Main pages

Surah The Event, The Inevitable [Al-Waqia] in Bengali

Surah The Event, The Inevitable [Al-Waqia] Ayah 96 Location Makkah Number 56

إِذَا وَقَعَتِ ٱلْوَاقِعَةُ ﴿1﴾

যখন কিয়ামতের ঘটনা ঘটবে,

জহুরুল হক

যখন বিরাট ঘটনাটি ঘটবে, --

لَيْسَ لِوَقْعَتِهَا كَاذِبَةٌ ﴿2﴾

যার বাস্তবতায় কোন সংশয় নেই।

জহুরুল হক

এর সংঘটনকে মিথ্যা বলার কেউ থাকবে না।

خَافِضَةٌۭ رَّافِعَةٌ ﴿3﴾

এটা নীচু করে দেবে, সমুন্নত করে দেবে।

জহুরুল হক

এটি লাঞ্ছিত করবে, এটি করবে সমুন্নত।

إِذَا رُجَّتِ ٱلْأَرْضُ رَجًّۭا ﴿4﴾

যখন প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী।

জহুরুল হক

যখন পৃথিবী আলোড়িত হবে আলোড়নে,

وَبُسَّتِ ٱلْجِبَالُ بَسًّۭا ﴿5﴾

এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে।

জহুরুল হক

আর পাহাড়গুলো ভেঙ্গে পড়বে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে --

فَكَانَتْ هَبَآءًۭ مُّنۢبَثًّۭا ﴿6﴾

অতঃপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা।

জহুরুল হক

ফলে তা হয়ে যাবে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণা,

وَكُنتُمْ أَزْوَٰجًۭا ثَلَٰثَةًۭ ﴿7﴾

এবং তোমরা তিনভাবে বিভক্ত হয়ে পড়বে।

জহুরুল হক

আর তোমরা হয়ে পড়বে তিনটি শ্রেণীতে --

فَأَصْحَٰبُ ٱلْمَيْمَنَةِ مَآ أَصْحَٰبُ ٱلْمَيْمَنَةِ ﴿8﴾

যারা ডান দিকে, কত ভাগ্যবান তারা।

জহুরুল হক

যথা ডান দিকের দল, -- কেমনতর এই ডানদিকের দল!

وَأَصْحَٰبُ ٱلْمَشْـَٔمَةِ مَآ أَصْحَٰبُ ٱلْمَشْـَٔمَةِ ﴿9﴾

এবং যারা বামদিকে, কত হতভাগা তারা।

জহুরুল হক

আর বাঁদিকের দল, -- কেমনতর এই বাঁদিকের দল!

وَٱلسَّٰبِقُونَ ٱلسَّٰبِقُونَ ﴿10﴾

অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই।

জহুরুল হক

আর অগ্রগামীগণ তো অগ্রগামী,

أُو۟لَٰٓئِكَ ٱلْمُقَرَّبُونَ ﴿11﴾

তারাই নৈকট্যশীল,

জহুরুল হক

এরাই হবে নৈকট্যপ্রাপ্ত,

فِى جَنَّٰتِ ٱلنَّعِيمِ ﴿12﴾

অবদানের উদ্যানসমূহে,

জহুরুল হক

আনন্দময় উদ্যানে।

ثُلَّةٌۭ مِّنَ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿13﴾

তারা একদল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।

জহুরুল হক

প্রথমকালীনদের থেকে অধিক সংখ্যায়,

وَقَلِيلٌۭ مِّنَ ٱلْءَاخِرِينَ ﴿14﴾

এবং অল্পসংখ্যক পরবর্তীদের মধ্যে থেকে।

জহুরুল হক

আর পরবর্তীকালীনদের থেকে অল্প সংখ্যায়।

عَلَىٰ سُرُرٍۢ مَّوْضُونَةٍۢ ﴿15﴾

স্বর্ণ খচিত সিংহাসন।

জহুরুল হক

কারুকার্যময় সিংহাসনে,

مُّتَّكِـِٔينَ عَلَيْهَا مُتَقَٰبِلِينَ ﴿16﴾

তারা তাতে হেলান দিয়ে বসবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে।

জহুরুল হক

তাতে তারা হেলান দিয়ে আসন গ্রহণ করবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে।

يَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَٰنٌۭ مُّخَلَّدُونَ ﴿17﴾

তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরেরা।

জহুরুল হক

তাদের চারিদিকে ঘুরে বেড়াবে চিরনবীন তরুণেরা --

بِأَكْوَابٍۢ وَأَبَارِيقَ وَكَأْسٍۢ مِّن مَّعِينٍۢ ﴿18﴾

পানপাত্র কুঁজা ও খাঁটি সূরাপূর্ণ পেয়ালা হাতে নিয়ে,

জহুরুল হক

পানপাত্র ও সোরাই নিয়ে ও নির্মল পানীয়ের পেয়ালা।

لَّا يُصَدَّعُونَ عَنْهَا وَلَا يُنزِفُونَ ﴿19﴾

যা পান করলে তাদের শিরঃপীড়া হবে না এবং বিকারগ্রস্ত ও হবে না।

জহুরুল হক

তাদের মাথা ধরবে না তাতে, আর তাদের নেশাও ধরবে না।

وَفَٰكِهَةٍۢ مِّمَّا يَتَخَيَّرُونَ ﴿20﴾

আর তাদের পছন্দমত ফল-মুল নিয়ে,

জহুরুল হক

আর ফল-মূল যা তারা পছন্দ করে;

وَلَحْمِ طَيْرٍۢ مِّمَّا يَشْتَهُونَ ﴿21﴾

এবং রুচিমত পাখীর মাংস নিয়ে।

জহুরুল হক

আর পাখির মাংস যা তারা কামনা করে,

وَحُورٌ عِينٌۭ ﴿22﴾

তথায় থাকবে আনতনয়না হুরগণ,

জহুরুল হক

আর আয়তলোচন হূরগণ --

كَأَمْثَٰلِ ٱللُّؤْلُؤِ ٱلْمَكْنُونِ ﴿23﴾

আবরণে রক্ষিত মোতির ন্যায়,

জহুরুল হক

আবৃত মুক্তার উদাহরণের ন্যায়; --

جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ ﴿24﴾

তারা যা কিছু করত, তার পুরস্কারস্বরূপ।

জহুরুল হক

যা তারা করতো তার পুরস্কার।

لَا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًۭا وَلَا تَأْثِيمًا ﴿25﴾

তারা তথায় অবান্তর ও কোন খারাপ কথা শুনবে না।

জহুরুল হক

তারা সেখানে শুনবে না কোনো খেলোকথা, না কোনো পাপবাক্য, --

إِلَّا قِيلًۭا سَلَٰمًۭا سَلَٰمًۭا ﴿26﴾

কিন্তু শুনবে সালাম আর সালাম।

জহুরুল হক

শুধু এই কথা ছাড়া -- ''সালাম! সালাম!’’

وَأَصْحَٰبُ ٱلْيَمِينِ مَآ أَصْحَٰبُ ٱلْيَمِينِ ﴿27﴾

যারা ডান দিকে থাকবে, তারা কত ভাগ্যবান।

জহুরুল হক

আর ডানদিকের দল, -- কেমনতর এই ডানদিকের দল!

فِى سِدْرٍۢ مَّخْضُودٍۢ ﴿28﴾

তারা থাকবে কাঁটাবিহীন বদরিকা বৃক্ষে।

জহুরুল হক

কাঁটা বিহীন সিদরাহ-গাছের নীচে,

وَطَلْحٍۢ مَّنضُودٍۢ ﴿29﴾

এবং কাঁদি কাঁদি কলায়,

জহুরুল হক

আর সারি সারি সাজানো কলাগাছ,

وَظِلٍّۢ مَّمْدُودٍۢ ﴿30﴾

এবং দীর্ঘ ছায়ায়।

জহুরুল হক

আর সুদূরবিস্তৃত ছায়া,

وَمَآءٍۢ مَّسْكُوبٍۢ ﴿31﴾

এবং প্রবাহিত পানিতে,

জহুরুল হক

আর উছলে ওঠা পানি,

وَفَٰكِهَةٍۢ كَثِيرَةٍۢ ﴿32﴾

ও প্রচুর ফল-মূলে,

জহুরুল হক

আর প্রচুর পরিমাণে ফলমূল,

لَّا مَقْطُوعَةٍۢ وَلَا مَمْنُوعَةٍۢ ﴿33﴾

যা শেষ হবার নয় এবং নিষিদ্ধ ও নয়,

জহুরুল হক

ব্যাহত হবার নয় এবং নিষিদ্ধ হবারও নয়।

وَفُرُشٍۢ مَّرْفُوعَةٍ ﴿34﴾

আর থাকবে সমুন্নত শয্যায়।

জহুরুল হক

আর উঁচুদরের গালিচা।

إِنَّآ أَنشَأْنَٰهُنَّ إِنشَآءًۭ ﴿35﴾

আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা ওদের সৃষ্টি করেছি বিশেষ সৃষ্টিতে;

فَجَعَلْنَٰهُنَّ أَبْكَارًا ﴿36﴾

অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী।

জহুরুল হক

আর তাদের বানিয়েছি চিরকুমারী,

عُرُبًا أَتْرَابًۭا ﴿37﴾

কামিনী, সমবয়স্কা।

জহুরুল হক

সোহাগিনী, সমবয়স্কা, --

لِّأَصْحَٰبِ ٱلْيَمِينِ ﴿38﴾

ডান দিকের লোকদের জন্যে।

জহুরুল হক

দক্ষিণপন্থী লোকদের জন্য।

ثُلَّةٌۭ مِّنَ ٱلْأَوَّلِينَ ﴿39﴾

তাদের একদল হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।

জহুরুল হক

প্রথমকালীনদের থেকে অধিক সংখ্যায়,

وَثُلَّةٌۭ مِّنَ ٱلْءَاخِرِينَ ﴿40﴾

এবং একদল পরবর্তীদের মধ্য থেকে।

জহুরুল হক

আর পরবর্তীকালীনদের মধ্যে থেকেও অধিক সংখ্যায়।

وَأَصْحَٰبُ ٱلشِّمَالِ مَآ أَصْحَٰبُ ٱلشِّمَالِ ﴿41﴾

বামপার্শ্বস্থ লোক, কত না হতভাগা তারা।

জহুরুল হক

কিন্তু বামপন্থীদল -- কেমনতর এই বামপন্থী দল।

فِى سَمُومٍۢ وَحَمِيمٍۢ ﴿42﴾

তারা থাকবে প্রখর বাষ্পে এবং উত্তপ্ত পানিতে,

জহুরুল হক

উত্তপ্ত বাতাসে ও ফুটন্ত পানিতে,

وَظِلٍّۢ مِّن يَحْمُومٍۢ ﴿43﴾

এবং ধুম্রকুঞ্জের ছায়ায়।

জহুরুল হক

আর কালো ধোঁয়ার ছায়ায়,

لَّا بَارِدٍۢ وَلَا كَرِيمٍ ﴿44﴾

যা শীতল নয় এবং আরামদায়কও নয়।

জহুরুল হক

শীতল নয় এবং সম্মানজনকও নয়।

إِنَّهُمْ كَانُوا۟ قَبْلَ ذَٰلِكَ مُتْرَفِينَ ﴿45﴾

তারা ইতিপূর্বে স্বাচ্ছন্দ্যশীল ছিল।

জহুরুল হক

অথচ তারা তো এর আগে ছিল ভোগবিলাসে মগ্ন,

وَكَانُوا۟ يُصِرُّونَ عَلَى ٱلْحِنثِ ٱلْعَظِيمِ ﴿46﴾

তারা সদাসর্বদা ঘোরতর পাপকর্মে ডুবে থাকত।

জহুরুল হক

আর তারা ঘোরতর পাপাচারে জেদ ধরে থাকত,

وَكَانُوا۟ يَقُولُونَ أَئِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًۭا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَبْعُوثُونَ ﴿47﴾

তারা বলতঃ আমরা যখন মরে অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি পুনরুত্থিত হব?

জহুরুল হক

আর তারা বলত -- ''কী! আমরা যখন মরে যাব ও মাটি ও হাড্ডি হয়ে যাব তখন কি আমরা আদৌ পুনরুত্থিত হব, --

أَوَءَابَآؤُنَا ٱلْأَوَّلُونَ ﴿48﴾

এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণও!

জহুরুল হক

এবং আমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষরাও?

قُلْ إِنَّ ٱلْأَوَّلِينَ وَٱلْءَاخِرِينَ ﴿49﴾

বলুনঃ পূর্ববর্তী ও পরবর্তীগণ,

জহুরুল হক

তুমি বলো -- ''নিঃসন্দেহ পূর্ববর্তীরা এবং পরবর্তীরা --

لَمَجْمُوعُونَ إِلَىٰ مِيقَٰتِ يَوْمٍۢ مَّعْلُومٍۢ ﴿50﴾

সবাই একত্রিত হবে এক নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে।

জহুরুল হক

''অবশ্যই সবাইকে একত্রিত করা হবে এক সুবিদিত দিনের নির্ধারিত স্থানে-ক্ষণে,

ثُمَّ إِنَّكُمْ أَيُّهَا ٱلضَّآلُّونَ ٱلْمُكَذِّبُونَ ﴿51﴾

অতঃপর হে পথভ্রষ্ট, মিথ্যারোপকারীগণ।

জহুরুল হক

''তখন নিঃসন্দেহ তোমরাই, হে পথভ্রষ্ট মিথ্যাআরোপকারিগণ!

لَءَاكِلُونَ مِن شَجَرٍۢ مِّن زَقُّومٍۢ ﴿52﴾

তোমরা অবশ্যই ভক্ষণ করবে যাক্কুম বৃক্ষ থেকে,

জহুরুল হক

''তোমরা আলবৎ আহার করবে যিক্কুমের গাছের থেকে,

فَمَالِـُٔونَ مِنْهَا ٱلْبُطُونَ ﴿53﴾

অতঃপর তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে,

জহুরুল হক

''এবং তাই দিয়ে তোমরা উদর পূর্ণ করবে,

فَشَٰرِبُونَ عَلَيْهِ مِنَ ٱلْحَمِيمِ ﴿54﴾

অতঃপর তার উপর পান করবে উত্তপ্ত পানি।

জহুরুল হক

''তারপর তোমরা তার উপরে পান করবে উত্তপ্ত পানি,

فَشَٰرِبُونَ شُرْبَ ٱلْهِيمِ ﴿55﴾

পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়।

জহুরুল হক

''আর তোমরা পান করবে তৃষ্ণার্ত উটের পান করার ন্যায়।’’

هَٰذَا نُزُلُهُمْ يَوْمَ ٱلدِّينِ ﴿56﴾

কেয়ামতের দিন এটাই হবে তাদের আপ্যায়ন।

জহুরুল হক

এই হবে তাদের আপ্যায়ন বিচারের দিনে।

نَحْنُ خَلَقْنَٰكُمْ فَلَوْلَا تُصَدِّقُونَ ﴿57﴾

আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে। অতঃপর কেন তোমরা তা সত্য বলে বিশ্বাস কর না।

জহুরুল হক

আমরাই তো তোমাদের সৃষ্টি করেছি, তবে কেন তোমরা সত্য বলে স্বীকার কর না?

أَفَرَءَيْتُم مَّا تُمْنُونَ ﴿58﴾

তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমাদের বীর্যপাত সম্পর্কে।

জহুরুল হক

তোমরা কি তবে ভেবে দেখেছ -- যা তোমরা স্খলন কর?

ءَأَنتُمْ تَخْلُقُونَهُۥٓ أَمْ نَحْنُ ٱلْخَٰلِقُونَ ﴿59﴾

তোমরা তাকে সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি?

জহুরুল হক

তোমরা বুঝি ওকে সৃষ্টি করেছ, না আমরা সৃষ্টিকর্তা?

نَحْنُ قَدَّرْنَا بَيْنَكُمُ ٱلْمَوْتَ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوقِينَ ﴿60﴾

আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই।

জহুরুল হক

আমরাই তোমাদের মধ্যে মৃত্যু ধার্য করে রেখেছি, আর আমরা প্রতিহত হব না, --

عَلَىٰٓ أَن نُّبَدِّلَ أَمْثَٰلَكُمْ وَنُنشِئَكُمْ فِى مَا لَا تَعْلَمُونَ ﴿61﴾

এ ব্যাপারে যে, তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের মত লোককে নিয়ে আসি এবং তোমাদেরকে এমন করে দেই, যা তোমরা জান না।

জহুরুল হক

যেন আমরা বদলে দিতে পারি তোমাদের অনুকরণে, এবং তোমাদের রূপান্তরিত করতে পারি তাতে যা তোমরা জান না।

وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ ٱلنَّشْأَةَ ٱلْأُولَىٰ فَلَوْلَا تَذَكَّرُونَ ﴿62﴾

তোমরা অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে, তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন?

জহুরুল হক

আর তোমরা অবশ্য প্রথম অভ্যুত্থান সন্বন্ধে অবগত হয়েছ, তবে কেন তোমরা ভেবে দেখ না?

أَفَرَءَيْتُم مَّا تَحْرُثُونَ ﴿63﴾

তোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?

জহুরুল হক

তোমরা কি ভেবে দেখেছ যা তোমরা বপন কর?

ءَأَنتُمْ تَزْرَعُونَهُۥٓ أَمْ نَحْنُ ٱلزَّٰرِعُونَ ﴿64﴾

তোমরা তাকে উৎপন্ন কর, না আমি উৎপন্নকারী ?

জহুরুল হক

তোমরা কি তা গজিয়ে তুলো, না আমরা বর্ধনকারী?

لَوْ نَشَآءُ لَجَعَلْنَٰهُ حُطَٰمًۭا فَظَلْتُمْ تَفَكَّهُونَ ﴿65﴾

আমি ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটা করে দিতে পারি, অতঃপর হয়ে যাবে তোমরা বিস্ময়াবিষ্ট।

জহুরুল হক

আমরা যদি চাইতাম তবে আমরা আলবৎ তাকে খড়-কুটোয় পরিণত করতে পারতাম, তখন তোমরা হাহুতাশ করতে থাকবে,

إِنَّا لَمُغْرَمُونَ ﴿66﴾

বলবেঃ আমরা তো ঋণের চাপে পড়ে গেলাম;

জহুরুল হক

''আমরা তো নিশ্চয় ঋণগ্রস্ত হলাম,

بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ ﴿67﴾

বরং আমরা হূত সর্বস্ব হয়ে পড়লাম।

জহুরুল হক

''বরং আমরা বঞ্চিত হলাম।’’

أَفَرَءَيْتُمُ ٱلْمَآءَ ٱلَّذِى تَشْرَبُونَ ﴿68﴾

তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?

জহুরুল হক

তোমরা যে পানি পান কর সে-সন্বন্ধে তোমরা কি ভেবে দেখেছ?

ءَأَنتُمْ أَنزَلْتُمُوهُ مِنَ ٱلْمُزْنِ أَمْ نَحْنُ ٱلْمُنزِلُونَ ﴿69﴾

তোমরা তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি বর্ষন করি?

জহুরুল হক

তোমরাই কি তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমরা বর্ষণকারী?

لَوْ نَشَآءُ جَعَلْنَٰهُ أُجَاجًۭا فَلَوْلَا تَشْكُرُونَ ﴿70﴾

আমি ইচ্ছা করলে তাকে লোনা করে দিতে পারি, অতঃপর তোমরা কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না?

জহুরুল হক

আমরা যদি চাইতাম তাহলে আমরা তাকে লোনা করে দিতে পারতাম, কেন তবে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না?

أَفَرَءَيْتُمُ ٱلنَّارَ ٱلَّتِى تُورُونَ ﴿71﴾

তোমরা যে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?

জহুরুল হক

তোমরা যে আগুন জ্বালাও তা কি তোমরা লক্ষ্য করেছ?

ءَأَنتُمْ أَنشَأْتُمْ شَجَرَتَهَآ أَمْ نَحْنُ ٱلْمُنشِـُٔونَ ﴿72﴾

তোমরা কি এর বৃক্ষ সৃষ্টি করেছ, না আমি সৃষ্টি করেছি ?

জহুরুল হক

তোমরাই কি তার গাছকে জন্মইয়েছ, না আমরা উৎপাদনকারী?

نَحْنُ جَعَلْنَٰهَا تَذْكِرَةًۭ وَمَتَٰعًۭا لِّلْمُقْوِينَ ﴿73﴾

আমি সেই বৃক্ষকে করেছি স্মরণিকা এবং মরুবাসীদের জন্য সামগ্রী।

জহুরুল হক

আমরাই তাকে বানিয়েছি এক নিদর্শনসামগ্রী এবং মরুচারীদের জন্য এক প্রয়োজনসামগ্রী।

فَسَبِّحْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلْعَظِيمِ ﴿74﴾

অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।

জহুরুল হক

অতএব তোমার সর্বশক্তিমান প্রভুর নামের জপতপ করো।

۞ فَلَآ أُقْسِمُ بِمَوَٰقِعِ ٱلنُّجُومِ ﴿75﴾

অতএব, আমি তারকারাজির অস্তাচলের শপথ করছি,

জহুরুল হক

না, আমি কিন্তু শপথ করছি নক্ষত্ররাজির অবস্থানের, --

وَإِنَّهُۥ لَقَسَمٌۭ لَّوْ تَعْلَمُونَ عَظِيمٌ ﴿76﴾

নিশ্চয় এটা এক মহা শপথ-যদি তোমরা জানতে।

জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ এটি তো এক বিরাট শপথ, যদি তোমরা জানতে, --

إِنَّهُۥ لَقُرْءَانٌۭ كَرِيمٌۭ ﴿77﴾

নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন,

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এটি তো এক সম্মানিত কুরআন,

فِى كِتَٰبٍۢ مَّكْنُونٍۢ ﴿78﴾

যা আছে এক গোপন কিতাবে,

জহুরুল হক

এক সুরক্ষিত গ্রন্থে।

لَّا يَمَسُّهُۥٓ إِلَّا ٱلْمُطَهَّرُونَ ﴿79﴾

যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।

জহুরুল হক

কেউ তা স্পর্শ করবে না পূত-পবিত্র ছাড়া।

تَنزِيلٌۭ مِّن رَّبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ ﴿80﴾

এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।

জহুরুল হক

এটি এক অবতারণ বিশ্বজগতের প্রভুর কাছ থেকে।

أَفَبِهَٰذَا ٱلْحَدِيثِ أَنتُم مُّدْهِنُونَ ﴿81﴾

তবুও কি তোমরা এই বাণীর প্রতি শৈথিল্য পদর্শন করবে?

জহুরুল হক

তা সত্ত্বেও কি সেই বাণীর প্রতি তোমরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য ভাবাপন্ন,

وَتَجْعَلُونَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُونَ ﴿82﴾

এবং একে মিথ্যা বলাকেই তোমরা তোমাদের ভূমিকায় পরিণত করবে?

জহুরুল হক

এবং তোমাদের জীবিকা বানিয়ে নিয়েছ যে তোমরা মিথ্যা আখ্যা দেবে?

فَلَوْلَآ إِذَا بَلَغَتِ ٱلْحُلْقُومَ ﴿83﴾

অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়।

জহুরুল হক

তবে কেন যখন কন্ঠাগত হয়ে যায়,

وَأَنتُمْ حِينَئِذٍۢ تَنظُرُونَ ﴿84﴾

এবং তোমরা তাকিয়ে থাক,

জহুরুল হক

এবং তোমরা যে-সময়ে তাকিয়ে থাকো,

وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنكُمْ وَلَٰكِن لَّا تُبْصِرُونَ ﴿85﴾

তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না।

জহুরুল হক

আমরা তখন তোমাদের চাইতে তার বেশী নিকটবর্তী কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না।

فَلَوْلَآ إِن كُنتُمْ غَيْرَ مَدِينِينَ ﴿86﴾

যদি তোমাদের হিসাব-কিতাব না হওয়াই ঠিক হয়,

জহুরুল হক

যদি তোমরা আজ্ঞাধীন না হয়ে থাক তবে কেন তোমরা পার না --

تَرْجِعُونَهَآ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ ﴿87﴾

তবে তোমরা এই আত্মাকে ফিরাও না কেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও ?

জহুরুল হক

তাকে ফিরিয়ে দিতে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?

فَأَمَّآ إِن كَانَ مِنَ ٱلْمُقَرَّبِينَ ﴿88﴾

যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয়;

জহুরুল হক

আর পক্ষান্তরে যদি সে নৈকট্যপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়।

فَرَوْحٌۭ وَرَيْحَانٌۭ وَجَنَّتُ نَعِيمٍۢ ﴿89﴾

তবে তার জন্যে আছে সুখ, উত্তম রিযিক এবং নেয়ামতে ভরা উদ্যান।

জহুরুল হক

তাহলে আয়েশ-আরাম ও সৌরভ, এবং আনন্দময় উদ্যান।

وَأَمَّآ إِن كَانَ مِنْ أَصْحَٰبِ ٱلْيَمِينِ ﴿90﴾

আর যদি সে ডান পার্শ্বস্থদের একজন হয়,

জহুরুল হক

আর অপরপক্ষে সে যদি দক্ষিণপন্থীদের মধ্যেকার হয়,

فَسَلَٰمٌۭ لَّكَ مِنْ أَصْحَٰبِ ٱلْيَمِينِ ﴿91﴾

তবে তাকে বলা হবেঃ তোমার জন্যে ডানপার্শ্বসস্থদের পক্ষ থেকে সালাম।

জহুরুল হক

তাহলে দক্ষিণপন্থীদের দলের থেকে -- ''তোমার প্রতি সালাম।’’

وَأَمَّآ إِن كَانَ مِنَ ٱلْمُكَذِّبِينَ ٱلضَّآلِّينَ ﴿92﴾

আর যদি সে পথভ্রষ্ট মিথ্যারোপকারীদের একজন হয়,

জহুরুল হক

আর পক্ষান্তরে সে যদি প্রত্যাখ্যানকারী পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে, --

فَنُزُلٌۭ مِّنْ حَمِيمٍۢ ﴿93﴾

তবে তার আপ্যায়ন হবে উত্তপ্ত পানি দ্বারা।

জহুরুল হক

তাহলে আপ্যায়ন হবে ফুটন্ত পানি দিয়ে,

وَتَصْلِيَةُ جَحِيمٍ ﴿94﴾

এবং সে নিক্ষিপ্ত হবে অগ্নিতে।

জহুরুল হক

এবং প্রবেশস্থল হবে ভয়ংকর আগুন!

إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ حَقُّ ٱلْيَقِينِ ﴿95﴾

এটা ধ্রুব সত্য।

জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ এটি অবশ্য সুনিশ্চিত সত্য।

فَسَبِّحْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلْعَظِيمِ ﴿96﴾

অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।

জহুরুল হক

সুতরাং তোমার সর্বশক্তিমান প্রভুর নামের জপতপ করো।