দিয়েছিলেন যা তারা বলেছিল সেজন্য, -- বাগানসমূহ যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, তাতে তারা থাকবে চিরকাল। আর এটি হচ্ছে সৎকর্মীদের পুরস্কার।
وَٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔایَـٰتِنَاۤ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلۡجَحِیمِ ﴿86﴾
আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে ও আমাদের নির্দেশসমূহে মিথ্যারোপ করে, তারা হচ্ছে জ্বলন্ত আগুনের বাসিন্দা।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تُحَرِّمُوا۟ طَیِّبَـٰتِ مَاۤ أَحَلَّ ٱللَّهُ لَكُمۡ وَلَا تَعۡتَدُوۤا۟ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُحِبُّ ٱلۡمُعۡتَدِینَ ﴿87﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! ভালো বিষয়গুলো যা আল্লাহ্ তোমাদের জন্য বৈধ করেছেন সে-সব তোমরা নিষিদ্ধ করো না, আবার বাড়াবাড়িও করো না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভালোবাসেন না সীমালঙ্ঘনকারীদের।
وَكُلُوا۟ مِمَّا رَزَقَكُمُ ٱللَّهُ حَلَـٰلࣰا طَیِّبࣰاۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ٱلَّذِیۤ أَنتُم بِهِۦ مُؤۡمِنُونَ ﴿88﴾
আর আল্লাহ্ তোমাদের যা হালাল ও ভালো রিযেক দিয়েছেন তা থেকে ভোগ করো আর আল্লাহ্কে ভয়-শ্রদ্ধা করো, -- যাঁর প্রতি তোমরা মুমিন হয়েছ।
لَا یُؤَاخِذُكُمُ ٱللَّهُ بِٱللَّغۡوِ فِیۤ أَیۡمَـٰنِكُمۡ وَلَـٰكِن یُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ ٱلۡأَیۡمَـٰنَۖ فَكَفَّـٰرَتُهُۥۤ إِطۡعَامُ عَشَرَةِ مَسَـٰكِینَ مِنۡ أَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُونَ أَهۡلِیكُمۡ أَوۡ كِسۡوَتُهُمۡ أَوۡ تَحۡرِیرُ رَقَبَةࣲۖ فَمَن لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلَـٰثَةِ أَیَّامࣲۚ ذَ ٰلِكَ كَفَّـٰرَةُ أَیۡمَـٰنِكُمۡ إِذَا حَلَفۡتُمۡۚ وَٱحۡفَظُوۤا۟ أَیۡمَـٰنَكُمۡۚ كَذَ ٰلِكَ یُبَیِّنُ ٱللَّهُ لَكُمۡ ءَایَـٰتِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ﴿89﴾
আল্লাহ্ তোমাদের পাকড়াবেন না তোমাদের শপথগুলোর মধ্যে যা খেলো, কিন্তু তিনি তোমাদের পাকড়াও করবেন সেইসব শপথের জন্য যা তোমরা সেচ্ছাকৃতভাবে করো, তাই এর প্রায়শ্চিত্ত হচ্ছে দশজন গরীবকে খাওয়ানো, -- তোমাদের পরিজনকে তোমরা যেভাবে খাওয়াও সেইভাবে সাধারণ ধরনে, অথবা তাদের পরানো, অথবা একজন দাসকে মুক্ত করা। কিন্তু যে পায় না তবে তিন দিন রোযা। এ হচ্ছে তোমাদের শপথের প্রায়শ্চিত্ত যখন তোমরা হলফ করো। আর তোমাদের শপথ হেফাজতে রাখো। এইভাবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য তাঁর নির্দেশাবলী সুস্পষ্ট করেছেন যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِنَّمَا ٱلۡخَمۡرُ وَٱلۡمَیۡسِرُ وَٱلۡأَنصَابُ وَٱلۡأَزۡلَـٰمُ رِجۡسࣱ مِّنۡ عَمَلِ ٱلشَّیۡطَـٰنِ فَٱجۡتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿90﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! নিঃসন্দেহ মাদকদ্রব্য ও জুয়া, আর প্রস্তর বেদী বসানো ও তীরের লটারি খেলা -- নিশ্চয়ই হচ্ছে অপবিত্র, শয়তানের কাজের অন্তর্ভুক্ত, কাজেই এ-সব এড়িয়ে চলো, যেন তোমরা সফলকাম হতে পারো।
إِنَّمَا یُرِیدُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ أَن یُوقِعَ بَیۡنَكُمُ ٱلۡعَدَ ٰوَةَ وَٱلۡبَغۡضَاۤءَ فِی ٱلۡخَمۡرِ وَٱلۡمَیۡسِرِ وَیَصُدَّكُمۡ عَن ذِكۡرِ ٱللَّهِ وَعَنِ ٱلصَّلَوٰةِۖ فَهَلۡ أَنتُم مُّنتَهُونَ ﴿91﴾
নিঃসন্দেহ শয়তান কেবলই চায় যে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ জাগরিত হোক মাদকদ্রব্য ও জুয়ার মাধ্যমে, আর তোমাদের ফিরিয়ে রাখবে আল্লাহ্র গুণগান থেকে ও নামায থেকে। তোমরা কি তাহলে পরিহৃত থাকবে?
وَأَطِیعُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِیعُوا۟ ٱلرَّسُولَ وَٱحۡذَرُوا۟ۚ فَإِن تَوَلَّیۡتُمۡ فَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّمَا عَلَىٰ رَسُولِنَا ٱلۡبَلَـٰغُ ٱلۡمُبِینُ ﴿92﴾
অতএব আল্লাহ্কে অনুসরণ করো, আর রসূলের অনুগমন করো, আর সাবধান হও, কিন্তু যদি তোমরা ফিরে যাও, তাহলে জেনে রেখো -- নিঃসন্দেহ আমাদের রসূলের উপরে হচ্ছে মাত্র স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।
لَیۡسَ عَلَى ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ جُنَاحࣱ فِیمَا طَعِمُوۤا۟ إِذَا مَا ٱتَّقَوا۟ وَّءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ ثُمَّ ٱتَّقَوا۟ وَّءَامَنُوا۟ ثُمَّ ٱتَّقَوا۟ وَّأَحۡسَنُوا۟ۚ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿93﴾
যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করে যাচ্ছে তাদের উপরে কোনো অপরাধ হবে না যা তারা খেয়েছে সেজন্য, যখন তারা ভয়-শ্রদ্ধা করে ও ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, পুনরায় ভয়ভক্তি করে ও ঈমান আনে, আবার তারা ভয়শ্রদ্ধা করে ও ভালো করে। আর আল্লাহ্ ভালোবাসেন সৎকর্মশীলদের।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَیَبۡلُوَنَّكُمُ ٱللَّهُ بِشَیۡءࣲ مِّنَ ٱلصَّیۡدِ تَنَالُهُۥۤ أَیۡدِیكُمۡ وَرِمَاحُكُمۡ لِیَعۡلَمَ ٱللَّهُ مَن یَخَافُهُۥ بِٱلۡغَیۡبِۚ فَمَنِ ٱعۡتَدَىٰ بَعۡدَ ذَ ٰلِكَ فَلَهُۥ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿94﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তোমাদের পরীক্ষা করবেন শিকারের কিছু ব্যাপারে যা তোমাদের হাত ও তোমাদের বর্শা নাগাল পায়, যেন আল্লাহ্ যাচাই করতে পারেন কে তাঁকে ভয় করে অগোচরে। কাজেই যে কেউ এর পরেও সীমালঙ্ঘন করে তার জন্য ব্যথাদায়ক শাস্তি।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَقۡتُلُوا۟ ٱلصَّیۡدَ وَأَنتُمۡ حُرُمࣱۚ وَمَن قَتَلَهُۥ مِنكُم مُّتَعَمِّدࣰا فَجَزَاۤءࣱ مِّثۡلُ مَا قَتَلَ مِنَ ٱلنَّعَمِ یَحۡكُمُ بِهِۦ ذَوَا عَدۡلࣲ مِّنكُمۡ هَدۡیَۢا بَـٰلِغَ ٱلۡكَعۡبَةِ أَوۡ كَفَّـٰرَةࣱ طَعَامُ مَسَـٰكِینَ أَوۡ عَدۡلُ ذَ ٰلِكَ صِیَامࣰا لِّیَذُوقَ وَبَالَ أَمۡرِهِۦۗ عَفَا ٱللَّهُ عَمَّا سَلَفَۚ وَمَنۡ عَادَ فَیَنتَقِمُ ٱللَّهُ مِنۡهُۚ وَٱللَّهُ عَزِیزࣱ ذُو ٱنتِقَامٍ ﴿95﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! শিকার হত্যা করো না যখন তোমরা হারামে থাকো। আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ ইচ্ছা করে তা হত্যা ক’রে ক্ষতিপূরণ তবে হচ্ছে সে যা হত্যা করেছে তার অনুরূপ গবাদি-পশু থেকে যা ধার্য করে দেবে তোমাদের মধ্যের দুইজন ন্যায়বান লোক, সে কুরবানি পৌঁছানো চাই কা'বাতে, অথবা প্রায়শ্চিত্ত হচ্ছে গরীবকে খাওয়ানো, অথবা তার সমতুল্য রোযা রাখা, -- যেন সে তার কাজের দন্ড ভোগ করে। আল্লাহ্ মাফ করে দেন যা হয়ে গেছে। কিন্তু যে কেউ পুনরাবর্তন করে, আল্লাহ্ সেজন্য প্রতিফল দেবেন। আর আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, প্রতিফল দানে সক্ষম।
أُحِلَّ لَكُمۡ صَیۡدُ ٱلۡبَحۡرِ وَطَعَامُهُۥ مَتَـٰعࣰا لَّكُمۡ وَلِلسَّیَّارَةِۖ وَحُرِّمَ عَلَیۡكُمۡ صَیۡدُ ٱلۡبَرِّ مَا دُمۡتُمۡ حُرُمࣰاۗ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ٱلَّذِیۤ إِلَیۡهِ تُحۡشَرُونَ ﴿96﴾
তোমাদের জন্য বৈধ জলের শিকার আর তার খাদ্য তোমাদের জন্য ও পর্যটকদের জন্য উপকরণ, আর তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ ডাঙায় শিকার যে সময়ে তোমরা হারামে থাকো। আর ভয়শ্রদ্ধা করো আল্লাহ্কে, যাঁর কাছে তোমাদের একত্রিত করা হচ্ছে।
۞ جَعَلَ ٱللَّهُ ٱلۡكَعۡبَةَ ٱلۡبَیۡتَ ٱلۡحَرَامَ قِیَـٰمࣰا لِّلنَّاسِ وَٱلشَّهۡرَ ٱلۡحَرَامَ وَٱلۡهَدۡیَ وَٱلۡقَلَـٰۤىِٕدَۚ ذَ ٰلِكَ لِتَعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ یَعۡلَمُ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَمَا فِی ٱلۡأَرۡضِ وَأَنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمٌ ﴿97﴾
আল্লাহ্ পবিত্র গৃহ কা'বাকে বানিয়েছেন মানুষের জন্য এক অবলন্বন, আর পবিত্র মাস, আর উৎসর্গকৃত পশুদের, আর মালা- পরানো উটদের। এ-সব এই জন্য যে তোমরা যেন জানতে পারো -- আল্লাহ্ জানেন যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলে ও যা-কিছু আছে পৃথিবীতে, আর আল্লাহ্ সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।
ٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعِقَابِ وَأَنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿98﴾
তোমরা জেনে রেখো যে আল্লাহ্ প্রতিফল দানে কঠোর, আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
مَّا عَلَى ٱلرَّسُولِ إِلَّا ٱلۡبَلَـٰغُۗ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ مَا تُبۡدُونَ وَمَا تَكۡتُمُونَ ﴿99﴾
রসূলজনের উপরে অন্য দায়িত্ব নেই পৌঁছে দেয়া ছাড়া। আর আল্লাহ্ জানেন যা তোমরা প্রকাশ করো আর যা লুকিয়ে রাখো।
قُل لَّا یَسۡتَوِی ٱلۡخَبِیثُ وَٱلطَّیِّبُ وَلَوۡ أَعۡجَبَكَ كَثۡرَةُ ٱلۡخَبِیثِۚ فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ یَـٰۤأُو۟لِی ٱلۡأَلۡبَـٰبِ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴿100﴾
বলো -- ''মন্দ আর ভালো সমতুল্য নয়’’, যদিও মন্দের প্রাচুর্য তোমাকে তাজ্জব বানিয়ে দেয়। কাজেই আল্লাহ্কে ভয়শ্রদ্ধা করো, হে বিজ্ঞ ব্যক্তিগণ! যেন তোমরা সফলকাম হতে পারো।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَسۡـَٔلُوا۟ عَنۡ أَشۡیَاۤءَ إِن تُبۡدَ لَكُمۡ تَسُؤۡكُمۡ وَإِن تَسۡـَٔلُوا۟ عَنۡهَا حِینَ یُنَزَّلُ ٱلۡقُرۡءَانُ تُبۡدَ لَكُمۡ عَفَا ٱللَّهُ عَنۡهَاۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌ حَلِیمࣱ ﴿101﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! সে-সব বিষয় সন্বন্ধে প্রশ্ন করো না যা তোমাদের কাছে ব্যক্ত করলে তোমাদের অসুবিধা হতে পারে। আর যদি তোমরা সে-সব বিষয়ে প্রশ্ন করো যে সময়ে কুরআন অবতীর্ণ হচ্ছে তবে তোমাদের জন্য ব্যক্ত করা হবে। আল্লাহ্ এটি থেকে মাফ করেছেন, কেননা আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অতি অমায়িক।
قَدۡ سَأَلَهَا قَوۡمࣱ مِّن قَبۡلِكُمۡ ثُمَّ أَصۡبَحُوا۟ بِهَا كَـٰفِرِینَ ﴿102﴾
তোমাদের পূর্বে একটি দল এ-ধরনের প্রশ্ন করতো, তারপর সেইসব কারণে পরমুহূর্তে তারা হলো অবিশ্বাসী।
مَا جَعَلَ ٱللَّهُ مِنۢ بَحِیرَةࣲ وَلَا سَاۤىِٕبَةࣲ وَلَا وَصِیلَةࣲ وَلَا حَامࣲ وَلَـٰكِنَّ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ یَفۡتَرُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَۖ وَأَكۡثَرُهُمۡ لَا یَعۡقِلُونَ ﴿103﴾
আল্লাহ্ তৈরি করেন নি কোনো বাহীরাহ্, বা সা’ইবাহ্, বা ওস্বীলাহ্, বা হামি, কিন্তু যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে এই মিথ্যা রচনা করেছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই বুঝতে পারে না।
وَإِذَا قِیلَ لَهُمۡ تَعَالَوۡا۟ إِلَىٰ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَإِلَى ٱلرَّسُولِ قَالُوا۟ حَسۡبُنَا مَا وَجَدۡنَا عَلَیۡهِ ءَابَاۤءَنَاۤۚ أَوَلَوۡ كَانَ ءَابَاۤؤُهُمۡ لَا یَعۡلَمُونَ شَیۡـࣰٔا وَلَا یَهۡتَدُونَ ﴿104﴾
আর যখন তাদের বলা হয় -- ''আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তার দিকে আর রসূলের দিকে এস’’, তারা বলে -- ''আমাদের জন্য এ-ই যথেষ্ট যার উপরে আমাদের পিতৃপুরুষদের দেখেছি।’’ কী! যদিও তাদের পিতৃপুরুষরা কিছুই জানতো না আর তারা হেদায়তও গ্রহণ করে নি।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ عَلَیۡكُمۡ أَنفُسَكُمۡۖ لَا یَضُرُّكُم مَّن ضَلَّ إِذَا ٱهۡتَدَیۡتُمۡۚ إِلَى ٱللَّهِ مَرۡجِعُكُمۡ جَمِیعࣰا فَیُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ﴿105﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের উপরে ভার রয়েছে তোমাদের জীবনের, যে পথভ্রষ্ট হয়েছে সে তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না যদি তোমরা পথনির্দেশ মেনে চল। আল্লাহ্র কাছেই তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন, তখন তিনি তোমাদের জানাবেন কী তোমরা করতে।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ شَهَـٰدَةُ بَیۡنِكُمۡ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ ٱلۡمَوۡتُ حِینَ ٱلۡوَصِیَّةِ ٱثۡنَانِ ذَوَا عَدۡلࣲ مِّنكُمۡ أَوۡ ءَاخَرَانِ مِنۡ غَیۡرِكُمۡ إِنۡ أَنتُمۡ ضَرَبۡتُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ فَأَصَـٰبَتۡكُم مُّصِیبَةُ ٱلۡمَوۡتِۚ تَحۡبِسُونَهُمَا مِنۢ بَعۡدِ ٱلصَّلَوٰةِ فَیُقۡسِمَانِ بِٱللَّهِ إِنِ ٱرۡتَبۡتُمۡ لَا نَشۡتَرِی بِهِۦ ثَمَنࣰا وَلَوۡ كَانَ ذَا قُرۡبَىٰ وَلَا نَكۡتُمُ شَهَـٰدَةَ ٱللَّهِ إِنَّاۤ إِذࣰا لَّمِنَ ٱلۡـَٔاثِمِینَ ﴿106﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! যখন মৃত্যু তোমাদের কারো কাছে হাজির হয় তখন তোমাদের মধ্যে সাক্ষী ডাকো ওছিয়ৎ করবার সময়ে, -- দুইজন ন্যায়পরায়ণ লোক তোমাদের মধ্যে থেকে, অথবা অপর দুইজন তোমাদের বাইরের থেকে -- যদি তোমরা দেশ- ভ্রমণে থাকো আর তোমাদের উপরে মৃত্যুর বিভীষিকা ঘটে। এ দু’জনকে তোমরা ধরে রাখবে নামাযের পরে, আর যদি তোমরা সন্দেহ করো তবে তারা উভয়ে আল্লাহ্র নামে শপথ করুক -- ''আমরা এটি বিক্রি করবো না যে কোনো দামে, যদিও বা নিকট-আত্মীয় হয়, আর আমরা সাক্ষ্য লুকাবো না, কেননা তাহলে আমরা নিশ্চয়ই পাপীদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’’
فَإِنۡ عُثِرَ عَلَىٰۤ أَنَّهُمَا ٱسۡتَحَقَّاۤ إِثۡمࣰا فَـَٔاخَرَانِ یَقُومَانِ مَقَامَهُمَا مِنَ ٱلَّذِینَ ٱسۡتَحَقَّ عَلَیۡهِمُ ٱلۡأَوۡلَیَـٰنِ فَیُقۡسِمَانِ بِٱللَّهِ لَشَهَـٰدَتُنَاۤ أَحَقُّ مِن شَهَـٰدَتِهِمَا وَمَا ٱعۡتَدَیۡنَاۤ إِنَّاۤ إِذࣰا لَّمِنَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿107﴾
পক্ষান্তরে যদি আবিস্কার করা হয় যে তাদের দু’জনই পাপের যোগ্যতা লাভ করেছে তবে তাদের স্থলে দাঁড়াক অপর দুইজন তাদের মধ্যে থেকে যাদের দাবি উল্টানো হয়েছে প্রথম দুইজনের দ্বারা, তখন তারা আল্লাহ্র নামে কসম খাক -- ''আমাদের দু’জনের সাক্ষ্য ঐ দুইজনের সাক্ষ্যের চাইতে অধিকতর সত্য, আর আমরা সীমা লঙ্ঘন করি নি, কেননা তবে নিঃসন্দেহ আমরা অন্যায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’’
ذَ ٰلِكَ أَدۡنَىٰۤ أَن یَأۡتُوا۟ بِٱلشَّهَـٰدَةِ عَلَىٰ وَجۡهِهَاۤ أَوۡ یَخَافُوۤا۟ أَن تُرَدَّ أَیۡمَـٰنُۢ بَعۡدَ أَیۡمَـٰنِهِمۡۗ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱسۡمَعُوا۟ۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿108﴾
এইভাবে এটি অধিক সম্ভবপর যে তারা সাক্ষ্য দেবে তাদের মুখের উপর, অথবা তারা আশংকা করবে যে অন্য শপথ তাদর শপথকে পরবর্তীকালে বাতিল ক’রে দেবে। আর আল্লাহ্কে ভয়ভক্তি করো ও শোন। আর আল্লাহ্ হেদায়ত করেন না অবাধ্য লোকদের।
۞ یَوۡمَ یَجۡمَعُ ٱللَّهُ ٱلرُّسُلَ فَیَقُولُ مَاذَاۤ أُجِبۡتُمۡۖ قَالُوا۟ لَا عِلۡمَ لَنَاۤۖ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّـٰمُ ٱلۡغُیُوبِ ﴿109﴾
যেদিন আল্লাহ্ রসূলগণকে একত্রিত করবেন, তারপর বলবেন -- ''তোমাদের কী জবাব দেয়া হয়েছিল?’’ তাঁরা বলবেন -- ''আমাদের কিছু জানা নেই, নিঃসন্দেহ তুমিই অদৃশ্য সন্বন্ধে পরিজ্ঞাত।’’
إِذۡ قَالَ ٱللَّهُ یَـٰعِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ ٱذۡكُرۡ نِعۡمَتِی عَلَیۡكَ وَعَلَىٰ وَ ٰلِدَتِكَ إِذۡ أَیَّدتُّكَ بِرُوحِ ٱلۡقُدُسِ تُكَلِّمُ ٱلنَّاسَ فِی ٱلۡمَهۡدِ وَكَهۡلࣰاۖ وَإِذۡ عَلَّمۡتُكَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِیلَۖ وَإِذۡ تَخۡلُقُ مِنَ ٱلطِّینِ كَهَیۡـَٔةِ ٱلطَّیۡرِ بِإِذۡنِی فَتَنفُخُ فِیهَا فَتَكُونُ طَیۡرَۢا بِإِذۡنِیۖ وَتُبۡرِئُ ٱلۡأَكۡمَهَ وَٱلۡأَبۡرَصَ بِإِذۡنِیۖ وَإِذۡ تُخۡرِجُ ٱلۡمَوۡتَىٰ بِإِذۡنِیۖ وَإِذۡ كَفَفۡتُ بَنِیۤ إِسۡرَ ٰۤءِیلَ عَنكَ إِذۡ جِئۡتَهُم بِٱلۡبَیِّنَـٰتِ فَقَالَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِنۡهُمۡ إِنۡ هَـٰذَاۤ إِلَّا سِحۡرࣱ مُّبِینࣱ ﴿110﴾
তখন আল্লাহ্ বলবেন -- ''হে মরিয়ম-পুত্র ঈসা! তোমার প্রতি ও তোমার মাতার প্রতি আমার অনুগ্রহ স্মরণ করো। স্মরণ করো! কেমন ক’রে তোমাকে আমি 'রূহুল ক্কুদুস’ দিয়ে বলীয়ান করেছিলাম, তুমি লোকদের সঙ্গে কথা বলেছিলে দোলনায় থাকাকালে ও বার্ধক্যকালে, আর স্মরণ করো! কেমন ক’রে তোমাকে শিখিয়েছিলাম কিতাব ও জ্ঞান-বিজ্ঞান, আর তওরাত ও ইনজীল, আর স্মরণ করো! কেমন করে তুমি মাটি দিয়ে তৈরি করতে পাখির মতো মূর্তি আমার অনুমতিক্রমে, তারপর তুমি তাতে ফুৎকার দিতে, তখন তা পাখি হয়ে যেত আমার অনুমতিক্রমে, আর তুমি আরোগ্য করতে জন্মান্ধকে ও কুষ্ঠরোগীকে আমার অনুমতিক্রমে, আর স্মরণ করো! কেমন ক’রে তুমি মৃতকে বের করতে আমার অনুমতিক্রমে, আর স্মরণ করো! কেমন ক’রে আমি ইসরাইলবংশীয় লোকদের নিবৃত্ত রেখেছিলাম তোমা থেকে যখন তুমি তাদের কাছে এসেছিলে স্পস্প্রমাণাবলী নিয়ে।’’ কিন্তু তাদের মধ্যের যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল তারা বলেছিল -- ''এ স্পষ্ট জাদু ছাড়া আর কিছুই নয়।’’
وَإِذۡ أَوۡحَیۡتُ إِلَى ٱلۡحَوَارِیِّـۧنَ أَنۡ ءَامِنُوا۟ بِی وَبِرَسُولِی قَالُوۤا۟ ءَامَنَّا وَٱشۡهَدۡ بِأَنَّنَا مُسۡلِمُونَ ﴿111﴾
আর স্মরণ করো! আমি হাওয়ারিদের কাছে প্রত্যাদেশ দিয়েছিলাম এই বলে -- ''তোমরা আমার প্রতি ও আমার রসূলের প্রতি ঈমান আনো।’’ তারা বলেছিল -- ''আমরা ঈমান আনলাম, আর তুমি সাক্ষী থেকো যে আমরা নিশ্চয়ই আত্মসমর্পিত।
إِذۡ قَالَ ٱلۡحَوَارِیُّونَ یَـٰعِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ هَلۡ یَسۡتَطِیعُ رَبُّكَ أَن یُنَزِّلَ عَلَیۡنَا مَاۤىِٕدَةࣰ مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِۖ قَالَ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿112﴾
স্মরণ করো! হাওয়ারিগণ বলেছিল -- ''হে মরিয়ম-পুত্র ঈসা! তোমার প্রভু কি আমাদের জন্য আকাশ থেকে খাদ্য-পরিবেশিত টেবিল পাঠাতে রাজি হবেন?’’ তিনি বলেছিলেন -- ''আল্লাহ্কে ভয়-ভক্তি করো যদি তোমরা মুমিন হও।’’
قَالُوا۟ نُرِیدُ أَن نَّأۡكُلَ مِنۡهَا وَتَطۡمَىِٕنَّ قُلُوبُنَا وَنَعۡلَمَ أَن قَدۡ صَدَقۡتَنَا وَنَكُونَ عَلَیۡهَا مِنَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ﴿113﴾
তারা বলেছিল -- ''আমরা চাই যে আমরা যেন তা থেকে আহার করি, আর আমাদের চিত্ত যেন পরিতৃপ্ত হয়, আর যেন আমরা জানতে পারি যে তুমি আমাদের কাছে হককথাই বলেছিলে, আর আমরা যেন সে-বিষয়ে সাক্ষীদের মধ্যেকার হতে পারি।’’
قَالَ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَ ٱللَّهُمَّ رَبَّنَاۤ أَنزِلۡ عَلَیۡنَا مَاۤىِٕدَةࣰ مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ تَكُونُ لَنَا عِیدࣰا لِّأَوَّلِنَا وَءَاخِرِنَا وَءَایَةࣰ مِّنكَۖ وَٱرۡزُقۡنَا وَأَنتَ خَیۡرُ ٱلرَّ ٰزِقِینَ ﴿114﴾
মরিয়ম-পুত্র ঈসা বললেন -- ''হে আল্লাহ্! আমাদের প্রভু! আমাদের জন্য আকাশ থেকে খাদ্য-পরিপূর্ণ খাঞ্চা প্রেরণ করো, যা হবে আমাদের জন্য এক ঈদ, -- আমাদের অগ্রগামীদের জন্য ও পশ্চাদগামীদের জন্য, আর তোমার কাছ থেকে একটি নিদর্শন, আর আমাদের রিযেক দান করো, কেননা তুমিই রিযেকদাতাদের সর্বোত্তম।’’
قَالَ ٱللَّهُ إِنِّی مُنَزِّلُهَا عَلَیۡكُمۡۖ فَمَن یَكۡفُرۡ بَعۡدُ مِنكُمۡ فَإِنِّیۤ أُعَذِّبُهُۥ عَذَابࣰا لَّاۤ أُعَذِّبُهُۥۤ أَحَدࣰا مِّنَ ٱلۡعَـٰلَمِینَ ﴿115﴾
আল্লাহ্ বললেন -- ''আমি অবশ্যই তা তোমাদের জন্য পাঠাব, কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেউ এরপরেও অবিশ্বাস পোষণ করবে আমি তবে তাকে নিশ্চয়ই এমন শাস্তিতে শাস্তি দেবো যেমন শাস্তি আমি বিশ্বজগতের অপর কাউকেও দেবো না।’’
وَإِذۡ قَالَ ٱللَّهُ یَـٰعِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ ءَأَنتَ قُلۡتَ لِلنَّاسِ ٱتَّخِذُونِی وَأُمِّیَ إِلَـٰهَیۡنِ مِن دُونِ ٱللَّهِۖ قَالَ سُبۡحَـٰنَكَ مَا یَكُونُ لِیۤ أَنۡ أَقُولَ مَا لَیۡسَ لِی بِحَقٍّۚ إِن كُنتُ قُلۡتُهُۥ فَقَدۡ عَلِمۡتَهُۥۚ تَعۡلَمُ مَا فِی نَفۡسِی وَلَاۤ أَعۡلَمُ مَا فِی نَفۡسِكَۚ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّـٰمُ ٱلۡغُیُوبِ ﴿116﴾
আর দেখো! আল্লাহ্ বলবেন -- ''হে মরিয়ম-পুত্র ঈসা! তুমি কি লোকদের বলেছিলে -- “আমাকে ও আমার মাকে আল্লাহ্ ছাড়া দুইজন উপাস্যরূপে গ্রহণ করো?’’ তিনি বলবেন -- ''তোমারই সব মহিমা! এটি আমার পক্ষে সম্ভবপর নয় যে আমি তা বলবো যাতে আমার কোনো অধিকার নেই। যদি আমি তা বলতাম তবে তুমি তা নিশ্চয়ই জানতে। আমার অন্তরে যা আছে তা তুমি জানো, আর আমি জানি না কি আছে তোমার অন্তরে। নিঃসন্দেহ কেবল তুমিই অদৃশ্য সন্বন্ধে পরিজ্ঞাত।
مَا قُلۡتُ لَهُمۡ إِلَّا مَاۤ أَمَرۡتَنِی بِهِۦۤ أَنِ ٱعۡبُدُوا۟ ٱللَّهَ رَبِّی وَرَبَّكُمۡۚ وَكُنتُ عَلَیۡهِمۡ شَهِیدࣰا مَّا دُمۡتُ فِیهِمۡۖ فَلَمَّا تَوَفَّیۡتَنِی كُنتَ أَنتَ ٱلرَّقِیبَ عَلَیۡهِمۡۚ وَأَنتَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ شَهِیدٌ ﴿117﴾
''আমি তাদের বলি নি তুমি যা আমাকে আদেশ করেছ তা ছাড়া অন্য কিছু, যথা -- 'তোমরা আল্লাহ্র উপাসনা করো যিনি আমার প্রভু ও তোমাদের প্রভু’, আর আমি তাদের সাক্ষী ছিলাম যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম, কিন্তু যখন তুমি আমার মৃত্যু ঘটালে তখন তুমিই ছিলে তাদের উপরে প্রহরী। আর তুমিই হচ্ছো সব-কিছুরই সাক্ষী।
إِن تُعَذِّبۡهُمۡ فَإِنَّهُمۡ عِبَادُكَۖ وَإِن تَغۡفِرۡ لَهُمۡ فَإِنَّكَ أَنتَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ ﴿118﴾
''তুমি যদি তাদের শাস্তি দাও তবে তারা তো তোমারই দাস, আর যদি তাদের তুমি পরিত্রাণ করো তবে তুমিই তো মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।’’
قَالَ ٱللَّهُ هَـٰذَا یَوۡمُ یَنفَعُ ٱلصَّـٰدِقِینَ صِدۡقُهُمۡۚ لَهُمۡ جَنَّـٰتࣱ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۖ رَّضِیَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُوا۟ عَنۡهُۚ ذَ ٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿119﴾
আল্লাহ্ বলবেন -- ''এই দিনে সত্যনিষ্ঠদের তাদের সত্যপরায়ণতা উপকৃত করবে। তাদের জন্য রয়েছে স্বর্গোদ্যানসমূহ যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, তারা সেখানে থাকবে চিরকাল। আল্লাহ্ তাদের উপরে সুপ্রসন্ন আর তারা তাঁতে চির-সন্তষ্ট -- এটি হচ্ছে এক বিরাট সাফল্য।
لِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا فِیهِنَّۚ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرُۢ ﴿120﴾
মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব ও তাদের মধ্যে যা-কিছু আছে সে-সবই আল্লাহ্র। আর তিনি হচ্ছেন সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।