Main pages

كۤهیعۤصۤ ﴿1﴾

কাফ-হা-ইয়া-আইন-সাদ

জহুরুল হক

কাফ-হা-ইয়া-'আইন-স্বাদ।

ذِكۡرُ رَحۡمَتِ رَبِّكَ عَبۡدَهُۥ زَكَرِیَّاۤ ﴿2﴾

এটা আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহের বিবরণ তাঁর বান্দা যাকারিয়ার প্রতি।

জহুরুল হক

এ তাঁর বান্দা যাকারিয়ার প্রতি তোমার প্রভুর অনুগ্রহের বিবরণ।

إِذۡ نَادَىٰ رَبَّهُۥ نِدَاۤءً خَفِیࣰّا ﴿3﴾

যখন সে তাঁর পালনকর্তাকে আহবান করেছিল নিভৃতে।

জহুরুল হক

স্মরণ করো, তিনি তাঁর প্রভুর প্রতি মৃদু স্বরে আহ্বান করলেন --

قَالَ رَبِّ إِنِّی وَهَنَ ٱلۡعَظۡمُ مِنِّی وَٱشۡتَعَلَ ٱلرَّأۡسُ شَیۡبࣰا وَلَمۡ أَكُنۢ بِدُعَاۤىِٕكَ رَبِّ شَقِیࣰّا ﴿4﴾

সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা আমার অস্থি বয়স-ভারাবনত হয়েছে; বার্ধক্যে মস্তক সুশুভ্র হয়েছে; হে আমার পালনকর্তা! আপনাকে ডেকে আমি কখনও বিফলমনোরথ হইনি।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমার ভেতরের হাড়-গোড় জিরজিরে হয়ে গেছে আর মাথাটি হয়ে গেছে জড়ভরত পাকাচুল বিশিষ্ট, আর আমার প্রভু! আমি তো তোমার কাছে আমার প্রার্থনায় কখনো নিরাশ হই নি।

وَإِنِّی خِفۡتُ ٱلۡمَوَ ٰ⁠لِیَ مِن وَرَاۤءِی وَكَانَتِ ٱمۡرَأَتِی عَاقِرࣰا فَهَبۡ لِی مِن لَّدُنكَ وَلِیࣰّا ﴿5﴾

আমি ভয় করি আমার পর আমার স্বগোত্রকে এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা; কাজেই আপনি নিজের পক্ষ থেকে আমাকে এক জন কর্তব্য পালনকারী দান করুন।

জহুরুল হক

''আর আমি অবশ্য আশংকা করছি আমার পরে আমার জ্ঞাতিগোষ্ঠীদের, আর আমার স্ত্রী বন্ধ্যা, সেজন্য তোমার কাছ থেকে আমাকে একজন উত্তরাধিকারী প্রদান করো, --

یَرِثُنِی وَیَرِثُ مِنۡ ءَالِ یَعۡقُوبَۖ وَٱجۡعَلۡهُ رَبِّ رَضِیࣰّا ﴿6﴾

সে আমার স্থলাভিষিক্ত হবে ইয়াকুব বংশের এবং হে আমার পালনকর্তা, তাকে করুন সন্তোষজনক।

জহুরুল হক

''যে আমাকে উত্তরাধিকার করবে এবং ইয়াকুবের বংশধরদের উত্তরাধিকার করবে, আর আমার প্রভু, তাকে সন্তোষভাজন বানিয়ো।’’

یَـٰزَكَرِیَّاۤ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلَـٰمٍ ٱسۡمُهُۥ یَحۡیَىٰ لَمۡ نَجۡعَل لَّهُۥ مِن قَبۡلُ سَمِیࣰّا ﴿7﴾

হে যাকারিয়া, আমি তোমাকে এক পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম হবে ইয়াহইয়া। ইতিপূর্বে এই নামে আমি কারও নাম করণ করিনি।

জহুরুল হক

''হে যাকারিয়া, নিঃসন্দেহ আমরা তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছি একটি বেটা-ছেলের, তার নাম হবে ইয়াহ্‌য়া, এর আগে কাউকেও আমরা তার নামধর বানাই নি।’’

قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ یَكُونُ لِی غُلَـٰمࣱ وَكَانَتِ ٱمۡرَأَتِی عَاقِرࣰا وَقَدۡ بَلَغۡتُ مِنَ ٱلۡكِبَرِ عِتِیࣰّا ﴿8﴾

সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা কেমন করে আমার পুত্র হবে অথচ আমার স্ত্রী যে বন্ধ্যা, আর আমিও যে বার্ধক্যের শেষ প্রান্তে উপনীত।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! কেমন ক’রে আমার ছেলে হবে যখন আমার স্ত্রী বন্ধ্যা আর আমিও বার্ধক্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছি!

قَالَ كَذَ ٰ⁠لِكَ قَالَ رَبُّكَ هُوَ عَلَیَّ هَیِّنࣱ وَقَدۡ خَلَقۡتُكَ مِن قَبۡلُ وَلَمۡ تَكُ شَیۡـࣰٔا ﴿9﴾

তিনি বললেনঃ এমনিতেই হবে। তোমার পালনকর্তা বলে দিয়েছেনঃ এটা আমার পক্ষে সহজ। আমি তো পুর্বে তোমাকে সৃষ্টি করেছি এবং তুমি কিছুই ছিলে না।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''এমনটাই হবে যেমন তুমি ভাব, তোমার প্রভু বলেছেন -- 'এটি আমার জন্য সহজসাধ্য, আর আমি তো তোমাকে এর আগে সৃষ্টি করেছি যখন তুমি কিছুই ছিলে না’।’’

قَالَ رَبِّ ٱجۡعَل لِّیۤ ءَایَةࣰۖ قَالَ ءَایَتُكَ أَلَّا تُكَلِّمَ ٱلنَّاسَ ثَلَـٰثَ لَیَالࣲ سَوِیࣰّا ﴿10﴾

সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে একটি নির্দশন দিন। তিনি বললেন তোমার নিদর্শন এই যে, তুমি সুস্থ অবস্থায় তিন দিন মানুষের সাথে কথাবার্তা বলবে না।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''আমার প্রভু! আমার জন্য একটি নিদর্শন স্থাপন করো।’’ তিনি বললেন, ''তোমার নিদর্শন হচ্ছে -- তুমি লোকের সাথে কথা বলবে না তিন রাত্রি পর্যন্ত সুস্থাবস্থায় থেকে।’’

فَخَرَجَ عَلَىٰ قَوۡمِهِۦ مِنَ ٱلۡمِحۡرَابِ فَأَوۡحَىٰۤ إِلَیۡهِمۡ أَن سَبِّحُوا۟ بُكۡرَةࣰ وَعَشِیࣰّا ﴿11﴾

অতঃপর সে কক্ষ থেকে বের হয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে এল এবং ইঙ্গিতে তাদেরকে সকাল সন্ধ্যায় আল্লাহকে স্মরণ করতে বললঃ

জহুরুল হক

তারপর তিনি উপাসনার কামরা থেকে তাঁর লোকদের কাছে বেরুলেন এবং তাদের প্রতি ঘোষণা করলেন -- ''মহিমা কীর্তন করো সকালে ও সন্ধ্যায়।’’

یَـٰیَحۡیَىٰ خُذِ ٱلۡكِتَـٰبَ بِقُوَّةࣲۖ وَءَاتَیۡنَـٰهُ ٱلۡحُكۡمَ صَبِیࣰّا ﴿12﴾

হে ইয়াহইয়া দৃঢ়তার সাথে এই গ্রন্থ ধারণ কর। আমি তাকে শৈশবেই বিচারবুদ্ধি দান করেছিলাম।

জহুরুল হক

''হে ইয়াহ্‌য়া, ধর্মগ্রন্থ শক্ত ক’রে ধারণ করো।’’ আর আমরা তাঁকে জ্ঞানদান করেছিলাম শৈশবেই,

وَحَنَانࣰا مِّن لَّدُنَّا وَزَكَوٰةࣰۖ وَكَانَ تَقِیࣰّا ﴿13﴾

এবং নিজের পক্ষ থেকে আগ্রহ ও পবিত্রতা দিয়েছি। সে ছিল পরহেযগার।

জহুরুল হক

আর আমাদের তরফ থেকে সহৃদয়তা ও পবিত্রতা। আর তিনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ,

وَبَرَّۢا بِوَ ٰ⁠لِدَیۡهِ وَلَمۡ یَكُن جَبَّارًا عَصِیࣰّا ﴿14﴾

পিতা-মাতার অনুগত এবং সে উদ্ধত, নাফরমান ছিল না।

জহুরুল হক

আর তাঁর পিতামাতার প্রতি অনুগত, আর তিনি ছিলেন না উদ্ধত, অবাধ্য।

وَسَلَـٰمٌ عَلَیۡهِ یَوۡمَ وُلِدَ وَیَوۡمَ یَمُوتُ وَیَوۡمَ یُبۡعَثُ حَیࣰّا ﴿15﴾

তার প্রতি শান্তি-যেদিন সে জন্মগ্রহণ করে এবং যেদিন মৃত্যুবরণ করবে এবং যেদিন জীবিতাবস্থায় পুনরুত্থিত হবে।

জহুরুল হক

আর শান্তি তাঁর উপরে যেদিন তাঁর জন্ম হয়েছিল ও যেদিন তিনি মারা গিয়েছিলেন আর যেদিন তাঁকে পুরুত্থিত করা হবে জীবিত অবস্থায়।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ مَرۡیَمَ إِذِ ٱنتَبَذَتۡ مِنۡ أَهۡلِهَا مَكَانࣰا شَرۡقِیࣰّا ﴿16﴾

এই কিতাবে মারইয়ামের কথা বর্ণনা করুন, যখন সে তার পরিবারের লোকজন থেকে পৃথক হয়ে পূর্বদিকে এক স্থানে আশ্রয় নিল।

জহুরুল হক

আর গ্রন্থখানাতে মরিয়মের কথা স্মরণ করো -- যখন তিনি তাঁর পরিবারবর্গ থেকে সরে গিয়েছিলেন পুবদিকের এক জায়গায়,

فَٱتَّخَذَتۡ مِن دُونِهِمۡ حِجَابࣰا فَأَرۡسَلۡنَاۤ إِلَیۡهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرࣰا سَوِیࣰّا ﴿17﴾

অতঃপর তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্যে সে পর্দা করলো। অতঃপর আমি তার কাছে আমার রূহ প্রেরণ করলাম, সে তার নিকট পুর্ণ মানবাকৃতিতে আত্নপ্রকাশ করল।

জহুরুল হক

তারপর তিনি তাদের থেকে পর্দা অবলন্বন করলেন, তখন আমরা তাঁর কাছে পাঠালাম আমাদের দূতকে, কাজেই তাঁর কাছে সে এক পুরোপুরি মানুষের অনুরূপে দেখা দিল।

قَالَتۡ إِنِّیۤ أَعُوذُ بِٱلرَّحۡمَـٰنِ مِنكَ إِن كُنتَ تَقِیࣰّا ﴿18﴾

মারইয়াম বললঃ আমি তোমা থেকে দয়াময়ের আশ্রয় প্রার্থনা করি যদি তুমি আল্লাহভীরু হও।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''নিঃসন্দেহ আমি তোমার থেকে আশ্রয় খুজঁছি পরম করুণাময়ের কাছে, যদি তুমি ধর্মভীরু হও।’’

قَالَ إِنَّمَاۤ أَنَا۠ رَسُولُ رَبِّكِ لِأَهَبَ لَكِ غُلَـٰمࣰا زَكِیࣰّا ﴿19﴾

সে বললঃ আমি তো শুধু তোমার পালনকর্তা প্রেরিত, যাতে তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করে যাব।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''আমি তো শুধু তোমার প্রভুর বাণীবাহক -- 'যে আমি তোমাকে দান করব এক নিখুঁত ছেলে’।’’

قَالَتۡ أَنَّىٰ یَكُونُ لِی غُلَـٰمࣱ وَلَمۡ یَمۡسَسۡنِی بَشَرࣱ وَلَمۡ أَكُ بَغِیࣰّا ﴿20﴾

মরিইয়াম বললঃ কিরূপে আমার পুত্র হবে, যখন কোন মানব আমাকে স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যভিচারিণীও কখনও ছিলাম না ?

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''কেমন ক’রে আমার ছেলে হবে, যেহেতু আমাকে পুরুষ-মানুষ স্পর্শ করে নি এবং আমি অসতীও নই?’’

قَالَ كَذَ ٰ⁠لِكِ قَالَ رَبُّكِ هُوَ عَلَیَّ هَیِّنࣱۖ وَلِنَجۡعَلَهُۥۤ ءَایَةࣰ لِّلنَّاسِ وَرَحۡمَةࣰ مِّنَّاۚ وَكَانَ أَمۡرࣰا مَّقۡضِیࣰّا ﴿21﴾

সে বললঃ এমনিতেই হবে। তোমার পালনকর্তা বলেছেন, এটা আমার জন্যে সহজ সাধ্য এবং আমি তাকে মানুষের জন্যে একটি নিদর্শন ও আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ স্বরূপ করতে চাই। এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''মনটা হবে! তোমার প্রভু বলেছেন -- 'এটি আমার জন্য সহজ-সাধ্য। আর যেন আমরা তাঁকে লোকদের জন্য একটি নিদর্শন বানাতে পারি, আর আমাদের থেকে এক করুণা, আর এ তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার’।’’

۞ فَحَمَلَتۡهُ فَٱنتَبَذَتۡ بِهِۦ مَكَانࣰا قَصِیࣰّا ﴿22﴾

অতঃপর তিনি গর্ভে সন্তান ধারণ করলেন এবং তৎসহ এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেলেন।

জহুরুল হক

তারপর তিনি তাঁকে গর্ভে ধারণ করলেন, এবং তৎসহ এক দূরবর্তী স্থানে সরে গেলেন।

فَأَجَاۤءَهَا ٱلۡمَخَاضُ إِلَىٰ جِذۡعِ ٱلنَّخۡلَةِ قَالَتۡ یَـٰلَیۡتَنِی مِتُّ قَبۡلَ هَـٰذَا وَكُنتُ نَسۡیࣰا مَّنسِیࣰّا ﴿23﴾

প্রসব বেদনা তাঁকে এক খেজুর বৃক্ষ-মূলে আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। তিনি বললেনঃ হায়, আমি যদি কোনরূপে এর পূর্বে মরে যেতাম এবং মানুষের স্মৃতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে, যেতাম!

জহুরুল হক

তখন প্রসব-বেদনা তাঁকে এক খেজুর গাছের গুড়িতে নিয়ে এল। তিনি বললেন -- ''হায় আমার দুর্ভোগ! এর আগে যদি আমি মরেই যেতাম এবং সম্পূর্ণ বিস্মৃতিতে বিস্মৃত হতাম!’’

فَنَادَىٰهَا مِن تَحۡتِهَاۤ أَلَّا تَحۡزَنِی قَدۡ جَعَلَ رَبُّكِ تَحۡتَكِ سَرِیࣰّا ﴿24﴾

অতঃপর ফেরেশতা তাকে নিম্নদিক থেকে আওয়ায দিলেন যে, তুমি দুঃখ করো না। তোমার পালনকর্তা তোমার পায়ের তলায় একটি নহর জারি করেছেন।

জহুরুল হক

তখন তাঁর নিচে থেকে তাঁকে ডেকে বললে -- ''দুঃখ করো না, তোমার প্রভু অবশ্য তোমার নিচে দিয়ে একটি জলধারা রেখেছেন।’’

وَهُزِّیۤ إِلَیۡكِ بِجِذۡعِ ٱلنَّخۡلَةِ تُسَـٰقِطۡ عَلَیۡكِ رُطَبࣰا جَنِیࣰّا ﴿25﴾

আর তুমি নিজের দিকে খেজুর গাছের কান্ডে নাড়া দাও, তা থেকে তোমার উপর সুপক্ক খেজুর পতিত হবে।

জহুরুল হক

''আর খেজুর গাছের কান্ডটি তোমার দিকে টানতে থাক, এটি তোমার উপরে টাটকা-পাকা খেজুর ফেলবে।

فَكُلِی وَٱشۡرَبِی وَقَرِّی عَیۡنࣰاۖ فَإِمَّا تَرَیِنَّ مِنَ ٱلۡبَشَرِ أَحَدࣰا فَقُولِیۤ إِنِّی نَذَرۡتُ لِلرَّحۡمَـٰنِ صَوۡمࣰا فَلَنۡ أُكَلِّمَ ٱلۡیَوۡمَ إِنسِیࣰّا ﴿26﴾

যখন আহার কর, পান কর এবং চক্ষু শীতল কর। যদি মানুষের মধ্যে কাউকে তুমি দেখ, তবে বলে দিওঃ আমি আল্লাহর উদ্দেশে রোযা মানত করছি। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে কথা বলব না।

জহুরুল হক

''সুতরাং খাও ও পান করো এবং চোখ জুড়াও। আর লোকজনের কাউকে যদি দেখতে পাও তবে বলো -- 'আমি পরম করুণাময়ের জন্য রোযা রাখার মানত করেছি, কাজেই আমি আজ কোনো লোকের সঙ্গে কথাবার্তা বলব না’।’’

فَأَتَتۡ بِهِۦ قَوۡمَهَا تَحۡمِلُهُۥۖ قَالُوا۟ یَـٰمَرۡیَمُ لَقَدۡ جِئۡتِ شَیۡـࣰٔا فَرِیࣰّا ﴿27﴾

অতঃপর তিনি সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হলেন। তারা বললঃ হে মারইয়াম, তুমি একটি অঘটন ঘটিয়ে বসেছ।

জহুরুল হক

তারপর তিনি তাঁকে নিয়ে এলেন তাঁর লোকদের কাছে তাঁকে চড়িয়ে। তারা বললে -- ''হে মরিয়ম! তুমি আলবৎ এক অদ্ভুত ফেসাদ নিয়ে এসেছ।

یَـٰۤأُخۡتَ هَـٰرُونَ مَا كَانَ أَبُوكِ ٱمۡرَأَ سَوۡءࣲ وَمَا كَانَتۡ أُمُّكِ بَغِیࣰّا ﴿28﴾

হে হারূণ-ভাগিনী, তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিলেন না এবং তোমার মাতাও ছিল না ব্যভিচারিনী।

জহুরুল হক

''হে হারূনের ভগিনী! তোমার বাপ তো খারাপ লোক ছিল না এবং তোমার মা’ও পাপিষ্ঠা নয়!’’

فَأَشَارَتۡ إِلَیۡهِۖ قَالُوا۟ كَیۡفَ نُكَلِّمُ مَن كَانَ فِی ٱلۡمَهۡدِ صَبِیࣰّا ﴿29﴾

অতঃপর তিনি হাতে সন্তানের দিকে ইঙ্গিত করলেন। তারা বললঃ যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব?

জহুরুল হক

তখন তিনি তাঁর দিকে ইশারা করলেন। তারা বললে -- ''আমরা কেমন ক’রে কথা বলব তার সঙ্গে যে দোলনার শিশু?’’

قَالَ إِنِّی عَبۡدُ ٱللَّهِ ءَاتَىٰنِیَ ٱلۡكِتَـٰبَ وَجَعَلَنِی نَبِیࣰّا ﴿30﴾

সন্তান বললঃ আমি তো আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী করেছেন।

জহুরুল হক

তিনি বললেন -- ''নিঃসন্দেহ আমি আল্লাহ্‌র একজন বান্দা, তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী বানিয়েছেন,

وَجَعَلَنِی مُبَارَكًا أَیۡنَ مَا كُنتُ وَأَوۡصَـٰنِی بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱلزَّكَوٰةِ مَا دُمۡتُ حَیࣰّا ﴿31﴾

আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি, ততদিন নামায ও যাকাত আদায় করতে।

জহুরুল হক

''আর তিনি আমাকে মঙ্গলময় করেছেন যেখানেই আমি থাকি না কেন, আর তিনি আমার প্রতি বিধান দিয়েছেন নামায পড়তে ও যাকাত দিতে যতদিন আমি জীবিত অবস্থায় অবস্থান করি,

وَبَرَّۢا بِوَ ٰ⁠لِدَتِی وَلَمۡ یَجۡعَلۡنِی جَبَّارࣰا شَقِیࣰّا ﴿32﴾

এবং জননীর অনুগত থাকতে এবং আমাকে তিনি উদ্ধত ও হতভাগ্য করেননি।

জহুরুল হক

''আর আমার মায়ের প্রতি অনুগত থাকতে, আর তিনি আমাকে বিদ্রোহীভাবাপন্ন হতভাগ্য করেন নি।

وَٱلسَّلَـٰمُ عَلَیَّ یَوۡمَ وُلِدتُّ وَیَوۡمَ أَمُوتُ وَیَوۡمَ أُبۡعَثُ حَیࣰّا ﴿33﴾

আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি, যেদিন মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন পুনরুজ্জীবিত হয়ে উত্থিত হব।

জহুরুল হক

''আর শান্তি আমার উপরে যেদিন আমার জন্ম হয়েছিল, আর যেদিন আমি মারা যাব আর যেদিন আমাকে পুনরুত্থিত করা হবে জীবিত অবস্থায়।’’

ذَ ٰ⁠لِكَ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَۖ قَوۡلَ ٱلۡحَقِّ ٱلَّذِی فِیهِ یَمۡتَرُونَ ﴿34﴾

এই মারইয়ামের পুত্র ঈসা। সত্যকথা, যে সম্পর্কে লোকেরা বিতর্ক করে।

জহুরুল হক

এই হচ্ছে মরিয়মপুত্র ঈসা, সত্য বিবৃতি যে-সন্বন্ধে তারা বিতর্ক করে।

مَا كَانَ لِلَّهِ أَن یَتَّخِذَ مِن وَلَدࣲۖ سُبۡحَـٰنَهُۥۤۚ إِذَا قَضَىٰۤ أَمۡرࣰا فَإِنَّمَا یَقُولُ لَهُۥ كُن فَیَكُونُ ﴿35﴾

আল্লাহ এমন নন যে, সন্তান গ্রহণ করবেন, তিনি পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা, তিনি যখন কোন কাজ করা সিদ্ধান্ত করেন, তখন একথাই বলেনঃ হও এবং তা হয়ে যায়।

জহুরুল হক

এ আল্লাহ্‌র জন্য নয় যে তিনি এক সন্তান গ্রহণ করবেন। তাঁরই সব মহিমা! তিনি যখন কোনো-কিছু সিদ্ধান্ত করেন তখন সেজন্য তিনি শুধু বলেন -- 'হও’, আর তা হয়ে যায়।

وَإِنَّ ٱللَّهَ رَبِّی وَرَبُّكُمۡ فَٱعۡبُدُوهُۚ هَـٰذَا صِرَ ٰ⁠طࣱ مُّسۡتَقِیمࣱ ﴿36﴾

তিনি আরও বললেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ আমার পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তার এবাদত কর। এটা সরল পথ।

জহুরুল হক

''আর নিশ্চয় আল্লাহ্ আমার প্রভু ও তোমাদেরও প্রভু, অতএব তাঁরই এবাদত করো। এটিই সহজ-সঠিক পথ।’’

فَٱخۡتَلَفَ ٱلۡأَحۡزَابُ مِنۢ بَیۡنِهِمۡۖ فَوَیۡلࣱ لِّلَّذِینَ كَفَرُوا۟ مِن مَّشۡهَدِ یَوۡمٍ عَظِیمٍ ﴿37﴾

অতঃপর তাদের মধ্যে দলগুলো পৃথক পৃথক পথ অবলম্বন করল। সুতরাং মহাদিবস আগমনকালে কাফেরদের জন্যে ধবংস।

জহুরুল হক

কিন্তু গোত্রেরা তাদের পরস্পরের মধ্য মতানৈক্য সৃষ্টি করল, সুতরাং ধিক্ তাদের প্রতি যারা অবিশ্বাস পোষণ করে সেই ভয়ঙ্কর দিনে হাজিরাদানের কারণে।

أَسۡمِعۡ بِهِمۡ وَأَبۡصِرۡ یَوۡمَ یَأۡتُونَنَاۖ لَـٰكِنِ ٱلظَّـٰلِمُونَ ٱلۡیَوۡمَ فِی ضَلَـٰلࣲ مُّبِینࣲ ﴿38﴾

সেদিন তারা কি চমৎকার শুনবে এবং দেখবে, যেদিন তারা আমার কাছে আগমন করবে। কিন্তু আজ জালেমরা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে রয়েছে।

জহুরুল হক

কত স্পষ্টভাবে তারা শুনবে ও দেখবে সেইদিন যেদিন তারা আমাদের কাছে আসবে! কিন্তু অন্যায়কারীরা আজ স্পষ্ট ভুলের মধ্যে রয়েছে।

وَأَنذِرۡهُمۡ یَوۡمَ ٱلۡحَسۡرَةِ إِذۡ قُضِیَ ٱلۡأَمۡرُ وَهُمۡ فِی غَفۡلَةࣲ وَهُمۡ لَا یُؤۡمِنُونَ ﴿39﴾

আপনি তাদেরকে পরিতাপের দিবস সম্পর্কে হুশিয়ার করে দিন যখন সব ব্যাপারের মীমাংসা হয়ে যাবে। এখন তারা অনবধানতায় আছে এবং তারা বিশ্বাস স্থাপন করছে না।

জহুরুল হক

আর তাদের সতর্ক করে দাও সেই দারুণ পরিতাপের দিন সন্বন্ধে যখন ব্যাপারের সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। আর তারা তো গাফিলতিতে রয়েছে, আর তারা বিশ্বাসও করে না।

إِنَّا نَحۡنُ نَرِثُ ٱلۡأَرۡضَ وَمَنۡ عَلَیۡهَا وَإِلَیۡنَا یُرۡجَعُونَ ﴿40﴾

আমিই চুড়ান্ত মালিকানার অধিকারী হব পৃথিবীর এবং তার উপর যারা আছে তাদের এবং আমারই কাছে তারা প্রত্যাবর্তিত হবে।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা নিজেরাই পৃথিবী ও তার উপরে যারা আছে সে-সমস্তের উত্তরাধিকারী, আর আমাদের কাছেই তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَۚ إِنَّهُۥ كَانَ صِدِّیقࣰا نَّبِیًّا ﴿41﴾

আপনি এই কিতাবে ইব্রাহীমের কথা বর্ণনা করুন। নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী, নবী।

জহুরুল হক

আর গ্রন্থখানার মধ্যে ইব্রাহীমের কথা স্মরণ করো। নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন সত্য-পরায়ণ, একজন নবী।

إِذۡ قَالَ لِأَبِیهِ یَـٰۤأَبَتِ لِمَ تَعۡبُدُ مَا لَا یَسۡمَعُ وَلَا یُبۡصِرُ وَلَا یُغۡنِی عَنكَ شَیۡـࣰٔا ﴿42﴾

যখন তিনি তার পিতাকে বললেনঃ হে আমার পিতা, যে শোনে না, দেখে না এবং তোমার কোন উপকারে আসে না, তার এবাদত কেন কর?

জহুরুল হক

দেখো! তিনি তাঁর পিতৃপুরুষকে বললেন -- ''হে আমার বাপা! তুমি কেন তার উপাসনা কর যে শোনে না ও দেখে না এবং তোমাকে কোনো কিছুতেই সমৃদ্ধ করে না?

یَـٰۤأَبَتِ إِنِّی قَدۡ جَاۤءَنِی مِنَ ٱلۡعِلۡمِ مَا لَمۡ یَأۡتِكَ فَٱتَّبِعۡنِیۤ أَهۡدِكَ صِرَ ٰ⁠طࣰا سَوِیࣰّا ﴿43﴾

হে আমার পিতা, আমার কাছে এমন জ্ঞান এসেছে; যা তোমার কাছে আসেনি, সুতরাং আমার অনুসরণ কর, আমি তোমাকে সরল পথ দেখাব।

জহুরুল হক

''হে আমার আব্বু! নিঃসন্দেহ আমার কাছে অবশ্যই জ্ঞান এসেছে যা তোমার কাছে আসে নি, সুতরাং আমার অনুসরণ কর, আমি তোমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করব।

یَـٰۤأَبَتِ لَا تَعۡبُدِ ٱلشَّیۡطَـٰنَۖ إِنَّ ٱلشَّیۡطَـٰنَ كَانَ لِلرَّحۡمَـٰنِ عَصِیࣰّا ﴿44﴾

হে আমার পিতা, শয়তানের এবাদত করো না। নিশ্চয় শয়তান দয়াময়ের অবাধ্য।

জহুরুল হক

''হে আমার বাপা! শয়তানের উপাসনা করো না। নিশ্চয়ই শয়তান পরম করুণাময়ের অবাধ্য।

یَـٰۤأَبَتِ إِنِّیۤ أَخَافُ أَن یَمَسَّكَ عَذَابࣱ مِّنَ ٱلرَّحۡمَـٰنِ فَتَكُونَ لِلشَّیۡطَـٰنِ وَلِیࣰّا ﴿45﴾

হে আমার পিতা, আমি আশঙ্কা করি, দয়াময়ের একটি আযাব তোমাকে স্পর্শ করবে, অতঃপর তুমি শয়তানের সঙ্গী হয়ে যাবে।

জহুরুল হক

''হে আমার বাপুজি! আমি আলবৎ আশঙ্কা করি যে পরম করুণাময়ের কাছ থেকে শাস্তি তোমাকে স্পর্শ করবে, ফলে তুমি হয়ে পড়বে শয়তানের সঙ্গিসাথী।’

قَالَ أَرَاغِبٌ أَنتَ عَنۡ ءَالِهَتِی یَـٰۤإِبۡرَ ٰ⁠هِیمُۖ لَىِٕن لَّمۡ تَنتَهِ لَأَرۡجُمَنَّكَۖ وَٱهۡجُرۡنِی مَلِیࣰّا ﴿46﴾

পিতা বললঃ যে ইব্রাহীম, তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ? যদি তুমি বিরত না হও, আমি অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে তোমার প্রাণনাশ করব। তুমি চিরতরে আমার কাছ থেকে দূর হয়ে যাও।

জহুরুল হক

সে বললে -- ''হে ইব্রাহীম, তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে বীতশ্রদ্ধ? তুমি যদি না থামো তবে তোমাকে আমি নিশ্চিত পাথর ছুঁড়ে তাড়া করব, আর তুমি আমার থেকে এই মুহূর্তে দূর হয়ে যাও।’’

قَالَ سَلَـٰمٌ عَلَیۡكَۖ سَأَسۡتَغۡفِرُ لَكَ رَبِّیۤۖ إِنَّهُۥ كَانَ بِی حَفِیࣰّا ﴿47﴾

ইব্রাহীম বললেনঃ তোমার উপর শান্তি হোক, আমি আমার পালনকর্তার কাছে তোমার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করব। নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি মেহেরবান।

জহুরুল হক

তিনি বললেন, ''তোমার উপরে শান্তি, আমি অবশ্য আমার প্রভুর কাছে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব। নিঃসন্দেহ তিনি আমার প্রতি পরম স্নেহময়।

وَأَعۡتَزِلُكُمۡ وَمَا تَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَأَدۡعُوا۟ رَبِّی عَسَىٰۤ أَلَّاۤ أَكُونَ بِدُعَاۤءِ رَبِّی شَقِیࣰّا ﴿48﴾

আমি পরিত্যাগ করছি তোমাদেরকে এবং তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের এবাদত কর তাদেরকে; আমি আমার পালনকর্তার এবাদত করব। আশা করি, আমার পালনকর্তার এবাদত করে আমি বঞ্চিত হব না।

জহুরুল হক

''আর আমি সরে যাচ্ছি তোমাদের থেকে ও আল্লাহকে ছেড়ে দিয়ে তোমরা যাদের ডাকো ওদের থেকে, আর আমি আমার প্রভুকেই ডাকব, হতে পারে যে আমার প্রভুকে ডেকে আমি করুণাবঞ্চিত হব না।’’

فَلَمَّا ٱعۡتَزَلَهُمۡ وَمَا یَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَهَبۡنَا لَهُۥۤ إِسۡحَـٰقَ وَیَعۡقُوبَۖ وَكُلࣰّا جَعَلۡنَا نَبِیࣰّا ﴿49﴾

অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে এবং তার আল্লাহ ব্যতীত যাদের এবাদত করত, তাদের সবাইকে পরিত্যাগ করলেন, তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব এবং প্রত্যেককে নবী করলাম।

জহুরুল হক

তারপর যখন তিনি সরে গেলেন তাদের থেকে ও আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে তারা যাদের ডাকত ওদের থেকে, আমরা তাঁকে দিয়েছিলাম ইসহাককে ও ইয়াকুবকে। আর আমরা প্রত্যেককেই বানিয়েছিলাম নবী।

وَوَهَبۡنَا لَهُم مِّن رَّحۡمَتِنَا وَجَعَلۡنَا لَهُمۡ لِسَانَ صِدۡقٍ عَلِیࣰّا ﴿50﴾

আমি তাদেরকে দান করলাম আমার অনুগ্রহ এবং তাদেরকে দিলাম সমুচ্চ সুখ্যাতি।

জহুরুল হক

আর তাঁদের আমরা দান করেছিলাম আমাদের করুণা থেকে, আর আমরা তাঁদের জন্য নির্ধারণ করেছিলাম সমুচ্চ সুখ্যাতি।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ مُوسَىٰۤۚ إِنَّهُۥ كَانَ مُخۡلَصࣰا وَكَانَ رَسُولࣰا نَّبِیࣰّا ﴿51﴾

এই কিতাবে মূসার কথা বর্ণনা করুন, তিনি ছিলেন মনোনীত এবং তিনি ছিলেন রাসূল, নবী।

জহুরুল হক

আর গ্রন্থখানাতে মূসার কথা স্মরণ করো। নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন প্রিয়প্রাত্র, আর তিনি ছিলেন একজন নবী।

وَنَـٰدَیۡنَـٰهُ مِن جَانِبِ ٱلطُّورِ ٱلۡأَیۡمَنِ وَقَرَّبۡنَـٰهُ نَجِیࣰّا ﴿52﴾

আমি তাকে আহবান করলাম তূর পাহাড়ের ডান দিক থেকে এবং গুঢ়তত্ত্ব আলোচনার উদ্দেশে তাকে নিকটবর্তী করলাম।

জহুরুল হক

আর আমরা তাঁকে ডেকেছিলাম পাহাড়ের ডান দিক থেকে, এবং আমরা তাঁকে নিকটে এনেছিলাম যোগাযোগে।

وَوَهَبۡنَا لَهُۥ مِن رَّحۡمَتِنَاۤ أَخَاهُ هَـٰرُونَ نَبِیࣰّا ﴿53﴾

আমি নিজ অনুগ্রহে তাঁকে দান করলাম তাঁর ভাই হারুনকে নবীরূপে।

জহুরুল হক

আর আমাদের করুণা বশত আমরা তাঁকে দিয়েছিলাম তাঁর ভাই হারুনকে নবীরূপে।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ إِسۡمَـٰعِیلَۚ إِنَّهُۥ كَانَ صَادِقَ ٱلۡوَعۡدِ وَكَانَ رَسُولࣰا نَّبِیࣰّا ﴿54﴾

এই কিতাবে ইসমাঈলের কথা বর্ণনা করুন, তিনি প্রতিশ্রুতি পালনে সত্যাশ্রয়ী এবং তিনি ছিলেন রসূল, নবী।

জহুরুল হক

আর কিতাবখানাতে স্মরণ করো ইসমাইলের কথা। নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন ওয়াদাতে সত্যপরায়ণ, আর তিনি ছিলেন একজন রসূল, একজন নবী।

وَكَانَ یَأۡمُرُ أَهۡلَهُۥ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱلزَّكَوٰةِ وَكَانَ عِندَ رَبِّهِۦ مَرۡضِیࣰّا ﴿55﴾

তিনি তাঁর পরিবারবর্গকে নামায ও যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিতেন এবং তিনি তাঁর পালনকর্তার কাছে পছন্দনীয় ছিলেন।

জহুরুল হক

আর তিনি তাঁর পরিজনবর্গকে নামাযের ও যাকাতের নির্দেশ দিয়েছিলেন, আর তাঁর প্রভুর কাছে তিনি ছিলেন সন্তোষভাজন।

وَٱذۡكُرۡ فِی ٱلۡكِتَـٰبِ إِدۡرِیسَۚ إِنَّهُۥ كَانَ صِدِّیقࣰا نَّبِیࣰّا ﴿56﴾

এই কিতাবে ইদ্রীসের কথা আলোচনা করুন, তিনি ছিলেন সত্যবাদী নবী।

জহুরুল হক

আর কিতাবখানাতে ইদ্‌রীসের কথা স্মরণ করো। নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন সত্যপরায়ণ, একজন নবী।

وَرَفَعۡنَـٰهُ مَكَانًا عَلِیًّا ﴿57﴾

আমি তাকে উচ্চে উন্নীত করেছিলাম।

জহুরুল হক

আর আমরা তাঁকে উন্নীত করেছিলাম অত্যুচ্চ পর্যায়ে।

أُو۟لَـٰۤىِٕكَ ٱلَّذِینَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَیۡهِم مِّنَ ٱلنَّبِیِّـۧنَ مِن ذُرِّیَّةِ ءَادَمَ وَمِمَّنۡ حَمَلۡنَا مَعَ نُوحࣲ وَمِن ذُرِّیَّةِ إِبۡرَ ٰ⁠هِیمَ وَإِسۡرَ ٰ⁠ۤءِیلَ وَمِمَّنۡ هَدَیۡنَا وَٱجۡتَبَیۡنَاۤۚ إِذَا تُتۡلَىٰ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتُ ٱلرَّحۡمَـٰنِ خَرُّوا۟ سُجَّدࣰا وَبُكِیࣰّا ۩ ﴿58﴾

এরাই তারা-নবীগণের মধ্য থেকে যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা নেয়ামত দান করেছেন। এরা আদমের বংশধর এবং যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহন করিয়েছিলাম, তাদের বংশধর, এবং ইব্রাহীম ও ইসরাঈলের বংশধর এবং যাদেরকে আমি পথ প্রদর্শন করেছি ও মনোনীত করেছি, তাদের বংশোদ্ভূত। তাদের কাছে যখন দয়াময় আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হত, তখন তারা সেজদায় লুটিয়ে পড়ত এবং ক্রন্দন করত।

জহুরুল হক

এরাই তাঁরা যাঁদের উপরে আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছিলেন, -- আদমসন্তানদের থেকে নবীদের মধ্যেকার, আর যাদের আমরা নূহের সাথে বহন করেছিলাম তাদের মধ্যেকার, আর ইব্রাহীম ও ইসমাইলের বংশধরদের মধ্যের এবং যাদের আমরা সৎপথে চালিয়েছিলাম ও মনোনীত করেছিলাম তাদের মধ্যেকার। যখনি পরম করুণাময়ের বাণী তাদের কাছে পাঠ করা হতো তারা লুটিয়ে পড়ত সিজদারত হয়ে ও অ‌শ্রুমোচন করতে করতে।

۞ فَخَلَفَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ خَلۡفٌ أَضَاعُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُوا۟ ٱلشَّهَوَ ٰ⁠تِۖ فَسَوۡفَ یَلۡقَوۡنَ غَیًّا ﴿59﴾

অতঃপর তাদের পরে এল অপদার্থ পরবর্তীরা। তারা নামায নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হল। সুতরাং তারা অচিরেই পথভ্রষ্টতা প্রত্যক্ষ করবে।

জহুরুল হক

তারপর তাদের পরে এল পরবর্তিদল যারা নামায বাদ দিল ও কামনা-লালসার অনুসরণ করল, সেজন্য তারা অচিরেই দেখতে পাবে বঞ্চনা, --

إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحࣰا فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ یَدۡخُلُونَ ٱلۡجَنَّةَ وَلَا یُظۡلَمُونَ شَیۡـࣰٔا ﴿60﴾

কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা তওবা করেছে, বিশ্বাস স্থাপন করেছে। সুতরাং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের উপর কোন জুলুম করা হবে না।

জহুরুল হক

তারা ছাড়া যে তওবা করে ও ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই তবে বেহেশতে প্রবেশ করবে, আর তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না, --

جَنَّـٰتِ عَدۡنٍ ٱلَّتِی وَعَدَ ٱلرَّحۡمَـٰنُ عِبَادَهُۥ بِٱلۡغَیۡبِۚ إِنَّهُۥ كَانَ وَعۡدُهُۥ مَأۡتِیࣰّا ﴿61﴾

তাদের স্থায়ী বসবাস হবে যার ওয়াদা দয়াময় আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে অদৃশ্যভাবে দিয়েছেন। অবশ্যই তাঁর ওয়াদার তারা পৌঁছাবে।

জহুরুল হক

নন্দন কানন যা পরম করুণাময় তাঁর বান্দাদের জন্য ওয়াদা করেছেন অদৃশ্য জগতে। নিঃসন্দেহ তাঁর প্রতি‌শ্রুতি সদাসর্বদা এসেই থাকে।

لَّا یَسۡمَعُونَ فِیهَا لَغۡوًا إِلَّا سَلَـٰمࣰاۖ وَلَهُمۡ رِزۡقُهُمۡ فِیهَا بُكۡرَةࣰ وَعَشِیࣰّا ﴿62﴾

তারা সেখানে সালাম ব্যতীত কোন অসার কথাবার্তা শুনবে না এবং সেখানে সকাল-সন্ধ্যা তাদের জন্যে রুযী থাকবে।

জহুরুল হক

তারা সেখানে শুনবে না কোনো খেলো কথা 'সালাম’ ব্যতীত। আর তাদের জন্য সেখানে রয়েছে তাদের রিযেক সকালে ও সন্ধ্যায়।

تِلۡكَ ٱلۡجَنَّةُ ٱلَّتِی نُورِثُ مِنۡ عِبَادِنَا مَن كَانَ تَقِیࣰّا ﴿63﴾

এটা ঐ জান্নাত যার অধিকারী করব আমার বান্দাদের মধ্যে পরহেযগারদেরকে।

জহুরুল হক

এই সেই বেহেশত যেটি আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে দিয়েছি আমাদের বান্দাদের মধ্যের তাদের যারা ধর্মপরায়ণ।

وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمۡرِ رَبِّكَۖ لَهُۥ مَا بَیۡنَ أَیۡدِینَا وَمَا خَلۡفَنَا وَمَا بَیۡنَ ذَ ٰ⁠لِكَۚ وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِیࣰّا ﴿64﴾

(জিব্রাইল বললঃ) আমি আপনার পালনকর্তার আদেশ ব্যতীত অবতরণ করি না, যা আমাদের সামনে আছে, যা আমাদের পশ্চাতে আছে এবং যা এ দুই-এর মধ্যস্থলে আছে, সবই তাঁর এবং আপনার পালনকর্তা বিস্মৃত হওয়ার নন।

জহুরুল হক

আর -- ''আমরা অবতরণ করি না তোমার প্রভুর নির্দেশ ব্যতীত, যা কিছু আমাদের সামনে রয়েছে ও যা কিছু আমাদের পেছনে আর যা কিছু রয়েছে এই দুইয়ের মধ্যে সে সমস্ত তাঁরই, আর তোমার প্রভু ভুলো নন।

رَّبُّ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَیۡنَهُمَا فَٱعۡبُدۡهُ وَٱصۡطَبِرۡ لِعِبَـٰدَتِهِۦۚ هَلۡ تَعۡلَمُ لَهُۥ سَمِیࣰّا ﴿65﴾

তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবার পালনকর্তা। সুতরাং তাঁরই বন্দেগী করুন এবং তাতে দৃঢ় থাকুন আপনি কি তাঁর সমনাম কাউকে জানেন?

জহুরুল হক

''তিনি মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবীর এবং এ দুইয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তার প্রতিপালক প্রভু। সুতরাং তাঁকেই উপাসনা কর এবং তাঁর উপাসনায় অবিরাম সাধনা কর। তুমি কি কাউকে তাঁর সমকক্ষ জ্ঞান কর?’’

وَیَقُولُ ٱلۡإِنسَـٰنُ أَءِذَا مَا مِتُّ لَسَوۡفَ أُخۡرَجُ حَیًّا ﴿66﴾

মানুষ বলেঃ আমার মৃত্যু হলে পর আমি কি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হব?

জহুরুল হক

আর লোকে বলে -- ''কি! আমি যখন মরে যাব তখন কি আমাকে বের করে আনা হবে জীবিত অবস্থায়?’’

أَوَلَا یَذۡكُرُ ٱلۡإِنسَـٰنُ أَنَّا خَلَقۡنَـٰهُ مِن قَبۡلُ وَلَمۡ یَكُ شَیۡـࣰٔا ﴿67﴾

মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমি তাকে ইতি পূর্বে সৃষ্টি করেছি এবং সে তখন কিছুই ছিল না।

জহুরুল হক

কি? মানুষ কি স্মরণ করে না যে আমরা তাকে ইতিপূর্বে সৃষ্টি করেছিলাম যখন সে কিছুই ছিল না?

فَوَرَبِّكَ لَنَحۡشُرَنَّهُمۡ وَٱلشَّیَـٰطِینَ ثُمَّ لَنُحۡضِرَنَّهُمۡ حَوۡلَ جَهَنَّمَ جِثِیࣰّا ﴿68﴾

সুতরাং আপনার পালনকর্তার কসম, আমি অবশ্যই তাদেরকে এবং শয়তানদেরকে একত্রে সমবেত করব, অতঃপর অবশ্যই তাদেরকে নতজানু অবস্থায় জাহান্নামের চারপাশে উপস্থিত করব।

জহুরুল হক

কাজেই তোমার প্রভুর কসম, আমরা অতি অবশ্য তাদের সমবেত করব, আর শয়তানদেরও, তারপর আমরা অবশ্যই তাদের হাজির করব জাহান্নামের চারিদিকে নতজানু অবস্থায়।

ثُمَّ لَنَنزِعَنَّ مِن كُلِّ شِیعَةٍ أَیُّهُمۡ أَشَدُّ عَلَى ٱلرَّحۡمَـٰنِ عِتِیࣰّا ﴿69﴾

অতঃপর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মধ্যে যে দয়াময় আল্লাহর সর্বাধিক অবাধ্য আমি অবশ্যই তাকে পৃথক করে নেব।

জহুরুল হক

তারপর আমরা নিশ্চয় বের করে আনব প্রত্যেক দল থেকে তাদের মধ্যের ওকে যে পরম করুণাময়ের প্রতি সর্বাধিক অবাধ্য।

ثُمَّ لَنَحۡنُ أَعۡلَمُ بِٱلَّذِینَ هُمۡ أَوۡلَىٰ بِهَا صِلِیࣰّا ﴿70﴾

অতঃপর তাদের মধ্যে যারা জাহান্নামে প্রবেশের অধিক যোগ্য, আমি তাদের বিষয়ে ভালোভাবে জ্ঞাত আছি।

জহুরুল হক

আর আমরা নিশ্চয় ভাল জানি তাদের যারা নিজেরাই সেখানে দগ্ধ হবার জন্যে সব চাইতে যোগ্য।

وَإِن مِّنكُمۡ إِلَّا وَارِدُهَاۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ حَتۡمࣰا مَّقۡضِیࣰّا ﴿71﴾

তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে তথায় পৌছবে না। এটা আপনার পালনকর্তার অনিবার্য ফায়সালা।

জহুরুল হক

আর তোমাদের মধ্যে এমন একজনও নেই যে সেখানে না আসবে, -- এটি তোমার প্রভুর জন্যে এক অনিবার্য সিদ্ধান্ত।

ثُمَّ نُنَجِّی ٱلَّذِینَ ٱتَّقَوا۟ وَّنَذَرُ ٱلظَّـٰلِمِینَ فِیهَا جِثِیࣰّا ﴿72﴾

অতঃপর আমি পরহেযগারদেরকে উদ্ধার করব এবং জালেমদেরকে সেখানে নতজানু অবস্থায় ছেড়ে দেব।

জহুরুল হক

আর আমরা উদ্ধার করব তাদের যারা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করে, আর অন্যায়কারীদের সেখানে রেখে দেব নতজানু অবস্থায়।

وَإِذَا تُتۡلَىٰ عَلَیۡهِمۡ ءَایَـٰتُنَا بَیِّنَـٰتࣲ قَالَ ٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ لِلَّذِینَ ءَامَنُوۤا۟ أَیُّ ٱلۡفَرِیقَیۡنِ خَیۡرࣱ مَّقَامࣰا وَأَحۡسَنُ نَدِیࣰّا ﴿73﴾

যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন কাফেররা মুমিনদেরকে বলেঃ দুই দলের মধ্যে কোনটি মর্তবায় শ্রেষ্ঠ এবং কার মজলিস উত্তম?

জহুরুল হক

আর যখন তাদের কাছে আমাদের সুস্পষ্ট বাণীসমূহ পড়া হয় তখন যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা বলে যারা বিশ্বাস করেছে তাদের -- ''দুই দলের মধ্যে কোনটি প্রতিষ্ঠার দিকে শ্রেষ্ঠতর ও জাঁকজমকে গুলজার?’’

وَكَمۡ أَهۡلَكۡنَا قَبۡلَهُم مِّن قَرۡنٍ هُمۡ أَحۡسَنُ أَثَـٰثࣰا وَرِءۡیࣰا ﴿74﴾

তাদের পূর্বে কত মানব গোষ্ঠীকে আমি বিনাশ করেছি, তারা তাদের চাইতে সম্পদে ও জাঁক-জমকে শ্রেষ্ঠ ছিল।

জহুরুল হক

আর তাদের আগে কত মানবগোষ্ঠীকে আমরা ধ্বংস করেছি যারা ধনসম্পদে ও বাগাড়ন্বরে জমজমাট ছিল!

قُلۡ مَن كَانَ فِی ٱلضَّلَـٰلَةِ فَلۡیَمۡدُدۡ لَهُ ٱلرَّحۡمَـٰنُ مَدًّاۚ حَتَّىٰۤ إِذَا رَأَوۡا۟ مَا یُوعَدُونَ إِمَّا ٱلۡعَذَابَ وَإِمَّا ٱلسَّاعَةَ فَسَیَعۡلَمُونَ مَنۡ هُوَ شَرࣱّ مَّكَانࣰا وَأَضۡعَفُ جُندࣰا ﴿75﴾

বলুন, যারা পথভ্রষ্টতায় আছে, দয়াময় আল্লাহ তাদেরকে যথেষ্ট অবকাশ দেবেন; এমনকি অবশেষে তারা প্রত্যক্ষ করবে যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হচ্ছে, তা আযাব হোক অথবা কেয়ামতই হোক। সুতরাং তখন তারা জানতে পারবে কে মর্তবায় নিকৃষ্ট ও দলবলে দূর্বল।

জহুরুল হক

বলো -- ''যে বিভ্রান্তিতে রয়েছে পরম করুণাময় তার জন্য ঢিলে দিয়ে লন্বা করে দেন যে পর্যন্ত না তারা দেখতে পায় যা তাদের ওয়াদা করা হয়েছিল -- হয় শাস্তি নয়তো ঘড়িঘন্টা, তখন তারা জানতে পারবে কে হচ্ছে অবস্থানে বেশী নিকৃষ্ট এবং শক্তিসামর্থের বেশী দুর্বল।’’

وَیَزِیدُ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ٱهۡتَدَوۡا۟ هُدࣰىۗ وَٱلۡبَـٰقِیَـٰتُ ٱلصَّـٰلِحَـٰتُ خَیۡرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابࣰا وَخَیۡرࣱ مَّرَدًّا ﴿76﴾

যারা সৎপথে চলে আল্লাহ তাদের পথপ্রাপ্তি বৃদ্ধি করেন এবং স্থায়ী সৎকর্মসমূহ তোমার পালনকর্তার কাছে সওয়াবের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ এবং প্রতিদান হিসেবেও শ্রেষ্ট।

জহুরুল হক

আর যারা সৎপথে চলে আল্লাহ্ তাদের সুগতি বাড়িয়ে দেন, আর স্থায়ী সৎকর্ম তোমার প্রভুর কাছে পুরস্কার প্রদানের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আর সুফল ফলনের জন্যেও সর্বশ্রেষ্ঠ।

أَفَرَءَیۡتَ ٱلَّذِی كَفَرَ بِـَٔایَـٰتِنَا وَقَالَ لَأُوتَیَنَّ مَالࣰا وَوَلَدًا ﴿77﴾

আপনি কি তাকে লক্ষ্য করেছেন যে, আমার নিদর্শনাবলীতে বিশ্বাস করে না এবং বলেঃ আমাকে অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি অবশ্যই দেয়া হবে।

জহুরুল হক

তুমি কি তাকে দেখেছ যে আমাদের বাণীসমূহ অবিশ্বাস করে ও বলে -- ''আমাকে আলবৎ ধনদৌলত ও সন্তানসন্ততি দেয়া হবে’’?

أَطَّلَعَ ٱلۡغَیۡبَ أَمِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحۡمَـٰنِ عَهۡدࣰا ﴿78﴾

সে কি অদৃশ্য বিষয় জেনে ফেলেছে, অথবা দয়াময় আল্লাহর নিকট থেকে কোন প্রতিশ্রুতি প্রাপ্ত হয়েছে?

জহুরুল হক

সে কি অদৃশ্য সন্বন্ধে জেনে গেছে, না কি সে পরম করুণাময়ের কাছ থেকে কোনো চুক্তি আদায় করেছে?

كَلَّاۚ سَنَكۡتُبُ مَا یَقُولُ وَنَمُدُّ لَهُۥ مِنَ ٱلۡعَذَابِ مَدࣰّا ﴿79﴾

না, এটা ঠিক নয়। সে যা বলে আমি তা লিখে রাখব এবং তার শাস্তি দীর্ঘায়িত করতে থাকব।

জহুরুল হক

নিশ্চয়ই না! সে যা বলে তা সঙ্গে সঙ্গে আমরা লিখে রাখব, আর তার জন্য আমরা লম্বা করে দেব শাস্তির লম্বাই।

وَنَرِثُهُۥ مَا یَقُولُ وَیَأۡتِینَا فَرۡدࣰا ﴿80﴾

সে যা বলে, মৃত্যুর পর আমি তা নিয়ে নেব এবং সে আমার কাছে আসবে একাকী।

জহুরুল হক

আর সে যা বলে সে ব্যাপারে আমরা তাকে উত্তরাধিকার করব, আর আমাদের কাছে সে আসবে নিঃসঙ্গ অবস্থায়।

وَٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِ ٱللَّهِ ءَالِهَةࣰ لِّیَكُونُوا۟ لَهُمۡ عِزࣰّا ﴿81﴾

তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য ইলাহ গ্রহণ করেছে, যাতে তারা তাদের জন্যে সাহায্যকারী হয়।

জহুরুল হক

আর তারা আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে অন্য উপাস্য গ্রহণ করেছে যেন তারা তাদের জন্য হতে পারে এক সহায় সন্বল।

كَلَّاۚ سَیَكۡفُرُونَ بِعِبَادَتِهِمۡ وَیَكُونُونَ عَلَیۡهِمۡ ضِدًّا ﴿82﴾

কখনই নয়, তারা তাদের এবাদত অস্বীকার করবে এবং তাদের বিপক্ষে চলে যাবে।

জহুরুল হক

কখনোই না! তারা শীঘ্রই তাদের বন্দনা অস্বীকার করবে। আর তারা হবে এদের বিরোধিপক্ষ।

أَلَمۡ تَرَ أَنَّاۤ أَرۡسَلۡنَا ٱلشَّیَـٰطِینَ عَلَى ٱلۡكَـٰفِرِینَ تَؤُزُّهُمۡ أَزࣰّا ﴿83﴾

আপনি কি লক্ষ্য করেননি যে, আমি কাফেরদের উপর শয়তানদেরকে ছেড়ে দিয়েছি। তারা তাদেরকে বিশেষভাবে (মন্দকর্মে) উৎসাহিত করে।

জহুরুল হক

তুমি কি লক্ষ্য কর নি যে আমরা শয়তানদের পাঠিয়েছি অবিশ্বাসীদের নিকটে বিশেষ উসকানিতে উসকানি দিতে।

فَلَا تَعۡجَلۡ عَلَیۡهِمۡۖ إِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمۡ عَدࣰّا ﴿84﴾

সুতরাং তাদের ব্যাপারে আপনি তাড়াহুড়া করবেন না। আমি তো তাদের গণনা পূর্ণ করছি মাত্র।

জহুরুল হক

সুতরাং তাদের জন্য ব্যস্ত হয়ো না। আমরা তো তাদের জন্য সংখ্যা গণনা করছি।

یَوۡمَ نَحۡشُرُ ٱلۡمُتَّقِینَ إِلَى ٱلرَّحۡمَـٰنِ وَفۡدࣰا ﴿85﴾

সেদিন দয়াময়ের কাছে পরহেযগারদেরকে অতিথিরূপে সমবেত করব,

জহুরুল হক

সেদিন ধর্মপরায়ণদের আমরা সমবেত করব পরম করুণাময়ের কাছে রাজদূতরূপে,

وَنَسُوقُ ٱلۡمُجۡرِمِینَ إِلَىٰ جَهَنَّمَ وِرۡدࣰا ﴿86﴾

এবং অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত অবস্থায় জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাব।

জহুরুল হক

আর অপরাধীদের আমরা তাড়িয়ে নেব জাহান্নামের দিকে তৃষ্ণাতুর অবস্থায়।

لَّا یَمۡلِكُونَ ٱلشَّفَـٰعَةَ إِلَّا مَنِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحۡمَـٰنِ عَهۡدࣰا ﴿87﴾

যে দয়াময় আল্লাহর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছে, সে ব্যতীত আর কেউ সুপারিশ করার অধিকারী হবে না।

জহুরুল হক

পরম করুণাময়ের নিকট থেকে যে কোনো কড়ার লাভ করেছে সে ব্যতীত কারোর সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবে না।

وَقَالُوا۟ ٱتَّخَذَ ٱلرَّحۡمَـٰنُ وَلَدࣰا ﴿88﴾

তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।

জহুরুল হক

আর তারা বলে -- ''পরম করুণাময় একটি সন্তান গ্রহণ করেছেন।’’

لَّقَدۡ جِئۡتُمۡ شَیۡـًٔا إِدࣰّا ﴿89﴾

নিশ্চয় তোমরা তো এক অদ্ভুত কান্ড করেছ।

জহুরুল হক

তোমরা অবশ্যই এক বিকট ব্যপার অবতারণা করেছ।

تَكَادُ ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تُ یَتَفَطَّرۡنَ مِنۡهُ وَتَنشَقُّ ٱلۡأَرۡضُ وَتَخِرُّ ٱلۡجِبَالُ هَدًّا ﴿90﴾

হয় তো এর কারণেই এখনই নভোমন্ডল ফেটে পড়বে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হবে এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচুর্ণ হবে।

জহুরুল হক

এর দ্বারা মহাকাশমন্ডল বিদীর্ণ হয়ে যাবার উপক্রম করছে আর পৃথিবী চূর্ণ-বিচূর্ণ হতে চলছে আর পাহাড়পর্বত খন্ডবিখন্ড হয়ে ভেঙ্গে পড়ছে --

أَن دَعَوۡا۟ لِلرَّحۡمَـٰنِ وَلَدࣰا ﴿91﴾

এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্যে সন্তান আহবান করে।

জহুরুল হক

যেহেতু তারা পরম করুণাময়ের প্রতি সন্তান দাবি করছে।

وَمَا یَنۢبَغِی لِلرَّحۡمَـٰنِ أَن یَتَّخِذَ وَلَدًا ﴿92﴾

অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভনীয় নয়।

জহুরুল হক

আর পরম করুণাময়ের পক্ষে এটি সমীচীন নয় যে তিনি সন্তান গ্রহণ করবেন।

إِن كُلُّ مَن فِی ٱلسَّمَـٰوَ ٰ⁠تِ وَٱلۡأَرۡضِ إِلَّاۤ ءَاتِی ٱلرَّحۡمَـٰنِ عَبۡدࣰا ﴿93﴾

নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে কেউ নেই যে, দয়াময় আল্লাহর কাছে দাস হয়ে উপস্থিত হবে না।

জহুরুল হক

মহাকাশমন্ডলে ও পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যে পরম করুণাময়ের কাছে আসবে বান্দারূপে ছাড়া।

لَّقَدۡ أَحۡصَىٰهُمۡ وَعَدَّهُمۡ عَدࣰّا ﴿94﴾

তাঁর কাছে তাদের পরিসংখ্যান রয়েছে এবং তিনি তাদেরকে গণনা করে রেখেছেন।

জহুরুল হক

তিনি অবশ্যই তাদের হিসেব রেখেছেন, আর তিনি তাদের গণনা করছেন গুনতিতে।

وَكُلُّهُمۡ ءَاتِیهِ یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِ فَرۡدًا ﴿95﴾

কেয়ামতের দিন তাদের সবাই তাঁর কাছে একাকী অবস্থায় আসবে।

জহুরুল হক

আর তাদের সবকয়জনকেই কিয়ামতের দিনে তাঁর কাছে আসতে হবে নিঃসঙ্গ অবস্থায়।

إِنَّ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ سَیَجۡعَلُ لَهُمُ ٱلرَّحۡمَـٰنُ وُدࣰّا ﴿96﴾

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদেরকে দয়াময় আল্লাহ ভালবাসা দেবেন।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে তাদের জন্য পরম করুণাময় এখনি যোগান ধরবেন প্রেম।

فَإِنَّمَا یَسَّرۡنَـٰهُ بِلِسَانِكَ لِتُبَشِّرَ بِهِ ٱلۡمُتَّقِینَ وَتُنذِرَ بِهِۦ قَوۡمࣰا لُّدࣰّا ﴿97﴾

আমি কোরআনকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে আপনি এর দ্বারা পরহেযগারদেরকে সুসংবাদ দেন এবং কলহকারী সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন।

জহুরুল হক

সুতরাং আমরা তো এটিকে তোমার মাতৃভাষায় সহজবোধ্য করে দিয়েছি যেন এর দ্বারা তুমি ধর্মপরায়ণদের সুসংবাদ দিতে পার আর এর দ্বারা সাবধান করে দিতে পার বিতর্কপ্রিয় সম্প্রদায়কে।

وَكَمۡ أَهۡلَكۡنَا قَبۡلَهُم مِّن قَرۡنٍ هَلۡ تُحِسُّ مِنۡهُم مِّنۡ أَحَدٍ أَوۡ تَسۡمَعُ لَهُمۡ رِكۡزَۢا ﴿98﴾

তাদের পূর্বে আমি কত মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি। আপনি কি তাদের কাহারও সাড়া পান, অথবা তাদের ক্ষীনতম আওয়ায ও শুনতে পান?

জহুরুল হক

আর তাদের আগে আমরা কত মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি! তুমি কি তাদের মধ্যের একজনকেও দেখতে পাও অথবা তাদের থেকে গুনগুনানি শুনতে পাও?