Settings
Surah Repentance [At-Taubah] in Bengali
بَرَاۤءَةࣱ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۤ إِلَى ٱلَّذِینَ عَـٰهَدتُّم مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ﴿1﴾
এক অব্যাহতি আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের তরফ থেকে সেইসব বহুখোদাবাদীদের প্রতি যাদের সঙ্গে তোমরা সন্ধি করেছিলে।
فَسِیحُوا۟ فِی ٱلۡأَرۡضِ أَرۡبَعَةَ أَشۡهُرࣲ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّكُمۡ غَیۡرُ مُعۡجِزِی ٱللَّهِ وَأَنَّ ٱللَّهَ مُخۡزِی ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿2﴾
সুতরাং তোমরা দেশে অবাধে ঘোরাফেরা করো চার মাসকাল, আর জেনে রেখো -- তোমরা নিশ্চয়ই আল্লাহ্র কাছ থেকে ফসকে যাবার পাত্র নও। আর আল্লাহ্ আলবৎ অবিশ্বাসীদের লাঞ্ছিত করে থাকেন।
وَأَذَ ٰنࣱ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۤ إِلَى ٱلنَّاسِ یَوۡمَ ٱلۡحَجِّ ٱلۡأَكۡبَرِ أَنَّ ٱللَّهَ بَرِیۤءࣱ مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ وَرَسُولُهُۥۚ فَإِن تُبۡتُمۡ فَهُوَ خَیۡرࣱ لَّكُمۡۖ وَإِن تَوَلَّیۡتُمۡ فَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّكُمۡ غَیۡرُ مُعۡجِزِی ٱللَّهِۗ وَبَشِّرِ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ بِعَذَابٍ أَلِیمٍ ﴿3﴾
আর আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের তরফ থেকে জনগণের প্রতি এই মহান হজের দিনে এ এক ঘোষণা যে আল্লাহ্ মুশরিকদের কাছে দায়মুক্ত, আর তাঁর রসূলও। অতএব তোমরা যদি তওবা করো তবে সেটি হবে তোমাদের জন্য কল্যাণজনক, কিন্তু তোমরা যদি ফিরে যাও তাহলে জেনে রেখো -- তোমরা নিঃসন্দেহ আল্লাহ্র কাছ থেকে ফসকে যাবার পাত্র নও। আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের মর্মন্তুদ শাস্তির সংবাদ দাও, --
إِلَّا ٱلَّذِینَ عَـٰهَدتُّم مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ثُمَّ لَمۡ یَنقُصُوكُمۡ شَیۡـࣰٔا وَلَمۡ یُظَـٰهِرُوا۟ عَلَیۡكُمۡ أَحَدࣰا فَأَتِمُّوۤا۟ إِلَیۡهِمۡ عَهۡدَهُمۡ إِلَىٰ مُدَّتِهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿4﴾
মুশরিকদের মধ্যের সেইসব ছাড়া যাদের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করেছ, তারপর তারা তোমাদের সাথে কোনো ত্রুটি করে নি, আর তোমাদের বিরুদ্ধে অন্য কারোর পৃষ্ঠপোষকতাও করে নি, তাদের সঙ্গে তাহলে তাদের চুক্তি প্রতিপালন করো সেগুলোর মেয়াদ পর্যন্ত। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ভালোবাসেন ধর্মপরায়ণদের।
فَإِذَا ٱنسَلَخَ ٱلۡأَشۡهُرُ ٱلۡحُرُمُ فَٱقۡتُلُوا۟ ٱلۡمُشۡرِكِینَ حَیۡثُ وَجَدتُّمُوهُمۡ وَخُذُوهُمۡ وَٱحۡصُرُوهُمۡ وَٱقۡعُدُوا۟ لَهُمۡ كُلَّ مَرۡصَدࣲۚ فَإِن تَابُوا۟ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُا۟ ٱلزَّكَوٰةَ فَخَلُّوا۟ سَبِیلَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿5﴾
অতঃপর নিষিদ্ধ মাসগুলো যখন অতিবাহিত হয়ে যায় তখন মুশরিকদের কাতল করো যেখানে তাদের পাও, আর তাদের বন্দী করো, আর তাদের ঘেরাও করো, আর তাদের জন্য ওৎ পেতে থাকো প্রত্যেক ঘাঁটিতে। কিন্তু যদি তারা তওবা করে এবং নামায কায়েম করে আর যাকাত আদায় করে তবে তাদের পথ ছেড়ে দিয়ো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী অফুরন্ত ফলদাতা।
وَإِنۡ أَحَدࣱ مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِینَ ٱسۡتَجَارَكَ فَأَجِرۡهُ حَتَّىٰ یَسۡمَعَ كَلَـٰمَ ٱللَّهِ ثُمَّ أَبۡلِغۡهُ مَأۡمَنَهُۥۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمࣱ لَّا یَعۡلَمُونَ ﴿6﴾
আর যদি মুশরিকদের কোনো একজন তোমার কাছে আশ্রয় চায় তবে তাকে আশ্রয় দাও যেন সে আল্লাহ্র বাণী শোনে, তারপর তাকে তার নিরাপদ যায়গায় পৌঁছে দিয়ো। এটি এই জন্য যে তারা হচ্ছে এমন এক সম্প্রদায় যারা জানে না।
كَیۡفَ یَكُونُ لِلۡمُشۡرِكِینَ عَهۡدٌ عِندَ ٱللَّهِ وَعِندَ رَسُولِهِۦۤ إِلَّا ٱلَّذِینَ عَـٰهَدتُّمۡ عِندَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۖ فَمَا ٱسۡتَقَـٰمُوا۟ لَكُمۡ فَٱسۡتَقِیمُوا۟ لَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ یُحِبُّ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿7﴾
কেমন ক’রে মুশরিকদের জন্য আল্লাহ্র সঙ্গে ও তাঁর রসূলের সঙ্গে চুক্তি হতে পারে, তাদের সম্পর্কে ছাড়া যাদের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করেছিলে পবিত্র মসজিদের নিকটে? সুতরাং যতক্ষণ তারা তোমাদের প্রতি কায়েম থাকবে ততক্ষণ তোমরাও তাদের প্রতি কায়েম রইবে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ধর্মপরায়ণদের ভালোবাসেন।
كَیۡفَ وَإِن یَظۡهَرُوا۟ عَلَیۡكُمۡ لَا یَرۡقُبُوا۟ فِیكُمۡ إِلࣰّا وَلَا ذِمَّةࣰۚ یُرۡضُونَكُم بِأَفۡوَ ٰهِهِمۡ وَتَأۡبَىٰ قُلُوبُهُمۡ وَأَكۡثَرُهُمۡ فَـٰسِقُونَ ﴿8﴾
কেমন ক’রে যখন তারা যদি তোমাদের পিঠে চড়তে পারে তবে তারা তোমাদের সঙ্গে আত্মীয়তার বা চুক্তির বন্ধন মানবে না? তারা তোমাদের খুশী রাখতে চায় তাদের মুখ দিয়ে, কিন্তু তাদের হৃদয় অস্বীকার করে, আর তাদের অধিকাংশই দুষ্কৃতিকারী।
ٱشۡتَرَوۡا۟ بِـَٔایَـٰتِ ٱللَّهِ ثَمَنࣰا قَلِیلࣰا فَصَدُّوا۟ عَن سَبِیلِهِۦۤۚ إِنَّهُمۡ سَاۤءَ مَا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ ﴿9﴾
তারা আল্লাহ্র আয়াতকে স্বল্পমূল্যে বিনিময় করে, তাই তারা তাঁর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে। নিঃসন্দেহ জঘন্য যা তারা করে যাচ্ছে।
لَا یَرۡقُبُونَ فِی مُؤۡمِنٍ إِلࣰّا وَلَا ذِمَّةࣰۚ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُعۡتَدُونَ ﴿10﴾
তারা কোনো মুমিনের বেলায় আত্মীয়তার বা চুক্তির বন্ধন-সন্বন্ধে ভাবে না। এরা নিজেরাই হচ্ছে সীমালংঘনকারী।
فَإِن تَابُوا۟ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُا۟ ٱلزَّكَوٰةَ فَإِخۡوَ ٰنُكُمۡ فِی ٱلدِّینِۗ وَنُفَصِّلُ ٱلۡـَٔایَـٰتِ لِقَوۡمࣲ یَعۡلَمُونَ ﴿11﴾
কিন্তু যদি তারা তওবা করে, আর নামায কায়েম করে, আর যাকাত আদায় করে, তবে তারা ধর্মে তোমাদের ভাই। আর আমরা নির্দেশাবলী বিশদভাবে বিবৃত করি সেই লোকদের জন্য যারা জানে।
وَإِن نَّكَثُوۤا۟ أَیۡمَـٰنَهُم مِّنۢ بَعۡدِ عَهۡدِهِمۡ وَطَعَنُوا۟ فِی دِینِكُمۡ فَقَـٰتِلُوۤا۟ أَىِٕمَّةَ ٱلۡكُفۡرِ إِنَّهُمۡ لَاۤ أَیۡمَـٰنَ لَهُمۡ لَعَلَّهُمۡ یَنتَهُونَ ﴿12﴾
আর তারা যদি তাদের চুক্তি সম্পাদনের পরেও তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আর তোমাদের ধর্ম নিয়ে বিদ্রূপ করে তবে অবিশ্বাসের সর্দারদের সাথে যুদ্ধ করো, -- নিঃসন্দেহ তাদের বেলা প্রতিজ্ঞাসব তাদের কাছে কিছুই নয়, -- যেন তারা বিরত হতে পারে।
أَلَا تُقَـٰتِلُونَ قَوۡمࣰا نَّكَثُوۤا۟ أَیۡمَـٰنَهُمۡ وَهَمُّوا۟ بِإِخۡرَاجِ ٱلرَّسُولِ وَهُم بَدَءُوكُمۡ أَوَّلَ مَرَّةٍۚ أَتَخۡشَوۡنَهُمۡۚ فَٱللَّهُ أَحَقُّ أَن تَخۡشَوۡهُ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ﴿13﴾
তোমরা কি যুদ্ধ করবে না সেইসব সম্প্রদায়ের সাথে যারা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে, আর সংকল্প করেছে রসূলকে বহিস্কার করার, আর তারাই তোমাদের উপরে শুরু করেছে প্রথমে? তোমরা কি তাদের ভয় করো? কিন্তু আল্লাহ্ই অধিকতর দাবিদার যে তোমরা তাঁকে ভয় করবে -- যদি তোমরা মূমিন হও।
قَـٰتِلُوهُمۡ یُعَذِّبۡهُمُ ٱللَّهُ بِأَیۡدِیكُمۡ وَیُخۡزِهِمۡ وَیَنصُرۡكُمۡ عَلَیۡهِمۡ وَیَشۡفِ صُدُورَ قَوۡمࣲ مُّؤۡمِنِینَ ﴿14﴾
তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো, আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন তোমাদের হাতে, আর তাদের লাঞ্ছিত করবেন, আর তোমাদের সাহায্য করবেন তাদের বিরুদ্ধে, আর মুমিন সম্প্রদায়ের বুক প্রশমিত করবেন।
وَیُذۡهِبۡ غَیۡظَ قُلُوبِهِمۡۗ وَیَتُوبُ ٱللَّهُ عَلَىٰ مَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمٌ ﴿15﴾
আর তিনি তাদের বুকের ক্ষোভ দূর করবেন। আর যাকে ইচ্ছে করেন তার প্রতি আল্লাহ্ ফেরেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।
أَمۡ حَسِبۡتُمۡ أَن تُتۡرَكُوا۟ وَلَمَّا یَعۡلَمِ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ جَـٰهَدُوا۟ مِنكُمۡ وَلَمۡ یَتَّخِذُوا۟ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلَا رَسُولِهِۦ وَلَا ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَلِیجَةࣰۚ وَٱللَّهُ خَبِیرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ ﴿16﴾
তোমরা কি মনে করো যে তোমাদের ছেড়ে দেয়া হবে, অথচ আল্লাহ্ জেনে নেন নি যে তোমাদের মধ্যের কারা সংগ্রাম করছে, আর কারা আল্লাহ্কে ছেড়ে দিয়ে বা তাঁর রসূলকে বাদ দিয়ে বা মুমিনদের ব্যতীত কোনো অন্তরঙ্গ বন্ধু গ্রহণ করে নি? আর তোমরা যা করো আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে পূর্ণ-ওয়াকিফহাল।
مَا كَانَ لِلۡمُشۡرِكِینَ أَن یَعۡمُرُوا۟ مَسَـٰجِدَ ٱللَّهِ شَـٰهِدِینَ عَلَىٰۤ أَنفُسِهِم بِٱلۡكُفۡرِۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ وَفِی ٱلنَّارِ هُمۡ خَـٰلِدُونَ ﴿17﴾
মুশরিকদের কোনো অধিকার নেই যে তারা আল্লাহ্র মসজিদগুলো দেখাশোনা করবে যখন তারা তাদের নিজেদের বিরুদ্ধে অবিশ্বাসের সাক্ষ্য দেয়। এরাই তারা যাদের কাজকর্ম ব্যর্থ হয়েছে, আর আগুনের মধ্যে তারাই অবস্থান করবে।
إِنَّمَا یَعۡمُرُ مَسَـٰجِدَ ٱللَّهِ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَلَمۡ یَخۡشَ إِلَّا ٱللَّهَۖ فَعَسَىٰۤ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَن یَكُونُوا۟ مِنَ ٱلۡمُهۡتَدِینَ ﴿18﴾
নিঃসন্দেহ সে-ই শুধু আল্লাহ্র মসজিদগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করবে যে আল্লাহ্তে বিশ্বাস করে আর পরকালেও, আর নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে, আর আল্লাহ্ ছাড়া কাউকেও ভয় করে না, কাজেই এদের পক্ষেই সাব্য যে এরা হেদায়তপ্রাপ্তদের মধ্যেকার হবে।
۞ أَجَعَلۡتُمۡ سِقَایَةَ ٱلۡحَاۤجِّ وَعِمَارَةَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ كَمَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَجَـٰهَدَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۚ لَا یَسۡتَوُۥنَ عِندَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿19﴾
তোমরা কি হজযাত্রীদের পানি সরবরাহ করা ও পবিত্র মসজিদের দেখাশোনা করাকে তুল্যজ্ঞান করো তার সাথে যে আল্লাহ্র প্রতি ও পরকালের প্রতি আস্থা রেখেছে আর আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করছে? আল্লাহ্র কাছে ওরা সমতুল্য নয়। আর আল্লাহ্ অন্যায়কারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালন করেন না।
ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَهَاجَرُوا۟ وَجَـٰهَدُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ أَعۡظَمُ دَرَجَةً عِندَ ٱللَّهِۚ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡفَاۤىِٕزُونَ ﴿20﴾
যারা ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে, আর আল্লাহ্র পথে তাদের ধনদৌলত ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে সংগ্রাম করেছে, তারা আল্লাহ্র কাছে মর্যাদায় উন্নততর। আর এরা নিজেরাই সফলকাম।
یُبَشِّرُهُمۡ رَبُّهُم بِرَحۡمَةࣲ مِّنۡهُ وَرِضۡوَ ٰنࣲ وَجَنَّـٰتࣲ لَّهُمۡ فِیهَا نَعِیمࣱ مُّقِیمٌ ﴿21﴾
তাদের প্রভু তাদের সুসংবাদ দিচ্ছেন তাঁর তরফ থেকে করুণাধারার, আর প্রসন্নতার, আর বাগ-বাগিচার যাতে তাদের জন্যে রয়েছে চিরস্থায়ী সুখসমৃদ্ধি --
خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدًاۚ إِنَّ ٱللَّهَ عِندَهُۥۤ أَجۡرٌ عَظِیمࣱ ﴿22﴾
সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ -- তাঁর কাছে রয়েছে পরম পুরস্কার।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ لَا تَتَّخِذُوۤا۟ ءَابَاۤءَكُمۡ وَإِخۡوَ ٰنَكُمۡ أَوۡلِیَاۤءَ إِنِ ٱسۡتَحَبُّوا۟ ٱلۡكُفۡرَ عَلَى ٱلۡإِیمَـٰنِۚ وَمَن یَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ﴿23﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের পিতৃবর্গকে ও তোমাদের ভ্রাতৃবৃন্দকে তোমরা অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না যদি তারা বিশ্বাসের চাইতে অবিশ্বাসকেই ভালোবাসে। আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ তাদের মুরব্বীরূপে গ্রহণ করে তবে তারা নিজেরাই হবে অন্যায়কারী ।
قُلۡ إِن كَانَ ءَابَاۤؤُكُمۡ وَأَبۡنَاۤؤُكُمۡ وَإِخۡوَ ٰنُكُمۡ وَأَزۡوَ ٰجُكُمۡ وَعَشِیرَتُكُمۡ وَأَمۡوَ ٰلٌ ٱقۡتَرَفۡتُمُوهَا وَتِجَـٰرَةࣱ تَخۡشَوۡنَ كَسَادَهَا وَمَسَـٰكِنُ تَرۡضَوۡنَهَاۤ أَحَبَّ إِلَیۡكُم مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَجِهَادࣲ فِی سَبِیلِهِۦ فَتَرَبَّصُوا۟ حَتَّىٰ یَأۡتِیَ ٱللَّهُ بِأَمۡرِهِۦۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿24﴾
বলো, ''যদি তোমাদের পিতারা ও তোমাদের পুত্রেরা, আর তোমাদের ভাইয়েরা ও তোমাদের পরিবাররা, আর তোমাদের আত্মীয়স্বজন, আর মাল-আসবাব যা তোমরা অর্জন করেছ, আর ব্যবসা-বাণিজ্য যার অচলাবস্থা তোমরা আশঙ্কা করো, আর বাড়িঘর যা তোমরা ভালোবাসো -- তোমাদের কাছে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের ও তাঁর পথে সংগ্রামের চেয়ে অধিকতর প্রিয় হয় তবে অপেক্ষা করো যে পর্যন্ত না আল্লাহ্ নিয়ে আসেন তাঁর আদেশ।’’ আর আল্লাহ্ দুষ্কৃতিকারী সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না।
لَقَدۡ نَصَرَكُمُ ٱللَّهُ فِی مَوَاطِنَ كَثِیرَةࣲ وَیَوۡمَ حُنَیۡنٍ إِذۡ أَعۡجَبَتۡكُمۡ كَثۡرَتُكُمۡ فَلَمۡ تُغۡنِ عَنكُمۡ شَیۡـࣰٔا وَضَاقَتۡ عَلَیۡكُمُ ٱلۡأَرۡضُ بِمَا رَحُبَتۡ ثُمَّ وَلَّیۡتُم مُّدۡبِرِینَ ﴿25﴾
আল্লাহ্ ইতিমধ্যে বহুক্ষেত্রে তোমাদের সাহায্য করেছেন, আর হুনাইনের দিনেও যখন তোমাদের সংখ্যাধিক্য তোমাদের উৎফুল্ল করেছিল, কিন্তু তা তোমাদের লাভবান করে নি কোনো-ভাবেই, আর পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তোমাদের জন্য হয়েছিল সংকীর্ণ, তোমরা ফিরেছিলে পলায়নপর হয়ে।
ثُمَّ أَنزَلَ ٱللَّهُ سَكِینَتَهُۥ عَلَىٰ رَسُولِهِۦ وَعَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَأَنزَلَ جُنُودࣰا لَّمۡ تَرَوۡهَا وَعَذَّبَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ۚ وَذَ ٰلِكَ جَزَاۤءُ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿26﴾
তারপর আল্লাহ্ তাঁর প্রশান্তি বর্ষণ করলেন তাঁর রসূলের উপরে আর মুমিনদের উপরে, আর তিনি অবতীর্ণ করেছিলেন এক সেনাবাহিনী যা তোমরা দেখতে পাও নি, আর শাস্তি দিয়েছিলেন তাদের যারা অবিশ্বাস পোষণ করে। আর এই হচ্ছে অবিশ্বাসীদের কর্মফল।
ثُمَّ یَتُوبُ ٱللَّهُ مِنۢ بَعۡدِ ذَ ٰلِكَ عَلَىٰ مَن یَشَاۤءُۗ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿27﴾
তারপর আল্লাহ্ এর পরেও ফেরেন যার প্রতি তিনি ইচ্ছা করেন। আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِنَّمَا ٱلۡمُشۡرِكُونَ نَجَسࣱ فَلَا یَقۡرَبُوا۟ ٱلۡمَسۡجِدَ ٱلۡحَرَامَ بَعۡدَ عَامِهِمۡ هَـٰذَاۚ وَإِنۡ خِفۡتُمۡ عَیۡلَةࣰ فَسَوۡفَ یُغۡنِیكُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦۤ إِن شَاۤءَۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿28﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! নিঃসন্দেহ মুশরিকরা হচ্ছে অপবিত্র, কাজেই তাদের এই বৎসরের পরে তারা পবিত্র মসজিদের সন্নিকটে আসতে পারবে না; আর যদি তোমরা দারিদ্রের আশঙ্কা করো তা হলে আল্লাহ্ অচিরেই তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন তাঁর করুণাভান্ডার থেকে যদি তিনি চান। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।
قَـٰتِلُوا۟ ٱلَّذِینَ لَا یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَلَا بِٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَلَا یُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَلَا یَدِینُونَ دِینَ ٱلۡحَقِّ مِنَ ٱلَّذِینَ أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ حَتَّىٰ یُعۡطُوا۟ ٱلۡجِزۡیَةَ عَن یَدࣲ وَهُمۡ صَـٰغِرُونَ ﴿29﴾
যুদ্ধ করো তাদের সঙ্গে যারা আল্লাহ্তে বিশ্বাস করে না আর আখেরাতের দিনেও না, আর নিষেধ করে না যা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল নিষেধ করেছেন, আর সত্যধর্মে ধর্মনিষ্ঠা পালন করে না -- তাদের মধ্যে থেকে যাদের ধর্মগ্রন্থ দেয়া হয়েছে, যে পর্যন্ত না তারা স্বহস্তে জিযিয়া প্রদান করে, আর তারা আনুগত্য মেনে নেয়।
وَقَالَتِ ٱلۡیَهُودُ عُزَیۡرٌ ٱبۡنُ ٱللَّهِ وَقَالَتِ ٱلنَّصَـٰرَى ٱلۡمَسِیحُ ٱبۡنُ ٱللَّهِۖ ذَ ٰلِكَ قَوۡلُهُم بِأَفۡوَ ٰهِهِمۡۖ یُضَـٰهِـُٔونَ قَوۡلَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِن قَبۡلُۚ قَـٰتَلَهُمُ ٱللَّهُۖ أَنَّىٰ یُؤۡفَكُونَ ﴿30﴾
আর ইহুদীরা বলে -- ''উযাইর আল্লাহ্র পুত্র’’, আর খ্রীষ্টানরা বলে -- ''মসীহ আল্লাহ্র পুত্র।’’ এসব হচ্ছে তাদের মুখ দিয়ে তাদের বুলি আওড়ানো, -- তারা ওদের কথার অনুসরণ করে যারা পূর্বকালে অবিশ্বাস পোষণ করেছিল। আল্লাহ্ তাদের ধ্বংস করবেন। তারা কেমন ক’রে বিমুখ হয়!
ٱتَّخَذُوۤا۟ أَحۡبَارَهُمۡ وَرُهۡبَـٰنَهُمۡ أَرۡبَابࣰا مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَٱلۡمَسِیحَ ٱبۡنَ مَرۡیَمَ وَمَاۤ أُمِرُوۤا۟ إِلَّا لِیَعۡبُدُوۤا۟ إِلَـٰهࣰا وَ ٰحِدࣰاۖ لَّاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبۡحَـٰنَهُۥ عَمَّا یُشۡرِكُونَ ﴿31﴾
তারা আল্লাহ্কে ছেড়ে দিয়ে তাদের পন্ডিতগণকে ও সন্ন্যাসীদের প্রভুরূপে গ্রহণ করেছে, আর মরিয়ম-পুত্র মসীহ্কেও, অথচ শুধু এক উপাস্যের উপাসনা করা ছাড়া অন্য নির্দেশ তাদের দেয়া হয় নি। তিনি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই। তাঁরই সব মহিমা -- তারা যে- সব অংশী দাঁড় করার সে-সব থেকে?
یُرِیدُونَ أَن یُطۡفِـُٔوا۟ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفۡوَ ٰهِهِمۡ وَیَأۡبَى ٱللَّهُ إِلَّاۤ أَن یُتِمَّ نُورَهُۥ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡكَـٰفِرُونَ ﴿32﴾
তারা আল্লাহ্র জ্যোতি নিভিয়ে দিতে চায় তাদের মুখ দিয়ে, আর আল্লাহ্ তাঁর জ্যোতির পূর্ণাঙ্গ সাধন না ক’রে থামছেন না যদিও অবিশ্বাসীরা অসন্তোষ বোধ করছে।
هُوَ ٱلَّذِیۤ أَرۡسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلۡهُدَىٰ وَدِینِ ٱلۡحَقِّ لِیُظۡهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّینِ كُلِّهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡمُشۡرِكُونَ ﴿33﴾
তিনিই সেইজন যিনি তাঁর রসূলকে পাঠিয়েছেন পথনির্দেশ ও সত্য-ধর্মের সাথে যেন তিনি তাকে প্রাধান্য দিতে পারেন ধর্মের -- তাদের সবক’টি উপরে, যদিও মুশরিকরা অনিচ্ছুক।
۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ إِنَّ كَثِیرࣰا مِّنَ ٱلۡأَحۡبَارِ وَٱلرُّهۡبَانِ لَیَأۡكُلُونَ أَمۡوَ ٰلَ ٱلنَّاسِ بِٱلۡبَـٰطِلِ وَیَصُدُّونَ عَن سَبِیلِ ٱللَّهِۗ وَٱلَّذِینَ یَكۡنِزُونَ ٱلذَّهَبَ وَٱلۡفِضَّةَ وَلَا یُنفِقُونَهَا فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِیمࣲ ﴿34﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! নিঃসন্দেহ পন্ডিতদের ও সন্ন্যাসীদের মধ্যের অনেকে লোকের ধনসম্পত্তি অন্যায়ভাবে গলাধঃকরণ করে আর আল্লাহ্র পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে। বস্তুতঃ যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে অথচ আল্লাহ্র পথে খরচ করে না, তাদের তাহলে সংবাদ দাও মর্মন্তুদ শাস্তির, --
یَوۡمَ یُحۡمَىٰ عَلَیۡهَا فِی نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكۡوَىٰ بِهَا جِبَاهُهُمۡ وَجُنُوبُهُمۡ وَظُهُورُهُمۡۖ هَـٰذَا مَا كَنَزۡتُمۡ لِأَنفُسِكُمۡ فَذُوقُوا۟ مَا كُنتُمۡ تَكۡنِزُونَ ﴿35﴾
যেদিন এগুলো উত্তপ্ত করা হবে জাহান্নামের আগুনে, তারপর তা দিয়ে দেগে দেয়া হবে তাদের কপালে ও তাদের পার্শ্বদেশে ও তাদের পিঠে। ''এটিই সেই যা তোমরা জড়ো করেছিলে, অতএব আস্বাদন করো যা তোমরা জমিয়েছিলে!’’
إِنَّ عِدَّةَ ٱلشُّهُورِ عِندَ ٱللَّهِ ٱثۡنَا عَشَرَ شَهۡرࣰا فِی كِتَـٰبِ ٱللَّهِ یَوۡمَ خَلَقَ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ مِنۡهَاۤ أَرۡبَعَةٌ حُرُمࣱۚ ذَ ٰلِكَ ٱلدِّینُ ٱلۡقَیِّمُۚ فَلَا تَظۡلِمُوا۟ فِیهِنَّ أَنفُسَكُمۡۚ وَقَـٰتِلُوا۟ ٱلۡمُشۡرِكِینَ كَاۤفَّةࣰ كَمَا یُقَـٰتِلُونَكُمۡ كَاۤفَّةࣰۚ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿36﴾
নিঃসন্দেহ আল্লাহ্র কাছে মাসগুলোর সংখ্যা হচ্ছে আল্লাহ্র বিধানে বারো মাস, -- যেদিন থেকে তিনি মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, -- এর মধ্যে চারটি হচ্ছে পবিত্র। এই হচ্ছে সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান, কাজেই এদের মধ্যে তোমাদের নিজেদের প্রতি অন্যায় করো না, আর মুশরিকদের বিরুদ্ধে সমবেতভাবে যুদ্ধ করো যেমন তারা সমবেতভাবে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রেখো -- আল্লাহ্ আলবৎ ধর্মভীরুদের সঙ্গে রয়েছেন।
إِنَّمَا ٱلنَّسِیۤءُ زِیَادَةࣱ فِی ٱلۡكُفۡرِۖ یُضَلُّ بِهِ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ یُحِلُّونَهُۥ عَامࣰا وَیُحَرِّمُونَهُۥ عَامࣰا لِّیُوَاطِـُٔوا۟ عِدَّةَ مَا حَرَّمَ ٱللَّهُ فَیُحِلُّوا۟ مَا حَرَّمَ ٱللَّهُۚ زُیِّنَ لَهُمۡ سُوۤءُ أَعۡمَـٰلِهِمۡۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿37﴾
পিছিয়ে দেয়া অবিশ্বাসেরই মাত্রা বৃদ্ধি মাত্র, এর দ্বারা যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের পথভ্রষ্ট করা হয়, তারা এ বৈধ করে কোনো বছর আর একে অবৈধ করে কোনো বছর, যেন তারা ঠিক রাখতে পারে সংখ্যা যা আল্লাহ্ নিষিদ্ধ করেছেন, ফলে তারা বৈধ করে যা আল্লাহ্ অবৈধ করেছেন। তাদের মন্দ কাজগুলো তাদের কাছ চিত্তাকর্ষক করা হয়ছে। আর আল্লাহ্ পথ দেখান না অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مَا لَكُمۡ إِذَا قِیلَ لَكُمُ ٱنفِرُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ ٱثَّاقَلۡتُمۡ إِلَى ٱلۡأَرۡضِۚ أَرَضِیتُم بِٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا مِنَ ٱلۡـَٔاخِرَةِۚ فَمَا مَتَـٰعُ ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا فِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ إِلَّا قَلِیلٌ ﴿38﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ? কি তোমাদের হয়েছে যখন তোমাদের বলা হচ্ছে -- 'আল্লাহ্র পথে বেরিয়ে পড়ো’, -- তখন তোমরা ভারি হয়ে ঝুকঁছো মাটির দিকে? তোমরা কি বেশি পরিতুষ্ট পরকালের পরিবর্তে এই দুনিয়ার জীবনে বস্তুতঃ পার্থিব জীবনের ভোগবিলাস পরকালের তুলনায় যৎসামান্য বই তো নয়।
إِلَّا تَنفِرُوا۟ یُعَذِّبۡكُمۡ عَذَابًا أَلِیمࣰا وَیَسۡتَبۡدِلۡ قَوۡمًا غَیۡرَكُمۡ وَلَا تَضُرُّوهُ شَیۡـࣰٔاۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَیۡءࣲ قَدِیرٌ ﴿39﴾
যদি তোমরা বের না হও তবে তিনি তোমাদের শাস্তি দেবেন মর্মন্তুদ শাস্তিতে, আর তোমাদের পরিবর্তে বদলে নেবেন ভিন্ন এক জাতিকে, আর তোমরা তাঁর কোনোই ক্ষতি করতে পারবে না। বস্তুতঃ আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।
إِلَّا تَنصُرُوهُ فَقَدۡ نَصَرَهُ ٱللَّهُ إِذۡ أَخۡرَجَهُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ ثَانِیَ ٱثۡنَیۡنِ إِذۡ هُمَا فِی ٱلۡغَارِ إِذۡ یَقُولُ لِصَـٰحِبِهِۦ لَا تَحۡزَنۡ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَنَاۖ فَأَنزَلَ ٱللَّهُ سَكِینَتَهُۥ عَلَیۡهِ وَأَیَّدَهُۥ بِجُنُودࣲ لَّمۡ تَرَوۡهَا وَجَعَلَ كَلِمَةَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ ٱلسُّفۡلَىٰۗ وَكَلِمَةُ ٱللَّهِ هِیَ ٱلۡعُلۡیَاۗ وَٱللَّهُ عَزِیزٌ حَكِیمٌ ﴿40﴾
তোমরা যদি তাঁকে সাহায্য না কর তবে আল্লাহ্ তাঁকে ইতিপূর্বে সাহায্য করেছিলেন যখন যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল তারা তাঁকে বের করে দিয়েছিল, দুই জনের দ্বিতীয় জন, যখন তাঁরা দুজন ছিলেন গুহার ভেতরে, যখন তিনি তাঁর সঙ্গীকে বলেছিলেন -- ''বিষন্ন হয়ো না, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।’’ অতঃপর আল্লাহ্ তাঁর প্রশান্তি অবতারণ করেছিলেন তাঁর উপরে আর তাঁর বলবৃদ্ধি করেছিলেন এমন এক বাহিনী দিয়ে যাদের তোমরা দেখতে পাও নি, আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল তাদের কথাবার্তাকে হেয় করেছিলেন। আর আল্লাহ্র বাণী -- তা হচ্ছে উচ্চতম। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।
ٱنفِرُوا۟ خِفَافࣰا وَثِقَالࣰا وَجَـٰهِدُوا۟ بِأَمۡوَ ٰلِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۚ ذَ ٰلِكُمۡ خَیۡرࣱ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ﴿41﴾
বেরিয়ে পড় হাল্কাভাবে ও ভারী হয়ে আর তোমাদের ধনসম্পদ ও তোমাদের জানপ্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করো। এটিই তোমাদের জন্য ভালো যদি তোমরা জানতে।
لَوۡ كَانَ عَرَضࣰا قَرِیبࣰا وَسَفَرࣰا قَاصِدࣰا لَّٱتَّبَعُوكَ وَلَـٰكِنۢ بَعُدَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلشُّقَّةُۚ وَسَیَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ لَوِ ٱسۡتَطَعۡنَا لَخَرَجۡنَا مَعَكُمۡ یُهۡلِكُونَ أَنفُسَهُمۡ وَٱللَّهُ یَعۡلَمُ إِنَّهُمۡ لَكَـٰذِبُونَ ﴿42﴾
যদি এটি হতো আশু লাভের ব্যাপার ও হাল্কা সফর তবে তারা নিশ্চয়ই তোমাকে অনুসরণ করতো, কিন্তু দুর্গম-পথ তাদের কাছে সুদীর্ঘ মনে হলো। আর তারা আল্লাহ্র নামে হলফ করে বললে -- ''আমরা যদি পারতাম তবে নিশ্চয়ই তোমাদের সঙ্গে আমরাও বের হতাম।’’ তারা তাদের নিজেদেরই ধ্বংস সাধন করছে, আর আল্লাহ্ জানেন যে তারা আলবৎ ডাহা মিথ্যাবাদী।
عَفَا ٱللَّهُ عَنكَ لِمَ أَذِنتَ لَهُمۡ حَتَّىٰ یَتَبَیَّنَ لَكَ ٱلَّذِینَ صَدَقُوا۟ وَتَعۡلَمَ ٱلۡكَـٰذِبِینَ ﴿43﴾
আল্লাহ্ তোমাকে ক্ষমা করুন! কেন তুমি তাদের অব্যাহতি দিলে যে পর্যন্ত না তোমার কাছে সুস্পষ্ট হয়েছিল যে কারা সত্যকথা বলছে, আর তুমি জানতে পেরেছিলে মিথ্যাবাদীদের?
لَا یَسۡتَـٔۡذِنُكَ ٱلَّذِینَ یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ أَن یُجَـٰهِدُوا۟ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِٱلۡمُتَّقِینَ ﴿44﴾
যারা আল্লাহ্তেও ও আখেরাতের দিনে আস্থা রাখে তারা তোমার কাছে অনুমতি চায় না তাদের ধনসম্পদ ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে সংগ্রাম করা থেকে। আর আল্লাহ্ ধর্মপরায়ণদের সম্পর্কে সর্বজ্ঞাতা।
إِنَّمَا یَسۡتَـٔۡذِنُكَ ٱلَّذِینَ لَا یُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَٱرۡتَابَتۡ قُلُوبُهُمۡ فَهُمۡ فِی رَیۡبِهِمۡ یَتَرَدَّدُونَ ﴿45﴾
তোমার নিকট অনুমতি চায় কেবল ওরাই যারা আল্লাহ্তে ও শেষদিনে ঈমান আনে না, আর তাদের হৃদয় দ্বিধাগ্রস্ত। কাজেই তাদের সন্দেহের মধ্যেই তারা দোল খাচ্ছে।
۞ وَلَوۡ أَرَادُوا۟ ٱلۡخُرُوجَ لَأَعَدُّوا۟ لَهُۥ عُدَّةࣰ وَلَـٰكِن كَرِهَ ٱللَّهُ ٱنۢبِعَاثَهُمۡ فَثَبَّطَهُمۡ وَقِیلَ ٱقۡعُدُوا۟ مَعَ ٱلۡقَـٰعِدِینَ ﴿46﴾
আর তারা যদি যাত্রা করবার ইচ্ছা করতো তবে তারা নিশ্চয়ই তার জন্য যোগাড়যন্ত্র যোগাড় করতো, কিন্তু আল্লাহ্ অনিচ্ছুক তাদের গমনে, তাই তাদের তিনি ঠেকিয়ে রেখেছেন, আর বলা হলো -- ''বসে থাকো বসে-থাকা লোকদের সাথে।’’
لَوۡ خَرَجُوا۟ فِیكُم مَّا زَادُوكُمۡ إِلَّا خَبَالࣰا وَلَأَوۡضَعُوا۟ خِلَـٰلَكُمۡ یَبۡغُونَكُمُ ٱلۡفِتۡنَةَ وَفِیكُمۡ سَمَّـٰعُونَ لَهُمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمُۢ بِٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿47﴾
তারা যদি তোমাদের সঙ্গে বের হত তবে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ছাড়া তোমাদের আর কিছুই বাড়াতো না, আর তারা নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে ছুটোছুটি করতো তোমাদের মধ্যে বিদ্রোহ কামনা ক’রে, আর তোমাদের মধ্যে ওদের কথা শোনবার লোক রয়েছে। আর আল্লাহ্ অত্যাচারীদের সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।
لَقَدِ ٱبۡتَغَوُا۟ ٱلۡفِتۡنَةَ مِن قَبۡلُ وَقَلَّبُوا۟ لَكَ ٱلۡأُمُورَ حَتَّىٰ جَاۤءَ ٱلۡحَقُّ وَظَهَرَ أَمۡرُ ٱللَّهِ وَهُمۡ كَـٰرِهُونَ ﴿48﴾
তারা বাস্তবিকই ইতিপূর্বে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, আর তারা তোমার জন্য কাজকর্ম পন্ড করতে যাচ্ছিল, যতক্ষণ না সত্য এসেছিল ও আল্লাহ্র আদেশ প্রকাশ পেলো, যদিও তারা অনিচ্ছুক ছিল।
وَمِنۡهُم مَّن یَقُولُ ٱئۡذَن لِّی وَلَا تَفۡتِنِّیۤۚ أَلَا فِی ٱلۡفِتۡنَةِ سَقَطُوا۟ۗ وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمُحِیطَةُۢ بِٱلۡكَـٰفِرِینَ ﴿49﴾
আর তাদের মধ্যে এমন আছে যে বলে -- ''আমাকে ছেড়ে দাও এবং আমাকে সমস্যায় ফেলো না।’’ তারা কি সমস্যায় পড়ে যায় নি? আর নিঃসন্দেহ জাহান্নাম অবিশ্বাসীদের ঘেরাও করেই রয়েছে।
إِن تُصِبۡكَ حَسَنَةࣱ تَسُؤۡهُمۡۖ وَإِن تُصِبۡكَ مُصِیبَةࣱ یَقُولُوا۟ قَدۡ أَخَذۡنَاۤ أَمۡرَنَا مِن قَبۡلُ وَیَتَوَلَّوا۟ وَّهُمۡ فَرِحُونَ ﴿50﴾
যদি তোমার উপরে ভালো কিছু ঘটে তবে তা তাদের দুঃখ দেয়, আর যদি তোমার কোনো বিপদ ঘটে তারা বলে -- ''আমরা তো আমাদের ব্যাপার আগেই গুটিয়ে নিয়েছিলাম’’, আর তারা ফিরে যায় এবং তারা উৎফুল্লচিত্ত হয়।
قُل لَّن یُصِیبَنَاۤ إِلَّا مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَنَا هُوَ مَوۡلَىٰنَاۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ﴿51﴾
বলো -- ''আল্লাহ্ আমাদের জন্য যা বিধান করেছেন তা ব্যতীত কিছুই আমাদের উপরে কখনো ঘটবে না। তিনিই আমাদের রক্ষক, আর আল্লাহ্র উপরেই তবে মুমিনরা নির্ভর করুক।
قُلۡ هَلۡ تَرَبَّصُونَ بِنَاۤ إِلَّاۤ إِحۡدَى ٱلۡحُسۡنَیَیۡنِۖ وَنَحۡنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمۡ أَن یُصِیبَكُمُ ٱللَّهُ بِعَذَابࣲ مِّنۡ عِندِهِۦۤ أَوۡ بِأَیۡدِینَاۖ فَتَرَبَّصُوۤا۟ إِنَّا مَعَكُم مُّتَرَبِّصُونَ ﴿52﴾
বলে যাও -- ''তোমরা আমাদের জন্য দুটি কল্যাণের কোনো একটি ছাড়া আর কিসের প্রতীক্ষা করতে পারো? আর আমরা তোমাদের জন্য প্রতীক্ষা করছি যে আল্লাহ্ তোমাদের শাস্তি হানবেন তাঁর তরফ থেকে অথবা আমাদের হাতে। অতএব প্রতীক্ষা করো, আমরাও অবশ্যই তোমাদের সাথে প্রতীক্ষমাণ।’’
قُلۡ أَنفِقُوا۟ طَوۡعًا أَوۡ كَرۡهࣰا لَّن یُتَقَبَّلَ مِنكُمۡ إِنَّكُمۡ كُنتُمۡ قَوۡمࣰا فَـٰسِقِینَ ﴿53﴾
বলো -- ''তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে খরচ করো অথবা অনিচ্ছা-কৃতভাবে, তোমাদের কাছ থেকে তা কখনো কবুল করা হবে না। নিঃসন্দেহ তোমরা হচ্ছো একটি দুষ্কৃতিকারী সম্প্রদায়।’’
وَمَا مَنَعَهُمۡ أَن تُقۡبَلَ مِنۡهُمۡ نَفَقَـٰتُهُمۡ إِلَّاۤ أَنَّهُمۡ كَفَرُوا۟ بِٱللَّهِ وَبِرَسُولِهِۦ وَلَا یَأۡتُونَ ٱلصَّلَوٰةَ إِلَّا وَهُمۡ كُسَالَىٰ وَلَا یُنفِقُونَ إِلَّا وَهُمۡ كَـٰرِهُونَ ﴿54﴾
আর তাদের খরচপত্র তাদের কাছ থেকে কবুল হতে তাদের জন্য কোনো বাধা ছিল না শুধু এজন্য ছাড়া যে তারা আল্লাহ্তে ও তাঁর রসূলের প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করে। আর তারা নামাযে আসে না তাদের গড়িমসি করা অবস্থা ছাড়া, আর তারা খরচ করে না তাদের অনিচ্ছার ভাব ছাড়া।
فَلَا تُعۡجِبۡكَ أَمۡوَ ٰلُهُمۡ وَلَاۤ أَوۡلَـٰدُهُمۡۚ إِنَّمَا یُرِیدُ ٱللَّهُ لِیُعَذِّبَهُم بِهَا فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا وَتَزۡهَقَ أَنفُسُهُمۡ وَهُمۡ كَـٰفِرُونَ ﴿55﴾
তাদের ধনদৌলত তোমাকে যেন তাজ্জব না করে আর তাদের সন্তানসন্ততিও না। আল্লাহ্ আলবৎ চান এ-সবের দ্বারা পার্থিব জীবনে তাদের শাস্তি দিতে; আর তাদের প্রাণ ত্যাগ করে যায় তাদের অবিশ্বাসী থাকা অবস্থায়।
وَیَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ إِنَّهُمۡ لَمِنكُمۡ وَمَا هُم مِّنكُمۡ وَلَـٰكِنَّهُمۡ قَوۡمࣱ یَفۡرَقُونَ ﴿56﴾
আর তারা আল্লাহ্র নামে হলফ করে যে তারা নিঃসন্দেহ তোমাদেরই মধ্যেকার। কিন্তু তারা তোমাদের মধ্যেকার নয়, বস্তুতঃ তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা কাপুরুষ।
لَوۡ یَجِدُونَ مَلۡجَـًٔا أَوۡ مَغَـٰرَ ٰتٍ أَوۡ مُدَّخَلࣰا لَّوَلَّوۡا۟ إِلَیۡهِ وَهُمۡ یَجۡمَحُونَ ﴿57﴾
তারা যদি পেতো কোনো আশ্রয়স্থল বা কোনো গুহাগহ্বর অথবা কোনো প্রবেশ করার জায়গা, -- তারা নিশ্চয়ই সেখানে চলে যেত দ্রতগতিতে পলায়নপর হয়ে।
وَمِنۡهُم مَّن یَلۡمِزُكَ فِی ٱلصَّدَقَـٰتِ فَإِنۡ أُعۡطُوا۟ مِنۡهَا رَضُوا۟ وَإِن لَّمۡ یُعۡطَوۡا۟ مِنۡهَاۤ إِذَا هُمۡ یَسۡخَطُونَ ﴿58﴾
আর ওদের মধ্যে এমনও আছে যে তোমাকে দোষারোপ করে দানের ব্যাপারে। অতঃপর তাদের যদি এ থেকে দেয়া হয় তবে তারা খুশী হয়, কিন্তু যদি তাদের এ থেকে দেয়া না হয় তো দেখো! -- তারা রাগ করে!
وَلَوۡ أَنَّهُمۡ رَضُوا۟ مَاۤ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَقَالُوا۟ حَسۡبُنَا ٱللَّهُ سَیُؤۡتِینَا ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ وَرَسُولُهُۥۤ إِنَّاۤ إِلَى ٱللَّهِ رَ ٰغِبُونَ ﴿59﴾
আর ওরা যদি সন্তষ্ট থাকতো আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল ওদের যা দিয়েছেন তাতে, আর বলতো -- ''আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট, -- আল্লাহ্ শীঘ্রই তাঁর করুণাভান্ডার থেকে আমাদের দেবেন আর তাঁর রসূলও, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্র কাছেই আমরা আসক্ত’’।
۞ إِنَّمَا ٱلصَّدَقَـٰتُ لِلۡفُقَرَاۤءِ وَٱلۡمَسَـٰكِینِ وَٱلۡعَـٰمِلِینَ عَلَیۡهَا وَٱلۡمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمۡ وَفِی ٱلرِّقَابِ وَٱلۡغَـٰرِمِینَ وَفِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِیلِۖ فَرِیضَةࣰ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿60﴾
দান তো কেবল অক্ষমদের জন্য, আর অভাবগ্রস্তদের, আর এর জন্য নিযুক্ত কর্মচারীদের, আর যাদের হৃদয় ঝোঁকোনো হয় তাদের, আর দাস-মুক্তির, আর ঋণগ্রস্তদের, আর আল্লাহ্র পথে, আর পর্যটকদের জন্য, -- আল্লাহ্র তরফ থেকে এই বিধান। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।
وَمِنۡهُمُ ٱلَّذِینَ یُؤۡذُونَ ٱلنَّبِیَّ وَیَقُولُونَ هُوَ أُذُنࣱۚ قُلۡ أُذُنُ خَیۡرࣲ لَّكُمۡ یُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَیُؤۡمِنُ لِلۡمُؤۡمِنِینَ وَرَحۡمَةࣱ لِّلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مِنكُمۡۚ وَٱلَّذِینَ یُؤۡذُونَ رَسُولَ ٱللَّهِ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿61﴾
আর ওদের এমনও আছে যারা নবীকে উত্ত্যক্ত করে আর বলে -- ''উনি তো কান দেন।’’ তুমি বলো -- ''কান দেন তোমাদের ভালোর জন্যে, তিনি আল্লাহ্তে বিশ্বাস করেন আর বিশ্বাস করেন মুমিনদের, আর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে তাদের জন্য তিনি করুণা।’’ আর যারা আল্লাহ্র রসূলকে উত্ত্যক্ত ক’রে তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
یَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ لَكُمۡ لِیُرۡضُوكُمۡ وَٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥۤ أَحَقُّ أَن یُرۡضُوهُ إِن كَانُوا۟ مُؤۡمِنِینَ ﴿62﴾
তারা তোমাদের কাছে আল্লাহ্র নামে হলফ করে যেন তারা তোমাদের খুশী করতে পারে, অথচ আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের বেশী অধিকার আছে যেন তারা তাঁকে রাজী করে, যদি তারা মুমিন হয়।
أَلَمۡ یَعۡلَمُوۤا۟ أَنَّهُۥ مَن یُحَادِدِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَأَنَّ لَهُۥ نَارَ جَهَنَّمَ خَـٰلِدࣰا فِیهَاۚ ذَ ٰلِكَ ٱلۡخِزۡیُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿63﴾
তারা কি জানে না যে যে-কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে কাজ করে তার জন্য তবে রয়েছে জাহান্নামের আগুন তাতে অবস্থানের জন্যে? ঐটিই তো চরম লাঞ্ছনা।
یَحۡذَرُ ٱلۡمُنَـٰفِقُونَ أَن تُنَزَّلَ عَلَیۡهِمۡ سُورَةࣱ تُنَبِّئُهُم بِمَا فِی قُلُوبِهِمۡۚ قُلِ ٱسۡتَهۡزِءُوۤا۟ إِنَّ ٱللَّهَ مُخۡرِجࣱ مَّا تَحۡذَرُونَ ﴿64﴾
মুনাফিকরা ভয় করে পাছে তাদের সংক্রান্তে এমন কোনো সূরা অবতীর্ণ হয়ে যায় যা ওদের অন্তরে যা-কিছু আছে তা তাদের ব্যক্ত করে দেবে! বলো -- ''বিদ্রূপ ক’রে যাও, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ বের করে আনবেন তোমরা যা ভয় করো তা।’’
وَلَىِٕن سَأَلۡتَهُمۡ لَیَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلۡعَبُۚ قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَایَـٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ﴿65﴾
আর তুমি যদি ওদের প্রশ্ন করো ওরা নিশ্চয়ই বলবে -- ''আমরা তো শুধু আলাপ-আলোচনা ও ক্রীড়া-কৌতুক করছিলাম।’’ বলো -- ''তোমরা কি আল্লাহ্ ও তাঁর বাণীসমূহ ও তাঁর রসূলকে নিয়ে মস্করা করছিলে?’’
لَا تَعۡتَذِرُوا۟ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِیمَـٰنِكُمۡۚ إِن نَّعۡفُ عَن طَاۤىِٕفَةࣲ مِّنكُمۡ نُعَذِّبۡ طَاۤىِٕفَةَۢ بِأَنَّهُمۡ كَانُوا۟ مُجۡرِمِینَ ﴿66﴾
অজুহাত দেখিও না, তোমরা আলবৎ অবিশ্বাস করেছ তোমাদের বিশ্বাস স্থাপনের পরে। যদি আমরা ক্ষমা করি তোমাদের মধ্যের কোনো এক দলকে, অন্য এক দলকে শাস্তিও দেবো, কেননা তারা নিশ্চয়ই অপরাধী।
ٱلۡمُنَـٰفِقُونَ وَٱلۡمُنَـٰفِقَـٰتُ بَعۡضُهُم مِّنۢ بَعۡضࣲۚ یَأۡمُرُونَ بِٱلۡمُنكَرِ وَیَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمَعۡرُوفِ وَیَقۡبِضُونَ أَیۡدِیَهُمۡۚ نَسُوا۟ ٱللَّهَ فَنَسِیَهُمۡۚ إِنَّ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ ﴿67﴾
মুনাফিক পুরুষরা ও মুনাফিক নারীরা -- তাদের কতকজন অপর কতকজনের মধ্যেকার। তারা অসৎ কাজের নির্দেশ দেয় আর সৎকাজে নিষেধ করে, আর তারা নিজেদের হাত গুটিয়ে নেয়। তারা আল্লাহ্কে ভুলে গেছে, তাই তিনিও তাদের ভুলে গেছেন। নিঃসন্দেহ মুনাফিকরা নিজেরাই দুষ্কৃতিকারী।
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلۡمُنَـٰفِقِینَ وَٱلۡمُنَـٰفِقَـٰتِ وَٱلۡكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ هِیَ حَسۡبُهُمۡۚ وَلَعَنَهُمُ ٱللَّهُۖ وَلَهُمۡ عَذَابࣱ مُّقِیمࣱ ﴿68﴾
মুনাফিক পুরুষদের ও মুনাফিক নারীদের ও অবিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহ্ ওয়াদা করেছেন জাহান্নামের আগুন, তাতে তারা অবস্থান করবে। তাই তাদের জন্য পর্যাপ্ত, আর আল্লাহ্ তাদের ধিক্কার দিয়েছেন, আর তাদের জন্য রয়েছে নির্ধারিত শাস্তি।
كَٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُمۡ كَانُوۤا۟ أَشَدَّ مِنكُمۡ قُوَّةࣰ وَأَكۡثَرَ أَمۡوَ ٰلࣰا وَأَوۡلَـٰدࣰا فَٱسۡتَمۡتَعُوا۟ بِخَلَـٰقِهِمۡ فَٱسۡتَمۡتَعۡتُم بِخَلَـٰقِكُمۡ كَمَا ٱسۡتَمۡتَعَ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُم بِخَلَـٰقِهِمۡ وَخُضۡتُمۡ كَٱلَّذِی خَاضُوۤا۟ۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡخَـٰسِرُونَ ﴿69﴾
তাদের মতো যারা ছিল তোমাদের পূর্ববর্তীকালে, -- তারা ছিল তোমাদের চাইতে বল-বিক্রমে বেশী প্রবল আর ধন-সম্পদে ও সন্তান সন্ততিতে বেশী সমৃদ্ধ। কাজেই তারা তাদের ভাগ ভোগ করে গেছে, অতএব তোমরাও তোমাদের ভাগ ভোগ করছো, যেমন ওরা যারা তোমাদের পূর্ববর্তী ছিল তারা ভোগ করেছিল তাদের ভাগ, আর তোমরাও বৃথা-বাক্যালাপ করছো যেমন তারা অনর্থক খোশ- গল্প করেছিল। এরাই -- এদের ক্রিয়াকলাপ ব্যর্থ হয়েছে ইহকালে ও পরকালে, আর এরা নিজেরাই হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত।
أَلَمۡ یَأۡتِهِمۡ نَبَأُ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡ قَوۡمِ نُوحࣲ وَعَادࣲ وَثَمُودَ وَقَوۡمِ إِبۡرَ ٰهِیمَ وَأَصۡحَـٰبِ مَدۡیَنَ وَٱلۡمُؤۡتَفِكَـٰتِۚ أَتَتۡهُمۡ رُسُلُهُم بِٱلۡبَیِّنَـٰتِۖ فَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِیَظۡلِمَهُمۡ وَلَـٰكِن كَانُوۤا۟ أَنفُسَهُمۡ یَظۡلِمُونَ ﴿70﴾
তাদের কাছে কি তাদের পূর্বে যারা ছিল তাদের সংবাদ আসে নি -- নূহ্-এর লোকদের ও 'আদ-এর ও ছামূদের, আর ইব্রাহীমের সম্প্রদায়ের ও মাদয়ানের বাসিন্দাদের ও বিধবস্ত শহরগুলোর? ওদের কাছে ওদের রসূলগণ এসেছিলেন স্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে। কাজেই আল্লাহ্ তো ওদের উপরে অবিচার করার জন্য নন, কিন্তু ওরা ওদের নিজেদেরই প্রতি জুলুম করেছিল।
وَٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَٱلۡمُؤۡمِنَـٰتُ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِیَاۤءُ بَعۡضࣲۚ یَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَیَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَیُقِیمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَیُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَیُطِیعُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۤۚ أُو۟لَـٰۤىِٕكَ سَیَرۡحَمُهُمُ ٱللَّهُۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِیزٌ حَكِیمࣱ ﴿71﴾
আর মুমিন পুরুষরা ও মুমিন নারীরা -- তাদের কতকজন অপর কতকজনের বন্ধু। তারা ভালো কাজের নির্দেশ দেয় ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে, আর তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলকে অনুসরণ করে। এরা -- আল্লাহ্ শীঘ্রই এদের করুণা করবেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَٱلۡمُؤۡمِنَـٰتِ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَا وَمَسَـٰكِنَ طَیِّبَةࣰ فِی جَنَّـٰتِ عَدۡنࣲۚ وَرِضۡوَ ٰنࣱ مِّنَ ٱللَّهِ أَكۡبَرُۚ ذَ ٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿72﴾
বিশ্বাসী পুরুষদের ও বিশ্বাসিনী নারীদের আল্লাহ্ ওয়াদা করেছেন স্বর্গোদ্যানসমূহ যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, তারা তাতে অবস্থান করবে, আর পুণ্য বাসস্থানসমূহ ইডেন গার্ডেনে। আর আল্লাহ্র সন্তষ্টিই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ। এটি -- এই-ই হচ্ছে চরম সাফল্য।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلنَّبِیُّ جَـٰهِدِ ٱلۡكُفَّارَ وَٱلۡمُنَـٰفِقِینَ وَٱغۡلُظۡ عَلَیۡهِمۡۚ وَمَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِیرُ ﴿73﴾
হে প্রিয় নবী! অবিশ্বাসীদের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করো, আর তাদের প্রতি কঠোর হও। আর তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম। আর মন্দ সেই গন্তব্যস্থান।
یَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ مَا قَالُوا۟ وَلَقَدۡ قَالُوا۟ كَلِمَةَ ٱلۡكُفۡرِ وَكَفَرُوا۟ بَعۡدَ إِسۡلَـٰمِهِمۡ وَهَمُّوا۟ بِمَا لَمۡ یَنَالُوا۟ۚ وَمَا نَقَمُوۤا۟ إِلَّاۤ أَنۡ أَغۡنَىٰهُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ مِن فَضۡلِهِۦۚ فَإِن یَتُوبُوا۟ یَكُ خَیۡرࣰا لَّهُمۡۖ وَإِن یَتَوَلَّوۡا۟ یُعَذِّبۡهُمُ ٱللَّهُ عَذَابًا أَلِیمࣰا فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِۚ وَمَا لَهُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ مِن وَلِیࣲّ وَلَا نَصِیرࣲ ﴿74﴾
তারা আল্লাহ্র নামে হলফ করে যে তারা কিছু বলে নি, অথচ তারা নিশ্চয়ই অবিশ্বাসের কথা বলেছিল, আর অবিশ্বাস পোষণ করেছিল তাদের ইসলাম গ্রহণের পরে, আর তারা মতলব করেছিল যা তারা পেরে ওঠে নি, আর তারা উত্তেজনা বোধ করে নি এ ভিন্ন যে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল তাদের সমৃদ্ধ করেছেন তাঁর প্রাচুর্য থেকে। কাজেই যদি তারা তওবা করে তবে সেটি তাদের জন্য হবে ভালো, আর যদি তারা ফিরে যায় তবে আল্লাহ্ তাদের শাস্তি দেবেন মর্মন্তুদ শাস্তিতে -- এই দুনিয়াতে ও পরকালে। আর তাদের জন্য এই পৃথিবীতে থাকবে না কোনো বন্ধুবান্ধব, না কোনো সাহায্যকারী।
۞ وَمِنۡهُم مَّنۡ عَـٰهَدَ ٱللَّهَ لَىِٕنۡ ءَاتَىٰنَا مِن فَضۡلِهِۦ لَنَصَّدَّقَنَّ وَلَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلصَّـٰلِحِینَ ﴿75﴾
আর ওদের মধ্যে কেউ-কেউ আল্লাহ্র কাছে অঙ্গীকার করেছিল -- ''তিনি যদি তাঁর করুণাভান্ডার থেকে আমাদের দান করেন তবে আমরা নিশ্চয়ই সদকা-খয়রাত করবো আর আমরা অবশ্যই হবো সৎকর্মীদের মধ্যেকার।’’
فَلَمَّاۤ ءَاتَىٰهُم مِّن فَضۡلِهِۦ بَخِلُوا۟ بِهِۦ وَتَوَلَّوا۟ وَّهُم مُّعۡرِضُونَ ﴿76﴾
কিন্তু যখন তিনি তাদের দিলেন তাঁর করুণাভান্ডার থেকে, তারা এতে কার্পণ্য করলো ও ফিরে গেল আর তারা হলো বিমুখ।
فَأَعۡقَبَهُمۡ نِفَاقࣰا فِی قُلُوبِهِمۡ إِلَىٰ یَوۡمِ یَلۡقَوۡنَهُۥ بِمَاۤ أَخۡلَفُوا۟ ٱللَّهَ مَا وَعَدُوهُ وَبِمَا كَانُوا۟ یَكۡذِبُونَ ﴿77﴾
সুতরাং তিনি তাদের অন্তরে মুনাফিকি ন্যস্ত করেছেন সেদিন পর্যন্ত যেদিন তারা তাঁর সাথে মিলিত হবে, কেননা তারা আল্লাহ্র কাছে ভঙ্গ করেছিল যা তাঁর কাছে তারা ওয়াদা করেছিল, আর যেহেতু তারা মিথ্যাকথা বললো।
أَلَمۡ یَعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ یَعۡلَمُ سِرَّهُمۡ وَنَجۡوَىٰهُمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ عَلَّـٰمُ ٱلۡغُیُوبِ ﴿78﴾
তারা কি জানে না যে আল্লাহ্ অবশ্যই জানেন তাদের লুকোনো ও তাদের সলাপরামর্শ, আর আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ অদৃশ্য ব্যাপারগুলো সম্পর্কে পরিজ্ঞাত।
ٱلَّذِینَ یَلۡمِزُونَ ٱلۡمُطَّوِّعِینَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ فِی ٱلصَّدَقَـٰتِ وَٱلَّذِینَ لَا یَجِدُونَ إِلَّا جُهۡدَهُمۡ فَیَسۡخَرُونَ مِنۡهُمۡ سَخِرَ ٱللَّهُ مِنۡهُمۡ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمٌ ﴿79﴾
যারা বিদ্রূপ করে মুমিনদের মধ্যের তাদের যারা দানদক্ষিণায় বদান্য আর তাদের যারা কিছুই পায় না নিজেদের কায়িক শ্রম ব্যতীত, অথচ এদের তারা অবজ্ঞা করে, -- আল্লাহ্ তাদের অবজ্ঞা করবেন, আর তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
ٱسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ أَوۡ لَا تَسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ إِن تَسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ سَبۡعِینَ مَرَّةࣰ فَلَن یَغۡفِرَ ٱللَّهُ لَهُمۡۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَفَرُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿80﴾
তুমি ওদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো অথবা ওদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করো, -- তুমি যদি ওদের জন্য সত্তরবারও ক্ষমা প্রার্থনা করো আল্লাহ্ কখনো ওদের ক্ষমা করবেন না। এটি এইজন্য যে তারা আল্লাহ্তে ও তাঁর রসূলের প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করে। আর আল্লাহ্ দুষ্কৃতিকারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
فَرِحَ ٱلۡمُخَلَّفُونَ بِمَقۡعَدِهِمۡ خِلَـٰفَ رَسُولِ ٱللَّهِ وَكَرِهُوۤا۟ أَن یُجَـٰهِدُوا۟ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَقَالُوا۟ لَا تَنفِرُوا۟ فِی ٱلۡحَرِّۗ قُلۡ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرࣰّاۚ لَّوۡ كَانُوا۟ یَفۡقَهُونَ ﴿81﴾
যারা পেছনে রয়ে গিয়েছিল তারা আল্লাহ্র রসূলের পশ্চাতে তাদের বসে থাকাতেই আনন্দবোধ করলো, আর তাদের ধনদৌলত ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করতে তারা বিমুখ ছিল, আর তারা বলেছিল -- ''এই গরমের মধ্যে বেরিয়ো না।’’ তুমি বলো -- ''জাহান্নামের আগুন আরো বেশী গরম।’’ যদি তারা বুঝতে পারতো!
فَلۡیَضۡحَكُوا۟ قَلِیلࣰا وَلۡیَبۡكُوا۟ كَثِیرࣰا جَزَاۤءَۢ بِمَا كَانُوا۟ یَكۡسِبُونَ ﴿82﴾
অতএব তারা কিছুটা হেসে নিক ও খুব ক’রে কাঁদুক, -- তারা যা অর্জন করছিল তার প্রতিফলস্বরূপ?
فَإِن رَّجَعَكَ ٱللَّهُ إِلَىٰ طَاۤىِٕفَةࣲ مِّنۡهُمۡ فَٱسۡتَـٔۡذَنُوكَ لِلۡخُرُوجِ فَقُل لَّن تَخۡرُجُوا۟ مَعِیَ أَبَدࣰا وَلَن تُقَـٰتِلُوا۟ مَعِیَ عَدُوًّاۖ إِنَّكُمۡ رَضِیتُم بِٱلۡقُعُودِ أَوَّلَ مَرَّةࣲ فَٱقۡعُدُوا۟ مَعَ ٱلۡخَـٰلِفِینَ ﴿83﴾
কাজেই আল্লাহ্ যদি তোমাকে ফিরিয়ে আনেন তাদের মধ্যের কোনো দলের নিকট, তারপর তারা যদি তোমার অনুমতি চায় বের হওয়ার জন্য তবে বলো -- ''তোমরা কোনো ক্রমেই আমার সাথে কখনো বেরুতে পারবে না, এবং তোমরা আমার সঙ্গী হয়ে কখনো কোনো শত্রুর বিরূদ্ধে লড়তে পারবে না। নিঃসন্দেহ তোমরা বসে থাকাতেই সন্তষ্ট ছিলে প্রথম বারে, অতএব বসে থাকো পশ্চাতে অবস্থানকারীদের সঙ্গে।’’
وَلَا تُصَلِّ عَلَىٰۤ أَحَدࣲ مِّنۡهُم مَّاتَ أَبَدࣰا وَلَا تَقُمۡ عَلَىٰ قَبۡرِهِۦۤۖ إِنَّهُمۡ كَفَرُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَمَاتُوا۟ وَهُمۡ فَـٰسِقُونَ ﴿84﴾
আর তাদের মধ্যের একজনের জন্যেও, সে মারা গেলে, তুমি কখনো নামায পড়বে না, আর তার কবরের পাশেও দাঁড়াবে না। নিঃসন্দহে তারা আল্লাহ্তে ও তাঁর রসূলে অবিশ্বাস করেছে, আর তারা মরেছে যখন তারা ছিল দুষ্কৃতিপরায়ণ।
وَلَا تُعۡجِبۡكَ أَمۡوَ ٰلُهُمۡ وَأَوۡلَـٰدُهُمۡۚ إِنَّمَا یُرِیدُ ٱللَّهُ أَن یُعَذِّبَهُم بِهَا فِی ٱلدُّنۡیَا وَتَزۡهَقَ أَنفُسُهُمۡ وَهُمۡ كَـٰفِرُونَ ﴿85﴾
আর তাদের ধনসম্পত্তি ও তাদের সন্তানসন্ততি তোমাকে যেন তাজ্জব না করে। আল্লাহ্ অবশ্যই চান এ-সবের দ্বারা পার্থিব জীবনে তাদের শাস্তি দিতে, আর যেন তাদের আত্মা চলে যায় ওদের অবিশ্বাসী থাকা অবস্থায়।
وَإِذَاۤ أُنزِلَتۡ سُورَةٌ أَنۡ ءَامِنُوا۟ بِٱللَّهِ وَجَـٰهِدُوا۟ مَعَ رَسُولِهِ ٱسۡتَـٔۡذَنَكَ أُو۟لُوا۟ ٱلطَّوۡلِ مِنۡهُمۡ وَقَالُوا۟ ذَرۡنَا نَكُن مَّعَ ٱلۡقَـٰعِدِینَ ﴿86﴾
আর যখন কোনো সূরা অবতীর্ণ হয় এই মর্মে -- 'আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনো ও তাঁর রসূলের সঙ্গী হয়ে সংগ্রাম করো’, তাদের মধ্যের শক্তি- সামর্থের অধিকারীরা তোমার কাছে অব্যাহতি চায় ও বলে -- ''আমাদের রেহাই দিন, আমরা বসে-থাকা-লোকদের সঙ্গে ই থাকবো।’’
رَضُوا۟ بِأَن یَكُونُوا۟ مَعَ ٱلۡخَوَالِفِ وَطُبِعَ عَلَىٰ قُلُوبِهِمۡ فَهُمۡ لَا یَفۡقَهُونَ ﴿87﴾
তারা পেছনে-রয়ে-থাকাদের সাথে অবস্থান করাই পছন্দ করেছিল, আর তাদের হৃদয়ের উপরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে, কাজেই তারা বুঝতে পারে না।
لَـٰكِنِ ٱلرَّسُولُ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مَعَهُۥ جَـٰهَدُوا۟ بِأَمۡوَ ٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡۚ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ لَهُمُ ٱلۡخَیۡرَ ٰتُۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ﴿88﴾
কিন্তু রসূল এবং যারা তাঁর সঙ্গে ঈমান এনেছে তারা সংগ্রাম করে তাদের ধনদৌলত ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে। আর এরাই -- এদের জন্যেই রয়েছে কল্যাণ, আর এরা নিজেরাই হচ্ছে সফলকাম।
أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۚ ذَ ٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿89﴾
আল্লাহ্ এদের জন্য প্রস্তুত করেছেন স্বর্গোদ্যানসমূহ, যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, তারা সেখানে থাকবে স্থায়ীভাবে। এটি হচ্ছে বিরাট সাফল্য।
وَجَاۤءَ ٱلۡمُعَذِّرُونَ مِنَ ٱلۡأَعۡرَابِ لِیُؤۡذَنَ لَهُمۡ وَقَعَدَ ٱلَّذِینَ كَذَبُوا۟ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۚ سَیُصِیبُ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِنۡهُمۡ عَذَابٌ أَلِیمࣱ ﴿90﴾
আর বেদুইনদের মধ্যের ওজর প্রদর্শনকারীরা এসেছিল যেন তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়, আর যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের কাছে মিথ্যাকথা বলেছিল তারা বসে রইল। তাদের মধ্যের যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের অচিরেই মর্মন্তুদ শাস্তি দেয়া হবে।
لَّیۡسَ عَلَى ٱلضُّعَفَاۤءِ وَلَا عَلَى ٱلۡمَرۡضَىٰ وَلَا عَلَى ٱلَّذِینَ لَا یَجِدُونَ مَا یُنفِقُونَ حَرَجٌ إِذَا نَصَحُوا۟ لِلَّهِ وَرَسُولِهِۦۚ مَا عَلَى ٱلۡمُحۡسِنِینَ مِن سَبِیلࣲۚ وَٱللَّهُ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿91﴾
দুর্বলদের উপরে, কোনো দোষ হবে না, পীড়িতদের উপরেও না, ওদের উপরেও না যারা খুঁজে পায় না কি তারা খরচ করবে, যে পর্যন্ত তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের প্রতি অনুরাগ দেখাবে। সৎকর্মপরায়ণদের উপরে কোনো রাস্তা নেই। আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
وَلَا عَلَى ٱلَّذِینَ إِذَا مَاۤ أَتَوۡكَ لِتَحۡمِلَهُمۡ قُلۡتَ لَاۤ أَجِدُ مَاۤ أَحۡمِلُكُمۡ عَلَیۡهِ تَوَلَّوا۟ وَّأَعۡیُنُهُمۡ تَفِیضُ مِنَ ٱلدَّمۡعِ حَزَنًا أَلَّا یَجِدُوا۟ مَا یُنفِقُونَ ﴿92﴾
আর ওদের উপরেও নেই যারা তোমার কাছে এসেছিল যেন তুমি তাদের জন্য বাহন যোগাড় করে দাও, তখন তুমি বলেছিল -- 'যার উপরে আমি তোমাদের বহন করব তা আমি পাচ্ছি না’, ওরা ফিরে গিয়েছিল আর ওদের চোখে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল তারা যা খরচ করতে চায় তা না পাওয়ার দুঃখে।
۞ إِنَّمَا ٱلسَّبِیلُ عَلَى ٱلَّذِینَ یَسۡتَـٔۡذِنُونَكَ وَهُمۡ أَغۡنِیَاۤءُۚ رَضُوا۟ بِأَن یَكُونُوا۟ مَعَ ٱلۡخَوَالِفِ وَطَبَعَ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمۡ فَهُمۡ لَا یَعۡلَمُونَ ﴿93﴾
বস্তুতঃ পথ তাদেরই বিরুদ্ধে যারা তোমার কাছে অব্যাহতি চায় অথচ তারা বিত্তবান। তারা পেছনে রয়ে থাকাদের সাথে অবস্থানই পছন্দ করেছিল, আর আল্লাহ্ তাদের হৃদয়ের উপরে মোহর মেরে দিয়েছেন, যেজন্য তারা বুঝতে পারে না।
یَعۡتَذِرُونَ إِلَیۡكُمۡ إِذَا رَجَعۡتُمۡ إِلَیۡهِمۡۚ قُل لَّا تَعۡتَذِرُوا۟ لَن نُّؤۡمِنَ لَكُمۡ قَدۡ نَبَّأَنَا ٱللَّهُ مِنۡ أَخۡبَارِكُمۡۚ وَسَیَرَى ٱللَّهُ عَمَلَكُمۡ وَرَسُولُهُۥ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَىٰ عَـٰلِمِ ٱلۡغَیۡبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِ فَیُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ﴿94﴾
তারা তোমাদের কাছে অজুহাত দেখাবে যে কেন তারা যখন তোমরা তাদের কাছে ফিরে আসবে। তুমি বলো -- ''অজুহাত পেশ করো না, আমরা কখনো তোমাদের বিশ্বাস করব না, আল্লাহ্ ইতিমধ্যে তোমাদের খবরাখবর আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। আর আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল অবশ্যই তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন, তারপর তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে অদৃশ্য ও দৃশ্য বস্তুর পরিজ্ঞাতার নিকটে, তখন তিনি তোমাদের জানিয়ে দেবেন যা তোমরা করে যাচ্ছিলে।’’
سَیَحۡلِفُونَ بِٱللَّهِ لَكُمۡ إِذَا ٱنقَلَبۡتُمۡ إِلَیۡهِمۡ لِتُعۡرِضُوا۟ عَنۡهُمۡۖ فَأَعۡرِضُوا۟ عَنۡهُمۡۖ إِنَّهُمۡ رِجۡسࣱۖ وَمَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُ جَزَاۤءَۢ بِمَا كَانُوا۟ یَكۡسِبُونَ ﴿95﴾
তোমরা তাদের কাছে সঙ্গে-সঙ্গে আল্লাহ্র নামে তোমাদের কাছে শপথ করবে যেন তাদের তোমরা উপেক্ষা করো। কাজেই তোমরা তাদের উপেক্ষা করবে। নিঃসন্দেহ তারা ঘৃণ্য, আর তাদের আশ্রয়স্থল হচ্ছে জাহান্নাম -- তারা যা কর ছিল এ তারই প্রতিদান!
یَحۡلِفُونَ لَكُمۡ لِتَرۡضَوۡا۟ عَنۡهُمۡۖ فَإِن تَرۡضَوۡا۟ عَنۡهُمۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا یَرۡضَىٰ عَنِ ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡفَـٰسِقِینَ ﴿96﴾
তারা তোমাদের কাছে হলফ করবে যেন তোমরা তাদের প্রতি সন্তষ্ট হও। কিন্তু তোমরা যদিও বা তাদের প্রতি সন্তষ্ট হও তথাপি আল্লাহ্ নিশ্চয়ই দুষ্কৃতিকারিগোষ্ঠীর প্রতি তুষ্ট হবেন না।
ٱلۡأَعۡرَابُ أَشَدُّ كُفۡرࣰا وَنِفَاقࣰا وَأَجۡدَرُ أَلَّا یَعۡلَمُوا۟ حُدُودَ مَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ عَلَىٰ رَسُولِهِۦۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿97﴾
বেদুইনরা অবিশ্বাসে ও মুনাফিকিতে অতিশয় অটল, আর আল্লাহ্ তাঁর রসূলের কাছে যা অবতারণ করেছেন তার চৌহদ্দি না জানার প্রতিই বেশী অনুরক্ত। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।
وَمِنَ ٱلۡأَعۡرَابِ مَن یَتَّخِذُ مَا یُنفِقُ مَغۡرَمࣰا وَیَتَرَبَّصُ بِكُمُ ٱلدَّوَاۤىِٕرَۚ عَلَیۡهِمۡ دَاۤىِٕرَةُ ٱلسَّوۡءِۗ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمࣱ ﴿98﴾
আর বেদুইনদের মধ্যে কেউ-কেউ ধরে নেয় যে সে যা খরচ করে তা জরিমানা, আর তোমাদের জন্য প্রতীক্ষা করে বিপর্যয়ের। তাদেরই উপরে ঘটবে অশুভ বিপর্যয়, আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।
وَمِنَ ٱلۡأَعۡرَابِ مَن یُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَٱلۡیَوۡمِ ٱلۡـَٔاخِرِ وَیَتَّخِذُ مَا یُنفِقُ قُرُبَـٰتٍ عِندَ ٱللَّهِ وَصَلَوَ ٰتِ ٱلرَّسُولِۚ أَلَاۤ إِنَّهَا قُرۡبَةࣱ لَّهُمۡۚ سَیُدۡخِلُهُمُ ٱللَّهُ فِی رَحۡمَتِهِۦۤۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمࣱ ﴿99﴾
আর বেদুইনদের মধ্যের কেউ-কেউ আল্লাহ্তে ও শেষদিনে ঈমান আনে, আর যা সে খরচ করে তা আল্লাহ্র নৈকট্য ও রসূলের আশীর্বাদ আনবে বলে গণ্য করে। বাস্তবিকই এ নিঃসন্দেহ তাদের জন্য নৈকট্যলাভ। আল্লাহ্ অচিরেই তাদের প্রবেশ করাবেন তাঁর করুণাসিন্ধুতে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
وَٱلسَّـٰبِقُونَ ٱلۡأَوَّلُونَ مِنَ ٱلۡمُهَـٰجِرِینَ وَٱلۡأَنصَارِ وَٱلَّذِینَ ٱتَّبَعُوهُم بِإِحۡسَـٰنࣲ رَّضِیَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُوا۟ عَنۡهُ وَأَعَدَّ لَهُمۡ جَنَّـٰتࣲ تَجۡرِی تَحۡتَهَا ٱلۡأَنۡهَـٰرُ خَـٰلِدِینَ فِیهَاۤ أَبَدࣰاۚ ذَ ٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿100﴾
আর মুহাজিরদের ও আনসারদের মধ্যের অগ্রবর্তীরা -- প্রাথমিকরা, আর যারা তাদের অনুসরণ করেছিল কল্যাণকর্মের সাথে -- আল্লাহ্ তাদের উপরে সন্তষ্ট আর তারাও সন্তষ্ট তাঁর উপরে; আর তাদের জন্য তিনি প্রস্তুত করেছেন স্বর্গোদ্যানসমূহ, যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল, -- এই হচ্ছে মহাসাফল্য।
وَمِمَّنۡ حَوۡلَكُم مِّنَ ٱلۡأَعۡرَابِ مُنَـٰفِقُونَۖ وَمِنۡ أَهۡلِ ٱلۡمَدِینَةِ مَرَدُوا۟ عَلَى ٱلنِّفَاقِ لَا تَعۡلَمُهُمۡۖ نَحۡنُ نَعۡلَمُهُمۡۚ سَنُعَذِّبُهُم مَّرَّتَیۡنِ ثُمَّ یُرَدُّونَ إِلَىٰ عَذَابٍ عَظِیمࣲ ﴿101﴾
আর বেদুইনদের মধ্যের যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের মধ্যে রয়েছে মুনাফিকরা, আবার মদীনার বাসিন্দাদের মধ্যেও -- ওরা কপটতায় নাছোড়বান্দা। তুমি তাদের জানো না, আমরা ওদের জানি। আমরা অচিরেই তাদের দু বার শাস্তি দেবো, তারপর তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে কঠোর শাস্তির দিকে।
وَءَاخَرُونَ ٱعۡتَرَفُوا۟ بِذُنُوبِهِمۡ خَلَطُوا۟ عَمَلࣰا صَـٰلِحࣰا وَءَاخَرَ سَیِّئًا عَسَى ٱللَّهُ أَن یَتُوبَ عَلَیۡهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورࣱ رَّحِیمٌ ﴿102﴾
আর অন্যরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে, তারা এক ভালো কাজের সাথে মন্দ অপরটি মিশিয়ে ফেলেছে। হতে পারে আল্লাহ্ তাদের দিকে ফিরবেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
خُذۡ مِنۡ أَمۡوَ ٰلِهِمۡ صَدَقَةࣰ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّیهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَیۡهِمۡۖ إِنَّ صَلَوٰتَكَ سَكَنࣱ لَّهُمۡۗ وَٱللَّهُ سَمِیعٌ عَلِیمٌ ﴿103﴾
তাদের ধনসম্পত্তি থেকে দান গ্রহণ করো, এর দ্বারা তুমি তাদের পবিত্র করতে ও তাদের পরিশোধিত করতে পারবে, আর তাদের তুমি আশীর্বাদ করবে। নিঃসন্দেহ তোমার আশীর্বাদ তাদের জন্য প্রশান্তিকর। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।
أَلَمۡ یَعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ هُوَ یَقۡبَلُ ٱلتَّوۡبَةَ عَنۡ عِبَادِهِۦ وَیَأۡخُذُ ٱلصَّدَقَـٰتِ وَأَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِیمُ ﴿104﴾
তারা কি জানে না যে আল্লাহ্ -- তিনিই তাঁর বান্দাদের থেকে তওবা কবুল করেন আর দান গ্রহণ করেন, আর আল্লাহ্ নিশ্চয়ই সদা ফেরেন, অফুরন্ত ফলদাতা।
وَقُلِ ٱعۡمَلُوا۟ فَسَیَرَى ٱللَّهُ عَمَلَكُمۡ وَرَسُولُهُۥ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَۖ وَسَتُرَدُّونَ إِلَىٰ عَـٰلِمِ ٱلۡغَیۡبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِ فَیُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ﴿105﴾
আর বলো -- ''তোমরা কাজ করে যাও, অচিরেই আল্লাহ্ তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন, আর তাঁর রসূল ও মুমিনরাও। আর শীঘ্রই তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতার নিকটে, তখন তিনি তোমাদের জানিয়ে দেবেন যা তোমরা করে যাচ্ছিলে।’’
وَءَاخَرُونَ مُرۡجَوۡنَ لِأَمۡرِ ٱللَّهِ إِمَّا یُعَذِّبُهُمۡ وَإِمَّا یَتُوبُ عَلَیۡهِمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ ﴿106﴾
আর অন্যরা আল্লাহ্র বিধানের অপেক্ষায় রয়েছে, হয়তো তিনি তাদের শাস্তি দেবেন, নয়তো তাদের প্রতি ফিরবেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।
وَٱلَّذِینَ ٱتَّخَذُوا۟ مَسۡجِدࣰا ضِرَارࣰا وَكُفۡرࣰا وَتَفۡرِیقَۢا بَیۡنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ وَإِرۡصَادࣰا لِّمَنۡ حَارَبَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ مِن قَبۡلُۚ وَلَیَحۡلِفُنَّ إِنۡ أَرَدۡنَاۤ إِلَّا ٱلۡحُسۡنَىٰۖ وَٱللَّهُ یَشۡهَدُ إِنَّهُمۡ لَكَـٰذِبُونَ ﴿107﴾
আর যারা একটি মসজিদ স্থাপন করলো ক্ষতিসাধনের ও অবিশ্বাসের জন্য, আর বিশ্বাসীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, আর তার ঘাঁটি স্বরূপ যে এর আগে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল, তারা নিশ্চয়ই হলফ করে বলবে -- ''আমরা তো চেয়ছিলাম শুধু ভালো।’’ কিন্তু আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে তারা তো আলবৎ মিথ্যাবাদী।
لَا تَقُمۡ فِیهِ أَبَدࣰاۚ لَّمَسۡجِدٌ أُسِّسَ عَلَى ٱلتَّقۡوَىٰ مِنۡ أَوَّلِ یَوۡمٍ أَحَقُّ أَن تَقُومَ فِیهِۚ فِیهِ رِجَالࣱ یُحِبُّونَ أَن یَتَطَهَّرُوا۟ۚ وَٱللَّهُ یُحِبُّ ٱلۡمُطَّهِّرِینَ ﴿108﴾
তুমি কখনো এতে দাঁড়াবে না। নিঃসন্দেহ সেই মসজিদ যা প্রথম দিন থেকেই ধর্মনিষ্ঠার উপরে স্থাপিত তার বেশি দাবি রয়েছে যে তুমি সেখানে দাঁড়াবে। তাতে এমন লোক রয়েছে যারা ভালো পায় যে তারা পবিত্র হবে। আর আল্লাহ্ ভালোবাসেন তাদের যারা পবিত্র হয়েছে।
أَفَمَنۡ أَسَّسَ بُنۡیَـٰنَهُۥ عَلَىٰ تَقۡوَىٰ مِنَ ٱللَّهِ وَرِضۡوَ ٰنٍ خَیۡرٌ أَم مَّنۡ أَسَّسَ بُنۡیَـٰنَهُۥ عَلَىٰ شَفَا جُرُفٍ هَارࣲ فَٱنۡهَارَ بِهِۦ فِی نَارِ جَهَنَّمَۗ وَٱللَّهُ لَا یَهۡدِی ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّـٰلِمِینَ ﴿109﴾
আচ্ছা! যে তা’হলে তার ভিত্তি গড়েছে আল্লাহ্র প্রতি ধর্মনিষ্ঠতা ও সন্তষ্টির উপরে সে-ই ভালো, না যে তার ভিত্তি স্থাপন করেছে পতনপ্রায় ধসের কিনারার উপরে, ফলে তা তাকে নিয়ে ভেঙে পড়লো জাহান্নামের আগুনে? আর আল্লাহ্ পথ দেখান না অন্যায়কারী লোকদের।
لَا یَزَالُ بُنۡیَـٰنُهُمُ ٱلَّذِی بَنَوۡا۟ رِیبَةࣰ فِی قُلُوبِهِمۡ إِلَّاۤ أَن تَقَطَّعَ قُلُوبُهُمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمٌ ﴿110﴾
তাদের যে ভবন তারা বানিয়েছে তা তাদের হৃদয়ে অশান্তি সৃষ্টি থেকে বিরত হবে না, যদি না তাদের হৃদয় কুটি কুটি করা হয়। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।
۞ إِنَّ ٱللَّهَ ٱشۡتَرَىٰ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ أَنفُسَهُمۡ وَأَمۡوَ ٰلَهُم بِأَنَّ لَهُمُ ٱلۡجَنَّةَۚ یُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ فَیَقۡتُلُونَ وَیُقۡتَلُونَۖ وَعۡدًا عَلَیۡهِ حَقࣰّا فِی ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَٱلۡإِنجِیلِ وَٱلۡقُرۡءَانِۚ وَمَنۡ أَوۡفَىٰ بِعَهۡدِهِۦ مِنَ ٱللَّهِۚ فَٱسۡتَبۡشِرُوا۟ بِبَیۡعِكُمُ ٱلَّذِی بَایَعۡتُم بِهِۦۚ وَذَ ٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِیمُ ﴿111﴾
নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মুমিনদের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন তাদের সত্ত্বা ও তাদের বিত্ত যেন তারা পেতে পারে বেহেশত। তারা আল্লাহ্র পথে লড়াই করে, ফলে তারা মারে ও মরে, -- এই ওয়াদা তাঁর জন্যে সত্য তওরাতে ও ইঞ্জীলে এবং কুরআনে। আর কে নিজ ওয়াদাতে বেশি সত্যনিষ্ঠ আল্লাহ্র চাইতে? অতএব আনন্দ করো তোমাদের সওদার জন্য যা তোমরা বিনিময় করেছ তাঁর সাথে। আর এইটিই হচ্ছে মহা সাফল্য।
ٱلتَّـٰۤىِٕبُونَ ٱلۡعَـٰبِدُونَ ٱلۡحَـٰمِدُونَ ٱلسَّـٰۤىِٕحُونَ ٱلرَّ ٰكِعُونَ ٱلسَّـٰجِدُونَ ٱلۡـَٔامِرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَٱلنَّاهُونَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَٱلۡحَـٰفِظُونَ لِحُدُودِ ٱللَّهِۗ وَبَشِّرِ ٱلۡمُؤۡمِنِینَ ﴿112﴾
তওবাকারীরা, উপাসনাকারীরা, মহিমাকীর্তনকারীরা, রোযা পালনকারীরা, রুকুকারীরা, সিজদাকারীরা, সৎকর্মে নিদের্শ- দানকারীরা ও অসৎকর্মে নিষেধকারীরা, এবং আল্লাহ্র চৌহদ্দি রক্ষাকারীরা। আর মুমিনদের তুমি সুসংবাদ দাও।
مَا كَانَ لِلنَّبِیِّ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَن یَسۡتَغۡفِرُوا۟ لِلۡمُشۡرِكِینَ وَلَوۡ كَانُوۤا۟ أُو۟لِی قُرۡبَىٰ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمۡ أَنَّهُمۡ أَصۡحَـٰبُ ٱلۡجَحِیمِ ﴿113﴾
নবী ও যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য নয় যে তাঁরা ক্ষমা প্রার্থনা করবেন বহুখোদাবাদীদের জন্যে, যদিও বা তারা নিকটাত্মীয় হয়, এটি তাঁদের কাছে স্পষ্ট হবার পরে যে তারা নিশ্চয়ই হচ্ছে জ্বলন্ত আগুনের বাসিন্দা।
وَمَا كَانَ ٱسۡتِغۡفَارُ إِبۡرَ ٰهِیمَ لِأَبِیهِ إِلَّا عَن مَّوۡعِدَةࣲ وَعَدَهَاۤ إِیَّاهُ فَلَمَّا تَبَیَّنَ لَهُۥۤ أَنَّهُۥ عَدُوࣱّ لِّلَّهِ تَبَرَّأَ مِنۡهُۚ إِنَّ إِبۡرَ ٰهِیمَ لَأَوَّ ٰهٌ حَلِیمࣱ ﴿114﴾
আর ইব্রাহীমের তাঁর পিতার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা শুধু এজন্য ছাড়া অন্য কারণে নয় যে একটি অঙ্গীকার যা তিনি ওর সন্বন্ধে ওয়াদা করেছিলেন। কিন্তু যখন এটি তাঁর কাছে পরিস্কার করা হ’ল যে সে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্র একজন শত্রু তখন তিনি ওর থেকে নির্লিপ্ত হয়ে গেলেন। নিঃসন্দেহ ইব্রাহীম ছিলেন কোমল হৃদয়ের, সহনশীল।
وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِیُضِلَّ قَوۡمَۢا بَعۡدَ إِذۡ هَدَىٰهُمۡ حَتَّىٰ یُبَیِّنَ لَهُم مَّا یَتَّقُونَۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیمٌ ﴿115﴾
এটি আল্লাহ্র নয় যে তিনি একটি সম্প্রদায়কে পথভ্রষ্ট করবেন তাদের তিনি পথ-দেখানোর পরে -- এতদূর যে তিনি তাদের কাছে সুস্পষ্ট করে দেন কিসে তারা ধর্মনিষ্ঠা পালন করবে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সব-কিছুতে সর্বজ্ঞাতা।
إِنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ یُحۡیِۦ وَیُمِیتُۚ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِیࣲّ وَلَا نَصِیرࣲ ﴿116﴾
নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ -- মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর রাজত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। আর আল্লাহ্কে ছেড়ে দিয়ে তোমাদের জন্য অভিভাবকের কেউ নেই বা সাহায্যকারীও নেই।
لَّقَد تَّابَ ٱللَّهُ عَلَى ٱلنَّبِیِّ وَٱلۡمُهَـٰجِرِینَ وَٱلۡأَنصَارِ ٱلَّذِینَ ٱتَّبَعُوهُ فِی سَاعَةِ ٱلۡعُسۡرَةِ مِنۢ بَعۡدِ مَا كَادَ یَزِیغُ قُلُوبُ فَرِیقࣲ مِّنۡهُمۡ ثُمَّ تَابَ عَلَیۡهِمۡۚ إِنَّهُۥ بِهِمۡ رَءُوفࣱ رَّحِیمࣱ ﴿117﴾
আল্লাহ্ নিশ্চয়ই ফিরেছেন নবীর প্রতি এবং মুহাজিরদের ও আনসারদের প্রতি যারা তাঁকে অনুসরণ করেছিল সঙ্কটের মুহূর্তে, তাদের একদলের মন প্রায় ঘুরে যাওয়ার পরেও, তারপর তিনি তাদের দিকে ফিরলেন। কারণ তিনি তাদের প্রতি পরম স্নেহময়, অফুরন্ত ফলদাতা।
وَعَلَى ٱلثَّلَـٰثَةِ ٱلَّذِینَ خُلِّفُوا۟ حَتَّىٰۤ إِذَا ضَاقَتۡ عَلَیۡهِمُ ٱلۡأَرۡضُ بِمَا رَحُبَتۡ وَضَاقَتۡ عَلَیۡهِمۡ أَنفُسُهُمۡ وَظَنُّوۤا۟ أَن لَّا مَلۡجَأَ مِنَ ٱللَّهِ إِلَّاۤ إِلَیۡهِ ثُمَّ تَابَ عَلَیۡهِمۡ لِیَتُوبُوۤا۟ۚ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِیمُ ﴿118﴾
আর তিনজনের প্রতি যাদের পিছনে ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন কিন্তু পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের কাছে তা সংকুচিত হয়েছিল, আর তাদের অন্তরাত্মাও তাদের জন্য হয়েছিল সংকুচিত, আর তারা বুঝতে পেরেছিল যে আল্লাহ্ থেকে কোনো আশ্রয় নেই তাঁর দিকে ছাড়া। অতঃপর তিনি তাদের দিকে ফিরলেন যেন তারাও ফেরে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ -- তিনি বারবার ফেরেন, অফুরন্ত ফলদাতা।
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَكُونُوا۟ مَعَ ٱلصَّـٰدِقِینَ ﴿119﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্কে ভয়শ্রদ্ধা করো আর সত্যপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত হও।
مَا كَانَ لِأَهۡلِ ٱلۡمَدِینَةِ وَمَنۡ حَوۡلَهُم مِّنَ ٱلۡأَعۡرَابِ أَن یَتَخَلَّفُوا۟ عَن رَّسُولِ ٱللَّهِ وَلَا یَرۡغَبُوا۟ بِأَنفُسِهِمۡ عَن نَّفۡسِهِۦۚ ذَ ٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ لَا یُصِیبُهُمۡ ظَمَأࣱ وَلَا نَصَبࣱ وَلَا مَخۡمَصَةࣱ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَلَا یَطَـُٔونَ مَوۡطِئࣰا یَغِیظُ ٱلۡكُفَّارَ وَلَا یَنَالُونَ مِنۡ عَدُوࣲّ نَّیۡلًا إِلَّا كُتِبَ لَهُم بِهِۦ عَمَلࣱ صَـٰلِحٌۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا یُضِیعُ أَجۡرَ ٱلۡمُحۡسِنِینَ ﴿120﴾
মদীনার বাসিন্দাদের ও তাদের আশপাশের বেদুইনদের জন্যে নয় যে তারা আল্লাহ্র রসূলের পিছনে থেকে যাবে, এবং নিজেদের জীবনকে তাঁর জীবনের চেয়ে বেশি প্রিয় মনে করাও নয়। এটি তাদের বেলা এই জন্য যে আল্লাহ্র পথে তাদের কষ্ট দেয় না পিপাসা, আর ক্লান্তিও না, আর ক্ষুধাও না, আর তারা এমন পথে পথ চলে না যা অবিশ্বাসীদের ক্রোধ উদ্রেক করে, আর তারা শত্রুর থেকে সংগ্রহ করে না কোনো সংগ্রহের বস্তু, -- তবে এ-সবের দ্বারা তাদের জন্যে লিখিত হয় শুভ কাজ। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সৎকর্মশীলদের পুরস্কার ব্যর্থ করেন না।
وَلَا یُنفِقُونَ نَفَقَةࣰ صَغِیرَةࣰ وَلَا كَبِیرَةࣰ وَلَا یَقۡطَعُونَ وَادِیًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمۡ لِیَجۡزِیَهُمُ ٱللَّهُ أَحۡسَنَ مَا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ ﴿121﴾
আর তারা খরচ করে না কোনো সামান্য খরচা আর কোনো বিরাটও নয়, আর তারা কোনো মাঠও পার হয় না তবে তাদের জন্যে তা লিখিত হয়ে যায়, যেন আল্লাহ্ তাদের পুরস্কার দিতে পারেন তারা যা করে যাচ্ছিল তার চেয়ে উত্তম।
۞ وَمَا كَانَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لِیَنفِرُوا۟ كَاۤفَّةࣰۚ فَلَوۡلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرۡقَةࣲ مِّنۡهُمۡ طَاۤىِٕفَةࣱ لِّیَتَفَقَّهُوا۟ فِی ٱلدِّینِ وَلِیُنذِرُوا۟ قَوۡمَهُمۡ إِذَا رَجَعُوۤا۟ إِلَیۡهِمۡ لَعَلَّهُمۡ یَحۡذَرُونَ ﴿122﴾
আর মুমিনদের পক্ষে সঙ্গত নয় যে তারা একজোটে বেরিয়ে পড়বে। সুতরাং তাদের মধ্যের প্রত্যেক গোত্র থেকে কেন একটি দল বেরিয়ে পড়ে না ধর্মে জ্ঞানানুশীলন করতে, যার ফলে তারা যেন নিজ নিজ সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে যখন তারা ফিরে আসে তাদের কাছে যাতে তারা সাবধান হতে পারে?
یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ قَـٰتِلُوا۟ ٱلَّذِینَ یَلُونَكُم مِّنَ ٱلۡكُفَّارِ وَلۡیَجِدُوا۟ فِیكُمۡ غِلۡظَةࣰۚ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُتَّقِینَ ﴿123﴾
ওহে যারা ঈমান এনছ! অবিশ্বাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের নিকটে রয়েছে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো, আর তারা যেন তোমাদের মধ্যে দেখতে পায় কঠোরতা। আর জেনে রেখো -- নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ ধর্মপরায়ণদের সাথে রয়েছেন।
وَإِذَا مَاۤ أُنزِلَتۡ سُورَةࣱ فَمِنۡهُم مَّن یَقُولُ أَیُّكُمۡ زَادَتۡهُ هَـٰذِهِۦۤ إِیمَـٰنࣰاۚ فَأَمَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ فَزَادَتۡهُمۡ إِیمَـٰنࣰا وَهُمۡ یَسۡتَبۡشِرُونَ ﴿124﴾
আর যখনই একটি সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের কেউ কেউ বলে -- ''এ তোমাদের মধ্যের কার বিশ্বাস সমৃদ্ধ করল?’’ আসলে যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদের কিন্তু এটি বিশ্বাসে সমৃদ্ধ করে, আর তারাই তো সুসংবাদ উপভোগ করে।
وَأَمَّا ٱلَّذِینَ فِی قُلُوبِهِم مَّرَضࣱ فَزَادَتۡهُمۡ رِجۡسًا إِلَىٰ رِجۡسِهِمۡ وَمَاتُوا۟ وَهُمۡ كَـٰفِرُونَ ﴿125﴾
আর তাদের ক্ষেত্রে যাদের অন্তরে রয়েছে ব্যাধি, -- এ তখন তাদের কলুষতার সঙ্গে কলুষতা তাদের জন্য বাড়িয়ে তোলে, আর তারা প্রাণত্যাগ করে, আর তারা রয়ে যায় অবিশ্বাসী।
أَوَلَا یَرَوۡنَ أَنَّهُمۡ یُفۡتَنُونَ فِی كُلِّ عَامࣲ مَّرَّةً أَوۡ مَرَّتَیۡنِ ثُمَّ لَا یَتُوبُونَ وَلَا هُمۡ یَذَّكَّرُونَ ﴿126﴾
তারা কি দেখে না যে প্রতি বছর একবার বা দুবার করে অবশ্যই তাদের পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে? তবুও তারা ফেরে না বা মনও দেয় না।
وَإِذَا مَاۤ أُنزِلَتۡ سُورَةࣱ نَّظَرَ بَعۡضُهُمۡ إِلَىٰ بَعۡضٍ هَلۡ یَرَىٰكُم مِّنۡ أَحَدࣲ ثُمَّ ٱنصَرَفُوا۟ۚ صَرَفَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُم بِأَنَّهُمۡ قَوۡمࣱ لَّا یَفۡقَهُونَ ﴿127﴾
আর যখনই কোনো সূরা অবতীর্ণ হয় তাদের কেউ কেউ অন্যের দিকে তাকায় -- ''কেউ কি তোমাদের দেখছে?’’ তারপর তারা সরে পড়ে। আল্লাহ্ তাদের হৃদয়কে সত্যবিমুখ করেছেন যেহেতু তারা নিঃসন্দেহ এমন এক দল যারা বুঝতে চায় না।
لَقَدۡ جَاۤءَكُمۡ رَسُولࣱ مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ عَزِیزٌ عَلَیۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِیصٌ عَلَیۡكُم بِٱلۡمُؤۡمِنِینَ رَءُوفࣱ رَّحِیمࣱ ﴿128﴾
এখন তো তোমাদের কাছে একজন রসূল এসেছেন তোমাদেরই মধ্যে থেকে, তাঁর পক্ষে এটি দুঃসহ যা তোমাদের কষ্ট দেয়, তোমাদের জন্য তিনি পরম কল্যাণকামী, বিশ্বাসীদের প্রতি তিনি অতি দয়ার্দ্র, বিশেষ কৃপাময়।
فَإِن تَوَلَّوۡا۟ فَقُلۡ حَسۡبِیَ ٱللَّهُ لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَلَیۡهِ تَوَكَّلۡتُۖ وَهُوَ رَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡعَظِیمِ ﴿129﴾
অতঃপর যদি তারা ফিরে যায় তাহলে বলো -- ''আল্লাহ্ আমার জন্যে যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নেই, তাঁরই উপরে আমি নির্ভর করি, আর তিনিই তো মহাসিংহাসনের অধিপতি।’’